বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
২৩ আশ্বিন ১৪৩২

বাইডেনের সঙ্গে দেখা করবেন ঋষি সুনাক

ফাইল ছবি
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৯ এপ্রিল, ২০২৩ ২০:৪৬

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে দেখা করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। আগামী সপ্তাহে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড সফরে যাবেন বাইডেন। সেখানেই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সুনাক।

গুড ফ্রাইডে শান্তি চুক্তির ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বাইডেন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে যাবেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ১৯৯৮ সালে স্বাক্ষরিত গুড ফ্রাইডে শান্তি চুক্তিতে মধ্যস্থতায় সাহায্য করার পর থেকে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের রাজনীতিতে একটি প্রভাবশালী দেশ হিসেবে রয়ে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার (ব্রেক্সিট) কারণে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসনের মাধ্যমে শান্তি রক্ষা করার চেষ্টা করছে দেশটি।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, গুড ফ্রাইডে শান্তিচুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার এবং বুধবার আয়ারল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে যাওয়ার আগে প্রেসিডেন্ট বাইডেন নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্ট যাবেন। এরপর তিনি আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে গিয়ে দেশটির পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন। পরে আগামী শুক্রবার ব্যালিনাতে ১৯ শতকের প্রাচীন একটি ক্যাথিড্রালের সামনে বক্তব্য দেবেন বাইডেন।

রয়টার্স জানায়, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে আইরিশ সীমান্তের উভয় পাশে এই সফরের জন্য আগামী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এয়ার ফোর্স ওয়ান অবতরণ করলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে স্বাগত জানাবেন ঋষি সুনাক। এ ছাড়া গুড ফ্রাইডে শান্তিচুক্তির বার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার একটি গালা ডিনারের আয়োজনও করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।


পাকিস্তানের সীমান্তঘেঁষে ভারত-রাশিয়ার সামরিক মহড়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নিজেদের দক্ষতা বাড়াতে ভারতের উত্তর-পশ্চিম রাজ্য রাজস্থানে ভারত ও রাশিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া ‘ইন্ডরা ২০২৫’ শুরু হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই খবর নিশ্চিত করেছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাজস্থানের মহাজন রেঞ্জে এই সামরিক মহড়া চলছে এবং তা আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, মহড়ার প্রধান লক্ষ্য হলো- সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উভয় দেশের সামরিক ইউনিটগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনকে আরও তীক্ষ্ণ করা। এর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের কৌশল নিখুঁত করাও অন্তর্ভুক্ত।

মন্ত্রণালয় বলেছে, আধুনিক যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইউনিটগুলোর কার্যক্ষমতাগত সামঞ্জস্যতা বৃদ্ধি এবং সর্বোত্তম অনুশীলন আদান-প্রদানের ওপর বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে।

এই যৌথ সামরিক মহড়া দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও মজবুত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।


চীনকে ঠেকাতে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করছে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চীনকে ঠেকাতে নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘ অপেক্ষার পর চলতি সপ্তাহের মধ্যেই মার্কিন নৌবাহিনীর নতুন স্টেলথ যুদ্ধবিমান নির্মাণ ও নকশার দায়িত্ব কোন প্রতিরক্ষা কোম্পানিকে দেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে পেন্টাগন।

রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ঘোষণা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন, এক মার্কিন কর্মকর্তা এবং এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুইজন। কয়েক বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্প চীনা প্রভাব মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রকে আরও শক্তিশালী করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বোয়িং কোম্পানি এবং নর্থরপ গ্রুম্যান করপোরেশন এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। তাদের মধ্যে যে কোম্পানি নির্বাচিত হবে, তারা তৈরি করবে ‘এফ/এ-এক্সএক্স’ নামের নতুন যুদ্ধবিমানটি। এটি ১৯৯০-এর দশক থেকে ব্যবহৃত ‘এফ/এ-১৮ ই/এফ’ সুপার হর্নেট বহরের বিকল্প হবে।

নির্ভরযোগ্য সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, প্রতিরক্ষাসচিব পিট হেগসেথ গত শুক্রবার এই প্রকল্পটি এগিয়ে নেওয়ার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছেন। সম্ভবত এই সপ্তাহেই নৌবাহিনী বিজয়ী কোম্পানির নাম ঘোষণা করবে। তবে অতীতের মতো শেষ মুহূর্তের জটিলতা আবারও বিলম্ব ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যদিও পেন্টাগন ও মার্কিন নৌবাহিনী এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এফ/এ-এক্সএক্স প্রকল্পে বিলম্ব মার্কিন নৌবাহিনীর বিমান সক্ষমতা ও চীনের বিরুদ্ধে বিমানবাহী রণতরির কৌশলগত ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রকল্পটি বিলম্বিত হলে বা বাজেট সংকুচিত হলে মার্কিন নৌবাহিনী ২০৩০ সালের পর আধুনিক যুদ্ধবিমানের ঘাটতিতে পড়তে পারে, যা তাদের বিশ্ব রণাঙ্গনের মঞ্চে দুর্বল করবে।

এই নতুন যুদ্ধবিমানটিতে থাকবে উন্নত স্টেলথ প্রযুক্তি, বেশি পরিসর ও স্থায়িত্ব এবং বিনা চালকে উড্ডয়নযোগ্য ও নৌবাহিনীর প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের সক্ষমতা।

বসন্ত ও গ্রীষ্মে কংগ্রেস ও পেন্টাগনের মধ্যে অর্থায়ন নিয়ে বিরোধের কারণে প্রকল্পের অগ্রগতি থেমে যায়। পেন্টাগন ৭৪ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ চেয়েছিল ‘ন্যূনতম উন্নয়ন তহবিল’ হিসেবে। কিছু কর্মকর্তা প্রকৌশল ও সরবরাহ শৃঙ্খলের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রকল্পটি তিন বছর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু কংগ্রেস ও নৌবাহিনী দ্রুত চুক্তির পক্ষেই ছিল।

পরবর্তীকালে প্রকল্পটি ত্বরান্বিত করতে কংগ্রেস ৭৫০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করে, যা এই গ্রীষ্মে স্বাক্ষরিত কর বিল ও ব্যয় আইনের অংশ। তা ছাড়া ২০২৬ অর্থবছরের জন্য আরও ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, বিলম্বের আরেকটি কারণ ছিল এই বিতর্ক- বোয়িং ও নর্থরপ গ্রুম্যান সময়মতো বিমান সরবরাহ করতে পারবে কি না। কেউ কেউ আশঙ্কা করেছিলেন, বোয়িং হয়তো পর্যাপ্ত প্রকৌশলী নিয়োগ দিতে পারবে না। কারণ, তারা সম্প্রতি মার্কিন বিমানবাহিনীর এফ-৪৭ জেট প্রকল্পও পেয়েছে। আবার নর্থরপ গ্রুম্যানের ক্ষেত্রেও উদ্বেগ ছিল যে তাদের সেন্টিনেল আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প এরই মধ্যে ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।

যদিও এফ/এ-এক্সএক্সের সংখ্যা, মূল্য ও সময়সীমা গোপন রাখা হয়েছে। ধারণা করা হয়, এটি এফ-৩৫ প্রকল্পের মতোই বহু বিলিয়ন ডলারের হবে।

এদিকে মার্কিন নৌবাহিনী এখনো লকহিড মার্টিন কর্পের এফ-৩৫সি জেটের ২৭০টিরও বেশি ইউনিট কেনার পরিকল্পনা করছে। তবে লকহিড মার্টিনকে এই বছরই এফ/এ-এক্সএক্স প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

প্রথম ধাপের উৎপাদিত যুদ্ধবিমানগুলো ২০৩০ সালের পর পরিষেবায় যুক্ত হওয়ার কথা, আর বিদ্যমান এফ/এ-১৮ বহর ২০৪০-এর দশক পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।


পাকিস্তানের সামরিক কনভয়ে হামলা, ১১ সেনা নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আফগান সীমান্তের কাছে গতকাল বুধবার পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কনভয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। এতে ৯ জন সেনা এবং ২ জন অফিসার নিহত হয়েছেন। সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইতোমধ্যে এই হামলার দায় স্বীকার করেছেন পাকিস্তানি তালেবান। পাকিস্তানের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেন, রাস্তার পাশে পুঁতে রাখা বোমা প্রথমে কনভয়ে আঘাত হানে। এরপর বহু সংখ্যক জঙ্গি অতর্কিতে বন্দুক হামলা চালায়।

দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় কুররাম জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে পাকিস্তানের পাঁচজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন।

এক বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, অরাকজাই সংলগ্ন জেলায় এক অভিযানে ১৯ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। এই অভিযানের সময় সেনারা নিহত হয়।

অন্যদিকে পাকিস্তানি তালেবান বলেছে, তাদের যোদ্ধারা কনভয়ে হামলা চালিয়েছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার পরিমাণ অনেক বেড়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে এসব হামলা হচ্ছে।

রয়টার্স বলছে, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান দেশটির সরকার উৎখাতের মাধ্যমে দেশটিতে কঠোর ইসলামিক শাসন বাস্তবায়ন করতে চায়। এ নিয়ে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর তারা হামলা বাড়িয়েছে।


ডোনাল্ড লুর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন পল কাপুর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অবশেষে দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পল কাপুরকে অনুমোদন দিল মার্কিন সিনেট। এর ফলে ডোনাল্ড লুর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন তিনি। অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতি সামলাতে তাকেই এ অঞ্চলের নতুন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দিল যুক্তরাষ্ট্র।

এর আগে এই পদে ছিলেন ডোনাল্ড লু। তার বিদায়ে গত ফেব্রুয়ারিতে এ দায়িত্বের জন্য পল কাপুরকে মনোনীত করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত মঙ্গলবার তা অনুমোদন করে মার্কিন সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটি। সেখানে পল কাপুর ছিলেন ১০৭ জন মনোনীত ব্যক্তির একজন।

মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ কূটনৈতিক পদে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য ভারতীয় বংশোদ্ভূত দ্বিতীয় ব্যক্তি হলেন তিনি। এর আগে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান নিশা বিসওয়াল দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।

পল কাপুর ভারত ও পাকিস্তানবিষয়ক বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। তিনি মার্কিন নৌবাহিনীর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্কুলে শিক্ষকতায় যুক্ত ছিলেন। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির হুভার ইনস্টিটিউটে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবেও কাজ করেছেন।

ট্রাম্পের প্রথম দফায় তিনি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পলিসি প্ল্যানিং বিভাগে যুক্ত ছিলেন।

ইতোমধ্যে এসব বিষয়ে তিনি বেশ কিছু বইও লিখেছেন। তার লেখা বইগুলোর মধ্যে রয়েছে– ‘জিহাদ অ্যাজ গ্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি: ইসলামিস্ট মিলিট্যান্সি, ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যান্ড দ্য পাকিস্তানি স্টেট’, ‘ডেঞ্জারাস ডিটারেন্ট: নিউক্লিয়ার উইপনস প্রলিফারেশন অ্যান্ড কনফ্লিক্ট ইন সাউথ এশিয়া’।

এছাড়া সহলেখক হিসেবে লিখেছেন ‘ইন্ডিয়া, পাকিস্তান অ্যান্ড দ্য বোম্ব: ডিবেটিং নিউক্লিয়ার স্ট্যাবিলিটি ইন সাউথ এশিয়া’।


এভারেস্টে আটকে পড়া সব পর্বতারোহী উদ্ধার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টের প্রত্যন্ত তিব্বত অংশে তুষার ঝড়ে আটকে পড়া প্রায় এক হাজার পর্বতারোহী ও সহায়ক কর্মীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। সপ্তাহান্তে ভারী তুষারপাতের কারণে তারা সেখানে আটকা পড়েছিলেন।

চীনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৫৮০ জন পর্বতারোহী এবং স্থানীয় গাইড ও ইয়াক মালিকসহ ৩০০ এরও বেশি কর্মী নিরাপদে কাছাকাছি একটি শহরে পৌঁছেছেন।

খবরে আরও বলা হয়, স্থানীয় প্রশাসন নিরাপদে ফিরে আসা ব্যক্তিদের যাত্রা সুষ্ঠুভাবে সংঘটিত করছে।

পাশাপাশি আরও এক ডজনের মতো পর্বতারোহীকে উদ্ধার দল সরঞ্জামসহ মিলনস্থলে নিয়ে এসেছে।

এই উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে চীনের পার্বত্য অঞ্চলে আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারে পরিচালিত প্রচেষ্টা আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্ত হয়। তবে আকস্মিক এই তুষার ঝড় ও চরম আবহাওয়ার কারণে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

চীনের পশ্চিমাঞ্চলের এই উচ্চভূমি এলাকায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্যটনের প্রবণতা বেড়েছে।

চলতি বছরের আট দিনব্যাপী জাতীয় ছুটিতে দেশজুড়ে হাজারও অভিযাত্রী জনপ্রিয় ট্রেকিং এলাকায় ভিড় জমায়।

তবে সপ্তাহান্তে প্রচণ্ড তুষার ঝড়ে ক্যাম্পগুলো তুষারের নিচে চাপা পড়ে যায় এবং চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে উদ্ধারকাজে নেমে পড়ে স্থানীয় প্রশাসন, দমকলকর্মী, ঘোড়া, ইয়াক (তিব্বতি গরু) এবং ড্রোনসহ একটি বড় উদ্ধার দল।

সিনহুয়ার গত সোমবারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, পার্শ্ববর্তী কিংহাই প্রদেশের পার্বত্য এলাকায় এক পর্বতারোহী তীব্র ঠাণ্ডাজনিত শীতাঘাত ও উচ্চতার অসুস্থতায় মারা গেছেন।


ইসরায়েলি বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা চায় হামাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজার যুদ্ধবিরতি নিয়ে মিসরে চলমান পরোক্ষ আলোচনার দ্বিতীয় দিন শেষ হয়েছে। এই আলোচনায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইসরায়েলের কাছ থেকে গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধের অবসান এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে পূর্ণ সেনা প্রত্যাহারের নিশ্চয়তা দাবি করেছে।

গত মঙ্গলবার মিসরের শারম আল-শেখে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এদিকে গাজা যুদ্ধ শুরুর দ্বিতীয় বার্ষিকীতে হোয়াইট হাউসে দেওয়া এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, গাজা চুক্তির ‘বাস্তব সম্ভাবনা’ রয়েছে।

হামাসের শীর্ষ কর্মকর্তা ফাওজি বারহুম জানান, তাদের আলোচকরা যুদ্ধের সমাপ্তি ও ‘দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার’ দাবি করেছেন। তবে ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের কোনো স্পষ্ট সময়সীমা নেই; প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সেনা প্রত্যাহার কেবল হামাসের হাতে থাকা ৪৮ ইসরায়েলি বন্দির (যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হয়) ফেরতের পরই শুরু হবে।

হামাসসহ ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলোর একটি জোট এক বিবৃতিতে ‘সব ধরনের প্রতিরোধ অব্যাহত রাখার’ অঙ্গীকার করে বলেছে, ‘কেউ ফিলিস্তিনি জনগণের অস্ত্র ত্যাগের অধিকার রাখে না,’ যা ট্রাম্প পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হামাসের নিরস্ত্রীকরণের দাবির জবাব হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আলোচনার পর আল জাজিরাকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হামাস কর্মকর্তা জানান, বন্দিমুক্তি ধাপে ধাপে হবে এবং তা ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহারের সময়সূচির সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। গত মঙ্গলবারের আলোচনায় মূলত বন্দিমুক্তির সময়সূচি ও ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহারের মানচিত্র (Map) নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।

মিসরের রাষ্ট্র-সংশ্লিষ্ট আল কাহেরা নিউজের বরাত দিয়ে বলা হয়, হামাসের শীর্ষ আলোচক খলিল আল-হাইয়া জোর দিয়ে বলেছেন, হামাস ‘প্রকৃত নিশ্চয়তা’ চায় যে যুদ্ধ শেষ হবে এবং আর পুনরায় শুরু হবে না। তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্বের দুটি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগও তোলেন।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার বর্ষপূর্তিতে দেওয়া এক বিবৃতিতে চলমান সংঘাতকে ইসরায়েলের ‘অস্তিত্ব ও ভবিষ্যতের লড়াই’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল তার যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে কাজ চালিয়ে যাবে- যার মধ্যে রয়েছে, সব বন্দিকে ফেরত আনা, হামাসের শাসনের অবসান ঘটানো এবং গাজাকে ইসরায়েলের জন্য আর হুমকি না হতে দেওয়া।

যদিও পার্থক্য থাকলেও আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে এবং উভয় পক্ষই ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনার কয়েকটি অংশে সম্মতি দিয়েছে। মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর মধ্যে কাতার, মিসর ও তুরস্ক আলোচনায় নমনীয় অবস্থান নিচ্ছে।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি জানান, তারা আলোচনার গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী নতুন প্রস্তাব তৈরি করছেন এবং গতকাল বুধবার কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুলরহমান আল থানি মিসরে অন্যান্য মধ্যস্থতাকারীর সঙ্গে যোগ দেবেন, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে থাকবেন স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার।

তবে যুদ্ধ শেষ হলেও গাজা কে পরিচালনা করবে এবং কে পুনর্গঠনের ব্যয় বহন করবে- এসব প্রশ্ন এখনো অনিশ্চিত। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংঘাত পর্যবেক্ষক সংস্থা এসিএলইডি (ACLED) জানায়, গত দুই বছরে গাজায় ১১ হাজারেরও বেশি বিমান ও ড্রোন হামলা এবং অন্তত ৬ হাজার ২৫০টি গোলাবর্ষণ হয়েছে।

তাদের তথ্যানুযায়ী, বৈশ্বিক সংঘাতে নিহতদের মধ্যে ১৪ শতাংশই গাজার। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৭০১ জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন।

সূত্র: আল জাজিরা


গাজা গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ ইতালির প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা যুদ্ধে ইউরোপের যে দুই দেশ প্রবলভাবে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এর একটি ইতালি অন্যটি জার্মানি। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানিয়েছেন যে গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলায় রোমের সমর্থনের কারণে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ এনেছে। গতকাল বুধবার সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা যুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েলকে মারণাস্ত্র সরবরাহ করে ইতালির সরকার যে ভূমিকা পালন করেছে সেই বিষয়টি সামনে এনে গত ১ অক্টোবর রোমে অবস্থিত এই আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আরএআইয়ে এক সাক্ষাৎকারে মেলোনি এসব তথ্য জানান। তবে আন্তর্জাতিক আদালত বিষয়টি নিশ্চিত করেনি বলেও সংবাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

মেলোনি বলেন, তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রোসেত্তো এবং উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানির ভূমিকার ‘নিন্দা’ করা হয়েছে। তিনি আশঙ্কা করেন, ইতালির অস্ত্র ও আকাশসীমা দেখভালের প্রতিষ্ঠান লিওনার্দোর প্রধান রবের্তো সিনগোলানির নামও জড়িয়ে যেতে পারে।

বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মেলোনির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রে আইনের অধ্যাপক, আইনজীবী ও বেশ কয়েকজন সুপরিচিত ব্যক্তিসহ যোট ৫০ জন সই করেছেন। তারা মেলোনি ও অন্যদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ এনেছেন।

অভিযোগপত্রে লেখা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি সরকারকে সমর্থনের মাধ্যমে বিশেষ করে, প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ করে ইতালি সরকার চলমান গণহত্যায় সহায়তা করেছে। তারা ফিলিস্তিনের জনগণের বিরুদ্ধে চরম যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন।’

গত মাসে জাতিসংঘের তদন্তে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রসঙ্গে ওঠে আসে। মানবাধিকারকর্মী, গণহত্যা ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরাও একই ধারণা পোষণ করেন।

গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘণ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের দায়ে আইসিসি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) তথ্য বলছে- ২০২০ সালে থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহকারী তিন দেশের একটি ইতালি। বাকি দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি।

ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রোসেত্তো জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের আগে সই করা চুক্তি অনুসারে অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে। সেসব অস্ত্র যেন গাজায় বেসামরিক মানুষদের ওপর প্রয়োগ করা না হয় তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েলকে বলা হয়েছে।

উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি দাবি করেছেন, ইসরায়েলে সব ধরনের অস্ত্র সরবরাহ এখন বন্ধ আছে।

এদিকে দ্য হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন অমান্যের অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা মামলা করেছে।


ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রাশিয়া, চীন, ভারত ও পাকিস্তান

আফগানিস্তানের বাগরাম ঘাঁটি ইস্যু
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে অনুষ্ঠিত ‘মস্কো ফরম্যাট কনসালটেশনের’ বৈঠকে যোগ দেওয়া রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভসহ বিভিন্ন দেশের কর্মকর্তারা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই প্রচেষ্টার বিরোধিতায় আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়াল ভারত।

শুধু ভারতই নয়, এ বিষয়ে ট্রাম্পের বিরোধিতা করে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়া। তাদের সঙ্গে ভারতও একই পংক্তিতে বসল। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক কোনো বিষয়ে চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সহমত হওয়ার এমন দৃষ্টান্ত বিরল।

ভারত এই ভূমিকা নিল এমন সময়ে, যখন তালেবানশাসিত আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি সরকারি সফরে নয়াদিল্লিতে আসছেন। আফগানিস্তানের রাজনৈতিক দখল নেওয়ার পর এই প্রথম সে দেশের কোনো মন্ত্রী ভারত সফরে আসছেন। অথচ লক্ষণীয়, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে ভারত এখনো আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।

মুত্তাকি ভারতে আসছেন আজ বৃহস্পতিবার। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ তাকে ভারত সফরে অনুমতি দিয়েছে। আফগান মন্ত্রীদের বিদেশ সফরের ওপর জাতিসংঘের যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, আপাতত তাতে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়েছে। ৯ থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত মুত্তাকি ভারতে থাকবেন।

চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারত একযোগে ট্রাম্পের বিরোধিতা করে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে গত মঙ্গলবার ‘মস্কো ফরম্যাট কনসালটেশনের’ সপ্তম বৈঠকে। মস্কোয় এই বৈঠক হয়।

রাতে ওই বৈঠকে গৃহীত এক যৌথ বিবৃতিতে বাগরাম বিমানঘাঁটির নাম না করে বলা হয়েছে, ‘আফগানিস্তান ও তার প্রতিবেশী দেশগুলোয় যারা সামরিক অবকাঠামো খাড়া করতে চায়, তাদের সেই উদ্যোগ সমর্থনযোগ্য নয়। কারণ, ওই উদ্যোগ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার পরিপন্থি।’

কিছুদিন আগে বাগরাম বিমানঘাঁটি তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পাঁচ বছর আগে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্র। এ নিয়ে দুই দেশের চুক্তিও হয়েছিল। এরপর হঠাৎ বাগরামের দাবি জানানো গোটা বিশ্বকেই বিস্মিত করেছে। আফগানিস্তানের তালেবান সরকার যদিও তৎক্ষণাৎ সেই দাবি নাকচ করে দিয়েছে।

ট্রাম্পের দাবি উড়িয়ে দেওয়ার পর আফগানিস্তান মস্কো বৈঠকে যোগ দেয়। সদস্যদেশ হিসেবে এই প্রথম তাদের যোগদান। সে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি।

আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, চীন ও রাশিয়া ছাড়াও ওই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের বিশেষ প্রতিনিধি ও শীর্ষ সরকারি কর্তারা। বেলারুশের প্রতিনিধিও বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে।

দাবি অগ্রাহ্য করার পরেও ট্রাম্প নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, তার সরকার বাগরাম ফেরত পেতে চেষ্টা চালাচ্ছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা ওই বিমানঘাঁটি তালেবানদের ছেড়ে দিয়েছিলাম। বিনিময়ে কিছুই নেইনি। এখন ওই ঘাঁটি আমরা ফেরত চাই।’

ওই সংবাদ সম্মেলনের দুই দিন পর নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘বাগরাম বিমানঘাঁটি যারা তৈরি করেছে (যুক্তরাষ্ট্র), তাদের যদি আফগানিস্তান সেটি ফেরত না দেয়, তা হলে পরিণতি মারাত্মক হবে।’

আফগানিস্তান তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অগ্রাহ্য করেছে। সে দেশের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ্ মুজাহিদ জানিয়ে দেন, ‘কোনো পরিস্থিতিতেই আফগানরা তাদের জমি অন্য কাউকে হস্তান্তর করবে না।’

মুত্তাকির সফর শুরুর ঠিক আগে ভারতের এই ভূমিকা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তালেবান নেতৃত্বাধীন আফগান সরকারের সঙ্গে ভারত সরকারি কর্মকর্তা পর্যায়ে যোগাযোগ রেখে চলছিল। দুবাই ও কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবান নেতৃত্বের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রিসহ অন্যান্য সরকারি কর্তার একাধিক বৈঠকও হয়েছে।

আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দিলেও আফগান সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উত্তরোত্তর ভালো হচ্ছে। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর ভারত সে দেশে ত্রাণ পাঠায়। পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের পর আফগানিস্তান সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছিল।

‘অপারেশন সিঁদুরের’ পর ১৫ মে মুত্তাকির সঙ্গে প্রথম কথা হয় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। ২০২১ সালের পর এটাই ছিল দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ে প্রথম আলোচনা। ওই আলাপচারিতায় জয়শঙ্কর ভারত ও আফগান জনগণের ‘ঐহিত্যগত বন্ধুত্বের’ উল্লেখ করেছিলেন।

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক যত খারাপ হচ্ছে, নয়াদিল্লি ততই কাবুলের কাছে আসার চেষ্টা চালাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের ‘শুল্কযুদ্ধের’ অবসান এখনো হয়নি। বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা এখনো অব্যাহত। বিভিন্ন বিষয়ে ভারতের বিরুদ্ধাচরণের নীতি থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখনো সরে আসেননি। এই পরিস্থিতিতে চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বাগরাম প্রশ্নে আফগানিস্তানকে ভারতের সমর্থন জানানো যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।


মৃতদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরি: হার্ভার্ডকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে: আদালত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে মেডিকেল স্কুলের মর্গ থেকে মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চুরির ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের সর্বোচ্চ আদালত। অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো মর্গের সাবেক ব্যবস্থাপক কালোবাজারে বিক্রি করেছেন, এই অভিযোগে পরিবার তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। গত সোমবার ম্যাসাচুসেটস সুপ্রিম জুডিশিয়াল কোর্ট এ রায় দেয়।

আদালত আরও ঘোষণা করেছে, হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অ্যানাটমিকাল গিফট প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মার্ক এফ. সিচেটি-ও আইনি দায়ে পড়েছেন। মামলার মূল অভিযুক্ত, হার্ভার্ড মর্গের সাবেক ম্যানেজার সেড্রিক লজ, গবেষণা ও শিক্ষার উদ্দেশে দান করা মৃতদেহগুলো থেকে অঙ্গ কেটে নিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করতেন।

২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় ১২টি মামলা দায়ের করেছেন ৪৭ জন পরিবারের সদস্য, যাদের প্রিয়জনদের দেহাংশ অনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় মর্গের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও তদারকিতে গুরুতর অবহেলা করেছে এবং আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যানাটমির নির্দেশনা অমান্য করেছে।

প্রধান বিচারপতি স্কট এল. ক্যাফকার তার রায়ে ঘটনাটিকে ‘বহু বছর ধরে চলা এক ভয়াবহ ও বিকৃত চক্র’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

রায়ে ক্যাফকার লিখেছেন, ‘দানকৃত মানবদেহের প্রতি মর্যাদাপূর্ণ আচরণ ও সঠিক নিষ্পত্তি নিশ্চিত করা হার্ভার্ডের আইনি দায়িত্ব ছিল, যা তারা করুণভাবে ব্যর্থ হয়েছে — হার্ভার্ড নিজেরাও তা স্বীকার করেছে।’

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল ২০২৩ সালে লজকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে এবং তার কর্মকাণ্ডকে ‘নৈতিকভাবে ঘৃণিত’ বলে অভিহিত করে।

রায়ের বিবরণ অনুযায়ী, লজ চুরি করা দেহাংশ — যেমন মাথা, মস্তিষ্ক, ত্বক ও হাড় — রাজ্য সীমানা অতিক্রম করে পাচার করতেন, যার ফলে এটি একটি ফেডারেল অপরাধের মামলায় পরিণত হয়।

এক সহযোগী মাত্র ৬০০ ডলারে দুইটি কাটা মুখমণ্ডল কিনেছিল বলে আদালত জানায়। লজ তাকে আরও মানব ত্বক সংগ্রহে সাহায্য করেছিলেন, যা পরবর্তীতে তৃতীয় এক ব্যক্তির কাছে ‘মানবচামড়ার লেদার’ তৈরির বিনিময়ে সরবরাহ করা হয়।

আরেক অভিযুক্ত ৩৯ বার মোট ৩৭ হাজার ডলার পেমেন্ট করেছিলেন, যার মধ্যে এক লেনদেনে ‘হেড নাম্বার ৭’ এবং অন্যটিতে ‘ব্রেইইইনস’ লেখা ছিল।

লজ চলতি বছরের মে মাসে চুরি করা মানবদেহ পরিবহনের এক অপরাধে দোষ স্বীকার করেছেন। তার সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড ও ২ লাখ ৫০ হাজার ডলার জরিমানা হতে পারে।


ইউনেসকোর ৪৩তম সম্মেলনের সভাপতি বাংলাদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইউনেসকোর ৪৩তম সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানান সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (ইউনেসকো) ৪৩তম সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফ্রান্সে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত খন্দকার এম তালহা।

নির্বাচনে তিনি জাপানের রাষ্ট্রদূত তাকেহিরো কানোকে ৩০-২৭ ভোটে পরাজিত করেন। বাংলাদেশ, জাপান, ভারত ও কোরিয়া প্রজাতন্ত্র প্রার্থিতা দিলেও গত সেপ্টেম্বরে ভারত ও কোরিয়া তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়।

বাংলাদেশের ইউনেসকো সদস্য পদের ৫৩ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি এই মর্যাদাপূর্ণ আন্তর্জাতিক পদে নির্বাচিত হলেন, যা দেশের জন্য এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। আসন্ন ৪৩তম সাধারণ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।

এই অর্জনে ফ্রান্সে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আনন্দ ও গর্বের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং ফ্রান্স-বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (এফবিজেএ), বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন ফ্রান্স (বিসিএফ), বিএনপি ফ্রান্স শাখা, বাংলাদেশি নাগরিক পরিষদ ফ্রান্স, এনসিপি ডায়াসপোরা অ্যালায়েন্স ফ্রান্স শাখা ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী প্রবাসী ঐক্য (বিএনডিএ) বিভিন্ন সংগঠন একযোগে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে।


ইরাকে ৩৫ হাজার বন্দিকে সাধারণ ক্ষমা

ইরাকের কুখ্যাত আবু গারিব কারাগার। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরাকে ৩৫ হাজার বন্দিকে সাধারণ ক্ষমার মাধ্যমে কারাগার ও আটক কেন্দ্র থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। পাশাপাশি চুরি ও দুর্নীতির ৩৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ উদ্ধার করা হয়েছে।
কাউন্সিল জানায়, এই আইনের অধীনে আরও ১ লাখ ৪৪ হাজারজন মুক্তি পেতে পারেন বা কারাদণ্ড এড়াতে পারেন। তাদের মধ্যে বিচারপূর্ব আটক ব্যক্তিরা এবং জামিনপ্রাপ্ত বা যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, তারাও অন্তর্ভুক্ত। চলতি বছরের শুরুতে পাস হওয়া ক্ষমা আইনের অধীনে এ মুক্তি ঘোষণা করা হয় বলে গতকাল মঙ্গলবার এবিসি নিউজের সংবাদে বলা হয়েছে।
কারাগারের অতিরিক্ত ভিড় কমানোর একটি উপায় হিসেবে গত জানুয়ারিতে এই আইন পাস করা হয়। ইরাকের বিচারমন্ত্রী গত মে মাসে বলেছিলেন, দেশটির ৩১টি কারাগারে প্রায় ৬৫ হাজার বন্দী রয়েছেন, যদিও সেগুলোর ধারণক্ষমতা এর প্রায় অর্ধেক।
এবিসি নিউজের প্রতিবেদনে জানা যায়, এ সাধারণ ক্ষমা আইন দুর্নীতি, চুরি ও মাদক ব্যবহারের মতো অপরাধের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ-সম্পর্কিত অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কিছু লোককেও অন্তর্ভুক্ত করে। তবে সন্ত্রাসবাদে যুক্ত কোনো হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি এ ক্ষমার আওতায় আসবেন না।
এই আইন পাসের উদ্যোগ নিয়েছিলেন সুন্নি আইনপ্রণেতারা। তাদের দাবি, তাদের সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে এবং অনেক সময় নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। তবে অন্যরা আইনটির সমালোচনা করেছিলেন। তারা আশঙ্কা করছিলেন, এই আইনের ফলে চরমপন্থি ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা মুক্তি পেয়ে যেতে পারেন।
বিচার বিভাগীয় কাউন্সিল এই ক্ষমার অধীনে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ ছিল, এর বিস্তারিত কোনো তথ্য সরবরাহ করেনি।
এই নতুন আইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান হলো, সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত কোনো ব্যক্তি যদি দাবি করেন—আটক অবস্থায় জোর করে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছিল, তবে তিনি পুনরায় বিচারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আইনটির আওতায় মৃত্যুদণ্ডও স্থগিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর পক্ষ থেকে ইরাককে মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগের পদ্ধতির জন্য কঠোর সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। বিশেষত, বন্দীদের আইনজীবী বা পরিবারের সদস্যদের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে গণহারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়।


পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী

জন ক্লার্ক, মাইকেল ডেভোরেট এবং জন মার্টিনিস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চলতি বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জন ক্লার্ক, মাইকেল ডেভোরেট ও জন মার্টিনিস। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে সুইডেনের স্টকহোম থেকে তাদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স।

ম্যাক্রোস্কোপিক কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং এবং ইলেকট্রিক সার্কিটে এনার্জি কোয়ান্টাইজেশন গবেষণার জন্য তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

নোবেলজয়ী এই বিজ্ঞানীরা পাবেন একটি মেডেল, একটি সনদপত্র এবং মোট ১১ মিলিয়ন বা ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। যেসব বিভাগে একাধিক নোবেলজয়ী থাকবেন, তাদের মধ্যে এই ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ভাগ হয়ে যাবে। বর্তমান বাজারে এর মান প্রায় ১২ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

চিকিৎসা, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, সাহিত্য, অর্থনীতি ও শান্তি- এই ছয়টি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত হয় নোবেল। চিকিৎসা ও পদার্থবিদ্যার পর বুধবার রসায়ন, বৃহস্পতিবার সাহিত্য ও শুক্রবার শান্তিতে নোবেলজয়ীদের নাম জানানো হবে। সবশেষে আগামী ১৩ অক্টোবর ঘোষণা করা হবে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ীর নাম। আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকী ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে পুরস্কার বিতরণী।

এবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কার ঘিরে রয়েছে আলোচনা। ইসরায়েলের সঙ্গে কয়েকটি আরব রাষ্ট্রের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ‘আবরাহাম অ্যাকোর্ডস’ চুক্তিতে ভূমিকা রাখার জন্য এক রিপাবলিকান কংগ্রেসওমেন গত ডিসেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মনোনীত করেন। এর আগে ২০১৮ সাল থেকে দেশ-বিদেশের রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে শান্তিতে নোবেলের জন্য ট্রাম্প একাধিকবার মনোনয়ন পেয়েছেন।

নোবেল পুরস্কার ঘোষণার প্রক্রিয়া খুবই গোপন। সাধারণত মনোনীতদের নাম প্রকাশ করা হয় না। এছাড়া বিচারকদের আলোচনা-পর্যালোচনা পরের ৫০ বছর পর্যন্ত গোপন রাখা হয়। তবে মনোনয়নদাতারা চাইলে নিজেদের প্রস্তাবের কথা প্রকাশ করতে পারেন।


নোবেল পাচ্ছেন না ট্রাম্প!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর নাম আগামী শুক্রবার ঘোষণা করা হবে। এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ব্যাপক আলোচনায় আছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বহুদিন ধরেই বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে আসছেন মার্কিন এই প্রেসিডেন্ট। বিজয়ীর নাম ঘোষণার সময় ঘনিয়ে আসায় নোবেল পুরস্কার পাওয়ার প্রচেষ্টা জোরদার করেছেন তিনি।

তারই অংশ হিসেবে ইসরাইল ও হামাসের মাঝে প্রায় দুই বছর ধরে চলা গাজা যুদ্ধের অবসানে জোরাল প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।

তবে আসল কথা হচ্ছে—এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার নিয়ে একটি বিষয় প্রায় নিশ্চিত। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ পুরস্কার পাচ্ছেন না, তা তিনি যতই প্রত্যাশা করুন না কেন। প্রশ্ন হচ্ছে, তাহলে কে পাবেন?

নরওয়ের নোবেল কমিটি শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় (০৯০০ জিএমটি) বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে এ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাবে।

বর্তমানে বিশ্ব পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। ১৯৪৬ সালে সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয় বৈশ্বিক সংঘাত নিয়ে তথ্যভান্ডার তৈরি শুরু করে। এর পর থেকে বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত সশস্ত্র সংঘাতের সংখ্যা ২০২৪ সালের মতো কখনোই এত বেশি ছিল না।

ট্রাম্প একাধিকবার দাবি করেছেন, তিনি আটটি সংঘাতের সমাধান করে নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য হয়েছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তাঁকে কমিটি বেছে নেবে না; অন্তত এ বছরের জন্য। খবর এএফপির।

সুইডেনের আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক পিটার ভ্যালেনস্টিন এএফপিকে বলেন, ‘না, এ বছর ট্রাম্প নোবেল পাচ্ছেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘তবে হয়তো পরের বছর? তখন হয়তো তার নানা উদ্যোগ, বিশেষ করে গাজা সংকট নিয়ে পদক্ষেপের বিষয়ে ধোঁয়াশা কেটে যাবে।’

অনেক বিশেষজ্ঞ ট্রাম্পের নিজেকে ‘শান্তির দূত’ দাবি করাকে অতিরঞ্জিত বলে মনে করেন এবং তার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

অসলো পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নিনা গ্রেগার বলেন, ‘গাজায় শান্তি আনার প্রচেষ্টার বাইরেও আমরা (ট্রাম্পের) এমন অনেক নীতি দেখেছি, যা নোবেলের (আলফ্রেড নোবেল) উইলে লেখা উদ্দেশ্যের পরিপন্থি। সেই উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, জাতির ভ্রাতৃত্ব ও নিরস্ত্রীকরণ উৎসাহিত করা।’

গ্রেগারের মতে, ট্রাম্পের যেসব পদক্ষেপ নোবেল শান্তি পুরস্কারের নীতির সঙ্গে মেলে না, তার তালিকা বেশ লম্বা।

নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রদানকারী পাঁচ সদস্যের কমিটির চেয়ারম্যান ইয়োরগেন ওয়াতনে ফ্রিডনেস বলেন, ‘আমরা পুরো ছবিটিই দেখি। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ ভূমিকা ও চরিত্র বিবেচনায় নেওয়া হয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শান্তির জন্য তারা বাস্তবে কী অর্জন করেছে, সেটিই আমরা দেখি।’

এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ৩৩৮ ব্যক্তি ও সংস্থাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তালিকা ৫০ বছর পর্যন্ত গোপন রাখা হয়।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্য, মন্ত্রিসভার সদস্য, আগের বিজয়ীরা, নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও নোবেল কমিটির সদস্যরা প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে পারেন।

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে নানা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বহুপক্ষীয় চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছেন, মিত্র ও প্রতিদ্বন্দ্বী উভয়ের সঙ্গেই বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করেছেন, বলপ্রয়োগে ডেনমার্ক থেকে গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি দিয়েছেন, মার্কিন শহরগুলোতে ন্যাশনাল গার্ড পাঠিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হেনেছেন।

এ বছর স্পষ্টভাবে পছন্দের কোনো প্রার্থী না থাকায়, অসলোতে শুক্রবারের ঘোষণার আগে নানা নাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর মধ্যে আছে স্বেচ্ছাসেবীদের নেটওয়ার্ক সুদানের ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স রুমস’। তারা যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত মানুষদের সাহায্য করতে জীবন ঝুঁকিতে ফেলে কাজ করছে।

এ ছাড়া রয়েছেন রুশ নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির বিধবা স্ত্রী ইউলিয়া নাভালনায়া এবং অফিস ফর ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউশনস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নামের নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থার নাম।

গাজায় শান্তি আনার প্রচেষ্টার বাইরেও আমরা (ট্রাম্পের) এমন অনেক নীতি দেখেছি, যা নোবেলের (আলফ্রেড নোবেল) উইলে লেখা উদ্দেশ্যের পরিপন্থী। সেই উদ্দেশ্য ছিল আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, জাতির ভ্রাতৃত্ব ও নিরস্ত্রীকরণ উৎসাহিত করা।

নরওয়ের ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক হালভার্ড লেইরা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নোবেল কমিটির সিদ্ধান্তগুলো আবারও ক্ষুদ্র পরিসরের কাজের দিকে ফিরেছে, যা শান্তির ক্ল্যাসিক ধারণার কাছাকাছি। মানবাধিকার, গণতন্ত্র, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নারী অধিকার এখন মূল গুরুত্ব পাচ্ছে।

হালভার্ড লেইরা আরও বলেন, ‘আমার ধারণা, সম্ভবত এ বছর বিতর্কিত নন, এমন একজন প্রার্থীর পক্ষেই রায় যাবে।’


banner close