পাকিস্তানে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) ডাকা বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। পিটিআইয়ের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যা শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ সফল করতে মরিয়া ইমরান খানের দল। অন্যদিকে তাদের থামিয়ে দিতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামাবাদের আশপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনীর ব্যাপক বাধার মুখেও কিছু পিটিআই কর্মী এরই মধ্যে ডি-চকে পৌঁছে গেছে। সরকার ও বিরোধী দলটির মধ্যে আলোচনায়ও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। মূলত রোববার দলটির নেতাকর্মীরা রাজধানী ইসলামাবাদের দিকে যাত্রা শুরু করে। তবে সরকারি বাধায় তা থমকে যায়। পরে ইসলামাবাদের দিকে ফের যাত্রা শুরু করে তারা।
এর আগে আদিয়ালা কারাগার থেকে এক বিবৃতিতে ইমরান খান বলেছেন, ইসলামাবাদে যে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে তা স্থগিত করা হবে না। কারণ এখন পর্যন্ত তার মুক্তির ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে না। ইমরান খান বলেন, আমার দলের নেতাদের মাধ্যমে সমাবেশ বন্ধের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে নেতাদের মুক্তির বিষয়ে কোনো কথা বলা হচ্ছে না।
ইসলামাবাদের কেন্দ্রস্থলে ইমরান খানের সমর্থকরা
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকরা পুলিশ, রেঞ্জার্স এবং সেনাবাহিনীর সব বাধা অতিক্রম করে রাজধানী ইসলামাবাদের মূল কেন্দ্র ডি-চকে পৌঁছেছেন। তবে সেখানে পৌঁছানোর পর তারা আবারও তীব্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছেন। সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, ডি-চকে ইমরান খানের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এছাড়া সমর্থকদের অনেককে কনটেইনার বেয়ে প্রতিবন্ধকতা পেরোতে দেখা গেছে। এসময় কনটেইনারের ওপর সেনাবাহিনীর সদস্যদের অবস্থান করতেও দেখা গেছে।
রোববার ইমরানের মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগসহ সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বাতিলের দাবিতে সমর্থকরা সারা দেশ থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সমর্থকদের দাবি, এই সংশোধনীর মাধ্যমে উচ্চ আদালতের স্বাধীনতা সীমিত করা হয়েছে। ইসলামাবাদে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শাহবাজ শরীফের সরকার সংবিধানের ২৪৫ ধারা অনুযায়ী সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে একটি বিশাল গাড়ি বহর জিরো পয়েন্টে পৌঁছেছে। তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হলে সমর্থকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিকে ইটপাটকেল ছুড়তে দেখা যায়। ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দাবি করেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় তাদের তিন সদস্য নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, সরকার জানিয়েছে, পিটিআই সমর্থকদের হামলায় রেঞ্জার্স এবং পুলিশের ছয় সদস্য নিহত হয়েছে। সব বাধা সত্ত্বেও ইমরানের সমর্থকদের থামাতে না পেরে প্রশাসন রাওয়ালপিন্ডি থেকে আরও এক হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করেছে।
দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ, ইন্টারনেটের ধীরগতি
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকা ‘চূড়ান্ত বিক্ষোভে’রাজধানী ইসলামাবাদ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ইমরান সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু এই কঠোর নির্দেশের পরও বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় থাকা ঠেকানো যায়নি। সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে চারজনই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।
ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ইসলামাবাদের ডি চকে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে। দলের একটি অংশ ইতিমধ্যেই সেখানে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। প্রশাসন আরও কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি জানিয়েছেন, সরকার বারবার আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে পিটিআই নেতৃত্ব আলোচনা থেকে শুধু সময় নিয়েছে এবং রাজধানীর দিকে অগ্রসর হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইসলামাবাদের আইজিকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন তিনি।
এদিকে, সংঘর্ষের মধ্যেই মুলতান, রাজনপুর, গুজরাটসহ কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটছে। পাঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ সোমবার ৪ হাজারের বেশি পিটিআই নেতাকর্মীকে আটক করেছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন পার্লামেন্ট সদস্যও রয়েছেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তা শাহিদ নওয়াজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইমরান খান মাসের শুরুতে কারাগার থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন, যাকে তিনি ‘চূড়ান্ত ডাক’ বলে উল্লেখ করেছেন। এরপর থেকে তার সমর্থকেরা রাজধানীর দিকে অগ্রসর হন। তাদের দাবি, বন্দি নেতাদের মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগ।
২০২২ সালে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ইমরান খান একাধিক মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদসহ ১৫০টির বেশি মামলা রয়েছে। ২০২৩ সালের মে মাসে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। তবে পিটিআই এই মামলা ও অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে আসছে।
প্রসঙ্গত, ইমরান খানের গ্রেপ্তার ঘিরে এর আগেও দেশব্যাপী সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে। তারমুক্তি এবং দলের ওপর চাপ কমানোর দাবিতে সমর্থকেরা ফের রাস্তায় নেমেছে।
অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা নতুন কিছু নয়। তবে নতুন তথ্য হচ্ছে সমুদ্রপথে ইউরোপ প্রবেশের দ্বার হিসেবে বিবেচিত দ্বীপ দেশ ইতালিতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে বাংলাদেশিদের সংখ্যা। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাকে (ইউএনএইচসিআর) উদ্ধৃত করে এ তথ্য প্রকাশ করেছে অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইনফোমাইগ্র্যান্টস।
ইনফোমাইগ্র্যান্টসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে ইতালি যাওয়া অভিবাসনপ্রত্যাশী শরণার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক গিয়েছে বাংলাদেশ থেকে। এ সময় সমুদ্রপথে ইতালি গিয়েছে ৪৯ হাজার ৬৯১ জন অভিবাসী। এদের মধ্যে ১২ হাজার ৭০২ জনই বাংলাদেশি, যা মোট আগমনের ২০ শতাংশ। আর গত জানুয়ারি থেকে মার্চে ইতালি প্রবেশ করা অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে বাংলাদেশি ছিল ২৩ শতাংশ।
ইনফোমাইগ্র্যান্টসের গবেষণা তথ্য বলছে, গত ১০ মাসে ইতালিতে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে প্রবেশ করা অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের পর দ্বিতীয় অবস্থানে সিরিয়া। মোট আগমনের ১৮ শতাংশই এসেছে এই দেশটি থেকে। এর পরই আছে তিউনিশিয়া (১২ শতাংশ), মিসর (৬ শতাংশ), গিনি (৫ শতাংশ), পাকিস্তান (৫ শতাংশ), সুদান (৩ শতাংশ), ইরিত্রিয়া (৩ শতাংশ), মালি (৩ শতাংশ) ও গাম্বিয়ার (২ শতাংশ) নাম।
বেড়েছে সিরীয় অভিবাসনপ্রত্যাশী : এ বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি সিরীয় ইতালি পৌঁছেছে। তখনো নতুন করে দেশটিতে সংঘাত শুরু হয়নি। ২০১৩ ও ২০১৪ সালের পর এই প্রথম এত বেশিসংখ্যক সিরীয় সমুদ্রপথে ইতালিতে গিয়েছে। চলতি বছর সিরিয়া থেকে যাওয়া শরণার্থীদের ৭৭ শতাংশ পুরুষ, ৭ শতাংশ নারী, ১১ শতাংশ শিশু ও ৬ শতাংশ সঙ্গীবিহীন শিশু।
প্রসঙ্গত, এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে ইউরোপে প্রবেশের দ্বার হিসেবে বিবেচনা করা হয় ইতালিকে। এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মানব পাচারকারীরা ইউরোপে চাকরিসহ উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে হাজার হাজার নারী-পুরুষকে প্রথমে আফ্রিকার দেশ লিবিয়াসহ আশেপাশের দেশগুলোতে জড়ো করে থাকে। লিবিয়ায় সাবেক স্বৈরশাসক গাদ্দাফির পতনের পর দেশটির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক নয়। এরই সুযোগ নিয়ে দেশটিতে বিশাল মানবপাচার বলয় সৃষ্টি করে রেখেছে সুযোগ সন্ধানী মাফিয়ারা। চাকরির প্রলোভনে আসা বিভিন্ন দেশের ভিসাবিহীন অভিবাসন প্রত্যাশীদের মূলত সেখানে জড়ো করা হয়। এরপর মাফিয়ারা এদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালিয়ে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে আরও অর্থ পাঠাতে নির্দেশ দেয়। এরপর সাধারণ নৌকায় বা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় জবরদস্তির মাধ্যমে এসব বিপদগ্রস্ত মানুষকে ভূমধ্যসাগরে ভাসিয়ে দেয়। এসব নৌকার গন্তব্য থাকে ভূমধ্যসাগরের অপর প্রান্তের দ্বীপ দেশ ইতালি। এসব নৌকা উল্টে গিয়ে অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়। আর যারা ইতালির কাছাকাছি পৌঁছায় স্বাভাবিকভাবেই ইতালির পুলিশ তাদের নামতে দিতে চায় না। অনেক নৌকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। সেখানেও গুলি, অনাহার ইত্যাদি কারণে অনেক অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু ঘটে। এরপরেও যারা প্রবেশ করে তাদের বেশিরভাগেরই কপালে জোটে হাজতবাস। ইউএনএইচসিআর যে তালিকা প্রকাশ করে মূলত তাদের বেশিরভাগই হয়ে থাকে হাজতে বা শেল্টার হোমে জায়গা পাওয়া বিভিন্ন দেশের নাগরিক- যাদের একটি বড় অংশই বাংলাদেশের, এদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক আবার রোহিঙ্গা- যারা গোপনে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে নিরাপদ জীবনের প্রত্যাশায় এই অজানা বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে পা বাড়ায়।
এ ছাড়াও তিউনিশিয়া, তুরস্ক ও আলজেরিয়ার উপকূল থেকে ইতালি পথে অনিশ্চিত ইউরোপযাত্রায় পা বাড়ায় অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। এ বছরের প্রথম ১০ মাসে মোট অভিবাসনপ্রত্যাশীর ৭৬ শতাংই গিয়েছে লিবিয়ার উপকূল থেকে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানায়, নভেম্বরে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকারী অভিবাসীদের অন্তত ৭৫ শতাংশ ইতালির দক্ষিণের ছোট দ্বীপ লাম্পেদুসায় গিয়ে পৌঁছেছে। সমুদ্রপথে যাওয়া বাকি ২৫ শতাংশ অভিবাসী পৌঁছেছে ইতালির পোৎজালো, ত্রাপানি, জেনওয়া, রোকেলা আইওনিকা, রেজিও ক্যালাব্রিয়া, ক্রোটন, আওগুস্তা, কাতানিয়া, নেপলস, সিরাকুজে, ভিবো ভ্যালেন্তিয়া, লিভর্নো, লাম্পিওনি, পোর্তো পিনো, অর্তোনা, আনকোনা, পালেরমো, ব্রিন্দসি, সালেরনো, কাপো তেওলাদা, সিভিটাভেসিয়া ও পুলায়।
নভেম্বরে আগমন বেড়েছে ৪২ শতাংশ : গত নভেম্বরে সমুদ্রপথে আট হাজার ১০০ জন অভিবাসী ইতালি পৌঁছেছে। অক্টোবরের চেয়ে এ সংখ্যা বেড়েছে ৪২ শতাংশ। ওই মাসে সমুদ্রপথে ইতালি পৌঁছেছে পাঁচ হাজার ৭২২ জন।
গত ৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
এদিকে চলতি বছর ইতালিতে অভিবাসী আগমন ২০২৩ সালের চেয়ে তুলনামূলক অনেক কমেছে। এ বছরে মাসভিত্তিক হিসাবেও দেখা গেছে, আগমনের তারতম্য রয়েছে। ২০২৪ সালে জানুয়ারিতে দেশটিতে গিয়েছে দুই হাজার ২৫৮, ফেব্রুয়ারিতে দুই হাজার ৩০১, মার্চে ছয় হাজার ৮৫৭, এপ্রিলে চার হাজার ৭২১, মে মাসে চার হাজার ৯৭৬, জুনে চার হাজার ৯০২, জুলাইয়ে সাত হাজার ৪৬৫, আগস্টে আট হাজার ৫২৬ জন অভিবাসী।
ইউএনএইচসিআরের কার্যক্রম : অভিবাসনপ্রত্যাশী শরণার্থীদের আগমন পয়েন্টে ইউএনএইচসিআর সক্রিয়ভাবে উপস্থিত রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। ইতালির কর্তৃপক্ষ, জাতীয় ও ইউরোপীয় সংস্থা এবং অন্য অংশীদারদের পাশাপাশি জাতিসংঘের এই সংস্থাটিও সেখানে সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
সহযোগিতার মধ্যে রয়েছে, নতুন করে আসা অভিবাসীদের তথ্য সংগ্রহ করা, বিশেষায়িত পরিষেবার মাধ্যমে অপ্রাপ্তবয়স্ক ও দুর্বল ব্যক্তিদের শনাক্ত করে যত্ন-আত্তি নিশ্চিত করা।
সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন ও সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানিয়ে আসছে ইউএনএইচসিআর। বিশেষ করে, সমুদ্রে অনুসন্ধান ও উদ্ধার প্রক্রিয়া জোরদারের পাশাপাশি নিয়মিত অভিবাসনের পথ সহজ করতেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
পাকিস্তানকে ৫৯ শতাংশ বাংলাদেশি পছন্দ করেন এবং বাংলাদেশের ৫৩.৬ শতাংশ মানুষ ভারতকে পছন্দ করেন, ভয়েস অব আমেরিকা এক জরিপে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
জরিপে ১ হাজার উত্তরদাতাকে কয়েকটি নির্দিষ্ট দেশকে ১ থেকে ৫ স্কেলে ‘ভোট’ দিয়ে তাদের মতামত জানাতে বলা হয়। স্কেলের ১ এবং ২ মিলে হয় ‘পছন্দ’ আর ৪ এবং ৫ মিলে ‘অপছন্দ।’
উত্তরদাতাদের ৫৯ শতাংশ পাকিস্তানকে ‘পছন্দ’ স্কেলে বাছাই করেন। অন্যদিকে, ভারতের ‘পছন্দ’ স্কোর ছিল ৫৩.৬ শতাংশ। তবে দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই চরম প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ দুটোর মধ্যে ‘অপছন্দ’ স্কেলে বেশ বড় ব্যবধান লক্ষ্য করা যায়।
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, উত্তরদাতাদের ২৮.৫ শতাংশ পাকিস্তানকে ‘অপছন্দ’ করে মত দেন। অন্যদিকে, ভারতের ‘অপছন্দ’স্কোর ছিল ৪১.৩ শতাংশ।
জরিপটি ভয়েস অব আমেরিকা বাংলার এডিটোরিয়াল নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালনা করে গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড। ভয়েস অফ আমেরিকার ঠিক করে দেওয়া সুনির্দিষ্ট (ক্লোজ এন্ড) প্রশ্নমালার উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার এসিস্টেড টেলিফোন ইন্টারভিউইং এর মাধ্যমে দেশের আটটি বিভাগে ১৮ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী এক হাজার মানুষের মধ্যে জরিপটি পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশের জনতত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরিপের ১ হাজার উত্তরদাতা বাছাই করা হয়। সেখানে সমান সংখ্যার নারী এবং পুরুষ ছিলেন, যাদের মধ্যে ৯২.৭ শতাংশ ছিলেন মুসলিম।
ভারত এবং পাকিস্তান সম্পর্কে জরিপে প্রকাশিত মতামতে ধর্মের ভিত্তিতে পার্থক্য দেখা যায়। মুসলিম উত্তরদাতাদের মধ্যে ৪৪.২ শতাংশ ভারতকে ‘অপছন্দ’ করে মত দেন। অন্যদিকে, অমুসলিম উত্তরদাতাদের মাত্র ৪.২ শতাংশ ভারতকে ‘অপছন্দ’ করেন।
সার্বিকভাবে, ভারত এবং পাকিস্তান ‘পছন্দ’ স্কেলে প্রায় সমান হলেও, ‘অপছন্দের’ স্কেলে ভারতের পাল্লা বেশি ভারি। এর কারণ হিসেবে অনেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকাকে দায়ী করেন।শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে বাংলাদেশে ভারত-বিরোধী মনোভাব বিভিন্ন গোষ্ঠীর কর্মসূচিতে প্রকাশ পাচ্ছে।
এদিকে গত ৫ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধান সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বলেছেন, দিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক এখন ‘নিম্ন পর্যায়ে’ পৌঁছেছে। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে ভারত শুধু একটি দল, আওয়ামী লীগের উপর নির্ভর করেছে।
শেখ হাসিনা ৫ অগাস্ট থেকেই ভারতে আছেন এবং ভারত সরকার তার জন্য ভিআইপির মর্যাদা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়টি বাংলাদেশের অনেকের কাছে ‘অবন্ধুসুলভ আচরণ’ বলেই মনে করা হয়।
পৃথিবী, সূর্য ও বৃহস্পতি গ্রহ আজ শনিবার একই সরলরেখায় অবস্থান করবে। এদিন বৃহস্পতি রাতজুড়ে আকাশে দৃশ্যমান থাকবে। এ অবস্থানকে ‘জুপিটারের বিপরীতমুখী (জুপিটারস অপজিশন)’ বলা হয়। বিজ্ঞানীরা এটিকে বিরল মহাজাগতিক ঘটনা আখ্যা দিয়ে জানান, আকাশপ্রেমীদের জন্য এক দুর্লভ সুযোগ এনে দিয়েছে জুপিটারস অপজিশন।
ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, আজ বৃহস্পতিকে দেখার জন্য এ সময়ের আগে-পরে এক মাস ধরে এ বিস্ময়কর ঘটনা পর্যবেক্ষণের সুযোগ থাকবে। এমনকি একটি ছোট টেলিস্কোপ বা সাধারণ দূরবীন দিয়েও এই গ্রহের সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব। এমন বিরল মহাজাগতিক ঘটনা কেবল সৌরজগতের রহস্য ও সৌন্দর্যের প্রতি কৌতূহল বাড়ায়। বিজ্ঞানীদের মতে, শুক্রবার সকাল ৫টায় বৃহস্পতি পৃথিবী থেকে প্রায় ৬১১ মিলিয়ন কিলোমিটার বা ৩৮০ মিলিয়ন মাইল দূরে থাকবে। এ দূরত্বে বৃহস্পতি অত্যন্ত উজ্জ্বল দেখাবে। এটা টেলিস্কোপ ব্যবহারকারীদের জন্য এর মেঘবাহু এবং গ্যালিলিয়ান চাঁদগুলো (আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড, এবং ক্যালিস্টো) পর্যবেক্ষণের সেরা সুযোগ।
তবে শনিবার সন্ধ্যায় পূর্ব-উত্তর-পূর্ব আকাশে বৃষ রাশির (টরাস) কাছে বৃহস্পতি উঠতে দেখা যাবে। এটি সূর্যাস্তের পর ওঠা শুরু করবে এবং সূর্যোদয়ের আগে অস্ত যাবে। টেলিস্কোপ বা উচ্চ ক্ষমতার দূরবীন দিয়ে বৃহস্পতির মেঘবাহুগুলো এবং এর চারটি প্রধান চাঁদ সহজেই দেখতে পারবেন আকাশপ্রেমীরা। এ বিরল ঘটনায় বৃহস্পতির প্রতিফলিত সূর্যালোক পৃথিবীতে পৌঁছাতে প্রায় ৩৪ মিনিট সময় নেবে। পৃথিবীর দ্রুতগতির কক্ষপথের কারণে বৃহস্পতি এবং সূর্যের মধ্যে পৃথিবীর অবস্থান তৈরি হবে, যা বৃহস্পতিকে সম্পূর্ণ গোলাকার অবস্থায় দেখা যাবে।
পৃথিবীর জলবায়ু খুব দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। বাড়ছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা। এই জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা না হলে, বিশেষ করে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন অব্যাহত থাকলে চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়বে। নতুন এক গবেষণায় এমনটাই উঠে এসেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা যদি প্রাক-শিল্প সমাজের গড় তাপমাত্রার চেয়ে (১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হয়, প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়, এই বিলুপ্তি আরও দ্রুত ত্বরান্বিত হবে। শিল্প বিপ্লবের পর থেকে পৃথিবী ইতিমধ্যে প্রায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণ হয়েছে।
জলবায়ু প্রভাবে বিশেষত উভচর প্রাণীদের জন্য বিলুপ্তির প্রভাব আরও বেশি হতে পারে। পর্বত, দ্বীপ এবং মিঠা পানির বাস্তুতন্ত্রের প্রজাতি এবং দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের অনেক প্রজাতি বিলুপ্তি হতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের ধরণে পরিবর্তন আসে। আবাসস্থল ও প্রজাতিগুলোর দৈনন্দিন জীবন পরিবর্তন হয়।
কিছু প্রজাতি কঠোর পরিবেশগত পরিবর্তনগুলো থেকে বাঁচতে পারে না, যার ফলে প্রজাতির জনসংখ্যা হ্রাস পায় এবং কখনো কখনো বিলুপ্ত হয়ে যায়।
গত বৃহস্পতিবার সায়েন্স জার্নালে নতুন গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়েছে, ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জীববৈচিত্র্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বেশিরভাগ পরিচিত প্রজাতি গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এতে বলা হয়, যদি গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো না যায় বিশ্বব্যাপী বহু প্রজাতির মধ্যে আনুমানিক ১ লাখ ৮০ হাজার প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকবে।
কানেকটিকাট বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী মার্ক আরবান লাইভ সায়েন্সকে বলেন, ঝুঁকিতে থাকা প্রজাতির সংখ্যা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণতার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি।
আরবান বলেন, আমরা যদি প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখি, তাহলে বিলুপ্তির ঝুঁকি তেমন আসবে না। কিন্তু ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে বিলুপ্তির গতিপথ ত্বরান্বিত হবে। দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের প্রজাতিগুলো সবচেয়ে বড় হুমকির মুখোমুখি।
আরবান বলেন, উভচর প্রাণীরা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছে। কেননা উভচরদের জীবনচক্র আবহাওয়ার উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করে এবং বৃষ্টিপাতের ধরন পরিবর্তন ও খরার জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল। পর্বত, দ্বীপ এবং মিঠা পানির বাস্তুতন্ত্রেও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ প্রজাতি রয়েছে। বিচ্ছিন্ন পরিবেশ তাদের প্রজাতির জন্য প্রতিকূল। তাদের পক্ষে স্থানান্তর এবং আরও অনুকূল জলবায়ু সন্ধান করা কঠিন বা অসম্ভব হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানো বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ধীর করতে পারে। সেই সঙ্গে ক্রমবর্ধমান বিলুপ্তির ঝুঁকি থামাতে পারে।
আরবান আশা করছেন, গবেষণার ফলাফলগুলো বৈশ্বিক নীতিনির্ধারকদের ওপর প্রভাব ফেলবে। নীতিনির্ধারকদের জন্য মূল বার্তা হলো, এটি সম্পর্কে আরও বেশি নিশ্চিত করা।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়েছেন ৫০ হাজার বাংলাদেশি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সুযোগ নেন তারা। এদিকে যারা এখনো এই সুযোগ নেননি, তাদের তা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমিরাত সরকার চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাধারণ ক্ষমার সুযোগ দিয়েছে। এরই মধ্যে ৫০ হাজার বাংলাদেশি এ সাধারণ ক্ষমার সুযোগ নিয়েছেন। যারা এখনো এ সুযোগ নেননি, তাদের সুযোগ নেওয়ার আহ্বান জানান জনকূটনীতি বিভাগের মহাপরিচালক। বাংলাদেশিদের জন্য আরব আমিরাতের ভিসা কবে খুলবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আমিরাত বিভিন্ন সময়ে তাদের ভিসানীতি পরিমার্জন করে থাকে। এটি সম্পূর্ণ তাদের বিষয়। জুলাইয়ের আগেই আরব আমিরাত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসানীতিতে পরিবর্তন আনে। জুলাইয়ের পর তাদের ভিসানীতি আরও কঠিন হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। যদিও আমিরাত সরকার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ভিসা নিয়ন্ত্রণ বা সংকোচনের বিষয়ে কিছু বলেনি। তবে যেসব ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশিদের ভিসা পেতে সমস্যা হচ্ছে, তা আমিরাত কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরা হচ্ছে। তারা বিবেচনা করবে বা খতিয়ে দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছে, এমনটি জানান মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম।
পৃথিবীবাসি এক বিরল সময়ের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা এটিকে এক বিরল মহাজাগতিক ঘটনা বলেও আখ্যা দিয়েছেন। ৭ ডিসেম্বর (শনিবার) পৃথিবী, সূর্য এবং বৃহস্পতি এক সরলরেখায় অবস্থান করবে। এটি অবশ্যই একটি বিস্ময়কর ঘটনা।
এই অবস্থানকে ‘জুপিটারের বিপরীতমুখী (জুপিটারস অপজিশন)’ বলা হয়। এই দিনে বৃহস্পতি পুরো রাতজুড়ে আকাশে দৃশ্যমান থাকবে, যা আকাশপ্রেমীদের জন্য এক দুর্লভ সুযোগ এনে দেবে।
আগামীকাল শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল ৫টায় বৃহস্পতি পৃথিবী থেকে প্রায় ৬১১ মিলিয়ন কিলোমিটার বা ৩৮০ মিলিয়ন মাইল দূরে থাকবে। এই দূরত্বে বৃহস্পতি অত্যন্ত উজ্জ্বল দেখাবে। এটা টেলিস্কোপ ব্যবহারকারীদের জন্য এর মেঘবাহু এবং গ্যালিলিয়ান চাঁদগুলো (আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড, এবং ক্যালিস্টো) পর্যবেক্ষণের সেরা সুযোগ।
৭ ডিসেম্বর (শনিবার) সন্ধ্যায় পূর্ব-উত্তর-পূর্ব আকাশে বৃষ রাশির (টরাস) নিকটে বৃহস্পতি উঠতে দেখা যাবে। এটি সূর্যাস্তের পর ওঠা শুরু করবে এবং সূর্যোদয়ের আগে অস্ত যাবে। টেলিস্কোপ বা উচ্চ ক্ষমতার দূরবীন দিয়ে বৃহস্পতির মেঘবাহুগুলো এবং এর চারটি প্রধান চাঁদ সহজেই দেখতে পারবেন।
এই বিরল ঘটনায় বৃহস্পতির প্রতিফলিত সূর্যালোক পৃথিবীতে পৌঁছাতে প্রায় ৩৪ মিনিট সময় নেবে।
ফোর্বসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর দ্রুতগতির কক্ষপথের কারণে বৃহস্পতি এবং সূর্যের মধ্যে পৃথিবীর অবস্থান তৈরি হবে, যা বৃহস্পতিকে সম্পূর্ণ গোলাকার অবস্থায় দেখা যাবে।
যদিও ৭ ডিসেম্বর নির্দিষ্ট দিন, বৃহস্পতিকে দেখার জন্য এই সময়ের আগে-পরে এক মাস ধরে এটি পর্যবেক্ষণের সুযোগ থাকবে। এমনকি একটি ছোট টেলিস্কোপ বা সাধারণ দূরবীন দিয়েও এই গ্রহের সৌন্দর্য উপভোগ করা সম্ভব হবে।
এমন বিরল মহাজাগতিক ঘটনা কেবল সৌরজগতের রহস্য ও সৌন্দর্যের প্রতি কৌতূহল বাড়ায় না, জীবদ্দশায় এমন সময়ের সাক্ষী হয়ে থাকাটাও ভাগ্যের ব্যাপার।
বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করার সময় ভারতের চেন্নাইয়ে অন্তত ৫০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১০০ জন নারীও রয়েছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার রাজা রত্নম স্টেডিয়ামের সামনে তারা বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তার দাবি এবং সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। এই প্রতিবাদে অংশ নেন বিজেপি, আরএসএস, এবিভিপি, হিন্দু মুনানি এবং অন্যান্য হিন্দু সংগঠনের সদস্যরা।
হিন্দু মুনানির সংগঠক রাজুর নেতৃত্বে বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন সাবেক রাজ্যপাল তামিলিসাই সাউন্দারারাজন, আরএসএস নেতা কেশব বিনয়গম, এবং বিজেপি নেতা করু নাগরাজন ও ভি পি দুরাইস্বামী।
বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন এবং হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি তোলেন। বিক্ষোভ শেষে তারা আন্না সালাইয়ের দিকে মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের আটক করে। আটককৃতদের পুলিশের গাড়ি এবং এমটিসি বাসে করে আরআর স্টেডিয়াম থেকে সরিয়ে আনা হয়। তাদের শহরের আন্না অডিটোরিয়াম এবং পেরিয়ামেটের একটি করপোরেশন কমিউনিটি হলে আটকে রাখা হয়। পরে, পুলিশের অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভ করার অভিযোগে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে এজমোর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিন বিক্ষোভের কারণে এজমোরের রুকমণি লক্ষ্মীপতি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে ১৫০ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। প্রতিবাদকারীরা যাতে নিরাপত্তা বলয় ভেঙে মিছিল চালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য রাস্তার বিভিন্ন প্রান্তে ব্যারিকেড বসানো হয়।
নব নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন শপথ নেয়ার আগেই গাজায় হামাসের হাতে জিম্মিদের মুক্তি চান তিনি। তিনি হামাসকে তার শপথ গ্রহণের আগের দিন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন। উক্ত সময়ের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি না দিলে হামাসকে ভয়াবহ পরিণতির ভোগ করতে হবে বলে তিনি হুশিয়ারি দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের শপথ নেয়ার আগেই যদি গাজায় জিম্মিদের মুক্তি দেয়া না হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে এবং মানবতার বিরুদ্ধে এমন নৃশংসতার জন্য দায়ীদের কঠিন পরিণতি হবে।
`জেরুজালেম পোস্ট’র এক প্রতিবেদনে আজ মঙ্গলবার একথা বলা হয়েছে।’
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলি ভূ-খন্ডে হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধরা ১২০৮ জনকে হত্যা করে। এছাড়া দুই শতাধিক ইসরালিকে জিম্মি করে হামাস। তাদের মধ্যে কিছু মুক্তি পেলেও এখনো হামাসের হাতে বন্দী আছে ১ শ’র ও বেশি জিম্মি।
হামাসের হামলার পর থেকেই গাজা উপত্যকায় নৃশংস হামলা শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। তাদের নির্বিচারে হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত নারী-শিশুসহ প্রায় সাড়ে ৪৪ হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছে।
এদিকে মার্কিন সিনেটর এবং ট্রাম্পের ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত রিপাবলিকান পার্টির রানীতিবিদ লিন্ডসে গ্রাহাম এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, গাজায় জিম্মিদের মুক্তি এবং সেখানে একটি যুদ্ধবিরতির জন্য ট্রাম্প আগের চেয়ে অনেক বেশি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এমনকি তিনি চাইছেন, প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানের আগেই যেন এই ব্যাপারে সুরাহা হয়।
হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকা নারীদের তুলনায় পুরুষদের দ্রুত মস্তিষ্কের ক্ষয় হয় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। গবেষণায় বলা হয়, পুরুষের মস্তিষ্কের ক্ষয় শুরু মধ্য পঞ্চাশে, নারীর মধ্য ষাটে। গবেষণাটি ‘জার্নাল অব নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি ও সাইকিয়াট্রি’তে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষক দলের প্রধান পল এডিসন বলেন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো আলঝেইমার রোগ প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা এবং এটি নারীদের তুলনায় পুরুষদের ১০ বছর আগে থেকে গুরুত্বসহকারে মোকাবিলা করা উচিত।
গবেষকেরা বলেছেন, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং ধূমপানের মতো কারণ হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এগুলো তেমনি মস্তিষ্কের রোগ বা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ানোর সঙ্গেও সম্পর্কিত। অর্থাৎ এই সমস্যাগুলোর কারণে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তবে এই হৃদরোগ এবং ঝুঁকিগুলো মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের ওপর কখন প্রভাব ফেলতে শুরু করে এবং পুরুষ ও নারীর মধ্যে এর পার্থক্য আছে কি না, তা স্পষ্টভাবে গবেষণায় জানা যায়নি।
যুক্তরাজ্যের বিআইও ব্যাংকের প্রায় ৩৪ হাজার ৫০০ অংশগ্রহণকারীর তথ্য পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা। ইমেজিং স্ক্যানের মাধ্যমে তারা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্কে পরিবর্তনগুলো পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন।
গবেষকরা রেকর্ডকৃত স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবহার করে হৃদরোগের ঝুঁকি হিসাব করেছেন। হৃদরোগের ঝুঁকি সৃষ্টিকারী উপাদানগুলো, যেমন- স্থূলতা এবং পেটের চর্বির উচ্চমাত্রা, কয়েক দশক ধরে পুরুষ ও নারীদের উভয়ের মস্তিষ্কের পরিমাণ ধীরে ধীরে হ্রাস করে।
তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে এই ক্ষতিকর প্রভাবগুলো ৫৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়। আর নারীদের ক্ষেত্রে তা ৬৫ থেকে ৭৪ বছর বয়সের মধ্যে দৃশ্যমান হতে শুরু করে।
এ ছাড়া গবেষকেরা বলেছেন, পুরুষদের জন্য এই প্রভাবগুলো নারীদের তুলনায় বেশি ঝুঁকি তৈরি করছে।
গবেষকেরা বলেন, যেসব কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে, যেমন- স্থূলতা, সেগুলোর প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত। কারণ, এগুলো স্নায়ুজনিত রোগ, বিশেষ করে আলঝেইমার রোগের চিকিৎসা বা প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তারা আরও বলেছেন, ‘এটি নির্দেশ করে যে স্নায়ুজনিত ক্ষতি এবং আলঝেইমার রোগ প্রতিরোধের জন্য ৫৫ বছর বয়সের আগে হৃদরোগের ঝুঁকি উপাদানগুলোর প্রতি দৃঢ়ভাবে মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া এগুলো হৃদরোগের অন্যান্য ঘটনা যেমন হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক প্রতিরোধেও উপকারী হতে পারে।’
কলকাতার পর এবার বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার একটি হাসপাতাল। গতকাল শনিবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। আগরতলায় অবস্থিত আইএলএস হাসপাতালটি একটি মাল্টি-সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসেবা না দেওয়ার দাবিতে স্থানীয়রা ওই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেন। পরে আইএলএস হাসপাতাল বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা না করার ঘোষণা দেয়। এরই মধ্যে হাসপাতালটিতে বাংলাদেশিদের জন্য হেল্প ডেস্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আইএলএস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের চিকিৎসা করানো বন্ধ করা নিয়ে স্থানীয়রা যে দাবি তুলেছেন তার সঙ্গে আমরা একমত। আখাউড়া চেকপোস্টে ও আইএলএস হাসপাতালে তাদের জন্য যে হেল্প ডেস্ক ছিল সেটিও এবার বন্ধ করা হলো। এদিকে বাংলাদেশের রোগীদের চিকিৎসা না করার বিষয়ে হাসপাতালগুলোর সিদ্ধান্তের প্রতি একমত জানিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য শমীক ভট্টাচার্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশিদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হবে না বলে হাসপাতালগুলো যে বার্তা দিয়েছে তাতে আমি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। তার দাবি, গোটা ভারতের উচিত বাংলাদেশকে সমস্ত রকম পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করে দেওয়া। প্রসঙ্গত, সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতন এবং ভারতীয় পতাকার অবমাননার প্রতিবাদে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের জেএন রায় হাসপাতাল। এবার একই পথে হাঁটলো ত্রিপুরার এই হাসপাতাল।
ইউরোপের জলবায়ু পর্যবেক্ষক আজ সোমবার জানিয়েছে, চলতি বছর উষ্ণতম বছর হবে তা ‘কার্যকরভাবে নিশ্চিত’ এবং এ বিপজ্জনক অতিরিক্ত উত্তাপ থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ ।
কোপার্সনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস প্যারিস থেকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইইউ সংস্থাটি তার মাসিক বুলেটিনে বলেছে, ‘এই মুহূর্তে, এটি কার্যকরভাবে নিশ্চিত যে ২০২৪ হতে চলেছে উষ্ণতম বছর।’
আরেকটি ভয়াবহ মাইলফলক হিসেবে, প্রাক-শিল্প সময়ের চেয়ে ২০২৪ হবে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম। শিল্প বিপ্লবের সময় থেকেই বিপুল পরিমাণ জীবাস্ম জ্বালানী পোড়াতে শুরু করে।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে, এক দশক-দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ১.৫ ডিগ্রিী সেলসিয়াস তাপমাত্রা ১০ বছর ধরে চললে তা পৃথিবীকে বিপন্ন করে তুলবে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তির অধীনে বিশ্বের দেশগুলো উষ্ণতা সীমাবদ্ধ ও তাপমাত্রা নিরাপদ মাত্রায় রাখতে সম্মত হয়েছিল।
কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের উপ-পরিচালক সামান্থা বার্গেস বলেন, এক বছর এই তাপমাত্রা ১.৫ সি. এর উপরে হওয়া মানে, এই নয় যে প্যারিস চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। তবে এর মানে এই যে উচ্চাভিলাষী জলবায়ু পদক্ষেপ কঠোরভাবে মেনে চলা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি জরুরি।
বিশ্বকে কয়লা, তেল ও গ্যাস থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নির্গমন বাড়ছে। এগুলো যখন পোড়ানো হয়, তখন জীবাশ্ম জ্বালানী গ্রিনহাউস গ্যাসগুলো ছেড়ে দেয়, যা পৃথিবীর মহাসাগর ও বায়ুমণ্ডলকে উষ্ণ করে তোলে। এটা জলবায়ু প্যাটার্ন ও পানি-চক্রকে ব্যাহত করে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা বৈশ্বিক উষ্ণতা চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোকে আরও ঘন ঘন ও প্রলয়ঙ্করী করে তুলছে এবং এমনকি বর্তমান স্তরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিচ্ছে।
২০২৪ স্পেন ও কেনিয়াতে মারাত্মক বন্যা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনে ভয়াবহ গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় এবং দক্ষিণ আমেরিকা জুড়ে তীব্র খরা ও দাবানল দেখা দিয়েছে।
ভিত্তিক বীমা জায়ান্ট সুইস রে চলতি মাসে জানিয়েছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলোতে ২০২৪ সালে মোট ৩১০ বিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে।
এক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলো বিশেষভাবে দুর্বল এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বছরে তাদের ১.৩ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রয়োজন হবে।
নভেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু আলোচনায় ধনী দেশগুলো ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ মুহূর্তে যে সময়কাল চলছে, তা সম্ভবত গত ১২৫,০০০ বছরের মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম।
এমনকি এই মানগুলোর দ্বারা ২০২৩ সালের মাঝামাঝি থেকে প্রত্যক্ষ করা অস্বাভাবিক তাপ বৈজ্ঞানিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
২০২৪ সাল এল নিনোর সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল। একটি এমন একটি প্রাকৃতিক অবস্থা, যা উষ্ণ পানির চারপাশে ঘোরাফেরা করে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে এই ধরনের চক্রীয় পরিবর্তনশীলতা বায়ুমণ্ডল এবং সমুদ্রে রেকর্ড ভঙ্গকারী তাপ একা ব্যাখ্যা করতে পারে না।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ জলবায়ু উপদেষ্টা সংস্থা আইপিসিসি-র বিজ্ঞানী রবার্ট ভাটার্ড এএফপিকে বলেছেন, সর্বশেষ এল নিনোর পর তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। তবে ‘খুব’
ধীরে ধীরে। এর কারণগুলি বিশ্লেষণ করতে হবে।
জাহাজের জ্বালানী মেঘের মধ্যে কম আয়নার মতো কণা নির্গত করে।
কোপার্নিকাস জলবায়ু বিজ্ঞানী জুলিয়ান নিকোলাস বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলি ‘স্পষ্টতই ব্যতিক্রমী’ ছিল।
তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমরা যত বেশি তথ্য পাচ্ছি যে, কী ঘটেছে তা আরও ভালভাবে বুঝতে পারব বলে আমরা আশা করছি।’
সিরিয়ায় অবশেষে আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান হয়েছে। ২০০০ সালের জুলাই মাসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন বাশার আল-আসাদ। একই সময়ে তিনি বাথ পার্টির নেতা ও সামরিক বাহিনীর প্রধানের দায়িত্বও নেন। তবে তার শাসনের এক দশক পর অর্থাৎ ২০১১ সালে সিরিয়ার জনগণ গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনে মাঠে নামলে তিনি কঠোর দমননীতি গ্রহণ করেন।
২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধকে ঘিরে বাশার আল-আসাদের সঙ্গে পশ্চিমাদের সম্পর্কের অবনতি হয়। তিনি ইরাকে মার্কিন আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছিলেন। সম্ভবত তার আশঙ্কা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর পরবর্তী টার্গেট সিরিয়া হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র সে সময় ইরাকে তাদের বিরোধীদের কাছে অস্ত্র চোরাচালানে সহায়তার জন্য দামেস্ককে দায়ী করছিল। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপর ২০০৫ সালে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী রফিক হারিরি বৈরুতে বিস্ফোরণে নিহত হলে এ ঘটনার জন্য অনেকে সিরিয়া ও তার সহযোগীদেরই দায়ী করে।
ফলে লেবাননের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ হয় ও দামেস্কের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে লেবাননে থাকা সিরিয়ার ৩০ বছরের সামরিক উপস্থিতি প্রত্যাহার করতে হয়। তবে আসাদ এবং হিজবুল্লাহ ওই হত্যাকাণ্ডে তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। যদিও পরে বিচারে বিশেষ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে হিজবুল্লাহর কয়েকজন সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হয়।
আরব বসন্ত
বাশার আল-আসাদের শাসনের প্রথম দশকে ইরান, কাতার এবং তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি হয়। সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গেছে। যদিও শুরুতে রিয়াদ তরুণ প্রেসিডেন্টের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল।
মূলত পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বাশার তার বাবাকে অনুসরণ করেছেন। কিন্তু শাসন শুরুর এক দশক পর কর্তৃত্ববাদের দিকে হাঁটতে শুরু করেন তিনি। শুরু হয় বিরোধীদের ওপর দমন পীড়ন। সিরিয়ায় শাসক হিসেবে আসাদ পরিবারের আধিপত্য স্থায়ী হয়েছে টানা পাঁচ দশকেরও বেশি।
২০১০ সালে আসাদের স্ত্রী ভোগ ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন তার দেশে গণতন্ত্র বিরাজ করছে। ওই একই সময়ে তিউনিশিয়ায় একজন সবজি বিক্রেতা পুলিশের চড় খেয়ে ক্ষোভে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু হয়। সেটাই পরে আরব বসন্তে রূপ নেয় ও একপর্যায়ে বিদায় নিতে বাধ্য হন তিউনিশিয়ার তখনকার প্রেসিডেন্ট বেন আলি।
এটাই তখন পুরো আরব অঞ্চলে বিশেষ করে মিশর, লিবিয়া, ইয়েমেন, বাহরাইন এবং সিরিয়ায় বিপ্লবী আন্দোলনগুলোকে উৎসাহী করে তোলে। একপর্যায়ে ২০১১ সালের মার্চে দামেস্কে বিক্ষোভ দেখা যায় এবং পরে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর দারারাতে দেয়ালে আসাদবিরোধী স্লোগান লেখার দায়ে শিশুদের আটক করা হলে সেখানেও আন্দোলন শুরু হয়।
দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করে আসাদ পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে সিরিয়াকে টার্গেট করে ‘ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে বলে একে মোকাবিলার কথা বলেছিলেন। তবে অনেক মানুষের যে মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না তাও স্বীকার করেন তিনি। এরপর নিরাপত্তা বাহিনী দারারাতে শক্তি প্রয়োগ করলে বিক্ষোভ আরও জোরদার হয়। অনেক শহরে আসাদের পদত্যাগের দাবি ওঠে। কর্তৃপক্ষ সহিংস পন্থায় তা দমনের চেষ্টা করে।
আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ
সংঘাত বেড়ে যাওয়ার পর জাতিসংঘ জানায়, লাখ লাখ মানুষ হতাহত হয়েছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোও এতে জড়িয়ে পড়তে শুরু করে। আন্দোলন বাড়তে থাকলে আসাদ তার বিরোধীদের ‘সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করেন এবং দমননীতি জোরদার করেন। এর ফলে দেশটি গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এই যুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ নিহত হন। আসাদের বিরুদ্ধে বেসামরিক জনগণের ওপর রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে।
যুদ্ধ চলাকালীন সরকার-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে নির্বাচন আয়োজন করেন বাশার আল-আসাদ। তবে এই নির্বাচন অনেকের কাছে অগণতান্ত্রিক বলে বিবেচিত হয়েছে। যদিও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বাশার আল-আসাদ কখনোই বিজয় নিশ্চিত করতে পারেননি, কিন্তু তারপরও তিনি তার সমর্থকদের, বিশেষ করে সংখ্যালঘু আলাওয়াইট সম্প্রদায়ের ওপর নির্ভর করে ক্ষমতা ধরে রেখেছিলেন।
রাশিয়া, ইরান এবং ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও আসাদ বাহিনীকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে তুরস্কসহ কিছু উপসাগরীয় দেশ সশস্ত্রবিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দেয়। শুরুতে আসাদবিরোধীরা গণতন্ত্র ও মুক্তির কথা বললেও দ্রুতই সাম্প্রদায়িকতার বিষয়টিও উঠে আসে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নিদের বদলে আসাদ নিজের অ্যালাউইটস গোত্রের লোকজনকে সুবিধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
সাম্প্রদায়িক বিভাজনের সূত্র ধরে অ্যালাউইটসদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় ইসলামপন্থি কিছু গ্রুপ। আবার ইরান সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়ারা আসাদ সরকারকে সমর্থন দেয়।
প্রতিবেশী ইরাকে ইসলামিক স্টেট বা আইএসের উত্থান ঘটলে তারা সিরিয়ার কিছু জায়গাও দখল করে নেয়। সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর রাক্কাকে রাজধানী ঘোষণা করা হয়।
২০১৩ সালে দামেস্কের কাছে বিরোধী অধ্যুষিত পূর্বাঞ্চলীয় ঘৌতায় রাসায়নিক হামলা হলে শত শত মানুষ মারা যায়। পশ্চিমারা এবং সিরিয়ার বিরোধীগোষ্ঠীগুলো এই হামলার জন্য আসাদ সরকারকে দায়ী করে। তবে দামেস্ক এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে। পরে আন্তর্জাতিক চাপে তারা রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত ধ্বংস করতে রাজী হয়।
কিন্তু তাতে করে সিরিয়া যুদ্ধের নৃশংসতা কমেনি। আরও রাসায়নিক হামলা হয়েছে পরবর্তীতে। জাতিসংঘের একটি কমিশন সংঘাতে জড়িত সব পক্ষের বিরুদ্ধেই হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনেছে।
২০১৫ সালে প্রায় পতনের দ্বারপ্রান্তে চলে যায় আসাদ সরকার। দেশের বড় অংশের ওপরই তখন বাশার আল-আসাদে কর্তৃত্ব ছিল না। তবে পরে রাশিয়ার সামরিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো আবার পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন বাশার আল-আসাদ।
গৃহযুদ্ধের অবসান
২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক সমঝোতার আলোকে সরকারি বাহিনী সিরিয়ার বেশির ভাগ এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। যদিও ইসলামপন্থি বিরোধী গ্রুপগুলো এবং কুর্দি মিলিশিয়ারা দেশটির উত্তর এবং উত্তরপূর্ব এলাকায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছিল।
ওই সমঝোতা আসাদের অবস্থানকে শক্তিশালী করে এবং তিনি আরব কূটনৈতিক অঙ্গনে ফিরে আসেন। ২০২৩ সালে আরব লীগের সদস্যপদ ফিরে পায় সিরিয়া। বেশ কিছু আরব দেশ আবার দামেস্কে দূতাবাস চালু করে। নিজের শাসনের তৃতীয় দশকে দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও মনে হচ্ছিল যে প্রেসিডেন্ট তার বড় চ্যালেঞ্জগুলো উতরে গেছেন।
তবে ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে হামলা করলে গাজা যুদ্ধের সূচনা হয় যা লেবাননেও ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে আসাদের সহযোগী হিজবুল্লাহর ওপর। হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহও নিহত হন। লেবাননে যেদিন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় সেদিনই বিস্ময়করভাবে হামলা করে দ্রুত আলেপ্পো দখল করে নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিরোধী গোষ্ঠী।
তারা দ্রুত গতিতে এগিয়ে হামা ও অন্যান্য শহরগুলো দখল করে নেয়। দক্ষিণাঞ্চলে তখনো সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ছিল। কিন্তু আসাদের অবস্থান দ্রুতই নড়বড়ে হয়ে পড়ে। কারণ গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ইরান ও রাশিয়া তার সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীরা দামেস্কে ঢুকে পড়ে এবং বিদ্রোহীদের সশস্ত্র অভিযানের মুখে বাশার আল-আসাদ ব্যক্তিগত বিমানে করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ আজ রোববার ভোরে অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে দামেস্ক থেকে বিমানে পালিয়েছেন। এরই মাধ্যমে সিরিয়ায় আসাদ যুগের ৫০ বছরের শাসনের অবসান হলো।
এদিকে বিদ্রোহীরা যুদ্ধে বাস্তুচ্যুতদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘মুক্ত স্বাধীন সিরিয়া আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছে। আপনারা নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরে আসুন।’ এদিকে সিরিয়ার সেনাবাহিনী ঘোষণা দিয়েছে, ‘আসাদ জমানার অবসান হলো।’ স্কাই নিউজ, জেরুজালেম পোস্ট এবং ওয়াশিংটন টাইমস এই খবর জানিয়েছে।
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর কমান্ডার কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘বিদ্রোহীদের ঝটিকা অভিযানের ফলে সেনাবাহিনী আসাদের বাসভবন ছেড়ে চলে যাওয়ার মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন এবং এরই সঙ্গে তার ২৪ বছরের স্বৈরশাসনের শাসনের অবসান হয়েছে।’
বিদ্রোহীরা বলেছেন, ‘তারা তৃতীয় বৃহত্তম শহর পুরোপুরি দখলে নেয়ার পর চারিদিক থেকে দামেস্ক ঘিরে ফেলে। এই সময় তারা দামেস্কতে সেনাবাহিনীর কোনো চিহ্নও দেখতে পাননি। একই সময়ে বিদেশে অবস্থানরত সিরিয়ার বিরোধী গ্রুপের প্রধান হাদি আল বাহরা জানিয়েছেন ‘সিরিয়া এখন বাশার মুক্ত হলো।’
স্কাই নিউজ জানিয়েছে, বিদ্রোহী যোদ্ধারা একদিনের যুদ্ধের পর রোববার সকালে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর হোমস দখলে নিয়েছে। শহর থেকে আসাদ বাহিনীর সেনা প্রত্যাহারের পর হাজার হাজার বাসিন্দা রাস্তায় নেমে এসে আসাদ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেয়। তারা ‘আসাদ পালিয়ে গেছে, হোমস মুক্ত’এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক’ বলে গগনবিদারী স্লোগান দিতে থাকে।
জেরুজালেম পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, হাজার হাজার মানুষ গাড়িতে করে এবং পায়ে হেঁটে দামেস্কের প্রধান চত্বরে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
এদিকে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, একটি ব্যক্তিগত বিমান দামেস্ক ছেড়ে গেছে। বিমানটিতে সম্ভবত আসাদ ছিলেন। বিমানটি ছাড়ার সময় সেখানে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিদ্রোহীরা সেদনায়ায় বড় একটি কারাগার থেকে বহু বন্দীকে ছেড়ে দিয়েছে। এরপর বন্দীরা জনতার সঙ্গে দামেস্ক জয়ের উদযাপন শুরু করে। বিদ্রোহীরা সিরিয়ার প্রধান প্রধান সড়কের মোড়ে স্থাপিত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রয়াত পিতা সাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল আসাদের মূর্তি ভেঙে চুরমার করে ফেলে।
বিদ্রোহীরা বলেছে, ‘আমরা সিরিয়ার জনগণের সঙ্গে আমাদের বন্দিদের শিকল মুক্ত করার এবং সেদনায়া কারাগারে অন্যায়ের যুগের সমাপ্তি ঘোষণা করার উৎসব উদযাপন করছি।’
এদিকে সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মেদ গাজি জালালি বলেছেন, ‘জনগণের পছন্দের যে কোনো নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে তিনি প্রস্তত। তিনি এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমি পালিয়ে যায়নি, বাড়িতেই আছি। কারণ, এটা আমার দেশ। আমি শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রস্তুত।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি নিয়মিত প্রতিদিন সকালে অফিস করেন। তিনি সিরিয়ার নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট না করার আহ্বান জানান। এদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী আজ অথবা আগামীকাল যে কোনো সময় জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন।