মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

কানাডায় শিখ নেতা হত্যায় ভারতীয় গোয়েন্দারা জড়িত: ট্রুডো

কানাডার পার্লামেন্টে বক্তৃতায় ভারত সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৭:২০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ১৭:১৫

কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশে গত জুন মাসে হারদীপ সিং নিজ্জর নামে এক শিখ নেতা হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের ‘এজেন্টরা’ জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। তার এই ‘গুরুতর’ অভিযোগ দুদেশের তিক্ত সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সময় সোমবার পার্লামেন্টে (হাউস অব কমন্স) বক্তৃতাকালে ট্রুডো আরও জানান, এই মাসের শুরুর দিকে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকেও তিনি বিষয়টি তুলেছেন।

এ প্রসঙ্গে পার্লামেন্টের সদস্যদের উদ্দেশে ট্রুডো বলেন, ‘কানাডার মাটিতে কানাডিয়ান নাগরিক হত্যাকাণ্ডে বিদেশি সরকারের যোগসাজশ আমাদের সার্বভৌমত্বের অগ্রহণযোগ্য লঙ্ঘন।’

গত ১৮ জুন ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় একটি শিখ মন্দিরের সামনে নিজের গাড়িতে শিখ নেতা নিজ্জরকে (৪৫) গুলি করে হত্যা করা হয়। ভ্যানকুভারের ৩০ কিলোমিটার দূরের ওই মন্দিরের পাশে ব্যস্ত গাড়ি পার্কিং এলাকায় দুই মুখোশপরা লোক তাকে ‍গুলি করে পালিয়ে যায়।

ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে শিখ ধর্মাবলম্বীদের স্বাধীন ‘খালিস্তান’ রাষ্ট্র গঠনের যে তৎপরতা চলে আসছে, সেটার পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাতেন নিজ্জর।

আলাদা রাষ্ট্র গঠনে শিখরা ১৯৭০-এর দশকে সশস্ত্র লড়াই শুরু করে, যার পরিণতিতে হাজারো প্রাণ ঝরে। নয়াদিল্লির অ্যাকশনের কারণে ভারতের মাটিতে এই তৎপরতা প্রশমিত হলেও কানাডা ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোতে শিখদের স্বাধীন রাষ্ট্রের পক্ষে প্রচারণা চলতেই থাকে। বিগত বছরগুলোতে তা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে।

শিখদের স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য প্রচারণা চালানো নিজ্জরকে ভারত ‘সন্ত্রাসী’ ঘোষণা করে। তার অনুসারীদের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আগে নিজের কার্যক্রমের জন্য প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছিলেন নিজ্জর।

এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে ভারত সরকারকে অভিযুক্ত করে ট্রুডো বলেন, ‘কানাডিয়ান সরকারের সব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’

কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জানান, এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সহযোগিতার জন্য ভারত সরকারের ওপর তিনি চাপ অব্যাহত রাখবেন।

পরে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানিয়ে জোলি পার্লামেন্টকে বলেন, ‘কানাডা ভারতের এক কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে। তিনি ছিলেন কানাডায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান।’

অবশ্য কানাডার সরকারের এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে মঙ্গলবার সকালে ভারত সরকার বলেছে, এই অভিযোগ অযৌক্তিক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্টো কানাডাকে অভিযুক্ত করে বলেছে, ‘ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি খালিস্তানি সন্ত্রাসী ও উগ্রবাদীদের দীর্ঘদিন ধরে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে আসছে কানাডা।’

এমনকি কানাডার মাটিতে ভারতবিরোধী যে কোনো তৎপরতার বিরুদ্ধে কার্যকর আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় নয়াদিল্লির তরফ থেকে।

এছাড়া কানাডা এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করার জবাবে সেদেশের এক দূতকেও নয়াদিল্লি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

বিষয়:

যুদ্ধবিরতির মধ্যেই লেবাননে ইসরাইলের ভয়াবহ বিমান হামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে আবারও ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে চালানো এই হামলায় বেশ কয়েকটি স্থানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। ইসরাইল দাবি করেছে, হিজবুল্লাহর এলিট ইউনিট ‘রাদওয়ান ফোর্স’-এর ব্যবহৃত বিভিন্ন অবকাঠামো ধ্বংস করতেই এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর তথ্যমতে, হামলায় রাদওয়ান ফোর্সের ‘ট্রেনিং ও কোয়ালিফিকেশন গ্রাউন্ড’ লক্ষ্য করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই স্থানগুলো ব্যবহার করেই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা সাজাত এবং তা বাস্তবায়ন করত। হিজবুল্লাহর পক্ষ থেকে আসা হুমকি নির্মূল করার উদ্দেশ্যেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে দখলদার বাহিনী।

উল্লেখ্য, গত ২৭ নভেম্বর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকেই লেবাননে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরাইল বৈরুতে একাধিকবার হামলা চালিয়েছে এবং দক্ষিণ ও পূর্ব লেবাননের বিভিন্ন এলাকায় তাদের হামলা প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এছাড়া লেবানন সীমান্ত এলাকার পাঁচটি প্রধান স্থানে এখনো ইসরাইলি সেনা মোতায়েন রয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র: টাইমস অব ইসরাইল


জেলেনস্কির ওপর হতাশ ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেন সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের প্রস্তুত করা খসড়া শান্তি প্রস্তাবটি এখনো পড়ে দেখেননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে হতাশা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জন এফ কেনেডি সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস-এ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই অসন্তোষের কথা জানান।

ট্রাম্প বলেন, জেলেনস্কি এখনো প্রস্তাবটি না পড়ায় তিনি কিছুটা হতাশ বোধ করছেন। অথচ জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠরা যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবটি পছন্দ করেছেন বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে, ওয়াশিংটনের প্রস্তাবিত এই সমঝোতা চুক্তিতে জেলেনস্কি আদৌ রাজি হবেন কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তার মতে, প্রস্তাবটি বিস্তারিত পর্যালোচনা না করার পেছনে জেলেনস্কির কোনো ব্যাখ্যা থাকা প্রয়োজন।

এর আগে গত নভেম্বরে ওয়াশিংটন এই সংকট নিরসনে ২৮ দফার একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছিল। তবে সেই নথি নিয়ে কিয়েভ ও তাদের ইউরোপীয় অংশীদারদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে তা সংশোধনের দাবি ওঠে। পরবর্তীতে জেনেভায় পরামর্শ বৈঠকের পর ট্রাম্প জানান, মস্কো ও কিয়েভ—উভয় পক্ষের অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে খসড়াটি সংশোধন করা হয়েছে এবং দফার সংখ্যা কমিয়ে ২২-এ নামিয়ে আনা হয়েছে। এখন কেবল কিছু অমীমাংসিত বিষয় বাকি রয়েছে।

শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে জোর কূটনৈতিক তৎপরতাও চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত ২ ডিসেম্বর ক্রেমলিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বৈঠক করেন। সেখানে শান্তি পরিকল্পনার চারটি নথির ওপর আলোচনা হয়। অন্যদিকে, গত শনিবার ফ্লোরিডায় মার্কিন ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের তিন দিনের আলোচনা শেষ হয়েছে। এরপর উইটকফ ও কুশনার ফোনে জেলেনস্কির সঙ্গে কথাও বলেছেন। সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্র এখন ভূখণ্ড সংক্রান্ত বিরোধ মেটাতে নতুন পথের সন্ধান করছে।


রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ছেন ইউক্রেনের ৭০ হাজার নারী সেনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেনের রণাঙ্গনে এখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছেন ৭০ হাজারেরও বেশি নারী সেনা। ২০২২ সালে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে দেশটির সেনাবাহিনীতে নারীর অংশগ্রহণ প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি নারী সেনা সরাসরি সম্মুখযুদ্ধে বা ফ্রন্টলাইনে অবস্থান করছেন। এই বিশাল বাহিনী গড়ে ওঠার পেছনে এবং নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে বড় ভূমিকা রেখেছে আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে ড্রোন যুদ্ধ।

ড্রোন প্রযুক্তি যুদ্ধের প্রচলিত ধারণা অনেকটাই পাল্টে দিয়েছে। এখন সম্মুখসারির প্রথাগত শারীরিক লড়াইয়ে অংশ না নিয়েও নারীরা প্রযুক্তিগতভাবে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। রাশিয়ার তেল স্থাপনা, গোলাবারুদ মজুতঘর ধ্বংস কিংবা নজরদারির কাজে ড্রোন এখন ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। তৃতীয় আর্মি কর্পসের ২৬ বছর বয়সী সদস্য মনকা, যিনি একসময় বিদেশে রেস্তোরাঁ ব্যবস্থাপক ছিলেন, এখন এফপিভি ড্রোন চালক। তিনি জানান, প্রযুক্তির কারণে এখন আর হাতে ভারি গোলাবারুদ নিয়ে ছুটতে হয় না, বরং দূর থেকেই তা শত্রুর ওপর প্রয়োগ করা যায়, যা যুদ্ধের ময়দানে এক অবিশ্বাস্য পরিবর্তন এনেছে।

অন্যদিকে, ৯ম ব্রিগেডের ২৫ বছর বয়সী ড্রোন পাইলট ইয়াহা বলেন, দূর থেকে শত্রুকে আঘাত করার কৌশলটিই তাকে এই পথে এনেছে। তবে তার মতে, যুদ্ধ কোনো রোমাঞ্চকর বিষয় নয়; এটি শুধুই যন্ত্রণা ও হারানোর গল্প। তবুও পরিস্থিতি বদলাতেই তারা এই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। একইভাবে পেশাদার হকি খেলোয়াড় থেকে প্যারামেডিক এবং পরে ড্রোন পাইলট হওয়া ২৭ বছর বয়সী ইমলা শুরুতে নার্ভাস থাকলেও সময়ের সঙ্গে এখন আত্মবিশ্বাসী যোদ্ধায় পরিণত হয়েছেন।

খারতিয়া কর্পসের মতো ইউনিটগুলো এখন নারীদের লক্ষ্য করে বিশেষ নিয়োগ প্রচারণা চালাচ্ছে। খারতিয়ার কর্মকর্তা ভলোদিমির দেহতিয়ারোভের মতে, প্রযুক্তির প্রসার, বিশেষ করে ড্রোনের ব্যবহার ঐতিহাসিকভাবে পুরুষনির্ভর পেশাগুলোকে নারীদের জন্য সহজ ও উন্মুক্ত করে দিয়েছে। উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২ সালের পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকে প্রায় ৪৫ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত এবং প্রায় ৩ লাখ ৯০ হাজার আহত হয়েছেন। এই কঠিন পরিস্থিতিতে নারী সেনাদের অংশগ্রহণ ইউক্রেনীয় প্রতিরোধে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

সূত্র: এনডিটিভি


থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে ফের উত্তেজনা: গোলাগুলিতে আহত ২, হাজারো মানুষকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সীমান্তে আবারও যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে। রোববার থাইল্যান্ডের সি সা কেত প্রদেশ সংলগ্ন সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত দুজন থাই সেনা আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

থাই সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, স্থানীয় সময় রোববার দুপুর সোয়া ২টার দিকে কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনী সীমান্ত লক্ষ্য করে আচমকা গুলি ছোড়ে। জবাবে থাই সেনারাও পাল্টা গুলি চালায়। প্রায় ৩৫ মিনিট ধরে চলা এই গোলাগুলি থামে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে। এ ঘটনায় আহত দুই সেনার একজনের পায়ে ও অন্যজনের বুকে গুলি লেগেছে। সংঘাতের পরপরই নিরাপত্তার স্বার্থে সীমান্তবর্তী চারটি প্রদেশ—বুরি রাম, সুরিন, সি সা কেত এবং উবন রাতচাথানির সীমান্ত এলাকা থেকে কয়েক হাজার সাধারণ মানুষকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে থাই কর্তৃপক্ষ।

এই সংঘাতের সূত্রপাত মূলত জাতিসংঘের কাছে থাইল্যান্ডের একটি অভিযোগকে কেন্দ্র করে। রোববারই থাইল্যান্ড অভিযোগ করে যে, কম্বোডিয়া গোপনে থাই ভূখণ্ডের বিশাল এলাকাজুড়ে ল্যান্ডমাইন পুঁতে রেখেছে। এসব মাইন বিস্ফোরণে সম্প্রতি বেশ কয়েকজন থাই ও চীনা নাগরিক আহত হয়েছেন। থাই সরকার জাতিসংঘের কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করার কিছুক্ষণের মধ্যেই সীমান্তে এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

এর আগে গত জুলাই মাসে দীর্ঘ ১৫ বছরের যুদ্ধবিরতি ভেঙে বড় ধরনের সংঘাতে জড়িয়েছিল দেশ দুটি। সে সময় টানা ৫ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৩২ জন নিহত এবং অন্তত ৩০ জন আহত হন। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, রোববারের এই ঘটনায় সীমান্তে আবারও অস্থিরতা ফিরে এল।

সূত্র: বিবিসি


ক্ষমা পেলেও রাজনীতি ছাড়বেন না নেতানিয়াহু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, চলমান দুর্নীতি মামলায় রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ক্ষমা পেলেও তিনি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াবেন না। রোববার এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করেন। যখন তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, ক্ষমা পেলে তিনি কি রাজনৈতিক জীবন থেকে অবসর নেবেন? জবাবে নেতানিয়াহু এক কথায় উত্তর দেন, ‘না’।

ঘুষ, জালিয়াতি ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু গত মাসেই দেশটির প্রেসিডেন্ট আইজাক হারজগের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমার আবেদন করেছেন। তার আইনজীবীদের যুক্তি, ঘনঘন আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে দেশ পরিচালনায় নেতানিয়াহুর কাজে বিঘ্ন ঘটছে। তাই এই মুহূর্তে তাকে ক্ষমা করা হলে তা ‘রাষ্ট্রের মঙ্গলের জন্যই’ ভালো হবে। যদিও ইসরায়েলি বিচারব্যবস্থায় সাধারণত রায় ঘোষণার পরই ক্ষমার বিধান রয়েছে, চলমান মামলার মাঝপথে ক্ষমার নজির নেই।

নেতানিয়াহুর এই আবেদনের আগেই অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি প্রেসিডেন্টকে চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমার বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন। তবে নেতানিয়াহু বরাবরই তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তার আইনজীবীদের বিশ্বাস, মামলাটি শেষ পর্যন্ত চললে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।

এদিকে দেশটির বিরোধীদলের রাজনীতিবিদরা নেতানিয়াহুর ক্ষমার বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তাদের একাংশের দাবি, কোনো ধরনের ক্ষমা পেতে হলে নেতানিয়াহুকে অবশ্যই দোষ স্বীকার করতে হবে এবং রাজনীতি থেকে বিদায় নিতে হবে। অন্যরা মনে করেন, ক্ষমা চাওয়ার আগে তাকে অবশ্যই আগাম জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দেশটিতে আগামী ২০২৬ সালের অক্টোবরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি


৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তে ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। তবে এর জেরে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই এবং এখন পর্যন্ত প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য আসেনি।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার স্থানীয় শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৪১ মিনিটে হয়েছে এ ভূমিকম্প। এক বিবৃতিতে মার্কিন ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র বা এপিসেন্টার হলো যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্য এবং কানাডার ইউকন প্রদেশের সীমান্তবর্তী এবং প্রত্যন্ত একটি এলাকা। আলাস্কার জুনেউ শহর থেকে ২৩০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে এবং ইউকনের রাজধানী হোয়াইটহর্স থেকে এটি ২৫০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থান এই এপিসেন্টারের।
এপিসেন্টার ভূপৃষ্ঠের মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে এপিসেন্টারটির অবস্থান ছিল বলে জানিয়েছে ইউএসজিএস।
কানাডার রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ হোয়াইটহর্স শাখার সার্জেন্ট ক্যালিস্টা ম্যাকলিওড এএফপিকে বলেছেন, “ভূমিকম্পটি বেশ শক্তিশালী ছিল এবং বহু মানুষ সেটির কম্পন অনুভব করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ভূমিকম্পের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পোস্ট করেছে। তবে আমরা এখনও প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাইনি।


ভারতে নাইটক্লাবে ভয়াবহ আগুন, ২৩ জনের প্রাণহানি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের উত্তর গোয়ায় একটি জনপ্রিয় নাইটক্লাবে ভয়াবহ আগুন লেগে অন্তত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত রোববার (৭ ডিসেম্বর) ভোরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভারতের সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, শনিবার মধ্যরাতে রাজ্যের আরপোরা এলাকার একটি ক্লাবে আগুন লাগে। এতে বেশ কয়েকজন পর্যটকও নিহত হয়েছেন।
রাজ্যে পুলিশের বরাত দিয়ে পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়েছে, মধ্যরাতে ‘বার্চ বাই রোমিও লেন’নামের ওই ক্লাবে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এএনআই সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
গোয়ার পুলিশ মহাপরিচালক অলোক কুমার এএনআইকে বলেন, নিহত সবার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘আজ গোয়ার সবার জন্য খুব বেদনাদায়ক একটি দিন। আরপোরায় একটি বড় অগ্নিকাণ্ডে ২৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।’
ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের প্রমোদ সাওয়ান্ত বলেন, তিনজন দগ্ধ হয়ে এবং বাকিরা ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে তিন থেকে চারজন পর্যটক রয়েছেন।
তিনি লেখেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। যারা দায়ী সাব্যস্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই ঘটনাকে ‘গভীর দুঃখজনক ও ট্র্যাজিক’বলে শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানিয়েছেন। একইসঙ্গে গোয়ার আরপোরায় দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছেন মোদী।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি


বাংলাদেশে বিক্রি করতে না পেরে পেঁয়াজের ‘সমাধি’ করল ভারতের ব্যবসায়ীরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কোনো মানুষের নয়, ভারতে শেষকৃত্যের আয়োজন চলছে পেঁয়াজের। এ বছর বাংলাদেশে পেঁয়াজের রেকর্ড উৎপাদনের কারণে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চড়া দামে রপ্তানি করতে না পেরে হয়েছেন কার্যত পথে বসা।

কেজি দুই রুপিতেও কেউ পেঁয়াজ কিনছে না দেশটিতে। সেই হতাশা, রাগ–ক্ষোভ থেকেই অভিনব এই প্রতিবাদ। মধ্যপ্রদেশে কৃষকরা ঘটা করে আয়োজন করছেন পেঁয়াজের প্রতীকী শেষকৃত্যের। যে ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

বাংলাদেশে রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদনের জেরে এবার ভারতের কৃষকদের নিতে হচ্ছে ভিন্নধর্মী প্রতিবাদের পথ। দেশে মাত্র দুই রুপিতেও পেঁয়াজ বিক্রি না হওয়ায় মধ্যপ্রদেশের অনেক চাষি ক্ষোভ–হতাশায় আয়োজন করেছেন পেঁয়াজের প্রতীকী শেষকৃত্য। শেষকৃত্যের এই ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনায় এসেছে।

চলতি বছরে বাংলাদেশের পেঁয়াজ উৎপাদন গত কয়েক বছরের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। সরকারি সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন কোনো ঘাটতি নেই, ফলে কৃষকদের সুবিধা ও উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে সরকার আমদানি বন্ধ রাখে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বড় ধাক্কা লাগে ভারতের মধ্যপ্রদেশের মান্দাসৌর অঞ্চলে। বাংলাদেশের বাজার হারিয়ে এবং স্থানীয়ভাবে দাম না পাওয়ায় সেখানকার কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের প্রতীকী অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

বাংলাদেশের বাজারে যখন নতুন দেশি পেঁয়াজের সরবরাহে স্বস্তির হাওয়া বইছে, ঠিক তখনই পাশের দেশ ভারতে নেমে এসেছে ভয়াবহ চিত্র। মধ্যপ্রদেশের মান্দাসৌরে পেঁয়াজের দাম নেমে গেছে ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে—কেজিপ্রতি মাত্র দুই রুপি। এত কম দামেও ক্রেতা না মেলায় ক্ষুব্ধ কৃষকেরা রাস্তায় পেঁয়াজের বস্তা ফেলে প্রতিবাদ করছেন, এমনকি পেঁয়াজের প্রতীকী শেষকৃত্যও আয়োজন করছেন। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশ রপ্তানি বন্ধ করায় বাজারে সরবরাহ বেড়ে গিয়ে এ ভয়াবহ দরপতন হয়েছে।

বাংলাদেশে অবশ্য দৃশ্য সম্পূর্ণ আলাদা। মৌসুমের শুরু থেকেই নতুন পেঁয়াজ ঘিরে স্থানীয় কৃষকেরা ভালো মূল্যের আশায় আছেন। সামনে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ আসছে, যা রবি মৌসুমে দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ৭০ শতাংশ পূরণ করে এবং তিন থেকে পাঁচ মাস বাজারকে স্থিতিশীল রাখে। এর সঙ্গে খারিফ–১ মৌসুমের উৎপাদন যুক্ত হওয়ায় সারা বছরই দেশীয় পেঁয়াজের যোগান বজায় থাকে। ফলে আমদানির প্রয়োজন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।

ভারতের গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, বাংলাদেশ আগে ভারতের মোট পেঁয়াজ রপ্তানির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কিনত। এবার সেই দরজা বন্ধ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশের উৎপাদনক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় কৃষকের স্বার্থেই আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে ভারতের পাইকারি বাজারে পচে যাচ্ছে বিশাল পরিমাণ পেঁয়াজ।

ভারতীয় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর দাবি, রপ্তানি বন্ধ থাকাই এই সংকটের মূল কারণ। অন্যদিকে বাংলাদেশের কৃষকেরা এখন অনেকটাই নিশ্চিত যে, দেশীয় উৎপাদনেই অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বাজার স্থিতিশীল রাখা যাচ্ছে।


ইমরান খানের সঙ্গে কারাগারে সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ

ইমরান খান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কারাগারে দর্শনার্থীদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান সরকার। তিনি বর্তমানে দেশটির রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন।

পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি ইমরানকে ‘যুদ্ধ-উন্মাদনায় মগ্ন চরমপন্থি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। খবর জিও টিভির।

এর আগে দেশটির সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেনেন্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী ইমরান খানকে ‘মানসিক রোগী’ এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেন।

এর কয়েক ঘণ্টা পরই তার সঙ্গে দর্শনার্থীদের সাক্ষাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার।

তথ্যমন্ত্রী তারার সংবাদমাধ্যম জিও টিভির ‘নয়া পাকিস্তান’ অনুষ্ঠানে বলেছেন, কয়েদিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় আইন ও প্রতিষ্ঠিত নিয়ম অনুযায়ী। এখন কোনো সাক্ষাৎ নেই। সব সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

যদি কেউ জোর করে ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে চায় এবং এ নিয়ে কোনো আন্দোলন করে তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন তারার।

জেলে বসে শত্রুকে কোনো এজেন্ডা বাস্তবায়নের অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

দুইদিন আগে ইমরান খানের বোন উজমা খান রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে গিয়ে তার ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি জানান, সেনাপ্রধান অসীম মুনিরের কার্যক্রমে ইমরান ‘ক্ষুব্ধ’।

৭৩ বছর বয়সি ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে বন্দি আছেন। গত কয়েক সপ্তাহ তার সঙ্গে কারাগারে কেউ যোগাযোগ করতে পারেনি।

এ নিয়ে সমালোচনা তৈরি ও পিটিআই বিক্ষোভের ডাক দিলে তার বোন উজমা খানকে দেখা করতে দেওয়া হয়।


গাজায় ৫৭ হাজারের বেশি পরিবার চালাচ্ছে নারীরা: জাতিসংঘ

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১১:৪৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার ৫৭ হাজারের বেশি পরিবার এখন পরিচালনা করছেন নারীরা। এসব পরিবারের বেশিরভাগই জনাকীর্ণ আশ্রয়স্থল, ক্ষুধা এবং রোগের মধ্যে চরম দুর্দশার মুখোমুখি।

ইসরায়েলি গণহত্যার মুখে গাজা উপত্যকায় অনেক পরিবার সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। হাজার হাজার পুরুষ হত্যার শিকার হয়েছেন, কিংবা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।

শুক্রবার জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)-এর প্রতিনিধি নেস্টর ওওমুহাঙ্গি এক সংবাদ সম্মেলনে গাজাজুড়ে হাসপাতাল, নারী ও মেয়েদের থাকার, যুব কেন্দ্র এবং বাস্তুচ্যুতি শিবির পরিদর্শনের বর্ণনা দেন।

তিনি বলেন, ‘গাজার ৫৭ হাজারেরও বেশি পরিবার এখন নারীদের দ্বারা পরিচালিত হয়। তাদের অনেকেই গভীরভাবে ঝুঁকিপূর্ণ, তাদের সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য কোনো আয় নেই।’

তিনি আবহাওয়ার প্রভাব তুলে ধরে বলেন, ‘দুর্ভোগের ওপর একটি নতুন স্তর যুক্ত করছে শীতের বৃষ্টিপাত এবং বন্যা।’

খাবার ও পানির জন্য পরিবারগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। নেস্টর ওওমুহাঙ্গি এই পরিস্থিতিতে বলেন, ‘মানুষ আর ঘরবাড়ি, শিক্ষা কিংবা উপযুক্ত খাবার চায় না। তারা একটি তাঁবু, একটি ছোট হিটার বা আলো চায়। তাদের প্রত্যাশা ভেঙে পড়েছে - যে কোনো ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের মতোই ধ্বংসাত্মকভাবে।’

গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থার কথা উল্লেখ করে জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মাত্র এক-তৃতীয়াংশ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আংশিকভাবে কাজ করছে। সবগুলোতেই কর্মীর অভাব, চাপ এবং মৌলিক জিনিসগুলোর অভাব রয়েছে।’

রাফা ক্রসিং একমুখী খুলে দেওয়ার ইসরায়েলি পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান ৮ দেশের

গাজা উপত্যকার রাফা সীমান্ত শুধু বহির্গমনপথ হিসেবে খোলার ইসরায়েলি ঘোষণাকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আট দেশ। তারা বলেছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিনিদের নিজেদের ভূখণ্ডে ফেরার অধিকার বাধাগ্রস্ত হবে এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

গাজা যুদ্ধের মধ্যস্থতাকারী মিসর ও কাতারসহ ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, পাকিস্তান, সৌদি আরব, তুরস্ক ও সংযুক্ত আরব আমিরাত শুক্রবার যৌথ বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ জানায়। ইসরায়েলি সামরিক ইউনিট কগাট বুধবার জানিয়েছিল, রাফাহ সীমান্ত কেবল গাজার বাসিন্দাদের মিসরে প্রবেশের জন্য কয়েক দিনের মধ্যে খুলে দেওয়া হবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

দেশগুলো ইসরায়েলের এই উদ্যোগকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের চেষ্টা বলে আখ্যা দেয় এবং ট্রাম্পের ঘোষিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার পূর্ণ বাস্তবায়ন দাবি করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফাহ সীমান্ত দুই দিকেই খোলা থাকা বাধ্যতামূলক।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে রাফা সীমান্ত প্রায় বন্ধ। ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েল ত্রাণ প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। তাদের দাবি, হামাস সব জিম্মির মৃতদেহ ফেরত দেয়নি। তবে কেবল একটি মৃতদেহ এখনও উদ্ধার হয়নি, যা ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে বিধ্বস্ত অবকাঠামোর কারণে আটকে আছে।

যৌথ বিবৃতিতে আট দেশ ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি টেকনোক্র্যাটিক ফিলিস্তিনি সরকার গঠনের প্রস্তাব রয়েছে, যেটি আন্তর্জাতিক ‘বোর্ড অব পিস’-এর তত্ত্বাবধানে বহুজাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীর সহায়তা পাবে। তারা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে গাজায় দায়িত্ব পালনে ফিরে আসার সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে ১৯৬৭ সালের ৪ জুনের সীমানায় পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।

দোহা ফোরামে শনিবার গাজা পরিস্থিতি ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানি বলেন, দুই মাসের যুদ্ধবিরতি এখন সংকটাপন্ন পর্যায়ে। এটাকে পুরোপুরি যুদ্ধবিরতি বলা যায় না, যতক্ষণ না ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হচ্ছে এবং গাজায় স্থিতিশীলতা ফিরছে।

তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিরদান বলেন, গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী নিয়ে আলোচনা চলছে। এর ম্যান্ডেট, ভূমিকা ও নিয়ম চূড়ান্ত হয়নি। তিনি বলেন, বাহিনীর প্রধান উদ্দেশ্য হবে সীমান্তে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের বিচ্ছিন্ন রাখা।

এদিকে শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটের আগে আরব ও মুসলিম দেশগুলো স্বশাসনের বিষয়ে আরও স্পষ্ট ভাষা অন্তর্ভুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চাপ তৈরি করে। ইসরায়েলের আপত্তি সত্ত্বেও প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়।

গাজায় শনিবার ভোরে ইসরায়েলি হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন বেইত লাহিয়ায়। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি পরিবার নিজেদের খামার দেখতে উত্তর গাজায় গেলে তাদের ওপর ড্রোন হামলা হয়।

ইসরায়েলের কারাগার ও গাজায় শান্তির আশা

রোবেন আইল্যান্ডের প্রবেশদ্বারে একটি ফলকে তার সবচেয়ে বিখ্যাত বন্দী ৪৬৬৬৪ নম্বর কয়েদির একটি উক্তি খোদাই করা আছে; ‘কারাগারের ভেতর না গেলে কোনো জাতিকে সত্যিকার অর্থে চেনা যায় না। জাতি নিজের সেরা নাগরিকদের সঙ্গে কেমন আচরণ করে, তা দিয়ে নয়; বরং সবচেয়ে নিচের অবস্থানে থাকা মানুষদের প্রতি তার আচরণ দিয়ে বিচার করা উচিত।’ নেলসন ম্যান্ডেলার এই কথাগুলো আজ যেন ইসরায়েল রাষ্ট্রের ওপর মৃত্যুঘণ্টার মতো বাজছে।

দুই বছর আগে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের সময় ‘নিখোঁজ’ হওয়া ৩৪৫ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ এখন খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মরদেহগুলো এমনভাবে বিকৃত যে মাত্র ৯৯ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।

মিডল ইস্ট আইয়ের সাংবাদিক মাহা হুসাইনি যুদ্ধের পুরো সময়জুড়ে গাজা থেকে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন; তিনি বর্ণনা করেছেন কীভাবে পরিবার ও ফরেনসিক চিকিৎসকেরা শোকাবহ পরিস্থিতিতে দেহ শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন, যদিও মৃত ব্যক্তিরা কীভাবে মারা গেছেন তা জানার মতো তাদের কাছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই।


ভারতে হাসিনার অবস্থান সম্পর্কে জয়শঙ্কর জানালেন—সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২৪ এর জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান সম্পূর্ণই তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।

এবিষয়ে তিনি বলেন, যে পরিস্থিতিতে তিনি ভারতে এসেছিলেন, সেই বাস্তবতার দ্বারাই এটি প্রভাবিত।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এইচটি লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও ও এডিটর-ইন-চিফ রাহুল কানওয়ালের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

শেখ হাসিনা কি ‌‌‘যতদিন খুশি’ ভারতে অবস্থান করতে পারবেন? সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, এটা তো ভিন্ন বিষয়, তাই না? তিনি একটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এখানে এসেছেন এবং আমার মনে হয় সেই পরিস্থিতি স্পষ্টভাবেই এখন তার ভবিষ্যৎ সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে। তবে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে হবে।

তিনি বলেন, ভারত তার প্রতিবেশী দেশে একটি ‘বিশ্বাসযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’ দেখতে চায়। বাংলাদেশে যারা এখন ক্ষমতায় আছেন, তারা অতীতের নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আপত্তি তুলেছেন। যদি সমস্যা নির্বাচন হয়, তবে প্রথম কাজ হবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা।

ভারত-বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে জয়শঙ্কর বলেন, ভারত তার প্রতিবেশীর জন্য গণতান্ত্রিক পথই কামনা করে। আমাদের দৃষ্টিতে, আমরা বাংলাদেশের মঙ্গলই চাই। একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা দেখতে চাই, বাংলাদেশে জনগণের ইচ্ছা যেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।

গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এ সময়ে দেশে বিক্ষোভে শত শত মানুষের মৃত্যু হয় এবং হাজারো মানুষ আহত হন। হাসিনাকে গত মাসে ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল অনুপস্থিত অবস্থায় ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।


মোদি-পুতিন শীর্ষ বৈঠকে বাণিজ্য বৃদ্ধির অঙ্গীকার

হায়দরাবাদ হাউজে ফ্রেমবন্দি পুতিন ও মোদি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শীর্ষ বৈঠক হয়েছে। নয়াদিল্লিতে শুক্রবার আয়োজিত এই বৈঠকে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারকরণে মনোযোগ দেওয়া হয়।

চার বছর পর পুতিনের প্রথম ভারত সফরে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দিয়েছে মোদি সরকার।

সফরটি এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় রয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ তেল কেনার কারণে ভারতীয় পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, যা প্রত্যাহারের জন্য ভারত আলোচনা করছে।

গত বছর দশেক ধরে ভারতের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী হচ্ছে রাশিয়া। মস্কো বলেছে, তারা ভারতীয় পণ্যের আমদানি বৃদ্ধি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে, যা এখন পর্যন্ত ভারতের জ্বালানি আমদানির কারণে রাশিয়ার পক্ষেই ঝুঁকে আছে।

ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইউরোপে রুশ জ্বালানির বাজার ছোট হয়ে গেলে ভারত কম দামে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল কেনা বাড়ায়। তবে মার্কিন শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞার চাপে চলতি বছরে সেই আমদানি কমাতে হয়েছে।

বৈঠকের শুরুতে মোদি বলেন, ভারত নিরপেক্ষ নয়। আমাদের অবস্থান শান্তির পক্ষে। আমরা শান্তির জন্য গৃহীত প্রতিটি উদ্যোগকে সমর্থন করি এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াই।

এর প্রতিক্রিয়ায় সংঘাত নিরসনে মোদির প্রচেষ্টার প্রশংসা করে পুতিন বলেন, ইউক্রেন ইস্যুতে যা ঘটছে এবং আমরা যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য সহযোগীর সঙ্গে সম্ভাব্য শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য যেসব পদক্ষেপ নিচ্ছি, সে বিষয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করার সুযোগ আপনি আমাকে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ ও অর্থনীতি যত বড় হচ্ছে, সহযোগিতার ক্ষেত্রও তত বিস্তৃত হচ্ছে। নয়া প্রযুক্তি, উড়োজাহাজ, মহাকাশ ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে। সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় আমাদের মধ্যে অত্যন্ত আস্থাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং আমরা এসব ক্ষেত্রে আরও এগিয়ে যেতে চাই।

বৈঠকে দুই নেতা শ্রম, বেসামরিক পারমাণবিক শক্তিসহ আরও বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন।

পুতিনের সফরসঙ্গী হিসেবে আছেন বড় ব্যবসায়িক ও সরকারি প্রতিনিধি দল রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলউসোভ। তিনি বৃহস্পতিবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদনে আত্মনির্ভরতা অর্জনে রুশ প্রতিরক্ষা শিল্প সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন বেলউসোভ।

বৃহস্পতিবার ইন্ডিয়া টুডেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন চাপের সমালোচনা করে পুতিন বলেন, যে চাপের কারণে ভারতকে তাদের জ্বালানি না কিনতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেই রাশিয়ার পারমাণবিক জ্বালানি কিনছে।

তিনি বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র আমাদের জ্বালানি কিনতে পারে, তবে ভারত কেন একই সুবিধা পাবে না? এই প্রশ্নের গভীরভাবে আলোচনার প্রয়োজন আছে, এবং আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গেও তা আলোচনায় প্রস্তুত।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে ভারত–রাশিয়া বাণিজ্যে সামান্য পতন হলেও জ্বালানি বাণিজ্য ‘স্বাভাবিকভাবে চলছে’।

ভারত বলেছে, ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য, এবং তারা যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়ার সঙ্গে চলমান বাণিজ্যের বিষয়টিও তুলে ধরেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনো রাশিয়া থেকে এলএনজি থেকে শুরু করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম পর্যন্ত কয়েক বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি ও পণ্য আমদানি করছে।

ভারতের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহযোগিতা করছে রাশিয়া: পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তামিলনাড়ুতে ভারতের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ‘কুদানকুলাম’ নির্মাণে নয়াদিল্লির সঙ্গে সহযোগিতা করছে মস্কো। বিদ্যুৎকেন্দ্রের ছয়টি চুল্লির মধ্যে দুটি ইতোমধ্যেই চালু রয়েছে। তিনি বলেন, রাশিয়া এটি পূর্ণ-ক্ষমতায় নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

গতকাল শুক্রবার দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের সময় নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন এ কথা জানান।

রুশ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা ভারতের বৃহত্তম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র- কুদানকুলাম নির্মাণের জন্য একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প পরিচালনা করছি। ছয়টি চুল্লি ইউনিটের মধ্যে দুটি ইতোমধ্যেই এনার্জি নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে এবং চারটি এখনো নির্মাণাধীন। এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে পূর্ণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে পরিণত করা ভারতের জ্বালানি চাহিদা পূরণে একটি চিত্তাকর্ষক অবদান রাখবে।’

তার এই মন্তব্য রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু কর্পোরেশন- রোসাটমের একটি বিবৃতির পরে এসেছে। ওই বিবৃতিতে জানানো হয়, কুদানকুলাম প্ল্যান্টে তৃতীয় চুল্লির জন্য পারমাণবিক জ্বালানির প্রথম চালান সরবরাহ করা হয়েছে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, পুতিন দুই দিনের ভারত সফরে আছেন। সেখানে দুই দেশের নেতা জ্বালানি খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণসহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

পুতিন বলেন, ‘আমরা ধরে নিচ্ছি যে, আমরা ছোট মডুলার চুল্লি এবং ভাসমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কথা বলতে পারি এবং পারমাণবিক প্রযুক্তির অ-শক্তি প্রয়োগের কথাও বলতে পারি। উদাহরণস্বরূপ: চিকিৎসা বা কৃষিতে।’

তিনি আরও বলেন, ভারতে তেল, গ্যাস, কয়লা এবং জ্বালানি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর একটি নির্ভরযোগ্য সরবরাহকারী রাশিয়া। এটি দ্রুত বর্ধনশীল ভারতীয় অর্থনীতির জন্য জ্বালানির নিরবচ্ছিন্ন চালানের নিশ্চয়তা প্রদান করে।

ভারত-রাশিয়ার বন্ধুত্বসময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ’: মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ভারত-রাশিয়া বন্ধুত্ব সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, যা আমাদের জনগণের জন্য অত্যন্ত কল্যাণ বয়ে এনেছে। বৃহস্পতিবার রাতে দুই দিনের ভারত সফরে আসা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বরণ করে নেওয়ার পর এক্সে দেওয়া পোস্টে এমন মন্তব্য করেন মোদি।

মোদি তার পোস্টে আরও লেখেন, আমার বন্ধু, প্রেসিডেন্ট পুতিনকে ভারতে স্বাগত জানাতে পেরে আনন্দিত। আজ সন্ধ্যার ও আগামীকালের আলোচনার জন্য আগ্রহে অপেক্ষা করছি।


খাবার না পেয়ে মারা গেল ৬০ হাজার পেঙ্গুইন

সাগরে পেঙ্গুইন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:০৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দক্ষিণ আফ্রিকার উপকূলবর্তী এলাকায় ৬০ হাজারের বেশি পেঙ্গুইন খাদ্যের অভাবে মারা গেছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। আফ্রিকান পেঙ্গুইনদের অন্যতম প্রধান খাদ্য সার্ডিন মাছ কমে যাওয়ায় এ বিপর্যয় ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

গবেষণায় বলা হয়, ২০০৪ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে আফ্রিকান পেঙ্গুইনের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রজননস্থল ডাসেন দ্বীপ ও রবিন আইল্যান্ডে ৯৫ শতাংশেরও বেশি পেঙ্গুইন বিলুপ্ত হয়ে যায়। মোল্টিং বা পালক পরিবর্তনের সময় প্রয়োজনীয় খাদ্যের অভাবে তারা মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জলবায়ু সংকট ও অতিমাত্রায় মাছ শিকারকে এই হ্রাসের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ওস্ট্রিচ: জার্নাল অব আফ্রিকান ওরনিথোলজি-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে বলা হয়, এ বিপর্যয় বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের সেন্টার ফর ইকোলজি অ্যান্ড কনজারভেশনের শিক্ষক ড. রিচার্ড শার্লি জানান, ‘অন্যান্য স্থানেও একইভাবে পেঙ্গুইন কমে যাচ্ছে।’

গত ৩০ বছরে আফ্রিকান পেঙ্গুইন প্রজাতির সংখ্যা প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে। আফ্রিকান পেঙ্গুইনরা প্রতি বছর পুরনো পালক ফেলে নতুন পালক গজায়, যাতে তাদের শরীরের তাপরোধ ও জলরোধী ক্ষমতা বজায় থাকে। তবে প্রায় ২১ দিনের এই মোল্টিং পর্বে তাদের স্থলে অবস্থান করতে হয় এবং এ প্রক্রিয়ার জন্য আগে থেকেই শরীরে পর্যাপ্ত চর্বির মজুত থাকা জরুরি।

ড. শার্লি বলেন, ‘মোল্টিংয়ের আগে বা পরে যদি পর্যাপ্ত খাদ্য না পায়, তাহলে তারা উপবাসের সময়টায় টিকতে পারে না। আমরা হয়ত অনেক পেঙ্গুইনের মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখি না, কারণ তারা সমুদ্রেই মারা যায়।’

গবেষণায় আরও বলা হয়, ২০০৪ সালের পর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে সার্ডিন মাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে কমে যাচ্ছে। এই সার্ডিনই আফ্রিকান পেঙ্গুইনের প্রধান খাদ্য। উপকূলীয় পানির তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার পরিবর্তনে মাছের ডিম ছাড়া কমে গেছে, কিন্তু মাছ শিকার বেড়েছে।

২০২৪ সালে আফ্রিকান পেঙ্গুইনকে ‘অতিসংকটাপন্ন’ প্রজাতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়, এবং বর্তমানে প্রজননক্ষম জোড়ার সংখ্যা ১০ হাজারেরও কম।

মাত্র তিন বছর বাদে প্রতি বছরে দক্ষিণ আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে সার্ডিন প্রজাতির প্রাচুর্য সর্বোচ্চ মাত্রার মাত্র ২৫ শতাংশে নেমে এসেছে।

সমুদ্রের তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার পরিবর্তনে সার্ডিনের ডিম ছাড়ার সাফল্য কমেছে,অতিরিক্ত মাছ ধরা অব্যাহত রয়েছে। ফলে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে। সার্ডিন পেঙ্গুইনের প্রধান খাদ্য হওয়ায় তাদের অনাহার বেড়েছে।

পেঙ্গুইন বছরে ২১ দিনের মতো সময় ভূমিতে অবস্থান করে পুরনো পালক ঝরিয়ে নতুন পালক নিয়ে পানিতে নামে। এ সময়ে তারা খেতে পারে না। তাই আগে থেকে শরীরে যথেষ্ট চর্বি জমাতে না পারলে উপবাস অবস্থায় বেঁচে থাকা সম্ভব হয় না।


banner close