ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৮৮ জন নিহত এবং ৮০৩ জন আহত হয়েছেন। রেল কর্মকর্তাদের বরাতে শনিবার সর্বশেষ এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জনিয়েছে গত আহতদের মধ্যে অন্তত ৫৬ জন মারাত্মকভাবে জখম হয়েছেন। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের এক যাত্রী টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, তিনি ২০০-৩০০ মরদেহ দেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। তিনি বলেছেন, এই দুর্ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
এদিকে ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ এক প্রাথমিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, সিগন্যালের ত্রুটির কারণে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রাজ্যটির বালেশ্বর জেলায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেন আরেকটি ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় পণ্যবাহী আরও একটি ট্রেনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সাম্প্রতিককালে ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক ট্রেন দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি। বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং একটি পণ্যবাহী ট্রেন এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এক টুইটে বলেছেন, এ দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং আহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে।
ভয়াবহ এ ট্রেন দুর্ঘটনায় এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এ দুর্ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারের জন্য দুই লাখ এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করমণ্ডল এক্সপ্রেসটি ছিল ২৩ কামরার ট্রেন। তার অন্তত ১৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। দুর্ঘটনায় মালগাড়ির ওপরে উঠে পড়ে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন। একাধিক কামরা দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
তুবড়ে যাওয়া ট্রেনের বগি সরিয়ে, বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া রেললাইন সারিয়ে আবার কবে পরিসেবা স্বাভাবিক হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। দক্ষিণ ভারতগামী বহু ট্রেন এই দুর্ঘটনার জেরে বাতিল করতে হয়েছে।
কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে নয়াদিল্লির এজেন্টদের সম্ভাব্য সম্পৃক্ততার তদন্তে ভারত সরকার কানাডার সঙ্গে কাজ করবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শিখ নেতা হত্যার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান স্পষ্ট করেন। তিনি বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, সেগুলো নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এ তদন্তে কানাডার সঙ্গে ভারতের কাজ করা জরুরি। আমরা জবাবদিহি দেখতে চাই। আমরা আমাদের কানাডিয়ান সহকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি। কেবল পরামর্শই নয়, এ বিষয়ে আমরা তাদের সঙ্গে সমন্বয়ও করছি।’
এর আগে ট্রুডো দাবি করেছেন, কানাডার কাছে শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার সঙ্গে ভারতীয় এজেন্টদের যুক্ত থাকার বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। এ ঘটনার পর নয়াদিল্লি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। ট্রুডো বলেন, ‘আমরা ভারতের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করতে চাই। আশা করি তারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত হবে, যাতে আমরা তদন্তের গভীরে যেতে পারি।’
কানাডার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কী প্রমাণ সংগ্রহ করেছে, সে সম্পর্কে ট্রুডো কোনো তথ্য দেননি, তবে কানাডা সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্যের ওপর আস্থা না থাকলে ট্রুডো প্রকাশ্যে কথা বলতেন না। শিখ নেতা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড ঘিরে কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। কানাডা খালিস্তানপন্থি আন্দোলনকারীদের সমর্থন করে তাদের আশ্রয় দেয় বলে অভিযোগ ভারতের। গত ১৮ জুন কানাডায় খলিস্তানপন্থি আন্দোলনকারী শিখ নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। তিনি ছিলেন খালিস্তানপন্থি সংগঠন ‘খালিস্তান টাইগার ফোর্স’ বা কেটিএফের প্রধান।
কাশ্মীর নিয়ে জাতিসংঘে সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহানের মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে ভারত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, সৌদি আরবের সঙ্গে সমীকরণ বদলেছে ভারতের। সম্প্রতি ভারতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের সময় দুই দেশের মধ্যে আটটি চুক্তি হয়েছে। প্রস্তাবিত ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক করিডরেও অংশীদার সৌদি আরব। কিন্তু কাশ্মীর নিয়ে পুরোনো অবস্থান বদলানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে না রিয়াদ। বরং জাতিসংঘের অধিবেশনের ফাঁকে ওআইসি গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোর কাশ্মীর-সংক্রান্ত গোষ্ঠীর বৈঠকে কথা বলে ভারতকে অস্বস্তিতে ফেলেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল। তিনি কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ‘মধ্যস্থতা’ করার চেষ্টার কথা বলায় দিল্লির অস্বস্তি আরও বেড়েছে।
জাতিসংঘের সাধারণ সভার অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে গেছেন ফয়সাল। সেখানে তিনি ওআইসি গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোর কাশ্মীর গোষ্ঠীর বৈঠকে যোগ দেন। ওই বৈঠকে তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর এশিয়ার ওই এলাকার নিরাপত্তার পক্ষে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সৌদি আরব সব সময়ই ওই সমস্যা মেটাতে দুপক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে।’ তিনি বলেন, ‘মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিজেদের পরিচিতি রক্ষার লড়াইয়ে সৌদি আরব সব সময়ই তাদের পাশে রয়েছে। কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।’ ওই বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জলিল আব্বাস গিলানি দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান পরিস্থিতির কথা কাশ্মীর-সংক্রান্ত গোষ্ঠীকে জানান।
সিগারেট নিষিদ্ধ করতে পারে যুক্তরাজ্য। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করার চিন্তাভাবনা করছেন, যাতে যুক্তরাজ্যে তরুণ প্রজন্ম আর সিগারেট কিনতেই পারবে না। ব্রিটিশ সরকারের সূত্রের বরাতে গত শুক্রবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ কথা জানায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, গত বছর নিউজিল্যান্ড সরকার সিগারেটবিরোধী পদক্ষেপ নেয়। দেশটিতে ধূমপানবিরোধী নতুন আইনে বলা হয়, ২০০৯ সালের ১ জানুয়ারির পরে যারা জন্মেছেন, তাদের কাছে কোনো ধরনের সিগারেট বিক্রি করা যাবে না। সুনাকও নিউজিল্যান্ড সরকারের পথেই হাঁটতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সরকারের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা চাই আরও বেশি মানুষ ধূমপান ছেড়ে দিক। ২০৩০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্য ধূমপানমুক্ত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে । সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য নাগরিকদের সিগারেট ছাড়তে নানাভাবে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাজ্য সরকার সিগারেট ছাড়ানোর জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা যাতে সিগারেট ত্যাগ করেন, তার জন্য তাদের নানা রকম প্রকল্পে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হচ্ছে।’
অবশ্য ব্রিটিশ সরকারের ওই মুখপাত্র দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনের বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। যুক্তরাজ্যে আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন হতে পারে। ভোটারদের মন জয়ে বিভিন্ন জনমুখী পদক্ষেপ নিতে পারে সুনাক সরকার। গত মে মাসে খুচরা বিক্রেতারা শিশুদের হাতে বিনা মূল্যে ই-সিগারেট দিলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার।
এ ছাড়া গত জুলাই মাসে পরিবেশগত ও স্বাস্থ্য- উভয় ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ২০২৪ সালের মধ্যে একক-ব্যবহারযোগ্য ভ্যাপ বিক্রি নিষিদ্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের বিভিন্ন কাউন্সিল।
ইরানের রাজধানী তেহরানে গতকাল শুক্রবার এক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে সামরিক অস্ত্রের প্রদর্শনী করা হয়। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, এসব অস্ত্রের মধ্যে ‘বিশ্বের সবচেয়ে দূরপাল্লার’ ড্রোনও রয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের ৪৩তম বাষির্কী উপলক্ষে গতকাল সামরিক কুচকাওয়াজ করে ইরান। এতে ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট অংশ নিয়েছে। হাইপারসনিক ও ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শন করেছে ইরান। ইরানের গণমাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে নতুন ড্রোনের পর্দা উন্মোচন করা হয়। সেখানে মোহাজের, শাহেদ ও আরশ নামে তিনটি ড্রোনের প্রদর্শনী করা হয়। এই ড্রোন সম্পর্কে ইরানের সামরিক সূত্রগুলো বলেছে, এই ড্রোন একই সঙ্গে কয়েকটি লক্ষ্যবস্তুকে চিহ্নিত করে সেগুলোতে একই সময়ে আঘাত হানতে সক্ষম। স্থিতিশীল লক্ষ্যবস্তুর পাশাপাশি চলমান লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে এই আত্মঘাতী ড্রোন।
জাম্বিয়ায় প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাচীন একটি কাঠের শিল্পকর্ম আবিষ্কার করেছেন, যা প্রায় অর্ধ মিলিয়ন (পাঁচ লাখ) বছর পুরোনো বলে ধারণা করা হচ্ছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাম্বিয়ার একটি নদীর তীরে পাওয়া ওই শিল্পকর্মটি সাধারণ কাঠামোর কাঠের ওপর তৈরি। দুটি কাঠের লগ দিয়ে জোড়া লাগানো ক্যানভাসে ফুটে উঠেছে শিল্পীর হাতের কাজ।
এ ব্যাপা যুক্তরাজ্যের অ্যাবেরিস্টউইথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পৃথিবী বিজ্ঞানের অধ্যাপক জিওফ ডুলার বলেন, ‘আধা মিলিয়ন বছর ধরে শিল্পকর্মটি যে স্থানে ছিল সেখানেই রয়ে গেছে। সবচেয়ে অসাধারণ বিষয় এই যে, সেটি এখনো অক্ষত রয়েছে।’
২০১৯ সালে যে দলটি এ শিল্পকর্ম আবিষ্কার করে তার সদস্য ছিলেন অধ্যাপক জিওফ ডুলার। প্রস্তর যুগের মানুষ যে যাযাবর ছিলেন, সে ধারণাটিকে নতুন আবিষ্কৃত এ শিল্পকর্মটি চ্যালেঞ্জ করছে বলে জানান ডুলার।
এর আগে পাওয়া সবচেয়ে প্রাচীন কাঠের শিল্প নিদর্শনটি (চরা এবং শিকারের জন্য কাঠের সরঞ্জাম) প্রায় ৪ লাখ বছর আগের বলে দাবি গবেষকদের। আর সবচেয়ে পুরোনো কাঠের শিল্পকর্ম হিসেবে পরিচিত যে শিল্পকর্মটি (পালিশ করা তক্তার পুরোনো টুকরা), তা প্রায় ৭ লাখ ৮০ হাজার বছর পুরোনো বলে দাবি গবেষকদের।
ভারতের মণিপুর রাজ্যে পাঁচ যুবকের মুক্তির দাবিতে থানায় হামলার চেষ্টা করেছে স্থানীয় বিক্ষোভকারীরা। নিরাপত্তা জোরদার করতে তাই আবারও কারফিউ জারি করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, পাঁচ যুবকের মুক্তির দাবিতে গত কয়েক দিন ধরেই মণিপুর রাজ্যের রাজধানী ইম্ফলসহ বেশকিছু জায়গায় নতুন করে মেইতেইদের বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। তাদের নারী সংগঠন মীরা পাইবিস এবং ইম্ফলের ছয়টি স্থানীয় ক্লাবের নেতৃত্বে পূর্ব এবং পশ্চিম ইম্ফলে থানাগুলোর সামনে বিক্ষোভ দেখান মেইতেই সম্প্রদায়ের হাজারো মানুষ। গত বৃহস্পতিবার সেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একের পর এক থানা ঘেরাও করে হামলার চেষ্টা চালায় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, বিক্ষোভকারীরা পূর্ব ইম্ফলের আন্দ্রো ও প্যারোম্পেট থানা এবং ইম্ফলের পশ্চিমের জেলা সিংজাম, কোয়াকিথেল এবং মায়াং পুলিশ ফাঁড়িতে আক্রমণের চেষ্টা করে। জবাবে পুলিশও বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। অন্যদিকে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, পাঁচ যুবককে কোনো অভিযোগ ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর ঘটনার প্রতিবাদ জানাতেই তারা থানা ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছিল। পরিস্থিতি শান্ত করতে ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে রাজ্য সরকার পূর্ব ইম্ফল ও পশ্চিম ইম্ফলের জেলাগুলোতে পূর্ণরূপে কারফিউ জারি করেছে। এ ছাড়া নিরাপত্তাবাহিনী ও থানাগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের মে মাসের শুরু থেকে মণিপুর রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে জাতিগত সহিংসতা। এখন পর্যন্ত চলমান সংঘাতে দেড় শতাধিক প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের এম-১ আব্রামস ট্যাংকের প্রথম চালান আগামী সপ্তাহে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পৌঁছবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আরও ৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই প্যাকেজে আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, বিতর্কিত ক্লাস্টার বোমা, ট্যাংকবিধ্বংসী অস্ত্রসহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম রয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানায়, মার্কিন প্রেডিডেন্ট জো বাইডেন গত বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর বাইডেন ইউক্রেনে নতুন সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেন। অন্যদিকে বাইডেনের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়ার আশ্বাস নিশ্চিত করে ওই রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় যাত্রা করেন জেলেনস্কি।
সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানায়, কিয়েভ এটিওসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র চাইলেও ওয়াশিংটন আপাতত সেই অনুরোধ মানতে নারাজ। মোটকথা রাশিয়ার হামলা প্রতিহত করতে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহে আপত্তি না থাকলেও রাশিয়ার ভূখণ্ডের ওপর সক্রিয় হামলার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্রের প্রশ্নে আরও সতর্কতা অবলম্বন করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব। তাই প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম এটিওসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র প্রশ্নে ওয়াশিংটনের সংশয় এখনো কাটছে না। তা সত্ত্বেও প্রায় ৫৭৫ দিনের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এখনো পর্যন্ত মোট চার হাজার ৩৯০ কোটি ডলার অঙ্কের সামরিক সহায়তা ইউক্রেনকে দিয়ে এসেছে, যা অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় সবচেয়ে বেশি।
কানাডায় জেলেনস্কির সফর
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তার দেশের প্রতি সমর্থন জানাতে অঘোষিত সফরে গত বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় পৌঁছেছেন।
কানাডিয়ান টিভিতে দেখা গেছে, জেলেনস্কি অটোয়ায় তার বিমান থেকে নামার সময় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো তাকে শুভেচ্ছা জানান।
যাত্রা করল শস্যবোঝাই জাহাজ
ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দর থেকে যাত্রা করেছে শস্যবোঝাই বড় জাহাজ। ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী গতকাল শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত জুলাইয়ে রাশিয়া শস্য রপ্তানি চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এটিই ইউক্রেনের শস্যবোঝাই সবচেয়ে বড় জাহাজের কৃষ্ণসাগর যাত্রা।
গত বছর জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির সুযোগ দিতে নৌঅবরোধ তুলে নেয় রাশিয়া। কিন্তু কয়েক দফা শস্যচুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর পর গত জুলাইয়ে নিজেদের সরিয়ে নেয় রাশিয়া। এরপর কৃষ্ণসাগরের পশ্চিম উপকূলকে করিডর হিসেবে ব্যবহারের ঘোষণা দেয় কিয়েভ। ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী জানান, নতুন জাহাজটি ১৭ হাজার ৬০০ টন গম নিয়ে মিসরের উদ্দেশে যাত্রা করেছে।
গুতেরেস-লাভরভ বৈঠক
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ইউক্রেন সংঘাত ও যুক্তরাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতা-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে এক বৈঠকে আলোচনা করেছেন। মহাসচিবের প্রেস সার্ভিসের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউক্রেনের যুদ্ধের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা ভবিষ্যতের শীর্ষ সম্মেলন ও আয়োজক দেশের বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।
চীন ভিসা না দেয়ায় এশিয়ান গেমস থেকে নাম প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন ভারতের অরুণাচল প্রদেশের তিন খেলোয়াড়। এ ঘটনায় চীনকে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারত।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, চীনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার ভারতের রয়েছে। প্রসঙ্গত, ভিসা নিয়ে টালবাহানার জেরে নির্ধারিত সময়ের অনেক দেরিতে হ্যাংঝৌ পৌঁছায় ভারতের ফুটবল দল।
অরুণাচল প্রদেশের বাসিন্দা তিন খেলোয়াড়ের ভিসার আবেদনে সিলমোহর দেয়নি চীন প্রশাসন। ফলে এশিয়ান গেমসের আয়োজকদের তরফে ছাড়পত্র পেলেও চীনে প্রবেশাধিকার মেলেনি তাদের। বাধ্য হয়ে তিন খেলোয়াড়কে ছাড়াই চীনে পৌঁছেছে ভারতীয় দল।
এদিকে এশিয়ান গেমসে নামার যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অরুণাচলের তিন খেলোয়াড় বাদ পড়ার খবরে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘ভারতীয় নাগরিকদের বাসস্থান বিচার করে বৈষম্যমূলক আচরণ একেবারে মেনে নেয়া হবে না। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অখণ্ড অংশ ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। বেছে বেছে কয়েকজন ভারতীয় ক্রীড়াবিদকে আটকে দেয়া হয়েছে। এমন আচরণের জন্য দিল্লি ও বেইজিংয়ে চীনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করা হয়েছে। এশিয়ান গেমসের আদর্শেরও বিরোধিতা হয়েছে এই কাজে।’
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে চীনকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, চীনের এই কাজের প্রতিবাদ জানানোর জন্য চীন সফর বাতিল করেছেন ভারতের ক্রীড়ামন্ত্রী। সেই সঙ্গে কড়া বার্তা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘দেশের স্বার্থ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অধিকার রয়েছে ভারতের।’
ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জর হত্যার ঘটনায় ভারতীয় এজেন্টরা জড়িত বলে আবারও অভিযোগ তুলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, নিজ্জর হত্যার প্রমাণ কানাডা ফাঁস করবে না।
বিবিসি জানায়, গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ট্রুডো ভারতের বিরুদ্ধে তার অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, কানাডার মাটিতে কানাডীয় নাগরিক শিখ নেতা নিজ্জর হত্যায় ভারতীয় সরকারের এজেন্টদের জড়িত থাকার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
বিবিসি জানায়, গত ১৮ জুন কানাডায় খলিস্তানপন্থি আন্দোলনকারী শিখ নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর খুন হন। তিনি ছিলেন খলিস্তানপন্থি সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ বা কেটিএফের প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান। দুই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী ৪৬ বছরের নিজ্জরকে গুলি করে খুন করেন। শুরু থেকেই কানাডা সরকারের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘হাত’ রয়েছে। গত সোমবার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে প্রথম ভারতের এজেন্টদের জড়িত থাকার ব্যাপারে সরাসরি অভিযোগ তোলেন ট্রু়ডো। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করে ট্রুডো সরকার। এদিকে, ভারত কানাডার এ অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ‘কানাডা যে অভিযোগ করেছে, কিন্তু আমাদের মনে হয়েছে, এ অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা মনে করি, তাদের অভিযোগ পক্ষপাতপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘অভিযোগ করার আগে বা পরে কানাডা কোনো তথ্যপ্রমাণ ভারতকে দেয়নি। আমরা বলেছি, কোনো নির্দিষ্ট তথ্য পেলে দেখব। এখনো কিছু পাইনি। আমাদের তরফ থেকে কানাডাকে কিছু ব্যক্তির ভারতবিরোধী কাজের নির্দিষ্ট তথ্য দিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।’
অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘আমরা আমাদের বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে এ বিষয়সহ নানা বিষয়ে কথা বলেছি এবং বলছি। আমরা আমাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছি।'
শিখ নেতা নিজ্জর হত্যাকাণ্ড ঘিরে কানাডার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। কানাডা খালিস্তানপন্থি আন্দোলনকারীদের সমর্থন করে তাদের আশ্রয় দেয় বলে অভিযোগ ভারতের। ভারত গত বুধবার বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং দুষ্কৃতি নেটওয়ার্কে জড়িত ৪৩ জনের তালিকা কানাডা সরকারকে পাঠিয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, ভারতে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় থাকা অনেকেই কানাডায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, কানাডায় বহু ভারতীয় বাস করেন। দেশটির মোট জনসংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখ। তার মধ্যে অন্তত ১৪ লাখ ভারতীয় আছেন। উচ্চশিক্ষা কিংবা চাকরির সূত্রে ভারত থেকে তারা কানাডায় গেছেন। কানাডায় প্রবাসী ভারতীয়ের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩.৭ শতাংশ। কানাডায় প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যে অনেকেই শিখ ধর্মাবলম্বী। সেখানে ৭ লাখ ৭০ হাজার শিখ রয়েছেন, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশ। ভারতে শিখদের অনুপাত কানাডার চেয়ে কম। ভারতের মোট জনসংখ্যার বিচারে শিখদের সংখ্যা মাত্র ১.৭ শতাংশ। কানাডায় জাস্টিন ট্রুডোর সরকার গঠনে শিখদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। শিখরা কানাডার রাজনীতিতেও যথেষ্ট সক্রিয়। কানাডার হাউস অব কমন্সে ১৮ জন শিখ সাংসদ রয়েছেন। শতাংশের বিচারে যা ভারতের চেয়েও বেশি। তাই ট্রুডো বা কানাডার কোনো রাজনৈতিক দলই শিখদের চটাতে চান না।
ফক্স করপোরেশন ও নিউজ করপোরেশন থেকে অবসর নিতে যাচ্ছেন মিডিয়া মোগল হিসেবে বিশ্বখ্যাত গণমাধ্যম ব্যবসায়ী রুপার্ট মারডক। ছেলে লাকলান মারডক স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন তার জায়গায়। নভেম্বরেই এ দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে বলে বৃহস্পতিবার ঘোষণা দেয়া হয়। খবর বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমসের।
৯২ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত এ আমেরিকান ব্যবসায়ী মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর চেয়ারম্যানের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে গণমাধ্যম ব্যবসায় তার ৭০ বছরের দীর্ঘ পরিক্রমা শেষ হতে যাচ্ছে।
ফক্স করপোরেশন ও নিউজ করপোরেশন পৃথক বিবৃতিতে বিষয়টি জানিয়েছে।
রুপার্ট মারডকের অবসরের পর লাকলান মারডক একই সঙ্গে ফক্স করপোরেশন ও নিউজ করপোরেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। অবশ্য তিনি আগে থেকেই ফক্স করপোরেশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
তবে অবসর নিলেও একেবারেই দায়িত্ব থেকে সরে যাচ্ছেন না রুপার্ট। প্রতিষ্ঠানগুলোর ইমেরিটাস চেয়ারম্যান হিসেবে থাকবেন তিনি।
এবিসি, সিবিএস এবং এনবিসিকে চ্যালেঞ্জ করা রুপার্ট মারডক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং নিউইয়র্ক পোস্টেরও মালিক।
রেললাইনের ইঁদুর দমন করতে একেবারে নাজেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে ভারতের উত্তর প্রদেশে। একটা ইঁদুর ধরতেই গড়ে খরচ পড়েছে ৪১ হাজার রুপি।
নর্দার্ন রেলের লক্ষ্ণৌ ডিভিশন এমন খরচ করেছে বলে হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিষয়টি ঠিক এমন নয়।
রেল দপ্তরের কাছে তথ্য অধিকার আইনে (আরটিআই) চন্দ্রশেখর গৌর নামে এক ব্যক্তি জানতে চেয়েছিলেন ইঁদুর ধরার খরচের তথ্য।
এরই প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত তারা সব মিলিয়ে ১৬৮টি ইঁদুর ধরেছেন। তাতে তাদের খরচ হয়েছে ৬৯.৫ লাখ রুপি। তার মানে এই হিসাব ধরলে ইঁদুর ধরার খরচ মাথাপিছু ৪১ হাজার রুপি।
তবে ওই ব্যক্তি শুধু লক্ষ্ণৌ ডিভিশন নয়- দিল্লি, আম্বালা, মোরাদাবাদ ফিরোজপুর ডিভিশনের কাছেও জানতে চেয়েছিলেন তথ্য। কিন্তু উত্তর দিয়েছে একমাত্র লক্ষ্ণৌ ডিভিশন।
চন্দ্রশেখর একই সঙ্গে জানতে চেয়েছিলেন ইঁদুর রেলের কী ক্ষতি করে? সেই ক্ষতির পরিমাণটা ঠিক কত? সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য রেল পুরোপুরি দিতে পারেনি। শুধু জানিয়েছে, কত আইটেমের ক্ষতি করে তার হিসাব নেই। এটা নিয়ে মূল্যায়ন করা হয়নি।
আম্বালা ডিভিশন জানিয়েছে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাস থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত তারা ইঁদুর ও পোকামাকড়ের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়েছে। তাতে তাদের খরচ হয়েছে ৩৯.৩ লাখ রুপি। কতগুলো ইঁদুর ধরেছে তার হিসাব তারা দেয়নি।
এদিকে লক্ষ্ণৌ ডিভিশন জানিয়েছে, তথ্যের বিকৃতি করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে বলেছে, মেসার্স সেন্ট্রাল ওয়ারহাউজিং করপোরেশন, গোমতী নগর, লক্ষ্ণৌ পেস্ট অ্যান্ড রোডেন্ট কন্ট্রোল ওয়ার্ক এই কাজটা করেছে।
এতে বলা হয়, আরশোলা দমন করা, ট্রেনের মধ্যে যাতে ইঁদুর না হয় তা খেয়াল রাখা- এসব করা হয়। সে কারণে এই কাজ একটা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা। এটা ঠিক ইঁদুর ধরার বিষয় নয়।
তারা বিবৃতিতে জানিয়েছে, আরশোলা, ইঁদুর, মশাসহ বিভিন্ন পোকামাকড় দমনের জন্য প্রতি বছর ২৩.২ লাখ রুপি খরচ করা হয়। প্রতি বছর ২৫০০০ কোচে এই কাজ করা হয়। সে ক্ষেত্রে প্রতি কোচে ৯৪ টাকা করে খরচ হয়। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
ভারতের লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলোয় নারীদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসনের নিশ্চয়তা রেখে দেশটির লোকসভায় উত্থাপিত ঐতিহাসিক একটি বিল পাস হয়েছে।
বিবিসি জানায়, গত বুধবার কয়েক ঘণ্টাব্যাপী উত্তপ্ত বিতর্কের পর লোকসভায় পাস হয় বিলটি। এখন প্রয়োজন রাজ্যসভার আইনপ্রণেতাদের অনুমোদন। সেখানে বিলটি পাস হলে তা ভারতের রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য চলে যাবে। অনুমোদনের পরই তা আইনে পরিণত হবে। তবে তা বাস্তবায়নের জন্য ভারতে আদমশুমারি সমাপ্তির ওপর অনেকটা নির্ভর করছে।
ভারতের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। কিন্তু সংসদে মাত্র ১৫ শতাংশ এবং রাজ্য বিধানসভাগুলোয় মাত্র ১০ শতাংশ আসনে নারী আইনপ্রণেতা আছেন। ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু নারী আইনপ্রণেতাদের অংশগ্রহণের নিরিখে দেশটি অনেক পিছিয়ে। ১৯৯৬ সালে নারী কোটা বিলটি সর্বপ্রথম প্রস্তাব করা হয়। তবে কয়েক যুগ ধরে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার মুখে এটি অমীমাংসিত অবস্থায় থাকে। লোকসভায় দেয়া ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিলটি পাসের জন্য সংসদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। তিনি ভারতের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় আরও বেশি করে নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেয়ার জন্য বর্তমান লোকসভাকে ‘ঐতিহাসিক আইনসভা’ হিসেবে অভিহিত করেন।
বিলটির পক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৪৫৪ জন এমপি ভোট দেন আর এর বিরোধিতা করেন দুজন এমপি। বিলটির ওপর প্রায় ৮ ঘণ্টা বিতর্ক চলে। কিছু সদস্য বিলের প্রতি সমর্থন জানালেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কংগ্রেসের সাবেক সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী জানান, তার দল প্রস্তাবিত আইন প্রণয়নের বিষয়টিকে সমর্থন করে। তা ছাড়া তিনি এটির দ্রুত বাস্তবায়নেরও দাবি জানান। আইনটি বাস্তবায়নে দেরি হলে তা নারীদের প্রতি অবিচার করা হবে বলেও উল্লেখ করেন সোনিয়া। বেশ কয়েকজন বিরোধী এমপি পিছিয়ে পড়া অন্যান্য শ্রেণির নারীদের জন্য আলাদা কোটা প্রবর্তনের দাবি জানান। এ প্রসঙ্গে গত বুধবার পার্লামেন্টে সোনিয়া গান্ধী বলেন, সরকারের উচিত গোত্রভিত্তিক একটি শুমারি পরিচালনা করা অথবা পিছিয়ে পড়া অন্যান্য শ্রেণির মানুষের একটি তালিকা তৈরি করা। কিছু বিরোধী এমপি অবশ্য এই বিল পাসের প্রক্রিয়াটিকে ক্ষমতাসীন দলের আইওয়াশ হিসেবে বর্ণনা করেন।
আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) এ কথা জানায়।
আল-জাজিরা জানায়, গত আগস্টের মাঝামাঝি পাকিস্তানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠিত হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) সিনেটর আনোয়ারুল হক কাকার। পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে এই নির্বাচন আয়োজন করতে হয। সে হিসাবে, নভেম্বরের শুরুর দিকে পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্বাচনী আসন পুনর্বিন্যাসের কাজের কারণে তা পিছিয়ে যায়।
ইসিপি জানায়, নতুন আসন পূনর্বিন্যাসের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত শেষে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রকাশ করা হবে। এরপর ৫৪ দিনের নির্বাচনী বিভিন্ন প্রক্রিয়া যেমন— মনোনয়ন দাখিল, প্রার্থিতা যাচাইবাছাই ও প্রচারণা কাজ চলবে। সাধারণ নির্বাচনের আচরণবিধি নিয়ে আলোচনার জন্য, আগামী মাসে পাকিস্তানের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একটি বৈঠক করবে বলে জানিয়েছে কমিশন।