রোববার, ১১ মে ২০২৫
২৭ বৈশাখ ১৪৩২

মারিউপোলে হঠাৎ সফরে পুতিন

মারিউপোল পরিদর্শনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৯ মার্চ, ২০২৩ ১৯:২৪

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের মারিউপোল বন্দরে আকস্মিক সফরে গেছেন। এদিকে, কৃষ্ণসাগর নৌপথে ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানির জন্য সম্পাদিত চুক্তিটি দুই মাসের জন্য নবায়ন করেছে রাশিয়া।

বিবিসি জানায়, রুশ বাহিনীর অধিকৃত মারিউপোল শহরটি চলমান যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। সরকারি ভিডিওতে দেখা যায়, প্রেসিডেন্ট পুতিন একটি গাড়ি চালিয়ে মারিউপোলের বিভিন্ন সড়ক পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। ওই ভিডিওচিত্র কখন ধারন করা হয়েছে, তা জানা যায়নি। সম্ভবত সেখানে নতুন করে রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর এটিই পুতিনের প্রথম সফর।

মারিউপোলের নির্বাসিত ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেন, পুতিন সেখানে রাতে সফর করেছেন যাতে দিনের আলোয় শহরটির বিধ্বস্ত রূপ তাকে দেখতে না হয়।

ক্রেমলিন বলেছে, মারিউপোলে সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি ছিল পুতিনের স্বতস্ফূর্ত। এছাড়া তিনি শহরটির পূর্বদিকে অবস্থিত রুশ নগর রোস্তভ-অন-দনের সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।

বার্তা সংস্থা তাসের খবরে বলা হয়, পুতিন হেলিকপ্টারযোগে মারিউপোলে যান। তিনি মোটরগাড়ি চালানোর সময় তার পাশে ছিলেন রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী মারাত খুসনালিন। তিনি শহরটিতে চলমান পুনর্নির্মাণ কাজের বর্ণনা দিচ্ছিলেন। পুতিন ফিলহারমনিক হল পরিদর্শন করেছেন। সেখানে আজভস্থাল লোহা ও ইস্পাত কারখানায় প্রতিরোধ লড়াইয়ে অংশগ্রহণকারী ইউক্রেনীয় সেনাদের আত্মসমর্পণের আগপর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছিল।

মারিউপোল গত ১০ মাসের বেশি সময় ধরে রুশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর আগে সেখানে রাশিয়া-ইউক্রন যুদ্ধের সবচেয়ে দীর্ঘ ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধগুলোর একটি সংঘটিত হয়। ইউক্রেন জানায়, সেখানে ২০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

জাতিসংঘের আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী মারিউপোলের ৯০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রায় সাড়ে তিন লাখ বাসিন্দা সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে শহরটিতে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ বসবাস করত।


ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর আকাশসীমা খুলে দিল পাকিস্তান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভারতের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর পাকিস্তান শনিবার তার আকাশসীমা পুনরায় খুলে দিয়েছে। পাকিস্তান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (পিএএ) একথা জানিয়েছে।

করাচি থেকে এএফপি এই খবর জানায়।

পাকিস্তান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর, ‘সব ধরনের ফ্লাইটের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা সম্পূর্ণরূপে খুলে দেওয়া হয়েছে।’


যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান: ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

পরিপূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত পাকিস্তান। শনিবার (১০ মে) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন তথ্য জানিয়েছেন।

নিজের সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় রাতে দীর্ঘ আলোচনার পর তারা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছেন। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, পরিপূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান।

সাধারণ জ্ঞান ও দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগানোর জন্য দুদেশকে তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এদিকে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক ধরও এমন তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার সঙ্গে আপস না করেই এ অঞ্চলের শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সবসময় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান।


উত্তেজনা কমাতে ভারত-পাকিস্তানের প্রতি জি-৭-এর আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তান পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাওয়ায় সংঘাতের ‘তাৎক্ষণিক উত্তেজনা হ্রাস’ ও ‘সর্বোচ্চ সংযমের’ আহ্বান জানিয়েছে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো। শুক্রবার এ আহ্বান জানান অর্থনৈতিক জোটের নেতারা।

মন্ট্রিল থেকে এএফপি জানায়, বিশ্বের সাতটি উন্নত ও ধনী গণতান্ত্রিক দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘সামরিক উত্তেজনা আরো বাড়লে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি তৈরি হতে পারে’। উভয় পক্ষকে ‘শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে সরাসরি সংলাপে অংশ নেওয়ার’ আহ্বান জানান তারা।

উল্লেখ্য, জি-৭ সদস্য দেশগুলো হলো: যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও জাপান।

এই জোট বৈশ্বিক অর্থনীতি, নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন, উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক সংকটসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমন্বিত নীতি নির্ধারণ ও আলোচনার মাধ্যমে কাজ করে।


ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও পাকিস্তানকে অর্থছাড়ের অনুমোদন আইএমএফের

আপডেটেড ১০ মে, ২০২৫ ১৭:১২
বাসস

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ভারতের আপত্তি সত্ত্বেও শুক্রবার পাকিস্তানের জন্য ঋণ কর্মসূচি পর্যালোচনার অনুমোদন দিয়েছে। যার ফলে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার জরুরি তহবিল ছাড় করা হয়েছে এবং নতুন ১শ’ ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের একটি বেইলআউট প্যাকেজ অনুমোদন করা হয়েছে।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

২০২৩ সালে পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়, যখন রাজনৈতিক সংকট আর অর্থনৈতিক মন্দা এক সঙ্গে মিশে দেশটির ঋণের বোঝা চরম মাত্রায় পৌঁছে। তখন আইএমএফের ৭ বিলিয়ন ডলারের বেইলআউট প্যাকেজ পাকিস্তানকে রক্ষা করে। যা ১৯৫৮ সালের পর থেকে তাদের ২৪ তম আইএমএফ সহায়তা।

আইএমএফ এক বিবৃতিতে বোর্ডের প্রথম ঋণ পর্যালোচনার অনুমোদনের কথা উল্লেখ করে গণমাধ্যমের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছে, ‘পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ শক্তিশালী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে, যা অর্থায়ন এবং বৈদেশিক খাতে উন্নতি এবং একটি ধারাবাহিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা করেছে।’

এছাড়াও ‘জলবায়ু ঝুঁকি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতি অর্থনৈতিক সহনশীলতা গড়ে তোলা পাকিস্তানের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করার জন্য’ প্রায় ১ শ’ ৪০ কোটি মার্কিন ডলারের একটি নতুন ঋণ কর্মসূচির অনুরোধও অনুমোদন করেছে আইএমএফ’র বোর্ড।

পাকিস্তানের সাথে চলমান উত্তেজনার মধ্যে ভারত ভোটদানে বিরত থাকে। আইএমএফ বোর্ডে ভুটান, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ভারত। এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এমন একজন ব্যক্তি এএফপি’কে নিশ্চিত করেছেন, ভারতের সিদ্ধান্তের ফলে ওই চারটি দেশই কার্যত ভোটদানে বিরত ছিল। তবে ওই ব্যক্তি প্রকাশ্যে গণমাধ্যমের সামনে কোনো কথা বলেননি।

ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পাকিস্তানের দুর্বল রেকর্ডের কারণে সেখানে আইএমএফ কর্মসূচির কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।’

নয়াদিল্লি আরো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে, এই অর্থ পাকিস্তান ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদে’ ব্যবহার করতে পারে।

আইএমএফ বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বেড়েছে এবং তিন দিনের ক্ষেপণাস্ত্র, গোলাবর্ষণ ও ড্রোন হামলায় ৫০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে।


'অপারেশন সিঁদুর' এর জবাব পাকিস্তানের ‘বুনিয়ান-উন-মারসুস’

ভারতের ২৬ সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত
ছবি: রয়টার্স‌
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ সেনা অভিযানের পাল্টা জবাব দিতে ‘অপারেশন বুনিয়ান উন মারসুস’ শুরু করেছে পাকিস্তান। এ অভিযানের আওতায় ইতোমধ্যে শুক্রবার রাতে ভারতের ১১টি সামরিক স্থাপনায় ২৬ সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনী।

শুক্রবার (৯ মে) রাতে ভারতের বারামুলা থেকে ভূজ পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা এসব হামলা চালানো হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, সামরিক অভিযানটির নাম ‘অপারেশন বুনইয়ান–উন–মারসুস’ রাখা হয়েছে। আরবি ভাষার এ শব্দগুচ্ছের অর্থ ‘সুদৃঢ় প্রাচীর’।

হামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে তিনি জানান, এই স্থাপনাগুলোর মধ্যে পাঠানকোট বিমান ঘাঁটি, উধামপুর বিমান ঘাঁটি, গুজরাট বিমান ঘাঁটি, রাজস্থান বিমান ঘাঁটি এবং ভারতের সুপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ব্রাহ্মো‌সের একটি মজুতস্থান উল্লেখযোগ্য। পাল্টা এ হামলায় ফাতাহ-১ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। দেশটির নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্রের রেঞ্জ ১২০ কিলোমিটার।

জানা যায়, শুক্রবার রাতের হামলায় ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের বারামুলা জেলার উরি শহরে ভারতীয় সেনবাহিনীর একটি ব্রিগেডের হেডকোয়ার্টার এবং সরবরাহ বা রসদ ডিপো, নাগরোটা শহরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি আর্টিলারি ব্যাটারি ধ্বংস হয়েছে।

অন্যদিকে ভারতের মন্ত্রণালয়ের দাবি, পাকিস্তান থেকে চালানো সন্দেহভাজন সশস্ত্র ড্রোন বেসামরিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার চেষ্টা করেছিল। বারামুল্লা, শ্রীনগর, অবন্তীপোরা, নাগরোটা, জম্মু, ফিরোজপুর, পাঠানকোট, ফাজিলকা, লালগড় জাট্টা, জয়সলমীর, বারমের, ভুজ, কুয়ারবেত এবং লক্ষী নালার কাছে ওই ড্রোনগুলো দেখা গেছে।

তারা আরও জানায়, ফিরোজপুরের একটি বেসামরিক এলাকায় একটি ড্রোন থেকে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। ওই হামলায় স্থানীয় অনেক বাসিন্দা গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে।

বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, শনিবার ভোর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে বিস্ফোরণের খবর আসছে। বিবিসির সাংবাদদাতারা ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগর এবং জম্মু শহরে বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তবে এই বিস্ফোরণের উৎস শনাক্ত করা যায়নি।

গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারায়। এই হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে মঙ্গলবার রাতে দেশটির ২৪টি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে পাকিস্তানে কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হন। আহত হন ৪৬ জনের বেশি। এর প্রতিশোধে পালটা হামলা চালিয়ে ভারতের বেশ কয়েকটি বিমান এবং ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান।


পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও প্রকাশ করল ভারত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও প্রকাশ করেছে ভারতের সেনাবাহিনী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এ ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। শুক্রবার আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করেছে, যাতে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। ভারতের দাবি, লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) লঙ্ঘনের জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। গত রাতে একাধিক সংঘাতের অভিযোগ করে এক এক্স (টুইটার) পোস্টে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যথাযথ জবাব দেওয়ার কথা জানায় ভারত।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, পাকিস্তান গত রাতে এলওসিজুড়ে একাধিক আগ্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে। আমাদের সেনারা তা প্রতিহত করে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, প্রকাশিত ভিডিওটিতে একটি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার মুহূর্ত ধারণ করা হয়েছে। তবে ভিডিওটির সত্যতা বা স্থান-কাল নিয়ে এখনো স্বতন্ত্রভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভারতের আক্রমণের জবাবে তাদের বাহিনী শুধু প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। পাকিস্তান অভিযোগ করেছে, ভারত গত কয়েকদিনে বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে।

এর আগে, মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত ৯টি শহরে একযোগে হামলা চালায় ভারত। ভারত দাবি করে, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তারা এই অভিযান চালিয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার সারাদিনজুড়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে আরও বহু ড্রোন হামলা চালানো হয়।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, বাহাওয়ালপুরের আহমেদপুর পূর্বাঞ্চলে ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে দুই-তিন বছর বয়সি একটি শিশু মেয়ে, সাতজন নারী ও চারজন পুরুষ। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ৯ নারী ও ২৮ পুরুষ।

এদিকে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের পাল্টা হামলায় ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ও একটি যুদ্ধ ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে। আইএসপিআরের ডিজি বলেন, শত্রুর আগ্রাসনের জবাবে প্রতিরক্ষামূলকভাবে আমরা ৩টি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ বিমান এবং একটি হেরন যুদ্ধ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছি।

ভারতের বন্দর-টার্মিনালে নিরাপত্তা জোরদার

পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ভারতের সব বন্দর, শিপিং টার্মিনাল ও শিপইয়ার্ডে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি উত্তপ্ত সীমান্ত পরিস্থিতির বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের উত্তরাঞ্চলের ২৪টি বিমানবন্দরে বেসামরিক ফ্লাইট চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। গত কয়েক দিনে পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের জেরে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতের বিমানসেনা বুধবার পাকিস্তানে বিমান হামলা চালায়, যার জেরে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে দশকের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের সৃষ্টি হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই পাকিস্তানের নাগরিক।

ভারতের বড় বিমানসংস্থাগুলো যেমন- এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো ও স্পাইসজেট, বুধবার থেকে ১০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে। বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রীদের ভোগান্তি বেড়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এখনো বন্দর নিরাপত্তা জোরদার করার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা বা পাকিস্তানের প্রতি সরাসরি কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, সামরিক ও বেসামরিক অবকাঠামোতে সম্ভাব্য হামলা রোধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের অন্তত ৯টি শহরে একযোগে হামলা চালায় ভারত। ভারত দাবি করে, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে তারা এই অভিযান চালিয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার সারাদিনজুড়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে আরও বহু ড্রোন হামলা চালানো হয়।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, বাহাওয়ালপুরের আহমেদপুর পূর্বাঞ্চলে ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে দুই-তিন বছর বয়সি একটি শিশু মেয়ে, সাতজন নারী ও চারজন পুরুষ। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ৯ নারী ও ২৮ পুরুষ।

এদিকে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের পাল্টা হামলায় ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ও একটি যুদ্ধ ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে। আইএসপিআরের ডিজি বলেন, শত্রুর আগ্রাসনের জবাবে প্রতিরক্ষামূলকভাবে আমরা ৩টি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ বিমান এবং একটি হেরন যুদ্ধ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছি। তিনি জানান, জম্মু, আখনুর ও শ্রীনগরের সাধারণ এলাকাগুলোতে একটি করে বিমান এবং অবন্তীপুরে দুটি বিমান গুলি করে নামানো হয়েছে।


সংকট নিরসনে পরোক্ষ আলোচনায় সিরিয়া-ইসরায়েল; মধ্যস্থতায় আরব আমিরাত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যকার দীর্ঘদিনের উত্তেজনা নিরসনে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় এ বিষয়ে দুদেশের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা।

বুধবার (৭ মে) প্যারিসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান তিনি।

আল-শারা বলেন, ‘সিরিয়া ও ইসরায়েল এখন মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় পরোক্ষভাবে আলোচনা করছে। এ আলোচনার মূল উদ্দেশ্য হলো উভয় দেশের মধ্যকার পরিস্থিতি শান্ত ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা, যাতে করে এটি আবারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না সিরিয়া আবারও সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হোক। আমাদের লক্ষ্য হলো, দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘাতের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।’

এ সময় সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইসরায়েলের অযাচিত হস্তক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, ‘সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপ পরিস্থিতিকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। তারা ১৯৭৪ সালের অস্ত্রবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করছে। আমরা দামেস্কের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জানিয়েছি যে, সিরিয়া ১৯৭৪ সালের চুক্তির শর্ত রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েল সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে, এমনকি প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের কাছেও বিমান হামলা চালিয়েছে। আল-শারার অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার অজুহাত দেখিয়ে গত এক সপ্তাহেই ইসরায়েল সিরিয়ায় ২০ বারের বেশি বোমাবর্ষণ করেছে।

এ বিষয়ে ইসরায়েলের দাবি, সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দ্রুজ মিলিশিয়াদের সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে বসবাসরত দ্রুজ সংখ্যালঘুদের রক্ষায় এসব হামলা চালাচ্ছে তারা।

চলতি বছরের মার্চ মাসে সিরিয়ার ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত আলাউই অধ্যুষিত অঞ্চলে গণহত্যার ঘটনার পর দ্রুজ এলাকায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপরই এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে ইসরায়েল।

গত ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে সিরিয়ায় শতাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। তারা বলছে, সিরিয়ার নতুন শাসকদের তারা জিহাদপন্থি মনে করে এবং তাদের হাতে উন্নত অস্ত্র পৌঁছানো ঠেকাতেই এসব হামলা চালানো হচ্ছে।

ইসরায়েলি সেনারা গোলান মালভূমির ১৯৭৪ সালের অস্ত্রবিরতির সীমারেখা অতিক্রম করে মালভূমির জাতিসংঘ নিয়ন্ত্রিত নিরপেক্ষ অঞ্চলেও প্রবেশ করেছে এবং দক্ষিণ সিরিয়ায় আরও গভীরে অভিযান চালিয়েছে।

তবে ইসরায়েলি বাহিনীসহ জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক বাহিনীকেও নিরপেক্ষ অঞ্চল ছেড়ে ব্লু-লাইন বা বিচ্ছিন্ন রেখায় ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আল-শারা।

এদিকে, সিরিয়ায় ইসরায়েলি হামলার সমালোচনা করে ফরাসি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ বলেন, ‘এসব হামলা দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে না। বোমাবর্ষণ ও আগ্রাসন বাজে একটি দৃষ্টান্ত। প্রতিবেশীর ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে কোনো দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না।’

উল্লেখ্য, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটসের হুমকির পর গত শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল দামেস্কের প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের কাছে হামলা চালায়। সে সময় তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, সিরিয়ার নতুন শাসকরা যদি দ্রুজ সম্প্রদায়ের জনগণকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ইসরায়েল এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও এ হামলাকে সিরিয়ার নতুন শাসকদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা হিসেবে উল্লেখ করেন।


সন্ধ্যায় শোনা যেতে পারে নতুন পোপের নাম: গিওভান্নি বাতিস্তা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

আজ সন্ধ্যায় নতুন পোপ নির্বাচিত হতে পারেন বলে জানিয়েছেন কলেজ অব কার্ডিনালের ডিন গিওভান্নি বাতিস্তা রে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) ইতালীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি, আজ সন্ধ্যায় যখন আমি রোমে ফিরব, ততক্ষণে সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি দিয়ে সাদা ধোঁয়া বের হওয়া শুরু হবে।’

সকালে একবার কার্ডিনালরা ভোট দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। দুপুরের আগে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে চিমনি দিয়ে।

গিওভান্নি বাতিস্তা রের বয়স এখন ৯১ বছর। পোপ হওয়ার জন্য আশি বছরের কম বয়স হতে হবে। যে কারণে তিনি কার্ডিনালের কনক্লেভে অংশ নিতে পারেননি। পোপ হওয়ার যোগ্য ১৩৩ কার্ডিনালকে নিয়ে গঠিত কলেজ অব কার্ডিনালস।

কোনো ধরনের মনোযোগ নষ্ট হওয়া ছাড়াই যাতে প্রার্থনা ও ধ্যান করতে পারেন, পাশাপাশি পোপ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সে কারণে ভ্যাটিকানের ভেতরে কার্ডিনালদের আলাদা করে রাখা হয়েছে।

নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাগবে। পোপ নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সকাল ও বিকালে নিয়মিত ভোট হবে।

ভোট হওয়ার পর একটি বিশেষ স্টোভে ব্যালট পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কালো ধোঁয়া বের হওয়ার অর্থ হচ্ছে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আসেনি, অর্থা পোপ নির্বাচিত হননি। আর সাদা ধোঁয়া বের হলে বুঝতে হবে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন।

পোপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রার্থী নেই। তবে বেশ কয়েকজন কার্ডিনাল আছেন, যারা পোপ হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।

তাদের মধ্যে আছেন, কনক্লেভের দেখভাল করা কার্ডিনাল পিয়াত্রিও প্যারোলিন, এশিয়ান ফ্রান্সিসখ্যাত কার্ডিনাল লুইস তাগলা, কঙ্গোর রক্ষণশীল কার্ডিনাল ফ্রিডোলিন এমবোঙ্গো বেসুঙ্গু ও ইতালীয় পিয়ারবাতিস্তা পিজ্জাবালা।

এদিকে নতুন পোপের নাম শোনার জন্য অধীর হয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেককেই। রোমের বাসিন্দা প্রিসিলা পার্লান্তি বলেন, ‘এই অপেক্ষা অসাধারণ।’


ভারত-পাকিস্তান হামলা: নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান চীনা রাষ্ট্রদূতের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারত-পাকিস্তানকে প্রতিবেশী আখ্যায়িত করে ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘বেইজিং কোনো ধরনের সন্ত্রাসবাদে সমর্থন করে না।’

এ সময়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যকার সামরিক উত্তেজনার কথা উল্লেখ করে এ ঘটনায় তিনি একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি দেশ দুটিকে সংযত থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন এই রাষ্ট্রদূত।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের পাঁচ দশক: নতুন উচ্চতায়’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত।

তিনি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তান উভয়ই চীনের প্রতিবেশি। শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে উভয় পক্ষকেই আমরা শান্ত থাকার ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাই।’

পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে— এমন যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে দুই দেশকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছেন চীনা রাষ্ট্রদূত। এ সময় পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালানো ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘আজকের বিশ্ব অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও বিশৃঙ্খলায় ভরা। তবে চীন সবসময় ইতিহাসের সঠিক ও মানবজাতির অগ্রগতির পক্ষে অটল থাকবে।’

চীনকে বিশ্বের সবচেয়ে স্থিতিশীল, নির্ভরযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ শক্তি হিসেবেও দাবি করেন তিনি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য অর্থনীতির মধ্যে চলমান আলোচনার কথা উল্লেখ করে ইয়াও বলেন, আপস নয়, বরং নীতিনিষ্ঠতা, ন্যায়বিচার ও ন্যায়পরায়ণতায় অটল থেকে দেশগুলো তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে।

চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস

দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সংযোগ রক্ষায় এবং রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে চীন। এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চীনের আগ্রহের কথাও জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।

এ সময় বাংলাদেশসহ অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈশ্বিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। মুক্ত বাণিজ্য ও বহুপাক্ষিকতা রক্ষায় তিনি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ন্যায় ও সুবিচার রক্ষায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এ লক্ষ্যে শান্তি, উন্নয়ন, সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুবিধার নীতি অব্যাহত রাখবে চীন। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে একটি শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ, সমৃদ্ধ, সুন্দর ও বন্ধুত্বপূর্ণ ভবিষ্যতের সমাজ গঠনেও কাজ করবে।’

‘দক্ষিণ এশিয়ায় সহযোগিতা, আঞ্চলিক সংযোগ, রোহিঙ্গা সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে চীন। এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে একতরফা সুরক্ষা ও আধিপত্যবাদী আচরণের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত চীন,’ বলেন এই রাষ্ট্রদূত।

এ ছাড়াও জাতিসংঘ ও অন্যান্য বহুপাক্ষিক ফোরামে সমন্বয় রক্ষার মাধ্যমে চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বের ইতিবাচক প্রভাব সারা অঞ্চল ও বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চায় বলেও জানান তিনি।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৈধ অধিকার রক্ষায় চীন অঙ্গীকারাবদ্ধ।’

তিনি জানান, ‘ভবিষ্যতে নিজ নিজ জাতীয় উন্নয়নের পথে পাশাপাশি হাঁটবে চীন ও বাংলাদেশ। দুই দেশের নেতাদের মধ্যে যেসব ঐকমত্য হয়েছে, তা অনুসরণ করে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী থেকে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করতে চায়।’

ইয়াও বলেন, ‘আসুন, আমরা একসঙ্গে কাজ করি এবং আমাদের কৌশলগত ও সহযোগিতামূলক অংশীদারত্বকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাই। এরই মধ্যে দিয়ে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের পরবর্তী সোনালী ৫০ বছরে পা রাখি।’


এবার ভারতের ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে একটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী। এছাড়াও দেশটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর থেকে পাঁচটি যুদ্ধবিমানও ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভোরে ভারত সীমান্ত থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার (১৬ মাইল) দূরে অবস্থিত লাহোরের ওয়ালটন বিমানবন্দরে ড্রোনটি ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।

স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জাবের অন্যান্য শহরে আরও দুটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বিমানবাহিনী গুলি করে একটি ছোট ভারতীয় ড্রোন নামিয়েছে।

তবে ড্রোনটি সশস্ত্র ছিল কি না, সেটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে এপি। ভারত থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।

পাঞ্জাবের চকওয়াল জেলার পুলিশ প্রধান গুলাম মুহিউদ্দিন জানান, ওই এলাকার কৃষিজমিতে একটি ড্রোন আছড়ে পড়ে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

তবে ড্রোনটির ভারতের কিনা এ বিষয়ে কিছু জানায়নি তিনি। গুলাম মুহিউদ্দিন বলেন, কর্তৃপক্ষ একটি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ জব্দ করেছে এবং ড্রোনটির উৎস ও উদ্দেশ্য নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলা নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।

এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।’ তবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’

আহমেদ শরিফ বলেন, ‘ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন।’

এদিকে, এবার এ হামলার জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে পাকিস্তান। এ হামলায় নিহতদের প্রতিশোধ নেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তবে কোথায় ও কীভাবে হামলা চালানো হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি তিনি।

এছাড়া অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারতীয় সেনাদের ওপর পাল্টা হামলার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীর সীমান্তের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাতভর হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রাত কাটিয়েছেন।

এদিকে চলমান উত্তেজনার মধ্যে কাশ্মীর সীমান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে ভারত। ইউরি ও পুঞ্চের মতো সীমান্ত শহরের কিছু মানুষ স্বেচ্ছায়ই নিজেদের ঘর ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।


পাকবাহিনীর সঙ্গে সারা রাত ধরে গোলাগুলি হয়েছে: ভারত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ভারতীয় সেনাবাহিনী বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, বিতর্কিত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সৈন্যরা রাতভর ছোট অস্ত্র ও কামানের গোলা বিনিময় করেছে। শ্রীনগর থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।

বুধবার ভারত তার প্রতিবেশীর উপর মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এর আগে কয়েকদিন ধরে সীমান্ত সংঘর্ষ শেষে পরিস্থিতি এই কামান হামলায় রূপ নেয়।

ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বুধবারের হামলায় পাকিস্তানে ৯টি ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ ধ্বংস করা হয়েছে। এর দুই সপ্তাহ আগে, ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার জন্য ইসলামাবাদকে দায়ী করেছিল নয়াদিল্লি। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে ।

বুধবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেন, ইসলামাবাদ ‘ভারতের হত্যাকাণ্ডের বদলা নেবে।’

বুধবারের সংঘর্ষে দুই পক্ষ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসলামাবাদ জানিয়েছে, ভারতের হামলা ও সীমান্তে গুলিতে ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে।

সীমান্তে সর্বশেষ সংঘর্ষের বিষয়ে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তৎক্ষণাত কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘রাতের বেলায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পোস্টগুলো কাপওয়ারা, বারামুল্লা, উরি এবং জম্মু ও কাশ্মীরের আখনূরের বিপরীতে এলাকা থেকে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ছোট অস্ত্র এবং কামান ব্যবহার করে বিনা উসকানিতে গুলি চালিয়েছে।’ ‘আমরাও পাল্টা জবাব দিয়েছি’।

বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং কূটনীতিকরা দুই দেশকে সংঘর্ষ থেকে পিছু হটতে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন। আমিও চাই তারা থেমে যাক।’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি (আজ) বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামণ্যম জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করবেন, এর আগে তিনি পাকিস্তান সফর করেছেন। তেহরান দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে চাইছে।

ভারত ও পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের রক্তক্ষয়ী বিভাজনের পর থেকে একাধিকবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে, যখন উপনিবেশিক কর্মকর্তারা সোজা লাইন টেনে মানচিত্রে বিভক্তির সীমারেখা এঁকেছিলেন, যা অনেক সম্প্রদায়কে বিভক্ত করে দেয়।

মুসলিম-প্রধান কাশ্মীর দীর্ঘদিন ধরে সংঘর্ষের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। উভয় দেশই কাশ্মীরকে তাদের নিজের দাবি বলে মনে করে আসছে।


পাল্টাপাল্টি হামলা: সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ভারত-পাকিস্তান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলাকে কেন্দ্র করে টানা কয়েক দিনের তীব্র উত্তেজনার পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তান-অধিকৃত আজাদ কাশ্মীরের ৯টি স্থানে একযোগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান বলছে, হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত ও ৪০ জনের বেশি আহত হয়েছে। আর ভারতের দাবি, তাদের হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছে। দিল্লির দাবি, নিহতদের সবাই সন্ত্রাসী। ভারত এ অভিযানের নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।

অন্যদিকে ভারতের হামলার জবাবে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পাল্টা হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলোয় পাকিস্তানি বাহিনীর গোলার আঘাতে নিহত বেসামরিক ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জন হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়েছে।

এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি। ভারতের চার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স আরও জানিয়েছে, জম্মু ও কাশ্মীরে বুধবার তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। তবে পাকিস্তানের দাবির বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে কিছু নিশ্চিত করা হয়নি। এনিয়ে আনুষ্ঠানিক কোন বক্তব্যও দেয়নি নয়াদিল্লি।

এদিকে পাল্টাপাল্টি হামলা প্রতিবেশী দেশকে সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ভারতের হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জরুরি নিরাপত্তা বৈঠকে বসেছেন। হামলার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, প্রতিশোধ নেয়ার সবঅধিকার পাকিস্তানের রয়েছে। এক্সে দেয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, পাকিস্তানের পাঁচটি জায়গায় কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে শত্রুরা।

তিনি ভারতের এই হামলাকে ‘অ্যাক্ট অফ ওয়ার’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। শাহবাজ শরিফ তার পোস্টে লিখেছেন, ভারতের এই যুদ্ধের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার পূর্ণ অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে এবং তাদের যোগ্য জবাবও দেয়া হচ্ছে। পাকিস্তানের পুরো জনগণ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে এবং দেশের মনোবল একেবারে মজবুত রয়েছে। শাহবাজ বলেন, পাকিস্তান কখনোই ভারতকে নিজেদের ‘উদ্দেশ্যে সফল’ হতে দেবে না।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানিয়েছেন, সাতটি লক্ষ্যবস্তুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিবিসিকে তিনি বলেছেন, হতাহতের সবশেষ সংখ্যা আমার কাছে নেই, তবে নিশ্চিত হওয়া সাতটি লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে দু’টি কাশ্মীরে এবং পাঁচটি পাকিস্তানে। সবকটি ক্ষেত্রে নিশানা ছিলো বেসামরিক নাগরিকেরা। লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে দু’টি মসজিদও ছিল। এক শিশু শহীদ হয়েছে এবং এক নারী শহীদ হয়েছেন।

হামলার পর পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হাসপাতালসহ জরুরি সব ধরনেরসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মীদের নিজ নিজ দায়িত্বে ফেরত যেতে বলা হয়েছে। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ বুধবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

পাকিস্তানে হামলা নিয়ে ভারত যা বলছে:

গতকাল বুধবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানে হামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। তিনি বলেন, বুধবার রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে দেড়টা পর্যন্ত পাকিস্তানি ভূখণ্ডে হামলা চালানো হয়েছে। ভারতের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী যৌথভাবে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের এই অভিযান পরিচালনা করেছে। ২৫ মিনিটে ৯টি লক্ষ্যবস্তুতে ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ভারতীয় বাহিনী।

সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার ভায়োমিকা সিংহ উপস্থিত ছিলেন। মিশ্রি বলেছেন, জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার জবাবে পাকিস্তানে হামলা করা হয়েছে। পেহেলগামের ওই হামলায় ২৫ ভারতীয় ও এক নেপালি নাগরিকের প্রাণহানি ঘটে।

হামলা নিয়ে পাকিস্তান যা বলেছে

এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।’ তবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’

আহমেদ শরিফ বলেন, ‘ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন।’

যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটা একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’

হামলা পাল্টা হামলার মধ্যেও দুদেশের কোনো যুদ্ধবিমান একে অপরের সীমান্ত লঙ্ঘন করেনি বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর। আইএসপিআরের মহাপরিচালক জেনারেল আহমেদ চৌধুরী দাবি করেছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রেক্ষিতে সীমান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও ভারতের কোনো যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি এবং পাকিস্তানের যুদ্ধবিমানও ভারতের আকাশসীমায় যায়নি। তিনি বলেন, পাকিস্তান তার সীমান্ত থেকেই ভারতে হামলার প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।

এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কোনো সময়ই ভারতের কোনো যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের আকাশসীমায় প্রবেশ করেনি এবং একইভাবে পাকিস্তানের কোনো যুদ্ধবিমানও ভারতের আকাশসীমায় যায়নি। জেনারেল আহমেদ আরও দাবি করেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং একাধিক ভারতীয় চৌকি ধ্বংস করেছে। তিনি ভারতীয় একটি ইউনিট ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের ভিডিও ফুটেজ প্রদর্শন করেন, যেগুলো লক্ষ্য করে পাকিস্তানি বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করা হয়।

কাশ্মীর সীমান্তে উত্তেজনা চরমে, গোলাগুলি

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে হামলা-পাল্টা হামলার উত্তেজনা ছড়িয়েছে সীমান্তেও। পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এপি ও রয়টার্স জানিয়েছে, লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি ও মর্টার হামলা শুরু হয়েছে। এক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ভারতশাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি সেনাদের গোলাবর্ষণে তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

ভারতের সাদা পতাকা তোলার দাবি পাকিস্তানের

সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনী ‘সাদা পতাকা’ উড়িয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। দেশটি বলছে, সীমান্তে সাদা পতাকা উত্তোলন করে ভারত পরাজয় স্বীকার করেছে। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এআরওয়াই নিউজ বলছে, ভারত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সাদা পতাকা উত্তোলন করে কার্যকরভাবে পরাজয় স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার।


ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কে কী বলল

ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর শহরের উপকণ্ঠের একটি মসজিদ। বুধবার, ৭ মে ২০২৫। ছবি: এপি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
unb

পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামল‌ার প্রতি‌ক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবেশি দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ। তিনি বলেছেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটি একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’

অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’

এমন বাস্তবতায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে ভারতের হামলার মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা এই পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষকেই সংযম প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন।

‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধান’ খোঁজার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের

পরিস্থিতির যাতে আরও অবনতি না হয়, সে লক্ষ্যে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধানের’ পথ খুঁজে বের করতে ভারত ও পাকিস্তানকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৬ মে) ওয়াশিংটন ডিসিতে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনা একটি চলমান পরিস্থিতি। আমরা এখনও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’

এ বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দেশদুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক পর্যায়ে যোগাযোগ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ব্রুস বলেন, ‘এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কেবল দর্শকের ভূমিকা পালন করছে না, আমরা সক্রিয়ভাবে দুই পক্ষের সঙ্গে যুক্ত আছি। অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই পরিস্থিতির মধ্যেও চলমান বিভিন্ন ঘটনার বিষয়ে অবগত রয়েছি।’

এর আগে, হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের এই হামলাকে লজ্জাজনক উল্লেখ করে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটি সত্যিই দুঃখজনক। আমি শুধু চাই, দ্রুত এই সংকটের অবসান ঘটুক।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক এক্স পোস্টে লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যের সঙ্গে তিনি একমত। তিনিও দ্রুত এই সংকটের অবসান কামনা করেন।

পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বের করতে ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার কথাও বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব সামলানো রুবিও।

সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জাতিসংঘের

ভারত-পাকিস্তানের এই সামরিক উত্তেজনা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তার মুখপাত্র বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের সামরিক অভিযান নিয়ে (জাতিসংঘ) মহাসচিব অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’

তিনি উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। গুতেরেসের ভাষ্যে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কোনো সামরিক সংঘাত হলে তার ভার বিশ্ব বহন করতে পারবে না।

কূটনৈতিক উপায়ে উত্তেজনা নিরসন সম্ভব: রাশিয়া

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারত ও পাকিস্তানে সামরিক সংঘাত বৃদ্ধিতে রাশিয়া উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতির যাতে আরও অবনতি না হয়, সে জন্য দুই পক্ষকেই সংযম দেখানোর অনুরোধ করছি।

বিবৃতিতে রাশিয়া আশা প্রকাশ করেছে যে, শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক উপায়ে উত্তেজনা নিরসন করা সম্ভব।

উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব চীনের

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ভারত ও পাকিস্তান এমন প্রতিবেশী, যাদের চাইলেও আলাদা করা যায় না। তারা চীনেরও প্রতিবেশী।’

‘তাই শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অগ্রাধিকার দিয়ে দুপক্ষকেই আমরা শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি (চলমান) পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে, এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে উভয় দেশকে আহ্বান জানাচ্ছি।’

এছাড়া দুই দেশের মধ্যকার এই উত্তেজনা কমাতে প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাবও দিয়েছে চীন।

এ বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেছেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের বর্তমান উত্তেজনা কমাতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে চায় চীন। এ ক্ষেত্রে আমরা আান্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।’

শান্তি স্থাপনে দুই দেশকেই সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য

চলমান উত্তেজনা প্রশমনে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশকেই যুক্তরাজ্য সহযোগিতা করতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস।

এ বিষয়ে বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের বার্তা হলো, আমরা দুই দেশেরই বন্ধু ও অংশীদার। ফলে উভয় দেশকেই সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।’

‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, সংলাপ, উত্তেজনা প্রশমনে ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশেরই যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে এবং এসব বিষয়ে সহযোগিতা লাগলে তা করার ইচ্ছা আমাদের আছে।’

পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা জাপানের

পাকিস্তানে ভারতের অপারেশন সিঁদুর পরিচালনার ঘটনায় পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাপান।

পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানায় জাপান। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না।’

‘ওই ঘটনার পর সৃষ্ট বর্তমান পরিস্থিতি পাল্টাপাল্টি প্রতিশোধমূলক হামলার দিকে গড়াতে পারে এবং তা পূর্ণ মাত্রার সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে আমরা ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন সংযম প্রদর্শন করে এবং সংলাপের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করে।’

সংযম দেখানোর আহ্বান ফ্রান্সেরও

ভারত ও পাকিস্তানকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্সও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ভারতের অভিপ্রায়ের বিষয়টি আমরা বুঝি। তবে উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে এবং নিজ নিজ দেশের বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই সংযম অনুশীলন করার আহ্বান জানাই।’

দেশটির টিএফ১ টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই আহ্বান জানান।

এ সময় ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের কারোরই যে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের দিকে যাওয়ার ইচ্ছা আছে, তা আমার মনে হয় না।’

শান্তি ও সংযমের আহ্বান বাংলাদেশের

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বুধবার (৭ এপ্রিল) এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুই দেশকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উদ্ভূত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার।’

‘আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ আশাবাদী যে, কূটনৈতিকভাবে এই উত্তেজনা নিরসন হবে এবং শান্তি ফিরে আসবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে অপারেশন সিঁদুর নামে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্র এবং পাঁচজন গোলার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ।

সীমান্তে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর পাল্টা গোলায় ৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারতীয় পুলিশ ও চিকিৎসকরা।


banner close