যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়টা ভালো যাচ্ছে না। বেশ কিছুদিন ধরেই বিপাকে আছেন তিনি। কাছের অনেক মানুষই সরে আছেন দূরে। স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পও সেই তালিকায় আছেন কি না তা নিয়ে চলছে জল্পনা।
একসঙ্গে দুজনকে না দেখে অনেকেই মন্তব্য করছেন, বিয়ে ভেঙে গেছে এই দম্পতির। ট্রাম্পের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে মেলানিয়ার। তবে আসলে ব্যাপারটি সে রকম কিছু নয়।
এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, তাদের সম্পর্ক ঠিকই আছে। বাদবাকি সব তথ্য গুজব। তিনি ইচ্ছা করেই মেলানিয়াকে একটু আড়লে রেখেছেন।
হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা থাকাকালীন একসঙ্গে অনেক আয়োজনে উপস্থিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল ট্রাম্প আর মেলানিয়ার। প্রায় সব অনুষ্ঠানেই তাদের দেখা যেতে জুটিবদ্ধ হয়ে অংশ নিতে।
এর পর ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর একে একে বেশ কয়েকটি অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে ট্রাম্পকে। এ নিয়ে আদালতে দৌড়াতে হচ্ছে তাকে।
মার-এ-লাগোতে শেষবারের মতো ৭৭ বছরের ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা যায় ৫২ বছরের মেলানিয়াকে। এরপর আর একসঙ্গে তাদের দেখা যায়নি। এরই মধ্যে বিয়ে ভাঙার গুজব ছড়িয়েছে।
এনবিসি নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই গুজব নিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, শিগগিরই হয়তো ক্যাম্পেইনে ফিরবেন মেলানিয়া। তিনি মহান ব্যক্তি, অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তি এবং তিনি আমাদের দেশকে খুব ভালোবাসেন।
স্ত্রীকে নিয়ে তিনি বলেন, আসলে আমিই তাকে একটু এসব থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছি। এই জায়গাগুলো খুব নোংরা।
মেলানিয়া ট্রাম্পের সাবেক সহযোগী স্টেফানি উইনস্টন ওলকফ পেজ সিক্সের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, শুধু অনুপস্থিতি বোঝায় না যে, তাদের বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে।
দ্য সোসাইটি অব বৃটিশ বাংলাদেশী সলিসিটরস (এসবিবিএস) কমিউনিটির জন্যে ফ্রি আইনী পরামর্শসেবা এবং সদস্যদের জন্যে চালু করছে নানা রকম কার্যক্রম।
রোববার পূর্বলন্ডনের একটি রেস্তোরায় অনুষ্ঠিত মিট দ্যা প্রেস, এমওইউ স্বাক্ষর ও ইফতার অনুষ্ঠানে একথা জানান সংগঠনটির নব নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ।
এসবিবিএস সদস্যদের প্রফেশনাল ইনডেমনিটি ও অন্যান্য ইন্সুরেন্স সেবা নিশ্চিতে হেরা ইনডেমনিটি কোম্পানির সাথে এবং লিগ্যাল সার্চেস সেবার জন্যে এক্সপ্রেস লিগ্যাল সার্ভিস কোম্পানি সাথে দুইটি এমওইউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানীদ্বয় এসবিবিএস সদস্যদের ও সলিসিটর্স ফার্মকে হ্রাসকৃত ফিতে ইন্সুরেন্স ও রেগুলেটেড লিগ্যাল সার্চেস সেবা দিবে।
নব নির্বাচিত সভাপতি মুহাম্মদ নুরুল গাফ্ফার কমিটির গৃহিত বিভিন্ন কার্যক্রম পরিকল্পনা সম্পর্কে সভায় অবহিত করেন যারমধ্যে রয়েছে ফ্রি আইনী পরামর্শ সেবার এসবিবিএস লিগ্যাল শো, লিগ্যাল আপডেট ও সদস্যদের বছরব্যাপী সিপিডি ট্রেনিং, ইন্টারেক্টিভ ওয়েবসাইট, এসআরএ এবং অন্য রেগুলেটরদের সাথে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে এডভোকেসি করা ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, সদস্যদের বাংলাদেশে এডভোকেটশীপ সহজীকরণে কমিটি কাজ করছে। কমপ্লেইন্স এবং কমপ্লিয়ান্ট হ্যান্ডলিং সাপোর্টের জন্যে তার নেতৃত্বে কমিটি রয়েছে, যে কোনো সদস্য গোপনীয়তার সাথে তাদের সহযোগিতা নিতে পারবেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্যাট্রন জাজ বেলায়েত হোসাইন, সলিসিটার তাজ শাহ, ব্যারিস্টার নাজির আহেমদ, টাওয়ার হ্যামলেটের স্পিকার ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ, ও লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারি তাইসির মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের মিনিস্টার ও হেড অব চ্যান্সেরি শাহরিয়ার মোশাররফ, প্রাক্তন সভাপতি দেওয়ান মেহেদী, ফরিদা হাকিম, এহসান হক, বিভিন্ন ফার্মের প্রিন্সিপাল সলিসিটর্স, সম্পাদক, সাংবাদিক সহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী । সেক্রেটারি মুহাম্মদ মুনসাত হাবিব চৌধুরীর সঞ্চালনে কমিটির সদস্যরা উপস্থিত সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের সাথে পরিচয়পর্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন এবং সকল সদস্যের সাথে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। সার্বিক কল্যাণ কামনায় দোআ মোনাজাত পরিচালনা করেন সলিসিটার আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ।
ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ), রেডিও ফ্রি এশিয়া, রেডিও ফ্রি ইউরোপ এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের আউটলেটের শত শত কর্মীকে ছাটাই করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ইমেল করা হয়েছে এসব কর্মীদের। একই সঙ্গে তাদের প্রেস পাস এবং সরঞ্জাম জমা দিতে বলা হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ) স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১৪ মার্চ) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়াকে (ইউএসএজিএম) 'অপ্রয়োজনীয়' ফেডারেল আমলাতন্ত্রের অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
ভয়েস অব আমেরিকার মূল সংস্থা ইউএসএজিএম। সংস্থাটিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কর্মী রয়েছে। কংগ্রেসে পেশ করা সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্থাটির জন্য ২০২৪ সালে ৮৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ ছিল।
স্থানীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও রেডিও ফ্রি এশিয়াসহ বেসরকারিভাবে অন্তর্ভুক্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রচারকদের সব চুক্তি বাতিল করেছে সংস্থাটি।
ভয়েস অব আমেরিকার পরিচালক মাইকেল আব্রামোভিৎজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, তার ১৩০০ সাংবাদিক, প্রযোজক ও সহকারীকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
হোয়াইট হাউস বলেছে, এই কাটছাঁট নিশ্চিত করবে যে ‘করদাতারা আর উগ্রবাদী প্রচারণার শিকার হবেন না।’
প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে এই সিদ্ধান্তটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ কংগ্রেস, প্রেসিডেন্টর হাতে নয়, কংগ্রেসের হাতে সাংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংস হয়ে গেছে স্কুলগুলো এবং বেশ কয়েকটি রাজ্যে সেমিট্রাক্টর-ট্রেইলার উল্টে গেছে।
দেশটির কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সময় শনিবার গভীর রাতে আরও তীব্র ঝড়ের আশঙ্কা করছে বলে বার্তা সংস্থা অ্যাসেসিয়েটেড প্রেস(এপি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) শেরম্যান কাউন্টিতে ধূলোঝড়ের কারণে ৫০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ ৮ জনের মৃত্যুর পর হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে কানসাস হাইওয়ে পেট্রোল।
মিসিসিপির গভর্নর টেট রিভস জানিয়েছেন, তিনটি কাউন্টিতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ রাত্রিকালীন একটি পোস্টে তিনি আরও জানান, গোটা রাজ্যে ২৯ জন আহত হয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিসৌরি অন্য যেকোনো রাজ্যের চেয়ে বেশি প্রাণহানির নথিভুক্ত করেছে। কারণ, এটি রাতভর থেমে থেমে বয়ে যাওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হয়। এতে কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে এক ব্যক্তিও রয়েছেন যার বাড়ি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
ডাকোটা হেন্ডারসন জানান, শুক্রবার রাতে তিনি ও অন্যরা বাড়িতে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করতে গিয়ে মিসৌরির ওয়েইন কাউন্টিতে তার খালার বাড়ির বাইরে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পাঁচটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন।
গত রাতটি খুবই কঠিন ছিল উল্লেখ করে শনিবার তিনি বলেন, ‘গত রাতে লোকজনের সঙ্গে যা ঘটেছে, হতাহতের ঘটনা ঘটেছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক।’ তিনি বলেন, গাছপালা উপড়ে ঘরবাড়ির উপর পড়েছিল।
হেন্ডারসন বলেন, তারা তার খালাকে একটি শয়নকক্ষ থেকে উদ্ধার করেছিল। ঝড়ের পর তার বাড়িতে একমাত্র অবশিষ্ট ঘর ছিল এটি। তাকে জানালা দিয়ে বাইরে নেওয়া হয়। তারা আরও একজন লোককে উদ্ধার করেছেন—যার হাত-পা ভেঙে গেছে।
আরকানসাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঝড়ের কারণে ইন্ডিপেন্ডেন্স কাউন্টিতে ৩ জন নিহত ও আটটি কাউন্টিতে ২৯ জন আহত হয়েছেন।
আরকানসাসের গভর্নর সারাহ হাকাবি স্যান্ডার্স এক্সে বলেন, 'গত রাতের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে আমাদের দল কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য উদ্ধারকর্মীরা মাঠে রয়েছে।’
তিনি এবং জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প নিজ নিজ রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। কেম্প বলেন, শনিবারের শেষের দিকে খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাসের কারণে তিনি এই ঘোষণা দিচ্ছেন।
এদিকে গত শুক্রবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টেক্সাস প্যানহ্যান্ডেলের আমারিলোতে ধুলোঝড়ের সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন।
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ৪৩টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা ভাবছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের আগের মেয়াদের চেয়ে নতুন এই নিষেধাজ্ঞার পরিধি বড় হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস এমন খবর দিয়েছে।
কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এরইমধ্যে ‘লাল’, ‘কমলা’ ও ‘হলুদ’—এই তিন ক্যাটাগরিতে খসড়া তালিকা তৈরি করেছে। এতে তিনটি ধাপে ৪৩টি দেশের নাম রয়েছে।
তালিকায় প্রথম ধাপের ১১টি দেশ হলো—আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনিজুয়েলা ও ইয়েমেন। এসব দেশের নাগরিকদের পূর্ণাঙ্গ ভিসা বাতিল হতে পারে।
দ্বিতীয় ধাপের দেশগুলোর—বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমেনিস্তান—ওপর আংশিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এসব দেশের পর্যটন ভিসা, শিক্ষার্থী ভিসা, অভিবাসন ভিসায় প্রভাব পড়তে পারে।
অর্থাৎ বিধিনিষেধ আরোপ হলেও এসব দেশের ভিসা পুরোপুরি বাতিল করা হবে না। এই ১০ দেশের ধনী ব্যবসায়ীরা ভ্রমণ করতে পারলেও ভ্রমণ কিংবা অভিবাসন ভিসায় সাধারণ নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না।
শেষ গ্রুপে থাকা দেশগেুলোর সরকার নিরাপত্তা তথ্য সংক্রান্ত ঘাটতি মেটাতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নিলে এসব দেশের নাগরিকদের ভিসায় আংশিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন।
দেশগুলো হলো, অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগা ও বার্বুডা, বেলারুশ, বেনিন, ভুটান, বুরকিনা ফাসো, কেপ ভার্দে, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, চাদ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র অব দ্য কঙ্গো, ডোমেনিকা, বিষুবীয় গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো, সেন্ট কিট্স ও নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাঁউ তুমি ও প্রিন্সিপি, সিয়েরা লিওন, পূর্ব তিমুর, তুর্কমেনিস্তান, লাইবেরিয়া, মালি, জিম্বাবুয়ে ও ভানুয়াতু।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এই তালিকা তৈরি করেছেন। হোয়াইট হাউসে পৌঁছার আগে তালিকায় কিছুটা রদবদল হতে পারে এবং এখনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অনুমোদন মেলেনি।’
এখন খসড়া তালিকা পর্যালোচনা করছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দূতাবাস, আঞ্চলিক ব্যুরো, বিভিন্ন বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেও ৭টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। তার ওই পদক্ষেপ অনেক আইনি লড়াই পেরিয়ে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পায়।
দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি শনাক্তে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ইচ্ছুক সব বিদেশির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই জোরদারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ওই নির্দেশে ‘নিরাপত্তা যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যাবে না’ এমন দেশগুলো শনাক্তে করে সেগুলোর মধ্যে কোনগুলোর ওপর পূর্ণাঙ্গ, কোনগুলোর ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যায় তার তালিকা ২১ মার্চের মধ্যে জমা দিতে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে বলাও হয়েছিল।
এ দফায় ক্ষমতায় আসার পর রিপাবলিকান ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি গাজা ভূখণ্ড, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং ‘আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি যে কারও’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ আটকে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলের প্রতি সংহতি জানিয়ে ট্রাম্প টাওয়ারের লবিতে বিক্ষোভ করেছে শতাধিক মানুষ। এই বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় ফিলিস্তিনিপন্থি শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রধান আলোচকদের একজন ছিলেন মাহমুদ খলিল। গত শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানায় স্টুডেন্ট ওয়ার্কার্স অব কলাম্বিয়া ইউনিয়ন।
এদিকে, এনওয়াইপিডি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই প্রতিবাদ শুরু হয়। সাধারণ পোশাকে প্রায় ১৫০ জন ট্রাম্প টাওয়ারে প্রবেশ করেন। ভবনের ভিতরে গিয়ে তারা তাদের শার্ট খুলে ফেলেন ও ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থনমূলক বার্তা লেখা লাল টি-শার্ট পরে ফ্লোরে বসে আন্দোলন শুরু করেন। সে সময় তারা ‘মাহমুদকে মুক্ত করো’স্লোগানও দেন।
এনওয়াইপিডির প্রধান জন চেল বলেন, ১০ মিনিটের মধ্যে আমরা পুলিশ বিভাগ থেকে সাড়া দিই। ৪০ থেকে ৫০ মিনিটের মধ্যে আমরা গ্রেপ্তার শুরু করি। মোট ৯৮ জনকে অবৈধ প্রবেশ ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে, প্রতিবাদের আয়োজক সংগঠন ইহুদি ভয়েস ফর পিস (জেভিপি) জানায়, অভিনেত্রী ডেবরা উইঙ্গারও এই প্রতিবাদে অংশ নিয়েছিলেন। জেভিপির তাল ফ্রিডেন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন বাকস্বাধীনতায় আক্রমণ করছেন আর এটি করার জন্য তিনি ইহুদি বিদ্বেষের মিথ্যা অভিযোগ ব্যবহার করছেন।
অভিনেতা মরগান স্পেক্টর বলেন, আপনি যদি আমেরিকান হন ও সংবিধানে বিশ্বাস করেন, তাহলে আজ এখানে দাঁড়ানো আপনার উচিত। প্রতিবাদী জোশ ডাবনাউ বলেন, আমাদের মতামত প্রকাশের অধিকার আছে এবং ভয়ের কারণে আমি আমার প্রথম সংশোধনীর অধিকার ব্যবহার থেকে বিরত থাকব না।
মাহমুদ খলিল কে?
মাহমুদ খলিল একজন ফিলিস্তিন সমর্থক ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক শিক্ষার্থী। গত শনিবার নিউইয়র্ক সিটি থেকে ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) এজেন্টরা তাকে গ্রেপ্তার করেন ও লুইজিয়ানায় স্থানান্তর করে।
গ্রেপ্তারের পরে খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মার্কিন কর্তৃপক্ষ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এক ফেডারেল বিচারপতি সেই সিদ্ধান্তের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। তার আইনজীবীরা তাকে নিউইয়র্কে সরিয়ে নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন, যেন তিনি তার স্ত্রীর কাছাকাছি থাকতে পারেন। তার স্ত্রী আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
যুদ্ধ ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার ফলে আগামী দুই বছরে বিশ্বব্যাপী ৬৭ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মানবিক সংস্থা ডেনিশ রিফিউজি কাউন্সিল (ডিআরসি) শুক্রবার এ কথা জানায়।
ডিআরসির প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে কোপেনহেগেন থেকে এএফপি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রত্যাহারের ‘বিধ্বংসী’ পদক্ষেপের ফলে লাখ লাখ দুর্বল মানুষ প্রয়োজনীয় সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়েছে।
ডিআরসি মহাসচিব শার্লট স্লেন্তে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ ও দায়মুক্তির যুগে বাস করছি। বেসামরিক নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি মূল্য দিচ্ছে।’
ডিআরসি জানায়, বিশ্বব্যাপী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বর্তমানে ১২২.৬ মিলিয়ন। সংস্থাটি তাদের বৈশ্বিক স্থানচ্যুতির পূর্বাভাসে ২০২৫ সালে ৪২ লাখ মানুষের বৃদ্ধির আশঙ্কার কথা জানায়, যা ২০২১ সালের পর থেকে ডিআরসির সর্বোচ্চ পূর্বাভাস।
২০২৬ সালে আরো ২৫ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়।
সমস্ত আশঙ্কাজনক এই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির প্রায় অর্ধেকের জন্য দায়ী সুদান ও মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ।
সুদানে ‘বিশ্বের সবচেয়ে জরুরি মানবিক সংকট’ চলমান রয়েছে। দেশটি নতুন বাস্তুচ্যুতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী, এটি উল্লেখ করেছে ১ কোটি ২৬ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে ইতোমধ্যেই সুদান ও এর প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে ‘অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, যা দেশকে এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ থেকে অন্য দুর্ভিক্ষে ঠেলে দিয়েছে।’
ডিআরসি জানায়, মিয়ানমারে বহুমুখী গৃহযুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। এর ফলে ৩৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং প্রায় ২ কোটি মানুষের অর্থাৎ জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের এখন মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।
এটি পূর্বাভাসে দেখিয়েছে, ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ দেশটিতে আরও ১৪ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আফগানিস্তান, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ভেনিজুয়েলায়ও সশস্ত্র সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আর্থ-সামাজিক অস্থিতিশীলতার কারণে বাস্তুচ্যুতির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ডিআরসি জানিয়েছে, ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ ৬৭ লাখ লোকের বাস্তুচ্যুত হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হবে।
আবারও সংঘাতে উত্তাল হয়ে পড়েছে সিরিয়া। দেশটির নতুন ইসলামপন্থি শাসকদের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুগত আলাউইত সম্প্রদায়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলছে। গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
সিরিয়ার যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের বরাতে বার্তা সংস্থা দ্য গার্ডিয়ান রোববার জানায়, নিরাপত্তাবাহিনী এবং মিত্র গোষ্ঠীগুলো গত দুই দিনে ৭৪৫ জন আলাউইত বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে।
মানবাধিকার সংস্থাটি জানায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত সিরিয়ায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। দুপক্ষের মধ্যে লড়াইয়ে ১২৫ জন নিরাপত্তাকর্মী এবং বাশার আল-আসাদের অনুগত ১৪৮ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
আলাউইত সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয় এমন এলাকাগুলোতে আসাদের প্রতি অনুগত বিদ্রোহীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আব্দুল গনি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের মাধ্যমে লাতাকিয়ায় লড়াইরত আসাদের অনুগতদের প্রতি সতর্কবার্তায় বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার কেউ কেউ খুনি এবং অপরাধীদের রক্ষা করতে তাদের পালিয়ে যাওয়ার উপর জোর দিচ্ছে। তবে পথ মাত্র দুটি; হয় অস্ত্র জমা দিন অথবা অনিবার্য পরিণতির মুখোমুখি হোন।’
বর্তমানে সিরিয়ার এই অবস্থায় অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে আলাউইত সম্প্রদায়ের কর্মীরা বলছেন, আসাদের পতনের পর থেকে তাদের সম্প্রদায় সহিংসতা ও আক্রমণের শিকার হয়েছে। বিশেষ করে, হোমস ও লাতাকিয়ার গ্রামীণ এলাকাগুলো এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে।
অন্যদিকে, দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা বিদ্রোহীদের অস্ত্র জমা ও আত্মসমর্পণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে প্রচারিত এক বক্তব্যে শারা বলেন, ‘আপনারা সিরীয় নাগরিকদের ওপর আক্রমণ এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। আপনাদের অস্ত্রগুলো জমা দিন এবং দেরি হয়ে যাওয়ার আগেই আত্মসমর্পণ করুন।’
উপকূলীয় লাতাকিয়া ও তারতুসে শনিবার পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। এছাড়া হোমস শহরেও কারফিউ জারি করা হয়েছে। আসাদের অনুগত সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং তাদের সমর্থকদের লক্ষ্য করে নিরাপত্তা অভিযান চালানো হচ্ছে। এসব অভিযানের সময় বেসামরিক নাগরিকদের নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এই এলাকাগুলোকে আলাউইত সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এসওএইচআর-এর প্রধান রামি আব্দুল রাহমান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে সিরিয়ার আলাউইতিদের মূল এলাকা জাবলেহ, বানিয়াসসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। এসওএইচআর বলছে, গত দুইদিনে এক হাজারের বেশি জন নিহত হয়েছে। গত ডিসেম্বরে বাশার আল আসাদের পতনের পর সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা সেখানে চালানো হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে বর্তমান সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী এবং আসাদের যোদ্ধারাও রয়েছে। এসওএইচআর জানিয়েছে, সংঘর্ষে বর্তমান সরকারের ১২৫ জন নিরাপত্তা রক্ষী এবং আসাদপন্থী ১৪৮ জন যোদ্ধা নিহত হয়েছে।
সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সংবাদসংস্থা সানাকে বলেছে, হামলাকবলিত এলাকাগুলো সরকারি বাহিনী নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। বিবিসি বলছে, সংঘর্ষ ও দমন অভিযানের কারণে আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত ব্যক্তি এলাকা ছেড়েছে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, লাতাকিয়ায় মেইমিমে একটি রাশিয়ান ঘাঁটিতে বড় ধরনের ভিড় দেখা গেছে। ঘাঁটির কাছে অনেকেই রাশিয়ার সুরক্ষার জন্য স্লোগান দিচ্ছিলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার থেকে সিরিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষ এই দমন অভিযান শুরু করে। তাদের দাবি, বাশার আল-আসাদের সমর্থক জঙ্গিরা তাদের বাহিনীর ওপর প্রাণঘাতী চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়েছে আর এটি একটি উদীয়মান বিদ্রোহ। অভিযান চলাকালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথাও স্বীকার করেছেন কর্মকর্তারা।
নারী মমতাময়ী, নারী মায়াময়ী, নারী করুণাময়ী। নারী : কন্যা জায়া জননী, নারী ভগিনী। নারীর স্নেহ, মায়া, মমতা ও করুণা মানব সভ্যতার অমূল্য সম্পদ। নারী সকল প্রেরণার উৎস।
‘বিশ্বে যা-কিছু মহান সৃষ্টি চির-কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এভাবেই তার ‘নারী’ কবিতায় সকল সৃষ্টি ও বিশ্ব সভ্যতার বিকাশে নারীর কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের কথা স্মরণ করেছেন।
কিন্তু এই নারীই আবার সমাজে-পরিবারে এখনো নানাভাবে উপেক্ষিত, অবহেলিত, নির্যাতিত, নিপীড়িত ও বঞ্চিত। সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে, দেশের নানা স্থানে চলার পথে, রাস্তাঘাটে, পরিবহনে এমনকি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও নারীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। নারী শিক্ষার্থী ও নারী শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশায় কর্মরত নারীদের ইভটিজিং, শ্লীলতাহানি এবং হেনস্তা করা হচ্ছে। যা নারীর ক্ষমতায়নের পথে প্রধান অন্তরায়। এটি খুবই লজ্জার এবং উদ্বেগের বিষয়।
পুরুষের পাশাপাশি নারীর চলার পথ নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ রাখা এবং একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে পরিবারের পাশাপাশি রাষ্ট্র ও সমাজেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। নারীর অক্লান্ত শ্রম ও সমাজ-সভ্যতার প্রতি তার অসামান্য অবদানের কথা সবাইকে স্মরণ রাখতে হবে।
সমাজ-সংসার-পরিবারে একজন নারীর ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এক সময়ের ‘অবলা নারী’ একবিংশ শতাব্দীতে এসে শুধু সংসার নয়, কর্মক্ষেত্রেও সাফল্যের সঙ্গে তাদের বুদ্ধিমত্তা, শক্তি-সামর্থ্য ও কর্মদক্ষতা প্রদর্শন করে চলেছে। তারা রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে বিমান চালনা, মহাকাশের নভোচারী থেকে শুরু করে যুদ্ধক্ষেত্রের সৈনিক হিসেবে সব জায়গাতেই দাপটের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।
বাংলদেশে শিক্ষা-দীক্ষা, রাজনীতি, চাকরি-বাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য সব ক্ষেত্রেই নারীরা ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রধান রপ্তানি খাত পোশাকশিল্পে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। অফিসের কাজ থেকে শুরু করে কঠোর শারীরিক পরিশ্রমের কাজও করে যাচ্ছে অনায়াসে। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে নারীদের সাফল্য আজ অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীর কাজের স্বীকৃতি প্রদান, নারী-পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, নারীর সাফল্য উদযাপন ও নারীদের প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদানের উদ্দেশ্যে প্রতি বছর দিনটি পালিত হয় বিশ্বজুড়ে। নারীর প্রতি সকল প্রকার
অন্যায়-অবিচার ও সহিংসতা বন্ধ হবে এটাই হোক নারী দিবসের মূল অঙ্গীকার।
এই দিবসটি উদযাপনের পেছনে রয়েছে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের ইতিহাস। ১৯০৮ সালে কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা, বেতন বৃদ্ধি এবং ভোটাধিকারের দাবিতে প্রায় ১৫ হাজার নারী নিউইয়র্ক শহরের রাস্তায় আন্দোলনে নেমেছিল। মূলত এই আন্দোলনের মাধ্যমেই নারী দিবসের বীজ বোপিত হয়।
জাতীয় পর্যায় থেকে দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পরিণত করার প্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন নারী অধিকার কর্মী ক্লারা জেটকিন। ১৯১০ সালে তিনি কোপেনহেগেনে কর্মজীবী নারীদের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ধারণার প্রস্তাব দেন। ১৭টি দেশ থেকে ১০০ নারী প্রতিনিধি এতে যোগ দিয়েছিলেন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। সিদ্ধান্ত হয় : ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হবে।
১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে শুরু করে। অতঃপর ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায় জাতিসংঘ। এরপর থেকে পৃথিবীজুড়েই যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
সিরিয়ায় সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের অনুসারীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন। ব্রিটেনভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবিসি বলছে, এক্স পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘সিরীয় উপকূলে প্রতিরক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদস্য এবং ক্ষমতাচ্যুত সরকারের বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও অতর্কিত হামলার ঘটনায় ৭০ জনের বেশি নিহত হয়েছেন। আরও বেশ কয়েকজন কয়েকজন আহত ও বন্দি হয়েছেন।’
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় লাতাকিয়া প্রদেশে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রাশিয়া-নিয়ন্ত্রিত একটি বিমানঘাঁটির কাছে এলাকাটির অবস্থান। গত ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের পতনের পর থেকে সিরিয়ার ইসলামপন্থি সরকারের সঙ্গে যুক্ত বাহিনীর ওপর এটি সবচেয়ে সহিংস হামলা। এ ঘটনার পর আজ (শুক্রবার) সকাল পর্যন্ত সেখানে কারফিউ ঘোষণা করা হয়।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আলাউইত সম্প্রদায়ের প্রাণকেন্দ্র এবং আসাদ পরিবারের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত উপকূলীয় এলাকাগুলোতে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানিয়েছে, বিপুলসংখ্যক সেনা জাবলেহ শহরের দিকে যাচ্ছে। হোমস ও আলোপ্পো শহরেও সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, হোমসের আবাসিক এলাকার রাস্তায় প্রচণ্ড গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। যদিও বিবিসি ভিডিওগুলোর সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কর্নেল হাসান আবদুল গনি লাতাকিয়ায় লড়াইরত আসাদের অনুগতদের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
হাসান আবদুল গনি বলেন, ‘হাজার হাজার মানুষ তাদের অস্ত্র সমর্পণ করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আবার কেউ কেউ পালিয়ে গিয়ে খুনি ও অপরাধীদের বাঁচানোর জন্য মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পথ বেছে নিচ্ছে। স্পষ্ট করে বলছি, অস্ত্র জমা দিন অথবা অনিবার্য পরিণতির মুখোমুখি হোন।’
সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার জন্য এ অঞ্চল একটি বড় নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি দক্ষিণেও প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছেন। সেখানে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দ্রুজ বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে।
আলাউইত সম্প্রদায়ের অধিকারের পক্ষে সোচ্চার থাকা কর্মীরা বলেছেন, আসাদের পতনের পর থেকে সম্প্রদায়টির মানুষজন বিশেষ করে গ্রামীণ হোমস ও লাতাকিয়া এলাকায় সহিংসতা ও হামলার শিকার হয়েছেন।
সিরিয়াভিত্তিক বার্তা সংস্থা স্টেপ জানিয়েছে, ‘নিহত প্রায় ৭০ জনের সবাই’ সাবেক সরকারপন্থি যোদ্ধা। তবে এর আগে এএফপির প্রতিবেদনে ৪৮ জন নিহত হওয়ার খবর দিয়ে বলা হয়, এর মধ্যে সরকারি বাহিনীর ১৬ জন, আসাদপন্থি ২৮ জন আর ৪ জন বেসামরিক নাগরিক।
সৌদি আরবে হিজরি ১৪৪৬ সনের রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামীকাল শনিবার থেকে দেশটিতে শুরু হচ্ছে পবিত্র ও মহিমান্বিত রমজান মাস। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতেও এ মাসের চাঁদের দেখা মিলেছে।
আজ শুক্রবার সৌদি আরবে চাঁদ দেখার তথ্য ইনসাইড দ্য হারামাইনের ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, সৌদি আরবের আকাশে আজ শুক্রবার রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে ২৯ দিনে শেষ হচ্ছে শাবান মাস। আর রমজানের প্রথম দিন হবে আগামীকাল শনিবার।
এদিকে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায় আজ শুক্রবার পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে দেশটিতে রমজান মাস শুরু হবে আগামী রোববার (২ মার্চ) থেকে। আগামীকাল শনিবার মালয়েশিয়ায় হবে শাবান মাসের ৩০তম দিন।
এছাড়া ব্রুনাই ও সিঙ্গাপুরে আজ পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে দেশ দু’টিতেও রোববার থেকে শুরু হবে রোজা। ব্রুনাই ও সিঙ্গাপুর উভয় দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য জানিয়েছে।
আর অস্ট্রেলিয়ায় আগামীকাল শনিবার থেকেই রমজান শুরু হতে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিন শুরু হবে শনিবার (১ মার্চ) থেকে। অস্ট্রেলিয়ান ফতোয়া কাউন্সিল জ্যোতির্বিদ্যার গণনার ভিত্তিতে এই তারিখ ঘোষণা করেছে। আজ শুক্রবার খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এদিকে, বাংলাদেশে আগামীকাল শনিবার পবিত্র রমজানের চাঁদ দেখা কমিটির সভা হওয়ার কথা রয়েছে। রাজধানীতে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সভাকক্ষে সন্ধ্যা ৬টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
শনিবার বাংলাদেশের আকাশে কোথাও রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে, তা নিচের টেলিফোন ও ফ্যাক্স নম্বরে অথবা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক বা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। টেলিফোন নম্বর: ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬ ও ০২-৪১০৫০৯১৭। ফ্যাক্স নম্বর: ০২-২২৩৩৮৩৩৯৭ ও ০২-৯৫৫৫৯৫১।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য ইবি-৫ ভিসার পরিবর্তে ৫ মিলিয়ন ডলারের একটি ‘গোল্ড কার্ড’ চালুর প্রস্তাব দিয়েছেন। এই গোল্ড কার্ড দিয়ে পরে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বও পাওয়া যাবে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে ইবি-৫ ভিসা দিয়ে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়। এর পরিবর্তে গোল্ড কার্ড চালু করা হবে।
ট্রাম্প জানান, এই নতুন গোল্ড কার্ডের মূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ৫ মিলিয়ন ডলার, যা গ্রিন কার্ডের সুবিধার পাশাপাশি নাগরিকত্ব পাওয়ার পথও খুলে দেবে। তিনি বলেন, ‘ধনী ব্যক্তিরা এই কার্ড কিনে আমাদের দেশে আসতে পারবেন। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন প্রোগ্রামের বিস্তারিত জানানো হবে।’ রুশ ধনকুবেররাও (অলিগার্ক) এই কার্ডের জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন কি না জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, সম্ভবত, হ্যাঁ। আমি কয়েকজন রুশ অলিগার্ককে চিনি যারা খুব ভালো মানুষ।
ইবি-৫ ইমিগ্র্যান্ট ইনভেস্টর প্রোগ্রামটি ১৯৯০ সালে কংগ্রেস অনুমোদন করে। বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান তৈড়ি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে এই প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছিল। নতুন সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক মঙ্গলবার ইবি-৫ প্রোগ্রামকে ‘অর্থহীন, কাল্পনিক ও প্রতারণায় পূর্ণ অভিহিত করে বলেন, প্রেসিডেন্ট এই ত্রুটিপূর্ণ প্রকল্পটি বাতিল করে গোল্ড কার্ড চালু করতে চাইছেন। এই নতুন প্রস্তাবটি বাস্তবায়িত হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য মার্কিন অভিবাসন নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
প্রবল গণআন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এর পর থেকে সে দেশে অবস্থান করছেন তিনি।
শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে দিল্লিকে চিঠি পাঠিয়েছে ঢাকা। তবে চিঠিপ্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করলেও শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে স্পষ্ট করে কিছুই বলেনি দিল্লি।
গত সপ্তাহে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে ভারতের কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি।
তবে বিভিন্ন সময় ভারতের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক প্রশ্ন তুলেছেন, শেখ হাসিনা কোন স্ট্যাটাসে ভারতে অবস্থান করছেন? তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর দাবিও জানিয়েছেন তারা।
এরই মধ্যে ভারতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে ‘ইন্ডিয়া টুডে মোড অব দ্য নর্থ–ইস্ট’ শীর্ষক জরিপ পরিচালনা করেছে।
জরিপে জানতে চাওয়া হয়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সরকারের আশ্রয় দেওয়া প্রসঙ্গে আপনার মতামত কী? চলতি ফেব্রুয়ারি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ৮টি রাজ্যের নাগরিকদের মধ্যে এ জরিপ চালানো হয়।
জরিপের ফলাফল ভেরিফায়েড এক্স হ্যান্ডলে শেয়ার করেছে ইন্ডিয়া টুডে এনই। জরিপে তিনটি প্রধান অপশনে মতামত দিয়েছে নাগরিকরা। দেখা গেছে, ‘তিনি ভারতের মিত্র, তাকে আশ্রয় দেওয়া ঠিক আছে’- এই মতের পক্ষে ভোট দিয়েছে ২৩ শতাংশ উত্তরদাতা। আর এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ৩৭.৬ শতাংশ।
‘বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নের স্বার্থে তাকে ফেরত পাঠানো উচিত’- এই মতের পক্ষে ভোট দিয়েছে ৫৫ শতাংশ, বিপক্ষে দিয়েছে ২১.১ শতাংশ।
‘তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো উচিত নয়, বরং অন্য দেশে চলে যেতে বলা যেতে পারে’- এই মতের পক্ষে মত দিয়েছে ১৬ শতাংশ, বিপক্ষে মত দিয়েছে ২৯.১ শতাংশ।
এখানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হলো- ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নাগরিকদের মধ্যে উত্তরদাতাদের ৫৫ শতাংশ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পক্ষে মত দিয়েছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের ‘ভারতবিরোধী’ বক্তব্যকে ‘হাস্যকর’ আখ্যায়িত করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশকে ঠিক করতে হবে যে তারা ভারতের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক চায়।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা খুব স্পষ্ট বার্তা দিয়েছি- আপনারা আমাদের প্রতিবেশী, আমরা চাই পরিস্থিতি শান্ত হোক, আমরা চাই বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং অন্যান্য বিষয় এগিয়ে যাক; কিন্তু যদি ক্রমাগত এমন বার্তা বা সংকেত দেওয়া হয়, যেটা ভারতের প্রতি শত্রুতামূলক, সেটা নিশ্চয় আমাদের ভালো লাগবে না।’
শনিবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা অবশ্যই আমাদের সব প্রতিবেশীর মঙ্গল চাই। বাংলাদেশের সাথে আমাদের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে; এটা বিশেষ এক সম্পর্ক, যা ১৯৭১ সাল থেকে চলে আসছে। কিন্তু গত বছর কিছু ঘটনা ঘটেছে, আপনারা সবাই জানেন। আমার মনে হয়, আমাদের জন্য বিষয়টা খুবই উদ্বেগজনক।’
বাংলাদেশের দুটি বিষয় ভারতের জন্য ‘খুবই উদ্বেগজনক’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর ধারাবাহিক হামলার ঘটনা; আমি মনে করি এটা আমাদের চিন্তাভাবনার ওপর যথেষ্ট প্রভাব ফেলছে এবং এটা এমন একটা বিষয়, যা নিয়ে আমাদের কথা বলা উচিত এবং আমরা তা বলছি।’
জয়শঙ্কর বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, তাদের নিজেদের রাজনীতি আছে, আপনি একমত হতে পারেন বা না হতে পারেন, দিন শেষে আমরা প্রতিবেশী। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা আমাদের সাথে কেমন সম্পর্ক চায়। কারণ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো সদস্য যদি প্রতিদিন উঠে দাঁড়িয়ে সবকিছুর দোষ ভারতের ওপর চাপাতে থাকেন… আর কিছু কিছু বিষয়, আপনারা যদি খবরগুলো পড়েন, সম্পূর্ণ হাস্যকর।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি যদি প্রতিদিন সকালে উঠেই আপনাকে দোষারোপ করতে থাকি, তখন আপনি একা একা বলতে পারবেন না যে, ‘আমি আপনার সাথে ভালো সম্পর্ক চাই।’ তাহলে এই সিদ্ধান্তটা তাদেরই নিতে হবে যে তারা আমাদের সাথে কেমন সম্পর্ক চায়।’’