রোববার, ১৫ জুন ২০২৫
৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে আজ

ভোট হবে সাত দফায়, ফল ঘোষণা ৪ জুন
ভারতের নতুন পার্লামেন্ট ভবন।ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১১:৪১
ফারাজী আজমল হোসেন
প্রকাশিত
ফারাজী আজমল হোসেন
প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:১৬

আজ (শুক্রবার) থেকে শুরু হচ্ছে ভারতে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পর্ব। সারা দেশে সাত দফায় এবার ভোটগ্রহণ চলবে। শেষ দফার ভোটগ্রহণ হবে ১ জুন। ভোট গণনা এবং ফল ঘোষণা হবে ৪ জুন। ইতোমধ্যেই এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দলের প্রচার-প্রচারণাসহ দেশজুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা তুঙ্গে উঠেছে।

ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। তাই শুধু সেদেশেই নয়, বিদেশেও ভারতের সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা এবং আগ্রহ রয়েছে। এতদ্বতীত, এশিয়া মহাদেশে ভারত এই মুহূর্তে চিনের পাশাপাশি এক গুরুত্বপূর্ণ শক্তি। সে কারণেও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ফ্রান্সসহ পাশ্চাত্যের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোও ভারতের নির্বাচনের ওপর নজর রাখছে। প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা এ নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহ করতে ভারতে পৌঁছেছেন। নির্বাচনকে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ করার জন্য দেশটির নির্বাচন কমিশন বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

এবারের লোকসভা নির্বাচনে দেশটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৯৬ কোটি ৮৮ লাখ ২১ হাজার ৯২৬। ২০১৯ সালের তুলনায় পুরুষদের চেয়ে মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

নির্বাচন বরাবরই এক অনিশ্চয়তার খেলা। শেষ পর্যন্ত কে বাজিমাত করবে তা আগে থেকে ভবিষ্যৎ বাণী করা সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন সমীক্ষক সংস্থা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে ভোটারদের মন বোঝার চেষ্টা করছে এবং প্রায় সবার সমীক্ষাতেই একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিজেপি তৃতীয়বারের মতো কেন্দ্রে সরকার গড়তে যাচ্ছে। কোনো কোনো সমীক্ষা বলছে, গতবারের আসন সংখ্যার চেয়েও বিজেপি এবার বেশি আসন লাভ করবে। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বিজেপি একাই এবার ৩৭০ আসন লাভ করবে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পাবে ৪০০-এর বেশি আসন। নির্বাচনের ফল যদি তাই হয়, তবে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নায়ক ও দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর পর নরেন্দ্র মোদি হবেন দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি টানা তিন মেয়াদে দেশ শাসন করবেন।

উল্লেখ্য, ভারতে লোকসভার আসনসংখ্যা ৫৪৩। সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভের জন্য ন্যূনতম ২৭৩টি আসন দরকার। বর্তমানে সপ্তদশ লোকসভায় বিজেপির একক আসন সংখ্যা ৩০৩। বিজেপির শরিকদের আসন সংখ্যা ৫০। বর্তমান লোকসভার মেয়াদ ১৬ জুন শেষ হবে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন হাউস গঠন করতে হয়।

বিজেপির কাছে এবার প্রধান চ্যালেঞ্জ গত নির্বাচনের এই বিপুল সাফল্যকে ধরে রাখা এবং আরও বেশি সংখ্যক আসন জিতে আসা। নির্বাচনে সাফল্য পেতে বিজেপির প্রধান ভরসা নরেন্দ্র মোদির ভাবমূর্তি। এ কথা অনস্বীকার্য যে এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদির বিকল্প কোনো নেতা নেই। ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখন মনে করেন, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বেই ভারত প্রগতি এবং উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে পারবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মহলে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তাও দেশের ভেতরে নরেন্দ্র মোদিকে এগিয়ে রেখেছে। নরেন্দ্র মোদির এই ভাবমূর্তির ওপর নির্ভর করে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ বিজেপির কাছে কোনো কঠিন বিষয় নয়। অন্যদিকে কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধীরা নরেন্দ্র মোদির বিকল্প হিসেবে কোনো গ্রহণযোগ্য মুখ তুলে ধরতে পারেননি। বরং ভোটগ্রহণের দিন যত এগিয়ে আসছে ততই তাদের দিশেহীন অবস্থা প্রকট হচ্ছে।

লোকসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া নিয়ে কারও কোনো দ্বিধা না থাকলেও, কোনো কোনো সমীক্ষক অবশ্য মনে করছেন বিজেপির আসন সংখ্যা এবার গতবারের তুলনায় কমতে পারে। এর কারণ হিসেবে তারা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে তুলে ধরছেন। তারা বলছেন, দেশে গত কয়েক বছরে ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের হার এবং তার সমাধানে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা, অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধি, সামাজিক ভারসাম্য ক্রমেই নষ্ট হতে বসা, উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের বাড়াবাড়ি এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্বেগ এগুলোর খেসারত কিছুটা হলেও বিজেপির সরকারকে দিতে হবে। উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপুর, মিজোরাম, অরুণাচলপ্রদেশ, পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, পশ্চিমে গুজরাট, মহারাষ্ট্র, দক্ষিণে কেরল, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটকে বিজেপির আসন কমবে। উত্তরে হিমাচল প্রদেশেও বিজেপি আশানুরূপ ফল করবে না। দিল্লি, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানাতেও বিজেপির ফল আশানুরূপ হবে না। বর্তমানে বিজেপি এককভাবে এবং শরিকদের সঙ্গে জোট গড়ে ১৮টি বিধানসভায় ক্ষমতায় রয়েছে। এ বিধানসভার প্রায় প্রত্যেকটিতেই বিজেপি বিরোধীদের ধূলিসাৎ করে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় আসনসংখ্যা জোগাড় করে নিতে পারে। কী হবে তা এখনই বলা যায় না। তার জন্য ৪ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।

দুই বাংলার বাঙালিরা অবশ্য বেশি আগ্রহী পশ্চিমবঙ্গের ভোটের ফলাফল কী হবে তা নিয়ে। দেশের অন্যান্য অংশের মতোই পশ্চিমবঙ্গে ভোট গ্রহণ হবে সাত দফাতেই। প্রথম দফা শুরু হবে আজ। শেষ দফা ১ জুন। ফলাফল ৪ জুন। গত লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে বিজেপি উল্লেখযোগ্য ফল করেছিল। ১৮টি আসন লাভ করেছিল। ২২টি আসন লাভ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২টি আসন গিয়েছিল কংগ্রেসের ঝুলিতে।

এবার বিজেপি তাদের ১৮ টি আসন ধরে রেখে আরও এগুতে পারে কি না সে দিকে সবার নজর রয়েছে। স্বয়ং অমিত শাহ নিজে এবার বাংলায় এসে দলের কাছে ৩৫ টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদি বলছেন ৪২ টি আসনে জেতার লক্ষ্য নিয়ে এবার এগোতে হবে। ৪০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে গেলে যে বাংলা থেকে আরও আসন দখল করতে হবে সেটা মোদি-শাহ জানেন। সে জন্য পশ্চিমবঙ্গে জেতার ব্যাপারে তারা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই এই রাজ্যে ঘনঘন প্রচারে আসছেন মোদি-শাহ। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও মোদি-শাহ পশ্চিমবঙ্গের ওপর সবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন।

বিজেপি নেতৃত্ব যতই দাবি করুণ না কেন, নির্বাচনী বিশেষজ্ঞ এবং সমীক্ষকরা সকলেই একমত হচ্ছেন যে, এবারের নির্বাচনে বাংলায় বিজেপির আসন কমবে। উত্তরবঙ্গে কিছু আসন বিজেপি পেলেও দক্ষিণবঙ্গে বিজেপির ভরাডুবি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

নির্বাচনি বিশ্লেষক এবং সমীক্ষকরা বলছেন যে, জাতীয় স্তরে নরেন্দ্র মোদির বিকল্প যেমন কোনো নেতা নেই তেমনি বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প কেউ নেই। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেকটাই অপ্রতিরোধ্যভাবেই এগুবেন। জাতীয় স্তরে বিজেপি অনেক এগিয়ে থাকলেও বাংলায় তার প্রভাব তেমন পড়বে না।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই এগিয়ে থাকার অনেক কারণ রয়েছে। যার অন্যতম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের চালু করা বেশ কিছু সামাজিক প্রকল্প যার সুফল বাংলার গ্রামীণ এবং প্রান্তিক মানুষ পেয়েছেন। এই সব প্রকল্পের ভেতর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পগুলো রয়েছে। এ ছাড়া গ্রামীণ এলাকায় সড়ক ব্যবস্থার উন্নতি, বিদ্যুৎ এবং পানীয় জল সরবরাহ, সরকারি হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর উন্নতি সাধনও মমতার আমলেই হয়েছে। এসব কারণে গ্রামীণ এবং প্রান্তিক মানুষের বৃহদংশের সমর্থন তার প্রতি রয়েছে। এই রাজ্যের এক বড় অংশের ভোটার মুসলমান সম্প্রদায়ভুক্ত। তারা মনে করে, মমতার আমলে সামাজিকভাবে তারা নিরাপদ রয়েছে। ফলে তাদের বৃহদংশের ভোটও মমতার দিকে যাবে। মহিলাদের জন্য মমতার চালু করা নানা প্রকল্পে মহিলা ভোটারদের একটা বড় অংশের সমর্থন মমতা বরাবরই পান। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে বলে মনে করছেন না নির্বাচনী বিশ্লেষকরা।

এর উল্টোদিকে বিজেপির হাল যথেষ্টই খারাপ। গত লোকসভা নির্বাচনে মোদি হাওয়ায় ভর করে ১৮ টি আসন জেতার পরেও এ রাজ্য থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদরা তাদের নির্বাচনী কেন্দ্রের উন্নতিকল্পে কোনো কাজই প্রায় করেনি। তা নিয়ে ভোটারদের ভেতর ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। তার কিছুটা আঁচ পাওয়া গিয়েছিল ২০২১ -এর বিধানসভা নির্বাচনে। ওই নির্বাচনে মোদি-শাহ বাংলায় এসে ২০০ আসন জেতার কথা বললেও ৭০-এর বেশি আসন পায়নি বিজেপি। সাংগঠনিক দিক দিয়েও বিজেপি এই রাজ্যে যথেষ্ট দুর্বল। উত্তরবঙ্গে কিছুটা সংগঠন থাকলেও, দক্ষিণবঙ্গে বিজেপির সংগঠন বলতে প্রায় কিছুই নেই। যেটুকু আছে তার ভেতর এত গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে তার ওপর ভর করে নির্বাচনে লড়া মুশকিল।

এ ছাড়া বিজেপির নেতৃত্বে অন্য রাজ্য থেকে আসা অবাঙালি নেতৃত্ব এবং বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে তাদের আত্মস্থ না হতে পারাটিও বাংলার মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না। ২০২১-এ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির এই রাজ্যে ভরাডুবি হওয়ার একটা অন্যতম কারণ ছিল এই অবাঙালি নেতৃত্ব।

পাশাপাশি বিজেপির হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি বাংলায় ব্যর্থ হয়েছে। চরিত্রগতভাবে অসাম্প্রদায়িক বাঙালি ধর্মীয় রাজনীতি কখনো মেনে নেয়নি। রাম মন্দির ইস্যু বাংলায় কোনো ছাপই ফেলেনি। অতি সম্প্রতি বিজেপি যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু করেছে তা শেষ পর্যন্ত বিজেপিকেই অস্বস্তিতে ফেলেছে। এই আইনের ফলে নাগরিকত্ব হারাতে হতে পারে বলে আশঙ্কিত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশ থেকে চলে আসা বহু মানুষই। শেষ পর্যন্ত ভোটের ফলাফল কী হবে তা জানে একমাত্র ভোটাররাই। তারা কাকে সমর্থন করবে তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। যে যার নিজের ভোটটা নিঃশব্দেই দিয়ে আসবে। তবে এটুকু আঁচ করা যাচ্ছে দিল্লিতে মোদি আর বাংলায় দিদি তাদের কর্তৃত্ব বজায় রাখবেন এবারও।


অস্ট্রিয়ায় স্কুলে গোলাগুলি, নিহত অন্তত ৯

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অস্ট্রিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গার্জের একটি স্কুলে গোলাগুলিতে অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। যারমধ্যে হামলাকারীও আছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার ড্রেইয়ার্সচুৎজেনগাস স্কুলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামলায় একাধিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ঠিক কতজন মারা গেছে তারা সেটি স্পষ্ট করে জানায়নি।

তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি দেশটির কয়েকটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, হামলার পর ৯টি মরদেহ পাওয়া গেছে। যারমধ্যে হামলাকারীর মরদেহ আছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় মেয়র এলকে কাহর বার্তাসংস্থা এপিএ নিউজকে জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে সন্দেহভাজন বন্দুকধারী আছে। পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বন্দুকধারী এ স্কুলেরই শিক্ষার্থী ছিল।

হামলাকারী নিহত হওয়ায় এ মুহূর্তে সেখানে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।

যে স্থানে হামলা হয়েছে সেটি অস্ট্রিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ শহর। এটি রাজধানী ভিয়েনা থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

বন্দুকধারী প্রায় এক ঘণ্টা স্কুলটিতে তাণ্ডব চালায়। এরপর সেখানে পুলিশ উপস্থিত হয়। রাষ্ট্রায়াত্ত্ব সংবাদমাধ্যম ওআরএফ জানিয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে বন্দুকধারী নিজেই পরবর্তীতে আত্মহত্যা করে।

অস্ট্রিয়ান সংবাদমাধ্যম ক্রোনেন জেইতাং জানিয়েছে, সকাল ১০টার দিকে প্রথম গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। আর হামলা হয় দুটি ক্লাসরুমে।

অস্ট্রিয়ায় স্কুলে এ ধরনের হামলার ঘটনা খুবই বিরল। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, এটি তাদের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় গোলাগুলির ঘটনা।

গ্রাজের মেয়র পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিকভাবে ৯ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন। যারমধ্যে সাতজন হলেন স্কুলের শিক্ষার্থী। আরেকজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি। তিনি এ ঘটনাকে ‘ভয়ানক ট্র্যাজেডি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। মেয়র নিশ্চিত করেছেন, ৯ জনের মধ্যে হামলাকারীও আছে।


লন্ডন পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭ টা ৫ মিনিটে লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেইসবুক পেইজ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পৌঁছেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ার লাইন্সের ফ্লাইটটি আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭ টা ৫ মিনিটে লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

সফরকালে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি রাজা চার্লসের হাত থেকে গ্রহণ করবেন ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’।

এছাড়া ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি যুক্তরাজ্যের নীতিগবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউস আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নেবেন।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্র জানায়, তাঁর এই সফরে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাজ্যের সমর্থনের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এর পাশাপাশি পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টিতে প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ।

আগামী ১৪ জুন প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।


বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অভিবাসন বিরোধী তল্লাশির জেরে আবারো উত্তাল হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস শহরের কেন্দ্রস্থল। বিক্ষোভকারীরা যানবাহনে আগুন দিয়েছে বলে জানিয়েছে সেখানকার পুলিশ।

লস অ্যাঞ্জেলস পুলিশ বিভাগ বলছে, আগুন নেভানোর জন্য তারা ওই এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করছে।

এ নিয়ে সেখানে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের টিয়ার শেল ব্যবহার করে পিছু হটানোর নির্দেশ দিয়ে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর সেনা মোতায়েনের নির্দেশ বাতিলের জন্য মি. ট্রাম্পের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। আরেকজন ডেমোক্র্যাটিক গভর্নর প্রেসিডেন্টের নির্দেশকে 'উদ্বেগজনক ক্ষমতার অপব্যবহার' বলে উল্লেখ করেছেন।

অন্যদিকে বিক্ষোভকারীরা শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অচল করে দেয়ার পর পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করেছে।


ধর্ষণের অভিযোগে ব্রিটিশ সৈন্য গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

কেনিয়ায় একজন ব্রিটিশ সৈনিককে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার বিবিসি’র এক প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছে।

নাইরোবি থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র এএফপি’কে বলেছেন, ‘কেনিয়ায় এক সেনা সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করতে পারি।’ বিষয়টি তদন্তাধীন থাকায় আর কোনো মন্তব্য করা হবে না।

বিবিসি জানিয়েছে, গত মাসে নাইরোবির উত্তরে অবস্থিত নানিউকি শহরে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছিল। সেখানে একটি বৃহৎ ব্রিটিশ ঘাঁটি অবস্থিত।

বিবিসি’র প্রতিবেদন অনুসারে, গ্রেপ্তারকৃত সৈনিক ধর্ষণের আগে সহকর্মীদের সাথে একটি নানিউকি বারে গিয়েছিলেন।

ব্রিটিশ সেনা প্রশিক্ষণ ইউনিট কেনিয়া ঘাঁটিটি অতীতে কেনিয়ায় বেশ কয়েকটি বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল বিশেষ করে ২০১২ সালে এক তরুণী কেনীয় মহিলার হত্যাকে কেন্দ্র করে।

সেই ক্ষেত্রে, মহিলাটিকে শেষবার একজন ব্রিটিশ সৈনিকের সাথে জীবিত দেখা গিয়েছিল। তার মৃতদেহ একটি সেপটিক ট্যাঙ্কে পাওয়া গিয়েছিল।

কোনো গ্রেপ্তার হয়নি কিন্তু ২০২১ সালে কেনিয়ার পুলিশ তাদের তদন্ত পুনরায় শুরু করে যখন ব্রিটেনের ‘সানডে টাইমস’ সংবাদপত্র রিপোর্ট করে যে, বেশ কয়েকজন সৈনিক একই রাতে তাদের একজন সহকর্মীকে মহিলাকে হত্যা করার বিষয়ে কথা বলতে শুনেছে।

২০০৩ সালে মানবাধিকার গোষ্ঠী অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছিল, তারা ১৯৬৫ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে কেনিয়ায় ব্রিটিশ সৈন্যদের বিরুদ্ধে ৬৫০টি ধর্ষণের অভিযোগ রেকর্ড করেছে।

কেনিয়া একটি প্রাক্তন ব্রিটিশ উপনিবেশ ১৯৬৩ সালে স্বাধীন হয়।

‘বিএটিইউকে’, তার ওয়েবসাইটে বলেছে, এটি আফ্রিকার বৃহত্তম ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর দল। এটি বলেছে, এটি কেনিয়ার সামরিক বাহিনীর সাথে প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে এবং সেখান থেকে একটি ‘শান্তি সহায়তা দল’ আফ্রিকা জুড়ে মোতায়েন করে।

কেনিয়ার সাথে একটি চুক্তির অধীনে ধর্ষণের অভিযোগের সর্বশেষ মামলার প্রাথমিক এখতিয়ার ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর।


মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ: ট্রাম্প

আপডেটেড ৮ জুন, ২০২৫ ১০:৫৯
বিবিসি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ধনকুবের ইলন মাস্কের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শেষ। তিনি আর সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চান না।

গতকাল শনিবার এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এ কথা বলেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি তা–ই ধরে নিচ্ছি।’

মাস্কের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে চান কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে ‘না’ বলে দেন। এ মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাস্কের সঙ্গে তাঁর প্রকাশ্য বিরোধের সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ।

টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও মাস্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারে কোটি ডলার অনুদান দিয়েছিলেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তিনি হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি তিনি ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিলের কঠোর সমালোচনা করেন।

সম্প্রতি ট্রাম্পের কর ও ব্যয় বিলকে ‘জঘন্য’ বলে কটাক্ষ করেন মাস্ক। তাঁর ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওভাল অফিসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেখুন, ইলনের সঙ্গে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। জানি না, সেটা আর থাকবে কি না।’

মাস্ককে নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি ভীষণ হতাশ। কারণ, এখানে উপস্থিত অন্য যে কারও চেয়ে তিনি এ বিলের ভেতরের খুঁটিনাটি সম্পর্কে ভালো জানতেন। হঠাৎই এটি নিয়ে তাঁর সমস্যা শুরু হয়েছে।’ তবে ট্রাম্পের এ দাবিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মাস্ক।

ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে মাস্ক একাধিক পোস্ট দিয়েছেন। এসব পোস্টে ট্রাম্পকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও ছাড়েননি তিনি। প্রমাণ না দিলেও মাস্ক দাবি করেছেন, ট্রাম্প ‘এপস্টেইন ফাইল’–এ আছেন।

গতকাল এনবিসির সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, মাস্ক প্রেসিডেন্টের অফিসের প্রতি অসম্মানজনক আচরণ করেছেন।


যুক্তরাষ্ট্রে বিষাক্ত ছত্রাক পাচারের অভিযোগে চীনা বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে মামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

এক চীনা বিজ্ঞানী তার ব্যাকপ্যাকে এক বিষাক্ত ছত্রাক লুকিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন বলে অভিযোগ করেছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। গত বছর ওই বিজ্ঞানী এই কাজ করেছেন বলে জানানো হয়েছে।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৩ জুন) এ ঘটনায় ওই বিজ্ঞানী ও ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানে কর্মরত তার এক প্রেমিকার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এফবিআই।

৩৩ বছর বয়সী বিজ্ঞানী জুনইয়ং লিউ ও তার প্রেমিকা ইউনকিং জিয়ানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, চোরাচালান, মিথ্যা তথ্য দেওয়া ও ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে।

এফবিআইয়ের তথ্যমতে, ওই জীবাণুর নাম ফুসারিয়াম গ্রামিনেরিয়াম। এটি গম, যব, ভুট্টা ও ধানে আক্রমণ করতে পারে। এ ছাড়া গবাদি পশু ও মানুষকেও আক্রান্ত করতে পারে।

একটি বৈজ্ঞানিক সাময়িকীর বরাত দিয়ে এফবিআই কর্তৃফক্ষ একে ‘সম্ভাব্য কৃষি-সন্ত্রাসবাদের অস্ত্র’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেরোম গরগন জুনিয়র বলেন, ‘চীনের নাগরিকদের আলোচিত এসব কর্মকাণ্ড জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত উদ্বেগজনক।’

ওই দুই চীনা নাগরিকদের মধ্যে একজন চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একনিষ্ঠ সমর্থক রয়েছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে, প্রাথমিক শুনানির জন্য মঙ্গলবার আদালতে হাজির হলে জিয়ানকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ সময় তার জামিন শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার (৫ জুন) দিন ধার্য করা হয়।

তবে আদালতে তার প্রাথমিক শুনানির জন্য নিযুক্ত এক আইনজীবী এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। এফবিআই জানায়, গত বছরের জুলাই মাসে ডেট্রয়েট বিমানবন্দর থেকে লিউকে চীনে ফেরত পাঠানো হয়। কারণ সে সময় তার ব্যাকপ্যাকে লাল উদ্ভিদজাত বস্তু পাওয়া যায় এবং এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি তার বক্তব্য পরিবর্তন করেন।

এফবিআইয়ের ভাষ্যে, শুরুতে লিউ নমুনাগুলো সম্পর্কে অজ্ঞতার ভান করেন। পরে সেটি ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের একটি ল্যাবে গবেষণার কাজে ব্যবহার করবেন বলে জানান। ওই ল্যাবে লিউ আগে কাজ করতেন এবং ঘটনার সময় জিয়ান সেখানে কর্মরত ছিলেন।

লিউর মোবাইল ফোনে ‘প্ল্যান্ট-প্যাথোজেন ওয়ারফেয়ার আন্ডার চেইঞ্জিং ক্লাইমেট কন্ডিশনস’ (পরিবর্তনশীল জলবায়ু পরিস্থিতিতে উদ্ভিদ-রোগজীবাণু যুদ্ধ) নামে একটি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধও পাওয়া যায় বলেও জানায় তারা।

তদন্তকারী আরও জানান, ওই ঘটনার এক সপ্তাহ আগে লিউ ও জিয়ান ক্ষুদেবার্তা দিয়ে যোগাযোগ করেছিলেন। সেখানে জিয়ান লেখেন, ‘দুঃখের বিষয় যে এখনও আপনাদের হয়ে কাজ করতে হচ্ছে।’

জবাবে লিউ বলেন, ‘একবার এটা হয়ে গেলে, বাকি সব কিছু সহজ হয়ে যাবে।’

এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জিয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এফবিআই কর্মকর্তারা। ল্যাবে লিউকে জীবাণু সংক্রান্ত কোনো সহায়তা করেছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন জিয়ান। তবে তার মোবাইল ফোনে তারই সই করা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি সমর্থনসূচক এক বিবৃতি পাওয়ার কথা জানায় এফবিআই।

ডেট্রয়েট বিমানবন্দরে লিউ ধরা পড়ার আগে থেকেই জিয়ান ইউনিভার্সিটির ল্যাবে ফুসারিয়াম গ্রামিনেরিয়াম নিয়ে কাজ করছিলেন বলে তাদের মধ্যে হওয়া ক্ষুদেবার্তা আদান-প্রদান থেকে ধারণা করে মার্কিন এই গোয়েন্দা সংস্থাটি। আর এই জীবানু গবেষণায় ব্যবহারের ফেডারেল অনুমতি নেই।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে কোনো প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় লিউ যদি নিজে ফিরে না আসেন, তাহলে তাকে গ্রেপ্তার করা অসম্ভব বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


আজ পবিত্র হজ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

আজ বৃহস্পতিবার জিলহজ মাসের ৮ তারিখ পবিত্র হজের দিন। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক’... মধুধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে পবিত্র আরাফার পাহাড় ঘেরা ময়দান ছাপিয়ে আকাশ-বাতাস মুখর ও প্রকম্পিত এখন। সু-উচ্চকণ্ঠ নিনাদের তালবিয়ায় মহান আল্লাহ তায়ালার একত্ব ও মহত্ত্বের কথা বিঘোষিত হচ্ছে প্রতি অনুক্ষণ। ‘আমি হাজির। হে আল্লাহ! আমি হাজির। তোমার কোনো শরিক নেই। সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধুই তোমার। সাম্রাজ্য তোমারই। তোমার কোনো শরিক নেই।’ লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত আরাফা প্রান্তর।

বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মিলন পবিত্র হজ। আজ ভোর থেকে সৌদি আরবের মক্কা নগরীর আরাফার আদিগন্ত মরু প্রান্তর এক অলৌকিক পুণ্যময় শুভ্রতায় ভরে উঠেছে। সফেদ-শুভ্র দুই খণ্ড কাপড়ের এহরাম পরিহিত হাজিদের অবস্থানের কারণে সাদা আর সাদায় একাকার। পাপমুক্তি আর আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ইসলামের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ এই পবিত্র হজ পালন করেছেন।

আজ ফজরের পর গোটা দুনিয়া থেকে আগত ২৫ লক্ষাধিক মুসলমান ঐতিহাসিক আরাফার ময়দানে উপস্থিত হচ্ছেন। এর মধ্যে বাংলাদেশি হজযাত্রীর সংখ্যা ৮৭ হাজারের বেশি। আজ ৮ জিলহজ মূল হজের দিন তারা এখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। আরাফার ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে এ বছর পবিত্র হজের খুতবা দেবেন মসজিদুল হারামের প্রখ্যাত খতিব ও সৌদি সিনিয়র ওলামা পরিষদের সদস্য ড. শায়খ সালেহ বিন হুমায়েদ।

সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফার ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তা’আলার জিকির আসকার ইবাদতে মশগুল থাকবেন। অতঃপর মাগরিবের নামাজের আযানের পর মুজদালিফার উদ্দেশ্যে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন হাজিরা। মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এশার ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সারা রাত অবস্থান করবেন। মিনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে পুনরায় মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন। ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়। প্রথমে মিনাকে ডান দিকে রেখে হাজিরা দাঁড়িয়ে শয়তানকে (জামারা) পাথর নিক্ষেপ করবেন। দ্বিতীয় কাজ আল্লাহর উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি করা। অনেকেই মিনায় না পারলে মক্কায় ফিরে গিয়ে পশু কোরবানি দেন। তৃতীয় পর্বে মাথা ন্যাড়া করা। চতুর্থ কাজ তাওয়াফে জিয়ারত। জিলহজের ১১ তারিখ মিনায় রাত যাপন করে দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে হাজিরা বড়, মধ্যম ও ছোট শয়তানের ওপর সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন।

১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে পুনরায় একইভাবে হাজিরা তিনটি শয়তানের ওপর পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করা শেষ হলে অনেকে সূর্যাস্তের আগেই মিনা ছেড়ে মক্কায় চলে যাবেন। মক্কায় পৌঁছার পর হাজিদের একটি কাজ অবশিষ্ট থাকে। সেটি হচ্ছে কাবা শরিফ তাওয়াফ করা। একে বলে বিদায়ি তাওয়াফ। স্থানীয়রা ছাড়া বিদায়ি তাওয়াফ অর্থাৎ কাবা শরিফে পুনরায় সাত বার চক্কর দেওয়ার মাধ্যমে হাজিরা সম্পন্ন করবেন পবিত্র হজব্রত পালন।

সৌদিতে গতকাল গড় তাপমাত্রা ছিল ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রখর রোদ আর প্রচণ্ড গরম। সৌদি বার্তা সংস্থা ‘এসপিএ’ জানায়, প্রচণ্ড গরমে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজিরা।

প্রয়োজনীয় অনুমতিপত্র না থাকায় ২ লাখ ৬৯ হাজার মুসল্লিকে পবিত্র মক্কা নগরে প্রবেশ করতে দেয়নি সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। এসব মুসল্লি পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন।

হজের খুতবা বাংলায় অনুবাদ করবেন চার বাংলাদেশি:

প্রতি বছরের মতো পবিত্র হজের খুতবা এবারও বাংলাসহ বহু ভাষায় অনুবাদ করা হবে। বাংলায় অনুবাদ করবেন চার জন বাংলাদেশি। তারা হলেন ড. খলীলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান, মুবিনুর রহমান ও নাজমুস সাকিব। তারা সবাই মক্কার উম্মুল কুরা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছেন।

হজের খতিবের সঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টার সৌজন্য সাক্ষাৎ:

বাংলাদেশি হজযাত্রীদের হজ ব্যবস্থাপনা মনিটরিং দলের দলনেতা ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন এবং ধর্মসচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিকও এখন মিনায় অবস্থান করছেন। পবিত্র আরাফার ময়দানে খুতবা প্রদান করবেন মসজিদলু হারামের প্রখ্যাত খতিব ও সৌদি সিনিয়র ওলামা পরিষদের সদস্য ড. শায়খ সালেহ বিন হুমায়েদ। তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।


সৌদি আরবে ১২ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আবাসন, শ্রম ও সীমান্ত সুরক্ষা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সৌদি আরবে ১২ হাজারের বেশি প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গতকাল রোববার সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজ।

এতে বলা হয়েছে, গত ২২ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত সৌদি আরবের বিভিন্ন প্রান্তে অভিযান চালিয়ে ১২ হাজার ১২৯ জন প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা অভিযানের অংশ হিসেবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আবাসন আইন লঙ্ঘনের ঘটনায় ৭ হাজার ১২৭ জন, সীমান্ত নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনে ৩ হাজার ৪৪১ জন এবং শ্রম আইন লঙ্ঘনের দায়ে ১ হাজার ৫৬১ জন রয়েছেন। দেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারি সংস্থা যৌথ অভিযান চালিয়ে ওই প্রবাসীদের গ্রেপ্তার করেছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে সৌদি আরবে প্রবেশের চেষ্টার সময় গ্রেপ্তার হয়েছেন এক হাজার ১৯৭ জন। তাদের মধ্যে ইথিওপিয়ান ৬৩ শতাংশ, ইয়েমেনি ৩৪ শতাংশ এবং অন্যান্য দেশের ৩ শতাংশ নাগরিক রয়েছেন।

এছাড়া অবৈধ উপায়ে সৌদি আরব ত্যাগের চেষ্টা করায় আরও ৯০ জন প্রবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একই সময়ে আবাসন ও কর্মবিধি লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন এবং আশ্রয় দেওয়ায় সৌদিতে বসবাসরত ১৮ ব্যক্তিকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বর্তমানে দেশটিতে ১৯ হাজার ২৩৮ জন প্রবাসীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৭ হাজার ৯৩০ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৩০৮ জন নারী। গ্রেপ্তারকৃত প্রবাসীদের মধ্যে ১৪ হাজার ৬৫ জনকে দেশে ফেরত পাঠানোর আগে ভ্রমণের প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহের জন্য তাদের নিজ নিজ কূটনৈতিক মিশনে পাঠানো হয়েছে।

পাশাপাশি আরও ১ হাজার ৫৩৩ জনকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে গ্রেপ্তারদের মধ্যে ১১ হাজার ৯৪ জনকে ইতোমধ্যে সৌদি আরব থেকে নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে অবৈধভাবে প্রবেশে সহায়তার চেষ্টাকারী ব্যক্তির ১৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ সৌদি রিয়াল জরিমানার বিধান রয়েছে। সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে বারবার সতর্ক করে দিয়ে আসছে।

মরু অঞ্চলের দেশ সৌদি আরবে বর্তমানে প্রায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ মানুষের বসবাস। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিক সৌদিতে কর্মরত রয়েছেন। সৌদি আরবের স্থানীয় গণমাধ্যম নিয়মিতভাবে দেশটিতে আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন ধরপাকড় অভিযান ও অবৈধ প্রবাসীদের আটকের খবর প্রকাশ করছে।


তিস্তার পানিবৃদ্ধি ঘিরে ভারতে রেড অ্যালার্ট জারি, সতর্কতা বাংলাদেশেও

ভারতের গ্যাংটকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীতে পানির স্তর বাড়তে থাকায় গতকাল শনিবার রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি)। ইতোমধ্যে সিকিমের মাঙ্গান, গিয়ালশিং ও সোরেং জেলাগুলোতে বন্যা ও ভূমিধসের শঙ্কায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া অধিপ্তর (আইএমডি)। এদিকে বাংলাদেশেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

গ্যাংটক জেলার ম্যাজিস্ট্রেট এক জরুরি গণবিজ্ঞপ্তিতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন, তবে আতঙ্কিত না হতে অনুরোধ করেছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাঙ্গান জেলার তিস্তা নদীর অববাহিকা, বিশেষ করে ডিকচু থেকে সিংতাম পর্যন্ত অঞ্চলটি বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা টিমগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে, ভারতের উজানে পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে বাংলাদেশ অংশেও বাড়ছে তিস্তার পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী তিন দিন পানির স্তর আরও বাড়তে পারে। লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী ও রংপুর জেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে নতুন করে বন্যার শঙ্কা।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, এখনো পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও যেকোনো সময় পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে শুক্রবার দুপুর ১২টায় পানি রেকর্ড হয়েছে ৫১.১৫ মিটার, যা বিপদসীমার মাত্র এক মিটার নিচে। রংপুরের কাউনিয়া পয়েন্টেও পানি দ্রুত বাড়ছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর অগ্রগতির কারণে ১ জুন পর্যন্ত এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। গেলো ২৪ ঘণ্টায় রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় গড়ে ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে রংপুরের গঙ্গাচড়া, পীরগাছা ও কাউনিয়া উপজেলার কিছু এলাকায় নদীভাঙন শুরু হয়েছে। প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা এবং ভাঙনের আশঙ্কায় আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে।

তিস্তাপাড়ের প্রায় ৯৫টি চর এলাকা পানিতে প্লাবিত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব নিচু চরজমিতে বসবাসকারী মানুষজন এখন দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। আদিতমারী উপজেলার চর গোবর্ধন এলাকার বাসিন্দা ফজলার রহমান বলেন, ‘বন্যা এলে আমাদের কিছুই থাকে না। মাঠের ফসল, গবাদি পশু সবই ভেসে যায়। এবারও সবাই ঘরবাড়ি তুলে নিচ্ছে, উঠোনে পলিথিন দিয়ে জিনিসপত্র বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।’


থামছে না ভারত-পাকিস্তানের বাকযুদ্ধ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পর গত ১০ মে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হলেও দুই দেশের মধ্যে বাকযুদ্ধ এখনো চলছে। দুই প্রতিবেশী দেশই প্রতিপক্ষের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পাল্টাপাল্টি মন্তব্য এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের দেশের অবস্থানের কথা তুলে ধরার চেষ্টাও জারি আছে।

ইরান সফরে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, পাকিস্তান শান্তির বিষয়ে কথা বলতে প্রস্তুত এবং তারা পানি, বাণিজ্য ও সন্ত্রাসের মোকাবিলার বিষয়ে আলোচনায় বসতে পারে যদি ভারত গুরুত্ব দেয়। এরই মধ্যে কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে আবার পাল্টাপাল্টি বিবৃতিতে জড়িয়েছে দুই দেশ।

ভারত আরও একবার নিজেদের পক্ষে স্পষ্ট করে গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হলে তা সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করা এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়েই হবে। অন্যদিকে ইসলামাবাদের বক্তব্য পাকিস্তান কখনোই কাশ্মীর ছেড়ে যাবে না।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং একটি অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন, পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের বাসিন্দাদের তিনি পরিবারের অংশ বলেই মনে করেন। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দৃঢ় বিশ্বাস পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরের বাসিন্দারা একসময় নিজের ইচ্ছায় ফিরে (ভারতে) আসবেন। পরে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংএ কাশ্মীর ইস্যুতে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে বলতে শোনা যায়, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হলে তা দ্বিপাক্ষীকভাবেই হবে এবং এই বিষয়ের ওপর হবে যে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর তারা (পাকিস্তান) কবে খালি করবে।

এরপর ইসলামাবাদও পাল্টা জবাব দেয়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির জানিয়ে দেন, কাশ্মীর নিয়ে কোনো সমঝোতা সম্ভব না। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি বার্ষিক বিজনেস সামিট ২০২৫ উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। মঞ্চে ভাষণের সময় ওঠে আসে পাকিস্তানের প্রসঙ্গ।

এ সময় রাজনাথ সিং বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ এবং আলোচনার বিষয়টি নিয়ে আমরা পুনর্মূল্যায়ন করেছি। যখনই আলোচনা হোক, তা হবে শুধু সন্ত্রাসবাদ ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে। পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের বিষয়েও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জনগণ আমাদের নিজেদের। তারা আমাদের পরিবারেরই অংশ। আমরা এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারতের সংকল্পের প্রতি দায়বদ্ধ।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস যে আমাদের ভাইয়েরা যারা ভৌগোলিক ও রাজনৈতিকভাবে আজ আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন, তারা একদিন অবশ্যই আত্মসম্মান নিয়ে, স্বাধীন ইচ্ছায় ভারতের মূলধারায় ফিরে আসবেন। রাজনাথ বলেছেন, আমি জানি, সেখানকার বেশির ভাগ মানুষই ভারতের সঙ্গে এক ধরনের সংযোগ অনুভব করেন। কিছু মুষ্টিমেয় মানুষ রয়েছে, যাদের ভুল বোঝানো হয়েছে। ভারত সব সময় হৃদয়ের সংযোগে বিশ্বাস করে।

পেহেলগ্রাম হামলার কদিন আগে এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের আসিম মুনিরকে বলতে শোনা গিয়েছিল যে বিশ্বের কোনো শক্তি কাশ্মীরকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করতে পারবে না। কাশ্মীরকে পাকিস্তানের জাগুলার ভেইন (যা মস্তিষ্ক, ঘাড়, মুখের একাংশ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে দেয়) বলে অভিহিত করেছিলেন তিনি। পেহেলগ্রাম হামলার পর, তার সেই মন্তব্যকে ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়।

তিনি বলেছিলেন, কাশ্মীরের বিষয়ে আমাদের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট, এটি আমাদের জাগুলার ভেইন ছিল এবং থাকবে। আমরা একে ভুলব না। আমরা আমাদের কাশ্মিরী ভাইদের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামকে ত্যাগ করব না। পাশাপাশি উপস্থিত ব্যক্তিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে এই বিষয়ে অবগত করতে হবে।

তিনি বলেছিলেন, আপনাদের সন্তানদের পাকিস্তানের কথা বলতে হবে যাতে তারা আমাদের পূর্বপুরুষদের চিন্তা-ভাবনাকে ভুলে না যায়, ভুলে না যায় যে আমরা হিন্দুদের থেকে আলাদা। আমাদের ধর্ম, রীতিনীতি, ঐতিহ্য, চিন্তা-ভাবনা, উদ্দেশ্য সবই আলাদা। তার বক্তব্যে বিভাজনমূলক বিষয় রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছিল এবং বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

এদিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ আরও একবার তুলেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসের ব্যবসা চালানোটা ব্যয়সাশ্রয়ী বিষয় নয়। পাকিস্তান আজ বুঝতে পেরেছে যে এর জন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে। আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের কৌশল এবং প্রতিক্রিয়া উভয়কেই নতুন করে ডিজাইন ও নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছি। পরে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংএ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে পাকিস্তানের বিষয়ে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে একাধিক প্রশ্ন করা হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট ও ধারাবাহিক। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যেকোনো আলোচনা শুধু দুই দেশের মধ্যে, অর্থাৎ দ্বিপাক্ষীকই হতে হবে।

দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার আবহে সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা হয়েছিল। সেই চুক্তি এখনো স্থগিত রয়েছে।

জয়সওয়ালকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন, সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে বলব, যতক্ষণ না পাকিস্তান বিশ্বাসযোগ্যভাবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা বন্ধ করছে, ততদিন এই নিয়ে কোনো কথা হবে না। যেমনটি প্রধানমন্ত্রী আগেই বলেছেন।


গাজার দক্ষিণে নতুন ত্রাণকেন্দ্রে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ

আপডেটেড ২৯ মে, ২০২৫ ১২:০১
বাসস

গাজার দক্ষিণে যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি সংস্থার পরিচালিত নতুন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে মঙ্গলবার হাজারো ফিলিস্তিনি ভিড় করেন। এ সময় চরম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ইসরাইল এদিন গাজায় নতুন ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতি কার্যকর করে।

ফিলিস্তিনের রাফা থেকে এএফপি জানায়, মাত্র কয়েকদিন আগে ইসরাইল কর্তৃক আরোপিত পূর্ণাঙ্গ ত্রাণ অবরোধ আংশিকভাবে শিথিল করার পর রাফায় এ ঘটনা ঘটেছে। ২ মার্চ থেকে আরোপিত সেই অবরোধ খাদ্য ও ওষুধের তীব্র সংকট তৈরি করে।

পরে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু স্বীকার করেন যে ‘ত্রাণকেন্দ্রে এক মুহূর্তের জন্য নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম’। তবে এক জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা এই বিতরণকে ‘সফলতা’ হিসেবে আখ্যা দেন।

যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) জানায়, বিশৃঙ্খলা সত্ত্বেও স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে।

বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী আয়মান আবু যায়েদ এএফপিকে বলেন, তিনি কেন্দ্রে সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন, ‘হঠাৎ করেই অনেক মানুষ ধাক্কা দিয়ে এলোমেলোভাবে ঢুকে পড়তে থাকে’।

তিনি বলেন, ‘এটা হয়েছে ত্রাণের অভাব এবং বিলম্বের কারণে। মানুষ ভেতরে ঢুকে যতটুকু পারা যায় সংগ্রহের চেষ্টা করেছে।’

একপর্যায়ে ‘ইসরাইলি বাহিনী গুলি ছোড়া শুরু করে, শব্দটা খুব ভয়ের ছিল। মানুষ ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। তারপরও অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ত্রাণ নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায়।’

পরবর্তীতে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা ‘কেন্দ্রের বাইরের এলাকায় সতর্কতামূলক গুলি’ ছুঁড়েছে।

তারা আরও জানায়, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে, ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিকল্পনামাফিক চলবে, এবং আইডিএফ (ইসরাইলি বাহিনী)-এর সদস্যদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি।’

জিএইচএফ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘এসডিএস (ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র)-এ একসময় এত বেশি ভিড় হয় যে আমাদের দল পেছনে সরে গিয়ে কিছু সংখ্যক গাজাবাসীকে নিরাপদে ত্রাণ নিতে দেয় এবং ছত্রভঙ্গ হতে দেয়।’

‘স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে’, যোগ করে সংস্থাটি।

এএফপির ফুটেজে দেখা গেছে, মঙ্গলবার বিপুল সংখ্যক মানুষ ত্রাণের বাক্স, যার গায়ে ‘জিএইচএফ’ চিহ্ন ছিল, বহন করে এলাকা ত্যাগ করছে।

-‘,৬২,০০০ খাবারের ব্যবস্থা’-

জিএইচএফ আরও জানিয়েছে, ‘হামাসের আরোপিত অবরোধ’ তাদের একটি কেন্দ্রে কয়েক ঘণ্টার বিলম্ব সৃষ্টি করেছে।

এদিকে হামাসের সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় ত্রাণ বিতরণের জন্য ইসরাইলের নতুন উদ্যোগ ‘চরমভাবে ব্যর্থ’ হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই ব্যর্থতা দেখা দেয় তখন, যখন হাজার হাজার ক্ষুধার্ত মানুষ, যারা প্রায় ৯০ দিন ধরে দখলদার বাহিনীর অবরোধে খাদ্য ও ওষুধবিহীন অবস্থায় রয়েছে, দুঃখজনক ও মর্মন্তুদ দৃশ্যের মধ্যে ওইসব এলাকায় ছুটে যায়।’

মঙ্গলবারের বিবৃতিতে জিএইচএফ জানায়, এখন পর্যন্ত ‘প্রায় ৮,০০০ খাবারের বাক্স বিতরণ করা হয়েছে... যা ৪,৬২,০০০ খাবার হিসেবে গণ্য’। তারা জানায়, এর আগের দিন থেকেই কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।

এক জ্যেষ্ঠ ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, ‘আজকের দিনটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের জন্য সফল ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘হামাস চেষ্টা করেছিল যেন সাধারণ মানুষ ভয় পেয়ে এগিয়ে না আসে। কিন্তু গাজাবাসীরা হাজার হাজার প্যাকেজ নিতে এসেছিল।’

ইসরাইল জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ প্রচেষ্টাকে সহযোগিতা করছে, এবং বলছে যে তারা ত্রাণকে হামাসের হাত থেকে দূরে রাখতে চায়।

মঙ্গলবার নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা আমাদের মার্কিন বন্ধুদের সঙ্গে পরিকল্পনা করেছি, যাতে ত্রাণ বিতরণ সাইটগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় এবং একটি মার্কিন কোম্পানি ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর মধ্যে খাবার বিতরণ করে।’

‘এক মুহূর্তের জন্য নিয়ন্ত্রণ হারানো গিয়েছিল, তবে পরে তা পুনরুদ্ধার করা গেছে।’

-‘হৃদয়বিদারক দৃশ্য’-

জিএইচএফ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা ইসরাইলের সামরিক লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়তা করছে, ফিলিস্তিনিদের উপেক্ষা করছে, জাতিসংঘের ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়েছে এবং মানবিক নীতিমালার সঙ্গে অসামঞ্জস্য আচরণ করছে।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র মঙ্গলবারের দৃশ্যকে ‘নেহায়েত হৃদয়বিদারক’ বলে উল্লেখ করেন।

স্টেফান দুজারিক বলেন, ‘গত সপ্তাহে মহাসচিব যা বলেছেন, আমরা ও আমাদের অংশীদাররা একটি সুসংহত, নীতিনির্ভর, পরিচালনাযোগ্য পরিকল্পনা তৈরি করেছি, যা সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন নিয়ে জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’

জেনেভায় গত ফেব্রুয়ারিতে নিবন্ধিত হলেও, জিএইচএফ-এর কোনো অফিস বা প্রতিনিধি নেই মানবিক বিশ্বের অঘোষিত রাজধানীতে।

সংস্থাটির সাবেক নির্বাহী পরিচালক জেক উড রোববার পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, মানবিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করা সম্ভব নয়।

কিছু মানবিক কর্মী যুক্তি দিয়েছেন যে, নিরাপদ ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র নির্ধারণের মাধ্যমে মানুষকে পুনরায় স্থানচ্যুত হতে বাধ্য করা মানবিক নীতির লঙ্ঘন।

সমালোচকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, এসব বিতরণ কেন্দ্র কোথায় হবে তা কে নির্ধারণ করেছে ু বিশেষ করে যখন ইসরাইল ‘গাজা বিজয়ের’ পরিকল্পনা করছে বলে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

জাতিসংঘ জিএইচএফ-এর পরিকল্পনায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘এটি আমাদের মৌলিক নীতিমালার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় নিরপেক্ষতা, স্বাতন্ত্র্য ও স্বাধীনতার মতো নীতিগুলোর সঙ্গেও না।’

২৪ মে নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বরাতে বলা হয়, গাজার জন্য যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত নতুন ত্রাণ পরিকল্পনাটি ‘মূলত ইসরাইলিদের দ্বারা তৈরি ও পরিকল্পিত, এর লক্ষ্য হামাসকে দুর্বল করা।’


এপ্রিল মাসে টেসলা বিক্রি ৫২ শতাংশ কমেছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসিইএ) মঙ্গলবার জানিয়েছে, চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতাদের শেয়ার বৃদ্ধি পাওয়ায় এপ্রিল মাসে ইলন মাস্কের টেসলার তৈরি গাড়ির বিক্রি অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে।

প্যারিস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশে সামগ্রিকভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধি পেলেও, ইলন মাস্কের টেসলার শেয়ার নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে।

ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসিইএ) জানিয়েছে, এপ্রিল মাসে টেসলার বিক্রি কমে ৫ হাজার ৪৭৫টি গাড়িতে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় ৫২.৬ শতাংশ কম।

২০২৫ সালের প্রথম চার মাসে, টেসলার বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৬.১ শতাংশ কমে ৪১ হাজার ৬৭৭টি গাড়িতে দাঁড়িয়েছে।

জেটো ডায়নামিক্সের পরামর্শদাতাদের মতে, একসময় বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রিতে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান টেসলাকে এপ্রিল মাসে ভক্সওয়াগন, বিএমডব্লিউ, রেনল্ট এবং চীনা নির্মাতা বিওয়াইডিসহ ১০টি প্রতিদ্বন্দ্বী টেসলাকে ছাড়িয়ে গেছে।

টেসলা এপ্রিল মাসে ঘোষণা করেছিল, প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী তাদের বিক্রয় ১৩ শতাংশ কমেছে, যা মাস্কের ওপর চাপ বাড়িয়েছে, যদিও কোম্পানিটি আংশিকভাবে মডেল ওয়াই স্ট্যান্ডার্ড-বেয়ারার আপগ্রেডের কারণে উৎপাদন হ্রাসের জন্য দায়ী করেছে।

মাস্ক তখন থেকেই ঘোষণা করেছেন, তিনি ট্রাম্পকে মার্কিন সরকারের ব্যয় কমাতে সাহায্য করার জন্য তার কাজ কমিয়ে দেবেন এবং গত সপ্তাহে বলেছিলেন টেসলার বিক্রয় ‘ভালো’ হচ্ছে।

এসিইএ তথ্য অনুসারে, এপ্রিল মাসে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি গত বছরের তুলনায় সামগ্রিকভাবে ২৬.৪ শতাংশ বেড়ে বাজারের ১৫.৩ শতাংশ অংশ দখল করেছে।

ইউরোপ জুড়ে এই বৃদ্ধি অসম কারণ বিভিন্ন সরকার এবং নির্মাতারা বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনার জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা দেয়। জার্মানি, বেলজিয়াম, ইতালি এবং স্পেনে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। তবে ফ্রান্সে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি কমেছে।

এসিইএ-এর মহাপরিচালক সিগ্রিড ডি ভ্রিস বলেন, ব্যাটারি-বৈদ্যুতিক যানবাহনের চাহিদা ধীরে ধীরে গতি পাচ্ছে, কিন্তু ইইউ দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধি ক্রমবর্ধমান এবং অসম রয়ে গেছে’।

তিনি বলেন, ‘ব্যাটারি-ইলেকট্রিক যানবাহনকে মূলধারার পছন্দে পরিণত করার জন্য, সরকারগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির শর্তাবলী, যেমন ক্রয় এবং আর্থিক প্রণোদনা, রিচার্জিং অবকাঠামো এবং বিদ্যুতের দাম বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখা অপরিহার্য।’

ইউরোপীয় বাজারে এখনও ছোট বৈদ্যুতিক ব্যাটারি সহ হাইব্রিড গাড়ির বিক্রি প্রাধান্য পেয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে ২০.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে একই সময়ে কেবল পেট্রোল-চালিত গাড়ি ২০.৬ শতাংশ কমেছে।

বিওয়াইডি, এমজি, এক্সপেং এবং লিপমোটর ব্র্যান্ডগুলোর বৈদ্যুতিক এবং হাইব্রিড বিক্রয় বছরে ৫৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এসিইএ বিশেষজ্ঞ ফেলিপ মুনোজ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বৈদ্যুতিক যানবাহনের মতো চীনা হাইব্রিড গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপ করে কিনা তা এখনও দেখার বিষয়।


৬০০ স্থানে অ্যালকোহল বিক্রির অনুমোদন দেবে সৌদি আরব

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ এবং ২০৩০ সালের এক্সপোসহ বড় বড় আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজনের প্রস্তুতির আগে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করতে চায় সৌদি আরব। এ লক্ষ্যে ২০২৬ সালের মধ্যে ৬০০টি পর্যটন স্থানে দীর্ঘদিনের জন্য মদের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য সান এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক ধাক্কায় ‘অতি-রক্ষণশীল’ দেশটি পাঁচ তারকা হোটেল, বিলাসবহুল রিসোর্ট এবং প্রবাসী-বান্ধব কম্পাউন্ডসহ লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্থানে ওয়াইন, বিয়ার এবং সাইডার বিক্রির অনুমতি দেবে। তবে জনসাধারণ, বাড়ি, দোকান এবং ফ্যান জোনে মদ্যপান নিষিদ্ধ থাকবে।

দ্য সানের প্রতিবেদন বলছে, এই নাটকীয় নীতিগত পরিবর্তন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ‘ভিশন ২০৩০’-এর অংশ। এর লক্ষ্য আন্তর্জাতিক পর্যটন বৃদ্ধি করা, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং এর ‘টিটোটাল ভাবমূর্তি’ ঝেড়ে ফেলা।

কর্মকর্তারা আশা করছেন, নিওম, সিন্দালাহ দ্বীপ এবং লোহিত সাগর প্রকল্পের মতো জমকালো এলাকায় নিয়ন্ত্রিত অ্যালকোহল বিক্রি দেশটিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাহরাইনের মতো উপসাগরীয় প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সুবিধা দেবে-যেখানে পর্যটন অঞ্চলে মদ্যপান ইতোমধ্যেই বৈধ। দ্য সানের প্রতিবেদন অনুসারে, লাইসেন্সপ্রাপ্ত স্থানগুলো কঠোরভাবে ‘নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার’ অধীনে পরিচালিত হবে। প্রশিক্ষিত কর্মী এবং অপব্যবহার রোধ ও দেশের ইসলামী মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার জন্য কঠোর নিয়ম থাকবে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লক্ষ্য হলো-সাংস্কৃতিক পরিচয় না হারিয়ে বিশ্বকে স্বাগত জানানো। বিশ্ব পর্যটন মানচিত্রে সৌদি আরবকে একটি প্রগতিশীল, অথচ সম্মানজনক খেলোয়াড় হিসেবে স্থান দেওয়া। প্রতিবেদন অনুসারে, এই পরিকল্পনাটি ২০২৬ সালে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে - বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আট বছর আগে। দেশের ভাবমূর্তি আধুনিকীকরণের ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত এসেছে।

দ্য সানের প্রতিবেদন আরও বলছে, চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঘোষণা করেছিলেন, ২০৩৪ বিশ্বকাপে মদ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হবে। এরপর এটি ইংল্যান্ডের ফুটবল ভক্তদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়।

সৌদির উপ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী প্রিন্স খালিদ বিন বন্দর আল সৌদ গত ফেব্রুয়ারিতে এলবিসি রেডিওকে বলেছিলেন, ‘এখানে কোনো অ্যালকোহল নেই, বরং আমাদের আবহাওয়ার মতো, এটি একটি শুষ্ক দেশ। প্রত্যেকেরই নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। আমরা আমাদের সংস্কৃতির সীমানার মধ্যে থাকা মানুষকে আপন করে নিতে পেরে খুশি, কিন্তু আমরা অন্য কারও জন্য আমাদের সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে চাই না। এটি কোনো সৌদি অনুষ্ঠান নয়, এটি একটি ‘বিশ্ব অনুষ্ঠান’ এবং অনেকাংশে যারা আসতে চান তাদের আমরা স্বাগত জানাব।’

এরপর বিষয়টি পশ্চিমা মহলে ক্ষোভের জন্ম দেয়। দ্য সান অনুসারে, কিন্তু এখন সৌদি অভ্যন্তরীণ ব্যক্তিরা আশা করছেন, নতুন মদ নীতি সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দেবে এবং দেখাবে যে, দেশটি ‘পার্টি করতে প্রস্তুত’, তবে সীমাবদ্ধতার মধ্যে।

সূত্র দ্য সানকে জানায়, এই মডেলটি দুবাই এবং মানামায় সফল ‘অ্যালকোহল প্রচারণা’ থেকে অনুপ্রাণিত। যেখানে কঠোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, ফলে ঐতিহ্যকে নষ্ট না করে পর্যটন এবং ব্যবসাকে বাড়িয়ে তুলেছে। সৌদি জোর দিয়ে বলছে, কেউ আইনের অপব্যবহার করলে, ধরা পড়লে তাকে দ্রুত পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।

দ্য সান বলছে, একটি সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিক্রয় কেবলমাত্র নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে হবে, লাইসেন্সপ্রাপ্ত পরিষেবাকর্মী এবং স্পষ্ট পরিচালনামূলক নিয়মাবলী নিশ্চিত করার জন্য, যাতে অ্যালকোহল দায়িত্বশীলতা এবং সম্মানের সাথে পরিচালনা করা হয়।’ আরও জানানো হয়, ২০% এর বেশি ‘ABV’ স্পিরিট এবং হার্ড লিকার নিষিদ্ধ থাকবে। দোকান, টেকওয়ে বা হোম ব্রুয়িং থাকবে না।


banner close