শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

করোনার জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

ফাইল ছবি
আপডেটেড
৫ মে, ২০২৩ ২১:৫১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৫ মে, ২০২৩ ২০:৩১

কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) মহামারি আর জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা নয়। এই জরুরি অবস্থা জারির তিন বছর পর শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, এই তিন বছরে করোনাভাইরাস বিশ্বের প্রায় দুই কোটি মানুষের প্রাণ কেড়েছে, যা বিভিন্ন দেশের সরকারি হিসাবের প্রায় তিন গুণ।

বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বোচ্চ সতর্কতা। এই সতর্কতা প্রত্যাহার করার মাধ্যমে সংস্থাটি কার্যত মহামারি শেষের পথে বলে ইঙ্গিত দিল। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করেছে, বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হলেও কোভিড-১৯ এখনো শেষ হয়ে যায়নি।

এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। এর ছয় সপ্তাহ পর সংস্থাটি কোভিড-১৯-কে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সরকারি হিসাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মারা গেছে। তবে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা সরকারি হিসাবের প্রায় তিনগুণ।’ এই সংখ্যা প্রায় দুই কোটি।

তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হলেও করোনাভাইরাস এখনো বড় ধরনের হুমকি হয়ে রয়ে গেছে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা ২০২১ সালের জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। তখন সপ্তাহে ১ লাখের বেশি মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল। এরপর দিনে দিনে এই ভাইরাসে মৃত্যুর হার কমেছে। গত ২৪ এপ্রিল নাগাদ সাপ্তাহিক মৃত্যুর সংখ্যা সাড়ে ৩ হাজারের কাছাকাছি নেমে এসেছে।’

তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইমার্জেন্সি কমিটি ১৫তম বারের মতো বৈঠক করে এবং আমাকে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের পরামর্শ দিয়েছে। আমি সে পরামর্শ মেনে নিয়েছি। কাজেই আমি ঘোষণা দিচ্ছি যে কোভিড-১৯ আর বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা নেই।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক বলেন, ‘এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মহামারির সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার নিম্নগামী। এই প্রবণতার কারণে সিংহভাগ দেশই মহামারি-পূর্ব অবস্থায় ফিরে যেতে পেরেছে।’ তিনি বলেন, ভবিষ্যতে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ বেড়ে গেলে তিনি আবার ইমার্জেন্সি কমিটির বৈঠক ডেকে বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করবেন। তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড-১৯ আমাদের বিশ্বে গভীর ক্ষত তৈরি করেছে, এখনো করছে। কাজেই আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, ভবিষ্যতে নতুন নতুন ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটতে পারে, যা ধ্বংসাত্মক রূপ নিতে পারে।’

তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেন, ‘সবচেয়ে মর্মান্তিক বিষয়গুলোর একটি হলো কোভিড-১৯-এর এভাবে আঘাত হানার কথা ছিল না। আমাদের মহামারির জন্য প্রস্তুত হতে, আগে থেকেই সম্ভাব্য মহামারির আভাস পেতে, দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এবং তার সতর্কবার্তা ছড়িয়ে দিতে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও প্রযুক্তি ছিল এবং আছে। কিন্তু বিশ্বজুড়েই সমন্বয়হীনতার কারণে, অসমতার কারণে, সংহতি না থাকায় ওইসব উপকরণ ও প্রযুক্তি আমরা কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারিনি। আমাদের অবশ্যই নিজেদের কাছে, আমাদের সন্তানদের কাছে, সন্তানদের সন্তানদের কাছে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে, আমরা এই ভুল আর করব না।’

ডব্লিউএইচওর হেলথ ইমার্জেন্সিস প্রোগ্রামের নির্বাহী পরিচালক ড. মাইক রায়ান বলেন, ‘করোনাভাইরাস এখনো জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে রয়ে গেছে। আমরা প্রতিদিনই এই ভাইরাসকে পরিবর্তিত হতে দেখছি। কাজেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ অব্যাহত থাকবে বলেই ধরে নিচ্ছি আমরা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরবর্তী মহামারি আঘাত হানার আগ পর্যন্ত আগের মহামারি অব্যাহত থাকে। আমি জানি, এটি একটি ভয়ানক চিন্তা। কিন্তু মহামারির ইতিহাস এটাই বলে।’

ডব্লিউএইচওর কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় কারিগরি দলের প্রধান মারিয়া ভন কারখোভ বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংকটের জরুরি পরিস্থিতি শেষ হয়েছে। তবে রোগটা রয়ে গেছে এবং থাকবে। খুব শিগগির এই ভাইরাস ও তার কারণে সৃষ্ট রোগ চলে যাবে না। কাজেই আমাদের সতর্ক থাকতেই হবে। রোগতত্ত্ব অনুসারে এই ভাইরাসের সংক্রমণ এরপরও বাড়বে, আবার কমবে। আমরা আশাবাদী যে, এই ভাইরাস পরবর্তীকালে বড় ধরনের ক্ষতি যাতে করতে না পারে, তার যথাযথ উপকরণ এখন আমাদের আছে। আমাদের এখন শুধু এই ভাইরাসটিকে নজরে রাখতে হবে, কারণ এটি পরিবর্তিত হতে থাকবে, সংক্রমণ ঘটাতে থাকবে।’

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম ছড়ায় চীনে ২০১৯ সালের শেষদিকে। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে জানায়, চীনের উহানে অজানা কারণে নিউমোনিয়ার মতো এক ধরনের রোগ ছড়াচ্ছে। এক সপ্তাহ পরই নতুন করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। চীন করোনায় প্রথম মৃত্যু নিশ্চিত করে ২০২০ সালের ১১ জানুয়ারি। ২৩ জানুয়ারি উহানে লকডাউন দেয়া হয়।

বাংলাদেশে আইইডিসিআর করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের তথ্য জানায় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। প্রথম মৃত্যুর তথ্য জানা যায় ১৮ মার্চ। এর আগে ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভিড-১৯কে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে। পরদিন থেকে পুরো ইউরোপ লকডাউনে চলে যায়। এপ্রিল নাগাদ বিশ্বের প্রায় অর্ধেক দেশ লকডাউন কিংবা চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে। ২ এপ্রিল নাগাদ লকডাউনে পড়ে বিশ্বের ৩৯০ কোটিরও বেশি মানুষ। ধস দেখা দেয় বিশ্বের প্রায় সব পুঁজিবাজারে, অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়ে।

২০২০ সালের জুন নাগাদ ব্রাজিলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ব্যাপক মানুষের মৃত্যু হতে শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রেও সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে, ব্যাপক প্রাণহানি হয়। তবে ওই বছরের ডিসেম্বর নাগাদ করোনার টিকা চলে আসে, যা একটি রেকর্ড। এর আগে এত দ্রুত কোনো টিকা উদ্ভাবন হয়নি, অনুমোদনও পায়নি এত দ্রুত।

২০২১ সালের শুরুতেই করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া শুরু হয়। বাংলাদেশেও জোরেশোরে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়। তবে এই বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের আরেকটি ধাক্কা আসে। ভারতে মে মাস নাগাদ করোনার নতুন ধরন ডেল্টার প্রভাবে ব্যাপক মানুষের মৃত্যু হয়। এই ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। ওই বছরের নভেম্বরে করোনার আরেকটি নতুন ধরন অমিক্রন বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। ২০২২ সালের শুরুতে তা দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

অবশেষে ২০২৩ সালের মার্চে এসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, কোভিড-১৯ মহামারি এই বছরই সাধারণ ঠাণ্ডা-সর্দির মতো রোগে পরিণত হতে পারে। এরপর শুক্রবার বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করল সংস্থাটি।


রুশ হামলার ঝুঁকিতে ন্যাটো

ন্যাটো প্রধান মার্ক রুট্টে
আপডেটেড ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২০:৪০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোর কোনও সদস্য রাষ্ট্রে বছর পাঁচেকের মাঝেই রাশিয়া হামলা চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন ন্যাটো প্রধান মার্কো রুট্টে। জার্মানিতে আয়োজিত এক সম্মেলনে ভাষণ প্রদানকালে এই কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, রাশিয়া ইতোমধ্যে আমাদের বিরুদ্ধে গোপন অভিযানের মাত্রা বাড়াচ্ছে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে সেই ধরনের যুদ্ধের জন্য, যা আমাদের পূর্বপুরুষরা দেখেছিলেন।

পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বিভিন্ন সময়ের মূল্যায়নের পুনরাবৃত্তি করলেন রুট্টে, যা মস্কো বরাবরই ‘উদ্বেগ তৈরির অপচেষ্টা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, ইউরোপের সঙ্গে যুদ্ধের কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। তবে ইউরোপ যুদ্ধ শুরুর পাঁয়তারা করলে মস্কো যে কোনও সময় প্রস্তুত।

তবে ২০২২ ইউক্রেনে সেনা অভিযান শুরুর আগেও এ ধরনের আশ্বাসবাণী দিত রাশিয়া।

এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচেষ্টায় ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত বন্ধের চেষ্টা চলছে। পুতিনের অভিযোগ, ইউক্রেনে শান্তি আনার মার্কিন প্রচেষ্টায় ইউরোপ বাগড়া দিচ্ছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাবে মস্কোর দিকে পক্ষপাতের অভিযোগে কিয়েভের মিত্ররা পরিকল্পনার খসড়ায় কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করেছে। পুতিনের অভিযোগে এই প্রচেষ্টায় নাখোশ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

তবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পুতিনের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ন্যাটো মহাসচিব বলেন, ভাবুন, যদি পুতিন তার লক্ষ্য পূরণ করতে পারেন, তার ফল হবে- ইউক্রেন দখল, ন্যাটোর সঙ্গে আরও দীর্ঘ সীমান্তে রুশ সেনা, আর আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলার ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যাওয়া।

রাশিয়ার অর্থনীতি তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধের উপযোগী কাঠামোতে রূপান্তরিত হয়েছে। তাদের কারখানাগুলো ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদের উৎপাদন বাড়িয়ে চলেছে।

কিয়েল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ড ইকোনমির সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, রাশিয়া মাসে প্রায় ১৫০টি ট্যাংক, ৫৫০টি ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল, ১২০টি ল্যানসেট ড্রোন এবং ৫০টির বেশি আর্টিলারি পিস তৈরি করছে।

যুক্তরাজ্যসহ বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশ এই উৎপাদন সক্ষমতার ধারেকাছেও নেই।

বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার বর্তমান সামরিক উৎপাদন সামর্থ্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে পশ্চিম ইউরোপের আরও বহু বছর লাগবে।

ন্যাটোতে ৩০টি ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে রয়েছে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র, যাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী। ট্রাম্পের চাপের মুখে সদস্য রাষ্ট্রগুলো আরও বেশি প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছে।

রুট্টে বলেন, ন্যাটোর বর্তমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সামলে নিতে পারছে। কিন্তু আমাদের পাশেই সংঘাত চলছে, আর আমি দেখি- অনেকেই আত্মতুষ্ট, অনেকেই জরুরি অবস্থা অনুভব করছে না, অনেকেই ভাবছে সময় আমাদের পক্ষে। মিত্রদেশগুলোর প্রতিরক্ষা ব্যয় ও সামরিক উৎপাদন দ্রুত বাড়াতে হবে- আমাদের বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতো সামর্থ্য থাকতে হবে।


ঝড়ে বিপর্যস্ত গাজা, ২৪ ঘণ্টায় শিশুসহ নিহত ১০

গাজায় শিশুদের জন্য তাঁবু ঠিক করছেন এক মানবাধিকারকর্মী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপত্যকার বাসিন্দাদের জীবন আরও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ‘বায়রন’ ঝড়ের কারণে গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ঘরবাড়ি, দেয়াল ও তাঁবু ধসে পড়ে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে দুই শিশুও রয়েছে। তীব্র শীতে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজা সিটি কর্তৃপক্ষ।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, টানা যুদ্ধ ও বাস্তুচ্যুতির মধ্যে থাকা অসহায় ফিলিস্তিনিদের দুর্যোগ মোকাবিলার মতো কোনো প্রস্তুতি বা সামর্থ্য নেই। টানা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় থাকা পরিবারগুলো এখন মারাত্মক বিপদের মধ্যে রয়েছে।

দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের আল-মাওয়াসি এলাকায় ঝড় ও ভূমি ধসে অনেক তাঁবু হুমকির মুখে পড়েছে। এসব এলাকায় অন্তত ৮ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ৭৬১টি সাইটে আশ্রিত আছে। এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় সবাই ঝুঁকিতে রয়েছে।

গাজা সিটির শাতি শরণার্থী শিবিরে শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকালেই তীব্র ঠান্ডায় এক শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে, উত্তর গাজার বির আন-নিজা এলাকায় ধসে পড়া একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি মৃতদেহ এবং দুই শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া, গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকায় দারবি পরিবারের বাড়ির প্রবেশদ্বার ধসে পড়ায় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় কমপক্ষে ৭০ হাজার ৩৬৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭১ হাজার ০৬৯ জন আহত হয়েছেন।

গাজায় থামেনি ইসরায়েলি বর্বরতা

একদিকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলা আর অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাতে বিপন্ন গাজার বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবন। তীব্র শীতের মধ্যে ঝড় বায়রনের আঘাতে বিপর্যস্ত গাজাবাসী। এরইমধ্যে বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে উপত্যকাটির অনেক রাস্তাঘাট ও ত্রাণশিবিরের তাঁবু।

রাতভর বৃষ্টি আর ঠাণ্ডায় জর্জরিত হয়ে প্রাণ গেছে শিশুসহ কয়েকজনের। ঝড়ে কয়েকটি ভবনও ধসে পড়েছে। অস্থায়ী তাঁবুগুলো ঝড়-বৃষ্টি থেকে সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত না হওয়ায় বাসিন্দারা আশ্রয় নিচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোতে।

জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, গাজায় বন্যা বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ। ৭৬০টির বেশি শরণার্থী শিবির সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এমন অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে নীরবে প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। তবে কবে কার্যকর হবে, তা নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা জানানো হয়নি।

যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে নিজস্ব পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে হামাস। সব অস্ত্র জমা দেয়ার বিষয়টি গাজাবাসী প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ করে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি জানায়, নিরস্ত্রীকরণ ও সামরিক অস্ত্রভাণ্ডার নিয়ে কীভাবে এগোবে সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের পরিকল্পনা বোঝানোর চেষ্টা চলছে।

ফিলিস্তিনিদের পুনর্গঠন কার্যক্রম শুরু করার সুযোগ দিতে মধ্যস্থতাকারীসহ অন্য দেশগুলোকে ইসরাইলের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

এদিকে ইসরায়েল বলছে, গাজা উপত্যকার শাসনব্যবস্থায় হামাসের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। যুদ্ধবিধ্বস্ত এ ভূখণ্ডকে অস্ত্রমুক্ত করার পাশাপাশি যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী হামাসকে নিরস্ত্র করা হবে বলে জানিয়েছে সরকারের মুখপাত্র শোশ বেদ্রোসিয়ান।

ফিলিস্তিন ইস্যুকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে পশ্চিমারা

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেন সংঘাতকে ব্যবহার করে ফিলিস্তিন এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের মুখোমুখি অন্যান্য চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলো থেকে ‘মনোযোগ সরিয়ে নেওয়ার’ চেষ্টা করছে।

বৃহস্পতিবার মস্কোয় ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে পশ্চিমাদের ‘মনোভাব’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ইউরোপে কেউই ইউক্রেন সংঘাতের ‘মূল কারণগুলো’ বা সেগুলো অপসারণের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে না। তারা কেবল ইউক্রেন ও ইউরোপীয়দের কিছুটা অবকাশ দেওয়ার জন্য এবং অন্তত কোনোভাবে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে কিয়েভের শাসনকে সমর্থন করার জন্য সময় পাওয়ার আশায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দাবি করে।

মস্কোর বিরুদ্ধে প্রক্সি যুদ্ধ চালানোর জন্য পশ্চিমাদের সম্পদ ফুরিয়ে আসছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তার মতে, ইউক্রেনকে ব্যবহার করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের করা ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে।

এই কারণে ইউরোপ এখনই ‘একটি নতুন সংঘাতের বীজ’ বপন করতে চায় বলেও তার মত। ল্যাভরভ বলেন, পসচিমারা প্রকাশ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তারা এটির (নতুন সংঘাতের) জন্যও প্রস্তুত হচ্ছে।

শীর্ষ রুশ কূটনীতিক সতর্ক করেন, ইউরোপে ‘সামরিক উন্মাদনা’ চলছে এবং যদি তারা যুদ্ধে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, রাশিয়া ‘যতটা সম্ভব’ প্রস্তুত।

তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভ্লাদিমির পুতিন স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, ন্যাটো বা ইইউ সদস্যদের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো আক্রমণাত্মক পরিকল্পনা নেই। আমরা লিখিতভাবে, একটি আইনি নথিতে সংশ্লিষ্ট গ্যারান্টিগুলিকে আনুষ্ঠানিকভাবে রূপ দিতে প্রস্তুত- স্বাভাবিকভাবেই, সম্মিলিতভাবে, পারস্পরিক ভিত্তিতে।

ল্যাভরভ বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যে মস্কোতে সাম্প্রতিক আলোচনার ফলে ‘ভুল বোঝাবুঝি এবং ভুল যোগাযোগগুলো’ সমাধান হয়েছে।


বুলগেরিয়ায় সরকারের পদত্যাগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশজুড়ে দুর্নীতিবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে অবশেষে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে বুলগেরিয়ার সরকার। হাজার হাজার মানুষের কয়েক দিনের টানা বিক্ষোভের জেরে গত বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দেশটির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘তার সরকার পদত্যাগ করছে।’

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, দুর্নীতি দমনে বুলগেরিয়া সরকার ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ তুলে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু করা হলেও পরে তা সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।

দেশটির রাজধানী সোফিয়া ছাড়াও কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বিভিন্ন শহর ও নগরে হাজার হাজার মানুষ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সবচেয়ে দরিদ্র্য এই দেশটিতে গত কয়েক দিন সরকারবিরোধী ওই বিক্ষোভ হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দফায় দফায় দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের জেরে গত বৃহস্পতিবার বুলগেরিয়ার প্রধানমন্ত্রী রোসেন ঝেলিয়াজকভ ঘোষণা দিয়েছেন, তার সরকার পদত্যাগ করছে। ক্ষমতায় আসার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে রক্ষণশীল রোসেনের সরকার পদত্যাগে বাধ্য হলো।

দেশটির ক্ষমতাসীন জোটের নেতাদের এক বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী রোসেন ঝেলিয়াজকভ সাংবাদিকদের বলেন, ‌‘সরকার আজ(গত বৃহস্পতিবার) পদত্যাগ করছে।’

এর আগে, গত সপ্তাহে দেশটির সরকার প্রথমবারের মতো ইউরোতে প্রণীত ২০২৬ সালের বাজেট পরিকল্পনা প্রকাশ করে। বাজেট পরিকল্পনা প্রকাশের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। দেশটির বিরোধী দল ও বিভিন্ন সংগঠন বলেছে, সামাজিক সুরক্ষা খাতের অবদান এবং লভ্যাংশের ওপর কর বাড়িয়ে ব্যয় মেটানোর পরিকল্পনার বিরোধিতা করতেই লোকজন রাস্তায় নেমেছে।

সরকার বাজেট পরিকল্পনা প্রত্যাহার করলেও বিক্ষোভকারীরা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। দেশটিতে গত চার বছরে সাতটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা প্রকট আকার ধারণ করায় সর্বশেষ ২০২৪ সালের অক্টোবরে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

বুলগেরিয়ার আইটি পেশাজীবী অ্যাঞ্জেলিন বাহচেভানোভ বলেন, ‘বুলগেরিয়াকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরানোর এখনই সময়। আমরা যেন অলিগার্কি, মাফিয়া ও তাদের প্রতিনিধিত্বকারী শক্তির হাত থেকে মুক্ত হতে পারি।’

গত সপ্তাহে দেশটির সরকার প্রথমবারের মতো ইউরোতে প্রণীত ২০২৬ সালের বাজেট পরিকল্পনা প্রকাশ করে। বাজেট পরিকল্পনা প্রকাশের পর দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করে নেয় সরকার। দেশটির বিরোধী দল ও বিভিন্ন সংগঠন বলেছে, সামাজিক সুরক্ষা খাতের অবদান এবং লভ্যাংশের ওপর কর বাড়িয়ে ব্যয় মেটানোর পরিকল্পনার বিরোধিতা করতেই লোকজন রাস্তায় নেমেছে।

সরকার বাজেট পরিকল্পনা প্রত্যাহার করলেও বিক্ষোভকারীরা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। দেশটিতে গত চার বছরে সাতটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা প্রকট আকার ধারণ করায় সর্বশেষ ২০২৪ সালের অক্টোবরে দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।


সংসদ ভেঙে দেওয়ার উদ্যোগ নিলেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী আনুটিন চার্নভিরাকুল। এ জন্য তিনি সংসদ ভেঙে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন, যা পূর্বনির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাচনের পথ খুলে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আনুটিন সংসদ ভেঙে দেওয়ার আবেদন রাজার কাছে জমা দিয়েছেন।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) থাইল্যান্ডের রাজা মহা বাজিরালংকর্ন ওই ডিক্রিতে অনুমোদন দিয়েছেন বলে সরকারি রয়্যাল গেজেটে ঘোষণা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আগাম নির্বাচনের পথ তৈরি হয়েছে, যা আইন অনুযায়ী এখন ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে হবে।

সরকারের মুখপাত্র সিরিপং আঙকাসাকুলকিয়াত বলেন, সংসদে বৃহত্তম বিরোধী দল পিপলস পার্টির সঙ্গে বিরোধের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা সংসদে অগ্রসর হতে পারছি না—এই কারণেই এটা ঘটেছে। তিনি বর্ণনা করেন যে একটি আইনগত অচলাবস্থা সরকারের কার্যক্রমকে পঙ্গু করে দিয়েছে।

এই রাজনৈতিক অচলাবস্থা এমন সময়ে ঘটছে যখন থাইল্যান্ড পরপর চার দিন কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্তজুড়ে তীব্র সংঘর্ষে লিপ্ত। উভয় দেশের অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে এবং প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে বহু জায়গায় গোলাবিনিময় ও বিমান হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

আনুটিন বলেছেন, সংসদ ভেঙে দেওয়া নিরাপত্তা কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত ঘটাবে না। বুধবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সীমান্তে সামরিক মোতায়েন পূর্বের মতোই চলবে।

পরে তিনি সামাজিক মাধ্যমে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন: আমি জনগণের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিচ্ছি।

২০২৩ সালের আগস্টের পর থেকে এটিই থাইল্যান্ডের তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী। আনুটিন উচ্চ পারিবারিক ঋণ, দুর্বল ভোক্তা ব্যয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কচাপের কারণে স্থবির অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে।


যেভাবে ভেনিজুয়েলা ছাড়েন মাচাদো

মারিয়া কোরিনা মাচাদো
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভেনিজুয়েলার বিরোধী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদোর দেশত্যাগের অভিযান ছিল অন্ধকার, ভয়াবহ ও স্যাতস্যাতে এক সমুদ্রযাত্রা, যেখানে কোনো আলো ছিল না, ছিল শুধু উত্তাল ঢেউ। মাচাদোকে ভেনিজুয়েলা থেকে বের করে আনার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ব্রায়ান স্টার্ন এভাবেই নাটকীয় সেই রাতের বর্ণনা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) মার্কিন গণমাধ্যম সিবিএস নিউজে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান স্টার্ন। তিনি একটি অলাভজনক উদ্ধার সংস্থার প্রধান। নরওয়েতে নোবেল শান্তি পুরস্কার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর মাচাদো প্রকাশ্যে আসার কয়েক দিনের মধ্যে স্টার্ন অপারেশনটির বিবরণ তুলে ধরেন।

স্টার্ন বলেন, এটি ছিল অত্যন্ত বিপজ্জনক ও ভয়ানক। তার ভাষায়, অন্ধকার ও উত্তাল সমুদ্রযাত্রা যেমন ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, তেমনি গোপন অভিযানের জন্য উপযুক্ত আড়ালও তৈরি করেছিল।

তিনি জানান, আগস্ট ২০২৪ থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর নিপীড়নের আশঙ্কায় লুকিয়ে থাকা মাচাদো ভেনিজুয়েলা ছেড়ে যাওয়ার পর সাগরে তার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। এরপর মাচাদো তার নৌকায় চড়ে ১৩-১৪ ঘণ্টার এক দীর্ঘ যাত্রা করে একটি গোপন স্থানে পৌঁছান, সেখান থেকে তিনি প্লেনে ওঠেন। পুরো মিশনের পরিকল্পনা হয়েছিল মাত্র চার দিন আগে।

স্টার্ন আরও বলেন, সমুদ্রের অবস্থা আমাদের জন্য আদর্শ ছিল, কিন্তু সাধারণভাবে এমন পানি কেউ চাইবে না... ঢেউ যত উঁচু হয়, রাডারের জন্য দেখাটা তত কঠিন হয়। তিনি বলেন, পুরোটা ঘটেছে গভীর রাতে। চাঁদের আলো ছিল খুব কম, ছিল মেঘের আচ্ছাদন আর আমাদের নৌকাগুলোতে কোনো আলো না থাকা খালি চোখে দেখা কঠিন ছিল।

‘আমরা সবাই ভিজে গিয়েছিলাম। আমার দল আর আমি সম্পূর্ণ ভিজে ছিলাম। তিনিও খুব ঠাণ্ডায় ছিলেন এবং ভিজেছিলেন। তার যাত্রা ছিল অত্যন্ত কষ্টকর।’

তবে সেই কঠোর যাত্রা শেষে মাচাদো ছিলেন ‘খুব খুশি, খুব উচ্ছ্বসিত এবং খুব ক্লান্ত,’ বলেন স্টার্ন। তিনি জানান, তার দলের প্রায় দুই ডজন লোক সরাসরি এ অভিযানে যুক্ত ছিলেন। আর এই অভিযান পুরোটাই চলেছে দাতাদের অর্থে, সরকারি অর্থ নয়।

স্টার্ন বলেন, পুরো অভিযানটি অর্থায়ন করেছে ‘কয়েকজন উদার দাতা’, যাদের কেউই মার্কিন সরকারি কর্মকর্তা নন। মার্কিন সরকার এই অভিযানে এক পয়সাও দেয়নি, অন্তত আমার জানা মতে।

সিবিএস জানিয়েছে, মাচাদোর এক প্রতিনিধির বরাতে জানা গেছে, স্টার্নের সংস্থা গ্রে বুল রেসকিউ ফাউন্ডেশনই এ অপারেশনের দায়িত্বে ছিল, যার শুরু হয়েছিল ৯ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লুকিয়ে থাকা কারাকাসের উপশহর থেকে বের হওয়ার সময় মাচাদো মাথায় উইগ পরে ছদ্মবেশ নেন।

তবে স্থলভাগের অভিযানের বিস্তারিত জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন স্টার্ন। কারণ ভবিষ্যতে তার সংস্থাটির ভেনিজুয়েলায় আরও কাজ থাকতে পারে।

তবে তিনি বলেছেন, তার দলটি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীকে আকাশ হামলার মতো ঝুঁকি এড়াতে অবস্থান ও পরিকল্পনা নিয়ে সঙ্গে ‘অনানুষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতা’ করেছে।

বৃহস্পতিবার মাচাদো বলেন, দেশ ছাড়তে তার যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ছিল। তিনি অবশ্য ভেনিজুয়েলায় ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন, কিন্তু কীভাবে ও কবে ফিরবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

স্টার্ন বলেন, তার দল ফেরানোর কাজে যুক্ত হবে না, কারণ তাদের কাজ হলো মানুষকে দেশ থেকে বের করা, দেশে ঢোকানো নয়। এটা তার নিজের সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমার মনে হয়, তার ফেরা উচিত নয়।


চীনের এই বিমান উড়বে ২৯ ঘণ্টা, পাড়ি দেবে ২০ হাজার কিমি  

আপডেটেড ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:০৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চীনের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট ২৯ ঘণ্টা আকাশে উড়ে প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবে। দেশটির সাংহাই থেকে যাত্রা শুরু করে আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসে ইজেইজা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে ফ্লাইটটি। এটিই বিশ্বের দীর্ঘতম বাণিজ্যিক ফ্লাইট, যা পার করবে প্রায় অর্ধেক পৃথিবী।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডন্ট জানিয়েছে, ফ্লাইটটি বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ২টায় সাংহাই থেকে উড্ডয়ন করে স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে বুয়েনস এইরেসে অবতরণ করে।

যাত্রাপথে নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে জ্বালানি ভরার ও ক্রু পরিবর্তনের জন্য স্বল্প বিরতি নেয়। এই বিরতির কারণে এটি বিশ্বের দীর্ঘতম ননস্টপ ফ্লাইট না হলেও, মোট সময় এবং দূরত্বের ভিত্তিতে এটি বর্তমানে বিশ্বের দীর্ঘতম বাণিজ্যিক এয়ারলাইন রুট।

সাংহাই থেকে আর্জেন্টিনা পর্যন্ত যাত্রায় ফ্লাইটটির সময় লাগে ২৫ ঘণ্টারও বেশি। ফিরতি পথে আরও চার ঘণ্টা যোগ হয়। রুটটি উদযাপন করে সাংহাই, অকল্যান্ড এবং বুয়েনস এইরেস—তিন শহরেই বিশেষ অনুষ্ঠান হয়।

৩১৬ আসনবিশিষ্ট বোয়িং ৭৭৭-৩০০ইআর এখন থেকে সারা বছর সপ্তাহে দুবার এই রুটে চালানো হবে। চায়না ইস্টার্ন জানায়, এ রুটটি দক্ষিণ আমেরিকার প্রধান শহরগুলোর সঙ্গে সাংহাইয়ের সরাসরি সংযোগের ঘাটতি পূরণ করবে এবং আর্জেন্টিনার দ্রুত বাড়তে থাকা পূর্ব এশীয় প্রবাসী সম্প্রদায়কে সুবিধা দেবে।

এতে করে ফ্লাইটটি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের নিউইয়র্ক–সিঙ্গাপুরের প্রায় ১৯ ঘণ্টার ননস্টপ ফ্লাইটকে পিছনে ফেলে বিশ্বের দীর্ঘতম বাণিজ্যিক রুটের মর্যাদা পেয়েছে।

তবে এটি বেশিদিন হয়ত রেকর্ড হিসেবে থাকবে না। অস্ট্রেলিয়ার কোয়ান্টাস এয়ারলাইন্স ‘প্রজেক্ট সানরাইজ’ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিডনি থেকে লন্ডন ও নিউইয়র্ক পর্যন্ত ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই ফ্লাইটটি ২২ ঘণ্টার ননস্টপ ফ্লাইট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। ২০,০০০ লিটার অতিরিক্ত জ্বালানি ধারণক্ষমতা যুক্ত বিশেষ এয়ারবাস উড়োজাহাজ দিয়ে ২০২৭ সালে এই রুট চালুর লক্ষ্য ঠিক করেছে কোয়ান্টাস।


মদ বিক্রির নিয়ম আরও শিথিল হলো সৌদি আরবে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

উচ্চ আয়ের অমুসলিম বিদেশি বাসিন্দাদের অ্যালকোহল কেনার অনুমতি দিয়ে মদ বিক্রির বিধিনিষেধ আরও শিথিল করেছে সৌদি আরব। শুধু আয়ের প্রমাণপত্র দেখিয়ে রিয়াদের একমাত্র মদের দোকানে প্রবেশ করতে পারবেন বিদেশিরা।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাসিক আয় ৫০ হাজার রিয়াল (১৩ হাজার ৩০০ ডলার) বা তারও বেশি এমন অমুসলিম বিদেশি বাসিন্দারা সৌদি আরবে অ্যালকোহল কিনতে পারবেন।

গত বছর এই দোকানটি প্রথমে বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য খোলা হয়েছিল। সম্প্রতি ‘প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি’ থাকা অমুসলিমদের জন্যও এর প্রবেশাধিকার বাড়ানো হয়েছে।

এই পরিবর্তন নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি। এছাড়া এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি বলে জানায় ব্লুমবার্গ।

সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা ব্লুমবার্গকে জানান, দোকানটিতে ক্রেতারা মাসিক পয়েন্ট-ভিত্তিক ভাতা ব্যবহার করে অ্যালকোহল কিনতে পারেন।


যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জলদস্যুতার অভিযোগ ভেনিজুয়েলার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের তেলের ট্যাংকার জব্দ করার ঘটনাকে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ ও ‘চুরি’ হিসেবে অভিহিত করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটির সরকার। ভেনিজুয়েলা বলছে, তাদের তেল ও খনিজসম্পদ লুটপাটের উদ্দেশেই যুক্তরাষ্ট্র এই পরিকল্পিত আগ্রাসন চালাচ্ছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে নিকোলাস মাদুরোর সরকার এ অভিযোগ করে। এর আগে আজই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন কর্মকর্তারা ভেনিজুয়েলার ট্যাংকার জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

ট্যাংকার দখলের ঘটনায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর সমালোচনা করে ভেনিজুয়েলা সরকার বলেছে, ট্রাম্প এই ‘হামলার’ দায় স্বীকার করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি স্পষ্ট করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য ভেনিজুয়েলার তেল সম্পদ দখল করা। আমাদের দেশের বিরুদ্ধে এই আগ্রাসন মূলত জ্বালানি সম্পদ লুণ্ঠনের একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী আগ্রাসনের আসল কারণ অবশেষে সবার সামনে এসেছে। 'এটি অভিবাসন, মাদক পাচার, গণতন্ত্র বা মানবাধিকারের কোনো বিষয় নয়। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ, আমাদের তেল ভেনিজুয়েলার জনগণের একচ্ছত্র মালিকানাধীন সম্পদের বিষয়, উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।

যুক্তরাষ্ট্রের এই কাজকে ‘সাম্রাজ্যবাদী আচরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ভেনিজুয়েলা বলেছে, তারা এই ‘গুরুতর আন্তর্জাতিক অপরাধের’ বিরুদ্ধে বিদ্যমান সব আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে অভিযোগ জানাবে। একই সঙ্গে সার্বভৌমত্ব, প্রাকৃতিক সম্পদ ও জাতীয় মর্যাদা রক্ষায় দৃঢ় সংকল্প নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে কারাকাস।

এর আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিশ্চিত করেন মার্কিন সামরিক বাহিনী ভেনিজুয়েলার কাছে একটি বড় ধরনের অভিযান চালিয়ে তেলের ট্যাংকার জব্দ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে অভিযোগ করেছেন, জব্দ করা জাহাজটি একটি ‘অবৈধ তেল পরিবহন নেটওয়ার্কের’ সঙ্গে যুক্ত ছিল, যা বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে সহায়তা করত।

বিবিসির মার্কিন সহযোগী সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘দ্য স্কিপার’ নামের ওই ট্যাংকার জব্দ করার অভিযানে দুটি হেলিকপ্টার, কোস্ট গার্ডের ১০ সদস্য, ১০ জন মেরিন সেনা এবং স্পেশাল ফোর্স অংশ নেয়।


ভারতের নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ড মালিক দুই সহোদর থাইল্যান্ডে আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের পর্যটন নগরী গোয়ার জনপ্রিয় নাইটক্লাব বার্চ বাই রোমিও লেনে অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ক্লাবটির মালিক দুই সহোদরকে থাইল্যান্ডে আটক করা হয়েছে। থাইল্যান্ডে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত নাগেশ সিংয়ের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটির পরপরই ফুকেটে পালিয়ে যান দুই ভাই গৌরব ও সৌরভ লুথরা।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) নাগেশ সিং জানান, তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এর এক দিন আগে দিল্লির একটি আদালত তাদের গ্রেপ্তার থেকে সুরক্ষা দেওয়ার আবেদন খারিজ করেন এবং গোয়া সরকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে তাদের পাসপোর্ট বাতিলের অনুরোধ জানায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, থাইল্যান্ডের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ দেশটির একটি হোটেলের রুম থেকে ওই দুই ভাইকে আটক করে। প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যায়, অভিবাসন কর্মকর্তারা তাদের জিনিসপত্র পরীক্ষা করছেন এবং তাদের হাত বাঁধা রয়েছে।

এ ঘটনায় দুই ভাইয়ের কাছ থেকে মন্তব্য না পাওয়া গেলেও তাদের আইনজীবী আদালতে বলেন, তাদের এভাবে আটক করা ‘উইচ হান্ট’-এর শিকার বানানোর মতো হয়ে যাচ্ছে।

সিনিয়র অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ মীর আরও বলেন, দুই ভাই ব্যবসায়ী। তারা সেই ধরনের ব্যক্তি নন, যারা ৫০০০ কোটি টাকার প্রতারণা করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।

গত রোববার ভোরে ওই ক্লাবে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার মুহূর্তটিতে ক্লাবের জনপ্রিয় আয়োজন ‘বলিউড ব্যাঞ্জার নাইট’ উপভোগ করছিলেন প্রায় ১০০ পর্যটক। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মঞ্চে একজন নৃত্যশিল্পী বলিউডের বিখ্যাত গান ‘মেহবুবা ও মেহবুবা’-র তালে নাচছিলেন। হঠাৎই মঞ্চের পেছনে থাকা কনসোলের ওপর আগুনের শিখা দেখা যায়।

আগুন যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে শুরু করে, তখনই টনক নড়ে শিল্পী ও দর্শকদের। আগুনের শিখা বাড়তে থাকলে সংগীতশিল্পী, নৃত্যশিল্পী এবং দর্শকেরা আতঙ্কে চারদিকে সরে যেতে থাকেন।

মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই আগুন ক্লাবের ছাদজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই এই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ২৫ জন। বেশির ভাগ নিহতই ছিলেন ক্লাবের কর্মী আর পাঁচজন ছিলেন পর্যটক। আহত হন আরও ৬ জন। তদন্তকারীদের ধারণা, ক্লাবের ভেতরে আতশবাজি ফোটানোর কারণেই আগুনের সূত্রপাত হয়।


মিয়ানমারে হাসপাতালে জান্তার বিমান হামলা, নিহত ৩৩

হামলাকে যুদ্ধাপরাধ উল্লেখ করে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি আরাকান আর্মির
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ম্রাউক-ইউ শহরে একটি হাসপাতালে সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ৭৬ জন। আরাকান আর্মি ও স্থানীয়দের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতি।

এদিকে, বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছানো সাহায্যকর্মী ওয়াই হুন অং বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, জান্তা সরকার ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন করতে চায়। অথচ এমন সময়ে নির্মমভাবে মানুষ হত্যা করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে ম্রাউক-ইউ জেনারেল হাসপাতাল লক্ষ্য করে সামরিক বিমান থেকে ৫০০ পাউন্ডের দুটি বোমা ফেলা হয়। একটি বোমা রোগীদের ওয়ার্ডে ও অপরটি হাসপাতালের ফার্মেসিতে আঘাত করে।

আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইং থুখা জানান, নিহতদের মধ্যে ১৬ জন পুরুষ ও ১৭ জন নারী। এক মাস বয়সি এক শিশুও রয়েছে। মরদেহের অবস্থা খারাপ হওয়ায় কয়েকজনের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এছাড়া আহতদের মধ্যে ২৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান আরাকান আর্মির মুখপাত্র।

খাইং থুখা বলেন, ‘নিহতদের বেশিরভাগই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী ছিলেন। রাখাইনে প্রায় সব যুদ্ধে হেরে যাওয়ার কারণে জান্তা বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বোমা হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে।’

এ হামলাকে যুদ্ধাপরাধ উল্লেখ করে জান্তাদের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।

হামলায় স্ত্রী, পুত্রবধূ ও বাবাকে হারিয়েছেন ৬১ বছর বয়সি মং বু। তিনি এএফপিকে বলেন, ‘কেউ একজন আমাকে জানায় হাসপাতালে বোমা হামলা হয়েছে। ওই সময় ওইখানে আমার পরিবার ছিল। আমি বুঝতে পারি কেউ আর বেঁচে নেই।’

আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারে জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে জান্তা সরকার। তবে এ নির্বাচন কেবলমাত্র তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে হচ্ছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, রাখাইনে ১৭টি শহরের মধ্যে ৩টি বাদে বাকি সবগুলো আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে মিয়ানমারে সংঘাত চলছে।

সম্প্রতি, জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিমানবাহিনী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে হামলার মাত্রা বাড়িয়েছে। আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী—২০২৪ সালে মিয়ানমারে বিমান হামলার ঘটনা ছিল ১ হাজার ৭১৬টি। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত বিমান হামলা হয়েছে ২ হাজার ১৬৫টি।

২০২৩ সালে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টি থেকে সামরিক বাহিনীকে বিতাড়িত করে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আইসিইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, আরাকান আর্মি বর্তমানে বেলজিয়ামের চেয়েও বড় একটি এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে।


পাকিস্তানে ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ সাবেক গোয়েন্দা প্রধান ফাইজ হামিদের ১৪ বছরের কারাদণ্ড

আপডেটেড ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:৩৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআই-এর সাবেক মহাপরিচালক ফাইজ হামিদকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির সামরিক আদালত। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, সাবেক এই গোয়েন্দা প্রধানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁস, ক্ষমতার অপব্যবহার, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা এবং ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে অন্যদের ক্ষতি করার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল। দীর্ঘ ও বিস্তারিত আইনি প্রক্রিয়ার পর পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টের একাধিক ধারা ভঙ্গের দায়ে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের নথি অনুযায়ী, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে একটি বেসরকারি রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছিলেন বলেও প্রমাণিত হয়েছে।

ইমরান খান সরকারের সময় অত্যন্ত প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত ফাইজ হামিদকে একসময় সেনাপ্রধান পদের অন্যতম শক্তিশালী দাবিদার মনে করা হতো। তবে ইমরান খানের ক্ষমতাচ্যুতির কিছুদিন পরই তিনি আগাম অবসরে যান। আদালতের এই রায়ের ফলে তাকে সব ধরনের সামরিক পদবি ও মর্যাদা থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক কাঠামোতে আইএসআই প্রধানের পদটিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর হিসেবে বিবেচনা করা হয়, আর সেই পদে থাকা ব্যক্তির এমন শাস্তি নজিরবিহীন ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।


গোয়ায় অগ্নিকাণ্ড: দেশ ছেড়ে পালিয়েও রক্ষা হলো না, থাইল্যান্ডে গ্রেফতার ক্লাবের দুই মালিক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের পর্যটন নগরী গোয়ার একটি নাইটক্লাবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৫ জন নিহতের ঘটনায় পলাতক দুই মালিককে অবশেষে থাইল্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত নাগেশ সিং বিবিসিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতদের খুব শীঘ্রই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভারতে ফেরত পাঠানো হবে।

অভিযুক্ত দুই ভাই, গৌরব লুতরা ও সৌরভ লুতরা, গোয়ার ‘বার্চ বাই রোমিও লেন’ নামক নাইটক্লাবটির মালিক। গত রবিবার ভোরে ক্লাবটিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তদন্তকারীদের প্রাথমিক ধারণা, ক্লাবের ভেতরে আতশবাজি বা ফায়ারওয়ার্কস ব্যবহারের কারণেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল। এ মর্মান্তিক ঘটনায় ২৫ জন প্রাণ হারান, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন ক্লাবের কর্মী এবং পাঁচজন পর্যটক। দুর্ঘটনার পরপরই দুই ভাই দেশ ছেড়ে পালিয়ে থাইল্যান্ডের ফুকেট দ্বীপে আশ্রয় নেন।

তদন্তকারীরা জানান, অগ্নিকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টা পরেই পুলিশ অভিযুক্তদের দিল্লির বাড়িতে অভিযান চালায়, কিন্তু ততক্ষণে তারা দেশত্যাগ করেন। এরপর তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া হয়। এদিকে গ্রেফতারের ঠিক একদিন আগেই দিল্লির একটি আদালত তাদের গ্রেফতারি পরোয়ানা থেকে আইনি সুরক্ষা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পাশাপাশি গোয়া সরকার তাদের পাসপোর্ট বাতিলের জন্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছিল। যদিও অভিযুক্ত দুই ভাই জনসমক্ষে কোনো মন্তব্য করেননি, তবে আদালতে তাদের আইনজীবী দাবি করেছেন যে, তাদের মক্কেলদের অন্যায়ভাবে এই ঘটনার বলির পাঁঠা বানানো হচ্ছে।


সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল বুলগেরিয়া: অনাস্থা ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দুর্নীতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বুলগেরিয়া। বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানী সোফিয়াসহ কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। আন্দোলনকারীরা অভিনব কায়দায় পার্লামেন্ট ভবনের দেয়ালে লেজার প্রজেকশনের মাধ্যমে ‘পদত্যাগ’, ‘মাফিয়া আউট’ এবং ‘সুষ্ঠু নির্বাচন’-এর মতো স্লোগান ফুটিয়ে তোলেন।

এমন এক সময়ে দেশটিতে এই বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে, যখন আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বুলগেরিয়া ইউরোকে তাদের সরকারি মুদ্রা হিসেবে গ্রহণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মধ্যেই আজ বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী রোজেন ঝেলিয়াজকভের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের আয়োজন করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো অনাস্থা ভোটের মুখোমুখি হচ্ছে বর্তমান সরকার। বিগত চার বছরে দেশটিতে সাতবার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার সর্বশেষটি ছিল ২০২৪ সালের অক্টোবরে। দীর্ঘদিনের এই রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভাজন দেশটিকে গভীর সংকটে ফেলেছে।

বিক্ষোভকারীরা মূলত বিচার বিভাগের সংস্কার ও মাফিয়া দমনের দাবি জানাচ্ছেন। সোফিয়ার বাসিন্দা ৬৪ বছর বয়সী আন্দোলনকারী ডোবরি লাকভ বলেন, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার হলে দেশের বাকি সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে। তিনি বিশ্বাস করেন, জনগণের শক্তি সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবে। অন্যদিকে, আইটি বিশেষজ্ঞ অ্যাঞ্জেলিন বাহচেভানোভ বলেন, বুলগেরিয়ায় স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার এবং অভিজাততন্ত্র ও মাফিয়ার হাত থেকে দেশকে মুক্ত করার সময় এখনই।

এর আগে গত সপ্তাহে তীব্র জনরোষের মুখে সরকার ২০২৬ সালের বাজেট পরিকল্পনা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়। উচ্চতর রাষ্ট্রীয় ব্যয়ের অর্থায়নের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা ও লভ্যাংশের ওপর কর বৃদ্ধির সরকারি পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলো তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। সরকার বাজেটের বিষয়ে পিছু হটলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা ও রাজপথের আন্দোলন থামছে না।


banner close