মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩

দুই ছেলের অপেক্ষায় মা

তুরস্কে ভূমিকম্পের ধ্বংসলীলা। ধ্বংসস্তূপে জীবিতদের সন্ধানে চলছে উদ্ধার তৎপরতা। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে দিয়ারবাকির এলাকায় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবনের সামনে দুই ছেলের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছেন এক মা।

তিনি বলেন,‘দোলনার মতো দুলছিল সাততলা ভবন। আমার ঘরে ৯ জন সদস্য ছিল। সাতজন বের হতে পেরেছি। তবে আমার দুই ছেলে বের হতে পারেনি। তারা বিধ্বস্ত ভবনে চাপা পড়েছে।’ ভূমিকম্পে ওই মায়ের হাত ভেঙে গেছে। মুখে আঘাত পেয়েছেন। নিজের শরীরে তীব্র ব্যথা উপেক্ষা করেই তিনি সন্তানের আশায় বিধ্বস্ত ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

দিয়ারবাকির আরেক যুবক জানান, তার বাড়ির পাশের বহুতল ভবনটি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় প্রচণ্ড আওয়াজ শোনা যায়। তিনি দ্রুত বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখতে পান, চারদিকে ধ্বংসস্তুপ। আর্তনাদে চারপাশ ভারী হয়ে এসেছে।

গাজিয়ানতেপ শহরের উপকণ্ঠের এক বাসিন্দা জানান, গত ৪০ বছরে এমন ভূমিকম্প দেখিনি। অন্তত তিনবার শক্তিশালীভাবে আমাদের ভবনটি দুলে ওঠে। তুরস্কের গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত ভিডিওফুটেজে দেখা যায়, ওসমানিয়া প্রদেশে একটি চারতলা ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। সেখানে কম্বলে পেঁচিয়ে আহত এক ব্যক্তিকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।

বিষয়:

তেল উত্তোলন কমাচ্ছে সৌদি আরব

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সৌদি আরব দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল পরিমাণ তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়াতে আগামী জুলাই থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সৌদি আরবের এমন ঘোষণায় ইতিমধ্যে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে।

বিবিসি জানায়, ওপেক প্লাস জোটের অন্য সদস্য দেশগুলোও নিজেদের উৎপাদন কমিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে। সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন সালমান গত রোববার বলেছেন, ‘আজ একটি মহান দিন। এই চুক্তির মান নজিরবিহীন।’ তিনি বলেন, ‘নতুন তেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি স্বচ্ছ ও ন্যায্য হবে।’ তিনি জানান, প্রয়োজনে জুলাইয়ের পরও ১০ লাখ ব্যারেল কম তেল উত্তোলনের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। তিনি একে ‘একটি সৌদি ললিপপ’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এর ফলে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে।

বিবিসি জানায়, বিশ্বের খনিজ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো এবং তাদের মিত্রদের সংগঠন ওপেক প্লাস বলছে, ২০২৪ সাল থেকে দিনে তেল উত্তোলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৫ লাখ ব্যারেলের মতো কমানো হবে। বিশ্বের অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৪০ শতাংশ ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো উৎপাদন করে থাকে। এ কারণে তাদের সিদ্ধান্ত তেলের দামের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

এদিকে এশিয়ার বাজারে গতকাল সোমবার ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৭৭ ডলারে ঠেকেছে।

গত মাসে যুক্তরাজ্যে ডিজেলের গড় দাম লিটারপ্রতি রেকর্ড ১২ পয়সা কমেছে। জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত রোববার রাশিয়ার নেতৃত্বে তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো ৭ ঘণ্টাব্যাপী এক বৈঠক করে। রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক জানান, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ওপেক প্লাস মোট উৎপাদন কমিয়েছে। এর ফলে তেলের দৈনিক উৎপাদন ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছায়। ওপেক প্লাস ইতিমধ্যেই দৈনিক দুই মিলিয়ন ব্যারেল তেলের উৎপাদন কমানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী তেলের মোট চাহিদার প্রায় ২ শতাংশ। নোভাক বলেন, ‘আলোচনার ফলে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো গেছে।’

বিবিসি জানায়, সৌদি আরবের প্রতিদিন ১০ লাখ ব্যারেল তেল স্বেচ্ছায় কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তটি অপ্রত্যাশিত ছিল, তবে এটি আশ্চর্য হওয়ার মতো নয়। রিয়াদের দৃষ্টিকোণ থেকে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারের ওপরে থাকা জরুরি। সৌদি কর্মকর্তারা তেলের দাম বাড়াতে চান যাতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোতে বিলিয়ন ডলার ব্যয় অব্যাহত রাখা যায়।

সৌদি আরবের এই পদক্ষেপ সামনের মাসগুলোয় জ্বালানি চাহিদার অনিশ্চিত পরিস্থিতির শঙ্কা তৈরি করেছে। বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে মন্দার আশঙ্কা অপরিশোধিত তেলের দামের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্যে তেল উৎপাদনকারীরা তেলের দরপতন এবং বাজারের অস্থিরতা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। পশ্চিমারা অভিযোগ করছে, ওপেক জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিশ্বে জ্বালানির দাম ঊর্ধ্বমুখী করে কার্যত বিশ্ব অর্থনীতিকে দুর্বল করছে। সেই সঙ্গে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক রাখার জন্যও ওপেককে দায়ী করা হয়। এর জবাবে ওপেক বলেছে, গত এক দশকে পশ্চিমা দেশগুলোর মুদ্রানীতির কারণে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে এবং তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোকে তাদের এই প্রধান রপ্তানি পণ্যের মূল্য ধরে রাখতে বাধ্য করেছে।

বিষয়:

তাসের ঘরের মতো গঙ্গায় ধসে পড়ল চার লেনের সেতু

গঙ্গায় ধসে পড়েছে নির্মাণাধীন চার লেনের বিশাল সেতু। ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের বিহার রাজ্যে গঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন চার লেনের বিশাল একটি সেতু ধসে পড়েছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর মেলেনি।

ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিহারের ভাগলপুর জেলার সঙ্গে খাগারিয়া জেলাকে সংযোগকারী আগুয়ানি-সুলতানগঞ্জ সেতুটি গত রোববার সন্ধ্যায় আচমকা ধসে পড়ে। চার লেনের ওই সেতুর নির্মাণকাজ এখনো বাকি। কাজ শেষ হওয়ার আগেই ‘সলিলসমাধি’ ঘটল এই সেতুর।

ভাগলপুরের এসডিও ধনঞ্জয় কুমার সাংবাদিকদের জানান, গত রোববার ছুটির দিন থাকায় সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। সে জন্য এ দিন সেতুটিতে কোনো কর্মী ছিলেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সেতুটির মাঝের একটি অংশ ধসে পড়ার পর বাকি অংশগুলোও ধসে পড়ছে। সেতু ধসে পড়তেই নদীতে বিশাল ঢেউ তৈরি হয়েছে।

বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জানিয়েছেন, দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এক বছরের মধ্যে বিহারে দুবার রাজ্যে সেতু ধসে পড়ার ঘটনা ঘটল। এর আগে গত ডিসেম্বরে বেগুসরাই জেলার বুড়ি গণ্ডক নদীতে একটি সেতু ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যায়। সেই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। কারণ, সেতুটি তখন আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়নি।

তবে গঙ্গায় ধসে পড়া সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করত। প্রশাসন সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় সেতুটিতে কোনো গাড়ি চলাচল ছিল না। সেতুর যে অংশে নির্মাণের কাজ চলছিল, সেখানে ঘটেছে দুর্ঘটনা। ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।


ঐতিহ্যবাহী গান ফিরিয়ে আনার মিশনে

আপডেটেড ৫ জুন, ২০২৩ ১৪:৩৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আইরিশ নারী ক্যাটরিওনা। বেলফাস্টের কুইনস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে মাস্টার্সের গবেষণার বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন লোকজ সংগীত। আর এ কাজের অংশ হিসেবে তিনি ২০২০ ও ২০২১ সালে ডোঙ্গাল এলাকার হারিয়ে যেতে বসা অসংখ্য গান সংগ্রহ করেন।

গানগুলো মুখে মুখে রচিত ও চর্চিত বলে এক প্রকার বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তেই চলে গিয়েছিল। ক্যাটরিওনা প্রায় ২০টি গান উদ্ধার করেন এবং রেকর্ড করেন। এখন তিনি তার সংগীত স্কুলের শিশুদের শেখাচ্ছেনও সেসব গান।

ক্যাটরিওনা বলেন, গানগুলো যত মানুষের কাছে পৌঁছাবে, ততই এগুলোর স্থায়িত্ব বাড়বে। আর গান সংরক্ষণের জন্য সেগুলো লিখিত থাকা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কিন্তু ডোঙ্গালের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন এগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে ভাবেনি। এগুলোর হারিয়ে যাওয়া বা থাকা নিয়েও আসলে তাদের খুব একটা মাথাব্যথা ছিল না।

‘তবে গানগুলো উদ্ধার করতে পেরে আমি নিজে খুব ভালো বোধ করছি। এগুলো আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এগুলোকে কোনোভাবেই বিলুপ্ত হতে দেয়া যাবে না। এখন আমার ধ্যানজ্ঞান আমার শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এসব গানের প্রচার ও প্রসার।’

গানগুলো সংগ্রহ করতে তাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল জানিয়ে ক্যাটরিওনা বলেন, তার পরও নিজের জন্মস্থান, নিজের বেড়ে ওঠার জায়গাটির প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই তিনি হারিয়ে যেতে বসা গানগুলোকে ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর ছিলেন।

সূত্র: সিএনএন


উগান্ডার ১৩৭ সেনাকে হত্যার দাবি আল-শাবাবের

আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ২০:০৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সোমালিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আল-শাবাব উগান্ডায় হামলা চালিয়ে সেখানকার ১৩৭ জন সেনাকে হত্যার দাবি করেছে। অবশ্য উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইওওয়েরি মুসেভেনি জানিয়েছেন, সোমালিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়ন শান্তিরক্ষীদের একটি ঘাঁটিতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৫৪ সেনাকে হত্যা করেছে সশস্ত্র জঙ্গিরা। খবর আল-জাজিরার।

গত শনিবার এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি জানান, আল-শাবাব রাজধানী মোগাদিসু থেকে ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বুলমারের ঘাঁটিতে হামলা চালায়। তবে হামলাটি গত সপ্তাহে হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন তিনি।

সশস্ত্র গোষ্ঠীটির দাবি, তারা গত ২৬ মে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে ১৩৭ জন সেনাতে হত্যা করেছে।

প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি গত শনিবার আরও জানান, উগান্ডা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (ইউপিডিএফ) পর আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছ থেকে ঘাঁটিটি পুনরুদ্ধার করেছে।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনারা অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছে এবং নিজেদের পুনর্গঠিত করেছে। তাই মঙ্গলবারের মধ্যে ঘাঁটিটি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।’

মুসেভেনি গত সপ্তাহেও বলেছিলেন, উগান্ডার নাগরিকরা হতাহত হয়েছেন। তবে সোমালিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়ন ট্রানজিশন মিশনে (এটিএমআইএস) কর্মরত সেনাদের ওপর হামলার ব্যাপারে সে সময় তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।

সোমামিলার পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে নিজেদের কঠোর শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠার জন্য আল-শাবাব ২০০৬ সাল থেকে লড়াই করে যাচ্ছে।

গত বছরের আগস্টে সোমালিয়ায় প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহামুদের নির্বাচনে জয়লাভের পর আল-শাবাবের ওপর সরকারের হামলা জোরদার করা হয়। ফলে সোমলিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আল-শাবাবের নিয়ন্ত্রণ খর্ব করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে সোমালিয়ার সরকার।

যদিও এখনো সরকারি, বাণিজ্যিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে উল্লেখযোগ্য হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে আল-শাবাবের।

এ ছাড়া প্রতিবেশী কেনিয়াতেও মাঝে মাঝে আক্রমণ চালায় আল-শাবাব। সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে দমনে নেয়া সোমালিয়ার সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমর্থনে নাইরোবির সৈন্য পাঠিয়েছে কেনিয়া। সে জন্য প্রতিশোধের অংশ হিসেবেই কেনিয়ায় এসব হামলা চালায় আল-শাবাব।


ভারতে রেল দুর্ঘটনা: সিবিআইকে তদন্তের সুপারিশ, দায়ীরা চিহ্নিত

আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৯:৪০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (সিবিআই) তদন্তের সুপারিশ করেছে দেশটির রেল কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এ কথা জানান। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘যা কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে, সব মাথায় রেখেই এই দুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেয়ার সুপারিশ করেছে রেলওয়ে বোর্ড।’

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওড়িশায় বালেশ্বরের কাছে বাহানগা বাজারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় একটি মালগাড়িও। এই ৩ ট্রেনের দুর্ঘটনায় ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও রোববার সকালে ওড়িশা সরকার মৃতের সংখ্যা কমিয়ে ২৭৫ বলে জানিয়েছে।

এদিকে সকালে ওড়িশার বাহানগা বাজারের দুর্ঘটনাস্থলে সরকারি সংবাদমাধ্যম দূরদর্শনকে দেয়া সাক্ষাতকারে ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘রেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিশনার (সিআরএস) গতকাল দুর্ঘটনাস্থলে ছিলেন... সিআরএস সবার সঙ্গে কথা বলেছেনএবং দ্রুত তদন্ত এগিয়েছেন। দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা গিয়েছে।এই কাজ যারা ঘটিয়েছেন তাদেরও চিহ্নিত করে ফেলা হয়েছে। সিআরএস তদন্ত রিপোর্ট, এই দুর্ঘটনার কারণ খুব শিগগিরই জানা যাবে। যাঁরা এই কাজ করেছেন, তারা পয়েন্ট মেশিনে, যেখান থেকে লাইন নিয়ন্ত্রিত হয়, সেখানে পরিবর্তন হয়েছে। সে কারণেই এই দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। কিন্তু নিরপেক্ষ সংস্থার দ্বারা রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই আমি এই বিষয়ে মন্তব্য করব।’

দুর্ঘটনার নেপথ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে অশ্বিনী বলেন, এখনই এই নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তদন্ত-রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন তিনি।

আগামী বুধবার সকালের মধ্যে স্তূপ সরিয়ে, লাইন মেরামত করে ট্রেন চলাচল পুরো স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী।

বিষয়:

এরদোয়ানের মন্ত্রিসভায় গোয়েন্দাপ্রধান-ব্যাংকার

মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যদের মাঝে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান তার নয়া মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছেন। এরদোয়ান এবার রাজস্ব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাবেক ব্যাংকার মেহমেত সিমসেককে দিয়েছেন। অন্যদিকে গোয়েন্দাপ্রধান সাবেক সেনা হাকান ফিদান দেশটির নতুন পরররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।

তুরস্কে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত শনিবার শপথ নেন এরদোয়ান। এবার তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ছাড়া বাকি সবাই নতুন।

আল-জাজিরা জানায়, অতীতেও তুরস্কের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন সিমসেক। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তুরস্কের অর্থমন্ত্রী ছিলেন সিমসেক। ২০১৮ সাল পর্যন্ত অর্থনীতির দায়িত্বে থাকা উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি কাজ করেন। তুরস্কে বিনিয়োগকারীদের কাছে তিনি ওই সময় জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তুরস্কের মুদ্রা লিরার মান ধারাবাহিক পতনের জেরে তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। এবার তুরস্কের অর্থনীতির হাল ধরতে এরদোয়ান সাবেক মেরিল লিঞ্চ অর্থনীতিবিদ সিমসেকের ওপরই আবার ভরসা করলেন।

পুরো বিশ্বের মতো তুরস্ককেও রেকর্ড মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দেশটিতে গত অক্টোবরে মুল্যস্ফীতি ৮৫ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। যদিও গত মে মাসে তা ৪৪ শতাংশে নামে। এ ছাড়া চলতি বছরের শুরু থেকে দেশটির মুদ্রা লিরার মান ডলারের বিপরীতে ১০ শতাংশ পড়ে যায়।

আল-জাজিরা জানায়, নয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে গোয়েন্দাপ্রধান হাকান ফিদান মেভলুত কাভুসোগলুর স্থলাভিষিক্ত হবেন। ২০১৪ সাল থেকে কাভুসোগলু তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। এরদোয়ানের বিশ্বস্ত সহযোগীদের একজন হাকান ফিদান। ২০১০ সাল থেকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটির প্রধান হিসেবে কাজ করে আসছেন। এর আগে এরদোয়ান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় হাকান তার উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।

তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ইয়াসার গুলের। তিনি হুলুসি আকারের স্থলাভিষিক্ত হবেন। এরদোয়ান তার ডেপুটি তথা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন সেভদেত ইলমাজকে, যিনি এর আগে উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বাইরে আলি ইয়েরলিকায়াকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ইউসুফ তেকিনকে শিক্ষামন্ত্রী ও ইলমাজ তুঙ্ককে বিচারমন্ত্রী করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফারহেত্তিন কোচা এবং সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী মেহমেত নুরি আগের পদেই বহাল আছেন।


স্পেনের ক্যাথলিক চার্চে শিশু নিপীড়ন

একটি ক্যাথলিক চার্চ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গত আট দশকে স্পেনের ক্যাথলিক চার্চগুলোতে সাত শতাধিক শিশু নিপীড়ককে চিহ্নিত করা হয়েছে। চার্চ এই প্রথম এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। স্প্যানিশ ক্যাথলিক চার্চ গত শুক্রবার এ-সংক্রান্ত প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

১৯৪০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ক্যাথলিক চার্চগুলোর ঘটনাগুলো নিয়ে তদন্ত করা হয়। তদন্তে ৭২৮ জন নিপীড়ক ও ৯২৭ জন ভুক্তভোগীকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

২০২১ সালে শিশু নিপীড়নের বিষয়টি স্পেনে সবার নজরে আসে। দেশটির প্রথম সারির পত্রিকা এল পায়েসে এমন ১২০০টিরও বেশি ঘটনার কথা তুলে ধরা হয়। মূলত যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড ও ফ্রান্সের চার্চগুলোর এমন সব ঘটনা নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পর এই খবর প্রকাশিত হয়। এরপর বেশ কয়েকটি তদন্ত শুরু হয়। চার্চও নিজস্ব তদন্ত শুরু করে। তদন্ত প্রতিবেদনে ভুক্তভোগীদের জবানবন্দি নেয়া হয়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৯৯ শতাংশেরও বেশি অভিযুক্ত পুরুষ এবং অর্ধেকেরও বেশি পাদ্রি।


জাপানে নিম্ন জন্মহারে রেকর্ড

জাপানে টানা ৭ বছর জন্মহার কমেছে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৪:৫১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জন্মহার কমায় নতুন রেকর্ড গড়েছে জাপান। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত আগের ৭ বছর টানা জন্মহার কমেছে। তাই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে দেশটির জনসংখ্যা কমা নিয়ে। জন্মহার কমার পাশাপাশি এশিয়ার উন্নত এই দেশটিতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।

শুক্রবার জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, একজন নারী তার জীবদ্দশায় গড়ে ১ দশমিক ২৫৬৫টি সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। ২০০৫ সালে এ হার ছিল ১ দশমিক ২৬০১। অথচ দেশের জনসংখ্যা স্থিলিশীল রাখার জন্য ২ দশমিক শূন্য ৭ জন্মহার দরকার।

প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সরকার নিম্নমুখী জন্মহার বাড়ানোর বিষয়টিকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছে। বড় আকারের ঋণ থাকার পরও শিশুদের যত্নসহ মা-বাবাদের অন্যান্য সহায়তা দিতে বছরে আড়াই হাজার ডলার ব্যয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। ৫ শতাংশ কমে গত বছর জাপানে ৭ লাখ ৭০ হাজার ৭৪৭টি শিশু জন্ম নেয়। এটি কম শিশু জন্ম নেয়ার নতুন রেকর্ড।

বিষয়:

ভারতের ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ২৮৮, ঘটনাস্থলে মোদি

আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৪:৫৯
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৮৮ জন নিহত এবং ৮০৩ জন আহত হয়েছেন। রেল কর্মকর্তাদের বরাতে শনিবার সর্বশেষ এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জনিয়েছে গত আহতদের মধ্যে অন্তত ৫৬ জন মারাত্মকভাবে জখম হয়েছেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এক যাত্রী টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, তিনি ২০০-৩০০ মরদেহ দেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তিনি বলেছেন, এই দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

এদিকে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ এক প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সিগন্যালের ত্রুটির কারণে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রাজ্যটির বালেশ্বর জেলায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আরেকটি ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় পণ্যবাহী আরও একটি ট্রেনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

সাম্প্রতিককালে ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক ট্রেন দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং একটি পণ্যবাহী ট্রেন এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এক টুইটে বলেছেন, এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং আহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।

ভয়াবহ এ ট্রেন দুর্ঘটনায় এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এ দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারের জন্য দুই লাখ এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

করমণ্ডল এক্সপ্রেসটি ছিল ২৩ কামরার ট্রেন। তার অন্তত ১৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনায় মালগাড়ির ওপরে উঠে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন। একাধিক কামরা দুমড়ে-মুচড়ে যায়।

তুবড়ে যাওয়া ট্রেনের বগি সরিয়ে, বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া রেললাইন সারিয়ে আবার কবে পরিসেবা স্বাভাবিক হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। দক্ষিণ ভারতগামী বহু ট্রেন এই দুর্ঘটনার জেরে বাতিল করতে হয়েছে।

বিষয়:

ভারতে ভয়াবহ যত ট্রেন দুর্ঘটনা

উড়িষ্যায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা আড়াইশ ছাড়িয়ে গেছে। ছবি: এএফপি
আপডেটেড ৩ জুন, ২০২৩ ১৮:২৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইতিহাসের অন্যতম প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছে ভারত। গত শুক্রবার উড়িষ্যায় ভয়াবহ ওই ট্রেন দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৬১ জন নিহত এবং ৯০০ জনের মতো মানুষ আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আহতদের মধ্যে গুরুতর অনেকে থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যটির সরকারি কর্মকর্তারা।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের রেল ব্যবস্থাপনার সুখ্যাতি থাকলেও দেশটিতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ দুর্ঘটনার সংখ্যাও কম নয়। অতীতের একাধিক ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে গত শুক্রবারের ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি।

৬ জুন, ১৯৮১: সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে বিহার রাজ্যে। ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে বাগমতি সেতু পার হওয়ার সময় ভিড়েঠাসা একটি ট্রেনের পেছন দিকের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে নদীতে পড়ে যায়। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান অন্তত ৮০০ মানুষ।

৮ জুলাই, ১৯৮৮: একটি এক্সপ্রেস ট্রেন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দক্ষিণ ভারতের কুইলনের কাছে বর্ষায় পানি উপচে পড়া একটি হ্রদে ডুবে যায়। ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ১০৬ জন নিহত হন।

২০ অগাস্ট, ১৯৯৫: দিল্লির ২০০ কিলোমিটার দূরে উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা কালিন্দি এক্সপ্রেস ট্রেনকে ধাক্কা দেয় পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস ট্রেন। সে সময় দুই ট্রেনের সংঘর্ষে সাড়ে ৩শ মানুষের মৃত্যু হয়।

২৬ নভেম্বর ১৯৯৮: পাঞ্জাবের খান্না এলাকায় গোল্ডেন টেম্পল মেইল ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এ অবস্থায় পেছন থেকে এসে ট্রেনটিকে ধাক্কা দেয় জম্মু তাবি–শিয়ালদহ এক্সপ্রেস ট্রেন। ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২১২ জন।

২ অগাস্ট, ১৯৯৯: পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের গাইসালে দাঁড়িয়ে থাকা ব্রহ্মপুত্র মেইল ট্রেনে সজোর ধাক্কা দেয় অবধ আসাম এক্সপ্রেস ট্রেন। এতে ২৮৫ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন ৩ শতাধিক মানুষ। হতাহতদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন সেনাবাহিনী ও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্য।

২৯ অক্টোবর, ২০০৫: দক্ষিণাঞ্চলীয় অন্ধ্র প্রদেশে ভেলুগোন্দার কাছে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয়ে মৃত্যু হয় অন্তত ১০২ জনের।

১০ জুলাই, ২০১১: ভারতের ফতেহপুরে একটি মেইল ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ৭০ জন মারা যায়, আহত হয় তিনশর বেশি মানুষ।

২০ নভেম্বর, ২০১৬: উত্তর প্রদেশে একটি এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত হয় ১৪৬ জন নিহত হন। এই দুর্ঘটনায় আহত হয় দুইশর বেশি মানুষ।

২১ জানুয়ারি, ২০১৭: অন্ধ্র প্রদেশে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয়ে ৪১ জন নিহত হন।

১৯ অক্টোবর, ২০১৮: পাঞ্জাবের অমৃতসরে দশেরা উৎসব উপলক্ষে রেললাইনের ওপর জড়ো হওয়া কয়েকশ’ মানুষের ওপর দিয়ে একটি কমিউটার ট্রেন চলে গেলে ৫৯ জনের মৃত্যু হয়,আহত হন আরও ৫৭ জন মানুষ।

বিষয়:

‘সিগন্যালের ত্রুটিতে উড়িষ্যায় রেল দুর্ঘটনা’

আপডেটেড ৩ জুন, ২০২৩ ১৭:২৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সিগন্যালের ত্রুটির কারণে ভারতের উড়িষ্যায় ট্রেন দুর্ঘটনার ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ। রেল দপ্তরের পক্ষ থেকে একটি যৌথ পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আনন্দবাজার পত্রিকা।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ওই যৌথ রিপোর্টে সিগন্যালের ত্রুটির কথাই বলছেন রেল কর্মকর্তারা। তবে এটি প্রাথমিক প্রতিবেদন। বিস্তারিত তদন্তের পর দুর্ঘটনার কারণ আরও স্পষ্ট হবে।

ওই যৌথ পরিদর্শন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘আপ মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ট্রেনটি সেই লাইনে ঢোকেইনি। ট্রেন ঢুকেছিল লুপ লাইনে। সেখানে আগে থেকে একটি মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। তার সঙ্গে সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়।’

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘এর মাঝে ডাউন লাইন দিয়ে বালেশ্বরের দিকে যাচ্ছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। সেই ট্রেনের দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়।’

কিন্তু মেন লাইনে সবুজ সিগন্যাল পাওয়া সত্ত্বেও করমণ্ডল এক্সপ্রেস কী ভাবে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ল, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

শুক্রবার সন্ধ্যার এই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রেল। তাদের তথ্য অনুযায়ী, আহতের সংখ্যা ৬৫০-এর বেশি। তবে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, আহতের সংখ্যা ৯০০।

তবে তুবড়ে যাওয়া ট্রেনের বগি সরিয়ে, লাইন সারিয়ে আবার কবে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। দক্ষিণ ভারতগামী বহু ট্রেন এই দুর্ঘটনার জেরে বাতিল হয়েছে।

শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুপুর ৩টার দিকে হাওড়ার নিকটবর্তী শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। এটি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উড়িষ্যার বালেশ্বরে পৌঁছায়, আধ ঘণ্টা পর বাহানগা বাজারের কাছে ২৩ কামরার ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়ে।

বিষয়:

‘বেঁচে আছি বাবা’

ছবি: আনন্দবাজার
আপডেটেড ৩ জুন, ২০২৩ ১৭:২৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দুর্ঘটনার খবর শুনেছিলেন গণমাধ্যমে। ভেসে আসছিল মৃত্যুর আলাদা আলাদা পরিসংখ্যান। সেই থেকে করমণ্ডল এক্সপ্রেসে যাত্রা করা ছেলের সঙ্গে টানা যোগাযোগের চেষ্টা করে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ার বাসিন্দা সুনীল হালদার। সুনীলের ছেলে নবীন কেরালার পরিযায়ী শ্রমিক।

আনন্দবাজার পত্রিকায় জানিয়েছে, ছুটি কাটিয়ে শুক্রবার করমণ্ডলে চেপে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু রাতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ট্রেন। খবর আসার বেশ কয়েক ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নবীনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি তার পরিবার। দুর্ঘটনার খবরে বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেছিলেন প্রতিবেশি ও আত্মীয়রা। এর পর রাত পৌনে তিনটার দিকে সুনীলের ফোনে কল আসে। ধরতেই উল্টো দিক থেকে ভেসে আসে, নবীনের কণ্ঠস্বর। নবীন বলেন, ‘বেঁচে আছি বাবা’। দীর্ঘ উদ্বেগের পর স্বস্তির কান্নায় ভেঙে পড়েন সুনীল।

সুনীল জানিয়েছেন, অন্যের মোবাইল থেকে ফোন করেছিল ছেলে। তার আগে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠাতেই প্রায় ৪-৫ ঘণ্টা কাটাতে হয়েছিল তাঁদের।

সুনীল কিছুটা স্বস্তি পেলেও এখনও যোগাযোগ করা যায়নি, নদিয়ার করিমপুর থেকে কেরালায় কাজ করতে যাওয়া চার পরিযায়ী শ্রমিকের সঙ্গে। উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় ফোন হাতে অপেক্ষা করছেন তাঁদের পরিবারও।

ভারতের উড়িষ্যায় বালেশ্বরের ওই ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২৬০ জন ছাড়িয়েছে। আহত ৯০০ জনের মতো।

মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের এক যাত্রী টুইটে লিখেছেন, ‘সেখান থেকে অক্ষত ফিরতে পেরে আমি চির কৃতজ্ঞ। সম্ভবত এটি ভারতের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনা।’

এনডিটিভি জানিয়েছে, অনুভব দাস নামের সেই যাত্রী লিখেন, ‘বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের তিনটি সাধারণ কোচ সম্পূর্ণভাবে লাইনচ্যুত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জেনারেল, স্লিপার, এসি থ্রি টায়ার এবং এসি টু টায়ারসহ প্রায় ১৩টি কোচ সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

নিজেই ২০০-২৫০ এরও বেশি জনকে মৃত দেখেছেন বলে দাবি করেছেন অনুভব দাস।

জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে কেরালা কর্মরত অনেক পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরেছিলেন। দিন দশেকের ছুটি কাটিয়ে করমণ্ডলে চেপে কেরল ফিরছিলেন অনেকে। তাদের মধ্যে ছিলেন নদিয়ার করিমপুর এলাকার বেশ কয়েক জন পরিযায়ী শ্রমিক। ছিলেন নবীনও।

করিমপুর পাটাবুকা এলাকার ৮ জন, লক্ষ্মীপাড়া এলাকার ৩ জন, থানারপাড়া এলাকার ২ জন এবং হুগলবেড়িয়ার ১ জন পরিযায়ী শ্রমিক দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটিতে ছিলেন। নবীন-সহ আট জনই ছিলেন একই কামরায়। দুর্ঘটনার কারণে গুরুতর না হলেও তারা প্রত্যেকেই আঘাত পেয়ছেন। দুর্ঘটনার জেরে বেশিরভাগের ব্যাগ হারিয়ে গেছে। ব্যাগগুলিতেই তাদের টাকাপয়সা-সহ যাবতীয় নথি ছিল। সারা রাত স্থানীয় একটি স্কুলে রাত কাটানোর পর এক অটোচালকের সাহায্যে সকাল সাতটা নাগাদ বালেশ্বর স্টেশনে পৌঁছন নবীনরা। প্রাণে বাঁচলেও দুর্ঘটনার ক্ষত, শেষ সম্বল হারানোর যন্ত্রণা, দুর্বল শরীর নিয়ে ঘরে ফিরছেন তারা প্রত্যেকে।

নবীনদের খোঁজ পাওয়া গেলেও এখনও খোঁজ মেলেনি নদিয়ার বহু পরিযায়ী শ্রমিকের। ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে পরিবারের। নবীন বলেন, ‘বাড়ি থেকে সবাই একসঙ্গে এসেছিলাম। তার পর স্টেশন থেকে কে কোথায় উঠেছে, বলতে পারব না। আমরা ৮ জন ঠিক আছি , কিন্তু বাকিদের ফোনে পাচ্ছি না।’

বিষয়:

ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২৬০ ছাড়াল 

শুক্রবার সন্ধ্যায় ওড়িশায় তিন ট্রেনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩ জুন, ২০২৩ ১৪:১৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৬১ জন নিহত এবং ৬৫০ জন আহত হয়েছেন। রেল কর্মকতাদের বরাতে শনিবার সর্বশেষ এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানায়, ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি (সিআরএস)।

শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রাজ্যটির বালেশ্বর জেলায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আরেকটি ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় পণ্যবাহী আরও একটি ট্রেনও ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

সাম্প্রতিককালে ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক ট্রেন দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমন্ডল এক্সপ্রেস এবং একটি পণ্যবাহী ট্রেন এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এক টুইটে বলেছেন, এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং আহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।

ভয়াবহ এ ট্রেন দুর্ঘটনায় একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এ দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারের জন্য দুই লাখ এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন বলেও জানা গেছে।


banner close