শুক্রবার, ২৯ আগস্ট ২০২৫
১৩ ভাদ্র ১৪৩২

বিশ্বব্যাপী ৮৫ শতাংশ সাংবাদিক হত্যার বিচার হয় না

ছবি: সংগৃহীত
বাসস
প্রকাশিত
বাসস
প্রকাশিত : ২ নভেম্বর, ২০২৪ ১৬:২৬

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের দায়মুক্তি অবসানের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে ইউনেস্কো সকল দেশকে ন্যায়বিচারের প্রতি তাদের অঙ্গীকার বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

সংস্থার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ বলা হয়, সংস্থার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে দায়মুক্তির হার ছয় বছরে মাত্র ৪ পয়েন্ট কমেছে। এর মানে বিশ্বব্যাপী ৮৫ শতাংশ সাংবাদিক হত্যার মামলা অমীমাংসিত থেকে গেছে।

ইউনেস্কো সাংবাদিকরা সত্যের সন্ধানে তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকেন উল্লেখ করে তাদের সুরক্ষা অপরিহার্য বলে মত দিয়েছে।

জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো শনিবার এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত দুই বছরের তুলনায় ২০২২-২৩ সালে বিশ্বব্যাপী সাংবাদিকদের হত্যাকা- বেড়েছে। এই দুই বছরে ১৬২ সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মানে, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ৩৮ শতাংশ বেড়েছে।

প্রতিবেদনটিতে সাংবাদিকদের মৃত্যুর হার বৃদ্ধিকে ‘আশঙ্কাজনক’ বলে অভিহিত করা হয়েছে।

ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে আজোলায় এক বিবৃতিতে বলেন, ‘২০২২ ও ২০২৩ সাল সত্য অনুসন্ধানে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রতি চার দিনে একজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়।’

তিনি দেশগুলোকে ‘এ অপরাধগুলো যাতে বিচারহীন থেকে না যায়, তা নিশ্চিত করতে আরও বেশি কিছু করার’ আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ঠেকাতে অপরাধীদের বিচার ও দোষী সাব্যস্ত করা একটি বড় লিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।

ইউনেস্কোর প্রতিবেদনে বলা হয়, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই দুই বছরে সেখানে ৬১ জন সাংবাদিক পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে প্রাণ হারান। অপরদিকে উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপে সবচেয়ে কম সংখ্যক সাংবাদিক প্রাণ হারান। অঞ্চল দুটিতে এই দুই বছর ছয় সাংবাদিক প্রাণ হারান।

প্রতিবেদনে আরও দেখা গেছে, ২০১৭ সালের পর ২০২৩ সালে প্রথমবারের মতো ফের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে অধিকাংশ সংবাদকর্মী প্রাণ হারান। ২০২৩ সালে ওই অঞ্চলগুলোতে ৪৪ জন সাংবাদিক প্রাণ হারান, যা ওই বছরের মোট নিহতের ৫৯ শতাংশ।

২০২২-২৩ সালে ১৪ নারী সাংবাদিক প্রাণ হারান, মোট নিহত সাংবাদিকদের নয় শতাংশ। যেখানে কমপক্ষে পাঁচজন ছিল ১৫-২৪ বছর বয়সের মধ্যে।

পৃথক দেশ থেকে নিহতদের প্রতিক্রিয়া অনুসারে সাংবাদিকদের প্রায় সব হত্যাকা-ই অমীমাংসিত রয়ে গেছে। ২০০৬ সাল থেকে ইউনেস্কো চিহ্নিত ৮৫ শতাংশ মামলা এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে বা পরিত্যক্ত হয়েছে।

এটি ২০১৮ সালে ৮৯ শতাংশ ‘নন-রেজোলিউশন’ হার এবং ২০১২ সালে ৯৫ শতাংশ থেকে কিছুটা উন্নতি। কিন্তু ৭৫টি দেশের মধ্যে ইউনেস্কো দায়েরকৃত মামলার আপডেটের জন্য যোগাযোগ করে ১৭টির কাছ থেকে কোনো সাড়া পায়নি এবং নয়টি দেশ তাদের আবেদন গ্রহণ করা ছাড়া আর কিছু করেনি।

এমনকি ২১০টি মামলায়, যেখানে সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হয়েছে, তাতেও সময় লেগেছে অন্তত চার বছর। রিপোর্টে 'বিচার বিলম্বিত করা মানে ন্যায়বিচার অস্বীকার করা’ বলে উল্লেখ করা হয়।

ইউনেস্কো সাংবাদিক হত্যার দায়মুক্তির বিরুদ্ধে বার্ষিক প্রচার-প্রচারণা চালায়। সংস্থাটি চলতি বছরের ৬ নভেম্বর ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সাথে সংকট ও জরুরি পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার ওপর একটি বৈশ্বিক সম্মেলন আয়োজন করছে।


গাজা সিটির নতুন এলাকায় ইসরায়েলি ট্যাংক

ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ
আপডেটেড ২৯ আগস্ট, ২০২৫ ০০:২৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা সিটির আরও ভেতরে নতুন এলাকায় ট্যাংক নিয়ে ঢুকে পড়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলা চালিয়ে ধ্বংস করছে সেখানকার বাড়িঘর। পালাতে বাধ্য হচ্ছে বাসিন্দারা।

এর মধ্যেই গাজা সিটি খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনিদের হুঁশিয়ারি দিয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা গাজা সিটি জয় করার প্রস্তুতি নিয়েছে। এ শহর খালি করতেই হবে।

গাজা সিটির বাসিন্দারা জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ইসরায়েলের ট্যাংক গাজা সিটির উত্তর প্রান্তে ইবাদ-আলরহমান এলাকায় ঢুকে গোলা ছুড়ে। এতে অনেকে আহত হয়। বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয় অনেক বাসিন্দা।

৬০ বছর বয়সী বাসিন্দা সাদ আবেদ বলেন, ‘হঠাৎ খবর এল এবাদ-আলরহমানে ট্যাংক ঢুকেছে। বিস্ফোরণের শব্দ বাড়তে লাগল। আমরা দেখলাম মানুষ আমাদের এলাকায় পালিয়ে আসছে। যুদ্ধবিরতি না হলে ট্যাংক আমাদের বাড়ির সামনেই এসে পড়বে।’

ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা গাজা সিটিতে নতুন অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী গোষ্ঠী হামাসের শেষ ঘাঁটি সেখানে অবস্থিত বলেই দাবি তাদের।

অপরদিকে, গাজার প্রায় ২২ লাখ মানুষের অর্ধেকই এখন এই শহরে বাস করছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, তাদের সবাইকেই সরিয়ে নেওয়া হবে। তবে শহরের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতারা গত বুধবার বলেছেন, তারা সরে যাবেন না। কারণ, দক্ষিণে পালানো মানে মৃত্যুদণ্ডের সামিল।

ওদিকে, গত বুধবার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিচাই আদ্রেয়ি বলেছেন, ‘গাজা সিটি খালি করাটা অনিবার্য। আমি নিশ্চিত করে জানাতে চাই, দক্ষিণাঞ্চলে বিশাল ফাঁকা এলাকা রয়েছে। মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন আশ্রয়শিবির এবং আল-মাওয়াসিতেও ফাঁকা জায়গা আছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, হোয়াইট হাউজে গত বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সভাপতিত্বে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক হবে। তিনি বলেছেন, এ বছর শেষেই যুদ্ধের অবসান হবে বলে ওয়াশিংটনের প্রত্যাশা।

অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ওয়াশিংটনে বৈঠক করছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদেওন সারের সঙ্গে।

গত বুধবার ইসরায়েলের ট্যাংক আবার গাজা সিটির প্রান্ত থেকে জাবালিয়া এলাকায় ফিরে যায়। যদিও গাজার পূর্বদিকের শেজাইয়া, জেইতুন ও সাবরা এলাকায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত ছিল। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৪ বছর বয়সী এক শিশুও আছে।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা ‘সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস করাসহ হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল’ করছে। গত ২২ আগাস্ট পশ্চিম গাজার সাধারণ নিরাপত্তা গোয়েন্দা প্রধান মাহমুদ আল-আসওয়াদকে হত্যা করার কথাও জানিয়েছে সেনারা। তবে হামাস তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেনি।

ইসরায়েলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ জোরাল হচ্ছে। গত মঙ্গলবার ইসরায়েলজুড়ে হাজারো মানুষ গাজায় যুদ্ধ বন্ধ ও হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ করে।

যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত সর্বশেষ ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ইসরায়েল এখনও সাড়া দেয়নি। তবে হামাস গত সপ্তাহে এ প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছিল।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে ঢুকে ১২০০ জনকে হত্যা করে এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায়। এর জবাবে ইসরায়েল সেদিন থেকেই গাজায় যুদ্ধ শুরু করে।

ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে হিসাব দিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। যুদ্ধে গাজার প্রায় সব মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং গোটা অঞ্চলে মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

গাজায় ২৩৩ ইমামকে হত্যা করেছে ইসরায়েল

গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার হামলা, বোমাবর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞে বেড়েই চলেছে প্রাণহানি ও অবকাঠামোর ধ্বংস। টার্গেট করা হচ্ছে মসজিদ, গির্জা, মসজিদের ইমাম, ইসলাম ধর্মের প্রচারকদের। অবকাঠামোর ধ্বংসের কারণে মসজিদ ও উপাসনালয়হীন হয়ে পড়েছে অনেক পাড়া-মহল্লা।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর গাজায় চলমান আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ২৩৩ জন ইমাম ও ইসলাম ধর্মের প্রচারককে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। ধ্বংস করেছে ৮২৮ মসজিদ এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১৬৭টি মসজিদ। এছাড়াও এই সময়ের মধ্যে বোমা হামলায় ধ্বংস করা হয়েছে তিনটি চার্চ, হত্যা করা হয়েছে ২১ জন ফিলিস্তিনি খ্রিস্টানকে।

গাজার মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল থাওয়াবতেহ আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, মসজিদ, গির্জা, মসজিদের ইমাম ও ধর্মীয় নেতাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ ও প্রতিরোধের মূল ভিত্তিগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ইমাম ও আলেমরা জাতীয় পরিচয় শক্তিশালী করতে, ঈমান জাগ্রত রাখতে এবং সামাজিক সংহতি রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের হত্যা ও নির্মূল করার মাধ্যমে মনোবল দুর্বল করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং ইসরায়েলের অপরাধগুলো চিহ্নিতকারী আওয়াজ নিস্তব্ধ করা হচ্ছে।

শতাব্দী প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংসের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের অতীতের সঙ্গে সম্পর্কও ছিন্ন হচ্ছে। ইতিহাস, সংস্কৃতি, সামাজিক পরিচয় এবং সমষ্টিগত স্মৃতি মুছে ফেলার এই প্রচেষ্টা ফিলিস্তিনের অস্তিত্বের জন্য বড় হুমকি।

গাজায় অনাহারে আরও ১০ জনের মৃত্যু

ইসরায়েলের অবরোধ ও অব্যাহত হামলায় গাজাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে দুর্ভিক্ষ। এই উপত্যকাটিতে অপুষ্টি ও অনাহারে আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া তীব্র অপুষ্টির ঝুঁকিতে রয়েছে আরও ১ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি শিশু।

জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরাইলের অবরোধ ও অব্যাহত হামলার কারণে জীবনরক্ষাকারী সহায়তা প্রবেশ করতে না পারায় শিশুদের ক্রমবর্ধমানভাবে না খেয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।


চীনে সামরিক কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন কিম জং উন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ছয় বছর পর প্রথমবারের মতো চীন সফরে যাচ্ছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। আগামী সপ্তাহে বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সামরিক কুচকাওয়াজে তিনি অংশ নেবেন।

স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ আগস্ট) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কুচকাওয়াজে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ মোট ২৬ জন বিদেশি নেতা উপস্থিত থাকবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা প্রধান দেশগুলোর কোনো শীর্ষ নেতা এতে যোগ দিচ্ছেন না।

২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর এটিই হবে বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক কোনো অনুষ্ঠানে কিমের প্রথম অংশগ্রহণ। তাছাড়া কিমের এ সফর ২০১৯ সালের পর চীনে তার প্রথম সফর হতে যাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের আমন্ত্রণে কিম এ সফর যাচ্ছেন। তবে তিনি কতদিন চীনে অবস্থান করবেন কিংবা শি জিনপিং, পুতিন বা অন্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন কি না—সে বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি।

চীন-জাপান যুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকী ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষে আগামী বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) আয়োজিত এই কুচকাওয়াজে যোগ দেবেন ইরান, বেলারুশ, সার্বিয়া, কিউবা, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, পাকিস্তান ও মালয়েশিয়ার নেতারাও। কুচকাওয়াজে চীনের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র প্রদর্শন করা হবে এবং প্রেসিডেন্ট শি ভাষণ দেবেন।

তবে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রুশ নেতা পুতিনের সঙ্গে মতপার্থক্যের কারণে বেশিরভাগ পশ্চিমা নেতার এ কুচকাওয়াজে উপস্থিত থাকবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

চীন দীর্ঘদিন ধরে উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার ও প্রধান সহায়তাকারী। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। উত্তর কোরিয়া বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধে সৈন্য ও গোলাবারুদ সরবরাহের বিনিময়ে তারা অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা পাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ালেও উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে চীনের সহায়তা অপরিহার্য। তাই বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতেই কিমের এ সফর।

কিমের চীন সফরের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন করে কূটনীতি শুরুর প্রচেষ্টারও ইঙ্গিত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকবার কিমের সঙ্গে নিজের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন এবং আলোচনায় ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যদিও উত্তর কোরিয়া ট্রাম্পের প্রস্তাব এখনো প্রত্যাখ্যান করে চলেছে, তবে যুক্তরাষ্ট্র বড় ধরনের ছাড় দিলে পিয়ংইয়ং আলোচনায় ফিরতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

ট্রাম্প সম্প্রতি ওয়াশিংটনে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লিয়ের সঙ্গে বৈঠককালে অতীতের কিমের সঙ্গে নিজের বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি সেটা ভীষণ উপভোগ করেছিলাম। মনে আছে, আমি যখন সীমান্ত রেখা পার হয়েছিলাম, সবাই তখন উত্তেজনায় ফেটে পড়েছিল।’

প্রথম মেয়াদে কিমের সঙ্গে তিনবার বৈঠক করেছিলেন ট্রাম্প। তবে মার্কিন নেতৃত্বাধীন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মতানৈক্যের কারণে তাদের ঐতিহাসিক বৈঠক ব্যর্থ হয়। এরপর থেকে কিম তার পারমাণবিক অস্ত্রাগার আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণে একাধিক অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছেন।


যুক্তরাজ্যে সর্বোচ্চ যৌন অপরাধ করে ভারতীয়রা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২০২১ সালের পর থেকে যুক্তরাজ্যে ভারতীয় নাগরিকদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধের দণ্ড সর্বোচ্চ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়ের নতুন তথ্যের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দণ্ডের সংখ্যা ২৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২৮ থেকে ১০০ মামলায় দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে নাইজেরিয়ার নাগরিকদের ক্ষেত্রে ১৬৬ শতাংশ ও ইরাকের নাগরিকদের ক্ষেত্রে ১৬০ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সংখ্যাগুলো পৃথক অপরাধীর নয়, বরং দণ্ড প্রদানের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত।

এছাড়া ভারতীয় নাগরিকদের জন্য গুরুতর অপরাধের দণ্ডে বিদেশি নাগরিকদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি হয়েছে, ২০২১ সালের ২৭৩ থেকে ১১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৪ সালে ৫৮৮ ঘটনায় পৌঁছেছে। আলজেরীয় ও মিসরীয় নাগরিকদের ক্ষেত্রে গুরুতর অপরাধে আরো বেশি বৃদ্ধি দেখা গেছে।

স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ২৯৩ জন ভারতীয় নাগরিক ছোট নৌকায় অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে এবং ২০২৫ সালের প্রথমার্ধেই ২০৬ জন প্রবেশ করেছে।

এর পরও ভারতীয়রা অনিয়মিত অভিবাসনের মধ্যে একটি ছোট অংশ। সবচেয়ে বেশি আফগানিস্তান, ইরান ও সিরিয়ার নাগরিকদের দেখা গেছে।

২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের বন্দরগুলোতে অবৈধ আগমনের ১৫ শতাংশই ভারতীয় নাগরিকদের। পাঁচ হাজার ৪৭৪ জন ভারতীয় আশ্রয় আবেদনকারীর মধ্যে প্রায় চার হাজার জন বৈধ ভিসাধারী (প্রধানত শিক্ষার্থী ভিসা), ৪০০ জন ছোট নৌকা ব্যবহার করে প্রবেশকারী এবং বাকিরা অন্যান্য মাধ্যমে গিয়ে আবেদন করেছে।

প্রাথমিক আশ্রয় সিদ্ধান্তে দুই হাজার ৬৯১টি প্রত্যাখ্যান, ২০টি মঞ্জুর ও বাকিগুলো বিচারাধীন।

গণমাধ্যমটি বলছে, ভারতীয় নাগরিকরা বৈধ অভিবাসনেও শীর্ষে রয়েছেন। তারা যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব পাওয়ায় সর্বাধিকসংখ্যজ কাজ ও পর্যটন ভিসা পেয়েছে এবং শিক্ষার্থী ভিসা প্রাপ্তদের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্রুপ। গত জুন পর্যন্ত ৯৮ হাজার ১৪ জন প্রধান আবেদনকারীকে শিক্ষার্থী ভিসা প্রদান করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আরো দেখা যায়, যুক্তরাজ্যে সব বিদেশি নাগরিকের যৌন অপরাধে দণ্ড চার বছরে ৬২ শতাংশ বেড়েছে।

গত বছরে যৌন অপরাধের দণ্ডের সাত ভাগের এক ভাগ (১৪.১ শতাংশ) বিদেশি নাগরিকরা পেয়েছে, যার মধ্যে ধর্ষণও রয়েছে। তুলনামূলকভাবে একই সময়ে ব্রিটিশ নাগরিকদের ক্ষেত্রে দণ্ড ৩৯.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, এই তথ্যগুলো পুলিশ ন্যাশনাল কম্পিউটার (পিএনসি) থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সেন্টার ফর মাইগ্রেশন কন্ট্রোল থিংকট্যাংকের মাধ্যমে পাওয়া। ২০২৫ সালে শুধু ছোট নৌকায় প্রায় ২৭ হাজার ৯৯৭ জন অভিবাসী যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে, যা ২০১৮ সালের প্রথম আগমনের পর থেকে একই সময়ে সর্বোচ্চ।


গ্রিনল্যান্ডের নুক বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গ্রিনল্যান্ডের নুক বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। আজ বুধবার ডেনিশ পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, দূরের ফ্লাইট পরিচালনার জন্য নতুন রানওয়ে চালুর এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ফ্লাইট বন্ধের ঘটনা ঘটলো।
কোপেনহেগেন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, গত বছরের নভেম্বরে নুক বিমানবন্দরে নতুন রানওয়ে চালু করা হয়। এর ফলে বড় আকারের বিমানগুলো অবতরণ ও উড্ডয়নের সুযোগ পায় এবং দূরের যাত্রায় ভ্রমণকারীদের আইসল্যান্ড হয়ে বিমানে ওঠার ভোগান্তির অবসান ঘটে।
নুক বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সপ্তাহে দু’টি ফ্লাইট রয়েছে।
কিন্তু, গ্রিনল্যান্ড বিমানবন্দরের সময়সূচি অনুসারে, আজ বুধবার সকাল ৯টায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কগামী এবং ১১ টা ৫০ মিনিটে ডেনমার্কের বিলুন্ড শহরগামী দু’টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়।
ডেনিশ পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা অ্যান্ডার্স উইন্ডফেল্ড এএফপিকে বলেন, ‘নুক বিমানবন্দরে বিমান চলাচলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়ম মেনে চলার জন্য আমরা গ্রিনল্যান্ড বিমানবন্দরকে নির্দেশনা দিয়েছি। সেখানে নিরাপত্তার যথেষ্ট ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘নিরাপত্তা কর্মীরা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না পাওয়া পর্যন্ত এবং বিমানবন্দরটি নিজস্ব পদ্ধতি ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা মেনে চলতে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম না হওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে।’
তবে, মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, গ্রিনল্যান্ডের অভ্যন্তরীণ বিমান চলাচলে কোনো প্রভাব পড়বে না।

উইন্ডফেল্ড বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিমানবন্দর এখন মন্ত্রণালয়কে জানাবে যে, কখন বিমানবন্দরের নিরাপত্তা পুনরায় নিশ্চিত করতে পারবে তারা।


ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনায় চিঠি: ফেমার কর্মীদের বরখাস্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ট্রাম্প প্রশাসন মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি (ফেমা)’র কয়েকজন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। মার্কিন গণমাধ্যম জানায়, ঐসব কর্মী প্রকাশ্যে সংস্থার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করায় প্রশাসন এ ব্যবস্থা নিয়েছে।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, ঘূর্ণিঝড় হারিকেন ক্যাটরিনার ২০তম বার্ষিকীতে সোমবার একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন ফেমার ১৮০ জন বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মচারী। চিঠিতে তারা অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে নেওয়া বাজেট কাটছাঁট, কর্মীদের বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত ও অন্যান্য সংস্কারের কারণে আবার সেই পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, যার কারণে ২০০৫ সালের হারিকেন মোকাবিলায় ফেমার ভূমিকা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিল।

চিঠিটি ১৮০ জন পাঠালেও মাত্র ৩৬ জন নিজেদের নাম প্রকাশ করেছেন। বাকিরা প্রতিশোধের ভয়ে পরিচয় গোপন রেখেছেন।

নিউ ইয়র্ক টাইমস মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ই-মেইল পর্যালোচনা করে জানিয়েছে, প্রায় ৩০ জন কর্মচারীকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুযায়ী, ফেমার কর্মীদের পাঠানো ইমেইলে বলা হয়েছে যে তাদের অবিলম্বে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এ সময়ে তারা ‘কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তবে বেতন ও অন্যান্য সুবিধা চালু থাকবে।’

এ বছরের জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে আবার ফেরার পর থেকেই ট্রাম্প বারবার বলেছেন, তিনি ফেমা বিলুপ্ত করতে চান এবং রাজ্যগুলোকে ‘নিজেদের সমস্যা নিজেদের সমাধান করতে’ দিতে চান।

তিনি সংস্থাটিকে অদক্ষ বলে অভিযোগ করছেন এবং কোনো প্রমাণ ছাড়াই বলছেন, ফেমা রিপাবলিকান শাসিত রাজ্যগুলোর প্রতি ব্যাপক রাজনৈতিক পক্ষপাত করে।

২০০৫ সালের আগস্টের শেষ দিকে হারিকেন ক্যাটরিনা মার্কিন উপসাগরীয় উপকূলে আঘাত হানে। এতে লুইজিয়ানার নিউ অরলিয়েন্স শহরে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এই দুর্যোগে ১ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়।

দুর্যোগে বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়া মানুষদের কাছে তৎক্ষণাৎ সাহায্য পৌঁছাতে দেরি হওয়া এবং বিভ্রান্তিকর যোগাযোগের কারণে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলার প্রক্রিয়া তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল।

এর পরের বছরই প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় উন্নতি আনতে ‘পোস্ট-ক্যাটরিনা ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট রিফর্ম অ্যাক্ট’ (পিকেইএমআরএ) নামে একটি আইন প্রণয়ন করে কংগ্রেস।

সোমবার পাঠানো খোলা চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, ‘দুই দশক পরে ফেমা আবার এমন প্রক্রিয়া ও নেতৃত্ব কাঠামো চালু করছে যেসব প্রতিরোধ করার জন্যই পিকেইএমআরএ আইনটি তৈরি করা হয়েছিল।’

চিঠিতে কর্মীরা কংগ্রেসকে অনুরোধ করেছেন যাতে ফেমাকে একটি মন্ত্রিসভা পর্যায়ের স্বাধীন সংস্থায় পরিণত করা হয় এবং ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বরখাস্ত’ থেকে এটিকে রক্ষা করা হয়।

মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েমের ব্যয় সংক্রান্ত বিধিনিষেধ চালুর কারণে ফেমা’র ‘দ্রুত কাজ করার ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব কমে গেছে’ বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

নোয়েম নির্দেশ দিয়েছেন, ১ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের প্রতিটি ফেমা চুক্তি, অনুদান ও কাজ নিজে যাচাই করবেন।

চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘জুলাই ২০২৫-এ টেক্সাসের কেরভিলে বন্যার সময় এই নিজস্ব যাচাই প্রক্রিয়ার প্রভাব ভীষণভাবে দেখা গেছে। তখন কাজ শুরু করতে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি হয়।’

চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, বাজেট কাটছাটের কারণে এই বছর ফেমা’র এক-তৃতীয়াংশ পূর্ণকালীন কর্মচারি চাকরি ছেড়েছেন। মূলত ধনকুবের ইলন মাস্কের নেতৃত্বে পরিচালিত ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’র বাজেট কমানোর নির্দেশনার কারণেই এমনটা হয়েছে।


যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নতুন বৈশ্বিক শক্তি প্রদর্শনের মহড়া চীনের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিং আগামী সপ্তাহে চীনে একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা ফোরামে ২০-এর বেশি বিশ্বনেতাকে একত্র করবেন। এটি হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ‘গ্লোবাল সাউথ’–এর শক্তি প্রদর্শনের একটি বড় মহড়া। একই সঙ্গে তা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার শিকার রাশিয়াকে আরেকটি কূটনৈতিক সাফল্য অর্জনেও সাহায্য করবে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ছাড়াও মধ্য এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতাদের সাংহাই কো–অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সম্মেলনটি উত্তর চীনের বন্দর শহর তিয়ানজিনে ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

এর মাধ্যমে সাত বছরের বেশি সময় পর চীনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হবে প্রথম সফর। দুই দেশ ২০২০ সালের প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষের পর উত্তেজনা কমানোর দিকে কাজ করছে।

শেষবার শি চিন পিং ও পুতিনের সঙ্গে মোদির একই মঞ্চে দেখা হয় গত বছরের ব্রিকস সম্মেলনে রাশিয়ার কাজানে। তখন ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা নেতারা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে উপেক্ষা করেছিলেন। নয়াদিল্লিতে রুশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন যে মস্কো আশা করছে, শিগগিরই চীন ও ভারতের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা হবে।

‘শি চিন পিং এ সম্মেলনকে ব্যবহার করতে চাইবেন একটি নতুন ও মার্কিন-নেতৃত্বাধীন নয় এমন এক বৈশ্বিক ব্যবস্থার চিত্র হিসেবে। তা ছাড়া, জানুয়ারি থেকে হোয়াইট হাউসের যেসব চেষ্টা চীন, ইরান, রাশিয়া এবং এখন ভারতকে মোকাবিলা করার জন্য করা হয়েছে, সেগুলো কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আনতে পারেনি’, বলেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান দ্য চায়না-গ্লোবাল সাউথ প্রজেক্টের প্রধান সম্পাদক এরিক ওল্যান্ডার।

‘ব্রিকস ট্রাম্পকে কতটা চমকে দিয়েছে, তা দেখুন—এটি করার জন্যই মূলত এ ধরনের জোট করা হয়েছে’, বলেন এরিক ওল্যান্ডার।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা গত সপ্তাহে বলেছেন, এ বছরের এসসিও সম্মেলন ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সবচেয়ে বড় হবে। তিনি বলেন, এই ব্লক একটি ‘নতুন ধরনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ার গুরুত্বপূর্ণ শক্তি’।

প্রাথমিকভাবে নিরাপত্তাভিত্তিক এ ব্লক ছয়টি ইউরেশীয় দেশের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি ১০টি স্থায়ী সদস্য এবং ১৬টি সংলাপ সহযোগী ও পর্যবেক্ষক দেশে সম্প্রসারিত হয়েছে। কার্যপরিধিও নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপ থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক এবং সামরিক সহযোগিতায় বিস্তৃত হয়েছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ সম্মেলনে ‘সম্প্রসারণ’ অনেক দেশের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে তাঁরা একমত যে বছরের পর বছর এই ব্লক সরাসরি ফলপ্রসূ সহযোগিতা দিতে পারেনি। তা ছাড়া, চীন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে সাউথ ব্লকের শক্তি প্রদর্শনের দৃশ্যমান অবস্থা দেখতে চায়, বিশেষ করে বর্তমানে যখন বিশ্ব রাজনীতি অস্থিতিশীল।

‘এসসিও ঠিক কোন লক্ষ্য নির্দেশ করে এবং এর বাস্তবায়ন কেমন—তা বেশ অস্পষ্ট। এটি একটি প্ল্যাটফর্ম, যা বড় নেতাদের একত্র করতে পারে এবং তারা নিজেদের অবস্থান ও বার্তা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারেন’, বলছেন বেঙ্গালুরুর গবেষণাপ্রতিষ্ঠান তক্ষশীলা ইনস্টিটিউটের ইন্দো-প্যাসিফিক রিসার্চ প্রোগ্রামের চেয়ারপারসন মনোজ কেওয়ালরামানি। তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা সমস্যার সমাধানে এসসিওর কার্যকারিতা খুব সীমিত।’

প্রধান সদস্য দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্ব এখনো রয়েছে। গত জুনে এসসিও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সভায় যৌথ বিবৃতি গৃহীত হয়নি। কারণ, ভারত আপত্তি তুলেছিল যে এতে কাশ্মিরে হিন্দু পর্যটকদের ওপর ২২ এপ্রিলের হামলার উল্লেখ নেই। ওই হামলা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দশকের সবচেয়ে বড় সীমান্ত সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যায়। সভায় ইসরায়েলের ইরান আক্রমণের ঘটনায় এসসিওর নিন্দাতেও যোগ দেয়নি নয়াদিল্লি।

তবে সীমান্তে পাঁচ বছর ধরে চলা উত্তেজনার পর ভারত ও চীন সম্প্রতি কিছুটা নমনীয় হয়েছে। এর সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন শুল্ক চাপের প্রেক্ষাপটে, সম্মেলনের ফাঁকে সি ও মোদির মধ্যে ইতিবাচক বৈঠকের আশা তৈরি হয়েছে।

এরিক ওল্যান্ডার বলেন, ‘ভারত সম্ভবত তার অহংকার চেপে রেখে ও এবারের এসসিও-সংক্রান্ত সমস্যাগুলো ভুলে গিয়ে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে এগোবে। এখন মোদির জন্য এটাই বড় অগ্রাধিকার।’

বিশ্লেষকেরা আশা করছেন, চীন–ভারত উভয় পক্ষ সীমান্তে আরও কিছু পদক্ষেপ ঘোষণা করতে পারে। যেমন, সৈন্য প্রত্যাহার, বাণিজ্য ও ভিসা সীমাবদ্ধতা শিথিল, জলবায়ুর মতো নতুন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং সরকারি পর্যায়ে ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন।

যদিও ওই সম্মেলন থেকে বড় কোনো নীতির ঘোষণা আসার কথা নয়, তবু বিশেষজ্ঞরা বলছেন—দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য এ জোটকে হালকাভাবে নেওয়া ঠিক হবে না। ওল্যান্ডারের মতে, এই সম্মেলনের আসল গুরুত্ব হলো—এর দৃশ্যমানতা (বিশ্বমঞ্চে নিজেদের উপস্থিতি ও শক্তির প্রদর্শন)। এটি প্রকৃতপক্ষেই গুরুত্বপূর্ণ।

সম্মেলনের পর চীন থেকে মোদির দেশে ফেরার আশা করা হচ্ছে। আর পুতিন বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সামরিক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য অবস্থান করবেন। রাশিয়ার বাইরে এটি হবে তার জন্য সচরাচর দৃশ্যমান নয়—এমন দীর্ঘ সময় কাটানো।

সূত্র: রয়টার্স


ইসরায়েলে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ

গাজায় অভিযান বন্ধের দাবি
আপডেটেড ২৬ আগস্ট, ২০২৫ ২৩:৪৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজায় চলমান সামরিক অভিযান অবিলম্বে বন্ধ ও হামাসের হাতে আটক থাকা বাকি জিম্মিদের দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভকারীরা সমাবেশ করছেন। ওই দাবিতে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। খবর বিবিসির।
এতে একদিকে যেমন রয়েছে জিম্মিদের পরিবার অন্যদিকে ইসরায়েলের সাধারণ মানুষও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। দেশজুড়ে এই বিক্ষোভের আয়োজন করেছে হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরাম নামের একটি গ্রুপ যারা অনেকদিন ধরেই জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টিতে সরকারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছে।
তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তিনি যুদ্ধবিরতি চুক্তি চূড়ান্ত করতে সহায়তা করেন এবং হামাসের হাতে আটক থাকা জিম্মিদেরকে মুক্ত করতে ভূমিকা রাখেন।
ধারণা করা হচ্ছে, হামাস যাদেরকে জিম্মি করে নিয়ে গিয়েছিল তাদের মাঝে ২০ জন এখনো জীবিত আছেন। এদিকে ইসরায়েলের প্রধান প্রধান সড়ক অবরোধ করে এই বিক্ষোভ চলায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দেশজুড়ে মহাসড়কগুলোতে এখন গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা।
তেল আবিবের উত্তরে ইয়াকুম জংশনের কাছে কোস্টাল হাইওয়ে বা রুট টুতে বিক্ষোভকারীরা সড়কের মাঝখানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ায় ওই মহাসড়ক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া মাতান জাঙ্গাউকারের মা আইনাভ জাঙ্গাউকার গতকাল মঙ্গলবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কড়া সমালোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ৬৯০ দিন ধরে সরকার কোনো সুস্পষ্ট লক্ষ্য ছাড়াই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। আজ এটা পরিষ্কার যে নেতানিয়াহু একটি জিনিসকেই ভয় পান। আর তা হলো জনগণের চাপ। আমরা এই যুদ্ধ আরও এক বছর আগেই শেষ করতে পারতাম এবং সকল জিম্মি ও সেনাদেরকে ফিরিতে আনতে পারতাম। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বারবার বেসামরিক মানুষদের বলি দেওয়ার পথ বেছে নিয়েছেন।
ইসরায়েলজুড়ে এই প্রতিবাদটি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি বিমান হামলা চলছে এবং ইসরায়েল সেখানে স্থল অভিযান চালানোরও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এর আগে গতকাল দক্ষিণ গাজার একটি হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন সাংবাদিক এবং চারজন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।
গাজায় একদিনে নিহত আরও ৮৬ ফিলিস্তিনি
গাজায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর টানা হামলায় একদিনে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮৬ জন ফিলিস্তিনি। গত রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আহত হয়েছেন আরও ৪৯২ জন। গত সোমবার রাতের দিকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৫৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন ইসরায়েলি বাহিনীর নিক্ষিপ্ত গোলায়। বাকি ২৮ জন নিহত হয়েছেন খাদ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সেনাদের এলোপাতাড়ি গুলিতে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত ‘সোমবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন হাসপাতালগুলোতে ৮৬ জনের মরদেহ ও ৪৯২ জন আহতকে আনা হয়েছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ অনেকেই ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা রয়েছেন, কিন্তু পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ও জনবল না থাকায় উদ্ধার সম্ভব হচ্ছে না।’
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত সোমবারের পর পর্যন্ত গাজায় মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২ হাজার ৭৪৪ জনে। আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯ জন ফিলিস্তিনি।
এদিকে গত ১৯ জুন যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাস দুই মাসের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও ১৮ মার্চ সেই যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ওই সময় থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মাসে নিহত হয়েছেন অন্তত ১০ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি এবং আহত হয়েছেন ৪৬ হাজার ২১৮ জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত মে মাসের শেষ দিক থেকে ত্রাণ ও খাদ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া সাধারণ মানুষদের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। ২৭ মে প্রথমবারের মতো গাজায় ত্রাণ নিতে যাওয়া মানুষের ওপর গুলি চালানো হয়, এরপর থেকে নিয়মিতই এমন ঘটনা ঘটছে। এ সময়ের মধ্যে শুধু ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন ২ হাজার ১২৩ জন ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও ১৫ হাজার ৬১৫ জনের বেশি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন হামাস ইসরায়েলের ভেতরে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা চালায়। সেই হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাসের যোদ্ধারা। এর জবাবে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। টানা ১৫ মাসের বেশি সময় যুদ্ধ চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপে ইসরায়েল গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল।
জিম্মি হওয়া ২৫১ জনের মধ্যে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জন এখনো জীবিত আছেন বলে ধারণা করছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। তাদের উদ্ধারে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল একাধিকবার গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে। এমনকি জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, হামাসকে পুরোপুরি দুর্বল ও অকার্যকর না করা এবং জিম্মিদের মুক্ত না করা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।


ভারতে সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা

‘প্রধানমন্ত্রীকেও পদত্যাগ করতে হতে পারে’, অমিত শাহের বিস্ফোরক মন্তব্যে তোলপাড়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতে ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। এই বিলের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক কাঠামোকে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিরোধী দলগুলো।

বিল নিয়ে বিতর্কের মাঝে নতুন আলোড়ন ছড়িয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্য। সংসদে এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘আইনের শাসন সবার ওপরে। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীকেও জবাবদিহি করতে হবে, এমনকি পদত্যাগ করতেও হতে পারে।’

এই মন্তব্য দেশটির পার্লামেন্ট ভবন থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিল পেশ প্রসঙ্গে বিরোধী শিবিরের নেতারা অভিযোগ করছেন, সরকার সংবিধানের মূল কাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চাইছে।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দাবি করেছেন, ‘এটি সংবিধান আক্রমণের সমান, আমরা সর্বাত্মক আন্দোলনে নামব।’

অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এই বিল জনগণের কণ্ঠরোধের ফাঁদ। সরকার জনসমর্থন হারিয়ে ভয় দেখানোর পথ বেছে নিয়েছে।’

এ প্রেক্ষাপটে বিজেপির পক্ষ থেকে অমিত শাহ বলেন, ‘বিরোধীদের আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। সংবিধানের কাঠামো অক্ষুণ্ণ রয়েছে। আইন ভাঙলে বা সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করলে প্রধানমন্ত্রীও রেহাই পাবেন না। আমাদের গণতন্ত্রের শক্তি এটাই।’

তার এই মন্তব্য বিরোধীদের মধ্যে এক ধরনের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে কাজ করছে। কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ বলেন, ‘অমিত শাহ নিজেই স্বীকার করেছেন, এই বিলের পর পরিস্থিতি এমন দাঁড়াতে পারে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ অনিবার্য হবে।’

টাইমস অব ইন্ডিয়া এক বিশ্লেষণে বলেছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ প্রসঙ্গ টেনে এনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিরোধীদের হাতে অজান্তেই শক্তি তুলে দিলেন।’

আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, ‘এই বিতর্ক থেকে স্পষ্ট, বিজেপি ভেতরেই চাপ অনুভব করছে, যা বিরোধীরা সুযোগ হিসেবে নেবে।’

এদিকে দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে যেমন- মুম্বাই, কলকাতা ও চেন্নাইতেও মিছিল হয়েছে। ছাত্র সংগঠন, শ্রমিক ইউনিয়ন এবং নাগরিক মঞ্চগুলোও রাস্তায় নেমেছে। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা বিক্ষোভ করে বলে, ‘সংবিধান রক্ষা করতে না পারলে কোনো সরকার বৈধ নয়।’

অর্থনীতিবিদ এবং বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি দীর্ঘস্থায়ী হলে বিনিয়োগ ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।


ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাথানত করবে না: খামেনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসলামিক প্রজাতন্ত্র ইরানকে পরাধীন করার মার্কিন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় ফ্রন্ট গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। গত রোববার এই আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, ইরান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মাথানত করবে না। রাজধানী তেহরানের এক মসজিদে দেওয়া এই বক্তব্যর পরে খামেনির সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

ইসরায়েলের সঙ্গে টানা ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষের ২ মাস পর যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ওই আহ্বান জানিয়েছেন খামেনি। সেই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রও সীমিতভাবে অংশ নিয়ে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বাঙ্কার বাস্টার বোমা ব্যবহার করে হামলা চালিয়েছিল মার্কিন বাহিনী।

বর্তমানে নিজেদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর সঙ্গে নতুন করে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে ইরান।

আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি অভিযোগ করে বলেন, গত জুনে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যে হামলা চালিয়েছিল, তা ছিল ইসলামী প্রজাতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনার অংশ।

তিনি বলেন, একেবারে যুদ্ধের শুরুতেই ইরান আক্রান্ত হওয়ার পরদিনই আমেরিকার অ্যাজেন্টরা ইউরোপে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে সরকারের পতন কারা ইসলামী প্রজাতন্ত্র শাসন করবেন, সেই বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন।

খামেনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আসল উদ্দেশ্য হলো- ইরানকে নিজের ইচ্ছামতো চালানো এবং ওয়াশিংটনের ‘আনুগত্যে বাধ্য করা’।

তবে জুনের যুদ্ধ ইরানকে ভাঙ্গেনি বরং আরও শক্ত করেছে বলে মনে করেন দেশটির এই সর্বোচ্চ নেতা। তিনি বলেন, ‘ইরানি জাতি দেশের সেনাবাহিনী, সরকার ও ব্যবস্থার পাশে থেকে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে শত্রুদের শক্তিশালী আঘাত করেছে।’

বিদেশি শক্তিগুলো এখন ভেতর থেকে ইরানকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন খামেনি। তিনি বলেন, ‘শত্রুর মূল কৌশল হলো- দেশে বিভেদ তৈরি করা। আমেরিকা আর ইসরায়েলের অ্যাজেন্টরা ইরানি সমাজে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে।’

দেশবাসীর প্রশংসা করে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘আজ আল্লাহর অশেষ কৃপায় দেশ ঐক্যবদ্ধ। মতের অমিল থাকলেও যখন দেশের সামগ্রিক ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ও শত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গ আসে, তখন জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যান।’

১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লব আর যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে জিম্মি সংকটের পর থেকেই ইরান-আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন রয়েছে। তারপর থেকে দেশটির বিরুদ্ধে একের পর এক কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ওয়াশিংটনের এসব নিষেধাজ্ঞার বেশিরভাগই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর আরোপ করা হয়েছে।

ওয়াশিংটন ও তার মিত্ররা অভিযোগ করে বলেছে, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চাইছে; যা তেহরান বারবার অস্বীকার করেছে। গত জুনে যুদ্ধে ইরান-আমেরিকার পারমাণবিক আলোচনার ষষ্ঠ দফার বৈঠক শুরুর আগেই তেহরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। যুদ্ধের কারণে সেই আলোচনা থমকে যায়।

মঙ্গলবার ইউরোপের তিন দেশ- ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে ইরানের। তবে ইউরোপীয় শক্তিগুলো হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, কোনো চুক্তিতে না পৌঁছালে ইরানের বিরুদ্ধে আবারও নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনবে তারা।


গাজার নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি হামলায় চার সাংবাদিকসহ নিহত ১৯

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজার দক্ষিণাঞ্চলে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় অন্তত চার ফিলিস্তিনি সাংবাদিকসহ ১৯ জন নিহত হয়েছেন, জানিয়েছে উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল সোমবারের এ হামলায় নিহতদের মধ্যে চারজন সাংবাদিক আছেন বলে নিশ্চিত করেছে গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তর।

দপ্তরটি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাসের হাসপাতালে আরও চারজন সাংবাদিক নিহত হওয়ায় গাজায় শহীদ সাংবাদিকের সংখ্যা ২৪৪ জনে দাঁড়িয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ওই সাংবাদিকরা শহীদ হন যখন ইসরায়েলি দখলদাররা খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে বোমাবর্ষণ করে। ওই সময় সেখানে একদল সাংবাদিক একটি প্রেস কাভারেজ মিশনে ছিলেন। ইসরাইলের এই ভয়ঙ্কর অপরাধে আরও অনেকে শহীদ হয়েছেন। আমরা ইসরাইলি দখলদারদের, মার্কিন প্রশাসন এবং যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো যেসব দেশ এ গণহত্যার অপরাধে অংশ নিচ্ছে তাদের এ জঘন্য অপরাধগুলো সংঘটনের জন্য পুরোপুরি দায়ী বলে মনে করছি।

নাসের হাসপাতালে হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া এক সাংবাদিক আল-জাজিরাকে জানিয়েছেন, দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের কারণে তারা বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট থেকে বঞ্চিত, তাই ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা খবর পাঠাতে হাসপাতালের এ পরিষেবাগুলো ব্যবহার করে আসছেন।

তিনি বলেন, আমরা সবসময় আহত ফিলিস্তিনিদের অনুসরণ করছি। জানাজা, দাফন থেকে শুরু করে অপুষ্টির ঘটনাগুলোও হাসপাতাল থেকেই জানতে পারছি ও প্রতিবেদন করছি আমরা।

এ কারণেই ফিলিস্তিনি সাংবাদিকরা গাজার হাসপাতালগুলোকে তাদের শিবিরে পরিণত করেছিলেন। সেখানেই তাদের ওপর হামলা চালানো হলো।

ইসরায়েলি বাহিনী প্রথমে বিস্ফোরক ভর্তি একটি আত্মঘাতী ড্রোন দিয়ে হামলা চালায়। ড্রোনটি নাসের হাসপাতালের ছাদে আঘাত হানে। এতে এক সাংবাদিক নিহত ও কয়েকজন আহত হন।

গাজার দমকল বাহিনী নিহতের মৃতদেহ ও আহতদের উদ্ধার করা শুরু করে আর অন্য সাংবাদিকরাও খবর সংগ্রহে সেখানে ভিড় করেন। সেখানে বেসামরিকরাও ছিল। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনী একই জায়গায় আবার আঘাত হানে, সেখানে আরেকটি ড্রোন হামলা চালায় তারা।

এতে প্রথম হামলার ঘটনা কাভার করতে থাকা সাংবাদিকদের পাশাপাশি উদ্ধারকাজে রত দমকল কর্মীরাও নিহত হন। নিহতদের মধ্যে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) জন্য কাজ করা এক সাংবাদিকও আছেন বলে বার্তা সংস্থাটি নিশ্চিত করেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে একজন তাদের চুক্তিভুক্ত ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন বলে নিশ্চিত করেছে।

নিহত অন্য দুই সাংবাদিকের মধ্যে একজন আল জাজিরার জন্য এবং অপরজন এনবিসি নেটওয়ার্কের জন্য কাজ করতেন বলে জানা গেছে।

আহতদের মধ্যে রয়টার্সের আরেকজন সাংবাদিক আছেন বলে আল জাজিরা জানিয়েছে।

নাসের হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাবের আল-আসমার বলেছেন, অপ্রতুল উপকরণ নিয়েই আমরা হাসপাতালের ভেতরে আমাদের কাজ করছিলাম। সবাই যখন কাজে ব্যস্ত তখনই ভয়াবহ হামলাটি চালানো হয়।

তিনি জানান, এই হামলার কারণে হাসপাতালটিতে থাকা রোগীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই জোড়া হামলায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে চার সাংবাদিক ও একজন দমকল কর্মী রয়েছেন।

এই হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বা দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর কোনো মন্তব্য করেনি।


ট্রাম্প-লি’র বৈঠকের পর ১০৩টি বোয়িং ক্রয়ের ঘোষণা সিউলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান পরিবহন সংস্থা কোরিয়ান এয়ার প্রায় ৩ হাজার ৬শ’ কোটি ডলারের একটি চুক্তি করেছে। গতকাল সোমবার ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউংয়ের মধ্যে বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর দুই কোম্পানির মধ্যে এই চুক্তি হয়।

সিউল থেকে এএফপি আজ একথা জানিয়েছে।

এই চুক্তির আওতায় কোরিয়ান এয়ার বোয়িংয়ের কাছ থেকে ১০৩টি যাত্রীবাহী বিমান কিনবে। এমন সময়ে চুক্তিটি হলো, যখন ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য বাণিজ্যিক সহযোগী দেশগুলোকে চাপ দিচ্ছেন।

বোয়িং ও কোরিয়ান এয়ারের পক্ষ থেকে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বোয়িং এর ৭৮৭, ৭৭৭ ও ৭৩৭ মডেলের বিমানগুলো এই চুক্তির আওতায় থাকবে।

কোরিয়ান এয়ারের প্রধান ওয়াল্টার চো আশা করছেন, এসব বিমান তাঁর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হলে বিমানবহরকে আধুনিকায়ন করবে। দক্ষিণ কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান সংস্থা আসিয়ানা এয়ারলাইনসের সঙ্গে একীভূত হওয়ার পরও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে কোম্পানির জন্য এই চুক্তি সহায়ক হবে।

গতকাল লি জে মিউং ও ট্রাম্পের বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যের ওপর গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র আরোপিত ১৫ শতাংশ শুল্কের বিষয়েও আলোচনা হয়।

সোমবার দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী নেতাদের বৈঠকের সময় বোয়িং এবং কোরিয়ান এয়ারের এই চুক্তি ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যমন্ত্রী কিম জুং-কোয়ান সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

সিউলের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৈঠকে সই হওয়া একাধিক চুক্তির মধ্যে কোরিয়ান এয়ারের এই চুক্তি ছিল অন্যতম।

এ ছাড়া গতকাল দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই মোটর গ্রুপ ঘোষণা দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিনিয়োগ ২ হাজার ১শ’ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৬শ’ কোটি ডলার করছে। ট্রাম্প ও লি’র বৈঠকের অল্প সময় পর প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন কারখানা স্থাপন করবে। সেখানে বছরে ৩০ হাজার রোবট উৎপাদনের সক্ষমতা থাকবে।

বোয়িংয়ের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ বিভাগের প্রধান স্টেফানি পোপ কোরিয়ান এয়ারের ক্রয়াদেশকে একটি ‘যুগান্তকারী চুক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন।

বোয়িং বলেছে, এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃস্টি হবে। বিশ্বজুড়ে কোম্পানিটির কর্মীর সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি।

নতুন এই কেনাকাটাসহ কোরিয়ান এয়ার চলতি বছর বোয়িংকে ১৫০টির বেশি ক্রয়াদেশ দিয়েছে কিংবা বিমান কেনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সোমবার দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই মোটর গ্রুপ ঘোষণা দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রে তাদের বিনিয়োগ ২ হাজার ১শ’ কোটি ডলার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ৬শ’ কোটি ডলার করছে।

বেশ কিছুদিন ধরেই বিমান বেচাকেনার এই পরিকল্পনা চলছিল। গত মার্চ মাসে সিউল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, কোরিয়ান এয়ার বোয়িং ও মার্কিন ইঞ্জিন নির্মাতা জি ই অ্যারোস্পেসের সঙ্গে চূড়ান্ত চুক্তি করতে চলেছে। গতকাল জি ই-এর সঙ্গে ১ হাজার ৩৭০ কোটি ডলারের চুক্তিও ঘোষণা করা হয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়া কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে বোয়িংকে বড় ধরনের অর্ডার দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

গত জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির অংশ হিসেবে ১শ’টি বোয়িং যুদ্ধ বিমান কিনতে সম্মত হয়েছে জাপান।

ইন্দোনেশিয়ার উড়োজাহাজ সংস্থা গারুদা যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক কমানোর চুক্তির অংশ হিসেবে ৫০টি বোয়িং জেট কিনবে।

এসব চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর বিক্রিকে তাদের ইউরোপীয় প্রতিদ্বন্দ্বী এয়ারবাসের বিক্রিকে ছাড়িয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বোয়িংকে ধারাবাহিকভাবে কয়েকটি সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে। এর মধ্যে আছে দুটি মারাত্মক দুর্ঘটনা এবং মাঝ আকাশে বিমানের একটি অংশ ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা।

২০১৮ সালে জাকার্তা থেকে ওড়ার পর একটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ১৮৯ জন আরোহী নিহত হন। কয়েক মাস পরে ইথিওপিয়া থেকে উড্ডয়নের পরপরই আরেকটি বোয়িং বিমানের দুর্ঘটনায় ১৫৭ জন মারা যান। ২০২৪ সালে উড়ন্ত অবস্থায় একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স বিমানে জরুরি বহির্গমন দরজার প্যানেল খুলে যায়। এ ছাড়া গত বছর প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক আট সপ্তাহ ধর্মঘট করায় বোয়িংয়ের মার্কিন কারখানাগুলোয় উৎপাদন কম হয়।


একই দিনে জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন ইউনূস,মোদি ও শেহবাজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন আগামী সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে একই দিনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে ৯ সেপ্টেম্বর, আর উচ্চপর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক চলবে ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

এদিকে মে মাসে চার দিনের সংঘর্ষের পর প্রথমবারের মতো ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী একই দিনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে উপস্থিত হবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

জাতিসংঘ কর্মকর্তাদের শেয়ার করা একটি প্রাথমিক সময়সূচি অনুযায়ী, পাকিস্তানের কৌশলগত সুবিধা থাকতে পারে, কারণ তারা ভারতের পর ভাষণ দেবে। ফলে নয়াদিল্লির বক্তব্যের সরাসরি জবাব দেওয়ার সুযোগ পাবে ইসলামাবাদ।

প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ উচ্চপর্যায়ের পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন।

এ দলে থাকবেন উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার এবং প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা তারিক ফাতেমি।

প্রথমে বক্তব্য রাখবে ব্রাজিল, এরপর যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন। এ বছরের থিম হচ্ছে: ‘একসঙ্গে আরো ভালো: শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের জন্য ৮০ বছর ও তার পরেও।’

প্রাথমিক তালিকা অনুযায়ী, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সকালে ভাষণ দেবেন, আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীসহ ইসরায়েল, চীন ও বাংলাদেশের নেতারা একই দিনের পরবর্তী সময়ে বক্তব্য দেবেন।

৮০তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ হতে যাচ্ছে সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে ব্যস্ত কূটনৈতিক আসরগুলোর একটি। এটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ, ইউক্রেন সংঘাত এবং মে মাসের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। ইসলামাবাদের বার্তা স্পষ্ট: দক্ষিণ এশিয়ার অস্থিরতা বিশ্ব উপেক্ষা করতে পারে না, আর স্থায়ী শান্তির মূল চাবিকাঠি হলো কাশ্মির।

প্রাথমিক সময়সূচি অনুযায়ী, ২৪ সেপ্টেম্বর জলবায়ুবিষয়ক একটি বিশেষ অনুষ্ঠান এবং ২৬ সেপ্টেম্বর পারমাণবিক অস্ত্র সম্পূর্ণ বিলোপের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।


ব্রহ্মপুত্রে পাল্টাপাল্টি বাঁধ নিয়ে চীন-ভারত পানিযুদ্ধের শঙ্কা

ক্যাপশন:  ভারতের অরুণাচলে সিয়াং নদীতে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে ভারত। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ব্রহ্মপুত্র নদে চীন বিশ্বের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এমন ঘোষণার সময় থেকেই ভারতে উদ্বেগ দানা বেধেছিল। এবার ভারতও নদের একাংশে পাল্টা বাঁধ নির্মাণ করতে যাচ্ছে।

চারজন কর্মকর্তা ও ভারত সরকারের নথির বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ওই নথিটি চীনের বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করে তৈরি করা হয়েছে। ভারতের কর্মকর্তাদের শঙ্কা, চীন ব্রহ্মপুত্রে বাঁধ দিলে শুষ্ক মৌসুমে ভারতে পানির প্রবাহ ৮৫ শতাংশ কমতে পারে। তাই সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় দিল্লিও নিজস্ব বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

চীন বাঁধ নির্মাণ করছে তিব্বতের ইয়ারলুং জাংবো নদীতে। এটি ভারতের অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তবর্তী। ইয়ারলুং জাংবো ভারতে প্রবেশের পর সিয়াং ও ব্রহ্মপুত্র নদ নামে পরিচিত। ভারত এই নদের অরুণাচল অংশে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে। যেটির নাম ‘আপার সিয়াং মাল্টিপারপাস স্টোরেজ ড্যাম’। এর আগেও ভারত পানি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছিল। তবে তা অরুণাচলের বাসিন্দাদের প্রতিবাদের মুখে বন্ধ থাকে। স্থানীয়দের শঙ্কা, যেকোনো বাঁধের কারণে গ্রামের পর গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাবে।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীন অরুণাচলের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি জলবিদ্যুৎ বাঁধ নির্মাণের ঘোষণা দেয়। এ অবস্থায় নয়াদিল্লি আশঙ্কা করছে, চীন নদীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়াকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। তাই গত মে মাসে ‘আপার সিয়াং মাল্টিপারপাস স্টোরেজ ড্যাম’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ কোম্পানি। দুটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, ভারতের শীর্ষ কর্মকর্তারা চলতি বছরের মধ্যে বাঁধ নির্মাণকাজে গতি আনতে সভা করছেন। এর মধ্যে গত জুলাইয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর।

বেইজিং এখনও বাঁধ নির্মাণের বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করেনি। তবে নয়াদিল্লি চীনা বাঁধের একটি সম্ভাব্য আকার ধরে নিয়ে বিশ্লেষণ তৈরি করেছে। সূত্র ও নথি অনুযায়ী, দিল্লি অনুমান করছে চীনা বাঁধ বেইজিংকে সর্বোচ্চ ৪০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেবে। ভারতে যেটির প্রভাব পরবে শুষ্ক মৌসুমে। এই সময় ভারতের অংশে নদীতে পানির প্রবাহ কমে যায়। সেক্ষেত্রে ‘আপার সিয়াং মাল্টিপারপাস স্টোরেজ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ১৪ বিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি সংরক্ষণ করা যাবে। যেটি চীনের বাঁধের প্রভাব কিছুটা শিথিল করবে। অর্থ্যাৎ, এই প্রকল্প থেকে শুষ্ক মৌসুমে ভারত পানি ছাড়তে পারবে।

আবার অসময়ে চীন পানি ছাড়লে সে ধাক্কা মোকাবিলার কথাও বিবেচনা করেছে ভারত। এ জন্য তারা তাদের বাঁধের অন্তত ৩০ শতাংশ সবসময় খালি রাখতে চায়। যাতে চীনের অংশ থেকে ছাড়া পানি এখানে সংরক্ষণ করা যায়।

রয়টার্সের এক প্রশ্নের জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছেন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো বৈজ্ঞানিক গবেষণার মধ্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এতে নিরাপত্তা ও পরিবেশের বিষয় গুরুত্ব পেয়েছে। যাতে নিচু দেশগুলোর ওপর কোনো প্রভাব না পড়ে। এই মুখপাত্র আরও বলেন, চীন সীমান্তবর্তী নদীগুলোর উন্নয়ন ও ব্যবহারে দায়িত্বশীল মনোভাব বজায় রেখেছে। ভারত ও বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বজায় রেখেছে।

ভারতের বাঁধ নির্মাণ পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে নরেন্দ্র মোদির দপ্তর, পানি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো জবাব দেয়নি। রাষ্ট্রায়ত্ত জলবিদ্যুৎ কোম্পানিও মন্তব্য করেনি। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আগে জানিয়েছিল, ১৮ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এই বাঁধ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। আগস্টেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের এক সহকারী সংসদ সদস্যদের বলেছিলেন, নাগরিকদের জীবন ও জীবিকা রক্ষার জন্য সরকার কিছু প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে বাঁধের বিষয়টিও আছে।

ভারত বাঁধ নির্মাণ নিয়ে খোদ নিজ দেশেই প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। গত মে মাসে জাতীয় জলবিদ্যুৎ কোম্পানির কর্মীরা অরুণাচলের পারং গ্রামে জরিপ করতে যান। সে সময় স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা যন্ত্রপাতি ভাংচুর করে। এই জনতার অনেকে অরুণাচলের পাহাড়ি উপত্যকায় ধান, কমলা লেবু ও বাতাবি লেবু চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তারা আঞ্চলিক সড়কগুলোতে অস্থায়ী পাহারা চৌকি বসিয়েছেন, যাতে জলবিদ্যুৎ কোম্পানির কর্মীরা এলাকায় প্রবেশ করতে না পারে।

রয়টার্সকে দুটি সূত্র জানিয়েছে, অন্তত ১৬টি পুরোনো গ্রাম বাঁধের জলাধারে তলিয়ে যাবে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এতে সরাসরি প্রভাবিত হবে ১০ হাজারের বেশি মানুষ। তবে স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর নেতাদের হিসাব অনুযায়ী, ক্ষতিগ্রস্ত হবে ১ লাখের বেশি মানুষ।

স্থানীয় এক ব্যবসায়ী ওডোনি পালো পবিন বলেন, আমরা এই জমিতে যে এলাচ, ধান, কাঁঠাল আর নাশপাতি ফলাই, তা দিয়ে সংসার চলে। সন্তানদের পড়াশোনার খরচ বহন করি। আমরা জীবন বাজি রেখে হলেও এই বাঁধের বিরুদ্ধে লড়ব।

চীন আশা করছে তাদের বাঁধ নির্মাণ কাজ ২০৩০ সালের মধ্যে শেষ হবে। ভারতের আপার সিয়াং প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর কাজ শেষ হতেও এক দশক সময় লাগতে পারে। এর মানে হলো, চীনের বাঁধের কাজ আগে শেষ হবে। অপরদিকে ভারতের কাজ তখনো চলমান থাকবে। এই সময় চীন পানি ছাড়লে ভারতের নির্মাণাধীন বাঁধ ক্ষতির মুখে পড়বে।

স্থানীয়দের মতে, তিব্বত ও অরুণাচলের যে স্থানে চীন ও ভারত বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সেগুলো উচ্চমাত্রার ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা। বাঁধ হলে স্বাভাবিকভাবেই আশপাশের বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারত-চীন পানি সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ সায়নাংশু মোদকও বলছেন, চীনের বাঁধ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। তাই ভারতকে অবশ্যই চীনের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনায় বসা উচিত।


banner close