শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫
১১ পৌষ ১৪৩২

তীব্র দাবদাহের কবলে দক্ষিণ এশিয়া, ভারতে নয়জনের মৃত্যু

তীব্র গরমে প্রশান্তি পেতে পাকিস্তানের লাহোরে পানিতে নেমেছেন কয়েকজন। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৪ মে, ২০২৪ ২১:৫০

বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে। তীব্র দাবদাহের কবলে পড়েছে এই অঞ্চলের দেশগুলো। ভারতের রাজস্থানে তীব্র গরমের কারণে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। হিটস্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত মাসে ভয়াবহ তাপমাত্রা দেখেছে এশিয়া। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ভারতে গ্রীষ্ম মৌসুমে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা দেখা যায় মে মাসে। কিন্তু এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপপ্রবাহ দেখা যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার রাজস্থানের বারমের শহরে ৪৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজস্থান, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যে তাপপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।

এদিকে পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পাকিস্তানে অন্তত ২৬টি জেলায় তীব্র তাপপ্রবাহ চলছে। চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত দেশটিতে এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় সিন্ধ প্রদেশের অন্তত দুটি শহরে গতকাল শুক্রবার তাপমাত্রার পারদ ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। আগামী রোববার এটি উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তা ছাড়া ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালায় বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ভারী বৃষ্টিতে চলতি সপ্তাহে অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তীব্র গরমে রাজস্থানে নয়জনের মৃত্যু

ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রাজস্থানে তীব্র গরমের কারণে নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হিটস্ট্রোকে তাদের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজস্থানের বারমের শহরে ৪৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দেশটির আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাজস্থান, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যে তাপপ্রবাহ তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।

পাকিস্তানে বন্ধ হচ্ছে একের পর এক স্কুল

অস্বাভাবিক গরম-তাপপ্রবাহের কারণে পাকিস্তানের চার প্রদেশ ও তিন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন স্কুলগুলোর নিয়মিত ক্লাস কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিতে বাধ্য হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য পাঞ্জাবে আগামী এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রাদেশিক সরকার।

পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘চলমান তাপপ্রবাহের কারণে আগামী ২৫ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত পাঞ্জাবের সব প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ থাকবে। কোনো স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি চায়, তাহলে এই সময় পরীক্ষা নিতে পারবে; তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার ব্যাপারটি সবার আগে বিবেচনা করতে হবে।’

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ এবং অন্য তিন প্রদেশ সিন্ধ, বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলছে তাপপ্রবাহ। কোনো কোনো এলাকায় তাপমাত্রা পৌঁছেছে প্রায় ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রীষ্মকালে পাকিস্তানের স্বাভাবিক যে গড় তাপমাত্রা, তার চেয়েও স্থানভেদে ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি গরম পড়েছে চলতি বছরের মে মাসে। এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন জানিয়েছে, বড় শহরগুলোতে হিটস্ট্রোক ও অন্যান্য গরমজনিত শারীরিক সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন শত শত রোগী ভর্তি হচ্ছেন।

আবহাওয়াগত কারণে পাকিস্তানে স্কুল বন্ধ হওয়া বিরল নয়। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যায় সপ্তাহের পর সপ্তাহ ডুবে ছিল দেশটির মোট ভূখণ্ডের এক-তৃতীয়াংশ এলাকা। বন্যায় সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ। সেবারও দিনের পর দিন বন্ধ ছিল স্কুলগুলো।

রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের জলবায়ু-বিষয়ক উপদেষ্টা রুবিনা খুরশিদ আলম বলেন, পাঞ্জাবের ২৬টি জেলার সবগুলোতে, সিন্ধের দক্ষিণাঞ্চলে এবং বেলুচিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক দিন আগে থেকে ব্যাপক তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে এবং আগামী অন্তত এক সপ্তাহ এই অবস্থা থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে রুবিনা বলেন, ‘উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বিশ্বের যেসব দেশ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আবহাওয়াগত দুর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে, সেসব দেশের তালিকায় পঞ্চম স্থানে আছে পাকিস্তান।’


ইউক্রেনের ৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা দখলের দাবি রাশিয়ার

ইউক্রেনের সিভেরস্ক শহরের তুষারাবৃত রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছে কয়েকটি বেওয়ারিশ কুকুর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এক বছরে ইউক্রেনের প্রায় ৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিজেদের দখলে নেওয়ার দাবি করেছে রাশিয়া। ২০২৫ সালে ইউক্রেনে সামরিক সাফল্য অর্জনের অংশ হিসেবে জোরালোভাবে এই দাবি তুলে ধরলো পুতিনের দেশ।

বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ইউক্রেনের অভ্যন্তরে সামরিক অগ্রগতির বার্তা দেওয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় প্রভাব ফেলতেই মস্কো এ ধরনের দাবি করছে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ার বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের সিভেরস্ক ও উত্তরাঞ্চলীয় খারকিভ অঞ্চলের ভোভচানস্ক দখল করেছে।

এছাড়া তিনি দাবি করেন, দোনেৎস্ক অঞ্চলের লাইমান ও কোস্তিয়ানতিনিভকার অন্তত অর্ধেক এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের হুলিয়াইপোলেও রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এসব শহরই সামনের সারির যুদ্ধক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত।

তবে ইউক্রেন বিষয়ক পর্যবেক্ষকরা পুতিনের এসব দাবির সঙ্গে একমত নন। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) জানিয়েছে, উপগ্রহচিত্র ও উন্মুক্ত উৎসের দৃশ্যমান প্রমাণ পুতিনের দাবিকে সমর্থন করে না।

আইএসডব্লিউ বলেছে, সিভেরস্ক, ভোভচানস্ক কিংবা অন্য শহরগুলো পুরোপুরি দখলের কোনো প্রমাণ তারা পায়নি। বরং তারা দেখেছে, হুলিয়াইপোলের মাত্র ৭ দশমিক ৩ শতাংশ ও লাইমানের ২ দশমিক ৯ শতাংশ এলাকায় রুশ বাহিনীর উপস্থিতি রয়েছে, যা মূলত অনুপ্রবেশ বা আক্রমণমূলক অভিযানের মাধ্যমে।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, কোস্তিয়ানতিনিভকার ক্ষেত্রেও রুশ অগ্রগতি ৫ শতাংশের বেশি নয়। এমনকি, রুশ সামরিক ব্লগারদের দাবিও পুতিনের বক্তব্যকে সমর্থন করে না বলে জানিয়েছে আইএসডব্লিউ। তাদের মতে, ব্লগারদের দাবি অনুযায়ী লাইমানের সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ ও কোস্তিয়ানতিনিভকার ১১ শতাংশ পর্যন্ত রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থাকতে পারে।

এদিকে, ক্রেমলিন খারকিভ অঞ্চলের কুপিয়ানস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চলের পোক্রভস্ক পুরোপুরি দখলের দাবিও করেছে। তবে আইএসডব্লিউয়ের হিসাব অনুযায়ী, খারকিভ অঞ্চলের সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ২ শতাংশ এলাকায় রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। অন্যদিকে, ইউক্রেনের সেনাপ্রধান জানিয়েছেন, পোক্রভস্ক এলাকা থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনী ১৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে।

গত ১৮ ডিসেম্বর রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ বিদেশি সামরিক কর্মকর্তাদের কাছে বছরের শেষ প্রতিবেদন পেশ করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, চলতি বছরে রাশিয়া ইউক্রেনের ৬ হাজার ৩০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে। এর এক সপ্তাহ আগে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্দ্রেই বেলউসভ ৬ হাজার বর্গকিলোমিটার দখলের দাবি করেছিলেন।

তবে আইএসডব্লিউয়ের হিসাবে, রাশিয়া সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৯৮৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছে, যেখানে রয়েছে ১৯৬টি বসতি। অথচ রুশ কর্মকর্তারা দাবি করছেন, তারা ৩০০টিরও বেশি বসতি দখল করেছেন।

তবে পুতিন একটি দাবির ক্ষেত্রে সত্য বলছেন বলে মনে করছে আইএসডব্লিউ। সেটি হলো, পূর্বাঞ্চলীয় শহর সিভেরস্ক দখলের বিষয়টি।

জেলেনস্কির মুখে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতার কথা

এদিকে, রাশিয়ার এসব দাবি এমন এক সময়ে এলো, যখন গত দুই সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা জোরদার করেছে। ফ্লোরিডায় তিন দিনের আলোচনার পর গত সোমবার সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, আমরা অনুভব করছি, যুক্তরাষ্ট্র একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছাতে চায়। আমাদের পক্ষ থেকেও পূর্ণ সহযোগিতা রয়েছে।

তবে বুধবার সকালে প্রকাশিত ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনায় দেখা যায়, সবচেয়ে স্পর্শকাতর বিষয় ‘ভূখণ্ড’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে কোনো ঐকমত্য হয়নি।

রাশিয়া দাবি করছে, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া ও খেরসন অঞ্চল পুরোপুরি ইউক্রেনকে ছেড়ে দিতে হবে, এর সঙ্গে ক্রিমিয়াও। ইউক্রেন এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ইউরোপীয় দেশগুলো বলছে, পূর্ণ যুদ্ধবিরতির পর ভূখণ্ড নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি শীর্ষ বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে ভূখণ্ড বিষয়ে যৌথ অবস্থান নির্ধারণ করা যায়।

উল্লেখযোগ্যভাবে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ন্যাটো-স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় সম্মত হয়েছে। এর অর্থ, ভবিষ্যতে রাশিয়া আবার হামলা চালালে ন্যাটো ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধে জড়াতে পারে।

এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, তারা নিকট ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেবে। এতে ইইউর পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সুবিধাও ইউক্রেন পাবে, যার অধিকাংশ সদস্য দেশ ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত।

এই পরিকল্পনায় ইউক্রেনের পূর্ণ সামরিক সক্ষমতা বজায় রাখার সুযোগ রয়েছে এবং দখলকৃত অঞ্চলকে রাশিয়ার বলে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনো শর্ত নেই, যা মস্কোর দাবি ছিল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রাথমিক প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ও কিয়েভের তৈরি ২০ দফা পরিকল্পনার বিষয়ে তারা অবগত। বুধবার সাংবাদিকদের ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, রাশিয়া শিগগিরই নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করবে ও বিদ্যমান চ্যানেলের মাধ্যমে যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে।


নাইজেরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে শক্তিশালী হামলা শুরু

নাইজেরিয়ার বোর্নো অঙ্গরাজ্যে একটি মসজিদে বিস্ফোরণের পর ভেতরে ধ্বংসাবশেষ দেখা যায়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে ‘শক্তিশালী ও প্রাণঘাতী হামলা’ চালানোর কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আইএসকে ‘ঘৃণ্য সন্ত্রাসী’ বর্ণনা করে তিনি অভিযোগ করেছেন, এ গোষ্ঠী মূলত নিরীহ খ্রিস্টানদের নিশানা করছে এবং তাদের নির্মমভাবে হত্যা করছে।

ট্রাম্প বলেছেন, মার্কিন সেনাবাহিনী ‘একাধিক নিখুঁত হামলা’ চালিয়েছে।

পরে যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকা কমান্ড (আফ্রিকম) জানিয়েছে, নাইজেরিয়ার সঙ্গে সমন্বয় করে বৃহস্পতিবার সোকোতো রাজ্যে হামলা পরিচালনা করা হয়েছে।

নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইউসুফ মাইতামা তুগার বিবিসিকে বলেন, এই যৌথ অভিযান ছিল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে, যার সঙ্গে কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের সম্পর্ক নেই।

আরও অভিযানের সম্ভাবনা নাকচ না করে তিনি বলেছেন, সেটি নির্ভর করছে দুই দেশের নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের ওপর।

ট্রাম্প বৃহস্পতিবার রাতে ট্রুথ সোশাল পোস্টে বলেন, “আমার নেতৃত্বে আমাদের দেশ চরমপন্থি ইসলামী সন্ত্রাসবাদকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না।’

বিবিসি লিখেছে, গত নভেম্বরে ট্রাম্প নাইজেরিয়ায় ইসলামপন্থি জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে মোকাবিলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীকে প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তখন তিনি কোন হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে কথা বলেছিলেন তা অস্পষ্ট ছিল।

তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু ডানপন্থি মহলে নাইজেরিয়ায় খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বৃহস্পতিবার বলেন, নাইজেরিয়ান সরকারের সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য তিনি কৃতজ্ঞ।

সহিংসতা পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন সংস্থা বলছে, মুসলিমদের চাইতে খ্রিস্টানরা বেশি হত্যার শিকার হচ্ছে—এমন কোনো প্রমাণ নেই। দেশটির জনসংখ্যায় এই দুই ধর্মের মানুষের সংখ্যা প্রায় সমান।

প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবুর একজন উপদেষ্টা বিবিসিকে বলেন, জিহাদিদের বিরুদ্ধে যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ যৌথ হওয়া উচিত।

উপদেষ্টা ড্যানিয়েল বোলা বলেন, ইসলামপন্থি বিদ্রোহীদের দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাকে স্বাগত জানাচ্ছে নাইজেরিয়া, তবে এটি একটি ‘সার্বভৌম’ দেশ।

তিনি বলেছেন, জিহাদিরা কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষকে নিশানা করছে না; তারা সব ধর্মের মানুষকে, এমনকি কোনো ধর্মের অনুসারী নন—এমন লোকজনকেও হত্যা করেছে।

প্রেসিডেন্ট টিনুবু জোর দিয়ে বলেছেন, দেশে ধর্মীয় সহনশীলতা রয়েছে এবং নিরাপত্তা সংকট ‘সব ধর্ম ও অঞ্চলের মানুষকে’ প্রভাবিত করছে।

ট্রাম্প এর আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন, খ্রিস্টানদের অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে নাইজেরিয়াকে তিনি ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন। প্রমাণ ছাড়াই তিনি বলেন, হাজারো খ্রিস্টান ইতোমধ্যে হত্যার শিকার হয়েছে।

কোনো দেশে ‘গুরুতর ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন’ ঘটলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞার মতো পদক্ষেপ নিয়ে থাকে।

ট্রাম্পের ঘোষণার পর টিনুবু বলেছিলেন, সব মতের বিশ্বাসী মানুষের সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে তার সরকার বদ্ধপরিকর।

উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় বোকো হারাম ও ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রদেশের মতো জিহাদি গোষ্ঠীগুলো এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। তবে নিহতদের বেশিরভাগই মুসলমান বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক রাজনৈতিক সহিংসতা বিশ্লেষণকারী সংস্থা অ্যাক্লেড।

মধ্য নাইজেরিয়ায় পানি ও চারণভূমির দখল নিয়ে মুসলিম পশুপালকদের সঙ্গে প্রায়ক্ষেত্রে খ্রিস্টান কৃষক গোষ্ঠীর মধ্যে ঘন ঘন সংঘর্ষ হয়।

প্রাণঘাতী হামলার চক্রে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে ঠিকই; তবে নৃশংসতায় জড়িয়েছে উভয় পক্ষই। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, কেবল খ্রিস্টানদের নিশানা করা হয়েছে—এমন কোনো প্রমাণ নেই।

গত সপ্তাহেই সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে একটি ‘ব্যাপক হামলা’ চালানোর কথা জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।

মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, যুদ্ধবিমান, আক্রমণকারী হেলিকপ্টার ও কামান ব্যবহার করে মধ্য সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে ৭০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে। এতে জর্ডানের বিমানও অংশ নেয়।


রেকর্ড প্রতিরক্ষা বাজেট অনুমোদন করল জাপান

জাপানি যুদ্ধ বিমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২০:১৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই জাপানের মন্ত্রিসভা ইতিহাসে সর্বোচ্চ অঙ্কের প্রতিরক্ষা বাজেট অনুমোদন করেছে। চলতি সপ্তাহে বেইজিং টোকিওর বিরুদ্ধে ‘মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা উসকে দেওয়ার’ অভিযোগ আনার প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত এল।

আগামী অর্থবছরের জন্য শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) অনুমোদন পাওয়া প্রস্তাবিত এই প্রতিরক্ষা বাজেটের পরিমাণ ৫৮ বিলিয়ন ডলার। এটি বর্তমান বাজেটের চেয়ে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। জাপানের বার্ষিক প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ২ শতাংশে উন্নীত করার জন্য যে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে, এটি তার চতুর্থ বছরের বরাদ্দ।

বাজেট পরিকল্পনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পাল্টা আঘাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং উপকূলীয় প্রতিরক্ষা জোরদার করার ওপর। এ জন্য ভূমি থেকে সমুদ্রে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র এবং চালকহীন সমরাস্ত্র ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, ২০২৮ সালের মার্চের মধ্যে শিল্ড নামের একটি প্রকল্পের আওতায় সমুদ্র উপকূল রক্ষায় নজরদারি ও প্রতিরক্ষার জন্য বড় আকারের চালকহীন আকাশযান, জাহাজ এবং পানির নিচে ড্রোন মোতায়েন করতে ১০০ বিলিয়ন ইয়েন ব্যয় করবে জাপান।

দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, চীন ও জাপান সরকারের মধ্যে বাড়তে থাকা বৈরিতার মধ্যেই এই বাজেট বৃদ্ধির ঘোষণা এলো। জাপান নিজেদের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করার যেকোনো উদ্যোগ নিলেই বেইজিং তার বিরোধিতা করে আসছে।

গত নভেম্বরে এই সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়, যখন জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি মন্তব্য করেন, চীন যদি তাইওয়ান দখল করার উদ্দেশে আক্রমণ চালায়, তাহলে জাপান সম্ভবত সামরিকভাবে তাতে জড়িয়ে পড়বে।

তাকাইচির এই বক্তব্যে বেইজিং তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে শুরু করে।

চীনা কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে টোকিওর সমালোচনা করে আসছেন এবং জাপানের যেকোনো সামরিক ঘোষণা পেলে তার বিরোধিতা করছেন।

গত বৃহস্পতিবার চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক সংবাদ সম্মেলনে জানায়, জাপানের সাম্প্রতিক মহাকাশ প্রযুক্তি উন্নয়ন, যার কিছু অংশ যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় হচ্ছে, মহাকাশকে ‘অস্ত্রসজ্জিত ও সামরিকীকরণ করছে এবং সেখানে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় ইন্ধন দিচ্ছে।’

জাপানি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে টোকিও বেশ কয়েকটি রকেট উৎক্ষেপণ করেছে, যেগুলোর মাধ্যমে মহাকাশে পণ্যবাহী যান, জিপিএস সিস্টেম এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে।

চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাং শিয়াওগাং গত রোববার বলেন, অতীতে জাপানি সমরবিদেরা যেভাবে অতর্কিত হামলা চালিয়েছিল এবং দেশটি বর্তমানে যেভাবে আক্রমণাত্মক মহাকাশ নীতি গ্রহণ করছে, তাতে আরও একটি পার্ল হারবার পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হওয়াটা অবাক করার মতো কিছু নয়।


ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন চালিয়ে যাবে উত্তর কোরিয়া: কিম জং উন

কিম জং উন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছর দেশটি ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) এ তথ্য জানায়।

২০২৫ সালের শেষ প্রান্তিকে দেশটির বড় বড় অস্ত্র কারখানা পরিদর্শনের সময় কিম জং উন বলেন, দেশের প্রতিরক্ষা শক্তি বজায় রাখতে ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদ উৎপাদন খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়, কিম জং উন অস্ত্র কারখানাগুলোর আধুনিকায়ন সংক্রান্ত কিছু খসড়া নথি অনুমোদন করেছেন। এসব নথি ২০২৬ সালের শুরুতে অনুষ্ঠিতব্য ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ কংগ্রেসে উপস্থাপন করা হবে। ওই কংগ্রেসে উত্তর কোরিয়ার পরবর্তী পাঁচ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে।

এর একদিন আগে উত্তর কোরিয়া জানায়, কিম জং উন তার মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে একটি ৮ হাজার ৭০০ টন ওজনের পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন।

একই সঙ্গে দেশটি দূরপাল্লার ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষাও চালিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এসব পদক্ষেপ উত্তর কোরিয়ার সামরিক সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করার ইঙ্গিত দিচ্ছে।


ওয়ানএমডিবি তহবিল লোপাটের দায়ে নাজিব রাজাক আবারও দোষী সাব্যস্ত

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। ছবি: এএফপি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাককে রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ানএমডিবি (বর্তমানে বিলুপ্ত) থেকে অর্থ লোপাটের আরেকটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন কুয়ালালামপুর হাইকোর্ট। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) আদালতের রায়ে ৭২ বছর বয়সী এই রাজনীতিকের বিরুদ্ধে আনীত ক্ষমতার অপব্যবহারের চারটি এবং অর্থপাচারের ২১টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে বিলুপ্ত ওয়ানএমডিবি তহবিল থেকে অবৈধভাবে প্রায় ২.২ বিলিয়ন মালয়েশীয় রিঙ্গিত বা ৫৩৯ মিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ ও স্থানান্তরের অভিযোগ ছিল। আদালত পর্যবেক্ষণ করেছেন যে, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নাজিব রাজাক রাষ্ট্রায়ত্ত এই সার্বভৌম তহবিল থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ নিজের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে নিয়েছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের দাখিলকৃত তথ্য অনুযায়ী, নাজিব রাজাক যখন প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী এবং ওয়ানএমডিবির উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তখন তিনি নিজের অবস্থানকে অবৈধভাবে ব্যবহার করেন। প্রায় এক দশক আগে সংঘটিত এই জালিয়াতির ঘটনায় দীর্ঘ সাত বছর ধরে বিচারপ্রক্রিয়া চলার পর আজ এই রায় ঘোষণা করা হলো। এর আগে ২০২০ সালে ওয়ানএমডিবির একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৯.৯ মিলিয়ন ডলার আত্মসাতের দায়ে তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, যা পরবর্তীতে কমিয়ে ছয় বছর করা হয়। বর্তমান রায়ের ফলে তার আইনি জটিলতা আরও ঘনীভূত হলো।

নাজিব রাজাক ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভরাডুবির পর তার এবং তার স্ত্রী রসমাহ মানসুরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অর্থপাচারের ব্যাপক তদন্ত শুরু হয়। এক সময়ের প্রভাবশালী এই নেতার বিরুদ্ধে বর্তমানে মালয়েশিয়ার ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারির বিচার কাজ চলছে। আদালতের আজকের এই রায়ের মাধ্যমে মালয়েশিয়ার বিচার বিভাগ সুশাসন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি আবারও নিশ্চিত করল।


বঙ্গোপসাগরে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাল ভারত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারত তার সমুদ্রসীমায় পারমাণবিক শক্তির ভারসাম্য বজায় রাখতে এক বিশাল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বঙ্গোপসাগরে পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিন আইএনএস আরিঘাট থেকে অত্যন্ত শক্তিশালী কে-৪ ব্যালিস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে। ৩ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রটি সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম, যা ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় এক নতুন মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।

বিশাখাপত্তনম উপকূলে ৬ হাজার টন ওজনের আইএনএস আরিঘাট থেকে এই পরীক্ষা চালানো হলেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে যে, সলিড-ফুয়েল চালিত এই কে-৪ মিসাইলটি প্রায় দুই টন ওজনের পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে। ভারতের ‘নিউক্লিয়ার ট্রায়াড’ বা স্থল, আকাশ ও জলপথে পরমাণু হামলা চালানোর সক্ষমতা পূর্ণ করতে এই মিসাইলটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বর্তমানে ভারতের কাছে আইএনএস অরিহন্ত ও আইএনএস আরিঘাট নামে দুটি পরমাণু সাবমেরিন রয়েছে। এর মধ্যে অরিহন্ত কেবল ৭৫০ কিলোমিটার পাল্লার মিসাইল বহন করতে পারলেও আরিঘাটের এই নতুন সক্ষমতা ভারতকে চীন ও রাশিয়ার মতো শক্তিধর দেশগুলোর কাতারে নিয়ে এল। ভারতের আগামী লক্ষ্য হলো ২০২৬ সালের মধ্যে আরও বড় এবং শক্তিশালী সাবমেরিন আইএনএস অরিধামন নৌবাহিনীতে যুক্ত করা।

যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা রাশিয়ার তুলনায় ভারতের এই সাবমেরিনগুলো আকারে ছোট, তবে কে-৪ মিসাইলের মোতায়েন ভারতের প্রতিরক্ষা দেয়ালকে আরও নিশ্ছিদ্র করবে। ভারতের ‘নো ফার্স্ট ইউজ’ বা আগে পরমাণু হামলা না করার নীতির ক্ষেত্রে এই সাবমেরিনগুলো সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ সমুদ্রের গভীর থেকে শত্রুর ওপর পাল্টা আঘাত হানার সক্ষমতা ভারতের পারমাণবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে বিশ্ব দরবারে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে।


‘তারেক রহমান সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী ’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেড় যুগের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন যেমন বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় স্থান নিয়েছে, তেমনি রয়টার্স, আল জাজিরাসহ বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে।

প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও রয়টার্স তাকে বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছে। অন্যদিকে প্রায় একই ঢঙে সংবাদ প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা নেতা তারেক রহমান প্রায় ১৭ বছর পর দেশে ফিরেছেন। গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের আগে তার এই প্রত্যাবর্তনকে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

অন্যদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তার এই প্রত্যাবর্তনে সমর্থকরা নতুন করে চাঙ্গা হবে বলে আশা করছে দল। কারণ তাকে অন্যতম সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতা এবং দক্ষিণ এশীয় দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী তারেক রহমান বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফিরেছেন। তাকে তার দলের হাজার হাজার সমর্থক স্বাগত জানিয়েছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদের অন্যতম শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী তারেক রহমান, যিনি প্রায় দুই দশক ধরে দেশে আইনি জটিলতার সম্মুখীন হয়ে নির্বাসনে ছিলেন। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকায় ফিরে এসেছেন তিনি। তিনি এমন এক সময়ে ফিরলেন যখন দেশের নির্বাচনী মৌসুম পুরোদমে শুরু হয়েছে।


বড়দিনের বার্তায় পুতিনের মৃত্যু কামনা জেলেনস্কির

ভলোদিমির জেলেনস্কি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বড়দিন উপলক্ষে নিজ দেশের মানুষের উদ্দেশে দেওয়া বার্তায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মৃত্যু কামনা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

তিনি তার শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছেন, ‘আমাদের জন্য রাশিয়া এতে দুর্ভোগ বইয়ে আনলেও, তারা আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস দখল ও সেখানে বোমা হামলা করতে পারেনি। তা হলো— ইউক্রেনীয়দের মন, একে-অপরের প্রতি বিশ্বাস এবং ঐক্য।’

সরাসরি নাম উচ্চারণ না করে পুতিনের মৃত্যু কামনা করে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আজ, আমরা সবাই একটি স্বপ্নই দেখি, সবার জন্য আমাদের একটাই প্রত্যাশা, ‘তার ধ্বংস (মৃত্যু) হোক’।

বড়দিনের আগ মুহূর্তে ইউক্রেনের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায় রাশিয়া। এতে তিনজন নিহত ও বেশিরভাগ অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

বড়দিনের আগে এমন হামলার নিন্দা জানিয়ে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ক্রিসমাসের আগের সন্ধ্যায়, রাশিয়া আবারও দেখিয়েছে সত্যিকার অর্থে তারা কারা। রাশিয়া ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে। শত শত শহীদ ড্রোন, ব্যালিস্টিক মিসাইল, কিনঝাল মিসাইল দিয়ে হামলা চালিয়ছে- সবকিছু ব্যবহার করেছে। ধর্মহীনরা এভাবেই আঘাত হানে।’

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক হামলা চালানোর নির্দেশ দেন পুতিন। এরপর প্রায় তিন বছর ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে তার সেনারা। এই সময়ে ইউক্রেনের ২০ শতাংশ অঞ্চল দখল করেছে রাশিয়া।


প্রথম পারমাণবিক সাবমেরিনের ছবি প্রকাশ করল উত্তর কোরিয়া

জাহাজটি পরিদর্শন করছেন দেশটির নেতা কিম জং উন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রথম পারমাণবিক সাবমেরিন বলে দাবি করে একটি বিশাল সাবমেরিনের নতুন ছবি প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব ছবিতে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর কিছু অ্যাটাক সাবমেরিনের সমান আকারের এই জাহাজটি পরিদর্শন করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং উন।

ছবিগুলোতে দেখা গেছে, গাইডেড-মিসাইল সাবমেরিনটি একটি ইনডোর নির্মাণকেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে সাবমেরিনটি এখনো পানিতে নামানো হয়নি। পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন নির্মাণ দীর্ঘদিন ধরেই কিম জং উনের একটি লক্ষ্য ছিল, যা তিনি প্রথম ২০২১ সালে ক্ষমতাসীন দলের কংগ্রেসে প্রকাশ্যে তুলে ধরেন। বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসনের কাছ থেকে দক্ষিণ কোরিয়াকে নিজস্ব পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়ায় পিয়ংইয়ংয়ের এই প্রকল্পে নতুন করে গতি এসেছে।

পারমাণবিকচালিত সাবমেরিনের বেশ কিছু কৌশলগত সুবিধা রয়েছে। পর্যাপ্ত রসদ থাকলে এসব সাবমেরিন বছরের পর বছর পানির নিচে থাকতে পারে, যেখানে প্রচলিত সাবমেরিনগুলোকে ডিজেল ইঞ্জিন চালাতে ও ব্যাটারি চার্জ করতে নিয়মিত ভেসে উঠতে হয়। এ ছাড়া এসব সাবমেরিন সাধারণত আরও দ্রুতগামী এবং অনেক ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে নীরব। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও ভারত এই প্রযুক্তির অধিকারী।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) প্রকাশিত ছবিগুলোতে সাবমেরিনটির নির্মাণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা গেছে। এর অস্তিত্ব প্রথম প্রকাশ করা হয় চলতি বছরের মার্চে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, সাবমেরিনটির ডিসপ্লেসমেন্ট ৮ হাজার ৭০০ টন, যা যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর অধিকাংশ ভার্জিনিয়া-শ্রেণির পারমাণবিকচালিত অ্যাটাক সাবমেরিনের সমতুল্য।

কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানায়, কিম জং উন আবারও এই ধরনের জাহাজের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘পিয়ংইয়ংয়ের প্রতিরক্ষা নীতি আক্ষরিক অর্থেই সর্বশক্তিশালী আক্রমণাত্মক সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে তোলা। আমরা সশস্ত্র বাহিনী উন্নয়নে সুপার-শক্তিশালী আক্রমণাত্মক সক্ষমতাকেই জাতীয় নিরাপত্তার সর্বোত্তম ঢাল হিসেবে বিবেচনা করি।’

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিকচালিত সাবমেরিন নির্মাণকে উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন কিম, যা মোকাবিলা করা প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তবে সিউলের ইহওয়া উইমেন্স ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক লেইফ-এরিক ইজলি বলেন, কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য মূলত পিয়ংইয়ং নিজেই দায়ী। তার মতে, ‘পারমাণবিকচালিত সাবমেরিনের সংখ্যা বাড়লে অস্থিরতা বাড়তে পারে। এ বিষয়ে কিম হয়তো সঠিক, কিন্তু এই অস্ত্র প্রতিযোগিতার জন্য তাকেই দায় নিতে হবে।’

২০২১ সালে ঘোষিত পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কিম জং উন দেশের সামরিক সক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়ানোর তদারকি করছেন। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে এমন হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকল এবং নৌবাহিনীর জন্য দুটি নতুন গাইডেড-মিসাইল ডেস্ট্রয়ার।

চলতি বছর দ্বিতীয় ডেস্ট্রয়ারটি উদ্‌বোধনের সময় উল্টে যাওয়ার ঘটনায় আলোচনায় আসে। পরে জাহাজটি আবার ভাসানো হয় এবং মেরামত করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নতুন সাবমেরিন পরিদর্শনের সময় কিম বলেন, ‘ডেস্ট্রয়ার ও পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণ আমাদের নৌবহরের যুদ্ধক্ষমতা জোরদারে এক বিশাল অগ্রগতি।’


প্রত্যাবর্তনের পর ইতিহাস গড়েছেন যেসব বিশ্বনেতা

বেনজির ভুট্টো, রুহুল্লাহ খোমেনি, ভ্লাদিমির লেনিন ও নেলসন ম্যান্ডেলা (বাঁ থেকে)। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নির্বাসন কিংবা দীর্ঘ কারাবাসই রাজনৈতিক জীবনের ইতি নয়। ইতিহাসে এমন বহু উদাহরণ রয়েছে, যেখানে কঠিন দমন–পীড়ন ও নির্বাসনের পর নিজ দেশে ফিরে ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছেছেন বিশ্বনেতারা। জনগণের সমর্থন, আদর্শিক দৃঢ়তা ও দীর্ঘ সংগ্রামের শক্তিতে তারা রচনা করেছেন নতুন ইতিহাস। এমনই চারজন বিশ্বনেতার ফিরে আসার গল্প তুলে ধরা হলো:

বেনজির ভুট্টো (পাকিস্তান): পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউল হকের শাসনামলে রাজনৈতিক নিপীড়নের মুখে আশির দশকে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন বেনজির ভুট্টো। যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত অবস্থাতেও তিনি পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতৃত্ব দেন এবং রাজনৈতিক আন্দোলন চালিয়ে যান। জিয়াউল হকের পতনের পর দেশে ফিরে ১৯৮৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মুসলিম বিশ্বের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাস গড়েন। পরবর্তীতে ১৯৯৩ সালেও তিনি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

রুহুল্লাহ খোমেনি (ইরান): ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির স্বৈরশাসনের বিরোধিতা করায় ১৯৬৪ সালে দেশত্যাগে বাধ্য হন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি। তুরস্ক, ইরাক ও ফ্রান্সে নির্বাসিত জীবন কাটালেও সেখান থেকেই তিনি ইরানে বিপ্লবী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। ১৯৭৯ সালে শাহের পতনের পর দেশে ফিরে ইসলামী বিপ্লবের নেতৃত্ব দেন এবং ইরানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন।

ভ্লাদিমির লেনিন (রাশিয়া): রাশিয়ার জার শাসনের বিরুদ্ধে বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের কারণে একাধিকবার গ্রেপ্তার ও নির্বাসনের শিকার হন ভ্লাদিমির লেনিন। সাইবেরিয়া ও ইউরোপে নির্বাসিত অবস্থায় তিনি বলশেভিক মতাদর্শ বিকশিত করেন। ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় ফিরে এসে অক্টোবরে বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন এবং পরবর্তীতে সোভিয়েত রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।

নেলসন ম্যান্ডেলা (দক্ষিণ আফ্রিকা): দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাকে ১৯৬৪ সালে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। টানা ২৭ বছর কারাভোগের পর ১৯৯০ সালে মুক্তি পান তিনি। মুক্তির পর শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে বর্ণবাদী শাসনের অবসান ঘটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৪ সালে দেশের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়ে নতুন যুগের সূচনা করেন ম্যান্ডেলা।


ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন জোহরান মামদানি

জোহরান মামদানি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি আগামী ১ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর ‘ইসলামোফোবিয়া এবং ফিলিস্তিনবিরোধী বর্ণবাদের বিরুদ্ধে’ ধারাবাহিকভাবে লড়াই করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার নিউইয়র্ক সময় রাতের দিকে এক্স-পোস্টে তিনি বলেন, ‘মেয়র হিসেবে... আমি সকল নিউইয়র্কবাসীকে লালন করা, সুরক্ষা দেওয়া এবং প্রতিটি কোণে ইসলামোফোবিয়া ও ফিলিস্তিনি-বিরোধী বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করাকে আমার দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করব।’

মামদানি ব্রাউন ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত ২১ বছর বয়সি ফিলিস্তিনি-আমেরিকান ছাত্র মুস্তাফা খারবুচের সঙ্গে তার কথোপকথনের বর্ণনা দেন। সম্প্রতি ব্রাউন ইউনিভার্সিটি গুলি চালানোর ঘটনায় তাকে মিথ্যাভাবে দোষারোপ করা হয়। এরপর তাকে অনলাইনে হয়রানি এবং মৃত্যুর হুমকি দেওয়া হয়েছিলেন।

আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, অতি-ডানপন্থি সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট এবং ষড়যন্ত্র-তাত্ত্বিকরা আরবের ঐতিহ্যবাহী ‘কেফিয়া’ পরা মুস্তাফার একটি ছবি ভাইরাল করে দেয়। পোস্টে তারা ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টা চালায় যে, এসব সন্ত্রাসী ঘটনা ফিলিস্তিন কিংবা সংশ্লিষ্ট মুসলিমরাই ঘটায়। ঘটনার সঙ্গে ওই ছাত্রের সম্পর্ক থাকার কোনোরকম প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও এসব প্রচারণা চলে।

যদিও পর প্রকৃত সন্দেহভাজনকে আলাদাভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। মামদানি এই ঘটনাটিকে ‘ইসলামফোবিয়া এবং ফিলিস্তিনি-বিরোধী বর্ণবাদের কারণে বাস্তব জগতের ক্ষতির একটি স্পষ্ট উদাহরণ' হিসাবে বর্ণনা করেছেন।’


২০২৫: তুরস্কের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলের সফলতার বছর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২০২২ সালের শুরুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তুরস্কের সামনে আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম জটিল কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হাজির করে। এমন এক সময়ে যুদ্ধ শুরু হয়, যখন একদিকে পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে এবং অন্যদিকে রাশিয়ার সঙ্গে আঙ্কারার সম্পর্ক একসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল ছিল।

যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানির দাম বেড়ে যায়, বৈশ্বিক আর্থিক পরিস্থিতি কঠোর হয় এবং রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা তুরস্ককে কঠিন অবস্থানে ফেলে। ন্যাটোর সদস্য হয়েও মস্কোর সঙ্গে গভীর অর্থনৈতিক, জ্বালানি ও পর্যটন সম্পর্ক বজায় রাখা তুরস্কের জন্য সহজ ছিল না। অনেকেই ধারণা করেছিলেন, আঙ্কারাকে হয় পশ্চিম নয় রাশিয়া—এই দুইয়ের একটিকে বেছে নিতে হবে।

চার বছর পর সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। বরং তুরস্ক কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রেখে এই সংকটকে সুযোগে রূপান্তর করেছে এবং ইউক্রেন যুদ্ধ ও এর বৈশ্বিক প্রভাব মোকাবিলায় দক্ষ ভূরাজনৈতিক খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

ইউক্রেন যুদ্ধে মধ্যস্থতার ভূমিকা: ইউক্রেন যুদ্ধে প্রথমে আনতালিয়া শান্তি আলোচনা, এরপর কৃষ্ণসাগর শস্যচুক্তি, বন্দিবিনিময় এবং সাম্প্রতিক ইস্তাম্বুল শান্তি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তুরস্ক নিজেকে কার্যকর মধ্যস্থতাকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে পশ্চিমা দেশ ও রাশিয়া—উভয়ের কাছেই আঙ্কারা কিছুটা ছাড় আদায় করতে পেরেছে।

এই কূটনৈতিক অবস্থান তুরস্ককে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সীমার মধ্যে থেকেও রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়েছে, যা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। একইসঙ্গে তুরস্ক ইউক্রেনকে বায়রাকতার টিবি-২ ড্রোনসহ গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহায়তা দিয়েছে, যা কিয়েভ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখে।

ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন ও তুরস্কের লাভ: ইউক্রেন যুদ্ধ দক্ষিণ ককেশাসেও বড় পরিবর্তন আনে। রাশিয়া ইউক্রেনে ব্যস্ত থাকায় আজারবাইজান নাগোর্নো-কারাবাখে সামরিক সাফল্য অর্জন করে, যেখানে তুরস্কের ড্রোন প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এতে তুরস্কের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি বৈশ্বিকভাবে নতুন পরিচিতি পায়।

একই সঙ্গে আর্মেনিয়া–আজারবাইজান শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা তুরস্ক–আর্মেনিয়া সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথ খুলে দিতে পারে। সীমান্ত খুললে মধ্য এশিয়া ও চীনের সঙ্গে তুরস্কের বাণিজ্যিক যোগাযোগ আরও শক্তিশালী হবে।

সিরিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব: ইউক্রেনে রাশিয়ার জড়িয়ে পড়া এবং সিরিয়ায় ইরান ও হিজবুল্লাহর দুর্বলতা বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনে ভূমিকা রাখে। তুরস্কের সামরিক ও কৌশলগত সহায়তায় বিরোধী শক্তিরা দামেস্ক দখলে সক্ষম হয়।

সিরিয়া নিষেধাজ্ঞামুক্ত হয়ে পুনর্গঠনের পথে গেলে তুর্কি নির্মাণ ও উৎপাদন খাত বড় সুবিধা পেতে পারে। একই সঙ্গে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া এগোলে তা তুরস্কের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি ও ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হবে।

ইউরোপ ও বৈশ্বিক সম্পর্ক: ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপের নিরাপত্তা ভাবনাকে নতুন করে সামনে এনেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা দুর্বল হওয়ায় ইউরোপ বিকল্প প্রতিরক্ষা অংশীদার খুঁজছে। এই প্রেক্ষাপটে শক্তিশালী সেনাবাহিনী ও উন্নত প্রতিরক্ষা শিল্পের কারণে তুরস্ক বড় লাভবান হতে পারে।

ইতোমধ্যে বায়কার–পিয়াজিও এবং লিওনার্দোর মতো চুক্তি ইউরোপ–তুরস্ক প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ইঙ্গিত দিয়েছে। একই সঙ্গে কাস্টমস ইউনিয়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে তুরস্কের ইউরোপীয় ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্তির আলোচনাও নতুন গতি পেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যে নতুন অবস্থান: গাজা শান্তি প্রক্রিয়ায় গ্যারান্টর হিসেবে তুরস্কের ভূমিকা ওয়াশিংটনে ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে। শান্তি রক্ষায় সেনা পাঠানোর প্রস্তাব দিয়ে আঙ্কারা বাস্তবভিত্তিক অবস্থান দেখিয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে। এর ফলে এফ-৩৫ কর্মসূচিতে তুরস্কের প্রত্যাবর্তন ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।

একই সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব এবং এমনকি চীনের সঙ্গেও তুরস্কের সম্পর্ক উন্নতির পথে। সব মিলিয়ে, ২০২৫ সাল তুরস্কের দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত ধৈর্যের ফলপ্রসূ বছর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। জটিল বৈশ্বিক সংকটকে কাজে লাগিয়ে তুরস্ক তার কূটনৈতিক, সামরিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করেছে। উন্নত বৈদেশিক সম্পর্কের পাশাপাশি এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশের অর্থনীতিতেও।


ইমরান খানের দেখা না পাওয়ায় উৎকণ্ঠায় পরিবার-দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে বন্দি আছেন। তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের করার অভিযোগ করেছেন দলের অন্য নেতারা। গ্রেপ্তার ও কারাগারে পাঠানোর পর থেকেই তার সঙ্গে দেখা করা নিয়ে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে এসেছে দেশটির সরকার। এতে ইমরানের পরিবার ও দল তার শারীরিক অবস্থা এবং কারাবন্দিত্বের পরিবেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এদিকে আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কারাগারে সাক্ষাৎ বন্ধ থাকার মধ্যেই দেশটির সংসদবিষয়ক মন্ত্রী তারিক ফজল চৌধুরী গত সোমবার জানান, ইমরানের সঙ্গে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কেউ সাক্ষাৎ করতে পারবেন না।

দেশটির গণমাধ্যম জিও নিউজের ‘ক্যাপিটাল টক’ নামের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

তবে মন্ত্রী তারিক ফজল চৌধুরী দাবি করেন, কারাগার কোনো ‘রাজনৈতিক দলের সদর দপ্তর নয়’। পিটিআই ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ও এর প্রধানদের বিরুদ্ধে বিষোদ্‌গার করছে’ বলেও সমালোচনা করেন তিনি।

পিএমএল-এন-এর এই নেতা আরও বলেন, অতীতে আদিয়ালা কারাগারে পিটিআই নেতারা তাদের প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে নিয়মিত দেখা করেছেন এবং তাতে সরকারের কোনো আপত্তি ছিল না।

কিন্তু তার অভিযোগ, সেসব সাক্ষাৎ পরবর্তী সময়ে কারাগারের বাইরে রাজনৈতিক সংবাদ সম্মেলনে রূপ নেয় এবং এমন সব বয়ান তৈরি করা হয়, যা ‘ভারতীয় গণমাধ্যম লুফে নেয়’।

মন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় পিটিআই নেতা আলী জাফর বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী ‘নির্জন কারাবাস’ নির্যাতনের শামিল।

তিনি আরও যোগ করেন, তারিক ফজলের এই বক্তব্য মানবাধিকার এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি।

গত সপ্তাহে আদিয়ালা কারাগারের সামনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে তার বোন, দলীয় নেতা ও কর্মীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় জলকামান ব্যবহার করে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।


banner close