রোববার, ২২ জুন ২০২৫
৯ আষাঢ় ১৪৩২

বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত নয়াদিল্লি, শিশুসহ ১১ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৩০ জুন, ২০২৪ ১৬:৪৯

ভারি বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত ভারতের রাজধানী দিল্লিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে জমে থাকা পানিতে ডুবে। মৃতদের মধ্যে কয়েকটি শিশুও রয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় প্রশাসন। স্থানীয় গণমাধ্যম ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকায় এবিষয়ে আজ রোববার এক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আগামী দিনে বৃষ্টি আরও বাড়বে। সতর্কতা জারির পাশাপাশি চার দিন ধরে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া ভবন। রাজধানীর বহু এলাকা এখনো জলমগ্ন। এ ছাড়া রোববার ও সোমবার ভারি বৃষ্টির পাশাপাশি ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাসও দেওয়া হয়েছে। আগামী চার দিন ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হলেও সাত দিন পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া ভবন।

আবহবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বর্ষার মৌসুমে দিল্লিতে ৬৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। কিন্তু শুধু শুক্রবারই গোটা মৌসুমের এক তৃতীয়াংশ বৃষ্টি হয়ে গেছে। এক দিনে ২২৮ মিলিমিটার বৃষ্টির জেরে প্লাবিত হয়েছে গোটা রাজধানী। এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৩৬ সালের পর থেকে জুন মাসে এক দিনে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত এটি।

শুধু দিল্লিই নয়, উত্তর ও মধ্য ভারতের রাজ্যগুলোতেও আগামী দিনে বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া ভবন। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, চণ্ডীগড়, উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ এবং রাজস্থানে ৩ জুলাই পর্যন্ত ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই-ই নয়, এই সময়ের মধ্যে উত্তরাখণ্ড, উত্তর প্রদেশ, পূর্ব রাজস্থান, পশ্চিম মধ্য প্রদেশের কিছু অংশে অতিভারি বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে ভারী বৃষ্টির জেরে বিপদসীমা ছুঁয়েছে গঙ্গা। সুখী নদী উপচে পড়ায় বহু রাস্তা ও বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।


ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানের ইসফাহানে অবস্থিত একটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসফাহান গভর্নরের ডেপুটি সিকিউরিটি অফিসার আকবর সালেহি বলেছেন, গতকাল শনিবার সকালে ইসফাহানের কয়েকটি স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল, এর মধ্যে একটি পারমাণবিক স্থাপনাও রয়েছে। খবর বিবিসির। সালেহি বলেন, হামলার পর সেখান থেকে ধোঁয়া ওঠতে দেখা গেছে। তবে কোনো ক্ষতিকর পদার্থের গ্যাস বা তরল নির্গমন ঘটেনি। তিনি আরও বলেন, ইসফাহান রিফাইনারি (পরিশোধনাগার) ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্য ছিল না। ইসফাহান, লাঞ্জান, মোবারাকে ও শাহরেজা শহরের কিছু এলাকা ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে। আকবর সালেহি বলেন, এসব হামলায় এখন পর্যন্ত কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। তবে কিছু এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

আবার ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইরানের

ইরান নতুন করে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইরানের বার্তা সংস্থা মেহের নিউজ এই খবর নিশ্চিত করেছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাও জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে যে, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আটকানোর চেষ্টা করছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা গোলান মালভূমিতে ইরানের একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এখন ঘোষণা করেছে, বেইত শেআন উপত্যকা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরের উত্তরে সাইরেন বাজানোর পর তারা আরেকটি ইরানি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এ থেকে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গতকাল শনিবার ইসরায়েলি বিমানবাহিনী জানিয়েছে যে, মধ্য ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ এবং উৎক্ষেপণের বিভিন্ন অবকাঠামোতে বিমান হামলা চালিয়েছে। দুদেশের মধ্যে নয় দিন ধরে সংঘাত চলছে। ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, তারা মধ্য ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণ এবং উৎক্ষেপণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।

ইরানি হামলা ঠেকাতে ইসরায়েলের দৈনিক ব্যয় ২০০ মিলিয়ন ডলার

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে দৈনিক প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ইসরায়েল। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এবং অন্যান্য পশ্চিমা ও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বিপুল খরচের বড় অংশ ব্যয় হচ্ছে ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো চালাতে, যা প্রতিনিয়ত ইরানের লাগাতার হামলা ঠেকাতে সংগ্রাম করছে। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, শুধু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পরিচালনা করতেই ইসরায়েলের প্রতিদিন প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় হচ্ছে। এদিকে ইরানি হামলার অর্থনৈতিক প্রভাব ইতোমধ্যেই দখলকৃত ফিলিস্তিনি শহরগুলোয় দেখা যাচ্ছে। ইসরায়েলি সংবাদপত্র মারিভ বলছে, তেলআবিবে অর্ধেকের বেশি দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাজার এলাকাগুলো ফাঁকা ও নিস্তব্ধ, জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। বিশ্লেষকদের মতে, এই আর্থিক চাপ এবং নাগরিক জীবনে বিপর্যয় ইসরায়েলি সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণ চাপ আরও বাড়িয়ে তুলছে। পরিস্থিতি যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, ক্ষতির পরিমাণ তত দ্রুত বাড়ছে।

ইসরায়েলের বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দর ও সামরিক দপ্তরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

ইসরায়েলের বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দর ও সামরিক দপ্তর লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। গতকাল শনিবার সকালে ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডবাহিনী (আইআরজিসি) এ ঘোষণা দিয়েছে। আইআরজিসি এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দর ও কিছু সামরিক সদর দপ্তরকে লক্ষ্য করে ইসরায়েল-অধিকৃত ফিলিস্তিনের অঞ্চলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। গতকাল ভোরে আইআরজিসি ঘোষণা দিয়েছে, তারা ট্রু প্রমিজ অপারেশন-৩ এর ১৮তম পর্যায় শুরু করেছে। এতে ‘শাহেদ ১৩৬’- এর মতো অসংখ্য আত্মঘাতী এবং যুদ্ধ ড্রোন, পাশাপাশি নির্ভুল কঠিন জ্বালানি এবং তরল জ্বালানি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। বিবৃতি অনুযায়ী, আইআরজিসি বেন-গুরিওন বিমানবন্দর এবং সামরিক অপারেশনাল লজিস্টিক সেন্টারগুলোতে পূর্বনির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুগুলো সফলভাবে ধ্বংস করেছে। সরকারের অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানি ড্রোনগুলো বাঁধা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। হামলার কারণে ইসরায়েলিরা আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সর্বশেষ হামলায় ১০টির মধ্যে ৫টি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র তাদের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। এর মধ্যে বন্দরনগরী হাইফাতে আঘাত হানা এক ক্ষেপণাস্ত্রে ৩ জন আহত হয়েছেন বলেও স্বীকার করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। এদিকে ইরান ও ইসরায়েল সংঘাত বন্ধের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় কূটনৈতিক বৈঠকে বসেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এবং ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ইউরোপীয় কমিশনের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কাজা ক্যালাস বলেন, আঞ্চলিক উত্তেজনা কারও জন্যই লাভজনক নয়, তাই আমাদের আলোচনার সুযোগ খোলা রাখা উচিত।


তাইওয়ান প্রণালীতে ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজের টহলে চীনের প্রতিবাদ

ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ এইচএমএস স্পে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

দুইদিন আগে ব্রিটিশ এক যুদ্ধজাহাজের তাইওয়ান উপকূল পাড়ি দেওয়ার ঘটনাকে ‘শান্তি ও স্থিতিশীলতা ক্ষুণ্নে উদ্দেশ্যমূলক উসকানি’ হিসেবে অভিহিত করেছে চীনের সামরিক বাহিনী। অন্যদিকে ব্রিটিশ রাজকীয় নৌবাহিনী বলেছে, বুধবার ওই প্রণালীতে তাদের এইচএমএস স্পে-র টহল ছিল আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

যুদ্ধজাহাজটি ওই অঞ্চলে মোতায়েন এবং তাইওয়ান প্রণালীতে টহলের পরিকল্পনা অনেক আগের, বলেছে তারা। এর মধ্য দিয়ে চার বছর পর ব্রিটিশ কোনো যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালীতে টহল দিল, লিখেছে বিবিসি।

বিমানবাহী রণতরী এইচএমএস প্রিন্স অব ওয়েলসের নেতৃত্বে সম্প্রতি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে এসেছে যুক্তরাজ্যের একটি নৌবহর। তাদের এ অঞ্চলে আট মাস থাকার কথা। এর মধ্যেই এইচএমএস স্পে তাইওয়ান প্রণালীতে টহল দিল।

চীন তাইওয়ানকে তার নিজের ভূখণ্ড মনে করে, এবং মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একে যুক্ত করতে প্রয়োজনে শক্তি ব্যবহার করতে বেইজিং পিছপা হবে না বলে তাদের হুঁশিয়ারিও আছে।

স্বশাসিত তাইওয়ান তাদের ওপর বেইজিংয়ের খবরদারিকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। মার্কিন যুদ্ধজাহাজগুলোকে প্রায়ই তাইওয়ান প্রণালী পাড়ি দিতে দেখা গেলেও সর্বশেষ ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যের যুদ্ধজাহাজ এইচএমএস রিচমন্ড ওই জলসীমায় টহল দিয়েছিল। সেসময় যুদ্ধজাহাজটিকে ভিয়েতনামে মোতায়েন করা হয়েছিল।

সেবারও চীন এ টহলের প্রতিবাদ জানিয়ে ব্রিটিশ জাহাজটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণে সেনা পাঠিয়েছিল। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে দুটি ব্রিটিশ যুদ্ধজাহাজ স্থায়ীভাবে টহলে রয়েছে, এইচএমএস স্পে তার একটি।

এইচএমএস প্রিন্স অব ওয়েলসের নেতৃত্বে ইন্দো-প্যাসিফিকে আসা নৌবহরে প্রায় ৪ হাজার সেনা রয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এই বহরটির ৮ মাসে ৩০টি দেশে সফর ও সামরিক অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে একাধিক মহড়ায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।


যত দ্রুত সম্ভব যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে চান নেতানিয়াহু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার জোট। একই সঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব ইরানে হামলার বিষয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত আসবে বলে আশা করেন নেতানিয়াহু।

গতকাল শুক্রবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে এসব কথা বলেন ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজের কলামিস্ট গিডিয়ন লেভি। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধের বর্তমান বাস্তবতায় দুই সপ্তাহ অসীম, যদি তিনি ( ট্রাম্প) সত্যিই দুই সপ্তাহ বোঝাতে চেয়েছিলেন, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের এই যুদ্ধে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ কমছে।’

লেভি আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করতে এবং তার আক্রমণাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত করতে সফল হলেও, ইসরায়েলের নিরাপত্তা সমস্যা দূর হবে না। কারণ, ইরান আবার তার পারমাণবিক কর্মসূচি শুরু করবে এবং ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা ফিরে পেতে পারে।

এদিকে ইসরায়েলের একজন কর্মকর্তা টাইমস অব ইসরায়েলকে বলেছেন, ‘ইসরায়েল এখনো আশা করে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে হামলায় যোগ দেবেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আশা করা হচ্ছে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যোগ দেবে, আমরা আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জানতে পারব। কিন্তু এ বিষয়ে কেউ তাদের চাপ দিচ্ছে না, তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজের হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাকে (কাৎজ) যা করতে বলেন, সে অনুসারেই বক্তব্য রাখেন কাৎজ। তিনি নিজে থেকে কোনো কিছু বলেন না।’

ইরান-ইসরায়েল পাল্টাপাল্টি হামলা আরও তীব্র হচ্ছে। একের পর এক মিসাইল আঘাত হানছে ইসরায়েলে। তেমনি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ইরানের বিভিন্ন শহরে বোমা ফেলছে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে ইরানের অস্ত্র কারখানাসহ সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রও। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব রাজনীতি আরও ঘোলাটে হচ্ছে। নতুন নতুন দেশ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে দুভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ইরানের ওপর সামরিক হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেবেন।

ইরানের সঙ্গে ‘আলোচনার যথেষ্ট সম্ভাবনা’ থাকার কারণে ট্রাম্প দুই সপ্তাহের সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন, যা উত্তেজনার তাপমাত্রা কমিয়ে দিয়েছে। বিবিসির উত্তর আমেরিকার প্রধান সংবাদদাতা সূত্রের বরাতে জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে গোপনে আলোচনা চলছে বলে মনে হচ্ছে।

ইসরায়েলি হাসপাতালে ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৭১ জন আহত হয়েছেন। এই হামলার পর ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে আর থাকতে দেওয়া যাবে না। ইরান দেশব্যাপী ইন্টারনেট যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। এ পরিস্থিতিকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ সময় হিসেবে বর্ণনা করা হচ্ছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির মধ্যে বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য একমত যে ইরানকে কখনই ‘পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেওয়া হবে না’। গতকাল শুক্রবার জেনেভায় ফরাসি, জার্মান, ইইউ এবং ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ল্যামির দেখা করার কথা রয়েছে। হামাসের বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, বৃহস্পতিবার গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৭৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলের হাইফার বাজান তেল শোধনাগার অবিলম্বে খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন সেখানকার মেয়র ইয়োনা ইয়াহাভ। তিনি বলেছেন, ইরানি হামলার পর শোধনাগারটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেখানে কাজ করা বিপদ বয়ে আনতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাদের সঙ্গে ইরানে হামলায় যুক্ত হোক বা না হোক, তেহরানের সব পারমাণবিক স্থাপনা নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার ক্ষমতা ইসরায়েলের আছে, বলেছেন তিনি।

’ইরানে নেতৃত্বের বদল লক্ষ্য নয়, কিন্তু হতে পারে’

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানে নেতৃত্বের পতন বা বদল তাদের হামলার লক্ষ্য নয়, তবে হামলার কারণে সেটি হতেও পারে। শাসনব্যবস্থা বদলানো কিংবা এই শাসনব্যবস্থার পতনের বিষয়টি প্রথমত এবং পুরোপুরিই ইরানি জনগণের বিষয়। এর কোনো বিকল্প নেই।

‘যে কারণে আমি একে লক্ষ্য হিসেবে ঠিক করিনি। এটা একটা ফল হতে পারে, কিন্তু এটা আমাদের আনুষ্ঠানিক বা নির্ধারিত লক্ষ্য নয়,’ গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের সরকারি টেলিভিশন কান-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বলেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের সঙ্গে ইরানে হামলায় যুক্ত হোক বা না হোক, তেহরানের সব পারমাণবিক স্থাপনা নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার ক্ষমতা ইসরায়েলের আছে।

তার বক্তব্যের কিছু সময় পরই হোয়াইট হাউস জানায়, ইরান যুদ্ধে ওয়াশিংটন জড়াবে কিনা সে বিষয়ে ট্রাম্প আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন। সামরিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইরানের ফোরদো জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ধ্বংসে যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কারবিধ্বংসী বোমার সহায়তা লাগবে ইসরায়েলের।

ফোরদোর এই কেন্দ্রটিকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ‘মুকুট’ বিবেচনা করা হয়। কোম শহরের কাছে একটি পাহাড়ের নিচে মাটির অনেক গভীরে এই কেন্দ্রটি অবস্থিত। ফোরদোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত কি যুক্তরাষ্ট্রকে সঙ্গে নিয়ে নেওয়া হবে, নাকি তাদের বাদ দিয়েই হবে— এমন প্রশ্নের জবাবে নেতানিয়াহু বলেন,’ আমাদের নিশানায় থাকা সব কিছু, তাদের সব পারমাণবিক কেন্দ্র ধ্বংসের ক্ষমতা আছে আমাদের। এখন যুক্তরাষ্ট্র যোগ দেবে কি দেবে না এটা পুরোপুরিই প্রেসিডেন্টের (ট্রাম্প) সিদ্ধান্ত।’


এবার পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের চিন্তা করছি

সাবেক ইসরায়েলি মন্ত্রী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানের পর এবার পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের সাবেক উপ–প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও লেবার পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রভাবশালী নেতা মেইর মাসরি।

আরবি ও উর্দু ভাষায় এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে মাসরি বলেন, ‘ইরানের পর এবার আমরা পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের চিন্তা করছি।’

মাসরির মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকেই পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে তার বক্তব্যের নিন্দা জানান।

বর্তমানে সরকারি কোনো পদে না থাকলেও ইসরায়েলি রাজনীতি ও কৌশল নির্ধারকদের মধ্যে প্রভাবশালী হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন মাসরি, বিশেষত লেবার পার্টির জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে।

পোস্টে মাসরি আরও লেখেন, ‘পাকিস্তান ইরান থেকে দূরে নয়। এতটুকু বুঝলেই যথেষ্ট।’

বর্তমানে সরকারি কোনো পদে না থাকলেও ইসরায়েলি রাজনীতি ও কৌশল নির্ধারকদের মধ্যে প্রভাবশালী হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকেন মাসরি, বিশেষত লেবার পার্টির জ্যেষ্ঠ সদস্য হিসেবে।

তার এই হুমকির পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। অনেকে পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়িয়ে মাসরির বক্তব্যের নিন্দা জানান। ব্যবহারকারীরা মন্তব্য করেন, এ ধরনের উসকানিমূলক হুমকি পাকিস্তানিদের মনোবল আরও দৃঢ় করবে। কেউ কেউ মনে করিয়ে দিয়েছেন, পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা ও এর সংযত ব্যবহার বিশ্বে স্বীকৃত।

এদিকে আঞ্চলিক উত্তেজনা চলার মধ্যে গত সোমবার পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার ইসরায়েলকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

ইসহাক দার বলেন, ‘ইসরায়েলের জন্য আমাদের বার্তা স্পষ্ট, পাকিস্তানের দিকে তাকানোর সাহস কেরো না।’ তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে এবং যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত ও সক্ষম।

ইসহাক দার স্মরণ করিয়ে দেন, ‘ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার সময় পুরো জাতি যেভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিল, সেভাবেই সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এখনো সবাই একযোগে প্রস্তুত থাকব।’

এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ায় যে ইরানে হামলা হলে পাকিস্তান ইসরায়েলের ওপর পারমাণবিক হামলা চালাতে পারে। তবে এসব গুজব সরাসরি অস্বীকার করেছে পাকিস্তান সরকার।


২০২৪ সালে শিশুদের প্রতি সহিংসতা ‘ভয়াবহ মাত্রায়’ পৌঁছেছে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা থেকে শুরু করে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতময় অঞ্চলে ২০২৪ সালে শিশুদের ওপর সহিংসতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের এক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদরদপ্তর থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের ওপর সহিংসতার মাত্রা নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে। আর ২০২৩ সালের চেয়ে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ২৫ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে শিশুদের বিরুদ্ধে ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৩৬ হাজার ২২১টিই সংঘটিত হয়েছে ২০২৪ সালে। বাকি ৫ হাজার ১৪৯টি আগের বছরের হলেও তা এ বছর যাচাই করা হয়েছে। এটি গত ৩০ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।

২০২৩ সালেও শিশু সহিংসতায় রেকর্ড হয়েছিল, তবে পরের বছর অবশ্য সেই রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে যায়। ২০২৪ সালে আগের বছরের তুলনায় সহিংসতা বেড়েছে ২১ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সহিংসতায় সাড়ে ৪ হাজারেও বেশি শিশু নিহত এবং কমপক্ষে ৭ হাজার জন আহত হয়। বর্তমানে নির্বিচার হামলা ও সহিংসতার প্রধান শিকার শিশুরাই বলেও দাবি করা হয়।

এছাড়াও বহু শিশু একাধিক সহিংসতার শিকার হয়েছে। এমন ভুক্তভোগী শিশুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৪৯৫ জনে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ভার্জিনিয়া গাম্বা বলেন, যে ২২ হাজার ৪৯৫ শিশুর এখন স্কুলে পড়া বা মাঠে খেলাধুলা করার কথা, তারা আজ শিখছে কীভাবে গোলাগুলি আর বোমার মধ্যেও বেঁচে থাকতে হয়। এই শিশুদের আর্তনাদ আমাদের সবার রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার মতো।

তিনি আরও বলেন, এটি যেন আমাদের জন্য সতর্ক সংকেত হয়। কারণ আমরা একেবারে সংকটসীমার কিনারায় পৌঁছে গেছি।

জাতিসংঘ প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ২০টি সংঘাতময় অঞ্চলে ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার তালিকা প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনের পরিশিষ্টে যুক্ত রয়েছে তথাকথিত ‘লজ্জার তালিকা’, যেখানে শিশুদের ওপর সহিংসতার জন্য দায়ীদের নাম প্রকাশ করা হয়।

এ তালিকায় এ বছর নতুন করে যুক্ত হয়েছে হাইতির একটি সশস্ত্র গ্যাং জোটের নাম। তাদের বিরুদ্ধে শিশু হত্যা ও অঙ্গহানি, সশস্ত্র সহিংসতায় নিয়োগ, অপহরণ, মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত করা এবং যৌন সহিংসতার মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।

ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নাম এ বছরের তালিকাতেও রয়েছে।


ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়াবে কি না, সিদ্ধান্ত দুই সপ্তাহের মধ্যে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত। আর এই সংঘাতকে কেন্দ্র করে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছেন খোদ দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার সংঘাতে জড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) এ সিদ্ধান্তের কথা জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, “তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরুর ‘উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা’ রয়েছে।

তাই এ সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সংঘাতের একটি নিষ্পত্তি খোঁজার সুযোগ রাখতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে।

চলমান পরিস্থিতিতে ট্রাম্প এখন বিবেচনা করছেন, ইরানের সুসংরক্ষিত ফোর্ডো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনায় হামলা চালানো হবে কি না। এই স্থাপনাটি একটি পর্বতের নিচে অবস্থিত এবং কেবল যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাংকার-বাস্টার’ বোমা দিয়েই এটিকে লক্ষ্যবস্তু করা সম্ভব বলে ধারণা করা হয়।

এর আগে, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত একটি হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, “ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে ‘বেঁচে থাকতে দেওয়া যাবে না’। এ ছাড়া, ইরান সরকারকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে হামলা জোরদারের নির্দেশ তিনি।

ইরান যে সময় ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে, একই সময়ে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচীতে হামলা চালায় তেল আবিব।

এদিকে, প্রথমদিকে এই সংঘাত থেকে নিজেকে দূরে রাখলেও পরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি ওই অঞ্চলে বাড়িয়েছেন ট্রাম্প এবং ইরানের ওপর হামলায় মার্কিন বাহিনীকে যুক্ত করার বিষয়টিও বিবেচনা করছেন।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন আমেরিকার সর্বোত্তম স্বার্থেই কাজ করবেন ট্রাম্প।

বৃহস্পতিবার বিয়েরশেবা শহরের সোরোকা মেডিকেল সেন্টারের ধ্বংসস্তূপ ও ভাঙা কাচের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলতে পারি, তারা ইতোমধ্যেই আমাদের অনেক সাহায্য করছে।’

এদিকে, শুক্রবার (২০ জুন) ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক ও যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের জন্য জেনেভায় যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। এতে নতুন এক কূটনৈতিক উদ্যোগ শুরু হতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি জানান, তিনি হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে চলমান উত্তেজনা প্রশমনে একটি চুক্তির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে তথ্য দেন তিনি।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কূটনৈতিক সমাধান অর্জনের একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

এর আগে ইরানকে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান ট্রাম্প। তবে এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।

তিনি বলেন, এই সংঘাতে যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ আমেরিকানদের জন্য ‘অপূরণীয় ক্ষতির’ কারণ হবে।


ইরানের ‘স্বৈরশাসকদের’চড়া মূল্য দিতে হবে: নেতানিয়াহু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরানকে চড়া মূল্য দিতে হবে বলে হুঁমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গতকাল বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের বিরসেভা শহরের সরোকা হাসপাতালে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এরপরই ইরানকে এই হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি।

এক্স (পূর্বে টুইটার) পোস্টে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী লিখেন, গতকাল সকালে, ইরানের ‘সন্ত্রাসী স্বৈরাচারীরা’ বিরসেভার সোরোকা হাসপাতাল ও মধ্য ইসরায়েলের একটি বেসামরিক জনবসতিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। আমরা তেহরানের ‘স্বৈরাচার শাসকদের’ কাছ থেকে এই হামলার পুরো মূল্য আদায় করব।

ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, ইরানের সর্বশেষ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কমপক্ষে ৪৭ জন আহত হয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, দৌড়ে আশ্রয় নিতে যাওয়ার সময় ১৮ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর ও দুজনের অবস্থা মাঝারি।

এদিকে ইসরায়েলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী উরিয়েল বুসো দাবি করেছেন, বিরসেভা শহরে সোরোকা হাসপাতালের পাশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে ‘লাল সীমানা পেরিয়ে গেছে’ ইরান। তিনি একে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে অভিহিত করেছেন। ইসরায়েলি আর্মি রেডিওতে দেওয়া এক বিবৃতিতে বুসো বলেন, এই হামলা ইরানি শাসকগোষ্ঠীর একটি যুদ্ধাপরাধ।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, বিরসেভা শহরে ইরানের বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলায় সোরোকা হাসপাতাল ও তেল আবিবে অবস্থিত ইসরায়েলি স্টক এক্সচেঞ্জ ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জর্ডান থেকে আল জাজিরার এক প্রতিবেদক জানান, হাসপাতালটি সরাসরি লক্ষ্যবস্তু না হলেও পাশে থাকা একটি সামরিক স্থাপনায় আঘাতের পর সেই বিস্ফোরণের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থাও দাবি করেছে, লক্ষ্য ছিল হাসপাতালের পাশের একটি ‘সংবেদনশীল’ সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনা, যা সোরোকা হাসপাতালের পাশে গাভ-ইয়াম প্রযুক্তি পার্কে অবস্থিত। সোরোকা হাসপাতালটি বর্তমানে গাজা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আহত সেনাদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় বলে জানা যায়।


সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে তুরস্ক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে ‘সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতির’ জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে তুরস্ক। এছাড়া তুরস্ক ইরানের সঙ্গে সীমান্তের নিরাপত্তা বাড়িয়েছে দেশটি। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি গোপন সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র আরও জানায়, এরই মধ্যে তুরস্ক-ইরান সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ইরান থেকে তুরস্কে শরণার্থীদের ‘অস্বাভাবিক’ প্রবাহ দেখা যায়নি।

রয়টার্সকে একটি সূত্র জানিয়েছে, তুরস্ক স্থানীয়ভাবে বহুস্তর বিশিষ্ট উৎপাদিত রাডার ও অস্ত্রব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্য দিয়ে সমন্বিত বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তৈরি করছে দেশটি; যেন সম্ভাব্য যুদ্ধ প্রস্তুতি উচ্চ স্তরে রাখা।

সূত্র আরও জানায়, গত শুক্রবার ইরানে যখন ইসরায়েল আক্রমণ শুরু করে, তখন তুরস্কের ‘দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল’ বিমানগুলো আকাশে টহল দিয়েছিল। কারণ, যদি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে, সঙ্গে সঙ্গে যেন জবাব দেওয়া যায়।

ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর তুরস্ক এখন পর্যন্ত সরাসরি জড়ায়নি। তবে আঙ্কারা আগেই জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে যেকোনো যুদ্ধ তাদের নিরাপত্তা ও অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে। এ কারণে সীমান্ত নজরদারি ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।

চলমান উত্তেজনায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। এই যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির প্রতিনের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেছেন।


ইসরায়েলের সেনা ও গোয়েন্দা স্থাপনা ছিল হামলার লক্ষ্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইরান ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইসরায়েলের সরোকা ইসরায়েলের দাবি, ইরান ইসরায়েলের হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের এমন দাবির জবাব দিয়েছে ইরান। গতকাল বৃহস্পতিবার তেহরান টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানি কর্মকর্তা ও মিডিয়া সূত্র দক্ষিণ ইসরায়েলের একটি হাসপাতালে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার দাবি অস্বীকার করেছে। ইসরায়েলি মিডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের জবাবে ইরান এ দাবি করেছে। ইসরায়েলের দাবি, ইরানের একটি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েল-অধিকৃত অঞ্চলের বিয়েরশেবায় অবস্থিত সরোকা মেডিকেল সেন্টারে আঘাত হেনেছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরোকা হাসপাতালটি গাজায় অভিযানের সময় আহত ইসরায়েলি সৈন্যদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে ইরানি সূত্রগুলো জানিয়েছে, হাসপাতালটি হামলার লক্ষ্য ছিল না।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরোকা হাসপাতালটি ইসরায়েলের দুটি প্রধান সামরিক স্থাপনার মাঝে অবস্থিত। এগুলো হলো আইডিএফের প্রধান গোয়েন্দা সদর দপ্তর এবং সেন্ট্রাল কমান্ড সেন্টার। এ দুটি স্থাপনায় গাভ-ইয়াম প্রযুক্তি পার্কে অবস্থিত। এই স্থাপনাগুলো ইসরায়েলের সাইবার অপারেশন, ডিজিটাল কমান্ড সিস্টেম এবং সামরিক গোয়েন্দা অবকাঠামোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।

ইরানি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাছাকাছি বিস্ফোরণের শকওয়েভ থেকে হাসপাতালটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এটি সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত হয়নি। ইরানের দাবি, সামরিক কমান্ড নেটওয়ার্কের ক্ষতি থেকে দৃষ্টি সরাতে এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে বেসামরিক অবকাঠামোর সঙ্গে মিথ্যাভাবে যুক্ত করে মানসিক যুদ্ধে চালনায় লিপ্ত রয়েছে ইসরায়েল।

ইরানি সূত্রগুলো বলেছে, এই মিথ্যা বর্ণনা একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রচারণার অংশ, যার লক্ষ্য ইসরায়েলের সামরিক ইমেজ পরিশুদ্ধ করা এবং এর গোয়েন্দা অবকাঠামোর ওপর আঘাতের মাত্রা গোপন করা।

ইসরায়েলের হাসপাতালে ইরানের হামলায় আহত ৬৫

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) অভিযোগ, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অন্তত ‘কয়েক ডজন’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। তার মধ্যে কয়েকটি সাধারণ নাগরিকদের বসতিতেও পড়েছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের। ওই ঘটনায় এ পর্যন্ত অন্তত ৬৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত গড়িয়েছে সপ্তম দিনে। বৃহস্পতিবার সকালে ইরানের আরেক পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। প্রত্যুত্তরে এবার ইসরায়েলের দিকেও ধেয়ে এল একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত অন্তত ৬৫ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ইরানের আরাক পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। এরপর থেকেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লাগাতার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে ইরান। ইসরায়েলের দক্ষিণে বেরশেবা শহরের অন্যতম প্রধান হাসপাতাল ‘সোরোকা’-য় হামলা চালিয়েছে ইরান। সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, হামলা হয়েছে তেলআবিবের স্টক এক্সচেঞ্চের বহুতল ভবনেও।

এছাড়াও, দেশের ঠিক মধ্যভাগে জনবসতি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, সকালে ইরান বেরশেবার সোরোকা হাসপাতাল লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। হামলা হয়েছে লোকালয় লক্ষ্য করেও। ওদের কড়া জবাব দেব। তেহরানকে এর মূল্য চোকাতেই হবে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর (আইডিএফ) অভিযোগ, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অন্তত ‘কয়েক ডজন’ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। তার মধ্যে কয়েকটি সাধারণ নাগরিকদের বসতি এলাকাতেও পড়েছে বলে অভিযোগ ইসরায়েলের।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সকাল থেকেই তেলআবিবে আছড়ে পড়তে শুরু করে ইরানের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র। সোরোকার হাসপাতালে হামলারও বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে বিস্ফোরণের পর গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোতে দেখা গিয়েছে হাসপাতাল থেকে। ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা বিভাগ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ওই ঘটনায় অন্তত ৬৫ জন আহত হয়েছে।

যদিও ইরানের সংবাদ সংস্থা আইএনআরএর দাবি, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ইসরায়েলি সেনার কমান্ড অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স (আইডিএফ সি৪আই) সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছে ইরানি বাহিনী। গাভ-ইয়ামে ইসরায়েলের সামরিক গোয়েন্দাদের একটি দফতরেও হামলা হয়েছে। তবে যে হাসপাতালে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ, তাতে সামান্যই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মূলত সামরিক ও গোয়েন্দা দপ্তর লক্ষ্য করে হামলা চালানো।

খামেনিকে নির্মূল করাই যুদ্ধের মূল লক্ষ্য

ইরানের হামলার মূল লক্ষ্য জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটি জানিয়েছে, এ যুদ্ধের মূল লক্ষ্য ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে নির্মূল করা। গতকাল বৃহস্পতিবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে সরাসরি হত্যার কথা উল্লেখ করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। তিনি বলেন, (খামেনি)র মতো একজন ব্যক্তি সবসময় তার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ইসরায়েলকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে কাজ করে এসেছেন। যে ব্যক্তি আমাদের ওপর হামলা করতে প্রস্তুত, তাকে বেঁচে থাকতে দেওয়া উচিত নয়।

কাটজ বলেন, এই ব্যক্তিকে থামানো, তাকে নির্মূল করার বিষয়টি এই প্রচারণার অংশ। আমরা এখন তার ভূমিকা বুঝতে পেরেছি, কারণ আগে তিনি ইসরায়েলের ধ্বংসের কথা বলতেন। এর আগে গত শুক্রবার ইরানে হামলা শুরুর পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি ইংরেজি ভিডিওতে ইরানি জনগণের উদ্দেশে বলেন, তিনি আশা করেন এই সামরিক অভিযান ‘আপনাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ প্রশস্ত করবে।’

গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প খামেনির কথা উল্লেখ করে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে করেন। সেখানে তিনি বলেন, আমরা তাকে (হত্যা!) করতে যাচ্ছি না, অন্তত এখন নয়… আমাদের ধৈর্য ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।


যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে ‘হতাশ’ মালালা, ক্ষোভ প্রকাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানের নোবেলবিজয়ী অধিকারকর্মী মালালা ইউসুফজাই গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের যে বিপুল প্রভাব ও ক্ষমতা রয়েছে, তা তারা মানব জীবন রক্ষা, শান্তি আনার কিংবা স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ব্যবহার করেনি — এটা অত্যন্ত হতাশাজনক। ‘ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস উইমেন ইন বিজনেস সামিটে’ তিনি এসব কথা বলেন।

গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আরও জোরাল ভূমিকার আহ্বান জানিয়ে মালালা বলেন, আমি আশা করি যুক্তরাষ্ট্র গাজায় সংঘটিত গণহত্যা বন্ধে, যুদ্ধবিরতির পক্ষে এবং মানবিক সহায়তা প্রবাহ নিশ্চিত করতে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

গাজা ইস্যুতে দীর্ঘদিন চুপ থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে মালালা বলেন, এ অভিযোগগুলো তথ্যভিত্তিক নয়। জনসমক্ষে থাকা ব্যক্তিদের সবসময়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য যাচাই না করে অভিযোগ তোলেন।

তিনি জানান, আমি ২০১৪ সাল থেকে গাজা বিষয়ে কথা বলে আসছি। আমি বিভিন্ন সময় এই সংকট নিয়ে সোচ্চার হয়েছি, মানবিক সহায়তায় কাজ করেছি।

মালালা জানান, তিনি ২০১৪, ২০২১ এবং ২০২৩ সালে গাজার শিশুদের জন্য স্কুল নির্মাণে অনুদান দিয়েছেন এবং বর্তমানে শিশুদের সহায়তা করা অনেক সংগঠনকে জরুরি অনুদান দিয়েছেন।

তালেবান-শাসিত আফগানিস্তানে নারীদের প্রতি নির্যাতন নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মালালা বলেন, আফগান নারীরা যে দুঃসহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তা অমানবিক। আমি যুক্তরাষ্ট্রকে আহ্বান জানাই, তারা যেন নারীদের অধিকারে আরও সোচ্চার হয় এবং তালেবান সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ায়।

সামিটে বক্তব্যের শেষভাগে মালালা বলেন, আমরা সবাই একই কণ্ঠস্বর — মানবাধিকারের, শান্তির এবং ন্যায়ের পক্ষে। আমরা সবাই একই লক্ষ্যের জন্য লড়ছি।


আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে সশস্ত্র রোহিঙ্গারা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মিয়ানমারের আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কক্সবাজারের আশ্রয় শিবির থেকে সদস্য সংগ্রহ করছে রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। এই পথের আগালে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তেমনি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে পড়বে।

গতকাল বুধবার প্রকাশিত আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের একটি প্রতিবেদনে এসব কথা ওঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার রোহিঙ্গা বিদ্রোহের ঝুঁকি’ শীর্ষক প্রতিবেদনে শরণার্থীদের মধ্যে থেকে সশস্ত্র গোষ্ঠীর জন্য সদস্য সংগ্রহের ঝুঁকি এবং তা প্রশমনে পরামর্শ তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে আরাকান আর্মির ক্রমাগত অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা সশস্ত্র সংগঠনগুলো নতুন করে সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে সহিংসতায় জড়িত থাকা এই গোষ্ঠীগুলো গত নভেম্বরে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে একযোগে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। সহিংসতা কিছুটা কমলেও সদস্য সংগ্রহ বেড়েছে, বিশেষ করে ধর্মীয় আহ্বানকে কেন্দ্র করে, যেহেতু আরাকান আর্মির পেছনে রাখাইনের বৌদ্ধ জনগণের সমর্থন রয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত প্রায় পুরোই আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এ অবস্থায় তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার প্রচেষ্টা নিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। তবে রোহিঙ্গারা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলনে নামলে আলোচনা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে বাড়তি অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের নিজেদের পক্ষে কাজে লাগাতে চেয়েছিল। যদিও অতীতে এই গোষ্ঠীগুলো সেনাবাহিনীর বিরোধিতা করেছিল, এবার আরাকান আর্মিকে ঠেকাতে তারা ভিন্ন অবস্থান নেয়। তবে সেনাবাহিনীর এই কৌশল শেষ পর্যন্ত বড় কোনো সাফল্য বয়ে আনতে পারেনি।

বাংলাদেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই রোহিঙ্গা ও আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। শরণার্থী শিবিরে সহিংসতা হ্রাস করে ঐক্য প্রচেষ্টায় সমর্থন রয়েছে বাংলাদেশের। পাশাপাশি, রোহিঙ্গা গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে তাদের প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মির ওপর চাপ প্রয়োগের পরিকল্পনা আছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে যে এলাকাগুলো থেকে রোহিঙ্গাদের উৎখাত করা হয়েছিল, সে স্থানগুলো এখন আরাকান আর্মির দখলে রয়েছে। এদিকে জান্তা সরকারের বিরোধিতার জন্য সাধারণ জনগণের ব্যাপক সমর্থন রয়েছে আরাকান আর্মির পিছে। রোহিঙ্গারা তাদের বিরোধিতা করলে বরং শরণার্থীদের প্রতি মিয়ানমারে আরও বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হতে পারে। ক্রাইসিস গ্রুপের মতে, বাংলাদেশের উচিত আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো, রাখাইনে বাণিজ্য ও সহায়তা জোরদার করা এবং শিবিরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রভাব কমানো। এতে সীমান্তে স্থিতিশীলতা আসবে এবং রোহিঙ্গা নাগরিক সমাজ গড়ে উঠবে। আরাকান আর্মির উচিত রোহিঙ্গাদের আস্থায় আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এবং প্রমাণ করা যে তারা সবাইকে নিয়ে শাসন চালাতে সক্ষম। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র তাদের বৈদেশিক সহায়তা কমাচ্ছে, তাই আন্তর্জাতিক দাতাদের উচিত বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবিরে সহায়তা আরও বাড়ানো।


প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র সংকটে ইসরায়েল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
    * ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ চান ট্রাম্প * আত্মসমর্পণ করবে না ইরান, চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ বা শান্তি মানবে না: খামেনি * তেহরানের কাছে মোসাদের গোপন ঘাঁটি ধ্বংসের দাবি * ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলকে সহায়তা না করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করল রাশিয়া

ইসরায়েল বর্তমানে প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ‘অ্যারো ইন্টারসেপ্টর’-এর সংকটে রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। গতকাল বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ইরান থেকে নিক্ষিপ্ত দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার সক্ষমতা এতে হুমকির মুখে পড়তে পারে।

পত্রিকাটি যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, ওয়াশিংটন বেশ কয়েক মাস ধরেই ইসরায়েলের এই সক্ষমতা সংকট সম্পর্কে অবগত। যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে স্থল, সমুদ্র ও আকাশপথে অতিরিক্ত প্রতিরক্ষাপ্রণালী মোতায়েন করছে।

তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তাদের গোলাবারুদ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

এদিকে গত মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলের দিকে ‘হাইপারসনিক’ ক্ষেপণাস্ত্র ফাত্তাহ-১ নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর (আইআরজিসি)।

এক বিবৃতিতে আইআরজিসি বলেছে, ‘তাদের শক্তিশালী ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ঢাল ভেঙে দেশটির আকাশের উপর সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়েছে।’

গত শুক্রবার ভোররাতে ইসরায়েল হঠাৎ ইরানে হামলা চালায়। ওই হামলায় ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা ও পরমাণুবিজ্ঞানী নিহত হন। এ ছাড়া নারী–শিশুসহ বহু সাধারণ মানুষ নিহত হন।

ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাবে ইরান আত্মরক্ষার্থে বড় পরিসরের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। এসব হামলার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড।

তেহরান, হাইফা ও অন্যান্য শহরে থাকা সামরিক ও শিল্প স্থাপনায় এ হামলা চালানো হয়।

সিএনএন জানিয়েছে, ইরানের আধা-সরকারি মেহের সংবাদ সংস্থা দাবি করেছে- ইরান ইসরায়েলের দিকে ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তবে এই দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

২০২৩ সালে ফাত্তাহ ক্ষেপণাস্ত্র উন্মোচন করে ইরান। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ক্ষেপণাস্ত্রটির নামকরণ করেন।

আইআরজিসি এই ক্ষেপণাস্ত্রকে ‘ইসরায়েল বিধ্বংসী’ বলে উল্লেখ করেছে। এটি উন্মোচনের সময় ইরানের রাজধানী তেহরানে একটি বিশাল ব্যানার টাঙানো হয়েছিল, যেখানে হিব্রু ভাষায় লেখা ছিল: ‘৪০০ সেকেন্ডে তেল আবিবে।’

অন্যদিকে গত কয়েক ঘণ্টায় দেশটির বিমানবাহিনীর ৫০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ইরানের অভ্যন্তরে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ— ‘সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র’ এবং দেশটির ‘বেশ কয়েকটি অস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র’ লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ দিনে ইসরায়েলের বিমান বাহিনীর গোলাবর্ষণ এবং ক্ষেপণাস্ত্র-ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৮৫ জন। এছাড়াও এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৩২৬ জন নাগরিক।

এদিকে গতকাল বুধবার ইরানের রাজধানী তেহরানে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। তেহরান থেকে এএফপির সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, তেহরানের পূর্বাঞ্চলে কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে।

তেহরানের কাছে মোসাদের গোপন ঘাঁটি ধ্বংসের দাবি

ইরানের নিরাপত্তা বাহিনী তেহরানের উপকণ্ঠে একটি তিন তলা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলের বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ পরিচালিত একটি গোপন ড্রোন ও বিস্ফোরক তৈরির কারখানার খোঁজ পেয়েছে।

ইরানের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভির এক খবরে এমনটা দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, গত রোববার ইরানি পুলিশ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সেখানে ড্রোনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, যেমন পাখা ও কাঠামোর অংশ আর ধাতব সরঞ্জাম রয়েছে। এসব যন্ত্রাংশ ড্রোন তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।

ইরানের সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, ওই বাড়ির ভেতরেই ড্রোন তৈরি হচ্ছিল। সেখানে যন্ত্রাংশ তৈরির সরঞ্জামও জব্দ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ড্রোন কারখানার সন্ধান পাওয়ার সঙ্গে ইসরায়েলের আগের একটি স্বীকারোক্তি মিলে যায়।

পশ্চিমা গণমাধ্যম অ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছিল, মোসাদ কর্মকর্তারা আট মাস ধরে ইরানে ড্রোন পাচার করছিলেন, যাতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলোয় হামলা চালানো যায়।

ইরানের নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ চান ট্রাম্প

ইরানে হামলায় ইসরায়েলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি তা বলতে পারি না।’ পরে আবার তিনি বলেন, ‘আমি করতেও পারি, না-ও করতে পারি। কেউ জানে না আমি কী করতে চাই’। গতকাল বুধবার হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। খবর বিবিসির

ট্রাম্প বলেন, ইরানের আলোচকরা হোয়াইট হাউসে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে এটা কঠিন। আমি নিশ্চিত নই যে সংঘাত কতটা দীর্ঘ হবে, কারণ ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ধ্বংস হয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘দুটি খুব সাধারণ শব্দ- নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ’। ট্রাম্পের দাবি, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির উদ্দেশ্য খারাপ।

এর আগে ট্রাম্প তেহরানের কাছ থেকে ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের’ দাবি করেছেন। এই মন্তব্যের ফলে ওয়াশিংটন ইসরায়েলের হামলায় যোগ দেবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও জোর দিয়ে বলা হয়েছে এই অভিযানে তাদের কোনও হাত নেই।

সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গত মঙ্গলবার পশ্চিম ইরানে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে কমপক্ষে দুটি হামলা চালিয়েছে।

এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তার বক্তব্যের কয়েকদিন পর, ট্রাম্প ইসরায়েলকে শীর্ষ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে বলেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার পথ পরিবর্তন করেছেন বলে মনে হচ্ছে।

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্য কমে আসছে, তবে ‘আপাতত’ ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে হত্যার কোনো উদ্দেশ্য তাদের নেই। তিনি ইরানের প্রতি নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের আহ্বান জানান। খামেনি ইরানের কোথায় আছেন সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তথ্য আছে বলেও জানান ট্রাম্প। প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, খামেনি ‘আপাতত’ নিরাপদ আছেন।

ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে আরো বলেছেন, ‘আমরা চাই না, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর কিংবা আমেরিকার সেনাদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হোক।

আত্মসমর্পণ করবে না ইরান: খামেনি

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেন, জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেবে ইরান। দেশটি দৃঢ় থাকবে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া শান্তির বিরুদ্ধেও। তিনি আরও বলেন, ইরান কারও কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।

গতকাল বুধবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত দেওয়া ভাষণে খামেনি এ কথা বলেন। দেশটির সংবাদ সংস্থা তাসনিমের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা এ কথা জানিয়েছে।

খামেনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের কথাও উল্লেখ করে বলেন, যারা ইরান ও এর ইতিহাস জানে তারা জানে, ইরানিরা হুমকির ভাষার প্রতি ভালো সাড়া দেয় না। আর আমেরিকানদের জানা উচিত, যুক্তরাষ্ট্রের যেকোনো সামরিক হস্তক্ষেপ নিঃসন্দেহে অপ্রতিরোধ্য পরিণতি বয়ে আনবে।

ট্রাম্পকে সতর্ক করে তিনি বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলি হামলায় অংশ নেয়, তাহলে ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ হবে।

ইসরায়েলকে সহায়তা না করতে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করল রাশিয়া

বিশ্ব এখন ‘বিপর্যয় থেকে মাত্র কয়েক মিলিমিটার দূরে রয়েছে’ সতর্ক করে দিয়েছে রাশিয়া। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বুধবার মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এই সতর্কতা উচ্চারণ করেন।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের প্রসঙ্গ টেনে মারিয়া জাখারোভা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘বিশ্ব এখন বিপর্যয়ের কিনারায় রয়েছে। ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোয় ইসরায়েলের প্রতিদিনকার হামলার কারণে বিশ্ব এখন ‘বিপর্যয়’ থেকে মাত্র কয়েক মিলিমিটার দূরে রয়েছে।’

এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে আক্রমণে ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তা না দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে রাশিয়া। এমনকি অন্য কোনোভাবেও যেন সহায়তা না করা হয়, সে বিষয়ে জোর দিয়েছে মস্কো।

রাশিয়ার ইন্টারফ্যাক্স সংবাদ সংস্থা অনুসারে, গতকাল বুধবার রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ ইসরায়েলকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দেওয়া বা এমনকি এই ধরনের ‘অনুমানমূলক বিকল্প’ বিবেচনা করার বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেন।

তিনি বলেছেন, ‘এটি এমন একটি পদক্ষেপ হবে, যা পুরো পরিস্থিতিকে আমূল অস্থিতিশীল করে তুলবে।’

তেল আবিব ও জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস বন্ধ ঘোষণা

ইসরায়েলের জেরুজালেমে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস গতকাল বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত তিন দিন বন্ধ থাকবে। একই সময় দেশটির রাজধানী তেল আবিবে দূতাবাসের কনস্যুলার কার্যক্রমও স্থগিত থাকবে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে মার্কিন দূতাবাস জানিয়েছে, বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে চলমান সংঘাতের ফলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি সব মার্কিন কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা তাদের বাসস্থানের ভেতরে এবং কাছাকাছি স্থানে আশ্রয় নেবেন।

তবে ইসরায়েল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাওয়ার জন্য মার্কিন নাগরিকদের সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে এখনই কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। এদিকে দূতাবাস আরও জানায়, ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দরগুলো বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের তেল আবিবের আশেপাশের এলাকাগুলো খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইরানের রেভুলিউশনারি গার্ড।


কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের দালালি মানবে না ভারত, ট্রাম্পকে মোদি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গত মে মাসে চার দিনের সংঘাতের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বারবার ‘কাশ্মীর সমস্যা’ সমাধানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে তৃতীয় কোনো পক্ষের দালালি কখনোই মানবে না। দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি গত মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিক্রম মিশ্রি জানান, গত মঙ্গলবার মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে ফোনে কথা হয়েছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থান আবারও ট্রাম্পকে মনে করিয়ে দিয়েছেন। তবে ভারতের এমন বক্তব্য নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি হোয়াইট হাউস।

বিক্রম মিশ্রি বলেন, মোদি ট্রাম্পকে ‘পরিষ্কারভাবে’ জানিয়েছেন, সংঘাত চলাকালীন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য চুক্তি বা যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা নিয়ে কোনো পর্যায়েই কোনো আলোচনা হয়নি।

এদিকে ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির পর ভারত ও পাকিস্তান সংঘাত বন্ধ করেছে। তার দাবি, তিনি বাণিজ্য চুক্তিকে চাপ হিসেবে ব্যবহার করে তাদের রাজি করিয়েছেন। তবে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির বিষয়ে মার্কিন মধ্যস্থতার দাবিকে সমর্থন করলেও ভারত তা অস্বীকার করেছে।

মিশ্রি বলেন, যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আলোচনা সরাসরি ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান চ্যানেলের মাধ্যমে হয়েছিল।

এর আগে গত মাসে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমি তাদের (ভারত ও পাকিস্তান) বলেছিলাম, আসো, আমরা তোমাদের সঙ্গে ব্যবসা করব। যুদ্ধ বন্ধ করো। যুদ্ধ বন্ধ করো। যদি তোমরা যুদ্ধ বন্ধ করো, আমরা ব্যবসা করব। যদি না করো, আমরা তোমাদের সঙ্গে কোনো ব্যবসা করব না।’

কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। উভয় দেশই পুরো অঞ্চলের দাবি করে, তবে আংশিকভাবে এটি শাসন করে। ভারত কাশ্মীরকে তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে আলোচনাও বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। ফলে কয়েক দশক ধরে একাধিক দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হলেও কাশ্মীর ইস্যুতে কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি প্রতিবেশী দুই দেশ।

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে মার্কিন মধ্যস্থতা ছিল না, ট্রাম্পকে জানিয়েছেন মোদিভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে মার্কিন মধ্যস্থতা ছিল না, ট্রাম্পকে জানিয়েছেন মোদি।

গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে কাশ্মীর ইস্যু। ওই হামলায় ২৫ পর্যটক ও একজন স্থানীয় গাইড নিহত হন। একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে তারা অস্বীকার করে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে; ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করে। এর পর থেকে দেশ দুটি একের পর এক পদক্ষেপ নিতে শুরু করে। প্রথমে এটি কূটনৈতিক পর্যায়ে থাকলেও দ্রুত সামরিক সংঘাতের দিকে মোড় নেয়।

পেহেলগাম হামলার জেরে ৬-৭ মে রাতে অপারেশন সিঁদুর নামে একটি অভিযান পরিচালনা করে ভারত। ৭ মে রাতে ভারতের হামলার জবাবে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় পাকিস্তান। ভারতের দাবি, এই অভিযানে তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধ্যুষিত আজাদ কাশ্মীরের ভেতরে ৯টি সন্ত্রাসী আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যার মধ্যে লস্কর-ই-তাইয়েবার সদর দপ্তরও ছিল।

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান চার দিনের সংঘাত যখন ভয়াবহ মোড় নিচ্ছিল, তখন আকস্মিকভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১০ মে ঘোষণা দেন, পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এই যুদ্ধবিরতির পরই উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘাত বন্ধ হয়।

প্রয়োজনে পাকিস্তানের আরও ভেতরে ঢুকে হামলা চালাবে ভারত।

ট্রুথ সোশ্যালের একটি পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি তোমাদের দুজনের সঙ্গেই কাজ করব। দেখব হাজার বছরের কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে কোনো সমাধানে আসা যায় কি না।’ প্রসঙ্গত, কাশ্মীর সমস্যা হাজার বছরের নয়। এই সমস্যার শুরু ১৯৪৭ সাল থেকে।

ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছিলেন, এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে হয়েছে এবং প্রায় ‘তিন ডজন দেশ’ এতে জড়িত ছিল। তবে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ভারত বরাবরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়ে ট্রাম্পের প্রকাশ্য বিবৃতি দিল্লির ‘রেড লাইন’ পরীক্ষা করেছে। দিল্লি সব সময় তার পশ্চিমা অংশীদারদের কাছে দাবি করে এসেছে তারা যেন ভারত ও পাকিস্তানকে সমানভাবে বিবেচনা না করে। তারা পশ্চিমা নেতাদের একই সময়ে ভারত ও পাকিস্তান সফর করা থেকেও নিরুৎসাহিত করে। কিন্তু ট্রাম্পের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে প্রায়শই ভারত ও পাকিস্তানকে সমানভাবে দেখা যায়। অনেকের ধারণা, এটি দিল্লির কূটনৈতিক মহলে কিছুটা অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ওয়াশিংটন ও দিল্লির মধ্যে চলমান বাণিজ্য চুক্তি আলোচনাকে এটি প্রভাবিত করবে কি না, তা বলার সময় এখনো আসেনি।


banner close