গ্রামে ২৫ বছরের মধ্যে জন্ম নেয়া একমাত্র শিশু সে। তাই তাকে এবং তার বাবা-মাকে নিয়েই ব্যস্ততা সবার। তাদের দেখতে দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছেন আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন লোকজন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ লোকজনই বয়স্ক। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারেন না, এমন মানুষও ছুটে এসেছেন। উদ্দেশ্য একটাই, শিশুটিকে দেখবেন। একটু ছুঁয়ে দেখবেন। আগ্রহ এখানেই থেমে নেই, শিশুটিকে কোলে নিতে রীতিমতো ভিড় লেগে গেছে মানুষজনের। পালা করে একেকজনে একেকবার কোলে নিচ্ছেন।
শিশুটি জন্মের প্রায় এক সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে তার বাড়িতে ছিল এমন ভিড়। তাকে নিয়ে গ্রামবাসীর যেন রীতিমতো বিস্ময়। যেন অলৌকিক কোনো শিশু সে।
এটা কোনো রূপকথা নয়। জাপানের একটি গ্রামের বাস্তব ঘটনা। ওই শিশুটির নাম কেনতারো ইয়োকোবোরি। তার বয়স এখন সাত বছর। যখন তিনি মায়ের গর্ভে আসেন, তখন থেকেই তার আগমনের ক্ষণ গুনছিল গ্রামের মানুষ। শিশুটি দুনিয়ার আলোয় আসতেই তাকে নিয়ে যেন উৎসব শুরু হয়। সাত বছর গড়ালেও এই একমাত্র শিশুটির দুষ্টুমি-খুনসুটিই উচ্ছ্বাসে রেখেছে এলাকার মানুষকে।
জাপানের সোজিও জেলার কাওয়াকামি গ্রামের এ ঘটনাটি দেশটির একটি চিত্র মাত্র। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
কেনতারোকে নিয়ে বিস্ময়ের মূল কারণ, পুরো দেশটি জুড়েই এখন জন্মহার কমে গেছে। দেশটির সরকার ‘নবজাতক বোনাস’ ঘোষণা করেও জন্মহার বাড়াতে ব্যর্থ হচ্ছে। জন্মহার কমে যাওয়ার পাশাপাশি দেশটিতে আরও একটি সংকট দেখা দিয়েছে। তা হলো গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বিপর্যয়।
গ্রামগুলোর এমন পরিস্থিতি যে, যুবসমাজের কেউ সেখানে থাকেন না। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বেশি পাওয়ার আশায় তারা বুঝতে শেখার পরই শহরে পাড়ি জমান। ফলে গ্রামগুলোর বেশিরভাগ বাসিন্দাই এখন বৃদ্ধ বয়সের। বার্ধ্যক্যজনিত কারণে একেক করে তারাও না ফেরার দেশ পাড়ি জমাচ্ছেন। ফলে গ্রামগুলোতে মানুষের বসবাস উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। এ দিকে কমছে জন্মহারও।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে শহুরে জীবন-যাপন ছেড়ে গ্রামে বসবাস শুরু করেন মিহো এবং হিরোহিতো নামে এক দম্পতি। তাদের ঘরে জন্ম নেয় কেনতারো নামে ওই শিশু। সংগত কারণেই তাকে নিয়ে আগ্রহ দেখা দেয় সবার মধ্যে।
সিএনএনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন কারণে জাপানের নারীরা সন্তান নিতে চান না। এরমধ্যে অন্যতম কারণ হলো দেশটিতে চাকরিজীবী নারীদের সন্তান ধারণের আগ্রহ বা সুযোগ কম। অনেকে আবার মনে করেন, সন্তান ধারণ করলে ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে যাবে। চাকরির সুযোগ থাকবে না।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত বছর জাপানে মোট সাত লাখ ৯৯ হাজার ৭২৮টি শিশুর জন্ম হয়েছে। যেখানে ১৯৮২ সালে মোট শিশু জন্মের সংখ্যা ছিল ১৫ লাখ।
পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন সৌদি আরব ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় দেশ দুটিতে আবারও দূতাবাস ও কনস্যুলেট খোলার প্রক্রিয়া শুরু করতে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী শিগগিরই বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছেন। খবর আল-জাজিরার।
বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় টুইটারে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির-আব্দুল্লাহিয়ানকে ফোন করেন।
গত ১০ মার্চ চীনের উদ্যোগে হওয়া আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের এই বৈঠকটি প্রত্যাশিতই ছিল। এটিকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সাত বছর পরে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করা ও সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবেই ধরা হচ্ছে।
২০১৬ সালে বিশিষ্ট এক শিয়া মুসলিম পণ্ডিতের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সুন্নিপ্রধান দেশ সৌদি আরব। সে সময় শিয়া অধ্যুষিত ইরানের বিক্ষোভকারীরা সৌদি আরবের কূটনৈতিক মিশনে হামলা চালায়। তখন তেহরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে রিয়াদ।
ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন পক্ষকে সমর্থন দিয়ে আসছে ইরান ও সৌদি আরব। ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের সমর্থন দিচ্ছে ইরান আর সরকার সমর্থিত একটি সামরিক জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে সৌদি আরব।
অর্থনৈতিক সংকটে ধুঁকছে ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাওয়ায় আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়া, জ্বালানিসংকটসহ নানা কারণে ভুগতে হচ্ছে দেশটির মানুষকে। এরই মধ্যে ঋণখেলাপিও হয়েছে দেশটি। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছে ঋণ চেয়েছিল কলম্বো। শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে আইএমএফের সে ঋণ দেরিতে হলেও আসছে।
তবে এতেই স্বস্তি মিলবে না বলে সতর্ক করেছেন দেশটির প্রসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। গতকাল বুধবার তিনি বলেছেন, ‘আইএমএফের ঋণ পেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে না। এটা কেবল দীর্ঘ, আরও কঠিন এক যাত্রার সূচনা মাত্র। আমাদের যত্নের সঙ্গে, আরও সাহস নিয়ে এই পথ পাড়ি দিতে হবে। এই যাত্রার একটাই উদ্দেশ্য- অর্থনৈতিক পুনর্গঠন।’
চীন হলো শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় দ্বিপক্ষীয় ঋণদাতা দেশ। বেইজিং শ্রীলঙ্কার ঋণের শর্ত শিথিল করার আশ্বাস দেয়ার পর গত সোমবার আইএমএফের ঋণটি অনুমোদন পায়। পার্লামেন্টে দেয়া এক বক্তব্যে রনিল বিক্রমাসিংহে আইএমএফের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিকে দেশ পুনরুদ্ধারে মাইলফলক বলে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, এই পুনরুদ্ধার ঋণ আরও কঠিন কাঠামোগত সংস্কারের প্রথম পদক্ষেপ মাত্র।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাওয়ায় গত বছরের এপ্রিলে শ্রীলঙ্কা ঋণখেলাপি হয়। সে সময় তাদের বৈদেশিক ঋণ ছিল ৪ হাজার ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার। একে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ফুরিয়ে যাওয়া, পাশাপাশি ঋণখেলাপি হওয়ায় শ্রীলঙ্কার আমদানি-রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এতে নিত্যপণ্যের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয় দেশটিতে। তারপর থেকে ২ কোটি ২০ লাখ জনগোষ্ঠীর দেশটিতে খাদ্য ও জ্বালানিসংকট চলছে এবং তা দিনে দিনে প্রকট হচ্ছে। এর ফলে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হয়ে উঠেছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে।
বিক্রমাসিংহে কর বাড়িয়ে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভর্তুকি কমিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল তিনি জানিয়েছেন, আইএমএফের শর্ত পূরণে আরও করারোপ করতে হবে। এতে বিদেশি ঋণের ওপর শ্রীলঙ্কার নির্ভরশীলতা অর্ধেকে কমবে। গত বছর শ্রীলঙ্কার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৯ শতাংশ ছিল বিদেশি ঋণ। আইএমএফ শ্রীলঙ্কাকে দুর্নীতি দমনে আরও কঠোর আইন প্রণয়ন এবং শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসসহ লোকসানি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো বিক্রি করে দেয়ার শর্ত দিয়েছে।
বিক্রমাসিংহে ঘোষণা দিয়েছেন, সরকারি কোম্পানিগুলোয় বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার পদক্ষেপ নেবে। তবে ট্রেড ইউনিয়নগুলো সরকারের এসব কঠোর পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে। গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য ও পরিবহন খাতের শ্রমিকদের অবরোধে এই দুই খাত প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। ট্রেড ইউনিয়নগুলো আরও কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে।
মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় শান রাজ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি মঠে হামলা চালিয়ে অন্তত ২৮ জনকে হত্যা করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। কারেনি ন্যাশনালিটিস ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ) নামের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী এ কথা জানায়। শান রাজ্যের নান নেইন গ্রামে গত শনিবার এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও বিবিসি সোমবার এ খবর জানায়।
দুই বছর আগে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশটিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সামরিক বাহিনী এবং সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে রক্তাক্ত লড়াইয়ের ঘটনা বাড়ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে তীব্র কিছু লড়াই শান রাজ্যে সংঘটিত হয়েছে। মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদো ও প্রতিবেশী থাইল্যান্ডের সঙ্গে রাজ্যটির সীমান্ত আছে।
কেএনডিএফ জানায়, নান নেইন গ্রামে গত শনিবার ব্যাপক গোলাবষর্ণের পর বিমানবাহিনী ও গোলন্দাজ বাহিনী গ্রামটিতে প্রবেশ করে। তারা মঠে আশ্রয় নেয়া গ্রামবাসীদের খুঁজে বের করে এনে হত্যা করে। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শান রাজ্যের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীটিও লড়াই করছে। মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর মঠে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগের পক্ষে একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে কেএনডিএফ গোষ্ঠী। এতে দেখা যায়, তিনজন বৌদ্ধ ভিক্ষুসহ ২১ জনের মরদেহ পড়ে রয়েছে। এসব মরদেহে একাধিক গুলি লেগেছে। ভিডিও ফুটেজে মঠের দেয়ালে গুলির আঘাতে গর্ত দেখা গেছে।
স্থানীয় সংবাদপত্র কান্তারাওয়াদ্দি টাইমসকে এনডিএফের মুখপাত্র বলেন, ‘সব কিছু দেখে মনে হয়েছে, এসব মানুষকে মঠের সামনে দাঁড় করিয়ে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে সামরিক বাহিনী।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি বিবিসিকে জানায়, তারা মঠের কাছেই আরও সাতটি মরদেহ পেয়েছে। মঠের আশপাশে বেশ কিছু বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। সামরিক বাহিনী এসব বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কেএনডিএফ।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি জানায়, নিরীহ গ্রামবাসীদের বেশির ভাগই সামরিক বাহিনী আসার আগেই পালিয়ে গিয়েছিল। কিছু মানুষ বৌদ্ধ মঠে লুকিয়েছিল। তারা ভেবেছিল, এমন একটি ধর্মীয় স্থানে আশ্রয় নিলে তারা হয়তো হামলা থেকে বেঁচে যাবেন।
বিবিসি জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটির বিস্তারিত যাচাই করা কঠিন হলেও মিয়ানমারের এই রাজ্যটিতে নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর এ ধরনের বর্বরতার ঘটনা নতুন নয়। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পর থেকে এই রাজ্যটিতেই সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে প্রবল প্রতিরোধের কিছু ঘটনা ঘটেছে।
কেএনডিএফ বিবিসিকে জানায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে নান নিইন এলাকায় সামরিক বাহিনী এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে। শান রাজ্য থেকে কায়েহ রাজ্যে যাওয়ার প্রধান রুট নান নেইন এলাকা। সামরিক বাহিনীর ধারণা, এই রুট দিয়েই সশস্ত্র প্রতিরোধ বাহিনীগুলো অস্ত্র আমদানি করে। তাই বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে এলাকাটির নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে সামরিক বাহিনী। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে বিরোধীদের কণ্ঠস্বর চেপে ধরতে ব্যাপক নির্যাতন চালায় তারা। অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স গোষ্ঠীর দাবি, ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিরুদ্ধে জান্তার দমনপীড়নে এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
রেকর্ড গড়ে টানা তৃতীয়বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন সি চিনপিং। শুক্রবার ৬৯ বছর বয়সী এই নেতাকে দেশটির ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস (এনপিসি) নামে পরিচিত প্রায় ৩ হাজার সদস্যের পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত করে। খবর বিবিসি, রয়টার্সের।
চীনে এর আগে দুইবারের বেশি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ ছিল না। তবে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্টের মেয়াদসীমা বিলুপ্ত করেন চিনপিং। ফলে তার আবারও ৫ বছরের মেয়াদে দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে বসার জন্য সুযোগ তৈরি হয়।
আর এর মাধ্যমে মাও সে তুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা হলেন সি। এ ছাড়া এর মধ্য দিয়ে দলের ওপরও তার নিয়ন্ত্রণ আরও শক্ত হলো।
আরও পড়ুন: তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় সি চিন পিং, শীর্ষ দল ঘোষণা
চীনের সরকার ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট পদটি মূলত আনুষ্ঠানিক। সত্যিকারের ক্ষমতা থাকে পার্টি ও সেনাবাহিনীর প্রধানের। এ দুই পদেও রয়েছেন চিনপিং। গত বছরের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসে তিনি তার দল কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান নির্বাচিত হন। এ ছাড়া দেশটির সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যানও তিনি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চি চিনপিং যে তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সেটি আগে থেকে অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল। এখন পালা দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী এবং অন্য মন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করার।
এ ক্ষেত্রেও আগে থেকে কিছুটা অনুমান করা যাচ্ছে। চিন পিংয়ের বিশ্বাসভাজনরাই এসব পদে আসবেন। এর মধ্যে লি কিয়াংকে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট ও মূল্যস্ফীতি কাটিয়ে উঠতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ঋণ চুক্তি নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছে পাকিস্তান। আসন্ন অক্টোবরে নির্বাচনের বিষয়টি মাথায় রেখে আইএমএফের দাবিকৃত কর বৃদ্ধি এবং ভর্তুকি হ্রাসের শর্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও এখন এই কঠিন শর্তই মানতে চলেছে শেহবাজ শরিফের সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেছেন, ঋণ পেতে আইএমএফের শর্ত যদিও ‘কল্পনারও বাইরে’। কিন্তু এই কঠিন শর্তেও রাজি না হয়ে উপায় নেই। খবর দ্য ডন ও এনডিটিভির।
অর্থনৈতিক অবস্থার গতি ফেরাতে আইএমএফের কাছ থেকে ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ নিতে চায় পাকিস্তান। গত মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত আলোচনা সারতে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল ইসলামাবাদে পৌঁছেছে।
আইএমএফের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর শুক্রবার শেহবাজ শরিফ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিস্তারিত বলতে চাই না, তবে এতটুকুই বলব, আমাদের বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ অকল্পনীয়। আইএমএফের যেসব শর্তে রাজি হতে হবে, সেটাও কল্পনার বাইরে। তারপরও আইএমএফের এসব শর্তে আমাদের রাজি হতেই হবে।’
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১০ কোটি মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রিজার্ভ দিয়ে আর তিন সপ্তাহেরও কম আমদানির চাহিদা মেটানো যাবে। গত বুধবার পাকিস্তানের বাৎসরিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৪৮ বছরের সর্বোচ্চ হয়েছে।
পাকিস্তানে ফের জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। এবার এক ধাক্কায় লিটারপ্রতি পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ৩৫ পাকিস্তানি রুপি বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। এছাড়া কেরোসিন ও হালকা ডিজেলের মূল্য বেড়েছে ১৮ রুপি করে।
রোববার থেকে এই নতুন মূল্য কার্যকর হয়েছে। পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির এই ঘোষণা দেন।
সম্প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির দর রেকর্ড পরিমাণে কমে যায়। এতে গত বৃহস্পতিবার থেকে ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি মুদ্রার দর দাঁড়ায় ২৬২ রুপিতে।
এরপরই দেশটির সরকার পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। মূলত আর্থিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পেতে পাকিস্তান এমন পদক্ষেপ নিয়েছে।
দেশটিতে বর্তমানে লিটারপ্রতি পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ২৪৯.৮০ রুপিতে। হাইস্পিড ডিজেলের মূল্য ২৬২.৬০ রুপি। কেরোসিন তেলের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৮৯ রুপিতে। আর হালকা ডিজেলের দাম ১৮৭ রুপি।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জানায়, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার গুজবে দেশটির লোকজন গত কয়েকদিন ধরে পেট্রোল স্টেশনে ভিড় জমাচ্ছিল। তবে সরকার মানুষকে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে মানা করেছে।
অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, জ্বালানি তেলের অস্থায়ী মজুদ এবং পেট্রোলের ঘাটতি সম্পর্কে ছড়িয়ে পড়া গুজবের কারণে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য জ্বালানি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফকে অবিলম্বে নতুন মূল্য নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়েছে।
পাকিস্তানি রুপির দরপতনের ফলে আর্থিক সংকটের পাশাপাশি পাকিস্তানে খাদ্যপণ্যের দামও ব্যাপক বেড়েছে। এছাড়া সম্প্রতি ঘন ঘন বিদ্যুৎবিভ্রাট দেখা দিচ্ছে। ব্যয় সংকোচনের জন্য মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে পাকিস্তানের সরকার।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে উৎপাদন বেড়েছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, গত এক বছরে দেশটিতে পপির চাষ এক-তৃতীয়াংশ বেড়েছে। খবর দ্য গারডিয়ানের।
মাদক ও অপরাধবিষয়ক ওই প্রতিবেদনটি গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করে জাতিসংঘ। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে আফিম চাষ ও উৎপাদন বেড়েই চলছে। ২০২২ সালে পুরো মৌসুমে মিয়ানমারে আফিম চাষের এলাকা ৩৩ শতাংশ বেড়ে ৪০ হাজার ১০০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে।
জাতিসংঘের আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস বলেছেন, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাশাসন শুরুর পর মিয়ানমারের জনগণের অর্থনৈতিক এবং নিরাপত্তাজনিত বিষয় ছাড়াও দেশটিতে চলমান অস্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে কৃষকদের আফিম চাষ ছাড়া তেমন কোনো পথ খোলা ছিল না।
ডগলাস বলেন, দেশটি আফগানিস্তানের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আফিম ও হেরোইন উৎপাদনকারী দেশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেয়ার আগে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিয়ানমারে আফিমের চাষ নিম্নমুখী ছিল। ২০২০ সালে দেশটিতে আফিম উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৪০০ টনের কম। ২০২১ সালে সামান্য বৃদ্ধি পাওয়ার পর, ২০২২ সালে এটি আনুমানিক ৭৯০ টনে উন্নীত হয়েছে।
সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমার গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত। জাতিসংঘ বলছে, সংঘাত মিয়ানমারের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলায় গ্রামীণ পরিবারগুলো তাদের আয়ের জন্য আফিম চাষের ওপর বেশি নির্ভরশীল হতে বাধ্য হচ্ছে।
ডগলাস বলেন, আফিম উৎপাদনের যে সম্প্রসারণ চলছে, তা মূলত দারিদ্র্য এবং গ্রামীণ এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিক্রিয়ার ফল।
জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কবলে পড়েছে পাকিস্তান। রাজধানী ইসলামাবাদসহ দেশটির বড় অংশ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। সোমবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অন্তত ১২ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর আল-জাজিরার।
দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে টুইটারে জানানো হয়েছে, স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৩৪ মিনিটে জাতীয় গ্রিডের সিস্টেম ফ্রিকোয়েন্সি কমে যায়। রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে।
চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো এত বড় ধরনের বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শিকার হলো পাকিস্তান। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় দেশটির বিদ্যুৎখাত। সেসময় ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৃহত্তম শহর করাচিসহ পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চল বিদ্যুৎহীন ছিল।
সোমবার দেশটির বিদ্যুৎমন্ত্রী খুররম দস্তগীর একটি স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, জ্বালানি খরচ বাঁচাতে শীতকালে রাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিটগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখে জাতীয় গ্রিড।
‘আজ সকাল সাড়ে ৭টায় যখন ইউনিটগুলো এক এক করে চালু করা হচ্ছিল, তখন দেশের দক্ষিণাঞ্চল সিন্ধু প্রদেশের দুটি শহরের (জামশোরো এবং দাদু) মধ্যে ফ্রিকোয়েন্সির তারতম্যের ঘটনা ঘটে।’
‘এ সময় ভোল্টেজ ওঠানামা করতে করতে একের পর এক বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট বন্ধ হতে শুরু করে।’
‘তবে এটি বড় কোনো সমস্যা নয়’ বলেও মন্তব্য করেছেন ওই মন্ত্রী। দস্তগীর বলেন, ‘কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ফিরেছে। তবে পুরো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে সময় লাগবে অন্তত ১২ ঘণ্টা।’
আল-জাজিরা জানায়, ২২ কোটি জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তানে অর্থনৈতিক সংকটের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সংকটের মধ্যে চলতি মাসের শুরুতে বাজার এবং বিপণিবিতানগুলোকে রাত সাড়ে ৮টার মধ্যে বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশনা জারি করে দেশটির সরকার।
নেপালের পোখারায় ৭২ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে এখন পর্যন্ত ৬৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে স্থানীয় পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ফ্লাইটটিতে ৬৮ যাত্রী ও ৪ ক্রু ছিলেন।
প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি ১৫ বছর পুরোনো। সেটি দুই ইঞ্জিনের ‘এটিআর ৭২’ মডেলের। পরিচালনার দায়িত্বে ছিল নেপালের ইয়েতি এয়ারলাইনস। তাদের বহরে মোট ছয়টি ‘এটিআর ৭২-৫০০’ উড়োজাহাজ থাকার কথা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে। এই সংস্করণ এখন আর তৈরি করে না নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এটিআর এয়ারক্র্যাফট।
অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে এটিআর ৭২ সিরিজের উড়োজাহাজের চল আছে বিশ্বব্যাপী। ফরাসী প্রতিষ্ঠান এয়ারবাস ও ইতালির লেওনার্দোর যৌথ উদ্যোগে এটি তৈরি হয়ে থাকে।
এটিআর এয়ারক্র্যাফটের তথ্য অনুযায়ী, এটিআর ৭২-৫০০ মডেলে যাত্রীদের জন্য সচরাচর ৬৮টি আসন থাকে। দৈর্ঘ্যে ২৭ দশমিক ১৭ মিটার লম্বা হয়, এক পাখা থেকে অপর পাখার প্রান্তের দৈর্ঘ্য ২৭ মিটার। এতে মোট চারটি জরুরি নির্গমন পথ আছে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০৯ মাইল বেগে চলে এই উড়োজাহাজ।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহাল প্রচণ্ড সংবাদমাধ্যমে বলেন, বিমানটি রাজধানী কাঠমুন্ডু থেকে পোখারায় যাচ্ছিল।
রোববার দুর্ঘটনার সময় পোখারায় আবহাওয়া বৈরি ছিল না। দেশটির বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে এখন পর্যন্ত যান্ত্রিক ত্রুটির কথাই বলছে।
এদিকে ইয়েতি ইয়ারলাইনসের মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, বিমানটি ভেঙে কয়েক খণ্ড হয়ে গেছে। ছবিতে বিমান থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।
বিমান দুর্ঘটনার পর মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, দুর্ঘটনা তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করেছে নেপাল সরকার। সোমবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয় সেখানে।
নেপালের পোখারায় বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটিতে থাকা ৭২ আরোহীর মধ্যে ১৫ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উড়োজাহাজটিতে মোট ৬৮ যাত্রী ও চার জন ক্রুর ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে ৫৩ জন নেপালি ও ১৫ জন বিদেশি। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, উড়োজাহাজটিতে বিদেশিদের মধ্যে পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রুশ, দুজন কোরীয় এবং একজন করে আইরিশ, অস্ট্রেলীয়, আর্জেন্টাইন ও ফ্রান্সের নাগরিক। তাদের উদ্ধারে পোখারা বিমানবন্দর থেকে দুটি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে এবং কাঠমান্ডুতে অতিরিক্ত হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও সংস্থাটি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: নেপালে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজে ছিলেন ১২ বিদেশিও
নেপালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: ৪০ মরদেহ উদ্ধার, বাকিদেরও মৃত্যুর শঙ্কা
নেপালে ৭২ আরোহী নিয়ে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত
রোববার সকালে পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পুরোনো বিমানবন্দরের মাঝামাঝি এলাকায় ইয়েতি এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজটি এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। নেপালের সংবাদমাধ্যম অনলাইন খবরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৯ এনএএনসি এটিআর৭২ মডেলের এয়ারক্রাফটি রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাচ্ছিল।
সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে উড়োজাহাজটি কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। পোখারার বিমানবন্দরে অবতরণের সময় এটি সেতি নদীর তীরে বিধ্বস্ত হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দুর্ঘটনাস্থল থেকে আগুনের লেলিহান শিখা ও কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৪০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কয়েক শ নেপালি সৈন্য উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে।
নেপালের সেনাবাহিনীর মুখপাত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, বিমানটি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে। আরও মরদেহ পাওয়া যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ ঘটনায় কেউ বেঁচে নেই বলেই ধরে নেয়া হচ্ছে। উদ্ধারকাজ পরিচালনায় মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল প্রচণ্ড।
ইয়েতি এয়ারলাইনসের মুখপাত্র সুদর্শন বার্তৌলা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া আগুন নেভাতে কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসসহ জরুরি সংস্থার কর্মীরা। উড়োজাহাজটিতে কেউ বেঁচে আছেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
হিমালয়ের দেশ নেপালে প্রায়ই উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ঘটে। কেবল অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট নয়, আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এক হিসাব অনুযায়ী, গত ৩০ বছরে দেশটিতে ৩০টির মতো উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পথচারীদের ওপর গাড়ি তুলে দেয়ায় চীনের গুয়াংজুতে পাঁচজন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যার এ ঘটনায় গাড়ির চালককে আটক করেছে পুলিশ। খবর বিবিসির।
মানুষ হত্যার উদ্দেশ্যে চালক ইচ্ছা করেই পথচারীদের ওপর গাড়ি তুলে দেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ট্রাফিক বাতির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা পথচারীদের ওপর ইচ্ছা করেই গাড়ি চালিয়ে দেয় সে। বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব নিয়েই কাজটি করেছে। এরপর ইউটার্ন নিয়ে ফের মানুষকে আঘাত করে।’
ঘটনার পর ওই চালক এক ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার মোটরসাইকেল উদ্দেশ্য করে গাড়ি চালিয়ে যান। তবে একটুর জন্য বেঁচে যান ওই কর্মকর্তা।
একাধিক ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনার পর গাড়ি থেকে বের হয়ে ২২ বছর বয়সী চালক বাতাসে কাগজী মুদ্রা ছড়াচ্ছেন।
১ কোটি ৯০ লাখ মানুষের শহর গুয়াংজু। চীনের দক্ষিণের শহরটির এক ব্যস্ত মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি চীনজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
বিবিসি জানায়, চীনে সম্প্রতি এমন ঘটনা আরও ঘটেছে। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে দেশটির ফুজিয়ান প্রদেশে ভিড়ের ওপর এক চালক মিনি ট্রাক তুলে দিলে তিনজন নিহত ও নয়জন আহত হয়।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাইরে বুধবার বড় ধরনের বিস্ফোরণে অন্তত ২০ জন নিহত ও আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। তালেবান সরকারের একজন কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।
আলজাজিরা জানায়, সন্দেহভাজন একজন ‘আত্মঘাতী’ হামলাকারী ব্যক্তি ওই বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন। চলতি বছর কাবুলে এটি এ ধরনের দ্বিতীয় হামলা। তবে আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি।
তাৎক্ষণিকভাবে কেউ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তালেবানের তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা উস্তাদ ফারিদুন রয়টার্সকে বলেন, হামলাকারী ব্যক্তি বোমা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রবেশের পরিকল্পনা নিলেও ব্যর্থ হয়েছেন।
কাবুলের পুলিশপ্রধান খালিজ জাদরান বলেন, ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
তথ্য ও সংস্কৃতি উপমন্ত্রী মোহাজের ফারাহি এএফপিকে বলেন, স্থানীয় সময় বিকেল চারটার দিকে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তখন চীনের একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠক অনুষ্ঠানের কথা ছিল। তবে হামলার সময় তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য মেলেনি।
তালেবান সরকার আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আরেক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিদ্রোহীদের মোকাবিলায় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আইএসের জঙ্গিরা মূলত বিদেশিদের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। রুশ ও পাকিস্তানি দূতাবাস এবং চীনের ব্যবসায়িক কেন্দ্রের মতো স্থানকে তারা নিশানা করছে।