শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ বেনি গানৎজের

সরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে রোববার পদত্যাগের ঘোষণা দেন বেনি গানৎজ। ছবি: রয়টার্স
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১০ জুন, ২০২৪ ১১:০২

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন বেনি গানৎজ। এর মধ্য দিয়ে ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রিসভা থেকে সরে গেল মধ্যমপন্থি অংশ।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, স্থানীয় সময় রোববার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সংবাদ সম্মেলনে গানৎজ তার পদত্যাগের বিষয়টি জানান।

তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহু আমাদের আসল বিজয়ের পথে অগ্রসর হওয়া প্রতিহত করছেন। এ কারণে আমরা আজ ভারাক্রান্ত মন ও পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে জরুরি সরকার থেকে সরে যাচ্ছি।’ গানৎজ তার বক্তব্যে ইসরায়েলে আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানান।

তার ভাষ্য, এমন একটি নির্বাচন হওয়া দরকার, যা চূড়ান্ত পর্যায়ে এমন একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করবে, যেটি জনগণের আস্থা অর্জন করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করবে। ওই সময় তিনি নির্বাচনের তারিখ ঠিক করতে নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানান।

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরবর্তী পরিকল্পনা উপস্থাপন করা না হলে পদত্যাগ করবেন বলে গত মাসে জানিয়েছিলেন গানৎজ।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকার শাসক দল হামাসের হামলার জবাবে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত চলা এ হামলায় প্রাণ গেছে গাজার ৩৭ হাজারের বেশি বাসিন্দার।


যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ৬৭ শিশু নিহত: ইউনিসেফ

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত স্বজনদের জন্য কাঁদছেন এক ফিলিস্তিনি কিশোরী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গত এক মাসে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৭ ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ।

গত শুক্রবার জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনিসেফের মুখপাত্র রিকার্ডো পিরেস বলেন, নিহতদের মধ্যে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসে বিমান হামলায় নিহত এক মেয়ে শিশুও রয়েছে। এর আগের দিন ইসরায়েলের একাধিক হামলায় মারা যায় আরও সাত শিশু।

রিকার্ডো পিরেস বলেন, ‘এটা যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ঘটছে। চিত্রটা ভয়াবহ।’ তার ভাষায়, ‘এসব সংখ্যা নয়’ প্রতিটি ছিল একটি শিশু, একটি জীবন।’

২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় ৬৪ হাজারের বেশি শিশু হতাহত হয়েছে বলে আগের হিসাবে বলেছে ইউনিসেফ।

সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, চলতি বছর প্রতি মাসে গড়ে ৪৭৫ শিশু আজীবন শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে। সংস্থাটির মতে, গাজা এখন ‘আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিশু অঙ্গহানি ভুক্তভোগীর এলাকা।’

গাজার মানবিক পরিস্থিতিও ক্রমেই অবনতির দিকে। ইসরায়েলের অব্যাহত নিষেধাজ্ঞার কারণে খাদ্য, চিকিৎসা ও আশ্রয়সামগ্রী প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষুধাজনিত কারণে শিশুদের মৃত্যুর ঘটনাও বাড়ছে।

এই সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় নতুন করে কয়েক দফা হামলা চালায়। এতে অন্তত ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়। ইসরায়েল দাবি করে, খান ইউনুসে তাদের সেনাদের ওপর গুলির ঘটনার জবাবেই এই হামলা। তবে হামাস বলেছে, এসব হামলা ‘বিপজ্জনক উসকানি’ এবং এটি ‘গণহত্যা পুনরায় শুরুর ইঙ্গিত’।

ডাক্তারস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জানায়, গাজায় নারী ও শিশুসহ বহু আহত ব্যক্তিকে তারা চিকিৎসা দিয়েছে-যাদের কারও হাত-পায়ে খোলা হাড় বেরিয়ে এসেছে, কারও মাথায় গুলির ক্ষত। এক এমএসএফ নার্স জানান, ড্রোন থেকে ছোড়া গুলিতে আহত ৯ বছরের এক শিশুকেও তারা চিকিৎসা দিয়েছেন।

গাজা সিটির আল-শিফা হাসপাতালের রোগী মোহাম্মদ মালাকা বলেন, হামলার পর চোখ খুলে দেখেন তার বাবা ও ভাইয়েরা রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। চারদিকে মানুষের চিৎকার, তাবুগুলো ছাই হয়ে গেছে।’

ইউনিসেফ বলছে, শীতের মৌসুমে বাস্তুচ্যুত লাখো শিশু খোলা আকাশের নিচে বা বন্যায় প্লাবিত অস্থায়ী তাঁবুতে রাত কাটাচ্ছে। পিরেস বলেন, ‘গাজায় শিশুদের জন্য কোথাও নিরাপদ জায়গা নেই।’

গাজায় ৭ কিমি. লম্বা টানেলের সন্ধান পেল ইসরায়েল

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের একটি বড় টানেল খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

নতুন সন্ধান পাওয়া টানেলটি সাত কিলোমিটার লম্বা, ২৫ ফুট গভীর। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছে আইডিএফ। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।

পোস্টে বলা হয়েছে, ৭ কিলোমিটার লম্বা টানেলটি গাজার দক্ষিণের ঘনবসতিপূর্ণ রাফা শহরের নিচ দিয়ে গিয়েছে।

এছাড়া জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা ইউএনআডিব্লিউএ, শিশুদের স্কুল, হাসপাতাল এবং মসজিদের মধ্য দিয়ে টানেলটি গিয়েছে বলেও দাবি করেছে আইডিএফ।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী আরও দবি করে, হামাস কমান্ডাররা অস্ত্র সংরক্ষণ, আক্রমণ পরিকল্পনা এবং বসবাসের জন্য এই টানেলটি ব্যবহার করত।

আইডিএফের তথ্যমতে, নতুন সন্ধান পাওয়া টানেলটি সাত কিলোমিটার লম্বা, ২৫ ফুট গভীর এবং ভেতরে অন্তত ৮০টি গোপন কক্ষ রয়েছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে হামাসের হাতে নিহত ইসরায়েলের সেনা সদস্য হাদার গোল্ডইনকে এই সুড়ঙ্গে রাখা হয়েছিল।

প্রায় ১১ বছর পরে চলতি বছরের নভেম্বর মাসের শুরুতে সেখান থেকেই গোল্ডইনের দেহাবশেষ খুঁজে পায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।

আইডিএফ আরও জানায়, গত মে মাসে হামাসের অন্যতম শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ সিনওয়ারের সঙ্গে নিহত মুহাম্মদ শাবানাসহ সিনিয়র হামাস কমান্ডারদের কমান্ড পোস্ট হিসেবে ব্যবহৃত কক্ষগুলো খুঁজে পেয়েছে তারা।

পৃথক পোস্টে আইডিএফ জানায়, হাদার গোল্ডইন হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এক হামাস সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। গাজার যে সুড়ঙ্গে হাদার গোল্ডিনের মরদেহ রাখা হয়েছিল, সেটি ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৮০টি কক্ষ রয়েছে বলে জানায় আইডিএফ।

গাজায় তহবিলে বিপর্যয়কর পতন

অক্টোবরে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে গাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের জন্য অনুদান সংগ্রহে ‘বিপর্যয়কর’ ধস নেমেছে। ত্রাণকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা সতর্ক করে বলছেন, বিশ্ববাসী ভুল ধারণা করছে যে ফিলিস্তিনিদের আর সাহায্যের প্রয়োজন নেই। অথচ সামনেই তীব্র শীত। লাখ লাখ মানুষ অসুস্থতা, ক্ষুধা ও আবাসন সংকটে ধুঁকছে।

অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক মেগান হল জানান, যুদ্ধ চলাকালে তিনি সপ্তাহে প্রায় ৫,০০০ ডলার সংগ্রহ করতে পারতেন, যা অক্টোবরে পুরো মাসে কমে মাত্র ২,০০০ ডলারে ঠেকেছে। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির কারণে বিশ্ব মনে করছে সংকট কেটে গেছে। অথচ দুই বছর ধরে বাস্তুচ্যুত এসব মানুষের কাছে শীতের কাপড় বা কম্বলটুকুও নেই।’

শুধু ব্যক্তিগত উদ্যোগই নয়, গাজা স্যুপ কিচেনের মতো বড় উদ্যোগেও অনুদান ৫১% কমেছে। সেভ দ্য চিলড্রেন এবং অক্সফামের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাও অনুদানে বড় পতন দেখছে। জাতিসংঘের মতে, গাজার ৭০% মানুষ অর্থাৎ প্রায় ১৯ লাখ মানুষ ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামোর মধ্যে কোনোমতে টিকে আছে।

গাজা নগরীর ২৮ বছর বয়সি আহমেদ আল-দিব জানান, ১৪ সদস্যের পরিবারের খাবার ও ভাড়ার জন্য তিনি পারস্পরিক সহায়তা তহবিলের ওপর নির্ভরশীল। সেপ্টেম্বরে তিনি তিন হাজার ডলার সহায়তা পেলেও অক্টোবরে তা ৩০০ ডলারে নেমে আসে। ভাড়া দিতে না পারলে পরিবার নিয়ে তাকে রাস্তায় থাকতে হবে।


মাদুরোকে উৎখাতে চক্রান্ত ট্রাম্পের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন তার প্রথম মেয়াদে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন, তখন মার্কিন কর্মকর্তারা ভেনিজুয়েলার এই শক্তিশালী ব্যক্তির পতন কী হতে পারে তা মূল্যায়ন করার জন্য একটি যুদ্ধের খেলা শুরু করেছিলেন।

ফলাফলগুলি দেখিয়েছে যে ভেনিজুয়েলার অভ্যন্তরে দীর্ঘস্থায়ী বিশৃঙ্খলা এবং সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, কারণ সামরিক ইউনিট, প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল এবং এমনকি জঙ্গল-ভিত্তিক গেরিলা গোষ্ঠীগুলি তেল সমৃদ্ধ দেশটির নিয়ন্ত্রণের জন্য লড়াই করছে। যদিও ট্রাম্প ভেনিজুয়েলা সম্পর্কে তার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ব্যাখ্যা করেননি, তবে তিনি মাদুরোকে একজন অপরাধী ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শত্রু হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং ভেনিজুয়েলার সীমানায় সৈন্য, যুদ্ধজাহাজ এবং বিমান মোতায়ের করেছেন।

সোমবার, ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি ভেনিজুয়েলার নেতার সাথে কথা বলতে প্রস্তুত, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথাকথিত মাদক পাচারে ‘জড়িত’ মাদুরো সরকারকে উৎখাতে তার ঘোষিত লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য স্থল আক্রমণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেবেন না।

সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে মার্কিন সামরিক বাহিনী ভেনিজুয়েলার উপকূলের কাছে নৌকায় কমপক্ষে ২১টি হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে কমপক্ষে ৮৩ জন নিহত হয়েছে যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাদক বহন করছিল বরে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে।

ভেনিজুয়েলার নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিরোধীদলীয় নেত্রী মারিয়া করিনা মাচারো, মাদুরোর স্থলাভিষিক্ত হতে প্রস্তুত। মাচারো বলেছেন যে তিনি একটি জনপ্রিয় ম্যান্ডেট এবং প্রথম দিনেই বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তুত একটি রূপান্তর পরিকল্পনা নিয়ে ক্ষমতা গ্রহণ করবেন।

কিন্তু বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে ইরাক, আফগানিস্তান এবং লিবিয়ার মতো জায়গায় মার্কিন শাসন-পরিবর্তনের হস্তক্ষেপের সাম্প্রতিক ইতিহাস আবারও মাদুরো-পরবর্তী ভেনিজুয়েলায় দেখা দিতে পারে।

‘আমাদের সত্যিই উদ্বিগ্ন করে এমন বিষয় হলো, পরবর্তীতে কী ঘটবে সে সম্পর্কে তাদের কোনও গুরুতর পরিকল্পনা নেই বলে মনে হচ্ছে,’ বলেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের একজন জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক এবং এই বিষয়ের উপর একটি নতুন প্রতিবেদনের লেখক ফিল গানসন, ‘আপনি সরকারে বসতে পারবেন এবং বাকি সবকিছু ঠিকঠাকভাবে চলে যাবে, এই ধারণাটি আমার মনে হয় কেবল কল্পনা।’

২০১৯ সালে পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়, মাদুরোর উৎখাত - সামরিক অভ্যুত্থান, গণঅভ্যুত্থান বা মার্কিন সামরিক পদক্ষেপের মাধ্যমে - ভেনিজুয়েলার ভঙ্গুর কর্তৃত্ববাদী সরকারকে ভেঙে ফেলবে এবং ‘দীর্ঘস্থায়ী সময়ের জন্য বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে যার অবসান হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।’


কঠোরতায় অনিয়মিত অভিবাসন কী থামবে?

ব্রিটেনে অভিবাসীদের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অনিয়মিত পথে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ ঠেকাতে কনজারভেটিভ সরকারের মতো ব্রিটেনের লেবার সরকারও বড় ধরনের সংস্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। আশ্রয়প্রার্থীদের সুরক্ষার সময় পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে ৩০ মাসে নামিয়ে আনা এবং সামাজিক সহায়তা সীমিত করার মতো পদক্ষেপের ফলে আশ্রয়ব্যবস্থা আরো কঠোর হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ব্রিটিশ সরকার দাবি করছে, ছোট নৌকায় আগমন ও অনিয়মিত পথের ব্যবহার ঠেকাতে ‘দৃঢ় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা’ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এসব পদক্ষেপ কার্যকর হবে কি-না সেটি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

গত শনিবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিকল্পনার নতুন দিকগুলো তুলে ধরেছে আর সোমবার পার্লামেন্টে পুরো পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে।

শরণার্থীদের ‘অস্থায়ী সুরক্ষা’

সরকারের নতুন সংস্কারে আশ্রয়প্রার্থীদের দেওয়া সুরক্ষাকে ‘অস্থায়ী’ করে ফেলা হচ্ছে। আগে পাঁচ বছরের স্ট্যাটাস পাওয়া যেত; এখন তা কমে দাঁড়াচ্ছে ৩০ মাসে। নতুন নিয়ম কার্যকর হলে প্রতি দুই বছর ছয় মাসে শরণার্থীর অবস্থা পর্যালোচনা করা হবে এবং সংশ্লিষ্ট দেশের পরিস্থিতি ‘নিরাপদ’ মনে হলে তাকে ‘নিজ দেশে ফিরে যেতে’ বলা হতে পারে।

এই পরিবর্তন অভিবাসনের ডেনমার্ক মডেল অনুসরণ করে আনা হচ্ছে বলেই ধারণা। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক দেশে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা অন্য দেশে একই ফল দেবে, এমন নিশ্চয়তা নেই।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইগ্রেশন বিশেষজ্ঞ মিহনিয়া কুইবাস বাতা সংস্থা এএফপি-কে বলেন, ‘এগুলো কার্যকর হবে কিনা সেটি আমরা এখনই কিছু বলতে পারি না। বাস্তবায়ন দেখার পরই বোঝা যাবে।’

ব্রিটিশ সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য আবাসন ও সাপ্তাহিক ভাতার বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা বাতিল করতে চায়। কাজ করতে সক্ষম অথচ কাজ করছেন না, এমন ব্যক্তিদের সামাজিক সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ করা হতে পারে। একই সঙ্গে যাদের ব্যক্তিগত সম্পদ আছে, তাদের মাধ্যমেই থাকার খরচ আদায়ের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অ্যালেক্স নরিস টাইমস রেডিও-কে বলেন, ‘যাদের সম্পদ আছে তাদের কাছে নিজেদের ব্যয়ের একটা অংশ বহন করা খুব স্বাভাবিক।’

এই কঠোরতা কার্যকর হবে কি?

বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাজ্য এখনও অনেকের কাছে আকর্ষণীয় রয়ে গেছে মূলত কয়েকটি কারণে। এগুলো হলো:

ডাবলিন রেগুলেশন থেকে বের হয়ে আসায় ব্রিটেন আর ইউরোপের প্রবেশ পথের দেশে (গ্রিস, ইটালি ইত্যাদি) শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে পারে না। এ কারণে শরণার্থী অধিকার সংস্থাগুলো মনে করে, এই কঠোরতার মাধ্যমে প্রাণ বাঁচাতে পালানো মানুষের আগমন থামবে না।

অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা রিফিউজি কাউন্সিল বলেছে, এই পরিকল্পনা অত্যন্ত অবাস্তব ও অমানবিক। তাদের হিসাব অনুযায়ী, ৩০ মাস পরপর সুরক্ষা পুনর্মূল্যায়ন করতে সরকারের ৮৭২ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৯৯০ মিলিয়ন ইউরো) অতিরিক্ত খরচ হতে পারে।

আপিলের সুযোগ কমানো

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ ঘোষণা করেছেন, ‘আশ্রয়ের আবেদন করার একটাই সুযোগ থাকবে, এবং আপিলেরও সুযোগ মাত্র একবার।’ সরকার আশা করছে, এতে প্রত্যাখ্যাত ব্যক্তিদের দ্রুত নিজ দেশে ফেরত পাঠানো যাবে।

এ ছাড়া একটি স্বাধীন ‘সালিশি’ সংস্থা গঠন করে আপিল প্রক্রিয়াকে আদালতের উপর নির্ভরতা থেকে সরানো হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এসব পরিবর্তন আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। কারণ:

ইতোমধ্যে অভিবাসন নিয়ে রুয়ান্ডা প্ল্যান বন্ধ হয়ে গেছে।

ফ্রান্স-যুক্তরাজ্যের সাম্প্রতিক ‘ওয়ান ইন ওয়ান আউট’ প্রত্যাবর্তন চুক্তিতে আদালতের হস্তক্ষেপ এসেছে।

শিশু–অধিকার ও আইনি বাধা

শিশুদের স্বার্থ সুরক্ষায় জাতিসংঘ কনভেনশনের ৩নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, শিশু সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্তে সর্বোচ্চ বিবেচনা দিতে হবে শিশুর কল্যাণে।’ এতে বোঝা যাচ্ছে, পরিবারকে ফেরত পাঠানো, নাবালকদের সহায়তা কমানো এসব পদক্ষেপ আইনি বাধার মুখে পড়ার ঝুঁকি রাখে।

মিহনিয়া কুইবাস বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মানার উপায় সরকারকে খুঁজতেই হবে।’

ইসিএইচআর থেকে সরে যাওয়ার দাবি

ব্রিটেনের কিছু রাজনীতিক দাবি করছেন, ইউরোপীয় মানবাধিকার কনভেনশন (ইসিএইচআর) বহাল থাকলে এই সংস্কার কার্যকর হবে না। কারণ এটি আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা ও আপিলের সুযোগ রাখে।

কনজারভেটিভ বিরোধীদলীয় নেতা কেমি বাদেনক এবং রিফর্ম ইউকে-র নেতা জিয়া ইউসুফ বলেছেন, ‘ইসিএইচআর থাকলে অনিয়মিত অভিবাসন থামানো সম্ভব নয়।’ ি


যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, প্রশ্নবিদ্ধ ভারতের বিমান প্রকল্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দুবাই এয়ারশোতে ভারতের তেজস যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার পর নিরাপত্তা ও আর্থিক দিক নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে দেশটির নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি বিমান প্রকল্প নিয়ে।

হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (হাল) ও অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির যৌথ উদ্যোগে উন্নত তেজস যুদ্ধবিমান ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রতিরক্ষা কর্মসূচির অন্যতম প্রধান প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত।

২০২১ সালের এক চুক্তির আওতায় ভারত ৮৩টি তেজস এমকে–১এ কিনতে মোট প্রায় ৬.৫ বিলিয়ন ডলারের সমমূল্যের চুক্তি করে। এতে প্রতিটি বিমানের দাম দাঁড়ায় প্রায় ৪৩ মিলিয়ন ডলার। ট্রেইনার ভ্যারিয়েন্টের মূল্য ছিল একটু কম—প্রায় ৩৯ মিলিয়ন ডলার প্রতিটি।

তবে নতুন অর্ডারের সঙ্গে ব্যয় বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। ২০২৫ সালে তেজস এমকে–১এ–এর আরও ৯৭টি বিমান কেনার জন্য ভারতের সর্বশেষ চুক্তির মূল্য ৭.৮ বিলিয়ন ডলার। এতে প্রতিটি বিমানের সম্ভাব্য মূল্য প্রায় ৮০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, যা মূল্যস্ফীতি, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।

রপ্তানির ক্ষেত্রেও তেজসকে আক্রমণাত্মকভাবে বাজারজাত করছে হাল। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেজসের প্রতিটির সম্ভাব্য রপ্তানি মূল্য প্রায় ৪৩ মিলিয়ন ডলার হতে পারে। তবে দুবাইয়ের মতো আলোচিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে দুর্ঘটনা ঘটায় বিদেশি ক্রেতাদের আগ্রহ কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

একসময় সাশ্রয়ী মূল্যের দেশীয় যুদ্ধবিমান হিসেবে বিবেচিত তেজস প্রকল্প এখন নিরাপত্তা ও ব্যয়-সাশ্রয়—উভয় ক্ষেত্রেই কঠোর নজরদারির মুখে পড়েছে। ভারতের বিমানবাহিনী আধুনিকায়ন ও প্রতিরক্ষা রপ্তানির লক্ষ্য সামনে রেখে এগোতে চাইলে এসব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।


রাশিয়াকে পরাজিত করার বিভ্রমে আছে ইউরোপ-ইউক্রেন: পুতিন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া পরিকল্পনা ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভিত্তি হতে পারে। তিনি জানান, কিয়েভ যদি এই পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করে, তবে লড়াই চালিয়ে যেতে প্রস্তুত রয়েছে মস্কো। পুতিন জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়াকে পরাজিত করার বিভ্রমে আছে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি মার্কিন শান্তি পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ইউক্রেনকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনকে অবশ্যই মার্কিন শান্তি পরিকল্পনা মেনে নিতে হবে।

শুক্রবার তার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার সঙ্গে বৈঠকে পুতিন বলেন, মস্কো পরিকল্পনাটি হাতে পেয়েছে। তিনি বলেন, রাশিয়া নমনীয়তা দেখাতে ইচ্ছুক, তবে লড়াই চালিয়ে যেতেও প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি বলেন, ইউক্রেন এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। পুতিন আরো বলেন, ‘স্পষ্টতই ইউক্রেন এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা এখনো বিভ্রান্তিতে রয়েছে। তারা ভাবছে যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে কৌশলগতভাবে পরাজিত করা সম্ভব।’

পুতিন ২৮ দফা পরিকল্পনাকে ‘একটি নতুন সংস্করণ’ এবং আগস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলাস্কা শীর্ষ সম্মেলনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যা আলোচনা হয়েছিল তার ‘উন্নত সংস্করণ’ বলে অভিহিত করেছেন। মস্কো এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে বলেও জানান রুশ প্রেসিডেন্ট।


রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় কাজ করতে প্রস্তুত জেলেনস্কি

ভলোদিমির জেলেনস্কি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে তিনি প্রস্তুত আছেন। তবে ইউরোপের বেশ কিছু মিত্রদেশ বলছে, যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত এ পরিকল্পনাটি রাশিয়ার স্বার্থেই বেশি কাজ করবে।

বৃহস্পতিবার জেলেনস্কির কার্যালয় নিশ্চিত করেছে যে প্রেসিডেন্ট ওই পরিকল্পনার একটি খসড়া হাতে পেয়েছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলবেন।

তবে অপ্রকাশিত এই পরিকল্পনার বিষয়ে জেলেনস্কির কার্যালয় থেকে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে জেলেনস্কির কার্যালয় বলছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আশা করছেন কূটনৈতিক সুযোগ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় মূল দিকগুলো নিয়ে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা হবে।

বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবর বলছে, ২৮ দফার এই পরিকল্পনায় ইউক্রেনকে কিছু ভূখণ্ড ও অস্ত্র ছাড় দিতে হবে। এই পরিকল্পনা–সংশ্লিষ্ট এক মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পরিকল্পনা অনুসারে, রাশিয়ার কাছে পূর্ব ইউক্রেনের কিছু অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দেওয়া হবে। এর বদলে ইউক্রেন ও ইউরোপকে ভবিষ্যতে রাশিয়ার সম্ভাব্য হামলা থেকে নিরাপত্তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।

এই পরিকল্পনা নিয়ে এক মাস ধরে কাজ করছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। ইউক্রেনীয় ও রুশ দুই পক্ষের জনগণের কাছ থেকে গ্রহণযোগ্য শর্তগুলো নিয়ে মতামত নেওয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট। তিনি উদীয়মান এই প্রস্তাবের বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে তিনি বলেন, ট্রাম্প এ বিষয়ে তাকে ব্রিফ করেছেন এবং তিনি প্রস্তাবটি সমর্থন করেছেন।

লেভিট বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেন দুই পক্ষের জন্য এটি একটি ভালো পরিকল্পনা। এটি দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত এবং তারা এটি নিয়ে কাজ করছেন বলেও জানান লেভিট।

পরে জেলেনস্কি বলেন, তিনি এই পরিকল্পনা নিয়ে কিয়েভে যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি সেক্রেটারি ড্যানিয়েল ড্রিসকলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

তবে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কোনো নতুন উদ্যোগকে গুরুত্ব দেবে না বলেই মনে হচ্ছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই মুহূর্তে কোনো আলোচনা চলছে না। অবশ্যই কিছু তথ্য বিনিময় হচ্ছে। তবে এমন কোনো প্রক্রিয়া চলছে না, যাকে যোগাযোগ বলা যায়।

জেলেনস্কি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাজ করার ইঙ্গিত দিলেও ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্ররা এ ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছে।

ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো বলেন, ‘ইউক্রেনের মানুষ শান্তি চায়, যা সব দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করবে। এমন টেকসই শান্তি চায়, যা ভবিষ্যতে কোনো ধরনের আগ্রাসনের আশঙ্কা জাগাবে না। তবে শান্তি মানে আত্মসমর্পণ করা নয়।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কাজা ক্যালাস বলেন, যেকোনো শান্তি প্রস্তাব কার্যকরের জন্য ইউরোপ ও ইউক্রেনের সমর্থন প্রয়োজন। পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাদোস্লাউ সিকোরস্কি বলেন, যেকোনো সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে বলে ইউরোপ প্রত্যাশা করছে।

রাশিয়ার হামলার মুখে ইউক্রেনীয় সেনারা দেশটির পূর্বাঞ্চল থেকে পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র–সমর্থিত কূটনৈতিক উদ্যোগে যোগ দিতে জেলেনস্কি চাপের মুখে পড়ছেন।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত অক্টোবরে দাবি করেছিলেন, রুশ সেনারা চলতি বছর ইউক্রেনের প্রায় পাঁচ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করেছেন। তবে গত ২৫ অক্টোবর ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার বলেছে, প্রকৃতপক্ষে ৩ হাজার ৪৩৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল হয়েছে।


গাজায় ফ্রন্টলাইন আরও ভেতরে সরিয়েছে ইসরায়েল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা সিটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ- চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শহরের ভেতরে আরও অগ্রসর হয়েছে এবং তথাকথিত ‘ইয়েলো লাইন’ সীমারেখা সম্প্রসারণ করেছে। এতে আশ-শাফ, আন-নাজ্জাজ ও বাগদাদ স্ট্রিট এলাকার বহু ফিলিস্তিনি পরিবার ট্যাংকের অগ্রযাত্রার মধ্যে আটকা পড়েছে।

গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে গাজার গভর্নমেন্ট মিডিয়া অফিস জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী সীমার চিহ্নগুলো সরিয়ে প্রায় ৩০০ মিটার ভেতরে চলে গেছে। হামলার মধ্যে আটকা পড়া বহু পরিবারের ভাগ্য অজানা বলে জানিয়েছে দপ্তরটি। তারা বলেছে, সীমারেখা সম্প্রসারণ যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি ইসরায়েলের স্পষ্ট অবজ্ঞা।

শুক্রবারও দক্ষিণ গাজার খান ইউনুসের পূর্ব দিকে ‘ইয়েলো লাইন’-এর ভেতরে ইসরায়েলি বিমান ও কামান হামলা অব্যাহত ছিল বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে। এসব হামলায় একজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এর আগে গত বুধবার গাজা সিটি ও খান ইউনুসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত হন।

গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, গত মাসে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল প্রায় প্রতিদিনই আকাশ, স্থল এবং সরাসরি গুলিবর্ষণের মাধ্যমে হামলা চালিয়েছে। এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ৪০০-এর বেশি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এসব হামলায় ৩০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতির প্রধান জামিনদার যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, কাতার ও তুরস্ককে দ্রুত হস্তক্ষেপ করে হামলা বন্ধ ও খাদ্য, আশ্রয়সামগ্রী, চিকিৎসা সহায়তা এবং অবকাঠামোর সরঞ্জাম সরবরাহের পথ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে গাজার কর্তৃপক্ষ।

চুক্তিতে উল্লিখিত ‘ইয়েলো লাইন’ হলো একটি অদৃশ্য সীমা, যেখানে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী নিজেদের অবস্থান পুনর্গঠিত করে। এর মাধ্যমে ইসরায়েল গাজা উপত্যকার অর্ধেকের বেশি অংশে নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই সীমার কাছে গেলে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনাও নিয়মিত ঘটে।

জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, বিটসেলেমসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে- গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান গণহত্যার শামিল।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ৬৯ হাজার ৫৪৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজার বড় অংশ, বাস্তুচ্যুত হয়েছে প্রায় পুরো জনগোষ্ঠী।


ফুটবল খেললেন ট্রাম্প!

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বল বাড়াচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে, তিনি আবার ফিরতি পাসে ফেরত দিচ্ছেন রোনালদোকে। এমনই এক ভিডিও এখন সামাজিকমাধ্যমে ঝড় তুলেছে। ভিডিওটি শেয়ার করেছেন খোদ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা এই এআই নির্মিত ভিডিওতে দেখা যায়, ছাদের দিক থেকে হঠাৎ একটি ফুটবল পড়ে নিচে। এরপর ট্রাম্প আর রোনালদো মাথায় আর পায়ে জাগলিং করতে থাকেন। শেষে ট্রাম্প একটি ঘুরে গিয়ে বলটি ক্যামেরার দিকে জোরে মারেন।

১৮ নভেম্বর হোয়াইট হাউসে রোনালদো আর সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে নিয়ে এক ব্যক্তিগত ডিনার আয়োজন করেন ট্রাম্প। রোনালদোর সৌদি ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্ক আর সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের বিশ্বব্যাপী খেলাধুলায় আগ্রহ এই বৈঠককে আলোচনায় এনেছিল। কিন্তু তারও বেশি আলোচনায় আসে এই এআই–নির্মিত ভিডিও।

ভিডিওতে দেখা যায়, এআই মডেল করা ট্রাম্প রোনালদোর বল নিয়ন্ত্রণ অনুকরণ করার চেষ্টা করছেন। তার ঘূর্ণি আর পায়ের কাজ অস্বাভাবিকভাবে বেশ মসৃণ। ওভাল অফিসকে এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন সেটি সত্যিই একটি ফুটবল মাঠ। দুজনের অভিব্যক্তি আর বলের টাচ অনেক জায়গায় একটু অদ্ভুত দেখায়, যা এআই–জেনারেটেড ভিডিওর সাধারণ লক্ষণ।

ভিডিওটি ভাইরাল হতেই সামাজিকমাধ্যমে মন্তব্যের বন্যা নামে। নানা হাস্যকর প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে অনলাইনে।


শাবানা মাহমুদ কি হতে চলেছেন ব্রিটেনের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী?

শাবানা মাহমুদ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ওয়েস্ট মিনিস্টারকে স্তম্ভিত করে এবং সমালোচকদের মুখে ঝামা ঘষে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ একাই লেবার সরকারকে ভরাডুবির দ্বারপ্রান্ত থেকে টেনে তুলেছেন। নাইজেল ফারাজের ‘রিফর্ম ইউকে’-র কাছে সবক‌টি জনমত জ‌রি‌পের বিশাল ধস এবং সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণের আস্থা হারানোর মুখে, শাবানা মাহমুদ আধুনিক ব্রিটিশ ইতিহাসের সবচেয়ে আক্রমণাত্মক অভিবাসন সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন।

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর মাত্র দুই মাসের কিছু বেশি সময়ে, বার্মিংহাম লেডিউডের এই এমপি শুধু লেবার পা‌র্টির ডুবন্ত জাহাজকেই রক্ষা করেননি, বরং উগ্র ডানপন্থি‌দের কৌশল ধার ধ‌রে এমন এক কঠোর নতুন পথ তৈরি করেছেন যা তার প্রতিপক্ষদের হতভম্ব করে দিয়েছে।

ব্রিটেনের মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রথম নারী হিসেবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে আসীন হয়ে ইতিহাস গড়া শাবানা মাহমুদ অতীতের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ঝেড়ে ফেলতে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করেননি। যেখানে তার পূর্বসূরী ইভেট কুপার আমলাতান্ত্রিক স্থবিরতায় হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে তিনি ডেনমার্কের কঠোর সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ব্যবস্থার আদলে ‘শক অ্যান্ড অ’ (আকস্মিক ও তীব্র) কৌশল প্রয়োগ করেছেন। ‘শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার’ স্লোগানে চলতি সপ্তাহে উন্মোচিত তার প্রধান নীতিতে সকল শরণার্থী বা রিফিউজিদের জন্য বাধ্যতামূলক আড়াই বছরের পর্যালোচনা চালু করা হয়েছে। এই নতুন কঠোর নিয়‌মের কারণে ব্রিটেনে আশ্রয় এখন আর স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। যদি আড়াই বছরের মধ্যে কোনো শরণার্থীর নিজ দেশকে ‘নিরাপদ’ বলে মনে করা হয়, তবে তাকে অবিলম্বে ফেরত পাঠানো হবে।

এছাড়া মানবপাচারকারীদের ব্যবসায়িক মডেলে আঘাত হানার জন্য, অনিয়মিত বা অবৈধ পথে আসা যেকোনো ব্যক্তির নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ২০ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার সময়কাল বাধ্যতামূলক করেছেন শাবানা, যা কার্যকরভাবে অবৈধভাবে আগতদের দ্রুত বসতি স্থাপনের সব আশা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।

নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাজের গতি অভূতপূর্ব। যেখানে আগের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা পরামর্শ করতেই মাস পার করতেন, সেখানে মাহমুদ নিয়োগ পাওয়ার ৭৫ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে নীতি প্রয়োগ শুরু করেছেন। তিনি অবৈধ অভিবাসনকে কেবল একটি লজিস্টিক সমস্যা হিসেবে নয়, বরং একটি ‘নৈতিক জরুরি অবস্থা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন যা তার দেশকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলছে।

তার ভাষা ডানপন্থিদের জনতুষ্টিবাদী বাগাড়ম্বরের সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে। এই কৌশলগত পরিবর্তনটি আপাতত কিয়ার স্টারমারের গদি বাঁচিয়ে দিয়েছে এবং কনজারভেটিভরা যতটা কঠোর হওয়ার সাহস করেছিল লেবার তার চেয়েও বেশি কঠোর হতে পারে- এটা প্রমাণ করে শ্রমিক শ্রেণির ভোটারদের রিফর্ম ইউকের দিকে ঝুঁকে পড়া রোধ করেছে।

পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী?

হাউস অব কমন্সের টি-রুমগুলোতে হতাশার পরিবেশ এখন শান্ত বিস্ময়ে রূপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের জনপ্রিয়তা যখন তলানিতে পৌঁছেছে, সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে তার নেট স্কোর মাইনাস ৫৪-তে নেমে গেছে- তখন শাবানা মাহমুদ নিজেকে দক্ষ এবং অটল বিকল্প হিসেবে নীরবে প্রতিষ্ঠিত করছেন। তিনিই বর্তমানে একমাত্র ক্যাবিনেট মন্ত্রী যিনি এমন ফলাফল দিচ্ছেন যা ভোটাররা খুঁজছেন।

শাবানা রাজনীতির দাবার বোর্ডে এক চতুর চাল চালছেন। হোম অফিসের মতো কঠিন দায়িত্ব (যাকে বিষাক্ত পানপাত্র বলা হয়) গ্রহণ করে এবং অন্যরা যেখানে কেবল অজুহাত দেখিয়েছে সেখানে দৃশ্যমান কঠোরতা প্রয়োগ করে, তিনি প্রমাণ করছেন যে শীর্ষ পদের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা তার আছে।

লেবার পার্টির অন্দরে গুঞ্জন বাড়ছে যে যদি পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের আগে স্টারমারকে সরে দাঁড়াতে হয়, তবে ওয়েস স্ট্রিটিং বা র‍্যাচেল রিভসের চেয়ে শাবানা মাহমুদের অবস্থান এখন শক্তিশালী। তিনি একটি অনন্য রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে কাজ করছেন। কাশ্মিরী বংশোদ্ভূত নারী হিসেবে তিনি অভিবাসনের ওপর এমন কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারেন যা কোনো শ্বেতাঙ্গ পুরুষ রাজনীতিবিদ প্রস্তাব করলে সাথে সাথে ‘বর্ণবাদী’ বলে অভিহিত হতো। তিনি রিফর্ম ইউকে-র নীতিগুলো নিজের করে নিয়ে তাদের কার্যত নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছেন, যার ফলে নাইজেল ফারাজের নড়াচড়া করার সুযোগ কমে গেছে। তার পাঁচজন পূর্বসূরী যেখানে ব্যর্থ হয়েছেন, সেখানে তিনি যদি সফল হন, তবে ব্রিটেনের প্রথম মুসলিম প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ তার জন্য খুলে যেতে পারে।

ফারাজকেও ছাড়িয়ে ডানপন্থা

তবে, শাবানার এই দ্রুত উত্থানের জন্য চড়া নৈতিক মূল্য দিতে হচ্ছে, যা লেবার পার্টির আদর্শে ফাটল ধরিয়েছে। রিফিউজি কাউন্সিল এবং এডমন্টনের বিশপ, ড. অ্যান্ডারসন জেরেমিয়াহ তার প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যে তারা ‘গভীরভাবে মর্মাহত’।

শরণার্থীদের স্থিতিশীলতা কেড়ে নিয়ে এবং প্রতি কয়েক বছর পর পর পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করার হুমকির মাধ্যমে, সমালোচকরা যুক্তি দিচ্ছেন যে তিনি যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করছেন। আশ্রয়প্রার্থীদের সহায়তা ‘বিবেচনামূলক’ বা ঐচ্ছিক করার সিদ্ধান্ত- যার অর্থ সরকার চাইলে কাজ করতে সক্ষম এমন ব্যক্তিদের আবাসন ও নগদ অর্থ সহায়তা প্রত্যাখ্যান করতে পারে- তা অভিবাসন আইনজীবীদের দ্বারা ‘ডিস্টোপিয়ান’ বা দুঃস্বপ্নের মতো বলে অভিহিত হয়েছে।

তবুও, সবাইকে অবাক করে দিয়ে হাউস অব কমন্সে দাঁড়িয়ে শাবানা নিজ দলের এমপিদের সতর্ক করেছেন যে, অশুভ শক্তিগুলো অভিবাসন সংকটকে পুঁজি করছে, এবং তার এই দমন-পীড়নকে তিনি অতি-ডানপন্থিদের ক্ষমতা দখল রোধ করার একমাত্র উপায় হিসেবে ন্যায্য প্রমাণ করেছেন। প্রয়োগের ক্ষেত্রে তিনি রিফর্ম ইউকের থেকে প্রায় অভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেছেন, এমনকি নাইজেল ফারাজ নিজেও বিরল প্রশংসা করে বলেছেন যে শাবানা তার দলের জন্যই অডিশন দিচ্ছেন।


আবারও ইসরায়েলি হামলা

গাজায় ১২ ঘণ্টায় ৩৩ ফিলিস্তিনি নিহত
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা। ছবি: সংগৃহীত 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনুসে ইসরায়েলের দুটি বিমান হামলায় অন্তত ৫ জন নিহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার ভোরে এ হামলা হয় বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রায় ১২ ঘণ্টার মধ্যে গাজাজুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলায় মোট ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এই হামলাগুলো ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্র মধ্যস্থ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর মধ্যে অন্যতম।

এর আগে বুধবার গভীর রাত ও বৃহস্পতিবার ভোরে খান ইউনুসে বাস্তুচ্যুত মানুষের তাঁবুর ওপর চার দফা বিমান হামলায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৫ নারী ও ৫ শিশু রয়েছে।

অন্যদিকে, গাজার উত্তরের গাজা সিটিতে একটি ভবনের ওপর দুই দফা বিমান হামলায় ১৬ জন নিহত হন। আল–শিফা হাসপাতালের কর্মকর্তারা জানান, নিহতদের মধ্যে ৭ শিশু ও ৩ নারী ছিলেন।

হামাস এসব হামলাকে বেপরোয়া গণহত্যা বলে নিন্দা জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে যে হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের দিকে প্রথমে গুলি চালিয়েছিল তাই এমন হামলা চালানো হয়েছে।

খান ইউনুসের নাসের হাসপাতালে নিহতদের জানাজায় অংশ নিতে বহু মানুষ ভিড় করেন। সাদা কাফনের কাপড়ে মোড়ানো প্রিয়জনের মরদেহের সামনে দাঁড়িয়ে অনেক নারী শোক প্রকাশ করে আক্ষেপে ভেঙে পড়েন।

শোকাহতদের মধ্যে ছিলেন আবির আবু মুস্তাফা, যিনি একই হামলায় তার তিন সন্তান এবং স্বামীকে হারিয়েছেন। দাফনের প্রস্তুতির সময় তিনি তাদের মরদেহের পাশে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

গাজায় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং আরও ১ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।

গাজায় ৪০ হাজার শিশুকে টিকা দেবে ডব্লিউএইচও

দীর্ঘদিন ধরে চলা গাজা-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে শিশুরা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই সময়ে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) শিশুদের জীবন রক্ষা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সংস্থাটি ঘোষণা করেছে, সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির সুযোগে তারা গাজার ৪০ হাজারেরও বেশি শিশুকে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে টিকা দেবে।

ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, প্রথম ধাপের কার্যক্রম ৯ নভেম্বর শুরু হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য—তিন বছরের কম বয়সি শিশুদের বিভিন্ন সংক্রামক রোগ থেকে সুরক্ষা দেওয়া। যুদ্ধবিরতি থাকায় সংস্থা শিশুদের জরুরি টিকাদান কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে পারছে। এই উদ্যোগের ফলে গাজার ক্ষতিগ্রস্ত স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুনরায় শক্তিশালী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পুনঃসংস্থান করা সম্ভব হচ্ছে।

প্রথম ধাপের আট দিনে তিন বছরের কম বয়সী ১০ হাজার শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ডব্লিউএইচও মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস জানিয়েছেন, এই কর্মসূচি শনিবার পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শিশুরা হাম, মাম্পস, রুবেলা, ডিপথেরিয়া, টিটেনাস, হুপিং কাশি, হেপাটাইটিস বি, যক্ষ্মা, পোলিও, রোটাভাইরাস ও নিউমোনিয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাচ্ছে।

ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপ পরিচালিত হবে। এই কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে ইউনিসেফ, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘ সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) এবং হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। টেড্রোস বলেছেন, ‘যুদ্ধবিরতি অব্যাহত থাকায় আমরা উৎসাহিত। এতে গাজায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করা, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পুনঃসংস্থান এবং বিধ্বস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনর্গঠনের সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দিয়েছে। এই পরিকল্পনার মাধ্যমে গত ১০ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের রক্তক্ষয়ী হামলার পর থেকে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে সংঘাত চলায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানাচ্ছে, ইসরায়েলি অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৯ হাজার ৫০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ এই সংখ্যাকে নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে। নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের টিকাদান কার্যক্রম অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।

এক সপ্তাহও যুদ্ধ চালাতে সক্ষম নয় ইসরায়েল

ইরানের সংসদের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের গালিবাফ দাবি করেছেন, গত জুন মাসে ১২ দিনের আগ্রাসনে ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী শাস্তি পেয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া তারা ইরানের বিরুদ্ধে এক সপ্তাহও যুদ্ধ টিকিয়ে রাখতে পারবে না।

এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মেহর নিউজ।

শুক্রবার ইমাম খোমেনি সমাধিস্থলে বসিজ স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর এক সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে গালিবাফ বলেন, জুনে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র যে ১২ দিনের যুদ্ধ শুরু করেছিল, সেই প্রেক্ষাপটে ইরানের শক্তি শুধু ক্ষেপণাস্ত্র থেকে আসে না; বরং জনগণের ব্যাপক সমর্থনই দেশকে শক্তিশালী করে।

তিনি বলেন, ‌‌‘যদি মানুষের হৃদয় আমাদের সঙ্গে থাকে, আমরা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ। কিন্তু যদি তারা সঙ্গে না থাকে, তবে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাও যুদ্ধের সময়ের মতো কার্যকর হবে না।’

গালিবাফ দাবি করেন, ইরানি জনগণ এবং তাদের সশস্ত্র বাহিনীর হাতে ইসরাইলি শাসকগোষ্ঠী ও তাদের মার্কিন সমর্থকরা যুদ্ধে পরাজিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম দিনে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা ছাড়া যুদ্ধের ছয় দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট (জেডি ভ্যান্স) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সংঘাত থামানোর জন্য আলোচনার চেষ্টা করছিলেন।’

গালিবাফ যোগ করেন, ‘শত্রু সামরিক শক্তি নিয়ে আক্রমণ করেছিল, আর আমরাও সামরিক শক্তি দিয়ে তাকে সতর্ক করেছি এবং শাস্তি দিয়েছি।’


আবার উত্তেজনা, নেপালে তরুণদের বিক্ষোভের পর কারফিউ জারি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নেপালে সিপিএন-ইউএমএল কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষের এক দিন পর বৃহস্পতিবার দেশটির সিমারা এলাকায় ‘জেন–জি’ প্রজন্মের তরুণরা আবার রাস্তায় নেমেছেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় সময় রাত আটটা পর্যন্ত ওই এলাকায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে বিক্ষোভকারীরা সিমারা চকে জড়ো হতে শুরু করেন। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য শক্তি প্রয়োগ করে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্তৃপক্ষ বেলা পৌনে একটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কারফিউ জারি করেছে। সহকারী প্রধান জেলা কর্মকর্তা ছবিরামন সুবেদি এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বুধবার সংঘর্ষে জড়িত সন্দেহে পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রধান জেলা কর্মকর্তা ধর্মেন্দ্র কুমার মিশ্র বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জিতপুরসিমারা সাব-মেট্রোপলিটন সিটির ২ নম্বর ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান ধন বাহাদুর শ্রেষ্ঠ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান কাইমুদ্দিন আনসারি।

বিক্ষোভের কারণ

বিক্ষোভকারী তরুণদের অভিযোগ, বুধবার সংঘর্ষের ঘটনায় তারা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, পুলিশ তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করেনি।

‘জেন–জি’ জেলা সমন্বয়ক সম্রাট উপাধ্যায় বলেন, তারা যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, সেই অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজনকে এখনো আটক করা হয়নি। এ কারণেই তারা আবারও বিক্ষোভ শুরু করেছেন।

বুধবারের সংঘর্ষে ছয়জন ‘জেন–জি’ সমর্থক আহত হয়েছিলেন। বুধবার দিনভর ‘জেন–জি’ প্রজন্মের তরুণ ও ইউএমএল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। সংঘর্ষ সিমারা বিমানবন্দরের কাছে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে, ফলে বিমানবন্দরের কার্যক্রমও সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয়।

ইউএমএল বুধবার পারওয়ানিপুরে তাদের দলীয় কর্মসূচি ‘যুব জাগরণ অভিযান’ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ইউএমএল-এর সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর পোখরেল এবং পলিটব্যুরো সদস্য মহেশ বসনেটের কাঠমান্ডু থেকে সিমারা বিমানবন্দরে আসার কথা ছিল।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সম্রাট উপাধ্যায় ফেসবুকে একটি পোস্টে লিখেছিলেন, যেখানে তিনি ‘হত্যার রাজনীতি করা বিদায়ী সরকারের’ বিরুদ্ধে সিমারায় প্রতিবাদ করার আহ্বান জানান। এই পোস্টটি জেলাজুড়ে ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছিল। এতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে প্রায় ১০০ থেকে দেড় শ তরুণ সিমারা চকে জড়ো হন। জানা যায়, তাদের অনেকেই ইউএমএল নেতা মহেশ বসনেটের আগমন নিয়ে প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা করছিলেন। কারণ, অতীতে আক্রমণাত্মক রাজনৈতিক ভূমিকার কারণে তিনি কঠোরভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন।


তেলের সন্ধানে আরব সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ বানাচ্ছে পাকিস্তান

আরব সাগরে নৌ-মহড়ায় পাকিস্তান নৌবাহিনীর জাহাজ (পিএনএস) টিপু সুলতান (প্রথম থেকে বামে) ও তৈমুর (প্রথম থেকে ডানে)। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তেল-গ্যাস অনুসন্ধান জোরদারে আরব সাগরে কৃত্রিম দ্বীপ নির্মাণ করছে পাকিস্তান। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান পাকিস্তান পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের (পিপিএল) এ পরিকল্পনার কথা গত বুধবার জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

পিপিএলের মহাব্যবস্থাপক আরশাদ পালেকার ব্লুমবার্গকে জানান, সিন্ধুর উপকূল থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে, সুজাওয়ালের কাছে এই কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা হচ্ছে। ইসলামাবাদে তেল-গ্যাস সম্মেলনের সাইডলাইনে তিনি এসব কথা বলেন।

আরশাদ পালেকার জানান, ছয় ফুট উচ্চতার এই প্ল্যাটফর্মটি জোয়ার-ভাটার প্রভাব ঠেকিয়ে দিনরাত অবিরাম অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে সহায়তা করবে।

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জুলাইয়ে সামাজিক মাধ্যমে পাকিস্তানের ‘বিরাট তেল মজুত’ প্রসঙ্গে আগ্রহ দেখানোর পর দেশটির দূরবর্তী উপকূলীয় অঞ্চলে খনন কার্যক্রম নতুন গতি পেয়েছে। এরপর থেকেই পিপিএল, মারি এনার্জিস লিমিটেড ও প্রাইম ইন্টারন্যাশনাল অয়েল অ্যান্ড গ্যাস- এই তিন স্থানীয় প্রতিষ্ঠানকে অফশোর অনুসন্ধানের লাইসেন্স দিয়েছে ইসলামাবাদ।

পালেকার বলেন, পাকিস্তানের জন্য এ প্রকল্পটি প্রথম হলেও আবুধাবিতে এমন কৃত্রিম দ্বীপে সফল ড্রিলিংয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে, সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা নেওয়া হয়েছে।

তার তথ্য অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে দ্বীপের নির্মাণকাজ শেষ হবে ও এরপরই কার্যক্রম শুরু হবে। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২৫টি কূপ খননের পরিকল্পনা করেছে।

এদিকে, বৈশ্বিক জ্বালানি বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ভিটল জানিয়েছে, পাকিস্তানে জাহাজের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহারের জন্য সর্ববৃহৎ লো-সালফার ফুয়েল অয়েল (ভিএলএসএফও) চালান সরবরাহ করা হয়েছে। দেশটির বৃহত্তম শোধনাগার সিঙ্গারিজকো এই চালান সরবরাহ করেছে।

সিঙ্গারিজকো জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএমও) নির্ধারিত কম সালফার মানদণ্ড অনুযায়ী প্রস্তুত এই জ্বালানি উৎপাদন শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা তাদের প্রথম বড় আকারের ক্রুড অয়েল চালানের পর থেকেই।

এই নতুন জ্বালানি সরবরাহের ফলে পাকিস্তানে জাহাজ রিফুয়েল করার পর পূর্ব থেকে পশ্চিমে দীর্ঘ রুটে যাতায়াতের জন্য আর অতিরিক্ত কোথাও থামতে হবে না। একই সঙ্গে দেশটিতে পরিবেশসম্মত সামুদ্রিক জ্বালানির স্থানীয় মজুতও বাড়বে।

আফগান সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ২৩ জঙ্গিকে হত্যা করেছে পাকিস্তান

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আফগান সীমান্তবর্তী এলাকায় দুটি অভিযান চালিয়ে অন্তত ২৩ জঙ্গিকে হত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। এর ঠিক এক সপ্তাহ আগেই ইসলামাবাদে আদালত চত্বরে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন নিহত হয়েছেন।

সেনাবাহিনী জানায়, নিহত জঙ্গিরা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) বা এর সহযোগী গোষ্ঠীর সদস্য। পাশাপাশি দেশটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত এসব গোষ্ঠীকে সহায়তা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে তারা।

খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের কুররম জেলায় এ অভিযান চালানো হয়। এই প্রদেশের সীমান্ত দীর্ঘদিন ধরেই জঙ্গি তৎপরতার কেন্দ্রবিন্দু। ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ফিরে আসার পর থেকে অঞ্চলটিতে সহিংসতা আরও বেড়েছে।

বিবৃতিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বলেছে, ‘বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে পাকিস্তান পূর্ণ গতিতে অভিযান চালিয়ে যাবে।’

ইসলামাবাদ বহুদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে, আফগান সরকার পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী—বিশেষ করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানকে (টিটিপি) আশ্রয় দিচ্ছে। এসব গোষ্ঠী পাকিস্তানে প্রাণঘাতী হামলা চালাচ্ছে বলে দাবি ইসলামাবাদের।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধেও কড়া ভাষায় অভিযোগ তুলছে যে দেশটির ভেতরে সক্রিয় জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা দিচ্ছে দিল্লি। তবে ভারত ও আফগানিস্তান এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত সপ্তাহে ইসলামাবাদে আদালত চত্বরে আত্মঘাতী হামলায় ১২ জন নিহত ও বহু মানুষ আহত হন। পাকিস্তানের দাবি, এই হামলার পরিকল্পনা আফগানিস্তান থেকে করা হয়েছে। পাকিস্তানি তালেবানের একটি উপগোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এ হামলার ফলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। গত মাসে সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৭০ জনের বেশি নিহত হয়, যা ছিল সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাত। এর পর থেকে এ পর্যন্ত দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ রয়েছে।


’ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে সরিয়ে নেওয়া উচিত’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বৃহস্পতিবার বলেছেন, অতিরিক্ত জনসংখ্যার চাপ ও তীব্র পানিসংকটের কারণে দেশের রাজধানী তেহরান থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া উচিত।

এই ধারণা তিনি এর আগেও তুলেছিলেন—বিশেষত এ বছর তেহরানে বৃষ্টিপাত শত বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

তিনি সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএকে বলেছেন, ‘বাস্তবতা হলো আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই। (রাজধানী স্থানান্তর) একটি প্রয়োজন।

আমরা এই এলাকায় আরো জনসংখ্যা ও নির্মাণের বোঝা চাপিয়ে দিতে পারি না। আমরা উন্নয়ন করতে পারি, কিন্তু এ অঞ্চলের পানিসংকট সমাধান করতে পারি না।’

চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট সতর্ক করেছিলেন, শীত শুরুর আগে বৃষ্টি না হলে বর্তমান রাজধানী খালি করে দিতে হতে পারে—যদিও তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি।

তেহরান আলবোর্‌জ পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে অবস্থিত—যেখানে গরম, শুষ্ক গ্রীষ্ম সাধারণত শরতের বৃষ্টি ও শীতের তুষারে প্রশমিত হয়।

কিন্তু এ সময় সাধারণত বরফে ঢাকা যে পর্বতচূড়াগুলো থাকে, সেগুলো এখনো সম্পূর্ণ শুকনো।

জলসংকট মোকাবিলায় সরকার তেহরানের এক কোটি বাসিন্দার জন্য পর্যায়ক্রমে পানির সরবরাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

পেজেশকিয়ানের সরিয়ে নেওয়ার ধারণা সমালোচনার মুখে পড়েছে, বিশেষ করে স্থানীয় গণমাধ্যমে। সংস্কারপন্থী দৈনিক হাম মিহান তার মন্তব্যকে ‘রসিকতা’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

পরবর্তীতে সরকার জানায়, প্রেসিডেন্ট শুধুই পরিস্থিতির গুরুত্ব সম্পর্কে বাসিন্দাদের সতর্ক করতে চেয়েছেন—এটি কোনো চূড়ান্ত পরিকল্পনা নয়।

গত সপ্তাহে ইরান ঘোষণা করেছে, বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়াতে তারা ক্লাউড সিডিং (মেঘে বীজ ছড়ানো) কার্যক্রম শুরু করেছে।

গত বছর থেকে পেজেশকিয়ান রাজধানী স্থানান্তরের পেছনে যে কারণগুলো তুলে ধরছেন, সেগুলো হলো—তীব্র যানজট, জলসংকট, সম্পদ ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতা এবং মারাত্মক বায়ুদূষণ।

এ বছরের জানুয়ারিতে সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি জানিয়েছিলেন, কর্তৃপক্ষ রাজধানীকে দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত তুলনামূলকভাবে অনুন্নত মাকরান অঞ্চলে সরিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।

যদিও কোনো চূড়ান্ত পরিকল্পনা তখনো দেওয়া হয়নি, ওই প্রস্তাবও সমালোচনার মুখে পড়ে।


banner close