ভারতে পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানা শহরে গ্যাস লিকেজের কারণে অসুস্থ হয়ে অন্তত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর এনডিটিভি ও ইন্ডিয়া টুডের।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোববার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লুধিয়ানার গিয়াসপুরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে গ্যাস লিকেজের কারণ, ধরন কিংবা উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইন্ডিয়া টুডে জানায়, জনবহুল ওই শিল্প এলাকাটি থেকে থেকে বিড়ালের মরদেহও উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে পাঁচজন নারী ও ছয়জন পুরুষ রয়েছেন। এদের মধ্যে ১০ বছর ও ১৩ বছর বয়সী দুই ছেলে শিশুও রয়েছে।
এ ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থলে উদ্ধারকর্মী, মেডিকেল টিম, ফায়ার সার্ভিস ও ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) সদস্যরা কাজ করছেন।
লুধিয়ানা জেলার সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট স্বাতি তিওয়ানা বলেছেন, ‘গ্যাস লিকেজের কারণেই এমনটি ঘটেছে। তবে গ্যাসের ধরন এবং উৎস এখনো জানা যায়নি। এনডিআরএফ বিষয়টি তদন্ত করবে। আপাতত স্থানীয়দের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার কাজে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।’
জেলাটির ডেপুটি কমিশনার সুরভি মল্লিক বলেছেন, ‘এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। গ্যাস দূষণের কারণেই এমনটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সম্ভবত ম্যানহোলের মিথেনের সঙ্গে কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়েছে। সব কিছুই ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। এনডিআরএফ নমুনা সংগ্রহ করছে।’
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বলেছেন, ‘ঘটনাস্থলে সম্ভব সব ধরনের তৎরতা চলছে, দেয়া হচ্ছে সহায়তা। খুব শিগগিরই বিস্তারিত জানানো হবে।’
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলা চলছেই। টানা প্রায় দুই মাস ধরে চলা এই আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই প্রায় ১২ হাজার। আহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৪৪ হাজারে। এদিকে গাজায় হামাসের হামলায় ১০ ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। অন্যদিকে গাজায় মানবিক বিপর্যয় বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে কাতার ও সৌদি আরব।
এক বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু এবং ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী রয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪৩ হাজার ৬১৬ জন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভূখণ্ডটিতে এখনো প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে তারা ইসরায়েলি হামলায় ভেঙে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন।
অক্টোবরের ৭ তারিখে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকেই অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় নির্বিচার হামলা ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় দুই মাসের এই যুদ্ধে উপত্যকাটিতে ৪০ হাজার টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে ভূখণ্ডটিতে।
হামাসের হামলায় ১০ ইসরায়েলি সেনা নিহত
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে ১০ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এ ছাড়া হামাসের হামলায় ইসরায়েলি ট্যাংক, সামরিক যান এবং সামরিক বুলডোজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামাসের হাতে নিহতের বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় ১০ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে। গোষ্ঠীটির সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস জানিয়েছে, খান ইউনিস শহরের পূর্বে ‘পয়েন্ট-ব্লাংক রেঞ্জে’ অর্থাৎ ‘খুব কাছ থেকে গুলি করে’ ওই ইসরায়েলি সেনাদের হত্যা করেন হামাসের যোদ্ধারা। গোষ্ঠীটি আরও বলেছে, সেনাদের হত্যার পাশাপাশি খান ইউনিসের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে হামাসের যোদ্ধারা তিনটি ইসরায়েলি ট্যাংক, দুটি সেনাবাহী সামরিক যান এবং তিনটি সামরিক বুলডোজারে অ্যান্টি-আরমার শেল দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। হামাসের সঙ্গে সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরকে লক্ষ্য করেই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার সেনারা।
গাজায় মানবিক বিপর্যয় বন্ধের আহ্বান কাতার-সৌদির
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে কাতার এবং সৌদি আরব। কাতার-সৌদি কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের এক যৌথ বিবৃতিতে কাতারের আমির এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান গাজা উপত্যকার মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার গুরুত্বের বিষয়ে জোর দিয়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
উভয়পক্ষ ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত বন্ধে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে। দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান এবং আরব শান্তি উদ্যোগের নীতি অনুসারে ফিলিস্তিন সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন এই দুই শীর্ষ নেতা।
এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। একটি ভিডিও ফুটেজে একটি ধসে পড়া ভবন দেখা গেছে। সেখানে হামলার পর লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। গত দুই দিনে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ওই শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালাল ইসরায়েলি বাহিনী।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাসের মধ্যে আবার লড়াই শুরু হয়েছে। ফলে অঞ্চলটি ভয়ঙ্কর ক্ষুধা সংকটে পড়বে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সম্প্রতি গাজায় সাতদিন ধরে যুদ্ধবিরতি ছিল। তখন গাজায় কিছু ত্রাণসামগ্রী ঢুকেছে। তা বিতরণ করার নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। কিছু মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভবও হয়েছে। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ‘দুঃখের বিষয় হলো, এ বিষয়ে যতটা এগোনো জরুরি ছিল তা হয়নি।’ ডব্লিউএফপি বলছে, ‘নতুন করে লড়াই শুরু হওয়ায় ত্রাণ বিতরণ করা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে কর্মীদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এর ফলে বেসামরিক সাধারণ মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। গাজায় ২০ লাখ মানুষের বেঁচে থাকার সম্বল হলো এই ত্রাণের খাদ্যশস্য।’
সংস্থাটি বলেছে, ‘আমাদের কর্মীদের জন্য গাজা ভূখণ্ডে নিরাপদ, বাধাহীন ও দীর্ঘকালীন যাতায়াতের ব্যবস্থা চাই। তাহলেই তারা মানুষের কাছে জীবনদায়ী ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারবে। একমাত্র দীর্ঘস্থায়ী শান্তি হলেই এই মানবিক বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। ডব্লিউএফপি তাই দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি এবং সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান চায়। এদিকে গাজা থেকে যারা মুক্তি পেয়েছেন এবং যারা এখনও হামাসের হাতে বন্দি, তাদের ও তাদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত দুই মাসের মধ্যে এটিই প্রথম বৈঠক। এ বৈঠকে যথেষ্ট উত্তেজনা ছিল।
নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমি এমন কাহিনি শুনেছি, যাতে আমার মন ভেঙে গেছে। আমি ক্ষুধা ও তৃষ্ণার, শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের কাহিনি শুনেছি। যৌন নির্যাতন ও ভয়ঙ্কর ধর্ষণের কথাও শুনেছি। মুক্তি পাওয়া বন্দিরা এই কাহিনি শুনিয়েছেন।’ ইসরায়েলের মিডিয়া জানিয়েছে, এই বৈঠকে যথেষ্ট উত্তেজনা ছিল এবং শেষের দিকে প্রায় অর্ধেক মানুষ বৈঠক ছেড়ে চলে যায়। দানি মিরানের মেয়ে এখনো হামাসের হাতে বন্দি। তিনি ইসরায়েলের টেলিভিশনে বলেছেন, ‘বৈঠকে কী হয়েছে তা আমি বিস্তারিত বলব না। শুধু এটুকু জানাব, পুরোটা ছিল কুৎসিত, অপমানকর এবং অগোছালো।’ তিনি বলেন, ‘সরকার দাবি করছে, তারাই সবকিছু করেছে; কিন্তু হামাস নেতা ইহাইয়া সিনওয়ার আসলে আমাদের মানুষের ফেরত দিয়েছেন। যখন সরকার দাবি করছে, তাদের নির্দেশে সবকিছু হয়েছে, তখন আমরা রাগ সামলাতে পারিনি। ওরা একটাও নির্দেশ দিতে পারেনি।’ জেনিফারের পার্টনার অ্যান্ড্রে এখনো বন্দি। তিনি জানিয়েছেন, ‘বৈঠক ছিল রীতিমতো উত্তেজক। অনেকেই সেখানে চিৎকার করেছেন।
অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আক্রমণ করে হামাস ভয়ঙ্কর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। বিশ্ব এটাকে উপেক্ষা করতে পারে না। সব সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ীদের এই যৌন নির্যাতনের নিন্দা করতে হবে।’ তার দাবি, ‘হামাস ইসরায়েলের মেয়েদের ওপর অত্যাচার করেছে, তারপর হত্যা করেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। যারা বেঁচে ফিরেছেন, তারা এ ভয়ঙ্কর কাহিনি আমাদের জানাচ্ছেন।’
প্রাদেশিক দুর্যোগ সংস্থার প্রধান রডারিক ট্রেন এএফপি’কে বলেন, বাসটি গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অ্যান্টিক প্রদেশের হ্যামটিক পৌরসভায় যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
গভর্নর রোডোরা কাদিয়াও স্থানীয় বেতার কেন্দ্র ডিজেডআরএইচ’কে বলেছেন, যাত্রীর মধ্যে চারজন কেনিয়ার নাগরিক ছিল। এদের বেশির ভাগই অ্যান্টিক প্রদেশের বাসিন্দা।
কাদিয়াও বলেন, গিরিখাদটি প্রায় ৩০ মিটার গভীর ছিল।
ট্রেন বলেন, দুর্ঘটনায় সাতজন মারাত্মকভাবে আহত হয়। আহতদের মধ্যেও একজন কেনিয়ার নাগরিক রয়েছে। রাস্তাটি দুর্ঘটনা প্রবণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অবশিষ্ট দুই কেনিয়ার নাগরিকের অবস্থা জানা যায়নি।
ট্রেন বলেন, ‘এটি একটি পাহাড়ি রাস্তা হওয়ায় বাসটি অনেক উঁচু থেকে গিরিখাদে পড়ে। এ কারণে অনেকে হতাহত হয়।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইরত জাতিগত সশস্ত্র গ্রুপগুলোকে রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সামরিক জান্তার প্রধান মিন অং হ্লাইং। গতকাল মঙ্গলবার মিয়ানমারের এক গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর হামলায় চীন, ভারত ও থাইল্যান্ড সীমান্তে একের পর এক এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে সামরিক জান্তা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর জান্তা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমারের খবরে বলা হয়, জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং হুঁশিয়ার করে বলেন, সশস্ত্র সংগঠনগুলো যদি বোকার মতো এভাবে লড়াই চালিয়ে যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মানুষকে ভুগতে হবে। জান্তাপ্রধান বলেন, ‘আমাদের সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ভাবতে হবে। ওই সব সশস্ত্র সংগঠনকে তাদের সমস্যা রাজনৈতিকভাবে সমাধানে মনোযোগী হতে হবে।’
মিয়ানমারে এক ডজনের বেশি সংখ্যালঘু সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। এসব গোষ্ঠীর অনেকে সীমান্ত অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। ১৯৪৮ সালে মিয়ানমার স্বাধীন হওয়ার পর সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে তারা। গত অক্টোবরের শেষের দিকে তিনটি সশস্ত্রগোষ্ঠী উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশে যৌথভাবে হামলা শুরু করে। ওই প্রদেশের চীন সীমান্তবর্তী বেশ কয়টি শহর এখন বিদ্রোহীদের দখলে। সেখানকার ব্যবসা-বাণিজ্য তারাই নিয়ন্ত্রণ করে।
জাতিসংঘের মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অক্টোবরে বিদ্রোহীরা হামলা শুরুর পর শিশুসহ ২৫০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ জানায়, দেশজুড়ে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জান্তার সামরিক অভ্যুত্থানে অং সান সু চির সরকার উৎখাত হওয়ার পর ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’ (পিডিএফ) গঠিত হয়। তারা মিয়ানমারের উত্তর ও পূর্বে সেনাবাহিনীর ওপর হামলা শুরু করে।
গত সপ্তাহে পিডিএফ যোদ্ধারা বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানায়, পূর্বাঞ্চলীয় কায়াহ রাজ্যের রাজধানীর কিছু অংশ তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। পুরো শহর থেকে জান্তা বাহিনীকে বিতাড়ন করতে তারা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
দক্ষিণ থাইল্যান্ডে ডাবল ডেকার একটি বাস গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে অন্তত ১৪ জন নিহত এবং ৩২ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সোমবার রাতে উপকূলীয় প্রচুয়াপ খিরি খান প্রদেশে দূরপাল্লার বাসটি ব্যাঙ্কক থেকে রাজ্যের দক্ষিণে যাওয়ার সময় গাছের সাথে ধাক্কা লেগে দুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। গাছটি এখনও মাঝখানে আটকে আছে।
প্রাচুয়াপ খিরি খানের হুয়ে ইয়াং জেলার একজন পুলিশ তদন্তকারী আর্নন টাংটো এএফপিকে বলেছেন, ‘প্রাথমিকভাবে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে এবং ৩২ জন আহত হয়েছে।’ তিনি বলেছেন, ‘তদন্ত চলছে।’
আর্নন টাংটো বলেন, ‘দুর্ঘটনার কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, চালক ঘুমের ঘোরে চালানোয় এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এতে চালক মারাত্মকভাবে আহত হলেও বেঁচে গেছেন।’
আর্নন বলেন, ‘আমরা তার রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রা পরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালের সাথে যোগাযোগ করছি।’
নিহতরা সবাই থাই নাগরিক কি-না তা তদন্ত করছে পুলিশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, থাইল্যান্ডে প্রতি বছর প্রায় ২০ হাজার মানুষ মারা যায়।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের জেরে ভারতের চেন্নাইয়ে অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার হিন্দুস্তান টাইমসের প্রদিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আর কিছুক্ষণেই ভূভাগে আছড়ে পড়তে চলেছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম। এর আগে অবশ্য সোমবারই চেন্নাই দেখেছে মিগজাউমের তাণ্ডব। এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের জেরে অস্বাভাবিক বেশি পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছ চেন্নাই সব উত্তর তামিলনাড়ু উপকূলে। আর আজ এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব প্রতক্ষ্য করতে চলেছে অন্ধ্র উপকূল। এরই মধ্যে আকাশেও ঘন কালো মেঘের দেখা মিলেছে। আজ রাজ্যের একাধিক জেলায় বৃষ্টি হতে চলেছে। ভিজতে চলেছে কলকাতাও।
এতে আরও বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল বরাবর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় এই ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থল ছিল ওঙ্গোলের ২৫ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণপূর্বে।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভারতে একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। যাত্রাপথ বদল করা হচ্ছে বহু ট্রেনের। এদিকে চেন্নাইয়ের বেশ কিছু এলাকা হাঁটু-গভীর জলে তলিয়ে গিয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়।
চেন্নাই আবহাওয়া কেন্দ্র মঙ্গলবার সকালে জানায়, আজ চেন্নাইসহ তামিলনাড়ুর দশটি জেলায় মাঝারি বজ্রঝড় এবং বজ্রপাত সহ হালকা বৃষ্টির পূর্বাভাস হতে পারে।
অন্ধ্রপ্রদেশে ইতিমধ্যেই বৃষ্টি বাড়তে শুরু করেছে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়, মঙ্গলবার ভোর থেকেই প্রবল বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইছে সেখানকার বিভিন্ন জায়গায়। বহু জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার জেরে গাছ ভেঙে পড়েছে। বাতিস্তম্ভও পড়ে গিয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
চেন্নাইয়ের বিভিন্ন জায়গায় থেকে প্রায় ১৫ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র চেন্নাইতেই ২০০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। এছাড়াও শহেরর আশেপাশে আরও ১০০টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।
বিধানসভার নির্বাচনে বাজিমাত করেছে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান এই তিন রাজ্যেই গেরুয়া শিবিরের জয় হয়েছে। অন্যদিকে শুধু তেলেঙ্গানায় জিতেছে কংগ্রেস। চার রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফলের ওপর অনেকটাই নির্ভর করেছিল জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ।
ফলাফলে দেখা গেছে, কংগ্রেসকে রীতিমতো টেক্কা দিয়ে বিধানসভা নির্বাচনে তিনটি রাজ্যেই সহজ জয় পেয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল। এর আগে শুধু মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। ছত্তিশগড় ও রাজস্থানে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস পার্টি। কিন্তু এবার এই দুই রাজ্যও বিজেপির দখলে চলে গেল। মধ্যপ্রদেশে এবার কংগ্রেস বিজেপিকে পরীক্ষায় ফেলতে যাচ্ছে, ভোটের আগে এমন পূর্বাভাসই পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু গত রোববার দুপুরের মধ্যেই সেই পূর্বাভাস মিথ্যা প্রমাণ করে দিয়েছে বিজেপি। মধ্যপ্রদেশে বিজেপির সঙ্গে কোনো ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে না পারা কংগ্রেস বরং রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে ক্ষমতা হারিয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশে বিজেপির দখলে রয়েছে ১৬১টি আসন এবং কংগ্রেসের ৬৬টি আসন। রাজস্থানে বিজেপি পেয়েছে ১১২টি আসন, কংগ্রেস ৭১টি। ছত্তিশগড়ে বিজেপি ৫৫টি, কংগ্রেস পেয়েছে ৩২টি আসন। অথচ এই নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা দারুণভাবে জেগে উঠেছিল। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ জানিয়েছিল, বিজেপির জয় হাসিল খুব একটা সহজ হবে না।
নির্বাচনী ফলাফল জানাচ্ছে, কংগ্রেস পেয়েছে ৬৩টি আসন, বিআরএস ৬১টি, বিজেপি ৮টি, এআইএমআইএমর দখলে আছে ৬টি আসন। স্বভাবতই এই জয়ের পর বিপুল উচ্ছ্বাস দেখা যায় বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তিন রাজ্যে ছিল আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ। তা খুব সফলভাবেই অতিক্রম করেছে বিজেপি।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বই যে মোড় ঘুরিয়েছে, এমনটাই মত তাবড় বিজেপি নেতাদের। অন্যদিকে তুষ্টিকরণ ও ভেদাভেদের রাজনীতির বিপক্ষেই রায় দিয়েছে মানুষ এমনটাই মনে করেন অমিত শাহ। তিন রাজ্যের জনতাকে প্রণাম জানিয়েছেন তিনি। মানুষ কেবল সুশাসন ও উন্নয়নের রাজনীতিতেই ভরসা করে বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিন রাজ্যের ভোটে বিপুল জয়, চব্বিশে বিজেপির জয়ের গ্যারান্টি দিয়ে দিল। তিন রাজ্যে জয়ের পর এক ভাষণে এমনই প্রত্যয়ী কথা শোনা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে। বিজেপির জয় শুধু দলীয় জয় নয় বরং দেশের গরিব মানুষ, নারী, যুবক প্রত্যেকেরই। এভাবেই রাজনৈতিক জয়কে মানুষের সঙ্গে ভাগ করে নেন মোদি।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ বিশ্বাস করে বিজেপিই মানুষের জন্য কাজ করে। নতুন ভারতের রূপরেখা তুলে ধরে চার জাতির কথা উল্লেখ করেন তিনি। তা হলো- নারীশক্তি, যুবশক্তি, কৃষক এবং গরিব বা দরিদ্র। এই চার জাতিই দেশের শক্তি। দেশের নারীশক্তি যে পূর্ণভাবে বিজেপিকে সমর্থন করেছে এমনটাই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আগামীতেও নারীশক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করবে বিজেপি। এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনী প্রচারে যে মোদি গ্যারান্টির কথা টেনেছিলেন তিনি এদিনও তার মুখে শোনা গেল সেই কথা। স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, তিনি যা বলছেন তা শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, তা যে পূরণ হবে সে গ্যারান্টি দিচ্ছেন তিনি। তার মতে, ‘মোদি গ্যারান্টি’তে ভরসা রেখেছেন তিন রাজ্যের মানুষ। তিনি বলেন, দেশের যুবশক্তি শুধু উন্নয়নই চায়। আর তাই যেখানে সরকার যুবকদের প্রত্যাশার বিরুদ্ধে কাজ করেছে, সেখানে মানুষ সেই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে।
মোদির দাবি, কংগ্রেসের নীতির জন্য দশকের পর দশক বঞ্চিত ছিল আদিবাসীরা। তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের কাজ করবে বিজেপি। সেবা ও সুশাসনের নতুন মডেল দেশের সামনে তুলে ধরেছে বিজেপি। দুর্নীতিকে প্রত্যাখ্যান করে মানুষ এই জয়ে কংগ্রেসকে বড় শিক্ষা দিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক পদক্ষেপ গুরুতর উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এলডার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, গাজার উত্তরে যা ঘটেছে সে বিষয়ে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সত্যিই একটি শক্তিশালী বার্তা এসেছে। সেখানকার লোকজন ভয়ংকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতি দক্ষিণাঞ্চলে ঘটতে দেওয়া উচিত নয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আনুমানিক প্রতি ১০ মিনিট পর পরই বোমা ফেলা হচ্ছে।
জেমস এলডার বলেন, দক্ষিণ গাজার লোকজনের জন্য এ বিপদ আরও বেশি উদ্বেগ বাড়িয়েছে। যখন আপনি বোমা বর্ষণের কারণে তিন থেকে চারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন- এমন পরিস্থিতিতে লোকজন সত্যিই ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তারা তাদের সন্তানদের একসঙ্গে রাখার চেষ্টা করছেন কিন্তু তাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
তিনি বলেন, যখন আমি দেখি শিশুরা আর্তনাদ করছে। বাবা-মা একের পর এক যুদ্ধের ভয়ংকর ক্ষত নিয়ে স্ট্রেচারে চিৎকার করছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা এভাবে পার করছে। কিন্তু তারা হাসপাতাল বা আশ্রয়কেন্দ্রেও নিরাপদ নয়। এটা সত্যিই উদ্বেগজনক।
এদিকে গত তিন দিনের ভারী বোমাবর্ষণ শেষে এবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর রেডিওতে প্রচারিত প্রাথমিক খবরে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, বর্তমানে তারা খান ইউনিসের উত্তরে অভিযান চালাচ্ছে। এ ছাড়া খান ইউনিস শহরের কাছাকাছি জায়গায় ইসরায়েলি একটি ট্যাঙ্কের ছবিও প্রকাশ হয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান দেশটির সৈন্যদের জানিয়েছেন যে, তারা দক্ষিণ গাজায় জোরালোভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গাজা ডিভিশনের অতিরিক্ত সৈন্যদের সঙ্গে নিজেদের সামরিক লক্ষ্যের বিষয়ে কথা বলেন আইডিএফ প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হারজি হালেভি। এ সময় হামাস কমান্ডারদের হত্যার বিষয়েও কথা বলেন তিনি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর এই প্রধান বলেন, গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে জোরালোভাবে যুদ্ধ করেছি। এখন আমরা গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলেও একইভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি।
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে কমপক্ষে ১১ হাইকারের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে সেখানে অনুসন্ধান অভিযান চালিয়ে আরও তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মকর্তারা সোমবার এ কথা জানিয়েছেন। খবর এএফপি’র।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সুমাত্রা দ্বীপের মাউন্ট মারাপি আগ্নেয়গিরি থেকে ছাইভস্ম আকাশের প্রায় ৩ হাজার মিটার ওপর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এবং এসব ছাইভস্ম আশপাশের গ্রামগুলোতে পড়ে। সেখানে রোববার এ অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়।
স্থানীয় এবং জাতীয় সংস্থার কর্মকর্তারা সপ্তাহান্তে পর্বতে ভ্রমণকারীর সংখ্যা সংশোধন করে ৭৫ জনের কথা জানিয়েছে। কিন্তু অনুসন্ধান দল সোমবার সকালে অগ্নিমুখের কাছ থেকে ১১ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে।
অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার একদিন পর পাদদাং অনুসন্ধান এবং উদ্ধার সংস্থার প্রধান আব্দুল মালিক বলেন, ‘সেখানে থাকা ২৬ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়নি। আমরা তাদের মধ্যে ১৪ জনকে খুঁজে পেয়েছি। এদের মধ্যে তিনজনকে জীবিত এবং ১১ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।’
তিনি বলেন, ‘২৬ জনের মধ্যে ১২ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া ৪৯ জন পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। তাদের কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জীবিত অবস্থায় তিন ব্যক্তিকে অগ্নিমুখের কাছে পাওয়া যায়। তাদের অবস্থা দুর্বল ছিল এবং শরীরের কিছু অংশ পুড়ে গেছে।’
ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলের মারাওইয়ের মিন্দানাও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়াবহ বোমা হামলায় অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৫০ জন।
রোববার সকালে মিন্দানাও স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামের ভেতর ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্বাবলম্বীদের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে এ বোমা হামলা চালানো হয়। ২০১৭ সালে ইসলামপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী মারাওইয়ে অঞ্চলটি দখল করেছিল। এরপর সেখানে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ফের নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ফিলিপাইনের সরকারি বাহিনী।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট মার্কোস জুনিয়র বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, এ ঘটনার সঙ্গে ‘বিদেশি জঙ্গিরা’ জড়িত। প্রেসিডেন্ট মার্কোস বলেছেন, ‘কঠোর ভাষায় বিদেশি জঙ্গিদের দ্বারা সংঘটিত এ জঘন্য হামলার নিন্দা জানাচ্ছি আমি। যেসব উগ্রবাদী আমাদের নিরীহ মানুষদের ওপর সহিংসতা চালায়, আমাদের সমাজে তারা সবসময় শত্রু হিসেবেই বিবেচিত হবে।’
গত কয়েক দিন ধরে মারওইয়েতে স্থানীয় ইসলামপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে ফিলিপাইনের সেনাবাহিনী। এর মধ্যে একটি অভিযানে দাওলাহ ইসলামিয়া-মাউতে গ্রুপের এক শীর্ষ নেতা নিহত হন। ফিলিপাইনের সেনাপ্রধান রোমিও ব্রাওনার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাদের অভিযানের প্রতিশোধ নিতে রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়ামে হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করছেন তারা।
২০১৭ সালে ইসলামপন্থি এ দলটি মারওইয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ওই অঞ্চলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে অভিযান শুরু করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এতে বেসামরিকসহ এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন।
বোমা হামলার পর ওই অঞ্চলে উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে ফিলিপাইনের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধের প্রায় ২ বছরে ৩ লাখেরও বেশি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য হারিয়েছে ইউক্রেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাবেক উপদেষ্টা অ্যালেক্সেই অ্যারেস্তোভিচ এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানানোর পাশাপাশি ইউক্রেনকে সদস্যপদ দেয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর গড়িমসি মনোভাবের সমালোচনাও করেছেন জেলেনস্কির সাবেক এ উপদেষ্টা।
অ্যারেস্তোভিচ বলেন, ‘কোথায় ন্যাটো? তারা কি আদৌ আমাদের গ্রহণ করবে? গত ২ বছরের যুদ্ধে আমাদের ৩ লাখেরও বেশি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। আর কত ক্ষয়ক্ষতির পর আমরা (ন্যাটোর) সদস্যপদ পাবো?’
মিনস্ক চুক্তি স্বাক্ষরের ৬ বছর পেরোনোর পরও ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য তদবিরের অভিযোগে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
সেই অভিযান এখনো চলছে এবং গত দুই বছরের যুদ্ধে লাখ লাখ সেনা সদস্যের পাশাপাশি নিহত হয়েছেন হাজার হাজার বেসামরিক লোকজনও।
স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য গত বছর দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে শান্তি সংলাপের আয়োজন করেছিল তুরস্ক। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পর সেই আলোচনা ভেস্তে যায়। ইউক্রেনের এমপি ডেভিড আরখামিয়া সম্প্রতি সেই আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে দায়ী করেছেন।
আরটি নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পরোক্ষভাবে ডেভিড আরখামিয়াকে সমর্থন করেছেন অ্যারেস্টোভিচ। তিনি বলেন, ‘সেই শান্তি সংলাপে ইউক্রেনের প্রতিনিধি দলের মধ্যে আমিও ছিলাম। সংলাপ থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের যে সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছিলাম, তা সঠিক ছিল না।’
ফিলিস্তিনের গাজার শাসক দল হামাসের সঙ্গে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর ৬১ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা সংস্থাটির বরাত দিয়ে শনিবার আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, শুক্রবার পর্যন্ত নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে ৫৪ জন ফিলিস্তিন, চারজন ইসরায়েল ও তিনজন লেবাননের নাগরিক।
সিপিজের ভাষ্য, যুদ্ধে ১১ জন সাংবাদিক আহত ও তিনজন নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হয়েছেন ১৯ সাংবাদিক।
সংস্থাটি আরও জানায়, অনেক সাংবাদিক নিহত, নিখোঁজ কিংবা হুমকির শিকার হওয়ার অসমর্থিত খবর পাওয়া গেছে, যা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ইসরায়েলে ঢুকে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় নির্বিচার হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে অবরুদ্ধ উপত্যকায় বিপুলসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক নিহত হন।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত হয় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। অন্যদিকে হামাসের হামলায় নিহত হয় প্রায় এক হাজার ২০০ ইসরায়েলি।
গোটা বিশ্বে যেভাবে বিশাল আকারে মাংস খাওয়ার চল দেখা যাচ্ছে, তা শরীর ও স্বাস্থ্যের সঙ্গে পরিবেশেরও ক্ষতি করছে। জার্মানিতে প্রকৃত মাংসের বদলে ‘ভিগান’ বিকল্প জনপ্রিয় করার নানা উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে।
ডানিয়েল কিস সসেজ তৈরি করেন। তবে যে সে সসেজ নয়। তার সসেজে কোনো মাংস নেই, পুরোপুরি ভিগান। জার্মানির অনেক মানুষের কাছে সেটাই একটা সমস্যা। ডানিয়েল বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু কটু মন্তব্য পেয়েছি। অনেকে আমাদের দ্রুত বিনাশ কামনা করেছেন। অনেকে চেয়েছেন, আমাদের গোটা কোম্পানি যেন বন্ধ হয়ে যায় বা কেউ সেটা ধ্বংস করে দেয়।’
জার্মানি মাংসের দেশ হিসেবে পরিচিত হওয়ায় এমন উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। শূকরের মাংসের নানা রূপ ও কারি সসেজ চিরায়ত পদের মধ্যে পড়ে। অনেকের ভয়, তাদের কাছ থেকে সেসব কেড়ে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু ভিগান বিকল্প কি সত্যি জার্মান জীবনযাত্রার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে? ড্রেসডেন শহরে ‘ভেগান কসাইখানা’ নজর আকর্ষণ করছে। সেখানে এমন সব বিকল্প পাওয়া যায়, যা মাংসের প্রয়োজন মেটাতে পারে। সে কারণে অনলাইনে অনেক প্রশংসার পাশাপাশি হুমকি ও গালাগালও শোনা গেছে।
নিল্স স্টাইগার ও তার সহযোগীরা কিন্তু মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করতে চান না। মাংস ছাড়া বিকল্প খাদ্যতালিকা যে সম্ভব, শুধু সেটাই তারা তুলে ধরতে চান। নিল্স বলেন, ‘আমি নিজে পাঁচ বছর আগে ভিগান হয়েছি। আগে বেশি মাংস খাওয়ার কারণে আমি পরিচিত ছিলাম। আমি বন্ধুদের সঙ্গে বারবিকিউ করতাম এবং মাংসের স্বাদ খুব উপভোগ করতাম। আমি এখনো সেই স্বাদ পছন্দ করি। শুধু মাংস ছাড়া। আমি চাই না, সে কারণে প্রাণী হত্যা হোক বা কৃষিজমি ব্যবহার করা হোক।’
জার্মানিতে মাংস খাওয়ার প্রবণতা কমেই চলেছে। ২০২২ সালে দেশটিতে বছরে মাথাপিছু ‘মাত্র’ ৫২ কিলোগ্রাম মাংস খাওয়া হয়েছে। ১৯৮৯ সালের পর যা সবচেয়ে কম হার। কম মাংস খাওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। গবেষণা অনুযায়ী, বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের প্রায় ১৫ শতাংশের জন্য পশুকেন্দ্রিক শিল্পক্ষেত্র দায়ী।
কোম্পানির রন্ধন বিষয়ের প্রধান হিসেবে ডানিয়েল কিস মূলত ভালো রান্না করতে চান। মাংসের স্বাদ নকল করা মোটেই কঠিন নয়। তার জন্য বিশেষ মসলা রয়েছে। সঠিক টেক্সচার সৃষ্টি করাই আসল চ্যালেঞ্জ।
ডানিয়েল বলেন, ‘আমি যখন সবাইকে বলি গুলাশ রান্না করছি, তখন সেই পদের মধ্যে ছোটবেলায় মা বা দাদি-নানির রান্নার স্বাদ কিছুটা হলেও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করতে হয়। তা ছাড়া সসেজ খাওয়ার সময় কার্টিলেজে কামড় দেয়ার মতো অনুভূতি পেতে হবে। অথবা স্টেক খাওয়ার সময়েও মাংসের মতো স্বাদ পেলে ভালো হয়।’
বার্লিনেও ২০১৭ সাল থেকে এক ভিগান মাংসের দোকান রয়েছে। সেখানেও উত্তেজনা কম নয়। মালিক পাউল পলিঙার বলেন, ‘আমরা নাকি এই পেশাকে অপবিত্র ও অসম্মান করছি, এমন সব কথা শুনতে পাই।’ তবে ড্রেসডেনের ‘ভিগান’ মাংসের দোকানের তুলনায় তাদের উদ্দেশ্য আলাদা। তারা মাংস ও সসেজের মৌলিক স্বাদ অনুকরণের চেষ্টা না করে একেবারে নিজস্ব স্বাদ ও পণ্যের প্রতি মনোযোগ দিচ্ছেন।
পাউল বলেন, ‘আমাদের কাছে স্বাদই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা কিছু সৃষ্টির সময় খতিয়ে দেখি, নিজেরাই সেই স্বাদ উপভোগ করছি কি না।’