শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২১ ভাদ্র ১৪৩২

চীনকে ছাড়িয়ে সবচেয়ে জনবহুল দেশ ভারত

ভারতের জনসংখ্যা এখন ১৪২ কোটি ৮৬ লাখেরও বেশি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
১৯ এপ্রিল, ২০২৩ ১৯:১৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০২৩ ১৪:২৪

চীনকে টপকে এবার বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হতে চলেছে ভারত। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভারত ১৪২ কোটি ৮৬ লাখ জনসংখ্যা নিয়ে শীর্ষস্থানে পৌঁছবে। আর এ সময় চীন ১৪২ কোটি ৫৭ লাখ জনসংখ্যা নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকবে। তখন ভারতের জনসংখ্যা চীনের চেয়ে ২৯ লাখ বেশি হবে। খবর বিবিসির।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) পরিসংখ্যান বলছে, এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশে বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বসবাস করছে। এটা গত ৭ দশকের বেশি সময় ধরে চলছে। তবে ভারতে ২০১১ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো জনশুমারি হয়নি বলে আনুমানিক হিসাবের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

অন্যদিকে ইউএনএফপিএর ওই হিসাবে চীনের দুটি বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকং ও ম্যাকাউ এবং স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানের জনসংখ্যা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তাইওয়ানকে যদিও চীন নিজেদের অংশ বলে দাবি করে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বরাবরই নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয়, সংবিধান ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতৃত্বের পরিচয় দিয়ে থাকে। এ নিয়ে চীন-তাইওয়ান বিরোধ চলছে বহুদিন ধরেই।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যা গত নভেম্বরে ৮০০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। বিষয়টিকে ইউএনএফপিএ ইতিবাচকভাবে দেখছে এবং ‘অপার সম্ভাবনা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার আগের মতো বেশি নেই। বরং ১৯৫০ সালের পর থেকে এখন সবচেয়ে ধীরগতিতে বাড়ছে।

ভারত ও চীন- দুই দেশেই জন্মহার কমেছে। তার মানে হলো, চীনে আগামী বছর থেকে জনসংখ্যা কমতে শুরু করবে, যদিও দেশটির কর্তৃপক্ষ ২০১৬ সাল থেকে এক-সন্তান নীতি বাতিল করে দম্পতিদের দুই বা ততোধিক সন্তান গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহ দিচ্ছে। অন্যদিকে চীনেও গত কয়েক দশকে জন্মহার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। দেশটিতে ১৯৫০ সালে প্রত্যেক নারী গড়ে ৫.৭টি সন্তানের জন্ম দিতেন, যা এখন কমে হয়েছে ২.২।

ইউএনএফপিএ পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী ভারতের বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, তাদের দেশের জনসংখ্যা এবং জন্মহার অনেক বেশি। জরিপে অংশগ্রহণকারী প্রতি তিনজনের দুইজনের মতে, জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগের মূল কারণ অর্থনৈতিক বিভিন্ন সংকট।

তবে জনসংখ্যাবিদরা বলছেন, ভারতের জনসংখ্যা চীনকে ছাপিয়ে গেলেও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই। ব্যক্তির অধিকার এবং স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলে এই পরিবর্তনকে অগ্রগতি ও উন্নয়ন হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

ইউএনএফপিএর ‘স্টেট অব ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিপোর্ট- ২০২৩’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত ও চীনের পরে জনসংখ্যায় তৃতীয় স্থানে থাকছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জনসংখ্যা হচ্ছে ৩৪ কোটি। ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির অর্ধেক ঘটবে আটটি দেশে: ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো (ডিআরসি), মিসর, ইথিওপিয়া, ভারত, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন এবং তানজানিয়া। সন্তান জন্মদানের সক্ষমতার হার বিবেচনায় শীর্ষ দেশগুলোর সবই আফ্রিকায় অবস্থিত। এ ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে নাইজার। পরবর্তী অবস্থানগুলো যথাক্রমে চাদ, ডিআরসি, সোমালিয়া, মালি এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের। অন্যদিকে, সবচেয়ে কম জন্মহারের দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যথাক্রমে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ম্যাকাউ ও সান মারিনো এবং আরুবা ও চীন।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহের ভিত্তিতে জাতিসংঘ এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ইউএনএফপিএ বিশ্বজুড়ে নারীর প্রজনন অধিকার নিশ্চিত করার ওপর আরও গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করে।

বিষয়:

এক ফ্রেমে পুতিন-শি-কিম, ‘ষড়যন্ত্রের গন্ধ’ পাচ্ছেন ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে এই আয়োজনে সবচেয়ে বেশি যে দৃশ্যটি বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে তা হলো, লাল গালিচায় একসঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে শি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের আলাপ ও করমর্দন।

বিরল এই দৃশ্যটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে। দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরেই শুল্ক যুদ্ধকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে মিত্র ও প্রতিপক্ষদের প্রতি তার পরিবর্তিত নীতির কারণে অনেক দেশই প্রভাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দেশের নেতা আজ একসঙ্গে দাঁড়িয়েছেন।

কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তি ও সৈন্যদের ব্যাপক প্রদর্শনী করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। আর এ সময় তার পাশে ছিলেন দুই শক্তিধর নেতা পুতিন ও কিম। বিষয়টিকে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি এক ধরনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

দ্য গার্ডিয়ান বলছে, বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ তিন নেতার এই মেলবন্ধনে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন ট্রাম্প।

এ বিষয়ে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি এবং চীনের চমৎকার জনগণকে মহান ও দীর্ঘস্থায়ী উদযাপনের শুভেচ্ছা। আপনারা যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, তখন দয়া করে পুতিন ও কিমকে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাবেন।’

শি বলেছেন, ‘মানবজাতি এমন একটি পর্যায়ে রয়েছে যখন শান্তি বা যুদ্ধ, সংলাপ অথবা মুখোমুখি সংঘর্ষ, পারস্পরিক কল্যাণ কিংবা সবার অকল্যাণ— এর মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে।’ তবে চীনের জনগণ ইতিহাসের সঠিক পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এ সময় যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, কিছু দেশ ‘বুলিং আচরণ’ করছে। তবে চীনকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না বলেও সতর্ক করে দেন তিনি।

অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের গ্লোবাল চায়না হাবের নন-রেসিডেন্ট ফেলো ওয়েন-তি সাং বলেন, ‘চীনের এই আয়োজন আরও একটি বার্তা দিচ্ছে। সেটি হলো, পশ্চিমারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা চালিয়ে গেলেও বন্ধুর পাশে দাঁড়াতে ভয় পায় না চীন।’

কুচকাওয়াজে আরও উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ও মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রধান মিন অং হ্লাইং। কিমের সঙ্গে ছিলেন তার মেয়ে কিম জু। তবে কোনো বড় পশ্চিমা নেতা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেননি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক শৃঙ্খলা পুনর্গঠনে আগ্রহী— এমন কিছু দেশের কাছে এই কুচকাওয়াজ ছিল শিয়ের প্রভাব প্রদর্শনের একটি কৌশল।

এর আগে, তিয়ানজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অরগানাইজেশনের (এসসিও) দুই দিনব‌্যাপী সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের ২০ জনের বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা। সেখানেও পুতিন উপস্থিত ছিলেন। তবে এসসিও সম্মেলনে যোগ দেননি কিম। তবে ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন সম্প্রতি শুল্কারোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এই মুহুর্তে বিশ্লেষকদের নজর এখন শি, পুতিন ও কিমের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয় কি না, সেদিকে আটকে রয়েছে।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ অন এশিয়ার গবেষক লিম চুয়ান-তিয়ং বলেন, যদি এই তিনজনের ত্রিপক্ষীয় কোনো বৈঠক হয়, সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এমনকি সেটি বিশ্বকে আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

লিমের ভাষ্যে, যদি এমন কোনো বৈঠক না হয়, তাহলে বুঝতে হবে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে খুব বেশি উসকানি দিতে চায় না। তাছাড়া ত্রিপক্ষীয় কৌশলগত অস্পষ্টতাও বজায় রাখতে চান শি।

কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত সামরিক সরঞ্জামও পর্যবেক্ষণ করেছেন বিশ্লেষকরা। সেখানে ছিল— ট্যাংক, ড্রোন, দূরপাল্লার ও পারমাণবিক হামলায় সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও স্টেলথ বিমান। আবার কয়েকটি নতুন উন্নত অস্ত্রও উন্মোচন করা হয়।

এস রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো ড্রু থম্পসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ চীনের যেসব প্রতিবেশি দেশ তাদের মৌলিক জাতীয় স্বার্থ চ্যালেঞ্জ করার কথা চিন্তা করে, এই প্রদর্শনী তাদের প্রতি এক ধরনের সতর্কবার্তা।

তিনি বলেন, মৌলিক জাতীয় স্বার্থের মধ্যে সরাসরি নাম উচ্চারণ না করা হলেও যা সবকিছুতে উপস্থিত থেকেছে, তা হলো তাইওয়ান। শি নিজের বক্তব্যে বারবার ‘চীনা জাতির পুনর্জাগরণের’ কথা বলেছেন। এটি তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ এবং এর মূল ভিত্তি তাইওয়ানকে চীনের ভূখণ্ড হিসেবে সংযুক্ত করা।

তাইওয়ানকে বরাবরই চীনের একটি প্রদেশ হিসেবে দাবি করে আসছেন শি ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। তবে চীনের এই দাবি মানতে নারাজ তাইওয়ানের সরকার ও সেখানকার জনগণ।


বিশ্বে ১০০ কোটির বেশি মানুষ মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত: ডব্লিউএইচও

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বজুড়ে ১০০ কোটিরও বেশি মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, বিশ্বে প্রতি ১০০ মৃত্যুর মধ্যে একটি হলো আত্মহত্যাজনিত, যা মূলত তরুণদের মধ্যে বেড়ে চলা মানসিক স্বাস্থ্য সংকটের ভয়াবহ চিত্রকে তুলে ধরছে।

ডব্লিউএইচও’র তথ্যমতে, ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৭ লাখ ২৭ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করেছে। সংস্থার অ-সংক্রামক রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডেভোরা কেস্টেল বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রতিটি আত্মহত্যার বিপরীতে ২০টি আত্মহত্যার চেষ্টা ঘটে। এসব মৃত্যু শুধু জীবনকে শেষ করে না, অসংখ্য পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীকে অমানবিক কষ্টের মুখেও ফেলে।

আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি নারীদের

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালে ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সি নারীদের মৃত্যুর দ্বিতীয় প্রধান কারণ ছিল আত্মহত্যা, আর একই বয়সি পুরুষদের মৃত্যুর তৃতীয় প্রধান কারণ।

২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বয়স-সমন্বিত আত্মহত্যার হার বিশ্বব্যাপী ৩৫ শতাংশ কমলেও নির্ধারিত লক্ষ্য থেকে এখনো পিছিয়ে রয়েছে বিশ্ব। ২০১৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে আত্মহত্যার হার এক-তৃতীয়াংশ কমানোর যে লক্ষ্য ছিল, তা বর্তমান প্রবণতায় মাত্র ১২ শতাংশ কমানো সম্ভব হবে।

অঞ্চলভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে ২০০০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আত্মহত্যার হার বেড়েছে ১৭ শতাংশ। অন্য সব অঞ্চলে কিছুটা কমলেও প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আত্মহত্যা ঘটছে নিম্ন-আয়ের দেশগুলোতে, যেখানে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ বসবাস করে।

উদ্বেগ-হতাশা বাড়ছে

ডব্লিউএইচও সতর্ক করে জানিয়েছে, আত্মহত্যার হার ধীরে ধীরে কমলেও মানসিক ব্যাধি, বিশেষ করে উদ্বেগ ও হতাশার প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে। ২০১১ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বিশ্ব জনসংখ্যার বৃদ্ধির চেয়েও দ্রুত বেড়েছে। বর্তমানে ১০০ কোটির বেশি মানুষ এসব ব্যাধিতে আক্রান্ত।

সংস্থাটি বলছে, তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সংকট আরও গভীর হচ্ছে। এ বৃদ্ধির পেছনে প্রধান দুটি কারণ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রভাব এবং কোভিড-১৯ মহামারি উল্লেখ করেছেন ডব্লিউএইচওর মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান মার্ক ভ্যান ওমেরেন।

সংস্থাটি উদ্বেগ জানিয়ে বলছে, বিশ্বব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ২০১৭ সালের পর থেকে স্বাস্থ্য বাজেটের মাত্র দুই শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যে ব্যয় হচ্ছে, যা পরিবর্তন হয়নি। হতাশায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মাত্র নয় শতাংশ চিকিৎসা পায়।

ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেছেন, মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পরিবর্তন করা এখন বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।


১০ বছরের জন্য গাজার নিয়ন্ত্রণ চায় যুক্তরাষ্ট্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ট্রাম্প প্রশাসন গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি বিতর্কিত পুনর্গঠন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে, যেখানে ২০ লাখ গাজার অধিবাসীকে তাদের ভূমি ছাড়ার জন্য জনপ্রতি ৫,০০০ ডলার নগদ অর্থসহ নানা সুবিধা প্রদান করা হবে। এই পরিকল্পনার আওতায়, গাজার যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডটি ১০ বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে আনা হবে এবং একে অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র ও প্রযুক্তি হাবে রূপান্তর করা হবে।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট এর প্রতিবেদনে জানানো হয়, হোয়াইট হাউসে আলোচিত ৩৮ পৃষ্ঠার এমনই এক প্রস্তাবনা থেকে এই তথ্য ফাঁস হয়েছে। এই পরিকল্পনাটির নাম ‘গাজা রিকনস্টিটিউশন, ইকোনমিক অ্যাক্সেলারেশন অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন ট্রাস্ট’ (গ্রেট ট্রাস্ট)। এই প্রস্তাবনায় গাজার অধিবাসীদের স্বেচ্ছায় অন্য দেশে চলে যাওয়ার অথবা গাজার ভিতরে সুরক্ষিত অঞ্চলে স্থানান্তরিত হওয়ার আহ্বান জানানো হবে। তাদের ভূমির ওপর অধিকার ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে দেওয়া হবে একটি ডিজিটাল টোকেন, যার মাধ্যমে তারা নতুন জীবন শুরু করতে পারবেন।

এছাড়া, যারা তাদের ভূমি ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে রাজি হবেন, তাদের প্রত্যেককে দেয়া হবে নগদ ৫,০০০ ডলার, চার বছরের ভাড়া ভর্তুকি ও এক বছরের খাদ্যসামগ্রী। এই টোকেনের মাধ্যমে তারা গাজায় নির্মাণাধীন আটটি ‘এআই-চালিত স্মার্ট সিটি’-এর একটিতে অ্যাপার্টমেন্ট পাবেন অথবা অন্যান্য দেশে জীবন শুরু করতে পারবেন।

এই প্রস্তাবনায় গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে কাঁচ এবং ধাতুর সুউচ্চ ভবন, পার্ক, গলফ কোর্স, এবং বিশ্বমানের রিসোর্ট থাকবে। একে পর্যটন এবং প্রযুক্তি হাবে রূপান্তরিত করা হবে, যা গাজার অর্থনীতি পুনর্গঠন করবে।

এই পরিকল্পনা ইসরায়েলিদের প্রতিষ্ঠিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) কর্তৃক তৈরি করা হয়েছে এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এর নামেও বিভিন্ন ‘মেগা-প্রকল্প’ পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসব প্রকল্পে সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে।

এছাড়া, ট্রাম্প সম্প্রতি টনি ব্লেয়ার এর সঙ্গে গাজা পুনর্গঠন বিষয়ে আলোচনা করেছেন এবং এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে কাজ করছেন। এটি একটি নতুন গাজার ভূরাজনৈতিক কাঠামো তৈরির পরিকল্পনা হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র যেখানে গাজার দখল নিতে চাচ্ছে, সেখানে পশ্চিম তীরের দখল নিতে চাইছে ইসরায়েল। তিনজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে এএফপি জানায়, ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েল পশ্চিম তীরকে নিজের সঙ্গে একীভূত করবে।


ট্রাম্পের শুল্কে চাপের মুখে ভারত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্কে টালমাটাল হয়ে উঠেছে ভারতের অর্থনীতি। সবচেয়ে বড় রপ্তানি বাজারে আঘাত লাগায় এর প্রভাব পড়েছে মুদ্রা ও শেয়ারবাজার উভয় খাতেই।
মঙ্গলবার ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপি নেমে গেছে প্রতি ডলারে ৮৮ দশমিক ১৬ রুপিতে যা রেকর্ড সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
গত সোমবার এক পর্যায়ে রুপি আরও কমে দাঁড়ায় ৮৮ দশমিক ৩৩-এ, যদিও দিনের শেষে সামান্য ঘুরে ৮৮ দশমিক ১০-এ স্থির হয়। ফরেক্স ব্যবসায়ীদের মতে, ধারাবাহিকভাবে বৈদেশিক তহবিল প্রত্যাহার ও ডলারের বাড়তি চাহিদাই রুপির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে।
গত তিন সেশনে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় শেয়ারবাজার থেকে প্রায় ২.৪ বিলিয়ন ডলার তুলে নিয়েছেন। সিআর ফরেক্স অ্যাডভাইজর্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অমিত পাবাড়ি বলেন, ‘এ ধরনের ব্যাপক বহিঃপ্রবাহ শুধু রুপিকে চাপে ফেলছে না, বরং স্বল্পমেয়াদি বিনিয়োগ প্রবণতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’
বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপে ভারতীয় রপ্তানির প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রুপির জন্য ৮৮ দশমিক ৫০ বড় প্রতিরোধ সীমা হতে পারে আর ৮৭ দশমিক ৫০ সমর্থন সীমা। তবে মার্কিন শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটতে না পারায় ঝুঁকি এখনো নিম্নমুখী।
গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববাজারে ডলারের সূচক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ৮৪-তে। একই সময়ে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ০.৪৪ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৬৮ দশমিক ৪৫ ডলার।
ভারতের শেয়ারবাজারে অবশ্য দিনের শুরুতে কিছুটা উত্থান দেখা গেছে। সেনসেক্স বেড়েছে ২০৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ৫৭১ দশমিক ৯৪-এ। নিফটি সূচক বেড়েছে ৬০ দশমিক ৮ পয়েন্ট, দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৬৮৫ দশমিক ৮৫-এ। তবে সোমবার বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ১ হাজার ৪২৯ কোটি রুপির শেয়ার বিক্রি করেছেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত সোমবার দাবি করেছেন, ভারত মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক শূন্যে নামানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তবে তার মন্তব্য, এই সিদ্ধান্ত অনেক দেরিতে এসেছে। তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশালে লেখেন, ‘ওরা এখন শুল্ক শূন্যে নামানোর প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু সময় ফুরিয়ে আসছে। অনেক বছর আগেই এটা করা উচিত ছিল। ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এতদিন ধরে ‘একতরফা বিপর্যয়’ ছাড়া কিছুই নয়।’


গাজা যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে ইসরায়েলি চিকিৎসকদের বিক্ষোভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা যুদ্ধ বন্ধে চুক্তি করার আহ্বান জানিয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন ইসরায়েলি চিকিৎসকরা। হামাসের কাছ থেকে বন্দীদের ফিরিয়ে আনা এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য একটি বিস্তৃত চুক্তির দাবি জানিয়ে তেল আবিবের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করেন তারা। খবর আল জাজিরার।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা এবং আল জাজিরার সানাদ ফ্যাক্ট-চেকিং এজেন্সির যাচাই করা ফুটেজে বিক্ষোভকারীদের একটি দলকে প্ল্যাকার্ড ধরে, ট্র্যাফিক অবরোধ করে যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চিকিৎসকরা বলেন, যুদ্ধ বন্ধ করুন এবং সবাইকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনুন। তাদের দাবি, তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে এবং ইসরায়েলকে ভুল পথ থেকে সরিয়ে আনতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

এদিকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভয়াবহ আগ্রাসন নিহতের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকালে নতুন করে আরও ১৭ জনকে ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে যাদের মধ্যে ছয়জনই ত্রাণের অপেক্ষায় ছিলেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী সেখানে অনাহারে এখন পর্যন্ত ৩৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজা শহরে নৃশংস আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার সময় শাতি শরণার্থী শিবিরের কাছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে হত্যা করেছে।

১০ বছরের জন্য গাজার নিয়ন্ত্রণ চায় যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য গাজা উপত্যকা পরিচালনা করার এবং এটিকে একটি পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত করার বিষয়টি বিবেচনা করছে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট গাজার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের একটি সংঘাতপরবর্তী পরিকল্পনার বিষয়ে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে এই পরিকল্পনা গাজা উপত্যকাকে কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অধীনে পরিচালিত একটি ট্রাস্টিশিপে পরিণত করবে। একই সঙ্গে একে পর্যটন অবকাশকেন্দ্র এবং উচ্চ প্রযুক্তির উৎপাদন ও প্রযুক্তিকেন্দ্রে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা করছে।

এ পরিকল্পনা গত ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাম্পের করা এক মন্তব্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করবে, অধিবাসীদের অন্যত্র সরিয়ে নেবে এবং উপত্যকাটি পুনর্নির্মাণ করবে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনার আওতায় গাজার ২০ লাখের বেশি মানুষকে অস্থায়ীভাবে অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে। তারা স্বেচ্ছায় সরে যেতে পারে অথবা উপত্যকার ভেতরে সীমিত ও সুরক্ষিত এলাকার মধ্যে থাকতে পারে।

ইসরায়েল পশ্চিম তীর দখলে নেবে

যুক্তরাষ্ট্র যেখানে গাজার দখল নিতে চাচ্ছে, সেখানে পশ্চিম তীরের দখল নিতে চাইছে ইসরায়েল। তিনজন ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে এএফপি জানায়, ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসরায়েল পশ্চিম তীরকে নিজের সঙ্গে একীভূত করবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় দুই বছর ধরে গাজায় সংঘাত চলছে।


অবৈধ ‘সাপ্লিমেন্ট’ কেনার অভিযোগে জাপানের শীর্ষ সিইও’র পদত্যাগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

অবৈধ ‘সাপ্লিমেন্ট’ কেনার অভিযোগের পর মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন জাপানের অন্যতম পরিচিত ব্যবসায়ী সান্টোরি হোল্ডিংসের সিইও তাকেশি নিনামি ।

টোকিও থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়।

জিজি সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে একটি অবৈধ ওষুধ মামলায় একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার পর নিনামির বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত শুরু হয়।

আগস্টে পুলিশ তার বাড়ি তল্লাশি চালায়, তবে নিনামি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তল্লাশি করে কোনো অবৈধ ওষুধও পাওয়া যায়নি।

সান্টোরির সভাপতি নোবুহিরো তোরি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তিনি যে সাপ্লিমেন্টগুলো কিনেছিলেন, তা বৈধ বলে বিশ্বাস করেছিলেন এবং সেগুলো নিয়ে তদন্তও করা হয়েছে।

দেশের ব্যবসায়িক লবি হিসাবে দায়িত্বে থাকা নিনামি ২০১৪ সালে সান্টোরি হোল্ডিংসে যোগ দেন।

এর আগে তিনি ল’সন কনভেনিয়েন্স স্টোর চেইনের সিইও ছিলেন।

সান্টোরি ডিসেম্বরে নিনামির স্থলে নতুন একজন সভাপতি নিযুক্ত করেন। সান্টেরি বিশ্বখ্যাত হুইস্কির জন্য পরিচিত।


আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে জীবিতদের অনুসন্ধানে তল্লাশী চলছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পের পর মঙ্গলবার উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য জোর তল্লাশী চালিয়ে যাচ্ছে।

ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগটিতে ৮শ’ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

আফগানিস্তানে রোববার মধ্যরাতে পাকিস্তান সীমান্তের কাছে পাহাড়ি প্রদেশগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প এবং তার পরে কমপক্ষে পাঁচটি আফটারশক (ভূমিকম্প পরবর্তী কম্পন) আঘাত হানে।

কুনার প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান এহসানুল্লাহ এহসান বার্তা সংস্থা এএফপি’কে বলেন, ‘জীবিতদের সন্ধানে রাতভর অনুসন্ধান চালানো হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘দূরবর্তী গ্রামে এখনও আহত মানুষ রয়ে গেছেন, যাদের হাসপাতালে পাঠানো প্রয়োজন।’

গ্রামবাসীরা উদ্ধার প্রচেষ্টায় যোগ দিয়েছে। তারা উপত্যকায় নির্মিত ঘরবাড়ির ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করছে।

গ্রামবাসীরা লাশ দাফনের আগে তাদের জানাজা পড়েছে। লাশগুলো সাদা কাফনের কাপড়ে মুড়িয়েছিল। মৃতদের মধ্যে কয়েকটি শিশুও ছিল।

জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, অবরুদ্ধ রাস্তার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কিছু গ্রাম এখনও দুর্গম।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহর থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার (১৭ মাইল) দূরে একটি অগভীর ভূকম্পন আঘাত হানে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের আট কিলোমিটার গভীরে।

কয়েক দশক ধরে সংঘাতের পর, আফগানিস্তান বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ, দীর্ঘস্থায়ী মানবিক সংকটের মুখোমুখি এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিবেশী পাকিস্তান ও ইরান থেকে লাখ লাখ আফগানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে বিদেশি সাহায্য হ্রাস পেয়েছে।

২০২৫ সালের প্রথম দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বৃহত্তম সাহায্য দাতা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর আফগানিস্তানে সামান্য তহবিল ছাড়া বাকি সব তহবিল বাতিল করা হয়েছে।

জাতিসংঘ এই বছর জুন মাসে তাদের বৈশ্বিক মানবিক সহায়তা কার্যক্রম উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এনেছে।

সোমবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেছেন, তারা ‘দ্রুত চাহিদা মূল্যায়ন, জরুরি সহায়তা প্রদান ও অতিরিক্ত সহায়তা সংগ্রহের প্রস্তুতির’ জন্য আফগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে এবং প্রাথমিকভাবে ৫ মিলিয়ন ডলারের সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে।


আফগানিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্প, ৮ শতাধিক নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং একাধিক আফটারশকের প্রভাবে ৮০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে। দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে বিশাল উদ্ধার অভিযান চলছে।

রিখটার স্কেলে ৬.০ মাত্রার এই ভূমিকম্পটি গত রোববার স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী আফগানিস্তানের দুর্গম উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কুনার প্রদেশে আঘাত হানে। এতে কাবুল থেকে প্রতিবেশী পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ পর্যন্ত কেঁপে ওঠে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার তথ্য অনুসারে, ১২ লাখেরও বেশি মানুষ সম্ভবত খুব শক্তিশালী কম্পন অনুভব করেছেন।

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের পূর্বে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে শুধুমাত্র প্রত্যন্ত কুনার প্রদেশেই প্রায় ৮০০ জন নিহত এবং ২ হাজার ৫০০ জন আহত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, পার্শ্ববর্তী নাঙ্গারহার প্রদেশে আরও ১২ জন নিহত এবং ২৫৫ জন আহত হয়েছেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আব্দুল মতিন কানি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অসংখ্য বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে।’

আফগানদের বেশিরভাগই মাটির ও ইটের তৈরি নিচু বাড়িতে বাস করেন। সেগুলো অল্পতেই ধসে পড়ার ঝুঁকিতে থাকে।

জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে সতর্ক করে বলেছে, দুর্গম কুনার প্রদেশের কিছু গ্রামে রাস্তাঘাট বন্ধ থাকার কারণে এখনো পৌঁছানো যায়নি।

তালেবান কর্তৃপক্ষ এবং জাতিসংঘ দুর্গত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ৪০টি বিমানে উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

কুনারের নুরগাল জেলার কৃষি বিভাগের সদস্য ইজাজ উলহাক ইয়াদ বলেন, ‘প্রচণ্ড ভয় এবং উত্তেজনা বিরাজ করছে, শিশু এবং নারীরা চিৎকার করছিল। আমরা আমাদের জীবনে কখনো এমন কিছু অনুভব করিনি।’

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরান ও পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে আসা ৪০ লাকেরও বেশি আফগানের মধ্যে ভূমিকম্পবিধ্বস্ত গ্রামে বসবাসকারী অনেকেই রয়েছেন।

ইউএসজিএস অনুসারে, নাঙ্গারহার প্রদেশের জালালাবাদ শহর থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ ভোরে দেশটিতে আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর আমি আফগানিস্তানের জনগণের সঙ্গে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করছি।’

এদিকে, প্রাথমিক ভূমিকম্পের পর সারারাত ধরে কমপক্ষে পাঁচটি আফটারশক অনুভূত হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালীটি ছিল ভোর ৪টার ঠিক পরে ৫.২ মাত্রার।

আফগানিস্তানে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়, বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালায়। সেখানে ইউরেশিয়ান এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল।

প্রাদেশিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত শুক্রবার থেকে শনিবার রাতভর নাঙ্গারহার প্রদেশে বন্যাও দেখা দিয়েছে, যেখানে পাঁচজন নিহত এবং ফসল-সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে।

এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে পশ্চিম হেরাত প্রদেশ ৬.৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হয়। এর ফলে তখন ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং ৬৩ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়।


শি, পুতিন ও মোদির ঐক্যের বার্তা

আপডেটেড ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১১:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের শুরু করা বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার বিশ্ব দেখলো- তিন শীর্ষ নেতার করমর্দন, হাসি ও বন্ধুর মতো অভিবাদন। চীনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনে এমন দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেছেন আলোকচিত্রীরা। ওই তিন শীর্ষ নেতা হলেন শি চিনপিং, ভ্লাদিমির পুতিন ও নরেন্দ্র মোদি।

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দৃশ্যের শুরুতেই দেখা যায় সভা কক্ষে হাত ধরে প্রবেশ করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে তখন বিশ্বের অন্য দেশের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। পুতিন ও মোদি কক্ষে প্রবেশ করে সরাসরি চীনের প্রসিডেন্ট শি চিনপিংয়ের কাছে যান। একে অপরের সঙ্গে হাত মেলান। তখন ওই তিনজনকে ঘিরে অনুবাদকসহ অন্যদের একটি বৃত্ত তৈরি হয়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে পুতিন হেসে ওঠেন। অট্টহাসি হাসেন নরেন্দ্র মোদিও।

পুতিন ও মোদির ওই কক্ষে প্রবেশের একটি ভিডিও প্রচার করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিও। সেখানে দেখা যায়, ওই দুই নেতার হেঁটে আসার সময় পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। টেলিভিশনে তখন শাহবাজ শরিফকে বৃত্ত দ্বারা চিহ্নিত করে দেখানো হয়। টেলিভিশনটির লাইভ অনুষ্ঠান চলার সময় ভিডিওটির ওই অংশটুকু একাধিকবার দেখানো হয়।

তিন বৃহৎ অর্থনীতির দেশের প্রধানদের এমন বন্ধুত্বপূর্ণ কথোপকথন কী বার্তা দেয়? বিশ্লেষকরা বলছেন, ওই দৃশ্য একাধিক বার্তা বহন করে। শি চিনপিং ও ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধুত্ব দেখায় তারা যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানানো পরিবর্তনশীল বিশ্বে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আছেন। আর নরেন্দ্র মোদি দেখাতে চেয়েছেন চীন, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব ঠিক কতটা গভীর।

কোনো কোনো সম্মেলনে কিছু দৃশ্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এ ক্ষেত্রেও সেটাই হচ্ছে। এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর তক্ষশিলা ইনস্টিটিউশনের ইন্দো-প্যাসিফিক স্টাডিজের প্রধান মনোজ কেওয়ালরামানি। তিনি বলছেন, এখন হোয়াইট হাউসকে বুঝতে হবে যে তাদের নেওয়া নীতিই অন্য দেশগুলোকে বিকল্প খুঁজতে বাধ্য করছে।

চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) ওই সম্মেলন দেখাচ্ছে, বাণিজ্য যুদ্ধের মাধ্যমে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভূরাজনীতিতে যে ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন, তা অনেকগুলো দেশকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসেছে। ওই সম্মেলনে ২০টিরও বেশি দেশ অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূরাজনীতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ব্যাঘাত ঘটিয়েছেন, সেটিই এখন চীন-রাশিয়াকে একটি প্ল্যাটফর্মে নেতৃত্বে দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। সম্মেলনে অংশ নেওয়া দেশগুলো এখন অংশীদারত্বের সম্পর্ক গভীর করছে।

এদিকে এসসিও সম্মেলনের আগে তিন নেতাকেই ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মোদি সেই ছবি পোস্ট করেছেন।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মোদি কিছু একটা বলছেন- তা যেন মনোযোগ দিয়ে শুনছেন পুতিন ও শি। সেসময় শিকে মোদির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে। তবে তারা কী নিয়ে আড্ডায় মজেছেন তা জানা যায়নি।

এছাড়া আরও কিছু ছবি পোস্ট করেছেন মোদি। সেইসব ছবিতে মোদি-পুতিনকে করমর্দন ও কোলাকুলি করতে দেখা যাচ্ছে এবং তারা দুইজনে ছিলেন হাস্যোজ্বল। মোদি তার পোস্টে লিখেছেন, পুতিনের সঙ্গে দেখা করা সবসময় আনন্দের।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের আবহে মোদি-পুতিন এবং শির ওই ঘনিষ্ঠতাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ধাক্কা খেয়েছে ভারত-মার্কিন বাণিজ্য। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার কারণেই ওই শুল্কের বোঝা চাপানো হয়েছে, দাবি ওয়াশিংটনের।

তবে চীনের উপর কোনও বাড়তি শুল্ক এখনো আরোপ করা হয়নি। ওই পরিস্থিতিতে তিন রাষ্ট্রপ্রধানের ঘনিষ্ঠতায় ত্রিদেশীয় কোনো অক্ষ তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।

শি’র সঙ্গে ইতোমধ্যে বাণিজ্য নিয়ে কথা বলেছেন মোদি। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস রিপোর্ট করেছে, বৈঠকে প্রেসিডেন্ট শি মোদিকে বলেন, চীন ও ভারত পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়– বরং তারা হলো সহযোগিতার অংশীদার (কোঅপারেশন পার্টনারস)।

দুদেশ যে পরস্পরের কাছে হুমকি নয়, বরং একে অন্যের কাছে ‘উন্নয়নের সুযোগ’, সে কথাও বলেছেন শি।


গাজার মানবিক পরিস্থিতি ‘অবিলম্বে’ উন্নয়নে ইসরাইলের প্রতি বার্লিনের আহ্বান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজায় ‘অবিলম্বে’ মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি করতে জার্মান সরকারের মানবাধিকার ও মানবিক সহায়তা প্রতিনিধি আহ্বান জানান। ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি অঞ্চল সফরের আগে সোমবার তিনি এ কথা বলেন।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে এএফপি এই খবর জানায়।

সাম্প্রতিক সময় পর্যন্ত ইসরাইল জার্মানির রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক সমর্থন পেয়ে আসছিল। তবে গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎসের সুর ইসরাইলের প্রতি কঠোর হয়েছে।

জাতিসংঘ গত মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। এর আগে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছিল যে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলের পাঁচ লাখ মানুষ ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতির মুখোমুখি রয়েছে।

জার্মানির মের্ৎস কনজারভেটিভ সরকার জোটের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস পার্টির আইনপ্রণেতা লার্স কাস্তেলুচ্চি বলেন, ‘ইসরাইল সরকারকে অবশ্যই অবিলম্বে, পুরোপুরি ও টেকসইভাবে এবং মানবিক নীতি ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গাজার মানবিক পরিস্থিতি উন্নত করতে হবে।’

তিনি এই সংঘাতে আটকে পড়া বেসামরিক নাগরিক, বিশেষ করে শিশুদের ‘অপরিসীম’ দুর্ভোগের নিন্দা করেছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘এই দুর্ভোগের জন্য তাদের কোনো দোষ বা দায় নেই।’

কাস্তেলুচ্চি আরও বলেন, গাজায় জার্মানির মানবিক সহায়তা ‘কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে’ তবে যাদের সাহায্যের প্রয়োজন তাদের কাছে তা না পৌঁছালে এর কোন অর্থ নেই।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ইসরাইলের নিরাপত্তার প্রতি জার্মানির ‘বিশেষ দায়িত্ব’ রয়েছে।

এছাড়া হামাসের হাতে জিম্মি থাকা বন্দীদের ‘অবিলম্বে মুক্তি’ দেওয়ারও দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি যুদ্ধবিরতির জরুরি প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান’-এর পক্ষে কথা বলেন।

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলের ওপর হামাসের হামলার পর গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরাইলের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ওই হামলায় ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

ওই হামলায় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের মধ্যে ৪৭ জন এখনও গাজায় রয়েছে। ধারণা করা হয়, তাদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত আছেন।

জাতিসংঘের নির্ভরযোগ্য সূত্র অনুযায়ী, হামাস-শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ইসরাইলের পাল্টা হামলায় অন্তত ৬৩ হাজার ৪৫৯ ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।


ট্রাম্পের ভারত সফরের পরিকল্পনা বাতিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বছরের শেষ দিকে ভারত সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু সেই পরিকল্পনাটি তিনি বাতিল করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের অনলাইনে শনিবার প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে এ দাবি করা হয়েছে। কোয়াড সম্মেলনে যোগ দেওয়ার উদ্দেশে সফরটির পরিকল্পনা ছিল।

নিউইয়র্ক টাইমসের বিশ্লেষণটির নাম ‘দ্য নোবেল প্রাইজ অ্যান্ড আ টেস্টি ফোন কল: হাউ দ্য ট্রাম্প-মোদি রিলেশনশিপ আনরাভেল্ড’ (নোবেল পুরস্কার ও এক তিক্ত ফোনকল: ট্রাম্প-মোদি সম্পর্কের যেভাবে অবনতি হলো)।

এই বিশ্লেষণে ট্রাম্পের সফরসূচির বিষয়ে জানাশোনা আছে এমন কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়, ‘ট্রাম্প (গত ১৭ জুন ফোনালাপে) মোদিকে বলেছিলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতে আসবেন। কিন্তু শরতে ট্রাম্পের ভারত সফরের এই পরিকল্পনা এখন আর নেই।’

নিউইয়র্ক টাইমসের এই দাবির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বা ভারতের কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেননি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পরদিন কোয়াডভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক আয়োজন করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। সেই বৈঠকেই চলতি বছরের শেষের দিকে ভারতে কোয়াডের শীর্ষ বৈঠকের সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত করা হয়েছিল।

কিন্তু গত কয়েক মাসে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লির সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। নিউইয়র্ক টাইমসের এই বিশ্লেষণে ট্রাম্প ও মোদির সম্পর্ক কীভাবে অবনতি হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।

ট্রাম্প বারবার দাবি করে আসছিলেন, গত মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের চার দিনের সংঘাত বন্ধে তিনি মধ্যস্থতা করেছেন। পাকিস্তান ট্রাম্পের মধ্যস্থতার কথা স্বীকার করলেও ভারত তা অস্বীকার করে আসছিল। তা সত্ত্বেও গত ১৭ জুন মোদির সঙ্গে ফোনালাপে ট্রাম্প সেই দাবির পুনরাবৃত্তি করেন। নিউইয়র্ক টাইমসের দাবি, এতে মোদির ধৈর্যচ্যুতি ঘটে।

এই ফোনালাপের আগে ওই মাসেই কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭–এর শীর্ষ সম্মেলনের এক ফাঁকে মোদি-ট্রাম্প বৈঠক করার কথা ছিল। কিন্তু ট্রাম্প আগেভাগে দেশে ফেরায় তাদের পূর্বনির্ধারিত সেই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। মূলত এই নির্বারিত বৈঠক না হওয়ায় ১৭ জুন তারা ফোনালাপ করেছিলেন। কিন্তু ৩৫ মিনিটের এই ফোনালাপ দুই নেতার সম্পর্ক ভালো করার পরিবর্তে আরও তিক্ত করেছে।

তবে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লির সম্পর্ক তিক্ত হওয়ার পেছনে ভারতের পণ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্কও বড় ভূমিকা রেখেছে। গত বৃহস্পতিবার এই শুল্ক কার্যকর শুরু হয়েছে।


চীন-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ: শি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং বলেছেন, বিশ্বের জনবহুল ও সভ্য দেশ হিসেবে চীন-ভারতের বন্ধু হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। উভয় দেশ ভালো প্রতিবেশী হয়ে গ্লোবাল সাউথে ভূমিকা রাখতে পারে।

গতকাল রোববার চীনের তিয়ানজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন এই দুই নেতা। সেখানে মোদিকে চীনা প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেন বলে জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

গ্লোবাল সাউথ বলতে অপশ্চিমা উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বোঝানো হয়। শি চিন পিং বলেন, ‘বিশ্ব এখন পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। চীন ও ভারত দুটি সবচেয়ে সভ্য দেশ। আমরা বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল দুটি দেশ এবং গ্লোবাল সাউথের অংশ। তাই আমাদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, ভালো প্রতিবেশী হওয়া এবং ড্রাগন ও হাতির একত্রিত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ ড্রাগন ও এলিফ্যান্ট হলো এই দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রতীক।

তিনি আরও বলেন, উভয় দেশের উচিত কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পর্ক পরিচালনা করা।

চীনের প্রেসিডেন্ট এই বছর চীন-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনের কথা তুলে ধরেন এবং বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই বহুপাক্ষিকতা, বহুমেরু বিশ্ব এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আরও বেশি গণতন্ত্র বজায় রাখার জন্য আমাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে হবে এবং এশিয়া ও বিশ্বজুড়ে শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মোদির এই সাক্ষাৎকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ভারতে। শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিরোধ তৈরির পর ভারত চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে চলা দীর্ঘদিনের বিরোধ নিষ্পত্তির ওপর জোর দিচ্ছে নয়াদিল্লি।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, প্রায় সাত বছর পর চীন সফর করছেন মোদি। তিনি মূলত এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন। এই সম্মেলনকে বেইজিংয়ের নেতৃত্ব প্রদর্শন ও ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে গ্লোবাল সাউথের ঐক্য গড়ে তোলার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এদিকে সাইডলাইন বৈঠকে উভয়পক্ষের বিশ্বাস, সম্মান ও সংবেদনশীলতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে কথা বলেছেন নরেন্দ্র মোদি। এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোদি বলেছেন, সীমান্ত থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের পর শান্তি ও স্থিতিশীলতার একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শি চিন পিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি তার উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ভারত পারস্পরিক বিশ্বাস, সম্মান এবং সংবেদনশীলতার ভিত্তিতে চীনের সঙ্গে তার সম্পর্ক এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

তিব্বতকে চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করে নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, মাউন্ট কৈলাস ও মানসারোভাতে তীর্থযাত্রা আবারও শুরু হবে। উভয় দেশের মধ্যে পুনরায় সরাসরি বিমান চলাচলের পরিকল্পনা নিয়েও এগোচ্ছে ভারত।

এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ২০টিরও বেশি দেশের নেতারা। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই এশিয়া আঞ্চলের। রোববার চীনে পৌঁছেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও। তিনিসহ অন্যান্য নেতারা বেইজিংয়ে একটি সামরিক প্রদর্শনীতেও অংশ নেবেন।

প্রসঙ্গত, মস্কোর তেল কেনার শাস্তি হিসেবে ওয়াশিংটন ভারতীয় পণ্যে যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, তা কার্যকর হওয়ার পাঁচ দিনের মাথায় চীন-ভারত এ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হল। দুই নেতা এখন পশ্চিমা চাপের বিপক্ষে এশিয়ার দুই গুরুত্বপূর্ণ পরাশক্তি যে ঐক্যবদ্ধ তা দেখাতে চাইছেন, বলছেন বিশ্লেষকরা।

তবে গত বছর থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। দুই দেশ সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে একমত হয়েছে বলেও মোদি জানিয়েছেন, তবে এ নিয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।

গত বছর শি চিন পিং ও মোদি রাশিয়াতে বরফগলানো এক বৈঠকে সীমান্তে টহল নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছান। এরপর থেকে বিশ্বের শীর্ষ দুই জনবহুল দেশের মধ্যে বিবাদ কমতে শুরু করে; সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তারা একে অপরের আরও কাছে এসেছে ওয়াশিংটনের দেওয়া শুল্কের চাপে পড়ে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ককে মোকাবেলায় দিল্লি যখন বিকল্প পথ খুঁজতে শুরু করে, তখন বেইজিংকে তারা পাশে পায়।

দুই দেশের মধ্যে শিগগিরই সরাসরি বিমান চলাচল ফের চালু হবে বলে মোদী জানিয়েছেন। এটি ২০২০ সাল থেকে বন্ধ ছিল। তবে ঠিক কখন থেকে এই সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তা বলেননি।

ভারতে দুর্লভ মৌল, সার ও টানেল বোরিং মেশিন রপ্তানিতে বিধিনিষেধ ছিল চীনের, ভারতে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-র সফরের সময় বেইজিং তা তুলে নিতে রাজি হয়।

ওয়াশিংটন ভারতীয় পণ্যে যে চড়া শুল্ক আরোপ করেছে তারও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে চীন, এ ইস্যুতে বেইজিং ‘দৃঢ়ভাবে ভারতের পাশে থাকবে’ বলে চলতি মাসেই নয়া দিল্লিতে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত সু ফেইহং মন্তব্য করেছিলেন।

দশকের পর দশক ধরে ওয়াশিংটন এশিয়ায় বেইজিংয়ের প্রভাব মোকাবেলায় নয়া দিল্লিকে কাছে টানার চেষ্টা করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় ট্রাম্প প্রশাসনের সময় তার উল্টোটাই দেখা যাচ্ছে।


গাজা সিটি ছেড়ে অন্যত্র যাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা

গাজায় ইসরায়েলি হামলা জোরদার, একদিনেই নিহত ৭৭
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৭ জনই গাজা সিটির বাসিন্দা ছিলেন। এছাড়া নিহতদের মধ্যে ১১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন রুটি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়। গতকাল রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ ও জোরপূর্বক উচ্ছেদ অভিযানের মুখে গাজা নগরী ছেড়ে শত শত ফিলিস্তিনি পালাচ্ছেন। হাতে গোনা সামান্য মালপত্র ট্রাক, ভ্যান ও গাধার গাড়িতে তুলে তারা এলাকা ছাড়ছেন।

নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের পশ্চিম দিকে দেইর আল-বালাহর কাছে বহু পরিবার খোলা আকাশের নিচে অস্থায়ী তাবু ফেলতে শুরু করেছে। এদের অধিকাংশকেই একাধিকবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে হয়েছে।

আগস্টের শুরু থেকে ইসরায়েলি সেনারা হামলা জোরদার করেছে গাজা সিটতে। শহর দখল ও প্রায় ১০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করার লক্ষ্যেই এই অভিযান— এমন আশঙ্কা জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)।

গত শুক্রবার ইসরায়েল জানায়, তারা নগরী দখলের ‘প্রাথমিক ধাপ’ শুরু করেছে এবং এটিকে ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ ঘোষণা করেছে।

গত শনিবার হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই দিন একদিনেই গোটা গাজায় ৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুধু গাজা নগরীতেই নিহত ৪৭ জন। এর মধ্যে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন রুটি সংগ্রহের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়।

অন্যদিকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আবাসিক ভবনে হামলায় সাতজন নিহত হন। ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ চালাতে দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবকদের।

আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, ‘গাজা নগরীজুড়ে হামলা আরও বাড়ছে। ঘরবাড়ি, কমিউনিটি সেন্টার সবই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবনধারার ভিত্তি ভেঙে পড়ছে। এ সব ঘটছে যখন মানুষ দুর্ভিক্ষ, অনাহার আর পানিশূন্যতার মধ্যে রয়েছে। পুরো পরিস্থিতি মানবিক বিপর্যয়ে গড়াচ্ছে।’

গাজা সংঘাতে ৯০০ ইসরায়েলি সেনা নিহত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে শনিবার লড়াই চলাকালে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর (আইডিএফ) এক রিজার্ভ সদস্য নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, নিহত সৈনিক সার্জেন্ট ফার্স্ট ক্লাস (রিজার্ভ) এরিয়েল লুবলিনার (৩৪)। তিনি চলমান যুদ্ধ শুরুর পর থেকে নিহত হওয়া ৯০০তম ইসরায়েলি সেনা।

তার মৃত্যুর পরিস্থিতি তদন্ত করা হচ্ছে। আইডিএফ-এর প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে, দুর্ঘটনাবশত অন্য একজন সৈনিকের ছোড়া গুলিতে তিনি প্রাণ হারান।

গাজার খান ইউনিসে নিহত হন লুবলিনার। তিনি উত্তর ইসরায়েলের কিরিয়াত বিয়ালিকের বাসিন্দা ছিলেন। লুবলিনার প্রায় ১০ বছর আগে ব্রাজিল থেকে ইসরায়েলে আসেন। তার স্ত্রী বারবারা স্পেন থেকে আসা একজন অভিবাসী। লিওর নামে তাদের নয় মাস বয়সি একটি ছেলে আছে।

টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লুবলিনারের রিজার্ভ ডিউটির পর্ব শেষ করার কথা ছিল এবং পরিবারটি ছুটি কাটাতে ব্রাজিল যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল। জুন মাস থেকে তিনি এই পর্বে ডিউটিতে ছিলেন।

এর আগে শুক্রবার রাতে উত্তর গাজার জায়তুন এলাকায় সাঁজোয়া যানে বোমা বিস্ফোরণে সাতজন ইসরায়েলি সেনা আহত হন। সেনাদের বহনকারী ওই যানটি একটি রাস্তার পাশে পুতে রাখা বিস্ফোরক যন্ত্রের ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।

আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা কিছুটা গুরুতর, বাকিদের আঘাত আশঙ্কাজন নন। তাদের মধ্যে পাঁচ সেনাকে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

হামাসের মুখপাত্রকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলা

গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দাকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কেএএন-এর গত শনিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই খবর জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজা সিটিতে হামাসের সামরিক শাখার মুখপাত্র আবু ওবায়দাকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, গাজা সিটিতে হামাসের এক ‘গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে’ লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। বিবৃতিতে বিস্তারিত কিছু জানানো না হলেও, একাধিক হিব্রু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে, হামাসের দীর্ঘদিনের মুখপাত্র হুদাইফা সামির আবদুল্লাহ আল-কাহলৌত, যিনি আবু ওবায়দা নামে পরিচিত, তাকে লক্ষ্য করেই হামলাটি চালানো হয়েছিল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই হামলায় তারা নির্ভুল গোলাবারুদ, আকাশপথে নজরদারি এবং অতিরিক্ত গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করেছে। ইসরায়েলের চ্যানেল ১৩ জানিয়েছে, এই হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন আবু ওবায়দা। ইসরায়েলের এই দাবির বিষয়ে হামাস তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দা ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং রহস্যময় ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত। তিনি সর্বদা মুখোশ পরে থাকেন এবং তার আসল পরিচয় ও অবস্থান সম্পর্কে কারও কোনো তথ্য জানা নেই। এর আগেও ইসরায়েল বেশ কয়েকবার তাকে লক্ষ্যবস্তু করার চেষ্টা করেছে।

এদিকে, চিকিৎসা সূত্র জানায়, গত শনিবার ভোরে গাজা সিটির পশ্চিমাঞ্চলীয় আল-রিমাল এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলায় সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই ভবনটিতে নারী, শিশু এবং বাস্তুচ্যুত মানুষ বসবাস করছিল।


banner close