ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ডে শোক প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। তবে সেই পোস্ট ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরিয়ে ফেলেছে। এতে ক্ষেপে গিয়ে মেটা কর্তৃপক্ষকে ‘কাপুরুষ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন আনোয়ার ইব্রাহিম।
সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মালয়েশিয়া রাষ্ট্রীয়ভাবে সব সময়ই ফিলিস্তিনের পক্ষে থেকেছে। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমও গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে আসছেন।
ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে হামাস নেতাদের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। সেই ফোনকলের একটি ভিডিও রেকর্ড তিনি ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন। কিন্তু মেটা সেই পোস্ট সরিয়ে ফেলে।
একই ধরনের পোস্ট মেটার আরেক প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামেও শেয়ার করেছিলেন আনোয়ার ইব্রাহিম। সেটিও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। মেটার এই হস্তক্ষেপকে ‘কাপুরুষোচিত’ আখ্যা দিয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, মেটাকে আমি পরিষ্কার ও দ্ব্যর্থহীনভাবে এই বার্তাটি দিতে চাই যে, কাপুরুষতার এই প্রদর্শন এবং নিপীড়ক ইহুদিবাদী ইসরাইলি শাসনের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করা বন্ধ করুন।
এদিকে আনোয়ার ইব্রাহিমের পোস্টগুলো অপসারণ করে সেগুলোতে লেবেল দিয়ে মেটা কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘বিপজ্জনক ব্যক্তিত্ব ও সংগঠন’। মূলত হামাস ও ইসমাইল হানিয়াকে যথাক্রমে বিপজ্জনক সংগঠন ও ব্যক্তিত্ব বলেছে মেটা কর্তৃপক্ষ। তবে আনোয়ার ইব্রাহিমের প্রতিক্রিয়ার জবাবে কোনো মন্তব্য করেনি মেটা।
আনোয়ার ইব্রাহিম চলতি বছরের মে মাসে কাতারে হানিয়ার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, হামাসের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে তার ভালো সম্পর্ক আছে তবে সামরিক স্তরে কোনো সম্পর্ক নেই। হামাসের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে হানিয়া বেশ কয়েকবার মালয়েশিয়া সফর করেছিলেন।
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করেছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, অনেক নেতা দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যান। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও যদি তিনি দেশের বাইরে থাকেন, তবে তাকে বাইরে থাকতে দিন। আমরা সবাই চাই বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক। আজ বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে দেশে ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। তার ভারতে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে বিক্রমাসিংহে বলেন, এগুলো রাজনৈতিক বিষয়। এটি এমনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যেন দেশ স্থিতিশীল থাকে। এর আগে, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে কথা বলেছেন। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চলমান সংকটের সমাধানে কী পরামর্শ দেবেন, এই প্রশ্নের উত্তরে বিক্রমাসিংহে বলেন, প্রথমে বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা আনতে হবে। জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। শেখ হাসিনার বিষয়টি রাজনৈতিক, অনেক নেতাই দেশের বাইরে চলে যান এবং সেখানে বসবাস করেন। আমার কাছে অগ্রাধিকার হলো বাংলাদেশকে স্থিতিশীল রাখা।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা যদি দেশের বাইরে থাকেন, তবে থাকুন। দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন। সেনাবাহিনীও প্রয়োজন হতে পারে। আমরা সবাই চাই বাংলাদেশে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুক এবং জনগণ সিদ্ধান্ত নিক কীভাবে দেশ পরিচালিত হবে। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কায়ও বাংলাদেশের মতো গণঅভ্যুত্থান ঘটে। সাধারণ মানুষের রোষে পড়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালান। এরপর প্রেসিডেন্ট হন রনিল বিক্রমাসিংহে। আগামী শনিবার দেশটিতে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। এতে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারবেন রনিল।
ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, হাসিনাকে ফেরানোর প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। তবে এটি কতদূর এগিয়েছে সেটি নিশ্চিত নয়।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, এ মুহূর্তে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া দিল্লির অন্যতম অভিজাত পার্ক লোদি গার্ডেনেও ঘুরতে দেখা গেছে তাদের।
গাজা ও পশ্চিম তীরসহ ফিলিস্তিনের সব অঞ্চল থেকে অবৈধ দখলদারিত্ব বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। প্রস্তাবে আগামী এক বছরের মধ্যে ইসরায়েলের ‘অবৈধ দখলদারিত্ব’ বন্ধের আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া দখলদারিত্বের কারণে ফিলিস্তিনিদের ক্ষতিপূরণের জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এ পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছে। খবর আল জাজিরার।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বিপুল ভোটের ব্যবধানে গৃহীত হয়। স্থানীয় সময় বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিনের একটি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১২৪টি দেশ। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, আর্জেন্টিনাসহ বিপক্ষে ভোট দেয় ১৪টি দেশ। আর ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল ভারতসহ ৪৩টি দেশ।
প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার তিন মাসের মধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে এটি বাস্তবায়নের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করার আহ্বানও জানানো হয়েছে। প্রস্তাবটি বাধ্যতামূলক না হলেও তেল আবিবের ওপর তা যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করবে। প্রস্তাবে দখলদারিত্বের কারণে ফিলিস্তিনিদের ক্ষতিপূরণের জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
আল জাজিরা বলছে, এই ভোট ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের আন্তর্জাতিক বিরোধিতার গভীরতাকে নির্দেশ করে। এটি ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের তোলা প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘে মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বুধবার না ভোট দেওয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান। ইসরায়েলের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছে।
জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) সম্প্রতি যে পরামর্শমূলক মতামত দিয়েছে, নুতন প্রস্তাবে তাকেই সমর্থন করা হয়েছে। আইসিজে বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের উপস্থিতি বেআইনি এবং অবশ্যই এর শেষ হওয়া উচিত।
ভোটের পরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেছেন, প্রস্তাবটি স্পষ্ট করে দিয়েছে ইসরায়েলের ৫৭ বছরের দখলদারিত্ব আর চলতে দেওয়া যাবে না। ইসরায়েলকে অবিলম্বে পশ্চিম তীর থেকে তার বাহিনী প্রত্যাহার করে প্রস্তাব মেনে চলতে হবে। এর মধ্যে অবৈধভাবে পূর্ব জেরুজালেম এবং ১৯৬৭ সাল থেকে দখল করা গাজা উপত্যকাও রয়েছে। ইসরায়েলকে অবশ্যই পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে সমস্ত বসতি স্থাপনকারীদের সরিয়ে নিতে হবে।
কয়েক দশক ধরে ইসরায়েলের বেআইনি দখলদারিত্ব ফিলিস্তিনিদের জন্য ব্যাপক মাত্রায় অবিচার, রক্তপাত ও দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে। গত ১১ মাসে পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘন, ইসরায়েলের নৃশংস দখলদারিত্ব ও বর্ণবাদী ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য মারাত্মকভাবে তীব্র হয়েছে। জাতিসংঘের বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিশ্বনেতাদের নিউইয়র্কে জড়ো হওয়ার কয়েক দিন আগে এ পদক্ষেপ ইসরায়েলকে আরও বিচ্ছিন্ন করবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৩ সদস্যের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন। একই দিনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও সেখানে ভাষণ দেবেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে কয়েক লাখ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি খান ইউনিসে চলে যায়। ১১ মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার তিন শর মতো ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন সাড়ে ৯৫ হাজার মানুষ। হামলার পর থেকে বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া অনেকেই নিখোঁজ হয়েছেন। তারা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১১ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন।
শিগগিরই বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়নিয়ার বা লাখ কোটিপতি হতে পারেন ইলন মাস্ক। বিশ্বের এই শীর্ষ ধনী ইতিমধ্যে ২৫০ বিলিয়ন বা ২৫ হাজার কোটি ডলারের মালিক। খবর সিএনএনের।
বৈদ্যুতিক যানবাহন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শুরু করে মহাকাশ, রকেট, এমনকি ক্ষুদ্রাকৃতির মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন—এমন কিছু নিয়েই গড়ে উঠেছে ইলন মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য। এ সবকিছুর বদৌলতে তিনি আগামী তিন বছরের মধ্যে ট্রিলিয়নিয়ার বা লাখ কোটিপতির খেতাব অর্জন করতে যাচ্ছেন।
একদিকে ব্যবসায়িক সফলতা, আরেক দিকে সেই সফলতার বদৌলতে বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের একজন ইলন মাস্ক। নানা ধরনের খ্যাপাটে কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি প্রায়ই সংবাদপত্রের শিরোনাম হন।
বৈশ্বিক গবেষণা সংস্থা ইনফরমা কানেক্ট একাডেমি বলছে, ২০২৭ সালের মধ্যে তিনি ট্রিলিয়নিয়ার এক লাখ কোটি ডলারের মালিক হতে পারেন; সেই পথেই এগোচ্ছেন তিনি।
ইনফর্মা আরও বলেছে, মাস্কের সম্পদমূল্য প্রতিবছর গড়ে ১১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এই হারে বা তার কাছাকাছি হারেও মাস্কের সম্পদমূল্য বৃদ্ধি পেলে তিনিই যে বিশ্বের প্রথম লাখ কোটিপতি হবেন, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই।
যদিও এ ক্ষেত্রে যে মাস্কের প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, তা নয়। ইনফরমার তথ্যানুসারে, বিশ্বের অন্যতম দামি কোম্পানি এনভিডিয়ার সিইও বা প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং ২০২৮ সালের মধ্যে ট্রিলিয়নিয়ার বা লাখ কোটিপতি হতে পারেন। ব্লুমবার্গের তথ্যানুসারে, এনভিডিয়ার সিইও ও সহপ্রতিষ্ঠাতা হুয়াংয়ের সম্পদমূল্য এখন ১০৪ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৪০০ কোটি ডলার।
বিষয়টি হলো, এখন যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে, তা সম্ভব হচ্ছে এনভিডিয়ার উচ্চমানের চিপের কল্যাণে। কিছুদিন আগেই বাজার মূলধনের দিক থেকে এনভিডিয়া বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানি হয়। কোম্পানির বাড়বাড়ন্তের সঙ্গে হুয়াংয়ের সম্পদমূল্যও উল্কার গতিতে বাড়ছে। ফলে তিনিও শত কোটিপতি হওয়ার প্রতিযোগিতায় আছেন বলে মনে করছে ইনফরমা।
সিএনএনের সংবাদে বলা হয়েছে, ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানিও ২০২৮ সালের মধ্যে লাখ কোটিপতি হওয়ার পথে আছেন।
মাস্কের লাখ কোটিপতি হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করছে মূলত তার সবচেয়ে পয়মন্ত কোম্পানি টেসলার ওপর; এই টেসলা দিয়েই মূলত তাঁর পরিচিত গড়ে উঠেছে। মাস্কের প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি এখন বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান অটো কোম্পানি; যার বাজারমূল্য প্রায় ৭১০ বিলিয়ন বা ৭১ হাজার কোটি ডলার। এটি কোকাকোলা, ব্যাংক অব আমেরিকা ও বোয়িংয়ের চেয়েও মূল্যবান। টেসলার ১৩ শতাংশ শেয়ারের মালিক ইলন মাস্ক। ফলে তাঁর টেসলার শেয়ারের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৯৩ বিলিয়ন বা ৯ হাজার ৩০০ কোটি ডলার।
এ ছাড়া মাস্ক টেসলার আরও ৩০ কোটি ৩০ লাখ বিকল্প স্টকের মালিক। বিষয়টি তার সেই বিতর্কিত বেতন-ভাতার সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রথমে আদালত তা অনুমোদন না করলেও পরবর্তীকালে শেয়ারহোল্ডাররা তা অনুমোদন করেছেন। টেসলার বর্তমান গতি অব্যাহত থাকলে মাস্কের সম্পদমূল্য এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হতে সময় লাগবে না।
ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের সিনিয়র ইক্যুইটি বিশ্লেষক ড্যান ইভস এক ই-মেইলে সিএনএনকে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে টেসলা, রোবোটিকস ও ইভির ভবিষ্যৎকে পুঁজি করে ভবিষ্যতে ইলন মাস্ক নিজেকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবেন; সেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।’
তবে টেসলার গতিপথ একদম মসৃণ ছিল না। টেসলাকে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হয়েছে। এখন তারা চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানিগুলোর তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে। এ ছাড়া ২০২২ সালে কোম্পানির স্টক মূল্য এক-তৃতীয়াংশ স্টক কমে যাওয়ার কারণে তাদের অনেক লড়াই করতে হয়েছে।
এমনকি ২০০৮ সালে টেসলার প্রায় দেউলিয়া হওয়ার অবস্থা হয়েছিল। আর দু-এক দিন গেলেই দেউলিয়াত্বের আবেদন কতে হতো, যদিও শেষ মুহূর্তে এক ঋণের কল্যাণে টেসলা সুরক্ষিত হয়।
পদত্যাগ করছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আজ মঙ্গলবার বিকেলে তিনি পদত্যাগ করেন বলে খবর জানিয়েছে ভারতীয় সাংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি। তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার বিকেলে কেজরিওয়াল লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভি কে সাক্সেনার সঙ্গে তার বাসভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেয়ার জন্য দেখা করেন। সেখানে তার তার উত্তরসূরি অর্থাৎ দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী অতীশি এবং সাবেক উপ-মুখ্যমন্ত্রীও ছিলেন।
এর আগে কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি (এএপি) জানিয়েছে, দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন অতীশি মারলেনা। এদিন এক বৈঠকে এএপি’র জাতীয় আহ্বায়ক অতীশির নাম প্রস্তাব করেন এবং তার এই প্রস্তাবে পার্টির সব বিধায়ক উঠে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানান এবং তাকে আইনসভা দলের নেতা নির্বাচিত করা হয়।
আগামী ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে। তার আগে পর্যন্ত দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন অতীশি। যদিও কেজরিওয়াল আগাম নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন।
কেজরিওয়ালের পদত্যাগের পর অতীশি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এএপি দিল্লির জনগণের জন্য কাজ করবে এবং দিল্লি নির্বাচনে জয় নিশ্চিত (কেজরিওয়ালের প্রত্যাবর্তন) করবে।’
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ছয় মাস কারাভোগ শেষে কারামুক্তির মাত্র দুদিন পর মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। স্থানীয় সময় গত রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দিল্লিতে আয়োজিত দলীয় এক অনুষ্ঠানে কেজরিওয়াল এমন ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত স্থিতিশীল সম্পর্ক রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আজ মঙ্গলবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এস জয়শঙ্কর একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী দেশ এবং আমরা তাদের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক রাখতে চাই’।
বাংলাদেশে যা ঘটেছে তা দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেও মন্তব্য করেন এই মন্ত্রী। এছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলো একে-অপরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে হওয়া রাজনৈতিক পরিবর্তন সেই দেশের “অভ্যন্তরীণ বিষয়” কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে যে স্থিতিশীল সম্পর্ক ছিল তা অব্যাহত রাখতে ভারত আগ্রহী। তিনি (জয়শঙ্কর) বহুলপ্রচলিত সেই প্রবাদবাক্যের ওপরই জোর দিয়ে বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলো ‘একে অপরের ওপর নির্ভরশীল’।
এনডিটিভি আরও বলছে, বিস্তৃত এই সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ এবং সেই সংঘাতে দিল্লির সম্ভাব্য শান্তিরক্ষাকারী ভূমিকা, সেইসাথে ভারতে মুসলিমদের দুর্দশা নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির সমালোচনামূলক মন্তব্য, গাজা যুদ্ধ এবং তৃতীয় মেয়াদে প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির বিদেশ সফরের বিষয়ে কথা বলেন এস জয়শঙ্কর। বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘(বাংলাদেশে) যা ঘটছে তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী দেশ এবং আমাদের পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল সম্পর্ক রাখতে চাই। আমাদের ভালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে... আমাদের জনগণের মধ্যেও সম্পর্ক ভালো... আমি সম্পর্কটা এভাবেই রাখতে চাই।’
গত মাসে এস জয়শঙ্কর ভারতীয় পার্লামেন্টকে বলেছিলেন, শেখ হাসিনা ‘খুব স্বল্প নোটিশে’ দিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়ে পালানোর অনুমতি চেয়েছিলেন। পার্লামেন্টে সর্বদলীয় ব্রিফিংয়ে তিনি বলেছিলেন, নিজের পরবর্তী পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে সময় দিতে চায় ভারত সরকার। যার মধ্যে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
গবেষণাসংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের জন্য ইরান নতুন একটি স্যাটেলাইট (কৃত্রিম উপগ্রহ) মহাকাশে পাঠিয়েছে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের বিষয়টিকে তেহরান বেসামরিক হিসেবে ঘোষণা দিলেও পশ্চিমা অনেক রাষ্ট্র সতর্ক করে জানিয়েছে, এই প্রযুক্তি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ব্যবহার করা হতে পারে।
ইরান এর আগে সোরাইয়া নামের একটি উপগ্রহ ৭৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় কক্ষপথে উৎক্ষেপণ করে। রাশিয়ার সহযোগিতায় রিমোট সেন্সিং ও ইমেজিং স্যাটেলাইট পাঠানো কারণে তখন যুক্তরাষ্ট্র সমালোচনা করেছিল। সব মিলিয়ে ইরান গত দুই বছরে ১২টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে বলে জানা গেছে। ২০১৮ সালের পরে তেহরান এক পারমাণবিক চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে মহাকাশ গবেষণায় মনোনিবেশ করে।
উপদেষ্টা জাফর হাসানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ। গত রোববার তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করেছে দেশটির রাজকীয় আদালত।
সরকার ও মন্ত্রিসভার মেয়াদ পূর্ণ করে রোববারই বাদশাহর কাছে অব্যাহতিপত্র জমা দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিশের খাসাউনে। তিনি চিঠি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জাফর হাসানকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন বাদশাহ আবদুল্লাহ।
অব্যাহতিপত্র জমা দিলেও অবশ্য এখনই সরকারি দায়িত্ব পুরোপুরি বিদায় নিচ্ছেন না খাসাউনে। জর্ডানের সংবিধান অনুসারে, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের আগ পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে থাকবেন তিনি।
ভৌগলিকভাবে মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের দেশ জর্ডানে পার্লামেন্টারি সরকার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে ১৯২৯ সাল থেকে। তবে জর্ডানের সংবিধান অনুসারে বেশিরভাগ ক্ষমতা বাদশাহের হাতে রয়েছে। তিনি সরকারপ্রধান নিয়োগ এবং পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। সরকারি যে কোনা ইস্যুতে সিদ্ধান্তের ব্যপারে বাদশাহর মতামতকেই চূড়ান্ত বলে গণ্য করা হয়।
জর্ডানের দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নাম হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং উচ্চকক্ষের নাম সিনেট। হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভিসের মোট আসনসংখ্যা ১৯৫টি এবং এই কক্ষের সদস্যরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। সিনেট সদস্যদের নিয়োগ দেন বাদশাহ।
সংবিধান অনুযায়ী দেশটির পার্লামেন্টের মেয়াদ ৪ বছর। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার নির্বাচনে হয়েছে জর্ডানে; সেই দিনই ঘোষণা করা হয়েছে ফলাফল। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে রোববার বাদশাহ বরাবর অব্যাহতিপত্র জমা দেন বিশের খাসাউনে।
নতুন প্রধানমন্ত্রী জাফর হাসান যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী। এতদিন তিনি টেকনোক্র্যাট মর্যাদায় বাদশাহ আবদুল্লাহর উপদেষ্টা ছিলেন। দেশে তার গ্রহণযোগ্যতাও ভালো। তবে এমন এক সময়ে তিনি দেশের সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন, যখন জর্ডান কঠিন সময় পার করছে।
গাজা উপত্যকার অভিযান এবং পশ্চিম তীরে নিয়মিত ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাতের প্রভাব পড়েছে দেশটির অর্থনীতির ওপর। গত বছর অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাত পর্যটনে রীতিমতো ধস নেমেছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে জর্ডানে প্রবৃদ্ধি ছিল শতকরা ২ শতাংশ। দেশটির ইতিহাসে বাৎসরিক নিম্নপ্রবৃদ্ধির অন্যতম নজির এটি।
উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ায় একটি নদীতে যাত্রী বোঝাই নৌকা ডুবে ৪০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ রোববার এ খবর জানায়।
স্থানীয় এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে নাইজেরিয়ার কানো থেকে এএফপি জানায়, শনিবার ৫৩ জন কৃষক নিয়ে একটি নৌযানে করে জামফারা রাজ্যের গুম্মি নদীর ওপারে তাদের খামারে যাচ্ছিল। এসময় নৌযানটি ডুবে যায়। বন্যা কবলিত গুম্মি জেলার রাজনৈতিক প্রশাসক না'আল্লাহ মুসা বলেন, ‘দুর্ঘটনার পরপর ১২ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে যাত্রীদের মৃতদেহ সন্ধান করছে। তারা মারা গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মুসা আরও বলেন, নৌকাটি ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী বহন করছিল। ফলে এটি উল্টে এবং ডুবে যায়।
এক বিবৃতিতে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা টিনুবু কৃষকদের মৃত্যু এবং বন্যার ‘যুগল ট্র্যাজেডির’ জন্য সরকার ও নাইজেরিয়ার জনগণের পক্ষ থেকে সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গুম্মি এলাকায় বন্যার পানি বেড়ে চলার কারণে ১০০ হাজারের বেশি লোক সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। টিনুবু ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নাইজেরিয়ার জলপথে বিশেষ করে বর্ষাকালে নৌকা দুর্ঘটনা নৈমিত্তিক ঘটনা।
গত মাসে, ধান ক্ষেতে যাওয়ার পথে পার্শ্ববর্তী সোকোটো রাজ্যের দুনদায়ে নদীতে নৌকা ডুবে ৩০ জন কৃষক মারা যান। পুলিশ জানায়, তিন দিন আগে জিগাওয়া রাজ্যের গামোদা নদীতে ডিঙি নৌকা উল্টে ১৫ জন কৃষক মারা যায়।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। আজ রোববার দুপুরে দলীয় সভায় হঠাৎ নিজের এই সিদ্ধান্ত জানান তিনি।
কেজরিওয়াল বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেবেন। মানুষের রায়ে যদি ফের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন তাহলেই কেবল ওই চেয়ারে আবার বসবেন।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় প্রায় ছ’মাস জেলে ছিলেন কেজরিওয়াল। দু’দিন আগেই ছাড়া পেয়েছেন। তারপর রোববার প্রথমবার দলীয় কার্যালয়ে যান তিনি। কথা বলেন দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে। সেখানেই হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন।
কেন এমন সিদ্ধান্ত? জানতে চাইলে কেজরিওয়াল জানান, আইনজীবীরা জানিয়েছেন, জামিন পেলেও এই মামলা চলবে। তাই তিনি জনতার আদালতে নিজেকে প্রমাণ করতে চান। জনতা তাকে কী মনে করেন, তা জেনে নিতে চান।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি আইনি আদালত থেকে বিচার পেয়েছি। এবার জনতার আদালত থেকে বিচার পেতে চাই। দিল্লির মানুষের কাছে আমি জিজ্ঞেস করতে চাই, কেজরিওয়াল দোষী নাকি নির্দোষ? আমি যদি কাজ করে থাকি, তাহলে আমাকে ভোট দিবেন।
আর কয়েক মাস পরেই দিল্লির বিধানসভা নির্বাচন। নিয়ম অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে হতে হবে এই নির্বাচন। ততদিন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব কে পালন করবেন? কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, আগামী দু’দিনের মধ্যে এএপি বিধায়কদের নিয়ে একটি বৈঠক হবে। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে, ভারতীয় রাজধানীর নতুন মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন।
আবগারি দুর্নীতি মামলায় গত ২১ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয় অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে। এরপর থেকেই জামিন পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লি হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন, তবে তা খারিজ করে দেন আদালত। তারপর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে জামিন পান এএপি প্রধান।
তবে শুরু থেকেই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে আসছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগ করেছেন, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিরোধী শিবির অর্থাৎ বিজেপি কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করিয়েছে। নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে বেআইনিভাবে জেলে ঢোকানো হয়েছে বলে দাবি করেছে তার দল আম আদমি পার্টি।
টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে মিয়ানমারে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় ৭৪ জন নিহত ও ৮৯ জন নিখোঁজ রয়েছে। আজ রোববার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম দৈনিক গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বন্যায় নাইপিদো, বাগো, মান্দালয় ও আইয়াওয়াদির ৬৪টি শহরতলির ৪৬২টি গ্রাম ও ওয়ার্ডসহ মন, কায়িন ও শান প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যা কবলিত এলাকায় ২৪টি সেতু, ৩৭৫টি স্কুল, একটি মঠ, পাঁচটি বাঁধ, চারটি প্যাগোডা, ১৪টি ট্রান্সফরমার, ৪৫৬টি ল্যাম্পপোস্ট ও ৬৫ হাজার ৭৫৯টি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুর্যোগ মোকাবিলায় নাইপিদোসহ বিভিন্ন প্রদেশ ও অঞ্চলগুলোতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা, খাবার ও পানীয় জল সরবরাহের জন্য অস্থায়ী ত্রাণ শিবির স্থাপন করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ও উদ্ধারকর্মীরা তল্লাশি ও উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
ইউরোপের মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় রোমানিয়ায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারকারী পরিষেবা গতকাল শনিবার এ কথা জানিয়েছে। খবর এএফপির।
অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানের সময় দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় গালাটি এলাকায় তাদের মরদেহ পাওয়া গেছে। দেশের ১৯টি এলাকায় কয়েক ডজন লোককে তাদের বাড়িঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধারকারী পরিষেবা সংস্থার প্রকাশিত ভিডিও চিত্রে দানিউব নদীর তীরে একটি গ্রামে প্লাবিত বাড়িগুলো দেখানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মার্সেল সিওলাকু পরে এলাকা পরিদর্শন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে ঘূর্ণিঝড় বরিস অস্ট্রিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, আর স্লোভাকিয়ার কিছু অংশে উচ্চ বাতাস ও অস্বাভাবিক প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত ঐতিহাসিক নিদর্শন ভারতের তাজমহলের প্রধান গম্বুজ ফুটো হয়ে বৃষ্টির পানি পড়ছে বলে জানা গেছে। গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়ে গেছে তাজমহল প্রাঙ্গণের বাগান। বার্তা সংস্থা পিটিআই এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়া তাজমহল প্রাঙ্গণের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ভিডিওতে দেখা গেছে, স্মৃতিস্তম্ভের একটি বাগান বৃষ্টির পানিতে থই থই করছে।
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) আগ্রা সার্কেলের সুপারিনটেনডিং চিফ রাজকুমার প্যাটেল পিটিআইকে বলেন, ‘আমরা তাজমহলের মূল গম্বুজে একটি ফুটো দেখেছি। ক্ষয় হয়ে যাওয়ায় এই ফুটোর সৃষ্টি হয়েছে। তবে এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, প্রথম বিষয়টি তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তার নজর আসে। তিনি তাজমহলের মূল গম্বুজ বা ডোম, (যেখানে সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মুমতাজের সমাধি রয়েছে) তার ছাদ ভেজা লক্ষ্য করেন। তিনি অনুমান করেন, হয়তো ছাদে সূক্ষ্ম ফাটল ধরেছে। সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি তাজমহল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ায় (এএসআই) খবর দেওয়া হয়।
মূলত তাজমহলের রক্ষণাবেক্ষণ করে এএসআই। ইতোমধ্যে তারা এ বিষয়ে কমিটি গঠন করেছে বিষয়টির ওপরে নজরদারি করার জন্য।
আগ্রা সার্কেলের এএসআই-এর সুপারেনটেন্ডিং আর্কিওলজিস্ট রাজকুমার প্যাটেল জানান, ‘প্রথমে প্রধান গম্বুজের ছাদ ফাটল ধরেছে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ছোট একটি ফুটো দিয়ে কোনোভাবে ছাদ চুঁইয়ে পানি পড়ছে। মূল অংশে কোনো ক্ষতি হয়নি। ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে আমরা পরীক্ষা করেছি। টানা জল পড়ছে নাকি কখনো কখনো, তাও দেখা হচ্ছে।’
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, গত তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে আগ্রায়। এ কারণে শহরজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে একটি জাতীয় সড়ক, ফসলি জমি ও আশপাশের উঁচু এলাকা।
তাজমহলকে বিশ্বঐতিহ্য ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো। এই দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিস্তম্ভটি ১৬৩২ থেকে ১৬৫৩ সালে মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজ মহলের সমাধির ওপর নির্মাণ করেন। সাদা মার্বেলের কমপ্লেক্সে একটি বিশাল গম্বুজ, মিনার, বাগান ও একটি প্রতিফলিত পুল রয়েছে। স্থাপনাটিতে পারস্য, ইসলামিক ও ভারতীয় শৈলীর মিশ্রণ ঘটেছে। এটিকে মুঘল স্থাপত্যের একটি অনন্য কৃর্তি। সারা বিশ্ব থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটকরা এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে সফররত রাশিয়ার নিরাপত্তা প্রধান সের্গেই শোইগু বৈঠক করেছেন। পরমাণু শক্তিধর দেশটিতে সফরকালে তিনি এই বৈঠক করেন। আজ শনিবার পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এই কথা জানিয়েছে। খবর এএফপির।
রাশিয়া ৩০ মাসেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে হামলা অব্যাহত রাখায় মস্কোর গোলাবারুদ পাওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে শোইগু এই সফরে আসেন। তিনি এমন এক সময় এই সফরে আসলেন যখন পশ্চিমাবিশ্ব মস্কোতে অস্ত্র পাঠানোর জন্য পিয়ংইয়ংকে অভিযুক্ত করছে।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত জুন মাসে উত্তর কোরিয়া সফর করেন এবং দেশটির সঙ্গে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সংলাপকে আরও জোরদার এবং পারস্পরিক নিরাপত্তার স্বার্থ রক্ষায় এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির জন্য সহযোগিতা জোরদার করার বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে।
গণমাধ্যম আরও জানায়, কিম নিশ্চিত করেছেন, জুন মাসে তারা স্বাক্ষরিত চুক্তির ভিত্তিতে ডিপিআরকে সরকার রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা এবং সাহায্য আরও জোরদার করবে।
রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদও তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, কিমের সঙ্গে শোইগুর বৈঠক প্রতিরক্ষা চুক্তির বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
শোইগু গত মে মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পর রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান হন। বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস করে আসছেন যে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনে মোতায়েন করা হয়েছে।