সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫
১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা লেবাননের

লেবাননে ইসরায়েলের হামলা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড
২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:৫০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২২ মার্চ, ২০২৫ ২০:০৯

ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছে লেবানন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম এই ঘোষণা দিয়েছেন। যুদ্ধবিরতির পর নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্ক করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন তিনি। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আল-জাজিরা বলছে, প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালামের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুদ্ধ এবং শান্তির বিষয়ে লেবানন যে সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখানোর জন্য সব নিরাপত্তা ও সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, হামলার ফলে ‘একটি নতুন যুদ্ধের দিকে ধাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা লেবানন এবং লেবাননের জনগণের জন্য দুর্দশা ডেকে আনতে পারে’।

এদিকে ইসরায়েলে ফের হুতি বিদ্রোহীরাও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে তারা ইয়েমেন থেকে আসা একটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ইসরায়েলি ভূখণ্ডে আঘাত হানার আগেই ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূপাতিত করা সম্ভব হয়েছে বলে জানানো হয়।

ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে হুতি বিদ্রোহীরা। শনিবার ভোরে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে হুতি মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানান, ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীটি তেল আবিবের কাছে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর লক্ষ্য করে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

তিনি জানিয়েছেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো হামলা চালানো হলো। সারি আরও বলেন, হুতিরা লোহিত সাগরে মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানের ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে।

লেবানন থেকে ইসরায়েলে দফায় দফায় রকেট হামলা

লেবানন থেকে ইসরায়েলে দফায় দফায় রকেট হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলের সীমান্তে নিক্ষেপ করা তিনটি রকেট প্রতিহত করেছে।

ইসরায়েলের আর্মি রেডিও এক খবরে জানিয়েছে, লেবানন থেকে নিক্ষেপ করা কমপক্ষে পাঁচটি রকেট শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি রকেট প্রতিহত করা হয়েছে এবং দুটি লেবাননের ভূখণ্ডের ভেতরে পড়েছে বলে জানানো হয়।

আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের ইয়াহমোর শহরের উপকণ্ঠে গোলাবর্ষণ করছে। তবে এসব সংঘাতে এখনো পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। লেবাননভিত্তিক হিজবুল্লাহ সংগঠনও এখন পর্যন্ত ওই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

মার্কিন সেনাবাহিনী এখনো এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেনি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকির পরেও লোহিত সাগরে একাধিক মার্কিন জাহাজে হামলা চালিয়েছে হুতিরা।

২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল। সে সময় থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় হামলা চালিয়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুকে হত্যা করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে হুতি বিদ্রোহীরা। ফিলিস্তিনিদের ওপর যতদিন পর্যন্ত আগ্রাসন চলবে তত দিন এই হামলা চলবে বলে জানানো হয়েছে।

পাল্টা হামলা ইসরায়েলের

ইসরায়েলি গোলা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি শহরে আঘাত হেনেছে। তেল আবিবের বিমান সীমান্ত সংলগ্ন আরও তিনটি শহরে হামলা চালিয়েছে। লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে। লেবানন থেকে ছোড়া একাধিক রকেট প্রতিহত করার পর দেশটিতে পাল্টা গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইসরায়েল।

এই পাল্টাপাল্টি হামলা তেল আবিব ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে কয়েক মাস আগে হওয়া যুদ্ধবিরতিকে ঝুঁকিতে ফেলে দিতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়ায় গাজা ঘিরে যে যুদ্ধ শুরু হয়, তার ধারাবাহিকতায় পরে হিজবুল্লাহও তেল আবিবের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। পরে ইসরায়েল হিজবুল্লাহর একাধিক শীর্ষ নেতা, অস্ত্রভাণ্ডারের বড় অংশ ও অসংখ্য যোদ্ধাকে হত্যা করার পর ইরানঘনিষ্ঠ সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ঝিমিয়ে পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত বছরের নভেম্বরে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়, তারপর শনিবারই প্রথম এই সীমান্তে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটল, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলছে, তারা সীমান্তের ৬ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত লেবাননের একটি জেলা থেকে ছোড়া তিনটি রকেট প্রতিহত করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সেনাবাহিনী গোলা ছুড়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনা রেডিও।

ইসরায়েলি গোলা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের দুটি শহরে আঘাত হেনেছে, তেল আবিবের বিমান সীমান্ত সংলগ্ন আরও তিনটি শহরে হামলা চালিয়েছে, বলেছে লেবাননের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।

সীমান্তের ওপার থেকে রকেট ছোড়ার জন্য কারা দায়ী, তা বলেনি ইসরায়েল। রয়টার্স এ প্রসঙ্গে হিজবুল্লাহর মন্তব্য চাইলেও তাৎক্ষণিকভাবে গোষ্ঠীটির কাছ থেকে সাড়া পাওয়া যায়নি।

দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর কোনো অস্ত্র থাকবে না, ইসরায়েল সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেবে এবং ওই এলাকায় লেবাননের সরকারি বাহিনী মোতায়েন থাকবে এমন শর্ত ছিল।

চুক্তিতে দক্ষিণ লেবাননের সব সামরিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া এবং সব অবৈধ অস্ত্র জব্দের ভারও লেবাননের সরকারের হাতে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে গতকাল শনিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, সীমান্ত শহর মেটুলাতে রকেট ছোড়ার ঘটনার দায়ভার লেবা

বিষয়:

বৈশ্বিক যুদ্ধে অস্ত্র ব্যবসায় মুনাফা ৬৭৯ বিলিয়ন ডলার

জার্মানিতে নির্মিত অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বৈশ্বিক উত্তেজনা, আঞ্চলিক যুদ্ধ-সংঘাত এবং সামরিক ব্যয়ের লাগাতার বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে অস্ত্র বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেছে বিশ্বের বৃহৎ অস্ত্র প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলো। ২০২৪ সালে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ অস্ত্র প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রেকর্ড ৬৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে।

সোমবার স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (এসআইপিআরআই) প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এসআইপিআরআই বলছে, গাজা ও ইউক্রেনের যুদ্ধসহ বিশ্বব্যাপী সংঘাত এবং সামরিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আগের বছরের তুলনায় অস্ত্রবিক্রি ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে।

বৈশ্বিক অস্ত্র বিক্রির এই বৃদ্ধির বড় অংশ এসেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপভিত্তিক কোম্পানি থেকে। এশিয়া–ওশেনিয়ার মোট বিক্রি কিছুটা কমেছে। মূলত চীনা অস্ত্র বিক্রি সংকটের কারণে এশিয়ার কোম্পানিগুলোর বিক্রি কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্র

মার্কিন শীর্ষ ৩৯ কোম্পানির মধ্যে ৩০টির বিক্রি বেড়েছে। এদিক থেকে শীর্ষে রয়েছে লকহিড মার্টিন, নর্থরপ গ্রুম্যান ও জেনারেল ডায়নামিকস।

২০২৪ সালে মার্কিন কোম্পানিগুলোর মোট বিক্রি হয়েছে ৩৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অস্ত্র যা আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রথমবারের মতো শীর্ষ অস্ত্র প্রস্তুতকারী তালিকায় স্থান পেয়েছে স্পেসএক্স। বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের সামরিক বিক্রি দ্বিগুণ বেড়ে ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার হওয়ায় প্রথমবার তারা তালিকায় জায়গা পেয়েছে।

ইউরোপ

রাশিয়া ছাড়া ইউরোপের ২৬টি কোম্পানি এই তালিকায় রয়েছে যার মধ্যে ২৩টির বিক্রি বেড়েছে। ইউরোপে মোট বিক্রি হয়েছে ১৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অস্ত্র যা আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

চেক প্রজাতন্ত্র ইউক্রেনের জন্য আর্টিলারি শেল উৎপাদন বাড়িয়ে বিক্রি ১৯৩ শতাংশ বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে যা ২০২৪ সালের সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি। ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান জেএসসি ইউক্রেনিয়ান ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রির বিক্রি ৪১ শতাংশ বেড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

রাশিয়া

শীর্ষ অস্ত্র বিক্রির তালিকায় রাশিয়ার মাত্র ২টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ তালিকায় আছে রোস্তেক ও ইউনাইটেড শিপবিল্ডিং করপোরেশন। তাদের মোট আয় ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার যা আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ইসরায়েল

গাজায় গণহত্যার মধ্যেই ইসরায়েলের অস্ত্র রপ্তানিতে ২০২৪ সালে রেকর্ড পরিমাণ আয় করেছে ইসরায়েলি কোম্পানিগুলো। ২০২৪ সালে প্রথমবার মধ্যপ্রাচ্যের ৯টি কোম্পানি এ তালিকায় জায়গা পেয়েছে যার মধ্যে ৩টি ইসরায়েলি কোম্পানি যাদের বিক্রি ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা মোট ৩১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রি করেছে যা আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসরায়েলি ড্রোন, মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও কাউন্টার–ড্রোন প্রযুক্তির বৈশ্বিক চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালে ইরানের ব্যাপক ড্রোন–মিসাইল হামলার পর ইসরায়েলি অস্ত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে এ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

চীনা কোম্পানিগুলোতে ধস

এশিয়া–ওশেনিয়া অঞ্চলের মোট বিক্রি ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৩০ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। এর বড় কারণ চীনের আটটি কোম্পানির সম্মিলিত বিক্রি ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চীনা কোম্পানি নোরিনকো। তাদের বিক্রি ৩১ শতাংশ কমেছে।

এসআইপিআরআই জানিয়েছে, চীনা অস্ত্র কেনাকাটায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে অনেক চুক্তি স্থগিত বা বাতিল হওয়ায় দেশটির সামরিক আধুনিকায়নে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

জাপান–দক্ষিণ কোরিয়ায় উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি

কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়ায় এসব দেশে অস্ত্র বিক্রি বেড়েছে। জাপানের ৫ কোম্পানির বিক্রি ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ৪ কোম্পানির বিক্রি ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার হানওয়াহ গ্রুপ একাই ৪২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

তুরস্ক

শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় ৫টি তুর্কি কোম্পানি রয়েছে। তাদের মোট আয় ১০ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার যা আগের বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এছাড়াও অন্যান্য দেশের কোম্পানিও এ তালিকায় রয়েছে। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ভারত, তাইওয়ান, নরওয়ে, কানাডা, স্পেন, পোল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানিগুলোও শীর্ষ ১০০-তে রয়েছে।


দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশে বন্যা-ভূমিধসে প্রাণহানি ৯০০ ছাড়াল

ইন্দোনেশিয়া বন্যায় উদ্ধার অভিযান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

টানা ভারীবর্ষণে সৃষ্ট ভয়াবহ ও ভূমিধসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চার দেশে— ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় প্রাণহানির সংখ্যা ৯০০ ছাড়িয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ। এতে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত দেশগুলোর কয়েক কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় সুমাত্রা দ্বীপে বন্যা ও ভূমিধসে এক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। আরও প্রায় ৪০২ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা (বিএনপিবি)।

মূলত, ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার নামের একটি অস্বাভাবিক ও অনেকটা বিরল উষ্ণমন্ডলীয় ঝড়ের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ ভূমিধ্বস ও বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে বহু ঘরবাড়ি ভেসে গেছে ও হাজার হাজার ভবন পানিতে ডুবে গেছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর সুমাত্রা, পশ্চিম সুমাত্রা এবং আচেহ্।

বিএনপিবি প্রধান সুহারিয়ানতো এক বিবৃতিতে বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তা পাঠানো হচ্ছে কিন্তু কিছু গ্রামে এখনো কিছুই পৌঁছায়নি। ফলে বেঁচে থাকার জন্য খাবার ও পানি চুরির অভিযোগ উঠছে।

পশ্চিম সুমাত্রার রাজধানী পাদাং থেকে একশ কিলোমিটার দূরে সুংগাই নিয়ালো গ্রামে রবিবার নাগাদ বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর পুরো গ্রামের বাড়িঘর, যানবাহন ও ফসলের জমি কাদায় ঢেকে গেছে।

এদিকে সাম্প্রতিক কালের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দক্ষিণ এশীয় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে বন্যা- ভূমিধসে কমপক্ষে ৩৩৪ জনের মৃত্যু এবং বমপক্ষে ৩৬০ জন নিখোঁজ রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় ইংরেজি সংবাদপত্র ডেইলি মিরর জানিয়েছে, ১৭ নভেম্বর থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যার পানি বৃদ্ধি এবং ক্রমাগত ভূমিধস অব্যাহত রয়েছে। যদিও টানা ভারি বর্ষণ এখন কিছুটা কমে গেছে, রাজধানী কলম্বোর নিচু এলাকাগুলো এখনো পানির নিচে রয়েছে এবং দেশের মধ্যাঞ্চলের অনেক এলাকা এখনো বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। এতে দেশটির ১৭টি জেলার প্রায় ১১ লাখ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

অন্যদিকে থাইল্যান্ড সরকার জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় সেনিয়ার জেরে ভারী বর্ষণ ও বন্যায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় ১০টি প্রদেশে এ পর্যন্ত ১৭০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সব মিলিয়ে এসব প্রদেশের মোট ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ৩৫ লাখ মানুষ।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গত সপ্তাহে দেশটির দক্ষিণের ১০টি প্রদেশে বন্যা আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মালয়েশিয়ার সীমান্তবর্তী বাণিজ্যিক কেন্দ্র হাট ইয়াই শহর, যেখানে ৩০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে— একদিনে ৩৩৫ মিলিমিটার।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, হাট ইয়াই শহরের যানবাহন ও ঘরবাড়ি ডুবে আছে, আর হাজার হাজার বাসিন্দারা তাদের বাড়ির ছাদে উদ্ধারের অপেক্ষায় রয়েছেন। এছাড়াও অনেক এলাকায় সড়ক যোগাযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্কও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

অন্যদিকে থাইল্যান্ডের প্রতিবেশী দেশ মালয়েশিয়ার সাতটি রাজ্যে ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত দুইজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দেশটিতে ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হয়েছেন।

মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যেই থাইল্যান্ডের ২৫টিরও বেশি বন্যা কবলিত হোটেলে আটকে পড়া ১ হাজার ৪৫৯ জন মালয়েশিয়ান নাগরিককে সরিয়ে নিয়েছে এবং বন্যা অঞ্চলে আটকে থাকা বাকি ৩০০ জনকে উদ্ধারের জন্য কাজ করছে।


‘ইমরান খান বেঁচে আছেন’

ইমরান খান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব উড়িয়ে দিয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর সিনেটর খুররম জিশান। তিনি বলেছেন, ইমরান খান বেঁচে আছেন এবং বর্তমানে আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন।

পাকিস্তান ত্যাগের জন্য চাপ দেয়ার কৌশল হিসেবে ইমরান খানকে ‘আইসোলেশনে’ রাখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন সিনেটর জিশান।

পাকিস্তান থেকে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সঙ্গে আলাপকালে, ইমরান খানের দল পিটিআই-এর সঙ্গে যুক্ত খুররম জিশান বলেন, ‘দেশের বর্তমান সরকার ইমরান খানের জনপ্রিয়তায় ভীত। এ কারণে তারা তার কোনো ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করতে দেয়নি।’

সম্প্রতি আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল দাবি করে যে ইমরান খানকে রাওয়ালপিন্ডির কারাগারে হত্যা করা হয়েছে।

এএনআই-কে জিশান বলেন, ‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। প্রায় এক মাস ধরে তাকে (ইমরান খান) আইসোলেশনে রাখা হয়েছে এবং তার পরিবার, আইনজীবী, এমনকি পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের জ্যেষ্ঠ নেতাদেরও তার সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এটি মানবাধিকারের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। মনে হচ্ছে তারা তাকে জোর করে কিছু একটা করতে চাইছে।’

গুজবের অবসান ঘটিয়ে এই সিনেটর আরও বলেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করা হয়েছে যে তিনি (ইমরান) বেঁচে আছেন এবং বর্তমানে আদিয়ালা জেলে বন্দি। তিনি ঠিক আছেন।’

ইমরান খানের সঙ্গে পাকিস্তান সরকার কী ধরনের চুক্তি করতে চাইছে জানতে চাইলে জিশান বলেন, ‘তাকে দেশ ছেড়ে চুপ থাকতে বলা হয়েছে।’

গণমাধ্যমকে তিনি আরও বলেন, ‘তারা (সরকার) ইমরান খানের সঙ্গে একটি চুক্তি করার চেষ্টা করছে, তাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলছে। এমনকি চুপ থাকার শর্তে তারা ইমরান খানকে তার পছন্দের জায়গায় যেতে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। কিন্তু ইমরান খান যে ধরনের নেতা, তিনি কখনোই এতে রাজি হবেন না।’

ইমরান খানের নিরাপত্তা নিয়ে পরিবারের উদ্বেগ

তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইমরান খানের জীবিত থাকার দৃশ্যমান কোনও প্রমাণ নেই। তার পরিবারের আশঙ্কা, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান অবস্থা নিয়ে কর্তৃপক্ষ এমন কিছু গোপনের চেষ্টা করছে, যা 'অপরিবর্তনীয়'। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন অভিযোগ করেছেন ইমরানের সন্তান কাসিম খান।

আদালতের অনুমতি থাকা সত্ত্বেও পরিবারের সঙ্গে ইমরানের কারা সাক্ষাৎ বন্ধ রয়েছে। এদিকে, জোর গুজব হচ্ছে, ইমরানকে গোপনে অন্য কারাগারে সরানোর চেষ্টা চলছে।

রয়টার্সকে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে কাসিম বলেন, আপনার বাবা নিরাপদ, অসুস্থ কিংবা আদৌ বেঁচেই আছেন কিনা—এটা না জানা মানসিক নির্যাতনের মতো। কয়েক মাস ধরে তার সঙ্গে স্বাধীনভাবে কোনও রকম যোগাযোগ নিশ্চিত করা যায়নি।

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের কাছ থেকে কোনও অপরিবর্তনীয় সত্য লুকিয়ে রাখা হচ্ছে।

তার অভিযোগ, পরিবারের তরফ থেকে ইমরান খানের ব্যক্তিগত চিকিৎসকের প্রবেশাধিকার একাধিকবার চাওয়া হয়েছে, কিন্তু এক বছরেরও বেশি সময় ধরে তাকে সেই অধিকার দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে রয়টার্সের অনুরোধে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনও সাড়া দেয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জেল কর্মকর্তা বলেন, ইমরান খান সুস্থ আছেন এবং তাকে উচ্চ-নিরাপত্তার কোনও কারাগারে স্থানান্তরের কোনও পরিকল্পনার কথা তিনি জানেন না।

৭২ বছর বয়সি খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে একাধিক মামলা ঘাড়ে নিয়ে অন্তরীণ আছেন। তবে সব মামলাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ২০২২ সালে পার্লামেন্টারি অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাজানো হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

তার প্রথম দণ্ড ছিল সরকারি দায়িত্বে পাওয়া উপহার বেআইনিভাবে বিক্রির অভিযোগের ভিত্তিতে, যা তোশাখানা মামলা নামে পরিচিত। পরে কূটনৈতিক বার্তা ফাঁসের অভিযোগে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং আল-কাদির ট্রাস্ট সম্পৃক্ত দুর্নীতি মামলায় ১৪ বছরের দণ্ড যোগ হয়। প্রসিকিউটররা বলেন, ওই দাতব্য প্রকল্পে অবৈধ ভূমি লেনদেন হয়েছিল।

ইমরানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) অভিযোগ, এসব মামলা তাকে রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার অপপ্রচেষ্টার অংশ।


ট্রাম্পের হুমকি মোকাবিলায় ওপেকের সহায়তা চেয়েছেন মাদুরো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘হুমকি’মোকাবিলায় ওপেকের সহায়তা চেয়েছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। রোববার ওপেকভুক্ত দেশগুলোর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে মাদুরো অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলার বিশাল তেলসম্পদ দখল করতে চাইছে।

মাদুরো বলেছেন, এই পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারের ভারসাম্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। মার্কিন এ পদক্ষেপ উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা উভয় দেশের জন্যই হুমকি তৈরি করছে। ওপেক ও ওপেক–প্লাস দেশগুলোর কাছে ভেনিজুয়েলার বিরুদ্ধে সামরিক হুমকি ও আগ্রাসনের বিষয়েও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেছে মাদুরো

বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল ভাণ্ডার থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে ভেনিজুয়েলার তেল রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে। ২০২৩ সালে মাত্র ৪ দশমিক ০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তেল রপ্তানি করেছে ভেনিজুয়েলা।

মাদুরোর চিঠি পাঠানোর একদিন আগে ট্রাম্প তার ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা পুরোপুরি বন্ধ বলে দাবি করেন। ট্রাম্পের এ ঘোষণাকে ‘ঔপনিবেশিক হুমকি’ হিসেবে উল্লেখ করেছে ভেনেজুয়েলা। কারাকাসের অভিযোগ, ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর উদ্দেশ্য তাদের তেল-গ্যাস সম্পদ লুট করা।

এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে বিমানবাহী রণতরি ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ডসহ যুদ্ধজাহাজ, হাজারো সেনা এবং এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে। মাদকবিরোধী অভিযানে নামে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক জলসীমায় থাকা জাহাজে ২০ টির বেশি হামলা চালিয়েছে।

মার্কিন বাহিনীর এসব হামলায় অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসবকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে নিন্দা জানিয়েছে।


দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একমাত্র সমাধান: পোপ লিও

পোপ লিও
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের একমাত্র ন্যায়সঙ্গত সমাধান হিসেবে দুই-রাষ্ট্র কাঠামোর প্রতি ভ্যাটিকানের দৃঢ় অবস্থান তুলে ধরেছেন পোপ লিও চতুর্দশ। তুরস্ক সফর শেষে রোববার লেবাননে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, এটাই একমাত্র সমাধান যা উভয় পক্ষের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে ব্যক্তিগত বৈঠকে গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেন। পোপ বলেন, আঞ্চলিক দুই বড় সংকট সমাধানে তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

পোপ লিও বলেন, আমরা জানি, এই মুহূর্তে ইসরায়েল এই সমাধান গ্রহণ করছে না। কিন্তু এই অঞ্চলে একটি ন্যায়সংগত সমাধান আনতে হলে পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর ও গাজায় একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনই একমাত্র পথ।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এই মন্তব্যের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। নেতানিয়াহু আগে বলেছিলেন, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হামাসকে পুরস্কৃত করার শামিল হবে এবং সেটি ইসরায়েলের সীমান্তঘেঁষা আরও বড় হুমকি তৈরি করতে পারে।

লেবাননে পোপ লিওকে স্বাগত জানানোর জন্য শহরের রাস্তা-ঘাটে ভিড় করেন হাজারো মানুষ। তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউনের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে কর্তৃপক্ষ ও কূটনীতিকদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন।

লেবাননে প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ খ্রিষ্টান এবং বাকিরা মুসলিম—শিয়া ও সুন্নি উভয়ই। তাই এ সফরকে লেবাননের বহু ধর্ম বিশিষ্ট সমাজে শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা বহনকারী বলে মনে করা হচ্ছে।


ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে ইসরায়েলিরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে হওয়া দুর্নীতি মামলায় পূর্ণ ক্ষমার আবেদন করেছেন। নেতানিয়াহুর এমন আবেদনের পর তেল আবিবে প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন ক্ষুব্ধ ইসরায়েলিরা। রোববার রাতের এ বিক্ষোভে হাজারো মানুষ অংশ নিয়েছে।

জানা গেছে, ৭৬ বছর বয়সি নেতানিয়াহু কোনো দোষ স্বীকার বা অনুশোচনা প্রকাশ না করেই দীর্ঘদিনের চলমান দুর্নীতি মামলায় প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চান। এরপরই বিরোধী রাজনীতিবিদ ও নাগরিকরা ‘ক্ষমা = কলা রিপাবলিক’ স্লোগান তুলে হারজগকে আবেদন প্রত্যাখ্যান ও শাস্তি প্রদানের আহ্বান জানান।

এক বিক্ষোভকারী নেতানিয়াহুর সাজে কমলা রঙের কারাবন্দির পোশাক পরে অংশ নেন। অন্যরা কলার স্তূপ সাজিয়ে তাতে ‘ক্ষমা’ লেখা সাইন ধরে প্রতিবাদ জানান।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারী শিকমা ব্রেসলার বলেন, তিনি কোনো দায়িত্ব না নিয়ে বিচার বাতিল করতে চাইছেন। এতে দেশ আরও বিভক্ত হচ্ছে।

নেতানিয়াহু ইসরায়েলের ক্ষমতায় দীর্ঘ সময় থাকা প্রধানমন্ত্রী। তিনি ঘুষ, প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গসহ তিনটি দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছর ধরে বিচারাধীন। একটি মামলায় তিনি ও তার স্ত্রী বিলিয়নিয়ারদের কাছ থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার মূল্যের বিলাসবহুল পণ্য নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। আরও দুটি মামলায় সংবাদমাধ্যমকে প্রভাবিত করতে চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

তবে, সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নেতানিয়াহু। প্রেসিডেন্টের দফতরে পাঠানো ১১১ পৃষ্ঠার চিঠিতে তার আইনজীবীরা দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন যে বিচার সুষ্ঠু হলে তিনি শেষ পর্যন্ত খালাস পাবেন।

তবে নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, জাতীয় স্বার্থে বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করা প্রয়োজন কারণ বিচার দেশকে ভেতর থেকে বিভক্ত করছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলা, নিহত ৩৫৭

যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পরও ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩৫৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ৯০৩ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ রোববার জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর থেকে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। গাজার সরকারি গণমাধ্যম দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নির্বিচারে ৩৮ জনকে আটক করেছে এবং তারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ৫৯১টি ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এসব লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে বেসামরিক নাগরিক, তাদের বাড়িঘর ও তাঁবুর দিকে সরাসরি গুলি, বোমাবর্ষণ এবং বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা।

দপ্তরটি জানিয়েছে, এই লঙ্ঘনগুলো প্রমাণ করে যে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী চুক্তিকে দুর্বল করতে এবং গাজা উপত্যকায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ এক রক্তাক্ত বাস্তবতা তৈরি করতে বদ্ধপরিকর। বিবৃতিতে বলা হয়, যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও বারবার এই ইসরায়েলি হামলা মূলত পরিকল্পিত অপরাধ, যার উদ্দেশ্য হলো ধ্বংসযজ্ঞের বিস্তার ঘটানো এবং সম্মিলিতভাবে সাধারণ মানুষকে শাস্তি দেওয়া, যা জেনেভা কনভেনশনের গুরুতর লঙ্ঘনের শামিল।

গাজার গণমাধ্যম দপ্তর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী ও নিশ্চয়তাদানকারী এবং জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে তেল আবিবকে চুক্তি পুরোপুরি মেনে চলতে বাধ্য করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, তুরস্ক, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি গত ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হওয়া দুই বছরের ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করার লক্ষ্যে এই চুক্তিটি করা হয়েছিল। ওই হামলায় ৭০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি আহত হয়েছিলেন, যাদের একটি বড় অংশই নারী ও শিশু।

চুক্তির প্রথম ধাপে ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিনিময়ে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া এই পরিকল্পনায় গাজা পুনর্গঠন এবং হামাসবিহীন একটি নতুন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

‘গাজা টানেল অভিযানে ৪০ ফিলিস্তিনি যোদ্ধা নিহত’

গাজা উপত্যকার রাফা শহরের কাছে একটি টানেলকে লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়ে গত সপ্তাহে ৪০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে।

আগের দিন, সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে যে তারা গতরাতে ভূগর্ভস্থ এলাকা থেকে বেরিয়ে আসা চার যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

হামাসের কয়েক ডজন যোদ্ধা দক্ষিণ গাজার টানেলগুলোতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রিত এলাকার নিচে লুকিয়ে আছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী, গত ৪০ দিন ধরে, সেনাবাহিনী পূর্ব রাফাহর চারপাশে তাদের প্রচেষ্টাকে কেন্দ্রীভূত করছে।

এই এলাকায় থাকা ভূগর্ভস্থ টানেল রুটগুলো ভেঙে ফেলা ও তাদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের নির্মূল করার লক্ষ্যেই এ অভিযান চালানো হয়েছে বলে সেনাবাহিনী তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে।

তারা আরও জানিয়েছে যে গত সপ্তাহে ‘৪০ জনেরও বেশি সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হয়েছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এছাড়াও, এলাকায় মাটির উপরে ও নিচে কয়েক ডজন টানেল শ্যাফ্ট ও সন্ত্রাসী অবকাঠামো সাইট ভেঙে ফেলা হয়েছে।’ বৃহস্পতিবার একাধিক সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে যে দক্ষিণ গাজার টানেল নেটওয়ার্কে এখনো যে সব হামাস যোদ্ধা রয়েছ, তাদের ব্যাপাকে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে— তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

বুধবার, হামাস মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে ইসরায়েলকে নিরাপদ পথের অনুমতি দেওয়ার জন্য চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। প্রথমবারের মতো ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটি প্রকাশ্যে এই পরিস্থিতির কথা স্বীকার করেছে।

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি ১০ অক্টোবর কার্যকর হয়। এর শর্ত অনুসারে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকার মধ্যে তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’র পিছনে সরে যায়। এটি হলুদ কংক্রিটের ব্লক দিয়ে মাটির ওপরে চিহ্নিত সীমানা। হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলি-নিয়ন্ত্রিত লাইনের পাশে অবস্থিত টানেলগুলোতে অবস্থান করছে।


শ্রীলঙ্কায় ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দল পাঠাবে বাংলাদেশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কারণে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণসামগ্রী ও একটি উদ্ধারকারী দল পাঠাবে বাংলাদেশ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ৩ ডিসেম্বর এ ত্রাণ মিশন পাঠানো হবে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর দুটি বিশেষ বিমানযোগে ত্রাণসামগ্রী ও উদ্ধারকারী দল পাঠানো হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বিজিএমইএ এবং এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড যৌথভাবে এই ত্রাণ কার্যক্রম সমন্বয় করছে।

সম্প্রতি, ঘূর্ণিঝড় দিতওয়া’র প্রভাবে দেশটিতে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত ৩৫৫ জন নিহত হয়েছেন এবং কমপক্ষে ৩৬৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

এ ছাড়া ২০ হাজারের বেশি বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার মানুষকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শ্রীলঙ্কা সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দ্রুত সহায়তা চেয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অতীতেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ অন্যান্য যেকোনো মানবিক বিপর্যয় মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার দ্রুত সাড়া দিয়ে মানবিক সহায়তা প্রেরণ করেছে। সূত্র: বাসস


মার্কিন চাপ থাকা সত্ত্বেও জাতিসংঘের জলবায়ু প্রতিবেদন তৈরিতে কাজ করছেন বিশেষজ্ঞরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্যারিসের বাইরে সোমবার প্রায় ৬০০ জন বিশেষজ্ঞ জাতিসংঘের পরবর্তী জলবায়ু প্রতিবেদন তৈরির কাজ শুরু করতে মিলিত হচ্ছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্ব উষ্ণায়নের বিষয়ে আন্তর্জাতিক ঐকমত্যকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলার পর, তারা প্রতিবেদনটি তৈরি করতে যাচ্ছেন।
২০২৩ সালে প্রকাশিত আন্তঃসরকার জলবায়ু পরিবর্তন প্যানেল (আইপিসিসি)-এর পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে যে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার সীমা অতিক্রম করার পথে রয়েছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
জাতিসংঘ বলছে, পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের একটি সীমা রয়েছে, যা অতিক্রম করলে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যেমন— ঝড়, বন্যা, ও খরা দেখা দিতে পারে। আর এটি আশঙ্কার চেয়েও দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
১০০টিরও বেশি দেশের বিশেষজ্ঞরা সেন্ট-ডেনিসের একটি আকাশচুম্বী ভবনে পাঁচ দিনের জন্য মিলিত হচ্ছেন।
তারা এমন একটি প্রক্রিয়া শুরু করছেন, যা আইপিসিসি’র সপ্তম মূল্যায়ন প্রতিবেদনের (এআর৭) সঙ্গে সমাপ্ত হবে এবং ২০২৮ বা ২০২৯ সালে এটি প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের কাজটি মার্কিন প্রশাসনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট গত সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘে এক বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনকে ‘সবচেয়ে বড় প্রতারণা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি) ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে কাজ করে থাকে। সূত্র: বাসস


সীমান্তে পচছে ৩০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ আমদানি বন্ধ রাখায় বিপাকে পড়েছেন ভারতীয় পেঁয়াজ রপ্তানিকারীরা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মালদহ জেলায় পচে যাওয়ার পর্যায়ে পৌঁছেছে প্রায় ৩০ হাজার টন পেঁয়াজ।
জানা যায়, দুমাস আগেও বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি স্বাভাবিক ছিল। সেসময় পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলার মাহদিপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক পেঁয়াজ যেতো বাংলাদেশে। সেই আশায় মালদহ জেলার মাহদিপুর ব্যবসায়ীরা প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত করেছিলেন। আরও ১০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ মজুত করেছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলির ব্যবসায়ীরা।
কিন্তু এখন বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি না হওয়ায় বিপুল ক্ষতির মুখে পড়েছেন এসব ব্যবসায়ী। বাড়তি ক্ষতি এড়াতে অনেকটা পানির দরেই এসব পেঁয়াজ বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।
মাহাদিপুর-সোনামসজিদ সীমান্ত এলাকায় সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২ রুপিতে, (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ টাকা ৭৩ পয়সা) এবং ৫০ কেজির এক একটি বস্তা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১০০ রুপিতে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৬ টাকা)।
মালদার স্থানীয় বাজারে যদিও প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২২ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে, শহর থেকে মাত্র ৭ কিলোমিটার দূরে মাহাদিপুরে চলছে এই অবস্থা।
ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানিকারীরা অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের মৌখিক প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে পেঁয়াজ মজুত করেছিলেন তারা। কিন্তু এখন বাংলাদেশি আমদানিকারকরা সেই পেঁয়াজ নিচ্ছেন না।
মালদহ জেলার মাহদিপুর সীমান্তের ব্যবসায়ী মোহম্মদ রুবেল হোসেন জানান, বাংলাদেশ থেকে পেঁয়াজ রপ্তানির বরাত পেয়েই আমরা মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে পেঁয়াজ নিয়ে আসি। কিন্তু বন্দরে আসার পরেই হঠাৎ জানতে পারি, বাংলাদেশে আর পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে না। ফলে পচে যাওয়া ভয়ে সেই পেঁয়াজ পানির দরে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
যদিও উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ঘোজাডাঙ্গা এবং পেট্রাপোল স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা সেভাবে পেঁয়াজ মজুত করেনি। ফলে তারা কিছুটা রেহাই পেয়েছেন।
মালদহের পেঁয়াজ রপ্তানিকারকরা জানিয়েছেন, গত ১৬ নভেম্বর বাংলাদেশি আমদানিকারক-ব্যবসায়ীরা একটি নোটিশ জারি করেছেন। সেই নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত কৃষ্টি সম্প্রসারণ বিভাগ সাময়িকভাবে ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তারপর থেকে চলছে এই অবস্থা।
পশ্চিমবঙ্গের রপ্তানীকারকদের সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল এক্সপোর্টার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির মহাসচিব উজ্জল সাহা ভারতীয় সংবাদমাধ্যম মিলেনিয়াম পোস্টকে বলেছেন, ‘বাংলাদেমে পেঁয়াজ রপ্তানি খাতে ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে এবং রপ্তানি বন্ধ থাকায় ব্যবাসয়ীরা সীমান্তে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২ রুপিতে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এটা একটি অকল্পনীয় লোকসান। যদি শিগগিরই সীমান্ত খুলে দেওয়া না হয়, তাহলে অনেক রপ্তানিকারক সর্বস্বান্ত হয়ে যাবেন।’


প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা চাইলেন নেতানিয়াহু

বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দীর্ঘদিনের দুর্নীতি মামলায় ক্ষমা চেয়ে দেশটির প্রেসিডেন্টের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছেন। তার যুক্তি চলমান ফৌজদারি মামলায় সরকার চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। তাই ইসরায়েলের স্বার্থে ক্ষমা করা উচিত বলে দাবি করা হয়েছে।

দুর্নীতি, প্রতারণা ও আস্থাভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত নেতানিয়াহু সবসময়ই তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

প্রেসিডেন্টের দপ্তরে পাঠানো চিঠিতে তার আইনজীবীরা বলেন, তারা বিশ্বাস করেন আদালতের প্রক্রিয়ায় শেষ পর্যন্ত নেতানিয়াহু সম্পূর্ণ খালাস পাবেন।

লিকুদ পার্টি প্রকাশিত এক সংক্ষিপ্ত ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, আজ আমার আইনজীবীরা প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমার আবেদন পাঠিয়েছেন। দেশের ভালোর জন্য যে কেউ এই পদক্ষেপকে সমর্থন করবেন বলে আশা করি।

প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্‌জগের দপ্তর এক বিবৃতিতে জানায়, এটি একটি অসাধারণ আবেদন। সব মতামত পর্যালোচনা করে প্রেসিডেন্ট দায়িত্বশীলভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় এখনো দেওয়া হয়নি। সাধারণত আদালত রায় দেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ক্ষমা ঘোষণা করতে পারেন। কিন্তু নেতানিয়াহু রায় ঘোষণার আগেই ক্ষমা চেয়েছেন। তবে এক্ষেত্রেও প্রেসিডেন্ট চাইলে তাকে ক্ষমা করে দিতে পারবেন। যদিও এটি খুবই বিরল ঘটনার একটি হবে।

নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তিনটি আলাদা মামলা করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি মামলা হয়েছে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে। প্রত্যেক মামলায় জালিয়াতি এবং বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। নেতানিয়াহুর বিচার ২০২০ সালে শুরু হয়েছিল। কিন্তু এটি এখনো শেষ হয়নি।

এর আগে চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হার্‌জগকে চিঠি লিখে নেতানিয়াহুকে ক্ষমা দেওয়ার আহ্বান জানান। চলমান আদালত প্রক্রিয়ায় নেতানিয়াহু বারবার নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আসছেন।


‘ডেথ সেলে’ ইমরান খানের নিঃসঙ্গ বন্দিজীবন

ইমরান খান
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কারাগারের একটি ‘ডেথ সেল’-এ নিঃসঙ্গ বন্দিজীবন কাটাচ্ছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এমন অভিযোগ করেছেন তার ছেলে কাসিম খান। তিনি জানান, আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও পরিবার বা আইনজীবীদের সঙ্গে ইমরান খানের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং তার জীবিত থাকারও কোনো প্রমাণ দেওয়া হচ্ছে না।

লন্ডনে বসবাসরত কাসিম বলেন, তার বাবা দীর্ঘ সময় ধরে অন্ধকার, জানালাবিহীন ও সীমিত বায়ু চলাচল করা কক্ষে বন্দি। সেখানে ফোনকল, সাক্ষাৎ বা চিকিৎসক দেখার সুযোগ পর্যন্ত নেই।

তিনি দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, ইমরান খানকে দিনে ২২ ঘণ্টা একটি ডেথ সেলে বন্দি রাখা হচ্ছে। চিকিৎসকদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না, ছয় মাস ধরে পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলা বন্ধ, কোনো সাক্ষাৎ নেই—এটি তার ওপর সরাসরি মানসিক নির্যাতন। তার মনোবল ভাঙার জন্য এটি একটি পরিকল্পিত নিষ্ঠুরতা।

ইমরান খানের তিন বোন নুরিন খান, আলীমা খান ও উজমা খান এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতারা রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তারা ইমরানের সুস্থতার প্রমাণ দেখানো এবং সাক্ষাৎ অনুমোদনের দাবি জানান। আদালতে কারা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনও করা হয়েছে।

পরিবারের অভিযোগ, আদালতের আদেশ থাকলেও সাক্ষাতের আবেদন গড়িমসি করে প্রত্যাখ্যান করা হচ্ছে। কখনো সরাসরি বলা হচ্ছে সাক্ষাৎ দেওয়া হবে না।

এদিকে, কারাগারের সামনে প্রতিবাদে যোগ দিতে গেলে ইমরানের বোনদের পুলিশ রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং ধাক্কাধাক্কির অভিযোগ ওঠে।

গত সপ্তাহে পাকিস্তানে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, হেফাজতে থাকা অবস্থায় ইমরান খান মারা গেছেন। তবে পাকিস্তান সরকার ও পিটিআই– উভয়েই এই দাবি অস্বীকার করে।

কাসিম সতর্ক করে বলেন, তার বাবার নিরাপত্তা ও এই অমানবিক যোগাযোগবিচ্ছিন্ন বন্দি অবস্থার পরিণতির জন্য পাকিস্তান সরকারকে সম্পূর্ণভাবে দায়ী থাকতে হবে।

ইমরান খান বর্তমানে ১৪ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। অভিযোগ, তিনি ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি ক্ষমতায় থাকতে আল-কাদির ট্রাস্টের নামে এক রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুস হিসেবে জমি গ্রহণ করেছিলেন। তবে তারা দুজনই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বলেন জমিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য দেওয়া হয়েছিল।

কাসিমের কথায়, যদি দুর্নীতির কথা বলা হয়, তাহলে পাকিস্তানের বহু রাজনীতিককে জেলে থাকা উচিত। কিন্তু ইমরান খানকে টার্গেট করা হয়েছে কারণ তিনি পরিবর্তনের প্রতীক ছিলেন, সামরিক প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করেন, লাখো মানুষকে আশা দিয়েছেন।

২০২৪ সালের মার্চে জাতিসংঘের ইচ্ছাকৃত আটকবিরোধী কার্যদল (ইউএনডব্লিউজিএডি) ইমরান খানের আটককে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও আইনি ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করেছিল।

কাসিম খান জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী বিশেষ প্রতিবেদনকারী ড. অ্যালিস এডওয়ার্ডসের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যেন ইমরান খানের ওপর চলমান এই অমানবিক ও নিষ্ঠুর আচরণ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়।


দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় বন্যা-ভূমিধসে মৃত্যু ৫০০ ছাড়াল

থাইল্যান্ডে বন্যা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মুষলধারে বৃষ্টিতে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার তিন দেশে হওয়া বন্যা ও ভূমিধসে মৃত্যু ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। ঘরবাড়ি ছাড়া লাখ লাখ মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিতে দেশগুলোর জরুরি পরিষেবার কর্মীদের হিমশিমও খেতে হচ্ছে।

মালাক্কা প্রণালীতে বিরল এক ঝড় সৃষ্টি হওয়ার পর সপ্তাহখানেক ধরে প্রবল বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হয়েছে। এরই মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় ৪৩৫, থাইল্যান্ডে ১৭০ আর মালয়েশিয়ায় তিনজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বন্যার পানি নামতে শুরু করলেও রোববার পর্যন্ত দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ তিনটির উদ্ধারকর্মীরা বন্যা-আক্রান্ত অনেক জায়গায় এখনো পৌঁছাতেই পারেননি। বন্যার কারণে দক্ষিণ থাইল্যান্ডের প্রায় ৩০ লাখ মানুষ এবং ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ১১ লাখ বাসিন্দা চরম বিপাকেও পড়েছে, বলছে দেশ দুটির সরকারের তথ্য।

ইন্দোনেশিয়ায় ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের কাছে জরুরি সহায়তা পৌঁছাতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে, কারণ পশ্চিমের সুমাত্রা দ্বীপে যাওয়ার রাস্তাগুলো বন্ধ। বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে সুমাত্রার তিনটি দ্বীপের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

পশ্চিম সুমাত্রার বিচ্ছিন্ন শহর পালেমবায়ানের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে রয়টার্সের এক আলোকচিত্রী বিশাল এলাকা ও অসংখ্য ঘরবাড়িকে বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকতে দেখেছেন। হেলিকপ্টারটি যখন যে খেলার মাঠে নামে তার কাছেই খাবারের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল কয়েক ডজন মানুষ।

অনেক এলাকায় ত্রাণ পেতে মরিয়া হয়ে ওঠা লোকজন লুটপাটও করছে বলে খবর পাওয়া গেছে, গত শনিবার বলেছেন কর্মকর্তারা।

‘পানি হঠাৎ ঘরে উঠে এলো, আমরা ভয় পেয়ে পালালাম। গত শুক্রবার ফিরে এসে দেখি ঘরই নেই, ধ্বংস হয়ে গেছে’ পশ্চিম সুমাত্রার পাদাং শহরে রয়টার্সকে এমনটাই বলেছেন ৪১ বছর বয়সি আফ্রিয়ানতি।

ঘরের যে একচিলতে দেওয়াল টিকে আছে তার পাশে একটি তাঁবু টানিয়ে এখন সেখানেই পরিবারের ৯ সদস্যের সঙ্গে থাকছেন তিনি।

ইন্দোনেশিয়ার সরকারি তথ্যানুযায়ী, দেশটিতে এখনো ২৮৯ জন নিখোঁজ, ঘরবাড়ি ছেড়েছে ২ লাখ ১৩ হাজার মানুষ।

থাইল্যান্ডের জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বন্যায় দক্ষিণ থাইল্যান্ডে ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত ১০২ জন। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে সংখলা প্রদেশে, ১৩১ জন।

প্রদেশটির সবচেয়ে বড় শহর হাত ইয়াইয়ে এক দিনেই ৩৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে, যা ৩০০ বছরে সর্বোচ্চ। অন্যান্য দিনগুলোতেও শহরটি মুষলধারে বৃষ্টি দেখেছে।

পার্শ্ববর্তী মালয়েশিয়ায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে এখনো প্রায় ২৪ হাজার ৫০০ মানুষ আছে বলে জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা। গত শনিবার আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঝড় ও টানা বৃষ্টি-সংক্রান্ত সতর্কতা তুলে নিয়েছে। দেশের বেশিরভাগ অংশের আকাশ পরিষ্কার থাকবে বলেও পূর্বাভাসে বলেছে তারা।

গত সপ্তাহে দেশটির অনেক অংশ ভারী বৃষ্টি ও বাতাসের তাণ্ডব দেখেছে। থাইল্যান্ডে আটকা পড়া ৬ হাজার ২০০-র বেশি মালয়েশীয়কে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

রোববার মন্ত্রণালয়টি ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রায় থাকা নাগরিকদের জন্য নির্দেশনা জারি করে সহায়তা পেতে তাদের স্থানীয় কনসুলেটে নিবন্ধন করতে বলেছে। ওই এলাকায় এক ভূমিধসে ৩০ বছর বছর বয়সি এক মালয়েশীয় নিখোঁজ বলেও খবর পেয়েছে তারা।

শ্রীলঙ্কায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৯, নিখোঁজ দুই শতাধিক

বন্যায় বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও দুই শতাধিক মানুষ। দেশটির দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, দুর্যোগ থেকে বাঁচতে ১ লাখ ৮ হাজারের বেশি মানুষ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাই নিয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় দিতওয়ার প্রভাবে সৃষ্ট ভয়াবহ এই বন্যায় দুই লাখেরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজারের বেশি বাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। বিদ্যুৎ ও সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় দেশটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ এলাকায় এখনো নেই বিদ্যুৎ কিংবা নিরাপদ পানি।

কেলানি নদীর পানির স্তর দ্রুত বাড়তে থাকায় কয়েকটি এলাকা খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেন্দ্রীয় জেলা কান্ডি ও বাদুল্লা। এসব এলাকার অনেক গ্রাম এখনো বিচ্ছিন্ন।

বাদুল্লার মাসপান্না গ্রামের বাসিন্দা সামান কুমারা জানান, ‘আমাদের গ্রামে দুজন মারা গেছেন… অন্যরা আশ্রয় নিয়েছেন মন্দিরে আর একটি অক্ষত ঘরে। আমরা কোথাও যেতে পারছি না, কেউ আসতেও পারছে না। পাহাড়ধসের কারণে সব রাস্তা বন্ধ। খাবার নেই, বিশুদ্ধ পানি ফুরিয়ে এসেছে।’

উত্তর-মধ্যাঞ্চলীয় কুরুণাগালা জেলায় একটি বৃদ্ধাশ্রমে পানিবন্দি হয়ে নিহত হয়েছেন অন্তত ১১ বাসিন্দা। অন্যদিকে আনুরাধাপুরায় পানিতে তলিয়ে যাওয়া একটি বাস থেকে ৬৪ যাত্রীকে উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী।

উদ্ধার হওয়া যাত্রী ডব্লিউএম শান্তা জানান, ‘আমরা খুব ভাগ্যবান… যখন ছাদের ওপর ছিলাম, তার একটা অংশ ধসে পড়েছিল। তিনজন নারী পানিতে পড়ে গেলেও পরে সবাইকে নিরাপদে উঠিয়ে আনা হয়।

বন্যা-ভূমিধসে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহায়তার পাশাপাশি দেশের বাইরে থাকা শ্রীলঙ্কানদের আর্থিক সহযোগিতা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ঘূর্ণিঝড় দিতওয়া দ্বীপরাষ্ট্রটির পূর্ব উপকূলে আঘাত হেনেছিল, তবে পরে সরে গেছে। তবে এখনো সেখানে মৌসুমি বৃষ্টি চলছে। শ্রীলঙ্কায় এত ভয়াবহ আবহাওয়া খুবই বিরল বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত, শ্রীলঙ্কার চলতি শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল ২০০৩ সালের জুনে। সে সময় ২৫৪ জনের প্রাণহানি হয়েছিল।


ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা, বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ৫ লাখ মানুষ

ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় বিধ্বস্ত ভবন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রাতভর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে এখন পর্যন্ত দুজন নিহত হয়েছে এবং আরও ১৫ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিটসকো বলেছেন, শহরের পশ্চিমাঞ্চল বর্তমানে বিদ্যুৎবিহীন। রাশিয়া দাবি করেছে যে, তারা সংযুক্ত ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ, রাশিয়ার অঞ্চল এবং আজভ সাগরে ১০০টিরও বেশি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে।

ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, বিদ্যুৎ গ্রিডে রাশিয়ার হামলার পর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পাঁচ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনা করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, দিনিপ্রোপেত্রোভস্কের পাভলোহরাদ জেলায় রাশিয়ার ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ছয়টি বাসস্থান ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে, একটি গ্যাস পাইপলাইন বিচ্ছিন্ন হয়েছে এবং ৮৩ বছর বয়সি এক নারী আহত হয়েছেন।

আহত ওই নারীকে ‘ঘটনাস্থলেই চিকিৎসা সহায়তা’ দেওয়া হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত স্থানীয় পুলিশ প্রধান তার অবস্থার বিস্তারিত বিবরণ না দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। গতরাত থেকে ইউক্রেনের বিমান কমান্ড দিনিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে ১২টি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে।

এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাতভর রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ১০৩টি ইউক্রেনীয় ড্রোন আটক করেছে বা ধ্বংস করেছে।

টেলিগ্রামে শেয়ার করা তালিকায় ইউক্রেন সীমান্তবর্তী বেলগোরোড অঞ্চলে ২৬টি, রোস্তভ অঞ্চলে ২০টি, রাশিয়া-অধিভুক্ত ক্রিমিয়ায় ১৯টি, রিয়াজানে ১১টি, কাসনোদারে ১১টি এবং অন্যত্র আরও বেশ কয়েকটি ড্রোন প্রতিহত করার কথা জানানো হয়েছে।

ইউক্রেনের আরও ২৩০ সেনা নিহত

রাশিয়ার ব্যাটলগ্রুপ সাউথ-এর সেনারা গত ২৪ ঘণ্টায় ২৩০ জনেরও বেশি ইউক্রেনীয় সেনাকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছেন গ্রুপটির মুখপাত্র ভাদিম আস্তাফিয়েভ। গতকাল শনিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রুশ বার্তা সংস্থা তাস।

রুশ মুখপাত্র বলেন, ‘ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ২৪ ঘণ্টায় ২৩০ জনেরও বেশি সৈন্য হারিয়েছে। এ সময়ে রুশ যৌথ বাহিনীর ইউনিট এবং আক্রমণকারী ড্রোন ইউনিটগুলো ইউক্রেনের পাঁচটি সাঁজোয়া যুদ্ধযান (যার তিনটি পশ্চিমা নির্মিত), ১৯টি অটোমোবাইল, চারটি ফিল্ড আর্টিলারি গান, একটি ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্টেশন এবং চারটি গোলাবারুদ ও জ্বালানির গুদামও ধ্বংস করেছে।’

এদিকে সেভেরস্ক দিকের ড্রোন ইউনিটগুলো ইউক্রেনের দুটি ইউএভি নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র, একটি স্টারলিংক টার্মিনাল এবং ছয়টি যোগাযোগ অ্যান্টেনা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে বলেও উল্লেখ করেন ভাদিম আস্তাফিয়েভ।

তিনি আরও জানান, ক্রামাতোরস্ক দিকের ড্রোন ইউনিটগুলো ইউক্রেনীয় বাহিনীর একটি স্থলভিত্তিক রোবোটিক কমপ্লেক্স ধ্বংস করে, একটি আর-১৮ অক্টোকপ্টার ভূপাতিত করে, একটি ইউএভি নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র, একটি স্টারলিংক টার্মিনাল, তিনটি এফপিভি ড্রোন অ্যান্টেনা ও তিনটি যোগাযোগ অ্যান্টেনায় আঘাত হানে।

এছাড়া, কনস্তানতিনোভকার দক্ষিণাঞ্চলের ড্রোন ইউনিটগুলো শত্রুপক্ষের তিনটি স্থল রোবোটিক সিস্টেম, একটি অস্থায়ী ঘাঁটি এবং ইউক্রেনীয় বাহিনীর ছয়টি ডাগআউট ধ্বংস করেছে বলেও জানান আস্তাফিয়েভ।

এদিকে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাশিয়া সবসময় শান্তির পক্ষে থাকলেও সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য দেশটি সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি দিমিত্রি পেসকভ।

গত শুক্রবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেল ওয়ান-কে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। পেসকভের এই বক্তব্য আসে বেলজিয়ামে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ডেনিস গনচারের এক মন্তব্যের পর।

গনচার সতর্ক করে বলেছেন, ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আশ্চর্যজনকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে বড় ধরনের সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

যুদ্ধ বা শান্তি—কোনটি প্রত্যাশা করা উচিত—এমন প্রশ্নে পেসকভ বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের শান্তিই কামনা করা উচিত। কিন্তু যুদ্ধের জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। সর্বোচ্চ ভালো ফলাফলের আশা করতে হবে, তবে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি রাখা জরুরি।’

ক্রেমলিন বরাবরই বলে আসছে যে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কূটনৈতিক সমাধানই তাদের প্রথম পছন্দ; তবে পশ্চিমা জোটগুলোর সামরিক প্রস্তুতি পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলছে বলে রাশিয়ার অভিযোগ।


banner close