বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
১৯ আষাঢ় ১৪৩২

জাতিসংঘের মহাসচিবকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ইসরায়েলের

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২ অক্টোবর, ২০২৪ ২১:২৯

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ বুধবার এই ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, গুতেরেসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে কারণ তিনি ইরানের মিসাইল হামলার নিন্দা জানাননি।

তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার ইরান ইসরায়েলে যে হামলা চালিয়েছে সেটির পর্যাপ্ত নিন্দা জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। এ কারণে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি ইসরায়েলে প্রবেশ করতে পারবেন না।’

দখলদার ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ আরও বলেন, গুতেরেস একজন ‘ইসরায়েল বিদ্বেষী’, তিনি ‘সন্ত্রাসী, ধর্ষক এবং হত্যাকারীদের’ সমর্থন করেন। গুতেরসকে আগামী কয়েক প্রজন্ম জাতিসংঘের কলঙ্ক হিসেবে মনে রাখবে।

যদিও মঙ্গলবার রাতে ইরান ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর তাৎক্ষণিকভাবে এর নিন্দা জানান জাতিসংঘের মহাসচিব। এ ছাড়া আবারও যুদ্ধবিরতির দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

এদিকে আজ রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রায় ২০০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। এই হামলায় লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয় ইসরায়েলের সামরিক অবকাঠামোকে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিশ্চিত করেছে, ইরান ইসরায়েলের নেভাতিম বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এই ঘাঁটিতে অন্তত কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র পড়তে দেখা গেছে।

অপর মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, ইরানের হামলার জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। দখলদারদের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, তারা ইরানের তেল উৎপাদন কেন্দ্রসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাবেন।


একসময়ের বন্ধুই এখন বড় শত্রু ট্রাম্পের

নতুন দল গঠনের হুমকি ইলন মাস্কের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইলন মাস্কের কম্পানিগুলোকে ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিলিয়ন ডলারের ভর্তুকি বন্ধ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত মঙ্গলবার এ হুমকি দেন। একসময়ের মিত্র এই দুই ব্যক্তির মধ্যে চলমান বাকযুদ্ধ আরো তীব্র হয়েছে।

বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’—একটি ট্যাক্স-কাট ও ব্যয়সংকোচন বিল, যা পাস হয়েছে সিনেটে।

এই বিলের ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য বরাদ্দ সরকারি ভর্তুকি ও করছাড় বাতিল হতে পারে, যা টেসলা দীর্ঘদিন ধরে পেয়ে আসছিল। মাস্ক এই বিলের তীব্র সমালোচনা করেন—এবং সেখান থেকেই ফের জ্বলে ওঠে পুরনো দ্বন্দ্ব।

মাত্র কয়েকদিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আতিথেয়তায় রাজকীয় ভোজে অংশ নিয়েছিলেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক। ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে এক ডাইনিং টেবিলে বসে তারা আলোচনা করেছেন রাজনীতি, অর্থনীতি থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবন পর্যন্ত।

মাস্ক তখন ছিলেন ট্রাম্পের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মানুষদের একজন—সরকারি ব্যয় কমানোর লক্ষ্য নিয়ে গঠিত বিশেষ টাস্কফোর্স ‘ডিওজিই’-এর নেতৃত্বেও ছিলেন তিনি। তবে সময় বেশি দিন সহনশীল থাকেনি। হঠাৎ করেই বন্ধুত্বে দেখা দিয়েছে ফাটল, আর এখন তা রূপ নিয়েছে প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে। বন্ধুত্ব আর আস্থার জায়গা ছেড়ে এখন তারা মুখোমুখি দুই শিবিরে।

দ্বন্দ্ব কেবল রাজনীতি নয়, জড়িয়ে পড়ছে ব্যবসা, ব্যক্তিত্ব, এমনকি সামাজিক মাধ্যমে চরম বাকবিতণ্ডায়। কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না—আর এই টানাপড়েনে ঝুঁকির মুখে পড়েছে মাস্কের ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য ও ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশল দুই-ই।

গত সোমবার মাস্ক ফের ট্রাম্পের ট্যাক্স-কাট ও ব্যয়ের বিলের সমালোচনা করেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘ও ( ইলন মাস্ক) তার ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিকল) ম্যান্ডেট হারাতে যাচ্ছে বলে ক্ষুব্ধ। কিন্তু ও আরো অনেক কিছু হারাতে পারে।’

ইলন মাস্ক অতীতে সরকারি ভর্তুকি তুলে দেওয়ার পক্ষে মত দিলেও, বাস্তবে তার কম্পানি টেসলা এ ধরনের সুবিধা থেকে বহু বছর ধরে লাভবান হয়েছে। ৭ হাজার ৫০০ ডলার মূল্যের ট্যাক্স ক্রেডিটসহ নানা সুবিধা ভোক্তাদের বৈদ্যুতিক গাড়ির প্রতি আগ্রহী করেছে, যা বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণাধীন। মঙ্গলবার টেসলার শেয়ারমূল্য ৫ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে।

এদিকে মাস্ক হুমকি দিয়েছেন, তিনি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন এবং ট্যাক্স বিল সমর্থনকারী আইনপ্রণেতাদের হারাতে অর্থ ব্যয় করবেন। যদিও তিনি সরকারি ব্যয় কমানোর পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট মাস্কের বাজেট ঘাটতির সমালোচনার জবাবে বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির দেখভাল আমিই করব।’

মাস্কের উদ্যোগে গঠিত ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ নামের ব্যয় সংকোচন প্রকল্প থেকেও মে মাসে তিনি নিজেই সরে দাঁড়ান। ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশালে লেখেন, ‘ইতিহাসে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি পেয়েছে ইলন মাস্ক।’ তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘রকেট লঞ্চ, স্যাটেলাইট বা ইভি উৎপাদন সব বন্ধ করলে আমেরিকার অনেক টাকা বাঁচবে।’

পরে ট্রাম্প আরো বলেন, ‘ডিওজিই এমন একটা দানব যেটা আবার ইলনকেই খেয়ে ফেলতে পারে।’

জবাবে মাস্ক নিজের প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ লেখেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলছি, সব ভর্তুকি বন্ধ করুন, এখনই।’ তিনি আরো পাল্টা আক্রমণ করতে পারতেন বলেও জানান, তবে আপাতত তা থেকে বিরত থাকার কথাও বলেন।

এই দ্বন্দ্ব মাস্কের ব্যবসা সাম্রাজ্যের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বিশেষ করে টেসলা বর্তমানে টেক্সাসের অস্টিনে পরীক্ষাধীন রোবোট্যাক্সি প্রোগ্রামের ওপর বড় বিনিয়োগ করেছে, যার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সরকারি নীতিমালার ওপর।

বিশ্লেষক জিন মানস্টার বলেন, ‘টেসলার বাজারমূল্যের বড় অংশ নির্ভর করছে স্বয়ংচালিত প্রযুক্তির অগ্রগতির ওপর। যদিও তাৎক্ষণিক কোনো পরিবর্তন হবে না, তবে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।’

বুধবার টেসলার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক বিক্রয় প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার কথা। ইউরোপে বিক্রয় মিশ্র হলেও মাস্কের কট্টর ডানপন্থি অবস্থান অনেক বাজারেই টেসলার জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

ইভি ক্রেডিট বাতিল হলে টেসলার আয় ১.২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে জে.পি মরগান—যা ২০২৪ সালের মোট পরিচালন আয়ের প্রায় ১৭ শতাংশ। ইলেকট্রিফিকেশন কোয়ালিশন, একটি ইভি সমর্থনকারী সংগঠন, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসকে অনুরোধ করেছে যেন তারা সিনেট বিলটি সংশোধন করে।

টেসলার বিনিয়োগকারী গ্যারি ব্ল্যাক জানান, গাড়ি বিক্রি কমে যাওয়ায় তিনি শেয়ার বিক্রি করেছেন এবং ইভি ক্রেডিট বাতিল হলে কম্পানিটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদিকে স্পেসএক্স এখনো প্রায় ২২ বিলিয়ন ডলারের সরকারি চুক্তির ওপর নির্ভরশীল। পাশাপাশি, টেসলা বিভিন্ন নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে প্রায় ১১ বিলিয়ন ডলার রেগুলেটরি ক্রেডিট বিক্রি করে এসেছে। এ আয় ছাড়া কম্পানিটি এপ্রিল মাসে লোকসান দেখত।

জুনের শুরুতেই ট্রাম্প মাস্কের সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন। তখন থেকেই দুজনের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে উত্তেজনা বাড়ে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি জানি না ওকে (মাস্ককে) ডিপোর্ট করা হবে কি না। এটা খতিয়ে দেখতে হবে।’


আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের আইন চূড়ান্ত অনুমোদন দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ’র সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের আইন চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান।

বুধবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

তেহরান থেকে এএফপি জানায়, রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের আইন অনুমোদন করেছেন মাসউদ পেজেশকিয়ান।

গত মাসে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধের পর প্রণীত এই আইন আজ কার্যকর করা হলো।


হরমুজ প্রণালিতে মাইন পাততে চেয়েছিল ইরান

শঙ্কিত হয়ে পড়েছিল যুক্তরাষ্ট্র
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের সময় গত মাসে ইরানের সেনাবাহিনী পারস্য উপসাগরের গুরুত্বপূর্ণ জলপথ হরমুজ প্রণালিতে স্থাপনের জন্য জল-মাইন ভর্তি নৌযান নিয়ে গিয়েছিল। দুই মার্কিন কর্মকর্তার বরাতে জানা গেছে, ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালানোর পর তেহরান হরমুজ প্রণালি অবরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে ওয়াশিংটন শঙ্কিত হয়ে উঠেছিল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইসরায়েল ১৩ জুন ইরানের ওপর প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কিছুদিন পরই এই জল-মাইন নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি এত দিন প্রকাশ্যে আসেনি। তবে হরমুজ প্রণালিতে এখনো এসব মাইন মোতায়েন করা হয়নি।

বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক নৌপথগুলোর একটি হরমুজ প্রণালি। ইরান যদি এটি বন্ধ করে দিলে বৈশ্বিক বাণিজ্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে এবং চলমান উত্তেজনা আরও ভয়াবহ রূপ নেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্বের মোট তেল-গ্যাস রপ্তানির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এই প্রণালি দিয়ে যায়। এটি বন্ধ হলে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আকাশচুম্বী হওয়ার আশঙ্কা ছিল। তবে এখন পর্যন্ত বাস্তবে তা ঘটেনি। বরং, যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর থেকে বিশ্ববাজারে তেলের দাম ১০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। বড় ধরনের কোনো অস্থিতিশীলতা হয়নি বাজারে।

গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালি বন্ধের বিষয়ে প্রস্তাব অনুমোদন করে। তবে সেটি বাধ্যতামূলক ছিল না। ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ওপর ছিল চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভার। ইরান আগে বহুবার এই প্রণালি বন্ধের হুমকি দিলেও কখনো সেটি বাস্তবায়ন করেনি।

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ চলাকালে ঠিক কখন তেহরান জল-মাইন মোতায়েনের জন্য জাহাজে তুলেছিল, তা নির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। এছাড়া, মাইনগুলো এখন জাহাজ থেকে নামানো হয়েছে কি না, তাও স্পষ্ট নয়।

যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এই তথ্য জানতে পারল—সে বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি মার্কিন কর্মকর্তারা। তবে সাধারণত স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি কিংবা গোপন সূত্রের মাধ্যমে এমন তথ্য সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।

হরমুজ প্রণালি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান জানতে চাইলে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের (ডোনাল্ড ট্রাম্প) দক্ষ নেতৃত্বে পরিচালিত অপারেশন মিডনাইট হ্যামার, হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান এবং সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের কারণেই হরমুজ প্রণালি খোলা আছে। নৌ-চলাচলের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং ইরান এখন অনেকটাই দুর্বল।’

এ বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর বা ইরানের জাতিসংঘ মিশনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, মাইন মোতায়েনের জন্য জাহাজে তোলার এই পদক্ষেপ আসলে ইরানের কৌশলগত চালও হতে পারে। তারা হয়তো দেখাতে চেয়েছে, হরমুজ প্রণালি বন্ধের বিষয়ে তারা সত্যিই প্রস্তুত। আবার তারা এমন প্রস্তুতি নিয়েছে, যাতে প্রয়োজন হলে তা বাস্তবায়ন করা যায়।

হরমুজ প্রণালি ওমান ও ইরানের মাঝখানে। এটি পারস্য উপসাগরকে দক্ষিণে ওমান উপসাগর ও আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। সবচেয়ে সংকীর্ণ স্থানে প্রণালির প্রস্থ ২১ মাইল (৩৪ কিলোমিটার)। এর মধ্যে ২ মাইল করে নৌ-চলাচলের পথ রয়েছে।

ওপেকভুক্ত—সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত ও ইরাক তাদের অধিকাংশ তেল এই পথ দিয়ে এশিয়ায় রপ্তানি করে। বিশ্বের অন্যতম বড় তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রপ্তানিকারক কাতারও প্রায় সম্পূর্ণ রপ্তানি এই পথ দিয়ে করে। ইরান নিজেও তাদের অধিকাংশ তেল এই প্রণালি দিয়ে রপ্তানি করে। তাই সাধারণভাবে তাদের এই পথ বন্ধ করার ইচ্ছা কম। তবে তারা বরাবরই এই পথ বন্ধ করার সামরিক সক্ষমতা ধরে রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির ২০১৯ সালের হিসাব অনুসারে, ইরানের কাছে ৫ হাজারের বেশি জল-মাইন আছে। দ্রুতগামী ছোট নৌকা দিয়ে সেগুলো খুব সহজেই মোতায়েন করা যায়।

আরব সাগর অঞ্চলে বাণিজ্য নিরাপত্তা রক্ষায় বাহরাইনে অবস্থান করে যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহর। সাধারণত সেখানে ৪টি মাইন-নিষ্ক্রিয়কারী (এমসিএম) জাহাজ থাকত। এখন এগুলোর পরিবর্তে আরও আধুনিক ‘লিটারাল কমব্যাট শিপ’ বা এলসিএস মোতায়েন করা হচ্ছে, যেগুলোতেও মাইন প্রতিরোধের প্রযুক্তি রয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে হামলার আগে সম্ভাব্য পাল্টা আঘাতের আশঙ্কায় বাহরাইন থেকে সব মাইন-নিষ্ক্রিয়কারী জাহাজ সরিয়ে নিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ইরান শুধু কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরানের পক্ষ থেকে আরও পাল্টা হামলার সম্ভাবনা তারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।


বিমানে সাপ, ফ্লাইট ছাড়তে দুই ঘণ্টা বিলম্ব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিমানবন্দরে একটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের কার্গো হোল্ডে সাপ দেখতে পাওয়ার পর সতর্কতা হিসেবে ফ্লাইটটি দুই ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) মেলবোর্ন থেকে ব্রিসবেনগামী ভার্জিন অস্ট্রেলিয়ার ফ্লাইট ভিএ৩৩৭-এর যাত্রী উঠানোর সময় ঘটে এ ঘটনা, যা পরদিন বুধবার গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়।

ঘটনার সময় প্লেনটির কার্গো হোল্ডে একটি সবুজ সাপ দেখতে পান পেশাদার সাপ ধরার বিশেষজ্ঞ মার্ক পেলে। সাপটি ছিল প্রায় ৬০ সেন্টিমিটার (দুই ফুট) লম্বা। অল্প আলোতে সাপটি বিষধর মনে হলেও পরে নিশ্চিত হওয়া যায় এটি একটি নিরাপদ ‘গ্রিন ট্রি স্নেক’।

মার্ক পেলে জানান, সাপটি আংশিকভাবে লুকানো অবস্থায় ছিল এবং যেকোনো সময় প্লেনের মূল কেবিনে ঢুকে যেতে পারতো। তিনি বলেন, ‘ভাগ্য ভালো যে প্রথম চেষ্টাতেই সাপটিকে ধরতে পেরেছি। নইলে পুরো প্লেন খালি করে কিছু অংশ খুলে ফেলতে হতো।’

ভার্জিন অস্ট্রেলিয়ার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ফ্লাইটটি প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে।

পেলের ধারণা, সাপটি আগের কোনো ফ্লাইটে যাত্রীর ব্যাগে করে এসেছিল এবং পরে পালিয়ে যায়। তবে অস্ট্রেলিয়ার কড়াকড়ি কোয়ারেন্টাইন নীতির কারণে সাপটিকে বনে ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি। সংরক্ষিত প্রজাতির এই সাপ বর্তমানে মেলবোর্নের এক পশু চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং পরবর্তীতে এটিকে লাইসেন্সপ্রাপ্ত সাপ পালনকারীর কাছে হস্তান্তর করা হবে।


উত্তরসূরি নিয়ে অন্য কারো হস্তক্ষেপ চলবে না: দালাই লামা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতে নির্বাসিত তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা তার উত্তরসূরি নির্ধারণে শুধুমাত্র তারই প্রতিষ্ঠিত ‘গাহদেন ফোড্রাং ট্রাস্ট’ সিদ্ধান্ত নিবেন। দালাই লামা বলেছেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় বাইরের কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।’

বুধবার (০২ জুলাই) এক ভিডিও বার্তা ও বিবৃতিতে দালাই লামা জানান, তার অনুপস্থিতিতে পরবর্তী দালাই লামাকে নির্বাচন করা হবে তিব্বতীয় বৌদ্ধ ঐতিহ্য ও নিয়মনীতি অনুযায়ী। এই ঘোষণাকে ঘিরে চীনের প্রতিক্রিয়ায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

তিব্বতের এই আধ্যাত্মিক নেতা বলেন, ‘পরবর্তী দালাই লামাকে নির্বাচন এবং পুনর্জন্ম শনাক্ত করার পুরো প্রক্রিয়াটি পরিচালিত হবে গাহদেন ফোড্রাং ট্রাস্ট-এর মাধ্যমে। এই বিষয়ে অন্য কারো হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়।’

দালাই লামার ঘোষণার আগে উত্তর ভারতের ধর্মশালায় অনুষ্ঠিত হয় তিন দিনব্যাপী ১৫তম তিব্বতীয় ধর্মীয় সম্মেলন। এতে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো তিব্বতী ধর্মানুসারী জড়ো হন।

দলটির মুখপাত্র পেনপা সেরিং জানান, ‘বিশ্বজুড়ে তিব্বতীয়রা আন্তরিকভাবে দালাই লামাকে অনুরোধ করেছেন যাতে তিনি পরবর্তী উত্তরসূরির বিষয়টি বিবেচনায় নেন। তিনি সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন।’

এদিকে দালাই লামার ঘোষণার পরপরই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এই সিদ্ধান্তকে তারা ‘অবৈধ ও গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে মনে করে। বেইজিংয়ের দাবি অনুযায়ী, ‘পরবর্তী দালাই লামা নির্ধারণে চীনা সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন।

এই প্রক্রিয়া চীনের আইন, ধর্মীয় রীতিনীতি ও ঐতিহাসিক রীতিনীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।’

চীন আরো দাবি করে, ‘লট ড্রয়িং’ পদ্ধতির মাধ্যমে স্বর্ণের পাত্র থেকে নাম বেছে নিয়েই দালাই লামা নির্বাচন করা উচিত—একটি পদ্ধতি চালু হয়েছিল ১৭৯২ সালে। যদিও এই পদ্ধতি বর্তমান দালাই লামার ক্ষেত্রে প্রয়োগ হয়নি।

সমালোচকদের মতে, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চীন দালাই লামার উত্তরসূরি বাছাইয়ে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। যদিও চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করে থাকে।

তবে বুধবার (০২ জুলাই) তার বক্তব্যে এ বিষয়টি একেবারেই স্পষ্ট—পুনর্জন্ম এবং উত্তরাধিকার প্রথা বজায় রাখা হবে, এবং তা সম্পূর্ণভাবে তিব্বতীয় বৌদ্ধ ঐতিহ্য অনুসরণ করে হবে।

চলতি সপ্তাহে দালাই লামার ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের মন্ত্রীরা, বিশিষ্ট অতিথি ও হলিউড অভিনেতা রিচার্ড গেরে। জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে ধর্মশালায় এক বিশাল জনসমাগম হয়।

অনুষ্ঠানে দালাই লামাকে বলতে শোনা যায়, ‘একটি কাঠামোর মধ্য থেকে আমরা দালাই লামাদের প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিকতা নিয়ে আলোচনা করতে পারি।’


ইউক্রেনে কিছু অস্ত্রের চালান স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন ইউক্রেনে আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলাবারুদের কিছু চালান স্থগিত করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের মজুত অনেকটাই কমে যাওয়ায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুজন মঙ্গলবার (০১ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছেন।

দুই সূত্র বলেছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন কিয়েভকে যে অস্ত্র সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তার কিছু চালান সম্প্রতি ধীরগতিতে পাঠানো হচ্ছে। দেরি করে পাঠানো এসব চালানের মধ্যে আছে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সহায়ক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

পেন্টাগন এক ই-মেইলে বলেছে, ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কিছু বিকল্প পথ দেখিয়েছে তারা। এর লক্ষ্য হলো ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ বন্ধ করা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা নীতিমালাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি এলব্রিজ কোলবি বলেন, একই সময়ে পেন্টাগন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্য ঠিক রাখতে তাদের পরিকল্পনা ভালোভাবে খতিয়ে দেখছে ও বদলাচ্ছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী যেন প্রশাসনের প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত অগ্রাধিকারের বিষয়গুলোর জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকে, সেটাও নিশ্চিত করা হচ্ছে।

রাশিয়া ইতোমধ্যে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা ধীরে ধীরে আরও অগ্রসর হচ্ছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তারা ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক ও দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের নতুন এলাকা দখল করেছে। দেশজুড়ে বিমান হামলাও বাড়িয়েছে রাশিয়া।

গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সাময়িকভাবে সব ধরনের অস্ত্রসহায়তা বন্ধ রাখা হয়েছিল। আর মার্চে আরও দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ রাখা হয়। এরপর ট্রাম্প প্রশাসন বাইডেনের অনুমোদিত শেষ দফার সহায়তা পাঠানো শুরু করে। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত নতুন কোনো নীতিমালার ঘোষণা আসেনি।

তবে চালান স্থগিতের খবরটি পলিটিকো বুধবার (০২ জুলাই) প্রথম প্রকাশ করেছে।


ইয়েমেন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার দাবি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইসরাইলি সেনাবাহিনী তারা মঙ্গলবার ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করার দাবি করেছে।

জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, হুথিরা ইসরাইলে ড্রোন হামলা চালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরাইলি বিমানবাহিনী সাইরেন বাজানোর পর, ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে।’

হুথি সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে টেলিগ্রামে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিস্তিন ২ হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইয়াফা দখলকৃত এলাকার লদ বিমান বন্দরকে লক্ষ্য করে একটি সামরিক হামলা পরিচালনা করেছে।’

তিনি বলেন, অভিযানটি তার লক্ষ্য অর্জন করেছে এবং ‘লাখ লাখ দখলদার ইহুদিবাদীদের আশ্রয়কেন্দ্রে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে। এই হামলার কারণে বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে।

এই হামলাটি প্রতিহতের পর, ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেন, ‘ইয়েমেনের সঙ্গেও তেহরানের মতো আচরণ করা হবে’, যা স্পষ্টতই ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধের প্রতি ইঙ্গিত করে। ওই যুদ্ধের সময়ে ইসরাইল ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনার পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়।

কাটজের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে,‘তেহরানে সাপের মাথায় আঘাত করার পর, আমরা ইয়েমেনের হুথিদের ওপরও হামলা করব। যে কেউ ইসরাইলের বিরুদ্ধে হাত তুলবে তার হাত কেটে ফেলা হবে।’

হামাসের ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলে হামলার ফলে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথিরা তাদের ফিলিস্তিনি মিত্রকে সহায়তার জন্য ইসরাইলের বিরুদ্ধে বারবার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

সারির টেলিগ্রাম এক পোস্টে ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনের ইয়াফা, আশকেলন এবং উম্ম আল-রাশ অঞ্চলে ইসরাইলি শত্রুর সংবেদনশীল লক্ষ্যবস্তুতে’ ড্রোন হামলার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

শনিবার হুথিরা জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের দিকে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা ২৪ জুন ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধের অবসান ঘটানোর পর হুথি কর্তৃক ঘোষিত ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ।

হুথিরা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে কাজ করছে বলে দাবি করে।

তারা মার্চ মাসে শেষ হওয়া গাজায় দুই মাসের যুদ্ধ বিরতির সময় তাদের হামলা স্থগিত করেছিল। কিন্তু ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করার পর, হামলা শুরু করে।

ইয়েমেনে হুথি-অধিষ্ঠিত বন্দর ও বিদ্রোহী-অধিষ্ঠিত রাজধানী সানার বিমানবন্দর লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।


ভারতের মণিপুরে গুলিতে কুকি জনগোষ্ঠীর ৪ জন নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় মণিপুর রাজ্যের কুকি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর জেলায় চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে তিনজনের মৃতদেহ একটি গাড়িতে পাওয়া গেছে। আর এক নারীর দেহ পাওয়া যায় গাড়ি থেকে কিছুটা দূরে। পুলিশের ধারণা, কুকি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে এই খুনোখুনির ঘটনা ঘটেছে।

মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, তিনটি মৃতদেহে গুলির চিহ্ন রয়েছে। এছাড়া একজন নারীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে।

মণিপুর পুলিশ আরও জানিয়েছে, পুরো ঘটনার তদন্ত শুরুর পাশাপাশি আততায়ীদের খুঁজে বের করতে দক্ষিণ মণিপুরের ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে।

মণিপুরে প্রায় দুই বছর ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায় এবং কুকি-জো আদিবাসীদের মধ্যে সংঘাত চলছে। পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, এবারের ঘটনা তার ব্যতিক্রম।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতিতে মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, চূড়াচাঁদপুর হাসপাতালে এখন পর্যন্ত যাদের মৃতদেহ আনা হয়েছে তারা হলেন জেলার মাতেজাং অঞ্চলের থেনখোথাং হাওকিপ ওরফে থাহপি (৪৮), তেসেং গ্রামের সেইখোগিন (৩৫) এবং চেংকোন অঞ্চলের লেঙ্গোহাও (৩৫)। এছাড়া কোয়েট গ্রামের ফলহিং নামে ৭২ বছরের এক নারীর দেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।

কুকি ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) নামে একটি বিদ্রোহী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর উপপ্রধান ছিলেন থেনখোথাং হাওকিপ। বাকি দুজন সেইখোগিন ও লেঙ্গোহাও কেএনএর সাধারণ সদস্য ছিলেন। মণিপুরের ১৭টি উপজাতীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী নিয়ে গঠিত বিদ্রোহী কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের অন্যতম সদস্য কেএনএ। ২০০৭-০৮ সালে কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি করে সংঘর্ষে বিরতি ঘোষণা করে।

কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের বিরোধী হচ্ছে ইউনাইটেড কুকি ন্যাশনাল আর্মি (ইউ-কেএনএ)। ইউ-কেএনএ সরকারের সঙ্গে সংঘর্ষ বিরতিতে যায়নি। তাদের বক্তব্য, কুকি ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের বিভিন্ন সংগঠন (যেমন কেএনএ) সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের নানাভাবে হেনস্তা করছে, অনেক সময় তাদের সদস্যদের হত্যাও করছে। যারা তাদের হেনস্তা এবং হত্যা করতেন, তাদের অন্যতম ছিলেন থেনখোথাং হাওকিপ। তিনি ও তার দলের লোকজন ইউ-কেএনএর ৩০ জনের বেশি সদস্যকে গত কয়েক বছরে হত্যা করেছেন। এদের মধ্যে ইউ-কেএনএর শীর্ষ নেতারাও রয়েছেন।

ইউ-কেএনএ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ কারণে হাওকিপসহ কেএনএর তিন সদস্যকে সোমবার হত্যা করা হয়েছে।


কলরেকর্ড ফাঁসের জেরে থাই প্রধানমন্ত্রী বরখাস্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফোনের কথাবার্তা ফাঁসের ঘটনায় থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দিয়েছেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধকে ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে ফোনের কথাবার্তা ফাঁসের পর থেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তাঁর পদত্যাগের জোর দাবি উঠেছে। তুমুল বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানী ব্যাংককে।

গত মে মাসে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার বিতর্কিত এক সীমান্ত অঞ্চলে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের সঙ্গে কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের ফোনের আলোচনা ফাঁস হলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে।

ফোনে ওই আলোচনায় পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের এক সেনা কর্মকর্তার সমালোচনা করেন এবং হুন সেনকে ‘আংকেল’ বলে ডেকে তার প্রতি অতিমাত্রায় নমনীয় আচরণ করেন বলে জনগণের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়। এরপরই পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নামেন মানুষ। সাংবিধানিক আদালতে পিটিশন দায়ের করা হয়।

সাংবিধানিক আদালতে মঙ্গলবার ভোটাভুটি হয়। আদালত ৭-২ ভোটে প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেন। প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত দেশের ভারপ্রাপ্ত নেতার দায়িত্ব পালন করবেন।

থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীর প্রকাশ্যে সমালোচনার সুযোগ নেই বললে চলে। কারণ, দেশটির সেনাবাহিনী রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক প্রভাব বজায় রেখে আসছে। ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

সাংবিধানিক আদালতে প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন পদচ্যুত হলে ২০২৪ সালের আগস্টে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করে থাইল্যান্ডের পার্লামেন্ট। থাইল্যান্ডে তিনিই হচ্ছেন সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। তখন তার বয়স ছিল ৩৭ বছর। পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ফিউ থাই পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ধনকুবের থাকসিন সিনাওয়াত্রার ছোট মেয়ে।

পেতংতার্ন ব্যাংককের চুলালংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। উং ইং ডাকনামেও পরিচিত পেতংতার্ন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ২০২১ সালে। তখন ফিউ থাই পার্টির ইনক্লুশন অ্যান্ড ইনোভেশন অ্যাডভাইজরি কমিটির প্রধান হন তিনি।

২০২৩ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে দ্বিতীয় সন্তানের মা হন পেতংতার্ন। নির্বাচনে তিনি ছিলেন একজন জনপ্রিয় প্রার্থী। পেতংতার্ন থাকসিন পরিবার থেকে সরকারের শীর্ষ পদে আসা তৃতীয় ব্যক্তি। বাবা থাকসিনের পাশাপাশি পেতংতার্নের ফুপু ইংলাক সিনাওয়াত্রাও দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।


১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতনের মুখে ডলার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বিশ্ববাজারে ডলারের যে পতন হয়েছে, তা ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় ধস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মান কমেছে ১০ শতাংশের বেশি।

যুক্তরাষ্ট্র মুদ্রা ছাপানোর ক্ষেত্রে স্বর্ণমান থেকে বেরিয়ে আসার পর ১৯৭৩ সালে ডলারের বড় ধরনের দরপতন হয়েছিল। স্মরণে রাখা দরকার, ওই সিদ্ধান্ত ছিল যুগান্তকারী ঘটনা। এরপর বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় ডলারের ব্যবহার ও মান বেড়ে যায়।

এবারের পটভূমি ভিন্ন। এখন ডলারের এই পতনের পেছনে আছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশ্বব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা, বিশেষ করে আগ্রাসী শুল্কনীতি ও আত্মকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি। ট্রাম্পের শুল্কনীতি, মূল্যস্ফীতির আশঙ্কা ও সরকারি ঋণের বাড়বাড়ন্ত—সব মিলিয়ে ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় বিনিয়োগকারীদের ক্রমেই আস্থা কমে আসা।

ডলারের দাম কমে যাওয়ায় মার্কিন নাগরিকদের বিদেশে ভ্রমণের খরচ বেড়েছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাচ্ছে। এমন এক সময়ে বিষয়টি ঘটছে, যখন দেশটি আরও বেশি ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করছে।

অন্যদিকে ডলার দুর্বল হওয়ায় মার্কিন রপ্তানিকারকদের সুবিধা হয়েছে, যদিও আমদানির খরচ বাড়ছে। কথা হচ্ছে, মুদ্রা দুর্বল হলে স্বাভাবিকভাবে এসব ঘটে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির কারণে বাণিজ্যসংক্রান্ত এই ‘স্বাভাবিক’ বিষয়গুলোও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

তবে যতই দিন যাচ্ছে, ততই ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকি ক্ষীণ হচ্ছে। অর্থাৎ নীতিগতভাবে ট্রাম্প সেই অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছেন। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন শেয়ারবাজার চাঙা, বন্ডের বাজারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু ডলারের মান কমেই চলেছে।

এই পরিস্থিতিতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের বিদেশি মুদ্রা গবেষণা বিভাগের স্টিভ ইংল্যান্ডার বলেন, ‘ডলার দুর্বল, না শক্তিশালী, এটা মূল প্রশ্ন নয়। মূল প্রশ্ন হলো, বিশ্বসমাজ তোমার অবস্থান কীভাবে দেখছে?’

ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পরপর ডলার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। বিনিয়োগকারীদের ধারণা ছিল, ট্রাম্প ব্যবসাবান্ধব ও প্রবৃদ্ধিমুখী। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করা হলে বিপুল সুবিধা দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছিলেন। ফলে ধারণা করা হয়েছিল, ট্রাম্প বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারবেন এবং পরিণতিতে ডলারের চাহিদা বাড়বে।

কিন্তু সেই আশা স্থায়ী হয়নি। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় অর্থাৎ ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের সময় ডলার সূচক সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছার পরই পড়তে শুরু করে। নতুন প্রশাসন ব্যবসাবান্ধব হবে, সেই আশা দূর হয়ে শুরু হয় উচ্চ মূল্যস্ফীতির আতঙ্ক, উচ্চ সুদহারের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব আর অর্থনীতি ও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাবের শঙ্কা।

এরপর আসে ট্রাম্পের ঘোষিত সেই ‘স্বাধীনতা দিবস’ অর্থাৎ ২ এপ্রিল, যেদিন তিনি পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। সেদিন তিনি একেবারেই অপ্রত্যাশিত উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন; যে বিষয়টি অর্থনীতিবিদ, বিনিয়োগকারী কিংবা বিশ্লেষক—কেউই অনুমান করতে পারেননি। ফলে শেয়ারবাজার থেকে শুরু করে বন্ডের বাজার ও ডলার—সব ক্ষেত্রেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

বিনিয়োগকারীরা শঙ্কিত, এ ধরনের শুল্ক–সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির কারণে সুদের হার দীর্ঘ মেয়াদে আরও বেড়ে যেতে পারে। মার্কিন অর্থনীতিতে এমনিতেই দুর্বলতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে অর্থনীতি আরও বিপদের মুখে পড়বে।

এই পতনের শুরুটা ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতির মধ্যে নিহিত। ট্রাম্প প্রশাসন যখন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থান নেয়, তখন শুধু মূল্যস্ফীতি নয়, পুরো বৈশ্বিক অর্থনীতি নিয়ে শঙ্কা আরও গভীর হয়। একসময় বিষয়টি ছিল মূল্যস্ফীতি ও শ্রমবাজার নিয়ে দুশ্চিন্তা। পরবর্তী সময়ে পুরো মার্কিন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীরা এখন ধীরে ধীরে ডলার ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সম্পদের বিকল্প খুঁজছেন। যদিও অনেক দিন ধরে বৈশ্বিক বিনিয়োগের নিরাপদ গন্তব্য ছিল যুক্তরাষ্ট্র।

বছরের শুরুতে অবশ্য ডলারের মান ভালোই ছিল। সে কারণে চলতি বছরের শুরুটা যতটা খারাপ হোক, ঐতিহাসিক দিক থেকে ডলার এখনো অতটা দুর্বল নয়। স্টিভ ইংল্যান্ডার আরও বলেন, এত দিন জনমনে ধারণা ছিল, মার্কিন অর্থনীতি ‘ব্যতিক্রমধর্মী’, কিন্তু এখন সেই ব্যতিক্রমধর্মিতা হারিয়ে যাচ্ছে। ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ট্রাম্প যে আচরণ করছেন, তাতে পরিস্থিতির অবনতিই ঘটছে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা।

বিষয়টি হলো, শুল্ক বাড়লে আমদানি কমে আর আমদানি কমলে বিদেশি ব্যবসায়ীদের ডলারভিত্তিক লেনদেন কমে যায়। ফলে সেই ডলার আবার যে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসবে, সেই সম্ভাবনা কম, বিশেষ করে সরকারি বন্ডের বাজারে। একদিকে মুদ্রা বিনিময়ের ঝামেলা, অন্যদিকে মার্কিন অর্থনীতির ওপর আস্থার ঘাটতি—দুটিই একসঙ্গে কাজ করছে।

এই বছরের মতো ডলারের পতনের নজির কমই আছে। ১৯৭৩ সালের পর প্রথমবার এমন পতনের মুখে পড়ে ডলার। সে বছর বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলো ডলারের সঙ্গে মুদ্রা বিনিময়ের হার বেঁধে রাখার পদ্ধতি থেকে সরে এসেছিল। সেটা ঘটেছিল প্রেসিডেন্ট নিক্সনের স্বর্ণমানের সঙ্গে ডলারের সম্পর্ক ছিন্ন করার দুই বছর পর।

এদিকে ডলারের এই দুর্বলতার কারণে শেয়ারবাজারে চাঙা ভাবের পুরো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। বিনিয়োগকারীদের মুনাফায় প্রভাব পড়ছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক যখন ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে, তখন ইউরোয় হিসাব করলে সেই মুনাফা দাঁড়াচ্ছে মাত্র ১৫ শতাংশ—সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে ১০ শতাংশ নিচে।

এই পরিস্থিতিতে অনেক মার্কিন বিনিয়োগকারী এখন দেশের বাইরের দিকে ঝুঁকছেন। ইউরোপের শেয়ারবাজার সূচক ইউরোস্টক্স ৬০০ একই সময়ে ১৫ শতাংশ বাড়লেও ডলারে রূপান্তর করলে তা ২৩ শতাংশে উঠেছে। বড় বড় পেনশন তহবিল থেকে শুরু করে ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে আরও ভালো বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছে।

শুল্কের কারণে মার্কিন সম্পদের প্রতি আগ্রহ কমার এই সময় মার্কিন সরকার ব্যয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। অথচ ট্রাম্পের খরচ কমানোর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল।

সিনেটের কিছু বিরোধিতা সত্ত্বেও বিলটি আবার কংগ্রেসে উঠেছে। অনুমান করা হচ্ছে, এই বিল পাস হলে আগামী এক দশকে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারের ঘাটতি তৈরি হবে।

এই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে সরকারকে ট্রেজারি থেকে আরও বেশি ঋণ নিতে হবে। কিন্তু এখানেই মূল সংকট—যাদের কাছ থেকে এই ঋণ নেওয়া হবে, তারাই এখন মার্কিন বাজার থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। ফলে প্রশ্ন উঠছে, ট্রেজারি ও ডলার আদৌ আর ‘নিরাপদ আশ্রয়’ হিসেবে কাজ করছে কি না।

অস্থিরতার সময় বিনিয়োগকারীরা সাধারণত স্থিতিশীল সম্পদে বিনিয়োগ করেন। কিন্তু বর্তমানে ডলার নিয়ে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তাতে এই মুদ্রা আরও দুর্বল হচ্ছে।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর শত শত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর মধ্যে ছিল ডলারে রাশিয়ার লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া এবং রাশিয়ার সম্পদ জব্দ করা। তার প্রতিক্রিয়ায় অনেক দেশই ভাবতে শুরু করে, তাদেরও এ রকম পরিস্থিতির শিকার হওয়ার অবকাশ আছে। ডলারকে এভাবে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার কেউই ভালো চোখে দেখেনি। ফলে অনেক দেশই ডলার ভিন্ন অন্য মুদ্রায় লেনদেন বৃদ্ধি করে, যাকে বলা হয় ডিডলারাইজেশন।

যদিও বিশ্লেষকেরা বলেন, সম্পূর্ণ ডিডলারাইজেশন এখনো বহুদূরের বিষয়। যে বিষয়টি প্রকৃত অর্থেই মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে, তা হলো ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ।

সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস


জাপানের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের

ডোনাল্ড ট্রাম্প
আপডেটেড ১ জুলাই, ২০২৫ ২২:০৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাপান যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদিত চাল কিনতে ‘অনিচ্ছুক’- এমন অভিযোগ তুলে জাপানের রপ্তানি করা পণ্যের ওপর উচ্চহারে শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি লেখেন, তারা আমাদের চাল নেয় না, অথচ নিজেরাই চালের সংকটে ভুগছে। তিনি আরও লেখেন, এবার তাদের (জাপান) চিঠি পাঠানো হবে, যদিও আমরা বহু বছর ধরে দেশটিকে বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে পছন্দ করে আসছি।

তবে ট্রাম্পের অভিযোগের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মার্কিন সেন্সাস ব্যুরোর বাণিজ্য পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর ২৯৮ মিলিয়ন ডলারের চাল আমদানি করেছে জাপান। শুধু ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যেই তারা ১১৪ মিলিয়ন ডলারের চাল কিনেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

এমন প্রেক্ষাপটে জাপান আসলে ভবিষ্যতে চাল আমদানি বন্ধ করবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। তবে টোকিও জানিয়েছে, বিষয়টি তারা গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে। জাপানের প্রধান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি মঙ্গলবার (০১ জুলাই) বলেন, আমরা মার্কিন পক্ষের মন্তব্য সম্পর্কে অবগত আছি। কিন্তু চলমান আলোচনার বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করা থেকে আমরা বিরত থাকব।

তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি পারস্পরিক সুবিধাজনক চুক্তি অর্জনের লক্ষ্যেই জাপান আন্তরিক ও সৎ আলোচনার পথে এগোবে।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের দাবি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের ২০২১ সালের এক প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানে চাল আমদানির প্রক্রিয়া অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত ও অস্বচ্ছ, যার ফলে মার্কিন চাল রপ্তানিকারকদের সেখানে কার্যকর বাজার প্রবেশাধিকার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমানে চাল, গাড়ি ও অন্যান্য পণ্যের ওপর ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপের একটি পরিকল্পনা সামনে এনেছে। এপ্রিল মাসে ঘোষিত এই পরিকল্পনার ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৯ জুলাই।

এই সময়সীমার পর কী হবে তা স্পষ্ট নয়, তবে ট্রাম্প এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, নতুন করে আবারও শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, প্রিয় জাপান, এবার গল্পটা হলো- তোমরা তোমাদের গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক দেবে।

এর আগে জাপানি রপ্তানির ওপর সর্বনিম্ন ২৪ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছিল, তবে শুল্ক বিরতির আওতায় তা ১০ শতাংশে নেমে আসে। হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিল পরিচালক কেভিন হ্যাসেট সোমবার বলেন, সবকিছু এখনা শেষ হয়ে যায়নি। আলোচনার দরজা খোলা আছে। আমরা একটা কাঠামো পেলেও, সেখানে চূড়ান্ত করার মতো বিষয় থাকবে।


ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পরবর্তী যুদ্ধ হবে ‘চূড়ান্ত’

ইরানের তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জুলাই, ২০২৫ ২১:৪৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পরবর্তী সামরিক সংঘর্ষ হবে চূড়ান্ত। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম আরটিকে এমন তথ্য জানিয়েছে ইরানের একটি সূত্র। সূত্রটি জানিয়েছে, ইরান এখন ইসরায়েলের দুর্বলতা সম্পর্কে সচেতন এবং দেশটির কাছে এখনো বহু উন্নত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যা ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করতে সক্ষম।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ইসরায়েল ইরানের ওপর হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করে, তেহরান পারমাণবিক বোমা তৈরির শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোর পাশাপাশি শত শত মানুষ এবং বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানী নিহত হন, যারা পারমাণবিক কর্মসূচির সঙ্গে জড়িত বলে ধারণা করা হয়।

২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়, যার মধ্যে ছিল নাতানজ ও ফরদোর ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র। তেহরান বরাবরই সামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি পরিচালনার অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। দেশটি পাল্টা জবাব দেয় কামিকাজে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে। ইরান সরাসরি ইসরায়েল এবং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানে।

১২ দিনব্যাপী এ সংঘাত শেষ হয় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া এক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে, যা এখন পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে।

সোমবার (৩০ জুন) আরটিকে দেওয়া এক মন্তব্যে তেহরানের এক সূত্র জানিয়েছে, ইরান ইসরায়েলের সঙ্গে পরবর্তী যুদ্ধকে চূড়ান্ত যুদ্ধ হিসেবে দেখছে। তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক উত্তেজনার সময় ইরান ইসরায়েলি শাসনের দুর্বলতা শনাক্ত করতে পেরেছে।

সূত্রটি দাবি করে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের কাছে এখনো নতুন প্রজন্মের হাজার হাজার ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, এবং যুদ্ধ শুরু হলে প্রতিদিন অন্তত কয়েক শত ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের দিকে ছোড়া হবে।

সূত্রটি জানায়, দেশের জনগণ এবং প্রবাসী ইরানিদের কাছ থেকে সরকার অভূতপূর্ব সামাজিক সমর্থন পাচ্ছে। যদিও ইরান জানে যেকোনো সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে দাঁড়াবে, তবুও তেহরান এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।

ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালানোর বিষয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, তেহরানের সামরিক জবাবে ইসরায়েলি রাষ্ট্র কার্যত ধ্বংসপ্রাপ্ত ও নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ না হলে জায়নিস্ট শাসন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেত।

এদিকে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তেহরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যায় বলে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, তাহলে আরও হামলা চালানো হবে। অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও ইরানের বিরুদ্ধে আরও হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি।

ইসরায়েলের ছোড়া প্রজেক্টাইল ধ্বংস করল ইরান

ইসরায়েলের ছোড়া প্রজেক্টাইল ধ্বংস করেছে ইরান। দেশটির সেনাবাহিনী আকাশ প্রতিরক্ষার মাধ্যমে এসবের মোকাবিলা করেছে। এসব অভিযানের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (০১ জুলাই) মেহের নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানি সেনাবাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট সফলভাবে ইসরায়েলের ছোড়া ড্রোন ধ্বংস করেছে। আকাশ প্রতিরক্ষার মাধ্যমে তাদের ছোড়া ক্ষুদ্র আকারের মাইক্রো এয়ার ভেহিকলসের (এমএভি) মোকাবিলা করা হয়েছে। ইরান-ইসরায়েলের মধ্যকার ১২ দিনের যুদ্ধে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

মেহের নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েল প্রথমে কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই ইরানে আক্রমণ চালায়। দেশটির এ হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং অসংখ্য সাধারণ নাগরিক নিহত হন। ইসরায়েলের এ হামলা আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির (এনপিটি) সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে জানিয়েছে ইরান।

ইসরায়েলের সঙ্গে এ হামলায় যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বোমা বর্ষণ করে। এই হামলার মাধ্যমে তারা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। জবাবে ইরান প্রতিরোধমূলক পাল্টা হামলা চালায়। এতে ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলের বিভিন্ন কৌশলগত স্থাপনা ও কাতারের আল-উদেইদ মার্কিন ঘাঁটিকে নিশানা করে। কাতারে এ ঘাঁটিটি পশ্চিম এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি।

এ ঘটনার পর সোমবার (৩০ জুন) নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ শেয়ার করা এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান ও ইসরায়েল একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে চূড়ান্তভাবে সম্মতি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই যুদ্ধবিরতি ১২ ঘণ্টা ধরে চলবে, এরপরই যুদ্ধকে সমাপ্ত হিসেবে ঘোষণা করা হবে।’

ট্রাম্প আরও জানান, প্রথমে ইরান যুদ্ধবিরতি শুরু করবে, এরপর ১২ ঘণ্টা পর ইসরায়েলও আনুষ্ঠানিকভাবে এতে যোগ দেবে। মোট ২৪ ঘণ্টা পর এই ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বিশ্বব্যাপী সমাপ্ত হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।

তিনি লেখেন, যুদ্ধবিরতির সময় দুপক্ষই শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখবে। আমরা ধরে নিচ্ছি, সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলবে, যা অবশ্যই হবে। এ জন্য আমি ইসরায়েল ও ইরান উভয় দেশকে সাহস, ধৈর্য ও বুদ্ধিমত্তার জন্য অভিনন্দন জানাই।

এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হয়ে মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারত- এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ বছর বছর ধরে চলতে পারত, কিন্তু তা হয়নি এবং কখনোই হবে না।’ পোস্টের শেষাংশে ট্রাম্প বলেন, ‘গড ব্লেস ইসরায়েল, গড ব্লেস ইরান, গড ব্লেস দ্য মিডল ইস্ট, গড ব্লেস দ্য ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা এবং গড ব্লেস দ্য ওয়ার্ল্ড।’


৭ জুলাই হোয়াইট হাউসে যাবেন নেতানিয়াহু: মার্কিন কর্মকর্তা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ৭ জুলাই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার জন্য হোয়াইট হাউসে যাবেন বলে সোমবার মার্কিন প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন।

গাজায় একটি যুদ্ধ বিরতির জন্য ওয়াশিংটনের চাপের মুখে রয়েছে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট এর আগে বলেছিলেন যে, জানুয়ারিতে রিপাবলিকান দল ক্ষমতায় ফিরে আসার পর নেতানিয়াহু ট্রাম্পের সঙ্গে তার তৃতীয় বৈঠকে ‘আগ্রহ প্রকাশ করেছেন’ এবং উভয় পক্ষ এ বৈঠকের জন্য একটি একটি তারিখ নির্ধারণে কাজ করছে।


banner close