বিশ্বকে সবচেয়ে বেশি দূষিত করায় দায়ী ধনীদের ১ শতাংশ। এই ১ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৮ কোটি মানুষ ৬৬ শতাংশ গরিব জনগোষ্ঠী অর্থাৎ প্রায় ৫০০ কোটি মানুষের চেয়েও বেশি কার্বন নিঃসরণ করেন।
অলাভজনক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান অক্সফাম ও স্টকহোম এনভায়রনমেন্ট ইনস্টিটিউটের যৌথ এক গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। ব্রিটিশ কনফেডারেশন অক্সফাম সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের।
সংস্থাটি বলেছে, মাত্র ১ শতাংশ ধনী ২০১৯ সালে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করেছেন; সেই পরিমাণ কার্বণ নিঃসরণ দুই-তৃতীয়াংশ গরিব মানুষও করেননি।
অত্যন্ত ধনী ব্যক্তিদের লাইফস্টাইল এবং দূষণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানে তাদের বিনিয়োগ নিয়ে গবেষণাটি করে অক্সফাম।
অক্সফাম তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ‘অত্যন্ত ধনীরা বিশ্বকে ধ্বংসের কাছাকাছি নেয়ার মতো দূষিত করছেন। তাদের কারণে মানব সভ্যতা অত্যন্ত উষ্ণতা, দমবন্ধকর পরিস্থিতি, বন্যা এবং খরায় পড়েছে।’
অক্সফামের এ প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, ২০১৯ সালে বিশ্বের সব গাড়ি এবং যোগাযোগের অন্যান্য বাহন যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করেছে, তার চেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণে দায়ী ১ শতাংশ ধনী ব্যক্তি। এ ছাড়া সে বছর বিশ্বে যে পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ হয়েছে তার অর্ধেক হয়েছে বিশ্বের ১০ শতাংশ ধনীর কারণে।
অক্সফাম আহ্বান জানিয়েছে, ধনীরা বিশ্বের যে ক্ষতি করেছেন সেটির ক্ষতিপূরণ হিসেবে তাদের ওপর যেন বিশেষ কর আরোপ করা হয় এবং সেই করের অর্থ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করা হয়।
ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত ঐতিহাসিক নিদর্শন ভারতের তাজমহলের প্রধান গম্বুজ ফুটো হয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে বলে জানা গেছে। গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়ে গেছে তাজমহল প্রাঙ্গণের বাগান। বার্তা সংস্থা পিটিআই এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া তাজমহল প্রাঙ্গণের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা গেছে, স্মৃতিস্তম্ভের একটি বাগান বৃষ্টির পানিতে থই থই করছে।
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) আগ্রা সার্কেলের সুপারিনটেনডিং চিফ রাজকুমার প্যাটেল পিটিআইকে বলেন, ‘আমরা তাজমহলের মূল গম্বুজে একটি ফুটো দেখেছি। ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় এই ফুটোর সৃষ্টি হয়েছে। তবে এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, প্রথম বিষয়টি তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তার নজর আসে। তিনি তাজমহলের মূল গম্বুজ বা ডোম, (যেখানে সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মুমতাজের সমাধি রয়েছে) তার ছাদ ভেজা লক্ষ্য করেন। তিনি অনুমান করেন, হয়তো ছাদে সূক্ষ্ম ফাটল ধরেছে। সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি তাজমহল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ায় (এএসআই) খবর দেওয়া হয়।
মূলত তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণ করে এএসআই। ইতোমধ্যে তারা এ বিষয়ে কমিটি গঠন করেছে বিষয়টির ওপরে নজরদারি করার জন্য।
আগ্রা সার্কেলের এএসআই-এর সুপারেনটেন্ডিং আর্কিওলজিস্ট রাজকুমার প্যাটেল জানান, ‘প্রথমে প্রধান গম্বুজের ছাদ ফাটল ধরেছে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ছোট একটি ফুটো দিয়ে কোনোভাবে ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ছে। মূল অংশে কোনো ক্ষতি হয়নি। ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে আমরা পরীক্ষা করেছি। টানা জল পড়ছে নাকি কখনো কখনো, তাও দেখা হচ্ছে।’
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, গত তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে আগ্রায়। এ কারণে শহরজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে একটি জাতীয় সড়ক, ফসলি জমি ও আশপাশের উঁচু এলাকা।
তাজমহলকে বিশ্বঐতিহ্য ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো। এই দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিস্তম্ভটি ১৬৩২ থেকে ১৬৫৩ সালে মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজ মহলের সমাধির ওপর নির্মাণ করেন। সাদা মার্বেলের কমপ্লেক্সে একটি বিশাল গম্বুজ, মিনার, বাগান ও একটি প্রতিফলিত পুল রয়েছে। স্থাপনাটিতে পারস্য, ইসলামিক ও ভারতীয় শৈলীর মিশ্রণ ঘটেছে। এটিকে মুঘল স্থাপত্যের একটি অনন্য কৃর্তি। সারা বিশ্ব থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটকরা এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সফররত রাশিয়ার নিরাপত্তা প্রধান সের্গেই শোইগু বৈঠক করেছেন। পরমাণু শক্তিধর দেশটিতে সফরকালে তিনি এই বৈঠক করেন। আজ শনিবার পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই কথা জানিয়েছে। খবর এএফপির।
রাশিয়া ৩০ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রাখায় মস্কোর গোলাবারুদ পাওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে শোইগু এই সফরে আসেন। তিনি এমন এক সময় এই সফরে আসলেন যখন পশ্চিমাবিশ্ব মস্কোতে অস্ত্র পাঠানোর জন্য পিয়ংইয়ংকে অভিযুক্ত করছে।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত জুন মাসে উত্তর কোরিয়া সফর করেন এবং দেশটির সঙ্গে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সংলাপকে আরও জোরদার এবং পারস্পরিক নিরাপত্তার স্বার্থ রক্ষায় এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির জন্য সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
গণমাধ্যম আরও জানায়, কিম নিশ্চিত করেছেন, জুন মাসে তারা স্বাক্ষরিত চুক্তির ভিত্তিতে ডিপিআরকে সরকার রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা এবং সাহায্য আরও জোরদার করবে।
রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদও তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, কিমের সঙ্গে শোইগুর বৈঠক প্রতিরক্ষা চুক্তির বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
শোইগু গত মে মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পর রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হন। বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস করে আসছেন যে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে মোতায়েন করা হয়েছে।
আল-কায়েদার প্রয়াত প্রধান ওসামা বিন লাদেনের ছেলে হামজা বিন লাদেন এখনো জীবিত রয়েছেন। তিনি আত্মগোপনে থেকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী আল–কায়েদার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বরাতে স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য মিরর ইউএস।
গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের একটি এলাকায় হামজা বিন লাদেন আত্মগোপনে আছেন। সেখান থেকে তিনি ভাই আবদুল্লাহ বিন লাদেনসহ আল-কায়েদার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তালেবানবিরোধী সামরিক জোট দ্য ন্যাশনাল মোবিলাইজেশন ফ্রন্টের (এনএমএফ) দাবি, আফগানিস্তানের পঞ্জশির প্রদেশের দারা আবদুল্লাহ খেল জেলায় আছেন হামজা বিন লাদেন। সেখানে ৪৫০ জন আরব ও পাকিস্তানি তার নিরাপত্তা দিচ্ছেন। হামজা বিন লাদেনের নেতৃত্বে আল-কায়েদা আবার সংগঠিত হয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর অবস্থান নিশানা করে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে সতর্ক করেছে এনএমএফ।
এর আগে জানা গিয়েছিল, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের এক বিমান হামলায় হামজা বিন লাদেন নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশে হামলার আহ্বান জানিয়ে হামজা বিন লাদেনের দেওয়া একটি অডিও–ভিডিও বার্তা প্রকাশিত হওয়ার পরই মার্কিন হামলায় তার নিহত হওয়ার খবর জানা যায়। উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক সন্ত্রাসের তালিকায় নাম আছে হামজা বিন লাদেনের।
২০১১ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন বাহিনীর এক অভিযানে নিহত হন ওসামা বিন লাদেন। এরপর আল-কায়েদার প্রধানের দায়িত্ব পান আয়মান আল-জাওয়াহিরি। হামজা বিন লাদেন জাওয়াহিরির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছিলেন বলে জানা যায়। ২০২২ সালের জুলাই মাসে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন জাওয়াহিরি।
প্রথমবারের মতো পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাঁচামাল বা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত ইউরেনিয়ান সমৃদ্ধ করার একটি কেন্দ্রের ভেতরের অবস্থার একটা ঝলক বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিল উত্তর কোরিয়া। আজ শুক্রবার এই ছবি প্রকাশ করা হয়।
পারমাণবিক বোমার জন্য জ্বালানি উৎপাদন করে সেন্ট্রিফিউজ। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন দেশটির একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করার পর সেন্ট্রিফিউজের ছবি প্রকাশ করা হলো। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণকেন্দ্র পরিদর্শনকালে কিম জং-উন তার দেশের পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার আহ্বান জানান। এ জন্য তিনি আরও বেশিসংখ্যক পারমাণবিক বোমার উপকরণ উৎপাদন করতে বলেন।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, কিম জং-উন পারমাণবিক অস্ত্রবিষয়ক প্রতিষ্ঠান (নিউক্লিয়ার উইপনস ইনস্টিটিউট) পরিদর্শন করেছেন। এ ছাড়া তিনি পারমাণবিক বোমার উপকরণ তৈরির একটি ঘাঁটি পরিদর্শন করেন।
প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো সেন্ট্রিফিউজের ছবি প্রকাশ করা হয়। ছবিতে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রমের অন্তরালের বিরল দৃশ্য উঠে আসে।
উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কার্যক্রমের ওপর জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, ধাতব সেন্ট্রিফিউজের লম্বা সারির মাঝ দিয়ে হাঁটছেন কিম। এই যন্ত্রগুলো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজে ব্যবহার করা হয়।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কবে, কখন ওই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণকেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন, তা প্রতিবেদনে স্পষ্ট করা হয়নি। এ ছাড়া কেন্দ্রের অবস্থান সম্পর্কেও কিছু বলা হয়নি।
কেন্দ্রের কর্মীদের আরও বেশি কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের উপকরণ তৈরির আহ্বান জানান কিম জং-উন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের হুমকি মোকাবিলার জন্য উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিম জং-উন আরও বলেন, আত্মরক্ষা ও আগাম আক্রমণের সক্ষমতা অর্জনের জন্য এই অস্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার বেশ কিছু ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে সুপার টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৭ জনে।আজ বৃহস্পতিবার দেশটির সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর এএফপির।
তবে এখনো প্রায় ১২৮ জন নিখোঁজ রয়েছে এবং আড়াই লাখ হেক্টরেরও বেশি জমির ফসল ধ্বংস হয়ে গেছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে কর্মরত দুর্যোগ কর্মকর্তারা একটি অফিশিয়াল রিপোর্টে এ তথ্য জানিয়েছেন। দেশটির উত্তরাঞ্চলে আঘাত হানা এই ঘূর্ণিঝড়কে চলতি বছর আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত শনিবার ভিয়েতনামে আঘাত হানে সুপার টাইফুন ইয়াগি। এরপর বিভিন্ন স্থানে বন্যা ও ভূমিধসের বিষয়ে সতর্ক করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সময় রোববার হোয়া বিনহ প্রদেশে একটি বাড়ির ওপর পাহাড় ধসে পড়ার ঘটনায় একই পরিবারের চার সদস্য নিহত হন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ভিএনইএক্সপ্রেস জানায়, ইয়াগির প্রভাবে কয়েক ঘণ্টা টানা বৃষ্টিপাতের পর মধ্যরাতের দিকে ভূমিধসের ঘটনা ঘটে।
এর আগে চীনের হাইনানে ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া নিয়ে আঘাত হানে টাইফুন ইয়াগি। সেখানেও হতাহতের ঘটনা ঘটে। ইয়াগির প্রভাবে ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটারের (১৪৩ মাইল) বেশি বেগে ঝোড়ো বাতাস বয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে যায়।
মাঙ্কিপক্সের (এমপক্স) টিকা উৎপাদন করবে চীন। এ জন্য দেশের একটি প্রতিষ্ঠানকে টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমতি দিয়েছে চীনের শীর্ষ ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ। মাঙ্কিপক্স প্রতিরোধে চীনের প্রথম এই টিকা উৎপাদন করে সিনোফার্ম।
টিকা সাধারণত বাজারে আসার অনুমোদন পাওয়ার আগে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের তিনটি ধাপের মধ্য দিয়ে যায়। প্রক্রিয়াটি কয়েক বছর, এমনকি কয়েক দশকও সময় নিতে পারে। তবে চীনের শীর্ষ ওষুধ নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল মেডিকেল প্রোডাক্টস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জরুরি প্রয়োজনে কিছু টিকার পরীক্ষার গতি বাড়ানোর ব্যবস্থাও রেখেছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নতুন টিকাটি মডিফায়েড ভ্যাকসিনিয়া আঙ্কার (এমভিএ) নামের একটি স্ট্রেইনের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এটি ২০১৯ সালে তৈরি করা যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ প্রশাসনের অনুমোদিত বিশ্বের প্রথম এমপক্স ভ্যাকসিন জাইনিয়সের মতোই কাজ করবে।
করোনা মহামারির সময় সিনোফার্ম চীনে প্রথম কোভিড-১৯ টিকার উৎপাদন করেছিল। সেই সংস্থাটিই এখন মাঙ্কিপক্সের টিকা তৈরি করতে যাচ্ছে।
মাঙ্কিপক্সের টিকার ব্যাপারে সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রাক-ক্লিনিকাল গবেষণায় টিকাটি নির্ভরযোগ্য ও স্থিতিশীল বলেই মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মানুষ ছাড়া কিছু প্রাইমেটের মধ্যে টিকার কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়েছে।
সোমবার চীনা যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাটে সিনোফার্ম বলেছে, চীনে বর্তমানে কোনো অনুমোদিত মাঙ্কিপক্স টিকা নেই। সিনোফার্মের নতুন টিকা দেশে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র: গ্লোবাল টাইমস
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান আজ বুধবার ঘনিষ্ঠ মিত্রদেশ ইরাক সফরে গেছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর মাসুদ পেজেশকিয়ান এই প্রথম বিদেশ সফরে গেলেন। ইরানের বার্তা সংস্থা ইরনার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী ২০০৩ সালে ইরাকে হামলা চালায়। এই হামলায় ইরাকের সাদ্দাম হোসাইন সরকারের পতন হয়। এর পর থেকে ইরাকে অব্যাহতভাবে নিজেদের প্রভাব বাড়িয়ে চলছে তেহরান। বর্তমানে ইরাকে ইরান-সমর্থিত বেশ কয়েকটি দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয়।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, পেজেশকিয়ান তার এই সফর সামনে রেখে বলেন, তেহরান ও বাগদাদের মধ্যে বেশ কিছু চুক্তি সইয়ের পরিকল্পনা আছে। তিনিসহ তার সফরসঙ্গীরা ইরাকের রাজধানী বাগদাদে দেশটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে সুপার টাইফুন ইয়াগির আছড়ে পরার কয়েক দিন পর রাজধানী হ্যানয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। লাল নদীর পানি ক্রমাগত বাড়তে থাকায় তীরবর্তী হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইয়াগির আঘাতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই খবর জানিয়েছে।
চলতি বছরের এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন ইয়াগি। এটি এখন পর্যন্ত বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিশালী টাইফুনও। টাইফুনটি শনিবার উত্তরাঞ্চলীয় উপকূলে আছড়ে পরার পর পশ্চিম দিকে সরে যাওয়ার সময় ঝড়ো হাওয়া ও ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। চলতি সপ্তাহে হং নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী রাজ্যগুলোতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। একটি সেতুও ভেঙ্গে গেছে।
হ্যানয়ের বাসিন্দা ৪২ বছর বয়সি ট্রান লে কুয়েন রয়টার্সকে বলেন, ‘৩০ বছরের মধ্যে আমার দেখা সবচেয়ে খারাপ বন্যা এটি। গতকাল সকালেও সব শুকনো ছিল। এখন পুরো রাস্তা ডুবে আছে। গত রাতে আমরা ঘুমাতে পারিনি।’
সরকারের অনুমান, টাইফুন এবং পরবর্তী ভূমিধস ও বন্যায় ১৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময় নিখোঁজ হয়েছেন আরও ১৪০ জন।
সরকার ও রাষ্ট্রীয় মিডিয়া জানিয়েছে, হ্যানয়ের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরো সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে নিচু এলাকার হাজার হাজার বাসিন্দাকে।
লাল নদীর তীরবর্তী একটি এলাকায় বসবাস করেন ৫৬ বছর বয়সী নগুয়েন ভ্যান হাং। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি এখন নদীর অংশ হয়ে গেছে।’
কর্তৃপক্ষ বন্যার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করার পর মঙ্গলবার শহরের কেন্দ্রের কাছাকাছি দাতব্য সংস্থা ব্লু ড্রাগন চিলড্রেনস ফাউন্ডেশনকে তাদের অফিস খালি করতে হয়েছিল। নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাসকারী কয়েক ডজন শিশু ও পরিবার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখপাত্র কার্লোটা টরেস লিরো। তিনি বলেন, ‘লোকজন উন্মত্তভাবে চলাফেরা করছিল। তারা মোটরবাইক সরিয়ে নিচ্ছিল। জিনিসপত্র স্থানান্তর করছিল।’
জম্মু ও কাশ্মীরে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তিন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ওই অঞ্চলের কাঠুয়া জেলার উধমপুর এলাকায় এক অভিযানের সময় এ ঘটনা ঘটে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়েছে, বুধবার সেনাবাহিনীর বিশেষ বাহিনী এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় একটি সন্ত্রাসী দলের সঙ্গে তাদের বন্দুকযুদ্ধ হয়। এ সময় তিন সন্ত্রাসবাদীকে গুলি করে হত্যা করে যৌথ আভিযানিক দল।
একটি সূত্র জানিয়েছে, অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি প্যারা ইউনিট, ২২ গাড়ওয়াল রাইফেলস ও জম্মু ও কাশ্মীরে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) অংশ নিয়েছিল।
নিহতের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। বুধবার অভিযানের কথা বলা হলেও ঠিক কখন এটি হয়, সেটিও এনডিটিভির খবরে উল্লেখ করা হয়নি।
আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দফায় ভোট হবে জম্মু ও কাশ্মীরে। তাই অঞ্চলটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মীরের আখনুর সেক্টরে পাকিস্তানি বাহিনীর বিনা উস্কানিতে গুলিবর্ষণে একজন বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) জওয়ান আহত হন। এরপর থেকেই যৌথ বাহিনী বিভিন্ন এলাকায় টহল ও অভিযান চালাচ্ছে।
বিএসএফ জানিয়েছে, সেনারা উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সীমান্তটি প্রায় ৩ হাজার ৩২৩ কিলোমিটার প্রসারিত। পুরো অঞ্চলে বিভিন্ন স্তরের উত্তেজনা ও নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
মার্কিন সিনেটর ডিক ডারবিন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সমর্থন দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। গত সোমবার সিনেটে এক বক্তৃতায় তিনি এ অনুরোধ জানান।
এক বিবৃতিতে ডিক ডারবিনের দপ্তর জানায়, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। সিনেটে বক্তৃতায় তিনি ড. ইউনূসের ক্ষুদ্র ঋণ কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করেন, যা উন্নয়নশীল দেশে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোকে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ করে দেয়।
বক্তৃতায় ডারবিন বলেন, ‘আমি তাকে (ড. ইউনূস) পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছি। আমি তাকে বিশ্বাস করি, ২০ বছর আগেও করেছি এবং আজও করি। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতিও তাকে সমর্থন করার জন্য অনুরোধ করছি। আমি জানি ড. ইউনূসের হৃদয়ে বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয় রয়েছে এবং এ চ্যালেঞ্জিং সময়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবেন।’
ডারবিন তার বক্তব্য শুরু করেন বাংলাদেশে সফরের কথা (২০ বছর আগে) স্মরণ করে। তখন তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে প্রথম দেখা করেন। তিনি বলেন, ড. ইউনূস এমন একটি তত্ত্ব নিয়ে আসেন, যার মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের সাহযোগিতা করার কথা ভেবেছিলেন। এটি ক্ষুদ্রঋণ নামে পরিচিত এবং তিনি ‘গ্রামীণ ব্যাংক, জনগণের ব্যাংক’ নামে কিছু তৈরি করেন।
ডারবিন আরও বলেন, ড. ইউনূসের ধারণা বিশ্বকে বদলে দিয়েছে এবং তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেতে সাহায্য করেছে। দুঃখজনকভাবে তার ধারণাগুলোর কারণে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আক্রোশেরও শিকার হন। তাকে বছরের পর বছর ধরে সন্দেহজনক আইনি অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করে জেলহাজতের হুমকি দেওয়া হয়।
ডারবিন বলেন, ‘গত মাসে আমার বিস্ময়ের কথা কল্পনা করুন... জনগণের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে হাসিনা অবশেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং যে ছাত্ররা বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছেন তারা দাবি করেন যে তাদের দেশের নেতা হবেন কেবল ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
‘আমি তার সৌভাগ্যের কথা শুনে তাকে (ড. ইউনূস) ফোন করি। তিনি উচ্ছ্বসিত ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে দেশের মানুষ এখন এই ঐতিহাসিক সুযোগে কাজে লাগাতে প্রস্তুত।’
ডারবিন জুলাই মাসে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হয়রানির নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশে তিন সহকর্মীর নেতৃত্ব দেন। এতে তিনি তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি ডক্টর ইউনূসের সঙ্গে দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে এবং তার বিরুদ্ধে আনা সন্দেহজনক অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল, অর্থনৈতিক সংলাপের পরিকল্পনা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে অর্থনৈতিক সংলাপ শুরুর পরিকল্পনা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করার কাজে সহায়তার অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে এই সংলাপের পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গতকাল মঙ্গলবার ব্রিটিশ গণসংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের অর্থনৈতিক সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে। মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সংলাপে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, মার্কিন প্রতিনিধিদলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ, পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য দপ্তর ও ইউএসএইডের কর্মকর্তাদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। সংলাপে বাংলাদেশের আর্থিক ও মুদ্রানীতির পাশাপাশি আর্থিক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হবে। পাশাপাশি মার্কিন কর্মকর্তারা বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
মার্কিন রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়নবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যান বলেছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক দুর্বলতা মোকাবিলা ও নিরবচ্ছিন্ন প্রবৃদ্ধি এবং উন্নয়ন নিশ্চিতে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করতে পারবে বলে যুক্তরাষ্ট্র আশাবাদী।
তিনি আরও বলেন, আইএমএফ এবং অন্য আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের নিরবচ্ছিন্ন সম্পৃক্ততার জন্য মার্কিন সমর্থন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে ওয়াশিংটন। কারণ বাংলাদেশ আর্থিক খাতের সংস্কার গভীরতর করে আর্থিক টেকসইমূলক উন্নতি এবং দুর্নীতি হ্রাস করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জোরদার করতে চায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত
বাসস জানায়, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করতে ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ছাত্র-নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে দেশটির সম্পৃক্ততার জল্পনা-কল্পনা দৃঢ়তার সঙ্গে নাকচ করে দিয়েছে।
সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল ওয়াশিংটনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘আমরা বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার এ সময়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ও আগ্রহী।’
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তবে তিনি দেশটিতে সাম্প্রতিক বিক্ষোভে বিদেশি প্রভাব সম্পর্কিত দাবির বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
ছাত্র বিক্ষোভে চীনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে প্যাটেল জবাব দেন, ‘আমি শুধু শুধু অনুমান করতে যাচ্ছি না।’
এ সময় একজন সাংবাদিক বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক মৈত্রী তুলে ধরে কিছু ভারতীয় মিডিয়া আউটলেট সরকারবিরোধী বিক্ষোভে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনেছে বলে উল্লেখ করেন।
জবাবে প্যাটেল দৃঢ়ভাবে এ দাবিগুলো নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘আমি সেই প্রতিবেদনগুলো দেখিনি; কিন্তু আমি যা দ্ব্যর্থহীনভাবেই বলতে পারি তা হলো, সেগুলো (প্রতিবেদনগুলো) সত্য নয় আর সম্ভবত সে কারণেই আমি সেগুলো দেখিনি।
ভারতের মণিপুর রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কারণে কারফিউ জারি করেছে সরকার। রাজ্যের তিন জেলা পূর্ব ইম্ফল, পশ্চিম ইম্ফল ও থাউবাল জেলায় আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে সর্বাত্মক কারফিউ চলবে।
কারফিউর আওতামুক্ত থাকবে স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, গণমাধ্যম। পৌরসভার কর্মী ও আদালতের কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিসহ অত্যন্ত জরুরি পরিষেবাগুলোও কারফিউর আওতামুক্ত থাকবে।
এর আগে গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) থৌবাল জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আহন্থেম সুভাষ সিং ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস) আওতায় (সেকশন ১৬৩) একটি নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। আদেশটিতে কোনো ব্যক্তি কোনো ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র বা অস্ত্র বহন করতে পারবে না বলে উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের সভা-সমাবেশে জমায়েত নিষিদ্ধ করে। আদেশ লঙ্ঘনকারীদের জরিমানা প্রয়োগের বিধান আছে এ আইনে।
সোমবার ‘অল থাউবাল অপুনবা স্টুডেন্ট’ আয়োজিত একটি সমাবেশের পর এ সিদ্ধান্ত নেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আহন্থেম সুভাষ সিং।
একটি সরকারি সূত্র টিওআইকে জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বিজেপি, নাগা পিপলস ফ্রন্ট ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি) সমন্বিত ক্ষমতাসীন জোটের বিধায়কদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। এরপর তিনি রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল এল আচার্যের সঙ্গে দেখা করে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাকে জানান।
গত শুক্রবার মণিপুরে সহিংসাত ছড়িয়ে পড়ে। সন্দেহভাজন জঙ্গিরা দূরপাল্লার রকেট নিক্ষেপ করার পর সহিংসতা শুরু হয়। ইম্ফল উপত্যকার বিষ্ণুপুর জেলার মইরাংয়ে সন্ত্রাসীরা এক পুরোহিতকে হত্যা করে। রকেট হামলার ঘটনায় আহত হন ৫ জন। ঘটনাটি ঘটে জিরিবাম থেকে ২০০ কিলোমিটার পূর্বে।
পরদিন শনিবারও সহিংসতা চালায় সন্ত্রাসীরা। তারা জিরিবামের নুংচাপ্পি গ্রামে হামলা চালিয়ে ইউরেম্বাম কুলেন্দ্র সিং নামে এক ব্যক্তিকে হত্যা করে। এরপর রসিদপুর গ্রামের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় তাদের প্রতিরোধ করে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা। এ সময় সংঘর্ষে বাসপতিময়ুম লক্ষী কুমার শর্মা নামে এক ব্যক্তি নিহত হন।
খবর পেয়ে জিরিবাম পুলিশের এসপি ও তার দল ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। ব্যাপক গোলাগুলির মধ্যে পড়েন তারা। ঘটনার পর পুলিশ তিনটি মরদেহ উদ্ধার করে।
মণিপুরের আইজি (গোয়েন্দা) কে কাবিব বলেছেন, নিহত ব্যক্তিদের তারা ‘সন্দেহজনক দুর্বৃত্ত’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এ ছাড়া রাজ্যে সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনাগুলোর কারণে, মণিপুর পুলিশ যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেলা সদরে রয়েছেন এবং পরিস্থিতি মনিটর করছেন।
সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মৌমাছি মোতায়েন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়ায় বাংলাদেশ সীমান্তে মৌমাছির কৃত্রিম চাক স্থাপন করেছে তারা।
আজ সোমবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ-১৮ এর প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলছে, গত সপ্তাহে বিএসএফের ১০ থেকে ১২ জওয়ান নদীয়া জেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম কাদিপুর জড়ো হন। সেখানে তাদের মৌমাছি চাষ শিখতে দেখা যায়। সে সময় তাদের মাথা ও মুখমণ্ডলে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরা ছিল।
সংবাদমাধ্যমটিতে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সীমান্ত বেড়ায় বেশ কয়েকটি মৌ-বাক্স ঝুলিয়ে রাখা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৬ কিলোমিটার সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে বিএসএফের ৩২ নম্বর ব্যাটালিয়ন। তারা এসব বাক্স ঝুলিয়ে রেখেছে।
তাদের আশা, যদি কোনো বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী বা দুই দেশের কোনো চোরাকারবারি কাঁটাতারের কাছে আসে তাহলে মৌমাছি তাদের ওপর আক্রমণ করবে।
এ বিষয়ে বিএসএফের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছেন তারা। সেখানে অনুপ্রবেশ বা চোরাচালান প্রায় শূন্যের কাছাকাছি চলে এসেছে।
৩২ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট সুজিত কুমার বলেছেন, এক বছরেরও কম সময় আগে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে আমরা মৌমাছি পালন করা শুরু করি। এটি ছিল গ্রাম উন্নয়নে সরকারের একটি প্রকল্প। সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কী করা যায় সেই চিন্তা থেকে আমার মাথায় আসে মৌমাছি চাষের বাক্সগুলো কাঁটাতারের বেড়ায় রাখা যায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়ই দেখি কাঁটাতার কেটে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটে। এ ছাড়া গরু চোরাচালানসহ অন্য বিভিন্ন বিষয় ঘটে। আমরা খুবই অবাক হয়েছি যে সীমান্তে এসব বাক্স রাখার পর সেখানে অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালান শূন্যের কাছাকাছি চলে এসেছে।’
একটি ইউনিট এ উদ্যোগে সফলতা পাওয়ার পর অন্যান্য ইউনিটও একই রকম ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন বিএসএফের এক কর্মকর্তা। আর যেসব জওয়ানকে মধুচাষ শেখানো হবে তারা অবসরের পরও জীবিকার জন্য এটি করতে পারবেন।
এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে সীমান্তে অপরাধের ঘটনাও কমেছে। কাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা জ্যোতি মণ্ডল বলেন, অনেক অপরাধী সীমান্ত বেড়ার আশপাশে অবস্থান করত ও বিভিন্ন অপরাধ করে নিজেদের এলাকায় পালিয়ে যেত। এখন মৌমাছি থাকার কারণে সীমান্তে ছোটখাটো অপরাধের প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে।
ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলে শক্তিশালী টাইফুন ইয়াগির তাণ্ডবে ৫৯ জনের প্রাণহানি হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। আজ সোমবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ইয়াগি চলতি বছর এশিয়ার কোনো দেশে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন। এর প্রভাবে আরও বন্যা ও ভূমিধসের সতর্কবার্তা দিয়েছে ভিয়েতনামের আবহাওয়া অধিদপ্তর। ভিয়েতনামের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, নিহত-নিখোঁজের ঘটনাগুলোর বেশির ভাগ ঘটেছে ইয়াগির প্রভাবে ভূমিধস ও বন্যার কারণে।
গত শনিবার ভিয়েতনামের উত্তর-পূর্ব উপকূলে টাইফুনটি আঘাত হানে। এলাকাটিতে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি কোম্পানির কারখানা রয়েছে। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গতকাল রোববার টাইফুন ইয়াগি শক্তি হারিয়ে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় নিম্নচাপে রূপ নেয়।
ভিয়েতনামের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটির উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় ২০৮ থেকে ৪৩৩ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। ইয়াগির প্রভাবে আরও বন্যা ও ভূমিধস হতে পারে।
ইয়াগির আঘাতে ভিয়েতনামের লাখো ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। বিভিন্ন মহাসড়ক পানিতে তলিয়ে যায়। ব্যাহত হয় টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা। একটি মাঝারি আকারের সেতু ধসে পড়েছে। বহু গাছপালা উপড়ে পড়েছে। থমকে গেছে বিভিন্ন শিল্প এলাকার কার্যক্রম।
ভিয়েতনামে দক্ষিণ কোরিয়ার ব্যবসায়ী সংগঠনের চেয়ারম্যান হং সান বলেন, দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ার কারখানাগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে।