যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি রাজ্যের ন্যাশভিলের একটি স্কুলে বন্দুকধারীর গুলিতে তিন শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছে। এ সময় পুলিশের গুলিতে বন্দুকধারী তরুণীও মারা গেছে বলে জানা গেছে।
ন্যাশভিলে মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রধান জন ডেরেক এক ব্রিফিংয়ে জানান, স্থানীয় সময় সোমবার সকালে একটি খ্রিষ্টান কনভেন্ট স্কুলে ২৮ বছরের এক তরুণী গুলিবর্ষণ শুরু করে। তার কাছে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। বন্দুকধারী তরুণী ওই স্কুলের একজন সাবেক ছাত্রী।
মার্কিন ‘গান ভায়োলেন্স আর্কাইভসের’ পরিসংখ্যান অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রে গত ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১২৮টি গুলির ঘটনা ঘটে। গত বছর এ সময়ের মধ্যে যা ছিল ১১৩টি। এসব ঘটনায় গত বছর ৬৪৭ এবং ২০২১ সালে ৬৯০টি হত্যাকাণ্ড ঘটে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গুলির ঘটনাটিকে ‘সিক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
বৃষ্টি কিংবা তুষার নয়, যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের একটি বাড়ির ছাদে আছড়ে পড়েছে একটি উল্কাপিণ্ড। তবে ধাতব ওই উল্কাপিণ্ডের কারণে কারও কোনো ক্ষতি না হওয়ায় সেটিকে ‘মহাকাশ থেকে পাওয়া একটি উপহার’ হিসেবে বিবেচনা করছেন ওই বাড়ির সদস্যরা।
বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের হোপওয়েল শহরের ওল্ড ওয়াশিংটন ক্রসিং পেনিংটন রোড এলাকার একটি বাড়ির ছাদে গত সোমবার একটি ধাতব বস্তু আছড়ে পড়ে। প্রায় এক কেজি ওজনের ধাতব ওই বস্তুর আঘাতে বাড়ির ছাদে গর্ত সৃষ্টি করে শোবার ঘরের মেঝেতে আঘাত করে। কাঠের মেঝেতে দেখা দেয় ফাটল।
ঘটনার পর বাড়ির বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট সহায়তা কর্তৃপক্ষকে ফোন করেন। তবে আকাশ থেকে কোনো বস্তু বাড়ির ছাদে পড়েছে, এ বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে।
সুজি কপ নামে ওই বাড়ির এক বাসিন্দা জানান, প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, কেউ হয়তো পাথর ছুড়েছে। পরে বুঝতে পারেন, বিষয়টি তা নয়। কারণ সাধারণ পাথর ভেবে তিনি বস্তুটিকে স্পর্শ করেছিলেন। স্পর্শ করে বুঝতে পারেন, বস্তুটি গরম হয়ে আছে।
ধাতব ওই বস্তুটি একটি বিরল পাথরের কন্ড্রাইট উল্কা বলে দ্য কলেজ অব নিউজার্সির বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস শহরের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা অ্যালেনে একটি ব্যস্ত শপিং মলে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হামলাকারীসহ ৯ জন নিহত এবং অন্তত ৭ জন আহত হয়েছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের শহরটিতে স্থানীয় সময় শনিবারের ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে কয়েকটি শিশুও রয়েছে।
পুলিশের ধারণা, হামলাকারী একজনই ছিলেন এবং তিনি পুলিশের গুলিতেই নিহত হয়েছেন।
এদিকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি সাতজনের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অ্যালেনের পুলিশ প্রধান ব্রায়ান হারভে জানান, ঘটনাস্থলের কাছাকাছি এলাকায় থাকা একজন পুলিশ কর্মকর্তা গোলাগুলির শব্দ পেয়ে সেখানে যান এবং হামলাকারীকে নিয়ন্ত্রণে আনেন।
হামলার পরপরই শপিং মলটি থেকে কয়েক শ লোককে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়। তবে এ হামলার কারণ সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ এক ব্যক্তি এসে পথচারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি করতে থাকেন। হামলাকারী ওই ব্যক্তি কালো পোশাক পরিহিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের কাছে মেক্সিকোর একটি অভিবাসন আটককেন্দ্রে আগুনে অন্তত ৩৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মেক্সিকো সরকার মঙ্গলবার এই খবর জানায়।
আল-জাজিরা জানায়, মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত শহর সিউদাদ হুয়ারেজে গত সোমবার দিবাগত রাতে ন্যাশনাল মাইগ্রেশন ইনস্টিটিউটে (আইএনএম) আগুন লাগে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ছবিতে ঘটনাস্থলে একাধিক অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ফাইটার্সদের ভিড় দেখা যায়। আগুনে ৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া ২৯ জন দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে আছেন। দুর্ঘটনার সময় আটককেন্দ্রটিতে মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার ৬৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অভিবাসন প্রত্যাশী ছিলেন। আটককেন্দ্রটিতে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যায়নি।
মেক্সিকোর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আইএনএমের কার্যালয়ে আসেন এক ভেনেজুয়েলার নারী। তিনি জানান, তার ২৭ বছর বয়সী স্বামী এই আটককেন্দ্রে আগুনে দগ্ধ হয়েছেন। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তবে তার বতর্মান অবস্থা সম্পর্কে কিছুই বলছে না কর্তৃপক্ষ।
মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়ি জমাতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে সিউদাদ হুয়ারেজ শহরটি বড় ক্রসিং পয়েন্ট। এই শহরের অভিবাসন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় সব সময়ই লোকের ভিড় থাকে।
কানাডার অন্টারিও প্রদেশে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। গত সোমবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টার দিকে এটোবিককের মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত আরেকজন চিকিৎসাধীন। খবর গ্লোবাল নিউজের।
নিহত তিনজন হলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান, অ্যাঞ্জেলা বাড়ৈ ও আরিয়ান দীপ্ত। চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থী হলেন সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে কুমার নিবিড়।
কানাডাপ্রবাসী সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে হতাহত চারজনের নাম জানান। তিনি লেখেন, ‘কুমার দের জন্য প্রার্থনা। শাহরিয়ার খান, অ্যাঞ্জেলা বাড়ৈ, আরিয়ান দীপ্তর জন্য গভীর শোক।’
অন্টারিও পুলিশ বলছে, অতিরিক্ত গতির কারণে চারজনকে বহনকারী গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারায় বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।
কেরি স্মিত নামের অন্টারিও পুলিশের এক সার্জেন্ট বলেন, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ঢালে থাকা কংক্রিটের দেয়ালের ওপর দিয়ে খাদে পড়ে আগুন ধরে যায়। পরে দমকল বাহিনীর কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভায় এবং চারজনকে উদ্ধার করে।
ওই সার্জেন্ট জানান, নিহতদের মধ্যে এক তরুণ ও এক তরুণীর বয়স ২০ বছর এবং এক কিশোরের বয়স ১৭ বছর। এছাড়া চালকের আসনে থাকা অপর তরুণের বয়স ২১ বছর।
স্মিত জানান, হতাহতরা সবাই শিক্ষা ভিসায় কানাডায় যান, তারা টরন্টোর বাসিন্দা ছিলেন। এদের মধ্যে দুইজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। অন্য দুইজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর একজনের মৃত্যু হয়।
কুমার বিশ্বজিতের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, দুর্ঘটনার খবর পেয়েই সপরিবারে কানাডায় ছুটে গেছেন এই সংগীতশিল্পী।
উত্তর আমেরিকার আকাশে চতুর্থবারের মতো ‘সন্দেহজনক বস্তু’ চিহ্নিত করা হয়েছে। আগেরগুলোর মতো এটিও যুদ্ধবিমানের মাধ্যমে ভূপাতিত করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আদেশে রোববার বিকেলে বস্তুটি ভূপাতিত করা হয়, যা কানাডিয়ান সীমান্তের কাছে লেক হুরোনে গিয়ে পড়ে। খবর বিবিসির।
মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন এক বিবৃতিতে জানায়, সন্দেহজনক বস্তুটি বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি করতে পারত। কারণ এটি ২০ হাজার ফুট উঁচুতে উড়ছিল।
পেন্টগন জানায়, রোববার ধ্বংস করা বস্তুটি প্রথমে দেখা যায় মনটানা রাজ্যে। শনিবার রাজ্যটির সামরিক বাহিনীর ঘাঁটিগুলোর ওপর দিয়ে ঘোরাঘুরি করছিল বস্তুটি।
তবে এটিকে ‘সামরিক হুমকি’ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, মানবহীন এবং অষ্টভুজাকার আকৃতির বস্তুটি রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৪২ মিনিটে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ভূপাতিত করা হয়।
আমেরিকার আকাশ থেকে চলতি মাসের শুরুতে (৪ ফেব্রুয়ারি) প্রথম সন্দেহজনক বস্তু ভূপাতিত করা হয়। সেটি ছিল একটি বেলুন। চীনের মালিকানাধীন বেলুনটি আমেরিকার আকাশ থেকে নজরদারি করছিল বলে অভিযোগ ওঠে। তবে চীন বেলুনটি নিজেদের বলে স্বীকার করলেও নজরদারির অভিযোগ উড়িয়ে দেয়। এমনকি বেলুনটি ধ্বংস করায় প্রতিক্রিয়াও জানায় তারা।
এরপর গত শুক্র ও শনিবার ছোট গাড়ি সদৃশ এবং সিলিন্ডার আকৃতির দুটি ‘সন্দেহজনক বস্তু’ ভূপাতিত করে আমেরিকা। বস্তু দুটির মালিকানা কাদের সে সম্পর্কে জানা যায়নি। পরদিনই (রোববার) ওই রকম বস্তু ধ্বংস করল আমেরিকা। একের পর এক এমন ঘটনায় বিভিন্ন রকম প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
রোববার মার্কিন বিমান বাহিনীর জেনারেল গ্লেন ভ্যানহার্ক বলেন, কীভাবে এবং কোথা থেকে গত তিন দিনের ওই বস্তুগুলো আমেরিকার আকাশে এল তা এখনো স্পষ্ট নয়।
এগুলো বহির্জাগতিক কোনো ঘটনা কি না, এলিয়েনের বিষয় আছে কিনা— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওই জেনারেল বলেন, ‘আমরা কোনো সন্দেহই উড়িয়ে দিচ্ছি না। সব বিষয় মাথায় রেখেই তদন্তের নির্দেশ দেয়া হবে।’
উত্তর আমেরিকার আকাশে আবারও ‘সন্দেহজনক বস্তু’ চিহ্নিত হয়েছে। শনিবার মার্কিন যুদ্ধবিমান এফ-২২ থেকে গুলি করে বস্তুটি ভূপাতিত করা হয়েছে। বিষয়টি জানিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। খবর বিবিসির।
ট্রুডো বলেন, বস্তুটি কানাডার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল। এটি উত্তর-পশ্চিম কানাডার ইউকনে ভূপাতিত করা হয়েছে। এটিকে ধ্বংস করতে কানাডা ও আমেরিকা দুই দেশের যুদ্ধবিমানই তাড়া করেছিল।
ট্রুডো টুইটারে লিখেছেন, সন্দেহজনক বস্তুটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করবে কানাডীয় বাহিনী। এরপর এটি নিয়ে তদন্ত করা হবে।
কয়েক দিনের মধ্যে এ নিয়ে তিনটি সন্দেহজনক বস্তু ভূপাতিত করল আমেরিকা। এর আগে একটি চীনা বেলুন ধ্বংস করে যুক্তরাষ্ট্রের বিমানবাহিনী। এরপর গত শুক্রবার আলাস্কায় ছোট গাড়ির সমান একটি ‘সন্দেহজনক বস্তু’ ধ্বংস করে মার্কিন বাহিনী। পরদিনই এ ধরনের বস্তু ভূপাতিত করা হলো।
কানাডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী আনিতা আনন্দ সাংবাদিকদের বলেছেন, শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ৪১-এ মধ্য ইউকনের ৪০ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় বস্তুটি ভূপাতিত করা হয়।
আনিতা বলেন, ‘শনিবার ধ্বংস করা বস্তুটি আগেরগুলোর তুলনায় ছোট। এটি সিলিন্ডার আকৃতির। এর ধ্বংসাবশেষ উদ্ধারে কাজ চলছে। ধ্বংসাবশেষ থেকে আরও কোনো তথ্য মিলতে পারে।’
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ‘বস্তুটিকে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মিলে আলাপ-আলোচনা করে তাদের বাহিনীকে বস্তুটি ভূপাতিত করার জন্য অনুমোদন দেন।’
আমেরিকার আকাশে কয়েক দিন ধরে ঘুরছে একটি রহস্যময় বেলুন। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবি, ‘এটি চীনের নজরদারি বেলুন।’ গত বুধবার পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মন্টানার উপরে বেলুনটি উড়তে দেখা গেছে। কিন্তু চাইলেও বেলুনটি নিয়ে এখনই কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না আমেরিকা। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রহস্যময় বেলুনটি সম্পর্কে চীনের বিরুদ্ধে আমেরিকা নজরদারির অভিযোগ তুললেও চীনের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পুরো বিষয়টি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে জানানো হয়েছে।
বিবিসি জানায়, প্রথমে বেলুনটি গুলি করে ভূপাতিত করার কথা ভাবা হয়েছিল। পরে সে সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। তবে বেলুনটি বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছে, সে বিষয়ে কিছুই জানাননি কর্মকর্তারা।
বেলুনটি শনাক্ত হওয়ার পর প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন এবং মার্কিন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল মার্ক মিলিসহ শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা হুমকি পর্যালোচনা করতে বুধবার বৈঠক করেন। এতে সিদ্ধান্ত হয়, বেলুনটি গুলি করে ভূপাতিত করা হবে না। ভূপাতিত করা হলে মাটিতে থাকা সাধারণ মানুষের ওপর এটির ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়তে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, হোয়াইট হাউস থেকে বেলুনটি ভূপাতিত করার নির্দেশনা আসতে পারে ভেবে এফ-২২ যুদ্ধবিমানও প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল।
ওই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি ওয়াশিংটন ডিসি এবং বেইজিংয়ে তাদের দূতাবাসে চীনা কর্মকর্তাদের জানিয়েছে।
মন্টানা আমেরিকার কম ঘনবসতিপূর্ণ রাজ্য। দেশটির যে তিনটি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র সাইলো ফিল্ড রয়েছে, সেগুলোর একটি ওই রাজ্যের মালমস্ট্রম বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে। কর্মকর্তাদের ধারণা, রহস্যময় বেলুনটি আমেরিকার গুরত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোর ওপর দিয়ে উড়ে উড়ে তথ্য সংগ্রহ করছিল।
তবে এখন এটি মার্কিন গোয়েন্দাদের নজরদারিতে থাকায় বড় কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই বলেও জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। এ ছাড়া যে উচ্চতায় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ চলাচল করে সেই উচ্চতা থেকে উপরে অবস্থান করছে বেলুনটি। ফলে উড়োজাহাজ চলাচলেও কোনো ঝুঁকি নেই।
সলোমন দ্বীপপুঞ্জে আবারও দূতাবাস খুলেছে আমেরিকা। গত বুধবার বিষয়টি জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। চীনকে মোকাবিলা করতে ৩০ বছর পর আবার এই দূতাবাস খোলা হয়েছে বলে দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সলোমনে দূতাবাস চালুর পর এক ঘোষণায় ব্লিংকেন বলেন, ‘বিশ্বের যেকোনো অংশের চেয়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জসহ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল ২১ শতকে বিশ্বের গতিপথকে বদলে দিতে বেশি ভূমিকা রাখবে।’
এই মার্কিন কূটনীতিক গত বছর ওই অঞ্চলে সফরের সময় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রে একটি কূটনৈতিক মিশন খোলার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন। স্টেট ডিপার্টমেন্ট সলোমনদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে আরও বিস্তৃত এবং গভীর করার ইচ্ছা পোষণ করেছিল।
সলোমনে এর আগে আমেরিকার দূতাবাস ছিল ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত।
বুধবার এক বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, আমেরিকার পক্ষ থেকে সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সরকারকে জানানো হয়েছে, গত ২৭ জানুয়ারি থেকে রাজধানী হোনিয়ারাতে নতুন দূতাবাসের কার্যক্রম দাপ্তরিকভাবেই শুরু হয়ে গেছে।
দ্য গার্ডিয়ান বলছে, গত বছর সলোমন দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চুক্তি করার পর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বেইজিংয়ের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে ওয়াশিংটন এবং তার মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগের মধ্যে মার্কিন পদক্ষেপটি এল।
বয়স লুকিয়ে স্কুলে ভর্তি হলেন এক নারী। সহপাঠীদের সঙ্গে মিলেমিশে ক্লাস করলেন, তাদের সঙ্গে আড্ডা দিলেন, রীতিমতো খোশ গল্পে মেতে উঠলেন। কিন্তু প্রথমে কেউই টের পাননি।
চার দিন পর জানা গেল ওই নারীর বয়স ২৯ বছর। এমনকি ভর্তির সময় দেয়া কাগজপত্রও সব জাল। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনাটি আমেরিকার নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের একটি হাই স্কুলের। গ্রেপ্তার ওই নারীর নাম হাইজেয়ং শিন। তার বিরুদ্ধে নিউ ব্রান্সউইক হাই স্কুলে ভর্তির জন্য একটি জাল নথি ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বিবিসি জানায়, গত মঙ্গলবার স্থানীয় শিক্ষা বোর্ডের সভায় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। সভায় নিউ ব্রান্সউইক পাবলিক স্কুলের জেলা সুপারিনটেনডেন্ট অব্রে জনসন এ তথ্য জানান।
নিউ ব্রান্সউইক পুলিশ বলছে, স্কুলে ভর্তিতে ভুয়া কাগজপত্র দেয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিবিসি জানায়, বয়স লুকিয়ে হাই স্কুলে প্রাপ্তবয়স্ক ভর্তি হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। ব্রায়ান ম্যাককিনন নামে এক ব্যক্তি ১৯৯৩ সালে গ্লাসগোর নিকটস্থ একটি হাই স্কুলে ভর্তি হন। তখন তার মূল বয়স ৩০ বছর হলেও নিজেকে ১৭ বছর বয়সী কানাডিয়ান বলে দাবি করেন। পুরো এক বছর তিনি ওই স্কুলে পড়েন। পরে একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তার আসল পরিচয় ফাঁস হয়ে যায়। ম্যাককিননের ঘটনাটি বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়। এমনকি ২০২২ সালে এ নিয়ে ডকুমেন্টারিও বানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টিতে হামলাকারীকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। হু চান ট্রান নামে ৭২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির শেরিফ রবার্ট লুনা জানান, হামলাকারীকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একটি সাদা গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় তার কাছ থেকে অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া গাড়িটিতে কিছু প্লেট পাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা সেগুলো চুরি করা প্লেট ছিল।
স্থানীয় সময় গত শনিবার রাত প্রায় সাড়ে ১০টার দিকে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ১১ কিলোমিটার পূর্বে মন্টেরে পার্ক শহরের স্টার বলরুম ড্যান্স স্টুডিওতে ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ১০ জন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহতের খবর পাওয়া যায়।
আরও এক স্টুডিওতে হামলার চেষ্টা
বন্দুকধারীর মরদেহ উদ্ধারের পর বিস্তারিত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রবার্ট লুনা জানান, হু চান ট্রান নামে ওই ব্যক্তি আরও বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন।
রবার্ট লুনা বলেন, স্টার বলরুম ড্যান্স স্টুডিওতে হামলার প্রায় ৩০ মিনিট পর ওই ব্যক্তি আরও একটি স্টুডিওতে হামলার চেষ্টা চালান। নিকটবর্তী শহর আলহাম্বরার একটি নাচের স্টুডিওতে যান। তবে সেখানে ঢোকার পর দুই ব্যক্তি তাকে বাধা দেয়ায় পরাস্ত হয়ে সেখান থেকে ফিরে যান ট্রান।
ভয়াবহ এই হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১২ ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় রোববার দুপুর ১টার দিকে মন্টেরে পার্ক শহরের ৪৮ কিলোমিটার দূরে একটি সন্দেহভাজন সাদা ভ্যানে তল্লাশি চালানোর প্রস্তুতি নেয় পুলিশের বিশেষ ইউনিট (সোয়াট)। এ সময় ভেতর থেকে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। পরে গাড়িটির স্টিয়ারিং হুইলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই ব্যক্তির মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
শেরিফ জানান এ ঘটনায় এশীয় বংশোদ্ভূত ওই ব্যক্তি একাই জড়িত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পর্যটন শহর মন্টেরে পার্কে জাঁকালো আয়োজনে চান্দ্র নববর্ষ বা লুনার ইয়ার উদ্যাপনে আগে থেকেই জড়ো হন হাজারও মানুষ। সেই জনাসমাগমের মধ্যেই হামলাটি ঘটল। তবে এই হামলার কোনো কারণ এখনো জানাতে পারেনি পুলিশ।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত অন্তত সাতজন এখনোও হাসপাতালে রয়েছেন। হামলার ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, গুলির পর ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য উপস্থিত হয়েছেন।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসকে জানান, তিনজন লোক দৌড়ে একটি রেস্তোরাঁয় ঢোকেন। এ সময় তারা দ্রুত দরজা বন্ধ করার তাগিদ দিয়ে বলতে থাকেন, একজন ব্যক্তি মেশিন গান নিয়ে বাইরে ছুটছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রায়ই এ ধরনের বন্দুকধারীর হামলার ঘটনা ঘটে। কোনো কোনো ঘটনায় সন্ত্রাসের সম্পৃক্ততা থাকলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আক্রোশের জের উদ্ঘাটন করেন তদন্তকারীরা।
স্ত্রী ডিভোর্স দেয়ায় ৭ জনকে হত্যা করে নিজের ওপর গুলি চালিয়েছেন এক ব্যক্তি। যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের এনোক শহরে এমন ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার বিকেলে একটি বাড়ি থেকে ওই আটজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। খবর বিবিসির।
শহরটির কর্মকর্তারা গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, মাইকেল হাইট নামে ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি তার স্ত্রী তৌশা (৪০), শাশুড়ি গেইল আর্ল (৭৮) এবং পাঁচ সন্তানকে গুলি করে হত্যা করেন। পরে মাইকেল নিজের ওপর গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন। নিহত সন্তানদের মধ্যে তিন কন্যার বয়স যথাক্রমে ১৭, ১২ ও ৭ বছর। আর দুই ছেলের বয়স ৭ ও ৪ বছর। তাদের নাম প্রকাশ করেননি কর্মকর্তারা।
গণমাধ্যমে এ ঘটনার বর্ণনা দেয়ার সময় শহরটির মেয়র জেফরি চেস্টনাটসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে দেখা যায়। কর্মকর্তারা জানান, মাইকেলের স্ত্রী গত ২১ ডিসেম্বর ডিভোর্সের আবেদন করেন। এরপরই এমন ঘটনা ঘটেছে।
এনোক সিটির ম্যানেজার রব ডটসন বলেন, বুধবার স্থানীয় সময় ৪টার দিকে পুলিশ তাদের মরদেহ খুঁজে পায়। প্রত্যেকের শরীরেই গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে।
ইউটাহ রাজ্যের গভর্নর স্পেন্সার কক্স এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে টুইট করেছেন। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনও শোক প্রকাশ করেছেন।
শীতকালীন ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর আমেরিকা। এ ঝড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়ে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে এ ঝড় স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। খবর বিবিসির।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নিউইয়র্কের বুফালো শহরে।
এদিকে কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে বরফঢাকা রাস্তায় বাস উল্টে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নজিরবিহীন এই শীতকালীন ঝড়ের পরিধি কানাডা থেকে দক্ষিণের রিও গ্র্যান্ডে পর্যন্ত বিস্তৃত।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, এ ঝড় স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। স্থানীয়দের ঘরে থাকতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
ঝড়ের কারণে হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ফলে অনেকেই বড়দিনে তাদের পরিবারের কাছে যেতে পারেননি।
রোববার নিউ ইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোচুল সাংবাদিকদের বলেছেন, ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ ঝড়ের কবলে পড়েছে বুফালো।
শহরটির স্থানীয় বাসিন্দা তিনি। বলেন, মনে হচ্ছে বুফালোয় যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাঘাট এবং রাস্তার পাশে থেমে থাকা গাড়িগুলোর অবস্থাও ভয়াবহ। বাসিন্দারাও দুর্ভোগে পড়েছেন। তাদের জীবন বিপন্ন হওয়ার মতো অবস্থা।
এরি কাউন্টিতে ১২ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ গাড়িতে এবং রাস্তার পাশে তুষারের স্তূপে মৃত অবস্থায় পড়েছিলেন।
এদিকে পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রের মন্টানা রাজ্যের তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ফারেনহাইটে নেমে গেছে।
কানাডার অন্টারিও এবং কুইবেক প্রদেশ ঝড়ের ধাক্কা বহন করছে। ঝড়ের কারণে রোববার কুইবেকে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার মানুষ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। বিদ্যুৎ সংযোগ পুরোপুরি ঠিক হতে বেশ কয়েকদিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।