শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ইটালির ‘মাফিয়া বস’ মেসিনার মৃত্যু

সংগৃহীত ছবি
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২৩:৩৮

৩০ বছর পালিয়ে থাকার পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া ইটালির ‘মাফিয়া বস’ মাত্তিও মেসিনা দেনারো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে সোমবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। খবরে বলা হয়, কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ইটালি দক্ষিণের সিসিলি দ্বীপের এ মাফিয়া নেতা।

কয়েক দশক ধরে ইটালির মাফিয়া জগতে আধিপত্য বিস্তার করা মেসিনোকে আইনজীবীরা অবশ্য পশ্চিম সিসিলির কোসা নস্ত্রা মাফিয়া দলের প্রধান হিসেবেই বর্ণনা করছেন।

খুব অল্প বয়স থেকে মাফিয়া দলের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন মেসিনা দেনারো। একবার নাকি তিনি বলেছিলেন যে, তার হাতে নিহত ব্যক্তিদের দিয়ে একটি কবরস্থান ভরে ফেলা যাবে। বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলেও এই ‘মাফিয়া বস’ ছিলেন পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তার উল্লেখযোগ্য অপরাধ কর্মগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৯২ সালে মাফিয়াবিরোধী আইনজীবী গিওভানি ফালকোনে এবং পাওলো বোরসিলেনাকে হত্যা। ওই হত্যাকাণ্ডের পর সিসিলিয়ান মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় চালায় পুলিশ।

১৯৯৩ সালে ইটালির মিলান এবং ফ্লোরেন্সে বোমা হামলার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন এই মাফিয়া বস। সেই ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন ১০ জন। গিওসেপ্পে দি মাত্তেও নামে ১২ বছরের এক শিশুকে অপহরণও করেছিলেন মেসিনো। ওই শিশুর বাবা যেন মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আদালতে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ পেশ না করেন সে জন্য তাকে অপহরণ করা হয়। শেষ পর্যন্ত শিশুটিকে হত্যা করে মেসিনোর মাফিয়া বাহিনী।


রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় কাজ করতে প্রস্তুত জেলেনস্কি

ভলোদিমির জেলেনস্কি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে তিনি প্রস্তুত আছেন। তবে ইউরোপের বেশ কিছু মিত্রদেশ বলছে, যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত এ পরিকল্পনাটি রাশিয়ার স্বার্থেই বেশি কাজ করবে।

বৃহস্পতিবার জেলেনস্কির কার্যালয় নিশ্চিত করেছে যে প্রেসিডেন্ট ওই পরিকল্পনার একটি খসড়া হাতে পেয়েছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলবেন।

তবে অপ্রকাশিত এই পরিকল্পনার বিষয়ে জেলেনস্কির কার্যালয় থেকে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে জেলেনস্কির কার্যালয় বলছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আশা করছেন কূটনৈতিক সুযোগ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় মূল দিকগুলো নিয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা হবে।

বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবর বলছে, ২৮ দফার এই পরিকল্পনায় ইউক্রেনকে কিছু ভূখণ্ড ও অস্ত্র ছাড় দিতে হবে। এই পরিকল্পনা–সংশ্লিষ্ট এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পরিকল্পনা অনুসারে, রাশিয়ার কাছে পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়া হবে। এর বদলে ইউক্রেন ও ইউরোপকে ভবিষ্যতে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা থেকে নিরাপত্তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

এই পরিকল্পনা নিয়ে এক মাস ধরে কাজ করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। ইউক্রেনীয় ও রুশ দুই পক্ষের জনগণের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্য শর্তগুলো নিয়ে মতামত নেওয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। তিনি উদীয়মান এই প্রস্তাবের বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে তিনি বলেন, ট্রাম্প এ বিষয়ে তাকে ব্রিফ করেছেন এবং তিনি প্রস্তাবটি সমর্থন করেছেন।

লেভিট বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই পক্ষের জন্য এটি একটি ভালো পরিকল্পনা। এটি দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত এবং তারা এটি নিয়ে কাজ করছেন বলেও জানান লেভিট।

পরে জেলেনস্কি বলেন, তিনি এই পরিকল্পনা নিয়ে কিয়েভে যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি সেক্রেটারি ড্যানিয়েল ড্রিসকলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

তবে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নতুন উদ্যোগকে গুরুত্ব দেবে না বলেই মনে হচ্ছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই মুহূর্তে কোনো আলোচনা চলছে না। অবশ্যই কিছু তথ্য বিনিময় হচ্ছে। তবে এমন কোনো প্রক্রিয়া চলছে না, যাকে যোগাযোগ বলা যায়।

জেলেনস্কি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ করার ইঙ্গিত দিলেও ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা এ ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছে।

ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো বলেন, ‘ইউক্রেনের মানুষ শান্তি চায়, যা সব দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করবে। এমন টেকসই শান্তি চায়, যা ভবিষ্যতে কোনো ধরনের আগ্রাসনের আশঙ্কা জাগাবে না। তবে শান্তি মানে আত্মসমর্পণ করা নয়।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কাজা ক্যালাস বলেন, যেকোনো শান্তি প্রস্তাব কার্যকরের জন্য ইউরোপ ও ইউক্রেনের সমর্থন প্রয়োজন। পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লাউ সিকোরস্কি বলেন, যেকোনো সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে বলে ইউরোপ প্রত্যাশা করছে।

রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনীয় সেনারা দেশটির পূর্বাঞ্চল থেকে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত কূটনৈতিক উদ্যোগে যোগ দিতে জেলেনস্কি চাপের মুখে পড়ছেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত অক্টোবরে দাবি করেছিলেন, রুশ সেনারা চলতি বছর ইউক্রেনের প্রায় পাঁচ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছেন। তবে গত ২৫ অক্টোবর ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার বলেছে, প্রকৃতপক্ষে ৩ হাজার ৪৩৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল হয়েছে।


গাজায় ফ্রন্টলাইন আরও ভেতরে সরিয়েছে ইসরায়েল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা সিটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ- চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শহরের ভেতরে আরও অগ্রসর হয়েছে এবং তথাকথিত ‘ইয়েলো লাইন’ সীমারেখা সম্প্রসারণ করেছে। এতে আশ-শাফ, আন-নাজ্জাজ ও বাগদাদ স্ট্রিট এলাকার বহু ফিলিস্তিনি পরিবার ট্যাংকের অগ্রযাত্রার মধ্যে আটকা পড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে গাজার গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী সীমার চিহ্নগুলো সরিয়ে প্রায় ৩০০ মিটার ভেতরে চলে গেছে। হামলার মধ্যে আটকা পড়া বহু পরিবারের ভাগ্য অজানা বলে জানিয়েছে দপ্তরটি। তারা বলেছে, সীমারেখা সম্প্রসারণ যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি ইসরায়েলের স্পষ্ট অবজ্ঞা।

শুক্রবারও দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের পূর্ব দিকে ‘ইয়েলো লাইন’-এর ভেতরে ইসরায়েলি বিমান ও কামান হামলা অব্যাহত ছিল বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। এসব হামলায় একজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এর আগে গত বুধবার গাজা সিটি ও খান ইউনুসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত হন।

গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই আকাশ, স্থল এবং সরাসরি গুলিবর্ষণের মাধ্যমে হামলা চালিয়েছে। এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ৪০০-এর বেশি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এসব হামলায় ৩০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতির প্রধান জামিনদার যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, কাতার ও তুরস্ককে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে হামলা বন্ধ ও খাদ্য, আশ্রয়সামগ্রী, চিকিৎসা সহায়তা এবং অবকাঠামোর সরঞ্জাম সরবরাহের পথ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে গাজার কর্তৃপক্ষ।

চুক্তিতে উল্লিখিত ‘ইয়েলো লাইন’ হলো একটি অদৃশ্য সীমা, যেখানে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী নিজেদের অবস্থান পুনর্গঠিত করে। এর মাধ্যমে ইসরায়েল গাজা উপত্যকার অর্ধেকের বেশি অংশে নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সীমার কাছে গেলে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনাও নিয়মিত ঘটে।

জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, বিটসেলেমসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে- গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান গণহত্যার শামিল।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ৬৯ হাজার ৫৪৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার বড় অংশ, বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় পুরো জনগোষ্ঠী।


ফুটবল খেললেন ট্রাম্প!

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বল বাড়াচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে, তিনি আবার ফিরতি পাসে ফেরত দিচ্ছেন রোনালদোকে। এমনই এক ভিডিও এখন সামাজিকমাধ্যমে ঝড় তুলেছে। ভিডিওটি শেয়ার করেছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এই এআই নির্মিত ভিডিওতে দেখা যায়, ছাদের দিক থেকে হঠাৎ একটি ফুটবল পড়ে নিচে। এরপর ট্রাম্প আর রোনালদো মাথায় আর পায়ে জাগলিং করতে থাকেন। শেষে ট্রাম্প একটি ঘুরে গিয়ে বলটি ক্যামেরার দিকে জোরে মারেন।

১৮ নভেম্বর হোয়াইট হাউসে রোনালদো আর সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়ে এক ব্যক্তিগত ডিনার আয়োজন করেন ট্রাম্প। রোনালদোর সৌদি ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্ক আর সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের বিশ্বব্যাপী খেলাধুলায় আগ্রহ এই বৈঠককে আলোচনায় এনেছিল। কিন্তু তারও বেশি আলোচনায় আসে এই এআই–নির্মিত ভিডিও।

ভিডিওতে দেখা যায়, এআই মডেল করা ট্রাম্প রোনালদোর বল নিয়ন্ত্রণ অনুকরণ করার চেষ্টা করছেন। তার ঘূর্ণি আর পায়ের কাজ অস্বাভাবিকভাবে বেশ মসৃণ। ওভাল অফিসকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন সেটি সত্যিই একটি ফুটবল মাঠ। দুজনের অভিব্যক্তি আর বলের টাচ অনেক জায়গায় একটু অদ্ভুত দেখায়, যা এআই–জেনারেটেড ভিডিওর সাধারণ লক্ষণ।

ভিডিওটি ভাইরাল হতেই সামাজিকমাধ্যমে মন্তব্যের বন্যা নামে। নানা হাস্যকর প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে অনলাইনে।


শাবানা মাহমুদ কি হতে চলেছেন ব্রিটেনের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী?

শাবানা মাহমুদ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ওয়েস্ট মিনিস্টারকে স্তম্ভিত করে এবং সমালোচকদের মুখে ঝামা ঘষে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ একাই লেবার সরকারকে ভরাডুবির দ্বারপ্রান্ত থেকে টেনে তুলেছেন। নাইজেল ফারাজের ‘রিফর্ম ইউকে’-র কাছে সবক‌টি জনমত জ‌রি‌পের বিশাল ধস এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণের আস্থা হারানোর মুখে, শাবানা মাহমুদ আধুনিক ব্রিটিশ ইতিহাসের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক অভিবাসন সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন।

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর মাত্র দুই মাসের কিছু বেশি সময়ে, বার্মিংহাম লেডিউডের এই এমপি শুধু লেবার পা‌র্টির ডুবন্ত জাহাজকেই রক্ষা করেননি, বরং উগ্র ডানপন্থি‌দের কৌশল ধার ধ‌রে এমন এক কঠোর নতুন পথ তৈরি করেছেন যা তার প্রতিপক্ষদের হতভম্ব করে দিয়েছে।

ব্রিটেনের মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রথম নারী হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে আসীন হয়ে ইতিহাস গড়া শাবানা মাহমুদ অতীতের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলতে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করেননি। যেখানে তার পূর্বসূরী ইভেট কুপার আমলাতান্ত্রিক স্থবিরতায় হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে তিনি ডেনমার্কের কঠোর সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ব্যবস্থার আদলে ‘শক অ্যান্ড অ’ (আকস্মিক ও তীব্র) কৌশল প্রয়োগ করেছেন। ‘শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার’ স্লোগানে চলতি সপ্তাহে উন্মোচিত তার প্রধান নীতিতে সকল শরণার্থী বা রিফিউজিদের জন্য বাধ্যতামূলক আড়াই বছরের পর্যালোচনা চালু করা হয়েছে। এই নতুন কঠোর নিয়‌মের কারণে ব্রিটেনে আশ্রয় এখন আর স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। যদি আড়াই বছরের মধ্যে কোনো শরণার্থীর নিজ দেশকে ‘নিরাপদ’ বলে মনে করা হয়, তবে তাকে অবিলম্বে ফেরত পাঠানো হবে।

এছাড়া মানবপাচারকারীদের ব্যবসায়িক মডেলে আঘাত হানার জন্য, অনিয়মিত বা অবৈধ পথে আসা যেকোনো ব্যক্তির নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ২০ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার সময়কাল বাধ্যতামূলক করেছেন শাবানা, যা কার্যকরভাবে অবৈধভাবে আগতদের দ্রুত বসতি স্থাপনের সব আশা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।

নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাজের গতি অভূতপূর্ব। যেখানে আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা পরামর্শ করতেই মাস পার করতেন, সেখানে মাহমুদ নিয়োগ পাওয়ার ৭৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে নীতি প্রয়োগ শুরু করেছেন। তিনি অবৈধ অভিবাসনকে কেবল একটি লজিস্টিক সমস্যা হিসেবে নয়, বরং একটি ‘নৈতিক জরুরি অবস্থা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন যা তার দেশকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলছে।

তার ভাষা ডানপন্থিদের জনতুষ্টিবাদী বাগাড়ম্বরের সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে। এই কৌশলগত পরিবর্তনটি আপাতত কিয়ার স্টারমারের গদি বাঁচিয়ে দিয়েছে এবং কনজারভেটিভরা যতটা কঠোর হওয়ার সাহস করেছিল লেবার তার চেয়েও বেশি কঠোর হতে পারে- এটা প্রমাণ করে শ্রমিক শ্রেণির ভোটারদের রিফর্ম ইউকের দিকে ঝুঁকে পড়া রোধ করেছে।

পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?

হাউস অব কমন্সের টি-রুমগুলোতে হতাশার পরিবেশ এখন শান্ত বিস্ময়ে রূপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের জনপ্রিয়তা যখন তলানিতে পৌঁছেছে, সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে তার নেট স্কোর মাইনাস ৫৪-তে নেমে গেছে- তখন শাবানা মাহমুদ নিজেকে দক্ষ এবং অটল বিকল্প হিসেবে নীরবে প্রতিষ্ঠিত করছেন। তিনিই বর্তমানে একমাত্র ক্যাবিনেট মন্ত্রী যিনি এমন ফলাফল দিচ্ছেন যা ভোটাররা খুঁজছেন।

শাবানা রাজনীতির দাবার বোর্ডে এক চতুর চাল চালছেন। হোম অফিসের মতো কঠিন দায়িত্ব (যাকে বিষাক্ত পানপাত্র বলা হয়) গ্রহণ করে এবং অন্যরা যেখানে কেবল অজুহাত দেখিয়েছে সেখানে দৃশ্যমান কঠোরতা প্রয়োগ করে, তিনি প্রমাণ করছেন যে শীর্ষ পদের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা তার আছে।

লেবার পার্টির অন্দরে গুঞ্জন বাড়ছে যে যদি পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের আগে স্টারমারকে সরে দাঁড়াতে হয়, তবে ওয়েস স্ট্রিটিং বা র‍্যাচেল রিভসের চেয়ে শাবানা মাহমুদের অবস্থান এখন শক্তিশালী। তিনি একটি অনন্য রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে কাজ করছেন। কাশ্মিরী বংশোদ্ভূত নারী হিসেবে তিনি অভিবাসনের ওপর এমন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন যা কোনো শ্বেতাঙ্গ পুরুষ রাজনীতিবিদ প্রস্তাব করলে সাথে সাথে ‘বর্ণবাদী’ বলে অভিহিত হতো। তিনি রিফর্ম ইউকে-র নীতিগুলো নিজের করে নিয়ে তাদের কার্যত নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছেন, যার ফলে নাইজেল ফারাজের নড়াচড়া করার সুযোগ কমে গেছে। তার পাঁচজন পূর্বসূরী যেখানে ব্যর্থ হয়েছেন, সেখানে তিনি যদি সফল হন, তবে ব্রিটেনের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ তার জন্য খুলে যেতে পারে।

ফারাজকেও ছাড়িয়ে ডানপন্থা

তবে, শাবানার এই দ্রুত উত্থানের জন্য চড়া নৈতিক মূল্য দিতে হচ্ছে, যা লেবার পার্টির আদর্শে ফাটল ধরিয়েছে। রিফিউজি কাউন্সিল এবং এডমন্টনের বিশপ, ড. অ্যান্ডারসন জেরেমিয়াহ তার প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে তারা ‘গভীরভাবে মর্মাহত’।

শরণার্থীদের স্থিতিশীলতা কেড়ে নিয়ে এবং প্রতি কয়েক বছর পর পর পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করার হুমকির মাধ্যমে, সমালোচকরা যুক্তি দিচ্ছেন যে তিনি যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করছেন। আশ্রয়প্রার্থীদের সহায়তা ‘বিবেচনামূলক’ বা ঐচ্ছিক করার সিদ্ধান্ত- যার অর্থ সরকার চাইলে কাজ করতে সক্ষম এমন ব্যক্তিদের আবাসন ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রত্যাখ্যান করতে পারে- তা অভিবাসন আইনজীবীদের দ্বারা ‘ডিস্টোপিয়ান’ বা দুঃস্বপ্নের মতো বলে অভিহিত হয়েছে।

তবুও, সবাইকে অবাক করে দিয়ে হাউস অব কমন্সে দাঁড়িয়ে শাবানা নিজ দলের এমপিদের সতর্ক করেছেন যে, অশুভ শক্তিগুলো অভিবাসন সংকটকে পুঁজি করছে, এবং তার এই দমন-পীড়নকে তিনি অতি-ডানপন্থিদের ক্ষমতা দখল রোধ করার একমাত্র উপায় হিসেবে ন্যায্য প্রমাণ করেছেন। প্রয়োগের ক্ষেত্রে তিনি রিফর্ম ইউকের থেকে প্রায় অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেছেন, এমনকি নাইজেল ফারাজ নিজেও বিরল প্রশংসা করে বলেছেন যে শাবানা তার দলের জন্যই অডিশন দিচ্ছেন।


আবারও ইসরায়েলি হামলা

গাজায় ১২ ঘণ্টায় ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা। ছবি: সংগৃহীত 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনুসে ইসরায়েলের দুটি বিমান হামলায় অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ভোরে এ হামলা হয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রায় ১২ ঘণ্টার মধ্যে গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় মোট ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এই হামলাগুলো ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

এর আগে বুধবার গভীর রাত ও বৃহস্পতিবার ভোরে খান ইউনুসে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবুর ওপর চার দফা বিমান হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫ নারী ও ৫ শিশু রয়েছে।

অন্যদিকে, গাজার উত্তরের গাজা সিটিতে একটি ভবনের ওপর দুই দফা বিমান হামলায় ১৬ জন নিহত হন। আল–শিফা হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, নিহতদের মধ্যে ৭ শিশু ও ৩ নারী ছিলেন।

হামাস এসব হামলাকে বেপরোয়া গণহত্যা বলে নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে যে হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের দিকে প্রথমে গুলি চালিয়েছিল তাই এমন হামলা চালানো হয়েছে।

খান ইউনুসের নাসের হাসপাতালে নিহতদের জানাজায় অংশ নিতে বহু মানুষ ভিড় করেন। সাদা কাফনের কাপড়ে মোড়ানো প্রিয়জনের মরদেহের সামনে দাঁড়িয়ে অনেক নারী শোক প্রকাশ করে আক্ষেপে ভেঙে পড়েন।

শোকাহতদের মধ্যে ছিলেন আবির আবু মুস্তাফা, যিনি একই হামলায় তার তিন সন্তান এবং স্বামীকে হারিয়েছেন। দাফনের প্রস্তুতির সময় তিনি তাদের মরদেহের পাশে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আরও ১ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

গাজায় ৪০ হাজার শিশুকে টিকা দেবে ডব্লিউএইচও

দীর্ঘদিন ধরে চলা গাজা-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে শিশুরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই সময়ে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) শিশুদের জীবন রক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সংস্থাটি ঘোষণা করেছে, সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির সুযোগে তারা গাজার ৪০ হাজারেরও বেশি শিশুকে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে টিকা দেবে।

ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, প্রথম ধাপের কার্যক্রম ৯ নভেম্বর শুরু হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য—তিন বছরের কম বয়সি শিশুদের বিভিন্ন সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষা দেওয়া। যুদ্ধবিরতি থাকায় সংস্থা শিশুদের জরুরি টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে পারছে। এই উদ্যোগের ফলে গাজার ক্ষতিগ্রস্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরায় শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পুনঃসংস্থান করা সম্ভব হচ্ছে।

প্রথম ধাপের আট দিনে তিন বছরের কম বয়সী ১০ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস জানিয়েছেন, এই কর্মসূচি শনিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শিশুরা হাম, মাম্পস, রুবেলা, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, হুপিং কাশি, হেপাটাইটিস বি, যক্ষ্মা, পোলিও, রোটাভাইরাস ও নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাচ্ছে।

ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ পরিচালিত হবে। এই কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে ইউনিসেফ, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এবং হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। টেড্রোস বলেছেন, ‘যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকায় আমরা উৎসাহিত। এতে গাজায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করা, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পুনঃসংস্থান এবং বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে গত ১০ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের রক্তক্ষয়ী হামলার পর থেকে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সংঘাত চলায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৫০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ এই সংখ্যাকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।

এক সপ্তাহও যুদ্ধ চালাতে সক্ষম নয় ইসরায়েল

ইরানের সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের গালিবাফ দাবি করেছেন, গত জুন মাসে ১২ দিনের আগ্রাসনে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী শাস্তি পেয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া তারা ইরানের বিরুদ্ধে এক সপ্তাহও যুদ্ধ টিকিয়ে রাখতে পারবে না।

এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মেহর নিউজ।

শুক্রবার ইমাম খোমেনি সমাধিস্থলে বসিজ স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর এক সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে গালিবাফ বলেন, জুনে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র যে ১২ দিনের যুদ্ধ শুরু করেছিল, সেই প্রেক্ষাপটে ইরানের শক্তি শুধু ক্ষেপণাস্ত্র থেকে আসে না; বরং জনগণের ব্যাপক সমর্থনই দেশকে শক্তিশালী করে।

তিনি বলেন, ‌‌‘যদি মানুষের হৃদয় আমাদের সঙ্গে থাকে, আমরা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। কিন্তু যদি তারা সঙ্গে না থাকে, তবে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও যুদ্ধের সময়ের মতো কার্যকর হবে না।’

গালিবাফ দাবি করেন, ইরানি জনগণ এবং তাদের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠী ও তাদের মার্কিন সমর্থকরা যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম দিনে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা ছাড়া যুদ্ধের ছয় দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট (জেডি ভ্যান্স) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সংঘাত থামানোর জন্য আলোচনার চেষ্টা করছিলেন।’

গালিবাফ যোগ করেন, ‘শত্রু সামরিক শক্তি নিয়ে আক্রমণ করেছিল, আর আমরাও সামরিক শক্তি দিয়ে তাকে সতর্ক করেছি এবং শাস্তি দিয়েছি।’


আবার উত্তেজনা, নেপালে তরুণদের বিক্ষোভের পর কারফিউ জারি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নেপালে সিপিএন-ইউএমএল কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের এক দিন পর বৃহস্পতিবার দেশটির সিমারা এলাকায় ‘জেন–জি’ প্রজন্মের তরুণরা আবার রাস্তায় নেমেছেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় সময় রাত আটটা পর্যন্ত ওই এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে বিক্ষোভকারীরা সিমারা চকে জড়ো হতে শুরু করেন। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য শক্তি প্রয়োগ করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্তৃপক্ষ বেলা পৌনে একটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে। সহকারী প্রধান জেলা কর্মকর্তা ছবিরামন সুবেদি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বুধবার সংঘর্ষে জড়িত সন্দেহে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রধান জেলা কর্মকর্তা ধর্মেন্দ্র কুমার মিশ্র বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জিতপুরসিমারা সাব-মেট্রোপলিটন সিটির ২ নম্বর ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান ধন বাহাদুর শ্রেষ্ঠ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান কাইমুদ্দিন আনসারি।

বিক্ষোভের কারণ

বিক্ষোভকারী তরুণদের অভিযোগ, বুধবার সংঘর্ষের ঘটনায় তারা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করেনি।

‘জেন–জি’ জেলা সমন্বয়ক সম্রাট উপাধ্যায় বলেন, তারা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, সেই অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজনকে এখনো আটক করা হয়নি। এ কারণেই তারা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেছেন।

বুধবারের সংঘর্ষে ছয়জন ‘জেন–জি’ সমর্থক আহত হয়েছিলেন। বুধবার দিনভর ‘জেন–জি’ প্রজন্মের তরুণ ও ইউএমএল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। সংঘর্ষ সিমারা বিমানবন্দরের কাছে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে, ফলে বিমানবন্দরের কার্যক্রমও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়।

ইউএমএল বুধবার পারওয়ানিপুরে তাদের দলীয় কর্মসূচি ‘যুব জাগরণ অভিযান’ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ইউএমএল-এর সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর পোখরেল এবং পলিটব্যুরো সদস্য মহেশ বসনেটের কাঠমান্ডু থেকে সিমারা বিমানবন্দরে আসার কথা ছিল।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সম্রাট উপাধ্যায় ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছিলেন, যেখানে তিনি ‘হত্যার রাজনীতি করা বিদায়ী সরকারের’ বিরুদ্ধে সিমারায় প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান। এই পোস্টটি জেলাজুড়ে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছিল। এতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে প্রায় ১০০ থেকে দেড় শ তরুণ সিমারা চকে জড়ো হন। জানা যায়, তাদের অনেকেই ইউএমএল নেতা মহেশ বসনেটের আগমন নিয়ে প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা করছিলেন। কারণ, অতীতে আক্রমণাত্মক রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে তিনি কঠোরভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন।


তেলের সন্ধানে আরব সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ বানাচ্ছে পাকিস্তান

আরব সাগরে নৌ-মহড়ায় পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ (পিএনএস) টিপু সুলতান (প্রথম থেকে বামে) ও তৈমুর (প্রথম থেকে ডানে)। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তেল-গ্যাস অনুসন্ধান জোরদারে আরব সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ করছে পাকিস্তান। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের (পিপিএল) এ পরিকল্পনার কথা গত বুধবার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

পিপিএলের মহাব্যবস্থাপক আরশাদ পালেকার ব্লুমবার্গকে জানান, সিন্ধুর উপকূল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে, সুজাওয়ালের কাছে এই কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা হচ্ছে। ইসলামাবাদে তেল-গ্যাস সম্মেলনের সাইডলাইনে তিনি এসব কথা বলেন।

আরশাদ পালেকার জানান, ছয় ফুট উচ্চতার এই প্ল্যাটফর্মটি জোয়ার-ভাটার প্রভাব ঠেকিয়ে দিনরাত অবিরাম অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে সহায়তা করবে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জুলাইয়ে সামাজিক মাধ্যমে পাকিস্তানের ‘বিরাট তেল মজুত’ প্রসঙ্গে আগ্রহ দেখানোর পর দেশটির দূরবর্তী উপকূলীয় অঞ্চলে খনন কার্যক্রম নতুন গতি পেয়েছে। এরপর থেকেই পিপিএল, মারি এনার্জিস লিমিটেড ও প্রাইম ইন্টারন্যাশনাল অয়েল অ্যান্ড গ্যাস- এই তিন স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে অফশোর অনুসন্ধানের লাইসেন্স দিয়েছে ইসলামাবাদ।

পালেকার বলেন, পাকিস্তানের জন্য এ প্রকল্পটি প্রথম হলেও আবুধাবিতে এমন কৃত্রিম দ্বীপে সফল ড্রিলিংয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে, সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা নেওয়া হয়েছে।

তার তথ্য অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে দ্বীপের নির্মাণকাজ শেষ হবে ও এরপরই কার্যক্রম শুরু হবে। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২৫টি কূপ খননের পরিকল্পনা করেছে।

এদিকে, বৈশ্বিক জ্বালানি বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ভিটল জানিয়েছে, পাকিস্তানে জাহাজের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য সর্ববৃহৎ লো-সালফার ফুয়েল অয়েল (ভিএলএসএফও) চালান সরবরাহ করা হয়েছে। দেশটির বৃহত্তম শোধনাগার সিঙ্গারিজকো এই চালান সরবরাহ করেছে।

সিঙ্গারিজকো জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও) নির্ধারিত কম সালফার মানদণ্ড অনুযায়ী প্রস্তুত এই জ্বালানি উৎপাদন শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তাদের প্রথম বড় আকারের ক্রুড অয়েল চালানের পর থেকেই।

এই নতুন জ্বালানি সরবরাহের ফলে পাকিস্তানে জাহাজ রিফুয়েল করার পর পূর্ব থেকে পশ্চিমে দীর্ঘ রুটে যাতায়াতের জন্য আর অতিরিক্ত কোথাও থামতে হবে না। একই সঙ্গে দেশটিতে পরিবেশসম্মত সামুদ্রিক জ্বালানির স্থানীয় মজুতও বাড়বে।

আফগান সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ২৩ জঙ্গিকে হত্যা করেছে পাকিস্তান

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আফগান সীমান্তবর্তী এলাকায় দুটি অভিযান চালিয়ে অন্তত ২৩ জঙ্গিকে হত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এর ঠিক এক সপ্তাহ আগেই ইসলামাবাদে আদালত চত্বরে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন।

সেনাবাহিনী জানায়, নিহত জঙ্গিরা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) বা এর সহযোগী গোষ্ঠীর সদস্য। পাশাপাশি দেশটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত এসব গোষ্ঠীকে সহায়তা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে তারা।

খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কুররম জেলায় এ অভিযান চালানো হয়। এই প্রদেশের সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ফিরে আসার পর থেকে অঞ্চলটিতে সহিংসতা আরও বেড়েছে।

বিবৃতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বলেছে, ‘বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে পাকিস্তান পূর্ণ গতিতে অভিযান চালিয়ে যাবে।’

ইসলামাবাদ বহুদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, আফগান সরকার পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী—বিশেষ করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আশ্রয় দিচ্ছে। এসব গোষ্ঠী পাকিস্তানে প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে বলে দাবি ইসলামাবাদের।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধেও কড়া ভাষায় অভিযোগ তুলছে যে দেশটির ভেতরে সক্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা দিচ্ছে দিল্লি। তবে ভারত ও আফগানিস্তান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত সপ্তাহে ইসলামাবাদে আদালত চত্বরে আত্মঘাতী হামলায় ১২ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। পাকিস্তানের দাবি, এই হামলার পরিকল্পনা আফগানিস্তান থেকে করা হয়েছে। পাকিস্তানি তালেবানের একটি উপগোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এ হামলার ফলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত মাসে সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৭০ জনের বেশি নিহত হয়, যা ছিল সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত। এর পর থেকে এ পর্যন্ত দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ রয়েছে।


’ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে সরিয়ে নেওয়া উচিত’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বৃহস্পতিবার বলেছেন, অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ ও তীব্র পানিসংকটের কারণে দেশের রাজধানী তেহরান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া উচিত।

এই ধারণা তিনি এর আগেও তুলেছিলেন—বিশেষত এ বছর তেহরানে বৃষ্টিপাত শত বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে বলেছেন, ‘বাস্তবতা হলো আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই। (রাজধানী স্থানান্তর) একটি প্রয়োজন।

আমরা এই এলাকায় আরো জনসংখ্যা ও নির্মাণের বোঝা চাপিয়ে দিতে পারি না। আমরা উন্নয়ন করতে পারি, কিন্তু এ অঞ্চলের পানিসংকট সমাধান করতে পারি না।’

চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট সতর্ক করেছিলেন, শীত শুরুর আগে বৃষ্টি না হলে বর্তমান রাজধানী খালি করে দিতে হতে পারে—যদিও তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।

তেহরান আলবোর্‌জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত—যেখানে গরম, শুষ্ক গ্রীষ্ম সাধারণত শরতের বৃষ্টি ও শীতের তুষারে প্রশমিত হয়।

কিন্তু এ সময় সাধারণত বরফে ঢাকা যে পর্বতচূড়াগুলো থাকে, সেগুলো এখনো সম্পূর্ণ শুকনো।

জলসংকট মোকাবিলায় সরকার তেহরানের এক কোটি বাসিন্দার জন্য পর্যায়ক্রমে পানির সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

পেজেশকিয়ানের সরিয়ে নেওয়ার ধারণা সমালোচনার মুখে পড়েছে, বিশেষ করে স্থানীয় গণমাধ্যমে। সংস্কারপন্থী দৈনিক হাম মিহান তার মন্তব্যকে ‘রসিকতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

পরবর্তীতে সরকার জানায়, প্রেসিডেন্ট শুধুই পরিস্থিতির গুরুত্ব সম্পর্কে বাসিন্দাদের সতর্ক করতে চেয়েছেন—এটি কোনো চূড়ান্ত পরিকল্পনা নয়।

গত সপ্তাহে ইরান ঘোষণা করেছে, বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়াতে তারা ক্লাউড সিডিং (মেঘে বীজ ছড়ানো) কার্যক্রম শুরু করেছে।

গত বছর থেকে পেজেশকিয়ান রাজধানী স্থানান্তরের পেছনে যে কারণগুলো তুলে ধরছেন, সেগুলো হলো—তীব্র যানজট, জলসংকট, সম্পদ ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা এবং মারাত্মক বায়ুদূষণ।

এ বছরের জানুয়ারিতে সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি জানিয়েছিলেন, কর্তৃপক্ষ রাজধানীকে দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত তুলনামূলকভাবে অনুন্নত মাকরান অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।

যদিও কোনো চূড়ান্ত পরিকল্পনা তখনো দেওয়া হয়নি, ওই প্রস্তাবও সমালোচনার মুখে পড়ে।


দশমবারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন নীতীশ কুমার

নীতীশ কুমার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জেডিইউর শীর্ষ নেতা নীতীশ কুমার রেকর্ড দশমবারের মতো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন।

বৃহস্পতিবার পটনার গান্ধী ময়দানে অনুষ্ঠিত এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির জাতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাসহ এনডিএর শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।

এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ৭৪ বছর বয়সী নীতীশ কুমার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিজের ১৯ বছরের ধারাবাহিক মেয়াদে আরেকটি নতুন অধ্যায় যোগ করলেন এবং দেশের দীর্ঘতম সময় ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রি ও মুখ্যমন্ত্রীদের তালিকায় নিজের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করলেন।

রাজ্যপাল আরিফ মোহাম্মদ খান নীতীশ কুমারসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের পদ ও গোপনীয়তার শপথ পাঠ করান।

নীতীশ কুমারের সঙ্গে শপথ নেন বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ ও ওবিসি মুখ হিসেবে বিবেচিত সম্রাট চৌধুরী।

এছাড়া বিজেপি থেকে আরও তিন নেতা—দিলীপ জয়সওয়াল, বিজয় কুমার সিনহা এবং মঙ্গল পাণ্ডে—মন্ত্রিপদে শপথ নেন।

একই অনুষ্ঠানে জেডিইউর পক্ষ থেকে বিজয় কুমার চৌধুরী, বিজেন্দ্র প্রসাদ যাদব এবং শ্রাবণ কুমার মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।


সাংবাদিককে ট্রাম্পের তীব্র কটূক্তি

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মঙ্গলবার ওভাল অফিসে এবিসি নিউজের প্রধান হোয়াইট হাউস সংবাদদাতা মেরি ব্রুসকে তিরস্কার করেন। সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে প্রশ্ন করায় ট্রাম্প ক্ষিপ্ত হন।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যুবরাজের নির্দেশেই এই হামলা চালানো হয়েছিল বলে জানালেও, ট্রাম্প ব্রুসকে বলেন, ‘এ ধরনের প্রশ্ন করে আমাদের অতিথিকে অস্বস্তিতে ফেলবেন না।’ তিনি প্রশ্নটিকে ‘ভয়ংকর, ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং একেবারে বাজে’ বলে অভিহিত করেন।

সাংবাদিককে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘অনেকেই ওই ভদ্রলোককে (খাসোগি) পছন্দ করত না। আপনি তাকে পছন্দ করুন বা না করুন, মাঝে মাঝে এমন ঘটনা ঘটে।’ এই কথোপকথনগুলো হয় সৌদি এজেন্টদের হাতে খাসোগির মৃত্যু ও অঙ্গচ্ছেদের ঘটনার পর যুবরাজের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়।

এবিসি নিউজের হোয়াইট হাউস সম্পর্কিত প্রধান সংবাদদাতা ব্রুসের প্রতি ট্রাম্পকে বেশ হতাশ মনে হচ্ছিল। ট্রাম্পকে ব্রুস যখন আরেকটি প্রশ্ন করেন, কেন তিনি একতরফাভাবে অর্থদাতা জেফ্রি এপস্টিনের সঙ্গে সম্পর্কিত ফাইলগুলো প্রকাশের নির্দেশ দেননি, তখন ট্রাম্প আবার তাকে অপমানিত করেন। এর প্রত্যুত্তরে ট্রাম্প মেরি ব্রুসকে বলেন, ‘প্রশ্ন করা নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নেই; আপত্তি আপনার আচরণ নিয়ে।’

কড়া ভঙ্গিতে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় আপনি একজন জঘন্য রিপোর্টার। আপনি যেভাবে প্রশ্নগুলো করেন, সেটা আপত্তিকর।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনি একজন জঘন্য মানুষ এবং একজন জঘন্য রিপোর্টার।’ এছাড়া প্রেসিডেন্ট এবিসি নিউজকে ‘একটা বাজে কোম্পানি’ বলে উল্লেখ করে বলেন, নেটওয়ার্কটির সম্প্রচার-লাইসেন্স ‘কেড়ে নেওয়া উচিত।’ তিনি আরও বলেন, তার শীর্ষ সম্প্রচার নিয়ন্ত্রক ব্রেনডান কারের এ বিষয়ে নজর দেওয়া উচিত।

ন্যাশনাল প্রেসক্লাব মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের এই মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেছে, মিস্টার খাসোগির মৃত্যু ছিল ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উপর সরাসরি আক্রমণ।’ সংস্থাটি বলেছে, ‘একজন সাংবাদিককে হত্যার ঘটনাকে ছোট করে দেখা বা তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার মতো মন্তব্য বাস্তব জগতে প্রভাব ফেলবে।’ যদিও ট্রাম্প নিয়মিতই সংবাদমাধ্যমকে হেয় করে কথা বলেন, তবে তিনি পুরুষ ও নারী উভয় সংবাদকর্মীদের সঙ্গেই তীব্র অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেছেন।

গত শুক্রবার এয়ার ফোর্স ওয়ান বিমানে বসে ট্রাম্পের কাছে ব্লুমবার্গ নিউজের সাংবাদিক ক্যাথরিন লুসি যখন এপস্টিন সম্পর্কিত ফাইল প্রকাশ না করার কারণ জানতে চান, তখন ট্রাম্প তাকে বাধা দেন এবং বলেন, ‘চুপ! চুপ করো, পিগি।’ এই ধরনের স্কুল জীবনের অশ্রাব্য ভাষা ট্রাম্প আগেও ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক মিস ইউনিভার্স অ্যালিসিয়া মাচাদো।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প অবশেষে ব্রুসের উত্তর আর না দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, ‘আপনার উচিত ফিরে যাওয়া এবং কীভাবে রিপোর্টার হতে হয়, তা শেখা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনার কাছ থেকে আর কোনো প্রশ্ন চাই না।’


ইউক্রেনে ভয়াবহ হামলা রাশিয়ার, নিহত ২৬

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় বিধ্বস্ত ভবনের পাশে দাঁড়িয়ে এক ব্যক্তি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলজুড়ে বড় ধরনের ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এ হামলায় তিন শিশুসহ ২৬ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৯৩ জন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরুর পর এটিই অঞ্চলটিতে রাশিয়ার অন্যতম প্রাণঘাতি হামলা। স্থানীয় সময় গত বুধবার ভোরে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের টার্পোনিল শহরে এই হামলায চালিয়েছে। খবর বিবিসির।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের লভিভ এবং ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক অঞ্চলেও হামলা চালিয়েছে রাশিয়া এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ শহরের তিনটি জেলায় ড্রোন হামলায় ৩০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়ান এক্স-১০১ ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র আবাসিক ফ্ল্যাটে আঘাত করেছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, টার্পোনিল হামলায় উল্লেখযোগ্য ধ্বংসযজ্ঞ ঘটেছে এবং অনেক হতাহত ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পড়ে আছেন বলে জানা গেছে। এই হামলায় রাশিয়া ৪৭০টির বেশি ড্রোন এবং ৪৭টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে।

এছাড়া দেশটির বেশকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার কথাও জানানো হয়েছে। এর আগে ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর খারকিভে রুশ হামলায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।

ইউক্রেনকে ভূখণ্ড ও অস্ত্র ছাড়ের প্রস্তাব দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্র যে খসড়া শান্তি চুক্তির কাঠামো প্রস্তাব করেছে, তাতে ইউক্রেনকে কিছু ভূখণ্ড ও অস্ত্র ছাড় দিতে হতে পারে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অবগত দুই ব্যক্তি। গত বুধবার তারা জানান, ওয়াশিংটন কিয়েভকে প্রস্তাবের মূল অংশ মেনে নিতে বলেছে। দুই সূত্র মতে, প্রস্তাবে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর আকার কমানোর কথাও বলা হয়েছে।

এমন প্রস্তাব কিয়েভের জন্য বড় ধাক্কা। কারণ পূর্ব ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন জোরদার হচ্ছে এবং প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি একই সময়ে দুর্নীতির কেলেঙ্কারি মোকাবিলা করছেন। বুধবার সংসদ জ্বালানি ও ন্যায়মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছে।

হোয়াইট হাউজ এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক্স–এ বলেছেন, উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ওয়াশিংটন যুদ্ধ থামাতে সম্ভাব্য ধারণার তালিকা প্রস্তুত করছে। ইউক্রেনের মতো জটিল ও প্রাণঘাতী যুদ্ধ থামাতে প্রয়োজন বাস্তবসম্মত ধারণার বিস্তৃত বিনিময়। টেকসই শান্তির জন্য উভয় পক্ষকে কঠিন হলেও প্রয়োজনীয় ছাড় দিতে হবে।

এক শীর্ষ ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, যুক্তরাষ্ট্র যে প্রস্তাব প্রস্তুত করেছে তা নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে রাশিয়ার আলোচনা হয়েছে বলে কিয়েভ ‘সংকেত’ পেয়েছে। তবে এসব প্রস্তাব তৈরিতে ইউক্রেনের কোনও ভূমিকা ছিল না।

বুধবার তুরস্কে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকের পর টেলিগ্রামে দেওয়া মন্তব্যে জেলেনস্কি ওয়াশিংটনের প্রস্তাব সরাসরি উল্লেখ না করলেও যুক্তরাষ্ট্রের ‘কার্যকর নেতৃত্বের’ আহ্বান জানান। তিনি বলেছেন, তিন বছর ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চলমান যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই যথেষ্ট শক্তি রাখেন। এরদোয়ান বিভিন্ন আলোচনার ফরম্যাট প্রস্তাব করেছেন এবং তুরস্ক আলোচনা আয়োজনে প্রস্তুত।

যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন উদ্যোগের ইঙ্গিতে বুধবার ইউক্রেনের সরকারি বন্ডের দাম কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। কিয়েভ ও মস্কোর মুখোমুখি বৈঠক শেষ হয়েছে সর্বশেষ ২০২২ সালের জুলাইয়ে ইস্তাম্বুলে। তারপর থেকে রাশিয়ার প্রায় চার বছরের যুদ্ধ অব্যাহত থেকেছে।

শান্তি আলোচনার প্রচেষ্টা জোরদার হলেও মস্কো নিজের শর্ত থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দেয়নি। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগেই দাবি জানিয়েছেন যে, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা ত্যাগ করতে হবে এবং চারটি প্রদেশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই চার প্রদেশকে রাশিয়া নিজেদের অংশ বলে দাবি করে। এসব দাবি থেকে মস্কো সরে আসার কোনও লক্ষণ নেই এবং ইউক্রেনও বলছে তারা এসব মানবে না।

রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ১৯ শতাংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে এবং শীত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে তারা নিয়মিত ইউক্রেনের জ্বালানি স্থাপনায় হামলা চালাচ্ছে। ন্যাটো সদস্য তুরস্ক কিয়েভ ও মস্কো উভয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে এবং ২০২২ সালের যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে একমাত্র শান্তি আলোচনা আয়োজন করেছিল। বুধবারের আঙ্কারা বৈঠকে রুশ প্রতিনিধিরা অংশ নেননি। তবে ক্রেমলিন বলেছে, আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্ক যদি কোনও ফল তুলে ধরে, পুতিন তা নিয়ে কথা বলতে প্রস্তুত।

ভূখণ্ডের বিনিময়ে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা?

মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস এক প্রতিবেদনে একজন মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পরিকল্পনায় কিয়েভকে পূর্ব ইউক্রেনের এমন কিছু এলাকা মস্কোকে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যেগুলো বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এর বিনিময়ে কিয়েভ ও ইউরোপের জন্য ভবিষ্যৎ রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে।

এক ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, এসব প্রস্তাব সম্ভবত ট্রাম্প প্রশাসনের কিয়েভকে চাপে ফেলার আরেক প্রচেষ্টা। তার মতে, ইউক্রেনের অবস্থান বা ইউরোপীয় মিত্রদের মতামত বিবেচনায় না নিলে কোনও সমাধান টেকসই হবে না। আরেক কূটনীতিক বলেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী কমানোর প্রস্তাব রুশ শর্তের মতো শোনায়, গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার মতো নয়।

এদিকে মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, মার্কিন সেনাবাহিনীর সচিব ড্যান ড্রিসকলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে কিয়েভে অবস্থান করছে। সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ র‍্যান্ডি জর্জও রয়েছেন দলে। বৃহস্পতিবার তারা জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে এক সূত্র নিশ্চিত করেছে।


রিয়াদ-ওয়াশিংটন সম্পর্ক আরও জোরদার হচ্ছে

সৌদি যুবরাজকে ট্রাম্পের অভ্যর্থনা: গুরুত্ব পেল ৫ বিষয়সৌদি যুবরাজকে ট্রাম্পের অভ্যর্থনা: গুরুত্ব পেল ৫ বিষয়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

৭ বছরেরও বেশি সময় পর প্রথম ওয়াশিংটনে সৌদি যুবরাজকে আতিথ্য দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এ সময় সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে হোয়াইট হাউসে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ট্রাম্প। বেশ কয়েকটি কারণে এই সফর রিয়াদ ও ওয়াশিংটনের সম্পর্ককে আরও জোরদার করেছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে একটি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।

হোয়াইট হাউস গত মঙ্গলবার প্রিন্স মোহাম্মদের জন্য লাল গালিচা বিছিয়েছে। ট্রাম্প তাকে মার্চিং ব্যান্ড, পতাকাবাহী ঘোড়সওয়ার এবং একটি সামরিক ফ্লাইওভারের মাধ্যমে স্বাগত জানান।

আতিথেয়তার এই জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন এটিই ইঙ্গিত দেয় যে, ট্রাম্প একটি নতুন মধ্যপ্রাচ্যকে পেতে চান, যা এই অঞ্চলের মিত্রদের সাথে আর্থিক বিনিয়োগ এবং মার্কিন অংশীদারিত্ব দিয়ে পরিচালিত হবে, বিশেষ করে সৌদি আরব।

যুবরাজ মোহাম্মদের আগমনের পর, তিনি এবং ট্রাম্প ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। দুই নেতা ব্যবসায়িক সুযোগ, শান্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং প্রযুক্তি ব্যবসা নিয়ে কথা বলেন। এছাড়া ট্রাম্প-যুবরাজ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরবের মধ্যে ইতোমধ্যেই শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সম্পর্কসহ গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাগুলো এসেছে।

বৈঠকের মূল বিষয়গুলো এখানে দেওয়া হল: ১. সৌদি আরব-ইসরাইল সম্পর্ক নিয়ে ভালো আলোচনা: সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সৌদি আরবকে তথাকথিত আব্রাহাম চুক্তিতে যোগদান করাতে চান, যা ইসরাইল এবং বেশ কয়েকটি আরব দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করে।

যুবরাজ মোহাম্মদ এবং ট্রাম্প সম্ভাব্য চুক্তির বিস্তারিত বা সময়সীমা না জানিয়েই এই বিষয়ে সম্ভাব্য অগ্রগতির ইঙ্গিত দেন। তবে, ক্রাউন প্রিন্স পুনর্ব্যক্ত করেন, রিয়াদ একটি সম্ভাব্য চুক্তির অংশ হিসাবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে দেখতে চায়।

২. সৌদি আরবের জন্য প্রধান নন-ন্যাটো মিত্র মর্যাদা এবং একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি: হোয়াইট হাউসে সৌদি নেতার জন্য আয়োজিত ডিনারে ট্রাম্প রিয়াদকে ন্যাটো বহির্ভূত ‘প্রধান মিত্র’ হিসেবে ঘোষণা করেন। এই মর্যাদা অনুযায়ী কোনো দেশকে উন্নত মার্কিন অস্ত্র ব্যবস্থার যে বিস্তৃত লাইসেন্সিং প্রোটোকলের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তা ছাড়াই মার্কিন সামরিক হার্ডওয়্যার, বিক্রয় এবং অন্যান্য সহযোগিতা দ্রুত অ্যাক্সেসের অনুমতি দেয়।

৩. ট্রাম্প বলেছেন ইরান চুক্তি চায়: জুন মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন হামলায় ট্রাম্প আবারো সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সবার পক্ষ থেকে এটি করেছি, এবং ফলাফল অসাধারণ ছিল। কারণ আমাদের কাছে সেরা পাইলট, সেরা সরঞ্জাম, সেরা বিমান, সেরা সবকিছু আছে।’

৪. ১ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ: দুই নেতার প্রকাশ্য বক্তব্যের শুরুতেই, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের প্রত্যাশিত বিনিয়োগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। যা শত শত বিলিয়ন ডলারের বিনিয়াগ হতে পারে। বলেন, মি. আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই কারণ আপনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে সম্মত হয়েছেন।

সৌদি যুবরাজের পক্ষ থেকেও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে সৌদি আরবের বিনিয়োগ সম্ভবত ১ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।

৫. প্রশংসা আর হাসি: হোয়াইট হাউসে যুবরাজ আসার পর থেকেই ট্রাম্প এবং মোহাম্মদ বিন সালমানের মুখে হাসি ছিল। এক পর্যায়ে, ট্রাম্প যুবরাজ মোহাম্মদের হাত ধরেছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সৌদি যুবরাজকে চমৎকার এবং প্রতিভাবান বলে বর্ণনা করেন। বলেন, ‘আজ ওভাল অফিসে আমাদের একজন অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি আছেন, এবং আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু - আমার খুব ভালো বন্ধু।’


সালিশি আদালতে মামলা চালাতে পারবে না আদানি: হাইকোর্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত ভারতের আদানি গ্রুপকে সিঙ্গাপুরে সালিশি আদালতে মামলা না চালানোর আদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. বজলুর রহমান ও বিচারপতি ঊর্মি রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

গত ছয় নভেম্বর পিডিবি চেয়ারম্যান ও জ্বালানি সচিবকে তিন দিনের মধ্যে আদানি গ্রুপের সঙ্গে একতরফা বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনা বা বাতিল করতে লিগ্যাল নোটিস পাঠান আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম।

আব্দুল কাইয়ুম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন আসার আগেই যদি সিঙ্গাপুরে আদানি তাদের পাওনা নিয়ে সালিশি কার্যক্রম শুরু করে তাহলে ওই তদন্তের গুরুত্ব থাকবে না। এ কারণে তারা নিষেধাজ্ঞা চেয়েছেন। আদানির সঙ্গে করা চুক্তিতে অনেক অনিয়ম হয়েছে।

গত বছরের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ চুক্তি নিয়ে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রুল জারির পাশাপাশি অন্তর্বর্তী আদেশ দেন। এতে আদানির সঙ্গে হওয়া চুক্তির বিষয় তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন আদালত।

তদন্তে নেমে আদানির বিদ্যুৎ আমদানিতে প্রায় ৪০ কোটি ডলারের শুল্ক ফাঁকির প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায় এনবিআর। বহুল আলোচিত এ চুক্তির সময় সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে পাস কাটিয়ে শুল্ক ও কর অব্যাহতি দেওয়ার তথ্যও উঠে এসেছে সংস্থাটির তদন্তে।

এর আগে আদানি গ্রুপ জানায়, বাংলাদেশে রপ্তানি করা বিদ্যুতের দাম-সংক্রান্ত বিরোধ সমাধানে দুই পক্ষই আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়ায় যেতে সম্মত হয়েছে। তবে বাংলাদেশের সরকার জানিয়েছে, আলোচনায় অগ্রগতি থাকলেও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

আদানি গ্রুপ বলছে, চুক্তি অনুযায়ী যেকোনো মতানৈক্য সমাধানে আন্তর্জাতিক সালিশি প্রক্রিয়াই একমাত্র পথ। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে পাওনা ২০ কোটি ডলার নিয়েই মতানৈক্য হয়েছে। এই অঙ্কের অর্থ নিয়েই তারা সালিশিতে যেতে চাইছে।

তারা আরও জানিয়েছে, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড যে দাম দিতে সম্মত হয়েছে, সেই অনুযায়ী নিয়মিত অর্থ তারা পেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পুরোনো বকেয়া হিসাবে সাড়ে ১৩ কোটি ডলার এখনো পাওনা আছে। এই অর্থ ১০ নভেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল তারা।

এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তারা আলোচনা করছেন, তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি।

তবে সালিশি প্রক্রিয়ায় যাওয়ার কথা আদানি গ্রুপ ঘোষণা করার ঠিক আগেই বাংলাদেশের সরকার ইঙ্গিত দিয়েছিল যে দেশটির বিদ্যুৎ খাতে আগের সরকারের আমলে যেসব চুক্তি হয়েছিল, তাতে অনেক দুর্নীতির তথ্য পাওয়া গেছে।

ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডায় অবস্থিত ১,৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করে আদানি গ্রুপ। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পুরোটাই বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এছাড়া ভারত সরকারিভাবেও বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করে থাকে। গত বছর অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তাদের সঙ্গে বিদ্যুতের দাম নিয়ে আদানি গ্রুপের সঙ্গে মতানৈক্য চলছে।


banner close