বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
৬ আষাঢ় ১৪৩২

জাপান, তাইওয়ানেও চীনের গুপ্তচর বেলুন

আপডেটেড
২৭ জুন, ২০২৩ ২২:৫৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৭ জুন, ২০২৩ ২২:৫৪

শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, জাপান ও তাইওয়ানেও গুপ্তচর বেলুন পাঠিয়েছিল চীন। সেই বেলুনের ছবিও সামনে এল। বিবিসির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, উপগ্রহ ছবি থেকে এই বেলুনের খোঁজ পেয়েছে তারা। তারপর জাপানও এই বেলুনের কথা স্বীকার করেছে। তারা জানিয়েছে, পরবর্তী সময়ে জাপানের আকাশে এ ধরনের বেলুন দেখা গেলে তা গুলি করে নামানো হবে।

সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে জানায়, গত বছর জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে চীনের বেলুন নিয়ে প্রবল হইচই হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করে যে, চীন গুপ্তচর বেলুন পাঠিয়েছিল। চীনের দাবি, বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য, বিশেষ করে আবহাওয়ার বিষয়ে জানতে তারা বেলুন পাঠায়। যুক্তরাষ্ট্র গুলি করে ওই বেলুন ধ্বংস করে। সেখানে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি পাওয়া যায়।

জাপান ও তাইওয়ানের ওপরে যে বেলুন দেখা গেছে, তা ২০২১ সালের শেষদিকে। এই বেলুনের ছবি প্রথম উদ্ধার করে একটি বেসরকারি সংস্থা সিন্থেটেয়িক। তারা উপগ্রহ ছবি বিশ্লেষণ করে বেলুনের ছবি দেখতে পায়। সেটা ছিল জাপানের ওপরে।

তারপর বিবিসির প্যানোরামা টিম খতিয়ে দেখে কোনো কোনো দেশের ওপরে এই ধরনের বেলুন দেখা গেছে। তাইওয়ানের আবহাওয়া দপ্তরের ছবি থেকে তারা এ রকম একটি বেলুনের সন্ধান পায়। তারপর তারা কৃত্রিম মেধার সাহায্য নেয়। সেখানে দেখা যায়, চীনের বেশ ভেতর থেকে বেলুন ছাড়া হয়েছিল। আকারে তা অনেকটি বাসের সমান। তা দ্রুত চলতে পারে।

বিষয়:

গুজরাটে বৃষ্টিপাতে ১৮ জনের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের কিছু অংশে সোমবার থেকে মুষলধারে বৃষ্টিপাতে কমপক্ষে ১৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। রাজ্যের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আহমেদাবাদ থেকে এএফপি জানায়, রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে বাসিন্দাদের সাহায্য করার জন্য দুর্যোগ সহায়তা দল মোতায়েন করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার রাতে রাজ্য সরকার জানায়, ‘বৃষ্টির কারণে ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন, এবং দুর্যোগ সহায়তা দলগুলো নিম্নাঞ্চল থেকে কয়েক ডজন মানুষ উদ্ধার করেছে।’

ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত পালিতানা ও জেসার শহরে গত ২৪ ঘন্টায় ৮৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

রাজ্যের ত্রাণ কমিশনার অলোক কুমার পান্ডে বলেন, ঝড়, বজ্রপাত, প্রতিকূল আবহাওয়া ও কাঠামোগত ধসে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

পান্ডে বলেন, ‘পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত, এবং দ্রুত ত্রাণ ও উদ্ধার অভিযান নিশ্চিত করার জন্য আন্তঃবিভাগীয় সমন্বয় জোরদার করা হচ্ছে।’

উদ্ধারকৃতদের মধ্যে রয়েছে গাধাদা এলাকার আম বাগানে আটকা পড়া ১৮ জন কৃষি শ্রমিক এবং সুরেন্দ্রনগর জেলার ২২ জন, যেখানে নদীর পানি উপচে পড়ায় তাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে।

১.৪ বিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ ভারত জুড়ে প্রতি বছর বর্ষাকালে আকস্মিক বন্যা এবং ভূমিধসের কারণে বিপূল সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারায়।


ইসরায়েলের পর সবচেয়ে বেশি ইহুদি ইরানে

তাদের নিয়ে ভাবছে না নেতানিয়াহু
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল দাবি করে, ইহুদিদের ব্যাপারে তারা সব সময় অন্তর্ভুক্তিমূলক। দেশটিতে নাগরিকত্ববিষয়ক বিধিবিধানের দুটি প্রধান আইন রয়েছে- ১৯৫০ সালের ‘রিটার্ন-ল’ এবং ১৯৫২ সালের ‘নাগরিকত্ব আইন’।

রিটার্ন-ল অনুযায়ী, বিশ্বের যেকোনো ইহুদি বিনা শর্তে ইসরায়েলে অভিবাসনের অধিকার রাখেন এবং তাৎক্ষণিক ইসরায়েলের নাগরিকত্ব লাভ করতে পারেন। অথচ, ইসরায়েলের পর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ইহুদির বাস যেসব দেশে তার মধ্যে অন্যতম ইরানে। এই দেশেই এখনো নির্বিচারে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি নেতানিয়াহু সরকার।

ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাতের উত্তাপে যখন পুরো মধ্যপ্রাচ্য অস্থির, তখন সব মনযোগ ও আলোচনা থেকে উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছেন ইরানে বসবাসরত ইহুদিরা। প্রায় ২ হাজার ৭০০ বছরের পুরোনো ইতিহাসের ধারক এই সম্প্রদায়টি আজও টিকে আছে ইরানের মূলধারার সমাজে। অথচ বর্তমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় তাদের অবস্থান ও উদ্বেগ প্রায় অনুপস্থিত।

বর্তমানে আনুমানিক ১৭ হাজার থেকে ২৫ হাজার ইহুদি নাগরিক ইরানে বাস করছেন, যাদের অধিকাংশের বসবাস তেহরান, ইস্পাহান, শিরাজ, হামেদান ও তাবরিজের মতো শহরে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের বাইরে সবচেয়ে বেশি ইহুদি জনগোষ্ঠী রয়েছে ইরানেই। দেশটির জাতীয় সংসদ ‘মজলিশে’ এই সম্প্রদায়ের জন্য একটি আসন সংরক্ষিত আছে।

ইহুদিদের ধর্মীয় ও সামাজিক অবকাঠামোর উপস্থিতিও ইরানে সুপ্রতিষ্ঠিত। রাজধানী তেহরানে ছড়িয়ে রয়েছে অন্তত ৫০টি সিনাগগ (ইহুদিদের প্রার্থনাগৃহ)। ইস্পাহানে আল-আকসা নামে একটি মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি বিখ্যাত সিনাগগ। ইরানে ইসলাম ও ইহুদি সম্প্রদায়ের দুই ধর্মীয় স্থাপনার পাশাপাশি অবস্থানকে ধর্মীয় সহাবস্থানের প্রতীক হিসেবে দেখা হয়। তেহরানে ইহুদি সম্প্রদায়ের পরিচালিত একটি হাসপাতালও রয়েছে, যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই চিকিৎসাসেবা পেয়ে থাকেন।

ইরানের আবরিশামি সিনাগগের প্রবীণ রাব্বি ইয়োনেস হামামি লালেহজার এক সাক্ষাৎকারে আল-জাজিরাকে বলেছিলেন, ‘আমরা ২ হাজার ৭০০ বছর ধরে ইরানে বসবাস করছি। পারস্য রাজবংশের সময় থেকেই আমাদের ইতিহাস এই ভূখণ্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।’

পশ্চিম ইরানের হামেদান শহরে আজও বিদ্যমান রয়েছে এসথার ও তার চাচা মরদখাইয়ের সমাধি, যারা ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক বর্ণনায় পারস্য সম্রাট জার্শিসের (জেরেক্সেস) রাজত্বকালের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। ইতিহাসের বিভিন্ন সন্ধিক্ষণে ইরান ছিল ইহুদিদের নিরাপদ আশ্রয়। স্পেনের ‘ইনকুইজিশন’ বা ধর্মীয় নিপীড়নের সময় বহু ইহুদি ইরানে আশ্রয় পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইউরোপে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর তাণ্ডব থেকে পলায়নরত বহু ইহুদি আশ্রয় নিয়েছিলেন তেহরানে।

তবে ইরানে ইহুদিদের ইতিহাস শুধু নিরাপদ সহাবস্থান আর ধর্মীয় সহনশীলতার গল্প নয়- এর মধ্যে রয়েছে কিছু কঠিন অধ্যায়ও। সাফাভি (১৬-১৮শ শতক) ও কাজার (১৯শ শতক) শাসনামলে বহু ইহুদিকে জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত হওয়ার চাপের মুখে পড়তে হয়েছিল। এই সময়গুলোতে ধর্মীয় স্বাধীনতা অনেকাংশেই সংকুচিত ছিল। আর ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর রাজনৈতিক পরিবেশের আমূল পরিবর্তনে ইরানে ইহুদিদের অবস্থান আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। তখন নিরাপত্তা, পরিচয় ও ধর্মীয় অধিকার নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে, ফলে বহু ইরানি ইহুদি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মতো দেশে স্থানান্তরিত হন।


ইসরায়েলের ‘পক্ষ’ নিল জি-৭ জোটের নেতারা

জি-৭ জোটের নেতারা, সঙ্গে রয়েছেন ইউরোপীয়ান কাউন্সিল ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে তুমুল সংঘাত চলছে। এই ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্বের উন্নত সাত দেশের জোট জি–৭। কানাডায় চলমান জি-৭ সম্মেলনে জোটটির নেতারা কার্যত ইসরায়েলের পক্ষই নিয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

বিবৃতিতে জোটের নেতারা ‘ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে’ বলে মত দিয়েছেন এবং বলেছেন, আমরা ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি। সেইসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরান ‘আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা এবং সন্ত্রাসের প্রধান উৎস’।

বিবৃতিতে জি-৭ এর নেতারা আরও বলেছেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে স্পষ্ট করে বলেছি যে ইরান কখনই পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে পারবে না। পাশাপাশি ইরান সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছেন নেতারা।

অর্থনীতিতে শীর্ষ শক্তিধর এই জোটটির সদস্য রাষ্ট্রগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, কানাডা ও ইতালি। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সংঘাত পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। যেকোনো সময় এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

এদিকে, বিবিসির লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কিছুক্ষণের জন্য টেলিভিশনটির সম্প্রচার কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলেও পরে সেটি পুনরায় চালু হয়। হামলায় কর্মীদের অনেকেই নিহত ও আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গত শুক্রবার ভোরে ইরানে আকস্মিক ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এর জবাবে ইরানও ইসরায়েলে হামলা চালায়। এরপর থেকে দেশ দুইটির মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছে। ইসরায়েলি হামলায় ইরানে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দুই শতাধিক। নিহতদের মধ্যে দেশটির শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, কমান্ডার ও অন্তত ১১ জন পরমাণুবিজ্ঞানী রয়েছেন। অন্যদিকে ইরানি হামলায় ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা ২০ ছাড়িয়েছে।

’ইরানের পরমাণু অগ্রগতি নিয়ে ইসরায়েলের দাবি সত্য নয়’

ইরানের পরমাণু অগ্রগতি নিয়ে ইসরায়েলের দাবি সত্য নয় বলে গোয়েন্দা তথ্য মূল্যায়নে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইরান-ইসরায়েল চরম সংঘাতের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের এই গোয়েন্দা মূল্যায়ন প্রকাশ্যে এসেছে।

ইসরায়েলের দাবি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছিল, এটি থামাতেই তারা হামলা চালিয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান এখনও পারমাণবিক বোমা বানানোর সক্ষমতা অর্জন থেকে অন্তত তিন বছর দূরে আছে। চারটি স্বতন্ত্র সূত্রের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরান এখনও সক্রিয়ভাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে নেই। বরং তারা মূলত পারমাণবিক গবেষণা ও জ্বালানিভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইসরায়েল সম্প্রতি ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়ে কিছুটা ক্ষতি করলেও তেহরানের মূল ফোর্ডো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র এখনো অক্ষত রয়ে গেছে।

মার্কিন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, ফোর্ডোর মতো সুসংরক্ষিত ভূগর্ভস্থ স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানার জন্য ইসরায়েলের পর্যাপ্ত সামর্থ্য নেই—এর জন্য প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ বোমা ও বি-২ বোমারু বিমান।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য নীতির সাবেক কূটনীতিক ব্রেট ম্যাকগার্ক বলেন, ইসরায়েল এসব স্থাপনা অকার্যকর করতে পারে, তবে পুরোপুরি ধ্বংস করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে সামরিকভাবে জড়াতে হবে বা কূটনৈতিকভাবে কোনও সমঝোতা করতে হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। তিনি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা এতে জড়িত নই। জড়াতে হতে পারে, তবে এই মুহূর্তে নই। তিনি জি-৭ সম্মেলনে থাকা অবস্থায় বলেন, দেরি হওয়ার আগেই ইসরায়েল ও ইরানের উচিত সংলাপে বসা।

সামরিক প্রস্তুতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএস নিমিটজ ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রুপ দ্রুত মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন করা হচ্ছে। এছাড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধে সক্ষম কয়েকটি নৌবাহিনীর জাহাজ পূর্ব ভূমধ্যসাগরের দিকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

তবে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ভিন্ন মূল্যায়নের বিষয়টি নতুন নয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগ ও বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা বহু বছর ধরে ইসরায়েলের সঙ্গে তথ্য ভাগাভাগি করলেও তথ্য বিশ্লেষণে তারা প্রায়ই ভিন্নমত পোষণ করে।

ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড গত মার্চে কংগ্রেসে বলেছিলেন, আমাদের মূল্যায়নে এখনও মনে হয় না যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে বা সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই প্রশ্নে চাপের মুখে পড়া ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফক্স নিউজে বলেন, আমরা যে গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছি, তা খুব পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে—ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরান অস্ত্র-উপযুক্ততার কাছাকাছি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা দিয়ে নয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা যেতে পারে। তবে অস্ত্র তৈরির পাশাপাশি ডেলিভারি সিস্টেম বা বহনের প্রযুক্তি তৈরি করাও দীর্ঘমেয়াদি ও জটিল প্রক্রিয়া।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, ইসরায়েলি হামলা যদি ইরানকে সত্যিই ক্ষতিগ্রস্ত করে, তবে তা হয়তো ইরানকে ভবিষ্যতে অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিকে ঠেলে দিতে পারে—যা এতদিনে তারা নেয়নি। তবে সাম্প্রতিক আঘাতে ইরানের সক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত কাঠামো কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।


ইরানের নাগরিকদের হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলার আহ্বান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ইরানের নাগরিকদের তাদের স্মার্টফোন থেকে মেসেজিং ও ফোন অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলার আহ্বান জানিয়েছে দেশটির সরকার। তেহরানের অভিযোগ, এই অ্যাপ ইসরায়েলে তথ্য পাঠানোর জন্য ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৭ জুন) বিকালে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে নাগরিকদের হোয়াটসঅ্যাপ মুছে ফেলার আহ্বান জানানো হয়। তবে নিজেদের অভিযোগের সপক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থান করেনি তেহরান কর্তৃপক্ষ।

তবে ইরানের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ওই বার্তা সম্প্রচার হওয়ার পরপরই এক বিবৃতিতে হোয়াটসঅ্যাপ জানায়, যে সময়ে মানুষের এই ধরনের সেবা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, ঠিক সেই সময়ে এ ধরনের ভুয়া প্রতিবেদনের তথ্যকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে আমাদের সেবা বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা এটি নিয়ে উদ্বিগ্ন।

তাদের দাবি, হোয়াটসঅ্যাপে এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহৃত হয়। এর মানে হলো কোনো মধ্যবর্তী সেবা প্রদানকারী বার্তাগুলো পড়তে পারে না।

বিবৃতিতে হোয়াটসঅ্যাপ আরও জানায়, তারা ব্যবহারকারীদের সুনির্দিষ্ট অবস্থান অনুসরণ করে না; কাদের মধ্যে বার্তা আদান-প্রদান চলছে, তার তথ্যও রাখে না এবং ব্যক্তিগত বার্তাগুলোও অনুসরণ করে না। কোনো সরকারের কাছে গণহারে তথ্য সরবরাহ করে না বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে হোয়াটস্যাপ।

এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের অর্থ হচ্ছে, বার্তাগুলো এমনভাবে গোপন করা হয় যে কেবল প্রেরক ও প্রাপকই তা পড়তে পারে। কেউ যদি বার্তাটি মাঝপথে ধরে ফেলে, তবে তারা কেবল একটি অসংগঠিত অক্ষরের ঝাঁক দেখতে পাবে যা সঠিক নিরাপত্তা চাবি (Security Key) ছাড়া উদ্ধার (Decode) করা সম্ভব নয়।

তবে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ গ্রেগরি ফ্যালকো বলেন, ‘হোয়াটসঅ্যাপে এমন কিছু মেটাডেটা বোঝা সম্ভব যা এনক্রিপ্ট করা হয় না, এটি ইতোমধ্যেই প্রমাণিত। এতে বোঝা যায়, মানুষ কীভাবে অ্যাপটি ব্যবহার করছে। এই সমস্যাটি দীর্ঘদিনের। এ কারণে অনেকেই হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতে আগ্রহী হন না।’

গ্রেগরি আরও বলেন, “আরেকটি সমস্যা হলো ‘ডেটা সার্বভৌমত্ব’, যেখানে কোনো নির্দিষ্ট দেশের হোয়াটসঅ্যাপের তথ্য হোস্ট করা ডেটা সেন্টারগুলো প্রায়ই সেই দেশে থাকে না। উদাহরণস্বরূপ, এটি পুরোপুরি সম্ভব যে ইরানের হোয়াটসঅ্যাপ তথ্য ইরানে হোস্ট করা হচ্ছে না।”

প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব অ্যালগরিদম ব্যবহার করে তাদের তথ্য দেশেই সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ করা উচিত বলে পরামর্শ দেন তিনি। বৈশ্বিক তথ্য অবকাঠামোর ওপর বিশ্বাস রাখা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন এই বিশেষজ্ঞ।

হোয়াটসঅ্যাপের মালিক মেটা, যেটি ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল কোম্পানি। ইরানে ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপ অন্যতম জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ ছিল।

এর আগেও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্ল্যাটফর্মের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইরান। তবে দেশটির অনেকেই এখনো প্রক্সি ও ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) ব্যবহার করে সেগুলো ব্যবহার করে থাকেন।

২০২২ সালে দেশটিতে নীতি পুলিশের হেফাজতে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ চলাকালে হোয়াটসঅ্যাপ ও গুগল প্লে নিষিদ্ধ করা হয়। যদিও এই নিষেধাজ্ঞা গত বছরের শেষ দিকে তুলে নেওয়া হয়।


তেহরান থেকে বাংলাদেশিদের স্থানান্তর করা হচ্ছে: পররাষ্ট্র সচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইরানের রাজধানীর পরিস্থিতি বিবেচনা করে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশিদের তেহরানের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে, ইরান ছেড়ে (বিমানপথে) যাওয়ার কোনো উপায় নেই। আমরা তাদের (বাংলাদেশিদের) নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের নির্দেশনা দিয়েছি।’

মিশনের কাছে থাকা তহবিল দিয়ে স্থানান্তর প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তারা তেহরানে ৪০০ বাংলাদেশি সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, কারণ তারা মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছেন।

তবে সিদ্দিক বলেন, প্রত্যাবাসন ও স্থানান্তরের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আর্থিক সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং ইরানের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থায় আর্থিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধাও রয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এই কারণেই প্রত্যাবাসন ও স্থানান্তরে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।

সিদ্দিক বলেন, নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিবেচনা করে ইরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইতোমধ্যেই তার বাসস্থান ছেড়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, তেহরানে প্রায় ৪০০ বাংলাদেশি রয়েছেন। এর মধ্যে ১০০ জন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

সিদ্দিক বলেন, নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া এবং আবাসনের খরচ তাদের সরকার বহন করবে। এছাড়া যদি কেউ স্থলপথে ইরান ছাড়তে চায় সেক্ষেত্রে তাদের পাকিস্তান বা তুরস্ক হয়ে বাইরে পাঠানো যাবে কিনা তা তারা খতিয়ে দেখবে। তেহরানে বাংলাদেশ মিশনে ৪০ জন কর্মী রয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা সকল উপায় অনুসন্ধান করছি।’ তারা ইরানসহ বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সহায়তা চাইছেন। এই বিষয়ে মিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।

চ্যান্সেরিটি নিরাপদ নয় এবং এর এক কিলোমিটারের মধ্যে সংবেদনশীল অবকাঠামো (তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র) অবস্থিত। গত কয়েকদিনে এটি ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছিল।

তেহরানের দুটি যোগাযোগ (ইন্টারনেট) কেন্দ্রের মধ্যে একটি চ্যান্সারির খুব কাছে অবস্থিত।

দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মীরা আশঙ্কা করছেন, এই অবকাঠামোগুলোতে যেকোনো আক্রমণের ফলে ক্ষতি হতে পারে।

এদিকে, ইরানে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিক ও বাংলাদেশে তাদের আত্মীয়স্বজনদের জানানো হয়েছে যে, তেহরানে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বর্তমান পরিস্থিতিতে জরুরি যোগাযোগের জন্য একটি হটলাইন চালু করেছে।

ইরানে বসবাসকারী সব বাংলাদেশি নাগরিক ও বাংলাদেশে তাদের আত্মীয়স্বজন জরুরি পরিস্থিতিতে দূতাবাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিম্নলিখিত মোবাইল ফোন নম্বরগুলিতে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবেন। বাংলাদেশ দূতাবাস, তেহরান হটলাইন: +৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা হটলাইন: +৮৮০১৭১২০১২৮৪৭

ইরানে বসবাসকারী বাংলাদেশির সংখ্যা ২০০০ এরও কম এবং তাদের অনেকেই সেখানে বিয়ে করেছেন।


ইসরায়েল-ইরান সংঘাত তীব্রতর হচ্ছে পাল্টাপাল্টি আঘাত

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবের ভবনে আগুন। কাজ করছে দমকল বাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা।  ছবি: সংগৃহীত 
আপডেটেড ১৭ জুন, ২০২৫ ১৩:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘাত ক্রমশই তীব্রতর হচ্ছে। হামলা ও পাল্টা হামলা যেন এক মুহূর্তের জন্যও থেমে নেই। রাতভর দুই পক্ষই নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়তে থাকে। এতে বেসামরিক লোকজন নিহত ও আহত হচ্ছেন।

ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ জানিয়েছে, পশ্চিম ইরানের কেরমানশাহ শহরে ফারাবি হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টারকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এর ফলে হাসপাতালটি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে আইআরএনএ জানায়, স্থানীয় সময় সকাল ৯টার দিকে ইহুদিবাদী সরকার ফারাবি হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টার এবং আশেপাশের ভবনগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলার পর ফারাবি হাসপাতালের বিভিন্ন অংশে মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।

ছবিতে দেখা গেছে, হাসপাতালের ভেতরে রক্তাক্ত মেঝেতে ভাঙা কাঁচ এবং ধ্বংসাবশেষে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

এছাড়া ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। কিছুক্ষণ আগে এই হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সংক্ষেপে প্রচারিত ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম বর্তমানে ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু।’ হামলার বিস্তারিত বা ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ধ্বংস করার ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েল যে হামলাগুলো চালাচ্ছে, তার ফলে চার দিনে তেহরানে কমপক্ষে ২২৪ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৯০ শতাংশই বেসামরিক নাগরিক।

এদিকে গতকাল সোমবার ইরান ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। গতকাল সকালে চালানো ইরানের হামলাকে বলা হচ্ছে এ পর্যন্ত চালানো হামলার মধ্যে সবচেয়ে তীব্র এবং বড় আকারের। ইরানের সর্বশেষ এ হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত এবং বহু আহত হয়েছেন।

চলমান পরিস্থিতি ‘নিরাপদে’ থাকতে অভ্যস্ত তেল আবিবের বাসিন্দাদের এক নজিরবিহীন আতঙ্ক ও উদ্বেগে দিন কাটাতে বাধ্য করেছে। গতকাল সিএনএনের প্রতিবেদনে ইসরায়েলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর তেল আবিবের এই চিত্র ফুটে উঠেছে।

সর্বত্র বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি লক্ষ্য করেন সিএনএনের জেরুজালেম সংবাদদাতা জেরেমি ডায়মন্ড। জেরেমি জানান, তিনি তেল আবিবের রাস্তাগুলোতে ভেঙে পড়া স্থাপনা ও অন্যান্য আবর্জনা দেখতে পেয়েছেন। একটি অবস্থানে চারটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার পর সেখানে উদ্ধারকারী দল ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ধ্বংসস্তূপের ভেতর আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে ব্যস্ত ছিলেন।

এ সময় এক নারী জানান, ঘরের বেসমেন্টে লুকিয়ে থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি ও তার পরিবার। তবে মাটির নিচের বেসমেন্টে থেকেও ‘ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রভাব’ টের পাওয়ার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন ওই নারী।

তিনি আরও বলেন, ‘পোড়া ধোঁয়ার গন্ধ পাচ্ছিলাম…আমি টি-শার্ট দিয়ে নিজের নাক ঢেকে রাখতে বাধ্য হই। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে খেয়াল রাখছিলাম যাতে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ওই ধোঁয়া ফুসফুসে ঢুকে না যায়।’

জানা গেছে, ইসরায়েলের উপর সর্বশেষ ইরানি হামলায় নিহত আটজনের মধ্যে দুইজন নারী। তিনজন পুরুষ এবং উত্তরাঞ্চলীয় হাইফা শহরে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আরও তিনজনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, সোমবার ইরানের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের কয়েকটি স্থান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানকার দমকল বাহিনী জানিয়েছে, ভূমধ্যসাগর উপকূলে একটি আবাসিক ভবন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

সাধারণ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার ঠিক পরপরই সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, হোমফ্রন্ট কমান্ড সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিমগুলোকে ইসরায়েলের এসব ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে পাঠানো হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস বলেছে, উদ্ধারকর্মীরা উপকূলবর্তী একটি ভবনের দিকে যাচ্ছেন, যেটি সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা, মাগেন ডেভিড আদম- এমডিএ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে তাদের দল উপকূলীয় শহর হাইফাতে মোতায়েন রয়েছে এবং সেখানে কয়েকটি গাড়িতে আগুন লেগেছে এবং একটি আবাসিক ভবনের সামনের অংশ বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে।

ইরানের ইসলামিক রেভোলিউশনারি গার্ডস কর্পসের (আইআরজিসি) একজন সিনিয়র কমান্ডার বলেছেন, অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ ৩’-এর মাধ্যমে ইসরায়েলি শাসনব্যবস্থার ওপর যে ক্ষতি হয়েছে, তা শাসকগোষ্ঠীর প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি।

গতকাল সোমবার মেহের নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, এক সাক্ষাৎকারে আইআরজিসির রাজনৈতিকবিষয়ক ডেপুটি কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াদোল্লাহ জাভানি বলেন, শত্রুদের প্রাথমিক আক্রমণের প্রায় ২০ ঘণ্টা পর অপারেশন ‘ট্রু প্রমিজ ৩’ পরিচালিত হয়, যখন ইহুদিবাদী সরকার প্রতিরক্ষামূলক প্রস্তুতির শীর্ষে ছিল। ইরানের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার পূর্বাভাস পেয়ে তারা তাদের সমস্ত বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে এবং এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর আকাশসীমা নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে।

সংঘাত বন্ধে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত পুতিন-এরদোয়ান

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি বন্ধে মধ্যস্থতা করার আগ্রহ দেখিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান। উভয়ই আলাদাভাবে জানিয়েছেন, সংঘাত বন্ধের লক্ষ্যে তারা মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত রয়েছেন।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‌‘সংঘাত নিরসনের জন্য রাশিয়ার আগের প্রস্তাব এখনও বহাল রয়েছে। যদিও পরিস্থিতি এখন আরও জটিল হয়ে পড়েছে।’

সমস্যার সমাধানে রাশিয়া বিবাদমান পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলেও জানিয়েছে ক্রেমলিন।

এদিকে, তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, গতকাল সোমবার রেচেপ তাইপ এরদোয়ান ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।

ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের অবসান ঘটাতে তুরস্ক মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনে প্রস্তুত বলে ইরানকে জানিয়েছেন এরদোয়ান।

তেহরান থেকে সরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ

দখলদার ইসরায়েলের হামলার জেরে ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে সরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, তেহরানের পেট্রোল স্টেশনগুলোতে লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে। অনেক মানুষ শহর ছেড়ে আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

কিন্তু তেহরান থেকে বের হওয়ার রাস্তায় ব্যাপক ট্রাফিক জ্যাম থাকায় অনেকেই যেতে পারেননি।

তেহরান থেকে অন্য একটি প্রদেশে চলে যাওয়া এক ব্যক্তি বিবিসি পার্সিয়ানকে বলেছেন, ‘আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না আমি এখন যুদ্ধক্ষেত্রে আছি। আমি জানি না কখন আমি এর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারব।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই যুদ্ধ আমার যুদ্ধ নয়। আমি অন্য পক্ষেরও না। আমি শুধুমাত্র আমার পরিবারকে নিয়ে বাঁচতে চাই।’

অপর একজন বলেছেন, ‘কোনো না কোনোভাবে সবাই তেহরান থেকে পালানোর চেষ্টা করছে।’

আরেকজন বলেছেন, ‘তেহরান সত্যিই নিরাপদ নয়। ইসরায়েলি হামলা সম্পর্কে আমরা সরকার থেকে কোনো সতর্কতা বা বার্তা পাই না। আমরা শুধুমাত্র বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই এবং আশা করতে থাকি যেন আমাদের জায়গায় যেন কোনো হামলা না হয়। কিন্তু আমরা কোথায় যাব? কোনো জায়গাই নিরাপদ নয়।’

বিবিসি পার্সিয়ানের সাংবাদিক গোনচেহ হাবিবিয়াজাদ জানিয়েছেন, তেহরানের বাসিন্দারা বিভিন্ন ম্যাসেজিং অ্যাপে গ্রুপ খুলেছেন। তারা একে অপরের সঙ্গে সমন্বয় করে রাজধানী ছাড়ার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেছেন, যারা তেহরান ছাড়ার চেষ্টা করছেন তাদের ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কেও এসব গ্রুপে সতর্ক করা হচ্ছে।

তেহরানের আকাশসীমা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের দাবি ইসরায়েলের

ইরানের রাজধানী তেহরানের আকাশসীমায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে আইডিএফ মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন এই দাবি করেন।

আইডিএফ মুখপাত্র বলেন, আমরা তেহরানের ওপর পূর্ণ বিমান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছি। ইরানের এক-তৃতীয়াংশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার ধ্বংস করে দিয়েছি। তাদের বড় অংশের হামলা ব্যাহত করা সম্ভব হয়েছে।

ডেফরিন জানান, গত রোববার রাত ও সোমবার ভোরে ইরান থেকে ইসরায়েলের দিকে দুই ধাপে ৬৫টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ডজনখানেক ড্রোন ছোড়া হয়। এর বেশিরভাগই মাঝপথে ভূপাতিত হলেও তিনটির আঘাতে আটজন নিহত হন।

আইডিএফ মুখপাত্রের দাবি, ইরান ওই রাতে এর দ্বিগুণ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পরিকল্পনা করেছিল। তবে ইসরায়েলি বিমানবাহিনী আগেভাগেই ইরানের অভ্যন্তরে ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্য করে হামলা চালায়। সেগুলো তখনও ছোড়া হয়নি।

আইডিএফ আরও জানায়, প্রায় ৫০টি যুদ্ধবিমান ও ড্রোন একযোগে অভিযান চালিয়ে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র গুদাম, নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র ও সেনাদের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এর মধ্যে অনেকগুলো নিশানা ছিল ইরানের ইস্পাহান শহরে। সেখানেও শতাধিক সামরিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে বলে জানায় ইসরায়েলি বাহিনী।


ইরানে হামলা নিয়ে ট্রাম্প শিবিরে বিভক্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দ্বিতীয় মেয়াদে গত জানুয়ারিতে শপথ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি ‘সব যুদ্ধ বন্ধের’ পক্ষে থাকবেন এবং একজন ‘শান্তির দূত ও ঐক্য প্রতিষ্ঠাকারী’ হিসেবে নিজের উত্তরাধিকার রেখে যাবেন।

কিন্তু মাত্র ছয় মাসের মাথায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছোড়া শুরু হয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র। গত শুক্রবার ভোরে ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে—এমন এক সর্বাত্মক যুদ্ধের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। আর শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকেও এটি সংঘাতে টেনে নিতে পারে।

ইসরায়েলের ওই হামলাকে ট্রাম্প প্রায় প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছেন। ফলে নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার তার প্রতিশ্রুতিই এখন সবচেয়ে বড় পরীক্ষার সম্মুখীন।

ট্রাম্পের এ সমর্থন তার অনুগত রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে, যাদের অনেকে ডানপিন্থি রাজনীতিক ও ভাষ্যকার, বিভক্ত করে ফেলেছে। তারা মনে করছেন, ইসরায়েলকে বিনা প্রশ্নে সমর্থন দেওয়া প্রকৃতপক্ষে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির পরিপন্থি। অথচ ট্রাম্পের মূল নির্বাচনী স্লোগান ছিল এটি।

আন্তর্জাতিক কূটনীতিবিষয়ক মার্কিন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কুইন্সি ইনস্টিটিউটের নির্বাহী সহসভাপতি ত্রিতা পারসি বলেন, ‘আমেরিকা ফার্স্ট ঘাঁটির (এ নীতির সমর্থক গোষ্ঠী) অনেক অংশে এখন প্রবল ক্ষোভ ও বিশ্বাসঘাতকতার অনুভূতি বিরাজ করছে। কারণ, তারা সত্যিকার অর্থেই যুক্তরাষ্ট্রকে আর কোনো যুদ্ধে জড়িয় পড়া বা তাতে সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি দেখতে চায় না।’

ত্রিতা পারসি আরও বলেন, ‘তারা (এ গোষ্ঠী) এখন ইসরায়েল নিয়ে ব্যাপক সংশয়ের মধ্যে পড়েছে। তারা মনে করে, এ ধরনের যুদ্ধই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টদের ব্যর্থ ও তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ অগ্রাধিকারগুলো ক্ষুণ্ন করেছে।’

ইরানে গত শুক্রবার ইসরায়েলি হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন রক্ষণশীল নেতাও এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যেন এমন কোনো যুদ্ধে না জড়ায়, যা তার স্বার্থ রক্ষা করবে না।

ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (এমএজিএ) আন্দোলনের বড় মুখ ও প্রভাবশালী রক্ষণশীল ভাষ্যকার টাকার কার্লসন বলেন, ইসরায়েলের বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ‘যুদ্ধপিপাসু সরকার’কে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন দেওয়া উচিত নয়।

‘ইসরায়েল চাইলে যুদ্ধ করতেই পারে। ওটা স্বাধীন রাষ্ট্র। তারা যা খুশি করতে পারে। কিন্তু সেটা যেন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিয়ে না হয়,’ গত শুক্রবার ‘টাকার কার্লসন নেটওয়ার্ক’–এর সকালের নিউজলেটারে লেখা হয়।

নিউজলেটারে আরও বলা হয়, ইরানের সঙ্গে (যুক্তরাষ্ট্রের) যুদ্ধ হলে তা ‘পরবর্তী প্রজন্মের সন্ত্রাসবাদের জন্ম দিতে পারে’ কিংবা একটি বিদেশি এজেন্ডার নামে হাজার হাজার মার্কিনের মৃত্যু ডেকে আনতে পারে।

‘এ কথা বলাই বাহুল্য যে এ ধরনের কোনো সম্ভাবনাই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক হবে না। কিন্তু অন্য একটি পথও আছে: ইসরায়েলকে বাদ দাও। ওরা নিজেরা যুদ্ধ করুক,’ লেখা হয় নিউজলেটারে।

রিপাবলিকান সিনেটর র‍্যান্ড পলও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানো নিয়ে সতর্ক করেছেন এবং ওয়াশিংটনের যুদ্ধ–সমর্থক রক্ষণশীলদের কঠোর সমালোচনা করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে র‍্যান্ড পল লিখেছেন, ‘মার্কিন জনগণ যে যুদ্ধের শেষ নেই, তার ঘোরবিরোধী এবং ২০২৪ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে তাঁরা সেটাই দেখিয়েছেন।’

‘আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে অনুরোধ করব যেন তিনি তার অবস্থানে অটল থাকেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেন এবং অন্য দেশের মধ্যে চলা কোনো যুদ্ধে জড়িত না হন,’ বলেন র‍্যান্ড পল।

ডানপন্থী কংগ্রেস সদস্য মারজোরি টেলর গ্রিনও একটি বার্তায় ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি হামলার পক্ষে নন। এর আগেও তিনি ট্রাম্পকে সতর্ক করেছিলেন, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হচ্ছে—এমন ইসরায়েলি অভিযোগের ভিত্তিতে যেন ইরানে হামলা চালানো না হয়।

মারজোরি টেলর এক্সে লেখেন, ‘আমি শান্তির জন্য প্রার্থনা করছি। শান্তি। এটাই আমার আনুষ্ঠানিক অবস্থান।’

যদিও ইসরায়েলের সমর্থকেরা ইরানের সম্ভাব্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির হুমকির কথা উল্লেখ করে দেশটিতে হামলাকে যৌক্তিক বলে দাবি করছেন; তেহরান বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এমনকি ট্রাম্পের গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডও গত মার্চে এক সাক্ষ্যে বলেছেন, ‘আমাদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে না।’

ইসরায়েলের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান কর্মী ও ভাষ্যকার চার্লি কার্কও ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে জড়ানো নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

নিজ পডকাস্টে কার্ক বলেন, ‘আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমাদের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ ঘাঁটি কোনো যুদ্ধই চায় না। তারা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা চায় না (ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে)। তারা চায় না যুক্তরাষ্ট্র এতে জড়িয়ে পড়ুক।’

গত শুক্রবার ইসরায়েল যখন ইরানের সামরিক ঘাঁটি, পারমাণবিক স্থাপনা ও আবাসিক এলাকায় বোমাবর্ষণ শুরু করে, তার কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছাতে তিনি আগ্রহী।

গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘বিষয়টা খুবই সহজ। জটিল কিছু না। ইরান পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে পারে না—এই একটাই কথা। তার বাইরে আমি চাই, তারা সফল হোক। আমরা সাহায্য করব।’

গতকাল রোববার ওমানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে ষষ্ঠ দফা আলোচনা হওয়ার কথা ছিল।

তবে শুক্রবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আগেই ইসরায়েলের হামলার ব্যাপারে জানতেন। অবশ্য তিনি হামলা চালাতে ইসরায়েলকে নিষেধ করেছিলেন কি না, তা বলেননি। যদিও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েলের হামলাকে ‘একতরফা’ বলেই উল্লেখ করেছেন।

অথচ ট্রাম্প ইরানের ওপর হামলার দায় চাপিয়ে বলেন, দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য তার আহ্বানে ইরানের কর্মকর্তাদের সাড়া দেওয়া উচিত ছিল।

ট্রাম্প পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, তাদের জন্য এটা হবে এমন কিছু, যা তারা কল্পনাও করতে পারেননি। যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ও জীবনঘাতী সামরিক সরঞ্জাম—অনেক অনেক বেশি। আর ইসরায়েলের কাছে এর অনেক কিছুই আছে, আরও আসছে।’

ত্রিতা পারসি বলেন, শুরুতে ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে সমঝোতা চেয়েছিলেন, কিন্তু তার চরম শর্ত—ইরানকে সম্পূর্ণভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে হবে—আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি করে।

‘এটা অনুমেয় ছিল যে এ চূড়ান্ত দাবির ফলে আলোচনা ব্যর্থ হবে। ইসরায়েল সেই ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে ট্রাম্পকে সামরিক পথ বেছে নিতে বাধ্য করেছে,’ বলেন ত্রিতা পারসি।

পারসি আরও বলেন, ‘গত সপ্তাহজুড়ে ট্রাম্প কূটনৈতিক উদ্যোগের পক্ষে কথা বললেও, তিনি জানতেন ইসরায়েলের হামলা আসন্ন। এভাবে তিনি সবাইকে ভুল বার্তা দিয়েছেন যে হামলা হবে আলোচনার পরে। অথচ সেটা আগেই হয়েছে।’

ইসরায়েলের হামলার পর কংগ্রেসে কিছুটা সমালোচনা হলেও বহু রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট এই হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্পের ঘাঁটির একটি বড় অংশ, বিশেষ করে তরুণ ডানপনন্থিরা, ইসরায়েলকে অন্ধ সমর্থনের বিষয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাটো ইনস্টিটিউটের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক জন হফম্যান বলেন, ‘তারা (ডানপন্থিরা) রিপাবলিকান পার্টির একটি উল্লেখযোগ্য অংশের প্রতিনিধিত্ব করে, বিশেষত তরুণদের মধ্যে।’

হফম্যান আরও বলেন, ‘পিউ রিসার্চ সেন্টারের এক জরিপ বলছে, ৫০ বছরের নিচের অর্ধেক রিপাবলিকানই এখন ইসরায়েল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ এই নিরন্তর যুদ্ধক্লান্তির মধ্যে হাঁপিয়ে উঠেছেন।’

বিশ্লেষকদের মতে, ইরানে ইসরায়েলি হামলার প্রতি ট্রাম্পের নমনীয় অবস্থান তাঁকে আবারও এমন একটি সংকটের মুখে ফেলেছে, যেটা একসময় বুশ প্রশাসনকে ফেলেছিল।

হফম্যান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং রিপাবলিকান পার্টির অভ্যন্তরে দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কামনা করা প্রভাবশালীদের উপস্থিতি, যেমন লিন্ডসে গ্রাহাম—এসবই বড় ঝুঁকির সৃষ্টি করছে।’

‘এ পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলার আশঙ্কা অনেক বেশি,’ বলেন হফম্যান।

সূত্র: আল জাজিরা


হরমুজ প্রণালি হতে পারে ইরানের ‘ট্রাম্প কার্ড’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছে। ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছে। এটিই এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে। বৈশ্বিক জ্বালানি পরিবহনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জলপথ বন্ধ হয়ে গেলে সম্ভাব্য ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। ন্যাশনাল ইরানিয়ান আমেরিকান কাউন্সিলের (এনআইএসি) প্রেসিডেন্ট জামাল আবদি এই হুমকিকে ইরানের ‘ট্রাম্প কার্ড’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

আল-জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জামাল আবদি বলেন, ‘এটি প্রতিরোধের একটি প্রধান রূপ হতে পারে। অবশ্য ইরান আগেও এ ধরনের হুমকি দিয়েছে। কিন্তু স্পষ্টতই কখনো কার্যকর করেনি। ধারণা করা হয়, হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেয়া মানে বিশ্ব অর্থনীতির শ্বাসরোধ করা। অর্থনীতিতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এটি খুব ছোট একটা জলপথ, তাই এটিকে একটি চোকপয়েন্ট বানানোর জন্য যে ধরনের সক্ষমতা ও আক্রমণ দরকার, ইরানের পক্ষে সম্ভবত তা সম্ভব।’

আবদি আরও বলেন, ‘আমরা বছরের পর বছর ধরে যে খারাপ ব্যাপারগুলোর বিষয়ে সতর্ক করে আসছি, এই যুদ্ধ কেমন হতে পারে সেগুলোর একটি চেকলিস্ট এখন বাস্তবে রূপ নিতে দেখছি। হরমুজ প্রণালির বিষয়টি, আমি মনে করি, এমন একটি পদক্ষেপ হবে যা অনেক বিশ্বনেতা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মনে এই ধারণা তৈরি করবে যে, 'ঠিক আছে, এখন আপনাদের ইরানিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলিদের সহায়তায় নামতে হবে।’

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হয়ে গেলে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। এতে তেলের দাম আকাশচুম্বী হবে এবং বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। এর ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার ঝুঁকি আরও প্রকট হবে। যেখানে ইসরায়েল, ইরানে হামলার পরই বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে।

হরমুজ প্রণালি বন্ধে ইরানের এই হুমকিকে একটি কৌশলগত চাল হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা আঞ্চলিক সংঘাতের গতিপথ পরিবর্তন করতে চাচ্ছে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে ছাড় আদায় করারও একটি কৌশল এটি। তবে এই ‘ট্রাম্প কার্ড’ শেষ পর্যন্ত কী পরিণতি নিয়ে আসে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপক এড হিরস আল-জাজিরাকে বলেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর এর দ্রুত এবং মারাত্মক প্রভাব পড়বে।

আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে হিরস বলেন, ‘এই প্রণালি দিয়ে প্রতিদিন ১৮ থেকে ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল পরিবাহিত হয়, যা বিশ্বব্যাপী তেলের বাজারের প্রায় ২০ শতাংশ। সৌদি আরব বা কুয়েতের জন্য ওই এলাকা থেকে বের হওয়ার কোনো সহজ বিকল্প পথ নেই।’

হিরস ব্যাখ্যা করেন, এই পরিবহন অর্ধেক কমিয়ে দিলে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১২০ ডলারের বেশি বেড়ে যাবে—এই প্রভাব খুব দ্রুত বিশ্বের সবার ওপর পড়বে।

হিরস আরও যোগ করেন, হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দিলে ট্রাম্প ইরানে হামলা করার একটি অজুহাত পেয়ে যাবেন।

হিরসের মতে, বিশ্ব অর্থনীতিতে আঘাত করা, বৈশ্বিক বাজারে তেলের প্রবাহ বন্ধ করে দিয়ে সরাসরি মার্কিন অর্থনীতিতে আঘাত করা, সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার প্রয়োজনীয় অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে।

উল্লেখ্য, ইরানের আইআরআইএনএন সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের সংসদের নিরাপত্তা কমিশনের সদস্য ইসমাইল কোসারি বলেছেন, ‘ইসরায়েলের হামলার জবাবে হরমুজ প্রণালি বন্ধ করার বিষয়টি ইরান গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করছে।’


ইসরায়েলে ফের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের, নিহত ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ইসরায়েলে আরও এক দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান, এতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এ হামলার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল-ইরানের চলমান উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

স্থানীয় সময় সোমবার (১৬ জুন) ভোরে এই হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি সেবার কর্মকর্তা মাগেন দাভিদ আদোম এই হতাহতের খবর নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়া, এই হামলায় তেল আবিবের মার্কিন দূতাবাসের অবকাঠামোগত সামান্য ক্ষতি হলেও সেখানে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে সামাজিকমাধ্যম এক্সে নিশ্চিত করেছেন মার্কিন দূত মাইক হাকাবি।

এদিকে, ইসরায়েলে প্রায় ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার দাবি করেছে তেহরান। ইসরায়েলের চালানো হামলায় ইরানে এ পর্যন্ত ২২৪ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর জবাবেই ইসরায়েলে হামলার কথা জানিয়েছে তেহরান।

এদিকে, সোমবারের হতাহতের পর ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এই হামলার জবাবে ইরানের কুদস বাহিনীর ১০টি কমান্ড সেন্টার জীবাণুমুক্ত করার জন্য আক্রমণ চালানোর দাবি করেছে তেল আবিব।

কুদস বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ইউনিট, যা বিদেশি অভিযান পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত।

এদিকে, ইরানের হামলায় তেল আবিবের নিকটবর্তী পেতাহ তিকভা শহরে স্থানীয়রা জানান, সেখানে একটি আবাসিক ভবনে সরাসরি আঘাতে কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ও জানালা ভেঙে গেছে।

মাগেন দাভিদ জানান, নিহতদের মধ্যে দুইজন পুরুষ এবং দুইজন বুদ্ধ নারী, সঙ্গে আরও এক ব্যক্তি। এছাড়া আরও ৮৭ জন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে একজন নারী গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন।

এর আগে, ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রাখলে কোনো যুদ্ধবিরতির কথা বিবেচনা করবে না বলে আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারী কাতার ও ওমানকে স্পষ্ট জানিয়েছে ইরান। তবে অভিযান আরও কঠিন হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় ইসরায়েল। এর জবাবে ইরানও কঠোর প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তেহরান বলেছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা ‘নরকের দরজা খুলে দেবে’।

এদিকে, ইরানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে দেশটিতে ইসরায়েলের হামলায় দুই শতাধিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ২০০ মানুষ।

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে রানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয়েছে রাইজিং লায়ন। এর পর পরই পাল্টা হামলা শুরু করে ইরান।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করে ইসরায়েল। ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির শেষ ধাপ পর্যন্ত না পৌঁছাতে পারে, তা নিশ্চিত করতেই এই হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে তেল আবিব।

তবে এ অভিযানকে সম্পূর্ণরূপে বেসামরিক বলে আখ্যা দিয়েছে ইরান। এ ছাড়া, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে না বলে দাবি করেছে তারা।


গাজায় গণহত্যা বন্ধে হেগে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজায় গণহত্যা বন্ধে ডাচ সরকারকে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে গতকাল হেগ শহরের রাস্তায় লাল পোশাক পরে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফামের মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলো হেগ শহরের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত অভিমুখে এ বিক্ষোভের আয়োজন করে। সেখানে বিক্ষোভকারীরা সারিবদ্ধ হয়ে প্রতীকী ‘লাল রেখা’ তৈরি করেন।

বিক্ষোভকারীদের অনেকে ফিলিস্তিনি পতাকা উড়িয়ে এবং কেউ কেউ ‘স্টপ দ্য জেনোসাইড’ স্লোগান দিয়ে গতকাল বিকালে শহরের একটি কেন্দ্রীয় পার্কে লাল সমুদ্রে পরিণত করেন।

বিক্ষোভকারীরা ‘দৃষ্টি ফেরাবেন না, কিছু করুন’, ‘কুকর্মে ডাচ সহযোগিতা বন্ধ করুন’ এবং ‘শিশুরা ঘুমানোর সময় নীরব থাকুন, তাদের মৃত্যুর সময় নয়’ ইত্যাদি লেখা ব্যানার প্রদর্শন করেন।

বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজকরা ডাচ সরকারকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, গাজার মানুষের অপেক্ষার সময় নেই। গণহত্যা বন্ধ করতে নেদারল্যান্ডসের যথাসাধ্য চেষ্টা করার কর্তব্য রয়েছে। ৬৭ বছর বয়সি ডোডো ভ্যান ডের স্লুইস এএফপিকে বলেন, গণহত্যা থামাতে হবে। যথেষ্ট হয়েছে। আমি আর এটা নিতে পারছি না।

এর আগে ১৮ মে হেগে এক বিক্ষোভে এক লাখেরও বেশি লোক অংশ নেন। আয়োজকরা এটাকে ২০ বছরের মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হিসেবে বর্ণনা করেন।

ইসরায়েলে হামাসের হামলার জের ধরে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে এএফপির হিসাব অনুযায়ী, এই যুদ্ধে ইসরায়েলের ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করেছে, যাদের মধ্যে ৫৪ জন এখনো গাজায় আটক রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতে, জিম্মিদের মধ্যে ৩২ জন মারা গেছেন।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫৫ হাজার ২০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ এই পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা একটি মামলার বিচার চলছে। সেখানে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ইসরায়েল গাজায় তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। ইসরায়েল এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে।


ইরান প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। আজ রোববার (১৫ জুন) তেহরান দূতাবাস এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞ‌প্তিতে বলা হয়, ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দূতাবাস ইমার্জেন্সি হটলাইন স্থাপন করেছে। ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকদের নিম্নোক্ত মোবাইলফোন নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপসহ সরাসরি যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

+ ৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ এবং +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫।


ছায়ার আড়ালে মোসাদ: ইরানে রহস্যময় অনুপ্রবেশ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ইরানের ভেতরে একটি গোপন ড্রোন তৈরির কারখানা স্থাপন করেছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। একাধিক গোয়েন্দা সূত্র থেকে এমন দাবি করা হয়েছে। সেখান থেকে পরিচালিত বিস্ফোরক ড্রোন হামলাতেই ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি তাদের।

ইরানে তখন গভীর রাত। মুহূর্তের মধ্যেই রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে আগুনের ঝলকানিতে আলোকিত হয়ে ওঠে চারপাশ। এরপরই শুরু হয় ধারাবাহিক হামলা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধের পর থেকে সবচেয়ে বড় হামলার মুখোমুখি হয়েছে ইরান। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংসের জন্য এ অভিযান চালানো হয়।

গোয়েন্দা সূত্র মতে, শুক্রবার (১৪ জুন) ভোরে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) যখন তাদের অপারেশন রাইজিং লায়ন বা জেগে ওঠা সিংহ শুরু করে, তখনই ড্রোনগুলো সক্রিয় করে মোসাদ।

এরপর তারা ইসরায়েলের দিকে তাক করে রাখা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণস্থলগুলোতে হামলা চালিয়ে অকোজো করে দেয়। এতে, ইসরায়েল বিনা প্রতিরোধেই হামলা চালাতে থাকে।

হামলায় ইরানের প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র নাতানজ, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কারখানা, শীর্ষ তিন সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানীরা হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। এই হামলায় অন্তত ২০০টি যুদ্ধবিমান অংশ নেয়।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইরানের প্রতিরক্ষা কাঠামোতে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রাখার কৌশলের অংশ।

ব্রিটিশ-ইসরায়েল কমিউনিকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (বিআইকম) জানিয়েছে, মোসাদের ইউনিটগুলো ইরানের ভেতরে থেকেই ভূমি থেকে আকাশে ও ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা লক্ষ্য করে নির্ভুলভাবে হামলা পরিচালনা করেছে।

ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ মোসাদের প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজের বরাতে জানায়, ফুটেজে কিছু মুখোশ পরা ব্যক্তিকে রকেট লঞ্চার বসাতে দেখা যায়, যা পরে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়।

আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই অপারেটররা তেহরানের আশেপাশে লক্ষ্যস্থলগুলোতে ভূমি থেকে ভূমিতে ক্ষেপণাস্ত্র ও বিস্ফোরক ড্রোন হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র বহনকারী ট্রাকও ছিল। সাদাকালো ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সশস্ত্র ব্যক্তিরা, একটি এলাকায় খোলা মাঠে বসে আইডিএফের হামলা শুরুর অপেক্ষা করছেন।

ইসরাইলের কৌশলগত সক্ষমতা

ইসরায়েলের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রকাশিত তথ্যগুলোকে ইসরায়েলের গোপন অভিযানগুলোর বিস্তৃতি ও গভীরতা তুলে ধরার পাশাপাশি দেশটির সক্ষমতা নিয়ে এক ধরনের কৌশলগত বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি সঠিক হলে এটি নজিরবিহীন একটি কৌশলগত সক্ষমতা হিসেবে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এ অভিযানে নজরদারি, গোয়েন্দাগিরি এবং অস্ত্রশক্তি মিলিয়ে সমন্বিত আক্রমণ চালানো হয়েছে। তেহরানের পারমাণবিক হুমকির বিরুদ্ধে ইসরায়েল কতদূর যেতে পারে তার ইঙ্গিত এটি।

রয়্যাল ইউনাইটেড সার্ভিসেস ইনস্টিটিউটের সামরিক বিজ্ঞানের পরিচালক ম্যাথু সাভিল বলেছেন, ‘মোসাদের অপ্রচলিত কার্যক্রমের সাম্প্রতিক রিপোর্টগুলো ইসরায়েলের গুপ্তচরবৃত্তি দক্ষতার প্রমাণ, যার মাধ্যমে তারা ইরানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় প্রবেশ করেছে। এরপর স্বল্প সময়ে অপারেশন চালানোর ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে।’

ইরানের ভূখণ্ডে এমন গোপন অবকাঠামো স্থাপন করতে ইসরায়েলের বহুবার গোপন মিশন পরিচালনা করতে হয়েছে। সঠিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত করার জন্য ইরানের সামরিক ও অস্ত্রব্যবস্থার অবস্থান সম্পর্কেও নির্ধারিত গোয়েন্দা তথ্যের প্রয়োজন ছিল।

এই হামলায় ইরানের তিনজন সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তিসহ সিনিয়র সামরিক নেতৃত্ব নিহত হয়েছেন, যা ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের সামরিক সক্ষমতাকে আরও দুর্বল করেছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতায় আঘাতের পাশাপাশি তারা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনাকারীদেরও হারিয়েছে।

সাভিল বলেন, ‘এই হামলার ব্যাপ্তি ও পরিসর ইঙ্গিত দেয় যে, এই অভিযান শুধু ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অনুসরণ থেকে বিরত রাখার জন্য নয়, বরং সম্ভাব্য সামরিক প্রতিক্রিয়া অক্ষম করা এবং শাসনব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার জন্যও পরিকল্পিত।’

শত্রু ভূখণ্ডে মোসাদের অভিযান নতুন নয়

শত্রু ভূখণ্ডে বিশেষ করে ইরানে মোসাদের সাহসী অভিযান চালানোর দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। ২০২০ সালে ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল কাসিম সুলেইমানিকে হত্যা করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সাহায্য করে মোসাদ।

২০২২ সালে দুটি মোটরসাইকেলে আসা হত্যাকারী আইআরজিসি কর্মকর্তা কর্নেল সাইয়্যাদ খাদায়িকে গুলি করে হত্যা করে। ২০২৪ সালে ইসরায়েল তেহরানে আইআরজিসির অতিথিগৃহে বোমা স্থাপন করে হামাসের রাজনৈতিক নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যা করে।

সাম্প্রতিক হামলার মাধ্যমে ইসরায়েল ইঙ্গিত দিয়েছে আরও অনেক কিছু আসছে। ইসরায়েলের অপারেশন বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল ওডেড বাসিউক বলেন, ‘আমরা অপারেশনের মাত্র কয়েক ঘণ্টা ভিতরে ছিলাম... ছয় মাস আগে এটি কল্পনার মতো মনে হত।’

তিনি বলেন, ‘এই সাফল্য পরিকল্পনা, মহড়া এবং এখানে বসে যারা কাজ করেছে, তাদের পাশাপাশি যারা এখানে নেই তাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল।’

এ রাতের হামলাটিকে ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের সময়কার মোসাদের অপারেশন ফোকাসের সাথে তুলনা করা হচ্ছে। ওই সময় ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল মিসরের বিমানবাহিনীর প্রায় সবকিছুই ধ্বংস করে দিয়েছিল।


এবার ভারতে যাত্রীবাহী হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে নিহত ৭

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারতে এবার উড়াল দেওয়ার পরই বিধ্বস্ত হয়েছে যাত্রীবাহী একটি হেলিকপ্টার। এতে, পাইলটসহ সাত আরোহী নিহত হয়েছেন।

রবিবার (১৫ জুন) সকালে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডে এ ঘটনা ঘটে। রাজ্যের কেদারনাথ ধাম থেকে গুপ্তকাশী তীর্থস্থানের উদ্দেশে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হয় হেলিকপ্টারটি।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উড্ডয়নের মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যেই হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়।

স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা নন্দন সিং রাজওয়ার জানিয়েছেন, ‘দুর্ঘটনার পর উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান চলছে।’

অ্যারিয়ান অ্যাভিয়েশন নামের একটি বেসরকারি হেলিকপ্টার সংস্থার পরিচালিত হেলিকপ্টারটি কেদারনাথ তীর্থপথের নিকটবর্তী একটি বনাঞ্চলে স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৫টার দিকে বিধ্বস্ত হয়। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে।

দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে পাইলট ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও গুজরাট থেকে আসা তীর্থযাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। দুর্ঘটনার পর আগুন ধরে যাওয়ায় মরদেহগুলো মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছে।

ভারতের অন্যতম চারটি তীর্থস্থানের একটি কেদারনাথ। প্রতি বছর গ্রীষ্মকালে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী সেখানে ভ্রমণ করেন। দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলটিতে পৌঁছাতে অনেকেই হেলিকপ্টার সেবার ওপর নির্ভর করেন।

ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ দুর্ঘটনার শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই এই হেলিকপ্টার দুর্ঘটনাটি ঘটলো। মাত্র তিন দিন আগে গত বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দেশটির আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই যাত্রীবাহী এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার বিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল।

এ ঘটনায় বিমানে থাকা ২৩২ যাত্রী ও ১০ ক্রুর মধ্যে ২৪১জনই নিহত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা অন্তত ২৭০ বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

বিমানটি আহমেদাবাদের বিজে মেডিকেল কলেজের ছাত্রাবাসের ওপর বিধ্বস্ত হয়। এ সময় ছাত্ররা দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। এ দুর্ঘটনায় মেডিকেল হোস্টেলের ৫ শিক্ষার্থী নিহত ও আহত হয়েছেন আরও ৪০ জন।


banner close