শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন

প্রায় ২শ ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকেছে গাজায়

ক্যাপশন: ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় শুক্রবার ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ ১৪:৪১

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির প্রথম দিন ১৯৬টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ফিলিস্তিন শাখা (পিআরসিএস) এ তথ্য জানিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় শুক্রবার পিআরসিএস জানিয়েছে, ‘শুক্রবার গাজায় মোট ১৯৬টি ত্রাণ ও সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাক রিসিভ করেছে পিআরসিএস। এসব ট্রাকের ৮টিতে ওষুধ ও মেডিকেল পণ্য, চারটি ট্রাকে হাসপাতাল শয্যা এবং বাকিগুলোতে খাদ্য, পানি ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী রয়েছে।’

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় গত দেড় মাসে এই প্রথম এক দিনে এত বেশিসংখ্যক ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করল। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের অতর্কিত হামলা চালানোর পর ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। পরে ১৬ অক্টোবর থেকে অভিযানে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলা চালানোর দিন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে গিয়েছিলেন হামাসের যোদ্ধারা। এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১০৪ জন। বাকি ১৩৮ জনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিক রয়েছেন।

অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান ও স্থল বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর-কিশোরীদের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। টানা প্রায় দেড় মাস যুদ্ধ চলার পর নভেম্বরের মাঝামাঝি কাতারের মাধ্যমে ইসরায়েলের সরকারকে একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় হামাস। সে প্রস্তাবে বলা হয়, ইসরায়েল যদি গাজা উপত্যকায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে, রাফাহ ক্রসিংয়ে অপেক্ষারত ত্রাণ, জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে প্রবেশ করতে দেয় এবং ইসরায়েলি কারাগারগুলো থেকে অন্তত ১৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা জিম্মিদের মধ্য থেকে ৫০ জনকে ছেড়ে দেবে হামাস।

প্রথমদিকে এই শর্ত আমলে না নিলেও পরে ইসরায়েলের নাগরিক, জিম্মিদের পরিবারের সদস্য ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে গত ২১ নভেম্বর সেই প্রস্তাবে সায় দেয় প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা।

বিষয়:

বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব গণতন্ত্র চায় ভারত-যুক্তরাষ্ট্র: এরিক গারসেটি

ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইরিক গারসেটি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত- দুই দেশই যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইরিক গারসেটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউআইওএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এই রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতন্ত্রই বাংলাদেশে নতুন অধ্যায় খুলে দিতে পারে।

বৈশ্বিক অঙ্গণে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের একসঙ্গে কাজ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা অতীতের কোনো বিষয় না, বর্তমানে তারা যেভাবে একসঙ্গে কাজ করছে, এর আগে কখনোই এমনটি ঘটেনি।’

এই প্রথম বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেছেন ভারতে নিযুক্ত এই মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

ইরিক গারসেটি বলেন, আমরা দুই দেশই শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া দেখতে চাই। এই নীতিতে একমত ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। আমরা এই নীতির ভাগিদার।

এ ক্ষেত্রে দুই দেশ সমন্বয় করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এই রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই- বাংলাদেশ কিংবা যে কোনো দেশই হোক না কেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা উচিত না। আমরা মনে করি, আমাদের একটি সুযোগ আছে।


শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ

টিউলিপ সিদ্দিক। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের ইকোনোমিক সেক্রেটারির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ নিজেই এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।

টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে।

জানা গেছে, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নিয়ে ব্যাপক চাপের মুখে ছিলেন তিনি।

এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান মঙ্গলবার তার পদত্যাগের বিষয়টি জানিয়েছে।

টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান তিনি। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।

লন্ডনে হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া ছাড়াও; সাবেক এক বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিট নিয়েছিলেন টিউলিপ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এসবের মধ্যে দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল। তারা বলছিল, টিউলিপের ওপর ব্রিটেনের দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারই নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছে। এতে তিনি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনের নৈতিকতা হারিয়েছেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি।


ইসরাইল ধ্বংস করেছে গাজার শিক্ষা ব্যবস্থা: মালালা

মালালা ইউসুফজাই। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সবচেয়ে কম বয়সে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই বলেছেন, গাজার শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাইল। এছাড়া তিনি আফগানিস্তানে তালেবান শাসনকে বৈধতা না দিতেও মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

পাকিস্তানের প্রভাবশালী ‘ডন’ পত্রিকা এই খবর জানিয়েছে।

ইসলামাবাদে ‘মুসলিম সম্প্রদায়ের নারী শিক্ষা: চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে মালালাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা মন্ত্রীরা অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালে পাকিস্তানের একটি স্কুলে পড়ার সময় স্থানীয় তালেবানদেন গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে দেশ ছাড়েন ১৫ বছর বয়সী মালালা। তবে সুস্থ হয়ে ফিরেই নারী শিক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। এরমধ্যে হাতে গোনা দু’-একবার পাকিস্তান সফরে যান মালালা। এবার নিজ দেশে নারী শিক্ষা বিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দেন এই নোবেল বিজয়ী।

সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য রাখেন মালালা। ইসরাইলের চলমান আগ্রাসন গাজার শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে বলে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

উদ্বেগ প্রকাশ করে মালালা বলেন, ইসরাইল গাজার ৯০ শতাংশেরও বেশি স্কুল ধ্বংস করে দিয়েছে। সেই সাথে স্কুল ভবনে আশ্রয় নেওয়া নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালানোরও তীব্র নিন্দা জানান তিনি। ইসরাইলের আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন মালালা।

এদিকে, আফগানিস্তানের তালেবানদের বৈধতা না দিতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মালালা ইউসুফজাই। তিনি বলেন,তালেবানের শাসনামলে নারী শিক্ষার অগ্রগতি স্বপ্ন দেখা বৃথা। তালেবান শাসকরা শতাধিক আইন প্রয়োগ করেছে, যা নারীদের শিক্ষা থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে।

এর আগে, সম্মেলনের প্রথমদিন বক্তব্য রাখেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৫০ জনেরও বেশি শিক্ষক, গবেষক ও মন্ত্রী যোগ দেন। পাশাপাশি ইউনেস্কো, ইউৃনিসেফও ওয়াল্ড ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা যোগ দেন।


জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জাপানে সোমবার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৯। স্থানীয় সময় গতকাল রাত ৯টা ১৯ মিনিটে দক্ষিণ জাপানের কিউশু অঞ্চলে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের পরপরই ওই অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

টোকিও থেকে এএফপি আজ মঙ্গলবার এই খবর জানায়।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) জানিয়েছে, সোমবার ৬ দশমিক ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূুমিকম্পে কেঁপে উঠেছে কিউশু অঞ্চল। তবে ভূমিকম্পে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

ভূমিকম্পের পর মিয়াজাকি ও কোচির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রিফেকচারে এক মিটার উচ্চতার ঢেউয়ের বিষয়ে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

জাপানের আবহাওয়া সংস্থা এক্সে জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সুনামি সতর্কতা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সমুদ্রে বা উপকুলের দিকে না যাওয়ার পরমর্শ দিয়েছে।

জাপানের সরকারি গণমাধ্যম এনএইচকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়াজাকি শহরে ইতোমধ্যে ২০ সেন্টিমিটার উচ্চতার ঢেউ রেকর্ড করা হয়েছে। প্রাদেশিক এই রাজধানীতে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বসবাস করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর পশ্চিম জাপানের ইকাতা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

ভূমিকম্প যে অঞ্চলে আঘাত হেনেছে তার কাছাকাছি এলাকায় দু’টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রু চালু রয়েছে।


গাজা-স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে ১০ বিলিয়ন প্রয়োজন: ডব্লিউএইচও

ভেঙে পড়েছে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, আগামী পাঁচ থেকে সাত বছরে গাজার বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন ডলার বা আরও বেশি অর্থের প্রয়োজন হতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাথমিক হিসেবে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

গাজা থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে অনেক বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন হতে পারে।’

তিনি বলেছেন, ‘গাজার শুধুমাত্র স্বাস্থ্য খাত পুনর্গঠনের জন্য তার দলের প্রাথমিক অনুমান হলো প্রথম দেড় বছরের জন্য ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং তারপর পাঁচ থেকে সাত বছরের জন্য ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।’

পিপারকর্ন বলেছেন, ‘আমরা সবাই ভালো করে জানি যে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ অকল্পনীয়। আমি আমার জীবনে বিশ্বের অন্য কোথাও এমন পরিস্থিতি দেখিনি।’

এদিকে ডব্লিওএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস এরই মধ্যে বলেছেন, ‘গাজার ৯০ শতাংশ হাসপাতাল ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে।’

বুধবার মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে, ইসরাইল এবং হামাস অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। যাকে তিনি ‘সেরা খবর’ বলে উল্লেখ করেছেন।

গেব্রিয়াসিস আশা প্রকাশ করেছেন, এই চুক্তি ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটাবে।

তিনি বলেছেন, ‘আসুন আমরা সবাই এই খবরকে অত্যন্ত স্বস্তির সাথে স্বাগত জানাই। কিন্তু দুঃখও আছে যে, চুক্তিটি এতো দেরিতে হতে যাচ্ছে যখন সংঘর্ষে হাজার হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছেন।

মধ্যস্থতাকারীরা যদিও বলেছেন, চুক্তিটি ১৯ জানুয়ারি রোববার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের আকস্মিক হামলার পর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরাইল। টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে ইসরাইলের হামলা। এরই মধ্যে ইসরাইলের হামলায় গাজায় ৪৬ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী গাজায় নিহত শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার।


নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় অস্থির জ্বালানির বাজার

ভারতসহ ৩ দেশ বিপদে
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১৩:৩৮
ইউএনবি

নতুন করে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় বিপদে পড়েছে চীন ও ভারত। এতে করে এই দুই দেশকে জ্বালানি তেল আমদানিতে খুঁজতে হবে বিকল্প বাজার। অন্যদিকে তেল বিক্রির বড় বাজার হারালে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে রাশিয়ার জন্য।

চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর আরেক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ক্ষমতা ছাড়ার আগমুহূর্তে এটি বাইডেন প্রশাসনের রাশিয়ার অর্থনীতিতে সর্বশেষ আঘাত বলে অভিমত ব্যবসা বিশ্লেষকদের।

রাশিয়ার তেল উৎপাদনকারী প্রধান দুটি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম এবং সারগেটনেফটগ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বড় ক্ষতি হয়েছে ১৮৩ তেলবহনকারী ভেসেল জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায়।

যেসব জাহাজের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, এর বড় একটি অংশ চীন-ভারতে জ্বালানি তেল পরিবহন করে। ২০২২ সালে জি-৭ দেশগুলো তেলের দাম বেধে দিলে রাশিয়া বাজার ধরতে বেছে নেয় এশিয়াকে। এদিকে সস্তায় তেল কিনতে পারায় রাশিয়া হয়ে উঠেছে চীন-ভারতের মুনাফার বড় বাজার।

নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত জাহাজগুলো ২০২৪ সালে মোট ৫৩০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রফতানি করেছে, যা দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানির ৪২ শতাংশ। রফতানি হওয়া এ তেলের ৩০০ মিলিয়ন ব্যারেলই গিয়েছে চীনে এবং বাকিটা ভারতের বাজারে।

বাণিজ্যভিত্তিক পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান কেপলারের বিশ্লেষণ বলছে, রুশ জ্বালানি তেলের বাণিজ্যে এটা বড় রকমের ধাক্কা। সমুদ্রে রাশিয়ার তেল বহনকারী জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বিকল্প খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত ভুগতে হবে দেশটিকে।

এদিকে রুশ তেলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে বিশ্ববাজারে বাড়তে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম। সর্বশেষ ব্রেন্ট ক্রুড জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়েছে, যা নতুন বছরে সর্বোচ্চ।

গেল বছর প্রথম ১১ মাসে ভারত ৩৬ শতাংশ জ্বালানি তেল আমদানি করেছে রাশিয়া থেকে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় সাড়ে ৪ শতাংশ বেশি। একইসময়ে চীনের ২০ শতাংশ জ্বালানি তেলের জোগানদাতা ছিল রাশিয়া, যা আগের বছরের থেকে ২ শতাংশ বেশি।

হঠাৎ করে রাশিয়ার ওপর এমন নিষেধাজ্ঞায় ভারত-চীনকে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার দিকে ঝুঁকতে হবে। রাশিয়া ও ইরানের তেল সরবরাহ কমে আসায় মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম এমনিতেই ঊর্ধ্বমুখী। এতদিন ভারত-চীন রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কিনতে পারলেও এবার বেশি দামে বিকল্প বাজারমুখী হওয়া ছাড়া দেশ দুটির সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।

এরইমধ্য সরবরাহ কমায় জ্বালানি তেলের বাজারে আবারও শঙ্কা জেগেছে অস্থিরতা সৃষ্টির। তেলের দাম বেড়ে গেলে তার প্রভাব প্রতিটি পণ্যের ওপর পড়বে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।


সোমবার ট্রাম্পের জাঁকজমকপূর্ণ প্রত্যাবর্তন

আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। ৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতা ওয়াশিংটনের ইউএস ক্যাপিটলে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শপথ নেবেন এবং চার বছর আগে অপমানজনকভাবে ছেড়ে যাওয়া হোয়াইট হাউসে বিজয়ীর বেশে ফিরবেন।

শপথ গ্রহণের আগের দিন তিনি একটি তারকাবহুল ‘মেক আমেরিকা গ্রেট ভিক্টরি ‘র‌্যালি’ আয়োজন করবেন। এতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধনী ইলন মাস্ক এবং ‘ওয়াই.এম.সি.এ.’ গানটির জন্য বিখ্যাত ব্যান্ড ভিলেজ পিপল পারফর্ম করবেন বলে জানা গেছে।

বিলিয়নিয়ার ট্রাম্পের এই প্রত্যাবর্তন একটি অসাধারণ যাত্রার সমাপ্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে তিনি দুইবারের প্রাণনাশের চেষ্টা ও একটি ঐতিহাসিক ফৌজদারি মামলা পেছনে ফেলে প্রেসিডেন্সি পুনরুদ্ধার করেছেন।

তবে ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের এই উদযাপনে বাগড়া দিতে পারে একমাত্র আবহাওয়া। একটি প্রাণঘাতী 'পোলার ভর্টেক্স' তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ঠান্ডা আবহাওয়ার শঙ্কা তৈরি করেছে। আবহাওয়া চরম আকার ধারণ করলে অনুষ্ঠানটি ঘরের ভেতরে স্থানান্তরিত হতে পারে।

প্রতি চার বছর পরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ করেন। নবনির্বাচিত বা পুনর্নির্বাচিত যিনিই হোন, এই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান নতুন নেতার ব্যক্তিগত ছোঁয়ায় অনন্য হয়ে ওঠে।

এখানে সোমবারের অনুষ্ঠানের এক ঝলক তুলে ধরা হলো।

শপথ অনুষ্ঠান

মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী নতুন প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শুরু হয় ২০ জানুয়ারি দুপুরে (যদি তা রবিবার পড়ে, তবে পরের দিন)। প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ করেন। সম্প্রতি প্রেসিডেন্টরা ক্যাপিটলের পশ্চিম লনে ন্যাশনাল মলের দিকে মুখ করে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে শপথ নিয়েছেন।

সাধারণত, শপথ গ্রহণ পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। সোমবার এটি হবে জন রবার্টসের দ্বিতীয়বার ট্রাম্পের জন্য শপথ গ্রহণ পরিচালনা। শপথ শেষে ট্রাম্প তার উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন।

ক্যাপিটলে ট্রাম্পের এ উদ্বোধনী ভাষণের দিকে তাকিয়ে থাকবে আমেরিকা ও বিশ্ব, যেখানে তিনি তার নতুন মেয়াদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন। ২০১৭ সালে তার প্রথম ভাষণ 'আমেরিকান কারনেজ' নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। এবারও তিনি সাহসী ও শক্তিশালী বার্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একই দিন নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও একই মঞ্চে শপথ নেবেন।

বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি

ট্রাম্পের এই শপথ অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি জগতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যক্তিদের উপস্থিতি হবে একটি বড় চমক। ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, মার্ক জাকারবার্গ এবং টিকটকের সিইও শৌ চিউসহ আরও অনেকে এই অনুষ্ঠানে ভিআইপি আসনে থাকবেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং বারাক ওবামা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন। তবে মিশেল ওবামা আসবেন না। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিনটন এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসও উপস্থিত থাকবেন।

প্রথাগতভাবে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো না হলেও, ট্রাম্প ইতালি ও হাঙ্গেরির ডানপন্থী নেত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ভিক্টর অরবান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেই এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

জনসমাগম

ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে বিপুল জনসমাগম আশা করা হচ্ছে। ২২০,০০০ এরও বেশি টিকিট বিতরণ করা হয়েছে। যারা টিকিট পাননি, তারা ন্যাশনাল মলে বড় স্ক্রিনে অনুষ্ঠান সরাসরি উপভোগ করতে পারবেন। শপথের পর ট্রাম্প ক্যাপিটল থেকে হোয়াইট হাউসে একটি জমকালো প্যারেডের মাধ্যমে যাত্রা করবেন।

নির্বাহী আদেশ কর্মসূচি

ট্রাম্প তার দায়িত্বের প্রথম দিনেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশ জারি করার পরিকল্পনা করছেন। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপক অভিবাসী বহিষ্কার কর্মসূচি চালু করা, তেল উত্তোলন বৃদ্ধি করা এবং ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হামলায় অভিযুক্ত কিছু সমর্থককে ক্ষমা করা।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সংগীত

২০১৭ সালের শপথ অনুষ্ঠানে তারকাদের উপস্থিতি কম ছিল। কিন্তু এবার ট্রাম্পের মঞ্চ আলোকিত করবেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীরা। কান্ট্রি গায়ক ক্যারি আন্ডারউড 'আমেরিকা দ্য বিউটিফুল' পরিবেশন করবেন। লি গ্রিনউড তার বিখ্যাত গান 'গড ব্লেস দ্য ইউএসএ' গাইবেন।

রোববারের প্রাক-উদ্বোধনী র‌্যালিতে ভিলেজ পিপল, কিড রক এবং বিলি রে সাইরাস পারফর্ম করবেন। এছাড়া জেসন অ্যালডিন, রাসকাল ফ্ল্যাটস এবং গ্যাভিন ডিগ্রোসহ আরও অনেক তারকা তিনটি গালা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।

গালা র‌্যালি

ট্রাম্প সোমবার রাতে তিনটি গালা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এর পাশাপাশি, রোববার রাতে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটাল ওয়ান এরিনায় 'মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন ভিক্টরি র‌্যালি' অনুষ্ঠিত হবে।


ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফায় গুরুত্ব পাবে যেসব বৈশ্বিক বিষয়

তালিকার শীর্ষে চলে আসবে অবৈধ অভিবাসন
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর মাত্র কয়েকদিন পরই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন থেকেই বড় ধরনের পরিবর্তনের বার্তা দিয়ে আসছেন বিতর্কিত এই রিপাবলিকান নেতা, যা সম্ভব, তবে ক্যাম্পেইনের সময় দেওয়া বক্তব্য আর সরকার চালানো এক জিনিস নয়।

ট্রাম্প সরকার পরিচালনার জন্য যেসব ব্যক্তিকে বাছাই করেছেন এবং তাদের অগ্রাধিকারই নির্ধারণ করে দেবে ট্রাম্প আসলে কতটা বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটাতে পারবেন। প্রথমেই ট্রাম্পকে পরীক্ষা দিতে হবে পররাষ্ট্রনীতিতে। শুরু থেকেই ট্রাম্প বলে আসছেন ইউক্রেন যুদ্ধ একদিনের মধ্যে শেষ করে দেবেন। যদিও এ ব্যাপারে কাজ করতে তাকে বেগ পেতে হবে। ট্রাম্প যদি নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিয়ে ইউক্রেনকে ভূখণ্ড হারানোর বিষয়টি গ্রহণ করাতে চাপ দেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।

তবে তিনি যদি একতরফা বা ভারসাম্যহীন শান্তি চুক্তির জন্য ইউক্রেনকে চাপ দেন তাহলে মূলত পুতিনেরই জয় হবে। তখন ইউক্রেনের অস্তিত্ব নির্ভর করবে ইউরোপের ওপর। এক্ষেত্রে আমেরিকার অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাবে চীনসহ অন্যরা।

তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ক্ষেত্র হয়ে উঠবে মধ্যপ্রাচ্যও। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি করানোর ক্ষেত্রে সফলতা দেখাতে পারেন ট্রাম্প। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও এক্ষেত্রে ট্রাম্পকে বড় জয় এনে দিতে চাইবেন। তবে ট্রাম্প ইসরায়েলকে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দিকে নাও নিয়ে যেতে পারেন। সেটা হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র।

তাছাড়া ইরানের ওপর আরও কঠোর অবস্থানে যেতে পারেন তিনি। তবে প্রথম মেয়াদের মতো নিষেধাজ্ঞানীতি কাজে নাও আসতে পারে। কারণ ইরান তেল বিক্রির জন্য এরই মধ্যে একটি ছায়া নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। যেমন চীন। কীভাবে চীনকে মোকাবিলা করা যায় সেটা হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক ইস্যু। চীনের অর্থনীতি বর্তমানে কিছুটা দুর্বল হলেও ট্রাম্পের প্রথম আমলের চেয়ে চীন অনেক বেশি আগ্রাসী। ফলে দক্ষিণ চীন সাগরে সংকটে পড়তে পারেন ট্রাম্প। তাই তিনি সেখানে ফিলিপাইনকে সহায়তা করবেন নাকি ত্যাগ করবেন। সেটাও একটা বড় পরীক্ষা হবে।

শুল্ক নীতিতে ট্রাম্প কতটা ভয়ংকর হতে পারেন সেটা প্রকাশ করবে চীন। এরই মধ্যে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন চীন থেকে আমদানির ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এটা কি দরকষাকষি নাকি আমেরিকার অর্থনীতিকে চীনের থেকে আলাদা করার সত্যিকারের ইচ্ছা? যা ২০২৫ সালেই স্পষ্ট হবে। তালিকার শীর্ষে চলে আসবে অবৈধ অভিবাসন। গণহারে প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়াও ঘটতে পারে। ট্রাম্পের প্রথম আমলের ট্যাক্স প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালের শেষ দিকে। তাই ট্যাক্স কাটও গুরুত্ব পাবে।


প্রতিবেশীদের মধ্যে বিদ্বেষ কারও জন্যই ভালো না: ভারতের সেনাপ্রধান

সার্বিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকার এলে * দুই দেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক আগের মতোই আছে * আগস্টে রাজনৈতিক পালাবদলের সময় ‘সার্বক্ষণিক যোগাযোগে’ ছিলেন বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাপ্রধান
ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিবেশী হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, এই সম্পর্কে বিদ্বেষ কোনো পক্ষের জন্যই ভালো ফল বয়ে আনবে না।

সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দেশের সেনাবাহিনী পর্যায়ে সম্পর্কে কোনো সমস্যা নেই। আর রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করা যাবে তখনই, যখন ‘নির্বাচিত সরকার’ থাকবে।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পালাবদলের পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও সামরিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতের সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার (কৌশলগত অংশীদার)। কোনো ধরনের শত্রুতা দুই দেশের জন্যই ক্ষতিকর। তাতে কারও স্বার্থ চরিতার্থ হবে না।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশী। আমাদের দুই দেশকেই একসঙ্গে বাস করতে হবে। পরস্পরকে জানতে ও বুঝতে হবে। কোনো ধরনের শত্রুতা কারও পক্ষে ভালো নয়। দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক একেবারে ঠিক রয়েছে; কিন্তু দুই দেশের সার্বিক সম্পর্কের কথা যদি বলেন তাহলে বলব, নির্বাচিত সরকার এলেই তা স্বাভাবিক হবে।’

বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। গত আগস্টে রাজনৈতিক পালাবদলের সময় সর্বদা তারা যোগাযোগের মধ্যে ছিলেন। এমনকি গত ২৪ নভেম্বরও তাদের দুজনের মধ্যে ভিডিও মারফত আলোচনা হয়েছে। তারা সব সময় নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখেছেন। এখনো সেই যোগাযোগ অব্যাহত আছে।

‘বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে যদি বলতে হয়, সেটা আগের মতোই চলছে। আমাদের অফিসাররা সেখানে এনডিসিতে যোগ দিয়েছেন। ওই পক্ষ থেকেও কোনো সমস্যা নেই। শুধু একটা বিষয়, যৌথ মহড়া যেটা হতো, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে সেটা সাময়িকভাবে স্থগিত আছে। যখনই পরিস্থিতির উন্নতি হবে, আমাদের মহড়াও হবে’, যোগ করেন তিনি।


বিশ্বে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:২৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলভুক্ত এ দেশটিতে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ৯১ দশমিক ১ জন মারা যায় ধূমপানজনিত কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায়। এমনকি এই হার বৈশ্বিক এবং দক্ষিণ এশিয়ার গড় হারেরও বেশি। বর্তমানে বিশ্বে গড়ে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যু হয় ৭২ দশমিক ৬ জনের আর দক্ষিণ এশিয়ায় এ হার ৭৮ দশমিক ১ জন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক গবেষণা সংস্থা গ্যালাপের পাকিস্তান অফিসের গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ ২০২৪ ডেটাসেট’ শিরোনামের গবেষণা প্রবন্ধে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষণা প্রবন্ধটিতে বলা হয়েছে, ১৯৯০ থেকে ২০২১- এই ৩০ বছরে পাকিস্তানে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে ৩৫ শতাংশ; কিন্তু এই হ্রাসের হারও প্রতিবেশী দেশ ভারত, দক্ষিণ এশিয়া এবং বৈশ্বিক গড় হিসেবের তুলনায় কম। কারণ ৩০ বছরে ভারতে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে ৩৭ শতাংশ, দক্ষিণ এশিয়ায় গড়ে ৩৮ শতাংশ এবং বিশ্বে গড়ে ৪২ শতাংশ। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং বাংলাদেশের তুলনায় পাকিস্তানে সিগারেটের দাম এখনো সস্তা। দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের সিগারেটের ১০০ প্যাকেট কেনার খরচ মাথাপিছু জিডিপির ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। ভারতে এই হার ৯ দশমিক ৮ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে যদিও পাকিস্তানে সিগারেটের দাম ৩৮ শতাংশ বেড়েছে, তবে তারপরও তা আছে প্রায় সর্বস্তরের জনগণের নাগালের মধ্যে।

বিলাল আই গিলানি নামে একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, পাকিস্তানে ধূমপান এবং ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর হার না কমার অন্যতম কারণ সিগারেটের সস্তা দাম। দেশটির একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন ‘পাকিস্তানে যে ধূমপানবিরোধী প্রচার-প্রচারণা চলে না এমন নয়; কিন্তু যে মাত্রায় প্রয়োজন তা হয় না। ফলে জনসচেতনতার অভাব ধূমপান হ্রাস না পাওয়ার একটি বড় কারণ। সূত্র : জিও নিউজ


ভারত ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগোতে চায়: জয়সোয়াল

রণধীর জয়সোয়াল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের অবনমন ঘটা সম্পর্ককে আবারও সুসংহত করতে চায় ভারত। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মাঝে কিছুদিন উভয়পক্ষের বক্তব্য বিবৃতিতে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পেলেও সম্প্রতি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণচেষ্টা ঘিরে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এমনকি দুই দেশই পাল্টাপাল্টি হাইকমিশনার তলব করেছে।

এই অবস্থায় ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক কোন দিকে যাচ্ছে, তা নিয়ে যখন আলোচনা তৈরি হয়েছে, তখন এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর।

শুক্রবার নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব (বিক্রম মিশ্রি) সম্প্রতি বাংলাদেশে গিয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়ে এসেছেন, ভারত ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগোতে চায়। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ভারত সুসম্পর্ক চায়, যেন দুই দেশের জনগণের কল্যাণ হয়।

রণধীর বলেন, ‘এটাই আমাদের মনোভাব। বারবার তা বলা হয়েছে। এই মনোভাব ইতিবাচক এবং এই মনোভাবই বহাল থাকবে।’

সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণচেষ্টা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ালে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর জবাবে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকেও তলব করে ভারত সরকার। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সীমান্ত চুক্তি পর্যালোচনার কথাও বলেছিলেন।

এসব বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের অস্থায়ী হাইকমিশনারকে ডেকে ভারতের মনোভাবের কথা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাকে জানানো হয়েছে, সীমান্ত অপরাধমুক্ত রাখতে ভারত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।


নববর্ষে আতশবাজিতে বিশ্বরেকর্ড গড়তে চায় আবুধাবি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৯:৪৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় আতশবাজির প্রদর্শনী আয়োজন করতে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। রাজধানী আবুধাবিতে এই রেকর্ড আতশবাজির মধ্য দিয়ে বছরটি শেষ করার পরিকল্পনা করছে দেশটি। শেখ জায়েদ ফেস্টিভ্যালে এই প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ছয়টি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ভাঙার পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রদর্শনীটি মোট ৫৩ মিনিটের হবে। এর আগে গত নববর্ষের প্রাক্কালে উৎসবে আতশবাজির প্রদর্শনী ৪০ মিনিট স্থায়ী হয়। সেটি পরিমাণ, সময় এবং গঠনের দিক থেকে তিনটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ভাঙে। তবে এ বছর ছয়টি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ভাঙার চেষ্টা করছেন তারা, যার মধ্যে রয়েছে-

১. বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড় ভেন্যুতে’ ৫৩ মিনিটেরও বেশি একটানা আতশবাজি। ২. ছয় হাজার ড্রোন ২০ মিনিট ধরে আকাশ আলোকিত করবে। ৩. তিন হাজারের বেশি ড্রোন প্রথমবারের মতো ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় বায়বীয় চিত্র’ তৈরি করবে। ৪. ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ লেখা সবচেয়ে বড় এরিয়াল ডিসপ্লেতে প্রথমবারের মতো তিন হাজার ড্রোন ব্যবহার করা হবে। ৫. সিনক্রোনাইজড মিউজিক শো’য়ের মাধ্যমে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়বে ৩ হাজার ড্রোন। ৬. বিশ্বে প্রথমবারের মতো পরিমাণ, নকশা এবং সময়কালের দিক থেকে বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বেশি আতশবাজি প্রদর্শিত হবে। গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উৎসবটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের জন্য খোলা থাকবে। সেখানে আসন নিতে উৎসবের ওয়েবসাইটে টিকিট নিতে হবে।


লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে প্রাণহানি বেড়ে ২৪

নিখোঁজ অন্তত ১৬ জন
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান ভয়াবহ দাবানলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২৪ জনে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ১৬ জন। এদিকে, আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দিনরাত কাজ করে চললেও পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরেই বলা চলে। সোমবার বিবিসি ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, বুধবার (১৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত কুখ্যাত শুষ্ক বাতাস ‘সান্তা আনার’ গতি বেড়ে ঘণ্টায় ৬০ মাইল (৯৬ কি.মি.) পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এ কারণে পরিস্থিতি আবারও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

দাবানলের সর্বশেষ পরিস্থিতি

লস অ্যাঞ্জেলেসের আশপাশে তিনটি বড় দাবানল এখনো জ্বলছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা প্যালিসেডসের ২৩ হাজার একরের বেশি জায়গা পুড়ে গেছে। সেখানকার আগুনের মাত্র ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এবং ইটনের ১৪ হাজার এলাকা পুড়ে গেছে আর এখানকার দাবানল ২৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে, হার্স্ট নামক এলাকার ৭৯৯ একর এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও এখানকার আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা গেছে।

স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাতাস কম থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা কিছুটা অগ্রগতি করতে পেরেছেন। তবে মঙ্গলবার বাতাসের গতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগুনের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসাডেনা কাউন্টির ফায়ার চিফ চ্যাড অগাস্টিন জানিয়েছেন, আমরা কিছুটা অগ্রগতি করছি, কিন্তু পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

এদিকে, লস অ্যাঞ্জেলেসের ফায়ার চিফ ক্রিস্টিন ক্রাউলি বাসিন্দাদের দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। বর্তমানে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার বাসিন্দা বাধ্যতামূলক সরিয়ে নেওয়ার আদেশের অধীনে রয়েছেন।

বাড়ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা

দাবানল ছড়িয়ে পড়া অঞ্চলগুলোতে ১৪ হাজার দমকলকর্মী কাজ করছেন এবং তাদের সহায়তা করছে ৮৪টি প্লেন ও ১,৩৫৪টি অগ্নিনির্বাপণ ইঞ্জিন। এদিকে, লুটপাট রোধে ৪০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে, যা আরও ১ হাজার বাড়ানো হচ্ছে। এরই মধ্যে লুটপাটের জন্য ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন দমকলকর্মী ছদ্মবেশে লুটপাটের চেষ্টা করছিলেন বলে জানা গেছে।

টানা ষষ্ঠ দিনের মতো লস অ্যাঞ্জেলেসে দুটি স্থানের আগুন নিয়ন্ত্রণে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন দমকল কর্মীরা। আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে আসায় বাড়তি উদ্যমে কাজ করছেন তারা। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করে বলেছে, আবারও দমকা বাতাসের প্রবাহ শুরু হতে পারে- যার ফলে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে যাবে আগুন।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসোম বলেছেন, এটি মার্কিন ইতিহাসের সম্ভবত ভয়াবহতম প্রাকৃতিক দুর্যোগ। আগুন ছড়িয়ে পড়া এলাকা পুরো ভস্মীভূত হয়ে গেছে। ধনী-গরিব সবার বাড়িই ধ্বংস হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ হাজার অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি সুপারভাইজার লিন্ডসি হোরভাথ বলেছেন, অকল্পনীয় আতঙ্ক ও বেদনার আরেকটি রাত পার করছে লস অ্যাঞ্জেলেসের মানুষ।

তীব্র বাতাসের কারণে অনেক স্থানে আগুনের ফুলকি তিন কিলোমিটার দূরে পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছিল। বাতাস কিছুটা ধরে আসার সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে এই সামান্য অনুকূল অবস্থাও বেশিক্ষণ থাকবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। মার্কিন জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, গত এপ্রিল থেকে অনেক স্থানে বৃষ্টিপাত হয়নি। ফলে সান্তা অ্যানা আবারও স্থানীয় সময় রোববার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত ৮০ থেকে ১১২ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।

দাবানলের মধ্যে দমকল কর্মী সেজে চুরি!

দাবানলের মধ্যেও লস অ্যাঞ্জেলসে চুরি ও লুটপাটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, দাবানলের মধ্যে ফায়ার ফাইটার বেশে চুরির ঘটনাও ঘটেছে। এতে এখন পর্যন্ত এক ব্যক্তি গ্রেপ্তার হয়েছেন।

লস অ্যাঞ্জেলেসের কাউন্টির শেরিফ ডিপার্টমেন্টের প্রধান রবার্ট লুনা জানান, মালিবু এলাকার একটি বাড়িতে চুরির সময় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে রবার্ট লুনা বলেন, তিনি যখন ওই এলাকায় ছিলেন, তখন ওই ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখেন, যাকে ফায়ার ফাইটারের মতো দেখাচ্ছিল।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি সেভেন লিখেছে, শেরিফ বিভাগ ওই ব্যক্তিকে লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে সোপর্দ করেছে। লস অ্যাঞ্জেলেসের পুলিশ প্রধান জিম ম্যাকডোনেল জানিয়েছেন যে, দমকলকর্মীর ছদ্মবেশ ধারণের অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল ঘিরে বিভিন্ন অভিযোগে ২৯ জনের মতো গ্রেপ্তার হয়েছে।

ট্রাম্পের অভিযোগ, ইউক্রেনের প্রস্তাব

দাবানল প্রতিরোধে ক্যালিফোর্নিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অযোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন—এ অভিযোগ নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আমাদের দেশের ইতিহাসে এটা সবচেয়ে বড় বিপর্যয়গুলোর একটি। তারা আগুন নেভাতে পারছে না। তাদের কী সমস্যা?’

যদিও দাবানল ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিন থেকেই অগ্নিনির্বাপণকর্মীরা ২৪ ঘণ্টা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মেক্সিকো থেকে আরও কর্মী এ কাজে যুক্ত হয়েছেন। এর ফলে অগ্নিনির্বাপণের বীরত্বপূর্ণ কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে।

এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ক্যালিফোর্নিয়ায় ১৫০ জন অগ্নিনির্বাপণকর্মী পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। যুদ্ধরত দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেন, সেখানকার পরিস্থিতি এখন খুবই জটিল। আমেরিকানদের জীবন বাঁচাতে ইউক্রেনের মানুষ সহায়তা করতে পারে।


banner close