বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
জবাব দিলো ইসরায়েল

ইরানে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:১২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:১০

ইরানের একটি স্থানে ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে বৃহস্পতিবার রাতে জানিয়েছে এবিসি নিউজ।

যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি এ খবর জানায়।

এবিসির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স শুক্রবার জানায়, ইরানের কেন্দ্রস্থলে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।

সিরিয়ার দামেস্কে গত ১ এপ্রিল ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার জবাবে গত শনিবার রাতে ইসরায়েলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই ইরানে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেল।

এবিসির প্রতিবেদনের সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

ইরানের বার্তা সংস্থা ফার্স নিউজ জানায়, দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় শহর ইস্পাহানের একটি বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে, তবে কী কারণে এ বিস্ফোরণ হয়েছে তা জানা যায়নি।

ইসলামি প্রজাতন্ত্রটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ইস্পাহান, সিরাজ ও তেহরানে বিমান চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে।

ইরানের বেশ কয়েকটি পারমাণবিক ক্ষেত্র রয়েছে ইস্পাহান প্রদেশে। অঞ্চলটিতে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কেন্দ্রে থাকা নাতাঞ্জ পারমাণবিক কেন্দ্রও রয়েছে।

গত শনিবারের হামলার জবাব দেয়ার কথা জানিয়েছিল ইসরায়েল। দেশটি বড় পরিসরে কোনো হামলা চালালে এবং এর জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা করলে গাজা যুদ্ধ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

বিষয়:

গাজায় নতুন গণকবরের সন্ধান

হত্যার পর বুলডোজার দিয়ে বালি চাপা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের নতুন গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। যারা মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হন তাদের বুলডোজার দিয়ে বালি চাপা দিয়েছে দখলদার ইসরাইল বাহিনী। সম্প্রতি এক অনুসন্ধানে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন। এতে বলা হয়, উপত্যকার জিকিম ক্রসিংয়ের কাছে সহায়তা নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ এবং নিহতদের মৃতদেহ বুলডোজার দিয়ে বালিতে চাপা দেওয়ার প্রমাণ সামনে এসেছে।
জুনে পরিবারের জন্য আটা আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন গাজার বাসিন্দা আম্মার ওয়াদি। যাওয়ার আগেই ফোনের স্ক্রিনে লিখে রেখেছিলেন- আমার কিছু হলে আমায় ক্ষমা করে দিয়ো মা। আমার ফোন যিনি পাবেন, পরিবারকে জানাবেন আমি মাকে খুব ভালোবাসি। পরে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি সেই ফোনটি খুঁজে পেয়ে বার্তাটি তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন। যা ছিল তাদের শেষ খবর। সিএনএন জানিয়েছে, জিকিম সীমান্তের আশপাশে গুলিবর্ষণে নিহতদের দেহ অনেক ক্ষেত্রেই মিলিটারি জোনে ফেলে রাখা হয়। অনেক সময় বুলডোজার চালিয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়, আর অনেক দেহ উদ্ধার না হওয়ায় খোলা জায়গায় পচে-গলে পড়ে থাকে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃতদেহ এভাবে পরিচালনা করা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে- গ্রীষ্মজুড়ে জিকিম এলাকায় ব্যাপক বুলডোজার কার্যক্রম চালানো হয়েছে। জুনে ঘটে যাওয়া এক হামলার পরের ভিডিওতে দেখা যায় উল্টে যাওয়া একটি ত্রাণ ট্রাকের চারপাশে আংশিক মাটিচাপা পড়ে থাকা দেহ। সাবেক দুই আইডিএফ সদস্য সিএনএনকে জানিয়েছেন, গাজার অন্যান্য অঞ্চলেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তারা বর্ণনা করেছেন কিভাবে যুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনিদের মৃতদেহ অগভীর কবরস্থানে বুলডোজার দিয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আইডিএফ দাবি করেছে- তারা মৃতদেহ সরানোর জন্য বুলডোজার ব্যবহার করেনি। তবে তা দিয়ে কবর দেওয়া হয়েছিল কি না সে প্রশ্নের উত্তর তারা এড়িয়ে গেছে। আইডিএফ বলেছে, এলাকা সুরক্ষা, বিস্ফোরকের ঝুঁকি মোকাবিলা কিংবা রুটিন ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য বুলডোজার ব্যবহৃত হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের বিশেষজ্ঞ জানিনা ডিল বলেন, যুদ্ধরত পক্ষগুলোর দায়িত্ব নিহতদের এমনভাবে কবর দেওয়া যাতে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়। মৃতদেহ বিকৃত করা বা অসম্মানজনকভাবে কবরস্থ করা জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ। জিকিম এলাকায় গুলির মাঝে ত্রাণ বহনকারী ফিলিস্তিনিদের ছুটে আসার একাধিক ভিডিও সিএনএন যাচাই করেছে। এক ভিডিওতে দেখা যায়- একজন ত্রাণ বহনকারীকে পিছন থেকে গুলি করা হচ্ছে। আরেকটিতে আহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে আবার গুলি চলছে। এক ত্রাণ ট্রাক চালক বলেন, জিকিম দিয়ে গেলে প্রতিবারই লাশ দেখতে পাই। ইসরাইলি বুলডোজারগুলোকে মৃতদেহ মাটিচাপা দিতে দেখেছি। আরেকজন বলেন- এটা যেন বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল। সেখানে কী ঘটে কেউ জানে না।
জুনের মাঝামাঝি এক ঘটনায় একটি ত্রাণ ট্রাক ঘিরে ধরেন ক্ষুধার্ত মানুষজন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তখনই আইডিএফ গুলি চালায় এবং বহু মানুষ ট্রাকের নিচে পড়ে মারা যান। কয়েক দিন পর সিভিল ডিফেন্সের অ্যাম্বুলেন্স গিয়ে ১৫টি লাশ উদ্ধার করতে পারে, কিন্তু প্রায় ২০টি দেহ উদ্ধার না করেই ফিরে আসতে হয়। কারণ অ্যাম্বুলেন্স ভর্তি হয়ে গিয়েছিল।
এক আইডিএফ সদস্য জানান, ২০২৪ সালের শুরুতে তাদের ঘাঁটির পাশে দুদিন ধরে পড়ে থাকা নয়টি মৃতদেহ বুলডোজার দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়। তিনি বলেন, কুকুরগুলো লাশ টেনে খাচ্ছিল। যে দৃশ্য দেখা ছিল অসহনীয়। মৃতদেহের পরিচয় নথিভুক্ত করার মতো কোনো চেষ্টা হয়নি। ইসরায়েলি সৈন্যদের বয়ান সংগ্রহকারী সংগঠন ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’-ও জানিয়েছে- এ ধরনের আরও অনেক সাক্ষ্য তাদের কাছে এসেছে।
আম্মার ওয়াদির পরিবার এখনো তার খোঁজ পায়নি। তার মা নাওয়াল মুসলেহ বলেন, ছেলের কথা মনে পড়লেই চোখের পানি থামে না। আমরা যা-ই হোক মেনে নেব। শুধু জানতে চাই, তার কী হয়েছিল। গাজার সীমান্তবর্তী এই অঞ্চল এখন নিখোঁজদের কবরস্থান হয়ে উঠেছে। যেখানে বহু মানুষ যে পথ ধরে ত্রাণ নিতে গিয়েছিলেন, সেই পথই তাদের শেষ যাত্রাপথ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


দিল্লির দূষিত বায়ুতে তীব্র শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ২ লাখের বেশি মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দিল্লির বিষাক্ত বায়ু জনজীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে। ভারত সরকার জানিয়েছে, ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দিল্লির ছয়টি সরকারি হাসপাতালে তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হাজারের বেশি রোগীকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, শীত আসলেই দিল্লি ও তার উপশহরগুলোতে বায়ুদূষণের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নেয়। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দিল্লির বায়ুর মান ইনডেক্স (একিউআই) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্রহণযোগ্য সীমার চেয়ে ২০ গুণ বেশিতে অবস্থান করছে। বিশেষ করে পিএম ২.৫ কণার মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। যা সরাসরি শ্বাসতন্ত্রে প্রবেশ করে ফুসফুসে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

দূষণের পেছনে একক কোনো কারণ নেই। শিল্পকারখানার নির্গমন, যানবাহনের ধোঁয়া, তাপমাত্রা হ্রাস, বাতাসের গতি কমে যাওয়া এবং আশপাশের রাজ্যগুলোতে কৃষিজমির খড় পোড়ানোর মতো নানা কারণে পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে।

সরকারি তথ্যানুযায়ী, দিল্লির ছয়টি প্রধান হাসপাতালে ২০২২ সালে ৬৭ হাজার ৫৪টি, ২০২৩ সালে ৬৯ হাজার ২৯৩টি এবং ২০২৪ সালে ৬৮ হাজার ৪১১টি শ্বাসকষ্টের মামলা নথিভুক্ত হয়। সরকারের ভাষ্য, দূষণের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির একটি সম্পর্ক দেখা গেছে, তবে এটি সরাসরি প্রমাণ হিসেবে দেখানো সম্ভব নয়।

গত এক দশকে বেশ কয়েকবার দিল্লির গড় একিউআই ‘গুরুতর’ ৪০০-এর উপরে উঠেছে। যা সুস্থ মানুষদের জন্যও ক্ষতিকর এবং অসুস্থদের জন্য বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ। বুধবার সকালে সরকারি সমর্থিত ‘সফর’ অ্যাপ জানায়, দিল্লির গড় একিউআই ছিল প্রায় ৩৮০।

গত সপ্তাহে বিবিসি জানিয়েছে, দিল্লি ও আশপাশের হাসপাতালগুলোতে দূষিত বায়ুর কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া শিশুদের ভিড় বাড়ছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপের দাবিতে দায়ের করা এক পিটিশনের শুনানি বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। একই সঙ্গে দেশটির সুপ্রিম কোর্টও গত কয়েক বছর ধরে দিল্লির অবনতিশীল বায়ুমান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।


হিজবুল্লাহকে অস্ত্র ছেড়ে সংলাপের পরামর্শ পোপ লিওর

ক্যাথলিক খিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ লিও। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

লেবানন সফরের সময় হিজবুল্লাহকে অস্ত্র ত্যাগ করে জাতীয় সংলাপে বসা পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ক্যাথলিক খিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ লিও। তবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার নিন্দা জানানোর অনুরোধ করা হলেও সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

লেবাননের সফরের শেষ দিন গত মঙ্গলবার স্কাই নিউজ আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পোপ বলেন, ভ্যাটিকান ‘সব পক্ষকে সহিংসতা ত্যাগ করে সংলাপের টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। চার্চ ‘হিজবুল্লাহকে অস্ত্র রেখে সংলাপে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে।’

পোপ জানান, বৈরুতে তার রাজনৈতিক সভাগুলো মিডিয়া থেকে দূরে হয়েছিল এবং অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক বিরোধগুলো হ্রাস করার ওপর কেন্দ্রীভূত ছিল। তার লেবানন সফর শুরুর আগে হিজবুল্লাহর পাঠানো এক চিঠি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে পোপ জবাবে বলেন, ‘আমি হিজবুল্লাহর চিঠি পর্যালোচনা করেছি এবং এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাইছি না।’

গত শনিবার পোপ লিওকে একটি চিঠি পাঠায় হিজবুল্লাহ। তাতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননে অব্যাহত ইসরাইলি হামলার প্রকাশ্যে নিন্দার আহ্বান জানায় গোষ্ঠীটি। চিঠিতে তারা বলেন, ‘পোপের এ শুভ সফরকে সামনে রেখে আমরা আবারও আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করছি যে, লেবাননের বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান আমাদের মূলনীতি। দেশের সেনাবাহিনী ও জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে যেকোনো আগ্রাসন ও দখলদারির বিরুদ্ধে লড়াই আমাদের অঙ্গীকার।’

হিজবুল্লাহ বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ইসরাইল যে আচরণ করছে তা অগ্রহণযোগ্য। তারা আশা প্রকাশ করে যে, পোপ লিও লেবাননের জনগণের ওপর অবিচার ও হামলার বিরুদ্ধে ন্যায়সঙ্গত কথা বলবেন।

এর আগে এক বক্তব্যে হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাইম কাসেম পোপের সফরকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি চিঠি পোপের কাছে হস্তান্তরের জন্য সদস্যদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবং তা প্রকাশেও কোনো গোপনীয়তা থাকবে না।

তিনি আরও জানান, তাদের পক্ষ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুরোপুরি মেনে চলা হয়েছে, কিন্তু ইসরাইল ধারাবাহিকভাবে লেবাননের ভেতরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ কাসেম আশা প্রকাশ করেন, এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পোপের উপস্থিতি লেবাননে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, আমরা দৃঢ় আশা করি, তিনি লেবাননকে আগ্রাসন থেকে মুক্ত করতে এবং শান্তি স্থাপনে সহায়তা করবেন।

২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইসরায়েলকে লেবাননের সব এলাকা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করতে বলা হয়। কিন্তু এখনো পাঁচটি স্থানে তাদের সেনা অবস্থান করছে, যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন। এরপর থেকে ইসরায়েল বারবার লেবাননের ভেতরে হামলা চালাচ্ছে, যা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে সতর্ক করেছে লেবানন সরকার।


১১ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বিমানের খোঁজে ফের অভিযান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হারিয়ে যাওয়া এমএইচ ৩৭০ উড়োজাহাজের ছবি সংবলিত একটি বোর্ডে সই করছেন এক নারী। ফাইল ছবি: রয়টার্স

১১ বছরেরও বেশি সময় আগে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৭৭ ফ্লাইট ২৩৯ আরোহীসহ ‘উধাও’ হয়ে যায়। কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং অভিমুখে যাত্রা করা এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের অন্তর্ধানকে বৈশ্বিক উড্ডয়ন ইতিহাসের সবচেয়ে রহস্যময় ঘটনার অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১৪ সালের ৮ মার্চ রাডার থেকে অদৃশ্য হওয়ার পর ওই উড়োজাহাজটি খুঁজে পেতে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি ও উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বড় আকারে পরিচালিত ওই অভিযানে ফল মেলেনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও উড়োজাহাজটি খোঁজার অভিযান শুরু করেছে মালয়েশিয়া। বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ বিষয়টি জানা গেছে।

ওই উড়োজাহাজের যাত্রীদের দুই তৃতীয়াংশই ছিলেন চীনের নাগরিক। বাকিদের মধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের নাগরিকও ছিলেন।

নতুন করে উদ্ধারকাজ শুরু: এক বিবৃতিতে কুয়ালালামপুর জানায়, ২০২৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেতে গভীর সাগরে আবারও অভিযান চালানো হবে। এই উদ্ধার কাজের দায়িত্বে থাকবে ওশান ইনফিনিটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘সমুদ্রের যে অংশে উড়োজাহাজটি খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে উজ্জ্বল, সেখানে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে অভিযান চালানো হবে।’

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গত এপ্রিলে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেও তা শিগগির স্থগিত করা হয়। এখন আবারও একই প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে নতুন করে অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে।

‘(উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ) খুঁজে না পেলে কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হবে না', এই শর্তে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওশান ইনফিনিটির সঙ্গে মালয়েশিয়া সরকার চুক্তি করেছে।

২০১৮ সালেও একই কায়দায় অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয় ওশান ইনফিনিটি।

এর আগে, দুর্ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে ভারত মহাসাগরের এক লাখ ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে উদ্ধার ও খোঁজ অভিযান চালানো হয়। তিন বছরের ওই অভিযানে প্রত্যাশিত ফল মেলেনি।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই মর্মান্তিক ঘটনায় যেসব পরিবার প্রভাবিত হয়েছে, তাদের মনে কিছুটা হলেও শান্তি এনে দিতে হারিয়ে যাওয়া উড়োজাহাজের হদিস জানা প্রয়োজন এবং এ বিষয়টির প্রতি তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।

ফেব্রুয়ারিতে উড়োজাহাজের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা আশাবাদ প্রকাশ করেন, নতুন উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে।

উড্ডয়ন খাতের রহস্য: উড়োজাহাজটি হারিয়ে যাওয়া নিয়ে অনেক তত্ত্ব চালু আছে। তবে প্রকৃত সত্য এখনো উদ্ঘাটন হয়নি। কেউ কেউ বলেন, অভিজ্ঞ পাইলট জাহারি আহমাদ শাহ বিপথগামী হয়েছিলেন। তিনি অন্য কারো প্ররোচনায় এই কাজ করেছেন।

২০১৮ সালে প্রকাশিত চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনার জয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের ব্যর্থতা দায়ী এবং সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়, পাইলট নিজে উড়োজাহাজের কোর্স বদলেছিলেন।

৪৯৫ পাতার প্রতিবেদনে তদন্তকারীরা স্বীকার করেন, তারা এখনো জানেন না কীভাবে উড়োজাহাজটি উধাও হল। এই ঘটনায় পাইলট ছাড়া অন্য কারও দায় আছে কি না, সেটাও তারা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

ফ্লাইটটি হারিয়ে যাওয়ার ১১তম বার্ষিকীতে বেইজিংয়ের সরকারি কার্যালয় ও মালয়েশিয়ার দূতাবাসের বাইরে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করেন। তাদের হাতে ছিল, ‘আমাদের প্রিয়জনদের ফিরিয়ে দাও’ ও ‘১১ বছরের অপেক্ষার অবসান কবে হবে?’ লেখা ব্যানার।


সমুদ্রপথে শ্রীলঙ্কায় ত্রাণ পাঠালো পাকিস্তান

পাকিস্তান সমুদ্রপথে শ্রীলঙ্কার জন্য ২০০ টন মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে। ছবি: টাইমস অব ইসলামাবাদ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার পর শ্রীলঙ্কায় মানবিক সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তান শ্রীলঙ্কার জন্য ২০০ টন মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে সমুদ্রপথে। পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল আকাশপথে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানো, তবে ভারত আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়ায় দেশটিকে দীর্ঘ পথ ঘুরে সমুদ্রপথে ত্রাণ পাঠাতে হয়েছে।

গত সপ্তাহের ঘূর্ণিঝড়ে শ্রীলঙ্কায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৬৫ জন নিহত এবং ৩৬৬ জন নিখোঁজ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসলামাবাদে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ত্রাণবাহী সমুদ্রযানটিকে বিদায় জানানো হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের অর্থ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বিলাল আজহার কায়ানি এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার অ্যাডমিরাল রভীন্দ্র সি উইজেগুনারত্নে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ টেলিফোনে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, দুঃসময়ে প্রতিবেশী ও ভাইপ্রতিম দেশ হিসেবে পাকিস্তান শ্রীলঙ্কার পাশে রয়েছে।

শ্রীলঙ্কার উদ্ধারকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা এলাকাগুলোতে প্রবেশের পর মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, ১৫ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তৃত অঞ্চলে—ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা, থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল ও মালয়েশিয়ার উত্তর অংশসহ—একই সময়ে প্রবল মৌসুমি বৃষ্টি এবং দুইটি পৃথক উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ডেকে এনেছে। চার দেশে মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১,৩০০ ছাড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ ও সমুদ্রের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া বড় ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতকে আরও তীব্র করে তুলছে। খবর জিও নিউজের।


যুদ্ধের ক্ষত নিয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দীর্ঘ দুই বছরের সংঘাত ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও আশার আলো দেখিয়েছে গাজা উপত্যকা। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে একসঙ্গে ৫৪ দম্পতির গণবিয়ে হয়েছে। তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, আবুধাবির সহযোগিতায় আয়োজিত এই উৎসবটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৫৪তম ইউনিয়ন দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে পালিত হয়েছে।

খবরে আরও বলা হয়, হামাদ আবাসিক এলাকায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলোর মাঝে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘গ্যালান্ট নাইট ৩’ মানবিক অভিযানের অধীনে সংগঠিত হয়েছে। থাওব আল-ফারাহ’ (আনন্দের পোশাক) নামের বিয়ের মঞ্চটি ইসরাইলের গণহত্যা থেকে সৃষ্ট ধ্বংসের মধ্যেও জীবনের প্রতি অটলতা ও জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি পতাকা, ফুল এবং ঐতিহ্যবাহী গানে ভরে উঠেছিল অনুষ্ঠানস্থল; পরিবারের সদস্য ও সম্প্রদায়ের নেতারা জড়ো হয়ে নবদম্পতিদের শোভাযাত্রায় হেঁটে আসা দেখছিলেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, পুরো উপত্যকাজুড়ে প্রায় দুই হাজার ৬৫১ জন আবেদনকারীর মধ্যে লটারির মাধ্যমে এই দম্পতিদের নির্বাচন করা হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদের নির্দেশে ‘গ্যালান্ট নাইট ৩’ অভিযান ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর শুরু হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল, গাজার সবচেয়ে বিপর্যস্ত এলাকাগুলোতে খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।

আনাদোলুর খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরাইল চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে এবং নির্ধারিত প্রত্যাহার অঞ্চলের বাইরে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে, যার ফলে মৃত্যু ও আহতের ঘটনা ঘটছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজায় ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের অধিকাংশই মহিলা ও শিশু। আহত হয়েছেন এক লাখ ৭১ হাজারেরও বেশি মানুষ।


তুরস্কের ‘বায়রাক্টর কিজিলেলমা’ যুদ্ধবিমানের ইতিহাস রচনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বে মনুষ্যবিহীন প্রথম যুদ্ধবিমান ‘বায়রাক্টর কিজিলেলমা’ তৈরি করেছে তুরস্ক। এটি আকাশ থেকে আকাশে এবং আকাশ থেকে মাটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পারে। তুরস্কের প্রতিরক্ষা সংস্থা এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিমানের ইতিহাস রচনা করেছে তারা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি সাবাহ। এতে বলা হয়, তুরস্কের প্রথম মানববিহীন যুদ্ধবিমান বায়রাক্টর কিজিলেলমা নতুন এক মাইলফলক অর্জন করেছে। এটি দৃষ্টিসীমার বাইরে থেকে (বিভিআর) একটি জেটচালিত লক্ষ্যবিমানকে আকাশ থেকে আকাশে হামলার জন্য ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সফলভাবে আঘাত করেছে। এ ঘটনা বিশ্বের জন্য প্রথম বলে গত রোববার জানিয়েছে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বায়কার।

বায়কার তুরস্কের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এনসোশ্যালে জানিয়েছে, বিশ্বে প্রথমবারের মতো একটি মানববিহীন যুদ্ধবিমান দৃষ্টিসীমার বাইরে থেকে আকাশে একটি লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করেছে। বায়কারের বিবৃতি অনুযায়ী, কিজিলেলমা দেশীয়ভাবে তৈরি গোকদোয়ান আকাশ থেকে আকাশে হামলার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উচ্চগতির লক্ষ্যবস্তু জেটকে নিখুঁতভাবে আঘাত করেছে। এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ডানার নিচে বহন করা অবস্থায় নিক্ষেপ করা হয়, যখন লক্ষ্যবস্তুকে শনাক্ত ও অনুসরণ করে আসেলসানের দেশীয়ভাবে তৈরি মুরাদ এইএসএ রাডার। এটি ছিল তুর্কি বিমান চলাচলের ইতিহাসে প্রথমবার যখন একটি জাতীয় বিমান, দেশীয় রাডারের নির্দেশনায় দেশীয়ভাবে তৈরি আকাশ থেকে আকাশে হামলার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আকাশের লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করল। এই সফল হামলা কিজিলেলমাকে বিশ্বের প্রথম ও একমাত্র প্রমাণিত আকাশ থেকে আকাশ যুদ্ধক্ষমতাসম্পন্ন মানববিহীন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। এটি ছিল কিজিলেলমার এই মাসে করা বহু পরীক্ষার আরেকটি ধাপ। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে একটি এফ-১৬-কে লক্ষ্যবস্তু হিসেবে লক করার ঘটনাও ছিল।

একটি বায়রাক্টর আকিঞ্জি মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি) আকাশ থেকে পুরো ঘটনাটি ধারণ করে বলে জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি। তুরস্কের বিখ্যাত প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান বায়কারের প্রধান ফ্ল্যাগশিপ বিমান হলো বায়রাক্টর কিজিলেলমা ড্রোনের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। কিজিলেলমার নিজে রাডারে ধরা না পড়ে কম রাডার দৃশ্যমানতা এবং উন্নত সেন্সর প্রযুক্তি শত্রু বিমানকে অনেক দূর থেকে শনাক্ত করতে পারে। এটি মুরাত এইএসএ রাডার, টয়গুন টার্গেটিং সিস্টেমসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং দেশীয়ভাবে তৈরি বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ বহন করতে পারে। পূর্বের পরীক্ষায় এটি টোলুন এবং টেবার-৮২ বোমায় সরাসরি আঘাত করেছে। সর্বশেষ আকাশ থেকে আকাশে হামলা কিজিলেলমার আকাশ থেকে মাটি ও আকাশ থেকে আকাশ দুই ধরনের মিশনে পূর্ণ সক্ষমতাকে প্রমাণ করে এবং তুরস্কের প্রতিরক্ষা কৌশলে এর ভূমিকাকে আরও বিস্তৃত করে।

বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধু প্রযুক্তিগত সাফল্য নয়; বরং তুরস্কের স্বয়ংক্রিয় আকাশযুদ্ধ ক্ষমতার দিকে বড় পদক্ষেপ।

বায়কারের চেয়ারম্যান ও সিটিও সেলচুক বায়রাক্টর এক ভিডিওতে বলেন, ‘আমরা বিমান চলাচলের ইতিহাসে নতুন এক যুগের দরজা খুলেছি। বিশ্বে প্রথম মানববিহীন যুদ্ধবিমান রাডার নির্দেশনায় আকাশ থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হেনেছে।’


ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার পথ খোলা রাখলো রাশিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেন যুদ্ধ অবসানে আলোচনার পথ খোলা রাখলো রাশিয়া। ক্রেমলিন বুধবার জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ শেষ করতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া কিছু প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন এবং অন্য কিছু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই সঙ্গে রাশিয়া এই বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে মার্কিন আলোচকদের সঙ্গে যতবার প্রয়োজন ততবার বৈঠকে বসতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে ক্রেমলিন।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং জামাতা জ্যারেড কুশনারের বৈঠকের পর এমন ঘোষণা হলো। গত মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত চলে এই আলোচনা।

বৈঠকের পর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, পুতিন মার্কিন প্রস্তাবগুলো পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছেন, এমনটা বলা সঠিক হবে না। তিনি উল্লেখ করেন, প্রস্তাবগুলো নিয়ে এটি ছিল প্রথম মুখোমুখি মতবিনিময়। পেসকভ বলেন, এটি একটি স্বাভাবিক আলোচনা প্রক্রিয়া, যেখানে পুতিন কিছু প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন এবং কিছু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।

ক্রেমলিনে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী আলোচনার বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেন পেসকভ। তিনি বলেন, এই আলোচনার পরিবেশ যত শান্ত থাকবে, তত বেশি ফলপ্রসূ হবে- এই বিষয়ে একটি বোঝাপড়া রয়েছে। আমরা এই নীতিতে অটল থাকব এবং আশা করছি আমাদের আমেরিকান সহকর্মীরাও তাই করবেন।

আলোচনার পর ক্রেমলিনের এক সহযোগী বলেন, এখনো পর্যন্ত কোনো আপোস খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে, রাশিয়া আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রস্তুত বলে ক্রেমলিন থেকে বার্তা দেয়ায় দুদেশের মধ্যে ইউক্রেন ইস্যুতে কূটনৈতিক তৎপরতা বজায় থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে একাধিক গণমাধ্যম সূত্রে খবর এসেছে যে, আমেরিকানরা নাকি রাশিয়ার পক্ষ থেকে তৈরি করা একটি চাহিদাপত্রকে নিজেদের ‘শান্তি পরিকল্পনা’ হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্র যে রাশিয়ার সঙ্গে গোপন ব্যবসায়িক আলোচনায় জড়িত এবং উইটকফ রুশদের ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে কীভাবে পৌঁছাতে হবে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন, এমন খবরও ফাঁস হয়েছিল।


ইসরায়েলি হামলায় ৫০ দিনে নিহত ৩৫৭ ফিলিস্তিনি

৫০ দিনে ৫৯১ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন
রাতভর হামলার পর নিজের তাঁবুতে, জায়নামাজ হাতে এক ফিলিস্তিনি নারী । ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সই দেয় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এখনো যুদ্ধবিরতি চালু আছে এবং উভয় পক্ষ তা মেনেও নিচ্ছে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ৫০ দিনের পুরোটা সময়জুড়ে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত ছিল। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন ৩৫৭ জন ফিলিস্তিনি। যার ফলে, এই সংঘাতে মোট নিহতের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে হয়েছে। বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা।

৫০ দিনে অন্তত ৫৯১ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। এসবের মধ্যে বিমান হামলা, কামানের গোলাবর্ষণ ও সরাসরি গুলি চালানোর মতো ঘটনা অন্তর্ভুক্ত।

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বিস্তারিত তথ্য জানিয়েছে গাজার সরকারি গণমাধ্যম কার্যালয়। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১০ অক্টোবর থেকে শুরু করে যুদ্ধবিরতির প্রথম ৫০ দিনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বেসামরিক মানুষের দিকে ১৬৪ বার গুলি চালিয়েছে। গাজা থেকে ৩৫ জন ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে। ‘হলুদ লাইনের’ বাইরে থাকা আবাসিক এলাকায় ২৫ বার অভিযান চালিয়েছে। ১১৮ বার এক বা একাধিক অবকাঠামোগত সম্পদ ধ্বংস করেছে। পাশাপাশি, ইসরায়েল মানবিক ত্রাণের প্রবাহ রোধ করেছে এবং গাজা উপত্যকাজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও বাড়িঘর ধ্বংস অব্যাহত রেখেছে।

১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি চালুর পরদিন থেকেই লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতে থাকে। অক্টোবরে ১৬ দিন, নভেম্বরে ২৫ দিন ও ডিসেম্বরে ২ দিন এক বা একাধিকবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে তেল আবিব। তা সত্ত্বেও ওয়াশিংটনের দাবি, যুদ্ধবিরতি এখনো বহাল তবিয়তে কার্যকর আছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাস হামলা চালালে এক হাজার ২০০ মানুষ নিহত ও ২৫০ জন জিম্মি হন। সেদিনই প্রতিশোধমূলক গণহত্যা শুরু করে ইসরায়েল।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, গাজায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৭০ হাজার ১১২। পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৭০ হাজার ৯৬৮ জন ফিলিস্তিনি।


নতুন স্বর্ণভাণ্ডার আবিষ্কারের ঘোষণা ইরানের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরান তাদের অন্যতম বৃহৎ স্বর্ণখনিতে বিশাল নতুন স্বর্ণভাণ্ডার আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে। গত সোমবার স্থানীয় গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশ হয়েছে।

পূর্বাঞ্চলীয় দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশে অবস্থিত বেসরকারি মালিকানাধীন শাদান স্বর্ণখনিতে নতুন এই শিরা কাঠামো পাওয়া গেছে। ফার্স নিউজ এজেন্সি একে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খনিগুলোর একটি হিসেবে বর্ণনা করেছে। এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন মজুদগুলো শিল্প, খনি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে যাচাই করেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত শাদান স্বর্ণখনির প্রমাণিত মজুত বিশাল স্বর্ণশিরা আবিষ্কারের পর উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সেখানে রয়েছে ৭.৯৫ মিলিয়ন টন অক্সাইড স্বর্ণ আকরিক এবং ৫৩.১ মিলিয়ন টন সালফাইড স্বর্ণ আকরিক। অক্সাইড আকরিক সাধারণত উত্তোলন করা তুলনামূলকভাবে সহজ ও কম ব্যয়বহুল।

ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে তার জাতীয় স্বর্ণের মজুতের পরিমাণ প্রকাশ করেনি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বর্ণ কেনায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে বলে দাবি করে তারা। গত সেপ্টেম্বর ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর মোহাম্মদর রেজা ফারজিন বলেন, ২০২৩-২০২৪ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশ্বে সর্বাধিক স্বর্ণক্রয়কারী পাঁচ ব্যাংকের একটি ছিল।

স্থানীয় গণমাধ্যম কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা ইয়েকতা আশরাফির উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার চাপের মধ্যে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী করতে স্বর্ণের মজুত বাড়ানো সহায়ক হবে।

ইরানে মোট ১৫টি স্বর্ণখনি রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বড়টি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জারশোরান খনি। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো তেহরানের বিরুদ্ধে পরমাণু কর্মসূচির সামরিকীকরণের অভিযোগ আনার পর আরোপিত নিষেধাজ্ঞায় ইরানের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এছাড়াও, ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলার পর শুরু হওয়া ১২ দিনের যুদ্ধে, যুক্তরাষ্ট্র সাময়িকভাবে ইসরায়েলের সাথে ইরানের পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্য করায় দেশের অর্থনৈতিক সংকট আরও গভীর হয়েছে। অত্যধিক মুদ্রাস্ফীতি এবং রিয়ালের অবমূল্যায়নের কারণে ক্রমাগত ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় অনেক ইরানির কাছে স্বর্ণ একটি নিরাপদ সম্পদ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ডলার অনানুষ্ঠানিক বাজারে প্রায় ১১.৭ লাখ রিয়াল এবং ইউরো প্রায় ১৩.৬ লাখ রিয়ালে লেনদেন হয়েছে বলে বিনিময় হার পর্যবেক্ষণকারী ওয়েবসাইট বোনবাস্ট ও আলানচান্ড তথ্য দিয়েছে।


বাজেট কমানো ও ব্যাপক কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা জাতিসংঘের

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২০২৬ সালে বার্ষিক বাজেট ১৫ দশমিক ১ শতাংশ কমানো এবং ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। দাতা দেশগুলোর কাছ থেকে বকেয়া পাওনার পরিমাণ ১ দশমিক ৫৯ ট্রিলিয়ন ডলার পৌঁছানোর পর এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হচ্ছে বৈশ্বিক সংস্থাটি।

গত সোমবার ২০২৬ সালের ৩ দশমিক ২৪ বিলিয়ন ডলারের বাজেট ঘোষণা করেন গুতেরেস, যা ২০২৫ সাল থেকে ৫৭৭ মিলিয়ন ডলার কম।

জাতিসংঘের একটি পৃথক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রধান দাতা দেশগুলো— যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া এবং মেক্সিকোর বকেয়া পাওনা পরিশোধ না করায় এই সংকট দেখা দিয়েছে।

গুতেরেস বলেন, মোট বাজেট কমানোর হলেও ব্যাপক চাহিদার কারণে ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা— ইউএনআরডব্লিউএ-এর বাজেট আগের মতোই থাকবে।

তিনি বলেন, গাজায় মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে ইউএনআরডব্লিউএ-কে বাজেট হ্রাস থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আফ্রিকার উন্নয়নবিষয়ক সংস্থার বাজেটও ২০২৫ সালের সমান থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।

জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা থেকে ২ হাজার ৬৮১টি পদ বাদ দিয়ে নতুন বাজেট সমন্বয় করা হবে জানিয়ে গুতেরেস বলেন, এসব পদ এমন কার্যাবলি সম্পর্কিত, যা তাদের মতে, অন্যরা আরও ভালোভাবে করতে পারবে অথবা দক্ষতার মাধ্যমে কমানো যেতে পারে।

মহাসচিব বলেন, জাতিসংঘের ১৮ শতাংশ পদ ইতোমধ্যে শূন্য রয়েছে, যা সদস্য রাষ্ট্রদের অর্থ বকেয়ার কারণে সৃষ্ট সংকটের জন্য ঘটেছে। তবে তিনি ব্যাখ্যা করেন, এই শূন্য পদগুলো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ফলস্বরূপ নয়, বরং শুধু এই কারণে যে মানুষ চলে গেছেন এবং তাদের পরিবর্তে নতুন কর্মী নিয়োগের জন্য অর্থ নেই বলেও জানিয়েছেন গুতেরেস।

অপরদিকে বিশেষ রাজনৈতিক মিশনের বাজেট ২০২৫ সাল থেকে ২০২৬ সালে ১৪৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন কমিয়ে ৫৪৩ দশমিক ৬ ডলারে নিয়ে আসা হবে। যা গত বছরের তুলনায় ২১ দশমিক ৬ শতাংশ কম। এ খাতে বাজেট কমায় কয়েকটি মিশন এবং কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই নিউইয়র্ক থেকে তাদের উপস্থিতি কমাচ্ছে সংস্থাটি।

গুতেরেস জানিয়েছেন, ২০২৭ সালের শেষ দিক থেকে তারা দুটি অফিস ভবনের লিজ বাতিল করবেন। এতে করে ২০২৯ সাল থেকে তাদের বছরে ২৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। নিউইয়র্কে বিভিন্ন অফিস বন্ধ করে ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১২৬ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হয়েছে।


ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘বড় কিছু’ লুকানো হচ্ছে

ইমরান খান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইমরান খানের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘বড় কিছু’ লুকানো হচ্ছে বলে আশঙ্কা করছে তার পরিবার। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ও দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি। তবে কয়েক সপ্তাহ ধরে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না পরিবার বা দলের কেউ, সরকারও যেন মুখে কুলুপ এটেছে। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইমরান খানের ছেলে কাসিম খান।

তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে ইমরানের বোনেরা, পিটিআই নেতারা ও সমর্থকরা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। আদালতের নির্দেশে সাপ্তাহিক সাক্ষাতের অনুমতি থাকলেও এতদিন ইমরান খানের সঙ্গে পরিবারের কোনো সরাসরি দেখা কিংবা যাচাইযোগ্য যোগাযোগ হয়নি বলে জানিয়েছেন কাসিম। তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, এ পরিস্থিতি পরিবারকে আরও আতঙ্কিত করে তুলেছে।

কাসিম বলেন, ‘আপনার বাবা নিরাপদ কি না, আহত কি না, এমনকি তিনি জীবিত কি না- এটা না জানা মানসিক নির্যাতনের মতো।’ গত কয়েক মাস ধরেই কোনো স্বাধীনভাবে নিশ্চিত যোগাযোগ না থাকায় পরিবারের শঙ্কা বাড়ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ‘আজ আমরা তার অবস্থা সম্পর্কে কোনো যাচাইযোগ্য তথ্যই পাচ্ছি না। আমাদের সবচেয়ে বড় ভয়- তার সম্পর্কে অপ্রত্যাবর্তনীয় কিছু লুকানো হচ্ছে।’

ইমরানের ব্যক্তিগত চিকিৎসককে দীর্ঘদিন ধরে তার শারীরিক পরীক্ষা করার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ পরিবারের। এক বছর ধরে চিকিৎসক প্রবেশাধিকার পাচ্ছেন না।

পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে কোনো সাড়া দেয়নি। তবে এক কারা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ইমরান খান সুস্থ আছেন এবং তাকে আরও উচ্চ নিরাপত্তার স্থানে স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনার কথা তিনি জানেন না।

৭২ বছর বয়সি ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাগারে রয়েছেন। রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রির অভিযোগে তোষাখানা মামলায় তার প্রথম দণ্ড হয়। এরপর সাইফার মামলা এবং আল কাদির ট্রাস্ট মামলায়ও দীর্ঘমেয়াদি সাজা হয়। এগুলোকে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। পিটিআইয়ের অভিযোগ, এই মামলাগুলো ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে ইমরানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্যই সাজানো হয়েছিল।

বিচ্ছিন্নতায় বাড়ছে উদ্বেগ

কাসিম বলেন, দীর্ঘদিনের অপ্রকাশ্যতা ও যোগাযোগহীনতা পরিবারকে আরও উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। ‘এই বিচ্ছিন্নতা ইচ্ছাকৃত। তারা তাকে আড়ালে রাখতে চায়,’ দাবি করেন ইমরান খানের পুত্র। ‘তিনি পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। গণতান্ত্রিকভাবে তাকে পরাজিত করা সম্ভব নয় বলেই তাকে আলাদা করে রাখা হচ্ছে।’

কাসিম জানান, তিনি ও তার বড় ভাই সুলাইমান ইসা খান রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও বাবার কারাবন্দি অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেষ্টা করছেন।

তিনি জানান, তারা সর্বশেষ বাবার সঙ্গে দেখা করেছিলেন ২০২২ সালের নভেম্বরে, যখন তিনি হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন। ‘তার সেই অবস্থার ছবি আজও স্মৃতিতে ভাসে। এখন কয়েক সপ্তাহ ধরে কোনো যোগাযোগ নেই, কোনো প্রমাণ নেই তিনি ঠিক আছেন কি না- সেই স্মৃতি আজ আলাদা ভার তৈরি করছে।’

এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন, ইমরানের ছেলেরা চাইলে বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারে। এর জবাবে ইমরানের সাবেক স্ত্রী জেমাইমা গোল্ডসমিথ বলেন, ‘তারা তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতেও পারছে না। কেউই পারছে না।’

মানবাধিকার কমিশনের উদ্বেগ

পাকিস্তান মানবাধিকার কমিশন (এইচআরসিপি) ইমরান খানের বন্দিত্বের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, পরিবার, ঘনিষ্ঠজন ও আইনজীবীদের সাক্ষাতের সুযোগ না দেওয়া গুরুতর অভিযোগ এবং আটক ব্যক্তির মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন।

সংস্থাটি লিখেছে, বন্দির সঙ্গে নিয়মিত ও নির্বিঘ্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করা এক ধরনের সুরক্ষা, যা বিচ্ছিন্ন করে রাখার অপব্যবহার রোধ করে। তারা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার এবং পাঞ্জাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সাংবিধানিক অধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী আচরণের আহ্বান জানিয়েছে।


সিরিয়ায় হস্তক্ষেপ না করতে ইসরায়েলকে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সিরিয়ায় হস্তক্ষেপ না করতে ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বের অধীনে চলমান পরিবর্তনে তিনি খুবই সন্তুষ্ট।

গত বছরের ডিসেম্বরে বাশার আল আসাদের পতনের পর থেকে সিরিয়ায় শত শত হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, আর তাই ট্রাম্পের এমন মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ সিরিয়ার রাজনৈতিক রূপান্তরে এখন নিজেই সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড বলছে, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলার কয়েক দিনের মাথায় দেশটির নতুন নেতৃত্বকে অস্থিতিশীল না করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়েছেন।

গত সোমবার নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘সিরিয়ার সঙ্গে দৃঢ় ও আন্তরিক যোগাযোগ বজায় রাখা ইসরায়েলের জন্য জরুরি। এবং সিরিয়ার অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে— এমন কোনো কর্মকাণ্ড যেন না ঘটে। আমরা চাই সিরিয়া একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হোক।’

ট্রাম্প সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারার প্রশংসা করে বলেন, তিনি দুই দেশের জন্যই ‘ভালো কিছু ঘটানোর’ জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির জন্য এটি এক ঐতিহাসিক সুযোগ।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্য এমন সময় এলো, যখন সিরিয়ার ভেতরে ইসরায়েলের বিমান ও স্থল অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সিরিয়া বলছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে দেশজুড়ে ইসরায়েল অন্তত এক হাজার বিমান হামলা, সীমান্ত অতিক্রম করে চার শতাধিক অভিযান চালিয়েছে এবং গোলান মালভূমির নিরস্ত্রীকৃত বাফার জোনও দখল করে নিয়েছে, যা ১৯৭৪ সালের সমঝোতার লঙ্ঘন। প্রেসিডেন্ট আল-শারা স্থায়ী শান্তির জন্য ৮ ডিসেম্বরের আগের সীমান্তে ফিরে যাওয়ার দাবিও জানিয়ে আসছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, ‘অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম ও সংকল্পের মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় যে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র তাতে সন্তুষ্ট।’ তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র একটি বাস্তব ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়ে তুলতে সিরিয়ার সরকারকে সহায়তার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, সিরিয়ার ওপর থেকে ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী তালিকা থেকেও একাধিক জ্যেষ্ঠ সিরীয় কর্মকর্তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে সিজার সিরিয়া সিভিলিয়ান প্রোটেকশন অ্যাক্টসহ অবশিষ্ট নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন, যদিও প্রশাসন চাইলে ১৮০ দিনের জন্য সেগুলো স্থগিত রাখতে পারে।


banner close