রোববার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
৫ পৌষ ১৪৩২

পশ্চিমবঙ্গে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে দাঁড়ালো ১৫ জনে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
১৭ জুন, ২০২৪ ১৬:৪৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৭ জুন, ২০২৪ ১৬:৪৩

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জন হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে ফাঁসিদেওয়া রাঙ্গাপানি স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনটিতে ধাক্কা দেওয়া মালগাড়ি চালক ও কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের গার্ডসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৩০ থেকে ৪০ জন। আহতদের উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কয়েক দিন ধরেই উত্তরবঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি চলছে। এই বৃষ্টির মধ্যেই নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে সোমবার সকালে নির্ধারিত সময়ে রওয়ানা দিয়েছিল কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। নীচবাড়ি ও রাঙামাটি স্টেশনের মাঝে ঢুকতেই একটি মালগাড়ি পিছন দিক থেকে ট্রেনটিকে ধাক্কা মারে। আর তাতেই এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এতে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পেছন দিক থেকে পরপর দুটি কামরা লাইনচ্যুত হয়ে ছিটকে পড়ে উলটে যায়। দুমড়েমুচড়ে গেছে অসংরক্ষিত কামরা। সেখানে আটকে পড়েছেন অসংখ্য যাত্রী।

এখনো কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ট্রেনটির একটি কামরা মাল গাড়ির ইঞ্জিনের উপর বিপদজনকভাবে ঝুলে আছে। সেটি দ্রুততার সঙ্গে সরানোর কাজ চলছে। তাই বিপদ এড়াতে ওই এলাকা থেকে যাত্রী ও স্থানীয়দের সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শিয়ালদহ স্টেশনে হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে।

জানা গেছে, ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছে। নিহত সবার পরিবারকে ১০ লাখ রুপি ও আহতদের আড়াই লাখ রুপি ও স্বল্প আহতদের ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর রিলিফ ফান্ড থেকেও হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এই ফান্ড থেকে নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি ও আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

এদিকে, এ দুর্ঘটনায় গভীর শোক জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বজনহারা পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘রেল দুর্ঘটনায় যারা নিজেদের ভালোবাসার মানুষ হারিয়েছেন, সেই পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইলো। আমি প্রার্থনা করছি, আহতদের শারীরিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি হোক। উদ্ধার কার্য চলছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘটনা স্থলে যাচ্ছেন।’


ইমরান খান ও বুশরা বিবির ১৭ বছরের কারাদণ্ড

ইমরান খান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানের এক বিশেষ আদালত শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দেশটির তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে তোষাখানার দ্বিতীয় মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।

এই মামলাটি খ্যাতিমান ইতালীয় বিলাসবহুল ব্র্যান্ড বুলগারির দামি একটি গহনা সেট কেনা সম্পর্কিত। ২০২১ এর মে মাসে সৌদি আরব এক সরকারি সফরের সময় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইমরানকে উপহার দিয়েছিলেন। এই গহনার সেটটি সরকারি তোষাখানায় জমা হওয়ার কথা থাকলেও ইমরান দম্পতি তা অল্প দামে কিনে নিয়েছিলেন, জানিয়েছে পাকিস্তানি গণমাধ্যম ডন।

মামলার কার্যক্রম চলাকালীন রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করে যে, প্রায় ৮ কোটি পাকিস্তানি রুপি মূল্যের গহনার সেটটি মাত্র ২৯ লাখ রুপি পরিশোধ করে নিজের কাছে রেখে দেন।

রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে শুনানিকালে এ রায় দেন বিশেষ বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ। ইমরান এই কারাগারেই বন্দি আছেন।

ডন জানিয়েছে, এই মামলায় ইমরানকে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পাকিস্তানের ফৌজদারি আইনের ৩৪ ধারায় (সাধারণ অভিপ্রায়) ও ৪০৯ ধারায় (অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ) তাকে ১০ বছর এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) (সরকারি কর্মচারীদের অপরাধমূলক অসদাচরণ) ধারায় আরও সাত বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুশরা বিবিকেও একই বিধানে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাদের উভয়কেই এক কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে যা অনাদায়ে কারাদণ্ডের মেয়াদ বৃদ্ধি পাবে।

রায়ে আদালত বলেছে, ইমরান আহমেদ খান নিয়াজির বয়স বিবেচনায় (বৃদ্ধ) ও বুশরা বিবি নারী হওয়ায় ‘নম্র দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করে তাদের কম শাস্তি দেওয়া হয়েছে’। এ দণ্ড কার্যকর করার সময় তাদের আটকের সময়কাল বিবেচনা করা হবে।

গত বছরের ডিসেম্বরে ইমরান ও বুশরা এই মামলায় অভিযুক্ত হন। চলতি বছরের অক্টোবরে এই মামলায় আনা সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন তারা। ইমরানকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে দূরভিসন্ধিমূলকভাবে বানোয়াট এ মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

২০২৩ সাল থেকে কারাগারে থাকা ইমরান ১৯ কোপি পাউন্ডের এক দুর্নীতি মামলায় ১৪ বছরের সাজা খাটছেন। ২০২৩ সালের ৯ মে-র প্রতিবাদকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনেও একটি মামলার বিচার চলছে। ১৯ কোটি পাউন্ড দুর্নীতির ওই মামলায় বুশরা বিবিও সাত বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন।

এই রায়ের পর ইমরানের দল পিটিআই এক্স এ দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, ‘কারাগারের ভেতরে এক ক্যাঙ্গারু কোটে তোষাখানা-২ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রুদ্ধদ্বার কারাগারে বিচার অবাধও নয়, ন্যায্যও নয়। এটি আদতে একটি সামরিক বিচার।’

রায় ঘোষণার সময় ইমরানের পরিবারের সদস্যদেরও কারাগারের ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছে দলটি।


 ‘গাজায় দুর্ভিক্ষ নেই, তবে পরিস্থিতি সংকটাপন্ন’

গাজায় খাবারের জন্য অপেক্ষায় ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ কেটে গেছে বলে জানিয়েছে বৈশ্বিক খাদ্য সংকট পর্যবেক্ষণ সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)। তবে সামনে আরও বাজে পরিস্থিতি আসন্ন ভেবে শঙ্কা দেখছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, যুদ্ধবিরতির পর মানবিক ও বাণিজ্যিক খাদ্য সরবরাহ কিছুটা বাড়ায় পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। তবে আইপিসি সতর্ক করে বলেছে, যদিও দুর্ভিক্ষ আপাতত কাটিয়ে ওঠা গেছে, তবুও গাজার পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত সংকটপূর্ণ।

সংস্থাটি জানিয়েছে, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে—যদি আবার যুদ্ধ শুরু হয় এবং মানবিক ও বাণিজ্যিক সরবরাহ বন্ধ হয়—তাহলে ২০২৬ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত পুরো গাজা উপত্যকা পুনরায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

চার মাস আগে সংস্থাটি জানিয়েছিল, গাজার প্রায় ৫ লাখ ১৪ হাজার মানুষ, অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ, দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির মধ্যে। সে সময়ের সেই মূল্যায়ন ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করেছিল।

গাজায় দুর্ভিক্ষ কেটে যাওয়ার কথা জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা আপাতত নেই। তবে পরিস্থিতির উন্নতি ‘ভীষণভাবে অনিশ্চিত’। তিনি বলেন, এখন অনেক বেশি মানুষ ন্যূনতম খাদ্য পাচ্ছে না। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ আসছে না।

তবে আগেরবারের মতো এবারও এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অধীনস্থ সহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা কোগাট দাবি করেছে, যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে প্রতিদিন ৬০০ থেকে ৮০০টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে। এর প্রায় ৭০ শতাংশই খাদ্যপণ্য।

হামাস এই দাবিকে অস্বীকার করে জানিয়েছে, প্রতিদিন ৬০০ ট্রাক গাজায় প্রবেশ করছে—এই তথ্য সঠিক নয়। বাস্তবে এর চেয়ে অনেক কম সহায়তা পৌঁছাচ্ছে। আইপিসির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে কোগাট অভিযোগ করে, সংস্থাটি ‘ভূমির বাস্তব চিত্র ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে।’ কোগাটের দাবি, প্রতিবেদনে তথ্য সংগ্রহে গুরুতর ঘাটতি রয়েছে এবং এমন কিছু সূত্রের ওপর নির্ভর করা হয়েছে, যা গাজায় প্রবেশ করা মানবিক সহায়তার পূর্ণ চিত্র তুলে ধরে না।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আইপিসির প্রতিবেদনে যেটুকু দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তার চেয়ে অনেক বেশি সহায়তা গাজায় প্রবেশ করছে। মন্ত্রণালয়ের দাবি, চলতি বছরের জুলাইয়ের পর থেকে গাজায় খাদ্যপণ্যের দামও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।

আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো বারবার বলছে, গাজার মতো ছোট ও জনবহুল এলাকায় প্রয়োজনের তুলনায় এখনো পর্যাপ্ত সহায়তা ঢুকছে না। তাদের অভিযোগ, ইসরায়েল প্রয়োজনীয় অনেক সামগ্রী গাজায় প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। তবে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, খাদ্যের কোনো ঘাটতি নেই। দখলদার দেশটির দাবি, সমস্যা মূলত খাদ্য বিতরণে অব্যবস্থাপনা।

গাজায় ১ লাখ মানুষ এখনো ‘বিপর্যস্ত’

জাতিসংঘ-সমর্থিত খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির মধ্যে খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি এবং পুষ্টির হারের উন্নতি হচ্ছে। তবে বিপর্যয় এখনও কাটেনি। গত মাসে বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে ১ লাখ মানুষ। আগস্টে ‘দ্য ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন’ (আইপিসি) দেখতে পেয়েছিল, পাঁচ লাখ মানুষ (গাজার জনসংখ্যার প্রায় এক চতুর্থাংশ) দুর্ভিক্ষ পীড়িত এলাকাগুলোতে বাস করছে।

এরপর অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধবিরতি হওয়ার পর থেকে জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক ত্রাণ সংস্থাগুলো সেখানে খাদ্য সরবরাহ বাড়াতে সক্ষম হয়। কিন্তু খাদ্য সরবরাহ বাড়লেও আইপিসির বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, একমাস আগেও পাঁচ লাখ গাজাবাসী জরুরি পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। আর এক লাখের বেশি মানুষ এখনও চরম মাত্রার খাদ্য অনিরাপত্তার মধ্যে আছে। তারা বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

এই সংখ্যা ক্রমেই কমবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হলেও পরিস্থিতি যে এখনো চরমভাবে নাজুক সেকথা জোর দিয়েই বলা হচ্ছে। আবার গাজার কোনও এলাকাই এখন দুর্ভিক্ষ এলাকা হিসাবে চিহ্নিত নয় বলেও জানিয়েছে আইপিসি।

গাজায় যুদ্ধবিরতির পর থেকে ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা

হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে গাজা উপত্যকাজুড়ে ৪০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। রাশিয়ায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত আবদেল হাফিজ নোফাল বার্তা সংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করে হয়, রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও অনুমান করা হচ্ছে যে, ৪০০ জনেরও বেশি নিহত এবং এর চেয়ে দ্বিগুণ সংখ্যক লোক আহত হয়েছে।’

তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘এর কারণ হলো ইসরায়েল ক্রমাগত যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে এবং কেবলমাত্র ন্যূনতম পরিমাণে মানবিক সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে।’ দীর্ঘদিনের গণহত্যার যুদ্ধের অবসানে গত ১১ অক্টোবর থেকে গাজায় মার্কিন মধ্যস্ততায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি গণহত্যার যুদ্ধ অঞ্চলজুড়ে নিহতের সবশেষ সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন।

চলতি বছরের শুরুতেও একটি যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে ইসরায়েল গত ২৭ মে থেকে গাজায় পৃথক সাহায্য বিতরণ উদ্যোগ শুরু করেছিল। এই পদক্ষেপের পর অঞ্চলটিতে দুর্ভিক্ষ প্রকট হয়ে ওঠে। ইসরায়েলি বাহিনী খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপরও গুলি চালিয়ে যায়। এর ফলে শত শত মানুষ নিহত হয়। সেই সঙ্গে দুর্ভিক্ষে শিশুসহ বহু মানুষের মৃত্যু হয়।

গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। উপত্যকাজুড়ে যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি।


রাশিয়াকে পশ্চিমা দেশগুলো সম্মান করলে আর যুদ্ধ হবে না: পুতিন

ভ্লাদিমির পুতিন
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পর আর কোনো যুদ্ধ হবে না—যদি পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়াকে সম্মান করে এবং দেশটির নিরাপত্তাগত স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠান ‘ডিরেক্ট লাইন’-এ তিনি এই মন্তব্য করেন।

শুক্রবার বছরের শেষ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত হন পুতিন। সেখানে বিবিসির সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞেস করেন ‘অন্য কোথাও রাশিয়া আর বিশেষ সামরিক অভিযান (যুদ্ধ)’ চালাবে কিনা। জবাবে পুতিন বলেন, যদি আপনারা আমাদের সম্মান করেন তাহলে আর কোনো অভিযান হবে না। আমরা যেমনটা আপনাদের সম্মান করার চেষ্টা করছি, আপনারাও যদি এমন সম্মান করেন তাহলে আর অভিযান হবে না।

এর আগে গত সপ্তাহে রুশ প্রেসিডেন্ট জানান, রাশিয়া ইউরোপের বিরুদ্ধে কোনো যুদ্ধের পরিকল্পনা করছে না। কিন্তু যদি যুদ্ধ বাঁধে তাহলে লড়াই করতে রাশিয়া প্রস্তুত আছে। এছাড়া তিনি শর্ত দেন যদি ন্যাটোর পূর্বাঞ্চলীয় সম্প্রসারণ নিয়ে ইউরোপ কোনো প্রতারণা না করে তাহলে আমরা যুদ্ধ করব না।

ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে পুতিন বলেন, তিনি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ যুদ্ধ শেষ করতে প্রস্তুত। তবে কোনো ধরনের আপসের ইঙ্গিত দেননি। তিনি আবারও দাবি করেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা বাদ দিতে হবে এবং রাশিয়ার দখল করা চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা সরিয়ে নিতে হবে। আংশিকভাবে দখল করে নেওয়া ইউক্রেনের দনবাস অঞ্চলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চায় রাশিয়া।

দেশের অর্থনীতির প্রশ্নে মূল্যস্ফীতি, প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং ভ্যাট বৃদ্ধির বিষয় স্বীকার করেন পুতিন। অনুষ্ঠানের মধ্যেই রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে ১৬ শতাংশে নামানোর ঘোষণা দেয়। বিদেশনীতি, অর্থনীতি ও যুদ্ধের পাশাপাশি অনুষ্ঠানজুড়ে উঠে আসে মাতৃভূমি, প্রবীণ সেনাদের সম্মান এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা।

পুতিন পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তারা ইউক্রেনের মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের সঙ্গে ‘সমান মর্যাদা ও পারস্পরিক সম্মানের ভিত্তিতে’ কাজ করতে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। রাশিয়া ভবিষ্যতে ন্যাটোর ওপর হামলা চালাতে পারে—পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এমন আশঙ্কার কথা আবারও তা নাকচ করে দেন তিনি।


জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার শুনানি

২০১৭ সালে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল শুনানি আগামী জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) জানিয়েছে, এ মামলার শুনানি চলবে আগামী ১২ থেকে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এই শুনানি আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এক দশকের বেশি সময় পর এটি হবে আইসিজেতে কোনো গণহত্যা মামলার মূল বিষয়ের ওপর শুনানি। একই সঙ্গে গাজা যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুনানির প্রথম সপ্তাহে (১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি) মামলার বাদী দেশ গাম্বিয়া আদালতে তাদের অভিযোগ উপস্থাপন করবে। পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ গাম্বিয়া ২০১৯ সালে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে এ মামলা দায়ের করে। মামলায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ আনা হয়।

এরপর ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমার তাদের অবস্থান তুলে ধরার সুযোগ পাবে। মিয়ানমার সরকার বরাবরই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

আইসিজে জানিয়েছে, এ মামলায় তিন দিন সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে এসব শুনানি জনসাধারণ ও গণমাধ্যমের জন্য বন্ধ থাকবে।

জাতিসংঘের একটি তদন্ত মিশন ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে ‘গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড’ সংঘটিত হয়েছিল বলে প্রতিবেদন দেয়। ওই অভিযানে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

মিয়ানমার অবশ্য জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট ও ত্রুটিপূর্ণ’ বলে দাবি করেছে। দেশটির বক্তব্য, সে সময়কার অভিযান ছিল রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে, যারা নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছিল।

মিয়ানমারের আপত্তি খারিজ, রোহিঙ্গা ‘গণহত্যা’ মামলা চলবেমিয়ানমারের আপত্তি খারিজ, রোহিঙ্গা ‘গণহত্যা’ মামলা চলবে।

মামলাটি ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘের গণহত্যা সনদ অনুযায়ী দায়ের করা হয়েছে। নাৎসি জার্মানির হাতে ইহুদিদের গণহত্যার পর এ সনদ প্রণয়ন করা হয়। এতে গণহত্যা বলতে কোনো জাতিগত, ধর্মীয় বা নৃগোষ্ঠীকে পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড, গুরুতর শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি, কিংবা পুরোপুরি ধ্বংসের উদ্দেশে সৃষ্ট পরিস্থিতিকে বোঝানো হয়েছে।

গাম্বিয়া ও মিয়ানমার—দুই দেশই এ সনদের স্বাক্ষরকারী হওয়ায় আইসিজের এ মামলার বিচারিক এখতিয়ার রয়েছে।

১৯৪৮ সালের গণহত্যা সনদের পর আইসিজে এখন পর্যন্ত মাত্র একবার গণহত্যার ঘটনা নিশ্চিত করেছে। এটি ছিল ১৯৯৫ সালে বসনিয়ার স্রেব্রেনিৎসায় প্রায় ৮ হাজার মুসলিম পুরুষ ও কিশোর হত্যাকাণ্ড।

গাম্বিয়া ও মামলায় হস্তক্ষেপকারী অন্য দেশগুলো হলো কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য। এই পাঁচ দেশ আদালতে যুক্তি দিয়েছে, গণহত্যা শুধু ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাদের মতে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং যৌন ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাও গণহত্যার উদ্দেশ্য হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত।


সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটি লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ব্যাপক’ হামলা

সিরিয়ায় আইএসের ঘাঁটিতে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সিরিয়ায় আইএসকে (ইসলামিক স্টেট) লক্ষ্য করে ‘ব্যাপক’ হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসি লিখেছে, দেশটিতে মার্কিন বাহিনীর ওপর প্রাণঘাতী হামলার প্রতিক্রিয়ায় এ অভিযান পরিচালনার কথা বলছে ওয়াশিংটন।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানিয়েছে, সিরিয়ার একাধিক স্থানে আইএসের অন্তত ৭০টি লক্ষ্যবস্তুতে যুদ্ধবিমান, আক্রমণকারী উড়োজাহাজ ও কামান থেকে হামলা চালানো হয়। এই অভিযানে জর্ডানের বিমানও অংশ নেয়।

সেন্টকমের বিবৃতিতে বলা হয়, আইএস অবকাঠামো ও অস্ত্রভাণ্ডার নিশানা করে শতাধিক নিখুঁত হামলা চালানো হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা খুব শক্তভাবে আঘাত হানছি।’

গত ১৩ ডিসেম্বর সিরিয়ার প্রাচীন নগরী পালমিরায় আইএসের হামলায় দুই মার্কিন সেনা এবং এক মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হওয়ার পর তার এ মন্তব্য এলো।

সেন্টকম এক্স পোস্টে বলেছে, ‘অপারেশন হকআই স্ট্রাইক’ নামের এই অভিযান শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টায় শুরু হয়।

সেন্টকমের কমান্ডার অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমেরিকান ও তাদের মিত্রদের ক্ষতি করতে চাওয়া সন্ত্রাসীদের কঠোরভাবে অনুসরণ করে যাবে।’

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, এই অভিযান কোনো যুদ্ধের সূচনা নয়, বরং প্রতিশোধের ঘোষণা।

‘যদি আপনি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে আমেরিকানদের লক্ষ্য করেন, তাহলে বাকি সংক্ষিপ্ত ও আতঙ্কিত জীবনটা এই ভয়ে কাটবে যে- যুক্তরাষ্ট্র আপনাকে খুঁজে বের করবে এবং নির্মমভাবে হত্যা করবে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল পোস্টে বলেন, দায়ীদের বিরুদ্ধে তিনি যে প্রতিশোধের কথা দিয়েছিলেন, সেটিই এখন বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

তার ভাষ্য, সিরিয়ার সরকার এই অভিযানে ‘পূর্ণ সমর্থন’ দিয়েছে।

এদিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) বলছে, রাক্কা ও দেইর ইজোরের আশপাশে আইএসের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এতে আইএসের এক শীর্ষ নেতা ও একাধিক যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।

তবে হামলার লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য যাচাই করতে পারেনি বিবিসি। আইএসও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।

এর আগে সেন্টকম জানায়, পালমিরায় হামলাটি চালিয়েছিল এক আইএস বন্দুকধারী, যাকে পরে হত্যা করা হয়। ওই হামলায় আরও তিন মার্কিন সেনা আহত হন।

পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা বলেন, ঘটনাটি এমন এলাকায় ঘটেছে, যেখানে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে এসওএইচআর দাবি করেছে, হামলাকারী সিরীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিল।

এ হামলার দায় কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি, বন্দুকধারীর পরিচয়ও প্রকাশ করা হয়নি।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সিরীয় বাহিনীগুলো আইএসের শেষ ভূখণ্ড দখলের ঘোষণা দিলেও এরপরও সংগঠনটি বিচ্ছিন্ন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, সিরিয়া ও ইরাকে এখনো আইএসের পাঁচ থেকে সাত হাজার যোদ্ধা রয়েছে।

আইএসের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি রয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে আইএসবিরোধী আন্তর্জাতিক জোটে যোগ দিয়েছে সিরিয়া, সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তার অঙ্গীকার করেছে।

২০২৪ সালে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটায় আহমেদ আল-শারা নেতৃত্বাধীন জোট। সেই শারাই এখন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট। গত নভেম্বরে তিনি হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই সময় দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘নতুন যুগের’ সূচনার কথা বলেন তিনি।


জানুয়ারিতে রোহিঙ্গা গণহত্যার ঐতিহাসিক শুনানি করবে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আগামী জানুয়ারি মাসে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা ঐতিহাসিক মামলার গণশুনানি শুরু করতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত জাতিসংঘের এই শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই শুনানিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কর্তৃক রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর চালানো নৃশংসতার অভিযোগের বিচারিক কার্যক্রম চলবে।

শুনানির নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী, মামলার বাদী পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিমপ্রধান দেশ গাম্বিয়া আগামী ১২ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তাদের যুক্তি উপস্থাপন করবে। অন্যদিকে, গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করা মিয়ানমার ১৬ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত আদালতে তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি ও প্রমাণ তুলে ধরার সুযোগ পাবে। এছাড়া আইসিজে সাক্ষীদের শুনানির জন্য তিন দিন সময় বরাদ্দ করেছে, তবে এই অংশটি গণমাধ্যম ও জনসাধারণের জন্য বন্ধ থাকবে।

ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সহায়তায় ২০১৯ সালে গাম্বিয়া এই মামলাটি দায়ের করেছিল। মামলায় ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং বৌদ্ধ মিলিশিয়াদের চালানো নৃশংস অভিযানকে 'গণহত্যা কনভেনশন লঙ্ঘন' হিসেবে অভিহিত করা হয়। আল জাজিরার প্রতিবেদন বলছে, এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে আইসিজেতে 'যোগ্যতার ভিত্তিতে' (merits) এটিই প্রথম কোনো গণহত্যার মামলার শুনানি। ধারণা করা হচ্ছে, এই কার্যক্রম একটি নজির স্থাপন করবে, যা গাজায় যুদ্ধের বিষয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলাতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী দাউদা জালো সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক সভায় জানান, প্রায় ছয় বছর আগে দায়ের করা এই মামলার মৌখিক শুনানির জন্য তারা প্রস্তুত। তিনি বলেন, "রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য মিয়ানমার কেন দায়ী এবং কেন ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, সে বিষয়ে গাম্বিয়া আদালতে জোরালো যুক্তি উপস্থাপন করবে।"

উইমেন'স পিস নেটওয়ার্ক-মিয়ানমারের নির্বাহী পরিচালক ওয়াই ওয়াই নু জানিয়েছেন, আইসিজেতে গাম্বিয়ার মামলার সমর্থনে হস্তক্ষেপকারী দেশগুলোর অবস্থান বেশ শক্তিশালী, যা রাখাইন রাজ্যে নৃশংসতা বন্ধে ভূমিকা রাখতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ভয়াবহ সহিংসতার পর প্রাণ বাঁচাতে প্রায় ৭ লাখ ৪২ হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে কক্সবাজারে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবিরে দশ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মানবেতর জীবনযাপন করছে। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে এই বিপুল সংখ্যক শরণার্থী সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করে আসছে।


কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহরে বোমা ফেলল থাইল্যান্ড

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেত। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পোইপেতের কাছে একটি রসদ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে থাইল্যান্ড। পোইপেত শহরটি থাই-কম্বোডিয়া সীমান্তের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর এবং ক্যাসিনোর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষ থামার কোন লক্ষণ না দেখানোর মধ্যেই এই হামলার ঘটনা ঘটল।

কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে পোইপেত পৌর এলাকায় থাই বাহিনী দুটি বোমা ফেলেছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ডের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র এয়ার মার্শাল জ্যাকক্রিট থাম্মাভিচাই জানিয়েছেন, পোইপেতের বাইরে অবস্থিত একটি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে, যেখানে বিএম-২১ রকেট মজুত করা হচ্ছিল। তার দাবি, এই অভিযানে কোন বেসামরিক নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হননি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, বিএম-২১ রকেট সাধারণত সাঁজোয়া যান থেকে একযোগে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে ব্যবহৃত হয়। পোইপেত শহরে এই ধরনের হামলার ঘটনা চলমান সংঘাতে প্রথম বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই শহরটি থাই জুয়াড়িদের কাছে জনপ্রিয় ক্যাসিনো কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত।

চলতি মাসে নতুন করে শুরু হওয়া সংঘর্ষে থাইল্যান্ডে অন্তত ২১ জন এবং কম্বোডিয়ায় ১৭ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পাশাপাশি প্রায় ৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার থাইল্যান্ড জানিয়েছিল, কম্বোডিয়া সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার থাই নাগরিক পোইপেতে আটকা পড়েছেন। কম্বোডিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সীমান্ত বন্ধকে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছে এবং জানিয়েছে, দেশ ছাড়ার জন্য আকাশপথ খোলা রয়েছে।

থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার শত বছরের পুরোনো সীমান্ত বিরোধ গত ২৪ জুলাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে, যখন কম্বোডিয়া থাইল্যান্ডে রকেট হামলা চালায় এবং পাল্টা জবাবে থাইল্যান্ড বিমান হামলা শুরু করে। পাঁচ দিনব্যাপী তীব্র লড়াইয়ের পর মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়া হলেও সেটি গত সপ্তাহে আবার ভেস্তে যায়। সর্বশেষ দফায় উভয় পক্ষই একে অপরকে সংঘর্ষ পুনরায় শুরুর জন্য দায়ী করছে।

আসিয়ান পর্যবেক্ষক দল মোতায়েনে সম্মত থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া

প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চলছে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার সংঘাত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া উত্তেজনায় এরইমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। তারপরও থেমে নেই হামলা-পাল্টা হামলা।

স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী শহর পয়পেটের কাছে একটি লজিস্টিকস সেন্টারে বোমা হামলা চালানো হয়। ক্যাসিনো হাবের জন্য বিখ্যাত শহরটি দুদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় স্থলসীমান্ত পারাপার এলাকা হিসেবে পরিচিত।

এক বিবৃতিতে কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, পয়পেটের পৌর এলাকায় বিমান থেকে দুটি বোমা ছোড়ে থাই সামরিক বাহিনী। ক্যাসিনো হাবকে টার্গেট করে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে নমপেন।

এদিকে বিমান হামলার কথা স্বীকার করেছে থাইল্যান্ড। তবে ক্যাসিনো হাব নয়, থাই কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে যে তাদের যুদ্ধবিমান কম্বোডীয় সেনাবাহিনীর একটি গুদামে আঘাত হেনেছে। সেখানে কম্বোডিয়া গোপনে বিএম-২১ রকেট মজুত করেছিল বলেও দাবি করেছে দেশটি। তবে হামলায় কোনো বেসামরিক হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে থাই বিমান বাহিনী।

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সংঘাত বন্ধের পাশাপাশি দুদেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন কম্বোডিয়ার বাসিন্দারা। গত বৃহস্পতিবার রাজধানী নমপেনের সড়কে নেমে আসেন হাজারো মানুষ। এ সময় আন্দোলনকারীরা যুদ্ধ বন্ধে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের দাবি জানান।

এমন পরিস্থিতিতে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের অংশ হিসেবে আসিয়ান পর্যবেক্ষক দল মোতায়েনে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। সংঘাত কমাতে মালয়েশিয়ার উদ্যোগে বহুমুখী কূটনৈতিক যোগাযোগ রাখার কথাও জানিয়েছেন তিনি।


গ্যাস বিক্রি করে গাজা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্র–আরব আমিরাত ও ইসরায়েলের

গাজার খান ইউনিস অঞ্চলের সমুদ্র উপকূল। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজার সমুদ্রতীরবর্তী গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত লভ্যাংশ ব্যবহার করে ধ্বংসপ্রাপ্ত এই উপত্যকার পুনর্গঠন কাজে ব্যয় করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত আলোচনা করেছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই আলোচনা বিভিন্ন আঙ্গিকে হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রস্তাব হলো- আবুধাবি ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি (এডনক) গাজার এখনো ব্যবহৃত হয়নি এমন গ্যাসক্ষেত্রগুলোর মালিকানায় অংশ নেবে এবং সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ গাজার পুনর্গঠনে ব্যয় করা হবে।

আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরের আগেই যুক্তরাষ্ট্র গাজার যুদ্ধোত্তর যে পরিকল্পনা শুরু করেছিল, তার অধিকাংশের মতোই এখানেও কোনো চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। তবে সাবেক ওই পশ্চিমা কর্মকর্তা জানান, ডিসেম্বরে গাজার গ্যাস থেকে অর্থ উপার্জনের ধারণাটি পুনরায় আলোচনায় আসে।

২০০০ সালে গাজার সামুদ্রিক এলাকায় গ্যাস আবিষ্কৃত হয়। এই গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের অধিকার দুটি প্রতিষ্ঠানের হাতে রয়েছে: ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সার্বভৌম তহবিল প্যালেস্টাইন ইনভেস্টমেন্ট ফোরাম এবং কনসোলিডেটেড কন্ট্রাক্টরস কোম্পানি। এটি একটি নির্মাণ ও জ্বালানি গোষ্ঠী, যার মালিক গ্রিসভিত্তিক এক প্রবাসী ফিলিস্তিনি পরিবার।

এই প্রকল্পের প্রায় ৪৫ শতাংশ মালিকানা একজন আন্তর্জাতিক অংশীদারের জন্য সংরক্ষিত। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলা এবং পরবর্তী যুদ্ধের আগে মিসর এই মালিকানায় অংশ নিতে আগ্রহী ছিল। জাতিসংঘ বর্তমান এই যুদ্ধকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় গ্যাস বিশেষজ্ঞ এবং দ্য গাজা মেরিন স্টোরি বইয়ের লেখক মাইকেল ব্যারন বলেন, ‘প্রকল্পটি বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত লাভজনক।’

ব্যারন যখন ১৫ বছর আগে এই প্রকল্পে কাজ করেছিলেন, তখন গ্যাসক্ষেত্রটি উন্নয়নের খরচ ধরা হয়েছিল ৭৫ কোটি ডলার। এটি থেকে প্রায় ৪০০ কোটি ডলার আয় হওয়ার কথা ছিল, যার মধ্যে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ১৫ বছর ধরে বছরে ১০ কোটি ডলার করে লভ্যাংশ পেত। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে এটি ফিলিস্তিনিদের সবচেয়ে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ। এর উন্নয়ন পুনর্গঠন কাজে বড় অবদান রাখতে পারে।’

জাতিসংঘের অনুমান অনুযায়ী, গাজার পূর্ণ পুনর্গঠন খরচ অনেক বেশি- প্রায় ৭ হাজার কোটি ডলার। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল এই উপত্যকাকে সম্পূর্ণরূপে পুনর্নির্মাণের ধারেকাছেও নেই। বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের ঘনিষ্ঠ একদল মার্কিন প্রতিনিধি ইসরায়েল-অধিকৃত গাজার অর্ধাংশে অস্থায়ী আবাসন নির্মাণের একটি ছোট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।

সাবেক পশ্চিমা কর্মকর্তা জানান, তিনি মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর উচ্চপদস্থ কূটনীতিকদের সাথে কথা বলেছেন। তারা সবাই গাজাকে বিভক্ত রাখার এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন। ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনাটিও থমকে আছে, কারণ আরব ও মুসলিম দেশগুলো হামাস এবং ইসরায়েলি সেনাদের মাঝখানে পড়ে যাওয়ার ভয়ে সেনা পাঠাতে ইচ্ছুক নয়।

কাতার এবং সৌদি আরব গাজার পুনর্গঠনে অর্থায়ন করার ব্যাপারে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছে। কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি জানিয়েছেন, অন্যরা যা ধ্বংস করেছে তা পুনর্নির্মাণের জন্য তারা চেক লিখবেন না। অন্যদিকে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে কোনো তহবিলের প্রতিশ্রুতি দেননি।

এই পরিস্থিতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত গাজায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রধান উপসাগরীয় অংশীদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আবুধাবি বর্তমানে গাজায় বৃহত্তম মানবিক ত্রাণদাতা।

ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং রুয়ান্ডা-কঙ্গো শান্তিচুক্তিকে যেভাবে ব্যবসায়িক লেনদেনের সাথে যুক্ত করেছে, গাজার ক্ষেত্রেও প্রাকৃতিক সম্পদ (গ্যাস) ব্যবহারের মাধ্যমে তারা একই পথে হাঁটতে চাইছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


গ্রিন কার্ড লটারি স্থগিত করলেন ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি ও ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) ভয়াবহ গুলিবর্ষণের ঘটনার পর ডাইভারসিটি ভিসা (ডিভি) বা গ্রিন কার্ড লটারি কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস)-কে গ্রিন কার্ড লটারি কর্মসূচি স্থগিত করতে বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) মৃত অবস্থায় পাওয়া সন্দেহভাজন ব্যক্তি পর্তুগালের নাগরিক। তিনি ২০১৭ সালে ‘ডাইভারসিটি ভিসা’ বা গ্রিন কার্ড লটারি কর্মসূচির (ডিবি-১) মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন এবং পরে গ্রিন কার্ড পান।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোম জানান, ট্রাম্পের নির্দেশে এই ভিসা কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে, যাতে ‘এই ভয়াবহ কর্মসূচির কারণে আর কোনো আমেরিকান ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা মনে করছেন ৪৮ বছর বয়সি ক্লাউদিও নেভেস ভালেন্তে চলতি সপ্তাহের শুরুতে এমআইটির পর্তুগিজ অধ্যাপক নুনো লুরেইরোকেও হত্যা করেছেন।

এই কর্মসূচির আওতায় প্রতিবছর সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ভিসা দেওয়া হয়। যেসব দেশে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের হার কম, সেসব দেশের নাগরিকদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে এই ভিসা দেওয়া হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ক্রিস্টি নোম বলেন, ২০১৭ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে একটি ট্রাক হামলায় আটজন নিহত হওয়ার পর ট্রাম্প আগেও এই কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য ‘লড়াই করেছিলেন’।

নোমের ভাষ্যমতে, ওই হামলার দায়ে একাধিক যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ইসলামিক স্টেট সমর্থক উজবেকিস্তানের নাগরিক সাইফুল্লো সাইপভও ডিবি-১ কর্মসূচির মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিলেন।

নোমের এই মন্তব্য আসে এমন এক সময়ে, যখন নিউ হ্যাম্পশায়ারের সেলেমে একটি স্টোরেজ থেকে নেভেস ভালেন্তের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ধারণা, তিনি নিজেই গুলিবিদ্ধ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

পুলিশ জানায়, ভিডিও ফুটেজ এবং জনসাধারণের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারীরা একটি গাড়ি ভাড়া দেওয়ার স্থানে পৌঁছান। সেখানে তারা সন্দেহভাজনের নাম পান এবং তাকে তাদের প্রধান সন্দেহভাজনের সঙ্গে মিলিয়ে নেন। এর মাধ্যমে ছয় দিন ধরে চলা কয়েকটি রাজ্যজুড়ে অনুসন্ধানের সমাপ্তি ঘটে।

তার কাছে একটি ব্যাগ ও দুটি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়। কাছাকাছি একটি গাড়িতে পাওয়া আলামত ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গুলিবর্ষণের ঘটনার সঙ্গে মিলে গেছে বলে রোড আইল্যান্ডের অ্যাটর্নি জেনারেল পিটার নেরনহা জানিয়েছেন।

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টিনা প্যাকসন বলেন, নেভেস ভালেন্তে ২০০০ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেছিলেন এবং সেখানে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি করছিলেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে তার সঙ্গে ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কোনো সক্রিয় সম্পর্ক নেই’।

কর্মকর্তারা জানান, তারা বিশ্বাস করেন নেভেস ভালেন্তে সোমবার ম্যাসাচুসেটসের ব্রুকলাইনে নিজের বাড়িতে এমআইটির অধ্যাপক নুনো এফ গোমেজ লুরেইরোকে (৪৭) গুলি করে হত্যা করেন। প্রভিডেন্স থেকে ব্রুকলাইন প্রায় ৫০ মাইল (৮০ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত।

পুলিশ জানিয়েছে, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে পর্তুগালের একই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনই পড়াশোনা করেছিলেন।

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা একটি প্রত্যক্ষদর্শী এবং সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে সন্দেহভাজনের গাড়ি শনাক্ত করার পর দুটি মামলার মধ্যে যোগসূত্র পাওয়া যায় বলে কর্মকর্তারা জানান।

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের গুলিবর্ষণের ঘটনার মাত্র দুই দিন পর একই গাড়ি অধ্যাপকের হত্যাকান্ডের স্থানের কাছেও দেখা যায়। কর্তৃপক্ষ এখনো দুই হামলার কোনো সম্ভাব্য উদ্দেশ্য জানায়নি।

গত ১৩ ডিসেম্বর ফাইনাল পরীক্ষার সময় ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনে এক বন্দুকধারীর গুলিবর্ষণে দুই শিক্ষার্থী নিহত এবং আরও নয়জন আহত হন।

নিহতরা হলেন— আলাবামার বাসিন্দা ১৯ বছর বয়সি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এলা কুক এবং ১৮ বছর বয়সি মুখাম্মাদ আজিজ উমুরজোকভ। তিনি একজন উজবেক-আমেরিকান এবং সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেছিলেন।


বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে যে প্রতিক্রিয়া জানালেন শশী থারুর

শশী থারুর
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ভারতের কংগ্রেস দলীয় সংসদ সদস্য শশী থারুর।

ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সংসদের পররাষ্ট্রবিষয়ক কমিটি সদ্য একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে আমরা সরকারকে বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার আহ্বান জানিয়েছি।

একইসঙ্গে, ভারতীয়দের বিরুদ্ধে এবং যাদের ভারতপন্থি বলে মনে করা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে যে ধরনের বৈরিতা উসকে দেওয়া হচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এছাড়া কমিটির দেয়া রিপোর্টে ভিসা স্বাভাবিক করার সুপারিশ করেছিলেন বলে জানান তিনি।

শশী থারুর বলেন, কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতের সহিংসতার কারণে দুটো ভিসা সেন্টার বন্ধ করে দিতে হয়েছে, যেটা খুবই হতাশাজনক। কারণ বাংলাদেশিরা ভারতে আসতে চাচ্ছেন, তারা অভিযোগ করছেন যে তারা আগের মতো ভিসা পাচ্ছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য করা আমাদের সরকারের জন্য আরও কঠিন হয়ে উঠছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি দ্রুতই সব স্বাভাবিক হবে। একই সঙ্গে আমি বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানাবো, তাদের প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ককে আরও মূল্যায়ন করতে।

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর একটি বিখ্যাত উক্তি উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, আমরা ভূগোল বদলাতে পারবো না। আমরা যেখানে আছি সেখানেই থাকবো। তারা যেখানে আছে সেখানেই থাকবে। তাই তাদের উচিৎ আমাদের সঙ্গে কাজ করতে শিখে নেওয়া।


সুদানে ফের হামলা, ১৬ বেসামরিকের প্রাণহানি

সুদানে খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন নারীরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সুদানের চলমান গৃহযুদ্ধে দারফুরের পর সংঘাতপূর্ণ কোরদোফান অঞ্চল ক্রমেই নতুন মৃত্যুনগরীতে পরিণত হচ্ছে। দক্ষিণ কোরদোফানের অবরুদ্ধ শহর ডিলিং-এ টানা দুদিন ধরে চালানো হামলায় অন্তত ১৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এবং তাদের মিত্র সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট–নর্থ (এসপিএলএম-এন) ডিলিং শহরের আবাসিক এলাকায় ভারী কামান থেকে গোলাবর্ষণ করেছে। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু ও বয়স্ক মানুষ রয়েছেন। সংস্থাটি একে বেসামরিক জনগণের ওপর ইচ্ছাকৃত হামলা বলে নিন্দা জানিয়েছে।

এই হামলা কোরদোফানজুড়ে চলমান সহিংসতারই অংশ। এ অঞ্চলে ডিসেম্বরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত শতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। বিশ্লেষকদের মতে, সংঘাতের কেন্দ্র ধীরে ধীরে দারফুর অঞ্চল থেকে সরে এসে সুদানের কৌশলগত মধ্যাঞ্চলে বিস্তৃত হচ্ছে যা যুদ্ধের চূড়ান্ত পরিণতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

ডিলিং শহরের স্বাস্থ্যব্যবস্থা এরই মধ্যে চরম সংকটে রয়েছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে অবরোধের পাশাপাশি সেখানে কলেরা ও ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, গত অক্টোবর থেকে কোরদোফানের তিনটি রাজ্য থেকে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ মাসের শুরুতে জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, কোরদোফানে যা ঘটছে তা দারফুরে সংঘটিত গণহত্যার পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা তৈরি করছে।

গত ১৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরদোফানের রাজধানী কাদুগলিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, এই হামলা যুদ্ধাপরাধের শামিল। নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে সেখানে জাতিসংঘ তাদের লজিস্টিক ঘাঁটি সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হওয়া এই গৃহযুদ্ধে সুদানের সেনাবাহিনী (এসএএফ) প্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার সাবেক উপপ্রধান আরএসএফের নেতা মোহাম্মদ হামদান ‘হেমেদতি’ দাগালো মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। বিভিন্ন পর্যবেক্ষকের মতে, এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১ লাখের বেশি মানুষ নিহত এবং ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে- যাকে জাতিসংঘ বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট হিসেবে বর্ণনা করছে।

চিকিৎসা পর্যবেক্ষণকারী সংগঠন সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক জানিয়েছে, গত দুদিনে দক্ষিণ করদোফানের ডিলিং শহরের আবাসিক এলাকায় আর্টিলারি হামলা চালিয়েছে র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) ও তাদের মিত্র সুদান পিপলস লিবারেশন মুভমেন্ট-নর্থ (এসপিএলএম-এন)। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলা এই গোলাবর্ষণে নারী, বয়স্ক মানুষ ও শিশুরাও নিহত হয়েছেন।

সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, হামলায় ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক এলাকাকে লক্ষ্য করা হয়েছে। ডিলিংয়ে এই হামলা করদোফানজুড়ে সহিংসতার নতুন ঢেউয়ের অংশ, যেখানে ডিসেম্বরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিম দারফুর থেকে সরে এসে সংঘাত এখন দেশের কৌশলগত কেন্দ্রীয় অঞ্চলের দিকে যাচ্ছে, যা যুদ্ধের ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সুদান ডক্টরস নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, বেসামরিক এলাকায় হামলা অবিলম্বে বন্ধ করতে উভয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর ওপর চাপ সৃষ্টি করা এবং সংঘাতে আটকে পড়া মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পথ নিশ্চিত করতে।

সুদানে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ড্রোন হামলার পর বিদ্যুৎ বিপর্যয়

সুদানের পূর্বাঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রাণঘাতী ড্রোন হামলার পর গত বৃহস্পতিবার রাজধানী খার্তুম ও পোর্ট সুদানসহ দেশটির বেশ কয়েকটি বড় শহর অন্ধকারে ঢেকে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চলমান যুদ্ধে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন রিভার নাইল রাজ্যের আতবারা শহরে আগুন ও ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। সেখানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর সংঘর্ষ চলছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রথম ড্রোন হামলার পর সৃষ্ট আগুন নেভাতে গিয়ে বেসামরিক প্রতিরক্ষার দুই সদস্য নিহত হয়েছে।

তিনি আরএসএফ-এর দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, দ্বিতীয় দফা হামলায় উদ্ধারকর্মীরাও আহত হন এবং তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।


কেন বৃষ্টিতে লাল হয়ে ওঠে হরমুজ দ্বীপের উপকূল?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মেঘ ভাঙা বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতি যেন রং বদলে ফেলে। ইরানের দক্ষিণে হরমুজ দ্বীপে বৃষ্টি নামলেই মাটি ছুঁয়ে পানি রূপ নেয় টকটকে লালে—আর সেই লাল স্রোত গড়িয়ে গিয়ে মিশে যায় পারস্য সাগরে। দূর থেকে মনে হয়, যেন সাগরজুড়ে রক্তের আভা।

প্রথম দেখায় অলৌকিক মনে হলেও, এই রহস্যময় দৃশ্যের নেপথ্যে লুকিয়ে আছে হরমুজ দ্বীপের বিশেষ ভূপ্রকৃতি ও তার অনন্য ‘গোলাক’ মাটি।

হরমুজের মাটিতে লোহা বা আয়রন অক্সাইডের পরিমাণ অত্যধিক বেশি। বৃষ্টির পানি এই লোহার সঙ্গে মিশে লাল রং ধারণ করে। আরেকটু ব্যাখ্যা করে বললে, লোহা পানির সঙ্গে মেশার পর আলোর স্বল্প তরঙ্গদৈর্ঘ্যগুলো শোষণ করে নেয়। আর লাল রঙের দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্য প্রতিফলিত করে। ফলে আমরা পানি লাল দেখি।

হরমুজ দ্বীপটি ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে ৬৭০ কিলোমিটার দক্ষিণে। এখানে বৃষ্টি সাধারণত বেশ কম হয়। শুধু শীতকাল ও বসন্তের শুরুতে বৃষ্টির দেখা মেলে। পর্যটকেরা অনেকেই এই বৃষ্টিকে ‘ব্লাড রেইন’ বা ‘রক্তবৃষ্টি’ বলে থাকেন। তবে বৃষ্টির পানি কিন্তু মাটিতে পড়ার আগপর্যন্ত স্বাভাবিক রঙেই থাকে।

হরমুজের মাটি শিল্পকারখানায় এবং স্থানীয় সাংস্কৃতিক কাজেও ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিকের কারণে দ্বীপের মাটিতে লাল ছাড়াও হলুদ, কমলা ও বিভিন্ন রঙের ছাপ দেখা যায়। এর জন্য হরমুজের আরেকটি নাম রয়েছে—‘রংধনু দ্বীপ’। এই দ্বীপের সৌন্দর্যের স্বাদ নিতে প্রতিবছর সেখানে ছুটে যান বহু পর্যটক।

মঙ্গলবারের ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে নানা মন্তব্য করেছেন মানুষ। একজন লিখেছেন, ‘এমন রঙের কারণেই হয়তো লোহিত সাগর নামের ধারণাটা এসেছিল।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘আশা করি, কোনো বিরল খনিজের জন্য এমনটা হয়নি। না হয় আবার সুন্দর এই দ্বীপে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়ে যাবে।’


ধর্মীয় বক্তাদের দমনে কঠোর হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদি উৎসবকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ বন্দুক হামলার পর দেশটিতে ঘৃণামূলক বক্তব্য ও উগ্রবাদ দমনে কঠোর আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ। গত ১৪ ডিসেম্বর ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের হানুক্কাহ উৎসবের প্রথম দিন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে অন্তত ১৫ জন নিহত হন। এই হামলাকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে উদ্বেগ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

ক্যানবেরায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ বলেন, ‘নতুন আইন মূলত যারা ঘৃণা, বিভাজন ও উগ্রবাদ ছড়ায়—তাদের লক্ষ্য করেই আনা হবে।’ তিনি জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এমন ব্যক্তিদের ভিসা বাতিল বা প্রত্যাখ্যানের ক্ষমতা দেওয়া হবে, যারা ঘৃণামূলক বক্তব্য প্রচার করে। পাশাপাশি শিক্ষাব্যবস্থায় ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধ, মোকাবিলা ও যথাযথ প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।

প্রস্তাবিত আইনের আওতায় সহিংসতা উসকে দেওয়া ধর্মীয় বক্তা ও নেতাদের জন্য শাস্তির বিধান ছাড়াও ‘অ্যাগ্রাভেটেড হেট স্পিচ’ নামে অপরাধের একটি নতুন সংজ্ঞা সংযোজন করা হবে। অনলাইনে হুমকি ও হয়রানির ক্ষেত্রে শাস্তি নির্ধারণে বিদ্বেষ ছড়ানোনে গুরুতর উপাদান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অ্যালবানিজ বলেন, ‘প্রত্যেক ইহুদি অস্ট্রেলিয়ানের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানিত বোধ করার অধিকার রয়েছে।’

এই হামলার পর দেশটিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার দক্ষিণ-পশ্চিম সিডনিতে সাতজনকে আটক করা হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সহিংস কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। তবে পুলিশ বলছে, বন্ডাই হামলার সঙ্গে এই ঘটনার সরাসরি কোনো যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।

এদিকে সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও কিছু সংগঠন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইহুদি কাউন্সিল অব অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, বন্দুক নিয়ন্ত্রণ ও অনলাইনে বিদ্বেষ ছড়ানোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ প্রশংসনীয় হলেও, কিছু প্রস্তাব ইসরায়েলপন্থি লবির পুরোনো দাবির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, যা সহিংস উগ্রবাদ দমনের চেয়ে মতপ্রকাশ সীমিত করতে পারে। সংগঠনটির নির্বাহী কর্মকর্তা ড. ম্যাক্স কাইজার সতর্ক করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে মতাদর্শিক নজরদারি চালানো হলে তা ইহুদিদের নিরাপত্তা বাড়ানোর বদলে আরও ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।’

এদিকে প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেছেন, গত ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরায়েল আক্রমণের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদিবিদ্বেষ রোধে সরকার আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারত। তিনি বলেন, ‘আমার দায়িত্ব শুধু ভুল স্বীকার করা নয়, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করাও।’


banner close