পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের লাহোরের জামান পার্ক বাসভবনের সামনে পৌঁছেছে পুলিশের গাড়ি। ইসলামাবাদের এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা মঙ্গলবার জানিয়েছেন, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরানকে গ্রেপ্তারের উদ্দেশে গেছে পুলিশ ।
পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম ডন নিউজ জানায়, লাহোরে ইমরানের বাসভবনের সামনে বিপুল সংখ্যক পিটিআই নেতা-কর্মী ভিড় করেছেন। পুরো মল রোড বন্ধ হয়ে গেছে। পিটিআইয়ের শীর্ষ নেতারা টুইটার বার্তায় দলীয় কর্মীদের ইমরানের বাসভবনের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে ইসলামাবাদের ডিআইজি (অপারেশনস) শাহজাদ বুখারি সাংবাদিকদের জানান, ইমরানকে পুলিশি হেফাজতে নিতে লাহোরে তার বাড়ির সামনে গেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। তার বিরুদ্ধে এখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তবে কোন মামলায় ইমরানকে ধরে নিয়ে যেতে চাইছে পুলিশ, তা বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানান ডিআইজি বুখারি। এছাড়া ইমরানকে গ্রেপ্তার করলে তাকে কোন থানায় রাখা হবে সে বিষয়েও তিনি আগেভাগে কিছু জানাতে চাননি।
এর আগে তোশাখানা মামলায় ইমরানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ইসলামাবাদ জেলা ও দায়রা আদালত। আগামী ১৮ মার্চের মধ্যে ইমরানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
১৩০ বছরের মধ্যে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বিরল ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন প্রিন্স হ্যারি। তিনি মঙ্গলবার ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্র ‘ডেইলি মিরর’-এর প্রকাশকের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হন।
প্রিন্স হ্যারি মিররের ওই প্রকাশকের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে ফোন হ্যাকিং ও অন্যান্য গুপ্তচরবৃত্তির মামলা করেছেন। এই মামলায় সাক্ষ্য দিতেই এদিন আদালতে হাজির হন ব্রিটিশ রাজকুমার।
বিবিসি জানায়, এদিন তিনি একটি কালো এসইউভি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল) গাড়িতে করে আদালতে আসেন। এই ইতিহাস সৃষ্টিকারী মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দি করতে আদালতের সামনে ভিড় জমিয়েছিলেন সাংবাদিকরা। তাদের পাশ কাটিয়েই আদালতে প্রবেশ করেন প্রিন্স হ্যারি।
সাক্ষ্য দেয়ার আগে হ্যারি লন্ডন হাইকোর্টের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বাইবেল হাতে নিয়ে শপথ নেন। এরপর অভিযুক্তের আইনজীবী তাকে জেরা শুরু করেন।
৩৮ বছর বয়সী হ্যারি ঊনবিংশ শতাব্দীর পর প্রথম ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন। এর আগে ১৮৯১ সালে তৎকালীন হবু রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড এক জুয়া কেলেঙ্কারির মামলার বিচারে সাক্ষ্য দিতে আদালতে গিয়েছিলেন।
গত সোমবার আদালতে প্রিন্সের মামলার বিবরণ দিতে গিয়ে তার আইনজীবী ডেভিড শেরবোর্ন বলেন, হ্যারির শৈশব থেকেই ব্রিটিশ সংবাদপত্রগুলো হ্যাকিং ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এমন কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছে, যেগুলোকে পত্রিকাগুলো ‘স্কুপ’ (এক্সক্লুসিভ সংবাদ) হিসেবে পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রকাশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, হ্যারির এসব গল্প সংবাদপত্রটির বিক্রি বাড়ানোর একটি বড় হাতিয়ার ছিল। ১৯৯৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত স্কুলে ব্যথা পাওয়া থেকে শুরু করে গাঁজা ও কোকেন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং প্রেমিকাদের সঙ্গে উত্থান-পতন বিষয়ে ২ হাজার ৫০০টির মতো নিবন্ধে তার জীবনের প্রায় সব দিক তুলে ধরা হয়েছিল। ‘ট্যাবলয়েডগুলোর জন্য কিছুই পবিত্র বা সীমার বাইরের ছিল না’ বলেও জানিয়েছেন হ্যারির আইনজীবী।
হ্যাকিং অর্থাৎ তারকাদের ফোনে আড়ি পাতার জন্য ডিফল্ট সিকিউরিটি কোড অনুমান বা ব্যবহার করার অভ্যাস এই শতাব্দীর প্রথম দিকে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলোতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। ২০১১ সালে নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড ১৩ বছর বয়সী এক নিহত কিশোরীর ফোন হ্যাক করার খবর প্রকাশের পর এ বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে নাম লেখালেন দেশটির সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। এই দলীয় প্রতিযোগিতার মাঠে সাবেক বস ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে পেন্সকে লড়তে হবে।
আল-জাজিরা জানায়, সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট পেন্স গত সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন, রিপাবলিকান পার্টি থেকে মনোনয়ন পেতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন। এ দিন নিজের কাগজপত্র ফেডারেল ইলেকশন কমিশনের কাছে জমা দেন। ৬৩ বছর পেন্স আইওয়া থেকে তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পেন্স প্রথমে একটি ভিডিও বার্তা এবং তারপরে একটি বক্তৃতা দিয়ে প্রচারণা শুরু করবেন বলে তার ভোট ম্যানেজাররা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন। নিজেকে একজন চিরায়ত রিপাবলিকান হিসেবে তুলে ধরা পেন্স গত দুই বছরের বেশির ভাগ সময় আইওয়া এবং হ্যাম্পশায়ারের মতো প্রারম্ভিক মনোনয়ন লড়াইকারী অঙ্গরাজ্যে। তিনি এসব অঙ্গরাজ্যে তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ‘খ্রিষ্টান, রক্ষণশীলতা এবং রিপাবলিকান’ প্রচারে জোর দিয়েছেন।
ডয়চে ভেলে জানায়, রিপাবলিকান পার্টির অন্যতম হেভিওয়েট মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থী ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ হয়ে গেলেন পেন্স। ক্যাপিটল ভবনে হামলার পর থেকে ক্রসেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের থেকে ব্যবধান তৈরি করতে শুরু করেন পেন্স। তিনি প্রকাশ্যে ক্যাপিটল হামলার প্রতিবাদ করেন। শুধু তা-ই নয়, ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। পেন্স সেই অভিমতও সম্পূর্ণ খারিজ করে দেন। বস্তুত, তখন থেকেই দুই রিপাবলিকান নেতার দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে।
আল-জাজিরা জানায়, ট্রাম্পের পাশাপাশি ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডেস্যানটিস, সিনেটর টিম স্কট, সাউথ ক্যারোলিনার সাবেক গভর্নর নিক্কি হ্যালি রিপাবলিকান পার্টি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার লড়াইয়ে যোগ দিয়েছেন। নর্থ ডাকোটার গভর্নর ডগ বারগাম এবং নিউজার্সির সাবেক গভর্নর ক্রিস ক্রিসটিও কিছুদিনের মধ্যেই নিজেদের নাম ঘোষণা করতে পারেন। ট্রাম্পবিরোধীদের আশঙ্কা, এত সব মনোনয়নপ্রত্যাশীর ভিড়ে ট্রাম্পবিরোধীদের ভোট বিভক্ত হয়ে যেতে পারে। এতে করে ট্রাম্পেরই আখেরে লাভ হবে। তিনি একাই সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে যাবেন।
ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ‘নাশকতার’ কারণেও ঘটে থাকতে পারে, ভারতীয় রেলওয়ে এমন ইঙ্গিত দিয়েছে। দেশটির সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) এই ট্রেন দুর্ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, এই ট্রেন দুর্ঘটনায় ‘নাশকতা’ হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন রেলওয়ের ডিভিশনাল কর্মকর্তা রিঙ্কেশ রায়। তিনি বলেন, ‘মেন লাইনে সিগন্যাল সবুজ ছিল। সবকিছু ঠিক থাকলে তবেই সবুজসংকেত মেলে। সামনের লাইন ১০০ শতাংশ ফাঁকা না থাকলে সিগন্যাল প্রযুক্তিগতভাবে সবুজ হতেই পারে না। কোনো একটি ছোটখাটো ত্রুটির কারণেও সিগন্যাল লাল হয়ে থাকে। যদি না কেউ নিজে থেকে সব জেনে তা সবুজ করে দেন। এ ক্ষেত্রে কেউ ইচ্ছা করে সিগনাল না দিলে, তা সবুজ হতেই পারে না।’
পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশায় বালেশ্বরের বাহানগায় শালিমার-চেন্নাই করোমানডেল এক্সপ্রেসের একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। কয়েকটি বগি পাশের লাইনের ওপর পড়ে। সে সময় ইয়াশভান্তপুর থেকে হাওড়ার দিকে যাওয়া হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ওই লাইনে পড়ে থাকা বগিগুলোতে আঘাত করে।
ভারতের কর্মকর্তারা বলেছেন, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি মালবাহী ট্রেনেরও এই দুর্ঘটনায় ভূমিকা ছিল। গত দুই দশকের বেশি সময়ের মধ্যে এটি ভারতে সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। এতে ২৭৫ জন নিহত হয়েছেন বলে ওড়িশা রাজ্য সরকার জানায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ট্রেন দুর্ঘটনাস্থল ওড়িশার বালেশ্বরে বাহানগায় গতকাল মঙ্গলবার পরিদর্শন করেছে সিবিআই। ১০ সদস্যের দলের নেতৃত্বে রয়েছেন সিবিআইয়ের জয়েন্ট ডিরেক্টর বিপ্লব চৌধুরী। দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। রেলের অফিসার ও কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গেও তারা কথা বলেন।
ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোনো ‘নাশকতা’ হয়েছে কি না, তা সিবিআইয়ের মতো শীর্ষ একটি সংস্থার বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমেই বের হতে পারে। সিবিআইয়ের তদন্তের ভার নেয়াকে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন তারা।
এদিকে ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ১০১ জনের পরিচয় জানা যায়নি। ওড়িশার বিভিন্ন মর্গে পড়ে রয়েছে সেই মরদেহগুলো। মৃতদের পরিজনরা এসে দেহগুলো শনাক্ত করবেন, তারই অপেক্ষায় রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুরে মে মাসের শুরুর দিকে যে সংঘাতের আগুন জ্বলে উঠেছিল, তা এখনো স্তিমিত হয়নি। দিনে দিনে পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠছে। সোমবার মধ্যরাতে রাজ্যের সেরো এলাকায় গোলাগুলিতে বিএসএফের এক জওয়ান প্রাণ হারিয়েছেন। গুলির আঘাতে আহত হয়েছেন আসাম রাইফেলসের দুই সেনাও। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের তিন দিনের মণিপুর সফরের পরও রাস্তায় টহল দিচ্ছেন সেনারা। বাড়িঘর এখনো জনশূন্য। পরিস্থিতি বিবেচনায় ৩ মে মণিপুর সরকার ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করে দেয়। অশান্তি বাড়তে থাকায় এ সেবা ১০ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত ৩ মে থেকে মণিপুরে মেইতেই এবং কুকি জনজাতির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। তার জেরে ইতিমধ্যেই ৭৫ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। ২৯ মে অমিত শাহের সফরের আগেই সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণ হারান ৪০ জন।
মণিপুরে প্রধানত সংখ্যাগুরু হিন্দু ধর্মানুসারী মেইতেই গোষ্ঠীকে তপশিলি উপজাতি বা এসটি তালিকাভুক্ত করার বিরোধিতা করছে প্রধানত খ্রিষ্ট ধর্মানুসারী কুকিরা। গত ৩ মে ভারতের হাইকোর্ট মেইতেইদের তপশিলি উপজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করতে বলার পর রাজ্যটিতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।
এসটি তালিকাভুক্ত গোষ্ঠী চাকরিতে কোটা সুবিধাসহ সরকারের নানা সংরক্ষিত সুবিধা পেয়ে থাকে। কুকিদের অভিযোগ, মণিপুরে সংখ্যাগুরু হওয়ায় এমনিতেই চাকরিসহ বিভিন্ন জায়গায় মেইতেইদের আধিপত্য বেশি। আদিবাসী বা সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত সুবিধাও তাদের দেয়া হলে রাজ্যের কুকিসহ অন্য জনজাতিগুলো কোণঠাসা হয়ে পড়বে। এমনকি আদালতের আদেশের কারণে মেইতেইরা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত জমিও অধিগ্রহণের সুযোগ পাবে, যা জমি হারানোর ঝুঁকিতে ফেলবে নৃগোষ্ঠী বা আদিবাসীদের।
সৌদি আরব দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল পরিমাণ তেলের উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়াতে আগামী জুলাই থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সৌদি আরবের এমন ঘোষণায় ইতিমধ্যে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে।
বিবিসি জানায়, ওপেক প্লাস জোটের অন্য সদস্য দেশগুলোও নিজেদের উৎপাদন কমিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে। সৌদি জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন সালমান গত রোববার বলেছেন, ‘আজ একটি মহান দিন। এই চুক্তির মান নজিরবিহীন।’ তিনি বলেন, ‘নতুন তেল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অনেক বেশি স্বচ্ছ ও ন্যায্য হবে।’ তিনি জানান, প্রয়োজনে জুলাইয়ের পরও ১০ লাখ ব্যারেল কম তেল উত্তোলনের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। তিনি একে ‘একটি সৌদি ললিপপ’ হিসেবে অভিহিত করে বলেন, এর ফলে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে।
বিবিসি জানায়, বিশ্বের খনিজ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো এবং তাদের মিত্রদের সংগঠন ওপেক প্লাস বলছে, ২০২৪ সাল থেকে দিনে তেল উত্তোলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৫ লাখ ব্যারেলের মতো কমানো হবে। বিশ্বের অপরিশোধিত তেলের প্রায় ৪০ শতাংশ ওপেক প্লাসভুক্ত দেশগুলো উৎপাদন করে থাকে। এ কারণে তাদের সিদ্ধান্ত তেলের দামের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে এশিয়ার বাজারে গতকাল সোমবার ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি প্রায় ৭৭ ডলারে ঠেকেছে।
গত মাসে যুক্তরাজ্যে ডিজেলের গড় দাম লিটারপ্রতি রেকর্ড ১২ পয়সা কমেছে। জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত রোববার রাশিয়ার নেতৃত্বে তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো ৭ ঘণ্টাব্যাপী এক বৈঠক করে। রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার নোভাক জানান, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ওপেক প্লাস মোট উৎপাদন কমিয়েছে। এর ফলে তেলের দৈনিক উৎপাদন ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছায়। ওপেক প্লাস ইতিমধ্যেই দৈনিক দুই মিলিয়ন ব্যারেল তেলের উৎপাদন কমানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী তেলের মোট চাহিদার প্রায় ২ শতাংশ। নোভাক বলেন, ‘আলোচনার ফলে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো গেছে।’
বিবিসি জানায়, সৌদি আরবের প্রতিদিন ১০ লাখ ব্যারেল তেল স্বেচ্ছায় কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তটি অপ্রত্যাশিত ছিল, তবে এটি আশ্চর্য হওয়ার মতো নয়। রিয়াদের দৃষ্টিকোণ থেকে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলারের ওপরে থাকা জরুরি। সৌদি কর্মকর্তারা তেলের দাম বাড়াতে চান যাতে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলোতে বিলিয়ন ডলার ব্যয় অব্যাহত রাখা যায়।
সৌদি আরবের এই পদক্ষেপ সামনের মাসগুলোয় জ্বালানি চাহিদার অনিশ্চিত পরিস্থিতির শঙ্কা তৈরি করেছে। বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে মন্দার আশঙ্কা অপরিশোধিত তেলের দামের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের মধ্যে তেল উৎপাদনকারীরা তেলের দরপতন এবং বাজারের অস্থিরতা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। পশ্চিমারা অভিযোগ করছে, ওপেক জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিশ্বে জ্বালানির দাম ঊর্ধ্বমুখী করে কার্যত বিশ্ব অর্থনীতিকে দুর্বল করছে। সেই সঙ্গে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পর রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক রাখার জন্যও ওপেককে দায়ী করা হয়। এর জবাবে ওপেক বলেছে, গত এক দশকে পশ্চিমা দেশগুলোর মুদ্রানীতির কারণে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে এবং তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোকে তাদের এই প্রধান রপ্তানি পণ্যের মূল্য ধরে রাখতে বাধ্য করেছে।
ভারতের বিহার রাজ্যে গঙ্গা নদীর ওপর নির্মাণাধীন চার লেনের বিশাল একটি সেতু ধসে পড়েছে। তবে এতে হতাহতের কোনো খবর মেলেনি।
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিহারের ভাগলপুর জেলার সঙ্গে খাগারিয়া জেলাকে সংযোগকারী আগুয়ানি-সুলতানগঞ্জ সেতুটি গত রোববার সন্ধ্যায় আচমকা ধসে পড়ে। চার লেনের ওই সেতুর নির্মাণকাজ এখনো বাকি। কাজ শেষ হওয়ার আগেই ‘সলিলসমাধি’ ঘটল এই সেতুর।
ভাগলপুরের এসডিও ধনঞ্জয় কুমার সাংবাদিকদের জানান, গত রোববার ছুটির দিন থাকায় সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। সে জন্য এ দিন সেতুটিতে কোনো কর্মী ছিলেন না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সেতুটির মাঝের একটি অংশ ধসে পড়ার পর বাকি অংশগুলোও ধসে পড়ছে। সেতু ধসে পড়তেই নদীতে বিশাল ঢেউ তৈরি হয়েছে।
বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার জানিয়েছেন, দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এক বছরের মধ্যে বিহারে দুবার রাজ্যে সেতু ধসে পড়ার ঘটনা ঘটল। এর আগে গত ডিসেম্বরে বেগুসরাই জেলার বুড়ি গণ্ডক নদীতে একটি সেতু ভেঙে দুই ভাগ হয়ে যায়। সেই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। কারণ, সেতুটি তখন আনুষ্ঠানিকভাবে জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হয়নি।
তবে গঙ্গায় ধসে পড়া সেতুটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করত। প্রশাসন সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় সেতুটিতে কোনো গাড়ি চলাচল ছিল না। সেতুর যে অংশে নির্মাণের কাজ চলছিল, সেখানে ঘটেছে দুর্ঘটনা। ফলে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আইরিশ নারী ক্যাটরিওনা। বেলফাস্টের কুইনস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে মাস্টার্সের গবেষণার বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন লোকজ সংগীত। আর এ কাজের অংশ হিসেবে তিনি ২০২০ ও ২০২১ সালে ডোঙ্গাল এলাকার হারিয়ে যেতে বসা অসংখ্য গান সংগ্রহ করেন।
গানগুলো মুখে মুখে রচিত ও চর্চিত বলে এক প্রকার বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তেই চলে গিয়েছিল। ক্যাটরিওনা প্রায় ২০টি গান উদ্ধার করেন এবং রেকর্ড করেন। এখন তিনি তার সংগীত স্কুলের শিশুদের শেখাচ্ছেনও সেসব গান।
ক্যাটরিওনা বলেন, গানগুলো যত মানুষের কাছে পৌঁছাবে, ততই এগুলোর স্থায়িত্ব বাড়বে। আর গান সংরক্ষণের জন্য সেগুলো লিখিত থাকা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কিন্তু ডোঙ্গালের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষজন এগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে ভাবেনি। এগুলোর হারিয়ে যাওয়া বা থাকা নিয়েও আসলে তাদের খুব একটা মাথাব্যথা ছিল না।
‘তবে গানগুলো উদ্ধার করতে পেরে আমি নিজে খুব ভালো বোধ করছি। এগুলো আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এগুলোকে কোনোভাবেই বিলুপ্ত হতে দেয়া যাবে না। এখন আমার ধ্যানজ্ঞান আমার শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে এসব গানের প্রচার ও প্রসার।’
গানগুলো সংগ্রহ করতে তাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল জানিয়ে ক্যাটরিওনা বলেন, তার পরও নিজের জন্মস্থান, নিজের বেড়ে ওঠার জায়গাটির প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই তিনি হারিয়ে যেতে বসা গানগুলোকে ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর ছিলেন।
সূত্র: সিএনএন
সোমালিয়ার বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আল-শাবাব উগান্ডায় হামলা চালিয়ে সেখানকার ১৩৭ জন সেনাকে হত্যার দাবি করেছে। অবশ্য উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইওওয়েরি মুসেভেনি জানিয়েছেন, সোমালিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়ন শান্তিরক্ষীদের একটি ঘাঁটিতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৫৪ সেনাকে হত্যা করেছে সশস্ত্র জঙ্গিরা। খবর আল-জাজিরার।
গত শনিবার এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি জানান, আল-শাবাব রাজধানী মোগাদিসু থেকে ১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে বুলমারের ঘাঁটিতে হামলা চালায়। তবে হামলাটি গত সপ্তাহে হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন তিনি।
সশস্ত্র গোষ্ঠীটির দাবি, তারা গত ২৬ মে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে ১৩৭ জন সেনাতে হত্যা করেছে।
প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি গত শনিবার আরও জানান, উগান্ডা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (ইউপিডিএফ) পর আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পৃক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছ থেকে ঘাঁটিটি পুনরুদ্ধার করেছে।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনারা অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছে এবং নিজেদের পুনর্গঠিত করেছে। তাই মঙ্গলবারের মধ্যে ঘাঁটিটি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।’
মুসেভেনি গত সপ্তাহেও বলেছিলেন, উগান্ডার নাগরিকরা হতাহত হয়েছেন। তবে সোমালিয়ায় আফ্রিকান ইউনিয়ন ট্রানজিশন মিশনে (এটিএমআইএস) কর্মরত সেনাদের ওপর হামলার ব্যাপারে সে সময় তিনি বিস্তারিত কিছু জানাননি।
সোমামিলার পশ্চিমা-সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে নিজেদের কঠোর শরিয়াহ আইন প্রতিষ্ঠার জন্য আল-শাবাব ২০০৬ সাল থেকে লড়াই করে যাচ্ছে।
গত বছরের আগস্টে সোমালিয়ায় প্রেসিডেন্ট হাসান শেখ মোহামুদের নির্বাচনে জয়লাভের পর আল-শাবাবের ওপর সরকারের হামলা জোরদার করা হয়। ফলে সোমলিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে আল-শাবাবের নিয়ন্ত্রণ খর্ব করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে সোমালিয়ার সরকার।
যদিও এখনো সরকারি, বাণিজ্যিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে উল্লেখযোগ্য হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে আল-শাবাবের।
এ ছাড়া প্রতিবেশী কেনিয়াতেও মাঝে মাঝে আক্রমণ চালায় আল-শাবাব। সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে দমনে নেয়া সোমালিয়ার সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমর্থনে নাইরোবির সৈন্য পাঠিয়েছে কেনিয়া। সে জন্য প্রতিশোধের অংশ হিসেবেই কেনিয়ায় এসব হামলা চালায় আল-শাবাব।
ভারতের ওড়িশায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (সিবিআই) তদন্তের সুপারিশ করেছে দেশটির রেল কর্তৃপক্ষ।
আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এ কথা জানান। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘যা কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে, সব মাথায় রেখেই এই দুর্ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দেয়ার সুপারিশ করেছে রেলওয়ে বোর্ড।’
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওড়িশায় বালেশ্বরের কাছে বাহানগা বাজারে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। একই সঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয় একটি মালগাড়িও। এই ৩ ট্রেনের দুর্ঘটনায় ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও রোববার সকালে ওড়িশা সরকার মৃতের সংখ্যা কমিয়ে ২৭৫ বলে জানিয়েছে।
এদিকে সকালে ওড়িশার বাহানগা বাজারের দুর্ঘটনাস্থলে সরকারি সংবাদমাধ্যম দূরদর্শনকে দেয়া সাক্ষাতকারে ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, ‘রেলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিশনার (সিআরএস) গতকাল দুর্ঘটনাস্থলে ছিলেন... সিআরএস সবার সঙ্গে কথা বলেছেনএবং দ্রুত তদন্ত এগিয়েছেন। দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা গিয়েছে।এই কাজ যারা ঘটিয়েছেন তাদেরও চিহ্নিত করে ফেলা হয়েছে। সিআরএস তদন্ত রিপোর্ট, এই দুর্ঘটনার কারণ খুব শিগগিরই জানা যাবে। যাঁরা এই কাজ করেছেন, তারা পয়েন্ট মেশিনে, যেখান থেকে লাইন নিয়ন্ত্রিত হয়, সেখানে পরিবর্তন হয়েছে। সে কারণেই এই দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। কিন্তু নিরপেক্ষ সংস্থার দ্বারা রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেই আমি এই বিষয়ে মন্তব্য করব।’
দুর্ঘটনার নেপথ্যে যান্ত্রিক ত্রুটির সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে অশ্বিনী বলেন, এখনই এই নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তদন্ত-রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছেন তিনি।
আগামী বুধবার সকালের মধ্যে স্তূপ সরিয়ে, লাইন মেরামত করে ট্রেন চলাচল পুরো স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান তার নয়া মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছেন। এরদোয়ান এবার রাজস্ব ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাবেক ব্যাংকার মেহমেত সিমসেককে দিয়েছেন। অন্যদিকে গোয়েন্দাপ্রধান সাবেক সেনা হাকান ফিদান দেশটির নতুন পরররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন।
তুরস্কে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত শনিবার শপথ নেন এরদোয়ান। এবার তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সংস্কৃতিমন্ত্রী ছাড়া বাকি সবাই নতুন।
আল-জাজিরা জানায়, অতীতেও তুরস্কের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন সিমসেক। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তুরস্কের অর্থমন্ত্রী ছিলেন সিমসেক। ২০১৮ সাল পর্যন্ত অর্থনীতির দায়িত্বে থাকা উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি কাজ করেন। তুরস্কে বিনিয়োগকারীদের কাছে তিনি ওই সময় জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তুরস্কের মুদ্রা লিরার মান ধারাবাহিক পতনের জেরে তিনি দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। এবার তুরস্কের অর্থনীতির হাল ধরতে এরদোয়ান সাবেক মেরিল লিঞ্চ অর্থনীতিবিদ সিমসেকের ওপরই আবার ভরসা করলেন।
পুরো বিশ্বের মতো তুরস্ককেও রেকর্ড মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দেশটিতে গত অক্টোবরে মুল্যস্ফীতি ৮৫ শতাংশে গিয়ে দাঁড়ায়। যদিও গত মে মাসে তা ৪৪ শতাংশে নামে। এ ছাড়া চলতি বছরের শুরু থেকে দেশটির মুদ্রা লিরার মান ডলারের বিপরীতে ১০ শতাংশ পড়ে যায়।
আল-জাজিরা জানায়, নয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে গোয়েন্দাপ্রধান হাকান ফিদান মেভলুত কাভুসোগলুর স্থলাভিষিক্ত হবেন। ২০১৪ সাল থেকে কাভুসোগলু তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে এসেছেন। এরদোয়ানের বিশ্বস্ত সহযোগীদের একজন হাকান ফিদান। ২০১০ সাল থেকে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এমআইটির প্রধান হিসেবে কাজ করে আসছেন। এর আগে এরদোয়ান প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় হাকান তার উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন।
তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ইয়াসার গুলের। তিনি হুলুসি আকারের স্থলাভিষিক্ত হবেন। এরদোয়ান তার ডেপুটি তথা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন সেভদেত ইলমাজকে, যিনি এর আগে উন্নয়নমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বাইরে আলি ইয়েরলিকায়াকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ইউসুফ তেকিনকে শিক্ষামন্ত্রী ও ইলমাজ তুঙ্ককে বিচারমন্ত্রী করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফারহেত্তিন কোচা এবং সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী মেহমেত নুরি আগের পদেই বহাল আছেন।
গত আট দশকে স্পেনের ক্যাথলিক চার্চগুলোতে সাত শতাধিক শিশু নিপীড়ককে চিহ্নিত করা হয়েছে। চার্চ এই প্রথম এই বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। স্প্যানিশ ক্যাথলিক চার্চ গত শুক্রবার এ-সংক্রান্ত প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
১৯৪০ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ক্যাথলিক চার্চগুলোর ঘটনাগুলো নিয়ে তদন্ত করা হয়। তদন্তে ৭২৮ জন নিপীড়ক ও ৯২৭ জন ভুক্তভোগীকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
২০২১ সালে শিশু নিপীড়নের বিষয়টি স্পেনে সবার নজরে আসে। দেশটির প্রথম সারির পত্রিকা এল পায়েসে এমন ১২০০টিরও বেশি ঘটনার কথা তুলে ধরা হয়। মূলত যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড ও ফ্রান্সের চার্চগুলোর এমন সব ঘটনা নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পর এই খবর প্রকাশিত হয়। এরপর বেশ কয়েকটি তদন্ত শুরু হয়। চার্চও নিজস্ব তদন্ত শুরু করে। তদন্ত প্রতিবেদনে ভুক্তভোগীদের জবানবন্দি নেয়া হয়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৯৯ শতাংশেরও বেশি অভিযুক্ত পুরুষ এবং অর্ধেকেরও বেশি পাদ্রি।
জন্মহার কমায় নতুন রেকর্ড গড়েছে জাপান। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত আগের ৭ বছর টানা জন্মহার কমেছে। তাই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে দেশটির জনসংখ্যা কমা নিয়ে। জন্মহার কমার পাশাপাশি এশিয়ার উন্নত এই দেশটিতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে।
শুক্রবার জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, একজন নারী তার জীবদ্দশায় গড়ে ১ দশমিক ২৫৬৫টি সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। ২০০৫ সালে এ হার ছিল ১ দশমিক ২৬০১। অথচ দেশের জনসংখ্যা স্থিলিশীল রাখার জন্য ২ দশমিক শূন্য ৭ জন্মহার দরকার।
প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সরকার নিম্নমুখী জন্মহার বাড়ানোর বিষয়টিকে অগ্রাধিকারের তালিকায় রেখেছে। বড় আকারের ঋণ থাকার পরও শিশুদের যত্নসহ মা-বাবাদের অন্যান্য সহায়তা দিতে বছরে আড়াই হাজার ডলার ব্যয়ের উদ্যোগ নিয়েছে। ৫ শতাংশ কমে গত বছর জাপানে ৭ লাখ ৭০ হাজার ৭৪৭টি শিশু জন্ম নেয়। এটি কম শিশু জন্ম নেয়ার নতুন রেকর্ড।
ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৮৮ জন নিহত এবং ৮০৩ জন আহত হয়েছেন। রেল কর্মকর্তাদের বরাতে শনিবার সর্বশেষ এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জনিয়েছে গত আহতদের মধ্যে অন্তত ৫৬ জন মারাত্মকভাবে জখম হয়েছেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এক যাত্রী টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, তিনি ২০০-৩০০ মরদেহ দেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তিনি বলেছেন, এই দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
এদিকে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ এক প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সিগন্যালের ত্রুটির কারণে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রাজ্যটির বালেশ্বর জেলায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আরেকটি ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় পণ্যবাহী আরও একটি ট্রেনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সাম্প্রতিককালে ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক ট্রেন দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং একটি পণ্যবাহী ট্রেন এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এক টুইটে বলেছেন, এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং আহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
ভয়াবহ এ ট্রেন দুর্ঘটনায় এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এ দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারের জন্য দুই লাখ এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করমণ্ডল এক্সপ্রেসটি ছিল ২৩ কামরার ট্রেন। তার অন্তত ১৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনায় মালগাড়ির ওপরে উঠে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন। একাধিক কামরা দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
তুবড়ে যাওয়া ট্রেনের বগি সরিয়ে, বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া রেললাইন সারিয়ে আবার কবে পরিসেবা স্বাভাবিক হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। দক্ষিণ ভারতগামী বহু ট্রেন এই দুর্ঘটনার জেরে বাতিল করতে হয়েছে।