রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫
৯ চৈত্র ১৪৩১

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহকে এক হওয়ার আহ্বান হামাস প্রধানের

ফাইল ছবি
আপডেটেড
৭ নভেম্বর, ২০২৩ ১৭:১৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৭ নভেম্বর, ২০২৩ ১৭:১৬

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একজোট হতে মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের যোদ্ধাগোষ্ঠী হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া।

গত রোববার পাকিস্তানের জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (জেইউআইএফ) প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানের সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি। কাতারে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে হামাসের সাবেক প্রধান খালেদ মিশালও উপস্থিত ছিলেন। খবর জিও নিউজের।

জেইউআইএফ মুখপাত্র আসলাম ঘৌরি বলেছেন, উভয় পক্ষ ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছে। আলোচনায় পাকিস্তানের এই বর্ষীয়ান রাজনীতিক হামাস নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন।

এক্সে (সাবেক টুইটার) দেয়া পোস্টে মাওলানা ফজলুর রহমান গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।

মাওলানা ফজলুর রহমান কাতারে বসে আরব নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানোর পথ বের করার আশা করেন।

বৈঠকে ইসমাইল হানিয়া ইসরায়েলের আগ্রাসনের মুখে মুসলিম উম্মাহকে একত্রিত হওয়ার আহ্বান জানান।

এতে বলা হয়েছে, বিশ্ববাসী প্রায় এক মাস ধরে ইসরায়েল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নিয়মিত প্রাণহানি দেখছে। নিহতের সংখ্যা মানুষকে হতবাক করছে।

আল জাজিরা গতকাল সোমবার জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৯ হাজার ৯২২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলে হামাসের হামলায় নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি।

বিষয়:

সৌদিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অগ্রগতির আশা রাশিয়ার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।

তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।

সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।

সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।

তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"


তুরস্কে বিক্ষোভ-সমাবেশ অব্যাহত, আটক ৯৭

ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর সমর্থনে তুরস্কে বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তুরস্কে টানা তৃতীয় দিনের মতো ব্যাপক বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। পুলিশি হেফাজতে থাকা ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর সমর্থনে এ বিক্ষোভ আয়োজন করা হয়। গতকাল শনিবার ইমামোগলুর আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল।

গত বুধবার ভোরে ইস্তাম্বুলের মেয়রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ কারণে এক দশকেরও বেশি সময় পর তুরস্কের রাস্তায় সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আরব নিউজ জানিয়েছে, আদালতে হাজির করার আগের রাতেও বিক্ষোভকারীরা ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সমাবেশ করে।

বিক্ষোভকালে ইস্তাম্বুল, আঙ্কারা ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইজমিরে দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং জলকামান নিক্ষেপ করে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী ৯৭ জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া।

মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, আটককৃতদের প্রকৃত সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ রাতারাতি বেশ কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে।

২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রজাতন্ত্রী জনতা দল (সিএইচপি) থেকে ৫৩ বছর বয়সি মেয়র ইমামোগলুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার কয়েক দিন আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আইনি জটিলতার ক্রমবর্ধমান ঝামেলার মধ্যে ইমামোগলু গত বছর মেয়র হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন। তার বিরুদ্ধে আরও ‘একটি সন্ত্রাসী সংগঠনকে (পিকেকে) সহায়তা এবং মদদ দেওয়ার’ মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘুষ, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, ব্যাপক জালিয়াতি এবং একটি অপরাধমূলক সংগঠনের অংশ হিসেবে অবৈধভাবে ব্যক্তিগত স্বার্থ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এসব মামলায় তার সঙ্গে আরও অনেককেই আসামি করা হয়েছে।

গত শুক্রবার পুলিশ দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে তাকে ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে বলে তার দল জানিয়েছে। মেয়রের একজন আইনজীবী মেহমেত পেহলিভান বলেছেন, ইমামোগলু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আইনজীবী এক্স-পোস্টে লিখেছেন, সমাজের চোখে ইমামোগলুর সুনাম ক্ষুণ্ন করাটাই এই গ্রেপ্তারের লক্ষ্য ছিল। উভয় তদন্তই অসত্য অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।

এদিকে দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড়ের পর আবারও সমাবেশ করার কথা রয়েছে। আইনজীবীদের মাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় ইমামোগলু বলেছেন, তিনি তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের মধ্যে ৫০টিরও বেশি প্রদেশে রাস্তায় নেমে আসা বিক্ষোভকারীদের জন্য ‘সম্মানিত এবং গর্বিত’। ‘তারা আমাদের প্রজাতন্ত্র, আমাদের গণতন্ত্র, ন্যায়পরায়ণ তুর্কিদের ভবিষ্যৎ এবং আমাদের জাতির ইচ্ছা রক্ষা করছেন।’

শুক্রবার রাতে ইস্তাম্বুলের সিটি হলের বাইরে জনতার উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধান বিরোধী দল সিএইচপির প্রধান ওজগুর ওজেল বলেন, বিক্ষোভ নিষেধাজ্ঞা এবং রাস্তার সন্ত্রাস (তিনি পুলিশি কর্মকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন) সহ্য করবে না তুরস্ক। কেননা এরদোয়ানের তীব্র সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে ৩ লাখ মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ইমামোগলুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পর তুর্কি মুদ্রার ব্যাপক দরপতন হয়েছে এবং আর্থিক বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। শুক্রবার তুর্কি স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক প্রায় আট শতাংশ কমে গেছে।

বিষয়:

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা লেবাননের

লেবাননে ইসরায়েলের হামলা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে লেবানন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম এই ঘোষণা দিয়েছেন। যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আল-জাজিরা বলছে, প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালামের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধ এবং শান্তির বিষয়ে লেবানন যে সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখানোর জন্য সব নিরাপত্তা ও সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, হামলার ফলে ‘একটি নতুন যুদ্ধের দিকে ধাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা লেবানন এবং লেবাননের জনগণের জন্য দুর্দশা ডেকে আনতে পারে’।

এদিকে ইসরায়েলে ফের হুতি বিদ্রোহীরাও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে তারা ইয়েমেন থেকে আসা একটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আঘাত হানার আগেই ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানানো হয়।

ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে হুতি বিদ্রোহীরা। শনিবার ভোরে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে হুতি মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানান, ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীটি তেল আবিবের কাছে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

তিনি জানিয়েছেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো হামলা চালানো হলো। সারি আরও বলেন, হুতিরা লোহিত সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানের ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে।

লেবানন থেকে ইসরায়েলে দফায় দফায় রকেট হামলা

লেবানন থেকে ইসরায়েলে দফায় দফায় রকেট হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলের সীমান্তে নিক্ষেপ করা তিনটি রকেট প্রতিহত করেছে।

ইসরায়েলের আর্মি রেডিও এক খবরে জানিয়েছে, লেবানন থেকে নিক্ষেপ করা কমপক্ষে পাঁচটি রকেট শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি রকেট প্রতিহত করা হয়েছে এবং দুটি লেবাননের ভূখণ্ডের ভেতরে পড়েছে বলে জানানো হয়।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের ইয়াহমোর শহরের উপকণ্ঠে গোলাবর্ষণ করছে। তবে এসব সংঘাতে এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ সংগঠনও এখন পর্যন্ত ওই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

মার্কিন সেনাবাহিনী এখনো এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেনি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির পরেও লোহিত সাগরে একাধিক মার্কিন জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা।

২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হুতি বিদ্রোহীরা। ফিলিস্তিনিদের ওপর যতদিন পর্যন্ত আগ্রাসন চলবে তত দিন এই হামলা চলবে বলে জানানো হয়েছে।

পাল্টা হামলা ইসরায়েলের

ইসরায়েলি গোলা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি শহরে আঘাত হেনেছে। তেল আবিবের বিমান সীমান্ত সংলগ্ন আরও তিনটি শহরে হামলা চালিয়েছে। লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। লেবানন থেকে ছোড়া একাধিক রকেট প্রতিহত করার পর দেশটিতে পাল্টা গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।

এই পাল্টাপাল্টি হামলা তেল আবিব ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে কয়েক মাস আগে হওয়া যুদ্ধবিরতিকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজা ঘিরে যে যুদ্ধ শুরু হয়, তার ধারাবাহিকতায় পরে হিজবুল্লাহও তেল আবিবের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। পরে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর একাধিক শীর্ষ নেতা, অস্ত্রভাণ্ডারের বড় অংশ ও অসংখ্য যোদ্ধাকে হত্যা করার পর ইরানঘনিষ্ঠ সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ঝিমিয়ে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত বছরের নভেম্বরে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়, তারপর শনিবারই প্রথম এই সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটল, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, তারা সীমান্তের ৬ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লেবাননের একটি জেলা থেকে ছোড়া তিনটি রকেট প্রতিহত করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনী গোলা ছুড়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনা রেডিও।

ইসরায়েলি গোলা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি শহরে আঘাত হেনেছে, তেল আবিবের বিমান সীমান্ত সংলগ্ন আরও তিনটি শহরে হামলা চালিয়েছে, বলেছে লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।

সীমান্তের ওপার থেকে রকেট ছোড়ার জন্য কারা দায়ী, তা বলেনি ইসরায়েল। রয়টার্স এ প্রসঙ্গে হিজবুল্লাহর মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে গোষ্ঠীটির কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর কোনো অস্ত্র থাকবে না, ইসরায়েল সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে এবং ওই এলাকায় লেবাননের সরকারি বাহিনী মোতায়েন থাকবে এমন শর্ত ছিল।

চুক্তিতে দক্ষিণ লেবাননের সব সামরিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া এবং সব অবৈধ অস্ত্র জব্দের ভারও লেবাননের সরকারের হাতে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গতকাল শনিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, সীমান্ত শহর মেটুলাতে রকেট ছোড়ার ঘটনার দায়ভার লেবা

বিষয়:

মুক্তি পাবেন ইমরান খান?

ইমরান খান
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান যদি ২০২৩ সালের ৯ মের দাঙ্গার ঘটনায় আন্তরিকভাবে ক্ষমা চান তবে তিনি মুক্তি পেতে পারেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ এ কথা বলেছেন। জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর ওই দিন তার সমর্থকরা বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ওই দাঙ্গার ঘটনার জন্য পিটিআইকে দায়ী করা হলেও তা অস্বীকার করে আসছে দেশটির সাবেক ক্ষমতাসীন দলটি।

জিও নিউজের জিরগা অনুষ্ঠানে রানা সানাউল্লাহ বলেন, ইমরান খান দেশকে রাজনৈতিক অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। কারণ তিনি মনে করেন যে তার কার্যক্রমের মাধ্যমে বিপ্লব আনতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, কিন্তু না, বিপ্লবের কোনো সম্ভাবনা নেই। কেবল রাজনৈতিক সংগ্রামই এখানে বিজয়ের দিকে নিয়ে যাবে।

ইমরান খানের বর্তমান পদক্ষেপের মাধ্যমে সাফল্যের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না রানা সানাউল্লাহ। এ সময় সানাউল্লাহ সাম্প্রতিক সময়ের পিটিআইয়ের কিছু লং মার্চের কথা উল্লেখ করেন। যেগুলো সরকারের নেওয়া পাল্টা পদক্ষেপে ব্যর্থ হয়।

৯ মে তারিখের জন্য ক্ষমা চাইলে কি খানের মুক্তি সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে সানাউল্লাহ বলেন, আমি মনে করি ৯ মে তারিখের জন্য যদি তিনি ক্ষমা চান, তাহলে আলোচনা এগিয়ে যেতে পারে অথবা হয়তো আমরা কথা বলতে পারি। এর আগে তিনি বলেছিলেন, আদালত যদি পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে মুক্তি দেয় তবে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকারের কোনো আপত্তি থাকবে না।

এদিকে, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সাম্প্রতিক ইন-ক্যামেরা বৈঠকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শে স্পিকার আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিশেষভাবে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানের ক্রমাবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্ডাপুরকে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আইয়ুবসহ পিটিআই-এর সংসদীয় নেতৃত্ব অংশ নেয়নি। তবে, প্রাদেশিক প্রতিনিধি হিসেবে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্ডাপুর উপস্থিত ছিলেন। ইমরান খানের মুক্তি ও রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের রাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলছে, যা আসন্ন সময়ে দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন ইমরান খান।

বিষয়:

ইসরায়েলে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবি
ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে জনতার বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২১ মার্চ, ২০২৫ ২০:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের রাজপথে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবিতে তারা এ বিক্ষোভ করে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ডানপন্থি সরকারের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেন তারা। গতকাল শুক্রবার দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের দাবি, নেতানিয়াহুর সরকার দেশের গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। দেশটিতে এ বিক্ষোভের কারণে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। আয়োজকরা বলছেন, বিক্ষোভ যেভাবে গতি পাচ্ছে তাতে আগামীতে আরও বেশি বিক্ষোভ হতে পারে।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে এ বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তবে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে ইসরায়েল দুই মাসের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর এ বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভকারীরা সরকারকে রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার এবং বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে হামাসের হাতে আটক ৫৯ জিম্মির দুর্দশা উপেক্ষা করার অভিযোগ করেছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ২৪ জিম্মি জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে।

ব্রাদার্স ইন আর্মস প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রধান নির্বাহী এইতান হার্জেল বলেন, এই সরকার এখন নিজেকে রক্ষা করার জন্য আবারও যুদ্ধ শুরু করেছে, ইসরায়েলের জনসাধারণকে বিরক্ত করে এমন বিষয়গুলো থেকে নজর সরাতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকার সম্ভাব্য সব স্তরে বৈধতা হারিয়েছে, তারা ব্যর্থ হচ্ছে।

সাবেক সিনিয়র নৌ কর্মকর্তা এবং বিক্ষোভের সংগঠক ওরা নাকাশ পেলেদ বলেন, আমি মনে করি আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি, আমাদের সংগঠিত হতে হবে, আমাদের অবিচল থাকতে হবে, আমাদের মনোযোগী হতে হবে। (বিক্ষোভ) সহিংস হতে পারে না (কিন্তু) এটি ভদ্র হতে হবে না।

ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের আইন বিশেষজ্ঞ ড. আমির ফুচস বলেন, সরকারের বারকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা আছে, কিন্তু তবুও প্রশাসনিক আইন মেনে চলতে হবে।

গাজা ও পশ্চিম তীরে ৯৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা

গাজা এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি তাণ্ডব ও ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের মুখোমুখি হওয়া ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় ৯৯ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি তহবিল ঘোষণা করেছে কানাডা। গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী মেলানি জোলি গাজা এবং পশ্চিম তীরে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রদানে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, রেড ক্রস এবং এনজিও অংশীদারদের সহায়তা করার জন্য ৯৯ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি তহবিল ঘোষণা করেছেন।

এই সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে অপরিহার্য পরিষেবা পুনরুদ্ধারের জন্য ২০ মিলিয়ন ডলার, বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে এবং দুর্বল মানুষকে সাহায্য করা। আরও ২৪.৫৫ মিলিয়ন ডলার জীবন রক্ষাকারী সহায়তার জন্য বরাদ্দ করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, সুরক্ষা এবং আশ্রয়।

এছাড়া ২৪.৭৫ মিলিয়ন ডলার শান্তি ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টার জন্য ব্যয় করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে মাইন অপসারণ। অপরদিকে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং শাসনব্যবস্থার জন্য ৩০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান মানবিক পরিস্থিতি টেকসই নয়। কানাডা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবাহের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছে। বেসামরিক নাগরিক এবং মানবিক কর্মীদের সুরক্ষাসহ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

কানাডা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, তারা এমন প্রচেষ্টার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেখানে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিরা শান্তি, নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সাথে পাশাপাশি বসবাস করতে পারে।

গাজায় ৩ দিনে প্রাণ গেল ৬০০ ফিলিস্তিনির

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এ নিয়ে পবিত্র রমজানে ইসরায়েলের এই বর্বর হামলায় গত তিনদিনে প্রাণ হারাল প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি। এমনকি গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে স্থল অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮৫ জন নিহত ও আরও ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ হাজার ৬১৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছেন। ভুক্তভোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে বলে আশঙ্কা করছে মন্ত্রণালয়।

আল জাজিরা বলছে, মঙ্গলবার গাজায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৫৯০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলি বিমান হামলা ও স্থল হামলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিহত ও আহতের সংখ্যাও বাড়ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফাতে তাদের স্থল আক্রমণ চলছে এবং সৈন্যরা বেইত লাহিয়া শহর ও উত্তর দিকে কেন্দ্রীয় এলাকায় অগ্রসর হচ্ছে। ইসরায়েল বলেছে, গাজা উপত্যকায় পুনরায় শুরু করা স্থল অভিযান আরও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে বুধবার (১৯ মার্চ) ওই অঞ্চলের উত্তর-দক্ষিণের প্রধান পথ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সৈন্যরা।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে গাজায় ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস। স্থল ও আকাশপথে ইসরায়েলের নতুন হামলায় বেসামরিক প্রাণহানি বৃদ্ধির প্রতিশোধে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।


সপ্তাহজুড়ে পতনে ডিএসই হারিয়েছে সবকটি সূচক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সপ্তাহ ভালো কাটেনি ঢাকার পুঁজিবাজারে, টানা পতনে কমেছে সবকটি সূচক। সূচকের পতনের পাশাপাশি সারা সপ্তাহে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল নিম্নমুখী।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পাঁচ কার্যদিবসে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৩ পয়েন্ট।

৫২২৫ পয়েন্ট নিয়ে শুরু হওয়া লেনদেন সপ্তাহ শেষে এসে ঠেকেছে ৫২০১ পয়েন্টে।

বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে১৩ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৭ পয়েন্ট।

বেহাল দশা ছোট এবং মাঝারি আকারের কোম্পানিতেই। ডিএসই'র এসএমই সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। এক সপ্তাহের লেনদেনে এ খাত ১.৬৩% সূচক হারিয়েছে।

সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল নিম্নমুখী। সারা সপ্তাহে ১৪৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৭ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত ছিল ৩৮ কোম্পানির এবং ১৮ কোম্পানি অংশ নেয়নি লেনদেনে।

সপ্তাহের শুরু থেকে বেশিরভাগ কোম্পানির দাম কমতে থাকলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির ধুম লেগে যায়। এতে করে আদতে লেনদেন বাড়লেও বাড়েনি শেয়ারের সামগ্রিক দাম।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসের গড় লেনদেন ছিল ৪৭৮ কোটি টাকা, যা গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ২২ শতাংশ বেশি।

তবে গড় লেনদেন বাড়লেও বাজার থেকে কমেছে মোট মূলধনের পরিমাণ। ব্রোকারেজ হাউজগুলোর দেয়া তথ্য অনুসারে, অনেক বিনিয়োগকারীই তলি তল্পা গুটিয়ে বাজার ছেড়েছেন। বাজারে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে।

ডিএসই'র সাপ্তাহিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৩৩৩ মিলিয়ন ডলার।

সপ্তাহজুড়ে ব্যাংক, আইটি, লাইফ ইনস্যুরেন্স, টেক্সটাইল, সাধারণ বীমা, ট্যানারি, টেলিকম এবং পাটখাতে রিটার্ন কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।

অন্যদিকে মিউচুয়াল ফান্ড, সিরামিক, রিয়েল স্টেট, কাগজশিল্প, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট বন্ড, প্রকৌশল, জ্বালানি এবং ঔষধশিল্পে ভালো রিটার্ন এসেছে। এদের মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ডে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ রিটার্ন এসেছে।

সপ্তাহজুড়ে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে শাইনপুকুর সিরামিকসের। পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির মোট ১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয়ে আছে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস পিএলসি। সাপ্তাহিক হিসাবে কোম্পানিটির মোট ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

পাঁচ কার্যদিবসে ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে মারিকোর শেয়ার। মারিকোর পরেই শেয়ার বিক্রিতে এগিয়ে আছে এক্সপ্রেস ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া, বিচ হ্যাচারি এবং খান ব্রাদার্স।

সারা সপ্তাহে লেনদেনে দরবৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে আছে প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড। জেড ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। ৪৭ টাকায় লেনদেন শুরু হওয়া কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সপ্তাহ শেষে হয়েছে ৬২ টাকা।

অন্যদিকে সাপ্তাহিক লেনদেনে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ৬৫ টাকায় শেয়ারপ্রতি লেনদেনে সপ্তাহ শেষে কমে হয়েছে ৫৬ টাকা।

পুঁজিবাজারে বেহাল দশা কাটিয়ে উঠতে গত সপ্তাহে সোমবার (১৭ মার্চ) পুঁজিবাজার উন্নয়নে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে অধিকতর শক্তিশালীকরণ এবং সর্বোপরি দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য কমিটি কাজ করবে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টাস্কফোর্স এবং কমিটি উভয়কেই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। আর নইলে সভা করে বাজারে চলমান সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে না।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বজায় ছিল সূচকের পতনের ধারা। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১৭ পয়েন্ট। ১৪৫৭৬ পয়েন্ট নিয়ে লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহান্তে সূচক দাঁড়িয়েছে ১৪৫৫৯ পয়েন্টে।

সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৪, কমেছে ১২৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

পাঁচ কার্যদিবসে সিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের শেয়ার। এছাড়া লেনদেনে শীর্ষ তালিকায় আছে উত্তরা ব্যাংক, ফাইন ফুডস, রবি, ফু-ওয়ান সিরামিক এবং শাইনপুকুরের শেয়ার।

সিএসইতে দরবৃদ্ধিতে শীর্ষে উঠে এসেছে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে।

এছাড়া ভালো অবস্থানে আছে শাইনপুকুর সিরামিকস, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল, সেমি লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট এবং এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস।

অন্যদিকে দরপতনে শীর্ষে উঠে এসেছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সপ্তাহ ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ১৫ টাকা। ডিএসই'র মতো সিএসইতেও ধস নেমেছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজে। পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে আলিফের শেয়ারপ্রতি দাম কমেছে ১৪ টাকা।


ব্যাংককে ইউনূস-মোদি বৈঠক হচ্ছে না

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বসছে বিমসটেকের ষষ্ঠ সম্মেলন। এতে অংশ নেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ সংস্থাটির অন্তর্ভুক্ত নেতারা। সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূস এবং মোদির মধ্যে একটি বৈঠকের আয়োজন করতে ভারতকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। বিষয়টি গতকাল বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা এএনআইকে নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

তবে ইউনূসের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হবে না বলে সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছে তিনটি সূত্র। এ কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন সদস্য প্রতিদিনই ভারতের সমালোচনা করেন। এতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নেই। এমন অবস্থায় দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে বৈঠক আয়োজন সম্ভব নয়।

একটি সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, সম্মেলনে যেহেতু বিশ্ব নেতারা একাধিকবার একে-অপরের সামনে আসবেন। তখন হয়তো (ড. ইউনূস-মোদির মধ্যে) কথাবার্তা হলেও হতে পারে। কিন্তু এর বেশি কিছু প্রত্যাশা করা হচ্ছে না।

অন্য সূত্রটি বলেছেন, আনুষ্ঠানিক বৈঠক আয়োজন কঠিন মনে হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার কাছ থেকে প্রতিদিনই ভারতের বিরুদ্ধে নতুন সমালোচনা আসছে। এসব বিষয় বৈঠক আয়োজনের ক্ষেত্রে সহায়ক নয়।

এদিকে ২ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত হবে বিমসটেকের এ সম্মেলন। এতে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নেবে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড। এবারের বিমসটেক সম্মেলনটি এমন সময় হচ্ছে যখন বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক তলানিতে রয়েছে।

বিশেষ করে সাবেক স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া এবং সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ তোলায় দিল্লির সঙ্গে ঢাকার তিক্ত সম্পর্ক তৈরি হয়। গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইলেও এখনো তাকে ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো জবাব দেয়নি ভারত। যা সম্পর্কে আরও প্রভাব ফেলেছে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস


গাজায় আবারও স্থল অভিযান শুরু করল ইসরায়েল

ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২০ মার্চ, ২০২৫ ২০:০৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে তারা আবার স্থল অভিযান শুরু করেছে। এদিকে, তেল আবিব বলেছে, ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি ‘শেষ সতর্কবার্তা’, যাতে তারা জিম্মিদের ফেরত দেয় এবং হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। আল-জাজিরা এবং বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গত মঙ্গলবার ভোর থেকে গাজায় ভারী বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এই হামলায় চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে খান ইউনিসের কাছে আরও অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন গাজায় যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার আহ্বান জানালেও তা উপেক্ষা করেই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর ফলে ফিলিস্তিনিরা আবারও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্রিয়জনের মরদেহ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন।

ইসরায়েল যেসব এলাকাকে ‘যুদ্ধ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, সেখান থেকে সাধারণ মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে। উত্তর গাজা থেকে পালানো অনেক পরিবারকে শিশুসহ রাস্তায় আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।

‘শেষ সতর্কবার্তা’ : গাজার বাসিন্দাদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, এটি শেষ সতর্কবার্তা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরামর্শ গ্রহণ করুন। জিম্মিদের ফিরিয়ে দেন এবং হামাসকে সরিয়ে দেন। তাহলে আপনাদের জন্য অন্যান্য বিকল্প উন্মুক্ত হবে-যার মধ্যে অন্য দেশে চলে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজার জনগণের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে, তবে তা কেবল তখনই সম্ভব, যদি তারা জিম্মিদের মুক্তি দেয়। যদি না দেয়, তবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে!

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েল থেকে ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। কয়েক দফায় মুক্তি দেওয়ার পর আর মাত্র ৫৮ জন জিম্মি রয়েছেন গাজায়, যাদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত সোমবার পর্যন্ত, অর্থাৎ তীব্র হামলা শুরুর আগ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৮ হাজার ৫৭০ জন নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত : গাজা উপত্যকায় সবশেষ ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার ভোর থেকে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৭০ জনেরও বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স। সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসালের টেলিগ্রামে প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, গাজাজুড়ে বাড়িঘর, তাঁবু এবং অন্যান্য স্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে জাতিসংঘের একজন কর্মচারীও রয়েছেন।

বাসাল বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক বেসামরিক নাগরিক আটকা পড়ে আছে। কিন্তু উদ্ধার অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতির অভাবের কারণে উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজার ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া এবং জ্বালানি সরবরাহের ওপর অবরোধ প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রদানকারীদের কাজকে বিপন্ন করছে। সীমান্তে ইসরায়েলি বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকলে পরিষেবাগুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। গাজায় যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি ইসরায়েল।

‘গাজায় এমন হামলা হবে, যা কেউ কখনো দেখেনি’ : হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তি না দিলে গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। গাজায় এমন তীব্র হামলা চালানো হবে ‘যা আগে কেউ কখনো দেখেনি’ বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

গাজার নেতজারিম করিডরের একটি অংশ ফের দখলে নেওয়ার পর এ হুমকি দেন কাটজ। বুধবার উত্তর ও দক্ষিণ গাজাকে বিভক্তকারী কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলটিতে সেনা মোতায়েনের তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রশাসন।

এদিকে, হামাস জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত ও গাজার শাসনক্ষমতা না ছাড়া পর্যন্ত গাজায় হামলার তীব্রতা বাড়তে থাকবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)।

নেতজারিম করিডোর দখলে নেওয়ার পর বুধবার এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়, জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকর হওয়ার পর এই অঞ্চল থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এখন আবার সেখানে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, গত মঙ্গলবার সেহরির সময় নতুন করে আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে নারী-শিশুসহ চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন বলে জানিয়েছে হামাসশাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর ফলে ভেঙে পড়েছে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি।

দীর্ঘ ১৫ মাসের সংঘাত শেষে একটু আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন গাজার বাসিন্দারা। মানবিক সাহায্য আসতে শুরু করেছিল, ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন কয়েকশত ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিও ছিলেন।

তবে মঙ্গলবারের হামলায় আশার সব আলো নিভে গেছে। এরই মধ্যে নেতজারিম করিডরের দখল দুইপক্ষকে ফের সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও মঙ্গলবারের ইসরায়েলি বিমান হামলার পর এখন পর্যন্ত হামাসের কোনো পাল্টা হামলার খবর পাওয়া যায়নি।

বিষয়:

অগ্নিকাণ্ডে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ

সহস্রাধিক ফ্লাইটে বিঘ্ন
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নিকটবর্তী একটি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে এক হাজারের বেশি ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বিপুলসংখ্যক যাত্রীদের।

ক্ষুদেব্লগ ব্লুস্কাইয়ে দেওয়া এক পোস্টে ফ্লাইটরাডার২৪ নামের একটি ফ্লাইট ট্র্যাকার জানিয়েছে, ‘আজ শুক্রবার (২১ মার্চ) লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় এক হাজার ৩৫১টি ফ্লাইট চলাচল ব্যহত হয়েছে।’

খবর বলছে, ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দরটি বন্ধ থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর থেকে আসা বেশ কয়েকটি ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে। কিছু ফ্লাইট লন্ডনের বাইরে গ্যাটউইক বিমানবন্দরে, প্যারিসের শার্ল দ্য গোল বিমানবন্দর ও আয়ারল্যান্ডের শ্যানন বিমানবন্দরে গিয়ে অবতরণ করেছে।

মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) ও ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবর এমন তথ্য দিয়েছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রী ও সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ রাখার কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই। আসছে দিনগুলোতে উল্লেখযোগ্য সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।’

খুলে না দেওয়া পর্যন্ত যাত্রীদের এই বিমানবন্দর দিয়ে ভ্রমণ না করতে বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দরের একটি হিথ্রো। কেবল চলতি বছরের জানুয়ারিতেই এই বিমানবন্দর দিয়ে ৬৩ লাখ যাত্রী ভ্রমণ করেছেন। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে যা পাঁচ শতাংশ বেশি।

এরআগে ২০২৩ সালে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা দেওয়ায় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিমানবন্দরে বিমান চলাচলের বিলম্ব হয়েছিল। তখন বেশ কয়েকদিন ধরে দেশটিজুড়ে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ হয়েছিল ধীর গতিতে।

অগ্নিকাণ্ডের পর ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের সাতটি ফ্লাইটকে ফিরে যেতে হয়েছে কিংবা অন্য বিমানবন্দরে গিয়ে অবতরণ করতে হয়েছে। আর শুক্রবারে হিথ্রো বিমানবন্দরে এই এয়ারলাইনসের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) শেষ রাতে পূর্ব লন্ডনের একটি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনের ট্রান্সফরমারে অগ্নিকাণ্ডে আগুনের শিখা আকাশে উঠতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পরেও সেই আগুন ধিকিধিকি জ্বলেছে। বিমানবন্দর থেকে দুই মাইল দূরে এই সাব-স্টেশনটির অবস্থান।

এই আগুন নেভাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে ১০টি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ও ৭০ জনের মতো দমকলকর্মী কাজ করেছেন।

এতে কয়েক হাজার বসতবাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রায় ১৫০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়েছে। স্কটল্যান্ড ও সাউদার্ন ইলেট্রিসিটি নেটওয়ার্কস জানিয়েছে, ষোলো হাজার ৩০০ বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থাপনাটি থেকে ব্যাপক আগুন ও কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে।

যুক্তরাজ্যের জ্বালানিমন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড বলেন, ‘সাতঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ আমাদের জানা নেই। অবশ্যই এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা।’


এসবিবিএস কমিউনিটির সদস্যদের জন্য নানা উদ্যোগ

চালু হচ্ছে 'লিগ্যাল শো' ও মেম্বার্স সাপোর্ট কার্যক্রম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
লন্ডন থেকে আজিজুল আম্বিয়া

দ্য সোসাইটি অব বৃটিশ বাংলাদেশী সলিসিটরস (এসবিবিএস) কমিউনিটির জন্যে ফ্রি আইনী পরামর্শসেবা এবং সদস্যদের জন্যে চালু করছে নানা রকম কার্যক্রম।

রোববার পূর্বলন্ডনের একটি রেস্তোরায় অনুষ্ঠিত মিট দ্যা প্রেস, এমওইউ স্বাক্ষর ও ইফতার অনুষ্ঠানে একথা জানান সংগঠনটির নব নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ।

এসবিবিএস সদস্যদের প্রফেশনাল ইনডেমনিটি ও অন্যান্য ইন্সুরেন্স সেবা নিশ্চিতে হেরা ইনডেমনিটি কোম্পানির সাথে এবং লিগ্যাল সার্চেস সেবার জন্যে এক্সপ্রেস লিগ্যাল সার্ভিস কোম্পানি সাথে দুইটি এমওইউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানীদ্বয় এসবিবিএস সদস্যদের ও সলিসিটর্স ফার্মকে হ্রাসকৃত ফিতে ইন্সুরেন্স ও রেগুলেটেড লিগ্যাল সার্চেস সেবা দিবে।

নব নির্বাচিত সভাপতি মুহাম্মদ নুরুল গাফ্ফার কমিটির গৃহিত বিভিন্ন কার্যক্রম পরিকল্পনা সম্পর্কে সভায় অবহিত করেন যারমধ্যে রয়েছে ফ্রি আইনী পরামর্শ সেবার এসবিবিএস লিগ্যাল শো, লিগ্যাল আপডেট ও সদস্যদের বছরব্যাপী সিপিডি ট্রেনিং, ইন্টারেক্টিভ ওয়েবসাইট, এসআরএ এবং অন্য রেগুলেটরদের সাথে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে এডভোকেসি করা ইত্যাদি।

তিনি আরও বলেন, সদস্যদের বাংলাদেশে এডভোকেটশীপ সহজীকরণে কমিটি কাজ করছে। কমপ্লেইন্স এবং কমপ্লিয়ান্ট হ্যান্ডলিং সাপোর্টের জন্যে তার নেতৃত্বে কমিটি রয়েছে, যে কোনো সদস্য গোপনীয়তার সাথে তাদের সহযোগিতা নিতে পারবেন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্যাট্রন জাজ বেলায়েত হোসাইন, সলিসিটার তাজ শাহ, ব্যারিস্টার নাজির আহেমদ, টাওয়ার হ্যামলেটের স্পিকার ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ, ও লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারি তাইসির মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের মিনিস্টার ও হেড অব চ্যান্সেরি শাহরিয়ার মোশাররফ, প্রাক্তন সভাপতি দেওয়ান মেহেদী, ফরিদা হাকিম, এহসান হক, বিভিন্ন ফার্মের প্রিন্সিপাল সলিসিটর্স, সম্পাদক, সাংবাদিক সহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী । সেক্রেটারি মুহাম্মদ মুনসাত হাবিব চৌধুরীর সঞ্চালনে কমিটির সদস্যরা উপস্থিত সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের সাথে পরিচয়পর্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন এবং সকল সদস্যের সাথে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। সার্বিক কল্যাণ কামনায় দোআ মোনাজাত পরিচালনা করেন সলিসিটার আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ।


গণমাধ্যমকর্মী ছাঁটাইয়ের পদক্ষেপ ট্রাম্পের

ভয়েস অব আমেরিকাসহ কয়েকটি গণমাধ্যম আউটলেটে অর্থায়ন স্থগিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভয়েস অব আমেরিকা (ভিওএ), রেডিও ফ্রি এশিয়া, রেডিও ফ্রি ইউরোপ এবং অন্যান্য গণমাধ্যমের আউটলেটের শত শত কর্মীকে ছাটাই করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি ইমেল করা হয়েছে এসব কর্মীদের। একই সঙ্গে তাদের প্রেস পাস এবং সরঞ্জাম জমা দিতে বলা হয়েছে। শনিবার (১৫ মার্চ) স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে বার্তা সংস্থা সিনহুয়া এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১৪ মার্চ) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক নির্বাহী আদেশে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়াকে (ইউএসএজিএম) 'অপ্রয়োজনীয়' ফেডারেল আমলাতন্ত্রের অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
ভয়েস অব আমেরিকার মূল সংস্থা ইউএসএজিএম। সংস্থাটিতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কর্মী রয়েছে। কংগ্রেসে পেশ করা সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংস্থাটির জন্য ২০২৪ সালে ৮৮ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার বরাদ্দ ছিল।
স্থানীয় গণমাধ্যমটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও রেডিও ফ্রি এশিয়াসহ বেসরকারিভাবে অন্তর্ভুক্ত আন্তর্জাতিক সম্প্রচারকদের সব চুক্তি বাতিল করেছে সংস্থাটি।
ভয়েস অব আমেরিকার পরিচালক মাইকেল আব্রামোভিৎজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান, তার ১৩০০ সাংবাদিক, প্রযোজক ও সহকারীকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
হোয়াইট হাউস বলেছে, এই কাটছাঁট নিশ্চিত করবে যে ‘করদাতারা আর উগ্রবাদী প্রচারণার শিকার হবেন না।’
প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে এই সিদ্ধান্তটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে বলে আশা করা হচ্ছে, কারণ কংগ্রেস, প্রেসিডেন্টর হাতে নয়, কংগ্রেসের হাতে সাংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে।


যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ ঝড়ে ৩২ জনের মৃত্যু

শনিবার ওয়েইন কাউন্টিতে ভয়াবহ ঝড়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি বাড়ি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে অন্তত ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংস হয়ে গেছে স্কুলগুলো এবং বেশ কয়েকটি রাজ্যে সেমিট্রাক্টর-ট্রেইলার উল্টে গেছে।

দেশটির কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সময় শনিবার গভীর রাতে আরও তীব্র ঝড়ের আশঙ্কা করছে বলে বার্তা সংস্থা অ্যাসেসিয়েটেড প্রেস(এপি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) শেরম্যান কাউন্টিতে ধূলোঝড়ের কারণে ৫০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াসহ ৮ জনের মৃত্যুর পর হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে কানসাস হাইওয়ে পেট্রোল।
মিসিসিপির গভর্নর টেট রিভস জানিয়েছেন, তিনটি কাউন্টিতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ রাত্রিকালীন একটি পোস্টে তিনি আরও জানান, গোটা রাজ্যে ২৯ জন আহত হয়েছেন।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিসৌরি অন্য যেকোনো রাজ্যের চেয়ে বেশি প্রাণহানির নথিভুক্ত করেছে। কারণ, এটি রাতভর থেমে থেমে বয়ে যাওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হয়। এতে কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে এক ব্যক্তিও রয়েছেন যার বাড়ি ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
ডাকোটা হেন্ডারসন জানান, শুক্রবার রাতে তিনি ও অন্যরা বাড়িতে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করতে গিয়ে মিসৌরির ওয়েইন কাউন্টিতে তার খালার বাড়ির বাইরে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে পাঁচটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন।
গত রাতটি খুবই কঠিন ছিল উল্লেখ করে শনিবার তিনি বলেন, ‘গত রাতে লোকজনের সঙ্গে যা ঘটেছে, হতাহতের ঘটনা ঘটেছে তা সত্যিই উদ্বেগজনক।’ তিনি বলেন, গাছপালা উপড়ে ঘরবাড়ির উপর পড়েছিল।
হেন্ডারসন বলেন, তারা তার খালাকে একটি শয়নকক্ষ থেকে উদ্ধার করেছিল। ঝড়ের পর তার বাড়িতে একমাত্র অবশিষ্ট ঘর ছিল এটি। তাকে জানালা দিয়ে বাইরে নেওয়া হয়। তারা আরও একজন লোককে উদ্ধার করেছেন—যার হাত-পা ভেঙে গেছে।
আরকানসাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঝড়ের কারণে ইন্ডিপেন্ডেন্স কাউন্টিতে ৩ জন নিহত ও আটটি কাউন্টিতে ২৯ জন আহত হয়েছেন।
আরকানসাসের গভর্নর সারাহ হাকাবি স্যান্ডার্স এক্সে বলেন, 'গত রাতের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে আমাদের দল কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য উদ্ধারকর্মীরা মাঠে রয়েছে।’
তিনি এবং জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প নিজ নিজ রাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। কেম্প বলেন, শনিবারের শেষের দিকে খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাসের কারণে তিনি এই ঘোষণা দিচ্ছেন।
এদিকে গত শুক্রবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টেক্সাস প্যানহ্যান্ডেলের আমারিলোতে ধুলোঝড়ের সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়েছেন।


৪৩ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় ৪৩টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা ভাবছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের আগের মেয়াদের চেয়ে নতুন এই নিষেধাজ্ঞার পরিধি বড় হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাতে মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমস এমন খবর দিয়েছে।

কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এরইমধ্যে ‘লাল’, ‘কমলা’ ও ‘হলুদ’—এই তিন ক্যাটাগরিতে খসড়া তালিকা তৈরি করেছে। এতে তিনটি ধাপে ৪৩টি দেশের নাম রয়েছে।

তালিকায় প্রথম ধাপের ১১টি দেশ হলো—আফগানিস্তান, ভুটান, কিউবা, ইরান, লিবিয়া, উত্তর কোরিয়া, সোমালিয়া, সুদান, সিরিয়া, ভেনিজুয়েলা ও ইয়েমেন। এসব দেশের নাগরিকদের পূর্ণাঙ্গ ভিসা বাতিল হতে পারে।

দ্বিতীয় ধাপের দেশগুলোর—বেলারুশ, ইরিত্রিয়া, হাইতি, লাওস, মিয়ানমার, পাকিস্তান, রাশিয়া, সিয়েরা লিওন, দক্ষিণ সুদান ও তুর্কমেনিস্তান—ওপর আংশিক ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া এসব দেশের পর্যটন ভিসা, শিক্ষার্থী ভিসা, অভিবাসন ভিসায় প্রভাব পড়তে পারে।

অর্থাৎ বিধিনিষেধ আরোপ হলেও এসব দেশের ভিসা পুরোপুরি বাতিল করা হবে না। এই ১০ দেশের ধনী ব্যবসায়ীরা ভ্রমণ করতে পারলেও ভ্রমণ কিংবা অভিবাসন ভিসায় সাধারণ নাগরিকরা যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে পারবেন না।

শেষ গ্রুপে থাকা দেশগেুলোর সরকার নিরাপত্তা তথ্য সংক্রান্ত ঘাটতি মেটাতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নিলে এসব দেশের নাগরিকদের ভিসায় আংশিক নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন।

দেশগুলো হলো, অ্যাঙ্গোলা, অ্যান্টিগা ও বার্বুডা, বেলারুশ, বেনিন, ভুটান, বুরকিনা ফাসো, কেপ ভার্দে, কম্বোডিয়া, ক্যামেরুন, চাদ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র অব দ্য কঙ্গো, ডোমেনিকা, বিষুবীয় গিনি, গাম্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালাউই, মৌরিতানিয়া, রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো, সেন্ট কিট্‌স ও নেভিস, সেন্ট লুসিয়া, সাঁউ তুমি ও প্রিন্সিপি, সিয়েরা লিওন, পূর্ব তিমুর, তুর্কমেনিস্তান, লাইবেরিয়া, মালি, জিম্বাবুয়ে ও ভানুয়াতু।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘কয়েক সপ্তাহ আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এই তালিকা তৈরি করেছেন। হোয়াইট হাউসে পৌঁছার আগে তালিকায় কিছুটা রদবদল হতে পারে এবং এখনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ ট্রাম্প প্রশাসনের অনুমোদন মেলেনি।’

এখন খসড়া তালিকা পর্যালোচনা করছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দূতাবাস, আঞ্চলিক ব্যুরো, বিভিন্ন বিভাগ ও গোয়েন্দা সংস্থার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।

ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদেও ৭টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। তার ওই পদক্ষেপ অনেক আইনি লড়াই পেরিয়ে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পায়।

দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতেই চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশে ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা হুমকি শনাক্তে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ইচ্ছুক সব বিদেশির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য যাচাই-বাছাই জোরদারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ওই নির্দেশে ‘নিরাপত্তা যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়া যাবে না’ এমন দেশগুলো শনাক্তে করে সেগুলোর মধ্যে কোনগুলোর ওপর পূর্ণাঙ্গ, কোনগুলোর ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া যায় তার তালিকা ২১ মার্চের মধ্যে জমা দিতে মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যকে বলাও হয়েছিল।

এ দফায় ক্ষমতায় আসার পর রিপাবলিকান ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে দেওয়া এক বক্তৃতায় তিনি গাজা ভূখণ্ড, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেন এবং ‘আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি যে কারও’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ আটকে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন।


banner close