বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

জাপোরিঝিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ

জাপোরিঝিয়ার পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৮:৫৭

জাপোরিঝিয়ায় রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সঙ্গে সর্বশেষ বিদ্যুৎ সংযোগটি হারিয়েছে ইউক্রেন। জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থার বরাতে গতকাল রোববার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানায়, ইউরোপের বৃহত্তম এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি এখন ইউক্রেনের গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য একটি রিজার্ভ লাইনের ওপর নির্ভর করছে। ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা বলছে, জাপোরিঝঝিয়ার ছয়টি পরমাণু চুল্লির মধ্যে কেবল একটিই এখন চালু রয়েছে।

এক বিবৃতিতে আইএইএ জানায়, জাপোরিঝিয়া পরমাণুকেন্দ্রের সর্বশেষ উন্নয়ন সম্পর্কে দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য তথ্য তারা পেয়েছে। আইএইএর পরিদর্শকদলের বিশেষজ্ঞদের ইউক্রেনের ঊর্ধ্বতন কর্মীরা বলেছিলেন, জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চতুর্থ কর্মক্ষম ৭৫০ কিলোভোল্ট পাওয়ার লাইনটি বিকল হয়ে গেছে। বাকি তিনটি আরও আগেই সংঘর্ষে বিকল হয়েছে।

জাপোরিঝিয়ার এই পরমাণু কেন্দ্রটিতে গোলাবর্ষণের জন্য ইউক্রেন এবং রাশিয়া দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেন, এই পরমাণুকেন্দ্রটির অখণ্ডতা বেশ কয়েকবার লঙ্ঘিত হয়েছে।

দক্ষিণ ইউক্রেনের এনেরহোদার শহরে অবস্থিত জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক কেন্দ্রটি এখনো ইউক্রেনীয় কর্মীরা পরিচালনা করেন। তাদের মতে, রুশ সৈন্যরা এটিকে একটি সামরিক ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করছে এবং সেখানকার কর্মীদের বন্দুকের মুখে আটকে রেখেছে।

মধ্যস্থতার প্রস্তাব তুরস্কের:

জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিপর্যয়ের যে আশঙ্কা রয়েছে, তা এড়াতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। কয়েক সপ্তাহ ধরে কেন্দ্রটির আশপাশে রাশিয়ার গোলাবর্ষণের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার উদ্বেগের মধ্যেই এই প্রস্তাব দিলেন তিনি। গত শনিবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক ফোনালাপে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেন এরদোয়ান। তিনি বলেন, জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরে চলমান সমস্যা সমাধানে তুরস্ক মধ্যস্থতায় ভূমিকা রাখতে পারে। যেমন, ইউক্রেন-রাশিয়ার খাদ্যশস্য সংক্রান্ত বিষয়ের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রেখেছিল আঙ্কারা।

একই প্রস্তাব দিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলেছেন এরদোয়ান। তবে এ বিষয়ে কিছু জানায়নি কিয়েভ।


ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে লালন করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে: শ্রিংলা

ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এমনই, যা পারস্পরিক অব্যাহত সহযোগিতার মাধ্যমে লালন করে এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘এই সম্পর্ক শুধু সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে না, দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের নতুন উদ্যমে এই সম্পর্কের গতি ধরে রাখতে হবে।’

বিশ্ব রাজনীতি ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আলোচনা করতে প্রতিম রঞ্জন বসুর সঙ্গে একটি পডকাস্টে এসব কথা বলেন বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা শ্রিংলা।

প্রতিম রঞ্জন বসু একজন মিডিয়া ভাষ্যকার, গবেষক ও পরামর্শদাতা। এ ছাড়াও সংবাদপত্রে কলাম লেখার পাশাপাশি প্রায়ই সময় জাতীয় টেলিভিশনেও দেখা যায় তাকে।

২০২২-২৩ সালে ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির প্রধান সমন্বয়ক শ্রিংলা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন; যা ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় হিসেবে পরিচিত। দুই দেশ একসঙ্গে সম্পর্কের নানা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে।

নতুন করে ভারতীয় ঋণের সম্ভাবনা সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিটি দেশেরই ঋণ শোষণের ক্ষমতা রয়েছে।

হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ সম্পর্ক সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে এবং নির্ধারিত ঋণসীমাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে অবশ্যই এগিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করা খুবই জরুরি।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘প্রতিবেশী প্রথম’ নীতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, ভারতীয় ঋণের ৫০ শতাংশ প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য। ‘আপনার প্রতিবেশীদের বাদ দিয়ে আপনি উন্নতি ও বিকাশের আশা করতে পারেন না।’

সাবেক এই ভারতীয় কূটনীতিক বলেন, কোভিড-১৯ চলাকালে ভ্যাকসিন আদান-প্রদান, পেঁয়াজ রপ্তানিতে সাম্প্রতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি এবং বাণিজ্য সুবিধাগুলো থেকে সুফল আসছে।

তিনি আরও বলেন, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যুৎ সহযোগিতার বিকাশ হবে এবং শ্রীলংকায় সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে একটি বৈদ্যুতিক ক্যাবল ব্যবস্থা দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিয়ে আসবে।

মালদ্বীপে ‘বয়কট ইন্ডিয়া’ প্রচারণা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শ্রিংলা বলেন, সম্পর্ক এতই মজবুত যে ‘বয়কট ইন্ডিয়া’ প্রচারে তাতে ব্যাঘাত ঘটার সুযোগ নেই।

পর্যটন, চিকিৎসা সেবা ও শিক্ষা খাতের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের খুব নিরাপদে বলতে পারি যে, এই দুই দেশের মানুষের মধ্যে অত্যন্ত দৃঢ় সখ্য ও ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।’

শ্রিংলা আরও বলেন, জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী মোদির নীতিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে প্রতিবেশীদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত বিস্তৃত ও দূরদর্শী নীতি।

রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে শ্রিংলা বলেন, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে নেই তবে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নির্দেশনায় দেশের জন্য কাজ করতে পেরে তিনি খুশি। ভারতের ব্যাপক রূপান্তর হয়েছে এবং সাফল্য অর্জন করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ভারত একটি বহুমেরু বিশ্ব চায়; যার অন্যতম মেরু হবে দেশটি। মোদির অধীনে ভারত সমস্ত প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। দেশের ভেতর ও বাইরে উভয় দিক থেকেই প্রতিরোধের মুখোমুখি হলেও এগিয়ে যেতে প্রস্তুত।

ভারত-মার্কিন সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে বলে উল্লেখ করেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। তিনি বলেন, ‘মার্কিন সংস্থাগুলো ভারতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। সম্পর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এতে কোনো প্রভাব পড়বে না।’

ইন্দো-প্যাসিফিক ও কোয়াড যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এতে সহযোগিতা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শ্রিংলা বলেন, এডেন উপসাগর ও সুয়েজ খাল দিয়ে সামুদ্রিক বাণিজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, সমুদ্রে নিরাপত্তা প্রদানে ভারতের ভূমিকা পশ্চিম ভারত মহাসাগর এবং সম্ভবত পূর্ব ভারত মহাসাগরেও বাড়বে।

তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক নিরাপত্তায় আমাদের আরও জোরালো অংশগ্রহণ দেখাতে হবে। আজ আমরা আরও সক্রিয় হয়েছি। এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা এর অংশ।’

শ্রিংলা আরও বলেন, ‘এক্ষেত্রে বৃহত্তর স্থিতিশীলতা দেখা যাবে বলে আমরা আশা করি।’


ওমরাহ ভিসার অপব্যবহারের ব্যাপারে হুঁশিয়ার করল সৌদি

ফাইল ছবি।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ওমরাহ ভিসার অপব্যবহার রোধে হুঁশিয়ার করেছে সৌদি সরকার। ধর্মীয় উদ্দেশ্য ছাড়া কর্মসংস্থান বা অন্য কোনো কাজে যেন এই ভিসার ব্যবহার না করা হয়, সেজন্য ওমরাহ পালনকারীদের প্রতি সতর্কতা জারি করেছে দেশটির হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আরব আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ। ভিসার নির্দিষ্ট প্রবিধানগুলো মেনে চলার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে সৌদির হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ওমরাহ পালনের লক্ষ্যে ইস্যু করা ভিসাগুলো কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বা এ সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘এক্স’-এ নিজেদের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলেছে, ওমরাহ পালনের ধর্মীয় উদ্দেশ্য যথাযথভাবে পূরণের ওপর জোর দিতে হবে। বিবৃতিতে ওমরাহ পালনকারীদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দেশ ত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে এই ভিসা ব্যবহারের যেন কোনো প্রকার চেষ্টা না করা হয়, সে জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে।


পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টি-বজ্রপাতে ৩৯ জনের মৃত্যু

পাকিস্তানে প্রবল বৃষ্টিপাতে প্লাবিত এলাকা। ছবি: বিবিসি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টি এবং বজ্রপাতে কমপক্ষে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক দিন ধরেই ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফসল কাটার সময় বেশ কয়েকজন কৃষক বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন। আকস্মিক বন্যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং পরিবহন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। বেশ কিছু ফুটেজে দেখা গেছে বৃষ্টির পানিতে কৃষিজমি ডুবে গেছে।

পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন সেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগও বাড়ছে। শুধু পাকিস্তান নয়, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই এখন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এর আগে ২০২২ সালে পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চলে নজিরবিহীন বন্যায় ১ হাজার ৭০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া আহত হয় আরও কয়েক হাজার মানুষ। এতে কয়েক লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন এবং কয়েক মাস ধরে বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাব দেখা দেয়। সে বছর খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের কিছু অঞ্চল বন্যায় বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। চলতি বছরের বন্যা এবং বজ্রপাতেও সেসব এলাকা আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আগামী কয়েক দিনে আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতির বিষয়েও সতর্ক করা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার থেকে রোববারের মধ্যে সেখানে বজ্রপাতে ২১ জন প্রাণ হারিয়েছে। পশ্চিম বেলুচিস্তান প্রদেশে কমপক্ষে আটজনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া সোম এবং মঙ্গলবার প্রদেশের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

বালুচ শহরের মিউনিসিপ্যাল কমিটির চেয়ারম্যান নুর আহমেদ পাকিস্তানের সংবাদপত্র ডনকে বলেছেন, পাসনিকে এই মুহূর্তে একটি বড় হ্রদের মতো দেখাচ্ছে।

এদিকে পাকিস্তানের প্রতিবেশী দেশ আফগানিস্তানেও ভারী বন্যার খবর পাওয়া গেছে। আফগান কর্তৃপক্ষ রোববার জানিয়েছে, সেখানে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন এবং শত শত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে।

জাতিসংঘের গ্লোবাল ক্লাইমেট রিস্ক ইনডেক্স অনুসারে, পাকিস্তানে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পঞ্চম দেশ হিসাবেও স্থান পেয়েছে।

বিষয়:

ইসরায়েলকে আরও কঠোর হুঁশিয়ারি দিল ইরান

ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরি কানি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলকে আরও কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান। দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলি বাঘেরি কানি বলেছেন, ইসরায়েল যদি আবার আক্রমণ চালায়, তবে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তার জবাব দেবে ইরান। আজ মঙ্গলবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাঘেরি বলেন, ইসরায়েলের যেকোনো প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তেহরানের পাল্টা আক্রমণ হবে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। ইরান এবার জবাব দেওয়ার জন্য ১২ দিন অপেক্ষা করবে না; এমনকি, এক ঘণ্টাও দেরি করবে না।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সকে ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান না নিতে আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল ফজল শেকারচি। তিনি বলেন, ইরান প্রমাণ করেছে যে তারা যুদ্ধবাজ নয় ও যুদ্ধের বিস্তার চায় না। তবে ইসরায়েল যদি প্রতিশোধ বা উসকানিমূলক কোনো আগ্রাসন চালায়, তবে ইরান আরও শক্তিশালী জবাব দেবে।

গত শনিবার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে ১৩ জনকে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় তেহরান। দামেস্কে ১ এপ্রিলের ওই হামলার পরপরই কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল ইরান।

ইরানের হামলার জবাবে ইসরায়েল ঠিক কী পদক্ষেপ নেবে, তা নির্দিষ্ট করেননি জেনারেল হারজি। তাছাড়া কবে, কখন ইসরায়েল এই জবাব দেবে, তার কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি তিনি। ইসরায়েলের মিত্ররা ইরানের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তবে তারা এই হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।

‘পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার সক্ষমতা ইরানের আছে’

ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর ইরানকে সরাসরি সমর্থন দেয়নি চীন। তবে এবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই যা বললেন, তাতে দেশটি ইরানের পক্ষে আছে বলেই মনে হতে পারে। তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ইরানের। এ অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা যাতে না হয়, তারা সেটি দেখছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সোমবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। এ সময় ওয়াং ই বলেন, ইরান নিজেদের প্রতিরক্ষা ও সার্বভৌমত্বের চিন্তা করে হামলা করেছে বলে জানিয়েছে। সিরিয়ায় ইরানি দূতাবাসে হামলার তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

এ নিয়ে মঙ্গলবার প্রকাশিত চীনের বার্তা সংস্থা শিনহুয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক দেশগুলোতে হামলা না করার দিকে যেভাবে ইরান জোর দিয়েছে তাতে সমর্থন দিয়েছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ সময় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান ওয়াং ইকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা নিয়ে ইরানও চিন্তিত। এ নিয়ে তারা পরিকল্পনা করছে। এই উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে সে জন্য তারা সব করতে রাজি।

ইরানের হামলার পর সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফাহিয়ান আল সৌদের সঙ্গেও কথা বলেন ওয়াং ই। মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে রিয়াদের সঙ্গে কাজ করতে বেইজিং প্রস্তুত বলে জানান তিনি। এমনকি গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়েও কাজ করবে চীন।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে একজন কমান্ডারসহ ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ড কর্পসের সাত কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ হামলার জবাবে গত রোববার ভোরে ইসরায়েলের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েল দাবি করেছে, ইরানের হামলায় খুব সামান্যই ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্রই আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জর্ডান সহায়তা করেছে।

ইরানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে ইসরায়েল কী করে, তা দেখতে উদগ্রীব পুরো বিশ্ব। তবে এখনই ইসরায়েলকে কিছু না করার পরামর্শ দিয়েছে পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো। উত্তেজনা না বাড়ানোর জন্য সোমবার ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্রগুলো আহ্বান জানিয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ইসরায়েলকে সংযত থাকতে বলেছেন।


ইসরায়েল কি ইরানের পরমাণু স্থাপনায় আঘত হানবে

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:২৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াংয়ির সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির-আব্দুল্লাহিয়ানের টোলফোনে কথোপকথন হয়েছে। এই আলাপে উঠে আসে সম্প্রতি ইসরায়েলে ইরানের হামলার বিষয়টি। বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, এই টেলিফোন আলাপে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কোতে ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলর হামলার বিষয়টি ওয়াংয়িকে অবগত করেন এবং এই হামলার জবাবে হিসেবে ইরান ইসরাইলের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে বলে জানায়।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির আব্দুল্লাহিয়ান ওয়াংয়িকে আরও বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ইসরায়েলে এই হামলার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া দেয়নি এবং ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের প্রতিক্রিয়ায় ইরানের নিজের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। বর্তমানে ইরান-ইসরায়েল আঞ্চলিক পরিস্থিতি ‘খুবই স্পর্শকাতর’ উল্লেখ করে আমির আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, ইরান ‘সংযম করতে ইচ্ছুক’ এবং আর উত্তেজনা বাড়ানোর কোনো ইচ্ছা নেই।

জবাবে ওয়াংয়ি বলেন, ইরানের কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা ও বিরোধিতা করেছে চীন এবং এটিকে আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন এবং অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করছে। চীন ইসরায়েলে ইরানের হামলাকে প্রতিক্রিয়া হিসেবে এবং আত্মরক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছে।

এদিকে, ইরানের এই হামলার জবাব ইসরায়েল অবশ্যই দেবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা। ইসরায়েলে হামলার পর ইরানের পরমাণু স্থাপনা সাময়িক বন্ধ রয়েছে। আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার প্রধান বলেছেন, ইরান নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে তাদের পারমাণবিক স্থাপনা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। চলতি সপ্তাহের ইসরায়েলের ওপর কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার পর তেহরান এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। খবর এএফপির।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে বৈঠকের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) প্রধান রাফায়েল গ্রোসিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল; ইরানের হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলি হামলার শঙ্কা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন কি না।

জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা সর্বদা এমন হামলার শঙ্কা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমি আপনাদের যা বলতে পারি তা হলো ইরানে অবস্থানকারী আমাদের পরিদর্শকদের দেশটির সরকার জানিয়েছে, আমরা প্রতিদিন যেসব পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শন করছি; নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে সেসব স্থাপনা বন্ধ থাকবে।’

বিষয়:

কাশ্মীরে নৌকাডুবে নিখোঁজ ১৫ জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারত-শাসিত কাশ্মীরের ঝিলম নদীতে মঙ্গলবার একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার পর উদ্ধারকারীরা নিখোঁজ প্রায় ১৫ জনকে খুঁজে বের করার প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কর্মকর্তারা এ কথা জানিয়েছেন।

নিখোঁজদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু, যারা স্কুলে যাওয়ার পথে শ্রীনগর শহরের ঝিলাম নদীতে নৌকা উল্টে যাওয়ায় নিখোঁজ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাশ্মীরের সিনিয়র এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর প্রায় ১৫ জন নিখোঁজ। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু ও রয়েছে।’

কাশ্মীরের হিমালয় উপত্যকা জুড়ে কয়েকদিনের বৃষ্টির পর নদীটি ফেঁপে উঠেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রবল স্রোতে নৌকাটি উল্টে যায়।

শ্রীনগরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বিলাল মহিউদ্দিন ভাট এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের উদ্ধারকারী দল সেখানে রয়েছে। আমরা ঘটনার বিস্তাারিত জানার চেষ্টা করছি।’

অনেক অফিস কর্মী এবং স্কুলছাত্রীরা রাস্তার যানজট এড়াতে সকালে নদীতে নৌকা নিয়ে পারাপার হয়।

পার্বত্য অঞ্চলের রাস্তায় দুর্ঘটনা সাধারণ ঘটনা কিন্তু যাত্রীবাহী নৌকা বিপর্যয় বিরল।


মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনা

শনিবার রাতে ইসরায়েলের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। ফাইল ছবি: বিবিসি
আপডেটেড ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:১৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানের নজিরবিহীন ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েল প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বেশকিছু নিরাপত্তা বিশ্লেষক বিভিন্ন গণমাধ্যমকে বলেছেন, ইসরায়েল শিগগিরই কিংবা কিছুদিন পরে ইরানের হামলার জবাব দেবে- এ ব্যাপারে তাদের কোনো সন্দেহ নেই। চলমান এ পরিস্থিতিতে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে।

শনিবার রাতে ইরান প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের ওপর সরাসরি হামলা চালায়। এসব হামলায় তারা শত শত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করে। ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে অপারেশন ট্রু প্রোমিজ নামে অভিযান চালিয়েছে ইরান। তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে দেশটি। দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার প্রতিশোধ নিতে শনিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে ইসরায়েলের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইরান। এবারই প্রথম ইসরায়েলের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালাল ইরান। তবে ইরানের ছোড়া ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্রের ৯৯ শতাংশই ভূপাতিত করার দাবি করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এদিকে ইরানের ওই হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল।

নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার জবাবে ইরানে হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে ইসরায়েল। রোববার রাতে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা পশ্চিমা নেতাদের সতর্কতা সত্ত্বেও ‘আক্রমণাত্মক এবং প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ উভয়ই অনুমোদন করেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। তবে কখন কীভাবে এটি কার্যকর হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। জানা গেছে, ইরানে হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সবাই একমত হতে পারেননি।

ইরানের হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রতিশোধ না নিতে। একই সঙ্গে তিনি নেতানিয়াহুকে তার দেশের পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে ‘সতর্কতার সঙ্গে ভাবারও’ পরামর্শ দেন। বাইডেনের পরামর্শ মেনে ইসরায়েল তাৎক্ষণিকভাবে ইরানে আক্রমণ না চালালেও তারা বলছে, ইরানে নিজের বেছে নেওয়া উপায় ও সময়ে হামলার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে।

টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, রোববার ইরানি হামলার জবাব দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারণ করতে অন্তত ৩ ঘণ্টা বৈঠক করেছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা। ইসরায়েলের অপর একটি সংবাদমাধ্যম ইসরায়েল হাইয়ুমের প্রতিবেদনে ইসরায়েল সরকারের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘অবশ্যই (ইরানকে) একটি প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।’

ইরান এরই মধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইসরায়েল বা তার সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো ধরনের প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে আরও বড় আক্রমণ চালাবে তারা। অন্যথায় সংঘাত এখানেই সমাপ্ত। অর্থাৎ আক্রমণের পর বল এখন ইসরায়েলের কোর্টে ঠেলে দিয়েছে ইরান। পরবর্তীতে কী হবে তার পুরোটাই নির্ভর করছে ইসরায়েলের পদক্ষেপের ওপর।

ইরান-ইসরায়েলকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে বড় পরিসরে সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই পক্ষকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আরও হামলা-পাল্টা হামলার মাধ্যমে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেন।

গুতেরেস বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের বাসিন্দারা সর্বাত্মক এবং ভয়াবহ সংঘাতের মধ্যে পড়ে গেছে। গোটা অঞ্চল এখন খাদের কিনারে চলে গেছে। বাসিন্দারা একটি পূর্ণমাত্রার ধ্বংসাত্মক সংঘাতের মুখোমুখি। তারা যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে অবস্থান করছেন। এখনই সময় তাদের খাদের কিনার থেকে ফিরিয়ে আনার। আর এ দায়িত্ব যৌথভাবে গোটা বিশ্বের।’

বিশ্ব সংস্থাটির নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি সভার শুরুতে দেওয়া ভাষণে গুতেরেস এসব কথা বলেন। স্থানীয় সময় রোববার বিকেলে ইসরায়েলের অনুরোধে ইরানের হামলা নিয়ে এ সভা ডাকা হয়। এতে স্ব স্ব দেশের অবস্থানের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েল ও ইরানের রাষ্ট্রদূতেরা।

সংঘাতে কোনো পক্ষ নেওয়া জাতিসংঘ মহাসচিবের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না উল্লেখ করে গুতেরেস জানান, তিনি নিশ্চিতভাবে এই সংঘাতে কোনো পক্ষে যাননি।

মধ্যপ্রাচ্যের বড় বড় সামরিক পক্ষগুলো ফের ভয়াবহ সংঘাতে জড়িয়ে যেতে পারে, এমনটি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেকোনো সংঘাতপূর্ণ পদক্ষেপ এড়িয়ে যাওয়া জরুরি। ইতোমধ্যে এখানকার বেসামরিক নাগরিকরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন, তাদের (গাজাবাসী) চরম মূল্য দিতে হচ্ছে। তাই এখনই সময়, সবাইকে যুদ্ধের কিনার থেকে ফিরে আনার।’

জাতিসংঘের মহাসচিব আরও বলেন, ‘(ইরান-ইসরায়েল-গাজা) সংঘাত যাতে আবার উসকে না যায়, তা প্রতিরোধে সবার দায়িত্ব রয়েছে। সবাইকে সক্রিয়ভাবে এই দায়িত্ব পালনের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে।’

সবার যৌথ অংশগ্রহণে এখনই গাজায় যুদ্ধ বিরতি প্রয়োজন উল্লেখ করে গুতেরেস বলেন, ‘সেখানে মানবিক অবস্থা বিপর্যস্ত। এ জন্য সব জিম্মিদের নিঃশর্ত মুক্তি ও বাধাহীনভাবে ত্রাণ তৎপরতা চালাতে দেওয়া দরকার।’

গুতেরেস তার বক্তব্যে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে সংঘাত বন্ধ ও লোহিত সাগরে নৌযান চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক করা নিয়েও কথা বলেন।

ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলায় জড়াবে না যুক্তরাষ্ট্র

ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যদি কোনো পাল্টা হামলা পরিচালনা করে তাতে অংশগ্রহণ করবে না যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রোববার হোয়াইট হাউস এ কথা নিশ্চিত করেছে।

ইরানের হামলার পর এক বিবৃতিতে বাইডেন জানান, তিনি নেতানিয়াহুকে বলেছেন- ইসরায়েল নিজেকে রক্ষার তাৎপর্যপূর্ণ সক্ষমতা দেখিয়েছে এবং নজিরবিহীন হামলাকে পরাজিত করেছে। বিবৃতিতে তিনি ও নেতানিয়াহু সম্ভাব্য ইসরায়েলি প্রতিক্রিয়া বা যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন কি না তা সম্পর্কে কিছু বলেননি বাইডেন।

হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি এক মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেলকে রোববার বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। তবে ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না ওয়াশিংটন। ইরানের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করবে কি না জানতে চাইলে কিরবি বলেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ও দেশটিকে রক্ষায় আমাদের অঙ্গীকার লৌহদৃঢ়। প্রেসিডেন্ট যেমন অনেকবার বলেছেন, আমরা মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর যুদ্ধ চাই না। ইরানের সঙ্গে আমরা যুদ্ধ চাই না। আমি এটুকুই বলব।

কিরবি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার তীব্রতা বাড়ুক আমরা চাই না। আমরা বড় সংঘাত চাই না। রোববার ইসরায়েলের দুই সিনিয়র মন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইসরায়েলের পাল্টা হামলা খুব দ্রুত হবে না এবং একা হামলা চালাবে না।

বিলিয়ন ডলার ক্ষতি ইসরায়েলের

ইসরায়েলে ইরানের হামলায় ক্ষতিও হয়েছে অনেক। তবে তারা সেটি সঠিকভাবে প্রকাশ করছে না বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে আল-জাজিরা। এখন পর্যন্ত কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা জানাতে নতুন একটি বিবৃতি দিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। তবে ইসরায়েল যা বলছে তার সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। আল-জাজিরা বলছে, ইসরায়েল ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে। কিন্তু তাদের বিবৃতিতে তা প্রকাশ পায়নি।

ইরানের হামলায় কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ বলেছে, ইরানের বিপুলসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তারা প্রতিহত করেছে। তবে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে একটি ঘাঁটিতে কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আঘাত হেনেছে। এতে সামান্য অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে। আইডিএফের মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইরানের হামলায় একজন আহত হওয়ার খবর জেনেছেন তারা। তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে আঘাত হানার পরে একটি সামরিক ঘাঁটিতে সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে কোন ঘাঁটিতে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে, তা জানানো হয়নি।

এদিকে রাতভর ইরানের ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ঠেকিয়ে দেওয়া প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করতে ইসরায়েলের ১০০ কোটি ডলারের বেশি খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সাবেক এক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রিম আমিনোচ ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন কথা জানান।

আমিনোয়াচ বলেন, আমরা যদি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা বলি; ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র- যা অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যে ভূপাতিত করা দরকার, সেগুলো আমরা মূলত যুদ্ধবিমান দিয়ে ভূপাতিত করছি। অ্যারো ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ৩৫ লাখ ডলার, ডেভিডস ব্লিংয়ের জন্য ১০ লাখ ডলার, এ ছাড়া জেট বিমানের জন্যও এ ধরনের খরচ হয়েছে। অর্থাৎ সব খরচ মেলালে ১ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি। এমন হামলার পরেই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে।


‘ইরানের হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েল অবশ্যই প্রতিশোধ নেবে’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইসরায়েলে ইরানের নজিরবিহীন ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে ইসরায়েল কোনো এক সময় অবশ্যই প্রতিশোধ নেবে বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। তারা বলেন, এটি প্রায় নিশ্চিত যে ইসরায়েল প্রতিশোধ নেবে। তবে সে প্রতিশোধ কখন ও কীভাবে নেওয়া হবে তা অজানা। খবর এএফপি’র।

গাজা যুদ্ধ নিয়ে এ অঞ্চলে ইতোমধ্যে অশান্তি বিরাজ করায় বিশ্ব নেতারা সংশ্লিষ্ট সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ইসরায়েলের মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে ইরানের হামলার সামরিক প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তবে বেশ কিছু নিরাপত্তা বিশ্লেষক এএফপি’কে বলেছেন, ইসরায়েল শিগগিরই বা পরে ইরানের এমন হামলার জবাব দেবে এ ব্যাপারে তাদের কোন সন্দেহ নেই। এক্ষেত্রে তারা ইসরায়েল এবং জোটের জন্য বিশাল ঝুঁকির এবং বৃহত্তর মধ্যপ্রাচ্যে এর প্রভাবের কথা উল্লেখ করেছেন।

যে কারণে ইসরায়েল প্রতিশোধ নেবে

নিরাপত্তা পরামর্শদাতা স্টিফেন অড্র্যান্ড বলেছেন, যদিও ইসরায়েল এবং তাদের মিত্ররা এসব হামলার অধিকাংশ ঠেকিয়ে দিয়েছে। ইরানের এমন হামলায় দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন করে চরম অবনতি ঘটে। এদিকে ইরান বলেছে, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কোতে তেহরানের কনস্যুলেট ভবনে ১ এপ্রিল চালানো ভয়াবহ বিমান হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবে তারা এসব ড্রোন ও বিমান হামলা চালায়। ইরানের কনস্যুলেট ভবনে হামলার ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করা হয়েছিল।

ওই হামলায় দুই সিনিয়র জেনারেলসহ ইরানের সাতজন রেভল্যুশনারি গার্ড নিহত হয় এবং সেখানে হামলার পরপরই ইরানের প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয়। অড্র্যান্ড আরও বলেছেন, ‘ইসরায়েলের ভূখণ্ড অন্য রাষ্ট্র দ্বারা হামলার শিকার হলে, এক্ষেত্রে ঐতিহ্যগতভাবে ইসরায়েলের একটি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি রয়েছে।’

ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান তামির হায়মান যুক্তি দিয়ে বলেন, ইসরায়েল তাদের সুবিধা মতো সময়ে পাল্টা আঘাত করবে এমনটা প্রায় নিশ্চিত। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া তার ভবিষ্যদ্বানীতে বলেন, ‘ইরানের মাটিতে হামলা চালিয়ে ইসরায়েল তাদের জবাব দেবে।’

বিষয়:

আফগানিস্তানে ভারী বর্ষণ, বন্যায় ৩৩ জনের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আফগানিস্তানে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৩৩ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হয়েছেন। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ হতাহতের এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।

এক প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানিয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে শত শত বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হতাহতের বেশিরভাগই বাড়ির ছাদ ধসে পড়ার কারণেই ঘটেছে।

দেশটির সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মুখপাত্র জনান সায়েক রোববার বলেন, গত শুক্রবার থেকে বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে প্রচুর মানবিক ও আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

সায়েক আরও জানান, প্রায় ৬০০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ছাদ ধসে বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও ২০০টি গবাদি পশু মারা গেছে, প্রায় ৬০০ কিলোমিটার রাস্তা ধ্বংস হয়ে গেছে এবং প্রায় ৮০০ হেক্টর কৃষি জমির ফসল বন্যায় ভেসে গেছে। পশ্চিম ফারাহ, হেরাত, দক্ষিণ জাবুল এবং কান্দাহার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

আফগানিস্তানের বেশিরভাগ প্রদেশে সামনে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া বিভাগ।


ইসরায়েলে হামলা: যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কবার্তা দিলো ইরান

আপডেটেড ১৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১৩:২৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরান রোববার ইসরায়েলের সাথে তেহরানের সংঘাত থেকে ‘দূরে থাকতে’ যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়েছে। ইরানের দামেস্কো কনস্যুলেট ভবনে ভয়াবহ হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তেহরান ইসরায়েলে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর ওয়াশিংটনকে এমন সতর্ক করলো। খবর এএফপি’র।

ইরানের জাতিসংঘ মিশন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স’কে বলেছে, ‘ইরানের এমন সামরিক পদক্ষেপ দামেস্কো আমাদের কূটনৈতিক প্রাঙ্গণে ইহুদিবাদী শাসকদের আগ্রাসনের পাল্টা জবাব ছিল।’

এক্ষেত্রে তারা সতর্ক করে বলেছে, ‘ইসরায়েল সরকার আরেকটি ভুল করলে সেক্ষেত্রে ইরানের জবাব আরো কঠোর হবে।’

ওই বার্তায় আরো বলা হয়, ‘এটি ইরান এবং দুর্বৃত্ত ইসরায়েল সরকারের মধ্যে একটি সংঘাত। এমন সংঘাত থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে!’

বার্তায় বলা হয়েছে, ইরান আশা করে যে, তাদের কূটনৈতিক মিশনে হামলার শাস্তি দেওয়ার জন্য তাদের পদক্ষেপটি আর বাড়বে না এবং ‘বিষয়টি শেষ বলে মনে করা যেতে পারে।’

এদিকে পেন্টাগনের একজন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, মার্কিন বাহিনী ইসরায়েল-গামী বিভিন্ন ড্রোন গুলো করে ধ্বংস করছে এবং ব্রিটেন বলেছে, তারাও প্রস্তুত রয়েছে।

গত ১ এপ্রিল দামেস্কোতে অবস্থিত ইরানী দূতাবাসের এনেক্স ভবনে হামলায় ভবনটি মাটির সাথে মিশে যায় এবং সাতজন বিপ্লবী গার্ড নিহত হন। এদের মধ্যে দ’ুজন জেনারেল ছিলেন। সেখানে এমন হামলা চালানোয় ব্যাপকভাবে ইসরায়েলকে দোষারোপ করা হয়।

ইরানের বিপ্লবী গার্ডস ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দেয় যে, তারা ইরানের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নিলে তার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।

ইরান বলেছে, তেহরান তাদের কূটনৈতিক মিশনে হামলার পর ‘আত্মরক্ষামূলক’ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চালিয়েছে।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘ইরান তার সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখ-তা এবং জাতীয় স্বার্থের ওপর যে কোনো বেআইনি শক্তিপ্রয়োগ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিয়ে থাকে।’


ইরানের হামলার শঙ্কা: শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১২ এপ্রিল, ২০২৪ ২৩:১৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সিরিয়ার দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলতে ইসরায়েলের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে দামেস্কে হামলায় ইরানের জ্যেষ্ঠ কমান্ডারদের হত্যার ঘটনায় তেহরানের বদলার শঙ্কায় উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দেশটিতে বিবিসির অংশীদার সিবিএস নিউজকে বলেন, ইসরায়েলের ওপর ‘চ্যালেঞ্জিং’ বড় ধরনের হামলা শিগগিরই হতে পারে। অন্যদিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়, এটি প্রতিরক্ষামূলক ও আক্রমণাত্মকভাবে প্রস্তুত।

বিবিসি জানায়, নেতানিয়াহু ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়েভ গালান্ট ও বিরোধী নেতা বেনি গানৎজের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন।

এমন বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের একজন কর্মকর্তা সিবিএসকে বলেন, হামলায় শতাধিক ড্রোন, বেশ কিছু ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে ইরান। এগুলোর লক্ষ্য হতে পারে ইসরায়েলের সামরিক বিভিন্ন স্থাপনা।

এদিকে স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ইরানের হামলার হুমকি ‘বিশ্বাসযোগ্য’ এবং ওয়াশিংটন বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

ইরানের হামলার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত ও অস্ট্রেলিয়া তাদের নাগরিক ও কর্মকর্তাদের ইসরায়েলে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট কূটনৈতিক মিশনের কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের তেল আবিব, জেরুজালেম ও বির শেভার বাইরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা দিয়েছে।


৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে ইরান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১২ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:১৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলের মাটিতে ইরান হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এক কূটনীতিক এ তথ্য জানিয়েছেন বলে শুক্রবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কোরের (আইআরজিসি) কয়েকজন কর্মকর্তাসহ ১৩ জন নিহত হন।

ইসরায়েল ওই হামলার দায় স্বীকার না করলেও তেল আবিবকেই দায়ী করেছে ইরান। ওই হামলার উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে বলেও তেহরানের পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। আইআরজিসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মোহসেন রিজাইয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে তাসনিম নিউজ।

এ বিষয়ে পূর্ণ ধারণা রাখা যুক্তরাষ্ট্রের এক কূটনীতিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেন, ‘ইসরায়েলের লক্ষ্য অন্যত্র থাকাকালে কয়েক দিনের মধ্যেই তাদের মাটিতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালাতে পারে ইরান। আমাদের গোয়েন্দা প্রতিবেদনগুলো অন্তত তাই ইঙ্গিত করছে।’

ওই কূটনীতিক জানান, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই হামলা চালাতে পারে ইরান। এ হামলা মোকাবিলায় নিজেদের ভূখণ্ডের উত্তর ও দক্ষিণ প্রান্তে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল।

তেহরানের প্রতিক্রিয়া

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে টাইমস অফ ইসরায়েলের খবরে বলা হয়, হামলার বিষয়ে তেহরান এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসেনি বলে জানিয়েছেন ইরানের এক কর্মকর্তা।

আইআরজিসির এক উপদেষ্টার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সপ্তাহের শুরুতে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে ইসরায়েলে হামলা চালাতে বেশ কয়েকটি বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন আইআরজিসির কর্মকর্তারা। এর মধ্যে অত্যাধুনিক মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথাও উল্লেখ করেন তারা।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা পোস্টগুলোতেও ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে ইরানের হামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। এসব লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের দিমোনার পারমাণবিক স্থাপনা, হাইফার বিমানবন্দরের মতো স্থাপনা, তবে এসব পোস্টের সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি টাইমস অফ ইসরায়েল।

সংবাদমাধ্যমটির খবরে উল্লেখ করা হয়, হামলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। তিনি খুব ভালো করেই জানেন যে, ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মতো কিছু করা হলে অবশ্যই তার পাল্টা জবাব দেবে তেল আবিব। এ ক্ষেত্রে দেশটি ইরানের কৌশলগত স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে পারে।

প্রস্তুত ইসরায়েল

ইসরায়েল ও ইরানের চলমান উত্তেজনার মধ্যে বাগযুদ্ধ নতুন মাত্রা পায় বৃহস্পতিবার। ওই দিন ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘(ইরান থেকে) আগত সব ধরনের হামলা মোকাবিলায় আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’

এর পরপরই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহল থেকে একাধিকবার তেহরানকে এমন কিছু না করতে সতর্ক করা হয়।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেসের (আইডিএফ) মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যেকোনো হামলার জন্য পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করছে ইসরায়েল। আমরা প্রতি মুহূর্তে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।

‘আমরা নিজেদের প্রতিরক্ষার পাশাপাশি পাল্টা আক্রমণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আমাদের যেসব প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, তা দিয়েই শত্রুর মোকাবিলা করা হবে। তা ছাড়া আমাদের কৌশলগত মিত্ররাও এমন পরিস্থিতিতে আমাদের পাশে থাকার কথা জানিয়েছেন।’

ইসরায়েলকে পূর্ণ সমর্থন যুক্তরাষ্ট্রের

মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রল কমান্ডের জেনালের মাইকেল কুরিল্লা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলে পৌঁছান। সেখানে তিনি আইডিএফের চিফ অফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেবির সঙ্গে নিরাপত্তাজনিত হুমকি ও তা মোকাবিলার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। ওই আলোচনার পরই আইডিএফের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে মিত্রদের কথা তুলে ধরে আইডিএফ।

ওই দিন রাতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়েভ গালান্ট। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে পেন্টাগনের বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের ওপর ইরান ও এর আঞ্চলিক মিত্রদের ক্রমবর্ধমান হুমকিতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সুদৃঢ় সমর্থন দিয়ে যাবে।

‘ইরানি হামলা মোকাবিলায় মিস্টার গালান্ট যুক্তরাষ্ট্রকে গণনায় নিতে পারে। এ বিষয়ে ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে’, উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

পরে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ‘আমরা (লয়েড) অস্টিনকে জানিয়েছি যে, ইরান সরাসরি ইসরায়েলে হামলা করলে আমরাও তাদের একইভাবে জবাব দেব।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আরেক প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, আলোচনাকালে অস্টিন গালান্টের কাছে অভিযোগ করেন, ১ এপ্রিলের ঘটনার বিষয়ে আগে থেকে পেন্টাগনকে কিছুই জানানো হয়নি।

এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

ইরানকে বিরত রাখতে চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান

এদিকে ইসরায়েলে হামলায় নিরুৎসাহিত করার ব্যাপারে ইরানকে বোঝাতে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে ওই ফোনালাপে মধ্যপ্রাচ্যে ‘গঠনমূলক ভূমিকা’ পালন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানিয়েছেন চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ই।

শুধু এ ফোনালাপ নয়, হামাসকে সহযোগিতা বন্ধের জন্য ইরানকে চাপ দিতে চীনকে প্রকাশ্যে বারবার অনুরোধ জানিয়ে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরে কূটনীতিকদের ভ্রমণে যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কতা

ক্রমবর্ধমান হামলার হুমকি থাকায় এরই মধ্যে নিজ দেশের কূটনীতিকদের ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তেল আবিব, জেরুজালেম এবং বির শেভা এলাকার বাইরে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’

নাগরিকদের সতর্ক করেছে ফ্রান্সও

পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত নিজ দেশের নাগরিকদের ইরান, লেবানন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি অঞ্চল ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দিয়েছে ফ্রান্স।

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্তেফান সেজোর্নের এক প্রতিনিধি শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে এএফপি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, ইরানভিত্তিক ফরাসি কূটনীতিকদের আত্মীয়রা ফ্রান্সে ফিরে আসবেন। একই সঙ্গে ফ্রান্সের বেসামরিক নাগরিকদের ইরান, লেবানন, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি অঞ্চল ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে।

উত্তেজনা কমাতে চাইলেও প্রতিশোধের বিষয়ে বদ্ধপরিকর ইরান

ওয়াশিংটনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাতে ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে তেহরানের পক্ষ থেকেও যোগাযোগ করা হয়। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রকে ইরান এমন ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা (ইসরায়েলের হামলার) এমনভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে যাতে উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়।

সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়ায় কোনো অবস্থাতেই তাড়াহুড়া করা হবে না বলে ইরানের সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ইরান ‘খুব স্পষ্ট’ করে বলেছে যে, দামেস্কে দূতাবাসে হামলার জবাব তারা অবশ্যই দেবে। সে ক্ষেত্রে তা যেন ‘নিয়ন্ত্রিত’ হয়, তা নিশ্চিত করা হবে। এ জন্য আঞ্চলিক মিত্রদের ব্যবহার করা হতে পারে বলেও ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, এরই মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও রাশিয়ার মতো বিশ্ব মোড়লরাও ইরানকে সংযত হতে অনুরোধ জানিয়েছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ইরান বলেছে, ইসরায়েলের হামলার পর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ব্যবস্থা নিলে প্রতিশোধের ‘আবশ্যকতা’ হয়তো এড়ানো যেত।

এ বিষয়ে এক্সে দেয়া পোস্টে জাতিসংঘে ইরানের মিশন লিখেছে, ‘নিরাপত্তা পরিষদ যদি (দামেস্কের কূটনৈতিক চত্বরে) আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে ইসরায়েলকে বিচারের মুখোমুখি করত, তাহলে ইরানের আর এই দুর্বৃত্তকে শাস্তি দেয়ার কথা চিন্তা করা লাগত না।’


ইসরায়েলে মার্কিন কুটনীতিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্র তাদের কুটনীতিকদের নিরাপত্তাজনিত কারণে ইসরায়েলে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করার পরামর্শ দিয়েছে। ইরানে ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধমুলক পাল্টা হামলার উদ্বেগের মধ্যে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বিমান হামলা হয়। এতে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের কয়েকজন কর্মকর্তাসহ ১৩ জন নিহত হন। এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে ইরান। যদিও ইসরায়েল এই হামলায় দায় স্বীকার করেনি। তবে হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরান।

গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ যেন আঞ্চলিকভাবে ছড়িয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চলার মধ্যেই এই হামলা হয়।

মার্কিন দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তেল আবিব, জেরুজালেম এবং বীরশীভা এলাকার বাইরে’ ভ্রমন না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

গত রোববার ইরানের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের দূতাবাসগুলো এখন আর নিরাপদ নয়। কোনো একটি কনস্যুলেট ভবনকে হামলার টাাের্গট করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

এদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োআভ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বলেছেন, ইসরায়েলি ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালাতে পারে ইরান।

গতকাল বৃহস্পতিবার ভ্রমণ সতর্কতা সম্পর্কে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানান, কী কারণে এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো, তা সুনির্দিষ্ট করে তিনি প্রকাশ করবেন না। তবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে ইসরায়েল যে হুমকিতে আছে, তার ওপর নজর রেখেছি।’


banner close