বুধবার, ৬ আগস্ট ২০২৫
২১ শ্রাবণ ১৪৩২

বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম কিছুটা কমেছে: জাতিসংঘ

আপডেটেড
৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:২১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:২১

চলতি বছরের আগস্টে জাতিসংঘের খাদ্য মূল্যের সূচক কিছুটা কমেছে। গতকাল শুক্রবার প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) প্রতিবেদনের বরাতে এসব তথ্য জানা গেছে।

এফএওর দ্বারা সংকলিত মূল্য সূচকটি কমে ১২০ দশমিক ৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। জুলাইতে এই পয়েন্ট ছিল ১২১ পয়েন্ট। ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর ২০২২ সালের মার্চে খাদ্যের দাম বেড়ে সর্বোচ্চ হয়। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এফএওর সূচক কমে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়। এক বছর আগের তুলনায় ভ্যালু এক দশমকি এক শতাংশ ও ২০২২ সালের মার্চের তুলনায় ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ কম রয়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এফএও শস্য উৎপাদন ২০২৪ সালে ২ দশমিক ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন কমে ২ দশমিক ৮৫১ বিলিয়ন টনে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস দেয়। মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মেক্সিকো ও ইউক্রেনে গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে শস্যের উৎপাদন কমার ইঙ্গিত। এফএওর এই সূচকটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ফেব্রুয়ারিতে সূচকটি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছানোর পর থেকে কমতে শুরু করে। আগস্টের মূল্য সূচক এক বছর আগের তুলনায় ১ দশমিক ১ শতাংশ কম এবং ২০২২ সালের মার্চের সর্বোচ্চ থেকে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ কম।

একটি পৃথক প্রতিবেদনে এফএও জানায়, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক শস্য উৎপাদনের পূর্বাভাস ২.৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন কমিয়ে ২.৮৫১ বিলিয়ন টনে নামানো হয়েছে, যা গত বছরের উৎপাদনের প্রায় সমান। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মেক্সিকো ও ইউক্রেনে শুষ্ক ও গরম আবহাওয়ার কারণে মোটা শস্য উৎপাদনের সম্ভাবনা কমেছে। ২০২৪-২৫ সালে বৈশ্বিক শস্য ব্যবহারের পূর্বাভাস জুলাই থেকে ৪.৭ মিলিয়ন টন কমিয়ে ২.৮৫২ বিলিয়ন টন করা হয়েছে, যা ২০২৩-২৪ সালের তুলনায় ০.২% বেশি। এফএও আরও জানিয়েছে, ২০২৫ সালে মৌসুম শেষে বৈশ্বিক শস্য মজুদের পূর্বাভাস ৪.৫ মিলিয়ন টন কমিয়ে ৮৯০ মিলিয়ন টন করা হয়েছে।

বিষয়:

ইয়েমেন উপকূলে নৌকাডুবিতে ৬৫ অভিবাসীর মৃত্যু, নিখোঁজ ৭০

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইয়েমেন উপকূলে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে কমপক্ষে ৬৮ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৭০ জনেরও বেশি অভিবাসী।

ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে দেড় শতাধিক অভিবাসী ছিলেন এবং নিহতরা সবাই আফ্রিকান। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইয়েমেন উপকূলে আফ্রিকার অভিবাসী ও শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যাওয়ায় অন্তত ৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আরও ৭৪ জন নিখোঁজ রয়েছেন। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) গত রোববার এ তথ্য জানিয়েছে।

আইওএময়ের ইয়েমেন শাখার প্রধান আবদুসাত্তার এসোয়েভ অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, নৌকাটিতে ১৫৪ জন ইথিওপিয়ান নাগরিক ছিলেন। এটি ইয়েমেনের আবিয়ান প্রদেশের উপকূলে ডুবে যায়।

তিনি জানান, দুর্ঘটনায় ১২ জন জীবিত উদ্ধার হয়েছেন। খানফার জেলায় ৫৪ জনের মরদেহ ভেসে আসে এবং আরও ১৪ জনের মরদেহ অন্য একটি এলাকা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ইয়েমেনের স্বাস্থ্য বিভাগ এর আগে জানায়, এই ঘটনায় অন্তত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

জাঞ্জিবার শহরের স্বাস্থ্য কার্যালয়ের পরিচালক আবদুল কাদের বাজামিল জানান, নিহতদের দাফনের জন্য শহরের শাকরা এলাকার কাছে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেও উদ্ধার তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

আফ্রিকার হর্ন অঞ্চল ও ইয়েমেনের মধ্যে সমুদ্রপথ শরণার্থী ও অভিবাসীদের জন্য বেশ সাধারণ হলেও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ রুট। ২০১৪ সালে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর দেশটি থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও বেড়েছে।

অবশ্য ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে হুথি বিদ্রোহী ও সরকারি বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হওয়ার পর সহিংসতা কিছুটা কমেছে এবং মানবিক সংকট আংশিক হ্রাস পেয়েছে।

এদিকে সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ার মতো দেশের সংঘাতপীড়িত মানুষজন ইয়েমেনে আশ্রয় নিতে বা সেখান দিয়ে উপসাগরীয় ধনী দেশগুলোর উদ্দেশে যাত্রা করতে গিয়ে এই বিপজ্জনক পথে পাড়ি দিচ্ছে। আইওএময়ের মতে, এটি বিশ্বে অন্যতম ব্যস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসন রুট।

মূলত এই পথ ধরে ইয়েমেনে পৌঁছাতে অভিবাসীরা প্রায়ই অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই নৌকায় লোহিত সাগর পাড়ি দেন।

আইওএময়ের তথ্যমতে, ২০২৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি শরণার্থী ও অভিবাসী ইয়েমেনে পৌঁছেছেন, যা আগের বছরের ৯৭ হাজার ২০০ জনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। আইওএময়ের মে মাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সমুদ্রপথে নজরদারি বেড়ে যাওয়ায় এই সংখ্যা কমেছে।

এই পথে গত ২ বছরে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আইওএম জানায়, গত বছর এই রুটে ৫৫৮ জন মারা গেছেন। এছাড়া গত এক দশকে এই পথে কমপক্ষে ২ হাজার ৮২ জন নিখোঁজ হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৬৯৩ জনের ডুবে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। বর্তমানে ইয়েমেনে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার শরণার্থী ও অভিবাসী অবস্থান করছেন।


গাজা যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের কাছে ইসরাইলি নিরাপত্তা কর্মকর্তাগণের সাহায্যের আহ্বান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধানসহ ছয় শতাধিক অবসরপ্রাপ্ত ইসরাইলি নিরাপত্তা কর্মকর্তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে গাজা যুদ্ধ বন্ধে তাদের সরকারকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

জেরুজালেম থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

ট্রাম্পের প্রতি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্তগুলো ‘পরিচালনা’ করার আহ্বান জানিয়ে সোমবার গণমাধ্যমের সাথে শেয়ার করা একটি খোলা চিঠিতে সাবেক কর্মকর্তারা লিখেছেন, ‘আমাদের পেশাদার রায় হচ্ছে যে হামাস আর ইসরাইলের জন্য কৌশলগত হুমকি নয়।’


আগামী সপ্তাহে রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে তার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আগামী সপ্তাহে রাশিয়া সফর করবেন।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

স্থানীয় সময় রোববার সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ট্রাম্প বলেন, ‘আমার ধারণা, উইটকফ আগামী বুধবার বা বৃহস্পতিবার রাশিয়া যাবেন।’

তিনি আরো জানান, রুশ সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ-এর সঙ্গে অনলাইনে বাকবিতণ্ডার পর তিনি দুইটি ‘পারমাণবিক সাবমেরিন’ মোতায়েন করেছেন, যেগুলো এখন ‘ওই অঞ্চলে’ অবস্থান করছে।

তবে সাবমেরিন দুটি পারমাণবিক-শক্তিচালিত না কি পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত তা তিনি স্পষ্ট করেননি। সাবমেরিনগুলোর অবস্থানও গোপন রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য পদক্ষেপ নিতে রাশিয়াকে আগামী সপ্তাহের শেষে ট্রাম্পের নির্ধারিত সময়সীমার পটভূমিতে পারমাণবিক অস্ত্রের এই মহড়া শুরু হয়েছে। এছাড়া রাশিয়াকে অনির্দিষ্ট নতুন নিষেধাজ্ঞারও মুখোমুখি হতে হবে।

সম্প্রতি তিনি একাধিকবার রাশিয়া সফর এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে, ‘উইটকফের বার্তা মস্কোর প্রতি কী হবে এবং নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়া কিছু করতে পারে কিনা, তখন ট্রাম্প উত্তর দিয়েছিলেন: "হ্যাঁ, এমন একটি চুক্তি হতে পারে। কারণ যেখানে মানুষ মারা যাওয়া বন্ধ করতে হবে।’

ট্রাম্প পূর্বে হুমকি দিয়েছিলেন যে নতুন পদক্ষেপের অর্থ রাশিয়ার অবশিষ্ট বাণিজ্য অংশীদার, যেমন চীন এবং ভারতকে লক্ষ্য করে ‘দ্বিতীয় শুল্ক’ আরোপ করা হতে পারে। এটি রাশিয়াকে আরো দমিয়ে রাখবে, তবে উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক ব্যাঘাতের ঝুঁকি তৈরি করবে।

ওয়াশিংটনের চাপ সত্ত্বেও, তার পশ্চিমাপন্থী প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে রাশিয়ার আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে।

পুতিন ধারাবাহিকভাবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। তিনি শুক্রবার বলেছেন তিনি শান্তি চান তবে তার প্রায় সাড়ে তিন বছরের আগ্রাসন বন্ধ করার ব্যাপারে দাবিসমূহ ‘অপরিবর্তিত’ রয়েছে।

এই দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনকে ভূখণ্ড ত্যাগ করা এবং ন্যাটোতে যোগদানের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বন্ধ করা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুতে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে একটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, এই যুদ্ধশিগগিরই শেষ হবে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ তখন থেকেই তীব্রতর হচ্ছে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে, মস্কোর মারাত্মক আক্রমণাত্মক কর্মকাণ্ডের জন্য ট্রাম্প পুতিনের প্রতি ক্রমবর্ধমান হতাশা প্রকাশ করেছেন।


আল-আকসা মসজিদ দখলের হুমকি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসলামের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ ও পশ্চিমতীর পুরোপুরি দখলের হুমকি দিয়েছেন দখলদার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। এছাড়া জেরুজালেমে পূর্ণ দখলদারিত্ব আরোপ করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন এ দখলদার।

রোববার মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টে ইসরায়েল কাৎজ লিখেছেন, ‘তিসা বা’ আভের দিন, দ্বিতীয় টেম্পল ধ্বংসের ২ হাজার বছর পর, পশ্চিম দেওয়াল এবং টেম্পল মাউন্ট (আল-আকসা) আবারও ইসরায়েলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে এসেছে।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘ইসরায়েলকে ঘৃণাকারীরা আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া এবং বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে এবং আমরা জেরুজালেম, পশ্চিম দেওয়াল এবং আল-আকসা মসজিদে আমাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী করে যাব।’

এই দখলদার জানিয়েছেন, তিনি পশ্চিম প্রাচীরে গিয়েছিলেন। সেখানে জিম্মি, ইসরায়েলি সেনা, ইসরায়েলিদের নিরাপত্তা ও হামাসের পরাজয়ের জন্য প্রার্থনা করেছেন।

এর আগে রোববার আল-আকসা প্রাঙ্গণে প্রার্থনা করেন দখলদার ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গিভির। আল-আকসায় ইহুদিদের প্রার্থনা নিষিদ্ধ সত্ত্বেও এ কাজ করায় ইসরায়েলি মন্ত্রীর কঠোর নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব। দেশটি বলেছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা উস্কে দেবে।

বেন গিভিরের এ কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে সৌদি বলেছে, ‘আল-আকসা মসজিদে ইসরায়েলি দখলদার সরকারের কর্মকর্তাদের বারবার উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে সৌদি আরব। এ ধরনের কর্মকাণ্ড এ অঞ্চলে উত্তেজনা উস্কে দেবে।’

আল-আকসা মসজিদের দায়িত্বে রয়েছে জর্ডান। একটি ওয়াকফের মাধ্যমে মসজিদটির কার্যক্রম চালানো হয়। এই মসজিদ নিয়ে কয়েক দশক পুরোনো একটি চুক্তি রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, পবিত্র এ মসজিদটিতে মুসলিম ছাড়া অন্য কোনো ধর্মাবলম্বীরা প্রার্থনা করতে পারবে না। তবে ইহুদিরা চাইলে মসজিদ প্রাঙ্গণে যেতে পারবে।


ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরকারী জ্যাক স্মিথের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুটি ফেডারেল ফৌজদারি মামলার নেতৃত্বদানকারী সাবেক বিশেষ কাউন্সেল জ্যাক স্মিথের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

স্মিথ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ফেডারেল অপরাধ মামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং চলতি বছরের শুরুর দিকে পদত্যাগ করেছেন।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

বিশেষ কাউন্সেল কার্যালয় দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছে, তারা হ্যাচ অ্যাক্ট লঙ্ঘনের জন্য স্মিথের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে, যা ফেডারেল কর্মীদের কর্মরত অবস্থায় রাজনৈতিক কার্যকলাপে জড়িত হওয়া নিষিদ্ধ।

রিপাবলিকান সিনেটর টম কটন সংস্থাটিকে তদন্ত করতে বলেছিলেন বলে জানা গেছে যে স্মিথের কর্মকাণ্ড ২০২৪ সালের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল কিনা।

ফেডারেল কর্মীদের আচরণ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটি তাৎক্ষণিকভাবে এএফপিকে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হয়নি।

স্মিথকে ২০২২ সালে বিশেষ কাউন্সেল নিযুক্ত করা হয়েছিল এবং হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার পর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল উল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্র এবং শ্রেণীবদ্ধ নথিপত্র ভুলভাবে পরিচালনার অভিযোগ এনেছিল।

ট্রাম্প উভয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বিচার বিভাগকে তার বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ এনে এগুলোকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন।

কোনও মামলাই কখনও বিচারে আসেনি এবং ২০২৪ সালের নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প জয়লাভের পর বিচার বিভাগের নীতি অনুসারে, বিশেষ কাউন্সেল একজন বর্তমান প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা না চালানোর নীতি অনুসারে উভয়কেই বাদ দিয়েছেন।

ট্রাম্প তাকে বরখাস্ত করার জন্য তার প্রচারণার প্রতিশ্রুতি পূরণ করার আগেই স্মিথ পদত্যাগ করেন।

বিশেষ কাউন্সেলের লর কার্যালয় বিচার বিভাগের অধীনে বিশেষ পরামর্শদাতার অফিস থেকে আলাদাভাবে কাজ করে যেমনটি পূর্বে স্মিথের নেতৃত্বে ছিল।

টাইমস অনুসারে, স্মিথের গৃহীত প্রসিকিউটরিয়াল সিদ্ধান্তগুলো সাধারণত এর এখতিয়ারের অধীনে আসে না।

এটি স্মিথের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনতে পারে না তবে তার ফলাফল বিচার বিভাগের কাছে পাঠাতে পারে, যার সেই ক্ষমতা রয়েছে।

হ্যাচ অ্যাক্টের অধীনে সবচেয়ে গুরুতর শাস্তি হল চাকরির অবসান, যা স্মিথের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না কারণ তিনি ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন।

জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে, ট্রাম্প তার অনুভূত শত্রুদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

তিনি প্রাক্তন কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা ছাড়পত্র এবং সুরক্ষামূলক তথ্য কেড়ে নিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে অতীতের মামলায় জড়িত আইন সংস্থাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে ফেডারেল তহবিল ছিনিয়ে নিয়েছেন।

গত মাসে এফবিআই তার প্রাক্তন পরিচালক জেমস কোমি এবং প্রাক্তন সিআইএ প্রধান জন ব্রেনান, দুই বিশিষ্ট ট্রাম্প সমালোচকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে।


সাড়ে ৪ শত বছর পর প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় সুপ্ত আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাশিয়ার পূর্ব কামচাটকা অঞ্চলে ৪৫০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটেছে বলে দেশটির জরুরি কর্তৃপক্ষ রোববার জানিয়েছে। এই অঞ্চলে রেকর্ড করা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে একটির কয়েকদিন আগে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে।

মস্কো থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।

স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের গ্লোবাল ভলকানিজম প্রোগ্রাম অনুসারে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে ১৫৫০ সালে শেষবার অগ্ন্যুৎপাত হওয়া ক্র্যাশেনিনিকভ আগ্নেয়গিরি থেকে ছাইয়ের বিশাল কুণ্ডলী বের হতে দেখা যাচ্ছে।

কামচাটকার জরুরি অবস্থা মন্ত্রণালয় টেলিগ্রামে এক পোস্টে জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরির স্তূপটি ৬,০০০ মিটার (১৯,৭০০ ফুট) উচ্চতায় পৌঁছেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা পূর্বে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। এর পথে কোনও জনবসতিপূর্ণ এলাকা নেই এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় কোনও ছাই পড়ার ঘটনাও রেকর্ড করা হয়নি ।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, আগ্নেয়গিরিটিকে ‘কমলা’ বিমান চলাচলের ঝুঁকি কোড দেওয়া হয়েছে। যার অর্থ এই অঞ্চলে বিমান চলাচল ব্যাহত হতে পারে।

বুধবার এই অঞ্চলের আরেকটি আগ্নেয়গিরি ইউরোপ ও এশিয়ার সর্বোচ্চ সক্রিয় ক্লাইচেভস্কয়ের অগ্ন্যুৎপাতের পর এটি ঘটে।

গ্লোবাল ভলকানিজম প্রোগ্রাম অনুসারে, ক্লাইচেভস্কয়ের অগ্ন্যুৎপাত বেশ সাধারণ, ২০০০ সাল থেকে কমপক্ষে ১৮টি ঘটেছে।


ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভে যোগ দিলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ রোববার হাজার হাজার ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীর সঙ্গে সিডনির হারবার ব্রিজ অতিক্রম করেন। এই বিক্ষোভের ফলে বিশ্ববিখ্যাত এই সেতুটি সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।

সিডনি থেকে এএফপি এ সংবাদ জানায়।

গত বছর উচ্চ-নিরাপত্তা সম্পন্ন ব্রিটিশ কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসা অ্যাসাঞ্জকে পরিবার পরিবেষ্টিত অবস্থায় অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধানমন্ত্রী বব কারের সাথে মিছিল করতে দেখা গেছে।

গাজায় অপুষ্টি ও মানবিক সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ ও সমালোচনা বাড়ার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ফ্রান্স, ব্রিটেন ও কানাডা কিছুটা শর্তসাপেক্ষে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। অস্ট্রেলিয়া গাজায় যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানালেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়া এক ডজনেরও বেশি দেশের সাথে এক যৌথ বিবৃতিতে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ‘ইচ্ছা বা ইতিবাচক বিবেচনা’ প্রকাশ করেছে। যেটিকে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টির মধ্যেও সেতু পার হন এবং ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি’, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত হোক’ এই স্লোগান দেন।

নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ জানায়, তারা এ বিক্ষোভের জন্য সিডনির বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত শত শত অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।

বামপন্থী গ্রিনস পার্টির নিউ সাউথ ওয়েলসের সিনেটর মেহরিন ফারুকি সেন্ট্রাল সিডনির ল্যাং পার্কে জনসমাবেশে বলেন, এই মিছিল ইতিহাস সৃষ্টি করবে।

তিনি গাজার জনগণের ওপর গণহত্যার অভিযোগ তুলে ইসরায়েলের ওপর সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি এই বিক্ষোভ বন্ধ করতে চাওয়ায় নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস কঠোর সমালোচনা করেন।

মিছিলে অনেকে এমন ব্যানার বহন করেন যাতে গাজায় নিহত হাজার হাজার ফিলিস্তিনি শিশুর নাম তালিকাভুক্ত ছিল। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালালে এই যুদ্ধ শুরু হয় ।

বিক্ষোভে লেবার পার্টির সংসদ সদস্য এড হুসিক উপস্থিত ছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের নেতৃত্বাধীন সরকারকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান। তবে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জনসম্মুখে কোনো বক্তব্য দেননি এবং সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলেননি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, চলমান সহিংসতায় ৬০,০০০-এর বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের হামাসের হামলায় ১,২১৯ জন নিহত হয়। যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক ছিল। এছাড়া তাদের ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। যাদের মধ্যে ৪৯ জন এখনো গাজায় আটক। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর মতে তাদের মধ্যে ২৭ জন ইতিমধ্যে মারা গেছেন।

১৯৩২ সালে উদ্বোধন করা যমজ খিলান আকৃতির এই হারবার ব্রিজটি এক কিলোমিটারেরও বেশি লম্বা। বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত এ ব্রিজটি সিডনি ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতীক হয়ে উঠেছে।


আমরা ধীরে ধীরে মরে যাচ্ছি: ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর আর্তনাদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

একটা সময় পর্যন্ত বিশ্ব মানবাধিকার, আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর মানুষের চরম বিশ্বাস ছিল। কিন্তু ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার আজকের বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে সেসব যেন ধুলোয় ঢাকা কোনো গল্প। এখন সেখানে প্রতিদিনকার দৃশ্য— শুকিয়ে যাওয়া শিশুদের কঙ্কালসার দেহ, খাবারের আশায় হাত বাড়িয়ে থাকা মানুষের সারি এবং বাবা-মায়ের অসহায় কান্না—যাদের চোখের সামনেই অনাহারে ধুঁকে ধুঁকে মরছে সন্তানরা।

‘আমার ৫ বছরের মেয়ের ওজন এখনো মাত্র ১১ কেজি,’ বলছিলেন গাজার ৩৮ বছর বয়সী জামিল মুঘারি। তিনি বলেন, আমার ছেলের শরীরে চামড়া আর হাড় ছাড়া কিছু নেই। যুদ্ধ শুরুর পর আমি নিজেও ৩০ কেজি ওজন হারিয়েছি।

এটিই এখন গাজার প্রত্যাহিক চিত্র— শুধু যুদ্ধ নয়, এখন ক্ষুধাই হয়ে উঠেছে এখানকার নতুন মারণাস্ত্র।

দুর্ভিক্ষ: এখন আর আশঙ্কা নয়, বাস্তবতা

গত সপ্তাহে জাতিসংঘ-সমর্থিত ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজা এখন চরম মাত্রার দুর্ভিক্ষে পতিত হয়েছে।

আইপিসি জানায়, গাজায় ২২ লাখ মানুষকে যেন একটি বন্দি চেম্বারে আটকে রাখা হয়েছে। সেখানে বাইরে থেকে ত্রাণ সহায়তা প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, আর ভেতরে কোনো খাদ্য নেই, কর্মসংস্থান নেই, আশ্রয় নেই— আছে শুধু ধ্বংসস্তূপ আর কান্না।

মুঘারি বললেন, ‘আমি ও আমার পরিবার এমনও দিন কাটাই যেদিন খাবারের জন্য একেবারেই কিছু খুঁজে পাই না। সেসব দিন শুধু পানি খেয়ে পেট ভরাতে হয়। খাবার না পেয়ে এমন হয়েছে, মাঝেমধ্যে হাঁটতে গিয়েও দুর্বলতার কারণে পড়ে যেতে যেতে নিজেকে সামলাই। কারণ, সন্তানরা আমার মুখের দিকে তাকিয়ে।’

সহায়তার নামে বিভ্রান্তি

ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবর অনুযায়ী, ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত গাজার চারটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র প্রতিদিন মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য খোলা থাকে। খাবারের নাগাল পেতে গাজাবাসীকে হাজারো মানুষের ধাক্কাধাক্কি, বিশৃঙ্খলার মধ্যে পড়তে হয়। আর ক্ষুধার্ত মানুষগুলোর ওপর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর নির্বিচারে গুলির ঘটনা তো আছেই।

প্রতিবেদনে খাবারের সন্ধানে যাওয়া একজন তরুণের কথা তুলে ধরা হয়েছে। ওই ফিলিস্তিনি তরুণ নিজের পরিবারের জন্য খাবারের সন্ধানে গিয়ে লাশ হয়ে আত্মীয়দের কাঁধে করে ফিরছেন। এমন সব মর্মান্তিক ঘটনা গাজাবাসীর জন্য যেন নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আবু আল-আবেদ নামের আরেক গাজাবাসী বললেন, ‘আমার মেয়ের বুকের হাড় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। খাবার নেই, ওর মাথা ঘোরে, দুর্বলতায় পড়ে যায় সে। অথচ বাজারে যা পাওয়া যায়, সেগুলোর এত দাম দিয়ে কেনার সাধ্য আমাদের নেই।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার, সহানুভূতি—এসব এখন কেবল স্লোগান। যদি গাজায় পশুদের অধিকার রক্ষার কথা উঠতো, হয়তো অনেক আগে বিশ্ববাসী কোনো একটি ব্যবস্থা নিত।’

এদিকে, ৫৮ বছর বয়সি বিধবা মানসুরা ফাদল আল-হেলো বলেন, ‘আমার একটাই ছেলে। আমি ত্রাণ সহায়তা ট্রাকগুলোর আশপাশে যেতে দেই না। যদি গুলি খায়! আমি আর হারাতে পারব না। আমি ছেলেকে শহীদ হয়ে ফিরতে দেখতে চাই না।’

রাজনৈতিক প্রতীক না, চাই বাস্তব সহায়তা

ব্রিটিশ সরকার সেপ্টেম্বর নাগাদ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে অনেক গাজাবাসীর মতোই, মানসুরা এই সিদ্ধান্তে আশাবাদী নন। ‘রাষ্ট্র যদি সার্বভৌম না হয়, আত্মরক্ষার অধিকার না থাকে, তাহলে সেটা কি সত্যিকারের স্বীকৃতি? আমরা চাই বাস্তব অধিকার,’ —বললেন তিনি।

মানবতার জন্য এখনই সময়

গত সপ্তাহে গাজা দুইটি ভয়াবহ মাইলফলক ছুঁয়েছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। তবে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে মারা যাওয়াদের যোগ করলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা রয়েছে।

গাজাবাসীর প্রতিটি অশ্রু ফোঁটা যেন একটা প্রশ্ন— এই পৃথিবীতে মানুষের জীবন কি এতটাই মূল্যহীন? কাঁপা কণ্ঠে বিশ্ববাসীর প্রতি জামিল মুঘারির প্রার্থনা, ‘আমরা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছি। আমাদের এই বিপর্যয় থেকে বাঁচান।’


ভারতীয় শিল্পপতি অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বেআইনি লেনদেন ও ৩০০০ কোটি রুপি ব্যাংক ঋণ অনিয়মের তদন্তে আরও বিপাকে পড়লেন ভারতের রিলায়্যান্স গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল অম্বানী। গত শুক্রবার তার বিরুদ্ধে লুক-আউট সার্কুলার জারি হয়েছে। চারদিন ধরে অনিল আম্বানির বিভিন্ন সংস্থার অফিস, বাড়ি এবং সংস্থার পদাধিকারীদের বাড়িতে তল্লাশির পর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি) অনিলকে ৫ আগস্ট হাজিরার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তার আগেই অনিলের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। মামলা এড়াতে যাতে কেউ দেশত্যাগ না করেন, সে জন্য লুক-আউট নোটিশ জারি করা হয়।

অনিল আম্বানির বিরুদ্ধে সংস্থাগুলোর মোট ১৭ হাজার কোটি রুপির প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।

২০০৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনিলের সংস্থা রিলায়্যান্স গ্রুপ ইয়েস ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেয়ার সময় নিয়ম মানেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ইডি দেখছে, ঋণ মঞ্জুর হওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কয়েকজন বড় অঙ্কের টাকা পেয়েছিলেন। এই নিয়ম বহির্ভূত ‘বিনিময় ব্যবস্থা’ সম্পর্কে অনিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান তদন্তকারীরা।


দক্ষিণ আফ্রিকায় ১,০০০ অবৈধ খনি শ্রমিক গ্রেপ্তার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ শুক্রবার জানিয়েছে যে তারা দেশের উত্তর-পূর্বে অবৈধ সোনার খনিতে কর্মরত প্রায় ১,০০০ অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। সপ্তাহব্যাপী অভিযান চালানো এমপুমালাঙ্গা প্রদেশের একজন পুলিশ মুখপাত্র এএফপিকে বলেছেন যে আরও গ্রেপ্তার হতে পারে কারণ এখনও ভূগর্ভে অবৈধ খনি শ্রমিক রয়েছে।

জোহানেসবার্গ থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।

পুলিশের মুখপাত্র ডোনাল্ড মোধলুলি বলেছেন, "তারা বেরিয়ে আসার সাথে সাথে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার থেকে শুরু হওয়া পুলিশ অভিযানে এসওয়াতিনি এবং মোজাম্বিকের সীমান্তবর্তী বারবারটন গ্রামের কাছে গোপন খনি শ্রমিকদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।

মোধলুলি বলেন, এটি খনি নিরাপত্তা এবং পুলিশের মধ্যে একটি যৌথ অভিযান। প্রায় ১,০০০ অবৈধ খনি শ্রমিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত কোনও হতাহতের ঘটনা রেকর্ড করা হয়নি।

জোহানেসবার্গের পশ্চিমে স্টিলফন্টেইন শহরের কাছে একই ধরণের অভিযান চালানোর এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এই গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে। যেখানে জানুয়ারিতে তাদের খনিগুলো চূড়ান্তভাবে বন্ধ করে দেওয়ার আগে কমপক্ষে ৯০ জন গোপন খনি শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন।

স্টিলফনটেইনের সেই অভিযানের মতো এবারও বারবারটনের কাছে পুলিশ অবৈধ খনিগুলো ঘিরে রেখেছিল যাতে খাবার ও অন্যান্য সরবরাহ প্রবেশ করতে না পারে। এর ফলে ভেতরে থাকা শ্রমিকদের বাধ্য হয়ে উপরে উঠে আসতে হয়।


যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তেজনা চরমে, বাকযুদ্ধ থেকে পরমাণু সাবমেরিন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইউক্রেন ও শুল্ক নিয়ে রাশিয়ার একজন কর্মকর্তার সঙ্গে অনলাইনে তীব্র বাকযুদ্ধের পর শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দু’টি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। এতে নতুন করে উত্তেজনার তৈরি হয়েছে।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানিয়েছে, ট্রাম্প ও রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন।

হঠাৎ ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে সেই বাকযুদ্ধকে পরমাণু শক্তির মতো খুবই গুরুতর ও সংবেদনশীল বিষয়ের দিকে নিয়ে যান, যা সাধারণত প্রকাশ্যে আসে না।

ট্রাম্প তার সামাজিক মাধম্যের পোস্টে বলেন, ‘অত্যন্ত উস্কানিমূলক মন্তব্যের’ কারণে তিনি ‘দু’টি পারমাণবিক সাবমেরিন সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে এসব নির্বোধ ও উস্কানিমূলক মন্তব্য কেবল কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে।’

৭৯ বছর বয়সী এই রিপাবলিকান নেতা আরও লেখেন, ‘কথার গুরুত্ব অনেক। ভুল বোঝাবুঝি বিপজ্জনক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। আশা করি, এবার সেটি হবে না।’

তবে ট্রাম্প তার পোস্টে সাবমেরিন দু’টি পরমাণু অস্ত্রে সজ্জিত কি না, কিংবা এগুলোর অবস্থান কোথায় তার উল্লেখ করেননি।

কিন্তু শুক্রবার রাতে নিউজম্যাক্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ‘সাবমেরিন দু’টি এখন রাশিয়ার কাছাকাছি আছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকতে চাই। তাই আমি ওই এলাকায় দু’টি পরমাণবিক সাবমেরিন পাঠিয়েছি। আমি শুধু নিশ্চিত হতে চাই যে তার (মেদভেদেভ) কথাগুলো কেবলই কথা, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।’

ট্রাম্পের এই মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন জানান, মস্কো হাইপারসনিক পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ‘ওরেশনিক’ এর ব্যাপক উৎপাদন শুরু করেছে। এ বছরের শেষ নাগাদ এসব ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের পাশের দেশ বেলারুশে মোতায়েন করা হতে পারে। বেলারুশ রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র।

এই পরমাণু শক্তি প্রদর্শনের পেছনে আরও কারণ আছে। ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়াকে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছেন। তা না হলে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তবে সেই হুমকি উপেক্ষা করে ইউক্রেনে রুশ হামলা চলছে পুরো দমে।

শুক্রবার প্রকাশিত এএফপির বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জুলাই মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

জুন মাস থেকে রাশিয়ার হামলায় শত শত ইউক্রেনীয় সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় ৩১ জন নিহত হন বলে উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন।

পুতিন বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন। শুক্রবার তিনি বলেন, তিনি শান্তি চান, তবে প্রায় সাড়ে তিন বছরের এই আক্রমণ শেষ করতে হলে ইউক্রেনকে তার শর্তগুলো মেনে নিতে হবে। এবিষয়ে তার অবস্থান ‘অনড়’ থাকবে।

তার শর্তের মধ্যে রয়েছে ইউক্রেনকে কিছু ভূখণ্ড ছেড়ে দিতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদানের স্বপ্ন বাদ দিতে হবে।

বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পুতিন বলেন, বেলারুশে ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে এবং বছরের শেষ নাগাদ তা সম্পন্ন হবে।

বিশ্বের বেশিরভাগ পরমাণু অস্ত্র রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার হাতে। যুক্তরাষ্ট্র ‘পারমাণবিক ত্রয়ী’ (ভূমি, সমুদ্র এবং আকাশ) অস্ত্র ব্যবহার করে। এরই অংশ হিসেবে, তারা সবসময় পরমাণু অস্ত্রবাহী সাবমেরিন সমুদ্রে টহলে রাখে।

ট্রাম্প নিউজম্যাক্সকে বলেন, মেদভেদেভ যখন ‘পারমাণবিক’ শব্দটি ব্যবহার করলেন, তখনই তিনি সাবমেরিন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, ‘যখন কেউ ‘নিউক্লিয়ার’ বলে, আমি তা হালকাভাবে নিই না। কারণ সেটি চূড়ান্ত হুমকি।

মেদভেদেভ বৃহস্পতিবার তার টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে ট্রাম্পের সমালোচনা করেন এবং ‘ডেড হ্যান্ড’-এর কথা উল্লেখ করেন। এটি ছিল স্নায়ুযুদ্ধের সময়কার রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের একটি অতি-গোপন স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা।

এর আগে ট্রাম্প রাশিয়া ও ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘আল্টিমেটামের খেলা’ খেলার অভিযোগ তুলে তিনি সোমবার ‘এক্স’-এ পোস্ট করে বলেন, ট্রাম্পের ‘মনে রাখা উচিত’ যে রাশিয়া একটি শক্তিশালী শক্তি।

পাল্টা জবাবে ট্রাম্প লেখেন, ‘ওই সাবেক ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট এখনো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ভাবে।’ তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, ‘শব্দ বেছে বলো, মেদভেদেভ! তুমি কিন্তু ভয়ানক এক জায়গায় পা রাখছো।’

এক সময়ের সংস্কারপন্থি হিসেবে পরিচিত মেদভেদেভ ২০০৮ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, সে সময় তিনি ছিলেন বাস্তবে পুতিনের প্রতিনিধি মাত্র। পরবর্তীতে তিনি কট্টর জাতীয়তাবাদী অবস্থানে যান এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পশ্চিম-বিরোধী প্রচারণায় সক্রিয় হন। তবে রুশ রাজনীতিতে তার প্রভাব সীমিত।

বৃহস্পতিবারের হামলায় নিহতদের স্মরণে শুক্রবার কিয়েভজুড়ে শোক পালিত হয়। নিহত ৩১ জনের মধ্যে ৫ জন শিশু ছিল। ক্ষেপণাস্ত্রে বিধ্বস্ত নয়তলা ভবনের সামনে ফুল ও মোমবাতি রেখে শ্রদ্ধা জানান তারা।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, যুদ্ধ থামাতে পারেন কেবল ভ্লাদিমির পুতিনই। তিনি আবারও সরাসরি বৈঠকের প্রস্তাব দেন।

তিনি ‘এক্স’-এর এক পোস্টে লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাব দিয়েছে। ইউক্রেনও এতে সমর্থন জানিয়েছে। এখন যা প্রয়োজন তা হলো রাশিয়ার প্রস্তুতি।’


যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক: ভারতের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কার আশঙ্কা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারত থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সম্ভাব্য রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। হঠাৎ এই ঘোষণায় ভারতের অর্থনীতি ও শিল্প খাতে বড় ধাক্কার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, ক্ষতির মাত্রা এখনো পুরোপুরি নিরূপণ করা না গেলেও ট্রাম্পের পদক্ষেপ ভারতের প্রবৃদ্ধিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় বুধবার ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে লেখেন, ‘রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও অস্ত্র কেনার জন্য ১ আগস্ট থেকে ভারতের ওপর এ জরিমানা কার্যকর হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এমন সময়ে সবাই চায় রাশিয়া ইউক্রেনে হত্যাযজ্ঞ চালাক।’

ট্রাম্পের ঘোষণার পরপরই ভারতের শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। গত বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরুর পরই বাজারে ব্যাপক দরপতন হয়। ভারতের শেয়ারবাজার বিশ্লেষক নীলেশ শাহ জানান, তারা যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের মধ্যে একটি শুল্ক চুক্তি কার্যকর হবে বলে আশা করেছিলেন।

রেটিং সংস্থা ইক্রার প্রধান অর্থনীতিবিদ অদিতি নায়ার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শুল্ক ও জরিমানার হার আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি। এটি ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। ক্ষতির পরিমাণ নির্ভর করবে এই শুল্ক কার্যকরের মাত্রার ওপর।’

ইকরা ইতোমধ্যে চলতি অর্থবছরের জন্য ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। আরেকটি ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান নোমুরা জানিয়েছে, এই শুল্কের নেতিবাচক প্রভাবে ভারতের জিডিপি দশমিক ২ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে।

গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে কয়েক দফা আলোচনা হয়। ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে সন্তুষ্ট করতে বোর্বন হুইস্কি ও মোটরসাইকেলের মতো কিছু পণ্যে শুল্ক কমিয়েছিল। তবু ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি ট্রাম্প প্রশাসনের নজরে পড়ে। ট্রাম্পের মূল লক্ষ্যই এই ঘাটতি কমানো।

ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের রাহুল আহলুওয়ালিয়া বিবিসিকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ শুল্ক ও জরিমানা ভারতের বিনিয়োগ ও শিল্পায়নকে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর তুলনায় পিছিয়ে দেবে। চীন ও ভিয়েতনামের মতো অন্যান্য এশীয় অর্থনীতির তুলনায় ভারত পিছিয়ে পড়বে।’

এদিকে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার ফলে দেশটির ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশে আনা হয়েছে। ১২ আগস্টের মধ্যে এই দুটি দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি একটি চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ট্রাম্প জুলাইয়ের শুরুতে ভিয়েতনামের সঙ্গেও একটি চুক্তি সই করেন, যার ফলে শুল্ক ৪৬ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশ হয়।

ইওয়াই ইন্ডিয়ার বাণিজ্যনীতি বিশেষজ্ঞ অগ্নিশ্বর সেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল বেশ শক্তিশালী। নতুন শুল্ক ব্যবস্থা কার্যকর থাকলে সামুদ্রিক পণ্য, ওষুধ, বস্ত্র, চামড়া ও অটোমোবাইল খাত সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

ট্রাম্পের ঘোষণা ভারতের অর্থনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। শিল্প খাতসংশ্লিষ্ট সংগঠন এফআইসিসিআইর সভাপতি হর্ষবর্ধন আগারওয়াল একে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘এই শুল্ক ভারতের রপ্তানিতে স্পষ্টভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’


গাজায় মার্কিন-সমর্থিত সহায়তা কেন্দ্র মৃত্যু ফাঁদ : হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মার্কিন-সমর্থিত সহায়তা কেন্দ্রগুলোর বাইরে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নিয়মিতভাবে হত্যা করছে বলে শুক্রবার অভিযোগ তুলেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

জেরুজালেম থেকে এএফপি জানায়, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সংকট ও সংঘাতবিষয়ক সহপরিচালক বেলকিস উইলে বলেন, গাজায় ‘মার্কিন-সমর্থিত ইসরাইলি বাহিনী ও বেসরকারি ঠিকাদাররা একটি ত্রুটিপূর্ণ, সামরিক নিয়ন্ত্রিত ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা চালু করেছে, যা সহায়তা বিতরণকে নিয়মিত রক্তপাতের ঘটনায় পরিণত করেছে।’

প্রায় ২২ মাস ধরে গাজায় ইসরাইলি বাহিনী ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধের ফলে জাতিসংঘ নিযুক্ত বিশেষজ্ঞদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে এবং বেসামরিক মানুষেরা অনাহারে মৃত্যুবরণ করছে।

ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর পরিচালিত একটি বেসরকারি ত্রাণ উদ্যোগকে সমর্থন দিয়েছে, যা গাজার অভ্যন্তরে চারটি স্থানে পরিচালিত হচ্ছে। এসব কেন্দ্রে মার্কিন সামরিক ঠিকাদার ও ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিরাপত্তা দিচ্ছে।

জিএইচএফ তাদের কার্যক্রম শুরু করে মে মাসের শেষ দিকে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত জাতিসংঘ-নেতৃত্বাধীন মানবিক সহায়তা ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়।

তখনই ইসরাইল দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা খাদ্য ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যের অবরোধ কিছুটা শিথিল করতে শুরু করে।

তথাপি, এরপর থেকে গাজার ভেতরে এএফপি প্রতিবেদক, সিভিল ডিফেন্স সংস্থা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বারবার এমন ঘটনার কথা জানিয়েছে, যেখানে সহায়তার আশায় জিএইচএফ কেন্দ্রের কাছে জড়ো হওয়া অসহায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনারা গুলি চালিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ মে থেকে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অন্তত ৮৫৯ জন ফিলিস্তিনি জিএইচএফ-এর ত্রাণকেন্দ্রগুলোর আশেপাশে খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টা করার সময় নিহত হয়েছেন— যাদের অধিকাংশই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে মারা গেছেন।

এইচআরডব্লিউ-এর বেলকিস উইলে বলেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী শুধু ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখছে না, বরং তারা এখন প্রায় প্রতিদিনই ওই মানুষগুলো যখন তাদের পরিবারের জন্য খাবার সংগ্রহের চেষ্টা করছে তখন তাদের গুলি করে হত্যা করছে।’

এইচআরডব্লিউ-এর প্রতিবেদনের বিষয়ে এএফপির অনুরোধে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

তবে তারা পূর্বে দাবি করেছে, তারা নিরস্ত্র বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে না এবং দুর্ঘটনাজনিত হতাহত এড়াতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ শুক্রবার গাজায় জিএইচএফ-এর অন্তত একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র পরিদর্শনে যাচ্ছেন, এমন সময় যখন এই ক্ষুধা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে।


banner close