সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫
৯ চৈত্র ১৪৩১

বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে নতুন রেকর্ড, বাড়তে পারে দেশের বাজারেও

ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ২১:২৭

বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। প্রথমবারের এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার স্পর্শ করেছে। বিশ্ববাজারে স্বর্ণের এমন দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে দেশের বাজারেও দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে যে হারে বেড়েছে, দেশের বাজারে সেই হারে বাড়েনি। ফলে দেশের বাজারে সোনার দাম আরও বাড়তে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এ বাজুসের দায়িত্বশীল এক সদস্য জানান, বিশ্ববাজারে এক আউন্স স্বর্ণের দাম যে কোনো সময় ২ হাজার ৮০০ ডলার ছাড়িয়ে যাবে অনেক আগেই ধারণা করা হয়েছিল; কিন্তু কয়েক দফা দুই হাজার ৮০০ ডলারের কাছাকাছি গিয়ে ফিরে আসে। গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার স্পর্শ করেছে।

তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ার কারণে দেশের বাজারেও গত সপ্তাহে দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারে যে হারে স্বর্ণের দাম বেড়েছে, তাতে দেশের বাজারে যেকোনো সময় আবার দাম বাড়তে পারে। আর দেশের বাজারে এখন স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলে, বিশ্ববাজারের পাশাপাশি দেশের বাজারে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে।

বিশ্ববাজারের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহে লেনদেন শুরু হওয়ার আগে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ৭৭০ ডলার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস লেনদেনের একপর্যায়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৭৩১ ডলারে নেমে যায়। তবে এরপর আবার দাম বাড়ার প্রবণতা শুরু হয়। ২৯ জানুয়ারি প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৭৬০ ডলারে উঠলে দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাজুস।

২৯ জানুয়ারি বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে পরের দিন ৩০ জানুয়ারি থেকে সোনার নতুন দাম কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয়। বাজুসের এ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩৬৫ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৪২ হাজার ৭৯১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩০৭ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৩০৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১০৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৮২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়ে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম ৯৫৬ টাকা বাড়িয়ে ৯৬ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশের বাজারে এ দামেই স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে।

দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসার পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪০ ডলারের মতো বেড়ে গেছে। সপ্তাহ শেষে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৯৭ ডলার। অবশ্য সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস লেনদেনের একপর্যায়ে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮১৫ ডলার পর্যন্ত উঠে যায়। এর আগে কখনো এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার হয়নি।

বিশ্ববাজারে এতদিন এক আউন্স সোনার সর্বোচ্চ দাম ছিল ২ হাজার ৭৯০ ডলার। গত ৩০ অক্টোবরে সোনার এ দাম হয়। বিশ্ববাজারে সোনার এ রেকর্ড দাম হওয়ার পর ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশে সব থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় ১ হাজার ৫৭৫ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় ১ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৬ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।

বিশ্ববাজারে রেকর্ড দাম হওয়ার পরের দিন থেকেই অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে পতনের মধ্যে পড়ে স্বর্ণ। কয়েক দফায় দাম কমে ১৪ নভেম্বর প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৫৪৭ ডলার পর্যন্ত নেমে যায়। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে যেমন স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়, তেমনি বিশ্ববাজারে দরপতন দেখা দিলে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম কমানো হয়। ৫ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে চার দফায় দেশের বাজারে ভালোমানের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯ হাজার ১৭ টাকা কমানো হয়।

এরপর বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরেও কয়েক দফায় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানোর ঘটনা ঘটে। আর নতুন বছর ২০২৫ সালে এখনো পর্যন্ত দেশের বাজারে তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। এ তিন দফা দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসার আগে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বড় অঙ্কে বাড়তে দেখা গেছে।

চলতি বছর দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম তিন দফায় বেড়েছে ৪ হাজার ৫০৩ টাকা। অপরদিকে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১৭৩ ডলার। এক আউন্স সমান ৩১ দশমিক ১০৩৪৭৬৮ গ্রাম। এ হিসাবে বিশ্ববাজারে চলতি বছর এখনো পর্যন্ত এক ভরি স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৭ হাজার ৯১৫ টাকা (এক ডলার সমান ১২২ টাকা ধরে)।


ইন্দোনেশিয়ায় হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ২০:৪৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সশস্ত্র বাহিনী আইনে সংশোধনী এনে এই বাহিনীকে সরকারি কাজে আরও বেশি সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে দেশটিতে। এই সংশোধনী দেশটিকে অতীতের স্বৈরশাসনের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা।

গতকাল রোববার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ইন্দোনেশিয়ার পার্লামেন্ট সর্বসম্মতিক্রমে ২০০৪ সালের সশস্ত্র বাহিনী আইনে সংশোধনী আনে। এর মধ্য দিয়ে সামরিক পদে কর্মরত অবস্থায়ও কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক পদে নিযুক্ত হতে পারবেন।

এই সংশোধনী দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর জোট সরকার এগিয়ে নিয়েছে। সাবেক এই জেনারেল সাবেক স্বৈরশাসক সুহার্তোর জামাতা। নতুন আইনে চার তারকার জেনারেলদের অবসরের বয়স ৬০ থেকে বাড়িয়ে ৬৩ করা হয়েছে এবং অনানুষ্ঠানিক কর্মকর্তাদের অবসরের সময়সীমা ৫৫ করা হয়েছে।

নতুন সংশোধনীর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টকে সামরিক সদস্যদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। এই বিষয়টিকে অনেকেই স্বৈরতন্ত্রের পথে ফিরে যাওয়া বলে মনে করছেন।

আইন সংশোধনের প্রতিবাদে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ জনতা পার্লামেন্ট ভবনের বেড়া ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে পুলিশ জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে অনেক বিক্ষোভকারী আহত হন। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল অসংখ্য ব্যানার। এসব ব্যানারে লেখা ছিল- ‘সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফেরত পাঠাও!’ এবং ‘সামরিকীকরণ ও ওলিগার্কির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও!’

মানবাধিকার-কর্মী ও বিশ্লেষকেরা সতর্ক করেছেন, সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক প্রশাসনে আবারও অন্তর্ভুক্ত করা হলে সুহার্তোর আমলে প্রচলিত ‘দ্বৈত ভূমিকা’ আবার ফিরে আসতে পারে। ইমপারশিয়াল মানবাধিকার সংস্থার পরিচালক আল আরাফ বলেছেন, ‘এই সংশোধনীগুলো ১৯৯৮ সালে সুহার্তোর পতনের পর যে গণতান্ত্রিক সংস্কার হয়েছিল, তার চেতনাকে লঙ্ঘন করছে এবং এটি স্বৈরতন্ত্র পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা তৈরি করছে।’

এই সংশোধনী গোপনে পাস করানোর বিষয়টিও জনমনে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। সংসদে বিলটি উপস্থাপনের মাত্র এক মাস আগে, প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো এক চিঠির মাধ্যমে সংসদকে এই আইন সংশোধনের অনুমোদন দেন।

গণতন্ত্রকামী কর্মীরা দাবি করছেন, সরকারের কর্মকর্তা এবং আইনপ্রণেতারা গত ১৫ মার্চ দক্ষিণ জাকার্তার এক পাঁচতারকা হোটেলে গোপনে বৈঠক করে এই আইনের খসড়া তৈরি করেছেন। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সিনিয়র গবেষক আন্দ্রেয়াস হারসোনো বলেছেন, ‘এই সংশোধনীগুলো দ্রুততার সঙ্গে চাপিয়ে দেওয়া সরকারের মানবাধিকার ও জবাবদিহির প্রতিশ্রুতির পরিপন্থি।’

‘কনট্রাস’ নামে পরিচিত ইন্দোনেশিয়ার নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর একটি সংগঠন বলেছে, ‘এই সংশোধনী ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি করবে এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করবে।’

ইন্দোনেশিয়ার কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক ডোমিনিক নিকি ফাহরিজাল বলেন, ‘এই ধরনের স্বৈরাচারী আইন সংসদীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল করে দেবে।’

তবে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী স্যাফরি সামসুদ্দিন এই সংশোধনীর পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ‘ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তন ও বৈশ্বিক সামরিক প্রযুক্তির বিবর্তনের কারণে সামরিক বাহিনীর রূপান্তর জরুরি।’

কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই সংশোধনীতে সামরিক বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের মানোন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর কোনো সমাধান নেই।

১৯৬৫ সালে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর জেনারেল সুহার্তো এক রক্তাক্ত অভিযান চালিয়ে পাঁচ থেকে ১০ লাখ কমিউনিস্ট ও বামপন্থিদের হত্যা করেছিলেন এবং এরপর ৩২ বছর ধরে সামরিক শাসন কায়েম করেন। তাঁর শাসনামলে সেনাবাহিনী ‘দ্বৈত ভূমিকা’ পালন করত, যেখানে তারা প্রতিরক্ষা ও প্রশাসন উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষমতা ধরে রাখত।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ইন্দোনেশিয়া শাখার প্রধান উসমান হামিদ অতীতে স্বৈরশাসক সুহার্তোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘সেই সময়ে কর্মীরা অপহৃত হতেন, অনেকে আর বাড়ি ফিরে আসেননি। আজ মনে হচ্ছে আমরা আবার সেই পথে ফিরে যাচ্ছি।’


ইউক্রেনে রাশিয়ার ব্যাপক হামলা, নিহত ৩

কিয়েভে গাড়ির আগুন নেভাচ্ছেন দমকলকর্মী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ২০:৩৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। রাশিয়ার চালানো বৃহৎ আকারের ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ৫ বছরের এক শিশুসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০ জন। হামলায় বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডসহ শহরজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল রোববার ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছেন রয়টার্স।

রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিচকো টেলিগ্রামে এক পোস্টে এই হামলাকে ‘কিয়েভে শত্রুর ব্যাপক ড্রোন হামলা’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকাণ্ড ও ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়ে জরুরি সেবা কর্মীদের পাঠানো হয়েছে।

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর ১৪৭টি ড্রোন হামলা চালিয়েছে। যার মধ্যে ৯৭টি প্রতিহত করা সম্ভব হয়েছে এবং ২৫টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে ব্যর্থ হয়েছে। এই হামলার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে সৌদি আরবে ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কূটনীতিকরা কৃষ্ণসাগরের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

এদিকে ব্লুমবার্গ নিউজ সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের একটি শান্তিচুক্তি চূড়ান্ত করতে চাইছে এবং ২০ এপ্রিলের মধ্যে একটি সামগ্রিক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করছে। তবে উভয় পক্ষ এখনো একে অপরের ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে।

ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগ জানিয়েছে, কিয়েভের হোলোসিভস্কি জেলায় ধ্বংসস্তূপের মধ্যে থেকে এক শিশু ও এক পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

অন্যদিকে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ থেকে অগ্নিকাণ্ডের ফলে ডনিপ্রোভস্কি জেলায় এক নারী নিহত হন। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ড্রোন হামলায় কিয়েভে আরও আটজন আহত হয়েছেন।

জরুরি পরিষেবার প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, বহুতল ভবনের একটি অ্যাপার্টমেন্ট সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে, একটি কক্ষের ছাদ ছিদ্র হয়ে গেছে এবং পোড়া আসবাবপত্র চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

কিয়েভের আঞ্চলিক গভর্নর মাইকোলা কালাশনিক জানিয়েছেন, রাজধানীর আশপাশের অঞ্চলেও বেশ কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং দুজন আহত হয়েছেন।

জেলেনস্কির আহ্বান

এ অবস্থায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে রুশ বাহিনী ১,৫৮০টিরও বেশি নিয়ন্ত্রিত বোমা, প্রায় ১,১০০টি আক্রমণাত্মক ড্রোন এবং ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

তার ভাষায়, ‘আমাদের নতুন সমাধান দরকার। মস্কোর ওপর আরও চাপ প্রয়োগ করতে হবে যাতে তারা এসব হামলা এবং যুদ্ধ বন্ধ করে’।

রাশিয়ার কোনো মন্তব্য নেই

এ হামলায় বিষয়ে এখনো পর্যন্ত রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য আসেনি। তবে উভয় দেশই দাবি করে, তারা বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে না।শনিবার রাত থেকে পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কিয়েভ এবং পূর্ব ইউক্রেনজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতা জারি ছিল।


গাজায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতা নিহত

ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ মার্চ, ২০২৫ ২০:২১
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে বর্বর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা সালাহ আল-বারদাউইল নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার সকালে এক হামাস কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয়দের দাবি, ওই বিমান হামলায় হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরের সদস্য বারদাউইল এবং তার স্ত্রী নিহত হয়েছেন। তবে এ নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি। প্রায় দুই মাস যুদ্ধবিরতির পর মঙ্গলবার থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তবে হামাস ইসরায়েলের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পাল্টা অভিযোগ করেছে, কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার বিভিন্ন এলাকায় ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় লেবানন এবং গাজায় আরও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। হিজবুল্লাহর সঙ্গে চার মাস আগে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে আবারও লেবাননে হামলা চালাচ্ছে দখলদার বাহিনী। দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ৭ জন নিহত হয়েছে।

অন্যদিকে শনিবার সকাল থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজনই শিশু। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরায়েলি আগ্রাসনে কমপক্ষে ৪৯ হাজার ৭৪৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৩ হাজার ২১৩ জন আহত হয়েছে। তবে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলছে, মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। তাদের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গাজায় ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। কারণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।

চুক্তিতে পৌঁছাতে নমনীয় হতে প্রস্তুত হামাস

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির শর্তে কিছুটা নমনীয় হতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। ফিলিস্তিনি আন্দোলনের প্রতিনিধিরা তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদানের সঙ্গে আঙ্কারায় বৈঠকে বলেছেন, গাজা উপত্যকায় সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতি এবং সেখান থেকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য হামাস প্রয়োজনীয় সব নমনীয়তা প্রদর্শন করতে প্রস্তুত।

রুশ বার্তা সংস্থা তাস জানায়, হামাস প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলা জরুরি বলে মনে করছেন। আঙ্কারায় আলোচনার পর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হামাস বলেছে, ‘হামাস প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জোর দিয়ে বলেছেন, তারা ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলা জরুরি বলে মনে করছেন।’

হামাস আরও বলেছে, গাজা উপত্যকায় ব্যাপক যুদ্ধবিরতি, ফিলিস্তিনি বন্দিদের জন্য জিম্মি বিনিময় এবং ছিটমহল থেকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় সব নমনীয়তা প্রদর্শন করতে তারা প্রস্তুত রয়েছে।

হামাসের মুখপাত্র আব্দুল লতিফ আল-কানু এর আগে বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবিত গাজা সংঘাত নিরসনের পরিকল্পনা নিয়ে হামাস মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে আলোচনা করছে।

জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে, ইসরায়েল ও হামাস গাজায় বন্দি মুক্তি এবং ছিটমহলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করার জন্য মিসর, কাতার ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এক চুক্তিতে পৌঁছায়। তিন-পর্যায়ের ওই চুক্তিটি ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। ১ মার্চ শেষ হওয়া চুক্তির ৪২ দিনের প্রাথমিক পর্যায়ে হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয়। বিনিময়ে ইসরায়েল ১৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়।

ইসরায়েলি আক্রমণ বন্ধ করতে পোপ ফ্রান্সিসের জরুরি বার্তা

রোমান ক্যাথলিক গির্জার প্রধান পোপ ফ্রান্সিস ইসরায়েলকে গাজা উপত্যকায় চলমান আক্রমণ বন্ধ করার এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

পোপ তার নিয়মিত অ্যাঞ্জেলাস প্রার্থনায় লিখেছেন, ‘গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের তীব্র বোমাবর্ষণ পুনরায় শুরু হওয়ায় আমি অত্যন্ত দুঃখিত। এর ফলে অনেক মানুষের প্রাণহানি এবং আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।’

পাঁচ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে থাকার পর সুস্থ হয়ে বের হওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন। পোপ ফ্রান্সিস আরও বলেন, ‘আমি বিশ্ববাসীর কাছে অনুরোধ করছি, অস্ত্রগুলো অবিলম্বে স্তব্ধ করা হোক। যেন সাহস পাওয়া যায়, সেই সাহস যাতে মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য এবং শান্তির জন্য পুনরায় সংলাপ শুরু করতে পারে। যাতে গাজার সব বন্দি মুক্তি পেতে পারে এবং চূড়ান্ত যুদ্ধবিরতি অর্জিত হয়।’

তিনি গাজার বর্তমান মানবিক অবস্থার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ‘গাজার মানবিক পরিস্থিতি আবারও অত্যন্ত বিপর্যস্ত। এর ফলে তা অত্যন্ত গুরুতর হয়ে উঠেছে, যা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন উভয়পক্ষ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবিলম্বে পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে,’ পোপ যোগ করেছেন।

এই আহ্বানটি এমন একটি সময় এসেছে যখন গাজার পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে এবং হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে বা আহত হচ্ছে। পোপ ফ্রান্সিসের এই বার্তা, যুদ্ধের ক্ষতির মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আবেদন হিসেবে সামনে এসেছে, যা মানবতার পক্ষে একটি একত্রিত চেষ্টার আহ্বান।


সৌদিতে অনুষ্ঠেয় বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে অগ্রগতির আশা রাশিয়ার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

ইউক্রেনে তিন বছর ধরে চলা সংঘাত বন্ধে সৌদি আরবে সোমবার অনুষ্ঠেয় আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন রাশিয়ার একজন আলোচক।

তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেন, এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্র পৃথকভাবে ইউক্রেন ও রাশিয়ার উভয়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

মস্কো থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

বার্তা সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রস্তাবিত পূর্ণ ও নিঃশর্ত ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রত্যাখ্যান করেছে মস্কো। এর পরিবর্তে রাশিয়া শুধু জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর বিমান হামলা বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছে।

সেই প্রস্তাব সত্ত্বেও উভয় পক্ষই আলোচনার আগে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার রাতে দক্ষিণ ইউক্রেনের জাপোরিঝিয়া শহরে রাশিয়ার হামলায় একটি পরিবারের তিনজন নিহত হয়, যা ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা রবিবার ভোরে জানায়, রাশিয়া কিয়েভে ড্রোন হামলা চালিয়েছে। এগুলো ভবনগুলোতে আঘাত করেছে এবং আগুন লেগে কমপক্ষে দুইজন নিহত হয়েছে।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেন, শত্রুদের বিশাল আক্রমণে শহরের বেশ কয়েকটি জেলায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে এবং সাতজন আহত হয়েছেন।

সৌদি আরবে সোমবার ইউক্রেনীয় ও রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আমেরিকান আলোচকরা আলাদাভাবে বৈঠক করবেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত কিথ কেলগ হোটেলকক্ষের মধ্যে ’শাটল কূটনীতি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

রুশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন রাশিয়ার সিনেটর গ্রেগরি কারাসিন।

তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তত কিছুটা অগ্রগতি আশা করছি।"


তুরস্কে বিক্ষোভ-সমাবেশ অব্যাহত, আটক ৯৭

ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর সমর্থনে তুরস্কে বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

তুরস্কে টানা তৃতীয় দিনের মতো ব্যাপক বিক্ষোভ-সমাবেশ হয়েছে। পুলিশি হেফাজতে থাকা ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুর সমর্থনে এ বিক্ষোভ আয়োজন করা হয়। গতকাল শনিবার ইমামোগলুর আদালতে হাজির হওয়ার কথা ছিল।

গত বুধবার ভোরে ইস্তাম্বুলের মেয়রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ কারণে এক দশকেরও বেশি সময় পর তুরস্কের রাস্তায় সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আরব নিউজ জানিয়েছে, আদালতে হাজির করার আগের রাতেও বিক্ষোভকারীরা ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে সমাবেশ করে।

বিক্ষোভকালে ইস্তাম্বুল, আঙ্কারা ও পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইজমিরে দাঙ্গা পুলিশের সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ হয়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট এবং জলকামান নিক্ষেপ করে। সেই সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনী ৯৭ জনকে আটক করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া।

মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, আটককৃতদের প্রকৃত সংখ্যা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ রাতারাতি বেশ কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে।

২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য প্রজাতন্ত্রী জনতা দল (সিএইচপি) থেকে ৫৩ বছর বয়সি মেয়র ইমামোগলুকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার কয়েক দিন আগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আইনি জটিলতার ক্রমবর্ধমান ঝামেলার মধ্যে ইমামোগলু গত বছর মেয়র হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হন। তার বিরুদ্ধে আরও ‘একটি সন্ত্রাসী সংগঠনকে (পিকেকে) সহায়তা এবং মদদ দেওয়ার’ মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘুষ, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, ব্যাপক জালিয়াতি এবং একটি অপরাধমূলক সংগঠনের অংশ হিসেবে অবৈধভাবে ব্যক্তিগত স্বার্থ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এসব মামলায় তার সঙ্গে আরও অনেককেই আসামি করা হয়েছে।

গত শুক্রবার পুলিশ দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে তাকে ছয় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে বলে তার দল জানিয়েছে। মেয়রের একজন আইনজীবী মেহমেত পেহলিভান বলেছেন, ইমামোগলু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আইনজীবী এক্স-পোস্টে লিখেছেন, সমাজের চোখে ইমামোগলুর সুনাম ক্ষুণ্ন করাটাই এই গ্রেপ্তারের লক্ষ্য ছিল। উভয় তদন্তই অসত্য অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে।

এদিকে দেশজুড়ে বিক্ষোভকারীদের ধরপাকড়ের পর আবারও সমাবেশ করার কথা রয়েছে। আইনজীবীদের মাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় ইমামোগলু বলেছেন, তিনি তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের মধ্যে ৫০টিরও বেশি প্রদেশে রাস্তায় নেমে আসা বিক্ষোভকারীদের জন্য ‘সম্মানিত এবং গর্বিত’। ‘তারা আমাদের প্রজাতন্ত্র, আমাদের গণতন্ত্র, ন্যায়পরায়ণ তুর্কিদের ভবিষ্যৎ এবং আমাদের জাতির ইচ্ছা রক্ষা করছেন।’

শুক্রবার রাতে ইস্তাম্বুলের সিটি হলের বাইরে জনতার উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধান বিরোধী দল সিএইচপির প্রধান ওজগুর ওজেল বলেন, বিক্ষোভ নিষেধাজ্ঞা এবং রাস্তার সন্ত্রাস (তিনি পুলিশি কর্মকাণ্ডের দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন) সহ্য করবে না তুরস্ক। কেননা এরদোয়ানের তীব্র সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে ৩ লাখ মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ইমামোগলুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার পর তুর্কি মুদ্রার ব্যাপক দরপতন হয়েছে এবং আর্থিক বাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। শুক্রবার তুর্কি স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক প্রায় আট শতাংশ কমে গেছে।

বিষয়:

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা লেবাননের

লেবাননে ইসরায়েলের হামলা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে লেবানন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম এই ঘোষণা দিয়েছেন। যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আল-জাজিরা বলছে, প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালামের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধ এবং শান্তির বিষয়ে লেবানন যে সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখানোর জন্য সব নিরাপত্তা ও সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, হামলার ফলে ‘একটি নতুন যুদ্ধের দিকে ধাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা লেবানন এবং লেবাননের জনগণের জন্য দুর্দশা ডেকে আনতে পারে’।

এদিকে ইসরায়েলে ফের হুতি বিদ্রোহীরাও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে তারা ইয়েমেন থেকে আসা একটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আঘাত হানার আগেই ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানানো হয়।

ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে হুতি বিদ্রোহীরা। শনিবার ভোরে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে হুতি মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানান, ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীটি তেল আবিবের কাছে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

তিনি জানিয়েছেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো হামলা চালানো হলো। সারি আরও বলেন, হুতিরা লোহিত সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানের ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে।

লেবানন থেকে ইসরায়েলে দফায় দফায় রকেট হামলা

লেবানন থেকে ইসরায়েলে দফায় দফায় রকেট হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলের সীমান্তে নিক্ষেপ করা তিনটি রকেট প্রতিহত করেছে।

ইসরায়েলের আর্মি রেডিও এক খবরে জানিয়েছে, লেবানন থেকে নিক্ষেপ করা কমপক্ষে পাঁচটি রকেট শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি রকেট প্রতিহত করা হয়েছে এবং দুটি লেবাননের ভূখণ্ডের ভেতরে পড়েছে বলে জানানো হয়।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের ইয়াহমোর শহরের উপকণ্ঠে গোলাবর্ষণ করছে। তবে এসব সংঘাতে এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ সংগঠনও এখন পর্যন্ত ওই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

মার্কিন সেনাবাহিনী এখনো এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেনি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির পরেও লোহিত সাগরে একাধিক মার্কিন জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা।

২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হুতি বিদ্রোহীরা। ফিলিস্তিনিদের ওপর যতদিন পর্যন্ত আগ্রাসন চলবে তত দিন এই হামলা চলবে বলে জানানো হয়েছে।

পাল্টা হামলা ইসরায়েলের

ইসরায়েলি গোলা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি শহরে আঘাত হেনেছে। তেল আবিবের বিমান সীমান্ত সংলগ্ন আরও তিনটি শহরে হামলা চালিয়েছে। লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। লেবানন থেকে ছোড়া একাধিক রকেট প্রতিহত করার পর দেশটিতে পাল্টা গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।

এই পাল্টাপাল্টি হামলা তেল আবিব ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে কয়েক মাস আগে হওয়া যুদ্ধবিরতিকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজা ঘিরে যে যুদ্ধ শুরু হয়, তার ধারাবাহিকতায় পরে হিজবুল্লাহও তেল আবিবের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। পরে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর একাধিক শীর্ষ নেতা, অস্ত্রভাণ্ডারের বড় অংশ ও অসংখ্য যোদ্ধাকে হত্যা করার পর ইরানঘনিষ্ঠ সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ঝিমিয়ে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত বছরের নভেম্বরে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়, তারপর শনিবারই প্রথম এই সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটল, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, তারা সীমান্তের ৬ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লেবাননের একটি জেলা থেকে ছোড়া তিনটি রকেট প্রতিহত করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনী গোলা ছুড়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনা রেডিও।

ইসরায়েলি গোলা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি শহরে আঘাত হেনেছে, তেল আবিবের বিমান সীমান্ত সংলগ্ন আরও তিনটি শহরে হামলা চালিয়েছে, বলেছে লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।

সীমান্তের ওপার থেকে রকেট ছোড়ার জন্য কারা দায়ী, তা বলেনি ইসরায়েল। রয়টার্স এ প্রসঙ্গে হিজবুল্লাহর মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে গোষ্ঠীটির কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর কোনো অস্ত্র থাকবে না, ইসরায়েল সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে এবং ওই এলাকায় লেবাননের সরকারি বাহিনী মোতায়েন থাকবে এমন শর্ত ছিল।

চুক্তিতে দক্ষিণ লেবাননের সব সামরিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া এবং সব অবৈধ অস্ত্র জব্দের ভারও লেবাননের সরকারের হাতে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গতকাল শনিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, সীমান্ত শহর মেটুলাতে রকেট ছোড়ার ঘটনার দায়ভার লেবা

বিষয়:

মুক্তি পাবেন ইমরান খান?

ইমরান খান
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান যদি ২০২৩ সালের ৯ মের দাঙ্গার ঘটনায় আন্তরিকভাবে ক্ষমা চান তবে তিনি মুক্তি পেতে পারেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের রাজনৈতিক উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ এ কথা বলেছেন। জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর ওই দিন তার সমর্থকরা বিভিন্ন স্থাপনায় ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ওই দাঙ্গার ঘটনার জন্য পিটিআইকে দায়ী করা হলেও তা অস্বীকার করে আসছে দেশটির সাবেক ক্ষমতাসীন দলটি।

জিও নিউজের জিরগা অনুষ্ঠানে রানা সানাউল্লাহ বলেন, ইমরান খান দেশকে রাজনৈতিক অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। কারণ তিনি মনে করেন যে তার কার্যক্রমের মাধ্যমে বিপ্লব আনতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, কিন্তু না, বিপ্লবের কোনো সম্ভাবনা নেই। কেবল রাজনৈতিক সংগ্রামই এখানে বিজয়ের দিকে নিয়ে যাবে।

ইমরান খানের বর্তমান পদক্ষেপের মাধ্যমে সাফল্যের কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না রানা সানাউল্লাহ। এ সময় সানাউল্লাহ সাম্প্রতিক সময়ের পিটিআইয়ের কিছু লং মার্চের কথা উল্লেখ করেন। যেগুলো সরকারের নেওয়া পাল্টা পদক্ষেপে ব্যর্থ হয়।

৯ মে তারিখের জন্য ক্ষমা চাইলে কি খানের মুক্তি সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে সানাউল্লাহ বলেন, আমি মনে করি ৯ মে তারিখের জন্য যদি তিনি ক্ষমা চান, তাহলে আলোচনা এগিয়ে যেতে পারে অথবা হয়তো আমরা কথা বলতে পারি। এর আগে তিনি বলেছিলেন, আদালত যদি পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে মুক্তি দেয় তবে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকারের কোনো আপত্তি থাকবে না।

এদিকে, জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সাম্প্রতিক ইন-ক্যামেরা বৈঠকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শে স্পিকার আয়াজ সাদিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিশেষভাবে খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তানের ক্রমাবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্ডাপুরকে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এই বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা ওমর আইয়ুবসহ পিটিআই-এর সংসদীয় নেতৃত্ব অংশ নেয়নি। তবে, প্রাদেশিক প্রতিনিধি হিসেবে খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্ডাপুর উপস্থিত ছিলেন। ইমরান খানের মুক্তি ও রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের রাজনীতিকে আরও জটিল করে তুলছে, যা আসন্ন সময়ে দেশটির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রসঙ্গত, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন ইমরান খান।

বিষয়:

ইসরায়েলে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবি
ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে জনতার বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২১ মার্চ, ২০২৫ ২০:৪৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের রাজপথে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন যুদ্ধবিরতির দাবিতে তারা এ বিক্ষোভ করে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন ডানপন্থি সরকারের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করেন তারা। গতকাল শুক্রবার দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের দাবি, নেতানিয়াহুর সরকার দেশের গণতন্ত্রকে আঘাত করেছে। দেশটিতে এ বিক্ষোভের কারণে ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। আয়োজকরা বলছেন, বিক্ষোভ যেভাবে গতি পাচ্ছে তাতে আগামীতে আরও বেশি বিক্ষোভ হতে পারে।

ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থার প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্তের চেষ্টাকে কেন্দ্র করে এ বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তবে গাজায় বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে ইসরায়েল দুই মাসের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর এ বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে।

বিক্ষোভকারীরা সরকারকে রাজনৈতিক কারণে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার এবং বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে হামাসের হাতে আটক ৫৯ জিম্মির দুর্দশা উপেক্ষা করার অভিযোগ করেছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ২৪ জিম্মি জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে।

ব্রাদার্স ইন আর্মস প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রধান নির্বাহী এইতান হার্জেল বলেন, এই সরকার এখন নিজেকে রক্ষা করার জন্য আবারও যুদ্ধ শুরু করেছে, ইসরায়েলের জনসাধারণকে বিরক্ত করে এমন বিষয়গুলো থেকে নজর সরাতে এমন পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকার সম্ভাব্য সব স্তরে বৈধতা হারিয়েছে, তারা ব্যর্থ হচ্ছে।

সাবেক সিনিয়র নৌ কর্মকর্তা এবং বিক্ষোভের সংগঠক ওরা নাকাশ পেলেদ বলেন, আমি মনে করি আমরা আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছি, আমাদের সংগঠিত হতে হবে, আমাদের অবিচল থাকতে হবে, আমাদের মনোযোগী হতে হবে। (বিক্ষোভ) সহিংস হতে পারে না (কিন্তু) এটি ভদ্র হতে হবে না।

ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের আইন বিশেষজ্ঞ ড. আমির ফুচস বলেন, সরকারের বারকে বরখাস্ত করার ক্ষমতা আছে, কিন্তু তবুও প্রশাসনিক আইন মেনে চলতে হবে।

গাজা ও পশ্চিম তীরে ৯৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তার ঘোষণা

গাজা এবং পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি তাণ্ডব ও ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের মুখোমুখি হওয়া ফিলিস্তিনিদের সহায়তায় ৯৯ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি তহবিল ঘোষণা করেছে কানাডা। গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন মন্ত্রী মেলানি জোলি গাজা এবং পশ্চিম তীরে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রদানে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, রেড ক্রস এবং এনজিও অংশীদারদের সহায়তা করার জন্য ৯৯ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি তহবিল ঘোষণা করেছেন।

এই সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে অপরিহার্য পরিষেবা পুনরুদ্ধারের জন্য ২০ মিলিয়ন ডলার, বিশেষ করে স্বাস্থ্য খাতে এবং দুর্বল মানুষকে সাহায্য করা। আরও ২৪.৫৫ মিলিয়ন ডলার জীবন রক্ষাকারী সহায়তার জন্য বরাদ্দ করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, সুরক্ষা এবং আশ্রয়।

এছাড়া ২৪.৭৫ মিলিয়ন ডলার শান্তি ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টার জন্য ব্যয় করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে মাইন অপসারণ। অপরদিকে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং শাসনব্যবস্থার জন্য ৩০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান মানবিক পরিস্থিতি টেকসই নয়। কানাডা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তার অবাধ প্রবাহের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছে। বেসামরিক নাগরিক এবং মানবিক কর্মীদের সুরক্ষাসহ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনকে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

কানাডা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, তারা এমন প্রচেষ্টার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেখানে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিরা শান্তি, নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সাথে পাশাপাশি বসবাস করতে পারে।

গাজায় ৩ দিনে প্রাণ গেল ৬০০ ফিলিস্তিনির

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এ নিয়ে পবিত্র রমজানে ইসরায়েলের এই বর্বর হামলায় গত তিনদিনে প্রাণ হারাল প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি। এমনকি গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাতে স্থল অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮৫ জন নিহত ও আরও ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ হাজার ৬১৭ জনে দাঁড়িয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছেন। ভুক্তভোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে বলে আশঙ্কা করছে মন্ত্রণালয়।

আল জাজিরা বলছে, মঙ্গলবার গাজায় যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৫৯০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ। ইসরায়েলি বিমান হামলা ও স্থল হামলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিহত ও আহতের সংখ্যাও বাড়ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফাতে তাদের স্থল আক্রমণ চলছে এবং সৈন্যরা বেইত লাহিয়া শহর ও উত্তর দিকে কেন্দ্রীয় এলাকায় অগ্রসর হচ্ছে। ইসরায়েল বলেছে, গাজা উপত্যকায় পুনরায় শুরু করা স্থল অভিযান আরও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে বুধবার (১৯ মার্চ) ওই অঞ্চলের উত্তর-দক্ষিণের প্রধান পথ বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েলি সৈন্যরা।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে গাজায় ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস। স্থল ও আকাশপথে ইসরায়েলের নতুন হামলায় বেসামরিক প্রাণহানি বৃদ্ধির প্রতিশোধে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।


সপ্তাহজুড়ে পতনে ডিএসই হারিয়েছে সবকটি সূচক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সপ্তাহ ভালো কাটেনি ঢাকার পুঁজিবাজারে, টানা পতনে কমেছে সবকটি সূচক। সূচকের পতনের পাশাপাশি সারা সপ্তাহে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল নিম্নমুখী।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাপ্তাহিক লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পাঁচ কার্যদিবসে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৩ পয়েন্ট।

৫২২৫ পয়েন্ট নিয়ে শুরু হওয়া লেনদেন সপ্তাহ শেষে এসে ঠেকেছে ৫২০১ পয়েন্টে।

বাকি দুই সূচকের মধ্যে শরীয়া ভিত্তিক ডিএসইএস কমেছে১৩ পয়েন্ট এবং বাছাইকৃত কোম্পানির ব্লু-চিপ শেয়ার ডিএস-৩০ কমেছে ৭ পয়েন্ট।

বেহাল দশা ছোট এবং মাঝারি আকারের কোম্পানিতেই। ডিএসই'র এসএমই সূচক কমেছে ১৬ পয়েন্ট। এক সপ্তাহের লেনদেনে এ খাত ১.৬৩% সূচক হারিয়েছে।

সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম ছিল নিম্নমুখী। সারা সপ্তাহে ১৪৯ কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে দর কমেছে ২০৭ কোম্পানির। দর অপরিবর্তিত ছিল ৩৮ কোম্পানির এবং ১৮ কোম্পানি অংশ নেয়নি লেনদেনে।

সপ্তাহের শুরু থেকে বেশিরভাগ কোম্পানির দাম কমতে থাকলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির ধুম লেগে যায়। এতে করে আদতে লেনদেন বাড়লেও বাড়েনি শেয়ারের সামগ্রিক দাম।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে পাঁচ কার্যদিবসের গড় লেনদেন ছিল ৪৭৮ কোটি টাকা, যা গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ২২ শতাংশ বেশি।

তবে গড় লেনদেন বাড়লেও বাজার থেকে কমেছে মোট মূলধনের পরিমাণ। ব্রোকারেজ হাউজগুলোর দেয়া তথ্য অনুসারে, অনেক বিনিয়োগকারীই তলি তল্পা গুটিয়ে বাজার ছেড়েছেন। বাজারে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস গিয়ে ঠেকেছে তলানিতে।

ডিএসই'র সাপ্তাহিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৩৩৩ মিলিয়ন ডলার।

সপ্তাহজুড়ে ব্যাংক, আইটি, লাইফ ইনস্যুরেন্স, টেক্সটাইল, সাধারণ বীমা, ট্যানারি, টেলিকম এবং পাটখাতে রিটার্ন কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।

অন্যদিকে মিউচুয়াল ফান্ড, সিরামিক, রিয়েল স্টেট, কাগজশিল্প, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট বন্ড, প্রকৌশল, জ্বালানি এবং ঔষধশিল্পে ভালো রিটার্ন এসেছে। এদের মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ডে সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ১৪ শতাংশ রিটার্ন এসেছে।

সপ্তাহজুড়ে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে শাইনপুকুর সিরামিকসের। পাঁচ কার্যদিবসে কোম্পানিটির মোট ১৬ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয়ে আছে স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস পিএলসি। সাপ্তাহিক হিসাবে কোম্পানিটির মোট ১৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

পাঁচ কার্যদিবসে ব্লক মার্কেটে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে মারিকোর শেয়ার। মারিকোর পরেই শেয়ার বিক্রিতে এগিয়ে আছে এক্সপ্রেস ইনস্যুরেন্স লিমিটেড, ব্যাংক এশিয়া, বিচ হ্যাচারি এবং খান ব্রাদার্স।

সারা সপ্তাহে লেনদেনে দরবৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে আছে প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইনস্যুরেন্স লিমিটেড। জেড ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশের বেশি। ৪৭ টাকায় লেনদেন শুরু হওয়া কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সপ্তাহ শেষে হয়েছে ৬২ টাকা।

অন্যদিকে সাপ্তাহিক লেনদেনে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ৬৫ টাকায় শেয়ারপ্রতি লেনদেনে সপ্তাহ শেষে কমে হয়েছে ৫৬ টাকা।

পুঁজিবাজারে বেহাল দশা কাটিয়ে উঠতে গত সপ্তাহে সোমবার (১৭ মার্চ) পুঁজিবাজার উন্নয়নে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। কমিটি গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়, দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে অধিকতর শক্তিশালীকরণ এবং সর্বোপরি দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য কমিটি কাজ করবে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টাস্কফোর্স এবং কমিটি উভয়কেই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। আর নইলে সভা করে বাজারে চলমান সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে না।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বজায় ছিল সূচকের পতনের ধারা। সিএসইতে সার্বিক সূচক কমেছে ১৭ পয়েন্ট। ১৪৫৭৬ পয়েন্ট নিয়ে লেনদেন শুরু হলেও সপ্তাহান্তে সূচক দাঁড়িয়েছে ১৪৫৫৯ পয়েন্টে।

সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩০২ কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৪, কমেছে ১২৪ এবং অপরিবর্তিত আছে ২৪ কোম্পানির শেয়ারের দাম।

পাঁচ কার্যদিবসে সিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের শেয়ার। এছাড়া লেনদেনে শীর্ষ তালিকায় আছে উত্তরা ব্যাংক, ফাইন ফুডস, রবি, ফু-ওয়ান সিরামিক এবং শাইনপুকুরের শেয়ার।

সিএসইতে দরবৃদ্ধিতে শীর্ষে উঠে এসেছে প্যারামাউন্ট ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারপ্রতি দাম বেড়েছে ১০ টাকা করে।

এছাড়া ভালো অবস্থানে আছে শাইনপুকুর সিরামিকস, ডিবিএইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল, সেমি লেকচার ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট এবং এস আলম কোল্ড রোলড স্টিলস।

অন্যদিকে দরপতনে শীর্ষে উঠে এসেছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সপ্তাহ ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ১৫ টাকা। ডিএসই'র মতো সিএসইতেও ধস নেমেছে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজে। পাঁচ কার্যদিবসের লেনদেনে আলিফের শেয়ারপ্রতি দাম কমেছে ১৪ টাকা।


ব্যাংককে ইউনূস-মোদি বৈঠক হচ্ছে না

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বসছে বিমসটেকের ষষ্ঠ সম্মেলন। এতে অংশ নেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ সংস্থাটির অন্তর্ভুক্ত নেতারা। সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূস এবং মোদির মধ্যে একটি বৈঠকের আয়োজন করতে ভারতকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। বিষয়টি গতকাল বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা এএনআইকে নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

তবে ইউনূসের সঙ্গে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক কোনো বৈঠক হবে না বলে সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছে তিনটি সূত্র। এ কারণ হিসেবে তারা বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন সদস্য প্রতিদিনই ভারতের সমালোচনা করেন। এতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো নেই। এমন অবস্থায় দুই দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে বৈঠক আয়োজন সম্ভব নয়।

একটি সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেছেন, সম্মেলনে যেহেতু বিশ্ব নেতারা একাধিকবার একে-অপরের সামনে আসবেন। তখন হয়তো (ড. ইউনূস-মোদির মধ্যে) কথাবার্তা হলেও হতে পারে। কিন্তু এর বেশি কিছু প্রত্যাশা করা হচ্ছে না।

অন্য সূত্রটি বলেছেন, আনুষ্ঠানিক বৈঠক আয়োজন কঠিন মনে হচ্ছে। বিশেষ করে ঢাকা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার কাছ থেকে প্রতিদিনই ভারতের বিরুদ্ধে নতুন সমালোচনা আসছে। এসব বিষয় বৈঠক আয়োজনের ক্ষেত্রে সহায়ক নয়।

এদিকে ২ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত হবে বিমসটেকের এ সম্মেলন। এতে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে অংশ নেবে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড। এবারের বিমসটেক সম্মেলনটি এমন সময় হচ্ছে যখন বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক তলানিতে রয়েছে।

বিশেষ করে সাবেক স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া এবং সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের মিথ্যা অভিযোগ তোলায় দিল্লির সঙ্গে ঢাকার তিক্ত সম্পর্ক তৈরি হয়। গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইলেও এখনো তাকে ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো জবাব দেয়নি ভারত। যা সম্পর্কে আরও প্রভাব ফেলেছে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস


গাজায় আবারও স্থল অভিযান শুরু করল ইসরায়েল

ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ফিলিস্তিনিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২০ মার্চ, ২০২৫ ২০:০৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে তারা আবার স্থল অভিযান শুরু করেছে। এদিকে, তেল আবিব বলেছে, ফিলিস্তিনিদের জন্য এটি ‘শেষ সতর্কবার্তা’, যাতে তারা জিম্মিদের ফেরত দেয় এবং হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়। আল-জাজিরা এবং বিবিসির প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গত মঙ্গলবার ভোর থেকে গাজায় ভারী বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, এই হামলায় চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে খান ইউনিসের কাছে আরও অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন গাজায় যুদ্ধবিরতি বজায় রাখার আহ্বান জানালেও তা উপেক্ষা করেই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর ফলে ফিলিস্তিনিরা আবারও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্রিয়জনের মরদেহ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছেন।

ইসরায়েল যেসব এলাকাকে ‘যুদ্ধ এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করেছে, সেখান থেকে সাধারণ মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে। উত্তর গাজা থেকে পালানো অনেক পরিবারকে শিশুসহ রাস্তায় আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।

‘শেষ সতর্কবার্তা’ : গাজার বাসিন্দাদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, এটি শেষ সতর্কবার্তা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরামর্শ গ্রহণ করুন। জিম্মিদের ফিরিয়ে দেন এবং হামাসকে সরিয়ে দেন। তাহলে আপনাদের জন্য অন্যান্য বিকল্প উন্মুক্ত হবে-যার মধ্যে অন্য দেশে চলে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক এক বক্তব্যের কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ট্রাম্প বলেছিলেন, গাজার জনগণের জন্য সুন্দর ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে, তবে তা কেবল তখনই সম্ভব, যদি তারা জিম্মিদের মুক্তি দেয়। যদি না দেয়, তবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে!

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েল থেকে ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। কয়েক দফায় মুক্তি দেওয়ার পর আর মাত্র ৫৮ জন জিম্মি রয়েছেন গাজায়, যাদের মধ্যে ৩৪ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত সোমবার পর্যন্ত, অর্থাৎ তীব্র হামলা শুরুর আগ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৮ হাজার ৫৭০ জন নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত : গাজা উপত্যকায় সবশেষ ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার ভোর থেকে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৭০ জনেরও বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স। সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসালের টেলিগ্রামে প্রকাশিত সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, গাজাজুড়ে বাড়িঘর, তাঁবু এবং অন্যান্য স্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলায় নিহতদের মধ্যে জাতিসংঘের একজন কর্মচারীও রয়েছেন।

বাসাল বলেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো অনেক বেসামরিক নাগরিক আটকা পড়ে আছে। কিন্তু উদ্ধার অভিযানের জন্য প্রয়োজনীয় ভারী যন্ত্রপাতির অভাবের কারণে উদ্ধারকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, গাজার ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া এবং জ্বালানি সরবরাহের ওপর অবরোধ প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রদানকারীদের কাজকে বিপন্ন করছে। সীমান্তে ইসরায়েলি বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকলে পরিষেবাগুলো সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

২০২৪ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। গাজায় যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখি ইসরায়েল।

‘গাজায় এমন হামলা হবে, যা কেউ কখনো দেখেনি’ : হামাসের হাতে জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তি না দিলে গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। গাজায় এমন তীব্র হামলা চালানো হবে ‘যা আগে কেউ কখনো দেখেনি’ বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

গাজার নেতজারিম করিডরের একটি অংশ ফের দখলে নেওয়ার পর এ হুমকি দেন কাটজ। বুধবার উত্তর ও দক্ষিণ গাজাকে বিভক্তকারী কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলটিতে সেনা মোতায়েনের তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রশাসন।

এদিকে, হামাস জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত ও গাজার শাসনক্ষমতা না ছাড়া পর্যন্ত গাজায় হামলার তীব্রতা বাড়তে থাকবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)।

নেতজারিম করিডোর দখলে নেওয়ার পর বুধবার এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে আইডিএফ জানায়, জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপ কার্যকর হওয়ার পর এই অঞ্চল থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। এখন আবার সেখানে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, গত মঙ্গলবার সেহরির সময় নতুন করে আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এতে নারী-শিশুসহ চার শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হন বলে জানিয়েছে হামাসশাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর ফলে ভেঙে পড়েছে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি।

দীর্ঘ ১৫ মাসের সংঘাত শেষে একটু আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন গাজার বাসিন্দারা। মানবিক সাহায্য আসতে শুরু করেছিল, ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন কয়েকশত ফিলিস্তিনি, যাদের মধ্যে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিও ছিলেন।

তবে মঙ্গলবারের হামলায় আশার সব আলো নিভে গেছে। এরই মধ্যে নেতজারিম করিডরের দখল দুইপক্ষকে ফের সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও মঙ্গলবারের ইসরায়েলি বিমান হামলার পর এখন পর্যন্ত হামাসের কোনো পাল্টা হামলার খবর পাওয়া যায়নি।

বিষয়:

অগ্নিকাণ্ডে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ

সহস্রাধিক ফ্লাইটে বিঘ্ন
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

নিকটবর্তী একটি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনে অগ্নিকাণ্ডে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে এক হাজারের বেশি ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বিপুলসংখ্যক যাত্রীদের।

ক্ষুদেব্লগ ব্লুস্কাইয়ে দেওয়া এক পোস্টে ফ্লাইটরাডার২৪ নামের একটি ফ্লাইট ট্র্যাকার জানিয়েছে, ‘আজ শুক্রবার (২১ মার্চ) লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় এক হাজার ৩৫১টি ফ্লাইট চলাচল ব্যহত হয়েছে।’

খবর বলছে, ইউরোপের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দরটি বন্ধ থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর থেকে আসা বেশ কয়েকটি ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে। কিছু ফ্লাইট লন্ডনের বাইরে গ্যাটউইক বিমানবন্দরে, প্যারিসের শার্ল দ্য গোল বিমানবন্দর ও আয়ারল্যান্ডের শ্যানন বিমানবন্দরে গিয়ে অবতরণ করেছে।

মার্কিন সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) ও ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবর এমন তথ্য দিয়েছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রী ও সহকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হিথ্রো বিমানবন্দর বন্ধ রাখার কোনো বিকল্প আমাদের হাতে নেই। আসছে দিনগুলোতে উল্লেখযোগ্য সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।’

খুলে না দেওয়া পর্যন্ত যাত্রীদের এই বিমানবন্দর দিয়ে ভ্রমণ না করতে বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দরের একটি হিথ্রো। কেবল চলতি বছরের জানুয়ারিতেই এই বিমানবন্দর দিয়ে ৬৩ লাখ যাত্রী ভ্রমণ করেছেন। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে যা পাঁচ শতাংশ বেশি।

এরআগে ২০২৩ সালে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় ত্রুটি দেখা দেওয়ায় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিমানবন্দরে বিমান চলাচলের বিলম্ব হয়েছিল। তখন বেশ কয়েকদিন ধরে দেশটিজুড়ে বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ হয়েছিল ধীর গতিতে।

অগ্নিকাণ্ডের পর ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের সাতটি ফ্লাইটকে ফিরে যেতে হয়েছে কিংবা অন্য বিমানবন্দরে গিয়ে অবতরণ করতে হয়েছে। আর শুক্রবারে হিথ্রো বিমানবন্দরে এই এয়ারলাইনসের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) শেষ রাতে পূর্ব লন্ডনের একটি বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনের ট্রান্সফরমারে অগ্নিকাণ্ডে আগুনের শিখা আকাশে উঠতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পরেও সেই আগুন ধিকিধিকি জ্বলেছে। বিমানবন্দর থেকে দুই মাইল দূরে এই সাব-স্টেশনটির অবস্থান।

এই আগুন নেভাতে কয়েক ঘণ্টা ধরে ১০টি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ও ৭০ জনের মতো দমকলকর্মী কাজ করেছেন।

এতে কয়েক হাজার বসতবাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রায় ১৫০ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হয়েছে। স্কটল্যান্ড ও সাউদার্ন ইলেট্রিসিটি নেটওয়ার্কস জানিয়েছে, ষোলো হাজার ৩০০ বাড়ি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, স্থাপনাটি থেকে ব্যাপক আগুন ও কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে।

যুক্তরাজ্যের জ্বালানিমন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড বলেন, ‘সাতঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের কারণ আমাদের জানা নেই। অবশ্যই এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা।’


এসবিবিএস কমিউনিটির সদস্যদের জন্য নানা উদ্যোগ

চালু হচ্ছে 'লিগ্যাল শো' ও মেম্বার্স সাপোর্ট কার্যক্রম
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
লন্ডন থেকে আজিজুল আম্বিয়া

দ্য সোসাইটি অব বৃটিশ বাংলাদেশী সলিসিটরস (এসবিবিএস) কমিউনিটির জন্যে ফ্রি আইনী পরামর্শসেবা এবং সদস্যদের জন্যে চালু করছে নানা রকম কার্যক্রম।

রোববার পূর্বলন্ডনের একটি রেস্তোরায় অনুষ্ঠিত মিট দ্যা প্রেস, এমওইউ স্বাক্ষর ও ইফতার অনুষ্ঠানে একথা জানান সংগঠনটির নব নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ।

এসবিবিএস সদস্যদের প্রফেশনাল ইনডেমনিটি ও অন্যান্য ইন্সুরেন্স সেবা নিশ্চিতে হেরা ইনডেমনিটি কোম্পানির সাথে এবং লিগ্যাল সার্চেস সেবার জন্যে এক্সপ্রেস লিগ্যাল সার্ভিস কোম্পানি সাথে দুইটি এমওইউ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

চুক্তি অনুযায়ী কোম্পানীদ্বয় এসবিবিএস সদস্যদের ও সলিসিটর্স ফার্মকে হ্রাসকৃত ফিতে ইন্সুরেন্স ও রেগুলেটেড লিগ্যাল সার্চেস সেবা দিবে।

নব নির্বাচিত সভাপতি মুহাম্মদ নুরুল গাফ্ফার কমিটির গৃহিত বিভিন্ন কার্যক্রম পরিকল্পনা সম্পর্কে সভায় অবহিত করেন যারমধ্যে রয়েছে ফ্রি আইনী পরামর্শ সেবার এসবিবিএস লিগ্যাল শো, লিগ্যাল আপডেট ও সদস্যদের বছরব্যাপী সিপিডি ট্রেনিং, ইন্টারেক্টিভ ওয়েবসাইট, এসআরএ এবং অন্য রেগুলেটরদের সাথে স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে এডভোকেসি করা ইত্যাদি।

তিনি আরও বলেন, সদস্যদের বাংলাদেশে এডভোকেটশীপ সহজীকরণে কমিটি কাজ করছে। কমপ্লেইন্স এবং কমপ্লিয়ান্ট হ্যান্ডলিং সাপোর্টের জন্যে তার নেতৃত্বে কমিটি রয়েছে, যে কোনো সদস্য গোপনীয়তার সাথে তাদের সহযোগিতা নিতে পারবেন।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্যাট্রন জাজ বেলায়েত হোসাইন, সলিসিটার তাজ শাহ, ব্যারিস্টার নাজির আহেমদ, টাওয়ার হ্যামলেটের স্পিকার ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দিন খালেদ, ও লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সেক্রেটারি তাইসির মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনের মিনিস্টার ও হেড অব চ্যান্সেরি শাহরিয়ার মোশাররফ, প্রাক্তন সভাপতি দেওয়ান মেহেদী, ফরিদা হাকিম, এহসান হক, বিভিন্ন ফার্মের প্রিন্সিপাল সলিসিটর্স, সম্পাদক, সাংবাদিক সহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী । সেক্রেটারি মুহাম্মদ মুনসাত হাবিব চৌধুরীর সঞ্চালনে কমিটির সদস্যরা উপস্থিত সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গের সাথে পরিচয়পর্বসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন এবং সকল সদস্যের সাথে একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। সার্বিক কল্যাণ কামনায় দোআ মোনাজাত পরিচালনা করেন সলিসিটার আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ।


banner close