বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

পশ্চিমবঙ্গে প্রতিমা বিসর্জনের সময় বানে প্রাণ গেল ৮ জনের, নিখোঁজ বহু মানুষ

ছবি: আনন্দবাজার পত্রিকা
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৬ অক্টোবর, ২০২২ ১৩:২০

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জলপাইগুড়ির মাল নদীতে দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন দেয়ার সময় হঠাৎ বানে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরও বহু মানুষ।

মৃতদের মধ্যে এক শিশু ও চারজন নারী রয়েছে। এ ঘটনায় আহত ১১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, গতকাল বুধবার রাতে মাল নদীতে প্রতিমা বিসর্জনের সময় আচমকা হড়পা বান ভাসিয়ে নিয়ে যায় অর্ধশতাধিক মানুষকে। ওই ঘটনায় স্থানীয়দের দাবি, ১০ জনের মরদেহ এখন পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, সারা রাত বৃষ্টির জেরে উদ্ধারকাজ বন্ধ ছিল। আজ বৃহস্পতিবার সকালেও বৃষ্টির জন্য কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল উদ্ধারকাজ। বেলা বাড়লে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় উদ্ধারকাজ আবারও শুরু হয়।

এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে লিখেছেন, ‘জলপাইগুড়িতে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমি ক্ষুব্ধ। এই দুর্ঘটনায় যারা মারা গিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি গভীর শোকপ্রকাশ করছি।’

জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মৌমিতা গোদারা বসু হিন্দুস্তান টাইমসকে জানান, বুধবার সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জন দিতে কয়েক শ লোক মাল নদীর তীরে জড়ো হয়েছিল। হঠাৎ হড়কা বান নেমে আসায় লোকজন ভেসে যায়। এ পর্যন্ত আটটি মরদেহ ও প্রায় ৫০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ ও স্থানীয় প্রসাশন তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছে।

মাল নদীর মাঝে একটি চরে উঠে অনেকেই প্রাণ বাঁচান বলে জানা গেছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, চরে আশ্রয় নেওয়া অনেককেই উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে এই ঘটনা প্রসঙ্গে পশ্চিবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘মালবাজারে হঠাৎ করেই হড়পা বান আসে। এর জেরে নদীর পাশে থাকা ভক্তরা পালানোর সময় পাননি। এই অঞ্চলের হড়পা বানের এটিই বৈশিষ্ট্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে কথা বলব এবং এলাকা পরিদর্শন করব। সমস্ত বিভাগকে সতর্ক করা হয়েছে।’

যদিও জলপাইগুড়িতে হড়পা বানের পরই সরকারের দিকে আঙুল তুললেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। তিনি বলছেন, এই বিষয়টি সরকারের সামনে আগেও উত্থাপন করেছিলেন তারা। বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে যখনই নদীতে জল স্তর বৃদ্ধি হয়, তখনই স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করার জন্য একটি ব্যবস্থা চালু করা উচিত সরকারের।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও এই সমস্যাটি উত্থাপন করেছি। মঙ্গলবার থেকে উত্তরবঙ্গ এবং ভুটানে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় সরকারের এই বিষয়টি আঁচ করা উচিত ছিল।’


ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে বিশ্বকে আহ্বান ফ্রান্সসহ ১৫ দেশের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ফ্রান্সসহ ১৫টি পশ্চিমা দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে বিশ্বের সব দেশকে আহ্বান জানিয়েছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্যারিস থেকে এএফপি জানিয়েছে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সম্মেলনের পর ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো এক্স-এর এক পোস্টে লিখেছেন, ‘নিউইয়র্কে আরো ১৪টি দেশের সঙ্গে ফ্রান্স একটি সম্মিলিত আহ্বান জানাচ্ছে যে আমরা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছি এবং যারা এখনো তা করেনি, তাদের আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এই সম্মেলনের লক্ষ্য ছিল ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে পুনর্জীবিত করা।


৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্পে রাশিয়া, জাপানে সুনামি; দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে সতর্কতা জারি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। বুধবার ৮.৮ মাত্রার ওই কম্পনে উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে সুনামির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া আলাস্কা, হাওয়াই ও দক্ষিণে নিউজিল্যান্ড পর্যন্ত উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

জাপান ও মার্কিন ভূমিকম্পবিদদের মতে, জাপানের স্থানীয় সময় বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে ভূমিকম্পটির প্রাথমিক মাত্রা ছিল ৮.০। পরে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) তা সংশোধন করে ৮.৮ করে এবং ভূকম্পনটির গভীরতা ছিল ২০.৭ কিলোমিটার।

ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল রাশিয়ার কামচাটকার পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাতস্কি শহর থেকে ১১৯ কিলোমিটার পূর্ব থেকে দক্ষিণ-পূর্বে। ওই শহরটির জনসংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার। সেখানে এ পর্যন্ত ৬.৯ মাত্রার বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পনও রেকর্ড করা হয়েছে।

পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাতস্কিতে ভবনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, রাস্তায় গাড়ি দুলেছে, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং মোবাইল ফোন সেবাও বন্ধ হয়ে যায়।

রুশ সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কয়েকজন চিকিৎসা সহায়তা চাইলেও গুরুতর আহতের খবর পাওয়া যায়নি।

২০১১ সালের মার্চে জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূলে আঘাত হানা ৯.০ মাত্রার ভূমিকম্পের পর বিশ্বজুড়ে এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পন। ওই ভূমিকম্পে বিশাল সুনামি হয়েছিল এবং একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গলন শুরু হয়।

তবে জাপানের প্রশান্ত উপকূলীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোতে বুধবারের ভূমিকম্পের পর কোনো গড়বড় ধরা পড়েনি। টোকিও ইলেকট্রিক পাওয়ার কোম্পানি (টেপকো) জানিয়েছে, ফুকুশিমা দাইইচি কেন্দ্রটিতে প্রায় ৪ হাজার কর্মী উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন এবং দূর থেকে কেন্দ্রে নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন।

ফিলিপাইনের ভূকম্প ও আগ্নেয়গিরি সংস্থার প্রধান টেরেসিতো বাকলকল বলেন, তাদের পূর্ব উপকূলীয় শহর ও প্রদেশগুলোতে ১ মিটার (৩ ফুট) এর চেয়ে কম উচ্চতার সুনামি ঢেউ আঘাত হানতে পারে।

তিনি বলেন, ‘ঢেউ বড় না হলেও তা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আসতে পারে এবং পানিতে থাকা মানুষের জন্য তা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।’

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে সুনামির প্রথম ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে জানানো হয়। এ সময় হনলুলুতে সুনামির সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে এবং মানুষ উঁচু এলাকায় সরে যেতে শুরু করে।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, হোক্কাইডোর দক্ষিণ উপকূলীয় টোকাচিতে ৪০ সেন্টিমিটার (১.৩ ফুট) উঁচু সুনামি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।

রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের ভূকম্পনের উপকেন্দ্রসংলগ্ন এলাকাগুলোতে অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানকার লোকজন সরিয়ে নেওয়া হলেও গুরুতর কোনো আহতের খবর পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় গভর্নর ভ্যালেরি লিমারেঙ্কো জানান, রাশিয়ার কুরিল দ্বীপপুঞ্জের প্রধান বসতি সেভেরো-কুরিলস্কে প্রথম সুনামি ঢেউ আছড়ে পড়ে। তিনি বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দারা নিরাপদে আছেন এবং দ্বিতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা কেটে না যাওয়া পর্যন্ত তারা উঁচু এলাকায় অবস্থান করবেন।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কতাকেন্দ্র জানায়, ভূমিকম্পটি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের সব দ্বীপ ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো সুনামির সৃষ্টি করেছে। তাদের সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘জীবন ও সম্পদ রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলীয় অঙ্গরাজ্য ওরেগনের জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ ফেসবুকে জানায়, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটের পর ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার ছোট ছোট সুনামির ঢেউ ওরেগনের উপকূলে পৌঁছাতে পারে। এ সময় মানুষকে সমূদ্র সৈকত, বন্দর ও নৌ-ঘাঁটি এড়িয়ে নিরাপদ দূরত্বে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।

তারা জানায়, ‘এটি বড় কোনো সুনামি নয়, তবে জলোচ্ছ্বাস ও বিপজ্জনক স্রোত পানির কাছাকাছি থাকা ব্যক্তিদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।’

ওরেগনসহ যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলজুড়ে, অর্থাৎ, কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া, ওয়াশিংটন ও ক্যালিফোর্নিয়াতেও সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

নিউজিল্যান্ড কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশটির উপকূলজুড়ে ‘অস্বাভাবিক প্রবল স্রোত ও অনিয়মিত ঢেউ’ দেখা দিতে পারে। তাদের জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা সবাইকে পানির বাইরে, সৈকত ও নদী মোহনার কাছ থেকে দূরে সরে যেতে বলেছে।

নিউজিল্যান্ড প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণাংশে, ভূকম্পনের উপকেন্দ্র থেকে প্রায় ৯ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

রাশিয়ার ভূতাত্ত্বিক গবেষণা সংস্থার কামচাটকা শাখা জানিয়েছে, ১৯৫২ সালের পর এই এলাকায় এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।

তারা বলছে, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও কম্পন-পরবর্তী আঘাতের ঝুঁকি রয়েছে এবং তা এক মাস পর্যন্ত চলতে পারে। কিছু উপকূলীয় এলাকায় না যাওয়ার জন্যও সতর্ক করেছে তারা।

এ মাসের শুরুতেই কামচাটকার উপকূলে সমুদ্রে পাঁচটি শক্তিশালী ভূকম্পন হয়েছিল, যার মধ্যে সবচেয়ে বড়টির মাত্রা ছিল ৭.৪। সেটি ২০ কিলোমিটার গভীরে এবং পেত্রোপাভলোভস্ক-কামচাতস্কি থেকে ১৪৪ কিলোমিটার দূরে ছিল।

এর আগে ১৯৫২ সালের ৪ নভেম্বর কামচাটকায় ৯.০ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি হলেও কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি, যদিও সেটি হাওয়াইয়ে ৯.১ মিটার (৩০ ফুট) উঁচু ঢেউ সৃষ্টি করেছিল।


নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত ৫ : মার্কিন গণমাধ্যম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানের মধ্যাঞ্চলে সোমবার একটি বহুতল ভবনে এক বন্দুকধারীর গুলিতে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও রয়েছেন।

মার্কিন গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে নিউইয়র্ক থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে (২২০০ জিএমটি) ঘটনার সূত্রপাত হয়। নিউইয়র্কের বিখ্যাত পার্ক অ্যাভিনিউর একটি বহুতল ভবনে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে শত শত পুলিশ বহুতল ভবন বিশিষ্ট পার্ক অ্যাভিনিউ এলাকা ঘিরে ফেলেন।

ওই ভবনে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ব্ল্যাকস্টোন, নিরীক্ষা সংস্থা কেপিএমজি এবং ন্যাশনাল ফুটবল লিগের মতো বড় প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল ৩৪৫, পার্ক অ্যাভিনিউ একটি অফিস টাওয়ার ব্লকে অবস্থিত। ঘটনাস্থলটি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও নিহত হয়েছেন। তবে, সন্দেহভাজনের পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি পুলিশ।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন নারী কর্মী জানান, আমি এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ‘আমি তখন পাশেই ছিলাম। অন্য একজন বর্ণনা করেছেন যে কর্মীরা চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ওই সময় একজন বন্দুকধারী একের পর এক ফ্লোরে ছুটছিলেন’।

একটি আইন প্রয়োগকারী সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, ‘আজ মিডটাউন ম্যানহাটনে গুলি চালানোর ঘটনায় নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগের একজন কর্মকর্তাসহ চারজন নিহত হয়েছেন,’। সূত্রটি আরো জানিয়েছে যে সন্দেহভাজন বন্দুকধারী ‘আত্মঘাতী’ বলে মনে করা হচ্ছে।

ঘটনার পরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘আঘাত’ করা হয়েছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান মেয়র।

যদিও নিউইয়র্ক পুলিশের মুখপাত্র পরবর্তী সময় বলেন, তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত কিংবা অস্বীকার—কোনোটাই করতে পারছেন না।

পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশ এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, এই মুহূর্তে ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং একমাত্র সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী অফিস কর্মী শাদ সাকিব এএফপিকে বলেন, তিনি কাজ শেষে বাড়ি ফেরার জন্য জিনিসপত্র গোছাচ্ছিলেন, এমন সময় তাদের নিজ নিজ জায়গায় আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকে ঘোষণা করা হয়। তিনি বলেন, 'সবাই হতবিহ্বল হয়ে পড়েছিল। পরে একজন বিষয়টি বুঝতে পারে যে, কেউ একজন মেশিনগান নিয়ে ভবনে প্রবেশ করেছে।'


অবশেষে নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সীমান্ত নিয়ে বিরোধের জেরে চলমান সংঘর্ষের পর নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া। বিষয়টি জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়োর ইব্রাহিম। সংঘর্ষের পাঁচদিন পর অবশেষে সমাধানে এসেছে প্রতিবেশী দেশদুটি।

স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে প্রতিবেশী দেশদুটির ছয়টি সীমান্ত এলাকায় গোলাগুলি ও রকেট হামলার মধ্য দিয়ে এই সহিংসতা শুরু হয়। সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৩৫ জন নিহত এবং ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

সংঘর্ষের পাঁচ দিন পর যুক্তরাষ্টের চলমান চাপের কারণে সোমবার পুত্রজায়ায় ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে যুদ্ধ থামাতে সম্মত হন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত ও থাইল্যান্ডের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী ফুমথম ওয়েচায়াচাই।

এর আগে, শনিবার (২৬ জুলাই) নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানান, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সরকারপ্রধানকে তিনি বলেছেন যে সংঘাত না থামালে তাদের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনায় এগোবে না ওয়াশিংটন। এরপর দুই দেশই যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে দাবি করেন ট্রাম্প।

সোমবারের বৈঠকের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উভয় পক্ষই খোলামেলা আলোচনার পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে একটি অভিন্ন বোঝাপড়ায় পৌঁছেছে।’ উত্তেজনা প্রশমন এবং শান্তি ও নিরাপত্তা পুনর্প্রতিষ্ঠার পথে এটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম ধাপ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আনোয়ার ইব্রাহিম জানান, মালয়েশিয়া, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের জন্য একটি বিস্তারিত কার্যপদ্ধতি প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা যায়।

এ সময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক শিগগিরই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন। তিনি বলেন, ‘থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা পুনর্গঠনের এখনই সময়।’

এ ছাড়া এই সিদ্ধান্ত শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য থাইল্যান্ডের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন বলে মন্তব্য করেছেন ফুমথম।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি চাপের কারণেই এই যুদ্ধবিরতি হওয়ায় সোমবার এক্সে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতি ও শান্তি স্বাপনে সম্মত হয়েছে। আমি শান্তির প্রেসিডেন্ট হয়ে গর্বিত।’

যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বৈঠক আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও-ও। তিনি বলেন, তৎক্ষণাৎ সংঘর্ষ বন্ধে তিনি ও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড সরকার এই সংঘাত অবসানের জন্য তাদের অঙ্গীকার পূর্ণভাবে রক্ষা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এরপর হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলাইন লেভিট যুদ্ধবিরতির খবর এক্সে পোস্ট করে লেখেন, ‘এই শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তাকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দিন!’

থাইল্যান্ড ও কাম্বোডিয়ার ৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বহু দশক ধরেই বিরোধপূর্ণ। এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ছোট একটি সীমান্ত এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির মধ্য দিয়ে সংঘাতের সূত্রপাত হয়।

সে সময় এক কম্বোডিয়ান সেনা গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। শুরুতে দুপক্ষই দাবি করে যে তারা আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছে। এ নিয়ে তখন উত্তেজনা তৈরি হয়। এরপর একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর এই সামরিক উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

পরে দুই দেশ উত্তেজনা হ্রাসে একমত হয়। তবে সীমান্তে কড়াকড়ি, নিষেধাজ্ঞা ও বাকযুদ্ধ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।


যুদ্ধ বিরতির প্রথম দিনে গাজায় ১২০ ট্রাক ত্রাণ পৌঁছেছে : ইসরাইল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইসরাইল সোমবার জানিয়েছে, যুদ্ধে আংশিক বিরতির প্রথম দিনে জাতিসংঘ এবং সহায়তা সংস্থাগুলো গাজা উপত্যকায় ১২০ টিরও বেশি ট্রাক ভর্তি খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেছে।

জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

রোববার, ইসরাইল গাজার কিছু এলাকায় সামরিক হামলা ‘কৌশলগত’ বিরতি ঘোষণা করেছে এবং ত্রাণের জন্য নিরাপদ রুট খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং মানবিক গোষ্ঠীগুলোকে খাদ্য বিতরণ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বেসামরিক বিষয় তত্ত্বাবধানকারী ইসরাইলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংস্থা কো-অর্ডিনেটর অব গভার্নমেন্ট অ্যাক্টিভিটিজ ইন দ্য টেরিটোরিস (কোগ্যাট) সোমবার এক্স-এ এক পোস্টে জানিয়েছে, গতকাল জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ১২০ ট্রাকেরও বেশি ত্রাণ সংগ্রহ এবং বিতরণ করেছে’।


মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় ‘নিঃশর্ত’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সোমবার মধ্যরাত থেকে ‘নিঃশর্ত’ যুদ্ধবিরতিতে যাবে বলে ঘোষণা করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।

পুত্রাজায়া থেকে এএফপি জানায়, মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত মধ্যস্থতামূলক আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ড উভয় পক্ষ একটি অভিন্ন সমঝোতায় পৌঁছেছে, স্থানীয় সময় অনুযায়ী ২৮ জুলাই, ২০২৫ তারিখ মধ্যরাত থেকে ‘তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত’ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।


গাজায় অনাহারে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ১ লাখ শিশু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজায় খাবার-সংকট অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। উপত্যকাটিতে দুই বছরের কম বয়সি ১ লাখের বেশি শিশু অপুষ্টির কারণে মৃত্যুর চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে গাজার কিছু এলাকায় প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে হামলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

টানা ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর মে মাসের শেষের দিক থেকে গাজায় খুব সামান্য পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এছাড়া ইসরায়েলে ও যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত বিতর্কিত ত্রাণকেন্দ্রে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হত্যার শিকার হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার তিন ভাগের এক ভাগ মানুষ দিনের পর দিন না খেয়ে রয়েছেন।

গাজায় খাবার-সংকটের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী শিশুরা। উপত্যকাটির জনসংযোগ কার্যালয় থেকে গত শনিবার জানানো হয়েছে, ফর্মুলা দুধ সরবরাহ না করা হলে আসন্ন মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে দুই বছরের কম বয়সি ১০ লাখের বেশি শিশু। তাদের মধ্যে ৪০ হাজার শিশুর বয়স এক বছরের কম। ফর্মুলা দুধের অভাবে শিশুদের পানি খাওয়াচ্ছেন মায়েরা।

চরম দুর্দশায় রয়েছেন গাজার মায়েরাও। অপুষ্টির কারণে শিশুদের বুকের দুধ খাওয়াতে পারছেন না তারা। এমনই একজন জয়নব। তিনি বলেন, ‘এই অনাহারের মধ্যেই আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। যখন সন্তানের জন্ম দিই, তখনো অনাহারে ছিলাম। গত ৯ মাসে একটি ডিমও খেয়েছি কি না, মনে পড়ে না। এর বেশি আর কী বলব?’

খাবারের এই হাহাকারের মধ্যে গতকাল রোববার অনাহারে আরও পাঁচ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত মার্চে গাজায় ইসরায়েলের অবরোধ শুরু পর থেকে এ নিয়ে অনাহার ও অপুষ্টিতে অন্তত ১২৭ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হলো। তাদের মধ্যে ৮৫ জনের বেশি শিশু। এছাড়া ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় উপত্যকাটিতে নিহত হয়েছেন প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি।

ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজায় সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে জাতিসংঘ। উপত্যকাটিতে ‘ব্যাপক হারে দুর্ভিক্ষ’ ছড়িয়ে পড়ছে বলে গত বুধবার সতর্ক করেছিল শতাধিক মানবাধিকার সংস্থা। এ ছাড়া গাজায় দেখা দেওয়া ‘ভয়াবহ বিপর্যয়’ থামানোর জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গত শুক্রবার বিবৃতি দিয়েছিল যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি।

এএফপি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে আজ গাজার কিছু এলাকায় প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে ‘কৌশলগত সামরিক কর্মকাণ্ড’ স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তারা বলেছে, উপত্যকার আল মাওয়াসি, দেইর আল-বালাহ ও গাজা নগরীতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত হামলা চালানো হবে না। এ সময়ে জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলো সড়কপথে নিরাপদে ত্রাণ পাঠাতে পারবে।

এ ছাড়া গাজায় আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলা হচ্ছে বলে আজ জানিয়েছে ইসরায়েল। উত্তর গাজায় এমনই একটি ত্রাণের বাক্স একটি তাঁবুর ওপর পড়ে অন্তত ১১ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। মিসর থেকেও রাফা ক্রসিং হয়ে ত্রাণের ট্রাক গাজায় প্রবেশ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আল-কাহেরা নিউজ।

এদিকে গাজাবাসীর জন্য ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) জাহাজ ‘হান্দালাকে’ বাধা দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। আজ এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, জাহাজটির আরোহীদের ‘অপহরণ’ করা হয়েছে। ওই সময় জাহাজটি গাজা উপকূল থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ছিল।

সূত্র: মিডল ইস্ট আই


অনাহারে ১২৭ প্রাণহানির পর গাজায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি ইসরায়েলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

অনাহারে একের পর এক ফিলিস্তিনি মৃত্যুবরণ করায় আন্তর্জাতিক চাপের পরিপ্রেক্ষিতে অবশেষে গাজায় বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। ইতোমধ্যে মিসর থেকে ত্রাণের ট্রাকগুলো গাজার থেকে যাত্রা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব আল কাহেরা নিউজ টিভি।

স্থানীয় সময় শনিবার (২৬ জুলাই) গাজায় ত্রাণ প্রবেশের জন্য পুনরায় মানবিক করিডর চালুসহ আকাশ থেকে ত্রাণ ফেলার (এয়ারড্রপ) কার্যক্রম শুরু করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতি মোকাবিলায় নেওয়া পদক্ষেপের অংশ হিসেবে তিনটি এলাকার চলমান অভিযানে ‘কৌশলগত বিরতি’ ঘোষণা করা হবে। রবিবার থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মুওয়াসি, দেইর আল-বালাহ ও গাজা শহরে সামরিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।

যদিও বর্তমানে এসব এলাকায় সক্রিয়ভাবে অভিযান চালাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তারা। তবে গত কয়েক সপ্তাহে এসব এলাকায় লড়াই ও হামলা হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, গাজায় ত্রাণ সংস্থাগুলোকে খাদ্য ও অন্যান্য সহায়তা পৌঁছাতে সহায়তার জন্য নিরাপদ রুটও নির্ধারণ করবে তারা।

রবিবার (২৭ জুলাই) আল কাহেরা টিভির সংবাদদাতা জানিয়েছেন, মিসর ও গাজার মধ্যবর্তী রাফাহ সীমান্ত থেকে দক্ষিণ গাজার কারাম আবু সালেম (কেরেম শালোম) ক্রসিংয়ের উদ্দেশে বেশ কয়েকটি ট্রাকে করে শত শত টন ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়েছে।

এর পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ‘বিতর্কিত’ এয়ারড্রপও শুরু করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সিএনএন।

এদিকে, মিডল ইস্ট আইয়ের খবরে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোর সহযোগিতায় পরিচালিত এয়ারড্রপে সাতটি প্যালেটে ময়দা, চিনি এবং টিনজাত খাদ্যদ্রব্যের মতো সামগ্রী থাকবে, যেগুলো বিদেশি অংশীদাররা সরবরাহ করবে।

তবে মানবিক সংস্থাগুলোর মতে, এই ধরনের এয়ারড্রপ মূলত প্রতীকী পদক্ষেপ এবং এটি কোনোভাবে স্থলপথে ত্রাণ সরবরাহের বিকল্প হতে পারে না।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, তারা গাজায় একটি পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট সম্প্রসারণে সহায়তা করবে এবং সেটিকে ইসরায়েলি বিদ্যুৎ সংযোগে যুক্ত করবে, যদিও গত ২১ মাসের অব্যাহত অভিযানে গাজার অধিকাংশ পানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামো ধ্বংস করেছে ইসরায়েল।

এরই মধ্যে গাজার দিকে ত্রাণবাহী জাহাজ নিয়ে আসার পথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ফ্রান্সের ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য ও গাজামুখী হানদালা মিশনের সদস্য এমা ফোরো জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের জাহাজের কাছে চলে এসেছে।

তিনি আরও জানান, নিজেদের মোবাইল ফোন তারা সাগরে ছুঁড়ে ফেলার পরিকল্পনা করছেন।

এদিকে, গাজায় পুনরায় ত্রাণ প্রবেশ করতে দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন কট্টরটন্থি নেতা ও ইসরায়েলে জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গাভির।

সিএনএননের খবরে অনুযায়ী, গাজায় এই ত্রাণ প্রবেশ করতে দেওয়াকে ‘হামাসের কাছে আত্মসমর্পণ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

গত মার্চে গাজায় জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার ত্রাণ প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ইসরায়েলে। এতে প্রায় ২০ লাখ গাজাবাসী চরম খাদ্যসংকটে পড়েন। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা অনেকদিন ধরেই দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা জানিয়ে আসছিলেন। পাশাপাশি অবরোধ পুরোপুরি প্রত্যাহার করে এবং মানবিক সহায়তার জন্য অবাধ প্রবেশাধিকার দিতে ত্রাণ সংস্থাগুলো এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তারা ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।

তবে হামাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো মানবাধিকার সংস্থার ত্রাণ এত দিন ঢুকতে দেয়নি ইসরায়েল। মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে চলতি বছরের মে থেকে গাজা হিউম্যানেটিরিয়ান ফাউন্ডেশন চালু করে তারা। তবে এই সংস্থাটির দেওয়া ত্রাণ ছিল গাজাবাসীর জন্য খুবই অপ্রতুল। ফলে উপত্যকাটিতে ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ।

দুর্ভিক্ষে এখন পর্যন্ত ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই। এর মধ্যে অন্তত ৮৫টি শিশু বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দুই শিশুসহ পাঁচ ফিলিস্তিনির অনাহারে মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক।


যুদ্ধবিরতির আশার মাঝেই থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া সংঘর্ষ অব্যাহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হলেও থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে চতুর্থ দিনের মতো সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে।

বিতর্কিত সীমান্ত নিয়ে চলমান এই সহিংসতায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৩ জন নিহত ও দুই লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

কম্বোডিয়ার সামরুং থেকে এএফপি জানিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে ট্রাম্প দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।

পরে জানানো হয় যে, উভয় দেশই দ্রুত যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে সম্মত হয়েছে।

তবে রোববার সকালে ফের গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। কম্বোডিয়ার উত্তরাঞ্চল ও থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চলে অবস্থিত দু’টি প্রাচীন ও বিতর্কিত মন্দিরের আশপাশে এসব সংঘর্ষ হয়।

কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মালি সোচেতা জানান, স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে থাই সেনারা মন্দিরসংলগ্ন এলাকায় হামলা চালায়।

এএফপি’র সাংবাদিকরা জানান, ফ্রন্টলাইন থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে কম্বোডিয়ার সামরুং শহরের ভবনের জানালাগুলো কামানের গোলার শব্দে কেঁপে ওঠে।

অপরদিকে থাই সেনাবাহিনীর উপ-মুখপাত্র রিচা সুকসুয়ানন বলেন, কম্বোডিয়ান বাহিনী ভোর ৪টার দিকে গোলাবর্ষণ শুরু করে।

তিনি জানান, দুই পক্ষই কৌশলগত এলাকাগুলোকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।

রোববার কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত জানান, তার দেশ ‘তাৎক্ষণিক ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতির’ প্রস্তাবে সম্মত।
এ বিষয়ে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাক সোখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলেও জানান তিনি।

তবে তিনি থাইল্যান্ডকে কোনো চুক্তি লঙ্ঘন না করার বিষয়ে সতর্ক করেন।

ট্রাম্পের ফোনালাপের পর থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই জানান, তার দেশ নীতিগতভাবে যুদ্ধবিরতিতে যেতে এবং যত দ্রুত সম্ভব আলোচনায় বসতে রাজি।

তবে তিনি বলেন, কম্বোডিয়াকে শান্তির প্রতি ‘সত্যিকারের সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা’ দেখাতে হবে।

পুরোনো সীমান্ত বিরোধ থেকেই এই সংঘর্ষের সূচনা। পাহাড় ও জঙ্গলে ঘেরা গ্রামীণ ওই অঞ্চলে এখন বিমান, ট্যাংক ও স্থলসেনা মোতায়েন রয়েছে। এলাকাটিতে স্থানীয়রা মূলত রাবার ও ধান চাষ করে।

থাই কর্তৃপক্ষ জানায়, এ পর্যন্ত তাদের সাত সেনা ও ১৩ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

কম্বোডিয়া জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত তাদের আট বেসামরিক ব্যক্তি ও পাঁচ সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন।

সংঘর্ষে থাইল্যান্ডের সীমান্ত এলাকা থেকে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে কম্বোডিয়ায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ।

শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূত চিয়া কেও বলেন, তার দেশ দ্রুত যুদ্ধবিরতি ও শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শনিবার দুই দেশকে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়ে স্থায়ী সমাধানে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘ মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক এক বিবৃতিতে বলেন, ‘দুই দেশের সংঘর্ষে প্রাণহানি, বেসামরিক নাগরিকের আহত হওয়া, ঘরবাড়ি ও অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতিতে মহাসচিব গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।’

এদিকে উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রথমে গোলাগুলি শুরু করার অভিযোগ এনেছে।

কম্বোডিয়ার অভিযোগ, থাই বাহিনী সংঘর্ষে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড বলেছে, কম্বোডিয়ান বাহিনী বেসামরিক স্থাপনাকে টার্গেট করেছে। এমনকি একটি হাসপাতালেও কামানের গোলা আঘাত হেনেছে বলে তারা দাবি করেছে।

৮শ’ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সীমান্ত নিয়ে বহুদিন ধরেই বিরোধ চলছে। সাম্প্রতিক সংঘর্ষে এ বিরোধ আরও তীব্র আকার নিয়েছে।

এখনো বেশ কিছু এলাকাকে নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।


ভারতের মন্দিরে পদদলিত হয়ে নিহত ৬

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

উত্তর ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের একটি জনপ্রিয় হিন্দু মন্দিরে রোববার পুজো দিতে গিয়ে ভিড়ের মধ্যে পদদলিত হয়ে ছয় জন পুণ্যার্থী নিহত হয়েছেন

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতের হরিদ্বার থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এ ঘটনায় আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

হিন্দুদের পবিত্র শহর হরিদ্বারে গঙ্গা নদীর তীরে মনসা দেবী মন্দিরে যাওয়ার সিঁড়িতে পদদলিত হয়ে এই ঘটনা ঘটে।

জ্যেষ্ঠ নগর পুলিশ কর্মকর্তা পরমেন্দ্র ডোভাল এএফপিকে জানিয়েছেন, পদদলিত হয়ে ছয় জন নিহত হয়েছেন।

তিনি বলেন, আহত অবস্থায় ১০ জনেরও বেশি লোককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছি এবং পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি।’

ভারতীয় ধর্মীয় উৎসবগুলোতে প্রায়ই প্রাণঘাতী পদদলিত হওয়া এবং জনতার ভিড়ে চাপা পড়ে হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

গত জুন মাসে, উপকূলীয় রাজ্য ওড়িশায় একটি হিন্দু উৎসবে হঠাৎ করে ভিড়ের কারণে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে তিন জন নিহত এবং আরো বেশ কয়েকজন আহত হন।

এর আগের মাসে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গোয়াতে হাজার হাজার মানুষ একটি জনপ্রিয় অগ্নিকুণ্ডে হাঁটার অনুষ্ঠানের জন্য জড়ো হওয়ার সময় ছয় জন প্রাণ হারান।

জানুয়ারিতে, উত্তরাঞ্চলীয় শহর প্রয়াগরাজে হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব কুম্ভমেলায় ভোরে ভিড়ের মধ্যে পদদলিত হয়ে কমপক্ষে ৩০ জন প্রাণ হারান।


গাজায় অভুক্ত অবস্থায় দিন পার করছে এক তৃতীয়াংশ মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজার প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ অভুক্ত অবস্থায় দিন পার করছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্যকর্মসূচি এ কথা বলেছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সেখানে অপুষ্টির হার বেড়েই চলেছে এবং ৯০ হাজার নারী ও শিশুর জরুরি চিকিৎসা দরকার। খবর বিবিসির।

গাজায় চলতি সপ্তাহে অনাহারের সতর্কতা আরও জোরদার হয়েছে। গত শুক্রবার অপুষ্টিতে ভোগা ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাসনিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ নিয়ে অপুষ্টিতে এখন পর্যন্ত ১২২ জন মারা গেছে।

গাজার সব সরবরাহ প্রবেশ পথের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসরায়েল বলছে, সাহায্য নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তারা অপুষ্টির জন্য হামাসকে দায়ী করেছে। ইসরায়েলের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা গত শুক্রবার বলেছেন, বিমান থেকে সাহায্য বিতরণের অনুমতি আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই দেওয়া হতে পারে। এভাবে সাহায্য দেওয়াকে যথেষ্ট নয় বলে সাহায্য সংস্থাগুলো আগেই সতর্ক করেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডান এবার এভাবে সাহায্য দিতে পারে। জর্ডানের এক কর্মকর্তা অবশ্য বিবিসিকে বলেছেন, তারা এখনো ইসরায়েলের কাছ থেকে অনুমতি পায়নি।

এই উদ্যোগ এমন সময় নেওয়া হলো- যখন গাজার মানবিক পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়ছে। গত শুক্রবার জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য অবিলম্বে সব বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা অবিলম্বে যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয় অবসানের আহ্বান জানিয়েছে।

তারা বলেছে, ইসরায়েলকে অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বেসামরিক জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়াটা অগ্রহণযোগ্য।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকের মধ্যে যে পরিমাণ মত ভিন্নতা, উদাসীনতা ও নিষ্ক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে-সহানুভূতি, সত্যতা ও মানবিকতার অভাব- তার মাত্রা তিনি ব্যাখ্যা করতে পারবেন না।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক সমাবেশে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি বলেন, গত ২৭ মে থেকে খাদ্য পাওয়ার জন্য চেষ্টা করার সময় ১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের নেতৃত্ব খাদ্য বিতরণের বিকল্প হিসেবে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন বা জিএইচএফ খাদ্য বিতরণ করতে শুরু করে, তখন থেকে এসব ঘটছে।

জিএইচএফের সঙ্গে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক ঠিকাদার অ্যান্থনিও আগুইলার বিবিসিকে বলেন, তিনি প্রশ্নহীনভাবেই যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হতে দেখেছেন। তিনি জানান, তিনি দেখেছেন যে আইডিএফ ও যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা কর্মকর্তারা গোলাবারুদ, মর্টার ব্যবহার করছে এবং খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে ট্যাংক থেকে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি বর্ষণ করছে।

অবসরপ্রাপ্ত এই সৈনিক বলেন, আমার পুরো ক্যারিয়ারে এমন মাত্রার নিষ্ঠুরতা দেখিনি। আইডিএফ ও মার্কিন ঠিকাদারদের হাতে বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে ও অপ্রয়োজনীয় বলপ্রয়োগ দেখেছি।

জিএইচএফ দাবি করছে যে, এসব অভিযোগ একজন ক্ষুব্ধ সাবেক ঠিকাদারের কাছ থেকে এসেছে, যাকে অসদাচরণের অভিযোগে এক মাস আগে বাদ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল-কাতার আলোচনা থেকে তাদের দল প্রত্যাহার করে নেওয়ায় নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির আলোচনা এখনো অনিশ্চিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হামাস সত্যিকার অর্থে সমঝোতা চায়নি। তিনি বলেন, আমি মনে করি তারা মরতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের এমন মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছে হামাস।

হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছেন যে, আলোচনা একেবারে ভেঙে পড়েনি এবং ইসরায়েলি দল আগামী সপ্তাহে দোহায় ফিরবে।

গাজার বেশিরভাগ মানুষ কয়েকবার করে ঘরবাড়ি হারিয়েছে এবং ৯০ শতাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্স বলেছে, তারা সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। এরপর যুক্তরাজ্যের এক তৃতীয়াংশ এমপি দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে একই পথ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে।

তবে স্যার কিয়ের স্টারমার শিগগিরই এ ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত দেন। এটা হতে পারে বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ, যার চূড়ান্ত ফল হবে- দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান।

গাজায় একদিনে ১০০ বার বোমাবর্ষণ

গাজায় আক্রমণকারী দখলদার স্থল বাহিনীকে সমর্থন করার জন্য একদিনে গাজাজুড়ে ১০০টিরও বেশি স্থানে হামলা করেছে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো। গতকাল শনিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিবৃতির উধ্বৃতি দিয়ে আল জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

সেই সঙ্গে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে দখলদার বাহিনীর ৩৬তম ডিভিশন ‘অতিরিক্ত লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ সম্প্রসারণ এবং সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস’ করার জন্য কাজ করছে বলে দাবি করেছে। অর্থাৎ হামলা আরও ব্যাপক ও বিস্তৃত হচ্ছে।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার পাশাপাশি পশ্চিম তীরে যিশুর জন্মস্থান বেথলেহেমে বসতি স্থাপনকারী এবং ইসরায়েলি সৈন্যরা আক্রমণ শুরু করেছে। এছাড়া জেরিকোতেও একই ধরনের হামলার খবর পাওয়া গেছে।

লাইভ প্রতিবেদনে আল জাজিরা জানিয়েছে, বসতি স্থাপনকারীরা গ্রামগুলোতে আক্রমণ চালিয়ে ফিলিস্তিনিদের জমি, সম্পত্তি ও গবাদিপশু লুটপাট করেছে। স্থানীয় একজন আরব বেদুইন অধিকার কর্মকর্তা ওয়াফা সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, বসতি স্থাপনকারীরা কাছাকাছি একটি অবৈধ ফাঁড়ি থেকে অনুপ্রবেশ অব্যাহত রেখেছে।

বেথলেহেমের দক্ষিণে বেইত ফাজ্জারে ইসরায়েলি সৈন্যরা আজ ৩১ বছর বয়সি এক ফিলিস্তিনি ব্যক্তিকে হত্যা করার পর একটি নতুন অভিযান শুরু করেছে। তার মরদেহ এখনো ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে রয়েছে। জেনিনের পশ্চিমে বুরকিন শহরে আরেকটি অভিযানের খবর পাওয়া গেছে। সেখানেও ইসরায়েলি বাহিনী বেশ কয়েকটি ফিলিস্তিনি বাড়ি লুটপাট করেছে।

ভোর থেকে ২৫ জনকে হত্যা

গাজার হাসপাতাল সূত্র আল জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল শনিবার ভোর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী ২৫ জনকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে ১৩ জন জড়ো হয়েছিলেন ত্রাণের আশায়। সর্বশেষ এক হামলার খবরে আল জাজিরার আরবি সংবাদদাতা জানিয়েছেন, উত্তর গাজা উপত্যকায় ত্রাণপ্রার্থীদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।


সৌদি আরবের কেনা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলকে দেওয়ার অনুরোধ যুক্তরাষ্ট্রের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গত জুনে ইসরায়েলি শহরগুলোতে একের পর এক আঘাত হানে ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। এ সময় ইসরায়েলের টার্মিনাল হাই অ্যালটিটিউড এরিয়া ডিফেন্স (থাড) ইন্টারসেপ্টরের তীব্র সংকট দেখা দেয়। এই সংকট মুহূর্তে এগিয়ে আসে মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসন ইসরায়েলকে সাহায্য করার জন্য সৌদি আরবকে ইন্টারসেপ্টর সরবরাহের অনুরোধ জানায়। তবে রিয়াদ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘যুদ্ধের সময় আমরা সবাইকে অস্ত্র অনুদানের অনুরোধ করেছিলাম। এতে যখন কাজ হয়নি, তখন আমরা চুক্তি করার চেষ্টা করেছি। এটি কোনো একটি দেশের লক্ষ্য ছিল না।’

সূত্র বলেছে, তবে ইসরায়েলকে সাহায্য করার জন্য সৌদি আরব উপযুক্ত অবস্থানে ছিল। মার্কিন কর্মকর্তারা রিয়াদকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, ইরান ইসরায়েলের পাশাপাশি তাদের জন্যও হুমকি। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই সৌদি আরবে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে। সম্প্রতি হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যখন যুদ্ধ চলছিল, ওই সময় সৌদি আরব নিজস্ব সার্বভৌম তহবিল দিয়ে কেনা প্রথম থাড ব্যাটারির চালান গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। প্রকৃতপক্ষে, ইসরায়েল ও ইরানের যুদ্ধবিরতির মাত্র নয় দিন পর, ৩ জুলাই সৌদি সামরিক বাহিনী এই ব্যাটারির উদ্বোধন করে। উদ্বোধনের ঠিক আগে, মার্কিন কর্মকর্তাদের আশঙ্কা ছিল, ইসরায়েলে ইরানের ধারাবাহিক ও গুচ্ছ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারসেপ্টরের মজুত ‘ভয়াবহ স্তরে’ নামিয়ে আনতে পারে।

এ নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন করে মিডল ইস্ট আই। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল নিজেই যুক্তরাষ্ট্রের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইন্টারসেপ্টরের মজুত এবং নিজের অ্যারো ইন্টারসেপ্টরের অস্ত্রাগার নিঃশেষ করে দিচ্ছিল। পরবর্তীতে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং দ্য গার্ডিয়ান মিডল ইস্ট আই-এর এই তথ্য নিশ্চিত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

দ্য গার্ডিয়ান জুলাই মাসে আরও জানায়, সংঘাতের পর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ইন্টারসেপ্টরের মাত্র ২৫ শতাংশ অবশিষ্ট ছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্রকে পেন্টাগন বিশ্বব্যাপী সমস্ত মার্কিন সামরিক অভিযানের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অস্ত্র বলে মনে করে।

ইসরায়েলের তিন-স্তরের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মার্কিন অস্ত্রের সমর্থনে গঠিত হওয়া সত্ত্বেও, যুদ্ধবিরতি না হওয়া পর্যন্ত ইরান ইসরায়েলি শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করতে সক্ষম হয়েছিল। দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি পাঁচটি ইসরায়েলি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরানের হামলার মাত্রা বিবেচনা করে আমেরিকান ও ইসরায়েলি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিছু সমর বিশারদের ধারণার চেয়ে ভালো কাজ করেছে। তবে ইরান এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার দুর্বলতাকেও কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছিল। বিশেষ করে সংঘাত যত দীর্ঘায়িত হচ্ছিল, ইরানের জন্য হামলা তত সহজ হয়ে উঠছিল।

মিচেল ইনস্টিটিউট ফর অ্যারোস্পেস স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ডগলাস বার্কি পূর্বে মিডল ইস্ট আইকে বলেন, ‘(এই ব্যবস্থার) দুর্বলতা হলো আপনার মজুত ফুরিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। আমাদের কাছে কেবল নির্দিষ্ট সংখ্যক ইন্টারসেপ্টর আছে। সেগুলো উৎপাদন করার সক্ষমতাও সীমিত।’

এই ঘাটতির মধ্যে, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানায়, কিছু মার্কিন কর্মকর্তা সৌদি আরবের সদ্য কেনা থাড ইন্টারসেপ্টরগুলো ইসরায়েলে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা করেছিলেন। একজন মার্কিন কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে নিশ্চিত করেছেন, সৌদি আরব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিনয়ী প্রস্তাব এবং চুক্তি প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করার পরেই এই আলোচনা হয়েছিল।

উভয় মার্কিন কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ইসরায়েলের সঙ্গে ইন্টারসেপ্টর ভাগ করে নিতে বলেছিল। তবে সূত্র দুটি নিশ্চিত করেনি যে, আরব আমিরাতের কোনো ইন্টারসেপ্টর তেল আবিবে পৌঁছেছে কিনা। সংযুক্ত আরব আমিরাত যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে প্রথম দেশ যারা থাড ক্রয় ও পরিচালনা করে। ২০১৬ সালে থাড ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সক্রিয় করে আরব আমিরাত।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করতে ইরানের সাফল্য অপেক্ষাকৃত কম সুরক্ষিত উপসাগরীয় দেশগুলোর নজর এড়ায়নি।

ইন্টারসেপ্টরের জন্য বিশ্বজুড়ে ছোটাছুটি করা কিছু মার্কিন কর্মকর্তার জন্য এখন একটি সাধারণ কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ তাদের মিত্র ইসরায়েল এবং ইউক্রেন উভয়ই এমন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি যারা অনেক সস্তা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের নীতিবিষয়ক কার্যালয় ইসরায়েলের সঙ্গে ইন্টারসেপ্টর ভাগ করে নিতে মার্কিন মিত্রদের বোঝানোর চেষ্টা করছে। এই প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ক্রিস্টোফার মামো, তিনি গ্লোবাল পার্টনারশিপের জন্য প্রতিরক্ষা উপ-সহকারী মন্ত্রী।

তবে ইসরায়েলকে সাহায্য করতে সৌদি আরবের অস্বীকৃতি ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের জন্য নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলার আগে, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উপসাগরীয় মিত্রদের সঙ্গে একটি বহুল আলোচিত ‘মধ্যপ্রাচ্য ন্যাটো’-এর অংশ হিসেবে একীভূত করার চেষ্টা করছিল। এর পরিবর্তে, উপসাগরীয় দেশগুলো ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে নীরব ছিল। বিশ্লেষকেরা মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করে তারা ‘সঠিক প্রমাণিত’ হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসন এখনো ইসরায়েল ও সৌদি আরবের মধ্যে একটি সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ চুক্তি করতে চায়। তবে রিয়াদ এবং অন্য আরব রাষ্ট্রগুলো ক্রমবর্ধমানভাবে ইসরায়েলকে একটি সম্প্রসারণবাদী সামরিক শক্তি হিসেবে দেখছে। তারা মনে করে, এই দেশকে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত—প্রয়োজনের সময় সাহায্য করা নয়। উদাহরণস্বরূপ, সৌদি আরব চলতি মাসে সিরিয়ার সৈন্যদের দক্ষিণ সিরিয়ায় মোতায়েন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লবিং করেছিল। সাম্প্রদায়িক সংঘাতের মধ্যে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর ওপর ইসরায়েলি হামলায় রিয়াদ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল।


গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি বিশ্ব নীরবতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস শুক্রবার গাজা উপত্যকায় ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার প্রতি চোখ বন্ধ রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং এটিকে ‘বিশ্ব বিবেককে চ্যালেঞ্জ করে এমন একটি নৈতিক সংকট’ বলে অভিহিত করেছেন।

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক সম্মেলনে ভিডিও-লিংক ভাষণে গুতেরেস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেক অংশ থেকে আমরা যে মাত্রার উদাসীনতা এবং নিষ্ক্রিয়তা দেখতে পাই তা আমি ব্যাখ্যা করতে পারব না - সহানুভূতির অভাব, সত্যের অভাব, মানবতার অভাব’।

তিনি বলেন, ‘এটি কেবল একটি মানবিক সংকট নয়। এটি একটি নৈতিক সংকট যা বিশ্ব বিবেককে চ্যালেঞ্জ করে। আমরা প্রতিটি সুযোগে আমাদের আওয়াজ তুলে ধরব’।

হামাসের সাথে চলমান যুদ্ধের মধ্যে মার্চ মাসে ইসরাইল ত্রাণ অবরোধের আওতায় থাকা যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায়, বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে দুর্ভিক্ষের ঘটনা বৃদ্ধির বিষয়ে সাহায্যকারী সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে। দুই মাস পরে সেই অবরোধ আংশিকভাবে শিথিল করা হয়েছিল।

তারপর থেকে সাহায্যের ধারা ইসরাইলি এবং মার্কিন-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, যা দীর্ঘদিন ধরে চলমান জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন বিতরণ ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করছে।

আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির সভাপতি মিরজানা স্পোলজারিক শুক্রবার বলেছেন, ‘গাজায় যা ঘটছে তার জন্য কোনও অজুহাত নেই।’

তিনি বলেন, ‘মানুষের দুর্ভোগ এবং মানবিক মর্যাদার অবনতির মাত্রা দীর্ঘদিন ধরে সমস্ত আইনি এবং নৈতিক উভয়ই গ্রহণযোগ্য মান অতিক্রম করেছে ।

স্পোলজারিক বলেন, গাজায় আইসিআরসির ৩শ’ ৫০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছে। যাদের অনেকেই পর্যাপ্ত খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি খুঁজে পেতে লড়াই করছেন।’

সাহায্যকারী সংস্থা এবং জাতিসংঘ জিএইচএফের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, এটি ইসরাইলি সামরিক লক্ষ্যগুলোকে সহায়তা করার অভিযোগ এনেছে।

৭ অক্টোবর, ২০২৩ সালে দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের হামলার নিন্দা করেছেন গুতেরেস। হামাসের ওই হামলার ফলে ফিলিস্তিনি অঞ্চলে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল। এরপর যে মৃত্যু ও ধ্বংসের বিস্ফোরণ ঘটেছে তা কোনও ভাবেই ন্যায্যতা দিতে পারে না। এর মাত্রা এবং পরিধি আমরা সম্প্রতি যা দেখেছি তার চেয়েও বেশি,‘ তিনি বলেন।

গুতেরেস ২৭শে মে থেকে জিএইচএফ কার্যক্রম শুরু করে, তখন থেকে খাদ্য সহায়তা পেতে চেষ্টারত ১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘আমাদের পদক্ষেপের প্রয়োজন: একটি তাৎক্ষণিক ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, সকল জিম্মির তাৎক্ষণিক ও নিঃশর্ত মুক্তি, এবং তাৎক্ষণিক ও নিরবচ্ছিন্ন মানবিক প্রবেশাধিকার।’ তিনি এই বিষয়গুলোর ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ইসরাইল এবং হামাস যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছায়, তাহলে জাতিসংঘ গাজায় ‘নাটকীয়ভাবে মানবিক কার্যক্রম বৃদ্ধি’ করতে প্রস্তুত।


banner close