মধ্য গাজার নুসেইরাতে জাতিসংঘের একটি স্কুলে হামলা করেছে ইসরায়েল। এতে প্রায় ৪০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, স্কুলটিতে শত শত বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিল। ইসরায়েল এই হামলার কথা স্বীকার করেছে।
একটি যুদ্ধবিমান থেকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র জাতিসংঘের স্কুলটির সবচেয়ে ওপরের তলার দুটি শ্রেণিকক্ষে আঘাত হানে। বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে ঘটনাস্থলের ধ্বংসযজ্ঞ আর রক্ত আর ছিন্নবিচ্ছিন্ন মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডাব্লিউয়ের স্কুলে ইসরায়েলকে ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞ চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
হামলার পর উদ্ধারকারীরা হতাহতদের নিকটস্থ দেইর আল বালাহ শহরের হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। হামাস জানায়, নুসেইরাত শরণার্থীশিবিরে জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুলটিতে হামলায় নিহতদের মধ্যে ১৪ শিশু ও ৯ নারী রয়েছেন। এ ঘটনায় ৭০ জনের বেশি আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ শিশু ও ১৮ নারী রয়েছেন।
এদিকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে আন্তর্জাতিক বিচারালয়ে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় গণহত্যা চালানোর মামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগ দিচ্ছে স্পেন। এর আগে চিলি ও মেক্সিকো এই মামলায় দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগ দেয়।
অন্যদিকে গাজায় সংঘাত অবসানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তুলে ধরা যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিষয়ে একটি মিলিত বিবৃতি তুলে ধরেছে হোয়াইট হাউস।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, বুলগেরিয়া, কানাডা, কলম্বিয়া, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, সার্বিয়া, স্পেন, থাইল্যান্ডের নেতারা বিবৃতিতে সমর্থন জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত- দুই দেশই যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে গণতন্ত্র দেখতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইরিক গারসেটি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ডব্লিউআইওএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এই রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতন্ত্রই বাংলাদেশে নতুন অধ্যায় খুলে দিতে পারে।
বৈশ্বিক অঙ্গণে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের একসঙ্গে কাজ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা অতীতের কোনো বিষয় না, বর্তমানে তারা যেভাবে একসঙ্গে কাজ করছে, এর আগে কখনোই এমনটি ঘটেনি।’
এই প্রথম বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেছেন ভারতে নিযুক্ত এই মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
ইরিক গারসেটি বলেন, আমরা দুই দেশই শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক দক্ষিণ এশিয়া দেখতে চাই। এই নীতিতে একমত ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। আমরা এই নীতির ভাগিদার।
এ ক্ষেত্রে দুই দেশ সমন্বয় করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এই রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই- বাংলাদেশ কিংবা যে কোনো দেশই হোক না কেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করা উচিত না। আমরা মনে করি, আমাদের একটি সুযোগ আছে।
সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের ইকোনোমিক সেক্রেটারির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিক। বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ নিজেই এক টুইটে এ তথ্য জানিয়েছেন।
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে।
জানা গেছে, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নিয়ে ব্যাপক চাপের মুখে ছিলেন তিনি।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান মঙ্গলবার তার পদত্যাগের বিষয়টি জানিয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান তিনি। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।
লন্ডনে হাসিনা ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া ছাড়াও; সাবেক এক বাংলাদেশি এমপির কাছ থেকে ২০১৯ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের দুটি টিকিট নিয়েছিলেন টিউলিপ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অন্যান্য আরও আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এসবের মধ্যে দেশটির বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি টিউলিপকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছিল। তারা বলছিল, টিউলিপের ওপর ব্রিটেনের দুর্নীতি প্রতিরোধের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারই নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়েছে। এতে তিনি মন্ত্রিত্বের দায়িত্ব পালনের নৈতিকতা হারিয়েছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি।
সবচেয়ে কম বয়সে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই বলেছেন, গাজার শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাইল। এছাড়া তিনি আফগানিস্তানে তালেবান শাসনকে বৈধতা না দিতেও মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী ‘ডন’ পত্রিকা এই খবর জানিয়েছে।
ইসলামাবাদে ‘মুসলিম সম্প্রদায়ের নারী শিক্ষা: চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে মালালাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষা মন্ত্রীরা অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে পাকিস্তানের একটি স্কুলে পড়ার সময় স্থানীয় তালেবানদেন গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে দেশ ছাড়েন ১৫ বছর বয়সী মালালা। তবে সুস্থ হয়ে ফিরেই নারী শিক্ষার অধিকার নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। এরমধ্যে হাতে গোনা দু’-একবার পাকিস্তান সফরে যান মালালা। এবার নিজ দেশে নারী শিক্ষা বিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দেন এই নোবেল বিজয়ী।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বক্তব্য রাখেন মালালা। ইসরাইলের চলমান আগ্রাসন গাজার শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে বলে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
উদ্বেগ প্রকাশ করে মালালা বলেন, ইসরাইল গাজার ৯০ শতাংশেরও বেশি স্কুল ধ্বংস করে দিয়েছে। সেই সাথে স্কুল ভবনে আশ্রয় নেওয়া নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালানোরও তীব্র নিন্দা জানান তিনি। ইসরাইলের আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন মালালা।
এদিকে, আফগানিস্তানের তালেবানদের বৈধতা না দিতে মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মালালা ইউসুফজাই। তিনি বলেন,তালেবানের শাসনামলে নারী শিক্ষার অগ্রগতি স্বপ্ন দেখা বৃথা। তালেবান শাসকরা শতাধিক আইন প্রয়োগ করেছে, যা নারীদের শিক্ষা থেকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে।
এর আগে, সম্মেলনের প্রথমদিন বক্তব্য রাখেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৫০ জনেরও বেশি শিক্ষক, গবেষক ও মন্ত্রী যোগ দেন। পাশাপাশি ইউনেস্কো, ইউৃনিসেফও ওয়াল্ড ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা যোগ দেন।
জাপানে সোমবার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ৯। স্থানীয় সময় গতকাল রাত ৯টা ১৯ মিনিটে দক্ষিণ জাপানের কিউশু অঞ্চলে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের পরপরই ওই অঞ্চলে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
টোকিও থেকে এএফপি আজ মঙ্গলবার এই খবর জানায়।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) জানিয়েছে, সোমবার ৬ দশমিক ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূুমিকম্পে কেঁপে উঠেছে কিউশু অঞ্চল। তবে ভূমিকম্পে তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্পের পর মিয়াজাকি ও কোচির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রিফেকচারে এক মিটার উচ্চতার ঢেউয়ের বিষয়ে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা এক্সে জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সুনামি সতর্কতা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত সমুদ্রে বা উপকুলের দিকে না যাওয়ার পরমর্শ দিয়েছে।
জাপানের সরকারি গণমাধ্যম এনএইচকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়াজাকি শহরে ইতোমধ্যে ২০ সেন্টিমিটার উচ্চতার ঢেউ রেকর্ড করা হয়েছে। প্রাদেশিক এই রাজধানীতে প্রায় ৪ লাখ মানুষ বসবাস করছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর পশ্চিম জাপানের ইকাতা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্প যে অঞ্চলে আঘাত হেনেছে তার কাছাকাছি এলাকায় দু’টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রু চালু রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, আগামী পাঁচ থেকে সাত বছরে গাজার বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনে কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন ডলার বা আরও বেশি অর্থের প্রয়োজন হতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাথমিক হিসেবে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গাজা থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি ভূখন্ডে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রিক পিপারকর্ন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে অনেক বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন হতে পারে।’
তিনি বলেছেন, ‘গাজার শুধুমাত্র স্বাস্থ্য খাত পুনর্গঠনের জন্য তার দলের প্রাথমিক অনুমান হলো প্রথম দেড় বছরের জন্য ৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং তারপর পাঁচ থেকে সাত বছরের জন্য ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে।’
পিপারকর্ন বলেছেন, ‘আমরা সবাই ভালো করে জানি যে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ অকল্পনীয়। আমি আমার জীবনে বিশ্বের অন্য কোথাও এমন পরিস্থিতি দেখিনি।’
এদিকে ডব্লিওএইচও প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রিয়াসিস এরই মধ্যে বলেছেন, ‘গাজার ৯০ শতাংশ হাসপাতাল ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে।’
বুধবার মধ্যস্থতাকারীদের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে, ইসরাইল এবং হামাস অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে। যাকে তিনি ‘সেরা খবর’ বলে উল্লেখ করেছেন।
গেব্রিয়াসিস আশা প্রকাশ করেছেন, এই চুক্তি ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সম্পর্কের ইতিহাসের সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটাবে।
তিনি বলেছেন, ‘আসুন আমরা সবাই এই খবরকে অত্যন্ত স্বস্তির সাথে স্বাগত জানাই। কিন্তু দুঃখও আছে যে, চুক্তিটি এতো দেরিতে হতে যাচ্ছে যখন সংঘর্ষে হাজার হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছেন।
মধ্যস্থতাকারীরা যদিও বলেছেন, চুক্তিটি ১৯ জানুয়ারি রোববার থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের আকস্মিক হামলার পর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরাইল। টানা ১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে ইসরাইলের হামলা। এরই মধ্যে ইসরাইলের হামলায় গাজায় ৪৬ হাজারেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী গাজায় নিহত শিশুর সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার।
নতুন করে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় বিপদে পড়েছে চীন ও ভারত। এতে করে এই দুই দেশকে জ্বালানি তেল আমদানিতে খুঁজতে হবে বিকল্প বাজার। অন্যদিকে তেল বিক্রির বড় বাজার হারালে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠবে রাশিয়ার জন্য।
চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগ রাশিয়ার জ্বালানি তেলের ওপর আরেক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ক্ষমতা ছাড়ার আগমুহূর্তে এটি বাইডেন প্রশাসনের রাশিয়ার অর্থনীতিতে সর্বশেষ আঘাত বলে অভিমত ব্যবসা বিশ্লেষকদের।
রাশিয়ার তেল উৎপাদনকারী প্রধান দুটি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম এবং সারগেটনেফটগ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বড় ক্ষতি হয়েছে ১৮৩ তেলবহনকারী ভেসেল জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায়।
যেসব জাহাজের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, এর বড় একটি অংশ চীন-ভারতে জ্বালানি তেল পরিবহন করে। ২০২২ সালে জি-৭ দেশগুলো তেলের দাম বেধে দিলে রাশিয়া বাজার ধরতে বেছে নেয় এশিয়াকে। এদিকে সস্তায় তেল কিনতে পারায় রাশিয়া হয়ে উঠেছে চীন-ভারতের মুনাফার বড় বাজার।
নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত জাহাজগুলো ২০২৪ সালে মোট ৫৩০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রফতানি করেছে, যা দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানির ৪২ শতাংশ। রফতানি হওয়া এ তেলের ৩০০ মিলিয়ন ব্যারেলই গিয়েছে চীনে এবং বাকিটা ভারতের বাজারে।
বাণিজ্যভিত্তিক পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান কেপলারের বিশ্লেষণ বলছে, রুশ জ্বালানি তেলের বাণিজ্যে এটা বড় রকমের ধাক্কা। সমুদ্রে রাশিয়ার তেল বহনকারী জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বিকল্প খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত ভুগতে হবে দেশটিকে।
এদিকে রুশ তেলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে বিশ্ববাজারে বাড়তে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম। সর্বশেষ ব্রেন্ট ক্রুড জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৮০ ডলার ছাড়িয়েছে, যা নতুন বছরে সর্বোচ্চ।
গেল বছর প্রথম ১১ মাসে ভারত ৩৬ শতাংশ জ্বালানি তেল আমদানি করেছে রাশিয়া থেকে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় সাড়ে ৪ শতাংশ বেশি। একইসময়ে চীনের ২০ শতাংশ জ্বালানি তেলের জোগানদাতা ছিল রাশিয়া, যা আগের বছরের থেকে ২ শতাংশ বেশি।
হঠাৎ করে রাশিয়ার ওপর এমন নিষেধাজ্ঞায় ভারত-চীনকে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকার দিকে ঝুঁকতে হবে। রাশিয়া ও ইরানের তেল সরবরাহ কমে আসায় মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম এমনিতেই ঊর্ধ্বমুখী। এতদিন ভারত-চীন রাশিয়া থেকে সস্তায় তেল কিনতে পারলেও এবার বেশি দামে বিকল্প বাজারমুখী হওয়া ছাড়া দেশ দুটির সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।
এরইমধ্য সরবরাহ কমায় জ্বালানি তেলের বাজারে আবারও শঙ্কা জেগেছে অস্থিরতা সৃষ্টির। তেলের দাম বেড়ে গেলে তার প্রভাব প্রতিটি পণ্যের ওপর পড়বে বলে মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। ৭৮ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতা ওয়াশিংটনের ইউএস ক্যাপিটলে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শপথ নেবেন এবং চার বছর আগে অপমানজনকভাবে ছেড়ে যাওয়া হোয়াইট হাউসে বিজয়ীর বেশে ফিরবেন।
শপথ গ্রহণের আগের দিন তিনি একটি তারকাবহুল ‘মেক আমেরিকা গ্রেট ভিক্টরি ‘র্যালি’ আয়োজন করবেন। এতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধনী ইলন মাস্ক এবং ‘ওয়াই.এম.সি.এ.’ গানটির জন্য বিখ্যাত ব্যান্ড ভিলেজ পিপল পারফর্ম করবেন বলে জানা গেছে।
বিলিয়নিয়ার ট্রাম্পের এই প্রত্যাবর্তন একটি অসাধারণ যাত্রার সমাপ্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে তিনি দুইবারের প্রাণনাশের চেষ্টা ও একটি ঐতিহাসিক ফৌজদারি মামলা পেছনে ফেলে প্রেসিডেন্সি পুনরুদ্ধার করেছেন।
তবে ৪৭তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের এই উদযাপনে বাগড়া দিতে পারে একমাত্র আবহাওয়া। একটি প্রাণঘাতী 'পোলার ভর্টেক্স' তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে ৪০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ঠান্ডা আবহাওয়ার শঙ্কা তৈরি করেছে। আবহাওয়া চরম আকার ধারণ করলে অনুষ্ঠানটি ঘরের ভেতরে স্থানান্তরিত হতে পারে।
প্রতি চার বছর পরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ করেন। নবনির্বাচিত বা পুনর্নির্বাচিত যিনিই হোন, এই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান নতুন নেতার ব্যক্তিগত ছোঁয়ায় অনন্য হয়ে ওঠে।
এখানে সোমবারের অনুষ্ঠানের এক ঝলক তুলে ধরা হলো।
শপথ অনুষ্ঠান
মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী নতুন প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শুরু হয় ২০ জানুয়ারি দুপুরে (যদি তা রবিবার পড়ে, তবে পরের দিন)। প্রেসিডেন্ট শপথ গ্রহণ করেন। সম্প্রতি প্রেসিডেন্টরা ক্যাপিটলের পশ্চিম লনে ন্যাশনাল মলের দিকে মুখ করে নির্মিত অস্থায়ী মঞ্চে শপথ নিয়েছেন।
সাধারণত, শপথ গ্রহণ পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। সোমবার এটি হবে জন রবার্টসের দ্বিতীয়বার ট্রাম্পের জন্য শপথ গ্রহণ পরিচালনা। শপথ শেষে ট্রাম্প তার উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন।
ক্যাপিটলে ট্রাম্পের এ উদ্বোধনী ভাষণের দিকে তাকিয়ে থাকবে আমেরিকা ও বিশ্ব, যেখানে তিনি তার নতুন মেয়াদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন। ২০১৭ সালে তার প্রথম ভাষণ 'আমেরিকান কারনেজ' নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল। এবারও তিনি সাহসী ও শক্তিশালী বার্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। একই দিন নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও একই মঞ্চে শপথ নেবেন।
বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতি
ট্রাম্পের এই শপথ অনুষ্ঠানে প্রযুক্তি জগতের শীর্ষস্থানীয় ধনী ব্যক্তিদের উপস্থিতি হবে একটি বড় চমক। ইলন মাস্ক, জেফ বেজোস, মার্ক জাকারবার্গ এবং টিকটকের সিইও শৌ চিউসহ আরও অনেকে এই অনুষ্ঠানে ভিআইপি আসনে থাকবেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ এবং বারাক ওবামা তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে উপস্থিত থাকবেন। তবে মিশেল ওবামা আসবেন না। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিনটন এবং বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসও উপস্থিত থাকবেন।
প্রথাগতভাবে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো না হলেও, ট্রাম্প ইতালি ও হাঙ্গেরির ডানপন্থী নেত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও ভিক্টর অরবান, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জাভিয়ার মিলেই এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
জনসমাগম
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানে বিপুল জনসমাগম আশা করা হচ্ছে। ২২০,০০০ এরও বেশি টিকিট বিতরণ করা হয়েছে। যারা টিকিট পাননি, তারা ন্যাশনাল মলে বড় স্ক্রিনে অনুষ্ঠান সরাসরি উপভোগ করতে পারবেন। শপথের পর ট্রাম্প ক্যাপিটল থেকে হোয়াইট হাউসে একটি জমকালো প্যারেডের মাধ্যমে যাত্রা করবেন।
নির্বাহী আদেশ ও কর্মসূচি
ট্রাম্প তার দায়িত্বের প্রথম দিনেই একাধিক গুরুত্বপূর্ণ নির্বাহী আদেশ জারি করার পরিকল্পনা করছেন। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপক অভিবাসী বহিষ্কার কর্মসূচি চালু করা, তেল উত্তোলন বৃদ্ধি করা এবং ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হামলায় অভিযুক্ত কিছু সমর্থককে ক্ষমা করা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সংগীত
২০১৭ সালের শপথ অনুষ্ঠানে তারকাদের উপস্থিতি কম ছিল। কিন্তু এবার ট্রাম্পের মঞ্চ আলোকিত করবেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীরা। কান্ট্রি গায়ক ক্যারি আন্ডারউড 'আমেরিকা দ্য বিউটিফুল' পরিবেশন করবেন। লি গ্রিনউড তার বিখ্যাত গান 'গড ব্লেস দ্য ইউএসএ' গাইবেন।
রোববারের প্রাক-উদ্বোধনী র্যালিতে ভিলেজ পিপল, কিড রক এবং বিলি রে সাইরাস পারফর্ম করবেন। এছাড়া জেসন অ্যালডিন, রাসকাল ফ্ল্যাটস এবং গ্যাভিন ডিগ্রোসহ আরও অনেক তারকা তিনটি গালা অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
গালা ও র্যালি
ট্রাম্প সোমবার রাতে তিনটি গালা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এর পাশাপাশি, রোববার রাতে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটাল ওয়ান এরিনায় 'মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন ভিক্টরি র্যালি' অনুষ্ঠিত হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর মাত্র কয়েকদিন পরই তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন থেকেই বড় ধরনের পরিবর্তনের বার্তা দিয়ে আসছেন বিতর্কিত এই রিপাবলিকান নেতা, যা সম্ভব, তবে ক্যাম্পেইনের সময় দেওয়া বক্তব্য আর সরকার চালানো এক জিনিস নয়।
ট্রাম্প সরকার পরিচালনার জন্য যেসব ব্যক্তিকে বাছাই করেছেন এবং তাদের অগ্রাধিকারই নির্ধারণ করে দেবে ট্রাম্প আসলে কতটা বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটাতে পারবেন। প্রথমেই ট্রাম্পকে পরীক্ষা দিতে হবে পররাষ্ট্রনীতিতে। শুরু থেকেই ট্রাম্প বলে আসছেন ইউক্রেন যুদ্ধ একদিনের মধ্যে শেষ করে দেবেন। যদিও এ ব্যাপারে কাজ করতে তাকে বেগ পেতে হবে। ট্রাম্প যদি নিরাপত্তা গ্যারান্টি দিয়ে ইউক্রেনকে ভূখণ্ড হারানোর বিষয়টি গ্রহণ করাতে চাপ দেন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।
তবে তিনি যদি একতরফা বা ভারসাম্যহীন শান্তি চুক্তির জন্য ইউক্রেনকে চাপ দেন তাহলে মূলত পুতিনেরই জয় হবে। তখন ইউক্রেনের অস্তিত্ব নির্ভর করবে ইউরোপের ওপর। এক্ষেত্রে আমেরিকার অঙ্গীকার নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ পাবে চীনসহ অন্যরা।
তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা ক্ষেত্র হয়ে উঠবে মধ্যপ্রাচ্যও। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি করানোর ক্ষেত্রে সফলতা দেখাতে পারেন ট্রাম্প। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুও এক্ষেত্রে ট্রাম্পকে বড় জয় এনে দিতে চাইবেন। তবে ট্রাম্প ইসরায়েলকে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দিকে নাও নিয়ে যেতে পারেন। সেটা হলো ফিলিস্তিন রাষ্ট্র।
তাছাড়া ইরানের ওপর আরও কঠোর অবস্থানে যেতে পারেন তিনি। তবে প্রথম মেয়াদের মতো নিষেধাজ্ঞানীতি কাজে নাও আসতে পারে। কারণ ইরান তেল বিক্রির জন্য এরই মধ্যে একটি ছায়া নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে। যেমন চীন। কীভাবে চীনকে মোকাবিলা করা যায় সেটা হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক ইস্যু। চীনের অর্থনীতি বর্তমানে কিছুটা দুর্বল হলেও ট্রাম্পের প্রথম আমলের চেয়ে চীন অনেক বেশি আগ্রাসী। ফলে দক্ষিণ চীন সাগরে সংকটে পড়তে পারেন ট্রাম্প। তাই তিনি সেখানে ফিলিপাইনকে সহায়তা করবেন নাকি ত্যাগ করবেন। সেটাও একটা বড় পরীক্ষা হবে।
শুল্ক নীতিতে ট্রাম্প কতটা ভয়ংকর হতে পারেন সেটা প্রকাশ করবে চীন। এরই মধ্যে ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন চীন থেকে আমদানির ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এটা কি দরকষাকষি নাকি আমেরিকার অর্থনীতিকে চীনের থেকে আলাদা করার সত্যিকারের ইচ্ছা? যা ২০২৫ সালেই স্পষ্ট হবে। তালিকার শীর্ষে চলে আসবে অবৈধ অভিবাসন। গণহারে প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়াও ঘটতে পারে। ট্রাম্পের প্রথম আমলের ট্যাক্স প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালের শেষ দিকে। তাই ট্যাক্স কাটও গুরুত্ব পাবে।
প্রতিবেশী হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়ে ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, এই সম্পর্কে বিদ্বেষ কোনো পক্ষের জন্যই ভালো ফল বয়ে আনবে না।
সোমবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই দেশের সেনাবাহিনী পর্যায়ে সম্পর্কে কোনো সমস্যা নেই। আর রাষ্ট্রীয় সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করা যাবে তখনই, যখন ‘নির্বাচিত সরকার’ থাকবে।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পালাবদলের পর ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও সামরিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতের সেনাপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার (কৌশলগত অংশীদার)। কোনো ধরনের শত্রুতা দুই দেশের জন্যই ক্ষতিকর। তাতে কারও স্বার্থ চরিতার্থ হবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশী। আমাদের দুই দেশকেই একসঙ্গে বাস করতে হবে। পরস্পরকে জানতে ও বুঝতে হবে। কোনো ধরনের শত্রুতা কারও পক্ষে ভালো নয়। দুই দেশের সামরিক সম্পর্ক একেবারে ঠিক রয়েছে; কিন্তু দুই দেশের সার্বিক সম্পর্কের কথা যদি বলেন তাহলে বলব, নির্বাচিত সরকার এলেই তা স্বাভাবিক হবে।’
বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেন, সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে তিনি যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। গত আগস্টে রাজনৈতিক পালাবদলের সময় সর্বদা তারা যোগাযোগের মধ্যে ছিলেন। এমনকি গত ২৪ নভেম্বরও তাদের দুজনের মধ্যে ভিডিও মারফত আলোচনা হয়েছে। তারা সব সময় নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখেছেন। এখনো সেই যোগাযোগ অব্যাহত আছে।
‘বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার বিষয়ে যদি বলতে হয়, সেটা আগের মতোই চলছে। আমাদের অফিসাররা সেখানে এনডিসিতে যোগ দিয়েছেন। ওই পক্ষ থেকেও কোনো সমস্যা নেই। শুধু একটা বিষয়, যৌথ মহড়া যেটা হতো, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে সেটা সাময়িকভাবে স্থগিত আছে। যখনই পরিস্থিতির উন্নতি হবে, আমাদের মহড়াও হবে’, যোগ করেন তিনি।
অবশেষে গাজায় হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরাইলের পূর্ণ মন্ত্রিসভা। এর ফলে পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আগামীকাল থেকে জিম্মি মুক্তি ও বন্দিবিনিময়ে আর কোনো বাধা রইলো না।
শনিবার এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠকের পর শনিবার সকালে ইসরাইল সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ইসরাইল সরকার একটি যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি চুক্তি অনুমোদন করেছে। এর ফলে রোববার থেকে চুক্তিটি কার্যকর হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে।
ইসরাইলি গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় কিছু কট্টরপন্থি নেতা এই চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করে। এমনকি তারপরও নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী চুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। অন্যদিকে আটজন এর বিরোধিতা করেছেন।
এর আগে শুক্রবার বিকেলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করে ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ভোটাভুটির পর চুক্তি অনুমোদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।
তখন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সমস্ত রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও মানবিক দিক পর্যবেক্ষণের পর এবং প্রস্তাবিত চুক্তি যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনকে সমর্থন করে’ এটা বোঝার পর চুক্তিটি গ্রহণ করেছে নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ‘সরকারকে প্রস্তাবিত রূপরেখা অনুমোদন করার’ সুপারিশও করেছে।
মন্ত্রিসভায় ভোটাভুটির পর শনিবার ভোরে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, ‘সরকার জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে।’
এছাড়া আইন মন্ত্রণালয় শুরুতেই মুক্তি দেওয়ার লক্ষ্যে ৯৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দির তালিকা প্রকাশ করেছে। এরমধ্যে ৬৯ নারী ১৬ পুরুষ এবং ১০ জন শিশু রয়েছে।
চুক্তির শর্তের মধ্যে রয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার করা হবে এবং হামাসের হাতে আটক বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদেরও মুক্তি দেয়া হবে।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দেবে হামাস। যাদের মধ্যে নারী, শিশু ও ৫০ বছরের বেশি বয়সি পুরুষ রয়েছেন।
চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ কার্যকরের বিষয়ে আলোচনা প্রথম ধাপের ১৬তম দিনের মধ্যে শুরু হবে। সেখানে অবশিষ্ট সব ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
তৃতীয় ধাপে অবশিষ্ট মৃতদেহগুলোর ফেরত দেয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা রয়েছে। এই কাজ মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।
বিশ্বে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানে। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলভুক্ত এ দেশটিতে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ৯১ দশমিক ১ জন মারা যায় ধূমপানজনিত কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায়। এমনকি এই হার বৈশ্বিক এবং দক্ষিণ এশিয়ার গড় হারেরও বেশি। বর্তমানে বিশ্বে গড়ে প্রতি ১ লাখ মানুষের মধ্যে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যু হয় ৭২ দশমিক ৬ জনের আর দক্ষিণ এশিয়ায় এ হার ৭৮ দশমিক ১ জন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক গবেষণা সংস্থা গ্যালাপের পাকিস্তান অফিসের গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ‘গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ ২০২৪ ডেটাসেট’ শিরোনামের গবেষণা প্রবন্ধে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গবেষণা প্রবন্ধটিতে বলা হয়েছে, ১৯৯০ থেকে ২০২১- এই ৩০ বছরে পাকিস্তানে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে ৩৫ শতাংশ; কিন্তু এই হ্রাসের হারও প্রতিবেশী দেশ ভারত, দক্ষিণ এশিয়া এবং বৈশ্বিক গড় হিসেবের তুলনায় কম। কারণ ৩০ বছরে ভারতে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুহার হ্রাস পেয়েছে ৩৭ শতাংশ, দক্ষিণ এশিয়ায় গড়ে ৩৮ শতাংশ এবং বিশ্বে গড়ে ৪২ শতাংশ। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং বাংলাদেশের তুলনায় পাকিস্তানে সিগারেটের দাম এখনো সস্তা। দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের সিগারেটের ১০০ প্যাকেট কেনার খরচ মাথাপিছু জিডিপির ৩ দশমিক ৭ শতাংশ। ভারতে এই হার ৯ দশমিক ৮ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ৪ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১২ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে যদিও পাকিস্তানে সিগারেটের দাম ৩৮ শতাংশ বেড়েছে, তবে তারপরও তা আছে প্রায় সর্বস্তরের জনগণের নাগালের মধ্যে।
বিলাল আই গিলানি নামে একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, পাকিস্তানে ধূমপান এবং ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর হার না কমার অন্যতম কারণ সিগারেটের সস্তা দাম। দেশটির একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন ‘পাকিস্তানে যে ধূমপানবিরোধী প্রচার-প্রচারণা চলে না এমন নয়; কিন্তু যে মাত্রায় প্রয়োজন তা হয় না। ফলে জনসচেতনতার অভাব ধূমপান হ্রাস না পাওয়ার একটি বড় কারণ। সূত্র : জিও নিউজ
ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের অবনমন ঘটা সম্পর্ককে আবারও সুসংহত করতে চায় ভারত। শুক্রবার নয়াদিল্লিতে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মাঝে কিছুদিন উভয়পক্ষের বক্তব্য বিবৃতিতে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ পেলেও সম্প্রতি সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণচেষ্টা ঘিরে আবারও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এমনকি দুই দেশই পাল্টাপাল্টি হাইকমিশনার তলব করেছে।
এই অবস্থায় ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক কোন দিকে যাচ্ছে, তা নিয়ে যখন আলোচনা তৈরি হয়েছে, তখন এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব (বিক্রম মিশ্রি) সম্প্রতি বাংলাদেশে গিয়ে স্পষ্টভাবে জানিয়ে এসেছেন, ভারত ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগোতে চায়। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ভারত সুসম্পর্ক চায়, যেন দুই দেশের জনগণের কল্যাণ হয়।
রণধীর বলেন, ‘এটাই আমাদের মনোভাব। বারবার তা বলা হয়েছে। এই মনোভাব ইতিবাচক এবং এই মনোভাবই বহাল থাকবে।’
সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণচেষ্টা ঘিরে উত্তেজনা ছড়ালে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর জবাবে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকেও তলব করে ভারত সরকার। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সীমান্ত চুক্তি পর্যালোচনার কথাও বলেছিলেন।
এসব বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের অস্থায়ী হাইকমিশনারকে ডেকে ভারতের মনোভাবের কথা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। তাকে জানানো হয়েছে, সীমান্ত অপরাধমুক্ত রাখতে ভারত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এ বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় আতশবাজির প্রদর্শনী আয়োজন করতে যাচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। রাজধানী আবুধাবিতে এই রেকর্ড আতশবাজির মধ্য দিয়ে বছরটি শেষ করার পরিকল্পনা করছে দেশটি। শেখ জায়েদ ফেস্টিভ্যালে এই প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে ছয়টি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ভাঙার পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রদর্শনীটি মোট ৫৩ মিনিটের হবে। এর আগে গত নববর্ষের প্রাক্কালে উৎসবে আতশবাজির প্রদর্শনী ৪০ মিনিট স্থায়ী হয়। সেটি পরিমাণ, সময় এবং গঠনের দিক থেকে তিনটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ভাঙে। তবে এ বছর ছয়টি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ভাঙার চেষ্টা করছেন তারা, যার মধ্যে রয়েছে-
১. বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড় ভেন্যুতে’ ৫৩ মিনিটেরও বেশি একটানা আতশবাজি। ২. ছয় হাজার ড্রোন ২০ মিনিট ধরে আকাশ আলোকিত করবে। ৩. তিন হাজারের বেশি ড্রোন প্রথমবারের মতো ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় বায়বীয় চিত্র’ তৈরি করবে। ৪. ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ লেখা সবচেয়ে বড় এরিয়াল ডিসপ্লেতে প্রথমবারের মতো তিন হাজার ড্রোন ব্যবহার করা হবে। ৫. সিনক্রোনাইজড মিউজিক শো’য়ের মাধ্যমে নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়বে ৩ হাজার ড্রোন। ৬. বিশ্বে প্রথমবারের মতো পরিমাণ, নকশা এবং সময়কালের দিক থেকে বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বেশি আতশবাজি প্রদর্শিত হবে। গালফ নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উৎসবটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের জন্য খোলা থাকবে। সেখানে আসন নিতে উৎসবের ওয়েবসাইটে টিকিট নিতে হবে।