বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
১২ চৈত্র ১৪৩১

তুরস্ক-সিরিয়াকে সাহায্যে প্রস্তুত রাশিয়া-ইউক্রেন-ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র

তুরস্কের দিয়ারবাকিরে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৯:৫৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৯:৫২

ভয়াবহ ভূমিকম্পে শোকে মূহ্যমান তুরস্ক-সিরিয়া। ৭.৮ মাত্রার মূল ভূমিকম্প ও এর পরে বেশ কিছু সংখ্যক পরাঘাতে নিহতের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে। ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েছেন আরও অনেকে। উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন দেশগুলোর উদ্ধারকর্মীরা। তবে বিপদে পাশে পাওয়ার আশ্বাসও বিভিন্ন দেশ থেকে পাচ্ছে দেশ দুটি। রাশিয়া, ইউক্রেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তো আছেই, প্রয়োজনে সাহায্যে প্রস্তুত আপাতদৃষ্টিতে তুরস্ক-সিরিয়ার শত্রু হিসেবে পরিচিত ইসরায়েলও।

রাশিয়া

রাশিয়া ঘোষণা দিয়েছে, তুরস্কের প্রয়োজন হলে ১ হাজার উদ্ধারকর্মীসহ দুইটি আধুনিক এল-৭৬ এয়ারক্রাফট পাঠাবে তারা। সমবেদনা জানিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে বার্তা পাঠিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

একইভাবে সিরিয়ান প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদকেও বার্তা পাঠিয়েছেন পুতিন।

যুক্তরাষ্ট্র

তুরস্কের ন্যাটো জোটের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা এই কঠিন সময়ে আঙ্কারার পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান টুইটারে এক বার্তায় বলেন, ‘তুরস্ক ও সিরিয়ায় আজকের বিপর্যয়ের খবরে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যেকোনো প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত বলে তুরস্ককে জানাতে আমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আমরা তুরস্কের সঙ্গে সমন্বয় করে এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবো।’

ইউরোপীয় ইউনিয়ন

ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা তাদের চব্বিশ ঘণ্টা সার্ভিসের ইমার্জেন্সি রেসপন্স কোঅরডিনেশন সেন্টার তুরস্ক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছে। তাছাড়া জরুরি কোপারনিকাস ম্যাপিং সেবাও চালু করেছে ইউনিয়ন।

ইউক্রেন

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে আমাদের বন্ধুবৎসল তুর্কি জনগণকে অনুভব করছি। যেকোনো সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আমরা।

গ্রিস

পাশাপাশি দেশ হওয়ায় তুরস্কের সাথে গ্রিসের সম্পর্ক তিক্ততাপূর্ণ। তবে ভূমিকম্পে আক্রান্তদের সাহায্যে প্রস্তুত দেশটি। গ্রিক প্রধানমন্ত্রী কিরিকস মিতসোতাকিস জানিয়েছেন, তার দেশের উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত করা হয়েছে এবং শিগগিরই সাহায্যার্থে পাঠানো হবে।

ইসরায়েল

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জরুরি চিকিৎসা এবং উদ্ধার তৎপরতায় সাহায্য করার জন্য তার দেশের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন।

জার্মানি

জার্মানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের আসলে কী দরকার তারা সেটি তুরস্ক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সমন্বয় করছে।

এছাড়া বাংলাদেশ ভারত, স্পেন, তাইওয়ানও জানিয়েছে যেকোনো সাহায্যের জন্য প্রস্তুত তারা।

বিষয়:

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ধ্বংসস্তূপের মাঝে দাঁড়িয়ে রয়েছে এক শিশু। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৫ মার্চ, ২০২৫ ২১:৪৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় চালানো ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও অন্তত ২৩ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শিশু এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। এর মধ্যে সর্বশেষ হামলাগুলো সোমবার গভীর রাতে এবং মঙ্গলবার ভোরে চালানো হয়। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও ইরনার।

প্রতিবেদন বলছে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের কাছে একটি তাঁবুতে হামলা চালিয়ে তিন শিশু এবং তাদের বাবা-মাকে হত্যা করা হয়েছে বলে নাসের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল। দীর্ঘ ১৫ মাসের অব্যাহত আগ্রাসনের পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে স্বল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি কার্যকর থাকলেও গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল গাজায় পুনরায় হামলা শুরু করে। আল-জাজিরা জানিয়েছে, এতে গত ৭ দিনে প্রায় ৭৫০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,২০০ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই ২৭০ জনের বেশি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১ লাখ ১৩ হাজার জনের বেশি আহত হয়েছেন। তবে কয়েকটি অধিকার সংস্থার মতে, প্রকৃত নিহতের সংখ্যা ৬২ হাজারেরও বেশি।

প্রায় ১৮ মাস ধরে চলা এই আগ্রাসনের ফলে গাজার ২.৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার বেশির ভাগই ইতোমধ্যেই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এমনকি চলতি মাসের শুরুতে বর্বর ইসরায়েল সব ধরনের সাহায্য সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পর গাজাবাসী খাদ্য ও পানির ক্রমবর্ধমান সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।

এরই মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মঙ্গলবার গাজার উত্তরের সীমান্তবর্তী শহরগুলোর বাসিন্দাদের সরে যেতে বলেছে। জানিয়েছে, এসব এলাকা থেকে নাকি ইসরায়েলে ফিলিস্তিনিদের রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।

জোরপূর্বক উচ্ছেদের শিকার ফিলিস্তিনি শহরগুলোর মধ্যে রয়েছে গাজা শহরের জাবালিয়া, বেইত লাহিয়া, বেইত হানুন এবং শেজাইয়া। দক্ষিণে খান ইউনিস এবং রাফাহ এলাকার জন্যও আদেশ জারি করা হয়েছে।

গাজার ঐতিহাসিক শরণার্থী শিবিরগুলোর মধ্যে বৃহত্তম জাবালিয়ার বাসিন্দাদের উদ্দেশে দেওয়া নির্দেশে দখলদার সেনাবাহিনী বলেছে, ‘আপনাদের নিরাপত্তার জন্য সবাইকে অবিলম্বে দক্ষিণের পরিচিত আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে হবে’। এ নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করে ফিলিস্তিনি এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘গাজা উপত্যকায় কোনো নিরাপদ এলাকা নেই।’

এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, নতুন করে আক্রমণের লক্ষ্য হামাসকে গাজায় তাদের আটকে থাকা বাকি ৫৯ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া। তাদের মধ্যে প্রায় ২৪ জন এখনো জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে গত ১৯ জানুয়ারির যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করার জন্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী হামাস জানিয়েছে, তারা কাতার, মিশর এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি ফিরিয়ে আনা এবং তিন পর্যায়ের যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য একটি নতুন প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করছে।

তবে, এখনো পর্যন্ত এতে কোনো অগ্রগতি হয়নি বলেও উল্লেখ করেছে হামাসের কিছু সূত্র। কারণ, মিশরের দেওয়া নতুন প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ও হামাস সম্মতি দিলেও ইসরায়েল এখনো তাতে সাড়া দেয়নি।

গাজায় আন্তর্জাতিক কর্মী কমাচ্ছে জাতিসংঘ

গাজায় ইসরায়েলের হামলার মুখে আন্তর্জাতিক কর্মীদের সংখ্যা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে জাতিসংঘ। ইসরায়েলি সেনাদের সাম্প্রতিক হামলায় গাজায় শত শত ফিলিস্তিনির সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন জাতিসংঘের কর্মীরাও।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান দুজারিক সোমবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ১০০ আন্তর্জাতিক কর্মীর মধ্যে প্রায় ৩০ জন এ সপ্তাহে গাজা ছেড়ে যাবে। তবে দুজারিক স্বীকার করেন যে, এ সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে, যখন গাজায় মানবিক ত্রাণের চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগও বেড়েছে। দুজারিক বলেন, এই ‘সাময়িক পদক্ষেপ’ জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের নেওয়া ‘কঠিন সিদ্ধান্ত’, যা নিরাপত্তা ও কার্যক্রমগত কারণে নেওয়া হয়েছে।

মুখপাত্র এও নিশ্চিত করেছেন যে, গাজার কেন্দ্রস্থল দেইর আল-বালাহ এলাকায় গত ১৯ মার্চ জাতিসংঘ কম্পাউন্ডে হামলার জন্য ইসরায়েলের ট্যাংক দায়ী। ওই হামলায় একজন বুলগেরীয় জাতিসংঘ কর্মী নিহত এবং ছয়জন বিদেশি কর্মী গুরুতর আহত হন।

জাতিসংঘ এই প্রথম তাদের কম্পাউন্ডে হামলার জন্য ইসরায়েলি বাহিনীকে প্রকাশ্যে জন্য দায়ী করল। যদিও ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বরাবরই হামলার ঘটনায় তাদের দায় অস্বীকার করে এসেছে। ইসরায়েল মাত্র দুই মাসের মাথায় ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে দেওয়ার পর জাতিসংঘ ওই বিবৃতি দিল।

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে আল-জাজিরার প্রতিবেদক গ্যাব্রিয়েল এলিজোন্ডো বলেন, কর্মী সংখ্যা হ্রাস করাটা কেবল আন্তর্জাতিক কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। গাজায় এখনও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি জাতিসংঘ কর্মী আছেন, যাদের মধ্যে শত শত কর্মী ইসরায়েলের হামলায় নিহত হয়েছেন।

গ্যাব্রিয়াল জানান, গাজায় জাতিসংঘের কর্মী সংখ্যা ১৩ হাজারের বেশি, যাদের বেশিরভাগই ফিলিস্তিনি। তারা চিকিৎসক, নার্স, ড্রাইভার এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মানবিক কাজে জড়িত।

গত ১৫ মাসে জাতিসংঘ কর্মীদের ২৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছে। কিন্তু এখন জাতিসংঘ মহাসচিব বলছেন, পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক যে, গাজায় জাতিসংঘ নিযুক্ত ১০০ আন্তর্জাতিক কর্মীর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বা প্রায় ৩০ জন আন্তর্জাতিক কর্মী কমাতে হবে। তারা নিজেদের নিরাপত্তার জন্য গাজা ছেড়ে যাবেন, বলেছেন আল জাজিরা প্রতিবেদক গ্যাব্রিয়েল।

এদিকে, জাতিসংঘের মুখপাত্র দুজারিক বলেন, গত ১৯ মার্চ জাতিসংঘ কম্পাউন্ডে ইসরায়েলি ট্যাংক হামলার পূর্ণ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেছেন মহাসচিব গুতেরেস।


যুদ্ধ পরিকল্পনার চ্যাটগ্রুপে ভুলে সাংবাদিককে যুক্ত করলেন ট্রাম্প কর্মকর্তারা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের ওপর হামলার ঘটনায় গোপনীয় সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলাপকালে গুরুতর নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় জড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সদস্য। যাদের মধ্যে ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচারক তুলসি গ্যাবার্ড রয়েছেন।

হামলা পরিকল্পনা নিয়ে বাণিজ্যিক চ্যাটঅ্যাপ সিগনালে কথা বলছিলেন তারা। তখন ভুল করে দেশটির একজন বিখ্যাত সাংবাদিককেও গ্রুপে যুক্ত করা হয়েছিল। ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।

এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা। তদন্তের আহ্বান জানিয়ে সিনেটে সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমার বলেন, ‘বহু বছরের মধ্যে—আমি যতদূর জানি—এটা মার্কিন সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের সবচেয়ে মারাত্মক লঙ্ঘনের একটি।’

স্পর্শকাতর তথ্য নিয়ে আলাপের জন্য সিগনাল ব্যবহারে মার্কিন সরকারের অনুমোদন নেই। সেদিনের এই আলোচনায় ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার, চিফ অব স্টাফ সুসি ওয়াইলস ও মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফ উইটকফও ছিলেন।

গেল সোমবার দ্য আটলান্টিক সাময়িকীতে এক লেখায় সম্পাদক জেফরি গোল্ডবার্গ এমন তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি জানতে পারেন যে ‘হুতি পিসি স্মল গ্রুপ’ নামে সিগনাল আলাপে তাকে যুক্ত করা হয়েছে। ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার ১৮ সদস্য এই গ্রুপচ্যাটে ছিলেন।

জেফরি গোল্ডবার্গ বলেন, সিআইয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও বর্তমান আভিযানিক বিস্তারিত তথ্যসহ স্পর্শকাতর উপকরণ প্রতিবেদনে নিজের বিবরণ থেকে বাদ দিয়েছেন তিনি।

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র ব্রিয়ান হিউগেস এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আটলান্টিক সাময়িকীকে তিনি বলেন, ‘একটি বার্তা প্রবাহ থেকে এমনটি ঘটেছে। কীভাবে অসাবধানতাবশত নম্বরটি যুক্ত হয়েছে, তা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি।’

তবে এই ঘটনা সম্পর্কে জানতেন না বলে জানিয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আর আমি আটলান্টিক সাময়িকীর খুব একজন বড় ভক্ত না।’

পেট হেগসেথ বলেন, ‘কেউ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে সেখানে বার্তা দেয়নি। এ বিষয়ে আমি এতটুকুই বলতে পারবো।’ প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সফর শেষে সোমবার হাওয়াইতে অবতরণ করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।

জবাবে জেফরি গোল্ডবার্গ বলেন, ‘হেগসেথ সত্যিকথা বলেননি। তিনি মিথ্যা বলেছেন। হেগসেথ যুদ্ধ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলছিলেন।’

পরবর্তীতে হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্ডটসসহ জাতীয় নিরাপত্তা টিমের ওপর সর্বোচ্চ আত্মবিশ্বাস আছে ট্রাম্পের।


চীন-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে কেউ জিতবে না: লি কিয়াং

লি কিয়াং
আপডেটেড ২৪ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ না করে শান্তি স্থাপন করলে উভয় দেশই লাভবান হবে, অন্যথায় তা উভয়েই জন্য ক্ষতির কারণ হবে। চীন-যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধে কেউ জিতবে না। চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এ মন্তব্য করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসম্যান স্টিভ ডেইন্স এবং বেইজিংয়ে থাকা মার্কিন ব্যবসায়ীদের সামনে রোববার তিনি এ কথা বলেছেন। বার্তাসংস্থা আনাদুলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের পণ্যে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর জবাবে পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণাও দিয়েছে চীন। যা একপ্রকার বাণিজ্য যুদ্ধে রূপ নিয়েছে। এমন অবস্থায় দুই পরাশক্তির শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের সম্পর্ক ‘গুরুত্বপূর্ণ’ সন্ধিক্ষণে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন চীনা প্রধানমন্ত্রী।

লি কিয়াং বলেছেন, ‘চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র যদি শান্তি স্থাপন করে, তাহলে আমরা উভয়েই লাভবান হব; যদি তারা যুদ্ধ করে, তাহলে আমরা উভয়েই হেরে যাব। সংঘর্ষের পরিবর্তে আমাদের সংলাপ এবং উইন-উইন সহযোগিতার মাধ্যমে লড়াই করা উচিত। আমরা আশা করি যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কের সুস্থ, স্থিতিশীল এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য একসাথে কাজ করবে চীন এবং আমেরিকা।’

চীনের প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, চীন সর্বদা ‘যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বের কোম্পানিগুলোকে (চীনা ভূখণ্ডে) স্বাগত জানায়’ এবং ‘তাদের বৈধ দাবিগুলো সক্রিয়ভাবে পূরণ করার পাশাপাশি দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোকে সমানভাবে বিবেচনা এবং একটি সুস্থ ব্যবসায়িক পরিবেশ গড়ে তুলবে চীন।’

মার্কিন সিনেটর স্টিভ ডেইন্স বলেন, আমরা যখন চীনের দিকে তাকাই, তখন দেখি- ১৯৯১ সালে চীনের অর্থনীতি প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার বা তারও কিছু বেশি ছিল। গত ৩৪ বছরে আমরা চীনের বৃদ্ধি এবং পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক ডেইন্সও অদূর ভবিষ্যতে উভয় পক্ষের মধ্যে আরও উচ্চ-স্তরের সংলাপের আশা প্রকাশ করেছেন। মার্কিন এই সিনেটর এর আগে আমেরিকান ব্যবসায়িক নির্বাহীদের সাথে বেইজিংয়ে বার্ষিক চীন উন্নয়ন ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছিলেন।

চীনা অর্থনীতির সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ব্যবসায়ীদের দুই দিনের এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তাদের অনেকেই চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সাথে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী লি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য চীনের বাজারে প্রবেশের সুযোগ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন। এছাড়া বহিরাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় লি কিয়াং বলেন, সম্ভাব্য অপ্রত্যাশিত ধাক্কার জন্য প্রস্তুত চীন।


ফিলিস্তিনিদের বসতভিটা ছাড়তে বাধ্য করছে ইসরায়েল

পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার
গাজায় বিশুদ্ধ পানির অভাবে ময়লা পানি পান করছে এক ফিলিস্তিনি শিশু। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৪ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনিদের বসতভিটা ছাড়তে বাধ্য করছে ইসরায়েলি সরকার। গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করতে হামলার পাশাপাশি পানিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এই অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল পরিকল্পিতভাবে গাজার পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদুলুতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্ব পানি দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক ভাষণে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, দখলদার শক্তি (ইসরায়েল) আমাদের জনগণের দুর্ভোগ, বাস্তুচ্যুতি এবং ধীরে ধীরে মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করার জন্য পানিকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।

গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের কারণে মৌলিক মানবিক পরিষেবা ভেঙে পড়েছে। খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির পাশাপাশি পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মাহমুদ আব্বাস বলেন, বিশেষ করে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে এবং মানবিক সহায়তা আটকে রেখে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন রেজলিউশন লঙ্ঘন করছে।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গাজার পানির সংকট এতটাই ভয়াবহ যে হাজারো শিশু নিরাপদ পানির অভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। অনেকেই দূষিত পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছে, যা তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলছে। প্রেসিডেন্ট আব্বাস বলেন, গাজার শিশুদের জন্য নিরাপদ পানি পাওয়া এক কঠিন বাস্তবতা। তারা তৃষ্ণায় মারা যাচ্ছে, অথচ বিশ্বের অন্য শিশুদের মতো সুস্থভাবে বেঁচে থাকার অধিকার তাদেরও থাকা উচিত।

মাহমুদ আব্বাস আরও বলেন, ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের ভূমি থেকে উৎখাত করতে পরিকল্পিতভাবে পানি সংকট তৈরি করেছে। এটি তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডার অংশ। তারা ভূগর্ভস্থ এবং ভূপৃষ্ঠের পানির সব উৎস নিয়ন্ত্রণ করছে, যাতে ফিলিস্তিনিরা বাস করতে না পারে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। টানা ১৫ মাসের এই আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলেও, দুই মাস যেতে না যেতেই ফের হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।

গত মঙ্গলবার নতুন করে বিমান হামলা চালিয়ে ৭০০-এর বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আহত হয়েছে আরও এক হাজারের বেশি মানুষ। এতে জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি ভেস্তে গেছে।

গাজায় ক্রমবর্ধমান পানি সংকট এবং ইসরায়েলের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, বিশ্ববাসীকে বুঝতে হবে, ফিলিস্তিনি জনগণের জীবন রক্ষা করা এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানাই, তারা যেন গাজার জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।

জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ইসরায়েলের এই পদক্ষেপকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং অবিলম্বে গাজার মানবিক সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের ওপর কোনো কার্যকর আন্তর্জাতিক চাপ পরিলক্ষিত হয়নি।

গাজায় আরও এক হামাস নেতা নিহত

গাজার নাসের হাসপাতালে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল বারহুমসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই আল-মাওয়াসিতে ইসরায়েলি বাহিনী একটি তাঁবুতে বোমা হামলা চালিয়ে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সালাহ আল-বারদাউইলকে হত্যা করেছে।

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা সালাহ আল-বারদাউইল নিহত হন। স্থানীয় সময় রোববার সকালে এক হামাস কর্মকর্তা বিবিসিকে এ তথ্য জানান। স্থানীয়দের দাবি, ওই বিমান হামলায় হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরের সদস্য বারদাউইল এবং তার স্ত্রী নিহত হয়েছেন। তবে এ নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি।

প্রায় দুই মাস যুদ্ধবিরতির পর মঙ্গলবার থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তবে হামাস ইসরায়েলের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পাল্টা অভিযোগ করেছে, কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল।

এদিকে ইয়েমেনেও সমানতালে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইয়েমেনের দুটি এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর মধ্যে রাজধানী সানার একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাও রয়েছে যেখানে কমপক্ষে একজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন।

নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল

রাফাহ এবং খান ইউনিসের কয়েকটি বাস্তুচ্যুত শিবিরে ভয়ংকর বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এছাড়াও চলে স্থল অভিযান, ইসরায়েল থেকে ছোড়া হয় কামানের গোলা। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের এসব হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে।

হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৪১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এর ফলে চলমান গাজা যুদ্ধে এই পর্যন্ত ৫০ হাজার ২১ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের সংখ্যায় এই মরদেহ দুটিও যুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলিদের হামলায় ৬১ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর ফলে ইসরায়েলি আক্রমণে মোট আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৩ হাজার ২৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে।


গাজার হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলা, হামাস নেতাসহ পাঁচজন নিহত

আপডেটেড ২৪ মার্চ, ২০২৫ ১৪:৩৯
ইউএনবি

দক্ষিণ গাজায় সবচেয়ে বড় হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। এতে হামাসের রাজনৈতিক শাখার এক নেতাসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। হাসপাতালটিতে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) ও গার্ডিয়ান এমন তথ্য দিয়েছে। খান ইউনিস শহরের নাসের হাসপাতালে অস্ত্রোপচার ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এমন এক সময়ে হামলা চালানো হয়েছে, যখন হতাহতে পরিপূর্ণ ছিল ভবনটি। হামলার ঘটনাটি নিশ্চিত করেছে ইসরাইল।

তারা বলছেন, একজন হামাস সদস্য ওখান থেকে কার্যক্রম চালাচ্ছিল বলে তারা এই অভিযান চালিয়েছে। ব্রিট্শি দৈনিক গার্ডিয়ানের খবর বলছে, এতে হামাসের রাজনৈতিক নেতা ও চিকিৎসকসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনটি জানিয়েছে, হামলায় তাদের রাজনৈতিক শাখার নেতা ইসমাইল বারহুম নিহত হয়েছেন।

তার নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্টস। হামাসের আল-আকসা টিভির খবর বলছে, এরআগের হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন ইসমাইল বারহুম।

গেল সপ্তাহে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় হামলা চালায় ইসরাইল। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোতে হামাস তাদের কার্যক্রম চালায় বলে বেসামরিক নাগরিকরা হতাহত হচ্ছেন বলে অভিযোগ করছে তারা। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে হামাস।

যুদ্ধে গাজার অন্যান্য চিকিৎসাকেন্দ্রের মতো নাসের হাসপাতালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। রবিবার (২৩ মার্চ) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এমন খবর জানিয়েছে।

গত মঙ্গলবার থেকে নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরাইলি বাহিনী। সতেরো মাসের যুদ্ধে সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই দিনটিতে চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এ সময়ে কয়েকডজন হামাস নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে বলে ইসরাইলি বাহিনী দাবি করেছে। গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে এ কয়দিনে নিহত হয়েছেন ৬০০ জনের বেশি মানুষ। এর মধ্যে ২০০টিই শিশু।

পনেরো মাস যুদ্ধের পর গাজা উপত্যকায় কিছুটা শান্তির দেখা মিলেছিল। কিন্তু যুদ্ধবিরতি চুক্তি ছুড়ে ফেলে দিয়ে ফের সর্বাত্মক হামলা চালায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনী।

এরআগে শনিবার খান ইউনিসে ইসরাইলের আরেক হামলায় হামাসের আরেক নেতা সালাহ বারদাইল নিহত হয়েছেন। ইসমাইল ও সালাহ দুজনই হামাসের ১৯ সদস্যের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থার সদস্য। ২০২৩ সালে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এই সংস্থার আরও ১১ সদস্য নিহত হয়েছেন।

রবিবার সকাল থেকেই উত্তর-দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় বিস্ফোরণের শব্দ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এসব এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে দক্ষিণ ইসরাইলে ঢুকে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধাদের হামলাকে কেন্দ্র করে গাজায় ১৮ মাসব্যাপী এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। এবছর ১৯ জানুয়ারিতে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়। তারপরও এই যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে ইসরাইলি হামলায় গাজায় ১৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।


ইন্দোনেশিয়ায় হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ২০:৪৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সশস্ত্র বাহিনী আইনে সংশোধনী এনে এই বাহিনীকে সরকারি কাজে আরও বেশি সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে দেশটিতে। এই সংশোধনী দেশটিকে অতীতের স্বৈরশাসনের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।

গতকাল রোববার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে ২০০৪ সালের সশস্ত্র বাহিনী আইনে সংশোধনী আনে। এর মধ্য দিয়ে সামরিক পদে কর্মরত অবস্থায়ও কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক পদে নিযুক্ত হতে পারবেন।

এই সংশোধনী দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর জোট সরকার এগিয়ে নিয়েছে। সাবেক এই জেনারেল সাবেক স্বৈরশাসক সুহার্তোর জামাতা। নতুন আইনে চার তারকার জেনারেলদের অবসরের বয়স ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬৩ করা হয়েছে এবং অনানুষ্ঠানিক কর্মকর্তাদের অবসরের সময়সীমা ৫৫ করা হয়েছে।

নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টকে সামরিক সদস্যদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। এই বিষয়টিকে অনেকেই স্বৈরতন্ত্রের পথে ফিরে যাওয়া বলে মনে করছেন।

আইন সংশোধনের প্রতিবাদে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতা পার্লামেন্ট ভবনের বেড়া ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে অনেক বিক্ষোভকারী আহত হন। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল অসংখ্য ব্যানার। এসব ব্যানারে লেখা ছিল- ‘সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফেরত পাঠাও!’ এবং ‘সামরিকীকরণ ও ওলিগার্কির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও!’

মানবাধিকার-কর্মী ও বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক প্রশাসনে আবারও অন্তর্ভুক্ত করা হলে সুহার্তোর আমলে প্রচলিত ‘দ্বৈত ভূমিকা’ আবার ফিরে আসতে পারে। ইমপারশিয়াল মানবাধিকার সংস্থার পরিচালক আল আরাফ বলেছেন, ‘এই সংশোধনীগুলো ১৯৯৮ সালে সুহার্তোর পতনের পর যে গণতান্ত্রিক সংস্কার হয়েছিল, তার চেতনাকে লঙ্ঘন করছে এবং এটি স্বৈরতন্ত্র পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা তৈরি করছে।’

এই সংশোধনী গোপনে পাস করানোর বিষয়টিও জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সংসদে বিলটি উপস্থাপনের মাত্র এক মাস আগে, প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো এক চিঠির মাধ্যমে সংসদকে এই আইন সংশোধনের অনুমোদন দেন।

গণতন্ত্রকামী কর্মীরা দাবি করছেন, সরকারের কর্মকর্তা এবং আইনপ্রণেতারা গত ১৫ মার্চ দক্ষিণ জাকার্তার এক পাঁচতারকা হোটেলে গোপনে বৈঠক করে এই আইনের খসড়া তৈরি করেছেন। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র গবেষক আন্দ্রেয়াস হারসোনো বলেছেন, ‘এই সংশোধনীগুলো দ্রুততার সঙ্গে চাপিয়ে দেওয়া সরকারের মানবাধিকার ও জবাবদিহির প্রতিশ্রুতির পরিপন্থি।’

‘কনট্রাস’ নামে পরিচিত ইন্দোনেশিয়ার নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর একটি সংগঠন বলেছে, ‘এই সংশোধনী ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি করবে এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করবে।’

ইন্দোনেশিয়ার কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক ডোমিনিক নিকি ফাহরিজাল বলেন, ‘এই ধরনের স্বৈরাচারী আইন সংসদীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল করে দেবে।’

তবে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী স্যাফরি সামসুদ্দিন এই সংশোধনীর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ‘ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন ও বৈশ্বিক সামরিক প্রযুক্তির বিবর্তনের কারণে সামরিক বাহিনীর রূপান্তর জরুরি।’

কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই সংশোধনীতে সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের মানোন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর কোনো সমাধান নেই।

১৯৬৫ সালে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর জেনারেল সুহার্তো এক রক্তাক্ত অভিযান চালিয়ে পাঁচ থেকে ১০ লাখ কমিউনিস্ট ও বামপন্থিদের হত্যা করেছিলেন এবং এরপর ৩২ বছর ধরে সামরিক শাসন কায়েম করেন। তাঁর শাসনামলে সেনাবাহিনী ‘দ্বৈত ভূমিকা’ পালন করত, যেখানে তারা প্রতিরক্ষা ও প্রশাসন উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষমতা ধরে রাখত।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইন্দোনেশিয়া শাখার প্রধান উসমান হামিদ অতীতে স্বৈরশাসক সুহার্তোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘সেই সময়ে কর্মীরা অপহৃত হতেন, অনেকে আর বাড়ি ফিরে আসেননি। আজ মনে হচ্ছে আমরা আবার সেই পথে ফিরে যাচ্ছি।’


ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক হামলা, নিহত ৩

কিয়েভে গাড়ির আগুন নেভাচ্ছেন দমকলকর্মী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ২০:৩৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার চালানো বৃহৎ আকারের ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ৫ বছরের এক শিশুসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০ জন। হামলায় বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডসহ শহরজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল রোববার ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছেন রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিচকো টেলিগ্রামে এক পোস্টে এই হামলাকে ‘কিয়েভে শত্রুর ব্যাপক ড্রোন হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ড ও ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়ে জরুরি সেবা কর্মীদের পাঠানো হয়েছে।

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর ১৪৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। যার মধ্যে ৯৭টি প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে এবং ২৫টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে ব্যর্থ হয়েছে। এই হামলার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে সৌদি আরবে ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কূটনীতিকরা কৃষ্ণসাগরের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

এদিকে ব্লুমবার্গ নিউজ সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের একটি শান্তিচুক্তি চূড়ান্ত করতে চাইছে এবং ২০ এপ্রিলের মধ্যে একটি সামগ্রিক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করছে। তবে উভয় পক্ষ এখনো একে অপরের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে।

ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগ জানিয়েছে, কিয়েভের হোলোসিভস্কি জেলায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে এক শিশু ও এক পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

অন্যদিকে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ফলে ডনিপ্রোভস্কি জেলায় এক নারী নিহত হন। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ড্রোন হামলায় কিয়েভে আরও আটজন আহত হয়েছেন।

জরুরি পরিষেবার প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, বহুতল ভবনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, একটি কক্ষের ছাদ ছিদ্র হয়ে গেছে এবং পোড়া আসবাবপত্র চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

কিয়েভের আঞ্চলিক গভর্নর মাইকোলা কালাশনিক জানিয়েছেন, রাজধানীর আশপাশের অঞ্চলেও বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুজন আহত হয়েছেন।

জেলেনস্কির আহ্বান

এ অবস্থায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে রুশ বাহিনী ১,৫৮০টিরও বেশি নিয়ন্ত্রিত বোমা, প্রায় ১,১০০টি আক্রমণাত্মক ড্রোন এবং ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

তার ভাষায়, ‘আমাদের নতুন সমাধান দরকার। মস্কোর ওপর আরও চাপ প্রয়োগ করতে হবে যাতে তারা এসব হামলা এবং যুদ্ধ বন্ধ করে’।

রাশিয়ার কোনো মন্তব্য নেই

এ হামলায় বিষয়ে এখনো পর্যন্ত রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য আসেনি। তবে উভয় দেশই দাবি করে, তারা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে না।শনিবার রাত থেকে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কিয়েভ এবং পূর্ব ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতা জারি ছিল।


গাজায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতা নিহত

ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ২০:২১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে বর্বর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা সালাহ আল-বারদাউইল নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার সকালে এক হামাস কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয়দের দাবি, ওই বিমান হামলায় হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরের সদস্য বারদাউইল এবং তার স্ত্রী নিহত হয়েছেন। তবে এ নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি। প্রায় দুই মাস যুদ্ধবিরতির পর মঙ্গলবার থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তবে হামাস ইসরায়েলের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পাল্টা অভিযোগ করেছে, কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন এলাকায় ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় লেবানন এবং গাজায় আরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। হিজবুল্লাহর সঙ্গে চার মাস আগে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে আবারও লেবাননে হামলা চালাচ্ছে দখলদার বাহিনী। দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৭ জন নিহত হয়েছে।

অন্যদিকে শনিবার সকাল থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনই শিশু। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ৪৯ হাজার ৭৪৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৩ হাজার ২১৩ জন আহত হয়েছে। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। তাদের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গাজায় ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। কারণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

চুক্তিতে পৌঁছাতে নমনীয় হতে প্রস্তুত হামাস

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির শর্তে কিছুটা নমনীয় হতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ফিলিস্তিনি আন্দোলনের প্রতিনিধিরা তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে আঙ্কারায় বৈঠকে বলেছেন, গাজা উপত্যকায় সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতি এবং সেখান থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য হামাস প্রয়োজনীয় সব নমনীয়তা প্রদর্শন করতে প্রস্তুত।

রুশ বার্তা সংস্থা তাস জানায়, হামাস প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলা জরুরি বলে মনে করছেন। আঙ্কারায় আলোচনার পর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হামাস বলেছে, ‘হামাস প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জোর দিয়ে বলেছেন, তারা ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলা জরুরি বলে মনে করছেন।’

হামাস আরও বলেছে, গাজা উপত্যকায় ব্যাপক যুদ্ধবিরতি, ফিলিস্তিনি বন্দিদের জন্য জিম্মি বিনিময় এবং ছিটমহল থেকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সব নমনীয়তা প্রদর্শন করতে তারা প্রস্তুত রয়েছে।

হামাসের মুখপাত্র আব্দুল লতিফ আল-কানু এর আগে বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত গাজা সংঘাত নিরসনের পরিকল্পনা নিয়ে হামাস মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করছে।

জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে, ইসরায়েল ও হামাস গাজায় বন্দি মুক্তি এবং ছিটমহলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার জন্য মিসর, কাতার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এক চুক্তিতে পৌঁছায়। তিন-পর্যায়ের ওই চুক্তিটি ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। ১ মার্চ শেষ হওয়া চুক্তির ৪২ দিনের প্রাথমিক পর্যায়ে হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়। বিনিময়ে ইসরায়েল ১৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়।

ইসরায়েলি আক্রমণ বন্ধ করতে পোপ ফ্রান্সিসের জরুরি বার্তা

রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধান পোপ ফ্রান্সিস ইসরায়েলকে গাজা উপত্যকায় চলমান আক্রমণ বন্ধ করার এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

পোপ তার নিয়মিত অ্যাঞ্জেলাস প্রার্থনায় লিখেছেন, ‘গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের তীব্র বোমাবর্ষণ পুনরায় শুরু হওয়ায় আমি অত্যন্ত দুঃখিত। এর ফলে অনেক মানুষের প্রাণহানি এবং আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।’

পাঁচ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে থাকার পর সুস্থ হয়ে বের হওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। পোপ ফ্রান্সিস আরও বলেন, ‘আমি বিশ্ববাসীর কাছে অনুরোধ করছি, অস্ত্রগুলো অবিলম্বে স্তব্ধ করা হোক। যেন সাহস পাওয়া যায়, সেই সাহস যাতে মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য এবং শান্তির জন্য পুনরায় সংলাপ শুরু করতে পারে। যাতে গাজার সব বন্দি মুক্তি পেতে পারে এবং চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি অর্জিত হয়।’

তিনি গাজার বর্তমান মানবিক অবস্থার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ‘গাজার মানবিক পরিস্থিতি আবারও অত্যন্ত বিপর্যস্ত। এর ফলে তা অত্যন্ত গুরুতর হয়ে উঠেছে, যা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়পক্ষ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবিলম্বে পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে,’ পোপ যোগ করেছেন।

এই আহ্বানটি এমন একটি সময় এসেছে যখন গাজার পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে এবং হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে বা আহত হচ্ছে। পোপ ফ্রান্সিসের এই বার্তা, যুদ্ধের ক্ষতির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আবেদন হিসেবে সামনে এসেছে, যা মানবতার পক্ষে একটি একত্রিত চেষ্টার আহ্বান।


সৌদিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অগ্রগতির আশা রাশিয়ার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।

তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।

সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।

সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।

তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"


তুরস্কে বিক্ষোভ-সমাবেশ অব্যাহত, আটক ৯৭

ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর সমর্থনে তুরস্কে বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তুরস্কে টানা তৃতীয় দিনের মতো ব্যাপক বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। পুলিশি হেফাজতে থাকা ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর সমর্থনে এ বিক্ষোভ আয়োজন করা হয়। গতকাল শনিবার ইমামোগলুর আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল।

গত বুধবার ভোরে ইস্তাম্বুলের মেয়রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ কারণে এক দশকেরও বেশি সময় পর তুরস্কের রাস্তায় সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আরব নিউজ জানিয়েছে, আদালতে হাজির করার আগের রাতেও বিক্ষোভকারীরা ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সমাবেশ করে।

বিক্ষোভকালে ইস্তাম্বুল, আঙ্কারা ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইজমিরে দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং জলকামান নিক্ষেপ করে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী ৯৭ জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া।

মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, আটককৃতদের প্রকৃত সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ রাতারাতি বেশ কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে।

২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রজাতন্ত্রী জনতা দল (সিএইচপি) থেকে ৫৩ বছর বয়সি মেয়র ইমামোগলুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার কয়েক দিন আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আইনি জটিলতার ক্রমবর্ধমান ঝামেলার মধ্যে ইমামোগলু গত বছর মেয়র হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন। তার বিরুদ্ধে আরও ‘একটি সন্ত্রাসী সংগঠনকে (পিকেকে) সহায়তা এবং মদদ দেওয়ার’ মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘুষ, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, ব্যাপক জালিয়াতি এবং একটি অপরাধমূলক সংগঠনের অংশ হিসেবে অবৈধভাবে ব্যক্তিগত স্বার্থ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এসব মামলায় তার সঙ্গে আরও অনেককেই আসামি করা হয়েছে।

গত শুক্রবার পুলিশ দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে তাকে ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে বলে তার দল জানিয়েছে। মেয়রের একজন আইনজীবী মেহমেত পেহলিভান বলেছেন, ইমামোগলু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আইনজীবী এক্স-পোস্টে লিখেছেন, সমাজের চোখে ইমামোগলুর সুনাম ক্ষুণ্ন করাটাই এই গ্রেপ্তারের লক্ষ্য ছিল। উভয় তদন্তই অসত্য অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।

এদিকে দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড়ের পর আবারও সমাবেশ করার কথা রয়েছে। আইনজীবীদের মাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় ইমামোগলু বলেছেন, তিনি তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের মধ্যে ৫০টিরও বেশি প্রদেশে রাস্তায় নেমে আসা বিক্ষোভকারীদের জন্য ‘সম্মানিত এবং গর্বিত’। ‘তারা আমাদের প্রজাতন্ত্র, আমাদের গণতন্ত্র, ন্যায়পরায়ণ তুর্কিদের ভবিষ্যৎ এবং আমাদের জাতির ইচ্ছা রক্ষা করছেন।’

শুক্রবার রাতে ইস্তাম্বুলের সিটি হলের বাইরে জনতার উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধান বিরোধী দল সিএইচপির প্রধান ওজগুর ওজেল বলেন, বিক্ষোভ নিষেধাজ্ঞা এবং রাস্তার সন্ত্রাস (তিনি পুলিশি কর্মকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন) সহ্য করবে না তুরস্ক। কেননা এরদোয়ানের তীব্র সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে ৩ লাখ মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ইমামোগলুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পর তুর্কি মুদ্রার ব্যাপক দরপতন হয়েছে এবং আর্থিক বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। শুক্রবার তুর্কি স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক প্রায় আট শতাংশ কমে গেছে।

বিষয়:

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা লেবাননের

লেবাননে ইসরায়েলের হামলা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে লেবানন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম এই ঘোষণা দিয়েছেন। যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আল-জাজিরা বলছে, প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালামের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধ এবং শান্তির বিষয়ে লেবানন যে সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখানোর জন্য সব নিরাপত্তা ও সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, হামলার ফলে ‘একটি নতুন যুদ্ধের দিকে ধাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা লেবানন এবং লেবাননের জনগণের জন্য দুর্দশা ডেকে আনতে পারে’।

এদিকে ইসরায়েলে ফের হুতি বিদ্রোহীরাও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে তারা ইয়েমেন থেকে আসা একটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আঘাত হানার আগেই ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানানো হয়।

ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে হুতি বিদ্রোহীরা। শনিবার ভোরে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে হুতি মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানান, ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীটি তেল আবিবের কাছে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

তিনি জানিয়েছেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো হামলা চালানো হলো। সারি আরও বলেন, হুতিরা লোহিত সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানের ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে।

লেবানন থেকে ইসরায়েলে দফায় দফায় রকেট হামলা

লেবানন থেকে ইসরায়েলে দফায় দফায় রকেট হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলের সীমান্তে নিক্ষেপ করা তিনটি রকেট প্রতিহত করেছে।

ইসরায়েলের আর্মি রেডিও এক খবরে জানিয়েছে, লেবানন থেকে নিক্ষেপ করা কমপক্ষে পাঁচটি রকেট শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি রকেট প্রতিহত করা হয়েছে এবং দুটি লেবাননের ভূখণ্ডের ভেতরে পড়েছে বলে জানানো হয়।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের ইয়াহমোর শহরের উপকণ্ঠে গোলাবর্ষণ করছে। তবে এসব সংঘাতে এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ সংগঠনও এখন পর্যন্ত ওই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

মার্কিন সেনাবাহিনী এখনো এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেনি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির পরেও লোহিত সাগরে একাধিক মার্কিন জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা।

২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হুতি বিদ্রোহীরা। ফিলিস্তিনিদের ওপর যতদিন পর্যন্ত আগ্রাসন চলবে তত দিন এই হামলা চলবে বলে জানানো হয়েছে।

পাল্টা হামলা ইসরায়েলের

ইসরায়েলি গোলা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি শহরে আঘাত হেনেছে। তেল আবিবের বিমান সীমান্ত সংলগ্ন আরও তিনটি শহরে হামলা চালিয়েছে। লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। লেবানন থেকে ছোড়া একাধিক রকেট প্রতিহত করার পর দেশটিতে পাল্টা গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।

এই পাল্টাপাল্টি হামলা তেল আবিব ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে কয়েক মাস আগে হওয়া যুদ্ধবিরতিকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজা ঘিরে যে যুদ্ধ শুরু হয়, তার ধারাবাহিকতায় পরে হিজবুল্লাহও তেল আবিবের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। পরে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর একাধিক শীর্ষ নেতা, অস্ত্রভাণ্ডারের বড় অংশ ও অসংখ্য যোদ্ধাকে হত্যা করার পর ইরানঘনিষ্ঠ সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ঝিমিয়ে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত বছরের নভেম্বরে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়, তারপর শনিবারই প্রথম এই সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটল, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, তারা সীমান্তের ৬ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লেবাননের একটি জেলা থেকে ছোড়া তিনটি রকেট প্রতিহত করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনী গোলা ছুড়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনা রেডিও।

ইসরায়েলি গোলা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি শহরে আঘাত হেনেছে, তেল আবিবের বিমান সীমান্ত সংলগ্ন আরও তিনটি শহরে হামলা চালিয়েছে, বলেছে লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।

সীমান্তের ওপার থেকে রকেট ছোড়ার জন্য কারা দায়ী, তা বলেনি ইসরায়েল। রয়টার্স এ প্রসঙ্গে হিজবুল্লাহর মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে গোষ্ঠীটির কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর কোনো অস্ত্র থাকবে না, ইসরায়েল সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে এবং ওই এলাকায় লেবাননের সরকারি বাহিনী মোতায়েন থাকবে এমন শর্ত ছিল।

চুক্তিতে দক্ষিণ লেবাননের সব সামরিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া এবং সব অবৈধ অস্ত্র জব্দের ভারও লেবাননের সরকারের হাতে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গতকাল শনিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, সীমান্ত শহর মেটুলাতে রকেট ছোড়ার ঘটনার দায়ভার লেবা

বিষয়:

মুক্তি পাবেন ইমরান খান?

ইমরান খান
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান যদি ২০২৩ সালের ৯ মের দাঙ্গার ঘটনায় আন্তরিকভাবে ক্ষমা চান তবে তিনি মুক্তি পেতে পারেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ এ কথা বলেছেন। জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর ওই দিন তার সমর্থকরা বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ওই দাঙ্গার ঘটনার জন্য পিটিআইকে দায়ী করা হলেও তা অস্বীকার করে আসছে দেশটির সাবেক ক্ষমতাসীন দলটি।

জিও নিউজের জিরগা অনুষ্ঠানে রানা সানাউল্লাহ বলেন, ইমরান খান দেশকে রাজনৈতিক অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। কারণ তিনি মনে করেন যে তার কার্যক্রমের মাধ্যমে বিপ্লব আনতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, কিন্তু না, বিপ্লবের কোনো সম্ভাবনা নেই। কেবল রাজনৈতিক সংগ্রামই এখানে বিজয়ের দিকে নিয়ে যাবে।

ইমরান খানের বর্তমান পদক্ষেপের মাধ্যমে সাফল্যের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না রানা সানাউল্লাহ। এ সময় সানাউল্লাহ সাম্প্রতিক সময়ের পিটিআইয়ের কিছু লং মার্চের কথা উল্লেখ করেন। যেগুলো সরকারের নেওয়া পাল্টা পদক্ষেপে ব্যর্থ হয়।

৯ মে তারিখের জন্য ক্ষমা চাইলে কি খানের মুক্তি সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে সানাউল্লাহ বলেন, আমি মনে করি ৯ মে তারিখের জন্য যদি তিনি ক্ষমা চান, তাহলে আলোচনা এগিয়ে যেতে পারে অথবা হয়তো আমরা কথা বলতে পারি। এর আগে তিনি বলেছিলেন, আদালত যদি পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে মুক্তি দেয় তবে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকারের কোনো আপত্তি থাকবে না।

এদিকে, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সাম্প্রতিক ইন-ক্যামেরা বৈঠকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শে স্পিকার আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিশেষভাবে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানের ক্রমাবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্ডাপুরকে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আইয়ুবসহ পিটিআই-এর সংসদীয় নেতৃত্ব অংশ নেয়নি। তবে, প্রাদেশিক প্রতিনিধি হিসেবে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্ডাপুর উপস্থিত ছিলেন। ইমরান খানের মুক্তি ও রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের রাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলছে, যা আসন্ন সময়ে দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন ইমরান খান।

বিষয়:

ইসরায়েলে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবি
ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে জনতার বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২১ মার্চ, ২০২৫ ২০:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের রাজপথে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবিতে তারা এ বিক্ষোভ করে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ডানপন্থি সরকারের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেন তারা। গতকাল শুক্রবার দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের দাবি, নেতানিয়াহুর সরকার দেশের গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। দেশটিতে এ বিক্ষোভের কারণে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। আয়োজকরা বলছেন, বিক্ষোভ যেভাবে গতি পাচ্ছে তাতে আগামীতে আরও বেশি বিক্ষোভ হতে পারে।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে এ বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তবে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে ইসরায়েল দুই মাসের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর এ বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভকারীরা সরকারকে রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার এবং বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে হামাসের হাতে আটক ৫৯ জিম্মির দুর্দশা উপেক্ষা করার অভিযোগ করেছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ২৪ জিম্মি জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে।

ব্রাদার্স ইন আর্মস প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রধান নির্বাহী এইতান হার্জেল বলেন, এই সরকার এখন নিজেকে রক্ষা করার জন্য আবারও যুদ্ধ শুরু করেছে, ইসরায়েলের জনসাধারণকে বিরক্ত করে এমন বিষয়গুলো থেকে নজর সরাতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকার সম্ভাব্য সব স্তরে বৈধতা হারিয়েছে, তারা ব্যর্থ হচ্ছে।

সাবেক সিনিয়র নৌ কর্মকর্তা এবং বিক্ষোভের সংগঠক ওরা নাকাশ পেলেদ বলেন, আমি মনে করি আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি, আমাদের সংগঠিত হতে হবে, আমাদের অবিচল থাকতে হবে, আমাদের মনোযোগী হতে হবে। (বিক্ষোভ) সহিংস হতে পারে না (কিন্তু) এটি ভদ্র হতে হবে না।

ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের আইন বিশেষজ্ঞ ড. আমির ফুচস বলেন, সরকারের বারকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা আছে, কিন্তু তবুও প্রশাসনিক আইন মেনে চলতে হবে।

গাজা ও পশ্চিম তীরে ৯৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা

গাজা এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি তাণ্ডব ও ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের মুখোমুখি হওয়া ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় ৯৯ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি তহবিল ঘোষণা করেছে কানাডা। গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী মেলানি জোলি গাজা এবং পশ্চিম তীরে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রদানে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, রেড ক্রস এবং এনজিও অংশীদারদের সহায়তা করার জন্য ৯৯ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি তহবিল ঘোষণা করেছেন।

এই সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে অপরিহার্য পরিষেবা পুনরুদ্ধারের জন্য ২০ মিলিয়ন ডলার, বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে এবং দুর্বল মানুষকে সাহায্য করা। আরও ২৪.৫৫ মিলিয়ন ডলার জীবন রক্ষাকারী সহায়তার জন্য বরাদ্দ করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, সুরক্ষা এবং আশ্রয়।

এছাড়া ২৪.৭৫ মিলিয়ন ডলার শান্তি ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টার জন্য ব্যয় করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে মাইন অপসারণ। অপরদিকে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং শাসনব্যবস্থার জন্য ৩০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান মানবিক পরিস্থিতি টেকসই নয়। কানাডা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবাহের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছে। বেসামরিক নাগরিক এবং মানবিক কর্মীদের সুরক্ষাসহ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

কানাডা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, তারা এমন প্রচেষ্টার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেখানে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিরা শান্তি, নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সাথে পাশাপাশি বসবাস করতে পারে।

গাজায় ৩ দিনে প্রাণ গেল ৬০০ ফিলিস্তিনির

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এ নিয়ে পবিত্র রমজানে ইসরায়েলের এই বর্বর হামলায় গত তিনদিনে প্রাণ হারাল প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি। এমনকি গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে স্থল অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮৫ জন নিহত ও আরও ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ হাজার ৬১৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছেন। ভুক্তভোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে বলে আশঙ্কা করছে মন্ত্রণালয়।

আল জাজিরা বলছে, মঙ্গলবার গাজায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৫৯০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলি বিমান হামলা ও স্থল হামলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিহত ও আহতের সংখ্যাও বাড়ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফাতে তাদের স্থল আক্রমণ চলছে এবং সৈন্যরা বেইত লাহিয়া শহর ও উত্তর দিকে কেন্দ্রীয় এলাকায় অগ্রসর হচ্ছে। ইসরায়েল বলেছে, গাজা উপত্যকায় পুনরায় শুরু করা স্থল অভিযান আরও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে বুধবার (১৯ মার্চ) ওই অঞ্চলের উত্তর-দক্ষিণের প্রধান পথ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সৈন্যরা।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে গাজায় ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস। স্থল ও আকাশপথে ইসরায়েলের নতুন হামলায় বেসামরিক প্রাণহানি বৃদ্ধির প্রতিশোধে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।


banner close