বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত, শুনানিতে অংশ নিতে ইমরানকে সুযোগ দিলেন আদালত

লাহোরে ইমরানের জামান পার্ক বাসভবনের সামনে শুক্রবারও পিটিআই নেতা-কর্মীদের ভিড়
আপডেটেড
১৭ মার্চ, ২০২৩ ২০:৫২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৭ মার্চ, ২০২৩ ২০:৫২

অনেক হট্টগোলের পর অবশেষে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করা হয়েছে। ইসলামাবাদের হাইকোর্ট শুক্রবার এই স্থগিতাদেশ দেন। তোশাখানা মামলার শুনানিতে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরানকে হাজিরা দিতে আরেকবার সুযোগ দিলেন আদালত। একই সঙ্গে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ইমরানের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও দায়রা আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানায়, লাহোরে ইমরানের জামান পার্ক বাসভবনের সামনে শুক্রবারও তার দলের নেতা-কর্মীরা ভিড় করে রয়েছেন। তোশাখানা মামলায় গত মঙ্গলবার পাঞ্জাব পুলিশ ও রেঞ্জার্সদের নিয়ে ইসলামাবাদ পুলিশ লাহোরে ইমরানকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। তবে ইমরানের কর্মী-সমর্থকদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে গত বুধবার পিছু হটতে বাধ্য হয় পুলিশ। এর পর থেকে লাহোরের হাইকোর্ট ইমরানের বাড়ির সামনে পুলিশি অভিযান স্থগিত করেন।

তোশাখানা মামলায় এ পর্যন্ত একটি শুনানিতেও হাজির হননি ইমরান। এতে ইসলামাবাদ জেলা ও দায়রা আদালত ইমরানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদের হাইকোর্টে ইমরান আবেদন করলে আদালত তার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করেন।

এদিকে লাহোর হাইকোর্টে শুক্রবার হাজিরা দেন ইমরান। ইমরানের বিরুদ্ধে লাহোর ও ইসলামাবাদে ৯টি এফআইআরের জামিনের আবেদন আদালত গ্রহণ করেছেন। এর আগে পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ইমরান খান নিজে লাহোর হাইকোর্টে গিয়ে বিচারককে আশ্বস্ত করবেন যে, তিনি ইসলামাবাদের আদালতে যেতে প্রস্তুত। এ মর্মে একটি মুচলেকাও দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

বিষয়:

মিয়ানমারে হাসপাতালে জান্তার বিমান হামলা, নিহত ৩৩

হামলাকে যুদ্ধাপরাধ উল্লেখ করে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি আরাকান আর্মির
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ম্রাউক-ইউ শহরে একটি হাসপাতালে সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ৭৬ জন। আরাকান আর্মি ও স্থানীয়দের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতি।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো সাহায্যকর্মী ওয়াই হুন অং বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, জান্তা সরকার ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন করতে চায়। অথচ এমন সময়ে নির্মমভাবে মানুষ হত্যা করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে ম্রাউক-ইউ জেনারেল হাসপাতাল লক্ষ্য করে সামরিক বিমান থেকে ৫০০ পাউন্ডের দুটি বোমা ফেলা হয়। একটি বোমা রোগীদের ওয়ার্ডে ও অপরটি হাসপাতালের ফার্মেসিতে আঘাত করে।

আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা জানান, নিহতদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ ও ১৭ জন নারী। এক মাস বয়সি এক শিশুও রয়েছে। মরদেহের অবস্থা খারাপ হওয়ায় কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এছাড়া আহতদের মধ্যে ২৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান আরাকান আর্মির মুখপাত্র।

খাইং থুখা বলেন, ‘নিহতদের বেশিরভাগই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ছিলেন। রাখাইনে প্রায় সব যুদ্ধে হেরে যাওয়ার কারণে জান্তা বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমা হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে।’

এ হামলাকে যুদ্ধাপরাধ উল্লেখ করে জান্তাদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।

হামলায় স্ত্রী, পুত্রবধূ ও বাবাকে হারিয়েছেন ৬১ বছর বয়সি মং বু। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘কেউ একজন আমাকে জানায় হাসপাতালে বোমা হামলা হয়েছে। ওই সময় ওইখানে আমার পরিবার ছিল। আমি বুঝতে পারি কেউ আর বেঁচে নেই।’

আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারে জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার। তবে এ নির্বাচন কেবলমাত্র তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, রাখাইনে ১৭টি শহরের মধ্যে ৩টি বাদে বাকি সবগুলো আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে মিয়ানমারে সংঘাত চলছে।

সম্প্রতি, জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিমানবাহিনী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে। আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী—২০২৪ সালে মিয়ানমারে বিমান হামলার ঘটনা ছিল ১ হাজার ৭১৬টি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত বিমান হামলা হয়েছে ২ হাজার ১৬৫টি।

২০২৩ সালে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টি থেকে সামরিক বাহিনীকে বিতাড়িত করে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইসিইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, আরাকান আর্মি বর্তমানে বেলজিয়ামের চেয়েও বড় একটি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে।


পাকিস্তানে ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ফাইজ হামিদের ১৪ বছরের কারাদণ্ড

আপডেটেড ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:৩৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক ফাইজ হামিদকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির সামরিক আদালত। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, সাবেক এই গোয়েন্দা প্রধানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস, ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা এবং ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে অন্যদের ক্ষতি করার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল। দীর্ঘ ও বিস্তারিত আইনি প্রক্রিয়ার পর পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টের একাধিক ধারা ভঙ্গের দায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নথি অনুযায়ী, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে একটি বেসরকারি রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছিলেন বলেও প্রমাণিত হয়েছে।

ইমরান খান সরকারের সময় অত্যন্ত প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ফাইজ হামিদকে একসময় সেনাপ্রধান পদের অন্যতম শক্তিশালী দাবিদার মনে করা হতো। তবে ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুতির কিছুদিন পরই তিনি আগাম অবসরে যান। আদালতের এই রায়ের ফলে তাকে সব ধরনের সামরিক পদবি ও মর্যাদা থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক কাঠামোতে আইএসআই প্রধানের পদটিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর হিসেবে বিবেচনা করা হয়, আর সেই পদে থাকা ব্যক্তির এমন শাস্তি নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।


গোয়ায় অগ্নিকাণ্ড: দেশ ছেড়ে পালিয়েও রক্ষা হলো না, থাইল্যান্ডে গ্রেফতার ক্লাবের দুই মালিক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের পর্যটন নগরী গোয়ার একটি নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জন নিহতের ঘটনায় পলাতক দুই মালিককে অবশেষে থাইল্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত নাগেশ সিং বিবিসিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের খুব শীঘ্রই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতে ফেরত পাঠানো হবে।

অভিযুক্ত দুই ভাই, গৌরব লুতরা ও সৌরভ লুতরা, গোয়ার ‘বার্চ বাই রোমিও লেন’ নামক নাইটক্লাবটির মালিক। গত রবিবার ভোরে ক্লাবটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা, ক্লাবের ভেতরে আতশবাজি বা ফায়ারওয়ার্কস ব্যবহারের কারণেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। এ মর্মান্তিক ঘটনায় ২৫ জন প্রাণ হারান, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন ক্লাবের কর্মী এবং পাঁচজন পর্যটক। দুর্ঘটনার পরপরই দুই ভাই দেশ ছেড়ে পালিয়ে থাইল্যান্ডের ফুকেট দ্বীপে আশ্রয় নেন।

তদন্তকারীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা পরেই পুলিশ অভিযুক্তদের দিল্লির বাড়িতে অভিযান চালায়, কিন্তু ততক্ষণে তারা দেশত্যাগ করেন। এরপর তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হয়। এদিকে গ্রেফতারের ঠিক একদিন আগেই দিল্লির একটি আদালত তাদের গ্রেফতারি পরোয়ানা থেকে আইনি সুরক্ষা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পাশাপাশি গোয়া সরকার তাদের পাসপোর্ট বাতিলের জন্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছিল। যদিও অভিযুক্ত দুই ভাই জনসমক্ষে কোনো মন্তব্য করেননি, তবে আদালতে তাদের আইনজীবী দাবি করেছেন যে, তাদের মক্কেলদের অন্যায়ভাবে এই ঘটনার বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে।


সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল বুলগেরিয়া: অনাস্থা ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দুর্নীতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বুলগেরিয়া। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানী সোফিয়াসহ কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। আন্দোলনকারীরা অভিনব কায়দায় পার্লামেন্ট ভবনের দেয়ালে লেজার প্রজেকশনের মাধ্যমে ‘পদত্যাগ’, ‘মাফিয়া আউট’ এবং ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’-এর মতো স্লোগান ফুটিয়ে তোলেন।

এমন এক সময়ে দেশটিতে এই বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে, যখন আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বুলগেরিয়া ইউরোকে তাদের সরকারি মুদ্রা হিসেবে গ্রহণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মধ্যেই আজ বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী রোজেন ঝেলিয়াজকভের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হচ্ছে বর্তমান সরকার। বিগত চার বছরে দেশটিতে সাতবার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার সর্বশেষটি ছিল ২০২৪ সালের অক্টোবরে। দীর্ঘদিনের এই রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজন দেশটিকে গভীর সংকটে ফেলেছে।

বিক্ষোভকারীরা মূলত বিচার বিভাগের সংস্কার ও মাফিয়া দমনের দাবি জানাচ্ছেন। সোফিয়ার বাসিন্দা ৬৪ বছর বয়সী আন্দোলনকারী ডোবরি লাকভ বলেন, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার হলে দেশের বাকি সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে। তিনি বিশ্বাস করেন, জনগণের শক্তি সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে। অন্যদিকে, আইটি বিশেষজ্ঞ অ্যাঞ্জেলিন বাহচেভানোভ বলেন, বুলগেরিয়ায় স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার এবং অভিজাততন্ত্র ও মাফিয়ার হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার সময় এখনই।

এর আগে গত সপ্তাহে তীব্র জনরোষের মুখে সরকার ২০২৬ সালের বাজেট পরিকল্পনা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। উচ্চতর রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের অর্থায়নের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ও লভ্যাংশের ওপর কর বৃদ্ধির সরকারি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলো তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। সরকার বাজেটের বিষয়ে পিছু হটলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও রাজপথের আন্দোলন থামছে না।


মিয়ানমারের হাসপাতালে জান্তার ভয়াবহ বিমান হামলা: ৩১ জন নিহত, আহত ৬৮

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের একটি হাসপাতালে জান্তা সরকারের ভয়াবহ বিমান হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৬৮ জন। বুধবার সন্ধ্যায় রাখাইনের ম্রাউক-ইউ শহরে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় ত্রাণকর্মী ওয়াই হুন আউং সংবাদমাধ্যমকে জানান, বুধবার রাত ৯টার দিকে সামরিক সরকারের একটি যুদ্ধবিমান হঠাৎ করেই ম্রাউক-ইউ শহরের ওই হাসপাতালে বোমাবর্ষণ করে। হামলার পরপরই হাসপাতালের বাইরে অন্তত ২০টি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। আরাকান আর্মির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, বিমান হামলায় হাসপাতালের ১০ জন রোগী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক যাত্রা ব্যাহত হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে গৃহযুদ্ধ চলছে। ক্ষমতা দখলের পর থেকে জান্তা সরকার বিরোধীদের দমনে আকাশপথে হামলা জোরদার করেছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী, যাকে তারা সংকট উত্তরণের পথ হিসেবে দাবি করছে। তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এই নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে। বর্তমানে রাখাইন প্রদেশের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টিই জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হারানো এলাকা পুনরুদ্ধার এবং বিদ্রোহীদের দমনেই জান্তা বাহিনী এমন হামলা চালাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

হাসপাতালে এমন বর্বরোচিত হামলার বিষয়ে জান্তা সরকারের কোনো মুখপাত্রের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আরাকান আর্মি এখন জান্তা সরকারের জন্য এক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


ট্রাম্পের ‘গোল্ড কার্ড’ চালু: ১০ লাখ ডলারে মিলবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

এখন থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ধনী বিদেশিদের জন্য ‘ট্রাম্প গোল্ড কার্ড’ নামে একটি বিশেষ দ্রুতগামী ভিসা স্কিম চালু করেছেন। বুধবার নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি এই ঘোষণা দেন। এই কার্ডের মাধ্যমে ১০ লাখ ডলার বা তার বেশি অর্থ খরচ করে দ্রুততম সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ মিলবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন এই পরিকল্পনায় গোল্ড কার্ডের প্রাথমিক মূল্য ধরা হয়েছে ১০ লাখ ডলার। এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আনুষঙ্গিক চার্জসহ এই অংক দাঁড়াবে ২০ লাখ ডলারে। পাশাপাশি বিশেষ কর সুবিধাসম্বলিত ‘প্ল্যাটিনাম কার্ড’ নামে আরও একটি উচ্চমূল্যের স্কিম চালু হতে যাচ্ছে, যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ লাখ ডলার। তবে আবেদনের শুরুতেই ১৫ হাজার ডলারের অফেরতযোগ্য প্রক্রিয়াকরণ ফি জমা দিতে হবে এবং আবেদনকারীর পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে অতিরিক্ত সরকারি ফিও প্রযোজ্য হতে পারে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে অসাধারণ মেধাবীদের সহজে ধরে রাখতে পারে, সেজন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এই কার্ড কেবল যোগ্য এবং যাচাইকৃত ব্যক্তিদেরই নাগরিকত্বের সুযোগ দেবে। গোল্ড কার্ড মূলত উচ্চস্তরের পেশাজীবীদের লক্ষ্য করে তৈরি করা হয়েছে। আর যারা ৫০ লাখ ডলারের প্ল্যাটিনাম কার্ড কিনবেন, তারা দেশে কর্মসংস্থান তৈরি করবেন বলে ট্রাম্প মনে করেন। এই ভিসাগুলোকে তিনি গ্রিন কার্ডের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা সাধারণত পাঁচ বছর পর নাগরিকত্বের পথ সুগম করে।

এই ঘোষণা এমন এক সময়ে এলো যখন ওয়াশিংটন সাধারণ অভিবাসীদের ওপর কঠোর নীতি প্রয়োগ করছে। একদিকে অনথিভুক্ত অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে এবং ১৯টি দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, অন্যদিকে ধনীদের জন্য এমন সুযোগ তৈরি করায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে। ডেমোক্র্যাটরা অভিযোগ করছেন, এই নীতি সাধারণ অভিবাসীদের বঞ্চিত করে কেবল বিত্তশালীদের অন্যায্য সুবিধা দেবে।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প দক্ষ বিদেশি কর্মীদের এইচ-১বি ভিসার আবেদন ফি এক লাখ ডলার করার আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন, যা প্রযুক্তি খাতে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। এছাড়া বাইডেন প্রশাসনের সময় অনুমোদিত হাজার হাজার আবেদন পুনর্বিবেচনার ঘোষণাও দিয়েছে বর্তমান প্রশাসন। সব মিলিয়ে একদিকে সাধারণ অভিবাসনে কড়াকড়ি এবং অন্যদিকে টাকার বিনিময়ে নাগরিকত্বের সুযোগ—এই দ্বিমুখী নীতি নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে।


গাজায় এক দশকের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাসের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করা হলে, হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজা থেকে সব ধরনের আক্রমণাত্মক অভিযান এক দশক পর্যন্ত বন্ধ রাখতে এবং তাদের অস্ত্র মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে প্রস্তুত বলে মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত মধ্যপ্রাচ্যকেন্দ্রিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদন এ তথ্য জানা গেছে। আলোচনার সঙ্গে পরিচিত এক জ্যেষ্ঠ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

আলোচনার সংবেদনশীলতার কারণে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, গত সপ্তাহে কায়রোতে মিসরীয়, কাতারি এবং তুর্কি মধ্যস্থতাকারীদের কাছে এই প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবটিকে তিনি হামাসের পক্ষ থেকে একটি সারগর্ভ পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যার লক্ষ্য হলো—যুদ্ধবিরতি আলোচনার পরবর্তী ধাপে গতি আনা।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রস্তাবটি পরিষ্কার। এর মাধ্যমে হামাস এই নিশ্চয়তা দিচ্ছে যে, গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে কোনো অস্ত্র ছোড়া হবে না, এবং তারা অস্ত্র মাটির নিচে পুঁতে ফেলার মাধ্যমে তা করবে। তারা গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে সাত থেকে দশ বছরের জন্য একটি হুদনা (ইসলামিক ঐতিহ্যে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতি বোঝাতে ব্যবহৃত শব্দ) প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছে, এবং হামাস এই অস্ত্র ব্যবহার করবে না।’

ওই কর্মকর্তার মতে, মধ্যস্থতাকারী রাষ্ট্রগুলো এই হুদনার গ্যারান্টার হিসেবে কাজ করবে এবং এর সম্মতি নিশ্চিত করবে। তিনি জানান, অস্ত্রগুলো গোপন করা হবে এবং মধ্যস্থতাকারীরা সরাসরি হামাসের প্রতিশ্রুতিগুলো তত্ত্বাবধান করবেন। তিনি বলেন, ‘এই সময়ে গাজা নিজেই নিজের কাজে ব্যস্ত থাকবে।’ তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা বিধ্বংসী যুদ্ধ, বাস্তুচ্যুতি এবং অবরোধের পর পুনর্গঠন এবং অভ্যন্তরীণ শাসনের দিকে ইঙ্গিত করেন।

হামাস এখন পর্যন্ত একটি সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতৃত্বের কর্তৃত্ব ছাড়া তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে অস্বীকার করেছে। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই আন্দোলন বারবার বলেছে যে, ফিলিস্তিনি ভূমি থেকে দখলদারিত্ব শেষ হলেই কেবল ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের সশস্ত্র অভিযান বন্ধ হবে।

তবে, এই নতুন প্রস্তাবটি নির্দিষ্টভাবে গাজা নিয়ে, এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে হামাসের সামরিক সক্ষমতা বা রাজনৈতিক কার্যকলাপের বিষয়ে এতে কিছু বলা হয়নি, যেখানে গাজা যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, আঞ্চলিক কূটনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণেও এই প্রস্তাবটি তৈরি হয়েছে। তিনি মিসরকে বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন, কায়রোর অবস্থানে পরিবর্তন এসেছে এবং তারা গাজার ফিলিস্তিনিদের প্রয়োজনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, মিসর সম্প্রতি জোর দিয়েছে যে, রাফা ক্রসিংয়ে উভয় দিকেই চলাচল অনুমোদন করতে হবে, যার মধ্যে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তনও অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, ইসরায়েল কেবল গাজা থেকে প্রস্থান করার অনুমতি দিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষকে গাজার উত্তর ও মধ্যভাগের বাড়িতে ফিরে যেতে বাধা দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘মধ্যস্থতাকারীরা হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক নবায়ন করেছে। হামাসও মধ্যস্থতায় অগ্রগতি খুঁজে পেয়েছে এবং অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে। আন্দোলনটি সাধারণ অবস্থানে পৌঁছানোর জন্য একটি বাস্তববাদী উপায়ে বিশ্বাস করে।’


মায়ামির মেয়র নির্বাচনে জয়ী হলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী আইলিন

আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:৩৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামিতে প্রায় তিন দশক পর একজন ডেমোক্র্যাট মেয়র হতে চলেছেন। তারর নাম আইলিন হিগিনস। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) মায়ামির মেয়র নির্বাচনে (রানঅফে) তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসমর্থিত প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন। ট্রাম্পের শক্ত ঘাঁটি ফ্লোরিডার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মায়ামি হিস্পানিক অধ্যুষিত একটি শহর।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে সিএনএন এবং অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) আইলিন হিগিনসের বিজয়ী হওয়ার কথা জানায়। মায়ামি-ডেড কাউন্টির সাবেক এই কমিশনার সে সময় তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী এমিলিও গঞ্জালেসের থেকে ১৮ শতাংশ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন।

মায়ামির মেয়র নির্বাচন সাধারণত দেশব্যাপী খুব একটা মনোযোগ পায় না। আনুষ্ঠানিকভাবে এটি একটি দলনিরপেক্ষ স্থানীয় নির্বাচন। কিন্তু এ বছর মায়ামির মেয়র নির্বাচন জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। কারণ, এটি ট্রাম্পের রাজনৈতিক ঘাঁটির মধ্যে ভোটারদের মনোভাব পরীক্ষা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।

শুধু তাই নয়, তিনি মায়ামির প্রথম নারী মেয়র হতে চলেছেন। ১৯৯০–এর দশকের পর হিগিনসই প্রথম কোনো মেয়র প্রার্থী, যিনি হিস্পানিক জনগোষ্ঠীর বাইরের এবং নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। হিগিনসের বড় ব্যবধানে জয় গত মাসের একাধিক নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের জয়ের ধারাকে আরও শক্তিশালী করেছে।

২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে। ডেমোক্র্যাটদের জয়ের এই ধারা কংগ্রেসে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দিচ্ছে।

রিপাবলিকানদের জন্য ভোটের এই ফলাফল উদ্বেগেরও বটে। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের থেকে হিস্পানিক সমর্থন কেড়ে নিয়েছিলেন। এখন সে সমর্থন দুর্বল হয়ে গেছে কি না, এ প্রশ্ন দলটির উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

৬১ বছর বয়সি হিগিনস ১৯৯৭ সালের পর প্রথম ডেমোক্র্যাট, যিনি মায়ামির মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন। সেবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন হাভিয়ের সুয়ারেজ, যিনি বর্তমান রিপাবলিকান মেয়র ফ্রান্সিস সুয়ারেজের বাবা।

শুধু তাই নয়, তিনি মায়ামির প্রথম নারী মেয়র হতে চলেছেন। ১৯৯০–এর দশকের পর হিগিনসই প্রথম কোনো মেয়র প্রার্থী, যিনি হিস্পানিক জনগোষ্ঠীর বাইরের এবং নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন।

প্রায় ৪ লাখ ৮৭ হাজার বাসিন্দার শহর মায়ামির সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী হিস্পানিক। এটি মায়ামি-ডেড কাউন্টির অংশ।

মায়ামি মেয়র নির্বাচনে প্রথম দফা ভোট হয় গত ৪ নভেম্বর। হিগিনস ৩৬ শতাংশ ভোট পেয়ে প্রথম হন, ১৮ শতাংশ ভোট নিয়ে তার পরেই ছিলেন গঞ্জালেস। কিন্তু কোনো প্রার্থী সরাসরি জয় নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। এ কারণে ভোট রানঅফে গড়ায়।

হিগিনস বা ৬৮ বছর বয়সি সাবেক সিটি ম্যানেজার ও অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন সেনা কর্নেল গঞ্জালেস কেউ–ই শুরুতেই স্পষ্টভাবে দলগত প্রচারণা চালাননি। কিন্তু বছরের শেষ ভাগে নিউজার্সি ও ভার্জিনিয়ার গভর্নর নির্বাচন, নিউইয়র্ক নগরের মেয়র নির্বাচনসহ আরও কয়েকটি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পরপর বিজয়ের পর মায়ামির মেয়র নির্বাচন দেশজুড়ে মনোযোগ পায়। এরপর গত ১৭ নভেম্বর ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে গঞ্জালেসকে সমর্থন জানান এবং মায়ামির ভোটারদের প্রতি ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে লেখেন, ‘বাইরে বের হন এবং এমিলিওর জন্য ভোট দিন। তিনি কখনো আপনাদের হতাশ করবেন না।’

ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটি হিগিনসকে সমর্থন জানিয়ে পাল্টা পদক্ষেপ নেন, কয়েকজন প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাটও এতে অংশ নেন।


ইমরান খানের বোনদের অবস্থান ধর্মঘটে পুলিশের বাধা

আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:২৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা কারাবন্দি ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে অবস্থান নেন তার বোনেরা। ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান ধর্মঘটের পর সেখান থেকে তাদের জোরপূর্বক তুলে দেয় পুলিশ। এসময় জলকামান ব্যবহার করে নিরাপত্তা বাহিনী। খবর জিও নিউজের।

ইমরান খানের বোন আলিমা খানের নেতৃত্বে চলা এই অবস্থানে যোগ দেন পিটিআইয়ের কেন্দ্রীয় মহাসচিব সালমান আকরাম রাজা, পিটিআই কেপি প্রাদেশিক সভাপতি জুনায়েদ আকবর খানসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। পিটিআই বলেছে, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সাক্ষাতের অনুমতি থাকার কথা হলেও প্রতিবারই কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে।

জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, বোন নরিন খান, আলিমা খান এবং উজমা খানকে আদিয়ালা কারাগারে বন্দি ইমরাইন খানের সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর বিক্ষোভকারীরা কারখানার চেকপয়েন্টে জড়ো হয়।

পুলিশ ইমরান খানের বোনদের কারাগারের পাশ থেকে সরিয়ে দেওয়া চেষ্টা করলে, পিটিআই কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে। এসময় বেশ কয়েকজন পিটিআই কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশের দাবি, আনুষ্ঠানিক বৈঠকের সময় শেষ হয়ে গিয়েছিল, একারণে ব্যারিস্টার গোহর আলি খান এবং ইমরানের বোনদের কারাগারে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়।

কারাগারের চেকপয়েন্টে ইমরান খানের পরিবারের সদস্যদের থামিয়ে দেয় পুলিশ। সেখানে আলেমা খান বারবার পিটিআই কর্মীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। বলেন, ‘পুলিশ আমাদের শত্রু নয়, তারা নিজেরা চাপের মধ্যে আছে।’


ট্রাম্পের শান্তি পুরস্কার ঘিরে বিতর্ক, ফেঁসে যাচ্ছেন জিয়ান্নি?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ট্রাম্পকে শান্তি পুরস্কার দেওয়ায় ঝড় উঠেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোকে ঘিরে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ফিফার রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার নিয়ম স্পষ্টভাবে ভঙ্গ করেছেন তিনি। আর এই অভিযোগেই তার বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি করেছে মানবাধিকার সংগঠন ফেয়ারস্কয়ার। ইনফান্তিনোর প্রশংসা, সমর্থনমূলক মন্তব্য ও ট্রাম্পকে সম্মাননা প্রদান— সব মিলিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, ট্রাম্পকে পুরস্কার দিয়ে কি তবে ‘ফেঁসে’ যাচ্ছেন জিয়ান্নি?

সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেয়া ‘ফিফা পিস প্রাইজ’ রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকার নিয়মের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মানবাধিকার সংগঠন ফেয়ারস্কয়ার অভিযোগ করেছে। গত সপ্তাহে ওয়াশিংটন ডিসিতে ২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানে ট্রাম্পকে প্রথমবারের মতো এই পুরস্কার দেন ইনফান্তিনো। এ ছাড়া তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট ও বিভিন্ন সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন।

ফেয়ারস্কয়ারের পাঠানো অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ইনফান্তিনো ফিফার নিরপেক্ষতার নিয়ম চারটি ক্ষেত্রে ভঙ্গ করেছেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘কোনও বর্তমান রাজনৈতিক নেতাকে এ ধরনের পুরস্কার দেয়া নিজেই ফিফার রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার নীতিমালার সুস্পষ্ট ব্যত্যয়’। আরও বলা হয়, ‘ফিফা প্রেসিডেন্ট এককভাবে সংস্থার লক্ষ্য, নীতি, দিকনির্দেশনা কিংবা মূল মূল্যবোধ নির্ধারণের অধিকার রাখেন না।’

পুরস্কার প্রদানের চমকপ্রদ সেই অনুষ্ঠানে ইনফান্তিনো ও ট্রাম্প পাশাপাশি দাঁড়িয়েছিলেন। আগামী বছর ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আয়োজিত হয় এ অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানেই ট্রাম্পকে একটি বড় স্বর্ণখচিত ট্রফি, একটি পদক এবং সনদ তুলে দেন ইনফান্তিনো। তিনি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘নেতার কাছ থেকে আমরা এটিই চাই,’ এবং ‘আপনি সবসময় আমার সমর্থন পাবেন, মিস্টার প্রেসিডেন্ট।’

এর আগে চলতি বছরের অক্টোবরে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামে দেয়া এক পোস্টে ইনফান্তিনো লিখেছিলেন, ট্রাম্প ‘নোবেল শান্তি পুরস্কারের যোগ্য’। পরে গত নভেম্বর মিয়ামির আমেরিকান বিজনেস ফোরামে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, (যুক্তরাষ্ট্রে) ট্রাম্প যা করছেন, আমাদের সবার তা সমর্থন করা উচিত, কারণ আমার মনে হয় সেটা বেশ ভালোই করা হচ্ছে।’

ফেয়ারস্কয়ার আরও অভিযোগ করেছে, ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পাওয়ার পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইনফান্তিনো ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। সেখানেও ট্রাম্পের রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতি তার সমর্থনের ইঙ্গিত রয়েছে।

ফেয়ারস্কয়ারের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর নিকোলাস ম্যাকগিহান বলেন, ‘এই অভিযোগ কেবল ট্রাম্পের রাজনৈতিক এজেন্ডার প্রতি ইনফান্তিনোর সমর্থন নিয়ে নয়। আরও বড় ব্যাপার হলো, ফিফার অবাস্তব পরিচালন ব্যবস্থা ইনফান্তিনোকে সংগঠনের নিয়ম অমান্য করে এমনভাবে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে, যা বিপজ্জনক এবং বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাটির স্বার্থের বিরোধী।’


আল জাজিরার প্রতিবেদন, যুদ্ধজয়ের আশা নেই ইউক্রেনীয় বাহিনীতে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ক্রমেই নাকাল হয়ে পড়ছে। এই সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে সেনাবাহিনী থেকে সদস্যদের পলায়ন ও অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতি। সরকারি হিসাব অনুসারে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ লাখ সেনা অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত বা পলাতক; এবং সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।

তিমোফ। ইউক্রেনের ৩৬ বছর বয়সি এক অফিস সহায়ক। তার হাতে ও আঙুলে এখনো বেগুনি রঙের ছোট ছোট বেশ কিছু ক্ষত রয়ে গেছে। ছয় মাস আগে সে একটি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে পালিয়ে আসে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে। সে সময়ই হাতে এই ক্ষত তৈরি হয়। কিয়েভের এই যুবক জানান, গত এপ্রিলে তাকে জোর করে সেনাবাহিনীতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি পরপর দুবার পালিয়ে এসেছেন।

তিমোফ বলেন, সত্যিকারের লড়াইয়ের জন্য তার প্রশিক্ষণ কতখানি অকার্যকর, তা বুঝেই তিনি পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বুঝতে পারেন, অনিবার্যভাবে তাকে ফ্রন্টলাইনের সৈন্য হতে হবে, যেখানে বেঁচে থাকার কোনো সুযোগ থাকবে না। তিমোফ বলেন, ‘কোনো প্রশিক্ষণই দেওয়া হয় না। আমি প্রথম আক্রমণেই মারা যাব, তাতে তাদের কিছু যায়-আসে না।’

তিনি দাবি করেন, তার প্রশিক্ষকেরা বেশির ভাগ সময় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে যাতে কেউ পালাতে না পারে, সেই চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। কেন্দ্রটি ছিল কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা একটি তিন মিটার প্রায় ১০ ফুট উঁচু কংক্রিটের দেয়াল দিয়ে সুরক্ষিত। তিমোফ বলেন, ‘একজন সৈনিক গুলি চালানো শিখল কি না, তাতে তাদের কিছু আসে যায় না। তারা আমাকে একটি বন্দুক দিল, আমি লক্ষ্যের দিকে একটি গুলি ছুড়লাম, আর তারা আমার নামের পাশে একটি টিক চিহ্ন দিয়ে দিল।’ ব্যস প্রশিক্ষণ শেষ।

কর্তৃপক্ষের ভয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকায় তিমোফে তার পদবি এবং ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখতে অনুরোধ করে। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো পলাতক বা অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ আনা হয়নি। তার ব্যাখ্যা খুব সহজ, ‘দেশের অর্ধেক মানুষ এখন পালাচ্ছে’, আর সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে এত সংখ্যক পলাতককে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা নেই।

অক্টোবরে ইউক্রেনীয় কৌঁসুলিরা জানান, রাশিয়া ২০২২ সালে আক্রমণ শুরু করার পর থেকে প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার সেনা অনুমতি ছাড়াই অনুপস্থিত রয়েছেন এবং প্রায় ৫৪ হাজার সেনা পলায়ন করেছেন। গত বছর থেকে এই সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতি ১ লাখ ৭৬ হাজার এবং পলায়নের ২৫ হাজার ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

ইউক্রেনীয় কমান্ডার ভ্যালেন্তিন মাঙ্কো শনিবার ইউক্রেনীয় প্রাভদাকে বলেন, ‘এমনকি রাশিয়ায়ও এত বেশি সৈন্য অনুমতি ছাড়া পালিয়ে যায়।’ পলায়নের এই সংকট ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছে ক্রমেই চলে যাওয়ার মধ্যে সেনাকর্মীর মারাত্মক অভাবকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

নভেম্বরে রাশিয়ার বাহিনী প্রায় ৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে নেয়, যার বেশির ভাগই পূর্ব ইউক্রেনে, আর ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা আবারও থমকে যায়। মাঙ্কো জানান, প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার পুরুষকে সেনাবাহিনীতে নেওয়া হয়, কিন্তু সব সামরিক ইউনিটকে ‘পুনরায় সচল’ করতে দরকার ৭০ হাজার সেনা।

যুদ্ধে প্রচলিত নিয়ম অনুসারে, একজন সেনা সামরিক ইউনিট ছেড়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টা পরে পলায়নের অভিযোগে অভিযুক্ত হতে পারেন এবং তার ৫ থেকে ১২ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। আর অনুমতি ছাড়া অনুপস্থিতির শাস্তি ১০ বছর পর্যন্ত জেল। অনেকেই জেলকে বেছে নিচ্ছেন।

ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের সাবেক উপপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইগর রোমানেনকো বলেন, ‘আমাদের পলাতক সৈন্য এবং অনুমতি ছাড়া চলে যাওয়া সেনার সংখ্যা খুবই বেশি।’ তিনি বলেন, ‘তারা ভাবে—আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে ফ্রন্টলাইনে যাওয়ার চেয়ে জেলে যাওয়া সহজ।’ রোমানেনকো দীর্ঘদিন ধরে কঠোর যুদ্ধকালীন আইন চালু করার এবং পলাতক ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের জন্য কঠোর শাস্তির পক্ষে সওয়াল করছেন। তার বিশ্বাস, তাদের জেলে না পাঠিয়ে ফ্রন্টলাইনে পাঠানো উচিত।

পলায়ন এবং অনুমতি ছাড়া চলে যাওয়ার মধ্যে আইনি পার্থক্য হলো ‘চিরতরে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য।’ তবে ২০২৪ সালের নভেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকার প্রথমবার পলায়নকারীদের জন্য ক্ষমা ঘোষণা করেছে। যার ফলে তারা কোনো শাস্তি ছাড়াই তাদের ইউনিটে ফিরে আসতে পারে। সামরিক কর্তৃপক্ষ এবং তাদের কমান্ডিং অফিসারদের দয়ার ওপর ভরসা করে প্রায় ৩০ হাজার সেনা ফিরে এসেছেন।

দক্ষিণ ইউক্রেনের একটি সামরিক ইউনিটের এক মনোবিজ্ঞানী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘তাদের প্রতি এখন আরও বেশি সহানুভূতি দেখানো হচ্ছে।’ তিনি বলেন, পলায়ন সব সময় মৃত্যুর ভয়ের কারণে হয় না, বরং বেশির ভাগ সময়েই মনোযোগহীন কমান্ডিং অফিসারদের কারণে হয়, যারা তাদের সেনাদের সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করেন। তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলে, তাদের কমান্ডার তাদের ছুটিতে যেতে দেননি, তাদের অসুস্থ আত্মীয়দের দেখতে যেতে দেননি, এমনকি বিয়ে করতেও দেননি।’

এদিকে সামরিক পুলিশ বাহিনীতে লোকবলের মারাত্মক অভাব রয়েছে এবং আদালতের আদেশ ছাড়া তারা কোনো সেনাকে আটক করতে পারে না। ফলে অনুমতি ছাড়া সেনাবাহিনী ছেড়ে যাওয়া কিংবা পালিয়ে যাওয়া সেনারা খুব বেশি ধরাও পড়ছে না।


অবস্থান অজানা, সশরীরে নোবেল শান্তি পুরস্কার নিলেন না মাচাদো

আপডেটেড ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:২১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভেনিজুয়েলার বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া করিনা মাচাদো বুধবার (১০ ডিসেম্বর) অসলোতে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগতভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেননি। এমনটা জানিয়েছেন নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউটের পরিচালক। তার বর্তমান অবস্থান অজানা বলেও জানান তিনি।

মাচাদো তার নিজ দেশে কর্তৃপক্ষের আরোপিত এক দশকের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এবং এক বছরেরও বেশি সময় আত্মগোপনে থাকার পর এই পুরস্কার গ্রহণ করার কথা ছিল। ‘দুর্ভাগ্যবশত তিনি নরওয়েতে নেই এবং দুপুর ১টায় অসলো সিটি হলে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার সময় মঞ্চে থাকতে পারেন নি। ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং পুরস্কার সংস্থার স্থায়ী সচিব ক্রিস্টিয়ান বার্গ হার্পভিকেন সম্প্রচারক এনআরকেকে বলেন।

তিনি কোথায় জানতে চাইলে হার্পভিকেন বলেন, ‘আমি জানি না।’

তবে, প্রতিবেদনে বলা হয়, যখন কোনো বিজয়ী উপস্থিত থাকতে অক্ষম হন, তখন সাধারণত পরিবারের কোনো ঘনিষ্ঠ সদস্য পুরস্কার গ্রহণ করেন এবং বিজয়ীর জায়গায় নোবেল বক্তৃতা দিয়ে থাকেন। এই ক্ষেত্রে, মাচাদোর মেয়ে আনা করিনা সোসা মাচাদোর জায়গায় আসেন।

অক্টোবরে এই পুরস্কার জেতার পর মাচাদো এটি আংশিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে উৎসর্গ করেছিলেন, বলেছিলেন যে ট্রাম্পই এই সম্মানের যোগ্য। নোবেল ইনস্টিটিউটকে আরও প্রশ্ন করা হলে তারা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।

৫৮ বছর বয়সী মাচাদোর অসলো সিটি হলে ওই অনুষ্ঠানে রাজা হ্যারাল্ড, রানী সোনজা এবং আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মাইলি এবং ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়াসহ ল্যাটিন আমেরিকার নেতাদের উপস্থিতিতে এই পুরস্কার গ্রহণ করার কথা ছিল।


মস্কোর কাছে রুশ সামরিক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নেই কোনো জীবিত আরোহী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর অদূরে একটি এএন-২২ মডেলের সামরিক উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। মঙ্গলবার আইভানোভো অঞ্চলের ইভানকোভো গ্রামের কাছে ঘটা এই দুর্ঘটনায় উড়োজাহাজটিতে থাকা আরোহীদের কেউই বেঁচে নেই।

রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, বিমানটিতে সাতজন ক্রু সদস্য ছিলেন। তবে উড়োজাহাজে মোট কতজন ছিলেন, সে বিষয়ে সরকারিভাবে এখনো নিশ্চিত কোনো সংখ্যা জানানো হয়নি। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, বিমানটি মেরামতের কাজ শেষে একটি পরীক্ষামূলক ফ্লাইটে (টেস্ট ফ্লাইট) ছিল। ঠিক সেই সময়ই মস্কো থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত আইভানোভো অঞ্চলে এটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে এবং কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু হয়েছে। রুশ দৈনিক কোমারসান্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহৃত এই পুরোনো উড়োজাহাজটিতে সম্ভবত প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের আবহে এই দুর্ঘটনা ঘটলেও, এর সঙ্গে যুদ্ধের কোনো প্রত্যক্ষ সম্পর্ক আছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।


banner close