সোমালি জলদস্যুর কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ওপর ভারতীয় নৌবাহিনী সতর্ক নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় নৌপ্রধান অ্যাডমিরাল আর হরি কুমার। দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। এদিকে ভারতীয় নৌবাহিনী ৩৫ সোমালি জলদস্যুকে মুম্বাই পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে আজ রোববার এক প্রতিবেদনে ওই সংবাদ সম্মেলনের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনী নিরাপদ এবং আরও সুরক্ষিত ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিশ্চিত করার জন্য ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ নেবে বলে বাহিনীটির প্রধান অ্যাডমিরাল আর হরি কুমার জানিয়েছেন। এ সময় গত ১০০ দিনে দেশটির নৌবাহিনীর গৃহীত জলদস্যুতাবিরোধী এবং অন্যান্য সামুদ্রিক নিরাপত্তা অভিযানের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
অ্যাডমিরাল কুমার বলেন, ‘এমভি আবদুল্লাহ নামের একটি জাহাজ হাইজ্যাক করে সোমালিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা এখন এটির ওপর সতর্ক নজর রাখছি। মূলত এটিকে এখন জলদস্যুদের জাহাজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে (অন্য জাহাজ ছিনতাইয়ের জন্য) নাকি জলদস্যুদের মাদার জাহাজ হিসেবে ব্যবহার করা হবে সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। সোমালি জলসীমায় চলাচলকারী জাহাজগুলোর ওপর আরও ঘনিষ্ঠ নজরদারি করতে চলেছি আমরা।’
এনডিটিভি বলছে, সামুদ্রিক নিরাপত্তা অভিযানের অংশ হিসেবে ভারতের নৌবাহিনী জলদস্যুতাবিরোধী, ক্ষেপণাস্ত্রবিরোধী এবং ড্রোনবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেছে। সংবাদ সম্মেলনের আগে দেশটির নৌবাহিনীর কর্মকর্তার পিপিটি প্রেজেন্টেশনে দেওয়া তথ্য অনুসারে, ‘অপারেশন সংকল্প’-এর এসব অভিযানে ১১০ জনের প্রাণ রক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ জন ভারতীয় এবং ৬৫ জন বিদেশি নাগরিক।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৫৭টি ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসহ ৯০টিরও বেশি সামুদ্রিক ঘটনা ঘটেছে; এ ছাড়া জলদস্যুতা, ছিনতাই বা সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডসহ ৩৯টি ঘটনা ঘটেছে।
এর আগের দিন সোমালিয়ার উপকূলে সাম্প্রতিক অভিযানে ধরা পড়া ৩৫ জন জলদস্যুকে নিয়ে আইএনএস কলকাতা মুম্বাই পৌঁছায় বলে নৌবাহিনী জানিয়েছে। এই জলদস্যুদের বিরুদ্ধে ভারতীয় আইন বিশেষ করে মেরিটাইম অ্যান্টি-পাইরেসি অ্যাক্ট, ২০২২-এর অধীনে আরও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মুম্বাই পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ মার্চ দুপুরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালি জলদস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় জাহাজের ইন্টারনেট সংযোগ। ছিনিয়ে নেওয়া হয় নাবিকদের কাছে থাকা মোবাইল, সঙ্গে থাকা ডলার। জাহাজটি ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে গত ৪ মার্চ আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
৩৫ সোমালি জলদস্যুকে নেওয়া হলো মুম্বাইয়ে
ভারতীয় নৌবাহিনী ৩৫ সোমালি জলদস্যুকে মুম্বাই পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যদের হাতে আটক এই জলদস্যুদের দেশটিতে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় এক দশক ধরে লোহিত সাগরে সোমালি জলদস্যুদের তৎপরতা তেমন দেখা না গেলেও সম্প্রতি তা বেড়েছে। এডেন উপসাগর ও উত্তর আরব সাগর অঞ্চলের শক্তিশালী দেশ ভারত। সোমালি উপকূলে ছিনতাইয়ের তিন মাস পর গত সপ্তাহে মাল্টার পতাকাবাহী কার্গো-জাহাজ রুয়েনকে উদ্ধার করে ভারতীয় নৌবাহিনী। ওই জাহাজের ৩৫ সোমালি জলদস্যু ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর সোকোত্রা থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে উত্তর আরব সাগরে মাল্টার ওই জাহাজটি ছিনতাই করেছিল সোমালি জলদস্যুরা। ২০১৭ সালের পর সোমালি জলদস্যুদের হাতে প্রথম বাণিজ্যিক জাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল এটি।
রয়টার্স বলছে, সোমালিয়ার জলদস্যুদের এ ধরনের ছিনতাইয়ের ঘটনা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল ২০১১ সালে। ওই সময় সোমালি জলদস্যুদের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়। এর মধ্যে কয়েক মিলিয়ন ডলার তাদের কাছে গিয়েছিল মুক্তিপণ হিসেবে।
জলদস্যুদের ছিনতাইয়ের ঘটনা সর্বোচ্চে পৌঁছানোর সেই সময় ভারতের নৌবাহিনী বড় ধরনের হামলায় জড়িত জলদস্যুদের বিচার ও কারাগারে বন্দি করত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ভারতীয় নৌবাহিনী আটককৃত জলদস্যুদের সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
দেশটির নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেছেন, এমভি রুয়েন ছিনতাইয়ে জড়িত জলদস্যুদের বিচারের মাধ্যমে কয়েক বছর পর প্রথমবারের মতো আবারও জলদস্যুদের বিচার করবে ভারত। দেশটির ‘অ্যান্টি-পাইরেসি ল-২০২২’ অনুযায়ী বিচারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে এই জলদস্যুদের।
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এডেন উপসাগর ও উত্তর আরব সাগরে কমপক্ষে এক ডজন যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে ভারত। লোহিত সাগরের পূর্বে চলাচলকারী জাহাজগুলোকে সহায়তা করছে ভারতের মোতায়েন করা যুদ্ধজাহাজ। ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথিদের ক্রমবর্ধমান হামলার মুখে বৈশ্বিক গুরুত্বপূর্ণ ওই শিপিং রুটের নিরাপত্তায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের নৌবাহিনী কাজ করছে।
ভারতীয় ওই কর্মকর্তা বলেছেন, এমভি রুয়েন ছিনতাইয়ের ঘটনার পর থেকে ভারতের নৌবাহিনী তাদের বিমান ও অন্যান্য জাহাজ থেকে সংগৃহীত তথ্য ব্যবহার করে অঞ্চলটিকে ‘নিরবচ্ছিন্ন নজরদারি কার্যক্রমের’ আওতায় রেখেছে।
ভারতের নৌবাহিনীর চিফ অ্যাডমিরাল আর হরিকুমার লোহিত সাগরে অভিযানের শততম দিনে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, সোমালি জলদস্যুরা এমভি রুয়েনকে ‘মাদারশিপ’ হিসেবে ব্যবহার করে অন্যান্য জাহাজে আক্রমণ করত। নৌবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, তারা গত ১৫ মার্চ এমভি রুয়েনকে উদ্ধার ও জলদস্যুদের আটক করেছে।
ভারতীয় নৌবাহিনী জলদস্যুতাবিরোধী অভিযানে ২১টি জাহাজ মোতায়েন রেখেছে। এই অভিযানে নৌবাহিনীর ৫ হাজার সদস্য অংশ নিয়েছেন। তারা সাগরে চলাচলরত ১ হাজারের বেশি জাহাজে তল্লাশি চালিয়েছেন। এক বিবৃতিতে দেশটির নৌবাহিনী বলেছে, তারা জলদস্যুদের হামলার অন্তত ১৮টি ঘটনায় সাড়া দিয়েছে। গত কয়েক দিনে নজিরবিহীনভাবে ভারতীয় নৌবাহিনী এক ডজনের বেশি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে বলে জানিয়েছে।
আর হরিকুমার বলেছেন, ‘এই অঞ্চলের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ভারত মহাসাগর অঞ্চলকে নিরাপদ, সুরক্ষিত এবং স্থিতিশীল করার জন্য আমরাই প্রথম সাড়াদানকারী এবং আমরা পছন্দের নিরাপত্তা অংশীদার হওয়ার জন্য সব ধরনের প্রয়োজনীয়তা পূরণে সক্ষম।’
ভারতের নৌবাহিনী বলেছে, গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ৫৭টি ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলাসহ ৯০টির বেশি সামুদ্রিক ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া জলদস্যুতা, ছিনতাই বা সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডসহ ৩৯টি ঘটনা ঘটেছে।
জাপানের নাগাসাকি শহরে পরমাণু বোমা হামলার ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার হাজার হাজার মানুষ নীরবতা পালন করেন। একই সঙ্গে শহরের ক্যাথেড্রালের দুটি ঘণ্টা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ দিকে মানবজাতির ইতিহাসকে চিরতরে বদলে দেওয়া সেই ঘটনার পর প্রথমবার একসঙ্গে ঘণ্টা বাজানো হয়।
১৯৪৫ সালের ৯ আগস্ট সকাল ১১:০২ মিনিটে, হিরোশিমায় পরমাণু হামলার তিন দিন পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাগাসাকিতে একটি পরমাণু বোমা ফেলে।
শনিবার সকাল ভারি বৃষ্টি হওয়া সত্ত্বেও অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে বৃষ্টি থেমে যায় এবং নাগাসাকি মেয়র শিরো সুজুকি বিশ্বকে ‘অস্ত্র বিরতি অবিলম্বে বন্ধ করার’ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আশি বছর পেরিয়ে গেছে, আর কার কথা ভাবতে পারত যে পৃথিবী এমন অবস্থায় পৌঁছাবে? একটি এমন সংকট যা মানবজাতির অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে, যেমন পরমাণু যুদ্ধ।”
নাগাসাকি শহরে প্রায় ৭৪,০০০ জন নিহত হন, হিরোশিমার নিহত ১,৪০,০০০ জনের বেশি মানুষ। পরবর্তী ১৫ আগস্ট, ১৯৪৫ সালে, জাপান আত্মসমর্পণ করে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটে।
ঐতিহাসিকরা এই হামলাগুলো সত্যিই জীবন রক্ষা করেছিল কিনা এবং যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে ভূমি আক্রমণ রোধ করেছিল কিনা তা নিয়ে বিতর্ক করেন।
তবে হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া অনেকের জন্য এই হিসাবের কোনো গুরুত্ব ছিল না। তারা দশকের পর দশক শারীরিক ও মানসিক আঘাতের সঙ্গে লড়াই করেছেন, এবং অনেক সময় ‘হিবাকুশা’ বা বোমা আক্রান্ত হিসেবে কলঙ্ক বয়ে চলেছেন।
বেঁচে যাওয়া ৯৩ বছর বয়সী হিরোশি নিশিওকা বোমা বিস্ফোরণের স্থান থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে ছিলেন, তিনি অনুষ্ঠানে যুবক অবস্থায় তিনি কী ভয়ঙ্কর দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছিলেন তার বর্ণনা দেন।
তিনি স্মরণ করেন, ‘যারা সৌভাগ্যবান (যারা গুরুতর আহত হননি) ধীরে ধীরে তাদের মাড়ি থেকে রক্তপাত শুরু হয়, চুল পড়তে থাকে, আর তারা একে একে মারা যায়।’
নাগাসাকির বাসিন্দা আটসুকো হিগুচি এএফপিকে জানান, ‘সবাই শহরের নিহতদের স্মরণ করছে বলে আমি খুশি।’
তিনি বলেন, ‘এগুলো অতীতের ঘটনা হিসেবে না দেখে, আমাদের মনে রাখতে হবে এগুলো বাস্তব ঘটনা।’
শনিবার নাগাসাকি ইম্যাকুলেট কনসেপশন ক্যাথেড্রালের দুটি ঘণ্টা ১৯৪৫ সালের পর প্রথমবার একসঙ্গে ঘণ্টা বাজানো হয়।
লাল ইটের বিশাল এই ক্যাথেড্রাল, যার দুটি ঘণ্টার টাওয়ার একটি পাহাড়ের মাথায় অবস্থিত, ১৯৫৯ সালে পুনর্নির্মাণ করা হয়। এটি বিস্ফোরণে প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
মাটির নিচ থেকে মাত্র একটি ঘণ্টা উদ্ধার করা গিয়েছিল, ফলে উত্তরের টাওয়ারটি নীরব ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের চার্চগোত্রের অর্থায়নে একটি নতুন ঘণ্টা তৈরি করা হয় এবং তা টাওয়ারে পুনঃস্থাপন করা হয়, যা বোমা ফেলার মুহূর্তে বাজানো হয়।
ক্যাথেড্রালের প্রধান পুরোহিত কেনিচি ইয়ামামুরা বলেন, এই ঘণ্টার পুনর্স্থাপন ‘মানবতার মহত্ত্ব প্রদর্শন করে।’
তিনি বলেন, ‘এটা অতীতের ক্ষত ভুলে যাওয়ার ব্যাপার নয়, বরং সেগুলো স্বীকার করে তা মেরামত ও পুনর্গঠনে কাজ করা, এবং এভাবেই শান্তির জন্য একসাথে কাজ করা।’
তিনি এই ঘণ্টার বাজনাকে বিশ্বে বার্তা হিসেবে দেখেন, যেখানে নানা সংঘাত চলছে এবং নতুন একটি অস্ত্র প্রতিযোগিতা তীব্র হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সহিংসতায় সহিংসতায় প্রতিক্রিয়া দেখাবো না, বরং আমাদের জীবনযাপন ও প্রার্থনার মাধ্যমে দেখাবো অন্যের জীবন নেয়ার কতটা অর্থহীন।’
প্রায় ১০০টি দেশ এ বছর স্মরণসভায় অংশগ্রহণ করে, যার মধ্যে রাশিয়াও রয়েছে। ইউক্রেন আক্রমণের কারণে দেশটিকে ২০২২ সালে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
গাজার যুদ্ধের কারণে গত বছর যার রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, তবে এবার ইসরাইল উপস্থিত ছিল।
আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক, যাঁর দাদা প্রথম পরমাণু বোমা তৈরির ম্যানহাটান প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন তিনি এই ঘণ্টার প্রকল্পের উদ্যোগী ছিলেন।
নাগাসাকিতে তার গবেষণার সময় এক জাপানি খ্রিস্টান তাঁকে বলেন, জীবদ্দশায় তিনি ক্য থেড্রালের দুটি ঘণ্টা একসঙ্গে বাজতে শুনতে চান।
এই ধারণায় অনুপ্রাণিত হয়ে উইলিয়ামস কলেজের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জেমস নোলান যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় এক বছর ধরে মূলত চার্চগুলোতে পরমাণু বোমা নিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন।
তিনি নতুন ঘণ্টার জন্য আমেরিকান ক্যাথলিকদের কাছ থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলার তহবিল সংগ্রহ করেন।
নাগাসাকিতে যখন এটি উন্মোচন করা হয়, তখন নোলান বলেন, ‘প্রতিক্রিয়া অসাধারণ ছিল, অনেকেই চোখে জল নিয়ে ছিলেন।’
তিনি আরও জানান, তিনি দেখা অনেক আমেরিকান ক্যাথলিক নাগাসাকির খ্রিস্টানদের কষ্টকর ইতিহাস সম্পর্কে জানতেন না, যাদের বিশ্বাস ১৬শ শতকে প্রথম ইউরোপীয় মিশনারিদের মাধ্যমে গড়ে ওঠে এবং পরবর্তীতে জাপানি শোগুনদের দ্বারা ২৫০ বছর ধরে গোপনে টিকিয়ে রাখা হয়।
এই গল্পটি শুসাকু এন্ডোর উপন্যাস ‘সাইলেন্স’-এ বলা হয়েছে, যা মার্টিন স্করসেসের ২০১৬ সালের চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়।
নোলান বলেন, আমেরিকান ক্যাথলিকরা নাগাসাকির খ্রিস্টানদের পরমাণু বোমার পরও ধৈর্য ধরার কাহিনী শুনে ‘সহানুভূতি ও দুঃখ প্রকাশ করেছে।’
তারা ‘ক্ষমা ও পুনর্গঠনের ইচ্ছাশক্তি’ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
নারী অধিকার নিয়ে তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। তিনি তার এক্স হ্যান্ডলে একটি ভিডিও রিপোস্ট করার পর এই বিতর্ক শুরু হয়। ভিডিওতে একটি খ্রিষ্টান জাতীয়তাবাদী গির্জার একাধিক যাজককে নারীদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার পক্ষে কথা বলতে দেখা যায়।
বিতর্কের সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার রাতে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথের পোস্টটি তার ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং ধর্ম ও নারীর ভূমিকা সম্পর্কিত চরমপন্থি মতাদর্শের মধ্যে গভীর সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয় বলেই মনে করছেন নেটিজেনরা।
হেগসেথ তার পোস্টে সিএনএনের প্রায় সাত মিনিটের একটি প্রতিবেদন নিয়ে মন্তব্য করেছেন। কমুনিয়ন অব রিফর্মড ইভানজেলিক্যাল চার্চেসের (সিআরইসি) সহপ্রতিষ্ঠাতা ডগ উইলসনের কার্যক্রম নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে সিএনএন। প্রতিবেদনে উইলসনস চার্চের একজন যাজক সংবিধান থেকে নারীদের ভোটাধিকারের ধারা বাতিল করার পক্ষে কথা বলেন। অন্য একজন যাজক বলেন, তার কাঙ্ক্ষিত ‘আদর্শ পৃথিবীতে’ পরিবারভিত্তিক ভোট চালু হবে। ভিডিওতে একজন নারী সদস্যকেও তার স্বামীর প্রতি অনুগত থাকার কথা বলতে শোনা যায়।
ওই পোস্টের সঙ্গে হেগসেথ লিখেছেন, ‘All of Christ for All of Life’। এর অর্থ হলো, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এবং সমাজের প্রতিটি স্তরে খ্রিষ্টান ধর্মীয় নীতি ও বিশ্বাসকে প্রয়োগ করা। এই ধারণা অনুযায়ী, ধর্ম কেবল ব্যক্তিগত বিশ্বাস বা চার্চের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এটি রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং পরিবারের মতো জীবনের সব ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করবে।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এই উক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একটি চরমপন্থী খ্রিষ্টান জাতীয়তাবাদী মতবাদকেই সমর্থন করেছেন। এই মতবাদ অনুযায়ী, একটি রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণরূপে খ্রিষ্টান ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত হওয়া উচিত।
হেগসেথের পোস্টটি এক্স-এ ১২ হাজারের বেশি লাইক এবং ২ হাজারের বেশি শেয়ার হয়েছে। কিছু ব্যবহারকারী ভিডিওতে যাজকদের মতামতের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন, আবার অনেকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তির এ ধরনের খ্রিষ্টান জাতীয়তাবাদী ধারণা প্রচার করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তবে প্রগতিশীল ইভানজেলিক্যাল সংস্থা ‘ভোট কমন গুড’-এর নির্বাহী পরিচালক ডগ প্যাগিট বলেছেন, ভিডিওতে যে ধারণাগুলো দেখানো হয়েছে, তা ‘খ্রিষ্টানদের একটি ছোট অংশের মতবাদ’ এবং হেগসেথের এই ধরনের পোস্ট ‘খুবই বিরক্তিকর’।
এই বিতর্কের প্রতিক্রিয়ায় পেন্টাগনের প্রধান মুখপাত্র শন পার্নেল বলেছেন, হেগসেথ এমন একটি চার্চের গর্বিত সদস্য, যা সিআরইসির সঙ্গে যুক্ত এবং তিনি উইলসনের অনেক লেখা ও শিক্ষা গভীরভাবে উপলব্ধি করেন।
এর আগে গত মে মাসে হেগসেথ তার ব্যক্তিগত যাজক ব্রুকস পোটেইগারকে পেন্টাগনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেখানে হেগসেথ সরকারি কর্মঘণ্টার মধ্যে বেশ কয়েকটি খ্রিষ্টান প্রার্থনা সভার আয়োজন করেন। প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মচারী এবং সামরিক সদস্যরা তাদের সরকারি ই-মেইলের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন।
সিএনএনের প্রতিবেদনে উইলসনের একটি উক্তিও দেখানো হয়েছে, যেখানে তিনি বলেন, ‘আমি চাই, এই দেশটি একটি খ্রিষ্টান রাষ্ট্র হোক এবং আমি চাই এই বিশ্ব একটি খ্রিষ্টান বিশ্ব হোক।’
উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারীদের ভোটাধিকারের জন্য দীর্ঘ এবং কঠিন লড়াইয়ের ইতিহাস রয়েছে। শত বছরের এই আন্দোলন মূলত ১৯২০ সালে সংবিধানের ১৯তম সংশোধনীর মাধ্যমে সফল হয়। তবে এর পরেও সব নারীর জন্য ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আরও বেশ কিছু বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।
১৮৪৮ সালে নিউইয়র্কের সেনেকা ফলসে প্রথম নারী অধিকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এটিই ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা। এই সম্মেলনে এলিজাবেথ ক্যাডি স্ট্যান্টন এবং লুক্রেশিয়া মটের মতো গুরুত্বপূর্ণ নেত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে ‘ডিক্লারেশন অব সেন্টিমেন্টস’ নামে একটি ঘোষণাপত্র তৈরি করা হয়। ওই ঘোষণাপত্রে নারীদের ভোটাধিকারসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকারের দাবি জানানো হয়।
১৮৫০-এর দশক থেকে আন্দোলনটি আরও গতি পায়। ১৮৬৯ সালে নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের দুই প্রধান নেত্রী সুসান বি. অ্যান্টনি এবং এলিজাবেথ ক্যাডি স্ট্যান্টন ‘ন্যাশনাল ওম্যান সাফরেজ অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য ছিল ফেডারেল পর্যায়ে নারীদের ভোটাধিকারের জন্য সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে আইন পাস করানো। দীর্ঘ আন্দোলনের পর ১৯১৯ সালে মার্কিন কংগ্রেস ১৯তম সংশোধনী পাস করে। এরপর ১৯২০ সালের ১৮ আগস্ট টেনেসি অঙ্গরাজ্য এটি অনুমোদন করে।
১৯তম সংশোধনী পাস হলেও আফ্রিকান আমেরিকান নারীরা, বিশেষ করে দক্ষিণের অঙ্গরাজ্যগুলোতে, ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধার শিকার হতেন। বর্ণবৈষম্যমূলক নিয়ম, যেমন ‘পোল ট্যাক্স’ (ভোট দেওয়ার জন্য কর) এবং ‘লিটারেসি টেস্ট’-এর (শিক্ষাগত যোগ্যতা পরীক্ষা) মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার সীমিত করা হয়েছিল। ১৯৬৫ সালের ‘ভোটিং রাইটস অ্যাক্ট’ পাস হওয়ার পর এই বাধাগুলো দূর হয় এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সব জাতি ও বর্ণের নারীর জন্য ভোটাধিকার পুরোপুরি নিশ্চিত হয়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা তাদের সামরিক বাহিনীকে গাজা শহর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। শুক্রবার এ খবর প্রকাশের পর দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জেরুজালেম থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
গাজা যুদ্ধে প্রায় দুই বছর পার হলেও যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছে। এতে ২ কোটিরও বেশি ফিলিস্তিনিকে দুর্ভিক্ষের হাত থেকে বাঁচানো এবং ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে ইসরাইলি জিম্মিদের মুক্ত করা সম্ভব হবে।
এদিকে, ইসরাইলের প্রতিপক্ষ হামাস লড়াই চালিয়ে যাওয়ার এই পরিকল্পনাকে ‘নতুন যুদ্ধাপরাধ’ বলে সমালোচনা করেছে।
অপরদিকে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্র জার্মানি এক ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ হিসেবে দেশটিতে সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি স্থগিত করেছে। জার্মানির আশঙ্কা, এসব অস্ত্র গাজায় ব্যবহার করা হতে পারে। জার্মানির এই পদক্ষেপকে হামাসের জন্য পুরস্কার বলে নিন্দা জানিয়েছেন নেতানিয়াহু।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, হামাসকে ‘পরাজিত’ করার জন্য নতুন অনুমোদিত পরিকল্পনা অনুযায়ী সেনারা গাজা শহরের নিয়ন্ত্রণ নেবে এবং যুদ্ধবিহীন এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মানবিক সহায়তা বিতরণ করবে।
নেতানিয়াহু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এর এক পোস্টে লিখেছেন, ‘আমরা গাজা দখল করব না বরং গাজাকে হামাসের হাত থেকে মুক্ত করব।’
তিনি আরো বলেন, গাজায় নিরস্ত্রীকরণ হলে ও শান্তিপূর্ণ বেসামরিক প্রশাসন প্রতিষ্ঠা হলে তা জিম্মিদের মুক্ত করতে সহায়ক হবে এবং ভবিষ্যৎ হামলার ঝুঁকি কমাবে।
ইসরাইল ১৯৬৭ সালে গাজা দখল করেছিল, তবে ২০০৫ সালে সেনা ও বসতি সেখান থেকে সরিয়ে নেয়।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, মন্ত্রিসভা পাঁচটি নীতি গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে গাজার নিরস্ত্রীকরণ এবং এমন একটি বিকল্প বেসামরিক প্রশাসন গঠন, যা হামাসও নয়, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষও নয়।
পরিকল্পনাটি বিশ্বজুড়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। চীন, তুরস্ক, বৃটেনসহ বিভিন্ন আরব দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস একে ‘বিপজ্জনক উত্তেজনা’ বলে সতর্ক করেছেন। তার মতে, এটি ইতোমধ্যে ভয়াবহ পরিস্থিতিতে থাকা লক্ষাধিক ফিলিস্তিনির জীবন আরও দুর্বিষহ করে তুলবে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ রোববার এ বিষয়ে বৈঠক করবে।
এদিকে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস ইসরাইলে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, নতুন পরিকল্পনা বৈধ লক্ষ্য অর্জনে কীভাবে সহায়ক হবে তা বোঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
ইসরাইলে এ পরিকল্পনা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ জানিয়েছেন, সেনারা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে।
জিম্মিদের পরিবারের প্রধান সংগঠন ‘হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, এটা জিম্মিদের ‘পরিত্যাগ’ করার শামিল।
সংগঠনটি জানিয়েছে, ‘গত রাতে মন্ত্রিসভা এমন একটা বেপরোয়া পদক্ষেপ নিয়েছে, যা জিম্মি, সৈন্য ও পুরো ইসরাইলি সমাজের জন্য বিপদের কারণ হবে।’
২০২৩ সালের হামলায় জিম্মি হওয়া ২৫১ জনের মধ্যে এখনো ৪৯ জন গাজায় আছেন, যাদের মধ্যে ২৭ জন মৃত বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনারা।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ইসরাইলি হামলা আরও বাড়লে, সেনারা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় অভিযান চালাতে পারে যেখানে জিম্মিদের রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
কিছু ইসরাইলি অবশ্য এতে সমর্থন জানিয়েছেন। ইহুদিদের একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ছাত্র চেইম ক্লেইন (২৬) বলেন, ‘গাজা নিয়ন্ত্রণে নিলে তারা হামাসকে পুরোপুরি না হলেও বড় অংশে নির্মূল করবে।’
ইসরাইলি সেনারা গত মাসে জানিয়েছিল, তারা গাজা উপত্যকার ৭৫ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে।
গাজার বাসিন্দারা আরও বাস্তুচ্যুতি ও হামলার আশঙ্কায় ভীত। ছয় সন্তানের মা মাইসা আল-শান্তি (৫২) এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘তারা আমাদের কখনো দক্ষিণে যেতে বলে, কখনো উত্তরে। এখন আবার দক্ষিণে পাঠাতে চায়। আমরা মানুষ, কিন্তু কেউ আমাদের শুনছে না, দেখছে না।’
হামাস শুক্রবার বলেছে, গাজা দখল করা ও এর বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাটি একটি নতুন যুদ্ধাপরাধ। সংগঠনটি সতর্ক করেছে, এতে জিম্মিদের জীবন ঝুঁকিতে পড়বে এবং ইসরাইলকে চরম মূল্য দিতে হবে।
জাতিসংঘ সমর্থিত এক জরিপে সতর্ক করা হয়েছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছর গাজায় অপুষ্টিতে অন্তত ৯৯ জন মারা গেছে, যা আসল সংখ্যার চেয়ে কম হতে পারে।
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, গাজার ওপর বিমান থেকে ত্রাণ ফেলার সময় ১৯ বছর বয়সী এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন।
সংস্থাটির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেছেন, ‘ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় মানুষের মাথায় ভারি ত্রাণের প্যাকেট পড়ে প্রতিদিনই আহত ও প্রাণহানি হচ্ছে।’ তিনি আরও জানান, ত্রাণ ফেলার জায়গায় ভিড় এবং পদদলিত হওয়ার কারণে প্রায়শই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বাসাল আরো জানিয়েছে, শুক্রবার গাজাজুড়ে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরাইল সম্প্রতি গাজায় কিছু ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দিলেও জাতিসংঘ বলছে, এর পরিমাণ এখনো প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ইসরাইলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ২০২৩ সালে হামাসের হামলায় ইসরাইলে নিহত হয়েছে ১ হাজার ২১৯ জন। সরকারি তথ্যের ভিত্তিতে এএফপি এই হিসাব দিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার মার্কিন-মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া-আজারবাইজান শান্তি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে। দেশটি তবে বিদেশী হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সতর্ক করেছে। দুই দেশের সীমানার কাছাকাছি বিশেষ করে বিদেশি হস্তক্ষেপকে নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে।
তেহরান থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরান দুই দেশের মধ্যে শান্তিচুক্তির চূড়ান্ত সম্পাদনকে স্বাগত জানায়। কিন্তু একই সঙ্গে যে কোনো ধরনের ও ফর্মের বিদেশি হস্তক্ষেপের নেতিবাচক পরিণতি সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে। বিশেষ করে সাধারণ সীমানার আশেপাশে।
ভারতে বাংলাভাষী মুসলিমরা বলছেন, তারা আটক এবং নির্বাসনের ভয়ে বাস করছেন। দেশটিতে ‘অবৈধ অভিবাসীদের’ বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান বেড়ে চলেছে। এর ফলে শত শত লোককে অবৈধভাবে বাংলাদেশে জোরপূর্বক প্রবেশ করতে বাধ্য করা হয়েছে। যদিও তাদের মধ্যে অনেকেই ভারতীয় নাগরিক।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দেওয়া জুলাই মাসের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ৭ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মুসলিমকে যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই সীমান্ত দিয়ে ‘বহিষ্কার’ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ‘অবৈধ অভিবাসীদের’ বিরুদ্ধে ভারতে দমন-পীড়ন নতুন নয়। তবে গত এপ্রিল মাসে জম্মু ও কাশ্মিরে হামলার পর বর্তমান দমন-পীড়নের ধারাটি শুরু হয়েছে।
দিল্লি এই হামলার জন্য ‘পাকিস্তানের সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করার পর ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি শাসিত রাজ্যগুলো হাজার হাজার বাঙালি মুসলিমকে আটক করেছে। তাদের সন্দেহভাজন ‘অবৈধ অভিবাসী’ এবং ‘সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকি’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
৫৩ বছর বয়সি ভারতীয় নাগরিক এবং আসাম রাজ্যের সাবেক স্কুলশিক্ষক খাইরুল ইসলাম আরব নিউজকে বলেন, ২৪ মে পুলিশ তাকে তার বাড়ি থেকে আটক করে। তারপর আরও ১৪ জনের সঙ্গে জোর করে বাংলাদেশে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘এটা একটা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ছিল, আমাকে ভারত ও বাংলাদেশের মাঝামাঝি একটা নো-ম্যানস-ল্যান্ডে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। যখন আমি ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করি তখন ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা রাবার বুলেট ছুড়তে শুরু করে।’
খাইরুল ইসলামের স্ত্রী এবং আত্মীয়-স্বজনরা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে তার নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য নথিপত্র দেখানোর প্রায় এক সপ্তাহ পরে তিনি তার দেশে ফিরতে সক্ষম হন।
তিনি বলেন, ‘আমার দাদা ভারত থেকে এসেছিলেন। আমার কাছে ভারতে তার স্কুলের পড়াশোনার একটি কপি আছে - তার অষ্টম শ্রেণীর সার্টিফিকেট। আমার বাবা ১৯৫২ সালে সরকারের কাছ থেকে বন্দুকের লাইসেন্স পেয়েছিলেন। আমি একজন সরকারি কর্মচারী ছিলাম এবং ১৯৯৭ সালে শিক্ষক হিসেবে চাকরি পেয়েছি।’
‘এটা তো সহজ হয়রানি। আসামে বাঙালি মুসলিম হওয়া অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের জীবন নরকে পরিণত হয়েছে...। তারা আমাকে বিদেশি বলে ডাকে, কারণ আমি একজন মুসলিম এবং একজন বাঙালি। এই জাদুকরী শিকারে অনেক পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে... আমি আশা করি আমাদের প্রতি ন্যায়বিচার হবে।’
বাংলা বাংলাদেশের প্রধান ভাষা হলেও ভারতে আনুমানিক ১০ কোটি বাংলাভাষী রয়েছে। তারা মূলত আসাম, পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরা রাজ্যে বাস করে। তাদের মধ্যে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন মুসলমান হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেয়।
হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতের কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, অনিয়মিত অভিবাসন রোধ করার জন্য এই ‘বহিষ্কার’ করা হয়েছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে ‘মুসলিম অনুপ্রবেশ’ ভারতের পরিচয়ের জন্য হুমকিস্বরূপ।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা নির্ভীকভাবে সীমান্তের ওপার থেকে চলমান, অনিয়ন্ত্রিত মুসলিম অনুপ্রবেশ প্রতিহত করছি, যা ইতোমধ্যেই একটি উদ্বেগজনক জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ কয়েকটি জেলায়, হিন্দুরা এখন তাদের নিজস্ব ভূমিতে সংখ্যালঘু হওয়ার পথে।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি দেশটিকে ‘খারাপ দৃষ্টিতে দেখাচ্ছে’।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, যদিও সরকার অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবেলা করতে পারে, তবে এটি যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করতে হবে। বিজেপি-শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাভাষী মুসলিম কর্মীদের এলোমেলোভাবে আটক করে ধরে নেওয়া এবং তাদের বাংলাদেশি নাগরিক বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
আসামের মতো রাজ্যগুলোতেও সম্প্রতি হাজার হাজার পরিবারকে উচ্ছেদের ঘটনা বেড়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সরকারি জমিতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগ এনেছে।
মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘চলমান উচ্ছেদগুলো ধর্মীয় বা জাতিগত ভিত্তিতে বৈষম্যমূলক আচরণের একটি রাষ্ট্রীয় নীতি বলে মনে হচ্ছে, যা সাংবিধানিক সুরক্ষাকে লঙ্ঘন করে।’
গোলাঘাট জেলায় নিজ বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া আসামের বাসিন্দা শাজি আলীও সরকারি বর্ণনা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার বাবা ৪০ বছরেরও বেশি সময় আগে নওগাঁ জেলা (বাংলাদেশের) থেকে এখানে এসেছিলেন। পূর্ববর্তী সরকারই আমাদের এখানে বসতি স্থাপন করে দিয়েছিল।’
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আমাদের এখানে সকল সরকারি সুযোগ-সুবিধা আছে। আমরা কীভাবে দখলদার হয়ে গেলাম? (বর্তমান) সরকারের জন্য, আমাদের বাঙালি-মুসলিম পরিচয় একটি সমস্যা।’
অল আসাম মাইনরিটি স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সেক্রেটারি মিন্নাতুল ইসলাম বিশ্বাস করেন, চলমান কর্মকাণ্ডের পেছনে রাজনীতি জড়িত।
তিনি আরব নিউজকে বলেন, ‘আজ আসামে এক অমানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বাংলাভাষী মুসলমানরা চরম আতঙ্কের মধ্যে বাস করছে...। এটি একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ এবং আসাম সরকার ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং উচ্ছেদ নির্বাচনী এজেন্ডার অংশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘লক্ষ্য হলো বাংলাভাষী মুসলিমরা। প্রায় ৯০ লাখ বাঙালি মুসলিম থাকবে। এটা স্পষ্ট যে, আসামে কোনো বাংলাদেশি নেই। সরকার যাই করছে... তা উপযোগী নয়, কেবল রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য মুসলিমদের টার্গেট করছে।’
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং শুক্রবার এক ফোনালাপে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে বলেছেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়ন হতে দেখে চীন খুশি হয়েছে।
শুক্রবার চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। উভয়পক্ষ নিশ্চিত করেছে, বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে এবং ইঙ্গিত দিয়েছে, আগামী সপ্তাহেই বৈঠক হতে পারে। তবে বৈঠকের সুনির্দিষ্ট তারিখ ও স্থান এখনো নির্ধারণ হয়নি।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি জানায়, পুতিনের অনুরোধে শি জিনপিং শুক্রবার তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।
পুতিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে সাম্প্রতিক যোগাযোগ ও আলোচনার অগ্রগতি এবং ইউক্রেনের পরিস্থিতি সম্পর্কে শি’কে অবহিত করেছেন।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার ইংরেজি সংস্করণের খবরে বলা হয়, পুতিনকে শি জানিয়েছেন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের যোগাযোগ বজায় রাখা, সম্পর্ক উন্নত করা এবং ইউক্রেন সংকটের রাজনৈতিক সমাধানকে এগিয়ে নিতে দেখে চীন আনন্দিত।
শি আরো বলেন, ‘জটিল সমস্যার সহজ সমাধান নেই। চীন সর্বদা শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সংলাপ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি গ্রন্থাগার থেকে দুর্লভ চীনা পাণ্ডুলিপি ধার করে সেগুলোর বদলে নকল পাণ্ডুলিপি ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
এতে ২ লাখ ১৬ হাজার ডলারের চুরির মামলা হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার এই তথ্য জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
মার্কিন বিচার বিভাগ জানায়, জেফরি ইং (৩৮) একাধিক ছদ্মনাম ব্যবহার করে লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গ্রন্থাগার থেকে ৬০০ বছরের পুরোনো কিছু ক্লাসিক বই নিয়েছিলেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ইং ওইসব বই নিয়ে যাওয়ার কয়েক দিন পর সেগুলোর নকল পাণ্ডুলিপি ফেরত দিতেন এবং প্রায়শই এর পরপরই চীনে যেতেন।
বিচার বিভাগ জানায়, ‘গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু দুর্লভ চীনা পাণ্ডুলিপি খুঁজে না পেয়ে প্রাথমিক তদন্তে দেখতে পায়, ‘অ্যালান ফুজিমোরি’ নামের এক ব্যক্তি সর্বশেষ ওই বইগুলো দেখেছিলেন।’
গোয়েন্দারা যখন লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হোটেলে ইং-এর থাকার জায়গায় অভিযান চালায়, তখন তারা বেশ কিছু ফাঁকা পাণ্ডুলিপি খুঁজে পায়, যা চুরি হওয়া বইগুলোর মতো দেখতে।
বিচার বিভাগ আরও জানায়, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে এমন লেবেল বা ট্যাগ (অ্যাসেট ট্যাগ) পেয়েছে, যা চুরি যাওয়া পাণ্ডুলিপিগুলোর সঙ্গে মিল ছিল। এই ট্যাগগুলো দিয়ে নকল বা ‘ডামি’ বই তৈরি করে আসল বইয়ের জায়গায় ফেরত দেওয়া হতো।’
গ্রন্থাগারের নিয়ম অনুযায়ী, দুর্লভ ও কেবল একটি কপি আছে এমন বইগুলো শুধু গ্রন্থাগারের ভেতরেই দেখা যায়, সাধারণ বইয়ের মতো সেগুলো বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেই।
বেই এরিয়ার ফ্রিমন্টের বাসিন্দা ইং-এর কাছে বিভিন্ন নামে বেশ কয়েকটি গ্রন্থাগার কার্ডও পাওয়া গেছে।
দুর্লভ শিল্পকর্ম চুরির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ইং-এর ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। বর্তমানে তিনি রাজ্য হেফাজতে আছেন।
চীনের শিল্পবাজার বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল বাজারগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেখানে সরকার অনুমোদিত জাদুঘর যেমন বাড়ছে, তেমনি বেসরকারি শিল্পবাজারও জমজমাট হচ্ছে। ধনী ও দেশপ্রেমিক হয়ে উঠা মধ্যবিত্তরা দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার করতে আগ্রহী হওয়ায় এমনটি হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার হোয়াইট হাউসে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের নেতাদের নিয়ে এক ‘ঐতিহাসিক শান্তি সম্মেলন’ আয়োজন করছেন।
দুই সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের দীর্ঘদিনের সংঘাতের অবসান ঘটানোই এর লক্ষ্য।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়।
ট্রাম্প বৃহস্পতিবার তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করেছেন যে, আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান ও আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ আমার সঙ্গে হোয়াইট হাউসে আনুষ্ঠানিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। দীর্ঘদিনের শত্রু এই দুই দেশ যদি সত্যিই চুক্তিতে পৌঁছায়, তাহলে এটি হবে ট্রাম্পের সর্বশেষ কূটনৈতিক সাফল্য। যিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংঘাতে তার মধ্যস্থতাকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের উপযুক্ত বলে মনে করেন।
নাগোর্নো-কারাবাখ নিয়ে দুই যুদ্ধ
আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দুইবার যুদ্ধ করেছে। ২০২৩ সালে আজারবাইজান একটি দ্রুত সামরিক অভিযানে অঞ্চলটি পুনরুদ্ধার করে।
এতে ১ লাখেরও বেশি জাতিগত আর্মেনিয়ানের দেশত্যাগ ঘটায়। দুই দেশের মধ্যে ইতঃপূর্বে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং ইউরোপীয় রাজনৈতিক সম্মেলনে শান্তিচুক্তির আলোচনা হয়েছে। তবে সেগুলোর ফলাফল আশাব্যঞ্জক ছিল না।
ট্রাম্পের দাবি ও আশাবাদ
ট্রাম্প বলেন, ‘এই দুই জাতি বহু বছর ধরে যুদ্ধে জড়িত। এই যুদ্ধে হাজার হাজার প্রাণহানি হয়েছে। বহু নেতা চেষ্টা করেছেন এই যুদ্ধ বন্ধ করতে, কিন্তু সফল হননি। আমার প্রশাসনের প্রচেষ্টায় অবশেষে সেই দিন এসেছে।
বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী ট্রাম্প আরও বলেন, ‘শুক্রবার আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন হবে। তাহলে দেখা হবে!’
ট্রাম্প আরও বলেন, ওয়াশিংটন উভয় দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে একসাথে অর্থনৈতিক সুযোগুলো অনুসরণ করার জন্য, যাতে আমরা দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের সম্ভাবনা সম্পূর্ণরূপে উন্মোচন করতে পারি।
এক্সনমোবিল চুক্তি
ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র দুই দেশের সঙ্গেই আলাদা আলাদা দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর করবে, যার মাধ্যমে দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা উন্মোচিত হবে।
এরই মধ্যে ওয়াশিংটনে বৃহস্পতিবার আজারবাইজানের রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থা এসওসিএআর গ্যাস এক্সনমোবিলের মধ্যে একটি সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে ।
চুক্তি স্বাক্ষরে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ ও ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ।
পরে আলিয়েভ ও উইটকফ দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেন বলে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ‘এক্স’ এক পোস্ট করে বিষয়টি জানিয়ে দেন।
সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রের এই দুই দেশ চলতি বছরের মার্চ মাসে শান্তিচুক্তির একটি খসড়া টেক্সটে সম্মত হয়।
আজারবাইজান তখন থেকে নথিতে স্বাক্ষর করার আগে কারাবাখের ওপর আঞ্চলিক দাবি ত্যাগ করার জন্য আর্মেনিয়ার সংবিধানে সংশোধনসহ বেশ কয়েকটি দাবির রূপরেখা তৈরি করেছে।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এসব শর্ত পূরণ হয়েছে কি-না, তা স্পষ্ট নয়।
যদিও ট্রাম্প বলেছেন যে, তার প্রশাসন বেশ কিছুদিন ধরে উভয় পক্ষের সাথে জড়িত ছিল।
তবে তিনি দুই দেশের প্রতিনিধিদের দ্বারা স্বাক্ষরিত নথি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে কিছু জানাননি।
জুলাইয়ের গোড়ার দিকে, পাশিনিয়ান ও আলিয়েভ সংযুক্ত আরব আমিরাতে সর্বশেষ দফা শান্তি আলোচনার জন্য মিলিত হন। কিন্তু তারা কোনও অগ্রগতি অর্জন করতে ব্যর্থ হন।
দুই শত্রুরাষ্ট্র এর আগে মে মাসে আলবেনিয়ায় ইউরোপীয় রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দেখা করেছিলেন।
সেই সময়ে ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল মাঁখো এবং ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি আন্তোনিও কস্তা দুই দেশের মধ্যে দ্রুত একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়, তবে দীর্ঘমেয়াদে ধরে রাখতে চায় না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। হামাসকে সরিয়ে গাজার শাসনভার আরব বাহিনীর হাতে তুলে দিতে চান তিনি।
তবে এমন পদক্ষেপের বাস্তবায়ন ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানি, বাস্তুচ্যুতি ও গাজায় এখন পর্যন্ত আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব বলেন তিনি।
গাজা পুরোপুরি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে নেতানিয়াহু বলেন, ‘নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, হামাসকে সরানো এবং গাজার মানুষকে মুক্ত করে সমগ্র উপত্যকাকে বেসামরিক শাসনের আওতায় আনতেই আমরা গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে ইচ্ছুক।’
‘আমরা গাজাকে নিজেদের দখলে রাখতে চাই না। আমরা সেখানে একটি নিরাপত্তা বলয় চাই।’
নেতানিয়াহু জানান, তিনি গাজার শাসনভার আরব বাহিনীর হাতে তুলে দিতে চান যারা ইসরায়েলের জন্য হুমকি হবে না। গাজাবাসীকে এই ব্যবস্থা ভালো জীবন দেবে বলে মনে করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেতানিয়াহু পুরো গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অনুমোদন পাওয়ার আশা করছিলেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো। তবে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার যেকোনো প্রস্তাবে পূর্ণ মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেতে হবে। তবে রবিবারের আগে তেল আবিববের পূর্ণ মন্ত্রিসভার বৈঠক হবার সম্ভাবনা কম।
এদিকে, গত ২২ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে নেতানিয়াহুর নতুন এই পরিকল্পনার খবর আসার পর গাজায় বাস্তুচ্যুতদের একটি শিবিরে থাকা মাইসা আল-হেইলা নামে এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘দখল করার মতো কিছুই আর বাকি নেই। গাজা বলে কিছু আর অবশিষ্ট নেই।’
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, গাজায় দুই ধাপের একটি অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে সেখানকার প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। মধ্য গাজায় বেসামরিক অবকাঠামো স্থাপনের জন্য সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে এই পরিকল্পনা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২–এর তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘমেয়াদি দখল নিয়ে আশঙ্কায় থাকা সামরিক শীর্ষ কর্মকর্তাদের সন্তুষ্ট করতে এই প্রস্তাবকে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের বদলে সীমিত অভিযান হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আবার কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হামাসকে আলোচনায় ফেরাতে চাপ সৃষ্টি করা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা খোলা চোখে ভিয়েতনাম মডেলের দিকে এগোচ্ছি।’
এদিকে, ইসরায়েলের এই পরিকল্পনাকে যুদ্ধবিরতি আলোচনার বিরুদ্ধে ‘প্রকাশ্য অভ্যুত্থান’ বলে অভিহিত করেছে হামাস।
হামাস কর্মকর্তা ওসামা হামদান আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজা শাসনের জন্য গঠিত যেকোনো বাহিনীকে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত ‘দখলদার বাহিনী’ হিসেবেই গণ্য করবে।
এই পরিকল্পনার বিষয়ে জর্ডানের এক সরকারি সূত্র জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা যা চাইবে, আরব দেশগুলো তাতেই সম্মতি দেবে।
নেতানিয়াহু এমন এক সময়ে এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন, যখন গাজা যুদ্ধ থামাতে এবং সেখানে আরও মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দিতে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ছে।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি ইতোমধ্যে ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থা।
এমন পরিস্থিতিতে গাজা উপত্যকা নিয়ে নেতানিয়াহুর নতুন এই পরিকল্পনা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কি ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে, তা-ই এখন দেখার বিষয়।
ক্রিপটন নামের ধ্বংসপ্রাপ্ত এক গ্রহ থেকে পৃথিবীতে আসা কাল্পনিক চরিত্র সুপারম্যান। যিনি দিনের বেলায় সাংবাদিক, আর গোপনে বিখ্যাত লাল-নীল পোশাক পরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েন এক সুপারহিরো হিসেবে।
অসাধারণ শক্তি, উড়তে পারা, এক্স-রে দৃষ্টি, বুলেটপ্রুফ শরীর এবং অতিমানবিক নৈতিকতার জন্য কোটি ভক্তের প্রিয় হিরো সুপারম্যান হয়ে ওঠেন বিশ্বজুড়ে ন্যায়ের প্রতীক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমিকস, সিনেমা, টিভি সিরিজ, অ্যানিমেশন ও গেমে সুপারম্যান চরিত্রটি নানা রূপে উঠে এসেছে।
সেই জনপ্রিয় চরিত্রের একটি রূপ— ১৯৯০’র দশকের টিভি সিরিজ লোইস অ্যান্ড ক্লার্ক: দ্য নিউ অ্যাডভেঞ্চারস অব সুপারম্যান-এ সুপারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করা অভিনেতা ডিন কেইন। তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিকে সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টে (আইসিই) যোগদানের ঘোষণা দিয়েছেন।
বুধবার (৬ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজের একটি টকশোতে এই ঘোষণা দেন ডিন কেইন। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ট্রাম্পের ‘গণ-নির্বাসন’ পরিকল্পনাতেও সমর্থন জানান তিনি।
ফক্স নিউজে জেসি ওয়াটারসের অনুষ্ঠানে ডিন কেইন বলেন, ‘আমি আগে থেকেই একজন রিজার্ভ পুলিশ অফিসার। তবে আগে আইসিইর অংশ ছিলাম না। সম্প্রতি আমি আইসিই কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং আমাকে শিগগিরই এজেন্ট হিসেবে শপথ করানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দেশ তৈরি হয়েছে দেশপ্রেমিকদের হাতে। আমি বিশ্বাস করি, আইসিই সঠিক কাজ করছে।’
ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর পর থেকে মার্কিন প্রশাসন আইসিই-এর জন্য ৭৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দিয়েছে। পাশাপাশি ২০২৯ সালের মধ্যে ১০ হাজার নতুন এজেন্ট নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রাও রাখা হয়েছে। ট্রাম্পের কথিত ‘বিগ বিউটিফুল ওয়াল’ প্রকল্প থেকেই এই বরাদ্দ এসেছে।
ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির তীব্র সমালোচনা
ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে আইসিই প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। এই অভিযানে অনিবন্ধিত অভিবাসী, আইনি সুরক্ষাপ্রাপ্ত বাসিন্দা, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরাও গ্রেপ্তার হচ্ছেন। আইসিইর বিরুদ্ধে নিয়মিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠছে, কারণ এসব অভিযানে সঠিক আইনি প্রক্রিয়া মানা হচ্ছে না বলে দাবি রয়েছে।
এসব ঘটনার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিক্ষোভ হচ্ছে। প্রতিবাদকারীদের গ্রেপ্তার এবং আইসিই-র কর্মকাণ্ড ভিডিও ধারণকারীদেরও অভিযুক্ত করা হচ্ছে।
সশস্ত্র মুখোশধারী আইসিই এজেন্টদের শুধু লস অ্যাঞ্জেলেস নয়, অন্যান্য শহরেও সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করতে দেখা গেছে। তাঁরা প্রায়শই সাদা পোশাকে থাকেন এবং তাঁদের শনাক্ত করার উপায় থাকে না।
সাম্প্রতিক সময়ের নতুন সুপারম্যান চলচ্চিত্রে চরিত্রটিকে একজন ‘ইমিগ্র্যান্ট’ হিসেবে উপস্থাপন করায় ডিন কেইন এর তীব্র সমালোচনা করেন।
কেইনের ভাষায়, ‘সুপারম্যান তো স্পষ্টভাবেই একজন এলিয়েন। অবশ্যই সে অভিবাসী। কিন্তু আমাদের দেশে নিয়মকানুন আছে। সবাইকে আমরা চাইলেই ঢুকতে দিতে পারি না।’
নব্বইয়ের দশকের লোইস অ্যান্ড ক্লার্ক: দ্য নিউ অ্যাডভেঞ্চারস অব সুপারম্যান সিরিজে টেরি হ্যাচার অভিনীত লোইস লেন চরিত্রের বিপরীতে সুপারম্যানের ভূমিকায় অভিনয় করেন ডিন কেইন।
আইসিই-তে যোগদানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আশা করি, আরও অনেকে আমার মতো এগিয়ে আসবেন এবং এই দেশকে রক্ষায় সাহায্য করবেন।’
জার্মানি অনিয়মিত অভিবাসী নিয়ন্ত্রণে সীমান্তে চলমান কড়াকড়ি সেপ্টেম্বরের সময়সীমার পরেও অব্যাহত রাখবে। আজ বৃহস্পতিবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেক্সান্ডার ড’ব্রিন্ট একথা বলেন।
জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাতে বার্লিন থেকে এএফপি জানায়, তিনি বলেন, ‘পূর্বে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার রেকর্ড আছে এমন আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে তাদের তালেবান-শাসিত আফগানিস্তান এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নির্বাসনে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে বার্লিন।’
জার্মানির রক্ষণশীল চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস অনিয়মিত অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘উগ্র ডানপন্থী অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) দলের প্রতি ক্রমবর্ধমান সমর্থন ঠেকানোর এটাই একমাত্র উপায়।’
গত ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের প্রচারণার সময় মারাত্মক হামলার ঘটনায় শরণার্থী ও অন্যান্য বিদেশি নাগরিকদের দায়ী করা হলে জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এর জেরে এএফডি রেকর্ড ২০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল।
পূর্ববর্তী সরকারের অধীনে গত বছর চালুর পর এ বছরের মার্চ মাসে ছয় মাস মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডব্রিন্ডট বলেন, ‘আমরা ১৫ সেপ্টেম্বরের সময়সীমার পরেও সীমান্তে কড়াকড়ি বজায় রাখব।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে একমত যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বহিরাগত সীমান্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত এই পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে।’
সন্ত্রাসবাদ বা ব্যাপক অবৈধ অভিবাসনের মতো গুরুতর হুমকির সম্মুখীন হলে, ইউরোপের শেনজেন অঞ্চলের সদস্য দেশগুলোকে দুই বছর পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ পুনরায় চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
গত মে মাসের শুরুর দিকে ফ্রেডরিশ মের্ৎসের সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর সীমান্তে কড়াকড়ি আরো বাড়িয়ে দেয়। বেশিরভাগ আশ্রয়প্রার্থীকেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এই পদক্ষেপের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
সীমান্তে মোতায়েন করা ফেডারেল পুলিশের সংখ্যা ১১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৪ হাজার করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুসারে, গত ৮ মে থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জার্মান স্থল সীমান্তে ৯ হাজার ২৫৪ জনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘটনা আফগানিস্তান থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের সঙ্গে ঘটেছে। এরপর সীমান্ত থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ফিরে গেছে আলজেরিয়া, ইরিত্রিয়া ও সোমালিয়ার আশ্রয়প্রার্থীরা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত মস্কোতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধ বন্ধে পুতিনকে সরাসরি বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছেন।
কিয়েভ থেকে এএফিপি জানায়, ট্রাম্প মস্কোতে তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও পুতিনের মধ্যকার আলোচনাকে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা এখনো মস্কোর বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে বদ্ধপরিকর।
জেলেনস্কি জানান, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। ট্রাম্প তাকে জানিয়েছেন, তিনি ‘খুব শিগগিরই’ পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারবেন।
ইউরোপীয় নেতারাও ওই ফোনালাপে যুক্ত ছিলেন বলে জানান জেলেনস্কি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেলেনস্কি লিখেন, আমরা ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বহুবার বলেছি, প্রকৃত সমাধানের পথ বের করতে হলে শীর্ষ নেতাদের আলোচনা সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে। এমন একটি বৈঠকের সময়সূচি ও আলোচ্য বিষয়ের পরিধি নির্ধারণ করা জরুরি।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস এবং ফ্রান্স ও ইতালির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘একাধিক’ ফোনালাপের পরিকল্পনা করেছেন।
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়েও যোগাযোগ হবে বলে জানান জেলেনস্কি ।
তিনি বলেন, মূল বিষয় হলো— রাশিয়া এই যুদ্ধ শুরু করেছে, তাদেরই উচিত আগ্রাসন বন্ধে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ‘কয়েক দিনের মধ্যেই’ একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। ইতোমধ্যে দুই পক্ষ ‘নীতিগতভাবে’ আলোচনার স্থান চূড়ান্ত করেছে।
মস্কো থেকে এএফপি জানায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই বৈঠক হতে যাচ্ছে। এর আগে ২০২১ সালের জুনে জেনেভায় জো বাইডেন ও পুতিনের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসানে মধ্যস্থতার চেষ্টা হিসেবে ট্রাম্প এ বৈঠকে অংশ নিতে যাচ্ছেন।
মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে তিন দফা সরাসরি আলোচনার পরও যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাত বন্ধে দুই পক্ষ এখনো দূরে অবস্থান করছে।
ট্রাম্প বুধবার বলেন, তিনি ‘খুব শিগগিরই’ পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে পারেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাগুলোকে ক্রেমলিনের উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, মার্কিন পক্ষের প্রস্তাব অনুযায়ী, একটি দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠকের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মতি হয়েছে। আমরা এখন আমাদের আমেরিকান সহকর্মীদের সঙ্গে মিলে বিস্তারিত বিষয়গুলো নির্ধারণ করছি।
ক্রেমলিন জানায়, আলোচনার স্থান নীতিগতভাবে চূড়ান্ত হয়েছে। তবে কোথায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে তা প্রকাশ করা হয়নি।
উশাকভ আরও বলেন, পরবর্তী সপ্তাহকে লক্ষ্য করে আমরা এই বৈঠকের সময় নির্ধারণ করছি।
মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফ মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার একদিন পরট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের ঘোষণা আসে।
উশাকভ জানান, উইটকফ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া সে প্রস্তাবে কোনো সাড়া দেয়নি। রাশিয়ান পক্ষ এই প্রস্তাব পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার জেলেনস্কি পুতিনকে সরাসরি বৈঠকে বসার আহ্বান জানান। তার মতে, এই বৈঠক শান্তির পথে অগ্রগতি আনতে একমাত্র কার্যকর উপায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলেনস্কি লিখেন, আমরা ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বহুবার বলেছি, প্রকৃত সমাধান বের করতে হলে নেতৃবৃন্দের পর্যায়ে আলোচনা সবচেয়ে কার্যকর হতে পারে। এ ধরনের বৈঠকের সময় ও আলোচ্য বিষয় নির্ধারণ করা জরুরি।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকালেই তিনি জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস এবং ফ্রান্স ও ইতালির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘একাধিক’ ফোনালাপের পরিকল্পনা করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের পর্যায়েও যোগাযোগ হবে বলে জানান জেলেনস্কি।
তিনি বলেন, মূল বিষয় হলো— রাশিয়া এই যুদ্ধ শুরু করেছে, তাদেরই উচিত আগ্রাসন বন্ধে বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়া।