রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩

নেতানিয়াহুকে এখনই পদত্যাগ করতে বলল বিরোধীরা

ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৭ নভেম্বর, ২০২৩ ১৪:০৫

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর তাৎক্ষণিক পদত্যাগ দাবি করেছেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা ইয়াইর লাপিদ। তিনি বলেছেন, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শেষের অপেক্ষা নয়, এখনই সরে দাঁড়াতে হবে নেতানিয়াহুকে।

গত বুধবার ইসরায়েলি টিভি চ্যানেল এন১২-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে লাপিদ বলেন, ‘নেতানিয়াহুর অবিলম্বে সরে যাওয়া উচিত... আমাদের পরিবর্তন দরকার, নেতানিয়াহু আর প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না।’

ইসরায়েলি বিরোধী নেতা বলেন, জনগণের আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন এমন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কোনো দীর্ঘ অভিযান চলতে পারে না।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আচমকা হামলা চালায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। এর চার দিন পরে নেতানিয়াহু ও আরেক বিরোধী নেতা বেনি গান্টজ যুদ্ধকালীন ‘জরুরি সরকার’ গঠনের বিষয়ে সমঝোতার ঘোষণা দেন।

লাপিদ সে সময়ে বলেছিলেন, তিনি এ সরকারে যোগ দেবেন না। হামাসের আক্রমণ প্রতিরোধ করতে না পারা ইসরায়েলি শাসকদের ‘অমার্জনীয় ব্যর্থতা’ বলে অভিযোগ করেন তিনি। তবে বুধবারের আগ পর্যন্ত নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি করেননি এ নেতা।

গত বছর নেতানিয়াহু ক্ষমতায় ফেরার আগে ইসরায়েলের জোট সরকারের নেতৃত্বে ছিলেন ইয়াইর লাপিদ।

এন১২-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে লাপিদ আগাম নির্বাচনেরও দাবি জানাননি। বরং পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি, যার মাধ্যমে নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টিরই অন্য কোনো সদস্যের নেতৃত্বে একটি নতুন সরকার গঠন করা যাবে।

লাপিদ বলেন, এটি নির্বাচনের সময় নয়। আমাদের উচিত লিকুদ থেকে অন্য একজনকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেয়া।

তবে টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে লিকুদ পার্টি। তারা বলেছে, যুদ্ধের সময় এ জাতীয় প্রস্তাব ‘লজ্জাজনক’।

বিষয়:

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন পুতিন

ভ্লাদিমির পুতিন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়াই করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধরত রুশ সেনাদের (গত শুক্রবার) এ কথা জানিয়েছেন তিনি। আগামী বছরের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হলে পুতিনের জন্য আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার পথ আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে।

১৯৯৯ সালের শেষ দিনে পুতিনের হাতে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব হস্তান্তর করেছিলেন বরিস ইয়েলৎসিন। ইতোমধ্যেই জোসেফ স্টালিনের পর থেকে রাশিয়ার অন্য যেকোনো শাসকের তুলনায় বেশি সময় ধরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন পুতিন।

ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়া রাশিয়ার শীর্ষ সেনাদের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানে ভূষিত করেছেন পুতিন। রুশ সেনাদের সর্বোচ্চ সামরিক পদক প্রদান ওই অনুষ্ঠানেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেন পুতিন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আর্টিওম ঝোগা নামের এক সেনা সদস্য ‘হিরো অব রাশিয়া’ স্বর্ণপদক পেয়েছেন। সোভিয়েত যুগে ইউক্রেনে জন্মগ্রহণকারী এই সেনা সদস্য বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করছেন। তিনি পুতিনকে আবারও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্যালেসে অবস্থিত জর্জিয়েভস্কি হলে সেনাদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে পুতিন বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়াই করব। পুতিনের এমন ঘোষণায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে আর্টিওম ঝোগা বলেন, আমি খুবই খুশি যে তিনি আমার অনুরোধ রেখেছেন। তিনি বলেন, রাশিয়ার সব নাগরিক এই সিদ্ধান্তে সমর্থন জানাবে।

গত মাসে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল যে, পুতিন আগামী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে প্রকৃতপক্ষে পুতিনের (৭১) জন্য নির্বাচন একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। রাষ্ট্রীয় সমর্থন, রাষ্ট্রচালিত গণমাধ্যম এবং জনগণের ভিন্নমত না থাকায় তার জয় অনেকটাই নিশ্চিত বলা যায়। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, তার কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীও নেই বললেই চলে।

আগামী ১৭ মার্চ দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। রাশিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। ২০২০ সালে রাশিয়ার সংবিধান সংশোধন করে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ চার থেকে ছয় বছর পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে ভোটাভুটির মাধ্যমে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের পরদিনই পুতিন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিলেন। ফেডারেশন কাউন্সিলে সর্বসম্মতিক্রমে ১৬২ ভোটে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের প্রস্তাব পাস হয়েছে।


এবার লেবাননে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর হুমকি নেতানিয়াহুর

ক্যাপশন: ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার জবাবে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এরই মধ্যে গাজায় ১৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ‘মৃত্যুপুরী’ গাজার মতো ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডের সদর দপ্তর পরিদর্শনের সময় এ সতর্কবার্তা দিয়েছেন নেতানিয়াহু। এ সময় তার সঙ্গে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট, সেনাপ্রধান হারজি হালেভি ও ওই সেক্টরের প্রধান মেজর জেনারেল অরি গর্ডিন উপস্থিত ছিলেন।

নেতানিয়াহু বলেন, লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ যদি (ইসরায়েলের বিরুদ্ধে) সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে এটি নিজের হাতে বৈরুত ও দক্ষিণ লেবাননকে গাজা ও খান ইউনিস শহরে পরিণত করবে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি দুই শতাধিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে বন্দি করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। এমন নজিরবিহীন হামলার জবাবে হামাসকে নির্মূলের লক্ষ্যে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকার। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় এরই মধ্যে ১৭ হাজারের ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এত দিন উত্তর গাজায় হামলা সীমিত রাখলেও এবার দক্ষিণ গাজায় প্রবেশ করেছে ইসরায়েলি স্থল সেনারা।

গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই হামাসের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে হিজবুল্লাহ। গাজায় ইসরায়েলি হামলার মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে লেবানন সীমান্তে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর গুলি বিনিময় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এখনো পূর্ণাঙ্গ সামরিক অভিযান শুরু করা থেকে বিরত রয়েছে হিজবুল্লাহ।

বিষয়:

নির্বাচনকে সামনে রেখে চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা বাড়ছে

ক্যাপশন: চীনের উপকূলে রণতরীতে এফ-১৫ বিমান ও গোয়েন্দা বেলুন। ছবি: রয়টার্স
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা আরও বাড়ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে এ উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্বশাসিত দ্বীপটিতে সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে চীন। দ্বীপটি জানিয়েছে, নির্বাচনের এক মাস আগেই গতকাল শুক্রবার ১২ চীনা যুদ্ধবিমান ও একটি সন্দেহভাজন গোয়েন্দা বেলুন তাইওয়ান প্রণালির সংবেদনশীল মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আগামী বছরের জানুয়ারিতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা রয়েছে। এর আগেই চীনা যুদ্ধবিমান ও গোয়েন্দা বেলুন প্রণালির সংবেদনশীল মধ্যরেখা অতিক্রম করায় দ্বীপটিতে উত্তেজনা বাড়ছে। চীন স্বশাসিত এ দ্বীপটিকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। দেশটি এ দ্বীপের চারপাশে গত চার বছর ধরে নিয়মিত সামরিক মহড়া ও টহল পরিচালনা করে আসছে বলে অভিযোগ করছে তাইওয়ান।

তাইওয়ানে আগামী বছরের শুরুতে অর্থাৎ ১৩ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী সরকার চীনের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্ক ও যোগাযোগ রক্ষা করবে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

বিতর্কিত জলসীমায় চীনের ১৩৫ জাহাজ

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে চীনের ১২টি যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের সংবেদনশীল সীমানা অতিক্রম করেছে। এ রেখাটি চীন ও তাইওয়ানের মধ্যে অঘোষিতভাবে সীমানা হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এটির ওপর দিয়ে চীনের যুদ্ধবিমান নিয়মিত উড্ডয়ন করছে।
এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে আকাশে একটি চাইনিজ বেলুন চিহ্নিত করা হয়েছে। এটি তাইওয়ানের উত্তরের শহর কিলাং থেকে ১০১ নটিক্যাল মাইল (১৮৭ কিমি) দক্ষিণ-পশ্চিমে দেখা গিয়েছে। এ বেলুনটি প্রায় এক ঘণ্টা উড্ডয়নের পর প্রণালির দিক দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চি কু চেন পার্লামেন্টে সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে এটিকে একটি আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা বেলুন হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মন্ত্রণালয়ের উচিত ছিল বিষয়টি জনগণের জন্য খোলাসা করা। কেননা অন্য কোনো বিভাগ বা দেশ বিষয়টি শনাক্ত করলে বিষয়টি জনগণের জন্য আতঙ্কের কারণ হতে পারে। তবে বিষয়টি নিয়ে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
চীনের এ গোয়েন্দা বেলুন বিশ্বের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে আসছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র চীনের একটি গোয়েন্দা বেলুন গুলি করে ভূপাতিত করেছিল। যদিও চীনের দাবি, এটি ছিল একটি বেসামরিক ক্রাফট, যেটি ভুলপথে চলে গিয়েছে।

বিষয়:

গাজায় মিলছে না নিরাপদ জায়গা, আশ্রয়ের খোঁজে লাখো ফিলিস্তিনি

অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ধ্বংসস্তূপে বসে আছেন এক ফিলিস্তিনি। ছবি: রয়টার্স
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজার দক্ষিণাঞ্চলেও এখন আক্রমণ করছে ইসরায়েল। আর এ দক্ষিণ গাজাতেই লাখ লাখ ফিলিস্তিনি উত্তর গাজা থেকে পালিয়ে এসেছেন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। ফলে ফিলিস্তিনিদের কাছে অঞ্চলটিতে নিরাপদ আশ্রয় বলে আর কিছু থাকছে না। এদিকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফারা শরণার্থী শিবিরে গতকাল শুক্রবার অন্তত পাঁচ ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ফিলিস্তিনের শিল্পপতি হানা আওয়াদ বলছেন, ‘আমরা এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি, যেখানে আমাদের নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। আমরা চাকরি হারিয়েছি, পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি, বাড়িঘর হারিয়েছি, এমনকি নিজেদের শহরও হারিয়ে ফেলেছি।’

লড়াই শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই হানা তার শহর ছেড়ে চলে এসেছিলেন। উত্তর গাজার হাজার হাজার মানুষের মতো হানা ও তার পরিবার মিসর সীমান্তের কাছে রাফাহতে চলে গেছেন। সেই সময় ইসরায়েলের সেনাবাহিনীই জানিয়েছিল, উত্তর গাজা থেকে মানুষ যেন দক্ষিণ গাজার নিরাপদ জায়গায় চলে যান। কিন্তু এখন দক্ষিণ গাজাতেও ইসরায়েল সমানে বোমাবর্ষণ করছে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এখন খান ইউনিস শহর ঘিরে অভিযান চালাচ্ছে। শহর থেকে মানুষকে পশ্চিমদিকে বা রাফাহর দক্ষিণে চলে যেতে বলা হচ্ছে। কিন্তু লড়াই বন্ধ করা হচ্ছে না। ইসরায়েলের দাবি, হামাস নেতারা এ শহরেই আছে। হানা জানিয়েছেন, ‘রাফাহতে থাকাটাও রীতিমতো চ্যালেঞ্জের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খান ইউনিস থেকে দলে দলে মানুষ এখানে আসছেন। ফলে আগে যারা এসেছেন তারা বিপাকে পড়েছেন। গাজার সব জায়গা থেকে রাফাহতে মানুষ আসছে। এখানেও ইসরায়েলের ড্রোনের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। তাই সত্যিকারের কোনো নিরাপদ জায়গা নেই।’

যুদ্ধবিরতির সময় রাফাহ সীমান্ত দিয়ে কিছু মানবিক ত্রাণ এসেছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই মানুষের ন্যূনতম চাহিদাও পূরণ হচ্ছে না। জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স (ইউএনওসিএইচএ) জানিয়েছে, গাজার ২২ লাখ মানুষের মধ্যে ১৮ লাখ মানুষ এ যুদ্ধের ফলে মাথার ওপর ছাদ হারিয়েছেন। অনেকেই দক্ষিণ গাজায় চলে গেছেন। সেখানে জাতিসংঘের আশ্রয়শিবিরে আর ঠাঁই নেই। অনেকে গাড়িতে থাকছেন, আত্মীয়দের সঙ্গে গাদাগাদি করে থাকছেন। ভয়াবহ অবস্থা চলছে।

হানা বলেছেন, ‘খাবার পাওয়া যাচ্ছে না। গদি, কম্বল কিছুই নেই। গত দুই দিন ধরে যারা আসছেন, তারা মেঝের ওপর নাইলনের শিট বিছিয়ে থাকছেন।’ তিনি জানান, কেউ গাড়ির ভেতর থাকছেন, প্রচুর মানুষ রাস্তায় রাত কাটাচ্ছেন। এই ঠাণ্ডায় এভাবে রাত কাটানো ভয়ঙ্কর কষ্টের।

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি হামলায় ৫ ফিলিস্তিনি নিহত

অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফারা শরণার্থী শিবিরে অন্তত পাঁচ ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল শুক্রবার ফারা শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়ে এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে বাহিনীটি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনি অধিকৃত বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সে সময় অন্তত পাঁচজন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে সেনারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রামাল্লায় সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলি সেনারা। হেবরনের দক্ষিণে আল-ফাওয়ার শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়েছে বাহিনীটি। কালকিলিয়ার পূর্বে কাফর কাদ্দুম ও জিনসাফুট গ্রামেও হামলা চালিয়েছে। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমে দুই ফিলিস্তিনি পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।


ইসরায়েলি বর্বর হামলায় গাজায় নিহত ছাড়াল ১৭ হাজার

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আহত এক শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: এবিসি নিউজ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় নিহতের সংখ্যা ১৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি। এদিকে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনের বিখ্যাত কবি রেফাত আলারির নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২১টি হাসপাতালের সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। বার্তা সংস্থা এপির বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এবিসি নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা ভূখণ্ডে চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ১৭ হাজার ১৭৭ জনে পৌঁছেছে। এ তথ্য জানিয়েছে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেন, ‘নিহতদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই শিশু ও নারী।’

তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ২৯০ চিকিৎসক নিহত হয়েছেন, ১০২টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ১৬০টি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০টি হাসপাতাল এবং ৪৬টি প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা কেন্দ্রকে পরিষেবা বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

ফিলিস্তিনের কবি রেফাত আলারির নিহত

ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনের বিখ্যাত কবি রেফাত আলারির নিহত হয়েছেন। তিনি সেখানকার তরুণ প্রজন্মের কবি ছিলেন। ফিলিস্তিনবাসীর কথা তিনি ইংরেজিতে লিখে বিশ্ববাসীকে জানাতেন।

কবি রেফাতের বন্ধু বলেছেন, বৃহস্পতিবার রাতভর চালানো ইসরায়েলি হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন। রেফাতের আরেক বন্ধু গাজার কবি মোসাব আবু তোহা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমার হৃদয় ভেঙে গেছে, আমার বন্ধু ও সহকর্মী রেফাত আলারির ও তার পরিবারকে কিছুক্ষণ আগে হত্যা করা হয়েছে।’

ওই পোস্টে মোসাব আবু তোহা আরও লিখেছেন, ‘আমি এটা বিশ্বাস করতে চাই না। আমরা একসঙ্গে স্ট্রবেরি তুলতে ভালোবাসতাম।’

হামাস বলেছে, গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে।

গত অক্টোবর মাসে গাজায় স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। এর কয়েক দিন পর আলারির গাজার উত্তরাঞ্চল ছেড়ে যাবেন না বলে জানান।

সে সময় গাজার উত্তরাঞ্চল ছিল হামলার কেন্দ্রস্থল। কবি রেফাতের আরেক বন্ধু আহমেদ আলনাউক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে লিখেছেন, ‘রেফাতের হত্যাকাণ্ড দুঃখজনক, বেদনাদায়ক ও নিষ্ঠুর। এতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল।’

দ্য লিটারারি হাব ওয়েবসাইট কবি রেফাতের মৃত্যুতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। লেখক ও সাংবাদিক রামজি বারাউদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘রেফাত আলারির শান্তিতে ঘুমাক। আমরা বর্তমান ও ভবিষ্যতে আপনাকে অনুসরণ করে যাব।’

আলারির গাজার ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ‘উই আর নট নম্বরস’ (আমরা সংখ্যা নই) প্রকল্পের সহপ্রতিষ্ঠাতাদের একজন ছিলেন। এখানে গাজার লেখকরা যুক্ত ছিলেন। বাইরের দেশের অভিজ্ঞ লেখক ও পরামর্শকরা গাজার লেখকদের নিজেদের অভিজ্ঞতা ইংরেজিতে লিখতে উদ্বুদ্ধ করতেন। এখান থেকেই ‘গাজা রাইটার্স ব্যাক’ নামে বইটির সম্পাদনা করা হয়। প্রকাশিত হয়েছে ‘গাজা আনসাইলেন্সড’ বই। এতে তরুণ ফিলিস্তিনি লেখকরা গাজার জীবন তুলে এনেছেন।

গাজার ২১টি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে ২১টি হাসপাতালের সেবাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে ১১০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রও বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ২৮৭ জন চিকিৎসাকর্মী নিহত হয়েছেন। বোমা হামলা চালিয়ে অন্তত ৫৮টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর ফলে যেখানে চিকিৎসাসেবা চালু আছে সেখানে আহতদের নিয়ে যাওয়াও মুশকিল হয়ে পড়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মরদেহের আধিক্যে হাসপাতালগুলো পূর্ণ হয়ে গেছে। হাসপাতালগুলো আহতদের কোনো চিকিৎসাসেবা দিতে পারছে না। ইসরায়েলের দখলদার সেনাদের হামলায় সব চিকিৎসা সরঞ্জাম ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েলি সেনারা স্বাস্থ্যকর্মীদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে।


গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান বিবেচনা করবে নিরাপত্তা পরিষদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের তীব্র চাপের মধ্যে শুক্রবার গাজা বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের পর অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর বিষয়ে বৈঠকে ভোট গ্রহণ করা হবে।

ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে এবং ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের মধ্যে জীবনযাত্রার অবস্থাকে বিপর্যয়কর হিসেবে বর্ণনা করা সত্ত্বেও সেশনের ফলাফল সম্পর্কে বলা যাচ্ছে না। খবর এএফপির।

বুধবার কাউন্সিলের কাছে একটি চিঠিতে, গুতেরেস জাতিসংঘের সনদের আর্টিকেল ৯৯ আহ্বান করার অসাধারণ পদক্ষেপ নেয়, যেখানে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক রক্ষণাবেক্ষণের এবং শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে তার মতে এমন যেকোনো বিষয় মহাসচিব কাউন্সিলের নজরে আনতে পারেন। বিগত কয়েক দশক ধরে নিয়োজিত থাকা কোনো মহাসচিব এ জাতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

গুতেরেস লিখেছেন, ‘ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর ক্রমাগত বোমাবর্ষণের মধ্যে, এবং আশ্রয় বা বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র না থাকায় আমি আশঙ্কা করছি যে মরিয়া পরিস্থিতির কারণে জনশৃঙ্খলা শীঘ্রই সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়বে, এমনকি সীমিত মানবিক সহায়তাও অসম্ভব হয়ে উঠবে।’

তিনি ফিলিস্তিনিদের জন্য সম্ভাব্য অপরিবর্তনীয় প্রভাব এবং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে এক বিপর্যয় প্রতিরোধে ‘মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানান।

কাউন্সিল গুতেরেসের জরুরি আবেদনে মনোযোগ দেবে বলে জাতিসংঘ মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক আশা প্রকাশ করেছেন।

ডুজারিক বলেন, ‘বুধবার থেকে জাতিসংঘ প্রধান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুন এবং অন্যান্য বেশ কটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন।’

বিষয়:

পুতিনকে জিততে দিতে পারি না: জো বাইডেন

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২২:১৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেনকে নতুন করে সামরিক সহায়তা দিতে চান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এতে সহায়তার জন্য তিনি বুধবার রিপাবলিকানদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। বাইডেন বলেন, তারা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জিততে দিতে পারেন না।

বাইডেন সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়া জয়ী হলে তা মস্কোকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর মিত্রদের আক্রমণ করার অবস্থানে নিয়ে যাবে। এর জেরে যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে জড়াতে হতে পারে।

ইউক্রেনের জন্য বাইডেন প্রশাসন অতিরিক্ত ১৭৫ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণার পরিকল্পনা করেছে; কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল ফুরিয়ে আসছে। ইউক্রেনকে অতিরিক্ত অর্থসহায়তার বিল কংগ্রেসে পাসের জন্য রিপাবলিকানদের সমর্থন দরকার। এমন প্রেক্ষাপটে এ বিষয়ে কথা বললেন বাইডেন।

ইউক্রেনকে আরও অর্থায়নের বিলে সমর্থন দেয়ার বিনিময়ে মার্কিন অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ি চান কট্টর রিপাবলিকানরা। রিপাবলিকানদের সমর্থন পেতে মার্কিন অভিবাসন নীতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনার বিষয়ে বাইডেন তার ইচ্ছার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বাইডেন বলেন, পুতিন যদি ইউক্রেন যুদ্ধে জয়ী হন, তাহলে তিনি সেখানেই থামবেন না।

বাইডেন ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন, ‘তখন পুতিন ন্যাটোর মিত্রকে আক্রমণ করবেন। সে ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে এমন কিছু (রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ) করতে হবে, যা ওয়াশিংটন চায় না। আমরা পুতিনকে জিততে দিতে পারি না।’

বাইডেনের এ বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মস্কো। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি আন্তোনোভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার সম্ভাব্য সংঘাত নিয়ে বাইডেন যা বলেছেন, তা উসকানিমূলক বক্তব্য। একটি দায়িত্বশীল পারমাণবিক শক্তিধর দেশের কাছ থেকে এমন বক্তব্য আসাটা অগ্রহণযোগ্য।

বিষয়:

দেড় কোটি ভোটার আমার সঙ্গে আছে: ট্রাম্প

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২২:০৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামনের বছর হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেড় কোটি ভোট পাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।

রিপাবলিকান দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে আবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী ট্রাম্প স্থানীয় সময় বুধবার ফক্স চ্যানেল আয়োজিত এক ইভেন্টে দর্শক-সমর্থকদের সামনে এ কথা বলেন। খবর এনডিটিভির।

তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট থাকতে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে যা করেছি, তা আর কাউকে করতে দেখিনি। আমি মনে করি ৭৫ লাখ নয়, দেড় কোটি ভোটার আমার সঙ্গে আছে।’

ট্রাম্প দর্শকদের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘নিরাপদ সীমান্ত, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী, কম ট্যাক্স ও কম খরচ সবারই চাওয়া, যা আমি করেছি এবং করব। আপনি নিশ্চয়ই খুব সহজে কম মূল্যে নিজের বাড়িটি কিনতে চাইবেন।’

২০২৪-এর নির্বাচনে ট্রাম্প জিতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র একজন স্বৈরাচারী শাসক পাবে বলে বেশ কয়েকদিন যাবৎ ভোটারদের সতর্ক করে আসছেন বিরোধী ডেমোক্র্যাট ও তার দলের কিছু রিপাবলিকান রাজনৈতিক কর্মী ও বিশ্লেষকরা।

এ বিষয়ে তিনি ভোটারদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমি কখনোই স্বৈরশাসক হব না।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন কিন্তু পরবর্তী নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হেরে যান।

দেশটির আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকতে পারেন। তাই ট্রাম্পের আরও একবার এ পদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ আছে।


বাঘের খাঁচায় মানুষের মরদেহ

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২১:৫৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানে একটি চিড়িয়াখানায় বাঘের খাঁচা পরিষ্কারের সময় মানুষের মরদেহ পাওয়া গেছে। পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরের শেরবাগ চিড়িয়াখানায় বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটেছে। এরপর চিড়িয়াখানাটি বন্ধ করে দেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাতে বৃহস্পতিবার এএফপি এ খবর প্রকাশ করেছে।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই দিন সকালে পরিচ্ছন্নতাকর্মী তিনটি বাঘের মধ্যে একটির মুখে মানুষের জুতা দেখতে পাওয়ার পর মরদেহটি পাওয়া যায়।

চিড়িয়াখানার দায়িত্বে থাকা প্রাদেশিক বন বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আলি উসমান বুখারি জানান, লোকটি কীভাবে সেখানে প্রবেশ করেছেন তা বের করতে চিড়িয়াখানাটি তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মরদেহের অবস্থা দেখে ধারণা করা হচ্ছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে ওই ব্যক্তির ওপর বাঘ হামলা করেছিল।

বুখারি জানান, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। তবে বাঘ আক্রমণ করার সময় ওই ব্যক্তি জীবিত ছিলেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমনকি আক্রমণ করার জন্য বাঘ তার খাঁচার বাইরে বের হয়নি। লোকটি সেখানে ঢুকেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বুখারি বলেন, ‘যদি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়, আমরা তা সমাধান করব। প্রয়োজনে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ দেওয়া হবে।’

এদিকে নিহত ব্যক্তির পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি এবং কেউ মরদেহ দাবি করতেও যোগাযোগ করেনি।

মরদেহ পাওয়ার পর জ্যেষ্ঠ স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা জহির আনোয়ার সাংবাদিকদের জানান, চিড়িয়াখানার কর্মীরা সবাই ঠিক আছেন। তার মতে, এটি কোনো উন্মাদের কাজ। কারণ কোনো বুদ্ধিমান মানুষ বাঘের খাঁচায় ঢুকবে না।

বিষয়:

১৬ বছর পর কারামুক্ত পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২১:৫৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফুজিমোরি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। ১৬ বছর বন্দিজীবন কাটানোর পর বুধবার কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

মূলত শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করেই ৮৫ বছর বয়সি ফুজিমোরিকে মুক্তি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালতে ক্ষমা পাওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় কারাগার থেকে মুক্তি পান আলবার্তো ফুজিমোরি। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত পেরুর প্রেসিডেন্টে ছিলেন তিনি। তার এক দশকের দীর্ঘ শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ২৫ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন তিনি।

রয়টার্স বলছে, আন্তঃআমেরিকান মানবাধিকার আদালত এবং ভুক্তভোগীদের পরিবারের সমালোচনা সত্ত্বেও দেশটির সর্বোচ্চ আদালত মঙ্গলবার মানবিক কারণে ৮৫ বছর বয়সি ফুজিমোরিকে ক্ষমা ঘোষণার একটি আপিলের পক্ষে রায় দেন।

২০০৭ সালে চিলি থেকে প্রত্যার্পণ করার পর ফুজিমোরি গত প্রায় ১৬ বছর ধরে কারাগারেই ছিলেন।

পেরুর রাষ্ট্রচালিত ন্যাশনাল পেনটেনশিয়ারি ইনস্টিটিউট ফুজিমোরিকে ‘অবিলম্বে মুক্তির’ নির্দেশ দেওয়ার পরপরই বুধবার তাকে কারাগার থেকে বের হয়ে একটি গাড়িতে উঠতে দেখা যায়। তার মুক্তির এ ঘটনাটি স্থানীয় টিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।

পরে সাবেক এ প্রেসিডেন্টের মুক্তির সময় তার বিপুলসংখ্যক সমর্থক ও সাংবাদিকদের ফুজিমোরিকে বহনকারী গাড়ির পেছনে পেছনে যেতে দেখা যায়। কারাগারের বাইরে অপেক্ষারত ফুজিমোরির সমর্থক ক্যাটালিনা পন্স বলেন, ‘ফুজিমোরির বিরুদ্ধে এই অবিচারের অবসানের সময় এসেছে।’

ফুজিমোরির সমর্থকরা বিশ্বাস করেন, তিনি সন্ত্রাসবাদ এবং অর্থনৈতিক পতন থেকে পেরুকে রক্ষা করেছিলেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, শাইনিং পাথ গেরিলাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের যুদ্ধের সময় তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন এবং নৃশংসতা চালিয়েছেন।

রয়টার্স বলছে, ১৯৯১ ও ১৯৯২ সালে শাইনিং পাথ গেরিলাদের সঙ্গে যুদ্ধের সময় ২৫ জনকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগে ২০০৯ সালে ফুজিমোরিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। একই সঙ্গে তাকে সে সময় ২৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ২০১৭ সালে পেরুর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট পেড্রো পাবলো কুজিনস্কি তাকে ক্ষমা করেন। পরে আন্তঃআমেরিকান আদালত ও ভুক্তভোগীদের পরিবারের চাপের মুখে দক্ষিণ আমেরিকার এ দেশটির নিম্ন আদালত সেই ক্ষমার আদেশ বারবার বাতিল বা স্থগিত করার মতো সিদ্ধান্ত নেন।

তবে এবার দেশটির সর্বোচ্চ আদালত মানবিক কারণে ক্ষমার আদেশ পুনর্বহাল রেখে রায় দেওয়ায় মুক্তি পেলেন আলবার্তো ফুজিমোরি।

বিষয়:

দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েল-হামাসের তুমুল লড়াই 

আপডেটেড ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ২১:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে তুমুল লড়াই চলছে ইসরায়েলি সেনাদের। বৃহস্পতিবার হামাস নেতার বাড়ি ঘিরে ফেলার দাবি করেছে ইসরায়েল। লড়াই দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ায় ফিলিস্তিনি বেসামরিকরা মিসর সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় ছুটছে। তবে অনেকেই আশঙ্কা করছে রাফাহতেও ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ থেকে সেখানেও তারা নিরাপদ থাকতে পারবেন না। খবর রয়টার্সের।

বুধবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা প্রথমবারের মতো দক্ষিণ গাজার বৃহত্তম শহর খান ইউনিসের প্রাণকেন্দ্রে অভিযান পরিচালনা করছে সেনারা। এক বিবৃতিতে বাহিনীটি বলেছে, এ শহর হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক শাসনের প্রতীক। সেনারা সন্ত্রাসীদের হত্যা, সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস ও অস্ত্রের অবস্থান শনাক্ত করছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, খান ইউনিসে হামাস নেতা ইয়াহিয়া আল-সিনওয়ারের বাড়ি ঘিরে রেখেছে সেনারা। তার বাড়ি হয়তো তার দুর্গ নয়। তিনি পালিয়ে যেতে পারেন; কিন্তু তাকে ধরে ফেলা সময়ের ব্যাপার।

খান ইউনিসের বাসিন্দারা বলছেন, সিনওয়ারের বাড়ির কাছে ইসরায়েলি ট্যাংক রয়েছে। তবে তিনি সেখানে অবস্থান করছেন কি না তা জানা যায়নি।

ইসরায়েল দাবি করে আসছে, হামাসের একাধিক নেতা ও যোদ্ধারা সুড়ঙ্গে অবস্থান নিয়েছে।

হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেড বলেছে, তুমুল লড়াই চলছে। বাসিন্দারা বলছে, বুধবার রাতে বোমাবর্ষণের তীব্রতা বেড়েছে।

প্রায় দুই মাসের সংঘাতে লাখো ফিলিস্তিনি উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণাঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এখন দক্ষিণাঞ্চলেও ইসরায়েলি অভিযান শুরু হয়েছে। ফলে তাদের জন্য নিরাপদ কোনো স্থান নেই। বুধবার রাফাহতে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন।

রাফাহ থেকে টেলিফোনে সামির আবু আলি বলেন, ইসরায়েলিরা মিথ্যাচার করছে। গাজায় কোনো নিরাপদ স্থান নেই। আগামীকাল তারা রাফাহতেও আসবে।

গাজায় যুদ্ধরত অবস্থায় সবশেষ আরও দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন এবং চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৮৮ জন ইসরায়েলি সেনা। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে গতকাল আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।

এর বিপরীতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, ৭ অক্টোবর থেকে বুধবার পর্যন্ত ১৬ হাজার ১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

তবে গত দুই দিনে ইসরায়েলের হামলার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গাজার সব হাসপাতাল ও অন্যান্য সূত্র থেকে হতাহতের পুরো তথ্য সংগ্রহ করতে পারেনি। যার ফলে এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালায় হামাস। এতে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং হামাসের হাতে জিম্মি হন প্রায় ২৪০ জন। ইসরায়েল দাবি করছে, এখনো হামাসের কাছে ১৩৬ জন জিম্মি আটক আছেন।

এ ঘটনার পর হামাসকে নির্মূলের অঙ্গীকার করে ইসরায়েল। এ লক্ষ্যে গাজা উপত্যকায় প্রায় দুই মাস ধরে নির্বিচার স্থল ও বিমানহামলা চালায় ইসরায়েল। এর পর কাতারের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। শুক্রবারের মেয়াদ শেষ হয়।

সাত দিনের এ যুদ্ধবিরতি শেষে গাজায় নতুন করে সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতির মধ্যে ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস।

বিষয়:

গাজায় নিহতদের মধ্যে ১২ হাজারই নারী-শিশু

গাজার রাফাহতে ইসরায়েলি হামলায় নিহত এক শিশুকে জড়িয়ে ধরে আছেন ফিলিস্তিনি নারী। ছবি: আল-জাজিরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বর্বর হামলা চলছেই। টানা প্রায় দুই মাস ধরে চলা এই আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যাই প্রায় ১২ হাজার। আহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৪৪ হাজারে। এদিকে গাজায় হামাসের হামলায় ১০ ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। অন্যদিকে গাজায় মানবিক বিপর্যয় বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে কাতার ও সৌদি আরব।

এক বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭ হাজার ১১২ জন শিশু এবং ৪ হাজার ৮৮৫ জন নারী রয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪৩ হাজার ৬১৬ জন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভূখণ্ডটিতে এখনো প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে তারা ইসরায়েলি হামলায় ভেঙে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন।

অক্টোবরের ৭ তারিখে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকেই অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় নির্বিচার হামলা ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করে ইসরায়েল। প্রায় দুই মাসের এই যুদ্ধে উপত্যকাটিতে ৪০ হাজার টন বোমা ফেলেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে ভূখণ্ডটিতে।

হামাসের হামলায় ১০ ইসরায়েলি সেনা নিহত

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে ১০ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এ ছাড়া হামাসের হামলায় ইসরায়েলি ট্যাংক, সামরিক যান এবং সামরিক বুলডোজারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামাসের হাতে নিহতের বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় ১০ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে। গোষ্ঠীটির সশস্ত্র শাখা আল-কাসাম ব্রিগেডস জানিয়েছে, খান ইউনিস শহরের পূর্বে ‘পয়েন্ট-ব্লাংক রেঞ্জে’ অর্থাৎ ‘খুব কাছ থেকে গুলি করে’ ওই ইসরায়েলি সেনাদের হত্যা করেন হামাসের যোদ্ধারা। গোষ্ঠীটি আরও বলেছে, সেনাদের হত্যার পাশাপাশি খান ইউনিসের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলে হামাসের যোদ্ধারা তিনটি ইসরায়েলি ট্যাংক, দুটি সেনাবাহী সামরিক যান এবং তিনটি সামরিক বুলডোজারে অ্যান্টি-আরমার শেল দিয়ে হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। হামাসের সঙ্গে সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। বিরতির পর শুরু হওয়া এই অভিযানে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরকে লক্ষ্য করেই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার সেনারা।

গাজায় মানবিক বিপর্যয় বন্ধের আহ্বান কাতার-সৌদির

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক বিপর্যয় বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে কাতার এবং সৌদি আরব। কাতার-সৌদি কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের এক যৌথ বিবৃতিতে কাতারের আমির এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান গাজা উপত্যকার মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ এবং বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার গুরুত্বের বিষয়ে জোর দিয়েছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।

উভয়পক্ষ ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত বন্ধে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে। দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান এবং আরব শান্তি উদ্যোগের নীতি অনুসারে ফিলিস্তিন সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন এই দুই শীর্ষ নেতা।

এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। একটি ভিডিও ফুটেজে একটি ধসে পড়া ভবন দেখা গেছে। সেখানে হামলার পর লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। গত দুই দিনে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ওই শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালাল ইসরায়েলি বাহিনী।


ভয়ঙ্কর ক্ষুধা-সংকটের মুখে গাজা: জাতিসংঘ

গাজা উপত্যকায় একটি বেকারির বাইরে রুটি কেনার জন্য অপেক্ষা করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি: এএফপি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাসের মধ্যে আবার লড়াই শুরু হয়েছে। ফলে অঞ্চলটি ভয়ঙ্কর ক্ষুধা সংকটে পড়বে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সম্প্রতি গাজায় সাতদিন ধরে যুদ্ধবিরতি ছিল। তখন গাজায় কিছু ত্রাণসামগ্রী ঢুকেছে। তা বিতরণ করার নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। কিছু মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভবও হয়েছে। কিন্তু ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ‘দুঃখের বিষয় হলো, এ বিষয়ে যতটা এগোনো জরুরি ছিল তা হয়নি।’ ডব্লিউএফপি বলছে, ‘নতুন করে লড়াই শুরু হওয়ায় ত্রাণ বিতরণ করা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে কর্মীদের জীবন বিপন্ন হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, এর ফলে বেসামরিক সাধারণ মানুষ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। গাজায় ২০ লাখ মানুষের বেঁচে থাকার সম্বল হলো এই ত্রাণের খাদ্যশস্য।’

সংস্থাটি বলেছে, ‘আমাদের কর্মীদের জন্য গাজা ভূখণ্ডে নিরাপদ, বাধাহীন ও দীর্ঘকালীন যাতায়াতের ব্যবস্থা চাই। তাহলেই তারা মানুষের কাছে জীবনদায়ী ত্রাণ পৌঁছে দিতে পারবে। একমাত্র দীর্ঘস্থায়ী শান্তি হলেই এই মানবিক বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। ডব্লিউএফপি তাই দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি এবং সমস্যার একটি রাজনৈতিক সমাধান চায়। এদিকে গাজা থেকে যারা মুক্তি পেয়েছেন এবং যারা এখনও হামাসের হাতে বন্দি, তাদের ও তাদের পরিবারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত দুই মাসের মধ্যে এটিই প্রথম বৈঠক। এ বৈঠকে যথেষ্ট উত্তেজনা ছিল।

নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমি এমন কাহিনি শুনেছি, যাতে আমার মন ভেঙে গেছে। আমি ক্ষুধা ও তৃষ্ণার, শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের কাহিনি শুনেছি। যৌন নির্যাতন ও ভয়ঙ্কর ধর্ষণের কথাও শুনেছি। মুক্তি পাওয়া বন্দিরা এই কাহিনি শুনিয়েছেন।’ ইসরায়েলের মিডিয়া জানিয়েছে, এই বৈঠকে যথেষ্ট উত্তেজনা ছিল এবং শেষের দিকে প্রায় অর্ধেক মানুষ বৈঠক ছেড়ে চলে যায়। দানি মিরানের মেয়ে এখনো হামাসের হাতে বন্দি। তিনি ইসরায়েলের টেলিভিশনে বলেছেন, ‘বৈঠকে কী হয়েছে তা আমি বিস্তারিত বলব না। শুধু এটুকু জানাব, পুরোটা ছিল কুৎসিত, অপমানকর এবং অগোছালো।’ তিনি বলেন, ‘সরকার দাবি করছে, তারাই সবকিছু করেছে; কিন্তু হামাস নেতা ইহাইয়া সিনওয়ার আসলে আমাদের মানুষের ফেরত দিয়েছেন। যখন সরকার দাবি করছে, তাদের নির্দেশে সবকিছু হয়েছে, তখন আমরা রাগ সামলাতে পারিনি। ওরা একটাও নির্দেশ দিতে পারেনি।’ জেনিফারের পার্টনার অ্যান্ড্রে এখনো বন্দি। তিনি জানিয়েছেন, ‘বৈঠক ছিল রীতিমতো উত্তেজক। অনেকেই সেখানে চিৎকার করেছেন।

অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আক্রমণ করে হামাস ভয়ঙ্কর যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। বিশ্ব এটাকে উপেক্ষা করতে পারে না। সব সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ীদের এই যৌন নির্যাতনের নিন্দা করতে হবে।’ তার দাবি, ‘হামাস ইসরায়েলের মেয়েদের ওপর অত্যাচার করেছে, তারপর হত্যা করেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। যারা বেঁচে ফিরেছেন, তারা এ ভয়ঙ্কর কাহিনি আমাদের জানাচ্ছেন।’


banner close