থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রায়ুথ চান ওচা কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন। দেশটির সাংবিধানিক আদালত গতকাল শুক্রবার এ রায় দেন। আদালত জানান, প্রায়ুথ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সর্বোচ্চ ৮ বছরের মেয়াদ অতিক্রম করেননি।
আল-জাজিরা জানায়, সাংবিধানিক আদালত ২৫ মিনিট বিচারের রায় পড়ে শুনান। আদালত প্রায়ুথের প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ ২০১৭ সাল থেকে অর্থাৎ নতুন সংবিধান প্রণয়নের সময় থেকে হিসাব করা উচিত বলে জানান।
আদালতের রায়কে ৬৮ বছর বয়সী প্রায়ুথের জন্য একটি বড় বিজয় বলে দেখা হচ্ছে। সরকারি এক মুখপাত্র জানান, প্রায়ুথ আদালতের রায়কে সম্মান করেন এবং তার পক্ষে থাকার জন্য সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। দেশকে এগিয়ে নিতে তিনি আবারও কাজ করবেন।
প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ পার হওয়ার অভিযোগে গত মাসে সাংবিধানিক আদালত সাময়িকভাবে প্রায় প্রায়ুথকে বরখাস্ত করেছিল। প্রায়ুথের মন্ত্রিসভায় সিনিয়র উপপ্রধানমন্ত্রী প্রবিত ওংসুওয়ান তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হন এবং প্রায়ুথ নিজে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদে বহাল থাকেন। এদিকে থাইল্যান্ডের গণতন্ত্রপন্থিরা প্রায়ুথের প্রধানমন্ত্রী পদে পুনর্বহালের খবরে ‘থাইল্যান্ডের ভবিষ্যতের মৃত্যু’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন। সে জন্য তারা প্রায়ুথবিরোধীদের কালো পোশাকে রাজপথে শোক পালন করার আহ্বান জানান।
২০১৪ সালে থাইল্যান্ডে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ইংলাক সিনাওয়াত্রা সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসেন প্রায়ুথ। ওই সময় তিনি থাইল্যান্ডের সেনাপ্রধান ছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি থাইল্যান্ডের নতুন সংবিধান প্রণয়ন করেন। সেনা প্রবর্তিত নতুন সংবিধান অনুযায়ী, প্রায়ুথ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দুই মেয়াদে সর্বোচ্চ আট বছর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন। ২০১৯ সালে সামরিক সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
মরক্কোতে তরুণদের নেতৃত্বে শুরু হওয়া ‘জেন জি’ বিক্ষোভ এখন দেশটির ইতিহাসে অন্যতম বড় রাজনৈতিক অস্থিরতায় রূপ নিয়েছে। শান্তিপূর্ণ দাবিতে শুরু হওয়া এই আন্দোলন শেষ পর্যন্ত সহিংসতায় পরিণত হয়, যার জেরে সরকার ব্যাপক গ্রেপ্তার ও মামলা শুরু করেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরকারের কঠোর পদক্ষেপের নিন্দা জানালেও, রাষ্ট্রপক্ষ বলছে—আইনের সীমার মধ্যেই নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে।
সম্প্রতি মরক্কো সরকার জানায়, সহিংস ‘জেন জি’ বিক্ষোভের ঘটনায় মোট ২ হাজার ৪৮০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৭৩ জন বর্তমানে হেফাজতে রয়েছেন এবং তাদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার অপেক্ষায়। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে—বিদ্রোহে অংশগ্রহণ, সরকারি কর্মকর্তাদের ওপর হামলা, সরকারি কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি, এবং অপরাধে প্ররোচনা দেওয়া। সরকার বলছে, দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় তারা এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে।
এই আন্দোলনের সূচনা হয় ‘জেনজি ২১২’ নামে এক তরুণ সংগঠনের উদ্যোগে। সংগঠনটি সরকারের ব্যয় অগ্রাধিকার ও সরকারি সেবার দুরাবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে। তাদের দাবি ছিল—সরকার খেলাধুলার অবকাঠামো নির্মাণে বিপুল অর্থ ব্যয় করছে, অথচ শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের মতো মৌলিক খাতগুলো অবহেলিত থেকে যাচ্ছে। তরুণদের এই আন্দোলন দ্রুত জনপ্রিয়তা পেলেও, কয়েকটি শহরে তা সহিংস রূপ নেয়।
যদিও সংগঠকরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তবুও কিছু এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে অন্তত ৩ জন নিহত হন, বহু মানুষ আহত হন এবং দোকানপাট ও যানবাহনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। কাসাব্লাঙ্কা ও মারাকেশসহ বিভিন্ন শহরে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়, যা পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তোলে।
সরকারি পক্ষ দাবি করছে—নিরাপত্তা বাহিনীর হস্তক্ষেপ আইনসঙ্গতভাবে করা হয়েছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, সরকারের এই দমন অভিযান অযৌক্তিক ও নির্বিচার। মরক্কান অ্যাসোসিয়েশন ফর হিউম্যান রাইটস (AMDH) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গ্রেপ্তারগুলো ‘এলোমেলো ও অন্যায্য’। অপরদিকে, ‘জেনজি ২১২’ সংগঠনটি তাদের সকল সদস্য ও সমর্থকের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সহযোগী পরিচালক হানান সালাহ বলেছেন, ‘তরুণদের ন্যায্য সুযোগ ও ভবিষ্যতের দাবি গুলি ও দমননীতির মাধ্যমে রোধ করা যায় না।’ তিনি মরক্কো সরকারকে তরুণ প্রজন্মের কণ্ঠস্বর শোনার আহ্বান জানান।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন জনপ্রিয় র্যাপার হামজা রায়েদ, যিনি তরুণদের মাঝে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। গত মাসে কাসাব্লাঙ্কা থেকে তাকে আটক করা হয়। তার গানে প্রায়ই রাজনৈতিক অন্যায়, দুর্নীতি এবং তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভের কথা উঠে আসে।
এদিকে গত সোমবার রাজধানীতে তিনজন অভিযুক্ত আদালতে হাজির হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—সরকারি সংস্থাকে অপমান করা ও অপরাধে প্ররোচনা দেওয়া। জানা গেছে, তারা জাতীয় ফুটবল দলের জার্সিতে প্রতিবাদী স্লোগান মুদ্রণ করেছিলেন। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। তথ্যসূত্র: সিএনএন
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর দেশটির ওপর আরোপিত শুল্ক কমালেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক কমানো হচ্ছে এবং দীর্ঘদিনের ‘রেয়ার আর্থস রোডব্লক’ বা বিরল খনিজ বিরোধের অবসান ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার এয়ার ফোর্স ওয়ান থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, এটি ছিল এক অসাধারণ বৈঠক। তিনি (সি) একজন মহান নেতা। আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছি, যার বিস্তারিত শিগগিরই জানানো হবে।
ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানাইল প্রবেশ রোধে চীনের ওপর আমি ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলাম। আমি সেটি ১০ শতাংশ কমিয়েছি এবং এটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়েছে।
তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ও বেইজিং এখন অনেক বিষয়ে একমত। চীন এখন থেকে বিপুল পরিমাণ সয়াবিন কিনবে, আমি এর প্রশংসা করি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, রেয়ার আর্থ বা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের বাণিজ্যসংক্রান্ত ইস্যুটি ‘সম্পূর্ণভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে’। তিনি বলেন, চীনের পক্ষ থেকে এখন আর কোনো রোডব্লক নেই। এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্বের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল।
উল্লেখ্য, এই খনিজগুলোর প্রক্রিয়াজাতকরণে চীনের একচেটিয়া প্রভাব রয়েছে এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেইজিং রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করেছিল।
ট্রাম্প আরও জানান, আগামী এপ্রিল মাসে তিনি চীন সফর করবেন এবং এর পর সি চিনপিং যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন।
হ্যারিকেন মেলিসায় লণ্ডভণ্ড ক্যারিবীয় অঞ্চলের তিন দেশ। গত বুধবার রাতে দক্ষিণ-পশ্চিম জ্যামাইকায় নিউ হোপের কাছে আছড়ে পড়ে ঘণ্টায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার বেগের ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়। নজিরবিহীন প্রাকৃতিক দুর্যোগে এখনো পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৭৪ বছরে এত ভয়ংকর ঝড় দেখেনি জ্যামাইকা।
কেবল জ্যামাইকা নয়, ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে কিউবার পূর্বাঞ্চল এবং হাইতির কিছু অংশ। ঝড়ে মৃত্যু হয়েছে জ্যামাইকা এবং হাইতি দুই দেশেই। মৃতের সংখ্যা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। জ্যামাইকায় ঝড়ের দাপটে উপড়ে গিয়েছে বহু গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। এর ফলে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বেশির ভাগ এলাকায়। অন্ধকারে রয়েছেন দুলক্ষ মানুষ। তবে হাসপাতালে এখনো বিদ্যুৎ রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। অধিকাংশ রাস্তা বন্ধ। উপকূলবর্তী অঞ্চলে বাড়ি, দোকানপাট ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে। আগে থেকে স্থানীয়দের নিরাপদ এলাকায় সরানোয় বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে, মনে করছে প্রশাসন।
ইতোমধ্যে জরুরি সহায়তা কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল খোলা হয়েছে। আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা, জ্যামাইকায় ভয়াবহ ভূমিধস ও বন্যার আশঙ্কা রয়েছে, যা আরও বড় মানবিক বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়কে ক্যাটাগরি-৫ বলে চিহ্নিত করেছে জ্যামাইকা। ১৭৪ বছরে এত ভয়ংকর ঝড় আর দেখেনি দেশটির মানুষ। এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় হিসাবেও বর্ণনা করা হচ্ছে এটিকে।
জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস বলছেন, মেলিসার মোকাবিলা করতে পারে এমন পরিকাঠামো নেই তার দেশে। তাই তিনি বাসিন্দাদের সাবধান থাকার অনুরোধ করেছিলেন।
জ্যামাইকায় মেলিসার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো স্পষ্ট নয়। উদ্ধারকাজও পুরোদমে শুরু করা যায়নি। বহু মানুষ ঘরছাড়া। নিখোঁজ অনেকে। মেলিসা আঘাত হানার সময় প্রায় ২৫ হাজার পর্যটক এই দ্বীপদেশটিতে অবস্থান করছিলেন।
বিমান চলাচল স্বাভাবিক হলে বার্বাডোজের একটি ত্রাণ সরবরাহ শিবির থেকে জ্যামাইকায় প্রায় ২ হাজার ত্রাণ সরঞ্জাম বিমানে পাঠানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শুধু জ্যামাইকাই নয়; কিউবা এবং হাইতিসহ ক্ষতির মুখে পড়তে পারে এমন সব দেশেই সহায়তা পাঠানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সাগরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত শক্তি অর্জন করেছে মেলিসা। তাদের মতে, সবশেষ এ হারিকেনটি কেবল জ্যামাইকাই নয়, গোটা ক্যারিবীয় অঞ্চলের জন্য এক ভয়ংকর মানবিক সংকটের ইঙ্গিত বহন করছে।
সরাসরি আঘাত না হানলেও টানা কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে হাইতিতে। দেশটির রাজধানী থেকে প্রায় ৬৪ কিলোমিরটার পশ্চিমে অবস্থিত উপকূলীয় শহর পেটিট-গোয়াভেতে একটি নদীর পানি উপচে পড়ে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ শিশু রয়েছে। এ ছাড়া, অন্তত ১২ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে হাইতির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা।
মেলিসার আঘাতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিউবাও। যদিও লক্ষাধিক মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে কিউবা সরকার। দেশটির রাষ্ট্রপতি মিগুয়েল ডিয়াজ-ক্যানেলের সভাপতিত্বে টেলিভিশনে প্রচারিত সিভিল ডিফেন্স সভায় ক্ষয়ক্ষতির কোনও আনুষ্ঠানিক অনুমান দেওয়া হয়নি। তবে, ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশ, সান্তিয়াগো, গ্রানমা, হলগুইন, গুয়ান্তানামো এবং লাস টুনাস-এর কর্মকর্তারা ছাদ, বিদ্যুৎ লাইন, ফাইবার অপটিক টেলিযোগাযোগ তার, কাটা রাস্তা, বিচ্ছিন্ন সম্প্রদায় এবং কলা, কাসাভা এবং কফি বাগানের ক্ষতির কথা জানিয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতা শুরু হলেও ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ট্রান্সফরমার এবং বিদ্যুতের লাইন ভেঙে পড়ার কারণে এখনো বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট এবং টেলিফোন পরিষেবা বন্ধ আছে বিভিন্ন অঞ্চলে।
বৃহস্পতিবার ভোরে হারিকেন মেলিসা দুর্বল হয়ে ক্যাটাগরি ২ ঝড়ে পরিণত হয় যার বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ১০৫ মাইল। এটি বাহামা থেকে পিছু হটে বারমুডার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতের শেষের দিকে এটি বারমুডার উত্তর-পশ্চিমে অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তবে হারিকেন- এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়-শক্তির বাতাস তার কেন্দ্র থেকে অনেক দূরে বিস্তৃত এবং আজ বারমুডা পৌঁছাবে, হারিকেন কেন্দ্র জানিয়েছে।
দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের দক্ষিণে এক হাজার ৩০০ নতুন বসতি নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলের সরকার। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে সর্বসম্মতিক্রমে সরকারের গুশ এৎজিয়ন বসতি ব্লকের বিশেষ পরিকল্পনা ও নির্মাণ কমিটি পরিকল্পনাটির অনুমোদন দিয়েছে। বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার ২০২২ সালে থেকে এ পর্যন্ত পশ্চিম তীরে প্রায় ৪৮,০০০ বসতি স্থাপন করার অনুমোদন দিয়েছে।
পশ্চিম তীরে অভিযান, জমি দখল ও বসতি স্থাপন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর বার্তা দেওয়ার এক সপ্তাহ পার না হতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল সরকার। এছাড়াও ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের একদিন আগে দখলকৃত পশ্চিম তীর ও মা’লে আদুমিম আবাসন ব্লক সংযুক্ত করার দুটি প্রস্তাবিত আইনের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে ইসরায়েলি সংসদ নেসেট।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১৪–এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন এই বসতি পরিকল্পনার ফলে দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের দক্ষিণ-পশ্চিমে আলন শভুত এবং দক্ষিণে অবস্থিত হার হারুসিম এলাকায় এক অভূতপূর্ব সম্প্রসারণ ঘটবে। পরিকল্পনার আওতায় বিদ্যালয়, সরকারি ভবন, পার্ক এবং বড় বাণিজ্যিক এলাকা তৈরির কথা বলা হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে গুশ এৎজিয়ন আঞ্চলিক কাউন্সিল এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটি হলো এলাকার ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদার যথাযথ প্রতিক্রিয়া।
এই পরিকল্পনাকে দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য প্রাণঘাতী আঘাত বলে উল্লেখ করেছে ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থা পিস নাউ। এই পদক্ষেপের ফলে পশ্চিম তীর দুটি অংশে বিভক্ত হয়ে যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘ একাধিকবার ঘোষণা করেছে, দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ এবং এগুলো দুই রাষ্ট্র সমাধানের সম্ভাবনাকে নষ্ট করছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক প্রস্তাবের ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের রাজধানী করার দাবি করে আসছে ফিলিস্তিনিরা।
‘নতুন উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য ইসরায়েল সম্পূর্ণ দায়ী’
যুদ্ধবিরতি চুক্তি সত্ত্বেও দখলদার বাহিনীর ধারাবাহিক বিমান হামলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর গাজা উপত্যকায় উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে হামাস।
গত বুধবার এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠনটি বলেছে, হামাস ইসরায়েলকে গাজায় ‘নতুন বাস্তবতা’ চাপিয়ে দেওয়ার অনুমতি দেবে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হামাস নিশ্চিত করছে, এই বিপজ্জনক উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য- এর ক্ষেত্র ও রাজনৈতিক পরিণতির জন্য এবং ট্রাম্পের পরিকল্পনা ও যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে নাশকতার চেষ্টার জন্য (ইসরায়েলি) দখলদারিত্ব সম্পূর্ণ দায়ী।’
দখলদার বাহিনীর প্রাণঘাতী হামলার পরও যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি হামাস পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। মধ্যস্থতাকারীদের তাদের দায়িত্ব পালন করার এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের ওপর অবিলম্বে চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি ভয়াবহ হামলায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এটি ট্রাম্পের ২০-দফা পরিকল্পনার অধীনে ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির নির্লজ্জ লঙ্ঘন।
ইসরায়েল দাবি করেছে, রাফায় তাদের বাহিনীর ওপর গুলি চালানোর জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। যদিও হামাস এই হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
প্রসঙ্গত, গাজা অঞ্চলজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৬৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।
চলতি বছরের শুরুতেও একটি যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে ইসরায়েল গত ২৭ মে থেকে গাজায় পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করে। এই পদক্ষেপের পর অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষ প্রকট হয়ে উঠেছিল।
ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও গুলি চালিয়ে যায়। এর ফলে শত শত মানুষ নিহত হয়। সেই সঙ্গে দুর্ভিক্ষে শিশুসহ বহু মানুষের মৃত্যু হয়।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। উপত্যকাজুড়ে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।
ইসরায়েলি হামলায় স্ত্রীসহ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে চালানো ইসরায়েলি হামলায় সস্ত্রীক নিহত হয়েছেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক। উপত্যকাটির সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয় এ তথ্য জানিয়েছেন।
কার্যালয়ের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্যালেস্টাইন নিউজপেপার-এর সাংবাদিক মোহাম্মদ আল-মুনিরাভি এবং তার স্ত্রী বুধবার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত হন।
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে যুদ্ধবিরতি চলার মধ্যেও গত কয়েক দিনে গাজায় ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
সবশেষ মঙ্গলবার উপত্যকাটিতে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ১০৪ জন নিহত হন। যাদের মধ্যে ৪৬টি শিশু এবং ২০ জন নারী। এছাড়া আহত হন আরও ২৩৫ জন।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ‘তাৎক্ষণিক ও শক্তিশালী হামলার’ নির্দেশ দেওয়ার পর এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। তিনি দাবি করেন, হামাস রাফা অঞ্চলে ইসরাইলি সেনাদের লক্ষ্যবস্তু করেছে। যদিও হামাস এই দবি সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আল-মুনিরাভির মৃত্যুর পর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে ২৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের অনেকেই আন্তর্জাতিক ও মূলধারার গণমাধ্যমে কর্মরত ছিলেন এবং ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মহলে ছিলেন সাহসী ও প্রভাবশালী কণ্ঠ। তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে, যাতে গাজায় চালানো হত্যাযজ্ঞের সঠিক তথ্য প্রকাশ না পায়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, সাংবাদিক সুরক্ষা সংগঠন এবং ফিলিস্তিনিরা বারবার এই হত্যাকাণ্ডগুলোর নিন্দা জানিয়েছে। তারা বলেছে, এটি নিঃসন্দেহে এমন একটি ধারাবাহিক প্যাটার্ন যা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হত্যা করে সত্যকে চাপা দেওয়ার নীরব প্রচেষ্টা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং এর সঙ্গে বৈঠকে বিরল খনিজ নিয়ে বাধা দূর হয়েছে। দেশটির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সরবরাহে এক বছরের নবায়নযোগ্য চুক্তি হয়েছে।
চীন ‘বিরল খনিজ’ পদার্থের ওপর প্রায় একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে। এসব খনিজ পদার্থ ঘরোয়া যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে গাড়ি, জ্বালানি এবং অস্ত্র তৈরির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপরিহার্য।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ট্রাম্প এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের বলেন, সব বিরল খনিজের বিষয়টি সমাধান হয়েছে এবং এটি বিশ্বের সবার জন্য প্রযোজ্য।
তিনি জানান, চুক্তিটি এক বছরের জন্য এবং প্রতিবছর পুনরায় আলোচনা করে নবায়ন করা হবে।
এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে ট্রাম্প জাপানের সঙ্গেও একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এতে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও বিরল খনিজ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিরল খনিজ নিয়ে এখন আর কোনো বাধা নেই । আশা করি এই শব্দটি কিছুদিনের জন্য আমাদের শব্দভাণ্ডার থেকে মুছে যাবে।’ সূত্র: বাসস
অস্ট্রেলিয়ার এক নির্জন সমুদ্র সৈকতে শত বছর পর ভেসে উঠেছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া দুই সৈন্যের লেখা বোতলবন্দি চিঠি। ১৯১৬ সালে লেখা এই চিঠিগুলো যুদ্ধযাত্রা শুরুর আনন্দে পূর্ণ থাকলেও, এর এক লেখক পরে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ হারান।
এক শতাব্দীরও বেশি সময় পর দুজন অস্ট্রেলিয়ান সৈন্যের লেখা বোতলবন্দি এই চিঠি দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে সম্প্রতি ভেসে আসে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ১৯১৬ সালে লেখা এই চিঠিগুলো সৈন্যরা যুদ্ধের উদ্দেশে ফ্রান্সগামী জাহাজে ওঠার কয়েক দিনের মধ্যেই লিখেছিলেন। চিঠিতে তাদের হাসিখুশি কথাবার্তা ছিল। আর তাতে মিশে ছিল যুদ্ধযাত্রার শুরুতে তারুণ্যের উত্তেজনার ছোঁয়া।
সৈন্যদের একজন ছিলেন ২৮ বছর বয়সী প্রাইভেট ম্যালকম নেভিল। চিঠিতে তিনি তার মাকে লিখেছিলেন— জাহাজের খাবার “দারুণ ভালো” এবং তারা “ভীষণ খুশি”। কিন্তু কয়েক মাস পরই তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হন। অপর সৈন্য ছিলেন ৩৭ বছর বয়সী প্রাইভেট উইলিয়াম হার্লি। তিনি অবশ্য যুদ্ধ থেকে জীবিত ফিরে আসেন।
সম্প্রতি পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার দূরবর্তী হোয়াইটন সৈকতে বোতলটি খুঁজে পান স্থানীয় নারী ডেব ব্রাউন ও তার পরিবার। নিয়মিতভাবে সৈকত পরিষ্কারে বের হলে বালুর ভেতর পুরু কাচের বোতলটি চোখে পড়ে তাদের।
ব্রাউন বলেন, “আমরা প্রায়ই সৈকত পরিষ্কার করি, তাই ময়লা দেখলে কখনও ফেলে যাই না। ছোট্ট এই বোতলটাও এমনভাবেই খুঁজে পাই আমরা।”
বিবিসি বলছে, চিঠির কাগজ ভেজা থাকলেও লেখাগুলো পরিষ্কারই ছিল। তাই তিনি সৈন্যদের পরিবারের খোঁজ শুরু করেন যাতে চিঠিগুলো তাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া যায়।
নেভিলের চিঠিতে তার মায়ের ঠিকানা লেখা ছিল। এর ফলে ব্রাউন অনলাইনে নেভিলের আত্মীয় হার্বি নেভিলকে খুঁজে পান। তিনি বলেন, “এটা আমাদের পরিবারের জন্য অবিশ্বাস্য এক অভিজ্ঞতা, বিশেষ করে আমার খালা মারিয়ান ডেভিসের জন্য। কারণ তিনি শৈশবে তার চাচাকে যুদ্ধে যেতে দেখেছিলেন, কিন্তু তিনি আর ফেরেননি।”
অন্য চিঠিটি লিখেছিলেন প্রাইভেট উইলিয়াম হার্লি। যেহেতু তার মা তখন বেঁচে ছিলেন না, তাই তিনি ওই চিঠিটি লিখেছিলেন “যে এই বোতলটি পাবে” তাকে সম্বোধন করে। হার্লির নাতনি অ্যান টার্নার বলেন, “এটা যেন এক অলৌকিক ঘটনা। মনে হচ্ছে দাদু যেন সমাধি থেকে আমাদের উদ্দেশে হাত বাড়িয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “অন্য সৈন্যটি মাকে চিঠি লিখেছিল, আর আমাদের দাদু তার মা অনেক আগেই মারা গিয়েছিলেন বলে তিনি চিঠিটি লিখেছিলেন অজানা খুঁজে-পাওয়া মানুষের উদ্দেশে। এটা ভীষণ আবেগের।”
হার্লি তার চিঠিতে লিখেছিলেন, বোতলটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল ‘দ্য গ্রেট অস্ট্রেলিয়ান বাইট’-এর কোথাও থেকে। এটি দেশটির দক্ষিণ উপকূলবর্তী বিশাল সাগরীয় অঞ্চল।
অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের (এবিসি) এক সমুদ্রবিজ্ঞান অধ্যাপক জানিয়েছেন, বোতলটি হয়তো প্রথমে মাত্র কয়েক সপ্তাহ পানিতে ভেসেছিল, এরপর হোয়াইটন সৈকতের বালুর নিচেই শত বছর ধরে চাপা পড়ে ছিল।
প্রবল শক্তিশালী হারিকেন মেলিসা ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জজুড়ে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি বহু ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দিয়েছে, অনেক স্থানে পুরো পাড়া-মহল্লা প্লাবিত হয়েছে এবং এতে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া জ্যামাইকা, হাইতি ও কিউবায় ঘরবাড়ি, হাসপাতাল ও সড়ক ধ্বংস হয়ে পড়েছে। দ্বীপ দেশগুলোর অনেক এলাকাই এখনো বিদ্যুৎবিহীন ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের সবচেয়ে ভয়াবহ আঘাতের কেন্দ্রবিন্দু ছিল জ্যামাইকা। ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটারেরও বেশি গতির বাতাস নিয়ে আঘাত হানা ক্যাটাগরি–৫ মাত্রার এই ঝড়ে দেশটিতে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। দ্বীপ রাষ্ট্রটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হোলনেস জানান, “পুরো দেশটাই যেন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “৮০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হাসপাতাল, লাইব্রেরি, পুলিশ স্টেশন, বন্দরঘরসহ অন্যান্য সরকারি স্থাপনা।”
এদিকে হাইতিতে ভয়াবহ বন্যায় আরও অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১০ জনই শিশু। মেলিসা এখন দুর্বল হয়ে ক্যাটাগরি–১ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও, তা এখনো তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে।
ঝড়ের কারণে জ্যামাইকার বিভিন্ন এলাকায় হাজারো মানুষ ঘরছাড়া হয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন। দেশটির স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ডেসমন্ড ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, তিনজন পুরুষ ও এক নারী বন্যার পানিতে ভেসে গিয়েছিলেন এবং পরে তাদেরকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
দেশটির তিন-চতুর্থাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মন্টেগো বে শহরের মেয়র রিচার্ড ভারনন বলেন, “শহরের অর্ধেকটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন আমাদের একটাই লক্ষ্য— সবাই বেঁচে আছে কি না তা নিশ্চিত করা।”
গর্ডন সোয়াবি নামে কিংস্টনের এক ব্যবসায়ী জানান, তার কাজিনের পুরো বাড়িটাই ধসে গেছে। তিনি বলেন, “সে সমুদ্রের ধারে নিজের স্বপ্নের বাড়ি বানিয়েছিল। এখন বাড়িটা আর নেই, কিছুই নেই।”
পিয়া শেভালিয়ে নামে এক বিদেশি পর্যটক বলেন, “রাতভর জানালাগুলো কাঁপছিল। ভয়ে অসুস্থ লাগছিল।”
জ্যামাইকার পর মেলিসা উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে কিউবার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে। ঘণ্টায় প্রায় ১৮০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঝড়টি সেখানেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। কিউবার প্রেসিডেন্ট মিগেল দিয়াস–কানেল জনগণকে সতর্ক থাকতে বলেছেন এবং জানিয়েছেন, দেশটি ‘সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির’ জন্য আগেই প্রস্তুতি নিয়েছিল। আর এটিই ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সাহায্য করেছে।
এছাড়া হাইতিতে প্রবল বর্ষণ ও আকস্মিক বন্যায় ৩ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেছেন। খ্রিস্টান সংগঠন ওয়ার্ল্ড রিলিফ-এর কর্মকর্তা পাসকাল বিমেনিইয়ামানা বলেন, “অনেক বাড়ি উপকূলে ভেসে গেছে, অনেকেই খালি হাতে ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছেন।”
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের পরিপ্রেক্ষিতে জ্যামাইকায় সহায়তা পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। হাইতি ও বাহামাসও আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক সাহায্য চেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, একটি দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া দল জ্যামাইকার ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন করবে।
অন্যদিকে স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যার পর ঝড়টি বাহামাসের দিকে অগ্রসর হয়েছে। সেখানে বিপজ্জনক জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরপর এটি আরও উত্তরে বারমুডা হয়ে শুক্রবার রাতে কানাডার সেন্ট জনস শহরের কাছে গিয়ে প্রবল এক্সট্রা-ট্রপিকাল সাইক্লোনে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গাজায় হামলা চালিয়ে শতাধিক ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে গাজার সিভিল ডিফেন্স মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানিয়েছেন, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজার কেন্দ্র, উত্তারাঞ্চল ও রাফার দক্ষিণ অংশে ধারাবাহিক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাসাল বলেছেন, ১২ ঘণ্টারও কম সময়ে দখলদার বাহিনী গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর রোমহর্ষক গণহত্যামূলক হামলা চালিয়েছে। তারা শতাধিক মানুষকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে ৩৫ শিশু এবং বেশ কয়েকজন নারী ও বৃদ্ধ রয়েছেন। তাদের মানবতাবিরোধী অপরাধগুলো রেকর্ড করা হচ্ছে।
যেসব হাসপাতালে নিহত ও আহতদের নেওয়া হয়েছে, এ রকম পাঁচটি হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এএফপি এই সংখ্যা নিশ্চিত হয়েছে।
ইসরায়েল গাজা সিটি, খান ইউনিস ও মধ্যাঞ্চলীয় শরণার্থী শিবির,ঘরবাড়ি, তাঁবু ও হাসপাতালে বিমান হামলা চালিয়েছে। চিকিৎসাকর্মীরা সতর্ক করে বলেছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অনেকেই গুরুতর আহত অবস্থায় আছেন। কেউ কেউ আবার ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন। ১২ ঘণ্টা বোমা হামলা চালানোর পরও ইসরায়েল দাবি করছে তারা যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে।
গাজার সিভিল ডিফেন্স যুদ্ধবিরতি মেনে চলতে ইসরায়েলকে বাধ্য করতে দ্রুতই যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছে। সেই সাথে তারা ত্রাণ সরবরাহের জন্য মানবিক করিডোর চালু করার আহ্বানও জানিয়েছে। মেডিকেল দল পাঠানোর পাশাপাশি গাজা পুনর্গঠনে কাজ শুরু করার আহ্বানও জানিয়েছে তারা।
এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দক্ষিণ রাফাহ এলাকায় গোলাগুলির ঘটনায় এক ইসরায়েলি সেনা আহত হওয়ার পর জোরালো হামলা চালানোর নির্দেশ দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর এসব হামলাকে এই উপত্যকায় সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেড ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি ভাঙার অভিযোগ এনে বলেছে, নিখোঁজ এক ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করার পরিকল্পনা তারা আপাতত স্থগিত রাখবে।
এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি সতর্ক করে আরও বলেছে, ইসরায়েলের নতুন হামলা জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারে শুরু করা তল্লাশি ও খনন কার্যক্রম ব্যাহত করবে। এ কারণে গাজায় থাকা আরও ১৩ জিম্মির মরদেহ উদ্ধারে বিলম্ব হবে।
ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল হিলে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, উভয় পক্ষের লঙ্ঘনের অভিযোগ সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর আছে।
‘ছোটখাটো সংঘর্ষ হতেই পারে,’ সাংবাদিকদের বলেন জেডি ভ্যান্স। ‘আমরা জানি, হামাস বা গাজার ভেতরে অন্য কেউ একজন ইসরায়েলি সেনাকে আক্রমণ করেছে। ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া আশা করাই যায়। তবু প্রেসিডেন্টের (ডোনাল্ড ট্রাম্প) শান্তিচুক্তি টিকে থাকবে বলে আমি মনে করি।’
হামাস অবশ্য রাফাহর ওই হামলায় নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছে।
গাজার চিকিৎসা সূত্রগুলো সাংবাদিকদের জানায়, গত মঙ্গলবারের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে উত্তর গাজা সিটির সাবরা এলাকার একটি আবাসিক ভবনের চারজন ও দক্ষিণের খান ইউনিসের পাঁচজন ছিলেন।
আল–জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ গাজা সিটি থেকে জানান, আল–শিফা হাসপাতালের পেছনে একটি ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে। গাজার আকাশজুড়ে ইসরায়েলি ড্রোনের তৎপরতা ছিল ব্যাপক।
হানি মাহমুদ আরও বলেন, ‘ওই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে বড় বিস্ফোরণ হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। আমরা এখান থেকে ২০ মিনিটের দূরত্বে ছিলাম। তবু শব্দ শোনা যাচ্ছিল। হামলায় হাসপাতালের রোগী ও কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।’
আর হামলার পর পার্শ্ববর্তী সাবরা এলাকায় ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া ফিলিস্তিনিদের উদ্ধারে সারা রাত চলেছে তল্লাশি ও খোঁড়াখুঁড়ি। উদ্ধারকর্মীরা খালি হাতে ধ্বংসাবশেষ সরানোর চেষ্টা করেন।
চিকিৎসকেরা জানান, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। ঘটনাস্থলে থাকা সিভিল ডিফেন্সের কর্মী ইব্রাহিম আবু রিশ বলেন, ‘এটি যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন। আমরা হতাহত কয়েকজনকে পেয়েছি। যতজনকে সম্ভব উদ্ধার করার জন্য আমরা হাসপাতাল ভবন তল্লাশি করছি।’
হামলার আগে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে জানানো হয়, সেনাবাহিনীকে গাজায় ‘শক্তিশালী হামলা চালানোর’ নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। হামলার সুনির্দিষ্ট কারণ জানায়নি এ দপ্তর।
তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ পরে এক বিবৃতিতে বলেন, হামাস রাফাহয় সেনাদের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ী এবং এর ‘চড়া মাশুল’ দিতে হবে।
দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানায়, ইসরায়েল হামলার আগে ওয়াশিংটনকে এ বিষয়ে জানিয়েছিল।
গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর জানায়, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এ উপত্যকায় অন্তত ৯৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ত্রাণ সহায়তাও কঠোরভাবে সীমিত রাখা হয়েছে।
হামাস অবিলম্বে ইসরায়েলের হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যম টেলিগ্রামে তারা বলেছে, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলা ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের তত্ত্বাবধানে শারম আল–শেখে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রকাশ্য লঙ্ঘন।’
হামাস আরও জানায়, তারা চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে এবং ইসরায়েলের মিথ্যা অভিযোগ বন্ধ করা উচিত।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সুহাইল আল–হিন্দি আল–জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। ইসরায়েলকে বুঝতে হবে। তারা আমাদের অসত্যভাবে অভিযুক্ত করা বন্ধ করুক।’ জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারে তাদের সংগঠন বড় ধরনের সমস্যার মুখে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
সুহাইল বলেন, ‘আমরা যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি, জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারের জন্য। অবশিষ্ট জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারে যে দেরি হচ্ছে, তার পুরো দায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর।’
গত মঙ্গলবার কাসাম ব্রিগেড জানায়, তারা দুই ইসরায়েলি জিম্মি- আমিরাম কুপার ও সাহার বারুচের মরদেহ উদ্ধার করেছে। একই সঙ্গে তারা এদিন মরদেহ হস্তান্তরের পূর্বনির্ধারিত প্রক্রিয়া স্থগিত করার ঘোষণা দেয়।
২০১৯ সালের পর প্রথমবারের মতো বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং। দক্ষিণ কোরিয়ার গিওংজুতে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই নেতার এই বৈঠক হবে। বুধবার সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যদিও ওয়াশিংটন ও বেইজিং উভয়েই সম্পর্কের উত্তাপ কমানোর চেষ্টা করছে, তবু বিশ্লেষকদের ধারণা, দুই পরাশক্তির বিরোধপূর্ণ নানা ইস্যুর সমাধান এখনই সম্ভব নয়।
এই বৈঠককে ঘিরে আগেই আলোচনায় এসেছে সম্ভাব্য চুক্তির খসড়া। এতে বলা হয়েছে, চীন বিরল খনিজ উপাদানের ওপর কঠোর রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ স্থগিত করতে পারে। আর যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্কারোপের হুমকি থেকে সরে আসতে পারে। একই সঙ্গে দুদেশ সয়াবিন বাণিজ্য, ফেন্টানাইল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ ও টিকটক-সংক্রান্ত ইস্যুতেও সহযোগিতার সম্ভাবনা খুঁজছে।
তবে বাণিজ্য যুদ্ধের বড় অংশ এখনো অক্ষুণ্ণ থাকবে। বর্তমানে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের গড় শুল্ক ৫৫ শতাংশেরও বেশি, আর মার্কিন পণ্যের ওপর চীনের শুল্ক প্রায় ৩২ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র শত শত চীনা কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে এবং উন্নতমানের এআই চিপ ও সরঞ্জাম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে চীনও বেশ কয়েকটি মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে ‘অবিশ্বস্ত সত্তা’ তালিকায় যুক্ত করেছে।
বাণিজ্যিক উত্তেজনার কারণে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রবাহও দ্রুত কমছে। সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রপ্তানি কমেছে ২৭ শতাংশ, আর মার্কিন পণ্যের আমদানি ১৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকতে পারে।
রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়াং ওয়েন বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কাঠামোগত দ্বন্দ্ব এখনো অমীমাংসিত। ভবিষ্যতে সম্পর্ক আরও কঠিন হতে পারে।
অন্যদিকে সাংহাইয়ের হুটং রিসার্চের বিশ্লেষক শান গুও মনে করেন, এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে উত্তেজনা এড়ানো, কোনো স্থায়ী সমাধান নয়।
জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডেনিস ওয়াইল্ডার আশা প্রকাশ করেছেন, এই আলোচনায় কৌশলগত ইতিবাচক ফলাফল আসতে পারে, তবে বাণিজ্য যুদ্ধ এখানেই শেষ হবে না।
ট্রাম্প যেখানে চীনকে আমেরিকার অর্থনীতি ‘ধ্বংসের’ দায়ে অভিযুক্ত করেন। অপরদিকে শি চিন পিং সেখানে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে চলেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, দুদেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত। তবে উভয়পক্ষই বুঝতে পারছে, লড়াই নয়, কথোপকথনই এখন একমাত্র পথ।
ইরান এবার ১৫ বছরের চেষ্টার পর সফল হলো কার্গো বিমান তৈরিতে। এর মধ্য দিয়ে দেশটি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নিজস্ব প্রযুক্তিতে বিমান শিল্পে আরেকটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো।
প্রেস টিভি ইরানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, ইরান তাদের নিজস্বভাবে তৈরি কার্গো বিমান সিমোর্গ এর আনুষ্ঠানিক পরীক্ষামূলক ফ্লাইট শুরু করেছে। এই বিমানটি ইরানের কার্গো বিমান বহরে যুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
গত মঙ্গলবার ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় শহর শাহিন শাহরের একটি এয়ারফিল্ডে দেশটির প্রতিরক্ষা ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধানদের উপস্থিতিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সিমোর্গ এর এই পরীক্ষা শুরু হয়।
ইরানের বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা জানিয়েছে, দেশটির বিমান বহরে যোগদানের চূড়ান্ত অনুমতি পেতে হলে সিমোর্গকে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে মোট ১০০ ঘণ্টা পরীক্ষামূলক ফ্লাইট সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
প্রেস টিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিএএর প্রধান হোসেইন পুরফারজানেহ মঙ্গলবার বলেন, সিমোর্গের দেশীয়করণ প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হতে ১৫ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে এবং এর মাধ্যমে ইরান বিমান নকশা ও তৈরির সক্ষমতা সম্পন্ন বিশ্বের ২০টিরও কম দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে।
ফার্সি পুরাণ ও সাহিত্যে বর্ণিত একটি কিংবদন্তি পাখির নামে নামকরণ করা সিমোর্গ বিমানটিতে আড়াই হাজার হর্সপাওয়ারের দুটি ইঞ্জিন রয়েছে, যা ৬ মেট্রিক টন কার্গো তিন হাজার ৯০০ কিলোমিটার দূরত্বে বহন করতে সক্ষম। এর সর্বোচ্চ উড্ডয়ন ওজন হলো ২১.৫ মেট্রিক টন।
২০২২ সালের মে মাসে বিমানটি একটি দ্রুত-ট্যাক্সি পরীক্ষা সম্পন্ন করে, যা তার প্রথম উড্ডয়নের এক বছর আগে হয়েছিল। এরপর থেকে সিমোর্গ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বিমানটির জন্য সিএএ থেকে একটি পরীক্ষার শংসাপত্র পাওয়ার চেষ্টা করছে। এই প্রক্রিয়ার মধ্যে বিমানের উড্ডয়নযোগ্যতা নির্দেশক ‘টাইপ সার্টিফিকেট’ প্রাপ্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, সিমোর্গ হলো ইরান-১৪০-এর একটি সংশোধিত সংস্করণ, যা মূলত অ্যান্টোনভ এএন-১৪০-এর ওপর ভিত্তি করে তৈরি একটি ইরান-ইউক্রেন যৌথ প্রকল্প ছিল। তবে সাবেক সিএএ কর্মকর্তারা এই দৃষ্টিভঙ্গিকে বিতর্কিত করে বলেছেন, এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি বিমান, কারণ এতে একটি সংশোধিত ইঞ্জিন এবং ফিউসেলেজ ব্যবহার করা হয়েছে।
সিমোর্গকে একটি চটপটে, হালকা ও দ্রুতগতির বিমান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে, যার উচ্চ কার্গো বহন ক্ষমতা রয়েছে এবং এটি ইরানের আবহাওয়ার সঙ্গে মানানসই। এই বৈশিষ্ট্যগুলো এটিকে মেডিকেল ফ্লাইটের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলোর জন্য উপযুক্ত পছন্দ হিসেবে তৈরি করেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই বিমানটি ইরানের স্থল ও নৌবাহিনীকে দেশের বিভিন্ন ঘাঁটির মধ্যে সেনা বা সরঞ্জাম পরিবহনের সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। তারা আরো বিশ্বাস করে, সিমোর্গ ভবিষ্যতে ইরানের স্বল্প-দূরত্বের যাত্রী বিমানের বহরেও যোগ দিতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর প্রতিবেদনগুলোতে ইরানের বিমান উৎপাদন এবং রক্ষণাবেক্ষণ শিল্পে বড় সাফল্যের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পটভূমিতে এই অগ্রগতি এসেছে, কারণ এই নিষেধাজ্ঞার কারণে দেশটির এয়ারলাইনসগুলো নতুন বিমান বা বিমানের যন্ত্রাংশ কিনতে পারে না।
দক্ষিণ কোরিয়ায় আঞ্চলিক শীর্ষ সম্মেলনের সময় উত্তর কোরিয়া তাদের পশ্চিম ইয়োলো সাগরে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ২ ঘণ্টারও বেশি সময় উড়ে সঠিকভাবে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে।
বুধবার উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক-সক্ষম ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার কয়েক ঘণ্টা পরে টোকিও থেকে দক্ষিণ কোরিয়া পৌঁছেন ট্রাম্প। সেখানে সিইওদের একটি শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন এবং ঐতিহাসিক শহর গিয়াংজুতে লির সাথে দেখা করবেন ট্রাম্প।
কেসিএনএ জানিয়েছে, নতুন এই অস্ত্র দেশের পারমাণবিক-সশস্ত্র সামরিক সক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্তকরণের তথ্য নিশ্চিত করেনি।
পরীক্ষায় উত্তর কোরিয়ার ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা পাক জং চোন উপস্থিত ছিলেন। তিনি নতুন ডেস্ট্রয়ার চো হিওন ও কাং কনের নাবিকদের প্রশিক্ষণ পরিদর্শন করেছেন। কিম জং উন নৌবাহিনী শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে এই জাহাজগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
গত সপ্তাহের স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার পর এটি সর্বশেষ উৎক্ষেপণ। এতে নতুন হাইপারসনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা পারমাণবিক যুদ্ধ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থানকালে কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক সম্ভাবনা প্রকাশ করেছেন। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা সম্ভাবনা কম বলছেন।
২০১৯ সালে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কিমের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনার ব্যর্থতার পর থেকে উত্তর কোরিয়া ওয়াশিংটন ও সিউলের সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসেনি। কিমের বিদেশ নীতি বর্তমানে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকেছে; ইউক্রেনে সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম পাঠিয়েছে এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে নতুন শীতল যুদ্ধের কৌশল অনুসরণ করছে।
উত্তর কোরিয়া পুনর্ব্যক্ত করেছে, মার্কিন পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের দাবি প্রত্যাহার না হলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ফিরবে না।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রাচীন সোনার মুকুটের প্রতিরূপ উপহার দিয়েছেন। বুধবার কোরিয়ার ঐতিহাসিক শহর কিয়ংজুতে দুই নেতার বৈঠকের সময় এই প্রতীকী উপহার প্রদান করা হয়।
উপহার পেয়ে খুশি হয়ে ট্রাম্প জানান, এটি তার কাছে ‘খুব বিশেষ’ কিছু। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে, এই উপহার দুদেশের মধ্যে ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও যৌথ উন্নয়নের নতুন যুগের’ প্রতীক হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
এই মুকুটটি তৈরি করা হয়েছে প্রাচীন শিলা সাম্রাজ্যের রাজমুকুটের আদলে। কোরিয়ার জাতীয় জাদুঘরের তথ্যানুযায়ী, সেই সোনার মুকুট রাজা ও অভিজাত শ্রেণির ‘পবিত্র কর্তৃত্ব ও পরম শাসনের প্রতীক’ ছিল।
শিলা সাম্রাজ্য ছিল কোরীয় উপদ্বীপ শাসন করা তিনটি প্রাচীন রাজবংশের একটি। খ্রিষ্টীয় পঞ্চম ও ষষ্ঠ শতকের তাদের শিল্পকর্ম আজও বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত।
সোনার সেই রাজমুকুটে গাছের ডালপালার নকশা ব্যবহার করা হয়েছিল, যা রাজাদের ‘স্বর্গীয় ম্যান্ডেট বা দেবপ্রদত্ত ক্ষমতা’ নির্দেশ করে। মুকুটে পশুর অলঙ্করণও দেখা যায়।
ট্রাম্প এপেক সম্মেলনে অংশ নিতে কিয়ংজু সফর করছেন। সেখানে এক বিশেষ প্রদর্শনীতে শিলা যুগের ছয়টি সোনার মুকুট একসঙ্গে প্রদর্শিত হবে।
এর আগের দিন জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি ট্রাম্পকে উপহার দিয়েছেন গলফ তারকা হিদেকি মাতসুয়ামার স্বাক্ষর করা গলফ ব্যাগ এবং প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ব্যবহৃত একটি পাটার।
বাল্টিক ও উত্তর সাগরে রাশিয়ার সামরিক ও গোয়েন্দা তৎপরতার নতুন অধ্যায় মোকাবিলায় ইউরোপ প্রস্তুত নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা একই সঙ্গে ইউরোপীয় ও মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিভাজনের কথাও উল্লেখ করেছেন।
কোস্টাল ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাপ্লাইড ইন্টেলিজেন্সের সহকারী পরিচালক জোসেফ ফিটসানাকিস বলেন, ‘১৯৩৯ সালের তুলনায় আজ ইউরোপ রাশিয়ার সামরিক অগ্রগতির মুখোমুখি হতে প্রস্তুত নয়। ফ্রন্ট-লাইন রাষ্ট্রগুলো সতর্ক হলেও পশ্চিম ইউরোপের জনগণ এখনো হুমকির পুরো পরিধি বুঝতে পারেনি।’
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের পর রাশিয়ান গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে নাশকতা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আটলান্টিক কাউন্সিলের উত্তর ইউরোপ পরিচালক আনা উইসল্যান্ডার বলেন, ‘হাইব্রিড যুদ্ধ ইউরোপকে দুর্বল ও বিভক্ত করছে।’
সেপ্টেম্বরের শুরুতে পোল্যান্ড ও এস্তোনিয়ার আকাশসীমায় রাশিয়ার ড্রোন ও যুদ্ধবিমান নজরদারি নিশ্চিত করেছে ইউরোপীয় দেশগুলো। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাশিয়ার সামরিক বাহিনী ন্যাটোর সঙ্গে যুদ্ধের জন্য সক্রিয়ভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রাশিয়ার ‘ছায়া নৌবহর’ ও ড্রোন অভিযান ইউরোপীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। পোল্যান্ড ও অন্যান্য পূর্ব সীমান্তবর্তী দেশগুলো সক্রিয় প্রতিক্রিয়া নিচ্ছে; কিন্তু পশ্চিম ইউরোপে সমন্বিত ব্যবস্থা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের উপর ইউরোপীয় গোয়েন্দা নির্ভরতা থাকলেও ফিটসানাকিসের মতে, রাজনৈতিক কারণে সহযোগিতার মান ভেঙে পড়েছে। কিছু ইউরোপীয় গোয়েন্দা সংস্থা মার্কিন তথ্য ভাগাভাগি সীমিত করছে, যা ন্যাটোর কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপ ও ন্যাটোর ভেতরকার বিভাজন ইউরোপকে ‘জরুরি অবস্থা’ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।