লেবাননজুড়ে হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। সর্বশেষ হামলায় আরও শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও সাড়ে তিন শতাধিক মানুষ। এদিকে লেবাননের রাজনৈতিক নেতারা ইসরায়েলি এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন। আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অবিরাম হামলার কারণে আরও একটি রক্তাক্ত দিনের সাক্ষী হয়েছে লেবানন। দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে সারা দেশে কমপক্ষে ১০৫ জন নিহত ও আরও ৩৫৯ জন আহত হয়েছেন। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দক্ষিণ সিডনের কাছে আইন আল-দেলবে একটি হামলায় দুটি আবাসিক ভবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে ও এতে ৩২ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ঘটনাস্থলে আশ্রয় নেওয়া অনেক বাস্তুচ্যুত পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।
তবে ইসরায়েল বলেছে, তারা হিজবুল্লাহর কয়েক ডজন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করেছে। তবে লেবাননের কর্মকর্তারা বলেছেন, দক্ষিণ লেবানন, বেকা, বালবেক-হারমেল গভর্নরেট এবং বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে বাড়িঘরের পাশাপাশি অন্যান্য ভবনগুলোতে হামলা করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার মধ্যরাতে স্থানীয় মিডিয়া আউটলেটগুলো বৈরুতের কেন্দ্রস্থলে কোলা ব্রিজ এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার খবর দিয়েছে। গত বছর সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে শহর সীমানার মধ্যে এটিই ইসরায়েলের প্রথম আক্রমণ ও সম্ভবত এটিকে সংঘাতের আরেক ধাপ বৃদ্ধি হিসাবে দেখা হবে।
লেবাননের রাজধানীকে আগে ইসরায়েলি আক্রমণ থেকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসাবে দেখা হতো। তবে সরাসরি বৈরুত শহরে বোমা হামলার ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, দেশটির অন্যান্য অংশের মতো রাজধানীও ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এর আগে শুক্রবার বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে বিমান হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করে ইসরায়েল। এরপরে রোববার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক কর্মকর্তা শেখ নাবিল কাউককেও হত্যা করে।
‘আমরা প্রস্তুত, দীর্ঘ যুদ্ধেও বিজয়ী হবো’
ইরান-সমর্থিত লেবানিজ সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ যে কোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত এবং তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান লড়াই চালিয়ে যাবে। আজ সোমবার এ ঘোষণা দিয়েছেন হিজবুল্লাহর উপপ্রধান নাইম কাসেম। গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ ইসরায়েলি হামলায় নিহত হওয়ার পর এই প্রথমবার জনসম্মুখে এলেন কাসেম। ভাষণে তিনি বলেন, হিজবুল্লাহ তাদের প্রয়াত প্রধানের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিকল্প কৌশল গ্রহণ করছে এবং শিগগির নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে।
প্রয়াত নেতার স্মরণে শোক প্রকাশ করে নাইম কাসেম বলেন, আমরা একজন প্রিয় ভাই ও নেতাকে হারিয়েছি, যিনি ধর্মযোদ্ধাদের প্রতি গভীর ভালোবাসা পোষণ করতেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে।
হিজবুল্লাহর সামরিক সক্ষমতার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে কাসেম জানান, গোষ্ঠীটি ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ১৫০ কিলোমিটার গভীরে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, হিজবুল্লাহর সামরিক কার্যক্রম আগের মতোই চালু রয়েছে এবং প্রয়াত প্রধান হাসান নাসারাল্লাহর মৃত্যুর পরও এই তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। ইসরায়েলের সম্ভাব্য স্থল অভিযান সম্পর্কে তিনি বলেন, হিজবুল্লাহ যেকোনো স্থল অভিযান মোকাবিলায় প্রস্তুত। দীর্ঘ যুদ্ধের জন্যও মানসিকভাবে তারা প্রস্তুত। নতুন নেতৃত্ব প্রসঙ্গে কাসেম বলেন, আমরা শিগগির নতুন নেতা নির্বাচন করব।
গোষ্ঠীটির মূল লক্ষ্য সম্পর্কে হিজবুল্লাহর উপপ্রধান বলেন, গাজার প্রতি সমর্থন এবং লেবাননের সুরক্ষা অব্যাহত থাকবে। বক্তৃতার শেষাংশে তিনি ২০০৬ সালের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা ২০০৬ সালের মতোই বিজয়ী হবো।
ইসরায়েলে লেবাননের রকেট বৃষ্টি!
উত্তর ইসরায়েলে আজ সোমবার সকাল থেকে একের পর এক রকেট হামলা চালিয়ে যাচ্ছে লেবানন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী-আইডিএফ জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকেই হিজবুল্লাহ রকেট বৃষ্টি শুরু করেছে উত্তর ইসরায়েলে। এর মধ্যে উত্তর গোলান মালভূমিতে একসঙ্গে গিয়ে ১৫টি রকেট আঘাত হানে। তারপরে দক্ষিণ গোলান এবং আপার গ্যালিলে ২০টি রকেট গিয়ে আছড়ে পড়ে।
আইডিএফ আরও জানায়, কিছু রকেট বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিহত করা হয়েছে, বাকিগুলো খোলা জায়গায় আঘাত করেছে। তবে এতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহত হয়েছে ইসরায়েল তা জানায়নি। অবশ্য, কখনোই ইসরায়েল তা জানায় না।
এর আগে ইসরায়েল-মার্কিন নির্মিত এফ-৩৫ জঙ্গীবিমানের সাহায্যে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণে দাহিয়েহ এলাকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ছয়টি বেসামরিক ভবন সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেয়ার পর হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা এই হামলা চালায়। হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এক ঝাঁক ফাদি-৩ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সোমবার সকালে রামাত ডেভিড সামরিক বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে। এর পাশাপাশি পশ্চিম গ্যালিলি অঞ্চলের কাবরি ইহুদি বসতিতেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা নিশ্চিত করেছে হিজবুল্লাহ। পাশাপাশি ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী নাহারিয়া শহরেও ফাদি-১ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, হিজবুল্লাহ শুক্রবার রাতে প্রায় ৭৫টি রকেট ছুড়েছে। এর মধ্যে ইসরায়েলের সাফেদ শহরে অন্তত ত্রিশটি রকেট আঘাত হানে। এতে শহরের কয়েকটি এলাকায় বড় রকমের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ইসরাইলি বাহিনীর স্বীকার করেছে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলি বিমান হামলায় হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার পর পুরো এলাকায় এখন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে আতশবাজির ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
দিল্লির দূষণ নিয়ন্ত্রণ কমিটির এক বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে গতকাল সোমবার এএফপি জানায়, ‘শহরটিতে সব ধরনের আতশবাজি তৈরি, সংরক্ষণ, বিক্রি ও ফাটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। উচ্চ বায়ু দূষণ রোধে জনস্বার্থে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। পহেলা নভেম্বর হিন্দু ধর্মীয় উৎসব দীপাবলির দুই সপ্তাহ আগে আদেশটি দেওয়া হলো।’
অনেকে আতশবাজিকে হিন্দুদের ধর্মীয় উৎসব দীপাবলি উদযাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে মনে করেন। দর্শনীয় ও রঙিন উৎসবটি অন্ধকারের ওপর আলোর বিজয়ের প্রতীক হিন্দু দেবী লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে এই আয়োজন করা হয়। তবে পুলিশ প্রায় ৩ কোটি মানুষের এই শহরে বিধিনিষেধগুলো বরাবরই শিথিল চোখে দেখে থাকে।
নয়াদিল্লি প্রতি শরৎকালে তীব্র ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন থাকে। পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের কৃষকদের খড় পোড়ানোর জন্য এমনটা হলেও দীপাবলিকে ঘিরে বিপুল সংখ্যক আতশবাজি পোড়ানোর ফলে বায়ু দূষণ ব্যাপক আকার ধারণ করে। ২০২০ সালের একটি ল্যানসেট রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ২০১৯ সালে দিল্লিতে বায়ু দূষণের কারণে সৃষ্ট নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৭,৫০০ লোক প্রাণ হারায়।
নয়াদিল্লির বাসিন্দারা ঝামেলা এড়াতে মাঝরাতে বা ভোরের দিকে আতশবাজি ফোটায়। তবে এ বছর দিল্লির নগর কর্তৃপক্ষ রাজ্য পুলিশকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে। তাদের ‘দৈনিক পদক্ষেপ নেওয়া প্রতিবেদন’ জমা দিতে বলা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত চলবে।
১৫ শতকের অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাস পশ্চিম ইউরোপের একজন সেফার্ডিক ইহুদি ছিলেন। স্পেনের বিজ্ঞানীরা এমন তথ্য জানিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, কয়েক শতাব্দীর পুরোনো এই রহস্যের সমাধানে তারা ডিএনএ বিশ্লেষণ ব্যবহার করেছেন।
কলম্বাসকে নিয়ে নানা বিভেদ-বিভাজন আছে। বিশেষ করে তার জন্মস্থান ও সমাধিস্থল নিয়ে বেশ কয়েকটি দেশ তর্কবিতর্ক করে আসছে। ১৪৯০-এর দশক থেকে তিনি স্প্যানিশ অর্থায়নে পরিচালিত অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এর জেরে ইউরোপীয়দের আমেরিকা জয়ের পথ খোলে।
অনেক ইতিহাসবিদ প্রথাগত এই তত্ত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন যে কলম্বাস ইতালির জেনোয়ায় জন্ম নিয়েছিলেন। অন্যান্য তত্ত্বের মধ্যে রয়েছে, তিনি স্পেনের একজন ইহুদি কিংবা গ্রিক থেকে শুরু করে বাস্ক, পর্তুগিজ বা ব্রিটিশ নাগরিক।
রহস্যের সমাধানে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মিগুয়েল লোরেন্তের নেতৃত্বে ২২ বছর অনুসন্ধান কাজ পরিচালনা করেন গবেষকেরা। স্পেনের সেভিল ক্যাথেড্রালে সমাহিত দেহাবশেষের ক্ষুদ্র নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এখানে কলম্বাসের দেহাবশেষ আছে বলে দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে কর্তৃপক্ষ। যদিও এ বিষয়ে ভিন্ন দাবিও আছে।
গবেষকেরা কলম্বাসের দেহাবশেষের ক্ষুদ্র নমুনা পরিচিত আত্মীয় ও বংশধরদের সঙ্গে তুলনা করেন। গত শনিবার স্পেনের জাতীয় সম্প্রচারমাধ্যম টিভিইতে ‘কলম্বাস ডিএনএ: দ্য ট্রু অরিজিন’ শিরোনামের একটি তথ্যচিত্রে (ডকুমেন্টারি) গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।
তথ্যচিত্রে মিগুয়েল বলেন, ‘আমাদের কাছে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের ডিএনএ আছে, তা খুব আংশিক, কিন্তু যথেষ্ট। আমাদের কাছে তার ছেলে ফার্নান্দো কোলনের ডিএনএ আছে।’
গবেষক মিগুয়েল আরও বলেন, ফার্নান্দোর ‘ওয়াই’ ক্রোমোজোম (পুরুষ) ও মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ (মায়ের কাছ থেকে আসা) উভয়ের ইহুদি উৎসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
রেইস ক্যাটোলিকোসের আগে প্রায় ৩ লাখ ইহুদি স্পেনে বসবাস করত। ক্যাথলিক শাসকেরা ইহুদি ও মুসলমানদের ক্যাথলিক ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে বা দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। পরে অনেকে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বসতি স্থাপন করেন।
মিগুয়েল বলেন, ২৫টি সম্ভাব্য স্থান বিশ্লেষণের পর কলম্বাস পশ্চিম ইউরোপে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, সে কথা বলা যেতেই পারে। গত বৃহস্পতিবার লরেন্ট বলেছিলেন, তারা আগের তত্ত্বগুলো নিশ্চিত করেছেন যে সেভিল ক্যাথেড্রালে থাকা দেহাবশেষের অবশিষ্টাংশ কলম্বাসের।
মিগুয়েল বলেন, কলম্বাসের জাতীয়তার ওপর গবেষণাটি বেশ কয়েকটি কারণে জটিল ছিল। এর মধ্যে বিপুল পরিমাণ ডেটা অন্যতম। কিন্তু গবেষণার ফলাফল প্রায় সম্পূর্ণ নির্ভরযোগ্য।
কলম্বাস ১৫০৯ সালে স্পেনের ভ্যালাডোলিডে মারা যান। তিনি হিস্পানিওলা দ্বীপে সমাধিস্থ হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। এখন এই দ্বীপটির মালিকানা ভাগাভাগি করছে ডমিনিক প্রজাতন্ত্র ও হাইতি।
১৫৪২ সালে কলম্বাসের দেহাবশেষ সেখানে নেওয়া হয়েছিল। এরপর ১৭৯৫ সালে কিউবায় স্থানান্তর করা হয়েছিল। ১৮৯৮ সালে তা স্পেনের সেভিলে নেওয়া হয় বলে দীর্ঘকাল ধরে ধারণা রয়েছে।
স্টকহোমে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস সোমবার ডেরন অ্যাসেমোগ্লু, সাইমন জনসন ও জেমস এ রবিনসনকে আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে ২০২৪ সালের অর্থনীতি বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী ঘোষণা করেছে।
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস বলেছে, 'প্রতিষ্ঠান কীভাবে গঠিত হয় এবং সমৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে তা নিয়ে গবেষণার জন্য' এই তিন অর্থনীতিবিদকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে পুরস্কারের কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকব সভেনসন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'বিভিন্ন দেশের মধ্যে আয়ের বিশাল ব্যবধান হ্রাস করা আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম। মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কার বিজয়ীরা এটি অর্জনের জন্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।'
আজ ১৪ অক্টোবর স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট ও বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে ছয় নম্বর ও সর্বশেষ অর্থনীতি ক্যাটাগরির নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শেষ হলো।
এখন পর্যন্ত টিকে থাকা বিশ্বের প্রাচীনতম ব্যাংক 'সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক'-এর ৩০০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ১৯৬৮ সালে আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতি স্মরণে এ পুরস্কার চালু করা হয়।
সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পুরস্কারের তহবিল জোগান দেয় এবং নোবেল ফাউন্ডেশন এ পুরস্কার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে থাকে।
১৯৬৯ সালে ডাচ অর্থনীতিবিদ জ্যান টিনবার্গেন ও নরওয়েজিয়ান অর্থনীতিবিদ রাগনার ফ্রিশকে 'অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের গতিশীল মডেল তৈরির জন্য' প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয়।
সর্বশেষ গত বছর ২০২৩ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান আমেরিকান অর্থনীতিবিদ ক্লডিয়া গোল্ডিন।
গোল্ডিনকে 'নারী শ্রম বাজারের ফলাফল সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য' নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তিনি তৃতীয় নারী হিসেবে অর্থনীতিতে পুরস্কার জিতেন।
১৯৬৯ সাল থেকে সম্মানিত ৯৩ জন বিজয়ীর মধ্যে, মাত্র তিনজন মহিলা - ২০২৪ সালে গোল্ডিন, ২০০৯ সালে তার স্বদেশী এলিনর অস্ট্রম ও ২০১৯ সালে ফরাসি-আমেরিকান এসথার ডুফ্লো।
প্রথা অনুযায়ী অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার হিসেবে ৭ অক্টোবর চিকিৎসা শাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
সোমবার যৌথভাবে দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকানকে চিকিৎসা বা ওষুধশাস্ত্রে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি জানায়, ‘অণু-আরএনএ এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা আবিষ্কারের জন্য’ তাদের এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স জন জে. হপফিল্ড ও জিওফ্রে ই. হিন্টনকে যৌথভাবে ২০২৪ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়।
একাডেমি জানায়, ‘কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের সঙ্গে মেশিন লার্নিং সক্ষম করে তোলোর বুনিয়াদি আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য’ তাদের পুরস্কার দেওয়া হয়।
বুধবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড বেকারকে কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইনের জন্য’ এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডেমিস হাসা বিস ও জন এম. জাম্পারকে ‘প্রোটিন গঠন পূর্বাভাসের জন্য’ যৌথভাবে ২০২৪ সালের রসায়নে নোবেল পুরস্কারজয়ী ঘোষণা করে।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার ম্যান বুকার বিজয়ী কথাশিল্পী, প্রাবন্ধিক, ছোট গল্পকার ও ঔপন্যাসিক হান কাংকে ২০২৪ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতিবছর ৩০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস ১৯০১ সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে। সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর থেকে তাঁর নামে ও রেখে যাওয়া অর্থে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৬৯ সালে এতে যুক্ত হয় অর্থনীতি।
প্রতিবছর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর দিবস ডিসেম্বরের ১০ তারিখ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের অর্থ তুলে দেওয়া হয়। প্রতি ক্ষেত্রে পুরস্কার বিজয়ীরা একটি স্বর্ণপদক, শংসাপত্রসহ একটি ডিপ্লোমা এবং বর্তমানে ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার পান।
ব্রাজিলের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিনাস গেরাইসে অগ্নিনির্বাপক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ গতকাল শনিবার এ কথা জানায়।
রিও ডি জেনেইরো থেকে সিনহুয়া জানায়, অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট হেনরিক বার্সেলোস জানান, শুক্রবার বিকেল থেকে নিখোঁজ হেলিকপ্টারটির শনিবার সকালে ওরো প্রেটো শহরের কাছে সন্ধান পাওয়া গেছে।
চারজন দমকলকর্মী, একজন নার্স এবং একজন চিকিৎসক হেলিকপ্টারটিতে আরোহী ছিলেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ওরো প্রটোর কাছে বিধ্বস্ত হওয়া একটি ছোট বিমান অনুসন্ধানে সহায়তার জন্য শুক্রবার এই ক্রুদের পাঠানো হয়েছিল।
দুই মাস আগে আরজি কর হাসপাতালে এক জুনিয়র চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার পর সেই ঘটনার বিচারের দাবিতে যে অভূতপূর্ব আন্দোলন শুরু হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতায়, তা এখনো সমান তেজে এগিয়ে চলছে। চলমান দুর্গাপূজা আন্দোলনের স্পিরিটে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
আর জি কর হাসপাতালে গত আগস্ট মাসে নিহত ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচার, কর্মক্ষেত্রে যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা, রাজ্যের বেহাল স্বাস্থ্যসেবা কাঠামোর সংস্কার, কয়েকজন কর্মকর্তার পদত্যাগসহ দাবিতে গত ৪ অক্টোবর শনিবার কলকাতার ধর্মতলা এলাকার আন্দোলনমঞ্চে আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে ৭ জন চিকিৎসক যোগ দেন এই কর্মসূচিতে। তারা হলেন স্নিগ্ধা হাজরা, তনয়া পাঁজা, অনিকেত মাহাতো, সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়, অর্ণব মুখোপাধ্যায় এবং পুলস্ত্য আচার্য। কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকের দায়িত্বে রয়েছেন তারা।
অনশনকারীদের মধ্যে অনিকেত মাহাতো গত শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে আর জি কর হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে। তবে বাকিরা এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। যে ১০ দফা দাবিতে জুনিয়র চিকিৎসরকরা অনশন করছেন, সেগুলো হলো- (১) দ্রুত এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে আর জি কর হাসপাতালে চিকৎসক র্ধষণ ও হত্যার বিচার, (২) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সচিব নারায়নস্বরূপ নিগমের অপসারণ, (৩) হাসপাতালগুলোতে কেন্দ্রীয়ভাবে রেফারেলের ব্যবস্থা, (৪) হাসপাতালে ফাঁকা বেডের হিসাব রাখতে ডিজিটাল মনিটরিং, (৫) কলেজভিত্তিক টাস্কফোর্স গঠন, প্যানিক বাটন ও হেল্পলাইন চালু, (৬) হাসপাতলগুলোর নিরাপত্তায় সিভিক ভলান্টিায়ারের পরিবর্তে পুলিশ ও নারী পুলিশ নিয়োগ, (৭) হাসপাতালগুলিতে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ, (৮) আন্দোলনরত চিকিৎসদের হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ, (৯) প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা এবং (১০) পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল এবং পশ্চিমবঙ্গ হেল্থ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগগুলোর তদন্ত।
এই ১০ দফা দাবিকে লিফলেট আকারে জনসাধারণের মধ্যে বিলি করার কাজ শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। বুধবার দুর্গাপূজার সপ্তমীর দিন এই লিফলেট বিতরণ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন ৯ জন জুনিয়র চিকিৎসক। পরে অবশ্য তাদের জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে ধর্মতলার অনশনমঞ্চের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ছে এই আন্দোলন। শুক্রবার দুপুর থেকে আরজি কর আন্দোলন ধর্মতলা চত্বরে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ। শুধু তা-ই নয় বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরা বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
যা করছে রাজ্য সরকার
অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের চিঠি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শুক্রবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবির তালিকায় থাকা বিভিন্ন কাজের অগ্রগতির খতিয়ান দেওয়া হয়েছে। তবে আন্দোলনকারীদের অন্যতম দাবি, রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের অপসারণ প্রসঙ্গে এখনো কিছু জানায়নি রাজ্য।
সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কায় ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক বন্যা হয়েছে। বন্যায় মক্কা ও আশপাশের নিম্নাঞ্চল বৃষ্টির পানি ও স্রোতে ভেসে যায়। এর আগে এলাকায় ধূলিঝড়ও হয়েছিল যাপরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহতের কারণ হয়।
বৃষ্টির ঘটনা নিয়ে বেশ কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওগুলোতে তীব্র বৃষ্টিপাত ও পানির স্রোতের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। বৃষ্টিপাতের পূর্বে সেখানে প্রবল ধূলিঝড় হয়েছিল যা চারপাশে দৃশ্যমানতা অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
সৌদি আরবের জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র আগেই মক্কা, জিজান, আসির, আল বাহা এবং মদিনার জন্য ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছিল। এসব অঞ্চলে শিলাবৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি ছিল উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে নিম্নাঞ্চল ও উপত্যকাগুলোতে বন্যার আশঙ্কা ছিল প্রবল, যা শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়।
সম্প্রতি পুরো বিশ্বের মতো মধ্যপ্রাচ্যও অস্বাভাবিক আবহাওয়ার মুখোমুখি হচ্ছে। মরু অঞ্চলে সাধারণত কম বৃষ্টি হলেও এবারে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র। আফ্রিকার সাহারা মরুভূমিতে গত ৫০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বন্যা হয়েছে, যা ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মরু অঞ্চলে বন্যা একটি বিরল ঘটনা, এবং এই অস্বাভাবিক আবহাওয়ার প্রভাব মক্কাতেও পড়েছে। সৌদির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরে এমন আবহাওয়া আরও অব্যাহত থাকতে পারে। তাই নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে, বিশেষ করে নিম্নাঞ্চল ও বন্যাপ্রবণ এলাকায়।
ভারতের তামিলনাড়ুতে দুটি ট্রেনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চেন্নাই রেল বিভাগের পোন্নেরি-কাভারপেট্টাই স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় যাত্রীবাহী ট্রেনের অন্তত ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং ট্রেনের পার্সেলের বগিতে আগুন ধরে যায়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনে ৭৫ কিলোমিটার বেগে চলতে থাকা একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৯ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের মাইসোর থেকে বিহার রাজ্যের দ্বারভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচলকারী মাইসোর-দ্বারভাঙ্গা বাগমতি এক্সপ্রেস তামিলনাড়ু রাজ্যের তিরুভাল্লুর জেলার কাবারাপেতাই রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ১২টি কোচ লাইনচ্যুত হয় এবং যাত্রীবাহী ট্রেনটির পাওয়ার কারেও আগুন ধরে যায়।
তিরুভাল্লুর জেলার ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর ড. টি প্রভুশঙ্কর জানান, যাত্রীবাহী ট্রেনটিতে দুর্ঘটনার সময় ১৩৬০ যাত্রী ছিল। তাদের মধ্যে ১৯ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত প্রাণহানির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
দুর্ঘটনার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ভারতীয় রেলওয়ের দক্ষিণাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক আর এন সিং বলেন, ট্রেনটি গুডুরের দিকে যাচ্ছিল। আরও এগিয়ে এটি অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনা ঘটা স্টেশনে গুডুরের দিকে যাওয়া একটি মালবাহী ট্রেন লুপ লাইনে দাঁড়ানো ছিল এবং যাত্রীবাহী ট্রেনটিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, এই ট্রেনের মেইন লাইন দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু মেইন লাইনের সিগন্যাল থাকার পরও ট্রেনটি লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে। এটি পেছন থেকে মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দেয় এবং ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়।
এই লাইন হয়ে চলাচলকারী নির্ধারিত ট্রেনগুলোর মধ্যে ১৮টির যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। দুর্ঘটনার তদন্ত করতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে রেলওয়ে। রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার এ এম চৌধুরী দুর্ঘটনার সঠিক কারণ শনাক্ত করতে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ইরানের জ্বালানি তেল খাতের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় (ইউএস ট্রেজারি) ও পররাষ্ট্র দপ্তর (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) যৌথভাবে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। গত শুক্রবার মার্কিন সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানি এবং বাহন ইরানের তেল ব্যবসায় ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত সেগুলোর ওপর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই নিষেধাজ্ঞায় ১৬টি সংস্থা ও ১৭টি জাহাজ রয়েছে যেগুলো ইরানের জ্বালানি তেল পরিবহনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহ ও হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে গত ১ অক্টোবর ইসরায়েলে প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এরপর থেকে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে।
মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ইরানের জ্বালানি তেল বিশ্বব্যাপী ক্রেতাদের কাছে অবৈধভাবে পৌঁছে দেওয়া ‘ভৌতিক জাহাজবহরের’ (ঘোস্ট ফ্লিট) বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দ্বার উন্মোচিত হলো। ফলে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থসরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হবে।
এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের জন্য নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করা কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকেও তারা আর সমর্থন দিতে পারবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় হারিকেন মিলটনের আঘাতে প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
হোয়াইট হাউসে হারিকেন সংক্রান্ত এক ব্রিফিংয়ে জো বাইডেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছেন, এই হারিকেন প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি করেছে।’
ওয়াশিংটন থেকে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মিল্টনের প্রভাবে বন্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয় এবং কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়।
ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের পশ্চিম উপকূলে বুধবার রাতে আছড়ে পড়ে শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় মিলটন। এই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পুরো ফ্লোরিডা। টর্নেডো, বন্যা এবং ঝড়ের কবলে পড়ে অঙ্গরাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৬ জনের প্রাণ গেছে বলে জানা গেছে।
হারিকেন মিলটনের উপকূলে আঘাত হানার সঙ্গে সঙ্গে বুধবার ফ্লোরিডাজুড়ে কমপক্ষে ৩৬টি টর্নেডোর খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে দক্ষিণ ফ্লোরিডায় রেকর্ড ১৩৩টি টর্নেডোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যা একদিনে যেকোনো রাজ্যের জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টর্নেডো সতর্কতা।
প্রসঙ্গত, মাত্র সপ্তাহ দুয়েক আগেই ফ্লোরিডায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে হারিকেন ‘হেলেন’। ২০০৫ সালে আঘাত হানা হারিকেন ‘ক্যাটরিনা’র পর থেকে এটি যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঝড়। ‘হেলেন’র প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ২৩০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের পশ্চিম উপকূলে বুধবার রাতে আছড়ে পড়ে শক্তিশালী সামুদ্রিক ঝড় মিলটন। এই ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে পুরো ফ্লোরিডা। টর্নেডো, বন্যা এবং ঝড়ের কবলে পড়ে অঙ্গরাজ্যটিতে অন্তত ১৬ জনের প্রাণ গেছে বলে সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে।
আজ শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার মেক্সিকো উপকূল থেকে অগ্রসর হয়ে বুধবার স্থানীয় সময় রাতে ফ্লোরিডায় আঘাত হানে মিলটন। এতে ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অঙ্গরাজ্যের নদীগুলোর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই চিত্র দেখা গেছে ফ্লোরিডার আরও কয়েকটি শহরে।
সেন্ট পিটার্সবার্গে শক্তিশালী ঝড়ো হাওয়ায় ক্রেন ভেঙে পড়েছে একটি বাণিজ্যিক ভবনে। এতে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভবনটিতে থাকা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের। তবে কেউ হতাহত হননি বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
এর আগে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের ইতিহাস গড়ে শহরটি। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ফ্লোরিডার টাম্পা উপসাগরীয় অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। ফ্লোরিডার ডিভিশন অফ ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্টের প্রধান কেভিন গুথরি জানান, রাজ্যজুড়ে কমপক্ষে ১২৫টি বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
মিলটনকে ক্যাটাগরি-৫ হ্যারিকেন হিসেবে ঘোষণা করা হলেও উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়ার সময় ঝড়টি ক্যাটাগরি-৩ এ পরিণত হয়। সাফির স্যাম্পসন স্কেলে ক্যাটাগরি-৫ হলো সবচেয়ে শক্তিশালী মাত্রার হারিকেন।
এদিকে অরল্যান্ডো এবং অরেঞ্জ কাউন্টিতে বন্যার হাঁটু পানির মধ্যে উদ্ধারকর্মীরা এলাকাবাসীকে নিরাপদ স্থানে যেতে সহযোগিতা করছে। এ ছাড়া কেউ কোথাও আটকে আছে কি না তা খুঁজে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে বন্যার কারণে ভূমিধসও দেখা দিয়েছে।
হারিকেন মিলটনের আঘাতের পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ফ্লোরিডার ৩০ লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন। নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে চার হাজারের বেশি মানুষকে। মার্কিন আবহাওয়া অফিস বলছে, হারিকেন মিলটন ফ্লোরিডায় তাণ্ডব চালানোর পর শক্তি হারিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
হারিকেন মিলটনের উপকূলে আঘাত হানার সঙ্গে সঙ্গে বুধবার ফ্লোরিডাজুড়ে কমপক্ষে ৩৬টি টর্নেডোর খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে দক্ষিণ ফ্লোরিডায় রেকর্ড ১৩৩টি টর্নেডোর সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যা একদিনে যেকোনো রাজ্যের জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টর্নেডো সতর্কতা।
প্রসঙ্গত, মাত্র সপ্তাহ দুয়েক আগেই ফ্লোরিডায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে হারিকেন ‘হেলেন’। ২০০৫ সালে আঘাত হানা হারিকেন ‘ক্যাটরিনা’র পর থেকে এটি যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঝড়। ‘হেলেন’র প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ২৩০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
সৌদি আরবে কর্মরত প্রবাসী কর্মীদের জন্য বেশ কিছু নীতিমালা সংস্কার ও প্রণয়ন করেছে দেশটির সরকার। দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মূল কাজে অনুপস্থিত হওয়ার দিন থেকে অপর নিয়োগকর্তা বদল বা অন্য কাজে যোগদানের জন্য দুই মাস (৬০ দিন) সময় পাবেন প্রবাসী শ্রমিকরা। এই সময়ের মধ্যে তা করতে ব্যর্থ হলে চূড়ান্ত এক্সিট ভিসায় তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে কর্তৃপক্ষ। মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম গাল্ফ নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নির্দিষ্ট এই সময়ের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হলে শ্রমিকরা ‘কাজে অনুপস্থিত’ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে এই অনুপস্থিতির প্রতিবেদন প্রত্যাহার করা যাবে না। প্রবাসী শ্রমিকদের একটি বিশাল অংশের আবাসস্থল সৌদি আরব।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ নিয়োগকর্তাদের ওপর শ্রমিকদের সৌদি আরব ছাড়তে চূড়ান্ত এক্সিট ভিসা নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক করেছে। সৌদি আরবের জেনারেল ডিরেক্টরেট অব পাসপোর্ট বলেছে, একটি চূড়ান্ত এক্সিট ভিসা ইস্যু হওয়ার পর প্রবাসী কর্মীর দেশে ফেরত যাওয়া পর্যন্ত সব বিষয় তদারকি করতে হবে নিয়োগকর্তাদের।
শুধু চূড়ান্ত এক্সিট ভিসা পাওয়ার মধ্যেই নিয়োগকর্তার দায়িত্ব সীমাবদ্ধ নয়। কোনো শ্রমিকের জন্য একটি ‘ফাইনাল এক্সিট’ ভিসা ইস্যু করার পর যদি সৌদি আরবে ওই কর্মীর অবস্থান শনাক্ত করতে নিয়োগকর্তা ব্যর্থ হলে, অবশ্যই ভিসা বাতিলের জন্য তাদের আবেদন করতে হবে এবং কর্তৃপক্ষের কাছে শ্রমিকের অনুপস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
শ্রম সংস্কার
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরব দেশটির চাকরির বাজারকে আরও আকর্ষণীয় ও প্রতিযোগিতামূলক করতে শ্রম সংস্কার চালু করেছে। সম্প্রতি, নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে শ্রমিকদের চুক্তিভিত্তিক অধিকার সংরক্ষণের জন্য দেশটির শ্রমবিষয়ক আইনে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের অনুমোদন দিয়েছে সৌদি সরকার।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, বর্তমানে অনির্দিষ্ট মেয়াদের একটি চুক্তির অবসান করতে চাইলে শ্রমিককে ৩০ দিনের এবং নিয়োগকর্তাকে ৬০ দিনের একটি নোটিশ দিতে হবে। এই আইনের বাইরে বিনা নোটিশে কোনো শ্রমিক কাজ ছাড়তে পারবেন না বা কোনো নিয়োগকর্তা শ্রমিককে কাজ থেকে ছাঁটাই করতে পারবেন না।
শ্রমনীতিতে এমন পরিবর্তন আনার কারণে নিয়োগকর্তারা এখন এমন কাজগুলো এড়াতে বাধ্য হচ্ছে যা কর্মীদের কাজ করার সমান সুযোগ পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ন করে। দেশটিতে মাতৃত্বকালীন ছুটি ১০ সপ্তাহ থেকে ১২ সপ্তাহে উন্নীত হয়েছে। আরেকটি সংশোধনীতে ‘ট্রায়াল’ নিয়োগের সর্বোচ্চ মেয়াদ ১৮০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া, চুক্তি শেষে শ্রমিকদের দেশে ফেরত পাঠানোর সময় নিয়োগকর্তাদের জন্য ‘রিটার্ন টিকিট’-এর খরচ বহন বাধ্যতামূলক করেছে সৌদি আরব।
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বন্দুকধারীদের হামলায় ২০ জন খনিশ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত আরও সাতজন।
দেশটির পুলিশ সংস্থা আজ শুক্রবার স্থানীয় গণমাধ্যমে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
গোলযোগপূর্ণ বেলুচিস্তান প্রদেশে এটিই সবশেষ হামলা। দেশটিতে একটি বড় নিরাপত্তা শীর্ষ সম্মেলনের কয়েকদিন আগে ভয়াবহ হামলার ঘটনাটি ঘটল।
পাকিস্তান পুলিশের কর্মকর্তা হুমায়ুন খান নাসির বলেন, ‘বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বন্দুকধারীরা দুকি জেলার কয়লা খনির আবাসনে ঢুকে পড়ে। পরে তাদের ঘিরে ফেলে এবং গুলি চালায়।’
‘নিহতদের অধিকাংশই বেলুচিস্তানের পশতুন ভাষী এলাকার। এ ছাড়া নিহতদের তিনজন এবং আহতদের চারজন আফগান নাগরিক। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কেউ এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।’
তিনি দাবি করেন, প্রদেশটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর শক্ত ঘাঁটি যারা স্বাধীনতা চায়। তাদের অভিযোগ হলো, ইসলামাবাদের ফেডারেল সরকার স্থানীয়দের ক্ষতিগ্রস্ত করে তেল ও খনিজ সমৃদ্ধ বেলুচিস্তানকে অন্যায়ভাবে শোষণ করছে।
গত সোমবার বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) নামে একটি গোষ্ঠী জানায়, তারা পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দরের বাইরে চীনা নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছে। দেশটিতে হাজার হাজার চীনা নাগরিক কাজ করছে। যাদের বেশিরভাগই বেইজিংয়ের মাল্টি বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে জড়িত।
বিএলএ বলেছে, ‘এই বিস্ফোরণটি আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী ঘটিয়েছে। যার ফলে উচ্চ পদস্থদের নিয়ে অনুষ্ঠান বা দেশি-বিদেশিদের নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।’
শান্তিতে নোবেল জিতেছে জাপানি সংস্থা নিহন হিদানকিও।
চলতি বছরের শান্তিতে নোবেল বিজেতা হিসেবে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি আজ শুক্রবার সকাল ১১টা (স্থানীয় সময়) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টার দিকে সংস্থাটির নাম ঘোষণা করে।
নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট এ বছরের শান্তি পুরস্কারের জন্য মোট ২৮৬ জন প্রার্থীর নাম নিবন্ধন করে। যার মধ্যে ১৯৭ জন ব্যক্তি এবং ৮৯টি সংস্থা ছিল
১৯০১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ১১৪ বার নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ১১১ ব্যক্তি ও ৩১ সংস্থা মিলে পুরস্কার বিজয়ীর সংখ্যা ১৪২।
রেড ক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি ১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩ সালে তিনবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার দপ্তর ১৯৫৪ ও ১৯৮১ সালে দুইবার নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছে। এ ছাড়া ২৭ স্বতন্ত্র সংস্থা নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।
প্রথা অনুযায়ী অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার হিসেবে ৭ অক্টোবর চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতিবছর ৩০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর যাচাই বাছাই শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস ১৯০১ সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে। সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডায়নামাইট উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর ৫ বছর পর থেকে তার নামে ও রেখে যাওয়া অর্থে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। পরে ১৯৬৯ সালে এতে যুক্ত হয় অর্থনীতি।
প্রতিবছর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর দিবস ডিসেম্বরের ১০ তারিখ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের অর্থ তুলে দেওয়া হয়। প্রত্যেক ক্ষেত্রে পুরস্কার বিজয়ীরা একটি স্বর্ণ পদক, শংসাপত্রসহ একটি ডিপ্লোমা এবং বর্তমানে ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার পান।
আগামী ১৪ অক্টোবর স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট ও বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে ছয় নম্বর ও সর্বশেষ অর্থনীতি ক্যাটাগরির পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শেষ হবে।