পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে পার্বত্য এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে অন্তত ২০ জন নিহত ও ২১ জন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার ভোরে গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলের চিলাস শহরের কাছে একটি বাঁকে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটি গভীর পাথুরে খাদে পড়ে যায়।
আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।
শহরের একজন পুলিশ কর্মকর্তা আজমত শাহ এএফপিকে বলেন, ‘স্থানীয় উলামা (মুসলিম নেতা) মসজিদের লাউড স্পিকার থেকে দুর্ঘটনার খবর ঘোষণা করেন এবং আহতদের জন্য রক্ত দিতে জনগণকে আহ্বান জানান।’
তিনি আরও জানান, উদ্ধার তৎপরতা সম্পন্ন হয়েছে। ২১ জন আহতের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক। বাসটি রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে গিলগিট যাচ্ছিল।
ভারী মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে, যার ফলে কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু আরও অনেকে আটকা পড়েছেন।
দেশটির দুর্যোগ কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে শুক্রবার পেশোয়ার থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
আঞ্চলিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগটিতে পাহাড়ি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে কমপক্ষে ১৬ জন এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে সাত জন প্রাণ হারিয়েছেন।
ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদেরকে বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বৈঠকের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার লন্ডনে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
লন্ডন থেকে এএফপি জানিয়েছে, স্টারমার ইউক্রেনের নেতা জেলেনস্কিকে তার ডাউনিং স্ট্রিট বাসভবনে উষ্ণ আলিঙ্গন ও হাত মেলানোর মাধ্যমে স্বাগত জানান।
এর কয়েক ঘণ্টা পরেই জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল ফোনালাপে অংশ নেন।
শুক্রবার আলাস্কার একটি বিমান ঘাঁটিতে ট্রাম্প ও ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে প্রথমবারের মতো সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে। এতে করে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর পুতিন পশ্চিমা মাটিতে প্রবেশ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
তবে ইউক্রেনে অব্যাহত রুশ হামলা ও জেলেনস্কিকে এই বৈঠকে আমন্ত্রণ না করায় উদ্বেগ বেড়েছে। কারণ ট্রাম্প ও পুতিন এমন একটি চুক্তি করতে পারেন, যার ফলে ইউক্রেনকে বড় কিছু ছাড় দেওয়া লাগতে পারে।
তবে স্টারমার বুধবার বলেন, ইউক্রেনে তিন বছরের বেশি যুদ্ধের পর এখন ‘একটি সম্ভাব্য’ যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে।
এদিকে শুক্রবার ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হলেও এরই মধ্যে ইউক্রেন রাশিয়ায় ডজনখানেক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এতে তিন জন আহত হয় এবং ভোলগোগ্রাদ শহরের একটি তেল শোধনাগারে আগুন লেগে যায়।
কিয়েভ দাবি করেছে, এই হামলাগুলো মস্কোর নিত্যদিনের মিসাইল ও ড্রোন হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ন্যায্য।
জেলেনস্কি জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়াকে কোনো ভূখণ্ড ছেড়ে দেবেন না। ইউরোপীয় নেতারা আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন, ইউক্রেনের জন্য কোনো ছাড় দেওয়া ছাড়াই মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুদ্ধবিরতির দিকে নজর দেবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করার হুমকি দেওয়ার পর বিপাকে পড়েছেন ভারতীয় রপ্তানিকারকরা। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ না করলে ভারতীয় পণ্যের ওপর শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। ফলে ব্যাপক কর্মসংস্থান হ্রাস এবং রপ্তানি শিল্পে বিশাল ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এলারা সিকিউরিটিজের অর্থনীতিবিদ গরিমা কাপুর বলেন, ‘৫০ শতাংশ শুল্কে ভারতের কোনো পণ্যই প্রতিযোগিতামূলক থাকতে পারবে না।’
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ জ্বালানি আমদানিকারক ভারতকে আগামী ২৭ আগস্টের মধ্যে তেল আমদানির এক-তৃতীয়াংশ রাশিয়া বাদ দিয়ে অন্য উৎস থেকে জোগাড় করতে হবে। ২০২৪ সালে ভারত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল। নতুন এই শুল্কের ফলে রত্ন ও গহনা, বস্ত্রশিল্প ও সামুদ্রিক খাদ্যসহ কম মুনাফার ও শ্রমনির্ভর খাতগুলো বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ জানিয়েছে, ২০২৫ সালে পোশাক খাতসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
মুম্বাইয়ের ‘ক্রিয়েটিভ গ্রুপয়ের’ চেয়ারম্যান বিজয় কুমার আগরওয়াল বলেন, ‘আমরা যতটা পারি, ২৭ আগস্টের আগেই পণ্য পাঠিয়ে দিচ্ছি।’ তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘এটা সমস্যার সাময়িক সমাধান মাত্র, আসল সমস্যার সমাধান নয়।’
আগরওয়াল বলেন, ‘যদি দ্রুত এই বিষয়টির সমাধান না হয়, তাহলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। আমার প্রতিষ্ঠানে কাজ করা ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার কর্মীর ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।’
এই সমস্যা ব্যবসার আওতার বাইরে, কারণ এটি নির্ভর করছে ভূরাজনীতির ওপর। ট্রাম্প গত শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন, যা ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ।
মস্কোর সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক থাকায় দিল্লি এখন এক জটিল অবস্থানে রয়েছে। ট্রাম্পের হুমকির পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বলেছেন, এবং ‘শান্তিপূর্ণ সমাধানের’ আহ্বান জানিয়েছেন।
ইতোমধ্যেই কিছু মার্কিন ক্রেতা ভারত থেকে নতুন অর্ডার বন্ধ করে দিয়েছেন, যা কয়েক মিলিয়ন ডলারের ভবিষ্যৎ ব্যবসা এবং হাজার হাজার কর্মসংস্থান হুমকির মুখে ফেলেছে।
ভারতের বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারকদের অনেকে এখন যুক্তরাষ্ট্রের অর্ডার অন্য দেশে স্থানান্তরের চেষ্টা করছেন। পার্ল গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিজ জানিয়েছে, কিছু মার্কিন ক্রেতা অর্ডার ভিয়েতনাম বা বাংলাদেশে তৈরি করার অনুরোধ করেছেন, যেখানেও তাদের কারখানা রয়েছে।
অপরদিকে, গোকলদাস এক্সপোর্টস জানিয়েছে, তারা ইথিওপিয়া ও কেনিয়াতে উৎপাদন বাড়ানোর কথা ভাবছে, যেখানে মাত্র ১০ শতাংশ শুল্ক রয়েছে। মুডিজ সম্প্রতি সতর্ক করে বলেছে, ভারতের জন্য এই বিশাল শুল্ক ব্যবধান ‘গত কয়েক বছরে আকৃষ্ট হওয়া বিনিয়োগের অনেকটাই উল্টো পথে নিতে পারে।’
গত বছর ভারত ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রত্ন ও গহনা রপ্তানি করেছে, যেখানে কয়েক লাখ মানুষ কর্মরত। এখন এই শিল্প কার্যত স্থবির। ডি. নভিনচন্দ্র এক্সপোর্টসের অজেশ মেহতা বলেন, ‘এখন কিছুই হচ্ছে না, সব অর্ডার স্থগিত। আমরা আশঙ্কা করছি ১.৫ থেকে ২ লাখ শ্রমিক প্রভাবিত হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘১০ শতাংশ শুল্ক মানিয়ে নেওয়া যায়, ২৫ শতাংশ কঠিন- আর ৫০ শতাংশ একেবারে অগ্রহণযোগ্য। আমরা বিলাসবহুল পণ্যে কাজ করি, দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেলে ক্রেতারা পিছিয়ে যাবে।’
সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিকারকরাও বলছেন, কিছু মার্কিন ক্রেতা চালান আটকে রাখতে বলছেন। তারা এখন নতুন বাজারের খোঁজ করছেন। ‘বেবি মেরিন গ্রুপের পার্টনার’ অ্যালেক্স নিনান বলেন, ‘আমরা বাজার বৈচিত্র্যের চেষ্টা করছি। যুক্তরাষ্ট্র একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এখন চীন, জাপান এবং রাশিয়ার মতো বাজারে নজর দিচ্ছি।’ তবে নিনান বলেন, ‘এটা সহজ নয়। হঠাৎ করেই কোনো বাজার তৈরি করা যায় না।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে ফোনালাপে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলাস্কায় বৈঠকের আগে তাদের মধ্যে এই ফোনালাপটি হলো।
বুধবার পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে সিউল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, মঙ্গলবার পুতিন ও কিম ‘উষ্ণ সহযোদ্ধাসুলভ পরিবেশে’ ফোনে কথা বলেছেন এবং ‘ভবিষ্যতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে তাদের দৃঢ় ইচ্ছা’ পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
কেসিএনএ আরও জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ করে পুতিন ‘কুরস্ককে মুক্ত করতে কোরিয়ান পিপলস আর্মির সেনাদের আত্মত্যাগী মনোভাবের’ প্রশংসা করেছেন।
জবাবে কিম বলেন, উত্তর কোরিয়া ‘ভবিষ্যতেও রাশিয়ার নেতৃত্বে নেওয়া সব পদক্ষেপকে পুরোপুরি সমর্থন করবে।’
ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, ‘পুতিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আসন্ন আলোচনা প্রসঙ্গে কিম জং উনকে তথ্য দিয়েছেন।’
ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প শুক্রবার আলাস্কায় তাদের বৈঠকে রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার জন্য চাপ দেবেন।
সিউলে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট ইয়াং মু-জিন এএফপিকে বলেন, দুই নেতার ফোনালাপ জনসমক্ষে আনার অর্থ হলো ‘দেশি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের ঘনিষ্ঠতা প্রদর্শন করা।’
ইয়াং আরও বলেন, যদি ট্রাম্প ও পুতিন ইউক্রেন শান্তি চুক্তিতে সম্মত হন, তবে ‘ট্রাম্পের উত্তর কোরিয়া সংক্রান্ত আগ্রহের বিষয়ে কিমের মনোভাব পুতিন ট্রাম্পকে জানাতে পারেন। এর মধ্যে শর্তসাপেক্ষ পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনের বিষয়ও থাকতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা গতি পায়, তবে এর একটি ইতিবাচক প্রভাব যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া এবং দুই কোরিয়ার মধ্যকার সংলাপেও পড়তে পারে।’
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানে পিয়ংইয়ং সেনা ও অস্ত্র সরবরাহ করেছে।
গত বছর পুতিনের পিয়ংইয়ং সফরের সময় দুই দেশ একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে।
উত্তর কোরিয়া এপ্রিল মাসে প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করে যে তারা রাশিয়ার সঙ্গে মিলে ইউক্রেনে তাদের একটি সৈন্যদল পাঠিয়েছে।
মালয়েশিয়ায় অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য দেশটির গ্র্যাজুয়েট প্লাস ভিসা চালুর সম্ভাবনা রয়েছে, যা হাজার হাজার গ্র্যাজুয়েটকে সমৃদ্ধ অর্থনীতির এই দেশে উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মসংস্থানের সুযোগ দেবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস কুয়ালালামপুরে ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়ায়, মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী জাম্ব্রি আবদুল কাদিরের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়টি উত্থাপন করেন।
‘মন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। নীতিগতভাবে তিনি মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য গ্র্যাজুয়েট প্লাস ভিসা দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। তবে নীতি কার্যকর হওয়ার আগে উভয় পক্ষকে কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে,’ বলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বৈঠকে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে প্রায় ১০ হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। অন্য দেশের শিক্ষার্থীরা যেখানে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে প্রবেশের সুযোগ পায়, সেখানে এতদিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল।
এর আগে বুধবার, মালয়েশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রী ফাদলিনা বিনতি সিদেক কুয়ালালামপুরের একটি হোটেলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি বাড়ানোসহ শিক্ষায় সহযোগিতা জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বিনিময় কর্মসূচি সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকা মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বাংলাদেশের ডিগ্রির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিও চেয়েছে।
মালয়েশিয়ার মন্ত্রী অধ্যাপক ইউনূসের দীর্ঘদিনের ‘থ্রি জিরো’ প্রচারণায় গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন, যার লক্ষ্য বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনা।
‘আপনি যদি দারিদ্র্যহীন পৃথিবী কল্পনা না করেন, তবে তা হবে না,’ মন্তব্য করেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বিশ্বনেতাদের প্রতি আত্মবিধ্বংসী নয় এমন একটি সভ্যতা গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রীকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান, যাতে দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা সহযোগিতা আরও জোরদার হয়।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার আসন্ন বৈঠককে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানের লক্ষ্যে তার ধারণাগুলো মূল্যায়নের একটি ‘অনুভূতিশীল বৈঠক’ বলে অভিহিত করেছেন। এদিকে ইউরোপীয় নেতারা কিয়েভের স্বার্থের প্রতি অটল রয়েছেন।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ট্রাম্প শুক্রবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে আলাস্কায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুতিন ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে এটিই প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আঞ্চলিক ছাড় প্রত্যাখ্যান করার সমালোচনা করেছেন।
অগ্রহণযোগ্য আপস জোরদার করার লক্ষ্যে পুতিন ট্রাম্পের সাথে জোট বাঁধবেন এই আশঙ্কায়, ইউরোপীয় নেতারা বুধবার জেলেনস্কি ও ট্রাম্প উভয়ের সাথেই আলাদাভাবে কথা বলার পরিকল্পনা করছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম মাসগুলোয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারবেন বলে মন্তব্য করার পর, ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। কিন্তু কয়েক দফা আলোচনা, ফোন কল ও কূটনৈতিক সফরের পরও কোনো প্রকার সাফল্য আসেনি।
ট্রাম্প সাধারণত তার চুক্তি সম্পন্ন করার দক্ষতা নিয়ে গর্ব করতে পছন্দ করেন। আলাস্কায় সাফল্যের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে পুতিনের সঙ্গে ‘গঠনমূলক আলোচনা’ আশা করছেন।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি সত্যিই কিছুটা অনুভূতিপ্রবণ বৈঠক।’
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা দেখব তার মনে কী আছে এবং যদি এটি একটি ন্যায্য চুক্তি হয়, তাহলে আমি এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের, ন্যাটো নেতাদের এবং প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাছেও প্রকাশ করব।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারি- অনেক ভাগ্য, লড়াই চালিয়ে যাও, অথবা আমি এও বলতে পারি, আমরা একটি চুক্তি সম্পাদন করতে পারি।’
জেলেনস্কি বলপ্রয়োগ করে দখল করা অঞ্চল ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে ট্রাম্প ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসের এক সভায় প্রকাশ্যে জেলেনস্কির সমালোচনা করে বলেছিলেন তিনি জেলেনস্কির অবস্থান নিয়ে কিছুটা বিরক্ত এবং অঞ্চল বিনিময়ের ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘কিছু বিনিময় হবে, জমির কিছু পরিবর্তন হবে।’
তবে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পুতিনকে এই যুদ্ধ শেষ করতে বলবেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎজ বুধবার ফরাসি, ব্রিটিশ ও অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের এবং ইইউ ও ন্যাটো প্রধানদের ভার্চুয়াল আলোচনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
সোমবার মের্ৎজের কার্যালয় জানিয়েছে, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন দফা আলোচনায় রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগের আরও বিকল্প, সম্ভাব্য শান্তি আলোচনার প্রস্তুতি এবং আঞ্চলিক দাবি ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হবে।
সোমবার ব্রাসেলসে ইইউ’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহার সঙ্গে দেখা করেন এবং আক্রমণের পর থেকে রাশিয়ার ওপর ১৯তম নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিও নিয়েও আলোচনা করেন।
আলোচনার পরে ইইউ’র পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাস বলেন, রাশিয়া ‘পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত, আমাদের কোনও ছাড় নিয়ে আলোচনা করা উচিত নয়।’ ‘এটি অতীতে কখনও রাশিয়ার সাথে কাজ করেনি এবং আজও পুতিনের সাথে কাজ করবে না।’
এদিকে পুতিনের দাবির কাছে আত্মসমর্পণের বিরুদ্ধে আবারও সতর্ক করেছেন জেলেনস্কি ।
জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘রাশিয়া হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে অস্বীকার করে, তাই কোনও পুরষ্কার বা সুবিধা গ্রহণ করা উচিত নয়। এটি কেবল একটি নৈতিক অবস্থান নয়, এটি একটি যুক্তিসঙ্গত অবস্থান।’
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে জঙ্গি হামলায় অন্তত নয়জন সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন বলে মঙ্গলবার এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
ওয়াশুক জেলার একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, বহু সংখ্যক জঙ্গি একটি পুলিশ স্টেশন এবং সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিতে হামলা চালায়।
গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পথে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়। সন্ত্রাসীরা নয়জন সেনাকে হত্যা করে।’
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনের গাজা সিটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার এবং হামাসের অবশিষ্ট ঘাঁটিগুলোতে হামলার পরিকল্পনার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। ইসরাইলি পরিকল্পনার ব্যাপারে চরম সমালোচনা সত্ত্বেও নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘যুদ্ধ বন্ধের এটিই সর্বোত্তম উপায়’।
জেরুজালেম থেকে এএফপি জানায়, ইসরাইলি ভূখণ্ডে হামাসের নজিরবিহীন হামলার ফলে শুরু হওয়া যুদ্ধ ২২ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলমান রয়েছে। বর্তমানে ইসরাইল এ নিয়ে গভীর বিভাজনের মধ্যে রয়েছে—একদিকে একদল যুদ্ধের অবসান ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য চুক্তি চায়, অন্যদিকে আরেক দল ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের চিরতরে পরাজিত দেখতে চায়।
নেতানিয়াহুর সিকিউরিটি কেবিনেট সম্প্রতি হামলার তীব্রতা বাড়ানো এবং গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর বিশ্বব্যাপী তীব্র সমালোচনা শুরু হয়।
নেতানিয়াহু গতকাল রোববার এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ করার এটাই সর্বোত্তম উপায় এবং দ্রুত শেষ করারও এটি সর্বোত্তম উপায়।’
জেরুজালেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নেতানিয়াহু বলেন, ‘নতুন অভিযান মোটামুটি সংক্ষিপ্ত সময়সীমার মধ্যে বাস্তবায়িত হবে।’
এই অভিযানের লক্ষ্য হবে, গাজা সিটিতে হামাসের অবশিষ্ট দুটি শক্ত ঘাঁটি ও তাদের মূল ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া। একই সঙ্গে বেসামরিক নাগরিকদের এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য নিরাপদ করিডোর ও নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘অভিযান চালিয়ে হামাসের পরাজয় নিশ্চিত করা ছাড়া ইসরাইলের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। ইতোমধ্যে আমরা অনেক কিছু করে ফেলেছি। গাজার ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছি। কিন্তু এখনো দুটি শক্ত ঘাঁটি বাকি আছে। এগুলো হলো গাজা সিটি এবং আল মাওয়াসি মূল ঘাঁটি।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন শুক্রবার আলাস্কায় ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করবেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রায় দেড়‘শ বছরেরও বেশি সময় আগে রাশিয়ার কাছ থেকে অঞ্চলটি কিনে নিয়েছিল।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, রাশিয়া থেকে মাত্র কয়েক মাইল দূরে বিস্তৃত উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত প্রত্যন্ত রাজ্যের কিছু অংশে এখনও রাশিয়ার প্রভাব টিকে আছে।
জার শাসিত রাশিয়ার পক্ষ থেকে ১৭২৮ সালে এক অভিযানে ডেনিশ অভিযাত্রী ভিটাস বেরিং এশিয়া ও আমেরিকাকে পৃথককারী সংকীর্ণ প্রণালী দিয়ে প্রথম গমন করেন।
বর্তমানে বেরিং প্রণালী নামে পরিচিত এই অঞ্চলের আবিষ্কার পশ্চিমা বিশ্বে আলাস্কার অস্তিত্বের কথা প্রকাশ করে। যদিও আদিবাসীরা হাজার হাজার বছর ধরে সেখানে বসবাস করে আসছে।
বেরিং-এর অভিযানে দক্ষিণ কোডিয়াক দ্বীপে প্রথম উপনিবেশ স্থাপনের মাধ্যমে রাশিয়ান সামুদ্রিক শীল শিকারের এক শতাব্দীর সূচনা হয়।
১৭৯৯ সালে, জার প্রথম পল লাভজনক পশম ব্যবসার সুযোগ নেওয়ার জন্য রাশিয়ান-আমেরিকান কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন, যার ফলে প্রায়শই আদিবাসীদের সাথে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
১৮৬৭ সালে রাশিয়া এই রাজ্যটি ওয়াশিংটনের কাছে ৭.২ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে দেয়।
টেক্সাসের দ্বিগুণেরও বেশি আয়তনের একটি এলাকা ক্রয় সেই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল, এমনকি চুক্তির মূল পরিকল্পনাকারী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম সেওয়ার্ডের নামে এটিকে ‘সেওয়ার্ডের বোকামি’ বলে অভিহিত করা হয়েছিল।
রাশিয়ান-আমেরিকান কোম্পানি তৈরির পর রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চ আলাস্কায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে এবং রাজ্যে রাশিয়ান উল্লেখযোগ্য প্রভাবের অন্যতম হয়ে এখনও রয়ে গেছে।
ভবন সংরক্ষণের জন্য নিবেদিত একটি সংস্থার মতে, আলাস্কার উপকূলে অবস্থিত ৩৫টিরও বেশি গির্জা, যার মধ্যে কয়েকটির মধ্যে পেঁয়াজের আকৃতির গম্বুজ রয়েছে।
আলাস্কার অর্থোডক্স ডায়োসিস বলেছে, এটি উত্তর আমেরিকার প্রাচীনতম এবং এমনকি কোডিয়াক দ্বীপে একটি সেমিনারিও রয়েছে।
রুশ থেকে প্রাপ্ত একটি স্থানীয় উপভাষা যা আদিবাসী ভাষার সাথে মিশ্রিত হয়ে বিশেষ করে রাজ্যের বৃহত্তম শহর অ্যাঙ্কোরেজের কাছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ে কয়েক দশক ধরে টিকে ছিল, যদিও এটি এখন মূলত বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
তবে দক্ষিণ কেনাই উপদ্বীপের বিশাল হিমবাহের কাছে, এখনও রুশ ভাষা শেখানো হচ্ছে।
১৯৬০-এর দশকে প্রতিষ্ঠিত ‘ওল্ড বিলিভার্স’ নামে পরিচিত একটি অর্থোডক্স সম্প্রদায়ের একটি ছোট গ্রামীণ স্কুল প্রায় একশ শিক্ষার্থীকে রাশিয়ান ভাষা শেখায়।
আলাস্কা ও রাশিয়ার নৈকট্য সম্পর্কে সবচেয়ে বিখ্যাত বক্তব্যগুলোর মধ্যে একটি ছিল ২০০৮ সালে রাজ্যের তৎকালীন গভর্নর এবং রিপাবলিকান প্রার্থী জন ম্যাককেইনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সারা প্যালিনের।
প্যালিন বলেন, ‘তারা আমাদের পাশের প্রতিবেশী এবং আপনি এলে আলাস্কার ভূমি থেকে, আলাস্কার একটি দ্বীপ থেকে রাশিয়া দেখতে পাবেন।’
আলাস্কার মূল ভূখণ্ড থেকে রাশিয়া দেখা সম্ভব না হলেও, বেরিং স্ট্রেইটে মুখোমুখি দুটি দ্বীপ মাত্র ২.৫ মাইল দূরে অবস্থিত।
রাশিয়ার বিগ ডায়োমেড দ্বীপটি আমেরিকান লিটল ডায়োমেড দ্বীপের ঠিক পশ্চিমে অবস্থিত, যেখানে কয়েক ডজন লোক বাস করে।
বছরের পর বছর ধরে, মার্কিন সেনাবাহিনী বলে আসছে যে তারা নিয়মিতভাবে এই অঞ্চলে আমেরিকান আকাশসীমার খুব কাছাকাছি চলে আসা রাশিয়ান বিমানগুলো আটক করে।
তবে রাশিয়া স্পষ্টতই তাদের একসময়ের দখলকৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধারে আগ্রহী নয়। পুতিন ২০১৪ সালে বলেছিলেন যে আলাস্কা ‘খুবই ঠান্ডা’।
জাতিসংঘের তিন-চতুর্থাংশ সদস্য রাষ্ট্র ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনিকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। সোমবার অস্ট্রেলিয়া প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে যে সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে স্বীকৃতি দেয়া হবে। প্যারিস থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের উপর ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের আক্রমণের পর থেকে গাজায় ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরু হয় এবং এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিরা তাদের নিজস্ব রাষ্ট্রের দাবি বিশ্বব্যাপী চাপ পুনরুজ্জীবিত করেছে।
এই পদক্ষেপ দীর্ঘদিন ধরে প্রচলিত একটি দৃষ্টিভঙ্গি ভেঙে দিয়েছে যে ফিলিস্তিনিরা কেবল ইসরাইলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই একটি রাষ্ট্রের মর্যাদা পেতে পারে।
এএফপির এক হিসাব অনুসারে, জাতিসংঘের ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ফ্রান্স, কানাডা এবং ব্রিটেনসহ কমপক্ষে ১৪৫টি সদস্য দেশ এখন একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে বা স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদার জন্য ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্ক্ষার একটি সংক্ষিপ্তসার এখানে দেওয়া হল: - ১৯৮৮: আরাফাত ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন ।
১৯৮৮ সালের ১৫ নভেম্বর, প্রথম ফিলিস্তিনি ইন্তিফাদা বা ইসরাইলি শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সময়, ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত একতরফাভাবে জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ঘোষণা করেন।
তিনি আলজিয়ার্সে নির্বাসিত ফিলিস্তিনি জাতীয় কাউন্সিলের এক সভায় এই ঘোষণা দেন। এখানে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে লক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছিল এবং স্বাধীন ইসরাইল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্র পাশাপাশি বিদ্যমান ছিল।
এর কয়েক মিনিট পরে, আলজেরিয়া প্রথম দেশ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়।
এক সপ্তাহের মধ্যে, আরব বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ, ভারত, তুরস্ক, আফ্রিকার বেশিরভাগ দেশ এবং বেশ কয়েকটি মধ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় দেশসহ আরও কয়েক ডজন দেশ এটি অনুসরণ করে।
পরবর্তী স্বীকৃতির ধারা ২০১০ সালের শেষের দিকে এবং ২০১১ সালের প্রথম দিকে আসে। এ সময় মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ার সংকট সৃষ্টি হয়।
আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং চিলিসহ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোও ফিলিস্তিনিদের তাদের রাষ্ট্রীয় দাবিকে সমর্থন করার আহ্বানে সাড়া দেয়।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি নির্মাণের ওপর ইসরাইলের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের দাবির প্রতি বিভিন্ন রাষ্ট্র তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে।
হামাসের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে হামলার পর গাজায় ইসরাইলের অবিরাম হামলা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন বাড়িয়েছে।
চারটি ক্যারিবিয়ান দেশ (জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, বার্বাডোস এবং বাহামা) এবং আর্মেনিয়া ২০২৪ সালে এই ব্যাপারে কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহন করে।
তিনটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রসহ চারটি (নরওয়ে, স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং স্লোভেনিয়া) ইউরোপীয় দেশও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয।
সুইডেন ২০১৪ সালে কূটনৈতিক পদক্ষেপের পর ১০ বছরের মধ্যে এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম পদক্ষেপ, যার ফলে ইসরাইলের সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেয়।
পোল্যান্ড, বুলগেরিয়া এবং রোমানিয়ার মতো অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্র ইইউতে যোগদানের অনেক আগে থেকেই ১৯৮৮ সালে এ পদক্ষেপ নেয়।
অন্যদিকে, পূর্ব ব্লকের কিছু দেশ, যেমন হাঙ্গেরি এবং চেক প্রজাতন্ত্র এখনো রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ সোমবার বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আগামী অধিবেশনে ফিলিস্তিনি জনগণের নিজস্ব রাষ্ট্রের অধিকারকে স্বীকৃতি দেবে।’
গত মাসে ফ্রান্স বলেছিল, তারা সেপ্টেম্বরে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে চায়, অন্যদিকে ব্রিটেন বলেছে, ইসরাইল গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়াসহ ‘বস্তুগত পদক্ষেপ’ না নিলে তারাও একই কাজ করবে।
কানাডাও সেপ্টেম্বরে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
কানাডা সেপ্টেম্বরে একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে, প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, এটি একটি নাটকীয় নীতিগত পরিবর্তন যা ইসরাইল তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি প্রকাশ করতে পারে এমন অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে, মাল্টা, ফিনল্যান্ড ও পর্তুগালও এই সম্ভাবনা উত্থাপন করেছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আলজাজিরার ৫ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। রবিবার সন্ধ্যায় আল শিফা হাসপাতালের প্রধান ফটকের বাইরে সাংবাদিকদের তাঁবুতে এই হামলা চালানো হয়।
নিহত সাংবাদিকরা হলেন:
আনাস আল-শরিফের শেষ টুইটে গাজার আকাশে ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের বিস্ফোরণের ভয়াবহ দৃশ্য বর্ণনা করা ছিল। হামলার কিছুক্ষণ আগে তিনি লিখেছিলেন, "গাজার পূর্ব ও দক্ষিণে ভয়াবহ বোমাবর্ষণ চলছে।"
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, আল-শরিফ হামাসের সাথে যুক্ত ছিলেন। তবে মানবাধিকার সংগঠন ইউরো-মেডিটেরেনিয়ান হিউম্যান রাইটস মনিটর বলেছে, "তিনি শুধুই একজন সাংবাদিক ছিলেন, সহিংসতার সাথে তার কোনো সম্পর্ক নেই।"
আলজাজিরা এই হামলাকে "সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের উসকানিমূলক প্রচারণা" বলে নিন্দা জানিয়েছে। গত এক মাসে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা এখন ১২ জনে পৌঁছেছে।
গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে শনিবার তেল আবিবে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। এর আগের দিনই গাজায় যুদ্ধ সম্প্রসারণে ইসরাইল সরকার গাজা দখলের ঘোষণা দিয়েছে। তেল আবিব থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
এসময় বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এবং ফিলিস্তিনে জিম্মি থাকা ইসরাইলিদের ছবি তুলে ধরে সরকারের কাছে তাদের মুক্তির দাবি জানান। এএফপির সাংবাদিকরা এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা কয়েক হাজার বলে অনুমান করেন। তবে জিম্মিদের পরিবারের প্রতিনিধিত্বকারী একটি দল জানায়, এতে প্রায় ১ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছিল। তবে সরকার জনসমাগমে উপস্থিতির সংখ্যা নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য দেয়নি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত অন্যান্য যুদ্ধবিরোধী সমাবেশগুলোর চেয়ে এটি অনেক বড় ছিল।
নিহত এক জিম্মির আত্মীয় শাহার মোর জাহিরো এএফপি’কে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি আমরা সরাসরি একটি বার্তা দিতে চাই। তা হলো গাজার কোনো অংশ দখল করার কারণে জিম্মিরা যদি খুন হয় তবে আমরা আপনাকে ছাড়ব না। আমরা শহরের মোড়ে, নির্বাচনী প্রচারণায়, সব জায়গায় আপনার পিছু নেব।’
শুক্রবার নেতানিয়াহুর নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা শহর দখলের জন্য একটি বড় ধরনের অভিযানের পরিকল্পনা অনুমোদন করে। যা দেশে বিদেশে সমালোচনার ঝড় তোলে। ইসরাইলের মিত্র কিছু আন্তর্জাতিক শক্তি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে এবং গাজায় মানবিক সংকট নিরসন করতে একটি সমঝোতামূলক যুদ্ধবিরতির জন্য নেতানিয়াহুকে চাপ দিচ্ছে। এতো সমালোচনা এবং ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে মতবিরোধের গুঞ্জন সত্ত্বেও নেতানিয়াহু তার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন।
শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক পোস্টে নেতানিয়াহু বলেন, আমরা গাজা দখল করতে যাচ্ছি না, আমরা হামাসের কাছ থেকে গাজাকে মুক্ত করতে যাচ্ছি। গত ২২ মাস ধরে চলমান এই যুদ্ধের সময়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু নিয়মিত বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন। অনেক সমাবেশে সরকার ও হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি করার দাবি জানানো হয়। যেমনটা অতীতে জিম্মিদের বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
২০২৩ সালে হামাস আক্রমণ চালিয়ে ২৫১ জন ইসরাইলিকে জিম্মি করে, যাদের মধ্যে ৪৯ জন এখনও গাজায় আটক আছেন। সামরিক বাহিনীর মতে, এদের মধ্যে ২৭ জন মারা গেছেন। এদিকে শনিবার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ গাজায় ইসরাইলিদের অভিযান সম্প্রসারণের পরিকল্পনাকে নিন্দা জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা’য় প্রকাশিত এক বিবৃতি অনুযায়ী, ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, এই পরিকল্পনা একটি ‘নতুন অপরাধ’ এবং এটি অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’ তিনি গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে তার পূর্ণ দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়ার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন।
যে বৈঠকে গাজা শহর দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন করা হয়, একই বৈঠকে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজায় যুদ্ধ শেষ করার জন্য কিছু নীতিও গ্রহণ করে, যার মধ্যে ছিল একটি নতুন প্রশাসন প্রতিষ্ঠা, যা হামাসও নয়, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষও নয়।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ ইসরাইল-অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশে সীমিত শাসন পরিচালনা করে, কিন্তু হামাস শাসিত গাজায় তাদের কোনো উপস্থিতি নেই। ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নিউজিল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের পক্ষ থেকে শনিবার জারি করা এক বিবৃতিতে আবারও গাজা শহর দখলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করা হয়। তারা বলেন, এটি ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে, জিম্মিদের জীবনকে বিপন্ন করবে এবং সাধারণ জনগণের ব্যাপক বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঝুঁকি বাড়াবে।
এদিকে রাশিয়াও শনিবার এক বিবৃতিতে গাজা শহর দখলের ইসরাইলি পরিকল্পনাকে নিন্দা জানিয়েছে। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ইতোমধ্যে ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতিতে রয়েছে। এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলে তা আরও খারাপ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া বর্তমান লক্ষণ অনুযায়ী সেখানে একটি মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শনিবার ইসরাইলি হামলায় এই ভূখণ্ডে অন্তত ৩৭ জন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৩০ জন বেসামরিক নাগরিক ত্রাণ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এই পরিসংখ্যানকে জাতিসংঘ নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে।
এএফপির দেওয়া সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ইসরাইলে হামাসের হামলায় ১ হাজার ২১৭ জন নিহত হন, যার ফলে এই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল।
অগ্নিকাণ্ডের পর শনিবার সর্বসাধারণের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে স্পেনের কর্ডোভায় অবস্থিত ঐতিহাসিক মসজিদ ক্যাথেড্রাল। এই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটিতে শুক্রবার রাতে লাগা আগুনে যতসামান্য ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগরীর মেয়র।
কর্দোভা থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়।
স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এর ধোঁয়া ও শিখা নির্গত হতে দেখা যায়। প্রায় ২ মিলিয়ন দর্শনার্থী প্রতি বছর এই ইসলামি স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শনটি পরিদর্শন করেন।
মেয়র হোসে মারিয়া বেলিদো স্প্যানিশ পাবলিক টেলিভিশনের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে জানান, অগ্নিকাণ্ড পুরো মসজিদ ক্যাথেড্রাল ধ্বংস করে দিতে পারত। কিন্তু ক্ষয়ক্ষতি মূলত একটি চ্যাপেলে সীমাবদ্ধ ছিল। যেখানে ছাদটি আগুন ও পানি ঢালার কারণে সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়ে। পাশাপাশি দুটি চ্যাপেলে ধোঁয়ার কারণে অলংকৃত বেদি ও শিল্পকর্মে আংশিক ক্ষতি হয়েছে। তিনি জানান প্রায় ৫০-৬০ বর্গমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শনিবার ঘটনাস্থলে এএফপি’র এক আলোকচিত্রী জানান, ভবনটি দেখার জন্য যখন মানুষ জড়ো হচ্ছিল, তখন একাধিক অগ্নিনির্বাপক যান ও পুলিশ ভবনের পাশের সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ছিল।
‘আলমানজর নেভ’ নামে পরিচিত অংশটি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কোমর উচ্চতার ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল।
কর্দোভার দমকল বিভাগের প্রধান ড্যানিয়েল মুনিওজ জানান, ধমকলকর্মীদের তৎপরতায় এমন বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো সম্ভভ হয়েছে। আগুন নেভাতে ৩৫ জন দমকলকর্মী রাতভর কাজ করেন।
তিনি আরও জানান, ২০০১ সালে শেষবার অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে ভবনটিতে প্রতিবছর অগ্নিনির্বাপণ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যা এবার আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকলকর্মীদের সহায়তা করেছে। এই মহড়ার ফলে তারা ভবনের সব প্রবেশদ্বার, করিডোর এবং কোথায় তাদের পাইপ সংযুক্ত করতে হবে সবই তারা ভালোভাবে জানত।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এবিসি ও অন্যান্য পত্রিকা জানিয়েছে, ওই স্থাপনায় একটি যান্ত্রিক ঝাড়ু মেশিন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
৮ম থেকে ১০ম শতাব্দীর মধ্যে দক্ষিণ স্পেনের তখনকার মুসলিম শাসক উমায়্যাদ শাসক আবদ আর-রহমান এই স্থানটিতে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। ১৩শ শতাব্দীতে ক্যাস্টিলের কিং ফেরদিনান্দ তৃতীয়ের অধীনে খ্রিস্টানরা স্পেন পুনরায় দখল করার পর এটি ক্যাথেড্রালে রূপান্তরিত হয় এবং পরবর্তী শতাব্দীগুলোতে আর্কিটেকচারাল পরিবর্তন করা হয়।
১৯৮৪ সালে ইউনেস্কো এই ভবনটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করে।