বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন: ট্রাম্পের চেয়ে আরও এগিয়েছেন কমলা

ফাইল ছবি
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১৩:১৫

যুক্তরাষ্ট্রে আর দুই সপ্তাহ পরই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শেষ মুহূর্তে এসে দেখা যাচ্ছে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে আরও এগিয়েছেন।

রয়টার্স ও ইপসোসের করা এক জরিপে এমন ইঙ্গিতই পাওয়া যাচ্ছে। সর্বশেষ ওই জরিপে উঠে এসেছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা তিন পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।

গত সোমবার শেষ হওয়া রয়টার্স/ইপসোস জরিপ অনুযায়ী, জরিপে অংশগ্রহণকারী নিবন্ধিত ভোটারদের ৪৬ শতাংশ বলেছেন, তারা কমলা হ্যারিসকে ভোট দেবেন। এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন ৪৩ শতাংশ ভোটার। এর আগে গত সপ্তাহে করা রয়টার্স/ইপসোস জরিপে কমলা হ্যারিসকে ৪৫ শতাংশ ভোটার এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ৪২ শতাংশ ভোটার সমর্থন দিয়েছিলেন।

রয়টার্স ও ইপসোসের সর্বশেষ দুই জরিপেই দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির বর্তমান পরিস্থিতি ও অভিবাসন নিয়ে ভোটাররা অখুশি। এসব বিষয়ে ট্রাম্পের অবস্থানের পক্ষে ভোটাররা।

জরিপে দেখা গেছে, নিবন্ধিত ৭০ শতাংশ ভোটার জীবনযাপনের ব্যয় ভুল পথে যাচ্ছে বলে মনে করেন। অর্থনীতি ভুল পথে যাচ্ছে মনে করেন ৬০ শতাংশ ভোটার। অভিবাসন নীতি নিয়ে এই অবস্থান ৬৫ শতাংশের।

ভোটাররা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এখন প্রধান তিনটি সমস্যা- অর্থনীতি, অভিবাসন ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি। এসব বিষয়ে কোন প্রার্থীর অবস্থান ভালো, এমন প্রশ্নে ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন বেশি পড়েছে। জরিপে উঠে এসেছে, অর্থনীতি নিয়ে ট্রাম্পের পক্ষে ৪৬ শতাংশ ও কমলার পক্ষে ৩৮ শতাংশের সমর্থন রয়েছে। এদিকে অভিবাসনের ক্ষেত্রে ট্রাম্প ও কমলার পক্ষে সমর্থনের এ হার ৪৮ ও ৩৫ শতাংশ।

তবে রাজনৈতিক চরমপন্থা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের চেয়ে হ্যারিসের ওপর ভরসা বেশি রাখছেন মার্কিন ভোটাররা। জরিপে দেখা গেছে, রাজনৈতিক চরমপন্থা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকি মোকাবিলায় কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন রয়েছে ৪২ শতাংশ ভোটারের। অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন আছে ৩৫ শতাংশের। গর্ভপাত ও স্বাস্থ্যসেবা নীতিতে ট্রাম্পের চেয়ে এগিয়ে কমলা।

পরবর্তী প্রেসিডেন্টের মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনে কোন বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের এমন প্রশ্ন করে দেখা গেছে অভিবাসনের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছে। ভোটারদের ৩৫ শতাংশ মনে করেন, নতুন প্রেসিডেন্টকে সবার আগে অভিবাসনে নজর দেওয়া উচিত। আর ১১ শতাংশ ভোটার আয়বৈষম্য এবং ১০ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা ও করের কথা বলেন।

‘ট্রাম্প জিতলে রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের পতন বাধ্য’

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রচারে ব্যস্ত। এর মধ্যেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে নতুন মামলা। কমলা হ্যারিস প্রচার করেছেন পেনসিলভানিয়া, উইসকন এবং মিশিগানে। তার সঙ্গে ছিলেন লিজ চেনি। লিজ হলেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে। বাবা, মেয়ে দুজনেই রিপাবলিকান নেতা, কিন্তু তারা প্রকাশ্যে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন করেছেন।

রিপাবলিকানদের দিকে ঝুঁকে থাকা ভোট যাতে তার দিকে আসে, লিজকে নিয়ে সেই চেষ্টা করলেন হ্যারিস। ২০১৬ সালে তিনটি অঙ্গরাজ্যেই ট্রাম্প সেই সময়ের ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের থেকে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু ২০২০ সালে বাইডেন এই তিনটি রাজ্যে জিতেছিলেন। সেজন্যই হ্যারিস এই তিন সুইং স্টেটকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছেন। এই তিন রাজ্যে এগিয়ে থাকতে পারলে প্রেসিডেন্ট হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে যাবেন হ্যারিস।

যুক্তরাষ্ট্রে কিছু অঙ্গরাজ্য আছে, যেখানে ডেমোক্র্যাটরা সাধারণত জেতে, কিছু রাজ্যে রিপাবলিকানরা। কিছু রাজ্য আছে, যা কখনও ডেমোক্র্যাট, কখনও রিপাবলিকান প্রার্থীরা জেতেন। সেগুলোকেই সুইং স্টেট বলা হয়। এই রাজ্যগুলোই ভোটের ফল নির্ধারণ করে। চেনির সঙ্গে তিনটি টাউন হল ইভেন্ট করেছেন হ্যারিস। পেনসিলভানিয়ায় রক্ষণশীল রেডিও হোস্ট ম্যালবার্ন মডারেটর ছিলেন। হ্যারিস সেখানে ট্রাম্পের মানসিক স্থিতি এবং প্রেসিডেন্টের পদে বসার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

হ্যারিস বলেন, অনেক ভাবেই ট্রাম্প সিরিয়াস মানুষ নন। কিন্তু তিনি যদি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন, তাহলে তা গুরুতর হতে বাধ্য। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প যদি নভেম্বরের নির্বাচনে জেতেন, তাহলে রাশিয়ার কাছে ইউক্রেনের পতন হতে বাধ্য। পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গে চেনিও বহুবার ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন।

চেনি মিশিগানের ইভেন্টে বলেছেন, তিনি অনেক রিপাবলিকানের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারাও ট্রাম্পকে নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, কী কথা হয়েছে, তা তিনি প্রকাশ্যে জানাতে পারবেন না। তবে তারা যে ঠিক কাজটা করবেন, তা নিয়ে চেনির মনে কোনো সংশয় নেই।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা

ট্রাম্প গত মাসে বিতর্কের সময় সেন্ট্রাল পার্কে ১৯৮৯ সালের একটি হত্যা নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন। এই অভিযুক্তদের বলা হয় সেন্ট্রাল পার্ক ফাইভ। প্রথমে তাদের পাঁচ থেকে ১৩ বছরের জেল হয়। তবে আরেকজনের সাক্ষ্য ও ডিএনএ তথ্যের ভিত্তিতে তারা ছাড়া পায়। ট্রাম্প প্রচারে বলেছিলেন, তারা একজনকে খুন করেছিল এবং দোষ স্বীকারও করেছিল। তদন্তের প্রথম দিকে পাঁচ কিশোর অপরাধ স্বীকার করে। তারপরই তারা জানায়, তারা চাপের মুখে এই কথা বলেছিল এবং বিচারের সময় তারা বলে, তারা নির্দোষ। এই বিষয়টি নিয়েই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করা হয়েছে।


জিম্মি মুক্তির নির্দেশ ট্রাম্পের

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন শপথ নেয়ার আগেই গাজায় হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি চান তিনি। তিনি হামাসকে তার শপথ গ্রহণের আগের দিন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। উক্ত সময়ের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি না দিলে হামাসকে ভয়াবহ পরিণতির ভোগ করতে হবে বলে তিনি হুশিয়ারি দিয়েছেন।

স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের শপথ নেয়ার আগেই যদি গাজায় জিম্মিদের মুক্তি দেয়া না হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে এবং মানবতার বিরুদ্ধে এমন নৃশংসতার জন্য দায়ীদের কঠিন পরিণতি হবে।

`জেরুজালেম পোস্ট’র এক প্রতিবেদনে আজ মঙ্গলবার একথা বলা হয়েছে।’

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূ-খন্ডে হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধরা ১২০৮ জনকে হত্যা করে। এছাড়া দুই শতাধিক ইসরালিকে জিম্মি করে হামাস। তাদের মধ্যে কিছু মুক্তি পেলেও এখনো হামাসের হাতে বন্দী আছে ১ শ’র ও বেশি জিম্মি।

হামাসের হামলার পর থেকেই গাজা উপত্যকায় নৃশংস হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। তাদের নির্বিচারে হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত নারী-শিশুসহ প্রায় সাড়ে ৪৪ হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছে।

এদিকে মার্কিন সিনেটর এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান পার্টির রানীতিবিদ লিন্ডসে গ্রাহাম এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, গাজায় জিম্মিদের মুক্তি এবং সেখানে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্প আগের চেয়ে অনেক বেশি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এমনকি তিনি চাইছেন, প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেই যেন এই ব্যাপারে সুরাহা হয়।


পুরুষের মস্তিষ্কের ক্ষয় শুরু মধ্য পঞ্চাশে, নারীর মধ্য ষাটে: গবেষণা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১১:৫৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকা নারীদের তুলনায় পুরুষদের দ্রুত মস্তিষ্কের ক্ষয় হয় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণায় বলা হয়, পুরুষের মস্তিষ্কের ক্ষয় শুরু মধ্য পঞ্চাশে, নারীর মধ্য ষাটে। গবেষণাটি ‘জার্নাল অব নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি ও সাইকিয়াট্রি’তে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষক দলের প্রধান পল এডিসন বলেন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো আলঝেইমার রোগ প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা এবং এটি নারীদের তুলনায় পুরুষদের ১০ বছর আগে থেকে গুরুত্বসহকারে মোকাবিলা করা উচিত।

গবেষকেরা বলেছেন, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং ধূমপানের মতো কারণ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এগুলো তেমনি মস্তিষ্কের রোগ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ানোর সঙ্গেও সম্পর্কিত। অর্থাৎ এই সমস্যাগুলোর কারণে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তবে এই হৃদরোগ এবং ঝুঁকিগুলো মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর কখন প্রভাব ফেলতে শুরু করে এবং পুরুষ ও নারীর মধ্যে এর পার্থক্য আছে কি না, তা স্পষ্টভাবে গবেষণায় জানা যায়নি।

যুক্তরাজ্যের বিআইও ব্যাংকের প্রায় ৩৪ হাজার ৫০০ অংশগ্রহণকারীর তথ্য পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। ইমেজিং স্ক্যানের মাধ্যমে তারা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে পরিবর্তনগুলো পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

গবেষকরা রেকর্ডকৃত স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবহার করে হৃদরোগের ঝুঁকি হিসাব করেছেন। হৃদরোগের ঝুঁকি সৃষ্টিকারী উপাদানগুলো, যেমন- স্থূলতা এবং পেটের চর্বির উচ্চমাত্রা, কয়েক দশক ধরে পুরুষ ও নারীদের উভয়ের মস্তিষ্কের পরিমাণ ধীরে ধীরে হ্রাস করে।

তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এই ক্ষতিকর প্রভাবগুলো ৫৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়। আর নারীদের ক্ষেত্রে তা ৬৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সের মধ্যে দৃশ্যমান হতে শুরু করে।

এ ছাড়া গবেষকেরা বলেছেন, পুরুষদের জন্য এই প্রভাবগুলো নারীদের তুলনায় বেশি ঝুঁকি তৈরি করছে।

গবেষকেরা বলেন, যেসব কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে, যেমন- স্থূলতা, সেগুলোর প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। কারণ, এগুলো স্নায়ুজনিত রোগ, বিশেষ করে আলঝেইমার রোগের চিকিৎসা বা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

তারা আরও বলেছেন, ‘এটি নির্দেশ করে যে স্নায়ুজনিত ক্ষতি এবং আলঝেইমার রোগ প্রতিরোধের জন্য ৫৫ বছর বয়সের আগে হৃদরোগের ঝুঁকি উপাদানগুলোর প্রতি দৃঢ়ভাবে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া এগুলো হৃদরোগের অন্যান্য ঘটনা যেমন হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক প্রতিরোধেও উপকারী হতে পারে।’


এবার বাংলাদেশিদের চিকিৎসা না দেওয়ার ঘোষণা ত্রিপুরার এক হাসপাতালের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কলকাতার পর এবার বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার একটি হাসপাতাল। গতকাল শনিবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। আগরতলায় অবস্থিত আইএলএস হাসপাতালটি একটি মাল্টি-সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার দাবিতে স্থানীয়রা ওই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে আইএলএস হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না করার ঘোষণা দেয়। এরই মধ্যে হাসপাতালটিতে বাংলাদেশিদের জন্য হেল্প ডেস্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আইএলএস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের চিকিৎসা করানো বন্ধ করা নিয়ে স্থানীয়রা যে দাবি তুলেছেন তার সঙ্গে আমরা একমত। আখাউড়া চেকপোস্টে ও আইএলএস হাসপাতালে তাদের জন্য যে হেল্প ডেস্ক ছিল সেটিও এবার বন্ধ করা হলো। এদিকে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা না করার বিষয়ে হাসপাতালগুলোর সিদ্ধান্তের প্রতি একমত জানিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য শমীক ভট্টাচার্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হবে না বলে হাসপাতালগুলো যে বার্তা দিয়েছে তাতে আমি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। তার দাবি, গোটা ভারতের উচিত বাংলাদেশকে সমস্ত রকম পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করে দেওয়া। প্রসঙ্গত, সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন এবং ভারতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের জেএন রায় হাসপাতাল। এবার একই পথে হাঁটলো ত্রিপুরার এই হাসপাতাল।


বাংলাদেশিদের চিকিৎসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত কলকাতার হাসপাতালের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর কলকাতার মানিকতলা এলাকার জেএন রায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশিদের চিকিৎসা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল শুক্রবার জে এন রায় হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতিবেশী বাংলাদেশে ভারতীয় পতাকার প্রতি অপমানজনক আচরণ ও সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর কথিত নির্যাতনের প্রতিবাদে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস এ খবর জানিয়েছে।

ওই হাসপাতালের এক কর্মকর্তা শুভ্রাংশু ভক্ত জানিয়েছেন, ‘আমরা একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরা কোনো বাংলাদেশি রোগীকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করব না। বাংলাদেশিদের ভারতবিরোধী মনোভাব ও আমাদের দেশের প্রতি দেখানো অপমানের কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের প্রতিবাদ হিসেবে শহরের অন্য হাসপাতালগুলোকেও একই পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুভ্রাংশু ভক্ত আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তারপরও আমরা বাংলাদেশে ভারতবিরোধী মনোভাব প্রত্যক্ষ করছি। আমরা আশা করি অন্যান্য হাসপাতালও আমাদের সমর্থন করবে এবং একই ধরনের পদক্ষেপ নেবে।’


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হলো নতুন ঘূর্ণিঝড়, আঘাত হানবে আজ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ০০:২৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। ‘ফেঞ্জাল’ নামের এই ঝড়টি আজ শনিবার আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)। খবর এনডিটিভির।

সংস্থাটি বলেছে, ভারতের তামিলনাড়ু উপকূলের করাইকৈল এবং মামাল্লাপূরমের মধ্যবর্তী স্থানে শনিবার আঘাত হানতে পারে নতুন এটি। ওই সময় ঝড়টির বাতাসের গতিবেগ ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার এবং ঝড়ো বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। গতকাল শুক্রবার বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হয়েছে জানিয়ে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ বলেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি গত ছয় ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার গতিতে উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে ২৯ নভেম্বর শুক্রবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঝড়টি পুডুচ্চেরি থেকে ২৭০ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তরপূর্ব এবং চেন্নাই থেকে ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থান করছে। এটি পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে উত্তর তামিলনাড়ু এবং পুডুচ্চেরির উপকূলের করাইকৈল এবং মামাল্লাপুরামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অতিক্রম করতে পারে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলেদের বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে না যেতে অনুরোধ জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জায়গায় হালকা, মাঝারি থেকে ভারী ও অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এরই মধ্যে সেখানকার কয়েকটি জায়গায় বৃষ্টিপাতের কারণে জনজীবন বিঘ্নিত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে হওয়া বৃষ্টির কারণে এই পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যদি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতিরি সৃষ্টি হয় সেজন্য নৌবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।


বিশ্বে দাবানলে সৃষ্ট বায়ুদূষণে প্রতিবছর ১৫ লাখ মানুষের মৃত্যু: গবেষণা

২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বার্ষিক গড়ে ১৫ লাখ ৩০ হাজার মৃত্যুর কারণ দাবানলে সৃষ্ট ক্ষতিকারক বায়ুদূষণ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৩০ নভেম্বর, ২০২৪ ০০:২৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিবছর দাবানলে সৃষ্ট বায়ুদূষণ বিশ্বব্যাপী ১৫ লাখেরও বেশি মৃত্যুর জন্য দায়ী, যা এই জাতীয় পরিবেশগত ঘটনাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুতর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিগুলোকে তুলে ধরে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত মেলবোর্নের মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে ২০০০ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বার্ষিক গড়ে ১৫ লাখ ৩০ হাজার মৃত্যুর কারণ এই দাবানলে সৃষ্ট ক্ষতিকারক বায়ুদূষণ।

মৃত্যুর ঘটনাগুলোর ৯০ শতাংশ ঘটেছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। যার মধ্যে সাব-সাহারান আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও পূর্ব এশিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্বাস্থ্যঝুঁকি ও আঞ্চলিক বৈষম্য

বার্ষিক মৃত্যুর মধ্যে সাড়ে ৪ লাখ কার্ডিওভাসকুলার রোগে হয়েছে। ২ লাখ ২০ হাজার মৃত্যু হয়েছে শ্বাসকষ্টজনিত অসুস্থতার কারণে। দাবানলের সূক্ষ্ম বস্তুকণা হতাহতের ৭৭ দশমিক ৬ শতাংশের জন্য দায়ী। আর পৃষ্ঠের ওজোন অবশিষ্ট ২২ দশমিক ৪ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী।

গবেষণাটিতে কঠোর আঞ্চলিক বৈষম্য উঠে এসেছে। সাব-সাহারান আফ্রিকায় দাবানলের আগুন-উৎসযুক্ত বায়ুদূষণের সঙ্গে যুক্ত মৃত্যুর সর্বোচ্চ হারের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে।

অন্য লেখকরা উল্লেখ করেছেন, ‘উষ্ণ জলবায়ুর কারণে দাবানল ক্রমবর্ধমান ঘন ঘন এবং মারাত্মক হয়ে ওঠার পাশাপাশি জলবায়ু সম্পর্কিত মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত যথেষ্ট স্বাস্থ্যের প্রভাব এবং পরিবেশগত বিপর্যয় মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’

বৈশ্বিক সমর্থনের আহ্বান

গবেষণায় উচ্চ আয়ের দেশগুলোকে দাবানলে সৃষ্ট বায়ুদূষণের কারণে স্বাস্থ্যের প্রভাবগুলো কমাতে দুর্বল উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা হিসেবে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তার পক্ষে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এটি মৃত্যুর হারে আর্থসামাজিক বৈষম্য দূর করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেয়।

লেখকরা যুক্তি দেন, লক্ষ্যযুক্ত সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে ধনী দেশগুলো দরিদ্র অঞ্চলগুলোর কাঁধে থাকা অসামঞ্জস্যপূর্ণ বোঝা কমাতে সহায়তা করতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত জলবায়ু সম্পর্কিত স্বাস্থ্যসংকট মোকাবিলায় আরও কার্যকর পদ্ধতিতে অবদান রাখতে পারে।

এই বিস্তৃত গবেষণায় সারা বিশ্বের গবেষকরা অবদান রেখেছেন। এটি দাবানলের কারণে বায়ুদূষণের মানবিক ব্যয়কে বোঝার এবং মোকাবিলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের ক্ষেত্র তৈরি করে।


ভারতের সংসদে বাংলাদেশ নিয়ে জয়শঙ্করের বিবৃতি

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর কথিত হামলার অভিযোগের বিষয়ে ভারতের সংসদ লোকসভায় শুক্রবার আলোচনা হয়েছে। এদিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুসহ সব নাগরিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দায়িত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের।

লোকসভায় সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘ভারতের সরকার এসব ঘটনার বিষয় গুরুতরভাবে বিবেচনায় নিয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে দিল্লির উদ্বেগ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে সাম্প্রতিক দুর্গাপূজা উৎসবের সময় মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলার খবরও প্রকাশ্যে এসেছে... এই হামলার পর বাংলাদেশ সরকার শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপন নিশ্চিতে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েনসহ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা জারি করেছিল।’

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, ‘সংখ্যালঘুসহ বাংলাদেশের সব নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার প্রাথমিক দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকারের ওপর বর্তায়।’

রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) বাংলাদেশের সাবেক পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার ও হিন্দুদের ওপর কথিত হামলা বৃদ্ধির অভিযোগ ঘিরে চলমান উত্তেজনার মাঝে পরপর দুদিন অর্থাৎ বৃহস্পতি এবং শুক্রবার ভারতের সংসদে এ বিষয়ে আলোচনা হলো।

গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের অভিযোগে হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা হয়। এই মামলায় সোমবার বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করেন।

পরের দিন চট্টগ্রামের একটি আদালতে চিন্ময়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানি ঘিরে আদালত চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকারীদের হামলায় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে চট্টগ্রামে এক আইনজীবী নিহত হন।

চিন্ময়-ইসকন ও সংখ্যালঘুদের নিয়ে নতুন করে যা বলল ভারত

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার করা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে মাতামাতি চলছে ভারতে। এ ছাড়া বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বেড়ে গেছে বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ঢালাওভাবে প্রচার করা হচ্ছে। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এ নিয়ে বিক্ষোভও হয়েছে।

এসবের মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের বেশির ভাগই বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্ন করেন। এ সময় সাংবাদিকরা জয়সওয়ালের কাছে জানতে চান, বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় ভারত কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে? জবাবে রণধীর বলেন, ‘হিন্দুদের ওপর হামলা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। হিন্দুসহ অন্য সংখ্যালঘুদের ওপর হুমকি এবং হামলার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে শক্তভাবে সার্বক্ষণিক উত্থাপন করছে ভারত। এ ব্যাপারে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। সব সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিশ্চিতের যে দায়িত্ব বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের রয়েছে, সেটি তারা পালন করবে।’

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রকে এক সাংবাদিক ইসকন নিয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ইসকনকে ‘উগ্রবাদী সংগঠন’ আখ্যা দিয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী। জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘ইসকন বৈশ্বিকভাবে প্রখ্যাত সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত। তাদের সামাজিক ক্ষেত্রে অবদান রাখার ভালো রেকর্ড রয়েছে। আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আবারও বলব, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা চিন্ময় দাসের গ্রেপ্তার নিয়ে বিবৃতি দিয়েছি। আমরা দেখেছি সেখানে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আমরা আশা করি তার বিরুদ্ধে যে আইনি প্রক্রিয়া চলছে, সেটি স্বচ্ছ ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে হবে। তার যে আইনি অধিকার রয়েছে সেটি পুরোপুরিভাবে তিনি পাবেন।’

ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য সরবরাহের বিষয়ের করা এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। এবং একইভাবে, বাংলাদেশ ও ভারতের মাঝে উভয় দিকেই বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে...।’


কিয়েভে নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি পুতিনের

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কিয়েভের ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেন্দ্রগুলো' লক্ষ্য করে রাশিয়ার তৈরি নতুন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন।

ইউক্রেনের এক বিদ্যুৎ গ্রিডের ওপর মস্কোর দফায় দফায় হামলার পরে পুতিন এ হুমকি দিলেন। ওই হামলায় ১০লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

কিয়েভ থেকে এএফপি জানায়, রাশিয়া ৯০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রায় ১০০টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে। প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন, পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে তার ভূখণ্ডে ইউক্রেনের হামলার জবাবে তিনি এই নতুন হামলা চালিয়েছেন।

নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের প্রাক্কালে প্রায় তিন বছরব্যপী চলমান এ যুদ্ধের তীব্রতা সাম্প্রতিক দিনগুলোয় উভয় পক্ষের নতুন নতুন অস্ত্র ব্যবহারের কারণে মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের কথা উল্লেখ করে পুতিন কাজাখের রাজধানী আস্তানায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা কিয়েভসহ সামরিক, সামরিক-শিল্প বা সিদ্ধান্তগ্রহণ কেন্দ্রগুলোর ওপর ওরেশনিকের ব্যবহার বাতিল করিনি।'

কিয়েভের রাজধানীর এক এলাকার একাধিক সরকারি ভবনসম্বলিত একটি সরকারি এলাকা কঠোর নিরসপত্তা ও সুরক্ষিত হলেও গত সপ্তাহে সেখানেও আতঙ্ক বেড়েছে।

রাশিয়া গত সপ্তাহে ইউক্রেনে তার নতুন ওরেশনিক ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা প্রসঙ্গে পুতিন বৃহস্পতিবার জানান, একসাথে বেশ ক’টি অস্ত্র নিক্ষেপ একটি পারমাণবিক হামলার সমতুল্য।

আস্তানায় পুতিন বলেন, ওরেশনিক যে কোনো কিছুকে ‘ধুলায় পরিণত করতে পারে’ এবং ‘সূর্যপৃষ্ঠের’ মতো প্রচণ্ড উত্তাপ নিয়ে আঘাত করতে পারে।

তিনি বলেন, এটিএসিএমএস ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে কিয়েভের প্রথম হামলার পর রাশিয়াকে ‘যুদ্ধের পরিস্থিতিতে (অস্ত্র) পরীক্ষা করতে’ বাধ্য করা হয়েছে।

পুতিন বৃহস্পতিবার বলেন, ওরেশনিক ‘প্রতি সেকেন্ডে প্রায় তিন কিলোমিটার’ দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।

ক্রেমলিন প্রধান বলেন, রাতের হামলা ছিল ‘আমাদের ভূখণ্ডে (মার্কিন) এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা অব্যাহত হামলার জবাব।’ তিনি বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি, আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় জবাব আসবে।’

মস্কো গত সপ্তাহে দিনিপ্রো শহরে তার নতুন ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে পশ্চিম ও কিয়েভকে হতবাক করেছে। এদিকে রাশিয়ান কর্মকর্তারা অস্ত্রের শক্তির কথা বলেছেন।

পুতিন আরও দাবি করেন যে রাশিয়া জানে কিয়েভকে কতগুলো দূরপাল্লাার অস্ত্র দেওয়া হয়েছে এবং সেগুলো ঠিক কোথায় রয়েছে।

প্রায় তিন বছরের যুদ্ধে ইতোমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেনীয়রা যখন একটি কঠিন শীতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিক তখন রাশিয়ার সৈন্যরা পূর্ব ইউক্রেনে অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে এসব হামলা হয়।

পুতিন ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের ওপর আশাবাদ ব্যক্ত করে বৃহস্পতিবার রিপাবলিকান ট্রাম্পকে ‘বুদ্ধিমান ব্যক্তি’ অভিহিত করে স্পষ্ট কোনো কিছুর ইঙ্গিত না দিয়ে বলেন, ট্রাম্প সমাধান খুঁজে পেতে সক্ষমতা রাখেন।

রাতের বেলা দফায় দফায় হামলায় ইউক্রেনের পশ্চিম লভিভ অঞ্চলে অর্ধ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার কয়েক ঘণ্টা পরে রাশিয়ান নেতা একথা বলেন।

কর্মকর্তারা জানান, পশ্চিম রিভন অঞ্চলে আরও ২ লাখ ৮০ হাজার এবং উত্তর-পশ্চিম ভলিন অঞ্চলে ২ লাখ ১৫ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।

ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবাগুলো বলেছে, রাশিয়ার রাতের বেলার হামলা দেশটির পশ্চিমে হার্ড হিট অঞ্চলসহ সারাদেশের ১৪ টি অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

জেলেনস্কি, রাশিয়ার ‘গুচ্ছ যুদ্ধাস্ত্র’ নিক্ষেপের উল্লেখ করে একে ‘রাশিযান সন্ত্রাসী কৌশলের অত্যন্ত জগন্য বৃদ্ধি’ বলে অভিহিত করেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার বলেন এই হামলা জানুয়ারিতে ট্রাম্পের ক্ষমতায় ফেরার আগে কিয়েভকে সহায়তার অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে।

বাইডেন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘এই হামলা আপত্তিকর এবং এটি ইউক্রেনের জনগণকে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরক্ষায় সহায়তার জরুরি প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্বের আরেকটি স্মারক হিসাবে কাজ করবে।’

রাজধানীতে এএফপি সাংবাদিকরা রাতের বেলায় বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান এবং স্থানীয়রা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্য করে রাশিয়ান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা থেকে বাঁচতে ভূগর্ভস্থ মেট্রো সিস্টেমে ভিড় করে। জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলেছে, এটি এই বছরের ইউক্রেনের বেসামরিক শক্তি অবকাঠামোতে রাশিয়ার এগারোতম বড় হামলা।

জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রোজমেরি ডিকার্লো এই মাসে সতর্ক করেছেন যে, ইউক্রেনের জ্বালানি অবকাঠামোতে রাশিয়ার হামলা এই শীতকে ‘যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সবচেয়ে কঠোর’ করতে পারে।

পোলিশ প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক কিয়েভে হামলার পুতিনের হুমকি একটি ‘দুর্বলতার প্রমাণ’ উল্লেখ করে বলেন, পশ্চিমারা তার কথায় নিবৃত্ত হবে না।'


এবার উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ চুরি করেছে হ্যাকাররা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হ্যাকাররা উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ১ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের সমপরিমাণ ৬ হাজার ২০০ কোটি উগান্ডান শিলিং চুরি করেছে। বিদেশে অবস্থানকারী হ্যাকাররা এই অর্থ চুরি করেছে বলে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র নিউ ভিশন বৃহস্পতিবার জানিয়েছে। খবরে বলা হয়, চলতি মাসের আরও আগের দিকে এই ঘটনা ঘটেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, হ্যাকাররা নিজেদের ‘ওয়েস্ট’ নামে চিহ্নিত করেছে। তারা ব্যাংক অব উগান্ডার তথ্যপ্রযুক্তি-ব্যবস্থায় ঢুকে অবৈধভাবে অর্থ সরিয়ে নেয়। এই হ্যাকার গোষ্ঠীটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াভিত্তিক বলে সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়। ব্যাংকের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাতে নিউ ভিশন জানায়, চুরি করা অর্থের একটি অংশ জাপানে পাঠানো হয়েছে।

ব্যাংক অব উগান্ডার কাছে এই চুরির বিষয়ে জানতে চাইলে তারা রয়টার্সের কাছে কোনো মন্তব্য করেনি। এ ব্যাপারে উগান্ডার পুলিশও কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

নিউ ভিশনের খবরে বলা হয়, চুরি যাওয়া অর্থের অর্ধেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক হ্যাকারদের কাছ থেকে সফলভাবে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে। অর্থ চুরির এই ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট ইউওয়েরি মুসেভেনি এ বিষয়ে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।

উগান্ডার সবচেয়ে বেশি প্রচারসংখ্যার স্বাধীন সংবাদপত্র ডেইলি মনিটর এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই চুরির ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারেন।

দেশটিতে ব্যাংক, আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এবং টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান থেকে এর আগেও হ্যাকাররা অর্থ চুরি করেছে। তবে পুলিশ বলছে, কিছু ব্যাংক বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করতে চায় না। কারণ, তাদের আশঙ্কা, এসব ঘটনা স্বীকার করলে গ্রাহকেরা তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন।

এর আগে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা হয়েছিল। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ৮১ মিলিয়ন বা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার হ্যাকাররা চুরি করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিহাসে সেটাই ছিল সবচেয়ে বড় চুরির ঘটনা, যা আলোড়ন তুলেছিল সারা বিশ্বে। ফলে দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করে। তথ্য আদান-প্রদানব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার আনে সুইফট।

কিন্তু যে দেশের কষ্টার্জিত আয়ের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরি হলো, সেই বাংলাদেশে এর তদন্তই শেষ হয়নি, শাস্তিও পায়নি কেউ। বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিন পরে চুরির তথ্য জানতে পারলেও তৎকালীর গভর্নর আতিউর রহমান তা গোপন রাখেন। বিষয়টি অর্থমন্ত্রীকে বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় ঘটনা ঘটার এক মাসের বেশি সময় পরে।


পিটিআইয়ের বিক্ষোভ ঘিরে উত্তাল পাকিস্তান, দফায় দফায় সংঘর্ষ

সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে
পিটিআইয়ের বিক্ষোভ ঘিরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে ইসলামাবাদ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। পিটিআইয়ের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যা শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ সফল করতে মরিয়া ইমরান খানের দল। অন্যদিকে তাদের থামিয়ে দিতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামাবাদের আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।

পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনীর ব্যাপক বাধার মুখেও কিছু পিটিআই কর্মী এরই মধ্যে ডি-চকে পৌঁছে গেছে। সরকার ও বিরোধী দলটির মধ্যে আলোচনায়ও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। মূলত রোববার দলটির নেতাকর্মীরা রাজধানী ইসলামাবাদের দিকে যাত্রা শুরু করে। তবে সরকারি বাধায় তা থমকে যায়। পরে ইসলামাবাদের দিকে ফের যাত্রা শুরু করে তারা।

এর আগে আদিয়ালা কারাগার থেকে এক বিবৃতিতে ইমরান খান বলেছেন, ইসলামাবাদে যে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে তা স্থগিত করা হবে না। কারণ এখন পর্যন্ত তার মুক্তির ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে না। ইমরান খান বলেন, আমার দলের নেতাদের মাধ্যমে সমাবেশ বন্ধের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে নেতাদের মুক্তির বিষয়ে কোনো কথা বলা হচ্ছে না।

ইসলামাবাদের কেন্দ্রস্থলে ইমরান খানের সমর্থকরা

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকরা পুলিশ, রেঞ্জার্স এবং সেনাবাহিনীর সব বাধা অতিক্রম করে রাজধানী ইসলামাবাদের মূল কেন্দ্র ডি-চকে পৌঁছেছেন। তবে সেখানে পৌঁছানোর পর তারা আবারও তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন। সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, ডি-চকে ইমরান খানের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এছাড়া সমর্থকদের অনেককে কনটেইনার বেয়ে প্রতিবন্ধকতা পেরোতে দেখা গেছে। এসময় কনটেইনারের ওপর সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতেও দেখা গেছে।

রোববার ইমরানের মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগসহ সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বাতিলের দাবিতে সমর্থকরা সারা দেশ থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সমর্থকদের দাবি, এই সংশোধনীর মাধ্যমে উচ্চ আদালতের স্বাধীনতা সীমিত করা হয়েছে। ইসলামাবাদে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শাহবাজ শরীফের সরকার সংবিধানের ২৪৫ ধারা অনুযায়ী সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে একটি বিশাল গাড়ি বহর জিরো পয়েন্টে পৌঁছেছে। তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হলে সমর্থকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দাবি করেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় তাদের তিন সদস্য নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, সরকার জানিয়েছে, পিটিআই সমর্থকদের হামলায় রেঞ্জার্স এবং পুলিশের ছয় সদস্য নিহত হয়েছে। সব বাধা সত্ত্বেও ইমরানের সমর্থকদের থামাতে না পেরে প্রশাসন রাওয়ালপিন্ডি থেকে আরও এক হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছে।

দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ, ইন্টারনেটের ধীরগতি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকা ‘চূড়ান্ত বিক্ষোভে’রাজধানী ইসলামাবাদ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইমরান সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এই কঠোর নির্দেশের পরও বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় থাকা ঠেকানো যায়নি। সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে চারজনই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।

ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ইসলামাবাদের ডি চকে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। দলের একটি অংশ ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। প্রশাসন আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি জানিয়েছেন, সরকার বারবার আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে পিটিআই নেতৃত্ব আলোচনা থেকে শুধু সময় নিয়েছে এবং রাজধানীর দিকে অগ্রসর হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইসলামাবাদের আইজিকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন তিনি।

এদিকে, সংঘর্ষের মধ্যেই মুলতান, রাজনপুর, গুজরাটসহ কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটছে। পাঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ সোমবার ৪ হাজারের বেশি পিটিআই নেতাকর্মীকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন পার্লামেন্ট সদস্যও রয়েছেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহিদ নওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ইমরান খান মাসের শুরুতে কারাগার থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন, যাকে তিনি ‘চূড়ান্ত ডাক’ বলে উল্লেখ করেছেন। এরপর থেকে তার সমর্থকেরা রাজধানীর দিকে অগ্রসর হন। তাদের দাবি, বন্দি নেতাদের মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগ।

২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ইমরান খান একাধিক মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদসহ ১৫০টির বেশি মামলা রয়েছে। ২০২৩ সালের মে মাসে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। তবে পিটিআই এই মামলা ও অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছে।

প্রসঙ্গত, ইমরান খানের গ্রেপ্তার ঘিরে এর আগেও দেশব্যাপী সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। তারমুক্তি এবং দলের ওপর চাপ কমানোর দাবিতে সমর্থকেরা ফের রাস্তায় নেমেছে।


পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত ৮৮

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের খুররাম জেলায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮ জনে। হাসপাতাল প্রশাসন মিডিয়াকে এ খবর জানায়।

ইসলামাবাদ থেকে সিনহুয়া জানায়, গত বৃহস্পতিবার শিয়া মুসলমান বহনকারী যাত্রীবাহী কোচের একটি বহরের ওপর পারাচিনার এলাকায় অতর্কিত হামলা চালালে সহিংসতার বিপুল সংখ্যক হতাহত হয়।

এই হামলা এক পর্যায়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রুপ নিলে পরবর্তীতে একাধিক প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়।

প্রাদেশিক সরকারের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। উভয় সম্প্রদায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।


২০২৩ সালে দিনে গড়ে ১৪০ নারী নিহত হয়েছেন স্বজনদের হাতে: জাতিসংঘ

বিশ্বব্যাপী ২০২৩ সালে আনুমানিক ৫১ হাজার ১০০ জন নারী ও কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যের হাতে
আপডেটেড ২৬ নভেম্বর, ২০২৪ ০০:৩৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গত বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে গড়ে প্রতিদিন ১৪০ জন নারী ও কিশোরীকে হত্যা করা হয়েছে। ভয়ংকর বিষয় হলো, নিকটাত্মীয় বা পরিবারের সদস্যদের হাতেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার জাতিসংঘের দুটি সংস্থার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বিশ্বব্যাপী ২০২৩ সালে আনুমানিক ৫১ হাজার ১০০ জন নারী ও কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে তার সঙ্গী বা পরিবারের সদস্যের হাতে। যা ২০২২ সালে ছিল আনুমানিক ৪৮ হাজার ৮০০ জন। ইউএস উইমেন এবং জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ দপ্তরের প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।

নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধের আন্তর্জাতিক দিবসে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংখ্যার এই বৃদ্ধি মূলত বিভিন্ন দেশগুলো থেকে পাওয়া আরও তথ্যের কারণে বেড়েছে, হত্যার সংখ্যা বেড়েছে এমনটি নয়। কিন্তু জাতিসংঘের দুটি সংস্থাই জোর দিয়ে বলেছে, ‘সর্বত্র নারী ও কিশোরীরা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার শিকার হচ্ছে এবং কোনো অঞ্চলই আর বাদ নেই। বাড়ি নারী ও মেয়েদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক স্থান।’

২০২৩ সালে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড সবচেয়ে বেশি হয়েছে আফ্রিকায়। আনুমানিক ২১ হাজার ৭০০ জনকে হত্যা করা হয়েছে সেখানে। এই মহাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় এই ধরনের মৃত্যুর হারও সবচেয়ে বেশি ছিল।

প্রতি ১ লাখে ২.৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে আফ্রিকা মহাদেশে। আমেরিকায় প্রতি ১ লাখে ১.৬ জন নারী এবং ওশেনিয়ায় প্রতি ১ লাখে ১.৫ জনকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তবে এশিয়া ও ইউরোপে মৃত্যুহার ছিল কম, এশিয়ায় প্রতি এক লাখে ০.৮ এবং ইউরোপে ০.৬ জন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপ ও আমেরিকায় ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে নারীদের ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা হয়েছে, মূলত তাদের সঙ্গীর হতেই মৃত্যু হয়েছে। পুরুষ অথবা কিশোরদের হত্যা করা হয়েছে বাড়ি ও পরিবারের বাইরে।

এতে আরও বলা হয়, মোট হত্যার শিকার মানুষের মধ্যে পুরুষ ও কিশোররাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে পরিবারের মধ্যে প্রাণঘাতী সহিংসতার শিকার নারী ও কিশোরীরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালে সব হত্যাকাণ্ডের শিকারদের মধ্যে আনুমানিক ৮০ শতাংশ পুরুষ ছিল এবং ২০ শতাংশ ছিল নারী ও কিশোরী। কিন্তু পরিবারের মধ্যে প্রাণঘাতী সহিংসতা পুরুষদের তুলনায় নারীদের অনেক বেশি ক্ষতি করে। ২০২৩ সালে ইচ্ছাকৃতভাবে ৬০ শতাংশ নারীকে হত্যা করেছিল পরিবারের সদস্য বা সঙ্গী।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশগুলোর নারী ও মেয়েদের হত্যা রোধ করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা ‘আশঙ্কাজনকভাবে উচ্চপর্যায়ে রয়েছে।’ দুটি সংস্থাই বলেছে, এগুলো প্রায়ই লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার পুনরাবৃত্তি পর্বের চূড়ান্ত পরিণতি ফল। সঠিক সময়ে ও কার্যকর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সূত্র: এপি


বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য কমার পূর্বাভাস, দেশে সুফল পাওয়া নিয়ে সংশয়

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাণিজ্য ডেস্ক

২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য সার্বিকভাবে ৩ শতাংশ কমেছে। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী দুই বছরে পণ্যমূল্য কমার এই ধারা অব্যাহত থাকবে। কিন্তু বিশ্ববাজারে দাম কমলেও বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যের দাম কমা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অতীতে দাম না কমে, উল্টো দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, সঠিক তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক সিদ্ধান্তের অভাব, সরকারের ভুল নীতি, ভুল পদক্ষেপ এবং বাজারের উপর সরকারের কোন ধরণের নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঠেকানো যায় না।

বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে, দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৬৬ শতাংশে। এটি দেশে গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

অর্থনীতিবিদদের মতে, মূল্যস্ফীতির এই বিষয়টি শুধু অক্টোবর মাসের বিষয় নয়, বরং গত তিন বছর ধরে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার যে প্রবণতা শুরু হয়েছে তা আর ঠেকানো যায়নি এবং সেটাই এখন এত বড় আকার ধারণ করেছে।

বিশ্ববাজারে আগামী দুই বছর পণ্যমূল্য কমতে পারে

বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অনুযায়ী ২০২৫ সালে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য ৫ শতাংশ এবং ২০২৬ সালে তা আরও ২ শতাংশ কমবে। ফলে পণ্যমূল্য ২০২০ সালের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসবে। সব মিলিয়ে ২০২৫ সালে খাদ্যমূল্য ৯ শতাংশ এবং জ্বালানির দাম ৬ শতাংশ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের কমোডিটি মার্কেটস আউটলুক শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক বছরে বিশ্বজুড়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধাক্কা অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা স্থিতিশীল হয়েছে। যেসব কারণে পণ্যমূল্য বাড়ছিল, সেগুলো অনেকটাই দূর হয়েছে, যেমন চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যহীনতা। যদিও এই সময় ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে, বাণিজ্যে বাধা এসেছে, আবহাওয়াজনিত সরবরাহ-সংকট হয়েছে। তা সত্ত্বেও পণ্যের দাম কমেছে।

প্রতিবেদনে জ্বালানির বিষয়ে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে স্বল্প মেয়াদে এই পণ্যের দাম বাড়তে পারে। চলতি বছরের এপ্রিল এবং ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। যার কারণ ছিল ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা। তবে চাহিদা কমে যাওয়ায় পরে দাম কমেছে। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক জিডিপিতে তেলের যে ভূমিকা ছিল, তার অনুপাতও কমে আসছে। ২০২৪ সালে বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের গড় দাম ছিল ৮০ ডলার। বিশ্বব্যাংকের ধারণা, আগামী বছর অপরিশোধিত তেলের গড় দাম ব্যারেলপ্রতি ৭৩ ডলার এবং ২০২৬ সালে ৭২ ডলারে নেমে আসবে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ ও ২০২৬ সালে বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারও স্থিতিশীল থাকবে; অর্থাৎ জিডিপির এমন কোনো প্রবৃদ্ধি হবে না, যা হঠাৎ করে পণ্যের চাহিদা বাড়িয়ে দেবে এবং তাতে দামও বেড়ে যাবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রবৃদ্ধির হার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হতে পারে। তাতে সেখানে পণ্যের চাহিদা বাড়তে পারে। এদিকে চীন সরকার অর্থনীতি চাঙা করতে প্রণোদনা আরও বৃদ্ধি করলে শিল্পপণ্যের দাম বাড়তে পারে। চীনের প্রবৃদ্ধির হার বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যে প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধির হার কমেছে, তখন দেশটিতে পণ্যের দামও কমে গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, খাদ্য ও জ্বালানির মূল্যহ্রাসের কারণে সামগ্রিকভাবে বিশ্ব মূল্যস্ফীতির হারও আগামী বছর কমবে। পণ্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি কমলে বিভিন্ন দেশের নীতি সুদহারও লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশে কেন কমে না?

অর্থনীতিবিদদের মতে, বাংলাদেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা। উৎপাদক স্তর থেকে ভোক্তা স্তর এবং আমদানি স্তর থেকে ভোক্তা স্তর- এই দুই পর্যায়ে যারা মধ্যস্বত্বভোগী রয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে তাদের হাতে বাজারটা একচেটিয়াভাবে চলে গেছে। তারা বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করছে এবং সেটার কারণে যে মূল্যটা সেটা বাজারের প্রতিযোগিতার সক্ষমতার নিরিখে হচ্ছে না। এই মধ্যস্বত্বভোগীরাই বাজারের মূল্য নির্ধারণ করছে এবং অনেক সময় সরবরাহকে প্রভাবিত করছে।

তারা বলেন, অনেক ব্যবসায়ীরা একটা সাময়িক সরবরাহ সংকট তৈরি করে কোনো কোনো পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে ফেলে। যেটার কোনে যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। চিনি বা ভোজ্য তেলের মতো খাতে সরবরাহকারীর সংখ্যাও হাতেগোনা, মাত্র তিন-চারটি প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্যে বাজারকে প্রভাবিত করার প্রবণতা আছে। বাজারে অ্যান্টি-কমপিটিটিভ প্র্যাক্টিসের (প্রতিযোগিতাহীন অবস্থা) নিদর্শন পাওয়া যায়, অথচ এগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো শক্তিশালী পদক্ষেপ দেখা যায় না।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজার ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেসব প্রতিষ্ঠান আছে যেমন- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর বা প্রতিযোগিতা কমিশন– এসব প্রতিষ্ঠানের খবরদারিতে দুর্বলতা রয়েছে। আর এ কারণেই খাদ্য মূল্যস্ফীতি ঠেকানো যাচ্ছে না। এসব প্রতিষ্ঠানের উচিত বাজারব্যবস্থাকে একটা নজরদারির মধ্যে নিয়ে এসে, মূল্যস্ফীতি অযৌক্তিকভাবে বাড়ছে কিনা সে বিষয়ে সতর্ক নজর রাখা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের বাজারে তথ্য-উপাত্ত ভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে বড় ধরনের দুর্বলতা রয়েছে। যেমন, বাজারে চাহিদা কত, সরবরাহ কত, উৎপাদন কত, আমদানি কতটুকু করতে হবে এবং সেটা কোন সময়ে করতে হবে, সেই আমদানিটা উন্মুক্তভাবে হচ্ছে কি না– এসব তথ্যের ভিত্তিতে বেশির ভাগ সময়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। ফলে যথেচ্ছভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে খাদ্য মূল্য ঠেকানো যায় না।


banner close