শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৫
২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ভারতীয়দের জন্য ৩৮ শতাংশ কমেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্টুডেন্ট ভিসা

ছবি: সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২১:০৫

উচ্চশিক্ষা নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের অনত্যম তীর্থ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বিশাল জনগোষ্ঠীর দেশ ভারতের শিক্ষার্থীদের এই প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। কিন্তু এ বছর ‘স্টাডি ভিসা’ হিসেবে পরিচিত শিক্ষা ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয় শিক্ষার্থীরা ব্যাপক প্রত্যাখ্যানের সম্মুখীন হয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ বছরের প্রথম ৯ মাসে আগের বছরের তুলনায় ভারতীয়রা ৩৮ শতাংশ ভিসা কম পেয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তথা স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব কনস্যুলার অ্যাফেয়ার্সের মাসিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য মোট ৬৪ হাজার ৮টি এফ-১ ভিসা বা স্টুডেন্ট ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। ২০২৩ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ৪৯৫।

কোভিড মহামারির সময়, অর্থাৎ ২০২০ সালের পর এ বছরই সবচেয়ে কমসংখ্যক ভারতীয় শিক্ষার্থীর ভিসা অনুমোদন করা হয়েছে। সে বছর যুক্তরাষ্ট্র মাত্র ৬ হাজার ৬৪৬ ভারতীয় শিক্ষার্থীকে ভিসা দিয়েছিল। মহামারির পর ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় শিক্ষার্থীদের ৯৩ হাজার ১৮১টি এফ-১ ভিসা দেওয়া হয়। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিল ৬৫ হাজার ২৩৫।

তবে এফ-১ ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারতই কম পেয়েছে এমনটা নয়। চীনা শিক্ষার্থীরাও চলতি বছর আগের বছরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম ভিসা পেয়েছে। সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের প্রথম ৯ মাসে চীনা শিক্ষার্থীদের জন্য ৭৩ হাজার ৭৮১টি এফ-১ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। ২০২৩ সালের একই সময়ে ইস্যু করা হয়েছিল ৮০ হাজার ৬০৩টি ভিসা।

এফ-১ ভিসা একটি নন-অভিবাসী ভিসা, যা সারা বিশ্ব থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে পূর্ণকালীন পড়াশোনার অনুমতি দেয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে প্রচলিত ভিসার ধরন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- ২০২৪ সালে ভারতীয়রা চীনা নন-ইমিগ্রান্টদের ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় বিদেশি শিক্ষার্থী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করা ওপেন ডোরসের প্রতিবেদনের মতে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৩ লাখ ৩১ হাজার ভারতীয় শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছে। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৬৮ হাজার ৯২৩।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে চীনা শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমেছে। ওপেন ডোরস-২০২৪ প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭৭ হাজার ৩৯৮। ২০২২-২৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৬। অর্থাৎ প্রায় ১২ হাজার কম।


ত্রিমুখী সংকটে জর্জরিত ব্রিটেন

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় দেউলিয়া হওয়ার সতর্কবার্তা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা তহবিলে যোগদানের জন্য আলোচনা ব্যর্থ হওয়া এবং একটি নতুন বামপন্থি দলের জন্ম- মূলত এই তিন কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ দিন পার করছে ব্রিটেন।

গত সপ্তাহে ব্রিটেনের ঘটনাবলি এমন একটি চিত্র তুলে ধরে যা দেশটিকে অর্থনৈতিক, ভূ-রাজনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে গভীর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করেছে। অভূতপূর্ব আর্থিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ইউরোপের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্কে বাধার সম্মুখীন বিদেশি সম্পর্ক এবং বিপ্লবী স্লোগানসহ দেশীয় রাজনৈতিক দৃশ্য একটি নতুন শক্তির উত্থানের সাক্ষ্য বহন করে।

আপাতদৃষ্টিতে এই তিনটি পৃথক ঘটনা প্রমাণ করে জটিল পথ বেছে নিয়েছে লন্ডন।

সম্প্রতি ইউকে অফিস ফর স্টুডেন্টসের (ওএফএস) সরকারি সতর্কতা দেশটির উচ্চশিক্ষা খাতের জন্য শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে যুক্তরাজ্যের ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। যার মধ্যে ২৪টি সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাবদ্ধ।

ওএফএসের প্রধান নির্বাহী যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্স শিক্ষা কমিটিকে পরিস্থিতি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ গ্রুপের ৭টি-সহ প্রায় ২০টি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় গুরুতর আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন।

আর এ আর্থিক সংকটের মূল কারণ হিসেবে বছরের পর বছর ধরে ‘ফি জমে যাওয়া’ এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা তীব্র হারে কমে যাওয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে তাদের খরচ মেটাতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উচ্চ ফির ওপর নির্ভর করেছে এবং এখন বাজেট ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে।

এ নিয়ে অফিস ফর স্টুডেন্টস সতর্ক করে বলেছে, শতকরা ৪৫ ভাগ প্রতিষ্ঠান এ বছর বাজেট ঘাটতির সম্মুখীন হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করে, কম পারফর্মিং কোর্স (এমনকি নটিংহ্যামের মতো শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও) কেটে ফেলে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে একীভূত করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

জবাবে যুক্তরাজ্যের শিক্ষা বিভাগ টিউশন ফির ওপর সীমা নির্ধারণসহ সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

নিরাপত্তা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। ব্রিটেনকে ইইউর এসএএফই নামে পরিচিত ১৫০ বিলিয়ন ইউরোর প্রতিরক্ষা তহবিলে যোগদানের অনুমতি দেওয়ার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। হুমকির বিরুদ্ধে ইউরোপকে সশস্ত্র করার পরিকল্পনার অংশ এই তহবিল।

আলোচনার ব্যর্থতা মূলত প্রবেশ ফি নিয়ে বিরোধের কারণে। ইউরোপীয় কর্মকর্তারা ৬ বিলিয়ন ইউরো পর্যন্ত অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যেখানে লন্ডন অনেক কম অর্থ দিতে ইচ্ছুক ছিল।

ইইউ সেক্রেটারি অব স্টেট নিক থমাস-সাইমন্ডস এই ফলাফলকে ‘হতাশাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন। সেই সঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা শিল্প এখনো ‘তৃতীয় দেশ’ শর্তে প্রকল্পগুলোতে অবদান রাখতে পারে। এই পরাজয় ব্রাসেলসের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘নতুন যুগের’ সূচনা করার লেবার সরকারের দাবির ওপর একটি আঘাত এবং ব্রেক্সিট কৌশলগত সহযোগিতার ওপর ভারি ছায়া ফেলার প্রমাণ।

এমন দৃশ্যপটে ব্রিটেনে প্রাক্তন লেবার নেতা জেরেমি করবিনের নেতৃত্বে ‘ইওর পার্টি’ নামে একটি নতুন দলের জন্ম হয়েছে। দলটি ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির বামপন্থি বিকল্প হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করে এবং শুরু থেকেই এর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিভাজনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

করবিন ঐতিহ্যবাহী বামপন্থিদের ওপর ভিত্তি করে আরও একটি প্রচলিত দল চান। তবে সহপ্রতিষ্ঠাতা জাহরা সুলতানা একটি উগ্র ইহুদিবিরোধী লাইন, ন্যাটো থেকে প্রত্যাহার এবং এমনকি রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির ওপর জোর দেন।

দলটির ৫৫ হাজার সদস্য রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। যার অর্থ দাঁড়ায় ১৯৪০ সাল থেকে এই দলটি ব্রিটেনের বৃহৎ সমাজতান্ত্রিক দলে পরিণত হয়েছে। ডানপন্থি মিডিয়া এটিকে ‘অপ্রাসঙ্গিকতার পথে একটি আন্দোলন’ হিসেবে উপহাস করেছে। দলের জন্ম বামপন্থিদের মধ্যে বিভক্তি এবং স্টারমারের নীতির প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে, রাজনৈতিক সমীকরণের ওপর এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়তে পারে।

এই তিনটি ঘটনা আজ ব্রিটেনকে এক জটিল মোড়ে ফেলে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংকট দেশে শিক্ষা এবং গবেষণার মানের ভবিষ্যত নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উত্থাপন করে। ইউরোপীয় আলোচনার ব্যর্থতা ব্রেক্সিট-পরবর্তী সহযোগিতার ব্যবহারিক সীমা উন্মোচিত করে এবং একটি নতুন বামপন্থি দলের উত্থান সমাজের রাজনৈতিক কাঠামোর পরিবর্তনেরও ইঙ্গিত দেয়।

এই তিন চ্যালেঞ্জের প্রতি স্টারমার সরকারের প্রতিক্রিয়া দেশের ভবিষ্যত রূপরেখা তৈরি করবে।


মামদানির গ্রেপ্তারের হুমকি সত্ত্বেও নিউইয়র্ক যাওয়ার ঘোষণা নেতানিয়াহুর

নেতানিয়াহু এবং মামদানি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

নির্বাচিত হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) পরোয়ানা মেনে যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন নিউইয়র্ক সিটির নতুন মেয়র জোহরান মামদানি। তবে এই সতর্কতা সত্ত্বেও নিউইয়র্কে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নেতানিয়াহু।

বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যমে একটি ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি নিউইয়র্কে আসব।’

মামদানির সঙ্গে কথা বলবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এ দখলদার বলেন, ‘যদি মামদানি তার চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেন এবং বলেন যে ইসরায়েলেরও অস্তিত্বের অধিকার আছে, তাহলে এটি আলোচনা করার জন্য একটি ভালো শুরু হবে।’

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে জোহরান মামদানি ঘোষণা দেন, তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই নগরে এলে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগকে (এনওয়াইপিডি) তাকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেবেন।

গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মামদানি বলেন, ‘নেতানিয়াহু যুদ্ধাপরাধী এবং তিনি গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার প্রতি সম্মান জানিয়ে তাকে বিমানবন্দরেই আটক করার নির্দেশ দেব।’

আর গত মাসে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ৩৪ বছর বয়সি এই মুসলিম যুবক রীতি মতো ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে ইতিহাস গড়ে প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশিয়ার বংশোদ্ভূত কোন ব্যক্তি হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের নভেম্বরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় সামরিক অভিযানের নির্দেশ এবং উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূলের নামে ৬০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নারী-পুরুষ-শিশুর হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে নেতানিয়াহুকে দোষী সাব্যস্ত করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি), যা এখনও কার্যকর আছে।

তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য নয় এবং নিউইয়র্ক পুলিশের পক্ষে এমন গ্রেফতার কার্যত অসম্ভব। এতে ফেডারেল আইনেরও লঙ্ঘন হতে পারে। এছাড়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও সরাসরি নেতানিয়াহুর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। ফলে চাইলেও মামদানি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করতে পারবেন কি না এ নিয়ে শঙ্কা আছে।

হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গত বছর জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় হত্যাকাণ্ডের কারণে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তবে ইসরায়েল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।


পুতিন-মোদির বৈঠকে প্রাধান্য পাবে যেসব বিষয়

ভ্লাদিমির পুতিন ও নরেন্দ্র মোদি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঐতিহাসিক সফরে ভারত আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দু’দিনের সফরে তিনি নয়া দিল্লিতে পা রাখবেন। ২০২১ সালে শেষ ভারতে এসেছিলেন পুতিন। আর এই বছরই রয়েছে ভারত-রাশিয়া কৌশলগত অংশীদারত্বের ২৫তম বার্ষিকী। সেই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দুই দেশের ২৩তম দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলনও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছেন, সফরের শুরুতেই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারি বাসভবনে হবে দুই নেতার ব্যক্তিগত নৈশভোজ। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং পুতিন আঞ্চলিক ও বিশ্বের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাবেন। গত বছর প্রধানমন্ত্রী মোদির মস্কো সফরের সময় পুতিনও তাকে ব্যক্তিগত ডিনারে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, তারই প্রতিদান হিসেবে এই কর্মসূচি রাখা হয়েছে।

আজ শুক্রবার সকালে পুতিনকে রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানানো হবে ত্রিপক্ষীয় গার্ড অব অনার প্রদানের মাধ্যমে। এরপর তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধির স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাবেন। আর তারপরই হায়দরাবাদ হাউসে শুরু হবে ২৩তম ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলন।

প্রধানমন্ত্রী মোদি ও রুশ প্রেসিডেন্টের এই বৈঠকে কোনো বড় ধরনের ঘোষণা বা চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, ও জ্বালানিসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো দুই রাষ্ট্রনেতার আলোচনায় উঠে আসবে বলেই খবর।

সূত্র জানিয়েছে, এই বৈঠকে ভারতীয় কর্মীদের রাশিয়ায় কাজের সুযোগ বাড়াতে বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। এছাড়া প্রতিরক্ষা সহযোগিতার অংশ হিসেবে লজিস্টিক সাপোর্ট চুক্তিও হতে পারে। বাণিজ্য ক্ষেত্রে নতুন সহযোগিতা বিশেষ করে ওষুধ, কৃষি, খাদ্যপণ্য ও ভোক্তা সামগ্রী রপ্তানি বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হবে।

তবে দুই রাষ্ট্রনেতার বৈঠকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে চলেছে প্রতিরক্ষা। আরও উন্নত পর্যায়ের ব্রহ্মোস নিয়ে কথা বলতে পারেন তারা। সেই সঙ্গে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০-এর বাকি দুটি ইউনিট সরবরাহের বিষয়ে স্পষ্টতা চাইবে ভারত।

আজ শুক্রবার মধ্যাহ্নভোজের পর পুতিন অংশ নেবেন ইন্ডিয়া–রাশিয়া বিজনেস ফোরামের অনুষ্ঠানে। এখানে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য পুনরুজ্জীবিত করা নিয়ে আলোচনা হবে। এই পর্যায়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাম্প্রতিক কয়েক বছরে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক রেকর্ড বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে ভারতের রাশিয়া থেকে বার্ষিক আমদানি প্রায় ৬৫ বিলিয়ন ডলার, আর রাশিয়ার ভারতীয় আমদানি মাত্র ৫ বিলিয়ন ডলার, ফলে বড় বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সার খাতে সহযোগিতা বাড়ানোও আলোচনার এজেন্ডায় রয়েছে, কারণ রাশিয়া প্রতি বছর ভারতকে ৩-৪ মিলিয়ন টন সার সরবরাহ করে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি মুর্মু পুতিনের সম্মানে বিশেষ নৈশভোজ আয়োজন করবেন। একই দিনে তিনি ভারতে রুশ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক নতুন ভারত চ্যানেল উদ্বোধন করবেন। রুশ প্রেসিডেন্টের সফর প্রায় ২৮ ঘণ্টা চলবে। এদিন রাত ৯টায় তার ভারতে সফরের সমাপ্তি ঘটবে।


গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে ‘মৌলিক ভুল’ ছিল: গুতেরেস

অ্যান্তোনিও গুতেরেস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের পদ্ধতিতে ‘মৌলিক ত্রুটি’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। গত বুধবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করার ‘জোরালো কারণ’ রয়েছে।

নিউ ইয়র্কে রয়টার্স নেক্সট সম্মেলনে গুতেরেস বলেন, ইসরায়েলি অভিযান যেভাবে পরিচালিত হয়েছে, তাতে বেসামরিক মানুষের মৃত্যু এবং গাজা ধ্বংসের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়েছে- এতে মৌলিক কিছু ভুল ছিল।

তিনি বলেন, তাদের নাকি লক্ষ্য ছিল হামাসকে ধ্বংস করা। অথচ গাজা ধ্বংস হলেও, হামাস এখনও নিশ্চিহ্ন হয়নি। সুতরাং এই অভিযানের প্রকৃতিতে মৌলিক সমস্যা রয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে ৭০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যুদ্ধের সূত্রপাত হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায়, যেখানে ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়েছিলেন।

গাজায় যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে গুতেরেস বলেন, সে সম্ভাবনা আছে বলে বিশ্বাস করার শক্তিশালী কারণ রয়েছে।

এর প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘে ইসরায়েলের প্রতিনিধি ড্যানি ড্যানন বলেন, একমাত্র অপরাধ হলো- ৭ অক্টোবরের নৃশংস হামলার দুই বছরের বেশি সময় পরও জাতিসংঘ মহাসচিব ইসরায়েল সফর করেননি, বরং তিনি তার পদ ব্যবহার করে প্রতিটি সুযোগে ইসরায়েলকে আক্রমণ ও নিন্দা করেছেন।

তবে গত বছরের অক্টোবরে তৎকালীন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী (বর্তমানে প্রতিরক্ষামন্ত্রী) ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছিলেন, তিনি গুতেরেসের দেশটিতে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিলেন।

১০ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে ও হামাসের মধ্যে নাজুক এক যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, তবে ইসরায়েল এখনও গাজায় হামলা চালাচ্ছে এবং তাদের দাবি অনুযায়ী, হামাসের অবকাঠামো ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।

গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশংসা করেন গুতেরেস। আগস্টে বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছিল, গাজায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, মানবিক সহায়তার বিষয়ে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চমৎকার বোঝাপড়া রয়েছে। আশা করি এটি বজায় থাকবে এবং আরও উন্নত হবে।

গাজায় সহায়তা সরবরাহে দীর্ঘদিন ধরে বাধার অভিযোগ করে আসছে জাতিসংঘ- যার দায় তারা ইসরায়েলের ওপর চাপায়। অন্যদিকে, জাতিসংঘ নেতৃত্বাধীন ত্রাণ কার্যক্রমের সমালোচনা করে ইসরায়েল বলেছে, হামাস ত্রাণ লুট করে- যা গোষ্ঠীটি অস্বীকার করে আসছে।


যুদ্ধের অবসান চান পুতিন: ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেনের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের অবসান চান রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন-এমনটাই জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, পুতিন এখনো চান ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হোক।

গত বুধবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ ও জামাতা তথা অনানুষ্ঠানিক উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনারের বৈঠকের পর তার এ ধারণা হয়েছে। তার ভাষায়, ‘তাদের ধারণা খুব স্পষ্ট- পুতিন যুদ্ধ শেষ করতে চান, তিনি একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চান।’

গত মঙ্গলবার মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে উইটকফ ও কুশনারের বৈঠক হয়। এর পরদিন ট্রাম্প এ মন্তব্য করলেন। পুতিনের সঙ্গে সেই বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে ওয়াশিংটনের সংশোধিত খসড়া শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। ট্রাম্প জানান, তিনি গত মঙ্গলবার রাতেই কুশনার ও উইটকফের সঙ্গে কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘তারা পুতিনের সঙ্গে যথেষ্ট ভালো একটি বৈঠক করেছেন। এরপর কী হয়, তা আমরা দেখব’। ট্রাম্প আবারও দাবি করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট থাকলে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুই হতো না।

তার ভাষায়, ‘পুতিনের সঙ্গে জ্যারেড কুশনার ও স্টিভ উইটকফের খুব ভালো বৈঠক হয়েছে। তবে এটা দুপক্ষের ব্যাপার সমঝোতা হলে দুপক্ষকেই রাজি হতে হবে।’

অন্যদিকে গত বুধবার রুশ প্রেসিডেন্টের সহযোগী ইউরি উশাকভ বলেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানের ক্ষেত্রে রাশিয়ার মতামত বিবেচনায় নিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পরিবেশ ইতিবাচক। মার্কিনরা দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে প্রস্তুত- এমন সমাধান, যা আমাদের লক্ষ্য পূরণেও সহায়তা করে।’

এর আগে গত বুধবার এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তি নিয়ে ৫ ঘণ্টার বৈঠকের পরও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোন সমঝোতা হয়নি বলে রাশিয়া জানিয়েছে। মস্কোর ক্রেমলিনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ দূতদের আলোচনার পর গত বুধবার এ তথ্য জানানো হয়।


গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা চলছেই, ৭ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় নিহত ব্যক্তির স্বজনদের আহাজারি। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় ২ শিশুসহ ৭ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের গত বুধবারের এ হত্যাকাণ্ড গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় চলা যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ লঙ্ঘন। ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী ভূখণ্ডটিতে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা বন্ধ করেনি ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজার মিশর সীমান্তের কাছে হামাসের যোদ্ধাদের হামলায় তাদের চার সেনা আহত হয়েছেন। এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে।

গাজার চিকিৎসা কর্মীদের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, ভূখণ্ডটির দক্ষিণাঞ্চলের আল-মাওয়াসি শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এখানে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আগুন ধরে যায় আর তাতে শিবিরের বেশ কয়েকটি তাঁবু পুড়ে যায়।

গাজার দমকল বাহিনীর মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, ‘ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ২ শিশুসহ ৫ নাগরিক নিহত ও অন্যরা আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের আঘাত গুরুতর।’

গাজার কুয়েতি হাসপাতালের সূত্রগুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, নিহত শিশুদের বয়স ৮ ও ১০ বছর আর এ হামলার ঘটনায় আরও ৩২ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজন মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছেন।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস আল-মাওয়াসিতে হওয়া হামলার নিন্দা জানিয়েছে। এই হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে বর্ণনা করে এর মাধ্যমে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি ইসরায়েলের অবজ্ঞা’ প্রদর্শিত হয়েছে বলে অভিযোগ হামাসের।

আল-মাওয়াসি শিবিরের পাশাপাশি গাজার উত্তরাঞ্চলে গাজা সিটির জেইতুন এলাকায় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গাজার কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ৫৯১ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ৩৬০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা ও আরও ৯২২ জনকে আহত করেছে।

এদিকে গত বুধবার হামাস বলেছে, তারা তাদের হাতে থাকা শেষ দুই জিম্মির একজনের মরদেহ ইসরায়েলকে ফেরত দিয়েছে। রেডক্রসের মাধ্যমে এই ‘সম্ভাব্য জিম্মির’ দেহাবশেষ গ্রহণ করার কথা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

ইসরায়েল জানিয়েছে, সব জিম্মির মৃতদেহ ফিরে পাওয়া মাত্রই গাজার মিশর সীমান্তবর্তী রাফা ক্রসিং খুলে দেবে তারা।

হামাস এর আগেও গত মঙ্গলবার একটি মরদেহ হস্তান্তর করেছিল। কিন্তু পরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, দেহাবশেষটি কোন জিম্মির নয়, অন্য কারো।

গাজায় নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে হামাস এ পর্যন্ত ২০ জন জীবিত ও ২৬ জন মৃত জিম্মির দেহাবশেষ ইসরায়েলকে ফেরত দিয়েছে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল প্রায় ২০০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় আশার আলো

একে অপরের হাতে হাত রেখে হাঁটছেন দম্পতিরা। কনেরা পরেছেন লাল ফিতায় সজ্জিত ঐতিহ্যবাহী ফিলিস্তিনি সাদা ও লাল পোশাক। বরদের পরণে কালো স্যুট এবং টাই। পাশাপাশি হাঁটলেও তাদের এই বিয়ের পটভূমি বলছিল অন্য গল্প- জীর্ণ ভবন, কংক্রিটের স্তূপ আর ধ্বংসাবশেষ; যা গাজা উপত্যকার দুই বছরের সংঘাতের ক্ষতচিহ্ন।

গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণের খান ইউনিসে ৫৪ দম্পতি এক গণবিবাহ অনুষ্ঠানে একসূত্রে বাঁধা পড়েছে। যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপের মাঝেই জীবনের এক সাহসী উদযাপন বলা যায় এই আয়োজনকে।

কারাম মুসায়েদ নামের এক বর বলেন, ‘আমাদের এমন একটি সুখের মুহূর্ত দরকার ছিল; যা আমাদের হৃদয়কে আবার জীবন্ত করে তুলতে পারে।’

ধ্বংসস্তূপে বিছানো লাল কার্পেটের ওপর ঢাক-ঢোলের তালে তালে দম্পতিরা এগিয়ে গিয়ে উঠছিলেন অস্থায়ী মঞ্চে। কনে হাতে ধরেছিলেন লাল, সাদা ও সবুজ রঙের ফিলিস্তিনি পতাকা আর সাজানো ফুলের তোড়া। বররা পাশে হাঁটছিলেন ছোট ছোট পতাকা হাতে। ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত আর নাচে-বাজনায় সাজানো এই গণবিবাহের আয়োজন শহরের এক স্কয়ারে শত শত দর্শকের হৃদয় কেড়েছে।

অনেকে চত্বরে দাঁড়িয়েছিলেন। কেউ আবার ঝুঁকি নিয়ে পাশের ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের ওপর উঠে অনুষ্ঠান দেখছিলেন। দুবছর যুদ্ধ ও মানবিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর নবদম্পতিরা জানিয়ে দিলেন সতর্ক আশাবাদ।

মুসায়েদ নামক এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমাদের আজকের অনুভূতিটা অনেক সুন্দর। এত ভোগান্তির পর আমরা সত্যিই এই আনন্দের প্রাপ্য ছিলাম। কঠিন জীবন আর যে ক্ষুধা সহ্য করেছি, বন্ধু-স্বজন হারানোর পর।’

হিকমত উসামা নামের আরেকজন বলেন, ‘এই সব যুদ্ধ, ধ্বংস আর যা যা আমরা পার করেছি- তারপর আবার আনন্দে ফিরতে পারা, নতুন জীবন শুরু করা; এ এক অতুলনীয় অনুভূতি। আল্লাহর শুকরিয়া, ইনশাল্লাহ সামনে আরও ভালো দিন আসবে।’

গাজায় এই গণবিয়ের আয়োজন করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক দাতব্য সংগঠন আল-ফারিস আল-শাহিম ফাউন্ডেশন। যারা যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় দীর্ঘদিন ধরে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে আসছে।

সংগঠনটির গণমাধ্যমবিষয়ক কর্মকর্তা শরিফ আল-নাইরাব আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে এই ধ্বংসস্তূপের মাঝেই জায়গাটি বেছে নিয়েছি এই বার্তা দেওয়ার জন্য ‘আনন্দের পোশাক’ আবারও শরীরে উঠবে।

‘গাজার মানুষ আবারও ধ্বংসাবশেষ থেকে উঠে দাঁড়াবে, গাজা আবার আনন্দে ভরে যাবে। ইনশাল্লাহ আমরা গাজার ভবিষ্যৎ পুনর্গঠন করব।’

যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর ইসরায়েল এবং হামাসের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজায় মানুষ ধীরে ধীরে তাদের জীবন পুনরায় শুরু করেছে। যুদ্ধবিরতি বেশিরভাগ সময় ধরে বজায় থাকলেও মাঝে মাঝে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।

হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।


বন্যা কবলিত শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বন্যা কবলিত শ্রীলঙ্কা এবং ইন্দোনেশিয়ায় নতুন করে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসে দেশগুলোর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আরও বাড়িয়েছে। ইতোমধ্যেই দেশ দুটি বন্যা কবলিত অবস্থায় আছে। এর আগে, চারটি দেশে এই বন্যায় ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে। -খবর বার্তা সংস্থা এএফপির।

ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া সংস্থা বৃহস্পতিবার সতর্ক করে দিয়েছে যে সুমাত্রা দ্বীপের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি প্রদেশে বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে ‘মাঝারি থেকে ভারী’ বৃষ্টিপাত হতে পারে।

রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হলেও, তা এখনও গত সপ্তাহের ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের মতো মারাত্মক আকার ধারণ করেনি।

৪ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) প্রাকৃতিক দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা ৭৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের এই সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কম। যদিও দূরবর্তী এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায়, এখনও মৃত মানুষের সকল তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বন্যায় ৫৬০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।

এছাড়া দুর্যোগ পরবর্তী যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় এখন সকলের অবস্থান নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। উত্তর সুমাত্রার পান্ডানের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫৪ বছর বয়সী সাবান্দি এএফপিকে বলেন, গত সপ্তাহে বন্যার কারণে তার বাড়ি কাদাপানিতে ভেসে যাওয়ায় তিনি এখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

নতুন করে ফের বৃষ্টিপাত হলে পারে— এই পূর্বাভাস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এখন আমরা আবার নতুন করে ভয় পাচ্ছি।’

সাবান্দি বলেন, ‘আমরা এই ভয় পাচ্ছি যে হঠাৎ করে ফের ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে, আবারও বন্যা হবে।’ এই পৌঢ় খাবার বা পানি ছাড়াই তার ছাদে দুই দিন ধরে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। বন্যার আগে তিনি নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারেননি বলে জানান।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ঘর কাদাপানিতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। কাদা এত বেশি ছিল যে আমরা ঘরে ঢুকতেও পারিনি।’ যদিও এশিয়া জুড়ে মৌসুমি বর্ষা বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভরশীল। জলবায়ু পরিবর্তন এই ঘটনাকে আরও অনিয়মিত, অপ্রত্যাশিত ও মারাত্মক করে তুলছে।

গত সপ্তাহে বড় ধরনের দুটি পৃথক ঝড় শ্রীলঙ্কা, সুমাত্রা, দক্ষিণ থাইল্যান্ডের কিছু অংশ ও উত্তর মালয়েশিয়ায় ব্যাপক বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি করেছে। দুর্যোগের এই মাত্রা ত্রাণ প্রচেষ্টাকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে।

ইন্দোনেশিয়ার বান্দা আচেহ-তে এএফপি’র একজন প্রতিবেদক বলেছেন যে একটি গ্যাস স্টেশনে জ্বালানির জন্য লাইন প্রায় চার কিলোমিটার দীর্ঘ হয়েছে। অন্যত্র, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা খাদ্য ঘাটতি, মূল্যবৃদ্ধি ও লুটপাটের খবরও পেয়েছেন।

শ্রীলঙ্কায়, আবহাওয়া পূর্বাভাসকারীরা জানিয়েছেন যে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু বয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। মধ্য অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় ভূমিধসের সতর্কতা পুনর্নবীকরণ করা হয়েছে এবং বাসিন্দাদের বাড়ি ফিরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ, আরও বৃষ্টিপাতের ফলে ইতোমধ্যেই ভিজে নরম হয়ে যাওয়া ঢালগুলো ধসে পড়তে পারে।

কলম্বো থেকে ক্যান্ডি পর্যন্ত ১১৫ কিলোমিটার (৭১ মাইল) প্রধান মহাসড়কটি প্রতিদিন ১৫ ঘন্টার জন্য পুনরায় খোলা হয়েছে, কারণ শ্রমিকরা মাটি ও পাথরের ঢিবি অপসারণ করেছে। অনেক স্থানে গাড়ি ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা পেরোতে বাধ্য হচ্ছে।

শ্রীলঙ্কায় কমপক্ষে ৪৭৯ জন মারা গেছে এবং এখনও পর্যন্ত আরও শত শত লোক নিখোঁজ রয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন করেছেন।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণে ৭ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত প্রয়োজন হতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। মাত্র তিন বছর আগের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে থাকা এই দেশের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।


গাজায় নতুন গণকবরের সন্ধান

হত্যার পর বুলডোজার দিয়ে বালি চাপা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের নতুন গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। যারা মানবিক সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হন তাদের বুলডোজার দিয়ে বালি চাপা দিয়েছে দখলদার ইসরাইল বাহিনী। সম্প্রতি এক অনুসন্ধানে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন। এতে বলা হয়, উপত্যকার জিকিম ক্রসিংয়ের কাছে সহায়তা নিতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ এবং নিহতদের মৃতদেহ বুলডোজার দিয়ে বালিতে চাপা দেওয়ার প্রমাণ সামনে এসেছে।
জুনে পরিবারের জন্য আটা আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন গাজার বাসিন্দা আম্মার ওয়াদি। যাওয়ার আগেই ফোনের স্ক্রিনে লিখে রেখেছিলেন- আমার কিছু হলে আমায় ক্ষমা করে দিয়ো মা। আমার ফোন যিনি পাবেন, পরিবারকে জানাবেন আমি মাকে খুব ভালোবাসি। পরে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি সেই ফোনটি খুঁজে পেয়ে বার্তাটি তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন। যা ছিল তাদের শেষ খবর। সিএনএন জানিয়েছে, জিকিম সীমান্তের আশপাশে গুলিবর্ষণে নিহতদের দেহ অনেক ক্ষেত্রেই মিলিটারি জোনে ফেলে রাখা হয়। অনেক সময় বুলডোজার চালিয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়, আর অনেক দেহ উদ্ধার না হওয়ায় খোলা জায়গায় পচে-গলে পড়ে থাকে। আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃতদেহ এভাবে পরিচালনা করা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।
স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে- গ্রীষ্মজুড়ে জিকিম এলাকায় ব্যাপক বুলডোজার কার্যক্রম চালানো হয়েছে। জুনে ঘটে যাওয়া এক হামলার পরের ভিডিওতে দেখা যায় উল্টে যাওয়া একটি ত্রাণ ট্রাকের চারপাশে আংশিক মাটিচাপা পড়ে থাকা দেহ। সাবেক দুই আইডিএফ সদস্য সিএনএনকে জানিয়েছেন, গাজার অন্যান্য অঞ্চলেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তারা বর্ণনা করেছেন কিভাবে যুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনিদের মৃতদেহ অগভীর কবরস্থানে বুলডোজার দিয়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আইডিএফ দাবি করেছে- তারা মৃতদেহ সরানোর জন্য বুলডোজার ব্যবহার করেনি। তবে তা দিয়ে কবর দেওয়া হয়েছিল কি না সে প্রশ্নের উত্তর তারা এড়িয়ে গেছে। আইডিএফ বলেছে, এলাকা সুরক্ষা, বিস্ফোরকের ঝুঁকি মোকাবিলা কিংবা রুটিন ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য বুলডোজার ব্যবহৃত হয়।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের বিশেষজ্ঞ জানিনা ডিল বলেন, যুদ্ধরত পক্ষগুলোর দায়িত্ব নিহতদের এমনভাবে কবর দেওয়া যাতে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়। মৃতদেহ বিকৃত করা বা অসম্মানজনকভাবে কবরস্থ করা জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী যুদ্ধাপরাধ। জিকিম এলাকায় গুলির মাঝে ত্রাণ বহনকারী ফিলিস্তিনিদের ছুটে আসার একাধিক ভিডিও সিএনএন যাচাই করেছে। এক ভিডিওতে দেখা যায়- একজন ত্রাণ বহনকারীকে পিছন থেকে গুলি করা হচ্ছে। আরেকটিতে আহতদের উদ্ধার করতে গিয়ে আবার গুলি চলছে। এক ত্রাণ ট্রাক চালক বলেন, জিকিম দিয়ে গেলে প্রতিবারই লাশ দেখতে পাই। ইসরাইলি বুলডোজারগুলোকে মৃতদেহ মাটিচাপা দিতে দেখেছি। আরেকজন বলেন- এটা যেন বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল। সেখানে কী ঘটে কেউ জানে না।
জুনের মাঝামাঝি এক ঘটনায় একটি ত্রাণ ট্রাক ঘিরে ধরেন ক্ষুধার্ত মানুষজন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তখনই আইডিএফ গুলি চালায় এবং বহু মানুষ ট্রাকের নিচে পড়ে মারা যান। কয়েক দিন পর সিভিল ডিফেন্সের অ্যাম্বুলেন্স গিয়ে ১৫টি লাশ উদ্ধার করতে পারে, কিন্তু প্রায় ২০টি দেহ উদ্ধার না করেই ফিরে আসতে হয়। কারণ অ্যাম্বুলেন্স ভর্তি হয়ে গিয়েছিল।
এক আইডিএফ সদস্য জানান, ২০২৪ সালের শুরুতে তাদের ঘাঁটির পাশে দুদিন ধরে পড়ে থাকা নয়টি মৃতদেহ বুলডোজার দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়। তিনি বলেন, কুকুরগুলো লাশ টেনে খাচ্ছিল। যে দৃশ্য দেখা ছিল অসহনীয়। মৃতদেহের পরিচয় নথিভুক্ত করার মতো কোনো চেষ্টা হয়নি। ইসরায়েলি সৈন্যদের বয়ান সংগ্রহকারী সংগঠন ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’-ও জানিয়েছে- এ ধরনের আরও অনেক সাক্ষ্য তাদের কাছে এসেছে।
আম্মার ওয়াদির পরিবার এখনো তার খোঁজ পায়নি। তার মা নাওয়াল মুসলেহ বলেন, ছেলের কথা মনে পড়লেই চোখের পানি থামে না। আমরা যা-ই হোক মেনে নেব। শুধু জানতে চাই, তার কী হয়েছিল। গাজার সীমান্তবর্তী এই অঞ্চল এখন নিখোঁজদের কবরস্থান হয়ে উঠেছে। যেখানে বহু মানুষ যে পথ ধরে ত্রাণ নিতে গিয়েছিলেন, সেই পথই তাদের শেষ যাত্রাপথ হয়ে দাঁড়িয়েছে।


দিল্লির দূষিত বায়ুতে তীব্র শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ২ লাখের বেশি মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দিল্লির বিষাক্ত বায়ু জনজীবনে ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে। ভারত সরকার জানিয়েছে, ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে দিল্লির ছয়টি সরকারি হাসপাতালে তীব্র শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে ৩০ হাজারের বেশি রোগীকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।

এতে বলা হয়, শীত আসলেই দিল্লি ও তার উপশহরগুলোতে বায়ুদূষণের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নেয়। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই দিল্লির বায়ুর মান ইনডেক্স (একিউআই) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্রহণযোগ্য সীমার চেয়ে ২০ গুণ বেশিতে অবস্থান করছে। বিশেষ করে পিএম ২.৫ কণার মাত্রা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। যা সরাসরি শ্বাসতন্ত্রে প্রবেশ করে ফুসফুসে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

দূষণের পেছনে একক কোনো কারণ নেই। শিল্পকারখানার নির্গমন, যানবাহনের ধোঁয়া, তাপমাত্রা হ্রাস, বাতাসের গতি কমে যাওয়া এবং আশপাশের রাজ্যগুলোতে কৃষিজমির খড় পোড়ানোর মতো নানা কারণে পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে।

সরকারি তথ্যানুযায়ী, দিল্লির ছয়টি প্রধান হাসপাতালে ২০২২ সালে ৬৭ হাজার ৫৪টি, ২০২৩ সালে ৬৯ হাজার ২৯৩টি এবং ২০২৪ সালে ৬৮ হাজার ৪১১টি শ্বাসকষ্টের মামলা নথিভুক্ত হয়। সরকারের ভাষ্য, দূষণের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির একটি সম্পর্ক দেখা গেছে, তবে এটি সরাসরি প্রমাণ হিসেবে দেখানো সম্ভব নয়।

গত এক দশকে বেশ কয়েকবার দিল্লির গড় একিউআই ‘গুরুতর’ ৪০০-এর উপরে উঠেছে। যা সুস্থ মানুষদের জন্যও ক্ষতিকর এবং অসুস্থদের জন্য বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ। বুধবার সকালে সরকারি সমর্থিত ‘সফর’ অ্যাপ জানায়, দিল্লির গড় একিউআই ছিল প্রায় ৩৮০।

গত সপ্তাহে বিবিসি জানিয়েছে, দিল্লি ও আশপাশের হাসপাতালগুলোতে দূষিত বায়ুর কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া শিশুদের ভিড় বাড়ছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণে জরুরি পদক্ষেপের দাবিতে দায়ের করা এক পিটিশনের শুনানি বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। একই সঙ্গে দেশটির সুপ্রিম কোর্টও গত কয়েক বছর ধরে দিল্লির অবনতিশীল বায়ুমান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।


হিজবুল্লাহকে অস্ত্র ছেড়ে সংলাপের পরামর্শ পোপ লিওর

ক্যাথলিক খিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ লিও। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

লেবানন সফরের সময় হিজবুল্লাহকে অস্ত্র ত্যাগ করে জাতীয় সংলাপে বসা পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ক্যাথলিক খিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ লিও। তবে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার নিন্দা জানানোর অনুরোধ করা হলেও সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

লেবাননের সফরের শেষ দিন গত মঙ্গলবার স্কাই নিউজ আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পোপ বলেন, ভ্যাটিকান ‘সব পক্ষকে সহিংসতা ত্যাগ করে সংলাপের টেবিলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। চার্চ ‘হিজবুল্লাহকে অস্ত্র রেখে সংলাপে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছে।’

পোপ জানান, বৈরুতে তার রাজনৈতিক সভাগুলো মিডিয়া থেকে দূরে হয়েছিল এবং অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক বিরোধগুলো হ্রাস করার ওপর কেন্দ্রীভূত ছিল। তার লেবানন সফর শুরুর আগে হিজবুল্লাহর পাঠানো এক চিঠি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে পোপ জবাবে বলেন, ‘আমি হিজবুল্লাহর চিঠি পর্যালোচনা করেছি এবং এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাইছি না।’

গত শনিবার পোপ লিওকে একটি চিঠি পাঠায় হিজবুল্লাহ। তাতে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননে অব্যাহত ইসরাইলি হামলার প্রকাশ্যে নিন্দার আহ্বান জানায় গোষ্ঠীটি। চিঠিতে তারা বলেন, ‘পোপের এ শুভ সফরকে সামনে রেখে আমরা আবারও আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করছি যে, লেবাননের বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান আমাদের মূলনীতি। দেশের সেনাবাহিনী ও জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে যেকোনো আগ্রাসন ও দখলদারির বিরুদ্ধে লড়াই আমাদের অঙ্গীকার।’

হিজবুল্লাহ বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ইসরাইল যে আচরণ করছে তা অগ্রহণযোগ্য। তারা আশা প্রকাশ করে যে, পোপ লিও লেবাননের জনগণের ওপর অবিচার ও হামলার বিরুদ্ধে ন্যায়সঙ্গত কথা বলবেন।

এর আগে এক বক্তব্যে হিজবুল্লাহর মহাসচিব শেখ নাইম কাসেম পোপের সফরকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি চিঠি পোপের কাছে হস্তান্তরের জন্য সদস্যদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবং তা প্রকাশেও কোনো গোপনীয়তা থাকবে না।

তিনি আরও জানান, তাদের পক্ষ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুরোপুরি মেনে চলা হয়েছে, কিন্তু ইসরাইল ধারাবাহিকভাবে লেবাননের ভেতরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ কাসেম আশা প্রকাশ করেন, এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পোপের উপস্থিতি লেবাননে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, আমরা দৃঢ় আশা করি, তিনি লেবাননকে আগ্রাসন থেকে মুক্ত করতে এবং শান্তি স্থাপনে সহায়তা করবেন।

২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় ইসরায়েলকে লেবাননের সব এলাকা থেকে সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার করতে বলা হয়। কিন্তু এখনো পাঁচটি স্থানে তাদের সেনা অবস্থান করছে, যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন। এরপর থেকে ইসরায়েল বারবার লেবাননের ভেতরে হামলা চালাচ্ছে, যা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসেবে সতর্ক করেছে লেবানন সরকার।


১১ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া বিমানের খোঁজে ফের অভিযান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হারিয়ে যাওয়া এমএইচ ৩৭০ উড়োজাহাজের ছবি সংবলিত একটি বোর্ডে সই করছেন এক নারী। ফাইল ছবি: রয়টার্স

১১ বছরেরও বেশি সময় আগে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৭৭ ফ্লাইট ২৩৯ আরোহীসহ ‘উধাও’ হয়ে যায়। কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং অভিমুখে যাত্রা করা এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের অন্তর্ধানকে বৈশ্বিক উড্ডয়ন ইতিহাসের সবচেয়ে রহস্যময় ঘটনার অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১৪ সালের ৮ মার্চ রাডার থেকে অদৃশ্য হওয়ার পর ওই উড়োজাহাজটি খুঁজে পেতে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি ও উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বড় আকারে পরিচালিত ওই অভিযানে ফল মেলেনি। দীর্ঘ বিরতির পর আবারও উড়োজাহাজটি খোঁজার অভিযান শুরু করেছে মালয়েশিয়া। বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ বিষয়টি জানা গেছে।

ওই উড়োজাহাজের যাত্রীদের দুই তৃতীয়াংশই ছিলেন চীনের নাগরিক। বাকিদের মধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের নাগরিকও ছিলেন।

নতুন করে উদ্ধারকাজ শুরু: এক বিবৃতিতে কুয়ালালামপুর জানায়, ২০২৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেতে গভীর সাগরে আবারও অভিযান চালানো হবে। এই উদ্ধার কাজের দায়িত্বে থাকবে ওশান ইনফিনিটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘সমুদ্রের যে অংশে উড়োজাহাজটি খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে উজ্জ্বল, সেখানে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে অভিযান চালানো হবে।’

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গত এপ্রিলে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেও তা শিগগির স্থগিত করা হয়। এখন আবারও একই প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে নতুন করে অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে।

‘(উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ) খুঁজে না পেলে কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হবে না', এই শর্তে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওশান ইনফিনিটির সঙ্গে মালয়েশিয়া সরকার চুক্তি করেছে।

২০১৮ সালেও একই কায়দায় অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয় ওশান ইনফিনিটি।

এর আগে, দুর্ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে ভারত মহাসাগরের এক লাখ ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে উদ্ধার ও খোঁজ অভিযান চালানো হয়। তিন বছরের ওই অভিযানে প্রত্যাশিত ফল মেলেনি।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই মর্মান্তিক ঘটনায় যেসব পরিবার প্রভাবিত হয়েছে, তাদের মনে কিছুটা হলেও শান্তি এনে দিতে হারিয়ে যাওয়া উড়োজাহাজের হদিস জানা প্রয়োজন এবং এ বিষয়টির প্রতি তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।

ফেব্রুয়ারিতে উড়োজাহাজের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা আশাবাদ প্রকাশ করেন, নতুন উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে।

উড্ডয়ন খাতের রহস্য: উড়োজাহাজটি হারিয়ে যাওয়া নিয়ে অনেক তত্ত্ব চালু আছে। তবে প্রকৃত সত্য এখনো উদ্ঘাটন হয়নি। কেউ কেউ বলেন, অভিজ্ঞ পাইলট জাহারি আহমাদ শাহ বিপথগামী হয়েছিলেন। তিনি অন্য কারো প্ররোচনায় এই কাজ করেছেন।

২০১৮ সালে প্রকাশিত চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনার জয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের ব্যর্থতা দায়ী এবং সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়, পাইলট নিজে উড়োজাহাজের কোর্স বদলেছিলেন।

৪৯৫ পাতার প্রতিবেদনে তদন্তকারীরা স্বীকার করেন, তারা এখনো জানেন না কীভাবে উড়োজাহাজটি উধাও হল। এই ঘটনায় পাইলট ছাড়া অন্য কারও দায় আছে কি না, সেটাও তারা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

ফ্লাইটটি হারিয়ে যাওয়ার ১১তম বার্ষিকীতে বেইজিংয়ের সরকারি কার্যালয় ও মালয়েশিয়ার দূতাবাসের বাইরে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করেন। তাদের হাতে ছিল, ‘আমাদের প্রিয়জনদের ফিরিয়ে দাও’ ও ‘১১ বছরের অপেক্ষার অবসান কবে হবে?’ লেখা ব্যানার।


সমুদ্রপথে শ্রীলঙ্কায় ত্রাণ পাঠালো পাকিস্তান

পাকিস্তান সমুদ্রপথে শ্রীলঙ্কার জন্য ২০০ টন মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে। ছবি: টাইমস অব ইসলামাবাদ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার পর শ্রীলঙ্কায় মানবিক সংকট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তান শ্রীলঙ্কার জন্য ২০০ টন মানবিক সহায়তা পাঠিয়েছে সমুদ্রপথে। পাকিস্তানের উদ্দেশ্য ছিল আকাশপথে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছানো, তবে ভারত আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি না দেওয়ায় দেশটিকে দীর্ঘ পথ ঘুরে সমুদ্রপথে ত্রাণ পাঠাতে হয়েছে।

গত সপ্তাহের ঘূর্ণিঝড়ে শ্রীলঙ্কায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪৬৫ জন নিহত এবং ৩৬৬ জন নিখোঁজ বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমারা দিসানায়েকে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসলামাবাদে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ত্রাণবাহী সমুদ্রযানটিকে বিদায় জানানো হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের অর্থ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বিলাল আজহার কায়ানি এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার অ্যাডমিরাল রভীন্দ্র সি উইজেগুনারত্নে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ টেলিফোনে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, দুঃসময়ে প্রতিবেশী ও ভাইপ্রতিম দেশ হিসেবে পাকিস্তান শ্রীলঙ্কার পাশে রয়েছে।

শ্রীলঙ্কার উদ্ধারকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকা এলাকাগুলোতে প্রবেশের পর মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, ১৫ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিস্তৃত অঞ্চলে—ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা, থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল ও মালয়েশিয়ার উত্তর অংশসহ—একই সময়ে প্রবল মৌসুমি বৃষ্টি এবং দুইটি পৃথক উষ্ণমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ডেকে এনেছে। চার দেশে মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১,৩০০ ছাড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ ও সমুদ্রের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া বড় ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাতকে আরও তীব্র করে তুলছে। খবর জিও নিউজের।


যুদ্ধের ক্ষত নিয়ে নতুন জীবনের স্বপ্ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দীর্ঘ দুই বছরের সংঘাত ও ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যেও আশার আলো দেখিয়েছে গাজা উপত্যকা। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস শহরে একসঙ্গে ৫৪ দম্পতির গণবিয়ে হয়েছে। তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, আবুধাবির সহযোগিতায় আয়োজিত এই উৎসবটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৫৪তম ইউনিয়ন দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে পালিত হয়েছে।

খবরে আরও বলা হয়, হামাদ আবাসিক এলাকায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনগুলোর মাঝে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘গ্যালান্ট নাইট ৩’ মানবিক অভিযানের অধীনে সংগঠিত হয়েছে। থাওব আল-ফারাহ’ (আনন্দের পোশাক) নামের বিয়ের মঞ্চটি ইসরাইলের গণহত্যা থেকে সৃষ্ট ধ্বংসের মধ্যেও জীবনের প্রতি অটলতা ও জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনি পতাকা, ফুল এবং ঐতিহ্যবাহী গানে ভরে উঠেছিল অনুষ্ঠানস্থল; পরিবারের সদস্য ও সম্প্রদায়ের নেতারা জড়ো হয়ে নবদম্পতিদের শোভাযাত্রায় হেঁটে আসা দেখছিলেন।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, পুরো উপত্যকাজুড়ে প্রায় দুই হাজার ৬৫১ জন আবেদনকারীর মধ্যে লটারির মাধ্যমে এই দম্পতিদের নির্বাচন করা হয়।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদের নির্দেশে ‘গ্যালান্ট নাইট ৩’ অভিযান ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর শুরু হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল, গাজার সবচেয়ে বিপর্যস্ত এলাকাগুলোতে খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।

আনাদোলুর খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরাইল চুক্তি লঙ্ঘন করে চলেছে এবং নির্ধারিত প্রত্যাহার অঞ্চলের বাইরে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে হামলা অব্যাহত রেখেছে, যার ফলে মৃত্যু ও আহতের ঘটনা ঘটছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজায় ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের অধিকাংশই মহিলা ও শিশু। আহত হয়েছেন এক লাখ ৭১ হাজারেরও বেশি মানুষ।


banner close