সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
১ পৌষ ১৪৩২

প্রধানমন্ত্রিত্ব ভাগাভাগি করতে পারে নওয়াজ ও বিলওয়ালের দল

নওয়াজ শরিফ ও বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০৩

পাকিস্তানে নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। জোট সরকার গঠনের দিকে যাচ্ছে দেশটি। সম্ভাব্য জোট সরকারে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী পদ ভাগাভাগি করতে পারে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)। পরবর্তী পাঁচ বছর মেয়াদে প্রত্যেক দল থেকে আড়াই বছর করে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের সম্ভাবনা নিয়ে এরই মধ্যে আলোচনা হয়েছে। গতকাল সোমবার পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র বলেছে, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে জোট সরকার গঠনের চেষ্টায় গত রোববার দুই দলের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। ওই বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রিত্ব ভাগাভাগির ধারণা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০১৩ সালে বেলুচিস্তানে পিএমএল-এন এবং ন্যাশনাল পার্টি (এনপি) একই পদ্ধতিতে ক্ষমতা ভাগাভাগি করেছিল। সে সময় দুই দলের দুই মুখ্যমন্ত্রী পাঁচ বছরের মেয়াদ ভাগাভাগি করে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

লাহোরের বিলাওয়াল হাউসে রোববারের বৈঠকে পিপিপি-পিএমএলএন উভয় পক্ষই সাধারণ নির্বাচনের পর দেশটির রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সহযোগিতা করতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে। বৈঠকে পিপিপি-পার্লামেন্টারিয়ান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি, পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি এবং পিএমএল-এন থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা উপস্থিত ছিলেন।

ভেতরের খবর

ভেতরের খবর বলছে, বৈঠকে পিএমএল-এন আনুষ্ঠানিকভাবে পিপিপি’কে জোট সরকারে অংশীদার হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। এসময় পিপিপি’কে স্বতন্ত্র বিজয়ী প্রার্থী এবং এমকিউএম-পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগের বিষয়েও অবহিত করেছে নওয়াজ শরিফের দলটি।

বৈঠকে পিএমএল-এন নেতারা দাবি করেন, তারাই প্রধানমন্ত্রীর পদ ধরে রাখবেন। অন্যদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি দাবি করেন, পিপিপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির (সিইসি) মধ্যেই বিলাওয়ালকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত করেছে। এরপর দুই দলের নেতারা পাঁচ বছরের মেয়াদ অর্ধেক করে নিজ নিজ দল থেকে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেন বলে জানা যায়।

এর আগে রোববার পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনের তিন দিন পর পূর্ণাঙ্গ ফলাফল ঘোষণা করে দেশটির নির্বাচন কমিশন ইসিপি।

সেখানে কোন দল সর্বশেষ কতটি আসন পেয়েছে সেটি জানানো হয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ বা দেশের সংসদের নিম্নকক্ষের জন্য ঘোষিত নির্বাচনী ফলাফল অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০১টি আসন পেয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ ৭৫টি আসন এবং বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪টি।

পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের তিন দিন পর বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন ইমরান খানের পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন। সরকার গঠন করতে হলে ১৩৪টি আসন থাকতে হবে। এর মধ্যেই মুসলিম লিগ-এন এবং পিপলস পার্টি নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেছে। তবে সংখ্যারগরিষ্ঠতা পেতে হলে তাদের আরও অন্তত পাঁচজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য অথবা অন্তত পাঁচজন নির্বাচিত এমপি রয়েছে, এমন দলের সমর্থন দরকার হবে।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশে বেশ বিলম্ব হওয়ায় ভোটের প্রক্রিয়া নিয়ে নানা সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে, যা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শঙ্কা প্রকাশ করে আসছে। তবে দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকার জানাচ্ছে, খারাপ আবহাওয়া ও দূরত্ব বেশি হওয়ায় ফলাফল ঘোষণায় দেরি হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী জাম মোহাম্মদ আচকজাই জানিয়েছেন, বেলুচিস্তানের ফলাফল ঘোষণায় দেরি হওয়ার কারণ এলাকাটা দুর্গম এবং আবহাওয়া সেখানে অনুকূলে নেই। তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে আহ্বান জানান, যারা নির্বাচনে জয়লাভ করতে পারেননি তারা যেন ফলাফল মেনে নেওয়ার মতো মানসিকতা দেখায়। যদি কারও ফলাফল নিয়ে আপত্তি থাকে তাহলে সেটা যথাযথ জায়গায় তারা প্রতিবাদ জানাতে পারে।

পিএমএল-এনের সঙ্গে জোট গঠনের শর্ত হিসেবে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারিকে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী করার দাবি জানিয়েছে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিলওয়ালের বাবা আসিফ আলী জারদারি এ দাবি উত্থাপন করেছেন। সমর্থনের বিনিময়ে নতুন সরকারে পিপিপিকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে পাকিস্তানি দৈনিক দ্য নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) সভাপতি শাহবাজ শরিফ তার দলের নেতাদের সামনে পিপিপির দেওয়া এসব শর্তের কথা জানিয়েছেন।

এর আগে জানা গেছে, ইমরানপন্থিদের সরকার গঠন আটকাতে ক্ষমতা ভাগাভাগিতে রাজি হয়েছে নওয়াজ শরিফ ও বিলওয়াল ভুট্টোর দল। পরবর্তীতে পিপিপি চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো ও তার বাবা আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে বৈঠক করেন পিএমএল-এন সভাপতি ও নওয়াজ শরিফের ভাই শাহবাজ শরিফ।


চিলির নতুন প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কাস্ত

আন্তোনিও কাস্ত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চিলির প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন কট্টর ডানপন্থি নেতা হোসে আন্তোনিও কাস্ত। প্রায় সব ব্যালট গোনার পর ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, কাস্ত ৫৮ শতাংশ ভোট পেয়ে বামপন্থি জোটের প্রার্থী জেনেট জারাকে পরাজিত করেছেন।

নির্বাচনী প্রচারণায় আন্তোনিও কাস্ত দেশ থেকে তিন লাখেরও বেশি অভিবাসীকে বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পাশাপাশি চিলির উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত বন্ধ করার, রেকর্ড মাত্রার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়ার এবং স্থবির অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করারও বিষয়েও ব্যাপক প্রচারণা চালান তিনি।

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় হাজারো উৎফুল্ল জনতার উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে আন্তোনিও কাস্ত বলেন, ‘চিলির জনগণ পরিবর্তন চেয়েছিল।’ তিনি এ সময় আইনের প্রতি সম্মান দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, সমালোচকদের সমালোচনা মাথায় রেখেই চিলিবাসীর জন্য শাসনকাজ পরিচালিত হবে।

আমেরিকা মহাদেশের এক সময়ের সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে বিবেচিত চিলি কোভিড-১৯ মহামারির আঘাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। এ ছাড়া, সহিংস প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ এবং বিদেশি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের অপতৎপরতা কোণঠাসা করে ফেলেছিল দেশটির সামাজিক স্থিতিশীলতাকে।

নির্বাচনে জয়ের খবরে রাজধানী সান্তিয়াগোতে সমর্থকরা গাড়ির হর্ন বাজিয়ে, পতাকা উড়িয়ে দেশটির সাবেক স্বৈরশাসক অগাস্তো পিনোশের পক্ষে অবস্থান নেওয়া আন্তোনিও কাস্তের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করে।

সমর্থকদের একজন অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী জিনা মেলো তার প্রতিক্রিয়ার বলেন, আন্তোনিও কাস্তের উচিত হবে প্রথম দিন থেকেই রাস্তায় সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা। বাইরে থেকে যেসব অপরাধী অপরাধ করার জন্য এদেশে অবস্থান করছে তাদের সবাইকে জেলে পাঠানোরও দাবি জানান তিনি।

কাস্তের উচ্ছ্বসিত সমর্থকরা এ সময় জাতীয় সংগীত গাইছিল, কারও কারও হাতে ছিল এক সময়ের স্বৈরশাসক পিনোশের ছবি। কেউ কেউ পিনোশের নাম ধরে চিৎকারও করছিল।

৫৯ বছর বয়সি আন্তোনিও কাস্ত এর আগে দুবার নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর তৃতীয়বারে এসে সফল হলেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে। তিনি ৯ সন্তানের বাবা। আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, হন্ডুরাস, এলসালভেদর ও ইকুয়েডরের পর লাতিন আমেরিকায় এটি ডানপন্থিদের অতি সাম্প্রতিক বিজয়।

ভোট গণনা শেষ হওয়ার পর প্রকাশিত ফলাফলে আন্তোনিও কাস্তের বিজয় দেখে কমিউনিস্ট প্রার্থী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া জেনেট জারা তার পরাজয় মেনে নিয়ে বলেছেন, জনগণ পরিষ্কার ও জোরালো বার্তা দিয়েছে।


ন্যাটোতে যোগদানের আশা ছাড়লেন জেলেনস্কি

ভলোদিমির জেলেনস্কি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেন দীর্ঘদিনের ন্যাটো সদস্যপদ অর্জনের লক্ষ্য থেকে সরে আসতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে এর পরিবর্তে তিনি পশ্চিমাদের কাছ থেকে নিজ দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন।

স্থানীয় সময় রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে জার্মানির বার্লিনে পৌঁছে এসব কথা বলেন তিনি।

সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জসহ ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে জার্মানির বার্লিনে পৌঁছেছেন জেলেনস্কি।

এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ইউক্রেন দীর্ঘদিনের ন্যাটো সদস্যপদ অর্জনের লক্ষ্য থেকে সরে আসতে প্রস্তুত। এর পরিবর্তে তিনি পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা গ্রহণের প্রস্তাব দেন।

কিয়েভের ভাষায়, এটি ইউক্রেনের পক্ষ থেকে একটি বড় ছাড়। কারণ, বহু বছর ধরে ন্যাটো সদস্য পদকেই রাশিয়ার ভবিষ্যৎ হামলা ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর সুরক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে এসেছে।

জেলেনস্কি বলেন, ‘আজ ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা নিশ্চয়তা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ন্যাটোর অনুচ্ছেদ–৫–এর মতো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা, পাশাপাশি ইউরোপীয় অংশীদারদের কাছ থেকেও নিরাপত্তা নিশ্চয়তা—এবং কানাডা, জাপানসহ অন্যান্য দেশগুলোর কাছ থেকেও। এই নিরাপত্তা নিশ্চয়তাগুলো আমাদের জন্য ভবিষ্যতে আরেকটি রুশ আগ্রাসন ঠেকানোর সুযোগ। আর এটি আমাদের পক্ষ থেকে একটি সমঝোতা।’

শান্তি আলোচনা নিয়ে বৈঠকের জন্য রোববার বার্লিনে পৌঁছেছেন ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ এবং তার জামাতা জ্যারেড কুশনার। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্টের শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে তারা ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।


মরক্কোতে আকস্মিক বন্যায় ৩৭ জনের মৃত্যু, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মরক্কোর উপকূলীয় শহর সাফিতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। রবিবার রাজধানী রাবাত থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সাফিতে এই বিপর্যয় ঘটে। মাত্র এক ঘণ্টার প্রবল বর্ষণেই পুরো শহরের চিত্র পাল্টে যায়, যার ফলে ঐতিহাসিক এই জনপদের রাস্তাঘাট কাদাপানিতে তলিয়ে যায়।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, বন্যায় সাফির অন্তত ৭০টি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া আটলান্টিক উপকূলীয় এই বন্দর শহরের সংযোগ সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা পানির নিচে।

টানা সাত বছর ধরে তীব্র খরায় ভোগা মরক্কোর মাটি অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টির পানি শোষণ করতে পারেনি, যা দ্রুত বন্যায় রূপ নেয়। একে জলবায়ু পরিবর্তনের স্পষ্ট প্রভাব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সাল ছিল দেশটির ইতিহাসে উষ্ণতম বছর। এদিকে, মঙ্গলবার দেশজুড়ে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অফিস।


অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি উৎসবে হামলায় বাবা-ছেলে জড়িত: পুলিশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইহুদি উৎসবে গুলিবর্ষণের ঘটনায় হামলাকারী হিসেবে বাবা ও ছেলে জড়িত বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) পুলিশ জানায়, হামলাকারী ৫০ বছর বয়সী বাবা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন এবং তার ২৪ বছর বয়সী ছেলে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয় গণমাধ্যমে তাদের নাম সাজিদ আক্রম ও নাভিদ আক্রম বলে প্রকাশ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সাজিদ আক্রম ১৯৯৮ সালে শিক্ষার্থী ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় আসেন এবং তার ছেলে অস্ট্রেলিয়াতেই জন্মগ্রহণ করেন। বাবার আগ্নেয়াস্ত্র রাখার বৈধ লাইসেন্স ছিল এবং তিনি একটি গান ক্লাবের সদস্য ছিলেন।

কর্মকর্তারা এই গুলিবর্ষণের ঘটনাকে ‘লক্ষ্যবস্তু করা ইহুদিবিদ্বেষী ও সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। হনুক্কা উৎসব চলাকালে এক হাজারের বেশি মানুষের সমাবেশে চালানো এই হামলায় আহত হয়ে এখনো ৪০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন পুলিশ সদস্যের অবস্থা গুরুতর। হতাহতদের বয়স ১০ থেকে ৮৭ বছরের মধ্যে। ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হচ্ছে, হামলাকারীরা বোল্ট-অ্যাকশন রাইফেল ও শটগান ব্যবহার করেছিলেন।

বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ দেশ হিসেবে পরিচিত অস্ট্রেলিয়ায় এটি গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্দুক সহিংসতার ঘটনা। এর আগে ১৯৯৬ সালে পোর্ট আর্থার হত্যাকাণ্ডের পর দেশটিতে এমন ঘটনা বিরল। এদিকে সিডনির এই হামলার পর বার্লিন, লন্ডন ও নিউইয়র্কসহ বিশ্বের বড় বড় শহরগুলোতে হনুক্কা অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।


ভারতের নাগাল্যান্ডে ভয়াবহ দাবানল, ৩ দিন ধরে পুড়ছে জুকো উপত্যকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য নাগাল্যান্ডের মনোরম জুকো উপত্যকায় ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। গত তিন দিন ধরে জ্বলতে থাকা এই আগুনে উপত্যকার বিশাল একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দ্য হিন্দু’ জানিয়েছে, মূলত পর্যটকদের অসাবধানতার কারণেই গত শুক্রবার এই আগুনের সূত্রপাত হয়।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত শুক্রবার চারজন স্থানীয় ট্রেকার জুকো উপত্যকায় তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান করছিলেন। তারা তাঁবুর সামনে ‘ক্যাম্পফায়ার’ জ্বালিয়ে রেখে পানির খোঁজে যান। ফিরে এসে দেখেন আগুন চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এবং তারা আগুনের মধ্যেই আটকা পড়েন। শনিবার তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হলেও ততক্ষণে আগুন প্রায় ১.৩ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। উদ্ধারকৃত ট্রেকাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আগুন জ্বালিয়ে রেখে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। বর্তমানে শুষ্ক আবহাওয়া ও প্রবল বাতাসের কারণে আগুনের তীব্রতা এবং পরিধি প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কোহিমা জেলার দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী চেষ্টা চালালেও দুর্গম ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে তা কঠিন হয়ে পড়েছে। উপত্যকার ওই অংশে খাড়া ঢাল থাকায় এবং কোনো সড়কপথ না থাকায় দমকল বা দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে নাগাল্যান্ড রাজ্য সরকার ভারতীয় বিমান বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আকাশপথে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চালানো হবে। এদিকে, নিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয় বাসিন্দা, ট্রেকার ও পর্যটকদের ওই বনাঞ্চল এবং এর আশেপাশের এলাকা এড়িয়ে চলার কঠোর নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।


সৌদিতে ১৯ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আবাসন, শ্রম ও সীমান্ত সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সৌদি আরবে ১৯ হাজারের বেশি প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজ।

এতে বলা হয়েছে, গত ৪ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়ে ১৯ হাজার ৫৭৬ জন প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা অভিযানের অংশ হিসেবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আবাসন আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় ১২ হাজার ৫০৬ জন, সীমান্ত নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনে ৪ হাজার ১৫৪ জন এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ২ হাজার ৯১৬ জন রয়েছেন। দেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারি সংস্থা যৌথ অভিযান চালিয়ে এই প্রবাসীদের গ্রেপ্তার করেছে।

এছাড়া অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে সৌদি আরবে প্রবেশের চেষ্টার সময় এক হাজার ৪১৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ইথিওপিয়ান ৫৭ শতাংশ, ইয়েমেনি ৪১ শতাংশ এবং অন্যান্য দেশের ২ শতাংশ নাগরিক রয়েছেন।

একই সময়ে অবৈধ উপায়ে সৌদি আরব ত্যাগের চেষ্টা করায় আরও ২৪ জন প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি আবাসন ও কর্মবিধি লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন এবং আশ্রয় দেওয়ায় সৌদিতে বসবাসরত ১৬ ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বর্তমানে দেশটিতে ৩০ হাজার ৪২৭ জন প্রবাসীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ৭১৮ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৭০৯ জন নারী। গ্রেপ্তারকৃত প্রবাসীদের মধ্যে ২১ হাজার ৮০৩ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর আগে ভ্রমণের প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহের জন্য তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে পাঠানো হয়েছে।

পাশাপাশি আরও ৫ হাজার ২০২ জনকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে গ্রেপ্তারদের মধ্যে ১২ হাজার ৩৬৫ জনকে ইতোমধ্যে সৌদি আরব থেকে নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে অবৈধভাবে প্রবেশে সহায়তার চেষ্টাকারী ব্যক্তির ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানার বিধান রয়েছে। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে বারবার সতর্ক করে দিয়ে আসছে।

মরু অঞ্চলের দেশ সৌদি আরবে বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ মানুষের বসবাস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিক সৌদিতে কর্মরত রয়েছেন। সৌদি আরবের স্থানীয় গণমাধ্যম নিয়মিতভাবে দেশটিতে আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন ধরপাকড় অভিযান ও অবৈধ প্রবাসীদের আটকের খবর প্রকাশ করছে।


সিরিয়ায় ২ মার্কিন সেনা নিহত, প্রতিশোধের হুমকি ট্রাম্পের

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সিরিয়ার পালমিরায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) এক হামলায় ২ জন মার্কিন সেনা সদস্য এবং একজন বেসামরিক দোভাষী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। তারা সেখানে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে সহায়তা করছিলেন।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল জানান, হামলায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, হামলাকারীকে মিত্রবাহিনী হত্যা করেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, তিনি নিশ্চিত হয়েছেন যে আহত মার্কিন সেনারা ভালো আছেন।

তবে তিনি এটিকে আইএসআইএল (আইএসআইএস) হামলা হিসেবে উল্লেখ করে সতর্ক করেন যে এর জন্য গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

ট্রাম্প লিখেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এবং সিরিয়ার একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক এলাকায় সংঘটিত একটি আইএসআইএস হামলা।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা এই হামলায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ও বিচলিত। এর জবাবে অত্যন্ত কঠোর প্রতিশোধ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

হেগসেথ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, এটা সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হোক, যদি আপনি আমেরিকানদের লক্ষ্য করেন, তবে আপনার বাকি সংক্ষিপ্ত ও উদ্বিগ্ন জীবন কাটবে এই জেনে যে যুক্তরাষ্ট্র আপনাকে খুঁজে বের করবে এবং নির্মমভাবে হত্যা করবে।

শনিবারের (১৩ ডিসেম্বর) এই হামলার খবর প্রথম জানায় যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড, যা সেন্টকম নামেও পরিচিত। তারা এই হামলাকে একজন একক আইএসআইএল বন্দুকধারীর চালানো একটি অ্যামবুশ বা অতর্কিত হামলা হিসেবে বর্ণনা করে এবং জানায়, পরবর্তীতে হামলাকারীকে মোকাবিলা করে হত্যা করা হয়। পরে হেগসেথ নিশ্চিত করেন যে অপরাধীকে মিত্রবাহিনী হত্যা করেছে।

পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল জানান, হামলাটি সিরিয়ার কেন্দ্রীয় হোমস অঞ্চলের পালমিরার কাছে সংঘটিত হয়।

তিনি এক বিবৃতিতে লেখেন, সৈন্যরা যখন একটি গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে বৈঠক পরিচালনা করছিলেন, তখনই এই হামলা ঘটে। তাদের মিশন ছিল ওই অঞ্চলে চলমান আইএসআইএস-বিরোধী ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে সহায়তা প্রদান করা।


গাজা ইস্যুতে জাতিসংঘে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস

ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। ছবি: সংগৃহীত 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজায় ত্রাণ প্রবেশের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার দাবিতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস হয়েছে। এর মাধ্যমে অবাধে ত্রাণ প্রবেশে দেশগুলো ইসরায়েলকে কঠোর বার্তা দিল। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের পরামর্শের ভিত্তিতে শুক্রবার এই ভোটাভুটি হয়। প্রস্তাবটি ১৩৯টি দেশের সমর্থন পেয়েছে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রসহ মাত্র ১২টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। ভোটদানে বিরত ছিল ১৯টি দেশ। প্রস্তাবে জাতিসংঘের স্থাপনায় হামলা বন্ধের দাবিতেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমর্থন পাস হয়েছে। আলজাজিরা এসব তথ্য দিয়েছে।

নরওয়ের নেতৃত্বে একডজনেরও বেশি দেশ প্রস্তাবটি জাতিসংঘে উপস্থাপন করে। প্রস্তাবটি এমন সময় পাস হলো, যখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজার মধ্যে তথাকথিত হলুদ রেখার নামে নতুন সীমান্ত স্থাপন করেছে। তারা এই সীমান্ত ক্রমেই গাজার অভ্যন্তরে বাড়িয়ে নিচ্ছে। ফলে নতুন করে বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন বাসিন্দারা। খসড়াটি উপস্থাপন করে জাতিসংঘে নরওয়ের স্থায়ী প্রতিনিধি মেরেট ফেজেল্ড ব্র্যাটেস্টেড সতর্ক করেন, তিন দশকের মধ্যে ২০২৪ ছিল সবচেয়ে সহিংস বছর। ২০২৫ সালও ​​একই রকম সহিংস হয়ে ওঠে। এসবের মূলে রয়েছে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন। আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য মানবিক সহায়তার আইনি স্পষ্টতা চেয়ে আসছি।

ভোটের আগে জাতিসংঘের মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেফ বার্তোস প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করেন। তার দাবি, এটি প্রমাণ করে নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুগান্তকারী শান্তিচুক্তি পাস হওয়ার পরও সাধারণ পরিষদ ইসরায়েলকে অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তু করার ধারা অব্যাহত রেখেছে।

জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউ এর কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজ্জারিনি ভোটাভুটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রস্তাবটি পাস হওয়ার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে আমাদের সংস্থায় হামাসের অনুপ্রবেশের অভিযোগ সত্য নয়।

গত ২৪ ঘণ্টায় গাজাজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় দুইজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। টানা দুই বছরে নিহতের সংখ্যা ৭০ হাজার ৬৫৪ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ৩৮৬ জন নিহত ও এক হাজার ১৮ জন আহত হয়েছে।

গাজায় ঝড়-বৃষ্টিতে দুর্ভোগ

গাজায় কয়েক দিন ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘বায়রন’। ইসরায়েল ত্রাণ, তাঁবু এবং জ্বালানি প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ায় আগে থেকেই দুর্ভোগ ছিল। নতুন করে এই ঝড় দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে। অক্সফাম জানায়, ঝড়ের পরে গাজার মানুষ আরও বেশি ক্ষতির ঝুঁকিতে পড়েছে।

হলুদ রেখায় উচ্ছেদ হচ্ছে পরিবার

যুদ্ধবিরতির পর আহমেদ হামেদ যখন গাজা শহরে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন, তখন এটি ইসরায়েল আরোপিত তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ থেকে প্রায় ১.৫ কিলোমিটার পশ্চিমে ছিল। দুই মাস পর সেই দূরত্ব প্রায় ২০০ মিটারে সংকুচিত হয়ে গেছে।

তিনি মিডলইস্ট আইকে বলেন, যুদ্ধবিরতির পর পূর্ব গাজা সিটির শুজাইয়া পাড়ার কাছে আমরা বাড়িতে ফিরে যাই। কিন্তু প্রথম দিন থেকেই বোমাবর্ষণ, ধ্বংসযজ্ঞ এবং গুলিবর্ষণের শব্দ শুনতে পাই। প্রথমে মনে হয়েছিল হলুদ রেখা এখনো দূরে। কিছুদিন পর জানালা দিয়েই কংক্রিটের ব্লক ফেলে তৈরি হলুদ রেখা স্পষ্ট দেখা গেল। ইসরায়েলি হামলায় আবারও বাড়িঘর ছাড়তে হলো। এ পর্যন্ত ১১ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছে পরিবারটি।

১৯ অবৈধ বসতির অনুমোদন ইসরায়েলের

অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণে আরেকটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে ইসরায়েল। পশ্চিম তীরজুড়ে ১৯টি বসতি স্থাপনকারীদের আউটপোস্টকে বৈধতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা।

এই সিদ্ধান্তের আওতায় ১৯টি আউটপোস্টকে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধ ঘোষণা ও নতুনভাবে প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুটি আউটপোস্ট রয়েছে যেগুলো ২০০৫ সালের গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে ইসরায়েলের তথাকথিত ‘ডিসএনগেজমেন্ট পরিকল্পনা’র সময় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ বলেন, ইসরায়েলের সব ধরনের বসতি কার্যক্রম অবৈধ এবং এটি আন্তর্জাতিক আইন ও আন্তর্জাতিক বৈধতা সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলোর সরাসরি লঙ্ঘন।

উল্লেখ্য, এসব আউটপোস্ট শুধু আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীই নয় বরং ইসরায়েলের নিজস্ব আইন অনুসারেও অবৈধ। সাধারণত ভবিষ্যতে সরকারিভাবে অনুমোদন পাওয়ার লক্ষ্যেই বসতি স্থাপনকারীরা এসব আউটপোস্ট গড়ে তোলে। নতুন করে বৈধতা পাওয়া অনেক আউটপোস্টই পশ্চিম তীরের ভেতরের এলাকায় অবস্থিত যা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডকে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলছে।

ফিলিস্তিনের ‘কলোনাইজেশন অ্যান্ড ওয়াল রেজিস্ট্যান্স কমিশন’-এর প্রধান মুয়ায়্যাদ শাবান এই সিদ্ধান্তকে একটি বিপজ্জনক উত্তেজনা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত স্পষ্টভাবে দেখিয়ে দেয় যে দখলদার সরকার ফিলিস্তিনি ভূমিতে সংযুক্তীকরণ, বর্ণবাদ এবং পূর্ণমাত্রার ইহুদিকরণ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায়।

এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ইসরায়েল ২২টি নতুন বসতি স্থাপনের ঘোষণা দেয়। বসতি পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন পিস নাউ জানায়, এটি গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বসতি সম্প্রসারণের ঘোষণা। এছাড়া বুধবার পশ্চিম তীরের তিনটি পৃথক বসতিতে প্রায় ৮০০টি নতুন আবাসন ইউনিট নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়।

পিস নাউ বলেছে, এসব সিদ্ধান্ত একটি সুপরিকল্পিত ধারা অনুসরণ করছে যার উদ্দেশ্য বসতিগুলোতে পরিকল্পনা প্রক্রিয়াকে ‘স্বাভাবিক’ করে তোলা এবং আন্তর্জাতিক মহলের নজর ও সমালোচনা কমিয়ে আনা।

গাজায় হামাসের শীর্ষ কমান্ডার নিহত

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলায় হামাসের এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গাজা সিটিতে হামলা চালিয়ে তারা হামাসের সিনিয়র কমান্ডার রায়েদ সাদকে হত্যা করেছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবারের হামলায় পাঁচজন নিহত এবং কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে।

তবে হামাসের দেওয়া এক বিবৃতিতে রায়েদ সাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। হামাস বলছে, গাজা সিটির বাইরে একটি বেসামরিক গাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে এবং ইসরায়েল যুদ্ধ বিরতি লঙ্ঘন করেছে।


মমতার গ্রেপ্তার দাবি

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মেসির অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলাকে কেন্দ্র করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে।

ভারতের চার শহরে তিন দিনের সফরে এসেছিলেন ফুটবল মহাতারকা লিওনেল মেসি। কিন্তু সফরের শুরুটা মোটেই ভালো হয়নি। কলকাতার যুব ভারতী স্টেডিয়ামে ঘটে যায় বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা।

কলকাতায় মেসিকে এক ঝলক দেখতে স্টেডিয়ামে ভিড় জমিয়েছিলেন হাজার হাজার দর্শক। মোটা অঙ্কের টিকিট কেটে সবাই অপেক্ষায় ছিলেন প্রিয় তারকাকে কাছ থেকে দেখার। কিন্তু সমস্যা শুরু হয় মেসি স্টেডিয়ামে পৌঁছানোর পরই।

লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি’পলকে সঙ্গে নিয়ে মেসি মাঠে ঢুকতেই তাকে ঘিরে ধরেন প্রায় ৭০-৮০ জন। বেশির ভাগই ছিলেন মন্ত্রী ও বিভিন্ন সংস্থার কর্তা। সবাই মোবাইল ও ক্যামেরা হাতে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। নিরাপত্তারক্ষীরাও মেসিকে ঘিরে রাখেন। এতে গ্যালারিতে থাকা দর্শকরা মেসিকে ঠিকমতো দেখতে পাননি।

এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন দর্শকরা। তারা মাঠে বোতল ছুড়তে শুরু করেন, চেয়ার ভেঙে মাঠে ছুড়ে মারেন। কেউ কেউ ফেন্সিং ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। পুরো স্টেডিয়ামজুড়ে তৈরি হয় উত্তেজনা ও বিশৃঙ্খলা।

পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের আগেই মেসিকে স্টেডিয়াম ছাড়তে হয়।

এই আয়োজনের উদ্যোক্তা ছিলেন শতদ্রু দত্ত। ঘটনার পর কলকাতা পুলিশ স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করে এবং বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর শতদ্রু দত্ত দর্শকদের টাকা ফেরত দেওয়ার লিখিত আশ্বাস দেন।

এদিকে মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে বিশৃঙ্খলার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে ক্ষমা চান। তবে এই ঘটনায় আরও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত শর্মা বলেন, ‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, যিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন এবং কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল। প্রথম দায়িত্ব তাদের ওপরই বর্তায়।’


কম্বোডিয়ার হামলায় আরও ৪ থাই সেনা নিহত

কম্বোডিয়ার সমরাস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উপেক্ষা করে কম্বোডিয়ার হামলার জবাবে পাল্টা হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে থাইল্যান্ড। উভয় দেশের রাষ্ট্রনেতাদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের টেলিফোনের পর শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সীমান্তে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘাতে থাইল্যান্ডের অন্তত ৪ সেনা নিহত হয়েছেন।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে থাইল্যান্ডের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সুরাসান্ত কংসিরি বলেন, ‌‌‘সীমান্তের চং আন মা এলাকায় সংঘর্ষে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) আরও ৪ জন সেনা নিহত হয়েছেন। গত সোমবার কম্বোডিয়ার সঙ্গে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ থাই সেনা নিহত হয়েছেন।’

ব্যাংকক বলেছে, শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) কম্বোডিয়ার সামরিক বাহিনী ৪ থাই সেনাকে হত্যা করেছে। এর আগে, কয়েকদিন ধরে চলা প্রাণঘাতী সংঘাতের অবসানে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পর ওই দাবি করেন তিনি। যদিও পরবর্তীতে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি নাকচ করে দেন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত-সহিংসতা চলছে। উভয় দেশের ঔপনিবেশিক আমলের ৮০০ কিলোমিটার (৫০০ মাইল) বিতর্কিত দীর্ঘ সীমান্ত নিয়ে এই সংঘাত চলছে।

থাই-কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংঘর্ষে কেবল চলতি সপ্তাহেই অন্তত ২৪ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সীমান্ত এলাকায় কম্বোডিয়ার হামলায় নিহত ৪ থাই সেনাও রয়েছেন বলে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

নতুন করে সংঘাত শুরুর জন্য উভয়পক্ষই পরস্পরকে দায়ী করছে। যদিও ট্রাম্প বলেছেন, উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল বলেছেন, ‘শুক্রবার ফোনালাপে ট্রাম্প যুদ্ধবিরতি করা উচিত কি না- সে বিষয়ে কিছু বলেননি।’

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অনুতিন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি। শুক্রবার অনুতিন ও কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেতের সঙ্গে টেলিফোনে ‘খুব ভালো আলোচনা’ হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন ট্রাম্প।’

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লেখেন, ‘তারা আজ সন্ধ্যা থেকেই সব ধরনের গোলাগুলি বন্ধ এবং জুলাইয়ে স্বাক্ষরিত মূল শান্তিচুক্তিতে ফিরে যেতে রাজি হয়েছেন।’

পাঁচ দিনের প্রাণঘাতী সহিংসতার পর জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং আঞ্চলিক জোট আসিয়ানের চেয়ারম্যান মালয়েশিয়ার মধ্যস্থতায় একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। অক্টোবরে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে পরবর্তী একটি যৌথ ঘোষণার পক্ষে সমর্থন দেন ট্রাম্প। যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়াতে রাজি হওয়ার পর দুই দেশের মাঝে নতুন বাণিজ্য চুক্তির কথাও জানান তিনি।

তবে পরের মাসেই সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে কয়েকজন থাই সেনা আহত হওয়ার পর ওই চুক্তি স্থগিত করে থাইল্যান্ড। দেশটিতে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত কানিয়াপাত সাওপ্রিয়া বলেন, ‘এখন আর কম্বোডিয়াকে বিশ্বাস করি না।’ ৩৯ বছর বয়সি এই নারী এএফপিকে বলেন, ‘শেষবারের শান্তি প্রচেষ্টা সফল হয়নি... এবারও হবে কি না, আমি জানি না।’

কম্বোডিয়া ও থাইল্যান্ডের সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষে ৭ লক্ষাধিক মানুষ বাস্তুচ্যুত বা গৃহহীন হয়েছে বলে গণমাধ্যমের সূত্রে জানা গেছে, যেখানে সংঘর্ষে একজন কম্বোডিয়ান সেনা নিহত হয়েছেন। এই বাস্তুচ্যুতির ঘটনাটি মূলত সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাতের কারণে ঘটেছে, যা ১৯০৭ সালের ফরাসি মানচিত্র এবং প্রিয়াহ ভিহার ট্রায়াঙ্গেল (পান্না ত্রিভুজ) অঞ্চল নিয়ে বিতর্কের জের ধরে শুরু হয়েছিল।


সুদানে বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলা, জাতিসংঘ মহাসচিবের তীব্র নিন্দা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুদ্ধবিধ্বস্ত সুদানে জাতিসংঘের এক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ছয় সদস্য নিহত এবং আরও আট জন আহত হয়েছেন। হতাহত সকলেই বাংলাদেশের নাগরিক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় কর্দোফান অঞ্চলের কাদুগলি শহরে অবস্থিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা লজিস্টিক ঘাঁটিতে এই নৃশংস হামলা চালানো হয়।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং এক বিবৃতিতে বলেছেন যে, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে হামলা আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। তিনি এই হামলার জন্য জবাবদিহি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। আহত ও নিহতরা জাতিসংঘের ‘ইউনাইটেড নেশনস ইন্টারিম সিকিউরিটি ফোর্স ফর আবেই’ (ইউনিসফা)-এর সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

সুদানের সেনাবাহিনী এই হামলার জন্য আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-কে দায়ী করেছে। সেনাবাহিনী দাবি করেছে যে, এই হামলা বিদ্রোহী মিলিশিয়া ও তাদের পেছনের শক্তির ধ্বংসাত্মক মনোভাব প্রকাশ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জাতিসংঘের স্থাপনা বলে দাবি করা একটি এলাকায় ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলি ওঠার ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। তবে হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আরএসএফের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই হামলায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের জন্য প্রয়োজনীয় জরুরি সহায়তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস সুদানে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে বলেন যে সংঘাত নিরসনে একটি ব্যাপক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুদানি নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক প্রক্রিয়া প্রয়োজন। এই যুদ্ধ ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের জের ধরে শুরু হয়েছিল এবং এতে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানা যায়, যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিম দারফুরে সংঘাত তীব্র হওয়ায় কর্দোফান অঞ্চল যুদ্ধের নতুন কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এই সংঘাত বিশ্বে ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে এবং এই হামলা এমন এক সময়ে এলো যখন মাত্র এক মাস আগে নিরাপত্তা পরিষদ ইউনিসফা মিশনের মেয়াদ নবায়ন করেছিল। বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অন্যতম প্রধান অবদানকারী দেশ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে আবেই অঞ্চলে বেসামরিক জনগণ সুরক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে।


সিডনির বন্ডি সৈকতে বন্দুক হামলা: বন্দুকধারীসহ নিহত ১০, পুলিশ ও নাগরিক আহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির জনপ্রিয় বন্ডি সমুদ্র সৈকতে আজ রবিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এক ভয়াবহ বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় বন্দুকধারী ব্যক্তি সহ কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়াও, হামলায় কমপক্ষে ১২ জন সাধারণ নাগরিক এবং দুজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ১৪ জন আহত হয়েছেন। এই ঘটনার পর সিডনি জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং জনমনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

বিবিসি এবং আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রাথমিক পুলিশ সূত্রে জানা গেছে এই হামলায় মোট দুজন হামলাকারী জড়িত ছিল। নিহত দশজনের মধ্যে একজন হামলাকারী ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়, এবং অন্য হামলাকারী আহত অবস্থায় পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।

কর্তব্যরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন পুলিশ কর্মকর্তাও আহত হয়েছেন এবং আহত নাগরিকদের সঙ্গে তাঁদেরও চিকিৎসা চলছে।

হামলার গুরুত্বের কারণে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলেছে এবং একটি বিশেষ নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে একটি এক্সক্লুশন জোন তৈরি করা হয়েছে এবং হাতে তৈরি বোমা (আইইডি) নিষ্ক্রিয় করার জন্য বিশেষ দল ও সরঞ্জাম ঘটনাস্থলে আনা হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।


ইন্দোনেশিয়ায় বন্যা-ভূমিধসে নিহত ১ হাজার ছাড়াল, নিখোঁজ ২১৮

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা ১,০০৩ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার দেশটির উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, এখনো অন্তত ২১৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সুমাত্রা দ্বীপে টানা ভারী বৃষ্টি ও বন্যার কারণে এই দুর্যোগ দেখা দেয়।

ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, এই দুর্যোগে প্রায় ২ হাজার ৭০০ জন বিভিন্নভাবে আহত হয়েছেন। প্রাথমিক অনুমানে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দুর্যোগকবলিত এলাকাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে অব্যাহত বৃষ্টি ও দুর্গম পরিস্থিতির কারণে উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে।

জাতীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার সংস্থার তথ্যানুসারে, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে কাদামাটি ধসে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধার প্রচেষ্টা জটিল হয়ে উঠেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত বন উজাড়, বন উজাড় করে নতুন বৃক্ষরোপণ ও খনির জন্য বন উজাড় করে ফেলার কারণে প্রাকৃতিক ‘সুরক্ষামূলক আবরণ’ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

জাকার্তা পোস্ট জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান ধারাবাহিকতায় দেশটিতে ২০২৪ সালে বন উজাড়ের ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ওই বছরটিতে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪০০ হেক্টর বনভূমি ‘ধ্বংস’ করা হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৫৪ হাজার ৩০০ হেক্টর বেশি।

দেশটির বন উজাড় পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা নুসানতারা অ্যাটলাসের প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড গ্যাভোর মতে, বেশিরভাগ ক্ষতি সুমাত্রায় ঘটেছে। অঞ্চলটিতে ২০০১ সাল থেকে ৪৪ লাখ হেক্টর বনভূমি ধ্বংস করা হয়েছে। এটি সুইজারল্যান্ডের চেয়েও বড় একটি এলাকা।

ইন্দোনেশিয়ার কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি জানিয়েছে, সুমাত্রার বন্যাকবলিত এলাকায় বন ধ্বংসের অভিযোগে বিভিন্ন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির প্রতিবেশী থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার কিছু অংশ এবং পশ্চিমে শ্রীলঙ্কাও চরম আবহাওয়ার কবলে পড়েছে। গত কয়েকদিনে চরম আবহাওয়াজনিত কারণে শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।

দেশটির দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার মুখপাত্র আবদুল মুহারি জানান, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সুমাত্রা দ্বীপে সৃষ্ট বন্যায় গত বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯০ জনে। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় দুর্যোগ। এখনো ২২০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।

চলতি ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ক্রান্তীয় ঝড় ও মৌসুমি বৃষ্টিপাতে সুমাত্রার রেইনফরেস্ট থেকে শ্রীলঙ্কার পার্বত্য অঞ্চল পর্যন্ত ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা দেখা দেয় এবং আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।

২০০৪ সালের বিধ্বংসী সুনামির স্মৃতি বহনকারী সুমাত্রার আচেহ প্রদেশে মানুষ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছে। তবে, ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের গতি নিয়ে জনগণের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

৩৯ বছর বয়সি শিয়ারুল বলেন, ‘মানুষ জানে না যে, ‘তারা কার ওপর ভরসা করবে।’

আরেক বাসিন্দা সারিউলিস (৩৬) বলেন, ‘বন্যার প্রায় ১৫ দিন পর প্রতিদিন আমরা শুধু ঘরের ভেতরটা পরিষ্কার করতে পারছি। বাইরে কাদা জমে থাকায় আর পরিষ্কার করা যাচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ মানুষ সরকারি সহায়তার ঘাটতি নিয়ে অভিযোগ করছেন। আমরা শুনে আসছি প্রদেশভিত্তিক বন্যা মোকাবিলা নাকি সম্ভব; কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ উল্টো। দুই সপ্তাহের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও আমরা একই সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছি। অগ্রগতির কথা যদি বলেন, তা খুবই সামান্য।’


banner close