তাইওয়ানে গতকাল সোমবার রাত থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি তীব্রতর ভূমিকম্পের উৎপত্তি পূর্বাঞ্চলীয় শহর হুয়ালিয়েনে। রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ছিল ৬.৩।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া প্রশাসন জানিয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে প্রথম যে ভূমিকম্প আঘাত হানে রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৫। রাজধানী তাইপেতেও এ কম্পন অনুভূত হয়। এরপর দফায় দফায় কম্পন অনুভূত হতে থাকে। বিশেষ করে মঙ্গলবার আঘাত হানা দুটি ভূমিকম্প ছিল তীব্র। রিখটার স্কেলে প্রথমটির তীব্রতা ছিল ৬.০ এবং দ্বিতীয়টির ৬.৩।
এর আগে গত ৩ এপ্রিল শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে তাইওয়ানের পূর্ব উপকূল। এতে অন্তত ১৭ জন মারা যান। এতে অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়ে ছিল। তীব্র সে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৪। ভূমিকম্পটির কেন্দ্রস্থল ছিল হুয়ালিয়েন শহরের ১৮ কিলোমিটার দক্ষিণে।
তাইওয়ানে গত ২৫ বছরের মধ্যে ওটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। এর আগে ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প তাইওয়ানে আঘাত আনে। তাতে প্রায় ২ হাজার ৪০০ মানুষ মারা যান।
মার্কিন ফেডারেল কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে নর্থ ক্যারোলাইনার সবচেয়ে বড় শহর শার্লটে অভিবাসন দমন অভিযান চলছে। শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেককেই গ্রেপ্তার করতে দেখা গেছে। গত শনিবার এক বিবৃতিতে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সহকারী সচিব ট্রিশিয়া ম্যাকলাফলিন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন নথিহীন অভিবাসীদের দ্বারা সংঘটিত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করতে শার্লটে কর্মকর্তাদের মোতায়েন করছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমেরিকানরা যেন সহিংস অপরাধী, অবৈধ বিদেশিদের কারণে নিজেদের, তাদের পরিবার বা তাদের প্রতিবেশীদের ক্ষতির ভয়ে না থাকে।’
‘আমরা শার্লটে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাঠাচ্ছি, যাতে আমেরিকানরা নিরাপদ থাকে এবং জননিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন ব্যক্তিদের অপসারণ করা যায়।’
শার্লটে এই অভিযানটি ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন শহরগুলোতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সর্বশেষ অভিবাসন দমন কার্যক্রম।
শার্লটের মেয়র ভি লাইয়েলস ও অন্যান্য কর্মকর্তারা এই অভিযানের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এই পদক্ষেপগুলো অপ্রয়োজনীয় ভয় ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে।
কাউন্টি কমিশনার মার্ক জেরেল এবং শার্লট-মেকলেনবুর্গ শিক্ষা বোর্ডের সদস্য স্টেফানি স্নিডসহ সই করা ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা চাই শার্লট ও মেকলেনবুর্গ কাউন্টির মানুষ জানুক—আমরা সব বাসিন্দার পাশে আছি, যারা শুধু তাদের দৈনন্দিন জীবন চালিয়ে যেতে চায়।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেস এবং ওয়াশিংটন ডিসি-র মতো শহরগুলোতে বড় অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় কর্মকর্তাদের মতে, শার্লট একটি বর্ণগতভাবে বৈচিত্র্যময় শহর, যেখানে ৯ লাখের বেশি মানুষ বাস করে—এদের মধ্যে ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি বিদেশে জন্মগ্রহণকারী।
২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় এ বছর আগস্ট পর্যন্ত শহরে অপরাধের হার কমেছে। কিন্তু আগস্টে শার্লটের লাইট-রেল ট্রেনে ইউক্রেনীয় শরণার্থী ইরিনা জারুত্সকার হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে যে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত শহরগুলো বাসিন্দাদের সুরক্ষায় ব্যর্থ।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশন এবং ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) কর্মকর্তাদের টহল ও গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, লস অ্যাঞ্জেলেস ও শিকাগোর মতো শহরে ফেডারেল অভিযান অপরাধ মোকাবিলা ও অভিবাসন আইন প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয়। তবে লাখো অভিবাসীকে বহিষ্কারের এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে ও একাধিক মামলা হয়েছে।
নর্থ ক্যারোলাইনার গভর্নর জশ স্টাইন—একজন ডেমোক্র্যাট। তবে তার রাজ্য আইনসভায় রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠতা। শুক্রবার তিনি বলেন, এই অভিযানে আটক অধিকাংশ ব্যক্তির কখনো কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই, এমনকি কেউ কেউ মার্কিন নাগরিকও।
শার্লটের কর্মকর্তারা জানান, অভিযানের ভয়ে কিছু ব্যবসা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ শার্লটইস্ট-এর নির্বাহী পরিচালক গ্রেগ আসিয়ুট্টো এপিকে ইমেইলে জানান যে, তাদের এলাকার অনেক ব্যবসা বন্ধ ছিল এবং আমরা ভাবছি কীভাবে তাদের টিকিয়ে রাখা যায়, কারণ কতদিন এই পরিস্থিতি চলবে আমরা জানি না।
শার্লটের পূর্বাংশে সিটি কাউন্সিল সদস্য জেডি মাজুয়েরা আরিয়াস বলেন, এটি শুধু অভিবাসীদেরই নয়, মার্কিন নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকারের বড় ধরনের লঙ্ঘন।
আশ্রয়প্রার্থী নীতিতে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য। দেশটি বলছে, এ সংস্কারে তারা অনুপ্রেরণা নিচ্ছে ডেনমার্কের মডেল থেকে—যা ইউরোপের অন্যতম কঠোর আশ্রয়নীতি এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দ্বারা ব্যাপক সমালোচিত।
ব্রিটেনের লেবার সরকার সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করছে, বিশেষ করে ফ্রান্স থেকে ছোট নৌকায় অবৈধভাবে পারাপার ঠেকাতে। কারণ এ ইস্যুতে জনসমর্থন বাড়ছে পপুলিস্ট রিফর্ম ইউকে দলের, যা লেবারকে আরও কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য করছে।
হোম অফিসের (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নীতির পরিবর্তনের অংশ হিসেবে কিছু নির্দিষ্ট আশ্রয়প্রার্থীকে দেওয়া আইনগত সহায়তার বাধ্যবাধকতা—যেমন বাসস্থান ও সাপ্তাহিক ভাতা—বাতিল করা হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শাবানা মাহমুদ এর নেতৃত্বাধীন দপ্তর জানায়, এই নতুন নিয়ম প্রযোজ্য হবে—যারা কাজ করতে সক্ষম হলেও কাজ করেন না এবং যারা আইন ভঙ্গ করেন তাদের ক্ষেত্রে।
সরকার বলছে করদাতাদের অর্থ বরাদ্দ করা হবে যারা অর্থনীতি ও স্থানীয় সমাজে অবদান রাখেন, তাদের অগ্রাধিকার দিয়ে।
মাহমুদ আগামী সোমবার এই নীতির বিস্তারিত প্রকাশ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হোম অফিস বলছে, এসব পরিবর্তনের লক্ষ্য হলো ব্রিটেনকে অবৈধ অভিবাসীদের কাছে কম আকর্ষণীয় করে তোলা এবং তাদের দ্রুত ফেরত পাঠানো সহজ করা।
মাহমুদ বলেন, এই দেশ বিপদগ্রস্ত মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার গর্বিত ঐতিহ্য বহন করে। কিন্তু আমাদের উদারতা এখন অবৈধ অভিবাসীদের চ্যানেল পাড়ি দিতে উৎসাহিত করছে। বিপুল সংখ্যায় আসা অভিবাসীরা আমাদের সমাজে বড় ধরনের চাপ ফেলছে।
এদিকে ১০০টিরও বেশি ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা মাহমুদের কাছে চিঠি লিখে অভিবাসীদের ‘বলির পাঁঠা’ বানানো বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, এমন কঠোর নীতিগুলো বর্ণবাদ ও সহিংসতা উসকে দিচ্ছে।
সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ভোটারদের কাছে এখন অভিবাসন—অর্থনীতির চেয়েও বড় উদ্বেগের বিষয়।
নতুন নীতির সমালোচনা করেছে শরণার্থী কাউন্সিল। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী এনভার সোলোমন বলেছেন, ‘অভিবাসীদের বাধা না দিয়ে বরং তাদের ২০ বছরের অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। এটি যেকোনো মানুষের জন্যই বিশাল মানসিক চাপ তৈরি করবে।’
যুক্তরাজ্য সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী— গত মার্চ পর্যন্ত ১২ মাসে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৩৪৩ জন, যা আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। সর্বশেষ সাত দিনে দেশটিতে পৌঁছেছেন ১ হাজার ৬৯ শরণার্থী। চলতি বছর এখন পর্যন্ত সাগরপথে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন ৩৯ হাজারেরও বেশি মানুষ।
সরকারের নতুন পরিকল্পনা আগামী সপ্তাহেই ঘোষণা হওয়ার কথা। বিশ্লেষকদের মতে, কঠোর এ নীতি ভবিষ্যতেও যুক্তরাজ্যের অভিবাসন ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে।
ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) নিশ্চিত করেছে যে তারা শুক্রবার সকালে হরমুজ প্রণালীতে একটি তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করেছে।
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী ট্যাংকার তালারা সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে সিঙ্গাপুরের পথে ছিল। আইআরজিসি জানিয়েছে, জাহাজটি অননুমোদিত কার্গো বহনসহ আইন লঙ্ঘন করেছে। তবে তারা এই আইন লঙ্ঘনের বিস্তারিত জানায়নি। বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্যাংকারটিতে উচ্চ সালফারযুক্ত গ্যাসওয়েল বহন করা হচ্ছিল।
পারস্য উপসাগর—যা বৈশ্বিক তেল ও তরল প্রাকৃতিক গ্যাস পরিবহনের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট—সেখানে ইরান মাঝে মধ্যে ট্যাংকার ও পণ্যবাহী জাহাজ জব্দ করে থাকে। সাধারণত তারা চোরাচালান, সামুদ্রিক আইনভঙ্গ বা অন্যান্য আইনি কারণ দেখিয়ে এসব জব্দের ব্যাখ্যা দেয়।
সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংস্থা অ্যামব্রে জানিয়েছে, তালারা জাহাজটি ইউএই’র আজমান বন্দর থেকে ছাড়ার পর হরমুজ প্রণালী দিয়ে দক্ষিণ দিকে যাচ্ছিল। তিনটি ছোট নৌকা জাহাজটির কাছে আসার পর হঠাৎ এটি দিক পরিবর্তন করে।
এ অঞ্চলে টহলরত যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ৫ম নৌবহর বলেছে, তারা ঘটনাটি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তারা আরও জানায়, বাণিজ্যিক জাহাজগুলো আন্তর্জাতিক জলসীমায় সাধারণত বাধাহীন চলাচলের অধিকার রাখে।
জাহাজ পরিচালনাকারী কোম্পানি জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে তারা ক্রুর সঙ্গে যোগাযোগ হারায়, যখন জাহাজটি শারজাহর খোরফাক্কান উপকূল থেকে প্রায় ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল।
যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশনস সেন্টার জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি সম্পর্কে রিপোর্ট পেয়েছে এবং জাহাজগুলোকে সতর্কভাবে চলাচল ও সন্দেহজনক কোনো কর্মকাণ্ড দেখলে জানাতে পরামর্শ দিয়েছে।
হরমুজ প্রণালী দিয়ে বিশ্বের মোট বাণিজ্যিক তেলের প্রায় ২০ শতাংশ পরিবাহিত হয়। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য পদক্ষেপের প্রতিশোধ হিসেবে ইরান বহু বছর ধরে এই প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে।
গত জুনে ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের সংঘাত চলাকালে এই হুমকি আরও বেড়েছিল। সে সময় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় এবং ইরান পাল্টা হামলা করে।
এর আগে ২০২৪ সালের এপ্রিলে সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটের ওপর প্রাণঘাতী হামলার ঘটনার পর আইআরজিসি ইসরায়েল-সম্পৃক্ত একটি বাণিজ্যিক জাহাজ জব্দ করেছিল।
রাশিয়ার বিমান ও ড্রোন হামলায় ইউক্রেনে গত ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন। এর আগে গত শনিবার ইউক্রেনীয় বাহিনীর হামলায় রাশিয়ার রিয়াজানের তেল শোধনাগারে বিস্ফোরণ ও বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
রোববার রাশিয়ার রিয়াজান অঞ্চলের গভর্নর পাভেল মালকভ এবং ইউক্রেনের আঞ্চলিক প্রশাসন ও জেনারেল স্টাফ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া একটি ইস্কান্দার– এম ক্ষেপণাস্ত্র এবং মোট ১৭৬টি ড্রোন নিক্ষেপ করে। এর মধ্যে ১৩৯টি ড্রোন ভূপাতিত করা গেলেও বাকি ড্রোনগুলো কয়েকটি এলাকায় আঘাত হেনেছে।
ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলে ড্রোন হামলায় হওয়া অগ্নিকাণ্ডে এক নারী আহত, দক্ষিণের খেরসনে রুশ গোলাবর্ষণে দুজন নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন। এছাড়া পূর্বের দোনেৎস্কে এক ব্যক্তি নিহত ও পাঁচজন আহত এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের জাপোরিঝিয়ায় নদীর তীরে জেলেদের ওপর হামলায় একজন নিহত হয়েছে। এর পাশাপাশি হামলা হয়েছে, ওডেসায় জ্বালানি স্থাপনায়, মধ্যাঞ্চলীয় দনিপ্রোপেত্রোভস্ক এবং উত্তর-পূর্বের খারকিভে। এসব হামলায় দুজন আহত ও ঘরবাড়ি, বিদ্যুৎ নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ওই রাতেই রুশ বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ৬৪টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে যার মধ্যে ২৫টি রিয়াজান ওবলাস্টের আকাশে ভূপাতিত করা হয়।
রিয়াজান তেল শোধনাগার রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি উৎপাদন কেন্দ্র যা গ্যাসোলিন, ডিজেল, জেট ফুয়েল, তরল গ্যাসসহ নানা ধরনের পেট্রোলিয়াম পণ্য উৎপাদন করে। শোধনাগারটি প্রতি বছর প্রায় ৮ দশমিক ৪ লাখ টন টিএস-ওয়ান এভিয়েশন ফুয়েল তৈরি করে যা রাশিয়ার বিমান বাহিনীতে ব্যবহৃত হয়।
জেলেনস্কির বিকল্প খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বিকল্প খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১০-২০১৪ সাল পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা নিকোলাই আযারভ এমন দাবি করেছেন। রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গত ছয় মাস ধরে ওয়াশিংটন ইউক্রেনের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে এ বিষয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
আযারভের মতে, জেলেনস্কির জায়গায় বসানো যেতে পারে এমন কিয়েভ সরকারের কয়েকজন রাজনীতিককে নিয়ে মতামত গঠন করছে আমেরিকানরা।
তিনি আরও দাবি করেন, সাম্প্রতিক দুর্নীতির ঘটনাগুলোর সঙ্গে জেলেনস্কির ঘনিষ্ঠদের জড়িত থাকায় এমন উদ্যোগ নেওয়ার ইঙ্গিতকে আরও স্পষ্ট করেছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র না চাইত তবে ইউক্রেনের ন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন ব্যুরোর এমনভাবে অভিযান পরিচালনা করার সুযোগ থাকত না।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, জেলেনস্কি সরে গেলে ইউক্রেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন কোনো শক্তি নেই যে দেশকে স্বাভাবিক পথে এগিয়ে নিতে পারবে। যারা ইতিবাচক নীতি নিতে পারত- তাদের কেউ জেলে, কেউ হত্যা হয়েছে, কেউ দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি কয়েকদিন আগে তার ট্রানজিশন টিমের সহ-সভাপতি হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের (এফটিসি) সাবেক চেয়ারম্যান লিনা খানকে মনোনীত করেছেন। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যে জন্ম নেওয়া এই ডেমোক্র্যাট পারদর্শিতা ও কঠোর অ্যান্টিট্রাস্ট অবস্থানের কারণে বহু কোম্পানি ও করপোরেট মহলের সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। জানা যায়, তিনি যুক্তরাজ্যে জন্ম নিলেও ১১ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন।
লিনা খান কে?
লিনা খান ২০২১ সালের ১৫ জুন থেকে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত এফটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মাত্র ৩২ বছর বয়সে তিনি মার্কিন অ্যান্টিট্রাস্ট ও ভোক্তা সুরক্ষা সংস্থাটির ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান হয়ে দায়িত্ব নেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে।
এফটিসির তথ্য অনুযায়ী, ক্যারিয়ারের শুরুতেই তিনি বাজারে করপোরেট একীভবন ও আধিপত্য নিয়ে বিশেষ গবেষণা ও রিপোর্টিং করেন। চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তার নীতিগত লক্ষ্য ছিল অ্যান্টিট্রাস্ট আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ, নন-কমপিট চুক্তি সীমিতকরণ, সংবেদনশীল ডেটা সুরক্ষা এবং সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবাকে প্রভাবিত করে এমন অবৈধ কার্যচর্চা মোকাবিলা করা।
এফটিসিতে যোগদানের আগে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির অ্যান্টিট্রাস্ট সাবকমিটির কাউন্সেল এবং কলম্বিয়া ল’স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন। তার উচ্চশিক্ষা উইলিয়ামস কলেজ এবং ইয়েল ল’ স্কুল থেকে সম্পন্ন।
মামদানির টিমে লিনা খানের ভূমিকা
‘পড সেভ আমেরিকা’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিনা খান জানান, ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি মামদানি দায়িত্ব গ্রহণের আগে তিনি মেয়রের ক্ষমতার বিস্তৃতি ও প্রয়োগ নিয়ে পর্যালোচনা করছেন। পাশাপাশি তিনি অর্থনৈতিক নীতি, জনবল নিয়োগ এবং শহরকে আরও সাশ্রয়ী করতে নতুন প্রশাসনের উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সক্ষমতা নিশ্চিত করার কাজ করছেন।
কেন লিনা খান ছিলেন প্রযুক্তি জায়ান্টদের বিরোধিতার মুখে?
বাইডেন আমলে এফটিসির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি অ্যামাজন, মেটা, মাইক্রোসফটসহ বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য মামলা করেছিলেন—যার কিছু সফল হলেও কিছু ব্যর্থ হয়েছে। মাইক্রোসফটের অ্যাকটিভিশন-ব্লিজার্ড অধিগ্রহণ ঠেকাতে তিনি ব্যর্থ হন।
তিনি ক্রোগার-অ্যালবার্টসন্সের মধ্যে প্রস্তাবিত একীভবন বাতিল করেন এবং শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তনে বাধা দেওয়া নন-কমপিট চুক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন—যা পরে আদালতে স্থগিত হয়।
ব্লুমবার্গ জানায়, তার কড়া অবস্থান ও কার্যক্রম ওয়াল স্ট্রিট, প্রভাবশালী ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের ক্ষুব্ধ করে। লিঙ্কডইন সহ-প্রতিষ্ঠাতা রিড হফম্যান, আইএসি চেয়ারম্যান ব্যারি ডিলার, ভিনোদ খোসলা, পিটার থিয়েলসহ অনেকে অভিযোগ তোলেন—তিনি ‘ব্যবসার বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ ঘোষণা করেছেন।
ইয়েল ল’ স্কুলে অধ্যয়নকালে তার লেখা বিখ্যাত প্রবন্ধ Amazon’s Antitrust Paradox—এ তিনি দাবি করেন, অ্যামাজন শিকারমূলক মূল্যনীতির মাধ্যমে প্রতিযোগিতা ব্যাহত করছে এবং ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় তারা সরকারের নজরদারি এড়িয়ে যাচ্ছে।
নিউইয়র্কের বড় কোম্পানিগুলোর জন্য বার্তা কী?
যদিও সিটি পর্যায়ে লিনা খানের সরাসরি নিয়ন্ত্রণ নেই, তবে গুগল, মেটা, অ্যামাজনসহ প্রযুক্তি জায়ান্টদের নিউইয়র্কে বড় কার্যক্রম রয়েছে।
টাস্ক স্ট্র্যাটেজিজের উন্নত প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান এরিক সুফার নিউইয়র্ক পোস্ট–কে বলেন, মামদানি লিনা খানকে দলে নেওয়ায় এই প্রতিষ্ঠানগুলো এটিকে সতর্কবার্তা হিসাবে দেখতে পারে। তার মতে, অনেকেই প্রথম দিকে অস্থিরতায় ভুগতে পারেন, যতক্ষণ না লিনা খান ও ট্রানজিশন টিম তাদের পরিকল্পনা পরিষ্কার করেন।
মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে ফোনালাপ করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গত শনিবার দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে এ ফোনালাপ হয়। খবর সামাটিভির।
রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন জানিয়েছে, এই আলাপচারিতায় মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের পরিস্থিতি, বিশেষ করে গাজা উপত্যকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। হামাসের সঙ্গে নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি বাস্তবায়ন ও বন্দি বিনিময় সম্পর্কে দুই নেতা কথা বলেছেন। এছাড়া ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়ে মতবিনিময় হয়।
অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় দুই নেতার মধ্যে ফোনালাপটি অনুষ্ঠিত হয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্যোগে। আলাপচারিতায় আগের কয়েকটি আলোচনার ধারাবাহিকতায় মধ্যপ্রাচ্য ও গাজার পরিস্থিতি নিয়ে মতবিনিময় হয়।
পুতিন ও নেতানিয়াহুর মধ্যে এর আগে সর্বশেষ ফোনালাপ হয়েছিল গত ৬ অক্টোবর। সে সময় তারা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। পুতিন আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে ফিলিস্তিনি সমস্যা সমাধানের সমর্থনে রাশিয়ার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় ৬৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
পরে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর করে। চুক্তির প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী গাজার পুনর্গঠন ও হামাসবিহীন নতুন শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজায় নতুন বাহিনী মোতায়েন করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রাথমিকভাবে বাহিনীতে ইসরায়েল ও বিভিন্ন দেশের সেনারা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই বাহিনী গাজায় একটি ‘সবুজ অঞ্চল’ গড়ে তুলবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট এই সবুজ অঞ্চলেই প্রথমে পুনর্গঠন কাজ শুরু হবে। এতে গাজা দুই ভাগ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। গাজার জন্য তৈরি করা মার্কিন সামরিক পরিকল্পনার নথি থেকে এসব তথ্য জানতে পেরেছে গার্ডিয়ান।
জানা যায়, প্রাথমিকভাবে সবুজ অঞ্চলে আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন করা হবে। অঞ্চলটি আস্তে আস্তে প্রসারিত করার কথাও বলা হচ্ছে। অন্যদিকে বর্তমানে ইসরায়েলি সেনাদের তৈরি তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ বরাবর অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে রাখবে ইসরায়েল। তবে কাজটি যে সহজ হবে না, তা একজন মার্কিন কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন। তিনি গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘এটি আপাতদৃষ্টিতে ভালো পরিকল্পনা হলেও তা উচ্চাকাঙ্ক্ষী। এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন।’
গত মাসে ট্রাম্পের গাজা পরিকল্পনা ঘোষিত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েন নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল। তবে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিষয়টি বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে না। এখন দেখা যাচ্ছে, গাজার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলো বারবার পরিবর্তন হচ্ছে। ফলে উপত্যকার ২০ লাখ জনঅধ্যুষিত ‘রেড জোন’ এখন বিশ্বের সবচেয়ে জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
এদিকে মধ্যস্থতাকারীরা সতর্ক করে দিয়েছেন, ‘যুদ্ধও নয়, শান্তিও নয়’ এমন একটি পরিস্থিতি গাজায় তৈরি হতে পারে। ফলে নিয়মিত ইসরায়েলি হামলা স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে কোনো শাসন কর্তৃপক্ষ না থাকায় ফিলিস্তিনি নাগরিকরা অসহায় দিনতিপাত করবেন। বাড়িঘর কিংবা ভবনের সংস্কারও থেমে থাকতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজায় মানবিক সহায়তার জন্য নেওয়া পরিকল্পনা মানুষ হত্যার ট্র্যাপে পরিণত হয়েছিল। নতুন এই সবুজ অঞ্চলের পরিকল্পনাও একই রকম ভয়াবহ হতে পারে।
ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী বা আইএসএফ গঠনের কথা শুরু থেকেই বলা হয়েছিল। ওই মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রস্তাবটি সব পক্ষের অনুমোদন পেতে হবে। তবে বাহিনীতে মার্কিন সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য থাকবে না বলে নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্প। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গাজার শাসন কাঠামো গঠনে দৃষ্টিভঙ্গি নির্ধারণ করতে চায় ওয়াশিংটন; কোনো খরচ তারা দিতে রাজি না।
গার্ডিয়ানের দেখা নথিতে দেখা গেছে, চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন সামরিক আঞ্চলিক সেন্টকম কমান্ড ইউরোপীয় বাহিনীকে আইএসএফের মূলে রাখার পরিকল্পনা তৈরি করেছে। এই বাহিনীতে থাকবে শত শত ব্রিটিশ, ফরাসি ও জার্মান সৈন্য। থাকবে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ও সামরিক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা। জর্ডানও কয়েক হাজার সেনা দিতে চেয়েছিল। তবে এখন তারা পিছিয়ে গেছে। এমনকি খুব কম ইউরোপীয় নেতাই গাজায় তাদের সেনাদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলার পক্ষে।
পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার পরের পর্যায়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের শর্তাবলি বিবেচনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো সময়সীমা নির্ধারণ হয়নি। মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, এ পরিকল্পনা গাজায় স্থিতিশীলতা আনার জন্য করা হয়েছে। পরে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি এবং বেসামরিক শাসন ব্যবস্থায় রূপান্তরের দিকে এগিয়ে নেওয়া হবে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, গাজার ৮০ শতাংশ অবকাঠামো যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এগুলোর মধ্যে প্রায় সব স্কুল ও হাসপাতাল অন্তর্ভুক্ত। যুদ্ধবিরতির এক মাসের বেশি সময় পার হলেও ইসরায়েল এখনো ত্রাণ সরবরাহ আটকে দিচ্ছে। প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি জরুরি আশ্রয়ের জন্য অপেক্ষা করছে।
দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান চায় রাশিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি পরিকল্পনাকে সমর্থন করার খসড়া প্রস্তাবের ওপর আজ সোমবার ভোট দেবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ।
ফরাসি সংবাদসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, খসড়া প্রস্তাবে গাজায় ‘বোর্ড অব পিস’ নামে একটি অন্তর্বর্তী শাসন কাঠামো গঠনের কথা বলা হয়েছে যার তত্ত্বাবধায়ক থাকবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ কাঠামোর মেয়াদ থাকবে ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত। প্রস্তাবে ভবিষ্যতে একটি সম্ভাব্য ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের বিষয়টিও উল্লেখ রয়েছে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, একটি ‘ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স (আইএসএফ)’ গঠনের অনুমোদন চাইবে জাতিসংঘ। মিসরের নেতৃত্বে গঠিত এ নিরাপত্তা বাহিনীতে সৈন্য পাঠাবে তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, আজারবাইজান ও সৌদি আরব। বাহিনীটি ইসরায়েল ও নবগঠিত ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে গাজার সীমান্ত নিরাপত্তা ও নিরস্ত্রীকরণে ভূমিকা রাখবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিশর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পাকিস্তান, জর্দান ও তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম-প্রধান দেশ দ্রুত এ প্রস্তাব গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের কাছে একটি পাল্টা খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছে। রাশিয়ার প্রস্তাবে ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন ‘বোর্ড অব পিস’ গঠন বা আন্তর্জাতিক বাহিনী তাৎক্ষণিক মোতায়েনের অনুমোদন নেই। তবে যুদ্ধবিরতি সমর্থনের পাশাপাশি সেখানে দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানকে স্পষ্টভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের প্রস্তাব পাশ না হলে হামাসের পুনরুত্থানের ঝুঁকি রয়েছে এবং ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে পুনরায় যুদ্ধ শুরু হতে পারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর এখন পর্যন্ত গাজায় ৬৯ হাজার ১৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৯৮ জন আহত হয়েছে।
পুরো দুবছর ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের সঙ্গে গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে এ অঞ্চলের পুনর্নির্মাণের কাজ শুরুর পরিকল্পনা চলছে। এ লক্ষ্যে আমেরিকা গাজাকে দুটি অঞ্চলে বিভক্ত করার পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে ইসরায়েলি ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনীর অধীনে থাকবে ‘সবুজ অঞ্চল’ (গ্রিন জোন), যেখানে শিগগিরই পুনর্নির্মাণকাজ শুরু হবে। অপরদিকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলকে ‘লাল অঞ্চল’ (রেড জোন) হিসেবে চিহ্নিত হবে।
সৌদি আরবে বাসস্থান, কর্মক্ষেত্র ও সীমান্ত নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের জন্য এক সপ্তাহে ২২ হাজার ১৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সৌদি প্রেস এজেন্সি এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, আবাসিক আইন লঙ্ঘনের জন্য মোট ১৪ হাজার ২৭ জনকে, অবৈধ সীমান্ত অতিক্রমের প্রচেষ্টার জন্য ৪৭৮১ জনকে এবং শ্রম-সম্পর্কিত সমস্যার জন্য আরও ৩৩৪৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অবৈধভাবে দেশটিতে প্রবেশের চেষ্টা করার জন্য গ্রেপ্তার হওয়া ১৯২৪ জনের মধ্যে ৬২ শতাংশ ইথিওপিয়ান, ৩৭ শতাংশ ইয়েমেনি এবং ১ শতাংশ অন্যান্য দেশের নাগরিক।
এছাড়া সৌদি থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোতে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় আরও ৩২ জনকে এবং আইন লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন ও আশ্রয় দেওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সৌদির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিবহন এবং আশ্রয় প্রদানসহ কেউ অবৈধ প্রবেশে সহায়তা করলে তাকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড, ১ মিলিয়ন রিয়াল পর্যন্ত জরিমানার পাশাপাশি যানবাহন ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
২০২৬ সালে ঈদুল ফিতর শুক্রবার, ২০ মার্চ হতে পারে বলে জানিয়েছে এমিরেটস অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি। সংস্থার চেয়ারম্যান ইব্রাহিম আল জারওয়ান জানান, আরব আমিরাতে ১৪৪৭ হিজরির রমজানের চাঁদ ১৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় দেখা যেতে পারে। তবে সেদিন খালি চোখে চাঁদ দেখা কঠিন হতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জ্যোতির্বিদদের হিসাব অনুযায়ী, রমজান শুরু হতে পারে বৃহস্পতিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি। এই বছর রমজান ৩০ দিন পূর্ণ হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ফলে সরকারি ছুটির তালিকায় আরও এক দিনের বেশি ছুটি যুক্ত হতে পারে।
পূর্বাভাস অনুযায়ী, আরব আমিরাতে ১৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) থেকে ২২ মার্চ (রোববার) পর্যন্ত চার দিনের সম্ভাব্য ঈদ ছুটি থাকতে পারে। ছুটির পর ২৩ মার্চ সোমবার থেকে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হবে।
চূড়ান্তভাবে রমজান ও ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষণা করবে ইউএই মুন-সাইটিং কমিটি। তবে জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, ২০ মার্চই সবচেয়ে সম্ভাব্য ঈদের দিন।
গালফ নিউজ শনিবার (১৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানায়, ঈদুল ফিতর মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র উৎসব হওয়ায় চাঁদ দেখার আগে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো তারিখ ঘোষণা করবে না আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষ। ধর্মীয় অনুভূতি ও শারঈ বিধান মেনে চাঁদ দেখা নিশ্চিত হওয়ার পরেই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।
উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার উপকূলে ২৬ বাংলাদেশিকে নিয়ে একটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে চার বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া একই উপকূলে অর্ধশতাধিক সুদানিসহ পৃথক আরেকটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে।
দ্বিতীয় ঘটনায় অবশ্য হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। উত্তর-পশ্চিম লিবিয়ার আল-খোমস উপকূলে এই ঘটনা ঘটে। রোববার (১৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উত্তর-পশ্চিম লিবিয়ার আল-খোমস উপকূলে প্রায় ১০০ জনকে বহনকারী দুটি অভিবাসী নৌকাডুবির ঘটনায় কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট।
সংস্থাটি জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে আল-খোমসের তীরের কাছে উল্টে যাওয়া দুটি নৌকার খবর তারা পায়। প্রথম নৌকাটিতে ছিলেন বাংলাদেশের ২৬ নাগরিক। তাদের মধ্যে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আর দ্বিতীয় নৌকাটিতে ছিলেন মোট ৬৯ জন। এর মধ্যে দুজন মিসরীয় এবং বাকি ৬৭ জন সুদানি নাগরিক। তাদের মধ্যে আটজন শিশু।
রেড ক্রিসেন্ট জানায়, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে জীবিতদের উদ্ধার। এছাড়া মৃতদের মরদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি সবাইকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার কাজও তারা করে।
মূলত অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার জন্য বেশ পরিচিত এবং জনপ্রিয় রুট হচ্ছে লিবিয়া। ২০১১ সালে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশটি ইউরোপগামী অভিবাসীদের ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়। বর্তমানে সাড়ে ৮ লাখেরও বেশি অভিবাসী লিবিয়ায় অবস্থান করছে। গাদ্দাফির শাসনামলে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা তেলসমৃদ্ধ লিবিয়ায় কাজ পেত, কিন্তু তার পতনের পর থেকে দেশটি প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়াদের সংঘাতে জর্জরিত হয়ে পড়েছে।
অধিকার সংগঠন ও জাতিসংঘ সংস্থাগুলো বলছে, লিবিয়ায় শরণার্থী ও অভিবাসীরা নিয়মিতভাবে নির্যাতন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির শিকার হয়ে থাকে।
অবশ্য অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে বিভিন্ন সরঞ্জাম ও অর্থসহায়তা দিয়েছে। কিন্তু ওই কোস্টগার্ডের সঙ্গেই নির্যাতন ও অপরাধে জড়িত মিলিশিয়ার সম্পর্ক থাকার অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ইউরোপের দেশগুলো রাষ্ট্রীয় উদ্ধার অভিযান ধাপে ধাপে বন্ধ করায় সমুদ্রযাত্রা আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। একইসঙ্গে ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার কাজে নিয়োজিত দাতব্য সংস্থাগুলোও বিভিন্ন রাষ্ট্রের কাছ থেকে দমনমূলক পদক্ষেপের সম্মুখীন হয়েছে।
এক ডকুমেন্টারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণকে বিকৃতভাবে সম্পাদনা করার ঘটনায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম ক্ষমা চাইলেও ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি সংবাদ সংস্থাটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সম্ভবত আগামী সপ্তাহের কোনো এক সময় তাদের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি থেকে ৫০০ কোটি ডলারের মামলা করব।’
বিবিসি জানিয়েছে, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ট্রাম্পের ভাষণের ওই সম্পাদনার ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন ভুল ধারণা তৈরি হয়েছিল যে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি সহিংস কর্মকাণ্ডের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সংস্থাটি ক্ষমা চাইলেও জানিয়েছে, তারা কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবে না। এই ঘটনার পর বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং বার্তাপ্রধান ডেবোরা টার্নেস পদত্যাগ করেছেন।
আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা সম্পর্কে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মনে হয় কাজটা আমাকে করতে হবে। তারা প্রতারণা করেছে। তারা আমার মুখের কথা বদলে দিয়েছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, তিনি বিষয়টি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে উত্থাপন করেননি। তবে স্টারমার তার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন এবং ট্রাম্প সপ্তাহান্তে তাকে ফোন করবেন।
এই সপ্তাহের শুরুতে ট্রাম্পের আইনজীবীরা বিবিসিকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তারা জানিয়েছিলেন, সংস্থাটি যদি বক্তব্য প্রত্যাহার, ক্ষমা প্রার্থনা ও ক্ষতিপূরণ না দেয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি ডলারের মামলা করা হবে।
তবে আদালতের পাবলিক রেকর্ড অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, এখনো কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি।
ট্রাম্পের একটি রেকর্ড করা সাক্ষাৎকার শনিবার জিবি নিউজে প্রচারিত হয়। এতে তিনি বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করছি, কিন্তু এমন কিছু কখনও দেখিনি। এটা সবচেয়ে জঘন্য। আমার মনে হয় এটা সিবিএস ও সিক্সটি মিনিটস-এর কমালা-কাণ্ডের চেয়েও খারাপ ছিল।’
চলতি বছরের জুলাইয়ে মার্কিন মিডিয়া কোম্পানি প্যারামাউন্ট গ্লোবাল সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসের একটি সাক্ষাৎকার সংক্রান্ত আইনি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ট্রাম্পকে ১ কোটি ৬০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়েছিল।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি এটা করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। আপনি যদি এটি না করেন, তবে অন্য মানুষের সাথে এটি পুনরায় ঘটা বন্ধ করতে পারবেন না।’
ডেইলি টেলিগ্রাফ ২০২২ সালে নিউজ নাইট অনুষ্ঠানে প্রচারিত একইভাবে সম্পাদিত দ্বিতীয় একটি ক্লিপ প্রকাশ করার কয়েক ঘণ্টা পর বিবিসি ক্ষমা চায়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিবিসি এক বিবৃতিতে জানায়, ট্রাম্পের ভাষণের সম্পাদনা নিয়ে সমালোচনার পর ‘প্যানোরামা’ অনুষ্ঠানটি পর্যালোচনা করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা স্বীকার করছি, আমাদের সম্পাদনার ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন ধারণা তৈরি হয়েছিল যে আমরা ভাষণের বিভিন্ন অংশ থেকে খণ্ডচিত্র না দেখিয়ে একটি একক, নিরবচ্ছিন্ন অংশ দেখাচ্ছিলাম। এর ফলে এই ভুল ধারণা তৈরি হয়েছিল যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সরাসরি সহিংসতার আহ্বান জানিয়েছিলেন।’
বিবিসির একজন মুখপাত্র এই সপ্তাহে বলেন, ‘ভিডিও ক্লিপটি যেভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে, তার জন্য বিবিসি আন্তরিকভাবে দুঃখিত হলেও আমরা দৃঢ়ভাবে মনে করি যে এটি মানহানির মামলার কোনো ভিত্তি হতে পারে না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশে চলমান গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সংগঠনটি দেশের নেতৃত্বের প্রতি তাদের আস্থা পুনর্ব্যক্ত করার পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে গঠনমূলকভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এক ফেসবুক পোস্টে ইইউ জানায়, “অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে আমরা সমর্থন করি।”
পোস্টে আরও বলা হয়, “আগামী ফেব্রুয়ারিতে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের প্রেক্ষিতে আমরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বকে স্বাগত জানাই।”
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানিয়ে ইইউ আরও উল্লেখ করে, “আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে পরবর্তী ধাপে গঠনমূলকভাবে অংশ নিতে উৎসাহিত করছি।”
চীন তার নাগরিকদের জাপান ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে। তাইওয়ান নিয়ে জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রীর এক মন্তব্যের জেরে এ পরামর্শ দিলো বেইজিং। গত ৭ নভেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি পার্লামেন্টে বলেন, তাইওয়ানে যদি শক্তি প্রয়োগ বা সশস্ত্র হামলা হয় তাহলে জাপান সামরিক হস্তক্ষেপ করতে পারে। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের।
জাপানি প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পর বিতর্ক শুরু হয়। শুক্রবার জাপানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বেইজিং। পরে টোকিওও চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে।
শুক্রবার রাতে জাপানে অবস্থিত চীনা দূতাবাস তাদের উইচ্যাট পোস্টে চীনা নাগরিকদের সতর্ক করে বলে, তাইওয়ান বিষয়ে জাপানি নেতাদের প্রকাশ্য উসকানিমূলক মন্তব্য দুই দেশের জনগণের পারস্পরিক সম্পর্কের পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
পোস্টটিতে সতর্ক করে বলা হয়, বর্তমান পরিস্থিতি জাপানে চীনা নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এবং জীবনের জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করেছে।
গত ৭ নভেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি সানায়ে বলেন, তাইওয়ানে জরুরি অবস্থা তৈরি হলে, বিশেষ করে যদি সেখানে বলপ্রয়োগ হয় এবং তা জাপানের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়, তাহলে জাপান আত্মরক্ষার জন্য তার বাহিনী মোতায়েন করতে পারে।
বেইজিং জোর দিয়ে বলেছে, তাইওয়ান তাদের ভূখণ্ডের অংশ এবং প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে এই স্ব-শাসিত দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ দখলে নিতে হতে পারে। তাইওয়ান ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাপানের দখলে ছিল।