বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
১৫ পৌষ ১৪৩২

ইউক্রেনজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের শঙ্কা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২১ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:২৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২১ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:১৭

ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎবিষয়ক কর্তৃপক্ষ, দেশবাসীকে ফোন, টর্চ, ব্যাটারিসহ জরুরি ইলেকট্রনিক পণ্যে চার্জ পূর্ণ করে রাখার পরামর্শ দিয়েছে। বিবিসি জানায়, ইউক্রেনের বিদ্যুৎ স্থাপনায় গতকাল বৃহস্পতিবারও হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওলেক্সান্ডার খারচেঙ্কো জানান, রাশিয়ার হামলায় দেশের ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি জানান, রাশিয়ার হামলায় গত বুধবার তিনটি বিদ্যুৎস্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। জ্বালানি সংস্থাগুলো আসন্ন শীতের জন্য ‘সব সম্ভাব্য পরিস্থিতির’ জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইইউ নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলনে জেলেনস্কির ভাষণ দেয়ার কথা রয়েছে। ইইউর দেশগুলো শীতের আগেই গ্যাসের দাম কমানোর বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

জাতিসংঘে চাপের মুখে রাশিয়া-ইরান

ইউক্রেনে ইরানের নির্মিত কামিকাজে ড্রোন হামলার অভিযোগ ঘিরে জাতিসংঘে চাপের মুখে পড়েছে মস্কো ও তেহরান। রাশিয়ার দাবি, যুদ্ধে তারা নিজেদের নির্মিত ড্রোন ব্যবহার করেছে। এ নিয়ে তদন্তের বিরুদ্ধে দেশটি জাতিসংঘকে সতর্ক করেছে। অন্যদিকে মস্কোকে অস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করেছে তেহরান।

আল-জাজিরা জানায়, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে সোমবারের ড্রোন হামলার ঘটনায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক ডাকে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য।

নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে গত বুধবার রাশিয়ার উপ-জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পলিয়ানস্কি জোর দিয়ে বলেন, অস্ত্রগুলো রাশিয়ায় তৈরি এবং তিনি ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ এবং ষড়যন্ত্রের তত্ত্বের’ নিন্দা করেন।

কিয়েভে গত সোমবার ড্রোন হামলায় অন্তত ৫ জন নিহত হন। এ ছাড়া বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অন্যান্য বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। ইউক্রেন বলেছে, এক মাসের বেশি সময়ের মধ্যে তারা ২২০টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এসব ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পরিদর্শন ও তদন্ত করতে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসকে আমন্ত্রণ জানায় কিয়েভ।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলছে, ইরান যে রাশিয়াকে কামিকাজে ড্রোন সরবরাহ করেছে তার প্রমাণ তাদের কাছে রয়েছে। কামিকাজে ড্রোন ইরানের নির্মিত- শহীদ ১৩৬ ড্রোনগুলো কামিকাজে ড্রোন হিসেবে পরিচিত। ইরানের কাছ থেকে এসব অস্ত্র কেনার মাধ্যমে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করা হচ্ছে বলে যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছে।

এদিকে জাতিসংঘে ইরানের দূত আমির সাইদ ইরাভানি রাশিয়ার কাছে ড্রোন সরবরাহের অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন এবং অপ্রমাণিত দাবি’ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

তেহরানের ওপর ইইউর নিষেধাজ্ঞা

মস্কোকে ড্রোন সরবরাহের অভিযোগ নিয়ে ইরানের ওপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। তেহরানের তিন জেনারেল এবং একটি অস্ত্র প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইইউ। এদিকে ইইউর এমন পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেন। এক টুইটে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেন, এসব ড্রোন েক টুইটেয়রজানিহামনিদে রাশিয়াকে ইউক্রেনীয়দের হত্যা করতে এবং বিদ্যুৎ অবকাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সহায়তা করছে। এদিকে যুক্তরাজ্য খুব শিগগির ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। দেশটির সরকার জানায়, ইরান জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অমান্য করতে পারবে না।

শাখারভ পুরস্কার পেলেন ইউক্রেনের জনগণ

ইউক্রেনীয় জনগণকে শাখারভ পুরস্কারে ভূষিত করেছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। ইউক্রেনের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের হাতে পুরস্কারের ৫০ হাজার ইউরো তুলে দেয়া হবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে লড়াইরত ইউক্রেনীয়দের প্রতি ইইউর সমর্থন জানাতে তাদের এ পুরস্কার দেয়া হয়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ইইউর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এ পুরস্কার ইউক্রেন যুদ্ধে প্রতিদিনকার স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের মূল্যবোধের প্রতি সম্মান।’ মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ব্যক্তি ও সংস্থাকে শাখারভ পুরস্কার দেয়া হয়।


সব সময় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন খালেদা জিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারত নীতি নিয়ে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। হাসিনা ভারতকে বন্ধুসুলভ হিসেবে দেখেন। খালেদা জিয়া তার প্রাথমিক বছরগুলোতে মোটামুটি সতর্ক। কখনো কখনো বিরোধী অবস্থান বজায় রাখেন। সর্বদা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এর উদাহরণ হিসেবে ধরা যায় ভারতের সঙ্গে স্থলপথ সংযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থার প্রতি তার বিরোধিতা। খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পর এক প্রতিবেদনে এ কথা লিখেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ অসুস্থতার পর মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি ৮০ বছর বয়সে হৃদরোগ ও ফুসফুস সংক্রান্ত সংক্রমণ, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ছিলেন। তাকে কৃতিত্ব দেয়া হয় দেশের প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যবস্থা থেকে সংসদীয় ব্যবস্থায় প্রত্যাবর্তনের জন্য। গত তিন দশকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়া এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা, এই দুই নারী প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন।

এনডিটিভি আরও লিখেছে, বিএনপিকে ‘বাংলাদেশের স্বার্থের রক্ষক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে খালেদা তার নীতিগুলোকে ‘ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা’ হিসেবে সাজিয়েছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালে ঢাকায় এক সভায়, যখন হাসিনা প্রধানমন্ত্রী এবং খালেদা বিরোধী দলনেতা ছিলেন, তখন তিনি ভারতের জন্য শুল্কমুক্ত সংযোগ প্রদানের কারণে হাসিনাকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশকে ভারতের রাজ্য বানানোর চেষ্টা প্রতিরোধ করব।’ তবে খালেদার লক্ষ্য কেবল সংযোগের অধিকার প্রত্যাখ্যান করা ছিল না, বরং তার দেশের জন্য বাস্তব লাভ নিশ্চিত করা ছিল। ২০১৪ সালে ঢাকার একটি পত্রিকা তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে, সংযোগ অনুমতি অবশ্যই তিস্তা জল চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

ফারাক্কা ব্যারেজ নিয়ে তিনি সমালোচনা করেছেন। ১৯৭৫ থেকে কার্যকর এই চুক্তি। গঙ্গা থেকে হুগলির দিকে পানি প্রবাহের জন্য ব্যবহৃত হয় এই চুক্তি। সমালোচনায় তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশকে গঙ্গার পানি থেকে বঞ্চিত করছে। ২০০৭ সালে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে তারা বাঁধ খুলে দিয়ে দেশের বন্যা পরিস্থিতি খারাপ করেছে। সংযোগ ও অবকাঠামোর বাইরে প্রতিকূল অবস্থান ছিল তার কৌশলগত নীতির অংশ। ২০০২ সালে তিনি চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সম্পন্ন করেন এবং ভারতের প্রতি উদাসীনতা দেখান। চীনের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ঢাকার প্রধান সরবরাহকারী হয় ট্যাঙ্ক, ফ্রিগেট এবং অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম।

ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল সরাসরি কৌশলগত। বিশেষ করে চীনের সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি এবং দিল্লি কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করে, বিএনপি সরকারের উপর বিচ্ছিন্নতাবাদী ও জঙ্গি সংগঠন আশ্রয় দেয়ার অভিযোগ আনে ভারত। খালেদার ভারতবিরোধী অবস্থান ছিল বাস্তবমুখী। উদাহরণ হিসেবে ১৯৯২ সালের তিন বিঘা করিডোর লিজের কথা বলা যায়। এর ফলে ঢাকাকে দহগ্রাম-আঙরপোতা এলাকায় স্থায়ী অ্যাক্সেস দেয়, যা ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে ২০০ মিটার গভীরে অবস্থিত। ২০০৬ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি এবং নতুন মাদক তস্কর বিরোধী চুক্তি স্বাক্ষরও তার বাস্তবমুখী নীতি প্রমাণ করে। ২০১২ সালের দিল্লি সফরের পর ভারত সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়। তিনি ভারত থেকে বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠন বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঢাকায় সফরে এসে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

যাইহোক, চাপ পুরোপুরি শেষ হয়নি। ২০১৬-২০২৪ সালের মধ্যে তার ভারতবিরোধী ভাষণ, সীমান্ত হত্যা এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনা, খালেদার অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে। আগস্ট ২০২৪-এর পর পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়, যখন শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হন এবং বিএনপি সমান ও সম্মানজনক সম্পর্কের জন্য ইঙ্গিত দেয়। যখন তার স্বাস্থ্য অবনতি হয়, তখন প্রধানমন্ত্রী মোদী টুইটে লিখেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খবর জেনে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।’ তার মৃত্যুর পর তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক সবসময় স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আমি ২০১৫ সালে ঢাকায় তার সঙ্গে আমার উষ্ণ সাক্ষাৎ স্মরণ করি।’


‘এক কিংবদন্তি নেত্রীর বিদায়’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিশ্ব রাজনীতিতে। দক্ষিণ এশিয়ার এই প্রভাবশালী নেত্রীর প্রয়াণে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। এছাড়া ঢাকায় বিভিন্ন দেশের মিশন, জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও গভীর শোক প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এসব বিদেশি মিশন তাদের ফেসবুক পেজে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক ও সমবেদনা জানায়। শোকবার্তায় তারা খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, ত্যাগ এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে তার অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন।

পাকিস্তানের শোক- ‘একজন নিবেদিতপ্রাণ বন্ধুকে হারালাম: পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি মঙ্গলবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বার্তায় গভীর সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব এবং ত্যাগ শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এক আবেগঘন বার্তায় খালেদা জিয়াকে ‘পাকিস্তানের নিবেদিতপ্রাণ বন্ধু’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে খালেদা জিয়ার আজীবন অবদান অবিস্মরণীয়। পাকিস্তান সরকার ও জনগণ এই কঠিন সময়ে বাংলাদেশের মানুষের পাশে আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এছাড়া পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারও আলাদা বার্তায় শোক প্রকাশ করেছেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শ্রদ্ধা: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার শোকবার্তায় খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশটির উন্নয়নে এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান সবসময় স্মরণ করা হবে। ২০১৫ সালে ঢাকা সফরের সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ‘উষ্ণ সাক্ষাতের’ স্মৃতিচারণ করে মোদি আশা প্রকাশ করেন যে, খালেদা জিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি ও উত্তরাধিকার ভবিষ্যতে দুই দেশের অংশীদারত্বকে পথ দেখাবে।

চীনের শোক- ‘পুরোনো বন্ধুর বিদায়’: চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে পাঠানো এক বিশেষ বার্তায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। লি কিয়াং লিখেছেন, খালেদা জিয়া ছিলেন চীনের জনগণের একজন পুরোনো বন্ধু। তার প্রধানমন্ত্রিত্বকালেই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছিল এবং দুই দেশের মধ্যে সর্বাত্মক সহযোগিতামূলক অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। চীনের পক্ষ থেকে তার অবদানকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যায়ন- ‘আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার’: ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস তাদের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক জানিয়েছে। বার্তায় বলা হয়, খালেদা জিয়া বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাস গঠনে এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকা পালন করেছেন।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের দপ্তর তাদের ফেসবুক পোস্টে লিখেছে, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদে আমরা গভীর শোকাহত। শোকাবহ এই পরিস্থিতিতে আমরা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবার এবং তার প্রিয়জনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। এ সময়ে আমরা বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি।’

ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন দূতাবাস তাদের ফেসবুকে পেজে খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।

ফ্রান্সের দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেজে বলেছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের প্রথম নারী সরকারপ্রধান খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশে অবস্থিত ফরাসি দূতাবাস গভীর শোক প্রকাশ করছে। খালেদা জিয়া বাংলাদেশের জাতীয় জীবন গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এই শোকের সময়ে ফ্রান্স তার পরিবার, তার দল এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে। তার অবদান স্মরণীয় হয়ে কবে।

জার্মানি দূতাবাসের ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বেগম জিয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। গত কয়েক দশকে তার সঙ্গে জার্মানির সম্পৃক্ততার কথা স্মরণ করছে জার্মানি। এর মধ্যে রয়েছে ২০০৪ সালে ঢাকায় জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশকা ফিশারের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ এবং ২০১১ সালে রাষ্ট্রীয় সফরে জার্মানির প্রেসিডেন্ট ক্রিশ্চিয়ান উলফের সঙ্গে বৈঠক। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে জার্মানির জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের সঙ্গেও তার একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে।

ফেসবুক পেজে আরও লেখা হয়েছে, এই শোকের মুহূর্তে জার্মানি জাতীয় জীবনে তার (খালেদা জিয়া) অবদানকে সম্মান জানাচ্ছে এবং তার পরিবার, দল ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছে। জার্মানি আমাদের দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি শান্তিতে বিশ্রাম নিক।

কানাডা হাইকমিশন তাদের ফেসবুকে লিখেছে, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তার মৃত্যুতে তার পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কানাডা আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করছে। এই কঠিন সময়ে তার পরিবার যেন শক্তি ও সান্ত্বনা খুঁজে পায়—এ কামনা করেছে কানাডা।

যুক্তরাজ্যের ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ইন্তেকালের সংবাদে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। অত্যন্ত বেদনাদায়ক এই সময়ে তার পরিবার, স্বজন ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমরা আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

জাপান দূতাবাস তাদের ফেসবুক পোস্টে লিখেছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।

প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে খালেদা জিয়া দুবার জাপান সফর করেন এবং আমাদের দুই দেশের মধ্যকার দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা জোরদারে মূল্যবান অবদান রাখেন। তার নিষ্ঠা ও উল্লেখযোগ্য অর্জনের জন্য আমরা আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তার আত্মা চিরশান্তিতে বিশ্রাম নিক।

অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশন ফেসবুক পেজে লিখেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা।

ইরান দূতাবাস খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশের জনগণ ও বিএনপির নেতা–কর্মীর প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করছে।

শোক বার্তায় বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন একজন বিশিষ্ট জাতীয় নেতা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং তার দীর্ঘ কর্মজীবনে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ও জনকল্যাণে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে ইরানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ ও গঠনমূলক সম্পর্ক বজায় ছিল।


জাতিসংঘকে ২ বিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশসহ পাবে ১৭ দেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের জন্য ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশসহ মোট ১৭টি দেশ এই সহায়তা পাবে। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে সতর্ক করে বলেছে, ‘ছোট হও, খাও—নাহলে বিলুপ্ত হও।’ খবর এপির

মূলত মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা কমিয়ে আরও ছোট করে নিতে চাইছে। একইসঙ্গে নতুন আর্থিক বাস্তবতায় সাহায্য দেওয়া সংস্থাগুলিকেও কঠোর বার্তা দিয়ে রেখেছে। মার্কিন প্রশাসন আগে যতটা সাহায্য করত সেই তুলনায় ২ বিলিয়ন ডলার অনেকটাই কম।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এটি একটি উদার অনুদান, যা যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক দাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে রাখবে।

এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অর্থ একটি আমব্রেলা ফান্ড (umbrella fund)–এর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। সেখান থেকে নির্দিষ্ট সংস্থা ও অগ্রাধিকারভিত্তিক খাতে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। এটি জাতিসংঘজুড়ে ব্যাপক সংস্কারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দাবির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই পদ্ধতি মানবিক সহায়তাকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এর ফলে অনেক কর্মসূচি ও সেবায় বড় ধরনের কাটছাঁটও হয়েছে।

সংস্কার প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হলো এমন তহবিল গড়ে তোলা, যেগুলো নির্দিষ্ট কোনো সংকট বা সহায়তা–প্রয়োজনীয় দেশের দিকে সরাসরি পাঠানো যাবে। প্রাথমিকভাবে ১৭টি দেশকে রাখা হয়েছে এই তালিকায়। এরমধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও আছে কঙ্গো, হাইতি, সিরিয়া ও ইউক্রেন।

তবে বিশ্বের সবচেয়ে সংকটাপন্ন দেশগুলোর একটি আফগানিস্তান এই তালিকায় নেই। একইভাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। কর্মকর্তারা বলেছেন, ফিলিস্তিনের জন্য সহায়তা আসবে ট্রাম্পের এখনো অসম্পূর্ণ গাজা শান্তি পরিকল্পনা থেকে পাওয়া অর্থের মাধ্যমে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই ২ বিলিয়ন ডলার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাতিসংঘ-সমর্থিত কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত মানবিক সহায়তার খুবই সামান্য অংশ। একসময় এই সহায়তার পরিমাণ বছরে সর্বোচ্চ ১৭ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত পৌঁছেছিল।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, এর মধ্যে মাত্র ৮ থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার ছিল স্বেচ্ছা অনুদান। এ ছাড়া জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবছর আরও কয়েক বিলিয়ন ডলার চাঁদা দেয়।

সমালোচকদের মতে, পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেরও সহায়তা কমানোর ফলে লাখো মানুষ ক্ষুধা, বাস্তুচ্যুতি ও রোগের ঝুঁকিতে পড়ছে। এতে বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


ইউক্রেনের প্রতি ক্ষুব্ধ ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাশিয়া অভিযোগ করেছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। যদিও কিয়েভ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিকে এই ঘটনায় ইউক্রেনের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেছেন, মস্কোর আক্রমণ বন্ধ করার আলোচনার মধ্যে এটি সঠিক সময় নয়।’ ট্রাম্প আরও বলেন, আপনি জানেন কে আমাকে এ সম্পর্কে বলেছে? প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি ভোরে আমাকে বলেছেন যে, তার ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এটি ভালো নয়। ট্রাম্প ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে অবস্থিত তার বাসভবনে সাংবাদিকদের বলেন, এতে খুব ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি।

ট্রাম্প বলেন, এটি একটি নাজুক সময়। এটি সঠিক সময় নয়। আক্রমণাত্মক হওয়া এক জিনিস কারণ তারা আক্রমণাত্মক। কিন্তু তার বাড়িতে আক্রমণ করা অন্য জিনিস। এটি কোনো কিছু করার সঠিক সময় নয়।

এদিকে পুতিনের বাসভবনে হামলার বিষয়ে রাশিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালায়নি এবং মস্কো শান্তি আলোচনাকে ব্যহত করার চেষ্টা করছে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ দাবি করেছেন, কিয়েভ রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম নভগোরোদ অঞ্চলে পুতিনের রাষ্ট্রীয় বাসভবনে ৯১টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে।

রাশিয়া জানিয়েছে, তারা এখন শান্তি আলোচনায় তাদের অবস্থান পর্যালোচনা করবে। তবে ওই হামলার সময় পুতিন কোথায় ছিলেন তা এখনো স্পষ্ট নয়।

জেলেনস্কি এই দাবিকে ‌‘রাশিয়ার মিথ্যাচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তার দাবি, ইউক্রেনের ওপর ক্রেমলিনের আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার অজুহাত দেওয়ার জন্যই এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত সোমবার টেলিগ্রামে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে ল্যাভরভ বলেছেন, পুতিনের বাসভবনে যে ৯১টি ড্রোন ছোড়া হয়েছিল তার সবগুলোই রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা আটকানো এবং ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হামলার ফলে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।


পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার খবরে মোদির উদ্বেগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক ফেসবুক পোস্টে মোদি বলেন, রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের বাসভবনকে লক্ষ্যবস্তু করার খবর নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টাই সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে কার্যকর পথ। আমরা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে এসব প্রচেষ্টার ওপর মনোযোগ ধরে রাখার আহ্বান জানাই।

রাশিয়া অভিযোগ করেছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। কিন্তু মস্কোর এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে কিয়েভ। রাশিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালায়নি এবং মস্কো শান্তি আলোচনাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ দাবি করেছেন, কিয়েভ রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম নভগোরোদ অঞ্চলে পুতিনের রাষ্ট্রীয় বাসভবনে ৯১টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে।

রাশিয়া জানিয়েছে, তারা এখন শান্তি আলোচনায় তাদের অবস্থান পর্যালোচনা করবে। তবে ওই হামলার সময় পুতিন কোথায় ছিলেন তা এখনো স্পষ্ট নয়।

জেলেনস্কি এই দাবিকে ‌‘রাশিয়ার মিথ্যাচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তার দাবি, ইউক্রেনের ওপর ক্রেমলিনের আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার অজুহাত দেওয়ার জন্যই এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।

তিনি বলেন, রাশিয়া এর আগে কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছিল। জেলেনস্কি এক্সে এক পোস্টে বলেন, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে বিশ্ব এখন চুপ করে থাকবে না। আমরা রাশিয়াকে স্থায়ী শান্তি অর্জনের কাজকে দুর্বল করার অনুমতি দিতে পারি না।

গত সোমবার টেলিগ্রামে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে ল্যাভরভ বলেছেন, পুতিনের বাসভবনে যে ৯১টি ড্রোন ছোড়া হয়েছিল তার সবগুলোই রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা আটকানো এবং ধ্বংস করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হামলার ফলে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, রাশিয়ার আমেরিকার সাথে আলোচনার প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসার কোনো ইচ্ছা নেই।


মিয়ানমারের পাতানো নির্বাচনে সেনাসমর্থিত দলের জয়ের দাবি

আপডেটেড ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৯:৩০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সামরিক অভ্যুত্থানের পাঁচ বছর পর মিয়ানমারে গত রোববার (২৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে বিপুল ভোটের বিজয়ের দাবি করেছে দেশটির জান্তাপন্থি রাজনেতিক দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)।

সোমবার দলটির জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভূমিধস জয়ের দাবি করেছেন।

এর আগে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও গণতন্ত্র পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত ওই ‘পাতানো’ নির্বাচন সামরিক শাসনকে আরও শক্তিশালী করবে।

২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী। ক্ষমতায় আসার চার বছরের বেশি সময় পর দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয় সামরিক জান্তা।

তিন ধাপে মাসব্যাপী এই নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে রোববার (২৮ ডিসেম্বর)। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে সামরিক বাহিনী।

ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (ইউএসডিপি) জ্যেষ্ঠ ওই সদস্য এএফপিকে বলেছেন, ‌‌যেসব শহরে ভোট গণনা শেষ হয়েছে, সেখানকার নিম্নকক্ষের মোট ১০২টি আসনের মধ্যে আমরা ৮২টিতে জয়ী হয়েছি।

তার এই হিসাব অনুযায়ী, রোববার নিম্নকক্ষের যেসব আসনে ভোট হয়েছে, তার ৮০ শতাংশের বেশি আসনই পেয়েছে দলটি। ইউএসডিপিকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বেসামরিক প্রক্সি দল হিসেবে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, রাজধানী নেপিদোর আটটি শহরের সবগুলোতেই ইউএসডিপি জয়ী হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের অনুমতি না থাকায় নিজের পরিচয় গোপন রাখতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।

২০২০ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) কাছে ইউএসডিপির ভরাডুবি ঘটেছিল। অভ্যুত্থানের পর এনএলডি বিলুপ্ত ঘোষণা করে জান্তা এবং রোববারের ব্যালটে দলটির নাম ছিল না।

নোবেলজয়ী অং সান সু চি অভ্যুত্থানের পর থেকে আটক রয়েছেন। অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিয়ানমারের এই একতরফা নির্বাচনের নিন্দা জানিয়েছেন।

তারা বিরোধী মত দমনে কঠোর দমন-পীড়ন ও প্রার্থীদের তালিকায় সামরিক বাহিনীর মিত্ররা জায়গা পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ থিঙ্কট্যাংকের গবেষণা ফেলো মর্গান মাইকেলস বলেন, নির্বাচনে ইউএসডিপির আধিপত্য বিস্তার করাটা স্বাভাবিকই মনে হয়।

এএফপিকে তিনি বলেন, এই নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য নয়। আগেভাগেই জান্তা নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন কারচুপি করে, বিভিন্ন দলকে নিষিদ্ধ, কিছু মানুষকে ভোটদান থেকে বিরত রেখে অথবা ভোট দিতে এলে জোরজবরদস্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রার্থীকে ভোটদানে বাধ্য করছেন।

মিয়ানমারের ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল এখনো প্রকাশ করেনি। আরও দুই ধাপে আগামী ১১ ও ২৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দা মিন খান্ত বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমার অবস্থান পরিষ্কার—আমি এই পাতানো নির্বাচনকে একেবারেই বিশ্বাস করি না।

২৮ বছর বয়সি ওই তরুণ বলেন, আমরা একনায়কতন্ত্রের অধীনে বাস করছি। তারা নির্বাচন করলেও ভালো কিছু হবে বলে আমার মনে হয় না। কারণ তারা সব সময়ই মিথ্যা বলে।

রোববার ভোট দেওয়ার পর সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর ওপর আস্থা রাখা যেতে পারে, কারণ তারা ক্ষমতা বেসামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারের হাতে তুলে দেবে। গত পাঁচ বছর ধরে মিয়ানমার শাসন করে আসছেন এই জান্তা।

নেপিদোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। এই নির্বাচন সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আয়োজন করা হয়েছে, আমরা আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে দিতে পারি না।

দেশটির ৩৩০টি শহরের মধ্যে ১০২টিতে রোববার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা তিন ধাপের ভোটের মধ্যে সবচেয়ে বড় পর্ব। তবে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে নিম্নকক্ষের প্রায় প্রতি পাঁচটির একটি আসনে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয় বলে জান্তা সরকার স্বীকার করেছে।


বিশ্বের প্রথম লেজার সুরক্ষা ব্যবস্থা ‘আয়রন বিম’ চালু ইসরায়েলে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অবশেষে যেন সায়েন্স ফিকশন বই বা স্টার ওয়ার্সের কল্পকাহিনী বাস্তবে রূপ নিল। প্রথম ইসরায়েল আকাশ পথে আসা যেকোনো ধরনের হামলা প্রতিহত করতে লেজারভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে। আয়রন ডোমের আদলে নতুন এই লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আয়রন বিম’। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

এই লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূলে আছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও উন্নয়ন দপ্তর এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা খাতের সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান রাফায়েল (রাফাল যুদ্ধবিমানখ্যাত ফরাসি দসল্ট রাফাল নয়)।

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ওই দপ্তর ও রাফায়েলের প্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিমান বাহিনীর হাতে লেজার ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণভার তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ বলেন, ‘বিশ্বে প্রথমবারের মতো একটি উচ্চ ক্ষমতার লেজারভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে। ইতোমধ্যে এটি সাফল্যের সঙ্গে বেশ কয়েকটি হামলা প্রতিহত করতে পেরেছে।’ এই পর্বতসম অর্জন আমাদের কাছের ও দুরের শত্রুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। আমাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবেন না। ছুঁড়লে পরিণাম ভয়ংকর হবে’, বলেন ক্যাটজ।

প্রায় এক দশক ধরে এই প্রকল্পের কাজ চলছিল। এই অর্জনকে বিশ্লেষকরা বড় ধরনের মাইলফলকের আখ্যা দিয়েছেন।

রাফায়েলের চেয়ারম্যান ইউভাল স্টেনিৎজ বলেন, ‘বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ইসরায়েলের হাতে এখন আকাশ পথে আসা যেকোনো ধরনের হামলা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার একটি কার্যকর লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আছে। এটা রকেট ও মিসাইলও ঠেকাতে সক্ষম।’

এটি ইসরায়েলের সুপরিচিত আয়রন ডোম ও ডেভিডেস স্লিং ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশটিকে সুরক্ষা দেবে। লেজার ব্যবস্থা প্রথাগত ক্ষেপণাস্ত্রভিত্তিক সুরক্ষা ব্যবস্থার চেয়ে সাশ্রয়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আয়রন ডোমের মাধ্যমে ছোট পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলার বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাওয়া যায়। ডেভিলেস স্লিং ও কয়েক প্রজন্মের অ্যারো মিসাইল ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে। এগুলোর উদ্দেশ্য যেকোনো ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা।

ডিসেম্বরের শুরুতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, লেজার ব্যবস্থার কাজ শেষ হয়েছে এবং মাসের শেষ নাগাদ এটি মোতায়েন করা হবে।

ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের সুরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা দৃশ্যমান হয়। তেহরান থেকে ছুটে আসা বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা ব্যবস্থাকে কাঁচকলা দেখিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আঘাত হানে।

ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে, ওই যুদ্ধে ৫০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভেদ করেছে এবং এতে ২৮ ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছেন।


তাইওয়ান ঘিরে চীনের সামরিক মহড়া, ফের উত্তেজনা 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তাইওয়ান ঘিরে ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। দ্বীপটির গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল ও অবরোধের অনুশীলনসহ এই মহড়াকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা হিসেবে উল্লেখ করেছে বেইজিং। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

এতে বলা হয়, এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’। এতে দেশটির সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর সঙ্গে রকেট ফোর্সও অংশ নিয়েছে। মহড়ার অংশ হিসেবে সরাসরি গোলাবর্ষণসহ বিভিন্ন রণনীতি অনুশীলন করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে তাইওয়ানের কাছে ১১ বিলিয়ন ডলারের বৃহৎ অস্ত্র প্যাকেজ বিক্রির ঘোষণার পর এই মহড়া শুরু করল চীন। ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বেইজিং এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে কয়েকটি মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।

চীন তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে আসছে। এদিকে তাইওয়ানের চলতি বছরে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদারের উদ্যোগও বেইজিংয়ের ক্ষোভ বাড়িয়েছে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় চীনের এই সামরিক মহড়ার সমালোচনা করে একে আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে তারা দ্বীপটির আশপাশে চীনা যুদ্ধবিমান ও জাহাজ শনাক্ত করেছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে নিজেদের বাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বাহিনী।

চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে এই মহড়াকে ‘ন্যায়ের ঢাল’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। এক পোস্টে বলা হয়, যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারা এই ঢালের মুখে ধ্বংস হয়ে যাবে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মহড়াকে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির জন্য কঠোর শাস্তি বলে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ বহিরাগত শক্তিকে তাইওয়ান ইস্যুতে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

অন্যদিকে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বলেছেন, তাইওয়ান শান্তি বজায় রাখতে চায় এবং বর্তমান অবস্থান অক্ষুণ্ন রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, শান্তি টিকিয়ে রাখতে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা অপরিহার্য।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের পর থেকে তাইওয়ান প্রণালীতে নিয়মিত সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে চীন। চলমান এই মহড়াটি ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের নতুন প্রধান ইয়াং ঝিবিন দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বড় মহড়া। একই সঙ্গে তাইওয়ানও নিজস্ব সামরিক মহড়ার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি জোরদার করে চলেছে, যা এ অঞ্চলের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে।


ইন্দোনেশিয়ায় বৃদ্ধাশ্রমে ভয়াবহ আগুন, নিহত ১৬

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটি বৃদ্ধাশ্রমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী মানাদো শহরের ‘দামাই’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রমে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। প্রায় ১ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, মানাদো শহরের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সংস্থার প্রধান জিমি রোটিনসুলু গণমাধ্যমকে জানান, নিহতদের অধিকাংশকেই তাদের নিজ নিজ কক্ষে পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগুন লাগার সময় তারা রাতের বিশ্রামে ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং স্বজনদের হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, কয়েকজনের মৃতদেহ এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বৃদ্ধাশ্রমের পাশেই বসবাসকারী স্টিভেন মোকোদোমপিত জানান, তিনি উদ্ধারকাজে অংশ নেন। স্থানীয় গণমাধ্যম ডেটিককমকে তিনি বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে পৌছানোর সময় বৃদ্ধাশ্রমের রান্নাঘর থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছিল। এ সময় একটি বিস্ফোরণের শব্দ ও সাহায্যের আর্তচিৎকার শোনা যায়। তিনি আরও বলেন, মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আগুন পুরো ভবন গ্রাস করে। পরে তিনি ও অন্যরা টেবিল ও মই ব্যবহার করে পেছন দিক দিয়ে বাসিন্দাদের উদ্ধার করেন।

উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তুলনামূলকভাবে ঘন ঘন ঘটে। চলতি মাসের শুরুতে রাজধানী জাকার্তার একটি ৭ তলা অফিস ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ২২ জন নিহত হয়েছিলেন।


ইরানে চলতি বছর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ১,৫০০ ছাড়িয়েছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানে ২০২৫ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) বিবিসিকে জানিয়েছে, চলতি ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত তারা অন্তত ১ হাজার ৫০০ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার তথ্য যাচাই করতে পেরেছে। সংগঠনটি বলছে, এরপর আরও অনেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়ে থাকতে পারে। খবর বিবিসির।

আইএইচআর–এর তথ্য অনুযায়ী, সংগঠনটি ইরানে ২০২৪ সালে ৯৭৫ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য নিশ্চিত হতে পেরেছিল। তবে এটাই প্রকৃত সংখ্যা নয়। কেননা, ইরানের কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কখনোই কোনো আনুষ্ঠানিক সংখ্যা প্রকাশ করে না।

বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ইরানে এ বছরও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। অন্য পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনের দেওয়া তথ্যের সঙ্গেও এ হিসাব মিলে যাচ্ছে।

এর আগে ইরান সরকার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছে, কেবল ‘সবচেয়ে গুরুতর অপরাধের’ ক্ষেত্রেই এই শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে।

পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র ২০২২ সালে ইরানজুড়ে ব্যাপক গণবিক্ষোভ হয়। তার আগে থেকেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।

২২ বছর বয়সি মাশা ইরানের রাজধানী তেহরানে নীতি পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন। নিয়ম মেনে হিজাব না পরার কারণে তাকে আটক করা হয়েছিল।

এ ঘটনার পর দেশজুড়ে শুরু হওয়া প্রতিবাদ বহু বছর ধরে ইরানের ধর্মীয় শাসনের বৈধতার প্রতি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।

এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের কর্তৃপক্ষ ব্যাপক দমন–পীড়ন চালায়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। আইএইচআর–এর যাচাই করা তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইরানে প্রায় ৫২০ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। পরের বছর সংখ্যাটি আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩২–এ।

ইরানে বিক্ষোভকারী কিংবা ‘গুপ্তচরদের’ কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। তবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া ব্যক্তিদের ৯৯ শতাংশই হত্যা বা মাদক–সংক্রান্ত অপরাধে দণ্ডিত ছিলেন। এ অনুপাত প্রায় অপরিবর্তিত রয়ে গেছে।


ইউক্রেন আলোচনায় অগ্রগতি, জটিল সমস্যা অমীমাংসিত

ফ্লোরিডায় জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধ বন্ধে আশাবাদী ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ইস্যুতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত রোববার (২৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, বৈঠকে আগের চেয়ে অগ্রগতি হয়েছে, তবে দুই-একটি জটিল বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। যার মধ্যে ভূমি ইস্যু অন্যতম। খবর বিবিসির।

যদিও বৈঠকে দুর্দান্ত অগ্রগতির কথা জানিয়ে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলেনস্কি। আর অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসবেন বলেও জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

এদিকে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের আগে পুতিনের সঙ্গে ফলপ্রসূ ফোনালাপের কথাও জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের সোয়া ঘণ্টার দুর্দান্ত ফোনালাপ হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিনও।

মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জেলেনস্কি জানান, ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ‘৯০ শতাংশ’ বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়টি প্রায় ৯৫ শতাংশ চূড়ান্ত হয়েছে।

জেলেনস্কি পরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের দলগুলো আগামী সপ্তাহে আরও আলোচনার জন্য বৈঠক করবে, যার লক্ষ্য হলো প্রায় চার বছরের যুদ্ধ শেষ করা।

মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, আমরা সব বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা করেছি এবং গত কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেন ও আমেরিকার প্রতিনিধিদলগুলো যে অগ্রগতি করেছে, তা আমরা গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করেছি।

রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ চালায়। বর্তমানে মস্কো ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে।

রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা দনবাস অঞ্চলকে একটি নিরস্ত্রীকৃত এলাকা করার প্রস্তাব এখনো ‘সমাধান হয়নি’ বলে জানান ট্রাম্প।

মস্কো বর্তমানে দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রায় ৭৫ শতাংশ এবং পাশের লুহানস্কের প্রায় ৯৯ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। এই অঞ্চলগুলো একসঙ্গে দনবাস নামে পরিচিত।

রাশিয়া চায় ইউক্রেন দনবাসের সেই ছোট অংশ থেকে সরে আসুক যা এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে আছে। কিয়েভ বলেছে, ওই এলাকা ইউক্রেনের সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে একটি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল করা যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারবার ইউক্রেনের হারানো ভূখণ্ড নিয়ে তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। সেপ্টেম্বরে তিনি সবাইকে চমক দিয়ে বলেছিলেন, ইউক্রেন হয়তো ওই এলাকা ফিরিয়ে নিতে পারবে। পরে তিনি তার বক্তব্য পরিবর্তন করেন। তিনি বলেন, এটি একটি অত্যন্ত কঠিন বিষয়। কিন্তু এটি শেষ পর্যন্ত সমাধান হবে।

ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার কাজ ‘৯৫ শতাংশ চূড়ান্ত’ হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো লজিস্টিক সমর্থন বা সেনা মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি দেননি তিনি।

ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আলোচনার সম্ভাবনার কথা উত্থাপন করেছেন এবং বলেছেন, এটি ‘সঠিক সময়ে’ হতে পারে।

এর আগে ট্রাম্পের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ হয়। যদিও ট্রাম্প ফোনালাপের অনেক বিস্তারিত জানাননি, তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন রাশিয়ার নেতা ‘ইউক্রেনের সফলতা চায়।’

একইসঙ্গে ট্রাম্প স্বীকার করেন, মস্কোর খুব বেশি আগ্রহ নেই এমন এক স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য যা ইউক্রেনকে গণভোট আয়োজনের সুযোগ দেবে।

রাশিয়ার বৈদেশিক নীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, এই ফোনালাপ ট্রাম্পের উদ্যোগে হয়েছে এবং তিনি ও পুতিন যুদ্ধ শেষ করার জন্য সাম্প্রতিক ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছেন।

জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করতে পারেন, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন আরও আলোচনা চূড়ান্ত করবে।

বৈঠকের পরে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে ফোনালাপে, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লেইন ফ্লোরিডার আলোচনাকে ‘ভালো অগ্রগতি’ হিসেবে দেখছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রথম দিন থেকেই ইউক্রেনকে ‘দৃঢ় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দেওয়া প্রয়োজন।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও বলেছেন, কিয়েভের মিত্ররা আগামী মাসে প্যারিসে মিলিত হয়ে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা করবে।


পুতিন যে কৌশলে রুশ ধনকুবেরদের কণ্ঠরোধ করেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউক্রেন যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে রাশিয়ায় বিলিয়নিয়ার বা ধনকুবেরদের সংখ্যা সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তবে ভ্লাদিমির পুতিনের গত ২৫ বছরের শাসনামলে রাশিয়ার এই প্রভাবশালী বিত্তবান গোষ্ঠী, যারা অলিগার্ক নামে পরিচিত, তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা বা প্রভাব প্রায় পুরোটাই হারিয়েছে তারা।

বিষয়টি রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য বেশ স্বস্তির। কারণ, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এই অতি ধনী গোষ্ঠীটিকে পুতিনের প্রতিপক্ষ বানাতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং পুতিনের ‘পুরস্কার ও শাস্তির’ নীতি তাদের একপ্রকার নীরব সমর্থকে পরিণত করেছে। তথ্যসূত্র: বিবিসি।

শাস্তির এই কড়াকড়ি ঠিক কীভাবে কাজ করে, তা সাবেক ব্যাংকিং বিলিয়নিয়ার ওলেগ তিনকভ খুব ভালো করেই জানেন।

ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘পাগলামি’ বলে সমালোচনা করার ঠিক পরদিনই ক্রেমলিন থেকে তার ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।

তিনকভকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, যদি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা না হয়, তাহলে তৎকালীন রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ ব্যাংক তিনকভ ব্যাংককে জাতীয়করণ করা হবে।

নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনকভ বলেন, ‘আমি দাম নিয়ে আলোচনার সুযোগ পাইনি। অনেকটা জিম্মি হয়ে থাকার মতো অবস্থা, যা অফার করা হবে, তা-ই নিতে হবে। দর-কষাকষির কোনো উপায় ছিল না।’

এর এক সপ্তাহের মধ্যে ভ্লাদিমির পোতানিনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান ব্যাংকটি কিনে নেয়।

উল্লেখ্য, পোতানিন বর্তমানে রাশিয়ার পঞ্চম শীর্ষ ধনী ব্যক্তি। রুশ যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিনের জন্য নিকেল সরবরাহ করেন তিনি।

তিনকভের দাবি অনুযায়ী, ব্যাংকটিকে তার প্রকৃত মূল্যের মাত্র ৩ শতাংশ দামে বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছিল। শেষপর্যন্ত তিনকভ তার প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ হারান এবং রাশিয়া ছাড়তে বাধ্য হন।

পুতিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে পরিস্থিতি এমনটা ছিল না। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়ার উদীয়মান পুঁজিবাদের সুযোগ নিয়ে এবং বড় বড় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মালিকানা কুক্ষিগত করে একদল মানুষ অবিশ্বাস্য সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন।

রাজনৈতিক অস্থিরতার সেই সময়ে এই সম্পদ তাদের হাতে বিপুল ক্ষমতা ও প্রভাব এনে দেয়, যার ফলে তারা অলিগার্ক হিসেবে পরিচিতি পান।

রাশিয়ার সেই সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী অলিগার্ক বোরিস বেরেজোভস্কি দাবি করেছিলেন, ২০০০ সালে পুতিনকে ক্ষমতায় বসানোর নেপথ্যে মূল কারিগর ছিলেন তিনি।

তবে এর কয়েক বছর পরেই তিনি এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ২০১২ সালে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি তার (পুতিন) মধ্যে সেই লোভী স্বৈরশাসক ও জবরদখলকারীকে দেখতে পাইনি, যিনি কিনা স্বাধীনতাকে পদদলিত করবেন এবং রাশিয়ার উন্নয়ন থামিয়ে দেবেন।’

বেরেজোভস্কি হয়তো নিজের ভূমিকার কথা একটু বাড়িয়েই বলেছিলেন। তবে রাশিয়ার অলিগার্করা যে একসময় ক্ষমতার শীর্ষপর্যায়ে প্রভাব খাটানোর ক্ষমতা রাখতেন, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

এই ক্ষমাপ্রার্থনার ঠিক এক বছর পরেই যুক্তরাজ্যে নির্বাসনে থাকা অবস্থায় রহস্যজনকভাবে বেরেজোভস্কির মরদেহ পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে রাশিয়ার অলিগার্ক বা ধনকুবেরদের রাজনৈতিক দাপটেরও চূড়ান্ত অবসান ঘটে।


পাশ্চাত্যের সঙ্গে পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধে লিপ্ত ইরান: পেজেশকিয়ান

আপডেটেড ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২০:০৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউরোপের সঙ্গে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে লিপ্ত আছি। তারা চায় না, আমাদের দেশ স্থিতিশীল থাকুক। সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক সামনে রেখে গত শনিবার এ মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ওয়েবসাইটে পেজেশকিয়ানের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি বলেন, বর্তমান যুদ্ধটি ১৯৮০-এর দশকে ইরাকের সঙ্গে ইরানের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ।

মাসুদ পেজেশকিয়ানের মতে, ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরাকের সঙ্গে ইরানের যে যুদ্ধ হয়েছিল, তার চেয়ে বর্তমান যুদ্ধটি ‘আরও জটিল ও কঠিন’। উল্লেখ্য, ইরাক-ইরান যুদ্ধে দুই পক্ষের প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।

মাসুদ পেজেশকিয়ানের মতে, ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরাকের সঙ্গে ইরানের যে যুদ্ধ হয়েছিল, তার চেয়ে বর্তমান যুদ্ধটি ‘আরও জটিল ও কঠিন’। উল্লেখ্য, ইরাক-ইরান যুদ্ধে দুই পক্ষের প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।

নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে তার নির্ধারিত বৈঠকের দুই দিন আগে এ মন্তব্য করলেন পেজেশকিয়ান। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর আলোচনায় ইরান প্রসঙ্গটি অত্যন্ত গুরুত্ব পাবে।

গত জুনে ১২ দিনের এক যুদ্ধে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এতে ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার, পরমাণুবিজ্ঞানীসহ প্রায় ১ হাজার ১০০ জন নিহত হন। জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে ইসরায়েলে ২৮ জন প্রাণ হারান।


banner close