শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
৪ পৌষ ১৪৩২

ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ বেনি গানৎজের

সরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে রোববার পদত্যাগের ঘোষণা দেন বেনি গানৎজ। ছবি: রয়টার্স
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১০ জুন, ২০২৪ ১১:০২

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন বেনি গানৎজ। এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রিসভা থেকে সরে গেল মধ্যমপন্থি অংশ।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্থানীয় সময় রোববার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সংবাদ সম্মেলনে গানৎজ তার পদত্যাগের বিষয়টি জানান।

তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহু আমাদের আসল বিজয়ের পথে অগ্রসর হওয়া প্রতিহত করছেন। এ কারণে আমরা আজ ভারাক্রান্ত মন ও পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে জরুরি সরকার থেকে সরে যাচ্ছি।’ গানৎজ তার বক্তব্যে ইসরায়েলে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানান।

তার ভাষ্য, এমন একটি নির্বাচন হওয়া দরকার, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করবে, যেটি জনগণের আস্থা অর্জন করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে। ওই সময় তিনি নির্বাচনের তারিখ ঠিক করতে নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানান।

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরবর্তী পরিকল্পনা উপস্থাপন করা না হলে পদত্যাগ করবেন বলে গত মাসে জানিয়েছিলেন গানৎজ।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকার শাসক দল হামাসের হামলার জবাবে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত চলা এ হামলায় প্রাণ গেছে গাজার ৩৭ হাজারের বেশি বাসিন্দার।


কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহরে বোমা ফেলল থাইল্যান্ড

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেত। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেতের কাছে একটি রসদ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। পোইপেত শহরটি থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর এবং ক্যাসিনোর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ থামার কোন লক্ষণ না দেখানোর মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।

কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে পোইপেত পৌর এলাকায় থাই বাহিনী দুটি বোমা ফেলেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র এয়ার মার্শাল জ্যাকক্রিট থাম্মাভিচাই জানিয়েছেন, পোইপেতের বাইরে অবস্থিত একটি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে বিএম-২১ রকেট মজুত করা হচ্ছিল। তার দাবি, এই অভিযানে কোন বেসামরিক নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হননি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, বিএম-২১ রকেট সাধারণত সাঁজোয়া যান থেকে একযোগে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ব্যবহৃত হয়। পোইপেত শহরে এই ধরনের হামলার ঘটনা চলমান সংঘাতে প্রথম বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই শহরটি থাই জুয়াড়িদের কাছে জনপ্রিয় ক্যাসিনো কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত।

চলতি মাসে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে থাইল্যান্ডে অন্তত ২১ জন এবং কম্বোডিয়ায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রায় ৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার থাইল্যান্ড জানিয়েছিল, কম্বোডিয়া সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার থাই নাগরিক পোইপেতে আটকা পড়েছেন। কম্বোডিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্ত বন্ধকে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছে এবং জানিয়েছে, দেশ ছাড়ার জন্য আকাশপথ খোলা রয়েছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার শত বছরের পুরোনো সীমান্ত বিরোধ গত ২৪ জুলাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে, যখন কম্বোডিয়া থাইল্যান্ডে রকেট হামলা চালায় এবং পাল্টা জবাবে থাইল্যান্ড বিমান হামলা শুরু করে। পাঁচ দিনব্যাপী তীব্র লড়াইয়ের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হলেও সেটি গত সপ্তাহে আবার ভেস্তে যায়। সর্বশেষ দফায় উভয় পক্ষই একে অপরকে সংঘর্ষ পুনরায় শুরুর জন্য দায়ী করছে।

আসিয়ান পর্যবেক্ষক দল মোতায়েনে সম্মত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সংঘাত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া উত্তেজনায় এরইমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। তারপরও থেমে নেই হামলা-পাল্টা হামলা।

স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পয়পেটের কাছে একটি লজিস্টিকস সেন্টারে বোমা হামলা চালানো হয়। ক্যাসিনো হাবের জন্য বিখ্যাত শহরটি দুদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় স্থলসীমান্ত পারাপার এলাকা হিসেবে পরিচিত।

এক বিবৃতিতে কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, পয়পেটের পৌর এলাকায় বিমান থেকে দুটি বোমা ছোড়ে থাই সামরিক বাহিনী। ক্যাসিনো হাবকে টার্গেট করে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে নমপেন।

এদিকে বিমান হামলার কথা স্বীকার করেছে থাইল্যান্ড। তবে ক্যাসিনো হাব নয়, থাই কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে তাদের যুদ্ধবিমান কম্বোডীয় সেনাবাহিনীর একটি গুদামে আঘাত হেনেছে। সেখানে কম্বোডিয়া গোপনে বিএম-২১ রকেট মজুত করেছিল বলেও দাবি করেছে দেশটি। তবে হামলায় কোনো বেসামরিক হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে থাই বিমান বাহিনী।

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাত বন্ধের পাশাপাশি দুদেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কম্বোডিয়ার বাসিন্দারা। গত বৃহস্পতিবার রাজধানী নমপেনের সড়কে নেমে আসেন হাজারো মানুষ। এ সময় আন্দোলনকারীরা যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দাবি জানান।

এমন পরিস্থিতিতে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের অংশ হিসেবে আসিয়ান পর্যবেক্ষক দল মোতায়েনে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। সংঘাত কমাতে মালয়েশিয়ার উদ্যোগে বহুমুখী কূটনৈতিক যোগাযোগ রাখার কথাও জানিয়েছেন তিনি।


গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

গাজার খান ইউনিস অঞ্চলের সমুদ্র উপকূল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজার সমুদ্রতীরবর্তী গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ ব্যবহার করে ধ্বংসপ্রাপ্ত এই উপত্যকার পুনর্গঠন কাজে ব্যয় করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত আলোচনা করেছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই আলোচনা বিভিন্ন আঙ্গিকে হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রস্তাব হলো- আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি (এডনক) গাজার এখনো ব্যবহৃত হয়নি এমন গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মালিকানায় অংশ নেবে এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ গাজার পুনর্গঠনে ব্যয় করা হবে।

আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরের আগেই যুক্তরাষ্ট্র গাজার যুদ্ধোত্তর যে পরিকল্পনা শুরু করেছিল, তার অধিকাংশের মতোই এখানেও কোনো চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। তবে সাবেক ওই পশ্চিমা কর্মকর্তা জানান, ডিসেম্বরে গাজার গ্যাস থেকে অর্থ উপার্জনের ধারণাটি পুনরায় আলোচনায় আসে।

২০০০ সালে গাজার সামুদ্রিক এলাকায় গ্যাস আবিষ্কৃত হয়। এই গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের অধিকার দুটি প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে: ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সার্বভৌম তহবিল প্যালেস্টাইন ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম এবং কনসোলিডেটেড কন্ট্রাক্টরস কোম্পানি। এটি একটি নির্মাণ ও জ্বালানি গোষ্ঠী, যার মালিক গ্রিসভিত্তিক এক প্রবাসী ফিলিস্তিনি পরিবার।

এই প্রকল্পের প্রায় ৪৫ শতাংশ মালিকানা একজন আন্তর্জাতিক অংশীদারের জন্য সংরক্ষিত। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলা এবং পরবর্তী যুদ্ধের আগে মিসর এই মালিকানায় অংশ নিতে আগ্রহী ছিল। জাতিসংঘ বর্তমান এই যুদ্ধকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় গ্যাস বিশেষজ্ঞ এবং দ্য গাজা মেরিন স্টোরি বইয়ের লেখক মাইকেল ব্যারন বলেন, ‘প্রকল্পটি বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক।’

ব্যারন যখন ১৫ বছর আগে এই প্রকল্পে কাজ করেছিলেন, তখন গ্যাসক্ষেত্রটি উন্নয়নের খরচ ধরা হয়েছিল ৭৫ কোটি ডলার। এটি থেকে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার আয় হওয়ার কথা ছিল, যার মধ্যে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ১৫ বছর ধরে বছরে ১০ কোটি ডলার করে লভ্যাংশ পেত। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে এটি ফিলিস্তিনিদের সবচেয়ে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। এর উন্নয়ন পুনর্গঠন কাজে বড় অবদান রাখতে পারে।’

জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী, গাজার পূর্ণ পুনর্গঠন খরচ অনেক বেশি- প্রায় ৭ হাজার কোটি ডলার। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল এই উপত্যকাকে সম্পূর্ণরূপে পুনর্নির্মাণের ধারেকাছেও নেই। বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের ঘনিষ্ঠ একদল মার্কিন প্রতিনিধি ইসরায়েল-অধিকৃত গাজার অর্ধাংশে অস্থায়ী আবাসন নির্মাণের একটি ছোট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।

সাবেক পশ্চিমা কর্মকর্তা জানান, তিনি মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর উচ্চপদস্থ কূটনীতিকদের সাথে কথা বলেছেন। তারা সবাই গাজাকে বিভক্ত রাখার এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনাটিও থমকে আছে, কারণ আরব ও মুসলিম দেশগুলো হামাস এবং ইসরায়েলি সেনাদের মাঝখানে পড়ে যাওয়ার ভয়ে সেনা পাঠাতে ইচ্ছুক নয়।

কাতার এবং সৌদি আরব গাজার পুনর্গঠনে অর্থায়ন করার ব্যাপারে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি জানিয়েছেন, অন্যরা যা ধ্বংস করেছে তা পুনর্নির্মাণের জন্য তারা চেক লিখবেন না। অন্যদিকে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে কোনো তহবিলের প্রতিশ্রুতি দেননি।

এই পরিস্থিতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত গাজায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রধান উপসাগরীয় অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আবুধাবি বর্তমানে গাজায় বৃহত্তম মানবিক ত্রাণদাতা।

ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং রুয়ান্ডা-কঙ্গো শান্তিচুক্তিকে যেভাবে ব্যবসায়িক লেনদেনের সাথে যুক্ত করেছে, গাজার ক্ষেত্রেও প্রাকৃতিক সম্পদ (গ্যাস) ব্যবহারের মাধ্যমে তারা একই পথে হাঁটতে চাইছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


গ্রিন কার্ড লটারি স্থগিত করলেন ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) ভয়াবহ গুলিবর্ষণের ঘটনার পর ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) বা গ্রিন কার্ড লটারি কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস)-কে গ্রিন কার্ড লটারি কর্মসূচি স্থগিত করতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) মৃত অবস্থায় পাওয়া সন্দেহভাজন ব্যক্তি পর্তুগালের নাগরিক। তিনি ২০১৭ সালে ‘ডাইভারসিটি ভিসা’ বা গ্রিন কার্ড লটারি কর্মসূচির (ডিবি-১) মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন এবং পরে গ্রিন কার্ড পান।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম জানান, ট্রাম্পের নির্দেশে এই ভিসা কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে, যাতে ‘এই ভয়াবহ কর্মসূচির কারণে আর কোনো আমেরিকান ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা মনে করছেন ৪৮ বছর বয়সি ক্লাউদিও নেভেস ভালেন্তে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এমআইটির পর্তুগিজ অধ্যাপক নুনো লুরেইরোকেও হত্যা করেছেন।

এই কর্মসূচির আওতায় প্রতিবছর সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ভিসা দেওয়া হয়। যেসব দেশে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের হার কম, সেসব দেশের নাগরিকদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে এই ভিসা দেওয়া হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ক্রিস্টি নোম বলেন, ২০১৭ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে একটি ট্রাক হামলায় আটজন নিহত হওয়ার পর ট্রাম্প আগেও এই কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য ‘লড়াই করেছিলেন’।

নোমের ভাষ্যমতে, ওই হামলার দায়ে একাধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ইসলামিক স্টেট সমর্থক উজবেকিস্তানের নাগরিক সাইফুল্লো সাইপভও ডিবি-১ কর্মসূচির মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন।

নোমের এই মন্তব্য আসে এমন এক সময়ে, যখন নিউ হ্যাম্পশায়ারের সেলেমে একটি স্টোরেজ থেকে নেভেস ভালেন্তের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, তিনি নিজেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

পুলিশ জানায়, ভিডিও ফুটেজ এবং জনসাধারণের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা একটি গাড়ি ভাড়া দেওয়ার স্থানে পৌঁছান। সেখানে তারা সন্দেহভাজনের নাম পান এবং তাকে তাদের প্রধান সন্দেহভাজনের সঙ্গে মিলিয়ে নেন। এর মাধ্যমে ছয় দিন ধরে চলা কয়েকটি রাজ্যজুড়ে অনুসন্ধানের সমাপ্তি ঘটে।

তার কাছে একটি ব্যাগ ও দুটি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়। কাছাকাছি একটি গাড়িতে পাওয়া আলামত ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গুলিবর্ষণের ঘটনার সঙ্গে মিলে গেছে বলে রোড আইল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেল পিটার নেরনহা জানিয়েছেন।

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা প্যাকসন বলেন, নেভেস ভালেন্তে ২০০০ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছিলেন এবং সেখানে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি করছিলেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে তার সঙ্গে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কোনো সক্রিয় সম্পর্ক নেই’।

কর্মকর্তারা জানান, তারা বিশ্বাস করেন নেভেস ভালেন্তে সোমবার ম্যাসাচুসেটসের ব্রুকলাইনে নিজের বাড়িতে এমআইটির অধ্যাপক নুনো এফ গোমেজ লুরেইরোকে (৪৭) গুলি করে হত্যা করেন। প্রভিডেন্স থেকে ব্রুকলাইন প্রায় ৫০ মাইল (৮০ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত।

পুলিশ জানিয়েছে, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে পর্তুগালের একই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনই পড়াশোনা করেছিলেন।

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা একটি প্রত্যক্ষদর্শী এবং সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে সন্দেহভাজনের গাড়ি শনাক্ত করার পর দুটি মামলার মধ্যে যোগসূত্র পাওয়া যায় বলে কর্মকর্তারা জানান।

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গুলিবর্ষণের ঘটনার মাত্র দুই দিন পর একই গাড়ি অধ্যাপকের হত্যাকান্ডের স্থানের কাছেও দেখা যায়। কর্তৃপক্ষ এখনো দুই হামলার কোনো সম্ভাব্য উদ্দেশ্য জানায়নি।

গত ১৩ ডিসেম্বর ফাইনাল পরীক্ষার সময় ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনে এক বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণে দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং আরও নয়জন আহত হন।

নিহতরা হলেন— আলাবামার বাসিন্দা ১৯ বছর বয়সি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এলা কুক এবং ১৮ বছর বয়সি মুখাম্মাদ আজিজ উমুরজোকভ। তিনি একজন উজবেক-আমেরিকান এবং সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন।


বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যে প্রতিক্রিয়া জানালেন শশী থারুর

শশী থারুর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ভারতের কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্য শশী থারুর।

ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটি সদ্য একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে আমরা সরকারকে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার আহ্বান জানিয়েছি।

একইসঙ্গে, ভারতীয়দের বিরুদ্ধে এবং যাদের ভারতপন্থি বলে মনে করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে যে ধরনের বৈরিতা উসকে দেওয়া হচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এছাড়া কমিটির দেয়া রিপোর্টে ভিসা স্বাভাবিক করার সুপারিশ করেছিলেন বলে জানান তিনি।

শশী থারুর বলেন, কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতের সহিংসতার কারণে দুটো ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিতে হয়েছে, যেটা খুবই হতাশাজনক। কারণ বাংলাদেশিরা ভারতে আসতে চাচ্ছেন, তারা অভিযোগ করছেন যে তারা আগের মতো ভিসা পাচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য করা আমাদের সরকারের জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি দ্রুতই সব স্বাভাবিক হবে। একই সঙ্গে আমি বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানাবো, তাদের প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ককে আরও মূল্যায়ন করতে।

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর একটি বিখ্যাত উক্তি উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, আমরা ভূগোল বদলাতে পারবো না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকবো। তারা যেখানে আছে সেখানেই থাকবে। তাই তাদের উচিৎ আমাদের সঙ্গে কাজ করতে শিখে নেওয়া।


সুদানে ফের হামলা, ১৬ বেসামরিকের প্রাণহানি

সুদানে খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন নারীরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধে দারফুরের পর সংঘাতপূর্ণ কোরদোফান অঞ্চল ক্রমেই নতুন মৃত্যুনগরীতে পরিণত হচ্ছে। দক্ষিণ কোরদোফানের অবরুদ্ধ শহর ডিলিং-এ টানা দুদিন ধরে চালানো হামলায় অন্তত ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এবং তাদের মিত্র সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট–নর্থ (এসপিএলএম-এন) ডিলিং শহরের আবাসিক এলাকায় ভারী কামান থেকে গোলাবর্ষণ করেছে। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ রয়েছেন। সংস্থাটি একে বেসামরিক জনগণের ওপর ইচ্ছাকৃত হামলা বলে নিন্দা জানিয়েছে।

এই হামলা কোরদোফানজুড়ে চলমান সহিংসতারই অংশ। এ অঞ্চলে ডিসেম্বরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, সংঘাতের কেন্দ্র ধীরে ধীরে দারফুর অঞ্চল থেকে সরে এসে সুদানের কৌশলগত মধ্যাঞ্চলে বিস্তৃত হচ্ছে যা যুদ্ধের চূড়ান্ত পরিণতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

ডিলিং শহরের স্বাস্থ্যব্যবস্থা এরই মধ্যে চরম সংকটে রয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে অবরোধের পাশাপাশি সেখানে কলেরা ও ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, গত অক্টোবর থেকে কোরদোফানের তিনটি রাজ্য থেকে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ মাসের শুরুতে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, কোরদোফানে যা ঘটছে তা দারফুরে সংঘটিত গণহত্যার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা তৈরি করছে।

গত ১৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরদোফানের রাজধানী কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, এই হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সেখানে জাতিসংঘ তাদের লজিস্টিক ঘাঁটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া এই গৃহযুদ্ধে সুদানের সেনাবাহিনী (এসএএফ) প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক উপপ্রধান আরএসএফের নেতা মোহাম্মদ হামদান ‘হেমেদতি’ দাগালো মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। বিভিন্ন পর্যবেক্ষকের মতে, এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১ লাখের বেশি মানুষ নিহত এবং ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে- যাকে জাতিসংঘ বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করছে।

চিকিৎসা পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, গত দুদিনে দক্ষিণ করদোফানের ডিলিং শহরের আবাসিক এলাকায় আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) ও তাদের মিত্র সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-নর্থ (এসপিএলএম-এন)। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলা এই গোলাবর্ষণে নারী, বয়স্ক মানুষ ও শিশুরাও নিহত হয়েছেন।

সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, হামলায় ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক এলাকাকে লক্ষ্য করা হয়েছে। ডিলিংয়ে এই হামলা করদোফানজুড়ে সহিংসতার নতুন ঢেউয়ের অংশ, যেখানে ডিসেম্বরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিম দারফুর থেকে সরে এসে সংঘাত এখন দেশের কৌশলগত কেন্দ্রীয় অঞ্চলের দিকে যাচ্ছে, যা যুদ্ধের ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, বেসামরিক এলাকায় হামলা অবিলম্বে বন্ধ করতে উভয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং সংঘাতে আটকে পড়া মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ নিশ্চিত করতে।

সুদানে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ড্রোন হামলার পর বিদ্যুৎ বিপর্যয়

সুদানের পূর্বাঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রাণঘাতী ড্রোন হামলার পর গত বৃহস্পতিবার রাজধানী খার্তুম ও পোর্ট সুদানসহ দেশটির বেশ কয়েকটি বড় শহর অন্ধকারে ঢেকে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চলমান যুদ্ধে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন রিভার নাইল রাজ্যের আতবারা শহরে আগুন ও ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। সেখানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর সংঘর্ষ চলছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রথম ড্রোন হামলার পর সৃষ্ট আগুন নেভাতে গিয়ে বেসামরিক প্রতিরক্ষার দুই সদস্য নিহত হয়েছে।

তিনি আরএসএফ-এর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, দ্বিতীয় দফা হামলায় উদ্ধারকর্মীরাও আহত হন এবং তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।


কেন বৃষ্টিতে লাল হয়ে ওঠে হরমুজ দ্বীপের উপকূল?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মেঘ ভাঙা বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি যেন রং বদলে ফেলে। ইরানের দক্ষিণে হরমুজ দ্বীপে বৃষ্টি নামলেই মাটি ছুঁয়ে পানি রূপ নেয় টকটকে লালে—আর সেই লাল স্রোত গড়িয়ে গিয়ে মিশে যায় পারস্য সাগরে। দূর থেকে মনে হয়, যেন সাগরজুড়ে রক্তের আভা।

প্রথম দেখায় অলৌকিক মনে হলেও, এই রহস্যময় দৃশ্যের নেপথ্যে লুকিয়ে আছে হরমুজ দ্বীপের বিশেষ ভূপ্রকৃতি ও তার অনন্য ‘গোলাক’ মাটি।

হরমুজের মাটিতে লোহা বা আয়রন অক্সাইডের পরিমাণ অত্যধিক বেশি। বৃষ্টির পানি এই লোহার সঙ্গে মিশে লাল রং ধারণ করে। আরেকটু ব্যাখ্যা করে বললে, লোহা পানির সঙ্গে মেশার পর আলোর স্বল্প তরঙ্গদৈর্ঘ্যগুলো শোষণ করে নেয়। আর লাল রঙের দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলিত করে। ফলে আমরা পানি লাল দেখি।

হরমুজ দ্বীপটি ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে। এখানে বৃষ্টি সাধারণত বেশ কম হয়। শুধু শীতকাল ও বসন্তের শুরুতে বৃষ্টির দেখা মেলে। পর্যটকেরা অনেকেই এই বৃষ্টিকে ‘ব্লাড রেইন’ বা ‘রক্তবৃষ্টি’ বলে থাকেন। তবে বৃষ্টির পানি কিন্তু মাটিতে পড়ার আগপর্যন্ত স্বাভাবিক রঙেই থাকে।

হরমুজের মাটি শিল্পকারখানায় এবং স্থানীয় সাংস্কৃতিক কাজেও ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিকের কারণে দ্বীপের মাটিতে লাল ছাড়াও হলুদ, কমলা ও বিভিন্ন রঙের ছাপ দেখা যায়। এর জন্য হরমুজের আরেকটি নাম রয়েছে—‘রংধনু দ্বীপ’। এই দ্বীপের সৌন্দর্যের স্বাদ নিতে প্রতিবছর সেখানে ছুটে যান বহু পর্যটক।

মঙ্গলবারের ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে নানা মন্তব্য করেছেন মানুষ। একজন লিখেছেন, ‘এমন রঙের কারণেই হয়তো লোহিত সাগর নামের ধারণাটা এসেছিল।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘আশা করি, কোনো বিরল খনিজের জন্য এমনটা হয়নি। না হয় আবার সুন্দর এই দ্বীপে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়ে যাবে।’


ধর্মীয় বক্তাদের দমনে কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি উৎসবকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর দেশটিতে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উগ্রবাদ দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। গত ১৪ ডিসেম্বর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হানুক্কাহ উৎসবের প্রথম দিন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১৫ জন নিহত হন। এই হামলাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে উদ্বেগ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ বলেন, ‘নতুন আইন মূলত যারা ঘৃণা, বিভাজন ও উগ্রবাদ ছড়ায়—তাদের লক্ষ্য করেই আনা হবে।’ তিনি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এমন ব্যক্তিদের ভিসা বাতিল বা প্রত্যাখ্যানের ক্ষমতা দেওয়া হবে, যারা ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার করে। পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থায় ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধ, মোকাবিলা ও যথাযথ প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।

প্রস্তাবিত আইনের আওতায় সহিংসতা উসকে দেওয়া ধর্মীয় বক্তা ও নেতাদের জন্য শাস্তির বিধান ছাড়াও ‘অ্যাগ্রাভেটেড হেট স্পিচ’ নামে অপরাধের একটি নতুন সংজ্ঞা সংযোজন করা হবে। অনলাইনে হুমকি ও হয়রানির ক্ষেত্রে শাস্তি নির্ধারণে বিদ্বেষ ছড়ানোনে গুরুতর উপাদান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অ্যালবানিজ বলেন, ‘প্রত্যেক ইহুদি অস্ট্রেলিয়ানের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানিত বোধ করার অধিকার রয়েছে।’

এই হামলার পর দেশটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ-পশ্চিম সিডনিতে সাতজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সহিংস কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। তবে পুলিশ বলছে, বন্ডাই হামলার সঙ্গে এই ঘটনার সরাসরি কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।

এদিকে সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও কিছু সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইহুদি কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, বন্দুক নিয়ন্ত্রণ ও অনলাইনে বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ প্রশংসনীয় হলেও, কিছু প্রস্তাব ইসরায়েলপন্থি লবির পুরোনো দাবির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, যা সহিংস উগ্রবাদ দমনের চেয়ে মতপ্রকাশ সীমিত করতে পারে। সংগঠনটির নির্বাহী কর্মকর্তা ড. ম্যাক্স কাইজার সতর্ক করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে মতাদর্শিক নজরদারি চালানো হলে তা ইহুদিদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বদলে আরও ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, গত ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিবিদ্বেষ রোধে সরকার আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারত। তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব শুধু ভুল স্বীকার করা নয়, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করাও।’


বিলুপ্তির ঝুঁকিতে ইরাকের ঐতিহাসিক দজলা নদী

ইরাকের প্রাচীন শহর মসুলে দজলা নদীর তীরবর্তী এলাকা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পানির পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমে আসায় পুরোপুরি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়েছে ইরাকের ঐতিহাসিক টাইগ্রিস বা দজলা নদী। একসময় যে নদী মেসোপটেমিয়ার সভ্যতাকে প্রাণ দিয়েছিল, সেই টাইগ্রিস এখন দূষণ ও পানিশূন্যতার দ্বিমুখী সংকটে পড়েছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, জরুরি ব্যবস্থা না নিলে টাইগ্রিসের প্রবাহ একসময় পুরোপুরি থেমে যেতে পারে।

দক্ষিণ ইরাকের আমারা শহরের বাসিন্দা মানদিয়ান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতা শেখ নিধাম ক্রেইদি আল-সাবাহি বলেন, পানি নেই তো জীবনও নেই।। তার ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রবাহমান নদীর পানি ছাড়া অন্য কোন উৎসের পানি পান করা নিষিদ্ধ। তিনি বিশ্বাস করেন, পানি যতদিন প্রবাহমান থাকে, ততদিন তা পবিত্র। কিন্তু বাস্তবতা হলো, টাইগ্রিস হয়তো আর বেশিদিন প্রবাহমান থাকবে না।

টাইগ্রিস (দজলা) ও ইউফ্রেটিস (ফোরাত)- এই দুই নদীই প্রাচীন ‘ফার্টাইল ক্রিসেন্ট’-এর ভিত্তি, যা বর্তমানে ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন, জর্ডান, মিশর ও তুরস্কের অংশবিশেষ। টাইগ্রিসের উৎপত্তি তুরস্কে, সেখান থেকে এটি ইরাকের প্রধান দুই শহর মসুল ও বাগদাদ অতিক্রম করে ইউফ্রেটিসের সঙ্গে মিলিত হয়ে শাত্ত আল-আরব নামে উপসাগরে গিয়ে পড়ে। এই নদীর অববাহিকায় বসবাস করে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ, যাদের সুপেয় পানি, সেচ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পকারখানা এই নদীর ওপর নির্ভরশীল।

কিন্তু গত তিন দশকে টাইগ্রিসের পানিপ্রবাহ ভয়াবহভাবে কমেছে। তুরস্ক টাইগ্রিস নদীর উজানে বড় বড় বাঁধ নির্মাণ করায় বাগদাদে পৌঁছানো পানির পরিমাণ প্রায় ৩৩ শতাংশ কমে গেছে। একই সঙ্গে ইরানও যৌথ নদীগুলোর পানি বাঁকিয়ে নেওয়ায় টাইগ্রিসে পানির প্রবাহ আরও হ্রাস পেয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ইরাকের ভেতরে পানির অতিরিক্ত ও অব্যবস্থাপনা।

ইরাকের কৃষিখাত একাই অন্তত ৮৫ শতাংশ ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করে। জলবায়ু সংকট পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। গত কয়েক দশকে ইরাকে বৃষ্টিপাত কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ। দেশটি বর্তমানে প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ খরার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে পানির চাহিদা সরবরাহকে ছাড়িয়ে যাবে।

জানা গেছে, চলতি বছরের গ্রীষ্মে টাইগ্রিসের পানি এতটাই কমে যায় যে অনেক জায়গায় মানুষ হেঁটে নদী পার হতে পেরেছে। নদীর পানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় দূষণের মাত্রাও বেড়ে গেছে। নদীর পানিতে শহরের অপরিশোধিত পয়ঃবর্জ্য, কৃষিজ কীটনাশক ও সার, তেলশিল্পের বর্জ্য ও চিকিৎসা বর্জ্য মিশছে।

২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, বাগদাদের বিভিন্ন স্থানে টাইগ্রিসের পানির মান ‘খুবই খারাপ’। ২০১৮ সালে দূষিত পানি পান করে দক্ষিণের বাসরা শহরে অন্তত ১ লাখ ১৮ হাজার মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়।

পরিবেশবাদী সংগঠন ‘হুমাত দিজলা’র প্রতিষ্ঠাতা সালমান খাইরাল্লা বলেন, নদীর পানির গুণগত মান সম্পূর্ণভাবে এর পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। পানি যত কমবে, দূষণ তত বাড়বে।

এই সংকট মোকাবিলায় ইরাক সরকার তুরস্কের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছে। গত নভেম্বরে বাগদাদ ও আঙ্কারা একটি সমঝোতা কাঠামোতে সই করে, যার আওতায় নদীদূষণ রোধ, আধুনিক সেচব্যবস্থা চালু ও পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। তেল দিয়ে পানি অবকাঠামোর বিনিময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের কারণে এটি ‘অয়েল-ফর-ওয়াটার’ চুক্তি হিসেবেও পরিচিত। তবে বিশেষজ্ঞদের অভিযোগ, চুক্তিটি অস্পষ্ট, আইনি বাধ্যবাধকতাহীন এবং ইরাকের পানিসম্পদের ওপর তুরস্কের প্রভাব বাড়াতে পারে।

পানির অভাবে মানিদিয়ান সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ ইরাকে বসবাস করা এই সম্প্রদায়ের বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বর্তমানে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখের মধ্যে, যার মধ্যে ইরাকে অবশিষ্ট আছে ১০ হাজারেরও কম। অনেকেই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বা কুর্দিস্তান অঞ্চলে সরে গেছেন।

টাইগ্রিস যদি সত্যিই শুকিয়ে যায়, তাহলে তা শুধু একটি নদীর মৃত্যু নয়, ইরাকের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও কোটি মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নেমে আসবে ভয়াবহ বিপর্যয়।


ভেনেজুয়েলা ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে

ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নিকোলাস মাদুরো
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বাড়ার মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে একটি নৌযানে চালানো সর্বশেষ হামলায় ৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ড (সাউথকম) জানায়, তাদের চালানো হামলায় ‘৪ জন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছেন। তবে ধ্বংস করা নৌযানটি মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত ছিল কি না, এমন কোনো প্রমাণ তারা দেয়নি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, ‘মার্কিন আইনপ্রণেতারা ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসন সীমিত করতে আনা প্রস্তাবগুলো খারিজ করার পরই এই ‘প্রাণঘাতী’ হামলার ঘোষণা আসে। সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ড সাউথকম বলেছে, ‘নৌযানটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের জ্ঞাত মাদক চোরাচালানের রুট ধরে যাচ্ছিল আর এটি মাদক পাচার করছিল।’

এই পোস্টের সঙ্গে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। সেটিতে দেখা গেছে, মার্কিন বাহিনীর হামলায় একটি স্পিডবোট ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এ হামলা চালানোর নির্দেশ দেন। এ নিয়ে সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবীয় সাগরে ২৬টি নৌযানের হামলা চালানোর কথা জানালো ওয়াশিংটন। তাদের এসব হামলায় প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

আইনি বিশেষজ্ঞরা আন্তর্জাতিক জলসীমায় যুক্তরাষ্ট্রের এসব অভিযানকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিলেও ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, ভেনেজুয়েলাভিত্তিক মাদকচক্রসহ কার্টেলগুলোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবাহ ঠেকাতেই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গত বুধবার রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদ ২১৩-২১১ ভোটে এমন একটি প্রস্তাব নাকচ করে দেয়, যেখানে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া ভেনেজুয়েলার সঙ্গে বা ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে সামরিক তৎপরতা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়ার কথা ছিল।

আরেকটি প্রস্তাবও ২১৬-২১০ ভোটে বাতিল হয়, যেখানে কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া ‘পশ্চিম গোলার্ধে প্রেসিডেন্ট ঘোষিত যেকোনো সন্ত্রাসী সংগঠনের’ বিরুদ্ধে সামরিক তৎপরতায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলা হয়েছিল।

লাতিন আমেরিকার ক্যারিবীয় অঞ্চলে বড় ধরনের সামরিক সমাবেশ ঘটিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এখানে হাজারো সেনা, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরীবহর, ডজনখানে যুদ্ধজাহাজ ও এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান এবং একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারকে উৎখাতের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।

গত মঙ্গলবার ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বন্দরে যাতায়াতকারী যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সব তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর নৌ-অবরোধের নির্দেশ দেন। ভেনেজুয়েলা সরকার যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপকে ‘জঘন্য হুমকি’ বলে অভিহিত করে এবং এটি দেশের সম্পদ ‘লুটে নেওয়ার’ চেষ্টা বলে অভিযোগ করে। গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার উপকূলে ‘স্কিপার’ নামের একটি তেলবাহী জাহাজে ওঠে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা। পরে জাহাজটিতে বহনকারী তেল খালাস করার জন্য সেটিকে টেক্সাসে নিয়ে যাওয়া হয় বলে খবর।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, নৌ-অবরোধ ঘোষণার পর ভেনেজুয়েলার নৌবাহিনী পেট্রোলিয়ামবাহী জাহাজগুলোকে পাহারা দিতে শুরু করেছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ও বুধবার সকালে দেশটির পূর্ব উপকূল থেকে নৌবাহিনীর পাহারায় কয়েকটি জাহাজ যাত্রা করে বলে গণমাধ্যমে তিনটি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে।

ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় যুদ্ধের আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে, এমন প্রেক্ষাপটে লাতিন আমেরিকার নেতারা এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে, মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলায় সহিংসতা ঠেকাতে জাতিসংঘকে ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান। ‘এখনো তারা সক্রিয় নয়। রক্তপাত ঠেকাতে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে,’ বলেন তিনি। একই সঙ্গে ভেনেজুয়েলায় বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরোধিতার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন শেইনবাউম।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, ‘লাতিন আমেরিকা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মনোভাব ও হুমকি আমাকে উদ্বিগ্ন করছে।’ তিনি জানান, চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি ওয়াশিংটন ও কারাকাসের মধ্যে সংলাপের আহ্বান জানান।’

‘আমি ট্রাম্পকে বলেছি, শব্দের শক্তি বন্দুকের শক্তিকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। আপনি যদি ভেনেজুয়েলার সঙ্গে সঠিকভাবে কথা বলতে চান, আমরা সহায়তা করতে পারি। তবে আপনাকে কথা বলতে আগ্রহী ও ধৈর্যশীল হতে হবে,’ বলেন লুলা। ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট মাদুরো জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের নৌ-অবরোধের নিন্দা জানান বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলার পাশে থাকার ঘোষণা চীনের

ভেনেজুয়েলার বন্দরে যাতায়াতকারী যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সব তেলবাহী ট্যাংকারের ওপর প্রসিডেন্ট ট্রাম্পের অবরোধ আরোপের পর দেশটির পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে চীন। ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে ‘একতরফা চাপ ও হয়রানি’ আখ্যা দিয়ে এর বিরোধিতা করেছে চীন। তবে চীন কীভাবে ভেনেজুয়েলাকে সহায়তা করবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। এমনকি ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টকে চীন আশ্রয়ের প্রস্তাব দেবে কি না তাও বলেনি।

গত বুধবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক ফোনালাপে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিলকে বলেন, চীন সব ধরনের একতরফা চাপ ও হয়রানির বিরোধিতা করে এবং দেশগুলোর সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় মর্যাদা রক্ষার পক্ষে অবস্থান নেয়।

ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সব তেলবাহী ট্যাংকারের ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ ও প্রস্থান বন্ধে পূর্ণ নৌ-অবরোধ জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই অঞ্চলে মার্কিন সেনা ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।

চীন ভেনেজুয়েলার সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা। বিশ্লেষকদের হিসাবে, চীনের মোট তেল আমদানির প্রায় ৪ শতাংশ আসে ভেনেজুয়েলা থেকে। ডিসেম্বর মাসে দেশটি প্রতিদিন গড়ে ভেনেজুয়েলা থেকে ৬ লাখ ব্যারেলের বেশি তেল আমদানি করেছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ওয়াং ই যুক্তরাষ্ট্র বা প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করেননি। ভেনেজুয়েলাকে কী ধরনের বা কতটা সহায়তা দেওয়া হতে পারে, সে বিষয়েও তিনি কিছু বলেননি, যদিও এর আগে বেইজিং কারাকাসের সঙ্গে ‘অটুট বন্ধুত্বের’ কথা বলেছিল।


‘ভারতকে এমন শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যা তারা কখনো ভুলবে না’

শাহবাজ শরিফ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, চলতি বছরের মে মাসে পাকিস্তান-ভারত সংঘাতে মোদি সরকারকে এমন একটি শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, যা তারা কখনো ভুলবে না।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) খাইবার পাখতুনখোয়ার হারিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী ল্যাপটপ স্কিম–২০২৫ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘যুদ্ধে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী জাতির দোয়া ও সমর্থনে বিজয় অর্জন করেছে। তিনি দাবি করেন, ভারত এই পরাজয় কখনো ভুলবে না।’

গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ভারত অভিযোগ করে, জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটক হত্যার ঘটনায় পাকিস্তান জড়িত ছিল। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।

প্রায় ৮৭ ঘণ্টা স্থায়ী ওই সংঘাতে পাকিস্তান ভারতের ছয়টি যুদ্ধবিমান ও বহু ড্রোন ভূপাতিত করেছে বলে দাবি করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ১০ মে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায় দুই দেশ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাইবার পাখতুনখোয়ার জনগণকে সাহসী ও আত্মত্যাগী উল্লেখ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে তারা দেশের শান্তি ফিরিয়ে এনেছে।’

তিনি জানান, ল্যাপটপ স্কিমটি পুরো প্রদেশে সম্প্রসারণ করা হবে এবং দেশের উন্নয়নে যুবসমাজের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

অর্থনীতি প্রসঙ্গে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে পাকিস্তান দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। অর্থনীতি এখন স্থিতিশীলতার পথে রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চারটি প্রদেশ একসঙ্গে উন্নত হলে দেশও উন্নত হবে।’


নাইজেরিয়ায় খনিতে বন্দুকধারীদের হামলায় নিহত ১২, অপহৃত ৩

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

নাইজেরিয়ার প্লাটো রাজ্যের আতোসো গ্রামে একটি খনি স্থাপনায় বন্দুকধারীদের অতর্কিত হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার গভীর রাতে ঘটা এই নৃশংস ঘটনায় হামলাকারীরা তিনজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। এছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত আরও পাঁচজন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় যুব সংগঠন বেরোম ইয়ুথ মোল্ডার্স-অ্যাসোসিয়েশনের (বিওয়াইএম) প্রধান ডালিওপ সলোমন মাওয়ান্তিরি জানান, মঙ্গলবার রাতের অন্ধকারে খনি শ্রমিকদের ওপর এই হামলা চালানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা হামলাকারীদের সশস্ত্র ‘ফুলানি মিলিশিয়া’ হিসেবে শনাক্ত করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই অঞ্চলে দীর্ঘ দিন ধরে চলা জাতিগত ও ধর্মীয় দ্বন্দ্বের ধারাবাহিকতায় এই হামলা চালানো হয়েছে।

নাইজেরিয়ার পুলিশ বিভাগের মুখপাত্র আলফ্রেড আলাবো হামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে খনি এলাকায় এমন আকস্মিক হামলা এবং প্রাণহানির ঘটনায় প্লাটো রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে এবং স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।


ইউরোপে আশ্রয় পাওয়া কঠিন হচ্ছে বাংলাদেশিদের জন্য, ইইউ পার্লামেন্টে কঠোর প্রস্তাব অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আইনপ্রণেতারা অভিবাসন নীতি কঠোর করার পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য ইউরোপে আশ্রয় পাওয়ার সুযোগ আরও সংকুচিত হয়ে আসছে। বুধবার ফ্রান্সের স্ট্রাসবুর্গে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অধিবেশনে অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ি আরোপের লক্ষ্যে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। ডানপন্থী ও কট্টর ডানপন্থী আইনপ্রণেতাদের জোটের সমর্থনে পাস হওয়া এই প্রস্তাবের ফলে বাংলাদেশসহ নির্দিষ্ট কিছু দেশের নাগরিকদের জন্য ইইউ ব্লকে আশ্রয়ের দাবি করা বেশ কঠিন হয়ে যাবে।

অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর একটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেসব দেশকে ‘নিরাপদ’ হিসেবে বিবেচনা করে, তাদের একটি তালিকা তৈরির কথা বলা হয়েছে। এই তালিকায় বাংলাদেশের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও কোসোভো, কলম্বিয়া, মিসর, ভারত, মরক্কো ও তিউনিশিয়ার নাম রয়েছে এই ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায়। ইইউর নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দেশকে নিরাপদ হিসেবে তালিকাভুক্ত করার অর্থ হলো, ওই দেশের নাগরিকদের আশ্রয়ের আবেদন মঞ্জুর হওয়ার প্রক্রিয়া এখন থেকে অনেক বেশি জটিল ও কঠোর হবে।

পাস হওয়া অপর প্রস্তাব অনুযায়ী, আশ্রয়প্রার্থীদের এখন থেকে তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানো সম্ভব হবে। বিশেষ করে কেউ যদি ‘নিরাপদ’ তালিকাভুক্ত কোনো দেশের বংশোদ্ভূত হন, তবে তাকে তালিকার অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করা হতে পারে। চরম ডানপন্থী আইনপ্রণেতা ফ্যাব্রিস লেগেরি এই পদক্ষেপকে ভিত্তিহীন আশ্রয়ের চাপ কমানোর জন্য জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে, বামপন্থী আইনপ্রণেতা ড্যামিয়েন কারেমে একে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির জন্য ‘বড়দিনের উপহার’ বলে কটাক্ষ করেছেন। এর ফলে মেলোনির আশ্রয়প্রার্থীদের আলবেনিয়ায় পাঠানোর যে পরিকল্পনা আইনি জটিলতায় আটকে ছিল, তা বাস্তবায়নের পথ সুগম হতে পারে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইইউর এই নতুন পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, তৃতীয় কোনো দেশে পাঠানো হলে আশ্রয়প্রার্থীরা গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন। তবে ইউরোপীয় কমিশন আশ্বস্ত করেছে যে, অভিবাসীদের যে দেশেই পাঠানো হোক না কেন, সেই দেশকে অবশ্যই মৌলিক অধিকার রক্ষা করতে হবে। উল্লেখ্য, গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন, যার মধ্যে ৪ লাখ ৪০ হাজার জনকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছিল।


মিয়ানমারে নির্বাচনের আগে শত শত মামলা, বিরোধীদের ওপর জান্তার চাপ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মিয়ানমারে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধীদের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দুই শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দেশটির সামরিক জান্তা সরকার। আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনকে সমালোচকরা ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দেওয়ার একটি সাজানো প্রচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করছেন। জান্তা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল তুন তুন নাউং জানিয়েছেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া নস্যাৎ করার অভিযোগে ১৪০টি মামলায় ২২৯ জনকে শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে আন্দোলনকর্মী, শিল্পী, এমনকি শিশু ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরাও রয়েছেন।

সামরিক শাসনাধীনে প্রণীত নতুন নির্বাচনী আইনে ভোট বর্জন বা নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত করার যেকোনো কর্মকাণ্ডের জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। নির্বাচনবিরোধী বক্তব্য, উসকানি বা প্রচারপত্র বিলি করলে ৩ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মান্দালয়ে নির্বাচন বর্জনের ডাক দেওয়া বিক্ষোভ থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কিছু ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের ৪৯ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগও রয়েছে।

এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনাকে পাত্তা না দিয়ে জান্তা মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন স্পষ্ট জানিয়েছেন, এই নির্বাচন মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এ নিয়ে বিদেশিদের সন্তুষ্টি তাদের কাছে গুরুত্বহীন। অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসিকে (এনএলডি) আগেই বিলুপ্ত করায় তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না এবং সু চি বর্তমানে ২৭ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে দেশটিতে ২৮ ডিসেম্বরের পর আগামী ১১ ও ২৫ জানুয়ারি আরও দুই ধাপে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।


banner close