শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

পাকিস্তানে সরকার গঠন নিয়ে জটিলতা, ইমরান সমর্থিতদের কি সুযোগ আছে?

এককভাবে কোনো দলের সরকার গঠনের আর সুযোগ নেই
আপডেটেড
১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২৩:১৮
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২৩:১৮

পাকিস্তানে গত বৃহস্পতিবার জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এ নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল এখনো প্রকাশ করা হয়নি। সরকার গঠন নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি আসনে জয় পেয়েছে ইমরান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দেশটিতে সরকার গঠন কারা করবে এ নিয়ে গোলকধাঁধার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে মোট আসন ৩৩৬টি। এর মধ্যে ৭০টি নারী ও সংখ্যালঘুদের সংরক্ষিত। সরাসরি নির্বাচন হয় ২৬৬টি আসনে। তবে একটি আসনে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় এবার ২৬৫টি আসনের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে দলগুলোকে। ভোট গণনা প্রায় শেষের দিকে। দেশটির জাতীয় নির্বাচন কমিশন ইসিপি এখনো সব আসনের ফলাফল জানায়নি। এককভাবে সরকার গঠন করতে কোনো দলকে জিততে হবে ১৩৪টি আসনে। কিন্তু শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানে নির্বাচনে কোনো দলই এই শর্ত পূরণ করতে পারেনি। সব আসনের ফল প্রকাশের পর তাই বেশ কয়েকটি চিত্র সামনে আসছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বলছে, এককভাবে কোনো দলের সরকার গঠনের আর সুযোগ নেই। পাকিস্তানি বিশ্লেষক জাইঘাম খান বলেছেন, সব আসনের ফল প্রাথমিকভাবে প্রকাশের পর দুটি চিত্র সামনে আসতে পারে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দি ইমরান খানের দলের জয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বাদ দিয়ে বাকি দলগুলোর একটি জোট করে সরকার গঠন। এভাবে সরকার গঠন করলে বিলাওয়াল ভুট্টোর দল পিপিপি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন ছাড়াও জোটে আসবে এমকিউএম, জামাত-ই-ইসলামী ও বাকিরা।

জাইঘাম খান বলেন, দ্বিতীয় আরেকটি চিত্র আছে। তবে সেটি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম। এ ক্ষেত্রে পিপিপিকে পিটিআইয়ের সঙ্গে হাত মেলাতে হবে। কেননা এ পর্যন্ত ঘোষিত আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসনে জিতেছে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তবে যেভাবেই সরকার গঠন করা হোক না কেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা পাকিস্তানে অচিরেই আসছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষক জাইঘাম খান।

এদিকে, পিটিআই জানিয়েছে, তারা সব স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এক ছাতার নিচে নিয়ে আসার পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, ভোটের ফল প্রকাশ শেষ হওয়ার আগেই দেশবাসীকে বিশেষ বার্তা দেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে কোনো ধরনের অরাজকতা ও মেরুকরণ না করার তাগিদ দেন তিনি।

ডন বলছে, প্রকাশিত ২৫৩ আসনের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থক স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জিতেছেন ৯২টি আসনে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী পিএমএল-এন জিতেছে ৭১টিতে। ৫৪টি আসন পাওয়া পিপিপির সঙ্গে তারা জোটে রাজি হয়েছে বলে জানায়। এই জোট নিয়েই এখন সবচেয়ে বেশি আলোচনা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল পিএমএল-এন (৭১) ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপিপি (৫৪) জোটে রাজি হলেও এখনো তারা মিলে ১৩৪টি আসনে জিততে পারেনি। মোট জিতেছে ১২৫টিতে। আরও ১২টি আসনের ফল বাকি। একটিতে ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে কারাগারে থেকে ইমরান বলেছেন, তিনি জয়ী হয়েছেন। তার দলও দাবি করছে, জোট বানিয়ে সরকার গঠন করবে পিটিআই। আবার পিএমএল-এনের নেতা নওয়াজ শরিফ রীতিমতো জনসভা করে বিজয় ঘোষণা করেছেন। সবাইকে নিয়ে সরকার গঠন করবেন বলে জানান তিনি। তাকে সেনাবাহিনী সমর্থন দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী কোনো দল যদি এককভাবে সরকার গঠন করতে চায় তাহলে সংরক্ষিত আসন ছাড়াই অন্তত ১৩৪টি আসনে জয় পেতে হবে এবং সংরক্ষিত আসনসহ পেতে হবে ১৬৯টি।

স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, নিবন্ধিত দল হিসেবে অংশ নেওয়া নওয়াজ ও বিলওয়াল ভুট্টোর দল এককভাবে সরকার গঠন করতে পারবে না। তাই এরই মধ্যে জোট সরকার গঠন নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। দুই দল যদি জোট গঠনে একমত হতে পারে তাহলে সংরক্ষিত আসনসহ সরকার গঠন করতে সক্ষম হবে তারা। তবে সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পেয়েও বিপাকে ইমরান সমর্থিত জয়ী প্রার্থীরা। কারণ দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারায় সংরক্ষিত আসনও পাবে না তারা। ফলে তাদের পক্ষে সরকার গঠন করা প্রায় অনিশ্চিত। কারণ পিপিপি ও পাকিস্তান মুসলিম লীগের সঙ্গে জোট গঠনের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে তেহরিক-ইনসাফ।

প্রশ্ন উঠছে, এসব স্বতন্ত্র প্রার্থীদের করণীয় কী? পাকিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী, তিন দিনের মধ্যে তারা অন্য কোনো দলে যোগ দিয়ে সরকার বা বিরোধী দল গঠনে ভূমিকা রাখতে পারবে।

জোট সরকার গঠন নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা হয়নি: বিলাওয়াল

পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন, পিপিপিকে ছাড়া কেন্দ্রীয় এবং পাঞ্জাব ও বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক সরকার গঠন করা যাবে না। শনিবার জিও নিউজের সঙ্গে আলাপকালে বিলাওয়াল বলেন, পিপিপি প্রতিটি প্রদেশে প্রতিনিধিত্ব করছে। কে সরকার গঠন করবে, সে বিষয়ে এখনো কথা বলার সময় আসেনি।

পিপিপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এখনো ভোটের পুরো ফল জানি না, বিজয়ী স্বতন্ত্র পার্লামেন্ট সদস্যরা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বা নিচ্ছেন, সেটাও আমরা জানি না। পিএমএল-এন, পিটিআই বা অন্যদের সঙ্গে জোট সরকার গঠনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি।’

বিলাওয়াল আরও বলেন, রাজনৈতিক হিংসা-বিদ্বেষ কেন, সেটা চিহ্নিত করা ছাড়া কোনো সরকারই জনগণের সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। পিপিপির চেয়ারম্যান জানান, তিনি মনে করেন, সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে যদি ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে দেশের জন্য সেটা কল্যাণকর হবে।

বিলাওয়াল বলেন, ‘পিপিপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার নাম প্রস্তাব করেছে। এখন আমাদের যদি সেটা পরিবর্তন করতে হয়, তাহলে আরেকটি বৈঠক করতে হবে এবং সেই বৈঠকে আমরা কীভাবে এগোব, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

সরকার গঠন নিয়ে যা বললেন পিটিআই চেয়ারম্যান

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের চেয়ারম্যান গহর আলী খান দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি সরকার গঠনের জন্য তার দলকে আমন্ত্রণ জানাবেন। কারণ, জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়েছেন। ইসলামাবাদে গতকাল শনিবার গণমাধ্যমের উদ্দেশে গহর আলী বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে চাই না। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। সংবিধান ও আইন অনুযায়ী আমরা এগিয়ে যাবো এবং সরকার গঠন করব।’

পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান বলেন, জনগণ অবাধে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ভোট গণনা করে ফরম-৪৫ পূরণ করেছেন।

ইমরান খানের দলের চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের কণ্ঠ এবং কাঙ্ক্ষিত সরকার গঠনের উদ্যোগকে দমন করা হলে অর্থনীতি তার ধাক্কা সইতে পারবে না।

পূর্ণ ফলাফল দ্রুত ঘোষণা করা উচিত উল্লেখ করে গহর বলেন, ‘পিটিআইয়ের জন্য কোনো বাধা তৈরি করা ঠিক হবে না এবং যতটা দ্রুত সম্ভব ফল ঘোষণা করা উচিত। আইন অনুযায়ী চূড়ান্ত ফল ফরম-৪৫-এ পূরণ করে প্রকাশ করা হয়েছে। আমরা সব ফল পেয়েছি।’

পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচনে দল-সমর্থিত বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তারা দলের প্রতি অনুগত এবং তা-ই থাকবেন। সব প্রক্রিয়া শেষে পিটিআই আগামী ১৫ দিনের মধ্যে অন্তর্দলীয় নির্বাচনে যাবে। জনগণ পিটিআইকে বিশাল ম্যান্ডেট দিয়েছে। পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে করা সব মামলার অভিযোগ ভুয়া।

তিনি জানান, সংরক্ষিত আসন এবং কোন দলের সঙ্গে তাদের যোগ দেওয়া উচিত, সে বিষয়ে খুব দ্রুত তারা একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছাবেন। যেসব আসনে ফলাফল এখনো স্থগিত হয়ে আছে, সেসব জায়গায় তারা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করবেন।

গহর বলেন, দলের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে, তবে সেটা হতে হবে শান্তিপূর্ণ।


আশ্রয়প্রার্থীদের ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ কমালো যুক্তরাষ্ট্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিদেশি শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থীদের ওয়ার্ক পারমিট বা এমপ্লয়মেন্ট অথরাইজেশন ডকুমেন্টস (ইএডি)-এর মেয়াদ হ্রাস করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আগে ইএডির মেয়াদ ছিল ৫ বছর, এখন তা নামিয়ে আনা হয়েছে দেড় বছর বা ১৮ মাসে।

ইএডি একপ্রকার সরকারি নথি, যা সাধারণভাবে ‘ওয়ার্ক পারমিট’ নামে পরিচিত। আগে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকরা ইএডি লাভ করলে তা ৫ বছর পরপর নবায়ন করতে হতো। এখন প্রতি ১৮ মাস অন্তর নবায়ন করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (হোমল্যান্ড সিকিউরিটি) অধীন সংস্থা কাস্টমস অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস (ইউএসসিআইএস) বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শরণার্থী, আশ্রয়ের জন্য আবেদনকারী, নিজ দেশে ফেরত পাঠানো থেকে বেঁচে যাওয়া অভিবাসীসহ ১৯ ক্যাটাগরির বিদেশি নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।

২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে গত ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের সময়েই ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন যে ক্ষমতায় গেলে অবৈধ অভিবাসী ও অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর পদক্ষেপ নেবেন তিনি।

সেই অনুযায়ী শপথ গ্রহণের পর এ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। তার সেই স্বাক্ষরের পর যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসীদের প্রবেশ কমাতেও বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেসবের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্যটি হলো এইচ-১বি ভিসার ফি বৃদ্ধি করা। এই ভিসার মাধ্যমে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানিগুলো কর্মী হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী ও গবেষকদের যুক্তরাষ্ট্রে আনতে পারে। গত সেপ্টেম্বরে এই ভিসার বাৎসরিক ফি ১ হাজার ৫০০ ডলার থেকে ১ লাখ ডলারে উন্নীত করে ট্রাম্প প্রশাসন।

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে এক আফগান শরণার্থীর গুলিতে নিহত হন যুক্তরাষ্ট্রের আধাসামরিক বাহিনী ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্য। এই ঘটনার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ১৯টি দেশের নাগরিকদের অভিবাসন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

এই ১৯টি দেশ হলো আফগানিস্তান, মিয়ানমার, বুরুন্ডি, শাদ, কিউবা, রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইকুয়াটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লাওস, লিবিয়া, সিয়েরা লিওন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, টোগো, তুর্কমেনিস্তান, ভেনিজুয়েলা এবং ইয়েমেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম বলেছেন, বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি)।


ফের বিশ্ববাজারে বাড়ল সোনার দাম

আপডেটেড ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৫:৩৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আন্তর্জাতিক বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) স্পট মার্কেটে সোনার দাম শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ২২৫ দশমিক ১১ ডলারে দাঁড়ায়। তবে সাপ্তাহিক হিসাবে এটি এখনো শূন্য দশমিক ১ শতাংশ নিম্নমুখী। (১ আউন্স= প্রায় ২ দশমিক ৪৩ ভরি)

এদিকে, ফেব্রুয়ারির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে সোনার দাম শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ২৫৫ দশমিক ৯০ ডলারে পৌঁছেছে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে, মার্কিন ডলারের দুর্বলতা ও যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমানোর জোরালো সম্ভাবনায় সোনার দামে এই বৃদ্ধি দেখা দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সভার আগে বিনিয়োগকারীরা এখন অপেক্ষা করছেন গুরুত্বপূর্ণ মুদ্রাস্ফীতি-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য। ডলার সূচক বড় মুদ্রাগুলোর বিপরীতে পাঁচ সপ্তাহের নিম্নমুখী অবস্থানে থাকায় অন্যান্য মুদ্রাধারীদের জন্য সোনা কেনা তুলনামূলক সাশ্রয়ী হয়েছে।

এফএক্সটিএমের সিনিয়র গবেষণা বিশ্লেষক লুকমান ওতুনুগা বলেন, ফেড আগামী সপ্তাহে সুদের হার কমাতে পারে- এমন বাজার প্রত্যাশা ও ডলারের দুর্বলতা সোনার বাজার উত্থানে সমর্থন দিচ্ছে।

এদিকে দেশের বাজারে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সোনা ভরিতে ২ লাখ ১১ হাজার ৯৫ টাকা বিক্রি হবে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সোনার দাম ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ২ লাখ ১১ হাজার ৯৫ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ লাখ ১ হাজার ৪৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৭২ হাজার ৭০৯ টাকা ও সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৮৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।


বিশ্বের ৩০ দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি) বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) মার্কিন সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে নোয়েম বলেন, “আমি কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যা উল্লেখ করব না, তবে (ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার) তালিকায় থাকা দেশগুলোর সংখ্যা ৩০টিরও বেশি। প্রেসিডেন্ট নিজে নিয়মিত এই দেশগুলোর অবস্থা পর্যালোচনা করছেন।”

নোয়েমকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, যেসব দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর সংখ্যা ট্রাম্প প্রশাসন ৩২-এ উন্নীত করবে কি না। তার জবাবে এই উত্তর দিয়েছেন নোয়েম।

সাক্ষাৎকারে নোয়েম অবশ্য কোনো দেশের নাম উল্লেখ করেননি। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে ফক্স নিউজকে তিনি বলেন, “যদি কোনো দেশ একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন করতে না পারে, যদি কোনো দেশ আমাদের কিংবা অন্য কারো সহায়তা ব্যতীত টিকে থাকতে না পারে— সেক্ষেত্রে সেসব দেশের নাগরিকদের কী কারণে আমরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে দেবো? আমাদের নাগরিকরাই বা কেন সেসব দেশে যাবে?”

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে এক আফগান শরণার্থীর গুলিতে নিহত হন যুক্তরাষ্ট্রের আধাসামরিক বাহিনী ন্যাশনাল গার্ডের দুই সদস্য। এই ঘটনার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে ১৯টি দেশের নাগরিকদের অভিবাসন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

এই ১৯টি দেশ হলো আফগানিস্তান, মিয়ানমার, বুরুন্ডি, শাদ, কিউবা, রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইকুয়াটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লাওস, লিবিয়া, সিয়েরা লিওন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান, টোগো, তুর্কমেনিস্তান, ভেনেজুয়েলা এবং ইয়েমেন।


গাজা পুনর্গঠনে ১০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে চীন

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা পুনর্গঠন ও মানবিক সংকট লাঘবের জন্য ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে ১০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে চীন।

বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে ফিলিস্তিন অথরিটি (পিএ)।

মানবিক সহায়তার জন্য চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে চিঠি পাঠিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা বলছে, চিঠিতে ফিলিস্তিনের ন্যায্য অধিকার সমর্থন এবং পশ্চিম তীর ও গাজায় ইসরাইলি দখলদারিত্ব কমাতে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন তিনি। বেইজিংয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অনুদানের ঘোষণা দেন শি।

সিনহুয়া জানায়, ফিলিস্তিনি ইস্যুর একটি সর্বসম্মত, ন্যায়সংগত ও টেকসই সমাধান নিশ্চিত ফ্রান্সের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি। বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের মধ্যেও দুই দেশের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি, পারস্পরিক সহায়তা ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি অটুট রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

গত সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে একটি উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনে সহ-সভাপতিত্ব করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এবং একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোরদার করার লক্ষ্য সে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।


সপ্তাহে তিন দিন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে চলবে বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঢাকা থেকে পাকিস্তানের করাচিতে সপ্তাহে তিন দিন ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ইকবাল হুসেইন খান।
পাক সংবাদমাধ্যম জিও টিভি জানিয়েছে, গত বুধবার দেশটির ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বক্তব্যের ফাঁকে দ্য নিউজকে এ তথ্য জানান বাংলাদেশি দূত।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চলার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট শুরু করছি। আমাদের জাতীয় এয়ারলাইন্স করাচিতে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।’
ভারতের আকাশসীমা ব্যবহার করে বাংলাদেশ-পাকিস্তান ফ্লাইট পরিচালিত হবে কি না এ প্রশ্নের জবাবে হাইকমিশনার বলেন, ‘যেমনটা ভারতীয় প্লেন বাংলাদেশের আকাশসীমা ব্যবহার করতে পারে। বিমানের ফ্লাইটও তেমনিভাবে ভারতের ওপর দিয়ে উড়বে।’
জিও টিভি জানিয়েছে, একটি সূত্র ইঙ্গিত দিয়েছে, পাকিস্তানের ওপর যেহেতু ভারত তাদের আকাশসীমা ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে, তাই এ মুহূর্তে পাকিস্তানের কোনো বিমান সংস্থার ঢাকায় ফ্লাইট পরিচালনার খুব বেশি একটা সম্ভাবনা নেই।

পাকিস্তানের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বক্তব্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য, সংযোগ এবং সহযোগিতার অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সীমিত প্রবেশাধিকার, সীমান্ত-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ এবং আঞ্চলিক রাজনীতি এখনো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে বাধা সৃষ্টি করে চলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারে, কিন্তু প্রবেশাধিকারর অভাব এ ক্ষেত্রে এখনো সবচেয়ে বড় বাধা হয়েছে।’
আগে রেলপথের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সহজে বাণিজ্য হতো উল্লেখ করে বাংলাদেশি দূত বলেন, ‘এখন পাকিস্তানের খেজুর দুবাই হয়ে আঞ্চলিক বাজারে পৌঁছায়।’


বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে দ্বিগুণ দ্রুত তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে আরব অঞ্চলে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) জানিয়েছে, আরব অঞ্চল ২০২৪ সালে রেকর্ডতম উষ্ণতম বছরের মুখোমুখি হয়েছিল। অঞ্চলটিতে বৈশ্বিক গড়ের দ্বিগুণ হারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। চরম আবহাওয়ার কারণে ব্যাঘাত ঘটছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ডব্লিউএমওর মহাসচিব সেলেস্তে সাউলো বলেন, ‘২০২৪ সাল আরব অঞ্চলের জন্য রেকর্ডের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ বছর ছিল - দীর্ঘমেয়াদী প্রবণতার ধারাবাহিকতা। তাপমাত্রা বিশ্বব্যাপী গড়ের দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘মানব স্বাস্থ্য, বাস্তুতন্ত্র এবং অর্থনীতি ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে না- এটি সামলানো খুব বেশি কষ্ট।’
আরব অঞ্চলের জলবায়ু পরিস্থিতির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে উষ্ণায়নের হার ত্বরান্বিত হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘ ও তীব্র তাপপ্রবাহ, তীব্র খরা ও ধ্বংসাত্মক বৃষ্টিপাতের ঘটনা ঘটেছে।
২০২৪ সালে আরব অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা ১৯৯১-২০২০ সালের গড় তাপমাত্রার চেয়ে ১.০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। একই বছর বেশ কয়েকটি দেশে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ছয়টি ব্যর্থ বর্ষা মৌসুমের পর পশ্চিম উত্তর আফ্রিকাজুড়ে খরা আরও গভীর হয়েছে। সৌদি আরব, বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ শুষ্ক অঞ্চলগুলোতে চরম বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে আরব অঞ্চলে প্রায় ৩৮ লাখ মানুষ চরম আবহাওয়াজনিত ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হন। মূলত তাপপ্রবাহ এবং বন্যার কারণে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।


ত্রিমুখী সংকটে জর্জরিত ব্রিটেন

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় দেউলিয়া হওয়ার সতর্কবার্তা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা তহবিলে যোগদানের জন্য আলোচনা ব্যর্থ হওয়া এবং একটি নতুন বামপন্থি দলের জন্ম- মূলত এই তিন কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ দিন পার করছে ব্রিটেন।

গত সপ্তাহে ব্রিটেনের ঘটনাবলি এমন একটি চিত্র তুলে ধরে যা দেশটিকে অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে গভীর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে। অভূতপূর্ব আর্থিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ইউরোপের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্কে বাধার সম্মুখীন বিদেশি সম্পর্ক এবং বিপ্লবী স্লোগানসহ দেশীয় রাজনৈতিক দৃশ্য একটি নতুন শক্তির উত্থানের সাক্ষ্য বহন করে।

আপাতদৃষ্টিতে এই তিনটি পৃথক ঘটনা প্রমাণ করে জটিল পথ বেছে নিয়েছে লন্ডন।

সম্প্রতি ইউকে অফিস ফর স্টুডেন্টসের (ওএফএস) সরকারি সতর্কতা দেশটির উচ্চশিক্ষা খাতের জন্য শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। যার মধ্যে ২৪টি সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাবদ্ধ।

ওএফএসের প্রধান নির্বাহী যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্স শিক্ষা কমিটিকে পরিস্থিতি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপের ৭টি-সহ প্রায় ২০টি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় গুরুতর আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন।

আর এ আর্থিক সংকটের মূল কারণ হিসেবে বছরের পর বছর ধরে ‘ফি জমে যাওয়া’ এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা তীব্র হারে কমে যাওয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে তাদের খরচ মেটাতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উচ্চ ফির ওপর নির্ভর করেছে এবং এখন বাজেট ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে।

এ নিয়ে অফিস ফর স্টুডেন্টস সতর্ক করে বলেছে, শতকরা ৪৫ ভাগ প্রতিষ্ঠান এ বছর বাজেট ঘাটতির সম্মুখীন হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করে, কম পারফর্মিং কোর্স (এমনকি নটিংহ্যামের মতো শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও) কেটে ফেলে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে একীভূত করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

জবাবে যুক্তরাজ্যের শিক্ষা বিভাগ টিউশন ফির ওপর সীমা নির্ধারণসহ সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

নিরাপত্তা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। ব্রিটেনকে ইইউর এসএএফই নামে পরিচিত ১৫০ বিলিয়ন ইউরোর প্রতিরক্ষা তহবিলে যোগদানের অনুমতি দেওয়ার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। হুমকির বিরুদ্ধে ইউরোপকে সশস্ত্র করার পরিকল্পনার অংশ এই তহবিল।

আলোচনার ব্যর্থতা মূলত প্রবেশ ফি নিয়ে বিরোধের কারণে। ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ৬ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যেখানে লন্ডন অনেক কম অর্থ দিতে ইচ্ছুক ছিল।

ইইউ সেক্রেটারি অব স্টেট নিক থমাস-সাইমন্ডস এই ফলাফলকে ‘হতাশাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা শিল্প এখনো ‘তৃতীয় দেশ’ শর্তে প্রকল্পগুলোতে অবদান রাখতে পারে। এই পরাজয় ব্রাসেলসের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘নতুন যুগের’ সূচনা করার লেবার সরকারের দাবির ওপর একটি আঘাত এবং ব্রেক্সিট কৌশলগত সহযোগিতার ওপর ভারি ছায়া ফেলার প্রমাণ।

এমন দৃশ্যপটে ব্রিটেনে প্রাক্তন লেবার নেতা জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে ‘ইওর পার্টি’ নামে একটি নতুন দলের জন্ম হয়েছে। দলটি ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির বামপন্থি বিকল্প হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে এবং শুরু থেকেই এর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিভাজনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

করবিন ঐতিহ্যবাহী বামপন্থিদের ওপর ভিত্তি করে আরও একটি প্রচলিত দল চান। তবে সহপ্রতিষ্ঠাতা জাহরা সুলতানা একটি উগ্র ইহুদিবিরোধী লাইন, ন্যাটো থেকে প্রত্যাহার এবং এমনকি রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির ওপর জোর দেন।

দলটির ৫৫ হাজার সদস্য রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। যার অর্থ দাঁড়ায় ১৯৪০ সাল থেকে এই দলটি ব্রিটেনের বৃহৎ সমাজতান্ত্রিক দলে পরিণত হয়েছে। ডানপন্থি মিডিয়া এটিকে ‘অপ্রাসঙ্গিকতার পথে একটি আন্দোলন’ হিসেবে উপহাস করেছে। দলের জন্ম বামপন্থিদের মধ্যে বিভক্তি এবং স্টারমারের নীতির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে, রাজনৈতিক সমীকরণের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে।

এই তিনটি ঘটনা আজ ব্রিটেনকে এক জটিল মোড়ে ফেলে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংকট দেশে শিক্ষা এবং গবেষণার মানের ভবিষ্যত নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে। ইউরোপীয় আলোচনার ব্যর্থতা ব্রেক্সিট-পরবর্তী সহযোগিতার ব্যবহারিক সীমা উন্মোচিত করে এবং একটি নতুন বামপন্থি দলের উত্থান সমাজের রাজনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত দেয়।

এই তিন চ্যালেঞ্জের প্রতি স্টারমার সরকারের প্রতিক্রিয়া দেশের ভবিষ্যত রূপরেখা তৈরি করবে।


মামদানির গ্রেপ্তারের হুমকি সত্ত্বেও নিউইয়র্ক যাওয়ার ঘোষণা নেতানিয়াহুর

নেতানিয়াহু এবং মামদানি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নির্বাচিত হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) পরোয়ানা মেনে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন নিউইয়র্ক সিটির নতুন মেয়র জোহরান মামদানি। তবে এই সতর্কতা সত্ত্বেও নিউইয়র্কে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নেতানিয়াহু।

বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যমে একটি ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি নিউইয়র্কে আসব।’

মামদানির সঙ্গে কথা বলবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এ দখলদার বলেন, ‘যদি মামদানি তার চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেন এবং বলেন যে ইসরায়েলেরও অস্তিত্বের অধিকার আছে, তাহলে এটি আলোচনা করার জন্য একটি ভালো শুরু হবে।’

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে জোহরান মামদানি ঘোষণা দেন, তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই নগরে এলে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগকে (এনওয়াইপিডি) তাকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেবেন।

গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মামদানি বলেন, ‘নেতানিয়াহু যুদ্ধাপরাধী এবং তিনি গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতি সম্মান জানিয়ে তাকে বিমানবন্দরেই আটক করার নির্দেশ দেব।’

আর গত মাসে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ৩৪ বছর বয়সি এই মুসলিম যুবক রীতি মতো ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে ইতিহাস গড়ে প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশিয়ার বংশোদ্ভূত কোন ব্যক্তি হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের নভেম্বরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযানের নির্দেশ এবং উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের নামে ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ-শিশুর হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নেতানিয়াহুকে দোষী সাব্যস্ত করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি), যা এখনও কার্যকর আছে।

তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য নয় এবং নিউইয়র্ক পুলিশের পক্ষে এমন গ্রেফতার কার্যত অসম্ভব। এতে ফেডারেল আইনেরও লঙ্ঘন হতে পারে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সরাসরি নেতানিয়াহুর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে চাইলেও মামদানি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করতে পারবেন কি না এ নিয়ে শঙ্কা আছে।

হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত বছর জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় হত্যাকাণ্ডের কারণে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তবে ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


পুতিন-মোদির বৈঠকে প্রাধান্য পাবে যেসব বিষয়

ভ্লাদিমির পুতিন ও নরেন্দ্র মোদি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঐতিহাসিক সফরে ভারত আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দু’দিনের সফরে তিনি নয়া দিল্লিতে পা রাখবেন। ২০২১ সালে শেষ ভারতে এসেছিলেন পুতিন। আর এই বছরই রয়েছে ভারত-রাশিয়া কৌশলগত অংশীদারত্বের ২৫তম বার্ষিকী। সেই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দেশের ২৩তম দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, সফরের শুরুতেই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারি বাসভবনে হবে দুই নেতার ব্যক্তিগত নৈশভোজ। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং পুতিন আঞ্চলিক ও বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাবেন। গত বছর প্রধানমন্ত্রী মোদির মস্কো সফরের সময় পুতিনও তাকে ব্যক্তিগত ডিনারে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তারই প্রতিদান হিসেবে এই কর্মসূচি রাখা হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকালে পুতিনকে রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হবে ত্রিপক্ষীয় গার্ড অব অনার প্রদানের মাধ্যমে। এরপর তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধির স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাবেন। আর তারপরই হায়দরাবাদ হাউসে শুরু হবে ২৩তম ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি ও রুশ প্রেসিডেন্টের এই বৈঠকে কোনো বড় ধরনের ঘোষণা বা চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, ও জ্বালানিসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনায় উঠে আসবে বলেই খবর।

সূত্র জানিয়েছে, এই বৈঠকে ভারতীয় কর্মীদের রাশিয়ায় কাজের সুযোগ বাড়াতে বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। এছাড়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতার অংশ হিসেবে লজিস্টিক সাপোর্ট চুক্তিও হতে পারে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে নতুন সহযোগিতা বিশেষ করে ওষুধ, কৃষি, খাদ্যপণ্য ও ভোক্তা সামগ্রী রপ্তানি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হবে।

তবে দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে প্রতিরক্ষা। আরও উন্নত পর্যায়ের ব্রহ্মোস নিয়ে কথা বলতে পারেন তারা। সেই সঙ্গে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০-এর বাকি দুটি ইউনিট সরবরাহের বিষয়ে স্পষ্টতা চাইবে ভারত।

আজ শুক্রবার মধ্যাহ্নভোজের পর পুতিন অংশ নেবেন ইন্ডিয়া–রাশিয়া বিজনেস ফোরামের অনুষ্ঠানে। এখানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পুনরুজ্জীবিত করা নিয়ে আলোচনা হবে। এই পর্যায়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাম্প্রতিক কয়েক বছরে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে ভারতের রাশিয়া থেকে বার্ষিক আমদানি প্রায় ৬৫ বিলিয়ন ডলার, আর রাশিয়ার ভারতীয় আমদানি মাত্র ৫ বিলিয়ন ডলার, ফলে বড় বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সার খাতে সহযোগিতা বাড়ানোও আলোচনার এজেন্ডায় রয়েছে, কারণ রাশিয়া প্রতি বছর ভারতকে ৩-৪ মিলিয়ন টন সার সরবরাহ করে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি মুর্মু পুতিনের সম্মানে বিশেষ নৈশভোজ আয়োজন করবেন। একই দিনে তিনি ভারতে রুশ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক নতুন ভারত চ্যানেল উদ্বোধন করবেন। রুশ প্রেসিডেন্টের সফর প্রায় ২৮ ঘণ্টা চলবে। এদিন রাত ৯টায় তার ভারতে সফরের সমাপ্তি ঘটবে।


গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে ‘মৌলিক ভুল’ ছিল: গুতেরেস

অ্যান্তোনিও গুতেরেস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের পদ্ধতিতে ‘মৌলিক ত্রুটি’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। গত বুধবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করার ‘জোরালো কারণ’ রয়েছে।

নিউ ইয়র্কে রয়টার্স নেক্সট সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, ইসরায়েলি অভিযান যেভাবে পরিচালিত হয়েছে, তাতে বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এবং গাজা ধ্বংসের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে- এতে মৌলিক কিছু ভুল ছিল।

তিনি বলেন, তাদের নাকি লক্ষ্য ছিল হামাসকে ধ্বংস করা। অথচ গাজা ধ্বংস হলেও, হামাস এখনও নিশ্চিহ্ন হয়নি। সুতরাং এই অভিযানের প্রকৃতিতে মৌলিক সমস্যা রয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে ৭০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যুদ্ধের সূত্রপাত হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায়, যেখানে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়েছিলেন।

গাজায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে গুতেরেস বলেন, সে সম্ভাবনা আছে বলে বিশ্বাস করার শক্তিশালী কারণ রয়েছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন বলেন, একমাত্র অপরাধ হলো- ৭ অক্টোবরের নৃশংস হামলার দুই বছরের বেশি সময় পরও জাতিসংঘ মহাসচিব ইসরায়েল সফর করেননি, বরং তিনি তার পদ ব্যবহার করে প্রতিটি সুযোগে ইসরায়েলকে আক্রমণ ও নিন্দা করেছেন।

তবে গত বছরের অক্টোবরে তৎকালীন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বর্তমানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী) ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছিলেন, তিনি গুতেরেসের দেশটিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন।

১০ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে ও হামাসের মধ্যে নাজুক এক যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, তবে ইসরায়েল এখনও গাজায় হামলা চালাচ্ছে এবং তাদের দাবি অনুযায়ী, হামাসের অবকাঠামো ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।

গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশংসা করেন গুতেরেস। আগস্টে বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছিল, গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, মানবিক সহায়তার বিষয়ে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া রয়েছে। আশা করি এটি বজায় থাকবে এবং আরও উন্নত হবে।

গাজায় সহায়তা সরবরাহে দীর্ঘদিন ধরে বাধার অভিযোগ করে আসছে জাতিসংঘ- যার দায় তারা ইসরায়েলের ওপর চাপায়। অন্যদিকে, জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন ত্রাণ কার্যক্রমের সমালোচনা করে ইসরায়েল বলেছে, হামাস ত্রাণ লুট করে- যা গোষ্ঠীটি অস্বীকার করে আসছে।


যুদ্ধের অবসান চান পুতিন: ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের অবসান চান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন-এমনটাই জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, পুতিন এখনো চান ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হোক।

গত বুধবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ ও জামাতা তথা অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের বৈঠকের পর তার এ ধারণা হয়েছে। তার ভাষায়, ‘তাদের ধারণা খুব স্পষ্ট- পুতিন যুদ্ধ শেষ করতে চান, তিনি একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চান।’

গত মঙ্গলবার মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে উইটকফ ও কুশনারের বৈঠক হয়। এর পরদিন ট্রাম্প এ মন্তব্য করলেন। পুতিনের সঙ্গে সেই বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে ওয়াশিংটনের সংশোধিত খসড়া শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। ট্রাম্প জানান, তিনি গত মঙ্গলবার রাতেই কুশনার ও উইটকফের সঙ্গে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘তারা পুতিনের সঙ্গে যথেষ্ট ভালো একটি বৈঠক করেছেন। এরপর কী হয়, তা আমরা দেখব’। ট্রাম্প আবারও দাবি করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুই হতো না।

তার ভাষায়, ‘পুতিনের সঙ্গে জ্যারেড কুশনার ও স্টিভ উইটকফের খুব ভালো বৈঠক হয়েছে। তবে এটা দুপক্ষের ব্যাপার সমঝোতা হলে দুপক্ষকেই রাজি হতে হবে।’

অন্যদিকে গত বুধবার রুশ প্রেসিডেন্টের সহযোগী ইউরি উশাকভ বলেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে রাশিয়ার মতামত বিবেচনায় নিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিবেশ ইতিবাচক। মার্কিনরা দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে প্রস্তুত- এমন সমাধান, যা আমাদের লক্ষ্য পূরণেও সহায়তা করে।’

এর আগে গত বুধবার এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে ৫ ঘণ্টার বৈঠকের পরও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোন সমঝোতা হয়নি বলে রাশিয়া জানিয়েছে। মস্কোর ক্রেমলিনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ দূতদের আলোচনার পর গত বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।


গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা চলছেই, ৭ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় নিহত ব্যক্তির স্বজনদের আহাজারি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় ২ শিশুসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের গত বুধবারের এ হত্যাকাণ্ড গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলা যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ লঙ্ঘন। ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ভূখণ্ডটিতে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা বন্ধ করেনি ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার মিশর সীমান্তের কাছে হামাসের যোদ্ধাদের হামলায় তাদের চার সেনা আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে।

গাজার চিকিৎসা কর্মীদের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, ভূখণ্ডটির দক্ষিণাঞ্চলের আল-মাওয়াসি শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এখানে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আগুন ধরে যায় আর তাতে শিবিরের বেশ কয়েকটি তাঁবু পুড়ে যায়।

গাজার দমকল বাহিনীর মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ২ শিশুসহ ৫ নাগরিক নিহত ও অন্যরা আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের আঘাত গুরুতর।’

গাজার কুয়েতি হাসপাতালের সূত্রগুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, নিহত শিশুদের বয়স ৮ ও ১০ বছর আর এ হামলার ঘটনায় আরও ৩২ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজন মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস আল-মাওয়াসিতে হওয়া হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এই হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে বর্ণনা করে এর মাধ্যমে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি ইসরায়েলের অবজ্ঞা’ প্রদর্শিত হয়েছে বলে অভিযোগ হামাসের।

আল-মাওয়াসি শিবিরের পাশাপাশি গাজার উত্তরাঞ্চলে গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গাজার কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ৫৯১ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ৩৬০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা ও আরও ৯২২ জনকে আহত করেছে।

এদিকে গত বুধবার হামাস বলেছে, তারা তাদের হাতে থাকা শেষ দুই জিম্মির একজনের মরদেহ ইসরায়েলকে ফেরত দিয়েছে। রেডক্রসের মাধ্যমে এই ‘সম্ভাব্য জিম্মির’ দেহাবশেষ গ্রহণ করার কথা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েল জানিয়েছে, সব জিম্মির মৃতদেহ ফিরে পাওয়া মাত্রই গাজার মিশর সীমান্তবর্তী রাফা ক্রসিং খুলে দেবে তারা।

হামাস এর আগেও গত মঙ্গলবার একটি মরদেহ হস্তান্তর করেছিল। কিন্তু পরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, দেহাবশেষটি কোন জিম্মির নয়, অন্য কারো।

গাজায় নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে হামাস এ পর্যন্ত ২০ জন জীবিত ও ২৬ জন মৃত জিম্মির দেহাবশেষ ইসরায়েলকে ফেরত দিয়েছে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় আশার আলো

একে অপরের হাতে হাত রেখে হাঁটছেন দম্পতিরা। কনেরা পরেছেন লাল ফিতায় সজ্জিত ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি সাদা ও লাল পোশাক। বরদের পরণে কালো স্যুট এবং টাই। পাশাপাশি হাঁটলেও তাদের এই বিয়ের পটভূমি বলছিল অন্য গল্প- জীর্ণ ভবন, কংক্রিটের স্তূপ আর ধ্বংসাবশেষ; যা গাজা উপত্যকার দুই বছরের সংঘাতের ক্ষতচিহ্ন।

গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণের খান ইউনিসে ৫৪ দম্পতি এক গণবিবাহ অনুষ্ঠানে একসূত্রে বাঁধা পড়েছে। যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের মাঝেই জীবনের এক সাহসী উদযাপন বলা যায় এই আয়োজনকে।

কারাম মুসায়েদ নামের এক বর বলেন, ‘আমাদের এমন একটি সুখের মুহূর্ত দরকার ছিল; যা আমাদের হৃদয়কে আবার জীবন্ত করে তুলতে পারে।’

ধ্বংসস্তূপে বিছানো লাল কার্পেটের ওপর ঢাক-ঢোলের তালে তালে দম্পতিরা এগিয়ে গিয়ে উঠছিলেন অস্থায়ী মঞ্চে। কনে হাতে ধরেছিলেন লাল, সাদা ও সবুজ রঙের ফিলিস্তিনি পতাকা আর সাজানো ফুলের তোড়া। বররা পাশে হাঁটছিলেন ছোট ছোট পতাকা হাতে। ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত আর নাচে-বাজনায় সাজানো এই গণবিবাহের আয়োজন শহরের এক স্কয়ারে শত শত দর্শকের হৃদয় কেড়েছে।

অনেকে চত্বরে দাঁড়িয়েছিলেন। কেউ আবার ঝুঁকি নিয়ে পাশের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের ওপর উঠে অনুষ্ঠান দেখছিলেন। দুবছর যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর নবদম্পতিরা জানিয়ে দিলেন সতর্ক আশাবাদ।

মুসায়েদ নামক এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমাদের আজকের অনুভূতিটা অনেক সুন্দর। এত ভোগান্তির পর আমরা সত্যিই এই আনন্দের প্রাপ্য ছিলাম। কঠিন জীবন আর যে ক্ষুধা সহ্য করেছি, বন্ধু-স্বজন হারানোর পর।’

হিকমত উসামা নামের আরেকজন বলেন, ‘এই সব যুদ্ধ, ধ্বংস আর যা যা আমরা পার করেছি- তারপর আবার আনন্দে ফিরতে পারা, নতুন জীবন শুরু করা; এ এক অতুলনীয় অনুভূতি। আল্লাহর শুকরিয়া, ইনশাল্লাহ সামনে আরও ভালো দিন আসবে।’

গাজায় এই গণবিয়ের আয়োজন করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক দাতব্য সংগঠন আল-ফারিস আল-শাহিম ফাউন্ডেশন। যারা যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় দীর্ঘদিন ধরে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসছে।

সংগঠনটির গণমাধ্যমবিষয়ক কর্মকর্তা শরিফ আল-নাইরাব আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধ্বংসস্তূপের মাঝেই জায়গাটি বেছে নিয়েছি এই বার্তা দেওয়ার জন্য ‘আনন্দের পোশাক’ আবারও শরীরে উঠবে।

‘গাজার মানুষ আবারও ধ্বংসাবশেষ থেকে উঠে দাঁড়াবে, গাজা আবার আনন্দে ভরে যাবে। ইনশাল্লাহ আমরা গাজার ভবিষ্যৎ পুনর্গঠন করব।’

যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর ইসরায়েল এবং হামাসের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় মানুষ ধীরে ধীরে তাদের জীবন পুনরায় শুরু করেছে। যুদ্ধবিরতি বেশিরভাগ সময় ধরে বজায় থাকলেও মাঝে মাঝে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।


বন্যা কবলিত শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বন্যা কবলিত শ্রীলঙ্কা এবং ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসে দেশগুলোর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আরও বাড়িয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশ দুটি বন্যা কবলিত অবস্থায় আছে। এর আগে, চারটি দেশে এই বন্যায় ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে। -খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।

ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া সংস্থা বৃহস্পতিবার সতর্ক করে দিয়েছে যে সুমাত্রা দ্বীপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি প্রদেশে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে ‘মাঝারি থেকে ভারী’ বৃষ্টিপাত হতে পারে।

রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হলেও, তা এখনও গত সপ্তাহের ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের মতো মারাত্মক আকার ধারণ করেনি।

৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা ৭৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের এই সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কম। যদিও দূরবর্তী এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায়, এখনও মৃত মানুষের সকল তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় ৫৬০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।

এছাড়া দুর্যোগ পরবর্তী যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় এখন সকলের অবস্থান নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। উত্তর সুমাত্রার পান্ডানের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫৪ বছর বয়সী সাবান্দি এএফপিকে বলেন, গত সপ্তাহে বন্যার কারণে তার বাড়ি কাদাপানিতে ভেসে যাওয়ায় তিনি এখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

নতুন করে ফের বৃষ্টিপাত হলে পারে— এই পূর্বাভাস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এখন আমরা আবার নতুন করে ভয় পাচ্ছি।’

সাবান্দি বলেন, ‘আমরা এই ভয় পাচ্ছি যে হঠাৎ করে ফের ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে, আবারও বন্যা হবে।’ এই পৌঢ় খাবার বা পানি ছাড়াই তার ছাদে দুই দিন ধরে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। বন্যার আগে তিনি নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারেননি বলে জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ঘর কাদাপানিতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। কাদা এত বেশি ছিল যে আমরা ঘরে ঢুকতেও পারিনি।’ যদিও এশিয়া জুড়ে মৌসুমি বর্ষা বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভরশীল। জলবায়ু পরিবর্তন এই ঘটনাকে আরও অনিয়মিত, অপ্রত্যাশিত ও মারাত্মক করে তুলছে।

গত সপ্তাহে বড় ধরনের দুটি পৃথক ঝড় শ্রীলঙ্কা, সুমাত্রা, দক্ষিণ থাইল্যান্ডের কিছু অংশ ও উত্তর মালয়েশিয়ায় ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি করেছে। দুর্যোগের এই মাত্রা ত্রাণ প্রচেষ্টাকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।

ইন্দোনেশিয়ার বান্দা আচেহ-তে এএফপি’র একজন প্রতিবেদক বলেছেন যে একটি গ্যাস স্টেশনে জ্বালানির জন্য লাইন প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ হয়েছে। অন্যত্র, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা খাদ্য ঘাটতি, মূল্যবৃদ্ধি ও লুটপাটের খবরও পেয়েছেন।

শ্রীলঙ্কায়, আবহাওয়া পূর্বাভাসকারীরা জানিয়েছেন যে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু বয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। মধ্য অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় ভূমিধসের সতর্কতা পুনর্নবীকরণ করা হয়েছে এবং বাসিন্দাদের বাড়ি ফিরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ, আরও বৃষ্টিপাতের ফলে ইতোমধ্যেই ভিজে নরম হয়ে যাওয়া ঢালগুলো ধসে পড়তে পারে।

কলম্বো থেকে ক্যান্ডি পর্যন্ত ১১৫ কিলোমিটার (৭১ মাইল) প্রধান মহাসড়কটি প্রতিদিন ১৫ ঘন্টার জন্য পুনরায় খোলা হয়েছে, কারণ শ্রমিকরা মাটি ও পাথরের ঢিবি অপসারণ করেছে। অনেক স্থানে গাড়ি ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা পেরোতে বাধ্য হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কায় কমপক্ষে ৪৭৯ জন মারা গেছে এবং এখনও পর্যন্ত আরও শত শত লোক নিখোঁজ রয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন করেছেন।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে ৭ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত প্রয়োজন হতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। মাত্র তিন বছর আগের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে থাকা এই দেশের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।


banner close