যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতে আবারও হোয়াইট হাউসে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এই জয় অনেক দিক থেকেই ঐতিহাসিক। তিনিই হতে যাচ্ছেন ইতিহাসের প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি ফৌজদারি মামলার আসামি। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে অংশ নিয়ে দুবার জয় পেয়েছেন তিনি। চার বছর আগে জো বাইডেনের কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিলেও এবার ট্রাম্পের অসাধারণ প্রত্যাবর্তন দেখেছে সারাবিশ্ব। হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে বড় পরিবর্তন হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রাশিয়া, ইউক্রেন এবং ন্যাটো
নির্বাচনী প্রচারাভিযানের সময় ট্রাম্পকে একাধিকবার বলতে শোনা গেছে, তিনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ ‘একদিনে বন্ধ’ করে দিতে পারেন। তবে সেটা কীভাবে করবেন সেই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য তিনি কিছু বলতে চাননি। গত মে মাসে ট্রাম্পের দুই প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা প্রধানের লেখা এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছিল, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখা উচিত। তবে কিয়েভের রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় প্রবেশের বিষয়কে শর্তসাপেক্ষে সমর্থন করা উচিত।
রাশিয়াকে ‘প্রলুব্ধ’ করতে, পশ্চিমারা ন্যাটোতে ইউক্রেনের বহু কাঙ্ক্ষিত অন্তর্ভূক্তিকে বিলম্বিত করার প্রতিশ্রুতি দিতে পারে এ বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টারা বলেছিলেন, ইউক্রেন যে রাশিয়ার দখল থেকে তাদের সব অঞ্চল ফিরে পেতে পারে, সেই আশা ত্যাগ করা উচিত নয়। তবে এই আলোচনা হওয়া উচিত বর্তমানের ‘ফ্রন্ট লাইনের’ ভিত্তিতে। যুদ্ধ বন্ধ করার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ দৃষ্টিভঙ্গি ন্যাটোর ভবিষ্যত সম্পর্কিত কৌশলগত ইস্যুতেও প্রভাব ফেলতে পারে। এই মুহূর্তে ৩০টিরও বেশি দেশ ন্যাটোর অংশ। কিন্তু ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই এই জোটের বিষয়ে সন্দেহপ্রবণ ছিলেন। অন্যদিকে আমেরিকার সুরক্ষার প্রতিশ্রুতির সুযোগ ইউরোপ নিচ্ছে বলেও অতীতে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
তবে ন্যাটো থেকে সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেবেন কি না সেটা একটা বিতর্কের বিষয়।
মধ্যপ্রাচ্য
ইউক্রেনের মতোই মধ্যপ্রাচ্যে ‘শান্তি’ আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর অর্থ হলো তিনি গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ এবং লেবাননে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ যুদ্ধের ইতি টানবেন। কিন্তু তা তিনি কীভাবে করবেন সে বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি বারবার দাবি করেছেন, জো বাইডেনের পরিবর্তে যদি তিনি ক্ষমতায় থাকতেন তাহলে ইরানের ওপর তার ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের নীতির কারণে হামাস ইসরায়েলে আক্রমণ করতো না। অনুমান করা যায়, ক্ষমতায় এসে তার দ্বিতীয় মেয়াদেও ট্রাম্প সেই নীতিই মেনে চলার চেষ্টা করবেন যার ভিত্তিতে তার প্রশাসন ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে এনেছিল। সে সময় ইরানের ওপর বৃহত্তর নিষেধাজ্ঞা জারি এবং ইরানের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে ইসরায়েলের সবচেয়ে ভালো বন্ধু বলে উল্লেখ করেছেন। এদিকে ফিলিস্তিনিরা ট্রাম্প প্রশাসনকে বয়কট করেছিল। কারণ ফিলিস্তিনিদের জাতীয় ও ধর্মীয় জীবনের ঐতিহাসিক কেন্দ্র হওয়া সত্ত্বেও জেরুজালেমের প্রতি তাদের (ফিলিস্তিনিদের) দাবিকে গুরুত্ব দেয়নি ওয়াশিংটন।
ফিলিস্তিন আরও ‘বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়ে যখন ট্রাম্প তথাকথিত ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’-এর মধ্যস্থতা করেছিলেন যাকে ইসরায়েল এবং বেশ কয়েকটি আরব ও মুসলিম দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য একটি ঐতিহাসিক চুক্তি হিসাবে দেখা হয়। এই মধ্যস্থতার সময় শর্ত হিসাবে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে ফিলিস্তিনকে মেনে নিতে হয়নি। এর পরিবর্তে, এই চুক্তিতে সামিল দেশগুলো ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিনিময়ে উন্নত মার্কিন অস্ত্র ব্যবহারের সুবিধা পেয়েছিল। এতে ধীরে ধীরে আরও কোণঠাঁসা হয়ে পড়ে ফিলিস্তিন। নির্বাচনী প্রচারণার সময় বেশ কয়েকটি বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি গাজায় চলমান যুদ্ধের অবসান চান। কিন্তু নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার একটা জটিল সম্পর্ক রয়েছে, যা মাঝে মাঝে ‘অকার্যকর’ অবস্থারও সম্মুখীন হয়েছে। তবে এটা ঠিক যে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ প্রয়োগ করার ক্ষমতা তার রয়েছে।
চীন ও বাণিজ্য
চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি সে দেশের বৈদেশিক নীতির কৌশলগতভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যা বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও বাণিজ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ক্ষমতায় থাকাকালীন, ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনকে সে দেশের ‘কৌশলগত প্রতিযোগী’ হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন। একইসঙ্গে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিছু ক্ষেত্রে চীনা আমদানির ওপর শুল্কও আরোপ করেছিলেন। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসাবে মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বেইজিংও শুল্ক আরোপ করে। এই ‘দ্বন্দ্বের’ অবসান ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু ততদিনে কোভিড মহামারীর প্রকোপ দেখা দেয়। দুই দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি হয় যখন ট্রাম্প করোনাভাইরাসকে ‘চীনা ভাইরাস’ বলে আখ্যা দেন। সে সময় বাইডেন প্রশাসন দাবি করে, তারা চীন নীতির প্রতি আরও দায়িত্বশীল দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছে। কিন্তু বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই চীনা আমদানির ক্ষেত্রে ট্রাম্প-প্রশাসনের শুল্ককেই বজায় রেখেছে তারা।
বাণিজ্য নীতির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প, উৎপাদন এবং সেই সংক্রান্ত কাজে মার্কিনদের অগ্রাধিকারের বিষয়ে জুড়ে দিয়ে ভোটারদের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট ধারণা তৈরি করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে ইস্পাতের মতো ঐতিহ্যবাহী মার্কিন শিল্পে দীর্ঘমেয়াদী চাকরির সুযোগ কমে আসার একটা বড় কারণ কারখানার অটোমেশন এবং উত্পাদনগত পরিবর্তন। এর পেছনে বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা এবং অফ-শোরিংর মতো কারণ তুলনামূলক ভাবে কমই দায়ী। ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংকে একই সঙ্গে বিপজ্জনক এবং একজন অত্যন্ত কার্যকর নেতা হিসাবে প্রশংসা করেছেন।
যে ৭টি কাজকে প্রাধান্য দিতে চান ট্রাম্প
অবৈধ অভিবাসী বিতাড়ন: ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণার সময় অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করারও অঙ্গীকার করেছিলেন। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী- এ ধরনের বিপুল পরিমাণ অভিবাসী বের করে দেওয়ার বিষয়টি আইনগত এবং যৌক্তিকভাবে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। এ বিষয়টি মার্কিন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধীর করে দিতে পারে।
অর্থনীতি, ট্যাক্স ও শুল্ক: নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা যে দুটি ইস্যুকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তার একটি অর্থনীতি। তবে ট্রাম্প আগেই মুদ্রাস্ফীতির লাগাম টানার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে মুদ্রাস্ফীতি ফের কমে আসার আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনে এটি বেশ উচ্চ স্তরে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে পণ্যের দামকে সরাসরি প্রভাবিত করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সীমিত।
জলবায়ু নীতিমালা সংস্কার: ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবার ক্ষমতায় এসে শতাধিক পরিবেশ সুরক্ষা আইন প্রত্যাহার এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তির মতো আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে থেকে আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নেন। এবারও তিনি পরিবেশ সংক্রান্ত আইন শিথিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মূলত, মার্কিন গাড়ি শিল্পকে সহায়তা করার লক্ষ্যে তিনি এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ: ইউক্রেনে টানা আড়াই বছর ধরে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তায় রশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা করছে কিয়েভ। রাশিয়ার সাথে এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। একইসঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সংঘাত শেষ করার প্রতিশ্রুতিও দেন।
গর্ভপাত নিষিদ্ধকরণ ইস্যু: প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে সমর্থকদের আপত্তি থাকার পরও কমলা হ্যারিসের বিপরীতে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে জাতীয়ভাবে গর্ভপাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আইনে স্বাক্ষর করবেন না। ২০২২ সালে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাতের ওপর সাংবিধানিক অধিকার বাতিল করে। গর্ভপাতের অধিকার ছিল কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং কয়েকটি রাজ্য নির্বাচনের দিন গর্ভপাতের অধিকার সংরক্ষণ বা সম্প্রসারণের পক্ষে-বিপক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়। ট্রাম্প নিজে বারবার বলেছেন, গর্ভপাত নিয়ে রাজ্যগুলোর নিজেদের আইন করার স্বাধীনতা থাকা উচিত।
ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় জড়িতদের ক্ষমা: ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলা হয়। জো বাইডেনকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যৌথ অধিবেশনের সময় সেখানে হামলা করেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের কয়েক হাজার উন্মত্ত সমর্থক। ওই দাঙ্গায় পুলিশ সদস্যসহ নিহত ৫ জন প্রাণ হারান। ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার মাত্র দুই সপ্তাহ আগে হওয়া এই হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের উসকানি ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে ট্রাম্প বরারবই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।
জ্যাক স্মিথকে অব্যাহতি: সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেছিলেন ক্ষমতা গ্রহণের ‘দুই সেকেন্ডের মধ্যে’ তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা পরিচালনাকারী কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথকে চাকরিচ্যুত করবেন। বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দেয়ার চেষ্টার অভিযোগে এবং গোপনীয় তথ্যের ভুল ব্যবস্থাপনার অভিযোগে দুটি পৃথক অভিযোগ করেছেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ভবিষ্যৎ কী?
ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হওয়া সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে কিছু মামলার নিষ্পত্তি হতে পারে। সিবিএস নিউজের তথ্যমতে, ট্রাম্পের আইনজীবী দল এবং মামলা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে কিছু মামলা বন্ধের প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের অনেক মামলার নিষ্পত্তি হতে পারে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে তাকে দায়মুক্তির বাইরে রাখার ব্যবস্থা কার্যকর হলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।
রাশিয়া অভিযোগ করেছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। যদিও কিয়েভ এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিকে এই ঘটনায় ইউক্রেনের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তিনি বলেছেন, মস্কোর আক্রমণ বন্ধ করার আলোচনার মধ্যে এটি সঠিক সময় নয়।’ ট্রাম্প আরও বলেন, আপনি জানেন কে আমাকে এ সম্পর্কে বলেছে? প্রেসিডেন্ট পুতিন। তিনি ভোরে আমাকে বলেছেন যে, তার ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এটি ভালো নয়। ট্রাম্প ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে অবস্থিত তার বাসভবনে সাংবাদিকদের বলেন, এতে খুব ক্ষুব্ধ হয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, এটি একটি নাজুক সময়। এটি সঠিক সময় নয়। আক্রমণাত্মক হওয়া এক জিনিস কারণ তারা আক্রমণাত্মক। কিন্তু তার বাড়িতে আক্রমণ করা অন্য জিনিস। এটি কোনো কিছু করার সঠিক সময় নয়।
এদিকে পুতিনের বাসভবনে হামলার বিষয়ে রাশিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালায়নি এবং মস্কো শান্তি আলোচনাকে ব্যহত করার চেষ্টা করছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ দাবি করেছেন, কিয়েভ রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম নভগোরোদ অঞ্চলে পুতিনের রাষ্ট্রীয় বাসভবনে ৯১টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
রাশিয়া জানিয়েছে, তারা এখন শান্তি আলোচনায় তাদের অবস্থান পর্যালোচনা করবে। তবে ওই হামলার সময় পুতিন কোথায় ছিলেন তা এখনো স্পষ্ট নয়।
জেলেনস্কি এই দাবিকে ‘রাশিয়ার মিথ্যাচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তার দাবি, ইউক্রেনের ওপর ক্রেমলিনের আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার অজুহাত দেওয়ার জন্যই এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত সোমবার টেলিগ্রামে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে ল্যাভরভ বলেছেন, পুতিনের বাসভবনে যে ৯১টি ড্রোন ছোড়া হয়েছিল তার সবগুলোই রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা আটকানো এবং ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হামলার ফলে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) এক ফেসবুক পোস্টে মোদি বলেন, রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের বাসভবনকে লক্ষ্যবস্তু করার খবর নিয়ে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। চলমান কূটনৈতিক প্রচেষ্টাই সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার সবচেয়ে কার্যকর পথ। আমরা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে এসব প্রচেষ্টার ওপর মনোযোগ ধরে রাখার আহ্বান জানাই।
রাশিয়া অভিযোগ করেছে, দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। কিন্তু মস্কোর এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে কিয়েভ। রাশিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালায়নি এবং মস্কো শান্তি আলোচনাকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ দাবি করেছেন, কিয়েভ রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিম নভগোরোদ অঞ্চলে পুতিনের রাষ্ট্রীয় বাসভবনে ৯১টি ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
রাশিয়া জানিয়েছে, তারা এখন শান্তি আলোচনায় তাদের অবস্থান পর্যালোচনা করবে। তবে ওই হামলার সময় পুতিন কোথায় ছিলেন তা এখনো স্পষ্ট নয়।
জেলেনস্কি এই দাবিকে ‘রাশিয়ার মিথ্যাচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তার দাবি, ইউক্রেনের ওপর ক্রেমলিনের আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার অজুহাত দেওয়ার জন্যই এসব অভিযোগ আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, রাশিয়া এর আগে কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছিল। জেলেনস্কি এক্সে এক পোস্টে বলেন, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে বিশ্ব এখন চুপ করে থাকবে না। আমরা রাশিয়াকে স্থায়ী শান্তি অর্জনের কাজকে দুর্বল করার অনুমতি দিতে পারি না।
গত সোমবার টেলিগ্রামে শেয়ার করা এক বিবৃতিতে ল্যাভরভ বলেছেন, পুতিনের বাসভবনে যে ৯১টি ড্রোন ছোড়া হয়েছিল তার সবগুলোই রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা আটকানো এবং ধ্বংস করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হামলার ফলে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা তাস জানিয়েছে, রাশিয়ার আমেরিকার সাথে আলোচনার প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে আসার কোনো ইচ্ছা নেই।
সামরিক অভ্যুত্থানের পাঁচ বছর পর মিয়ানমারে গত রোববার (২৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে বিপুল ভোটের বিজয়ের দাবি করেছে দেশটির জান্তাপন্থি রাজনেতিক দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি)।
সোমবার দলটির জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রথম ধাপের নির্বাচনে ভূমিধস জয়ের দাবি করেছেন।
এর আগে, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও গণতন্ত্র পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত ওই ‘পাতানো’ নির্বাচন সামরিক শাসনকে আরও শক্তিশালী করবে।
২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সশস্ত্র বাহিনী। ক্ষমতায় আসার চার বছরের বেশি সময় পর দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয় সামরিক জান্তা।
তিন ধাপে মাসব্যাপী এই নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে রোববার (২৮ ডিসেম্বর)। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে সামরিক বাহিনী।
ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (ইউএসডিপি) জ্যেষ্ঠ ওই সদস্য এএফপিকে বলেছেন, যেসব শহরে ভোট গণনা শেষ হয়েছে, সেখানকার নিম্নকক্ষের মোট ১০২টি আসনের মধ্যে আমরা ৮২টিতে জয়ী হয়েছি।
তার এই হিসাব অনুযায়ী, রোববার নিম্নকক্ষের যেসব আসনে ভোট হয়েছে, তার ৮০ শতাংশের বেশি আসনই পেয়েছে দলটি। ইউএসডিপিকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বেসামরিক প্রক্সি দল হিসেবে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, রাজধানী নেপিদোর আটটি শহরের সবগুলোতেই ইউএসডিপি জয়ী হয়েছে। ফলাফল প্রকাশের অনুমতি না থাকায় নিজের পরিচয় গোপন রাখতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।
২০২০ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) কাছে ইউএসডিপির ভরাডুবি ঘটেছিল। অভ্যুত্থানের পর এনএলডি বিলুপ্ত ঘোষণা করে জান্তা এবং রোববারের ব্যালটে দলটির নাম ছিল না।
নোবেলজয়ী অং সান সু চি অভ্যুত্থানের পর থেকে আটক রয়েছেন। অভ্যুত্থানের পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। পশ্চিমা বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান মিয়ানমারের এই একতরফা নির্বাচনের নিন্দা জানিয়েছেন।
তারা বিরোধী মত দমনে কঠোর দমন-পীড়ন ও প্রার্থীদের তালিকায় সামরিক বাহিনীর মিত্ররা জায়গা পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ থিঙ্কট্যাংকের গবেষণা ফেলো মর্গান মাইকেলস বলেন, নির্বাচনে ইউএসডিপির আধিপত্য বিস্তার করাটা স্বাভাবিকই মনে হয়।
এএফপিকে তিনি বলেন, এই নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য নয়। আগেভাগেই জান্তা নিয়ন্ত্রিত প্রশাসন কারচুপি করে, বিভিন্ন দলকে নিষিদ্ধ, কিছু মানুষকে ভোটদান থেকে বিরত রেখে অথবা ভোট দিতে এলে জোরজবরদস্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট প্রার্থীকে ভোটদানে বাধ্য করছেন।
মিয়ানমারের ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফল এখনো প্রকাশ করেনি। আরও দুই ধাপে আগামী ১১ ও ২৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
ইয়াঙ্গুনের বাসিন্দা মিন খান্ত বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমার অবস্থান পরিষ্কার—আমি এই পাতানো নির্বাচনকে একেবারেই বিশ্বাস করি না।
২৮ বছর বয়সি ওই তরুণ বলেন, আমরা একনায়কতন্ত্রের অধীনে বাস করছি। তারা নির্বাচন করলেও ভালো কিছু হবে বলে আমার মনে হয় না। কারণ তারা সব সময়ই মিথ্যা বলে।
রোববার ভোট দেওয়ার পর সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর ওপর আস্থা রাখা যেতে পারে, কারণ তারা ক্ষমতা বেসামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারের হাতে তুলে দেবে। গত পাঁচ বছর ধরে মিয়ানমার শাসন করে আসছেন এই জান্তা।
নেপিদোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। এই নির্বাচন সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আয়োজন করা হয়েছে, আমরা আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে দিতে পারি না।
দেশটির ৩৩০টি শহরের মধ্যে ১০২টিতে রোববার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, যা তিন ধাপের ভোটের মধ্যে সবচেয়ে বড় পর্ব। তবে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে নিম্নকক্ষের প্রায় প্রতি পাঁচটির একটি আসনে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয় বলে জান্তা সরকার স্বীকার করেছে।
অবশেষে যেন সায়েন্স ফিকশন বই বা স্টার ওয়ার্সের কল্পকাহিনী বাস্তবে রূপ নিল। প্রথম ইসরায়েল আকাশ পথে আসা যেকোনো ধরনের হামলা প্রতিহত করতে লেজারভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছে। আয়রন ডোমের আদলে নতুন এই লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আয়রন বিম’। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
এই লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূলে আছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গবেষণা ও উন্নয়ন দপ্তর এবং ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা খাতের সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান রাফায়েল (রাফাল যুদ্ধবিমানখ্যাত ফরাসি দসল্ট রাফাল নয়)।
ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ওই দপ্তর ও রাফায়েলের প্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিমান বাহিনীর হাতে লেজার ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণভার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল ক্যাটজ বলেন, ‘বিশ্বে প্রথমবারের মতো একটি উচ্চ ক্ষমতার লেজারভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর হয়েছে। ইতোমধ্যে এটি সাফল্যের সঙ্গে বেশ কয়েকটি হামলা প্রতিহত করতে পেরেছে।’ এই পর্বতসম অর্জন আমাদের কাছের ও দুরের শত্রুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। আমাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবেন না। ছুঁড়লে পরিণাম ভয়ংকর হবে’, বলেন ক্যাটজ।
প্রায় এক দশক ধরে এই প্রকল্পের কাজ চলছিল। এই অর্জনকে বিশ্লেষকরা বড় ধরনের মাইলফলকের আখ্যা দিয়েছেন।
রাফায়েলের চেয়ারম্যান ইউভাল স্টেনিৎজ বলেন, ‘বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ইসরায়েলের হাতে এখন আকাশ পথে আসা যেকোনো ধরনের হামলা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার একটি কার্যকর লেজার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আছে। এটা রকেট ও মিসাইলও ঠেকাতে সক্ষম।’
এটি ইসরায়েলের সুপরিচিত আয়রন ডোম ও ডেভিডেস স্লিং ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশটিকে সুরক্ষা দেবে। লেজার ব্যবস্থা প্রথাগত ক্ষেপণাস্ত্রভিত্তিক সুরক্ষা ব্যবস্থার চেয়ে সাশ্রয়ী হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আয়রন ডোমের মাধ্যমে ছোট পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলার বিরুদ্ধে সুরক্ষা পাওয়া যায়। ডেভিলেস স্লিং ও কয়েক প্রজন্মের অ্যারো মিসাইল ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে। এগুলোর উদ্দেশ্য যেকোনো ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা।
ডিসেম্বরের শুরুতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, লেজার ব্যবস্থার কাজ শেষ হয়েছে এবং মাসের শেষ নাগাদ এটি মোতায়েন করা হবে।
ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলের সুরক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতা দৃশ্যমান হয়। তেহরান থেকে ছুটে আসা বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র সুরক্ষা ব্যবস্থাকে কাঁচকলা দেখিয়ে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আঘাত হানে।
ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে, ওই যুদ্ধে ৫০টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যভেদ করেছে এবং এতে ২৮ ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
তাইওয়ান ঘিরে ব্যাপক সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। দ্বীপটির গুরুত্বপূর্ণ এলাকা দখল ও অবরোধের অনুশীলনসহ এই মহড়াকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা হিসেবে উল্লেখ করেছে বেইজিং। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
এতে বলা হয়, এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’। এতে দেশটির সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর সঙ্গে রকেট ফোর্সও অংশ নিয়েছে। মহড়ার অংশ হিসেবে সরাসরি গোলাবর্ষণসহ বিভিন্ন রণনীতি অনুশীলন করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে তাইওয়ানের কাছে ১১ বিলিয়ন ডলারের বৃহৎ অস্ত্র প্যাকেজ বিক্রির ঘোষণার পর এই মহড়া শুরু করল চীন। ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বেইজিং এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে কয়েকটি মার্কিন প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনেছে।
চীন তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে আসছে। এদিকে তাইওয়ানের চলতি বছরে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদারের উদ্যোগও বেইজিংয়ের ক্ষোভ বাড়িয়েছে। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় চীনের এই সামরিক মহড়ার সমালোচনা করে একে আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে তারা দ্বীপটির আশপাশে চীনা যুদ্ধবিমান ও জাহাজ শনাক্ত করেছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে নিজেদের বাহিনী ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করা হয়েছে এবং সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে বাহিনী।
চীনের ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়েইবোতে এই মহড়াকে ‘ন্যায়ের ঢাল’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। এক পোস্টে বলা হয়, যারা স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তারা এই ঢালের মুখে ধ্বংস হয়ে যাবে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও মহড়াকে বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির জন্য কঠোর শাস্তি বলে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রসহ বহিরাগত শক্তিকে তাইওয়ান ইস্যুতে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বলেছেন, তাইওয়ান শান্তি বজায় রাখতে চায় এবং বর্তমান অবস্থান অক্ষুণ্ন রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, শান্তি টিকিয়ে রাখতে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা অপরিহার্য।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের পর থেকে তাইওয়ান প্রণালীতে নিয়মিত সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে চীন। চলমান এই মহড়াটি ইস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের নতুন প্রধান ইয়াং ঝিবিন দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম বড় মহড়া। একই সঙ্গে তাইওয়ানও নিজস্ব সামরিক মহড়ার মাধ্যমে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি জোরদার করে চলেছে, যা এ অঞ্চলের উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটি বৃদ্ধাশ্রমে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশের রাজধানী মানাদো শহরের ‘দামাই’ নামের একটি বৃদ্ধাশ্রমে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। প্রায় ১ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানায়, মানাদো শহরের ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ সংস্থার প্রধান জিমি রোটিনসুলু গণমাধ্যমকে জানান, নিহতদের অধিকাংশকেই তাদের নিজ নিজ কক্ষে পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগুন লাগার সময় তারা রাতের বিশ্রামে ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলছে। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং স্বজনদের হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, কয়েকজনের মৃতদেহ এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত যে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বৃদ্ধাশ্রমের পাশেই বসবাসকারী স্টিভেন মোকোদোমপিত জানান, তিনি উদ্ধারকাজে অংশ নেন। স্থানীয় গণমাধ্যম ডেটিককমকে তিনি বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে পৌছানোর সময় বৃদ্ধাশ্রমের রান্নাঘর থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ছিল। এ সময় একটি বিস্ফোরণের শব্দ ও সাহায্যের আর্তচিৎকার শোনা যায়। তিনি আরও বলেন, মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আগুন পুরো ভবন গ্রাস করে। পরে তিনি ও অন্যরা টেবিল ও মই ব্যবহার করে পেছন দিক দিয়ে বাসিন্দাদের উদ্ধার করেন।
উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়ায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তুলনামূলকভাবে ঘন ঘন ঘটে। চলতি মাসের শুরুতে রাজধানী জাকার্তার একটি ৭ তলা অফিস ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ২২ জন নিহত হয়েছিলেন।
ইরানে ২০২৫ সালে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) বিবিসিকে জানিয়েছে, চলতি ডিসেম্বরের শুরু পর্যন্ত তারা অন্তত ১ হাজার ৫০০ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার তথ্য যাচাই করতে পেরেছে। সংগঠনটি বলছে, এরপর আরও অনেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়ে থাকতে পারে। খবর বিবিসির।
আইএইচআর–এর তথ্য অনুযায়ী, সংগঠনটি ইরানে ২০২৪ সালে ৯৭৫ মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের তথ্য নিশ্চিত হতে পেরেছিল। তবে এটাই প্রকৃত সংখ্যা নয়। কেননা, ইরানের কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে কখনোই কোনো আনুষ্ঠানিক সংখ্যা প্রকাশ করে না।
বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, ইরানে এ বছরও মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। অন্য পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনের দেওয়া তথ্যের সঙ্গেও এ হিসাব মিলে যাচ্ছে।
এর আগে ইরান সরকার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছে, কেবল ‘সবচেয়ে গুরুতর অপরাধের’ ক্ষেত্রেই এই শাস্তি দেওয়া হয়ে থাকে।
পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র ২০২২ সালে ইরানজুড়ে ব্যাপক গণবিক্ষোভ হয়। তার আগে থেকেই দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে।
২২ বছর বয়সি মাশা ইরানের রাজধানী তেহরানে নীতি পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন। নিয়ম মেনে হিজাব না পরার কারণে তাকে আটক করা হয়েছিল।
এ ঘটনার পর দেশজুড়ে শুরু হওয়া প্রতিবাদ বহু বছর ধরে ইরানের ধর্মীয় শাসনের বৈধতার প্রতি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ইরানের কর্তৃপক্ষ ব্যাপক দমন–পীড়ন চালায়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়। আইএইচআর–এর যাচাই করা তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে ইরানে প্রায় ৫২০ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। পরের বছর সংখ্যাটি আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩২–এ।
ইরানে বিক্ষোভকারী কিংবা ‘গুপ্তচরদের’ কয়েকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। তবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া ব্যক্তিদের ৯৯ শতাংশই হত্যা বা মাদক–সংক্রান্ত অপরাধে দণ্ডিত ছিলেন। এ অনুপাত প্রায় অপরিবর্তিত রয়ে গেছে।
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা ইস্যুতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত রোববার (২৮ ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, বৈঠকে আগের চেয়ে অগ্রগতি হয়েছে, তবে দুই-একটি জটিল বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। যার মধ্যে ভূমি ইস্যু অন্যতম। খবর বিবিসির।
যদিও বৈঠকে দুর্দান্ত অগ্রগতির কথা জানিয়ে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলেনস্কি। আর অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসবেন বলেও জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
এদিকে জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের আগে পুতিনের সঙ্গে ফলপ্রসূ ফোনালাপের কথাও জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের সোয়া ঘণ্টার দুর্দান্ত ফোনালাপ হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিনও।
মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জেলেনস্কি জানান, ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ‘৯০ শতাংশ’ বিষয়ে তারা একমত হয়েছেন। অন্যদিকে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিষয়টি প্রায় ৯৫ শতাংশ চূড়ান্ত হয়েছে।
জেলেনস্কি পরে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের দলগুলো আগামী সপ্তাহে আরও আলোচনার জন্য বৈঠক করবে, যার লক্ষ্য হলো প্রায় চার বছরের যুদ্ধ শেষ করা।
মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, আমরা সব বিষয় নিয়ে গভীর আলোচনা করেছি এবং গত কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেন ও আমেরিকার প্রতিনিধিদলগুলো যে অগ্রগতি করেছে, তা আমরা গুরুত্ব দিয়ে মূল্যায়ন করেছি।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ চালায়। বর্তমানে মস্কো ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে।
রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা দনবাস অঞ্চলকে একটি নিরস্ত্রীকৃত এলাকা করার প্রস্তাব এখনো ‘সমাধান হয়নি’ বলে জানান ট্রাম্প।
মস্কো বর্তমানে দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রায় ৭৫ শতাংশ এবং পাশের লুহানস্কের প্রায় ৯৯ শতাংশ অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। এই অঞ্চলগুলো একসঙ্গে দনবাস নামে পরিচিত।
রাশিয়া চায় ইউক্রেন দনবাসের সেই ছোট অংশ থেকে সরে আসুক যা এখনও ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে আছে। কিয়েভ বলেছে, ওই এলাকা ইউক্রেনের সেনাদের নিয়ন্ত্রণে রেখে একটি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল করা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারবার ইউক্রেনের হারানো ভূখণ্ড নিয়ে তার অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। সেপ্টেম্বরে তিনি সবাইকে চমক দিয়ে বলেছিলেন, ইউক্রেন হয়তো ওই এলাকা ফিরিয়ে নিতে পারবে। পরে তিনি তার বক্তব্য পরিবর্তন করেন। তিনি বলেন, এটি একটি অত্যন্ত কঠিন বিষয়। কিন্তু এটি শেষ পর্যন্ত সমাধান হবে।
ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তার কাজ ‘৯৫ শতাংশ চূড়ান্ত’ হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে ইউক্রেনকে হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো লজিস্টিক সমর্থন বা সেনা মোতায়েনের প্রতিশ্রুতি দেননি তিনি।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আলোচনার সম্ভাবনার কথা উত্থাপন করেছেন এবং বলেছেন, এটি ‘সঠিক সময়ে’ হতে পারে।
এর আগে ট্রাম্পের রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপ হয়। যদিও ট্রাম্প ফোনালাপের অনেক বিস্তারিত জানাননি, তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন রাশিয়ার নেতা ‘ইউক্রেনের সফলতা চায়।’
একইসঙ্গে ট্রাম্প স্বীকার করেন, মস্কোর খুব বেশি আগ্রহ নেই এমন এক স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য যা ইউক্রেনকে গণভোট আয়োজনের সুযোগ দেবে।
রাশিয়ার বৈদেশিক নীতি উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, এই ফোনালাপ ট্রাম্পের উদ্যোগে হয়েছে এবং তিনি ও পুতিন যুদ্ধ শেষ করার জন্য সাম্প্রতিক ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছেন।
জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেনের কর্মকর্তারা জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করতে পারেন, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন আরও আলোচনা চূড়ান্ত করবে।
বৈঠকের পরে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে ফোনালাপে, ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লেইন ফ্লোরিডার আলোচনাকে ‘ভালো অগ্রগতি’ হিসেবে দেখছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রথম দিন থেকেই ইউক্রেনকে ‘দৃঢ় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দেওয়া প্রয়োজন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁও বলেছেন, কিয়েভের মিত্ররা আগামী মাসে প্যারিসে মিলিত হয়ে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা করবে।
ইউক্রেন যুদ্ধের ডামাডোলের মধ্যে রাশিয়ায় বিলিয়নিয়ার বা ধনকুবেরদের সংখ্যা সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। তবে ভ্লাদিমির পুতিনের গত ২৫ বছরের শাসনামলে রাশিয়ার এই প্রভাবশালী বিত্তবান গোষ্ঠী, যারা অলিগার্ক নামে পরিচিত, তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা বা প্রভাব প্রায় পুরোটাই হারিয়েছে তারা।
বিষয়টি রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য বেশ স্বস্তির। কারণ, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এই অতি ধনী গোষ্ঠীটিকে পুতিনের প্রতিপক্ষ বানাতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং পুতিনের ‘পুরস্কার ও শাস্তির’ নীতি তাদের একপ্রকার নীরব সমর্থকে পরিণত করেছে। তথ্যসূত্র: বিবিসি।
শাস্তির এই কড়াকড়ি ঠিক কীভাবে কাজ করে, তা সাবেক ব্যাংকিং বিলিয়নিয়ার ওলেগ তিনকভ খুব ভালো করেই জানেন।
ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে ইউক্রেন যুদ্ধকে ‘পাগলামি’ বলে সমালোচনা করার ঠিক পরদিনই ক্রেমলিন থেকে তার ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
তিনকভকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, যদি ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করা না হয়, তাহলে তৎকালীন রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ ব্যাংক তিনকভ ব্যাংককে জাতীয়করণ করা হবে।
নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনকভ বলেন, ‘আমি দাম নিয়ে আলোচনার সুযোগ পাইনি। অনেকটা জিম্মি হয়ে থাকার মতো অবস্থা, যা অফার করা হবে, তা-ই নিতে হবে। দর-কষাকষির কোনো উপায় ছিল না।’
এর এক সপ্তাহের মধ্যে ভ্লাদিমির পোতানিনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিষ্ঠান ব্যাংকটি কিনে নেয়।
উল্লেখ্য, পোতানিন বর্তমানে রাশিয়ার পঞ্চম শীর্ষ ধনী ব্যক্তি। রুশ যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিনের জন্য নিকেল সরবরাহ করেন তিনি।
তিনকভের দাবি অনুযায়ী, ব্যাংকটিকে তার প্রকৃত মূল্যের মাত্র ৩ শতাংশ দামে বিক্রি করতে বাধ্য করা হয়েছিল। শেষপর্যন্ত তিনকভ তার প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ হারান এবং রাশিয়া ছাড়তে বাধ্য হন।
পুতিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে পরিস্থিতি এমনটা ছিল না। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর রাশিয়ার উদীয়মান পুঁজিবাদের সুযোগ নিয়ে এবং বড় বড় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মালিকানা কুক্ষিগত করে একদল মানুষ অবিশ্বাস্য সম্পদের মালিক হয়ে ওঠেন।
রাজনৈতিক অস্থিরতার সেই সময়ে এই সম্পদ তাদের হাতে বিপুল ক্ষমতা ও প্রভাব এনে দেয়, যার ফলে তারা অলিগার্ক হিসেবে পরিচিতি পান।
রাশিয়ার সেই সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী অলিগার্ক বোরিস বেরেজোভস্কি দাবি করেছিলেন, ২০০০ সালে পুতিনকে ক্ষমতায় বসানোর নেপথ্যে মূল কারিগর ছিলেন তিনি।
তবে এর কয়েক বছর পরেই তিনি এর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ২০১২ সালে তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি তার (পুতিন) মধ্যে সেই লোভী স্বৈরশাসক ও জবরদখলকারীকে দেখতে পাইনি, যিনি কিনা স্বাধীনতাকে পদদলিত করবেন এবং রাশিয়ার উন্নয়ন থামিয়ে দেবেন।’
বেরেজোভস্কি হয়তো নিজের ভূমিকার কথা একটু বাড়িয়েই বলেছিলেন। তবে রাশিয়ার অলিগার্করা যে একসময় ক্ষমতার শীর্ষপর্যায়ে প্রভাব খাটানোর ক্ষমতা রাখতেন, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
এই ক্ষমাপ্রার্থনার ঠিক এক বছর পরেই যুক্তরাজ্যে নির্বাসনে থাকা অবস্থায় রহস্যজনকভাবে বেরেজোভস্কির মরদেহ পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে রাশিয়ার অলিগার্ক বা ধনকুবেরদের রাজনৈতিক দাপটেরও চূড়ান্ত অবসান ঘটে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউরোপের সঙ্গে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে লিপ্ত আছি। তারা চায় না, আমাদের দেশ স্থিতিশীল থাকুক। সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক সামনে রেখে গত শনিবার এ মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির ওয়েবসাইটে পেজেশকিয়ানের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়। সেখানে তিনি বলেন, বর্তমান যুদ্ধটি ১৯৮০-এর দশকে ইরাকের সঙ্গে ইরানের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ।
মাসুদ পেজেশকিয়ানের মতে, ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরাকের সঙ্গে ইরানের যে যুদ্ধ হয়েছিল, তার চেয়ে বর্তমান যুদ্ধটি ‘আরও জটিল ও কঠিন’। উল্লেখ্য, ইরাক-ইরান যুদ্ধে দুই পক্ষের প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
মাসুদ পেজেশকিয়ানের মতে, ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ইরাকের সঙ্গে ইরানের যে যুদ্ধ হয়েছিল, তার চেয়ে বর্তমান যুদ্ধটি ‘আরও জটিল ও কঠিন’। উল্লেখ্য, ইরাক-ইরান যুদ্ধে দুই পক্ষের প্রায় ১০ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে তার নির্ধারিত বৈঠকের দুই দিন আগে এ মন্তব্য করলেন পেজেশকিয়ান। ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর আলোচনায় ইরান প্রসঙ্গটি অত্যন্ত গুরুত্ব পাবে।
গত জুনে ১২ দিনের এক যুদ্ধে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল ও তার ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। এতে ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার, পরমাণুবিজ্ঞানীসহ প্রায় ১ হাজার ১০০ জন নিহত হন। জবাবে ইরানও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে ইসরায়েলে ২৮ জন প্রাণ হারান।
যুক্তরাষ্ট্র সফরে গেলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আজ সোমবার ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো রিসোর্টে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন তিনি। এক কর্মকর্তা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন। গত শনিবার তিনি বলেন, নেতানিয়াহু রোববার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রোববার রওনা হবেন এবং একদিন পর ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন। তবে তাদের সাক্ষাতের নির্দিষ্ট স্থান সম্পর্কে জানাননি তিনি।
নেতানিয়াহুর সফর এমন এক সময় হচ্ছে, যখন ট্রাম্প প্রশাসন এবং আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারীরা গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি দ্বিতীয় ধাপে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ট্রাম্পের সঙ্গে ওই বৈঠকে নেতানিয়াহু তেহরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ওয়াশিংটনকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এবার নেতানিয়াহুর লক্ষ্য ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্প।
শুধু ইসরায়েলি কর্মকর্তারাই নন, তাদের মার্কিন মিত্ররাও আবার ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছেন। এবার তাদের দাবি, তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্রকে তৎক্ষণাৎ মোকাবিলা করতে হবে; যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের সঙ্গে আরেকটি সংঘাত ট্রাম্পঘোষিত মার্কিন নীতির অগ্রাধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির সিনিয়র ফেলো সিনা তুসি বলেন, ট্রাম্প যেখানে ইসরায়েল ও আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাপ দিচ্ছেন, সেখানে নেতানিয়াহু এ অঞ্চলজুড়ে সামরিক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন।
সিনা তুসি বলেন, ইরানকে প্রকৃত অর্থে ভেঙে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী সংশ্লিষ্টতা ও অবিরাম যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ইসরায়েলের লক্ষ্যকেই প্রতিফলিত করে। তার (ইসরায়েল) লক্ষ্য, অপ্রতিদ্বন্দ্বী আধিপত্য, প্রশ্নাতীত প্রভাব ও সম্প্রসারণবাদ প্রতিষ্ঠা।
ইরানকে প্রকৃত অর্থে ভেঙে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী সংশ্লিষ্টতা ও অবিরাম যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ইসরায়েলের লক্ষ্যকেই প্রতিফলিত করে। তার (ইসরায়েল) লক্ষ্য, অপ্রতিদ্বন্দ্বী আধিপত্য, প্রশ্নাতীত প্রভাব ও সম্প্রসারণবাদ প্রতিষ্ঠা।
এ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এটাই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মূল লক্ষ্যগুলোর একটি এবং এ পথে ইসরায়েলকে সমর্থন দিতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিতে চান। তিনি বলেন, ‘কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ভিন্ন দিকে যাচ্ছে এবং তারা সরাসরি কোনো মার্কিন সামরিক সম্পৃক্ততা ছাড়াই এ অঞ্চলকে আরও বেশি স্থিতিশীল করতে চাইছে। এ প্রেক্ষাপটে (ইসরায়েলের) অবস্থান শেষ পর্যন্ত মুখোমুখি সংঘাতে গিয়ে ঠেকবে।’
ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে উপস্থাপন করছেন। যদিও ইসরায়েল প্রতিনিয়ত গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করছে। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনিই নাকি ৩ হাজার বছরে প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি এনেছেন।
আর ট্রাম্প প্রশাসনের সম্প্রতি প্রকাশিত জাতীয় নিরাপত্তাকৌশল বলছে, এ অঞ্চল ‘সহযোগিতা, বন্ধুত্ব ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে উদীয়মান হচ্ছে’। এটি এখন আর যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব নিরাপত্তাকৌশলে অগ্রাধিকার পাওয়া অঞ্চল নয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে নিজের সামরিক ও কৌশলগত উপস্থিতি কমানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এ সময়ে ইসরায়েল এমন এক যুদ্ধের জন্য দেন–দরবার করছে, যা ওয়াশিংটনকে আবার সংঘাতে টেনে আনতে পারে।
শুধু ইসরায়েলি কর্মকর্তারাই নন, তাদের মার্কিন মিত্ররাও আবার ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দামামা বাজাচ্ছেন। এবার তাদের দাবি, তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্রকে তৎক্ষণাৎ মোকাবিলা করতে হবে; যদিও বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইরানের সঙ্গে আরেকটি সংঘাত ট্রাম্পঘোষিত মার্কিন নীতির অগ্রাধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তাই ট্রাম্প নেতানিয়াহুর এ ফাঁদে পা দেবেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। নেতানিয়াহু যতই ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে নিজের নিরাপত্তা ও বিশ্বের জন্য প্রধান হুমকি হিসেবে উপস্থাপন করুন; ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেছেন, গত জুনে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচিকে সম্পূর্ণরূপে শেষ করে দিয়েছে।
জাপানের গানমা প্রদেশে একটি এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে ৫০টির বেশি যানবাহন। এতে অন্তত দুইজন নিহত এবং আরও অন্তত ২৬ জন আহত হয়েছেন। খবর বিবিসির।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সময় গত শুক্রবার রাতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। টোকিও থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে মিনাকামি শহরের কান-এতসু এক্সপ্রেসওয়েতে দুটি ট্রাকের সংঘর্ষ থেকে দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়। এরপর দ্রুতগতির আরও অনেক গাড়ি এসে ওই দুই গাড়ির ওপর আছড়ে পড়ে।
সংঘর্ষের পরই একের পর এক যানবাহনে আগুন ধরে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, এতে টোকিওর ৭৭ বছর বয়সি এক নারী এবং একজন ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তুষারপাতের সতর্কতার মধ্যে নিউ ইয়ারের ছুটি শুরু হওয়ায় সড়কে যানবাহনের চাপ বেশি ছিল। দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাকগুলো রাস্তা আটকে দিলে পেছন থেকে আসা গাড়িগুলো পিচ্ছিল সড়কে ব্রেক করতে না পেরে একের পর এক ধাক্কা খায়।
দুর্ঘটনার এক প্রান্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, এতে ডজনখানেক যানবাহন পুড়ে যায়। প্রায় সাত ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন দমকলকর্মীরা। পুলিশ বলেছে, আগুনে কেউ আহত হননি এবং প্রায় ৭ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।
এর আগে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ গত শুক্রবার গভীর রাতে ভারী তুষারপাতের বিষয়ে সতর্কতা জারি করে। সাধারণত প্রত্যেক বছর বহু জাপানি নববর্ষের ছুটি শুরু করেন। এই দুর্ঘটনার কারণ জানতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ভারতের কাশ্মিরে জৈশ ই মুহাম্মদ ও হিজবুল কমান্ডারদের খোঁজে বড় মাপের অভিযান শুরু হয়েছে। প্রায় ২০০০ সেনা জওয়ানকে এই অভিযানে নামানো হয়েছে। এ ছাড়া হিজবুল মুজাহিদিনের কমান্ডারের খোঁজও করছে সেনাবাহিনী। ছাত্রু গ্রাম এবং আশেপাশের এলাকায় সেনার এই অভিযান বিগত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলছে। সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, কাশ্মিরে জৈইশের স্থানীয় কমান্ডার সাইফুল্লাহ ও তার সহযোগী আদিল- এই দুজনেই এখন কিশতওয়ারের ডোডা অঞ্চলের পাহাড়ে লুকিয়ে আছে। এই জঙ্গিদের একেক জনের মাথার দাম ৫ লাখ রুপি করে। এই আবহে কিশতওয়ারের ছাত্রু নামক গ্রাম থেকে এই তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। ডোবা অঞ্চলের সেওজধারে চিরুনি তল্লাশি চলছে। পাশাপাশি কিশতওয়ারের এলাকাতেও অভিযান শুরু হয়েছে গত শনিবার থেকে। অন্যদিকে আরেক অভিযানে কিশতওয়ারের পাদ্দের সাবডিভিশনে হিজবুল জঙ্গি কমান্ডার জাহিঙ্গির সারুরির খোঁজ শুরু করেছে সেনা। এ ছাড়া তার দুই সহযোগী মুদ্দাসির এবং রিয়াজেরও খোঁজ চালানো হচ্ছে।