অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে টিম কুকের বেতন-বোনাস আকাশছোঁয়া বলা চলে। তবে চলতি বছর থেকে পরিমাণটা কমিয়ে আনতে রাজী হয়েছেন তিনি।
শেয়ার হোল্ডারদের বার্ষিক সভায় পেশ করা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২২ সালে টিম কুকের বেতন-বোনাস ছিল ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এ বছর সাড়ে তিন কোটি ডলার কমে পরিমাণটা দাঁড়াবে ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নিয়মিত বেতন ও বোনাসের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের পারফরমেন্সের ওপর টিম কুক পূর্বনির্ধারিত হারে স্টক বোনাস পেয়ে থাকেন। তার ৩০ লাখ ডলারের মূল বেতন ও ৬০ লাখ ডলারের বার্ষিক আর্থিক প্রণোদনা আগের মতোই থাকছে। তবে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অ্যাপল কতটা ভালো করছে, এখন থেকে সেটার ওপর তার স্টক বোনাস নির্ভর করবে।
২০২২ সালে ৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার স্টক বোনাস পেয়েছিলেন টিম কুক। ২০২৩ সালের জন্য পরিমাণটা ৪ কোটি ডলার ঠিক করা হয়েছে। অবশ্য অ্যাপলের শেয়ার মূল্য চলতি বছর আশাতীত হলে টিম কুকের বোনাস আরও বাড়তে পারে।
বেতন-ভাতা কমানোর সিদ্ধান্ত টিম কুক নিজেই নিয়েছেন বলে অ্যাপলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। গত বছর বার্ষিক সাধারণ সভায় তার বেতন কাঠামোতে পর্যাপ্ত শেয়ার হোল্ডার সমর্থন না জানানোয় কুক এমন অনুরোধ করেন।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দায় অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে বড় দরপতন দেখা যায় গত বছরজুড়ে। অ্যাপলও সমস্যার মুখে পড়ে। প্রথম মার্কিন প্রতিষ্ঠান হিসেবে বছর খানেক আগে অ্যাপল তিন লাখ কোটি ডলারের বাজারমূল্য ছুঁয়েছিল, যা এখন দুই লাখ ১০ হাজার কোটি ডলারের আশপাশে চলছে।
নিরাপত্তা ঝুঁকির প্রশ্নে টিকটক নিষিদ্ধের চেষ্টা করছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারকেরা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, নিউজিল্যান্ডে সরকারি কর্মকর্তা কিংবা সংসদ সদস্যদের স্মার্টফোন থেকে অ্যাপটি সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা এরই মধ্যে দেয়া হয়েছে।
এমনকি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে টিকটক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন, চলতি মাসের শুরুতে সে চেষ্টাও করেছে দেশটির একটি হাউস কমিটি।
২৩ মার্চ মার্কিন কংগ্রেসের হাউস এনার্জি অ্যান্ড কমার্স কমিটির জেরার মুখে পড়েন টিকটকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শৌ চিউ। পাঁচ ঘণ্টা ধরে নীতিনির্ধারকেরা তাকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তি মূলত চীনের সঙ্গে সম্পৃক্ততায়। টিকটকের মালিকপক্ষ চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটডান্স। খুদে ভিডিও শেয়ারের অ্যাপটির তথ্যে চীন সরকার নজর রাখতে পারে বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের।
সরকারি ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধ করা হচ্ছে কেন?
এর মূলে চীন। পশ্চিমা নীতিনির্ধারকদের শঙ্কা হলো, টিকটক ও এর চীনা মালিকপক্ষ বাইটডান্স হয়তো ব্যবহারকারীদের সংবেদনশীল তথ্য চীনা সরকারের হাতে তুলে দিচ্ছে বা দেবে।
গোয়েন্দা তৎপরতায় কাজে লাগানোর জন্য গোপনে চীনা প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকের তথ্য সংগ্রহের একটা আইন আছে চীনে। সেটাও পশ্চিমাদের দুশ্চিন্তার কারণ। আবার টিকটকের কনটেন্ট রিকমেন্ডেশন সিস্টেমের মাধ্যমে ভুয়া তথ্য ছড়াতে পারে বলেও দুশ্চিন্তা আছে।
কোনো দেশ কি টিকটক নিষিদ্ধ করেছে?
২০২০ সালের মাঝামাঝি টিকটক নিষিদ্ধ করে ভারত। এতে বড় বাজারগুলোর একটি হারায় বাইটডান্স। গোপনে ব্যবহারকারীর তথ্য পাচারের অভিযোগে সে সময় টিকটকসহ ৫৬টি চীনা মালিকানাধীন অ্যাপের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিল ভারত সরকার।
সরকার চাইলেই কি কোনো অ্যাপ নিষিদ্ধ করতে পারে?
টিকটকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞাগুলো সরকারি কর্মকর্তা, সংসদ সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বলবৎ আছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করলে বেশকিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে সরকার। কারণ টিকটকের মাধ্যমে নিজেদের মতামত তুলে ধরার পাশাপাশি সৃজনশীল কর্ম উপস্থাপনের সুযোগ পাচ্ছেন আমেরিকানরা। সেটাতে বাধা দেয়ার অর্থ ‘ফার্স্ট অ্যামেন্ডমেন্ট’ অস্বীকার করা কিংবা মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা।
আর এখন তো মার্কিন নাগরিকদের পাশাপাশি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস ও দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের মতো বিশ্বখ্যাত সংবাদমাধ্যমও টিকটকে নিয়মিত ভিডিও পোস্ট করে থাকে। প্ল্যাটফর্মটি নিষিদ্ধ করলে চ্যালেঞ্জের মুখে তো পড়বেই সরকার।
টিকটকের ভাষ্য কী?
নিষেধাজ্ঞাকে ‘রাজনৈতিক নাটক’ উল্লেখ করে নীতিনির্ধারকদের সেন্সরশিপের সমালোচনা করেছে টিকটক।
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি বিনিয়োগসংক্রান্ত কমিটি সিএফআইইউএসের সঙ্গে এ নিয়ে চুক্তির চেষ্টাও করছে টিকটক। এ বিষয়ে এক বিবৃততে টিকটকের এক মুখপাত্র বলেন, ‘টিকটক নিয়ে যেকোনো জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি মোকাবিলার দ্রুততম ও সবচেয়ে পূর্ণাঙ্গ পথ হলো প্রস্তাবিত চুক্তি মেনে নেয়া, যেটা নিয়ে আমরা প্রায় দুই বছর ধরে কাজ করছি।’
পাশাপাশি ওয়াশিংটনে মিত্র বাড়ানোর চেষ্টায় আছে টিকটক।
ফেসবুক-টুইটার রেখে কেবল টিকটকে আপত্তি কেন?
আপাতদৃষ্টে চীনা মালিকানাধীনই মূল ইস্যু বলে মনে হচ্ছে। টিকটক নিষিদ্ধের সমালোচনা যারা করছেন তাদের ভাষ্য হলো, সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই দেদারসে ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে। খড়গহস্ত হতে হলে সবার বিরুদ্ধেই হওয়া উচিত।
সূত্র: দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
টুইটারে যারা অর্থের বিনিময়ে গ্রাহক হবেন, কেবল তাদের পোস্ট মূল ফিডে দেখানো হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটির মালিক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইলন মাস্ক এক টুইটে এমন ঘোষণা দিয়েছেন।
টুইটারে লগইন করার পর মূল পাতায় ‘ফর ইউ’ নামে একটি ট্যাব থাকে। ব্যবহারকারীর পছন্দ-অপছন্দ বুঝে স্বয়ংক্রিয় অ্যালগরিদম জনপ্রিয় পোস্টগুলো এখানে দেখায়। মাস্কের টুইট অনুযায়ী, ১৫ এপ্রিল থেকে এই ট্যাবে কেবল ‘ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট’ থেকে পোস্ট দেখাবে। এটাই ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির চ্যাটবট থেকে রেহাই পাওয়ার’ একমাত্র উপায় বলে উল্লেখ করেন তিনি। টুইটারে পোলে ভোট দিতে চাইলেও ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের জন্য ওয়েবসাইটে এই ভেরিফায়েড সাবস্ক্রিপশনের খরচ মাসে ৮৫০ টাকা, অ্যান্ড্রয়েডে ১ হাজার ১৫০ টাকা।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, টুইটারে আগে থেকেই ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টগুলোকে ইদানীং ‘লিগ্যাসি ভেরিফায়েড’ বলা হচ্ছে। মাসিক সাবস্ক্রিপশন না কিনলে ১ এপ্রিল থেকে অ্যাকাউন্টগুলোর ভেরিফায়েড স্ট্যাটাস আর থাকবে না।
পোলে ভোট দেয়ার জন্য গত বছর আলাদা ফির প্রস্তাব করেছিলেন ইলন মাস্ক। টুইটার কেনার পর তার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত কি না, জানতে চেয়ে পোল তৈরি করেছিলেন তিনি। অনুসারীদের কাছে মত চাইলে অর্ধেকের বেশি তার সরে যাওয়ার পক্ষে মত দেন।
ফলাফল যা-ই হোক না কেন, তা মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মাস্ক। তবে ফল বিপক্ষে যাওয়ার পর তিনি বলেন, এই ব্যবহারকারীদের বড় একটি অংশ আসলে চ্যাটবট।
প্ল্যাটফরমার নিউজলেটারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবস্ক্রিপশন সেবা না কেনার পরও নির্বাচিত ৩৫ জনকে বিশেষ সেবা দিয়ে যাচ্ছে টুইটার। এদের মধ্যে মাস্ক নিজেই একজন, যার পোস্ট বিশেষ ব্যবস্থায় ব্যবহারকারীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হয়। ভিআইপিদের এই তালিকায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও আছেন।
আজ ২৬ মার্চ বাংলাদেশের ৫৩তম স্বাধীনতা দিবস। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের দিন। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল তৈরি করেছে বিশেষ ডুডল। শনিবার রাত ১২টার পর থেকেই দেখা যাচ্ছে এ ডুডল।
ব্রাউজারে সার্চ ইঞ্জিনটি খুললেই গুগলের নামের জায়গায় শোভা পাচ্ছে বাংলাদেশের দৃষ্টিনন্দন লাল-সবুজ পতাকা। এই ডুডলের ওপর ক্লিক করলেই ভেসে উঠছে ‘ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে অব বাংলাদেশ’ লেখা। তার আগে ডিজিটাল বর্ণিল আলোকচ্ছটায় জানানো হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।
‘ইন্ডিপেন্ডেন্স ডে অব বাংলাদেশ’ লেখার নিচেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের ইতিহাসসহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের ওয়েবসাইট দেখানো হচ্ছে।
বিভিন্ন দেশ, বিখ্যাত ব্যক্তি, বিশেষ দিন, কিংবা আবিষ্কার নিয়ে সাধারণত ডুডল তৈরি করে গুগল। ব্রাউজারে সার্চ বক্সের ওপরে নিজেদের লোগোর বদলে উপলক্ষের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নকশার যে লোগো তৈরি করা হয়, সেটাকেই ডুডল বলা হয়।
গত ৫০ বছরে সবকিছুর দাম যেভাবে বেড়েছে, কম্পিউটার পণ্যের দাম কিন্তু সেভাবে বাড়েনি। কম্পিউটার উন্নত হয়েছে, কাজের গতি বেড়েছে, তবে দামটা ক্রমশ হাতের নাগালের মধ্যেই এসেছে।
যার তত্ত্ব মেনে প্রযুক্তিপণ্য সহজলভ্য হয়েছে, সেই গর্ডন মুর মারা গেছেন ৯৪ বছর বয়সে। তিনি চলে গেলেও রেখে গেছেন তার তত্ত্ব।
ইনটেলের সহপ্রতিষ্ঠাতাদের একজন গর্ডন মুর। রবার্ট নয়েসের সঙ্গে ১৯৬৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রসেসর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তারও আগে ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে মুর বলেছিলেন, একই আকারের ইনটিগ্রেটেড সার্কিট বোর্ডে ট্রানজিসটরের পরিমাণ প্রতি দুই বছরে দ্বিগুণ হতে থাকবে।
কম্পিউটারের মূল যন্ত্রাংশ প্রসেসর হলে প্রসেসরের মূল উপাদান ট্রানজিসটর। পরিমাণে দ্বিগুণ হওয়া মানে আকারে ছোট হওয়া। ছোট ট্রানজিসটরের বিদ্যুৎ খরচ কম, তৈরির ব্যয়ও কম। আর ট্রানজিসটরের সংখ্যা বাড়ায় কম্পিউটারের গতিও বাড়ে।
আগে যেখানে কারখানার মতো বিশাল সব ঘরে কম্পিউটার রাখতে হতো, ক্রমে সে কম্পিউটারের ঠাঁই হলো মানুষের টেবিলে। সাধারণ হিসাবনিকাশ করতে যেটার দিনের পর দিন লাগত, এখন সে কম্পিউটার সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মধ্যে জটিল সব কাজ করতে পারে।
শুরুতে মুরের তত্ত্ব অসম্ভব মনে হলেও বাস্তবে প্রত্যাশা ছাড়িয়ে যায়। ১৯৮৩ সালে এআরএম-১ প্রসেসরের নকশা করেন স্টিফেন ফারবার ও সোফি উইলসন। সেটাকে আধুনিক মাইক্রোপ্রসেসরের শুরু বলা চলে। এআরএম-১ প্রসেসরে ২৫ হাজার ট্রানজিসটর ছিল। সে সময় সংখ্যাটা অনেক বড় ছিল। আর বর্তমানের কথা যদি বলা হয়, অ্যাপলের ২০২২ সালের ‘এম১ আলট্রা’ প্রসেসরে ট্রানজিসটরের পরিমাণ ১১ হাজার ৪০০ কোটি।
গর্ডন মুর বলেছিলেন, তার এই তত্ত্ব বছর দশেক কার্যকরী থাকবে। অথচ ছয় দশক পর আজও কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা কার্যকরী। তবে দীর্ঘমেয়াদে মুরের তত্ত্ব মেনে চলা কঠিন হবে। কারণ ট্রানজিসটরের আকার আর কতই ছোট করা যায়। যেদিন মুরের তত্ত্ব অকার্যকর হয়ে পড়বে, সেদিন নিশ্চয় নতুন কিছুর শুরু হবে। আপাতত গর্ডন মুরের কথায় ফিরে আসি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার হাওয়াইয়ে মারা যান মুর। ইনটেল ও তার দাতব্য সংস্থা গর্ডন অ্যান্ড বেটি মুর ফাউন্ডেশন মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। ইনটেল এক টুইটে মুরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছে, ‘আমরা একজন স্বপ্নদ্রষ্টাকে হারালাম। গর্ডন মুর, সবকিছুর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’
মাইক্রোসফট সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়ন গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত অগ্রগতি।
মঙ্গলবার এক ব্লগ পোস্টে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে মাইক্রোপ্রসেসর, পারসোনাল কম্পিউটার, ইন্টারনেট এবং মুঠোফোনের উদ্ভাবনের মতোই মৌলিক বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিল গেটস লিখেছেন, ‘এটা মানুষের কাজ, শিক্ষা, ভ্রমণ, স্বাস্থ্যসেবা এবং যোগাযোগের ধরনে পরিবর্তন আনবে।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চ্যাটজিপিটির মতো অ্যাপলিকেশনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে লিখেছেন তিনি। মার্কিন প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের তৈরি চ্যাটজিপিটি অনলাইনে স্বাভাবিক কথোপকথনের মতোই মানুষের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে।
গেল জানুয়ারিতে ওপেনএআইয়ে কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে মাইক্রোসফট, যেখানে এখনো উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত আছেন বিল গেটস। এদিকে গুগলও সম্প্রতি চ্যাটজিপিটির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ‘বার্ড’ নামের চ্যাটবট প্রকাশ করেছে।
২০১৬ সাল থেকেই ওপেনএআইয়ের কর্মীদের সঙ্গে মিটিং করছেন বলে জানান বিল গেটস। তিনি বলেছেন, ২০২২ সালে ওপেনএআইয়ের কর্মীদের এমন এআই সিস্টেম তৈরির চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন যেটি ‘অ্যাডভান্সড প্লেসমেন্ট বায়োলজি’ পরীক্ষায় পাস করতে পারবে। পরীক্ষাটি অনেকটা এ-লেভেল সমমানের। মাস কয়েক পরে এমন ওপেনএআই এমন সিস্টেম বানায় যেটা ৫০-এ ৪৯ নম্বর পেয়েছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতের সবোর্চ্চ স্বীকৃতি জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড সামিট অন ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার-২০২৩’ পেয়েছে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এর ‘কোভিড-১৯ টেলিহেলথ সেন্টার’। করোনা মহামারীর সময় মানুষের হাতের মুঠোয় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়ায় এই প্রকল্প এ বছর ‘আইসিটি এপ্লিকেশন: বেনেফিটস ইন অল অ্যাসপেক্টস অব লাইফ’ ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্য ইনফরমেশন সোসাইটি (ডব্লিউএসআইএস) পুরস্কার তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্যোগ ও বাস্তবায়নের বড় ধরনের স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হয়।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের আইসিটি সংক্রান্ত বিশেষায়িত সংস্থা আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদর দপ্তরে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে গত বুধবার এ পুরস্কার দেয়া হয়। এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর (যুগ্ম-সচিব) ও ই-গভার্নেন্সের চিফ স্ট্র্যাটেজিস্ট মো. ফরহাদ জাহিদ শেখ এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
করোনাসংকট মোকাবিলায় সারা বিশ্ব যখন হিমশিম খেয়েছে, তখন বাংলাদেশ সরকার নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিয়ে কাজ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় মহামারির এই সংকট নিরসনে নাগরিকদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপ’র সহায়তায় পরিচালিত এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এর উদ্যোগে এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় শুরু হয় ‘কোভিড-১৯ টেলিহেলথ সেন্টার’ কার্যক্রম।
এই সেন্টারের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীদের দক্ষ চিকিৎসকদের মাধ্যমে বিনামূল্যে বিভিন্ন চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ, নির্দেশনা ও রেফারেল সেবা দেয়া হয়। অন্যান্য সেবা যেমন- খাদ্য ও ওষুধ সহায়তা, অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা ইত্যাদি সার্ভিসের জন্য সহায়তা দেয়া হয়। একটি নির্দিষ্ট নম্বরের (০৯৬৬৬৭৭৭২২২) মাধ্যমে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের টেলি স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হচ্ছে। এই টেলিহেলথ সার্ভিসের আওতায় ৯৫ শতাংশ রোগীকে বাড়িতে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয় এবং বাকি পাঁচ শতাংশকে হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেন্টার থেকে সেবা প্রাপ্ত ৯৯ শতাংশ রোগী সেবা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এবং মৃত্যু হার হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশে। ২০২০ সালের ১৩ জুন চালু হওয়া এই কলসেন্টার ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ‘কোভিড-১৯ টেলিহেলথ সেন্টার’ সাত লাখ চার হাজার ৮৯০ জন রোগীকে ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৬৮টি টেলিহেলথ পরিষেবা দিয়েছে।
এটুআই কর্তৃক জনগণের দোরগোড়ায় সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত অসংখ্য উদ্ভাবনী উদ্যোগের মধ্যে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ বিগত বছরগুলোতে ডব্লিউএসআইএস পুরস্কার অর্জন করেছে। ওই উদ্যোগগুলো যথাক্রমে ২০১৪ সালে ডিজিটাল সেন্টার; ২০১৫ সালে জাতীয় তথ্য বাতায়ন; ২০১৬ সালে সেবা পদ্ধতি সহজিকরণ-এসপিএস, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনলাইন ছাড়পত্র, শিক্ষক বাতায়ন এবং কৃষকের জানালা; ২০১৭ সালে মাল্টিমিডিয়া টকিং বুক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিমেডিসিন প্রকল্প, নাগরিক সেবা উদ্ভাবনে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ও ই-নথি; ২০১৮ সালে মুক্তপাঠ ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম; ২০১৯ সালে শিক্ষক বাতায়ন ও মোবাইলের মাধ্যমে বয়স যাচাই ও বিবাহ নিবন্ধন প্রকল্প; ২০২০ সালে ই-বিজনেস ক্যাটাগরিতে একশপ এবং ই-এমপ্লয়মেন্ট ক্যাটাগরিতে দক্ষতা, কর্মসংস্থান ও এন্টারপ্রেনারশিপ বিষয়ক সমন্বিত ইন্টেলিজেন্স প্ল্যাটফর্ম।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিপ সেন্টার তৈরি করছে দক্ষিণ কোরিয়া। এ কাজে ২৩ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হবে, যার সিংহভাগ দেবে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ছয়টি মৌলিক প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে বিনিয়োগবৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার, যার মধ্যে চিপ, ডিসপ্লে এবং ব্যাটারি অন্যতম। এই খাতগুলোতে দেশটির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো আগে থেকেই সমৃদ্ধ।
বুধবার এক অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারণী বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক ইওল বলেন, ‘৩০০ ট্রিলিয়ন (৩ কোটি কোটি) উয়নের বিশাল বেসরকারি বিনিয়োগে রাজধানীতে বিশ্বের বৃহত্তম স্কেল সিস্টেম সেমিকন্ডাক্টর ক্লাস্টার তৈরি করবে দক্ষিণ কোরিয়া। …গতি গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাস্টার প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।’
পৃথক এক বিবৃতিতে এএফপিকে স্যামসাং জানিয়েছে, পরবর্তী দুই দশকে ক্লাস্টারে ৩০০ ট্রিলিয়ন উয়ন বিনিয়োগ করবে স্যামসাং। এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ক্লাস্টার তৈরির প্রকল্প ২০৪২ সাল নাগাদ শেষ হবে।
বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত মাইক্রোচিপের সিংহভাগ তৈরি করে কেবল দুটি প্রতিষ্ঠান। এদের একটি দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং অপরটি তাইওয়ানের টিএসএমসি।
চিপ সরবরাহ স্থিতিশীল রাখা এখন বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও তুঙ্গে। গত বছর মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দক্ষিণ কোরিয়া সফরে উন্নত চিপের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্ব প্রকাশ পায়। সে সময় পিয়ংতেকে স্যামসাংয়ের চিপ কারখানায় গিয়ে ‘একই মতাদর্শে বিশ্বাসী অংশীজনদের মধ্যে’ প্রযুক্তি বিনিময়ের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
আরও ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। আসন্ন মাসগুলোতে কয়েক ধাপে কাজটি করা হবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। পাশাপাশি ৫ হাজার খালি পদে নিয়োগ স্থগিত করা হচ্ছে। খবর দ্য ভার্জের।
গত নভেম্বরে মেটার ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণার মাস চারেকের মধ্যেই এল নতুন ঘোষণা।
নতুন করে কর্মী ছাঁটাই শুরু হবে চলতি সপ্তাহেই। শুরুতে এর প্রভাব পড়বে মেটার নিয়োগ-সংক্রান্ত বিভাগে। এপ্রিলে প্রযুক্তি-সংক্রান্ত কাজে যুক্ত কর্মীদের জানানো হবে। আর ব্যবসায়-সংক্রান্ত কাজে যুক্ত কর্মীদের ছাঁটাই করা হবে মে মাসে।
নতুন ঘোষণার কথা এরই মধ্যে কর্মীদের জানিয়েছেন জাকারবার্গ। ফেসবুকেও পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, ‘চলতি বছরে যত দ্রুত সম্ভব এই প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন সম্পন্ন করার আশা করছি যেন অনিশ্চয়তার মুহূর্ত পেরিয়ে আমরা সামনের গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোযোগী হতে পারি।’
ফেব্রুয়ারিতে মেটার আর্থিক বিবরণী উপস্থাপনের সময় চলতি বছরকে ‘কার্যকারিতার বছর’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন জাকারবার্গ। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে পরিবর্তন এনে মাঝপর্যায়ের কিছু ব্যবস্থাপক বাদ দেয়ার কথা বলেছিলেন যেন দ্রুত সিদ্ধান্তগ্রহণ সম্ভব হয়।
কর্মীছাঁটাই এবং আয় হ্রাস পাওয়ার পরও মেটাভার্স তৈরিতে বিপুল বিনিয়োগ করে যাচ্ছে মেটা। পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিনির্ভর টুল তৈরির ঘোষণাও দিয়েছে।
গত কয়েক মাসে প্রযুক্তি খাত থেকে প্রায়ই কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা এসেছে। আমাজন, গুগল, মাইক্রোসফট, স্পটিফাই, ভিমিও, ডোরড্যাশসহ অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানও একই পথে হেঁটেছে। কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানগুলো বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কথাই বলেছে বারবার।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের নেতৃত্বে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তর এবং সংস্থার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কাজ করছে এসপায়ার টু ইনোভেটের (এটুআই) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার প্রতিবন্ধী নাগরিকবান্ধব স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় নাগরিক এবং বিশেষজ্ঞদের মতামত নিতে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এবং কর্মসংস্থান ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে ছিলেন এটুআই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর, চিফ ই-গর্ভনেন্স স্ট্র্যাটেজিট ফরহাদ জাহিদ শেখ, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং এআইএমএস ল্যাবের পরিচালক ড. খন্দকার এ মামুন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের ডাটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. সুলতান মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধক হিসেবে ছিলেন এটুআই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ন্যাশনাল কনসালটেন্ট অ্যাক্সেসিবিলিটি ভাস্কর ভট্টাচার্যী এবং সেমিনারের মডারেটর ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রভাষক নবনীতা চক্রবর্তী।
সেমিনারে অফলাইন এবং অনলাইন দুই মাধ্যমেই দর্শক হিসেবে ছিলেন প্রতিবন্ধী নাগরিকসহ আরও অনেকে।
বিশ্বের ধনীদের তালিকায় ইলন মাস্কের যাত্রা যেন রোলার কোস্টারের মতো। এই উঠছেন তো এই নামছেন। নতুন খবর হলো, দুই মাসের কিছু বেশি সময় পর ফের শীর্ষস্থান ফিরে পেয়েছেন টেসলা ও টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। এই হিসাব অবশ্য ব্লুমবার্গের। ফোর্বসের তালিকায় ইলন মাস্ক দ্বিতীয়।
ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার সূচকে ইলন মাস্কের সম্পদের পরিমাণ বলা হয়েছে ১৮৭ বিলিয়ন বা ১৮ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। একই ওয়েবপেজে এই পরিমাণ অর্থ দিয়ে কী কী কেনা বা করা যাবে, তার একটা আনুমানিক হিসাব দেয়া হয়েছে।
ইলন মাস্ক তার ১৮৭ বিলিয়ন ডলার দিয়ে বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারদরে ২২৭ কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনতে পারবেন। আর স্বর্ণ কিনতে চাইলে পাবেন ১০ কোটি ৩০ লাখ ট্রয় আউন্স। এক ট্রয় আউন্স সমান ৩১ দশমিক ১০৩৫ গ্রাম। সে হিসাবে ৩ হাজার ২০৩ টনের বেশি স্বর্ণ কিনতে পারবেন তিনি।
মাস্কের বর্তমান সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ০ দশমিক ৮০৩ শতাংশ, যা বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ ধনীর মোট সম্পদের ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
গত ডিসেম্বরে মাস্ককে ছাড়িয়ে ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার সূচকের শীর্ষে ওঠেন ফরাসি বিলাসপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচের সিইও বার্নার্ড আর্নল্ট। সে সময় টেসলার শেয়ারদর কমে গেলে শীর্ষস্থান হারিয়েছিলেন মাস্ক।
সূচক অনুযায়ী আর্নল্ট এখন মাস্কের ঠিক পরেই আছেন। তার সম্পদ ১৮৫ বিলিয়ন বা ১৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের।
ইলন মাস্ককে মোটামুটি সব্যসাচী বলা চলে। তার দুই হাত সমান তালেই চলে। টেসলা ও টুইটার তো বটেই, রকেট তৈরির প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স ও নিউরোটেকনোলোজি প্রতিষ্ঠান নিউরালিংকেরও প্রধান তিনি।
মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসকে টেলিযোগাযোগ খাতের সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী বলা হয়। বছরের প্রথম প্রান্তিকে স্পেনের বার্সেলোনায় শুরু হয় এই মেলা। চলতি বছরের আসর বসেছে আজ। এএফপি বলছে, মুঠোফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ‘উদ্ভাবনের সুনামি’ বইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
জোর প্রচারণার একটা উদ্দেশ্য হলো টেলিযোগাযোগ খাতে সুদিন ফেরাতে চায় প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষ করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে ফের মুনাফার দেখা পেতে চায়।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইডিসির হিসাবে, ২০২১ সালের তুলনায় গত বছর স্মার্টফোন বিক্রি ১১ দশমিক ৩ শতাংশ কমে গিয়েছে। চলতি বছর তা আরও কমতে পারে বলে আরেক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের অনুমান। আবার সরকারি নিলামে ফাইভজি তরঙ্গ কিনে রাখলেও গ্রাহকদের কাছে ইন্টারনেট প্যাকেজ বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছে টেলিকম অপারেটররা।
চার দিনের প্রদর্শনীতে মুঠোফোন তৈরির প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে, নোকিয়া, স্যামসাং, অপো, শাওমির পাশাপাশি অরেঞ্জ, ভেরাইজন এবং চায়না মোবাইলের মতো নেটওয়ার্ক অপারেটররাও পণ্য ও সেবা নিয়ে হাজির হয়েছে। এ বছর ৮০ হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চলুন এএফপির ছবিতে দেখা যাক মেলার প্রথমদিনের চিত্র।
চীনা মালিকানাধীন সেগওয়ের হাইড্রোজেন ও বিদ্যুচ্চালিত হাইব্রিড মোটরসাইকেলের পরীক্ষামূলক সংস্করণ (প্রোটোটাইপ) দেখানো হয় কংগ্রেসে।
দক্ষিণ কোরীয় নেটওয়ার্ক অপারেটর এসকে টেলিকমের উড়াল ট্যাক্সি তৈরির প্রতিষ্ঠান ইউএএমের স্টলে উড়ুক্কু যানটি পরখ করে দেখেন দর্শনার্থীরা।
একসময়ের জনপ্রিয় মুঠোফোন নির্মাতা নোকিয়ায় বদলের হাওয়া লেগেছে। শুরুতেই বদলেছে চিরচেনা লোগো। নোকিয়ার ফিনিশ প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পেকা লুন্ডমার্ক নতুন লোগো উন্মোচন করেন গতকাল রোববার।
মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন স্পেনের রাজা ষষ্ঠ ফিলিপ (মাঝে) এবং প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ (বাঁয়ে)।
এবারের কংগ্রেসে ফোল্ডেবল স্মার্টফোনে আগ্রহ ছিল দর্শনার্থীদের। ছবিটি অপোর স্টলের।
শাওমি ইন্টারন্যাশনালের চীনা পণ্য-প্রধান আবি গো মানবাকৃতির (হিউম্যানয়েড) রোবট ‘সাইবার ওয়ান’ নিয়ে কথা বলেন।
মেলার মেটাভার্স স্ট্যান্ডে চেহারা শনাক্তের নতুন প্রযুক্তি দেখানো হয়।
পুরোনো গৌরব ফিরে পেতে কর্মকৌশল (স্ট্র্যাটেজি) পরিবর্তন করছে এক সময়ের বহুল জনপ্রিয় মোবাইল ফোন ব্র্যান্ড নকিয়া। তারই অংশ হিসেবে এবার লোগো বদলে নতুন রূপে হাজির হতে যাচ্ছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটি।
গত রোববার রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে নকিয়ার প্রধান নির্বাহী পেকা লুন্ডমার্ক লোগো পরিবর্তনের বিষয়টি সামনে আনেন। শুধু লোগো পরিবর্তন নয়, ব্যবসায়িক প্রসার বাড়াতে ফিনল্যান্ডের কোম্পানিটি আরও কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
প্রায় ৬০ বছর পর নকিয়া তার লোগো পরিবর্তনে হাত দিয়েছে। যেনতেন পরিবর্তন নয়, বদলে গেছে পুরোটাই। নতুন লোগোতে নকিয়ার আগেই সেই ফন্ট বা রঙের কোনো মিলই নেই। পুরোপরি ভিন্ন ধাঁচে হাজির হচ্ছে ইংরেজি পাঁচ অক্ষরের নকিয়া লেখাটি।
ফিচার ফোন দিয়ে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পেলেও স্মার্টফোনের যুগে এসে নকিয়ার সেই রূপ ম্লান হয়ে যায়। বেশ কয়েকবার আগের রূপে ফেরার চেষ্টা করতে দেখা গেছে কোম্পানিটিকে। কিন্তু বহুবিধ কারণে সেই ফেরা আর হয়ে ওঠেনি।
রয়টার্সকে দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে লুন্ডমার্ক নকিয়ার এবারের কর্মপরিকল্পনা ঘিরে আশার বাণী শোনান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা শুধু এমন ব্যবসায় থাকতে চাই যেখানে আমরা বিশ্ব নেতৃত্ব দেখতে পারি।’
বছর দুয়েক আগে ধুঁকতে থাকা কোম্পানিটির শীর্ষ পদে আসেন লুন্ডমার্ক। সেসময় তিনি তার কর্মকৌশলগুলোকে তিনটি ধাপে ভাগ করে নেন। সেগুলো হলো পুনর্গঠন, গতিবৃদ্ধি এবং সম্প্রসারণ। লুন্ডমার্কের মতে, প্রথম ধাপটি শেষ। এবার দ্বিতীয় ধাপ শুরু হতে যাচ্ছে।
‘গ্রামীণফোন অ্যাকাডেমির উদ্যোগে গ্রামীণফোন অ্যাকাডেমি- সিসকো নেটওয়ার্ক অ্যাকাডেমি ফোরআইআর লার্নিং চ্যালেঞ্জ’ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরার জিপিহাউসে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘গ্রামীণফোন অ্যাকাডেমি নাইট’। রোববার গ্রামীণফোনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত বছর দেশের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে টাউন হল এবং ফোরআইআর (চতুর্থ শিল্প বিপ্লব) লার্নিংয়ের আওতায় সাইবার-সিকিউরিটি, আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংক) এবং পাইথনের ওপর কোর্স নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে উন্মুক্ত অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম গ্রামীণফোন অ্যাকাডেমি। নারীদের জন্য পৃথক প্রতিযোগিতার আয়োজন করে সংস্থাটি।
প্রতিযোগিতায় আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; ইসলামী প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়; ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ; ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি; ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি; ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শরীয়তপুর -৩ আসনের সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির ভাইস-চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দিন আহমেদ।
গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান এবং প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা সৈয়দ তানভির হোসেন ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার এবং জ্যেষ্ঠ অনুষদ সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে নাহিম রাজ্জাক বলেন, ‘তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ক্ষমতায়নে গ্রামীণফোন অ্যাকাডেমির এটি উদ্ভাবনী এবং অনন্য উদ্যোগ। এমন উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে এই ইকোসিস্টেমে সম্পৃক্ত অন্যান্য অংশীজন ও প্রতিষ্ঠানগুলো ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এমন আরও নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’
মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাই। শিক্ষার্থীদের নতুন কিছু শেখার এবং দেশে স্কিল-গ্যাপ দূর করার লক্ষ্যে হাতে-কলমে সমাধানের সুযোগ তৈরি করার জন্য গ্রামীণফোন অ্যাকাডেমিকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
ইয়াসির আজমান বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনলাইনে নিরাপদ রাখতে গ্রামীণফোন বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তরুণদের ক্ষমতায়নে প্রয়োজনীয় দক্ষতায় দক্ষ করে তুলতে এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ অর্জনে’ কাজ করে যাচ্ছি। তরুণদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তুলতে নিজেদের অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে।’