তুরস্কের মধ্য-দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ গাজিয়ানতেপে ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে লাশের সংখ্যা বাড়ছেই। সংবাদমাধ্যম সিএনএনের সর্বশেষ তথ্য়ানুযায়ী, তুরস্ক ও সিরিয়ায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা ২ হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে।
তুরস্কের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ভূমিকম্পের ঘটনায় তুরস্কে এখনো পর্যন্ত অন্তত ১ হাজার ৪৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
উদ্ধার অভিযানের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তা চেয়েছে তুরস্কের দুর্যোগ সংস্থা ।
তুরস্কের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলটি সিরিয়া সীমান্ত থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে ছিল। তাই ভয়াবহ হতাহতের শিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিও।
সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৮১০ ছাড়িয়েছে বলে সিএনএন জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ (ইউএসজিএস) জানায়, স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের মধ্য-দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ গাজিয়ানতেপের শহর নুরদায়ির ২৬ কিলোমিটার পূর্বে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এর কেন্দ্রস্থল ছিল সমতলের ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার গভীরে।
নুরদায়ি শহরটি তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত। এই দুটি দেশ ছাড়াও লেবানন ও সাইপ্রাসে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ৮০০ কিলোমিটার দূরের গাজা উপত্যকায়ও অনুভূত হয়েছে কম্পন।
তুরস্কে সোমবারের এই ভূমিকম্পকে ১৯৩৯ সালের পর সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সেবার একই মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৩০ হাজার লোকের মৃত্যু হয়। বিগত ২৫ বছরে সাতবার তুরস্কে ৭ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে এবারের ভূমিকম্প সবচেয়ে শক্তিশালী বলছেন ভূতত্ত্ববিদরা।
কম্পনের তীব্রতা এবারে এতই বেশি ছিল যে মূল ভূমিকম্পের পর অন্তত ৬৬টি পরাঘাত অনুভূত হয়।
দ্রুত অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলের বরফ গলার কারণে গভীর সমুদ্রের স্রোতের প্রবাহ আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। পরিবেশের ওপর যা মারাত্মক বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে এই সতর্কবার্তা দেয়া হয়। খবর বিবিসির।
অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানীদের একটি দল বলছে, গভীর জলের প্রবাহ, যা সমুদ্রের স্রোত নিয়ন্ত্রণ করে সেটি ২০৫০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ ধীর হয়ে যেতে পারে। এই স্রোতই বিশ্বজুড়ে প্রয়োজনীয় তাপ, অক্সিজেন, কার্বন এবং পুষ্টির যোগানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এর আগে এক গবেষণায় বলা হয়, উত্তর আটলান্টিকের স্রোত কমে গেলে আরও শীতল হবে ইউরোপ।
‘ন্যাচার জার্নাল’-এ প্রকাশিত সমীক্ষাটি আরও সতর্ক করেছে, স্রোতের প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে সমুদ্রের বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করার ক্ষমতা কমে যেতে পারে। আইসক্যাপ থেকে মিঠা পানি গলে যাওয়ার কারণে সমুদ্রের পানির লবণাক্ততা কমে যাচ্ছে, এতে নিচের দিকের প্রবাহ কমে যায়।
হাজার হাজার বছর ধরে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে এই গভীর সমুদ্রের স্রোত অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু জলবায়ুর উষ্ণায়নের কারণে এটি ব্যাহত হচ্ছে।
গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ম্যাথিউ ইংল্যান্ড বলেছেন, ‘আমাদের মডেলিং দেখায়, যদি বিশ্বব্যাপী কার্বন নির্গমন বর্তমান হারে চলতে থাকে, তাহলে আগামী ৩০ বছরে গভীর জলের প্রবাহ ৪০ শতাংশের বেশি ধীর হয়ে যাবে।’
প্রতিবেদনে অবদান রাখা ডক্টর অ্যাডেল মরিসন ব্যাখ্যা করেছেন, ‘সমুদ্রের সঞ্চালন কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃষ্ঠের পানি দ্রুত তার কার্বন-শোষণ ক্ষমতায় পৌঁছায় এবং তারপর গভীর থেকে কার্বন নয়, এমন পানি দ্বারা আর প্রতিস্থাপিত হয় না।’ ফলে আরও শীতল হতে পারে উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ এবং প্রভাব পড়তে পারে গভীর সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রতে।
চীনের হুমকি অগ্রাহ্য করে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন সাই। সফর শুরুর আগে চীনকে ইঙ্গিত করে সাই বলেছেন, ‘বাইরের চাপে বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ রাখা বন্ধ করবে না তারা।’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের সঙ্গে সম্ভাব্য সাক্ষাৎকার নিয়ে চীনের হুঁশিয়ারিকে উড়িয়ে দেন সাই।
রয়টার্স জানায়, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই মূলত গুয়েতেমালা ও বেলিজে যাবেন। তবে যাত্রাপথে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এবং ফিরতি পথে লস অ্যাঞ্জেলেসে বিরতি নেবেন। যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রাবিরতির সময়টুকুই সাইয়ের নির্ধারিত ১০ দিনের সফরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থির সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ম্যাককার্থির সঙ্গে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই সাক্ষাৎ করলে প্রতিশোধ নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীন। তবে চীনের চোখ রাঙানিকে খুব একটা পাত্তা না দেয়ার বিষয়টি সাইয়ের কথায় পরিষ্কার হয়ে গেছে।
চীনের নাম উচ্চারণ না করেই তাইওয়ানের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সাই বলেন, ‘বাইরের কোনো চাপ আমাদের বিশ্বের কাছে যাওয়ার সংকল্পকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। আমরা স্থির ও আত্মবিশ্বাসী। আমরা কারও কথা মেনেও নেব না আবার কাউকে উসকানিও দেব না। তাইওয়ান দৃঢ়ভাবে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পথে হাঁটবে এবং বিশ্বের কাছে যাবে। যদিও এই পথ কঠিন, তবে তাইওয়ান একলা নয়।
রয়টার্স জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের পথে সাইয়ের যাত্রার কিছু সময় পরই বেইজিংয়ে চীনের তাইওয়ান-বিষয়ক কার্যালয়ের মুখপাত্র ঝু ফেংলিয়ান সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ঝু ফেংলিয়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রাবিরতির পথে সাই বিমানবন্দরে বা হোটেলে পরের বিমানের জন্য অপেক্ষায় থাকবেন ব্যাপারটা এমন নয়। আদতে তিনি এই সময়ে মার্কিন কর্মকর্তা ও আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।’
ঝু ফেংলিয়ান আরও বলেন, যদি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ম্যাককার্থির সঙ্গে সাই যোগাযোগ করেন, তাহলে সেটা হবে একক চীন নীতির গুরুতর লংঘন করার আরেকটা উসকানি, যা চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ক্ষতি করবে এবং তাইওয়ান প্রণালির শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে। চীনের তাইওয়ান-বিষয়ক কার্যালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এগুলোর দৃঢ় বিরোধিতা করছি এবং অবশ্যই পাল্টা পদক্ষেপ নেব।’
এদিকে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্রে যাত্রাবিরতি নিয়ে চীনের প্রতিক্রিয়াকে বাড়াবাড়ি বলে মনে করছে ওয়াশিংটন। মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, বিভিন্ন দেশে যাওয়ার পথে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের যুক্তরাষ্ট্রে বিরতি নেয়ার ঘটনা আগেও দেখা গেছে। এখন সাইয়ের এই ‘ট্রানজিটকে’ কাজে লাগিয়ে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসী পদক্ষেপ নেয়া চীনের উচিত হবে না বলে তারা মনে করেন।
ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, চলতি সপ্তাহে ও এপ্রিলের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে সাইয়ের ‘ট্রানজিটকে’ কেন্দ্র করে চীনের অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখানোর কোনো মানে নেই। আগের ট্রানজিটগুলোতেও সাই মার্কিন কংগ্রেসের সদস্য, প্রবাসী তাইওয়ানি ও অন্যান্য গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠকসহ নানান কিছু করেছেন, বলেছেন ঊর্ধ্বতন এক মার্কিন কর্মকর্তা।
তবে বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই এমন একসময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ট্রানজিট’ নিচ্ছেন, যখন ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যকার সম্পর্ক ১৯৭৯ সালে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পর সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে। চীনের কাছে তাইওয়ান অত্যন্ত সংবেদনশীল ইস্যু। তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দেখে চীন। স্বশাসিত দ্বীপটিকে বাগে আনতে প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে বেইজিং।
এদিকে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ‘একক চীন’ নীতি সমর্থন দেয়। কূটনৈতিক স্বীকৃতি না দিলেও স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের।
সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ন্যাটোজোটে সুইডেনের আবেদনে ‘হস্তক্ষেপের চেষ্টার’ প্রতিবাদ জানাতে রুশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়। সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
রয়টার্স জানায়, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর নিজেদের সুরক্ষার লক্ষ্যে সুইডেন ও ফিনল্যান্ড ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আবেদন করে। ফিনল্যান্ড ইতিমধ্যে ন্যাটোর ৩০ সদস্য দেশের মধ্যে ২৯ দেশের অনুমোদন পেয়েছে। তবে সুইডেন এখনো ন্যাটো জোটের সদস্য তুরস্ক এবং হাঙ্গেরির অনুমোদন পায়নি। তবে সুইডেন এখনো হাল ছাড়েনি।
স্টকহোমে রাশিয়ার দূতাবাসের ওয়েবসাইটে রুশ রাষ্ট্রদূত হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত হলে নর্ডিক দেশগুলো রাাশিয়ার সামরিক ধরনসহ প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপের বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে।
সুইডিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী টোবিয়াস বিলস্ট্রম বলেন, ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের এই সুস্পষ্ট চেষ্টার প্রতিবাদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রুশ রাষ্ট্রদূতকে তলব করছে।
মিয়ানমারের কারারুদ্ধ নেত্রী অং সাং সু চির দলকে এবার বিলুপ্ত ঘোষণা করল দেশটির সামরিক জান্তা সরকার। নির্বাচনে অংশ নিতে নিবন্ধন না করায় নোবেলজয়ী লিগ ফর ডেমোক্রেসিসহ (এনএলডি) মোট ৪০টি দলকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে জান্তা সরকার।
২০২১ সালের এক সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী এনএলডি নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা বসেছিল জান্তারা। ক্ষমতায় বসার পরপরই অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাসহ দলের নেত্রী ও নোবেল জয়ী অং সাং সু চিকে আটক করে সেনাবাহিনী। ওই অভ্যুত্থান এবং অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলা দমন-পীড়ন ও একের পর এক মামলা দেয়ার কারণে এনএলডিসহ পার্লামেন্টে আসন থাকা অন্য দলগুলোকে ভীষণভাবে দুর্বল করে দিয়েছে।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত না হলেও গত মঙ্গলবার ছিল নির্বাচনে অংশ নিতে নিবন্ধন করার শেষ দিন। তার মধ্যে ৬৩টি দল স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নিবন্ধন করেছে বলে মিয়ানমারের রাষ্ট্র পরিচালিত মায়াবতী টিভির বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এনএলডিসহ মূল দলগুলোকে বিলুপ্ত ঘোষণা করায় নির্বাচন হলে তাতে সামরিক বাহিনীপন্থি ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টিই (ইউএসডিপি) জিতবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই দলটি ২০১৫ ও ২০২০ সালের ভোটে এনএলডির কাছে বিপুলভাবে পরাজিত হয়েছে।
এনএলডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা টুন মিন্ট বলেছেন, অসংখ্য নেতাকর্মী জেলে কিংবা ‘বিপ্লবে জড়িত থাকার’ সময় এনএলডি কখনোই নির্বাচনের জন্য নিবন্ধিত হবে না। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তারা আমাদের দলকে বিলুপ্ত করুক বা না করুক, কিছু আসে যায় না। আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে দাঁড়িয়েই থাকব।’
জান্তা যাদের ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করেছ, সেই ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) বলছে, নির্বাচন আয়োজনের এখতিয়ারই নেই সামরিক বাহিনীর। দলটির মুখপাত্র বলেন, ‘জনগণের ইচ্ছাকে যারা সম্মান করে, সেসব রাজনৈতিক দল কখনোই নিবন্ধন করবে না।’
২০২০ সালের নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে অভিযোগ এনে তার ফলকে অবৈধ বিবেচনা করে দুই বছর আগের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানে নেমেছিল সামরিক বাহিনী। ওই অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে ব্যাপক জনপ্রিয় ৭৭ বছর বয়সী সু চিসহ এনএলডির অসংখ্য সদস্যকে জেল খাটতে হচ্ছে। দুর্নীতি, গোপনীয়তা আইনের লঙ্ঘন ও বেআইনি কর্মকাণ্ডে উসকানির দায়ে এরই মধ্যে সু চিকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন জান্তা-সমর্থিত আদালত।
যুক্তরাষ্ট্রে টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিল শহরের একটি বেসরকারি স্কুলে গত সোমবারের বন্দুক হামলার ঘটনায় আবারও অস্ত্র আইন সংশোধনের বিষয়টি সামনে উঠে এসেছে। বছরের পর বছর ধরে গণমাধ্যম ও অধিকারকর্মীদের দাবিকে উপেক্ষা করে কোনো সরকারই এই অস্ত্র আইন সংশোধন করতে সক্ষম হয়নি। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক প্রতিবন্ধকতার কথাই বলেছেন সরকারপ্রধানরা।
এর আগেও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই অস্ত্র আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছেন। ন্যাশভিল ঘটনার পর, ফের তিনি বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। গত সোমবার নর্থ ক্যারোলিনার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন তার বক্তৃতায় বলেন, ‘ওই স্কুলে যা ঘটেছে, তা মর্মান্তিক। একমাত্র কংগ্রেসই এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে আসতে পারে এবং দেশকে বাঁচাতে পারে। দুঃখজনক সত্য হলো, আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি শিশুর মৃত্যু হয় বন্দুকধারীর গুলিতে। এই মুহূর্তে এটা বন্ধ হওয়া দরকার।’
বাইডেন আরও বলেন, ‘প্রতিবছর গাড়ি দুর্ঘটনায় যত ছাত্রছাত্রীর মৃত্যু হয়, বন্দুকধারীর হামলায় তার চেয়ে অনেক বেশি ছাত্রছাত্রী নিহত হয়। চোখের সামনে এই তথ্য থাকা সত্ত্বেও আমাদের হাত-পা বাঁধা। অস্ত্র আইন বদলের চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তাই বিষয়টি এখন কংগ্রেসের হাতে ছেড়ে দিয়েছি।’
এর আগে নব্বইয়ের দশকের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অস্ত্র আইন নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে বারাক ওবামাও চেষ্টা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই অবাধ অস্ত্র ব্যবহার বন্ধের। কিন্তু তাদের কেউই মার্কিন অস্ত্র আইন সংশোধন করতে সমর্থ হননি।
আরও হামলার পরিকল্পনা ছিল ন্যাশভিল হামলাকারীর
যুক্তরাষ্ট্রে টেনেসি রাজ্যের ন্যাশভিল শহরের স্কুলে বন্দুক হামলাকারীরে নাম অড্রে এলিজাবেথ হালে বলে জানায় পুলিশ। তার বয়স ২৮ বছর। তিনি কোনো অসন্তোষ থেকে কোভনেন্ট স্কুলে হামলা চালিয়ে থাকতে পারেন এবং তার অন্য আরও নিশানায় হামলা চালানোর অভিপ্রায় ছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ।
ন্যাশভিলের পুলিশপ্রধান জন ড্রেক গত মঙ্গলবার সকালে সিবিএস নিউজকে বলেছেন, অড্রে হালে তার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি স্থানীয় একটি শপিংমলেও হামলা চালানোর কথা ভাবছিলেন হয়তো। কারণ, তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে আরও তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং কিছু মানচিত্র খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। এসব আঁকা মানচিত্র অন্যান্য জায়গায় হামলার চালানোর ভাবনা-চিন্তারই আভাস দিচ্ছে বলে ধারণা পুলিশের।
পুলিশ বলছে, এলিজাবেথ হালে একজন ট্রান্সজেন্ডার ছিলেন এবং ওই স্কুলেরই সাবেক শিক্ষার্থী। তার অতীত অপরাধের কোনো রেকর্ডও ছিল না। হামলা চালানোর সময় পুলিশ তাকে ঘটনাস্থলেই হত্যা করে। সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ন্যাশভিলের কোভনেন্ট স্কুলে ওই হামলায় ছয়জন নিহত হয়। তাদের মধ্যে ওই স্কুলের প্রধানসহ তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক ও তিনজন শিশু।
মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে বিভিন্ন স্থানে স্বর্ণ অনুসন্ধান ছিল তার শখ। আর এই শখই তাকে এনে দিল লাখ ডলার।
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার স্বর্ণখনিতে স্বর্ণ অনুসন্ধান করছিলেন ওই ব্যক্তি। হঠাৎই তিনি পান সাড়ে চার কেজি ওজনের বিশাল এক শিলাখণ্ড। যার মধ্যে রয়েছে আড়াই কেজিরও বেশি স্বর্ণ। আর এই স্বর্ণের মূল্য ১ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তির কাছ থেকে স্বর্ণটি ইতিমধ্যেই কিনে নিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী ডারেন কাম্প। ডারেন বলেন, তার ৪৩ বছরের ব্যবসায়ী জীবনে তিনি এত বিশাল স্বর্ণের তাল দেখেননি কখনো। প্রথমে ওই ব্যক্তি যখন তার কাছে আসেন, তিনি ভাবেন, সোনালি রঙের শিলা দেখে তিনিও অন্যদের মতো স্বর্ণ ভেবে হাজির হয়েছেন। পরে শিলাটি হাতে নিয়ে এবং পরীক্ষা করে রীতিমতো তাজ্জব বনে গেলেন ডারেন। কেননা, শিলাটির অর্ধেকের বেশি অংশজুড়ে রয়েছে স্বর্ণ।
জানা যায়, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে স্বর্ণের খনি। তার মধ্যে ভিক্টোরিয়ার স্বর্ণখনি অন্যতম। ১৮ শতাব্দী থেকেই সেখানে মিলছে সোনা।
ধারণা করা হয়, পৃথিবীতে অস্ট্রেলিয়াতেই স্বর্ণের মজুত আছে সবচেয়ে বেশি। আর স্বর্ণের তাল পাওয়ার ঘটনা ও এখানেই বেশি।
সূত্র বিবিসি
জার্মানির অত্যাধুনিক লেপার্ড টু ট্যাংক ও ব্রিটিশ চ্যালেঞ্জার টু ট্যাংকের প্রথম চালান ইউক্রেনে পৌঁছেছে। জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গত সোমবার জানায়, কিয়েভে ১৮টি ট্যাংক পাঠিয়েছে তারা। অন্যদিকে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুক্তরাজ্যের পাঠানো চ্যালেঞ্জার টু ট্যাংকগুলো পরিদর্শনের কথা জানান।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস আশা প্রকাশ করেন যে, ইউক্রেনের রণাঙ্গনে ট্যাংকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।
আল-জাজিরা জানায়, চলতি বছরের শুরুতে জার্মানি ও যুক্তরাজ্য তাদের অত্যাধুনিক ট্যাংক পাঠানোর ব্যাপারে কিয়েভকে প্রতিশ্রুতি দেয়। এ ছাড়া ব্রিটিশ সরকার লন্ডনে ইউক্রেনীয় সেনাদের চ্যালেঞ্জার টু ট্যাংক পরিচালনার প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
বিবিসি জানায়, চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম প্রদানের আহ্বান জানিয়ে আসছিল ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ন্যাটো জোটের কাছে এখন ট্যাংকের পাশাপাশি যুদ্ধবিমানও চাইছেন। যদিও এখনো কোনো দেশই তা দেয়ার স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
প্রায় দুই হাজার লেপার্ড টু ট্যাংক- যেগুলোকে বিশ্বের প্রথমসারির যুদ্ধ ট্যাংক হিসেবে বিবেচনা করা হয়- সেগুলোর সবই ন্যাটো দেশগুলোতে উৎপাদিত এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনী এই ট্যাংক ব্যবহার করে।
শুরুতে অনিচ্ছুক থাকলেও শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনের চাপের মুখে গত জানুয়ারিতে জার্মানি ট্যাংক পাঠাতে রাজি হয়। জার্মান আইন অনুযায়ী, বার্লিনকে অবশ্যই লেপার্ড টু ট্যাংক যেকোনো দেশে পুনরায় রপ্তানি করার অনুমতি দিতে হবে।
আধুনিক স্থলযুদ্ধে ট্যাংক এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, কারণ এটা শত্রুপক্ষের অবস্থান বা রক্ষণব্যূহ ভেদ করে সামনে এগুতে এবং জায়গা পুনর্দখল করতে বড় ভূমিকা রাখে। ট্যাংক চলার জন্য রাস্তা দরকার নেই, অসমান, উঁচু-নিচু, খানাখন্দে ভরা মাটির ওপর দিয়েও তা চলতে পারে।
একই সঙ্গে ট্যাংক হচ্ছে এক চলন্ত কামান, যা যুদ্ধরত বাহিনীকে শত্রুর প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেঙে সামনে এগুনোর এবং গোলাবর্ষণের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
লেপার্ডের মতো ট্যাংক যুদ্ধে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র একদিকে যেমন রাশিয়ার বিরুদ্ধে রণক্ষেত্রে ইউক্রেনকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে, সেই সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্ব বা ন্যাটো জোটভুক্ত দেশগুলোকেও এ যুদ্ধে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে ফেলবে।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন যে ‘প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবং যথাসময়ে ট্যাংকগুলো আমাদের ইউক্রেনীয় বন্ধুদের হাতে পৌঁছেছে।’
জার্মান সেনাবাহিনী গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনীয় সেনাদের লেপার্ড টুয়ের অ্যাডভান্সড এ-সিক্স ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।এদিকে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ তার ফেসবুক পেজে পশ্চিমাদের তৈরি সামরিক যানের পাশাপাশি চ্যালেঞ্জার টু-এর একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ব্রিটিশ যানটি সামরিক শিল্পের অন্যতম একটি নমুনা। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আফগানিস্তানে প্রখ্যাত এক নারী শিক্ষা অধিকারকর্মীকে আটক করেছে তালেবান সরকার। মতিউল্লাহ ওয়েসা নামে ৩০ বছর বয়সী আফগান যুবককে গত সোমবার কাবুলে আটক করা হয়েছে।
আফগানিস্তানে জাতিসংঘ মিশন মঙ্গলবার জানায়, মতিউল্লাহ আফগান নারীদের শিক্ষার অধিকারের জন্য লড়াই করছেন। তালেবান কর্তৃপক্ষ তাকে কী কারণে আটক করেছে তা পরিষ্কার করেনি। মতিউল্লাহ এখন কোথায় আছেন তাও জানা যায়নি।
এর আগে নারীদের শিক্ষার অধিকারের পক্ষে কথা বলায় ইসমাইল নামে এক অধ্যাপককে তালেবান আটক করেছিল। তবে গত ৫ মার্চ তিনি মুক্তি পেয়েছেন।
রাশিয়া থেকে প্রতি মাসেই তেল কেনা বাড়াচ্ছে ভারত। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাত শুরুর পর থেকেই মস্কোর কাছ থেকে তেল কেনায় নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে দিল্লি। ইকোনমিক টাইমসের তথ্যানুসারে, ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে দিনে ১৬ লাখ ব্যারেল তেল কিনেছে।
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করলে পশ্চিমারা রাশিয়ার তেলে নিষেধাজ্ঞা দেয়। এতে বিশ্ববাজারে বাড়তে শুরু করে তেলের দাম। দীর্ঘ সাত বছর পর তা ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের সব তেল আমদানিকারী দেশের আমদানি মূল্য বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বেড়ে যায় ডলারের বিনিময় হার। ডলারসংকটে অনেক দেশেরই রিজার্ভ কমে যায়। কিন্তু পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা না শুনে ভারত রাশিয়ার তেল কেনা বৃদ্ধি করে। এতে তারা বড় ধরনের সংকট এড়াতে পেরেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গত ফেব্রুয়ারিতে ভারত বিশ্ববাজার থেকে যে পরিমাণ তেল কিনেছে, তার মধ্যে ৩৫ শতাংশই ছিল রাশিয়ার থেকে কেনা। অথচ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর আগে ভারত মোট আমদানির মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ তেল রাশিয়ার কাছ থেকে কিনত। এক বছরে তা ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এএফপির এক প্রতিবেদনে গতকাল মঙ্গলবার বলা হয়, রাশিয়া আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে কম দামে ভারতকে তেল দিচ্ছে। সস্তায় তেল কিনে ভারত বিদেশি মুদ্রা বাঁচাচ্ছে। সে জন্য তারা পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা করছে না। অর্থাৎ ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার সংঘাতের কারণে লাভবান হচ্ছে ভারত।
রাশিয়ার কাছ থেকে তেলা কেনা বৃদ্ধি করায় ওপেকের কাছ থেকে ভারতের তেলা কেনা কমেছে। রয়টার্স জানায়, ২০০৮ সালে ভারত ৮৭ শতাংশ তেল কিনত ওপেকের কাছ থেকে, সেটা ২০২২ সালে যা নেমে এসেছে ৬৪ দশমিক ৫ শতাংশে। তা সত্ত্বেও গত বছর রাশিয়ার পর ভারতে শীর্ষ তেল সরবরাহকারী ছিল ইরাক ও সৌদি আরব।
বর্তমানে ইইউ থেকে নির্ধারিত মূল্যসীমার চেয়েও অনেক কম দামে বা প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারের নিচে রাশিয়ার তেল কেনা যাচ্ছে। ভারত সে সুযোগ লুফে নিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো অনেক দেশ সে সুযোগ নিতে পারছে না। এতে দেশের আমদানি ব্যয় বাড়ছে।
প্রবল জনরোষের মুখে বিতর্কিত বিচার বিভাগীয় সংস্কার উদ্যোগ আপাতত স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বিচার বিভাগীয় সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে নমনীয় হলেন নেতানিয়াহু।
আল-জাজিরা জানায়, নেতানিয়াহু পার্লামেন্টের নয়া অধিবেশন শুরুর আগ পর্যন্ত তার বিচার বিভাগীয় সংস্কার কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। তার ঘোষণার পর ইসরায়েলে চলমান বিক্ষোভ-উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। ট্রেড ইউনিয়নগুলো তাদের ধর্মঘটের ডাক প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
নেতানিয়াহু গত সোমবার রাতে বলেন, যখন গৃহযুদ্ধ এড়ানোর জন্য আলোচনার একটা বিকল্প আছে, তখন আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেই বিকল্পই নিচ্ছি। তিনি বিচার বিভাগীয় সংস্কার কর্মসূচি এখনই বাস্তবায়ন না করে বরং এ বিষয়ে আরও সংলাপ চালাবেন বলে জানান।
আল-জাজিরা জানায়, প্রবল চাপের মুখে নেতানিয়াহু নমনীয় হলেও বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ বলছেন, বিচার বিভাগীয় সংস্কার কর্মসূচি পুরোপুরি বাতিল ঘোষণা না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন করছেন।
নেতানিয়াহুর বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার মধ্যে সরকারকে বিচারক নিয়োগকারী কমিটির ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া আইনপ্রণেতাদের কেউ দায়িত্ব পালনের জন্য অযোগ্য হলে তাকে অপসারণ করাটা আদালতের জন্য আগের চাইতে কঠিন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা মনে করেন, এ বিধানটি ক্ষমতাসীন নেতা নেতানিয়াহুর স্বার্থ বিবেচনা করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে দুর্নীতির একটি মামলা চলমান রয়েছে।
বিচার বিভাগীয় সংস্কার পরিকল্পনার প্রতিবাদ করায় নেতানিয়াহু তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ইসরায়েলিরা। লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখান। ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন ধর্মঘটের ডাক দেয়। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো জানায়, তারা এই সংস্কারের বিরোধী। এমনকি নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি ও জোট শরিক নেতাদের একাংশ এই সিদ্ধান্তে খুশি ছিলেন না।
ইকুয়েডরের আন্দিজ পর্বতমালায় ঘেরা এক বসতিতে ভূমিধসে অন্তত ৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এখনো নিখোঁজ আছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।
ইউকুয়েডরের কর্মকর্তারা গত সোমবার জানান, রাজধানী কিটো থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণের আলাউসি এলাকায় প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধস হয়।
দেশটির প্রেসিডেন্ট গিলিয়ার্মো লাস্সো দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। চারদিক সবুজ পাহাড়ে ঘেরা আলাউসিতে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ বাস করেন। ভূমিধসে কয়েকটি সরকারি ভবন ও রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে তিনটি স্কুল। ডয়চে ভেলে
যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের কাছে মেক্সিকোর একটি অভিবাসন আটককেন্দ্রে আগুনে অন্তত ৩৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মেক্সিকো সরকার মঙ্গলবার এই খবর জানায়।
আল-জাজিরা জানায়, মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর সিউদাদ হুয়ারেজে গত সোমবার দিবাগত রাতে ন্যাশনাল মাইগ্রেশন ইনস্টিটিউটে (আইএনএম) আগুন লাগে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবিতে ঘটনাস্থলে একাধিক অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ফাইটার্সদের ভিড় দেখা যায়। আগুনে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ২৯ জন দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে আছেন। দুর্ঘটনার সময় আটককেন্দ্রটিতে মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার ৬৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অভিবাসন প্রত্যাশী ছিলেন। আটককেন্দ্রটিতে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি।
মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আইএনএমের কার্যালয়ে আসেন এক ভেনেজুয়েলার নারী। তিনি জানান, তার ২৭ বছর বয়সী স্বামী এই আটককেন্দ্রে আগুনে দগ্ধ হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তবে তার বতর্মান অবস্থা সম্পর্কে কিছুই বলছে না কর্তৃপক্ষ।
মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ি জমাতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে সিউদাদ হুয়ারেজ শহরটি বড় ক্রসিং পয়েন্ট। এই শহরের অভিবাসন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় সব সময়ই লোকের ভিড় থাকে।
স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার হলেন হামজা ইউসুফ। স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্ট মঙ্গলবার তাকে সরকারপ্রধান হিসেবে বেছে নেয়। এর মধ্যে দিয়ে তিনিই পশ্চিম ইউরোপের মধ্যে প্রথম মুসলিম সরকারপ্রধান হলেন।
এর আগে স্কটল্যান্ডের ক্ষমতাসীন স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি (এসএনপি) হামজাকে দলীয় প্রধান হিসেবে বেছে নেয় । পাঁচ সপ্তাহের প্রতিযোগিতার পর তাকে বেছে নেয় এসএনপি। ৩৭ বছর বয়সী হামজা স্কটল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সী ফার্স্ট মিনিস্টার হলেন। তিনি বুধবার শপথ নেবেন। স্কটল্যান্ডে জন্ম নেওয়া হামজার বাবা পাকিস্তানি এবং মা কেনিয়ান।
স্কটল্যান্ডের সাবেক ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জেনের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন হামজা। স্টার্জেন গত মাসে আকস্মিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।আট বছর ধরে স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন স্টার্জেন। স্কটল্যান্ডের ইতিহাসে তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘ সময় এই পদে ছিলেন।
আল-জাজিরা জানায়, করোনাভাইরাস মহামারিকালে স্কটল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছিলেন হামজা। মহামারির সময় দক্ষতার সঙ্গে স্কটল্যান্ডের স্বাস্থ্যখাত সামলান হামজা। এর আগে দলীয় প্রধান নির্বাচিত হওয়ার পর এডিনবার্গে দক্ষিণ এশিয় বংশোদ্ভুদদের উদ্দেশে নিজের বিজয়ী ভাষণে হামজা বলেন, ‘পাঞ্জাব থেকে আমাদের পার্লামেন্ট, এটি আমাদের প্রজন্মের যাত্রা।’