শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
২৮ আষাঢ় ১৪৩২
তিন দিনের সফর

বুধবার ঢাকায় আসছেন ট্রাম্পের ২ উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি:সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ২২:৪৩

তিন দিনের সফরে আগামী বুধবার (১৬ এপ্রিল) ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তাদের সঙ্গে যোগ দিতে পারেন মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতও।

গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় বসেন ট্রাম্প। তার প্রশাসনের প্রথম প্রতিনিধিদলের এ সফরে বাংলাদেশে সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ, ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ, রোহিঙ্গা সংকটে সহায়তা এবং মায়ানমারের পরিস্থিতিসহ ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্র।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটনে নিয়োজিত বাংলাদেশের কর্মকর্তারা জানান, বুধবার প্রথমে ঢাকায় পৌঁছাবেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিকোল চুলিক। পরে আরেকটি ফ্লাইটে আসবেন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হেরাপ। বাংলাদেশে অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরসঙ্গী হিসেবে মিয়ানমারে নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফরের প্রথম দিনের শুরুতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন।

এরপর তারা পর্যায়ক্রমে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

আগামী বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানসহ সরকারের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলবেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এটি হতে যাচ্ছে দেশটির উচ্চ পর্যায়ের কোনো প্রতিনিধিদলের প্রথম বাংলাদেশ সফর। ফলে দুই দেশের সম্পর্কের নানা বিষয়ে আলোচনা হবে। প্রাসঙ্গিকভাবে ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে।

বাংলাদেশ সফরের সময় নিকোল চুলিক অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংস্কারপ্রক্রিয়া বিশেষ করে গণতান্ত্রিক উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা নিয়ে আলোচনা করবেন। এ সময় তিনি বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে পারেন বলে সূত্র জানিয়েছে।

এছাড়া অ্যান্ড্রু হেরাপের সফরে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা পরিস্থিতি গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

আপডেটেড ১২ জুলাই, ২০২৫ ১০:০৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় পরিচালিত ত্রাণকেন্দ্র এবং অন্যান্য মানবিক সহায়তা গোষ্ঠীর ত্রাণ নিতে গিয়ে গত ৬ সপ্তাহে অন্তত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) এ তথ্য জানিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ২৭ মে থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত আমাদের নথিভুক্ত তথ্য অনুযায়ী, ৭৯৮ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে, এবং ১৮৩ জন নিহত হয়েছেন অন্যান্য ত্রাণবিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে।’

জিএইচএফ গাজায় মে মাসের শেষ দিকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু করে। সংস্থাটি জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ত্রাণ ব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থায় কাজ করছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, জাতিসংঘ-নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থায় হামাস ত্রাণ সরিয়ে নিচ্ছিল।

ইসরায়েলি বাহিনী যেসব জায়গায় তৎপর সেই জায়গাগুলোতে ত্রাণ বিতরণ করে আসছে জিএইচএফ। সেখানে ত্রাণ নেওয়ার চেষ্টা করা শত শত ফিলিস্তিনির মৃত্যুর পর জাতিসংঘ জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণ পদ্ধতিকে ‘মূলত ঝুঁকিপূর্ণ’ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতার নীতিমালার লঙ্ঘন আখ্যা দিয়েছে। তবে জিএইচএফ গতকাল শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছে, জাতিসংঘ নিহতের যে পরিসংখ্যান দিয়েছে তা মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিপূর্ণ।

জিএইচএফ তাদের ত্রাণ বিতরণস্থলগুলোতে এমন প্রাণঘাতী কিছু হওয়ার কথা বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। জিএইচএফ এর মুখপাত্র বলেছেন, আসলে জাতিসংঘের ত্রাণবহরের কাছেই বেশিরভাগ প্রাণঘাতী হামলা হয়েছে।

তবে জাতিসংঘের ওএইচসিএইচআর- এর মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেছেন, ফিলিস্তিনি নিহতের পরিসংখ্যান তারা দিয়েছেন গাজার হাসপাতাল, কবরস্থান, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, এনজিও এবং ফিলিস্তিনিদের পরিবারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। ২৭ মে থেকে ওএইচসিএইচআর এর রেকর্ড অনুযায়ী, ত্রাণবিতরণ কেন্দ্রগুলোর কাছে হামলায় বেশির ভাগ ফিলিস্তিনিই গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানান তিনি।

গাজা যুদ্ধ থেকে ফিরে আরেক ইসরায়েলি সেনার আত্মহত্যা

ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সদের তেইমান সামরিক ঘাঁটিতে এক ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন। নিজেকে গুলি করে আত্মহত্যা করেন ওই সেনা। সম্প্রতি তিনি গাজা যুদ্ধ থেকে ইসরায়েলি ঘাঁটিতে ফিরে এসেছিলেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানায় বার্তা সংস্থা আনাদোলু।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, নিহত ওই সেনা গোলানি ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন। তিনি গাজা থেকে ফিরে ঘাঁটিতে বিশ্রামে ছিলেন এবং সেখানে সামরিক পুলিশের জেরার মুখে পড়েন। মাসখানেক আগে তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু হয় এবং তার অস্ত্র জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

তবে হারেৎজ জানায়, তিনি ঘুমন্ত বন্ধুর অস্ত্র ব্যবহার করে নিজেকে গুলি করেন। আত্মহত্যার কারণ হিসেবে তদন্তের বিষয়টি ‘ব্যক্তিগত আচরণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়’ বলেই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি।

জানা গেছে, ওই সেনার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু গত মাসে গাজার একটি বিস্ফোরণে নিহত হন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীতে আত্মহত্যার হার বেড়েছে।

গত রোববার এক রিজার্ভ সেনা মানসিক চাপের কারণে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর সাফেদের কাছে জঙ্গলে আত্মহত্যা করেন। ইসরায়েল হায়োম পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালেই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ২১ জন আত্মহত্যা করেছেন। আর মে মাসে হারেৎজ জানিয়েছিল, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৪২ ইসরায়েলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন।


ইউক্রেনকে অস্ত্র দেবে যুক্তরাষ্ট্র, অর্থ দেবে ন্যাটো: ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে ন্যাটোর মাধ্যমে এবং তিনি আগামী সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেবেন।

ট্রাম্প সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে অগ্রগতির ঘাটতির কারণে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর থেকেই এই যুদ্ধ চলছে।

এনবিসি নিউজকে ট্রাম্প বলেন, আমি আগামী সোমবার রাশিয়া নিয়ে একটি বড় ঘোষণা দিতে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আমরা অস্ত্র ন্যাটোতে পাঠাচ্ছি এবং ন্যাটো সেই অস্ত্রের সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করবে। তারপর ন্যাটো সেগুলো ইউক্রেনকে দেবে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র সরবরাহ করবে, কিন্তু সেই খরচ ন্যাটো বহন করবে।

তিনি ইউক্রেনকে সরাসরি মার্কিন অস্ত্র পাঠাবেন প্রেসিডেনশিয়াল ড্রডাউন অথরিটি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্টদের নিজস্ব অস্ত্র মজুত থেকে জরুরি ভিত্তিতে মিত্র দেশকে সহায়তা দেওয়ার সুযোগ দেয়।

দুই সূত্র জানায়, এই প্যাকেজের মূল্য হতে পারে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার এবং এতে থাকতে পারে প্রতিরক্ষামূলক প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র ও আক্রমণাত্মক মাঝারি পাল্লার রকেট।

এই পদক্ষেপের আগে ট্রাম্প প্রশাসন শুধু সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদিত অস্ত্রই পাঠিয়েছে ইউক্রেনে। তবে এখন নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী সরাসরি অস্ত্র সহায়তা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প এর আগে ইউক্রেনে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কিন্তু সাম্প্রতিক বক্তব্যে তিনি কিয়েভের প্রতি সমর্থনও জানিয়েছেন এবং রাশিয়ার নেতৃত্বের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।


গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৬

আপডেটেড ১১ জুলাই, ২০২৫ ১৮:১০
বাসস

ইসরাইলি হামলায় শুক্রবার ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলে কমপক্ষে ছয় জন নিহত এবং আরো অনেকেই আহত হয়েছে ।

গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার বরাত দিয়ে গাজা সিটি থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

সংস্থাটি এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘উত্তর গাজার জাবালিয়া আল-নাজলায় বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়দানকারী হালিমা আল-সাদিয়া স্কুলে ইসরাইলি হামলায় পাঁচ জন শহীদ এবং অনেকেই আহত হয়েছেন।’

সংস্থাটি জানিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজা শহরে আরেকটি পৃথক হামলায় কমপক্ষে এক ব্যক্তি নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।

শুক্রবার মধ্য গাজার নুসাইরাতের আল-আওদা হাসপাতাল জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালিয়েছে ফলে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। গাজা উপত্যকায় সম্প্রতি অভিযান জোরদার করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

গাজায় গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং অনেক এলাকায় প্রবেশের অসুবিধার কারণে এএফপি স্বাধীনভাবে বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা এবং অন্যান্য পক্ষের দেওয়া মৃতের সংখ্যা এবং বিবরণ যাচাই করতে পারেনি।

দক্ষিণ গাজা থেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপি’র সঙ্গে কথা বলা এক ফিলিস্তিনি বলেছেন, খান ইউনিস শহরের কাছে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক দেখা গেছে, সেখানে আক্রমণ ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, ‘এই এলাকায় পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন। এখানে ব্যাপক গুলিবর্ষণ, প্রায়ই বিমান হামলা ও কামানের গোলাবর্ষণ এবং আল-মাসলাখের দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তরাঞ্চলে বুলডোজার দিয়ে বাস্তুচ্যুত শিবির ও কৃষিজমি ধ্বংস করা হচ্ছে।’


মার্কিন পণ্যে পাল্টা ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ব্রাজিলের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্রাজিলের রপ্তানিপণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এর জবাবে পাল্টা একই হারে মার্কিন পণ্যে শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ব্রাজিলের একটি সংবাদমাধ্যমের বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের খবরে জানানো হয়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসালে আমরাও তাদের পণ্যে ৫০ শতাংশ বসাবো।’

ট্রাম্প সম্প্রতি এক বিবৃতিতে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে চলমান বিচার কার্যক্রমকে ইঙ্গিত করে দেশটিকে ‘উইচ-হান্ট’ চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।

শুল্ক আরোপের বিষয়ে তিনি আরও জানান, ব্রাজিল সরকার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আপিল করে আন্তর্জাতিক তদন্তের আহ্বান এবং ব্যাখ্যা দাবি করতে পারে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে লুলা তার মন্ত্রিসভার সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। ট্রাম্পের ঘোষণার জবাব কীভাবে দেওয়া হবে—তা নির্ধারণে একটি স্টাডি গ্রুপ গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বৈঠকে।

অন্যদিকে, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ব্রাজিল পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে আরও বেশি হারে শুল্ক বসানো হবে।

চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প বাংলাদেশ, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াসহ একাধিক দেশকে নতুন শুল্কের বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন। চুক্তি না হলে ১ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।


মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ, রাজ্যজুড়ে উত্তেজনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্রে হিন্দি ভাষা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করাকে কেন্দ্র করে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা চলছে। সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে মারাঠি ভাষা অধিকার রক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

খবরে বলা হয়, ভাষা নিয়ে চলমান এই বিতর্কের সূত্রপাত এপ্রিল মাসে। সে সময় মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষণা দেয়, রাজ্য পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইংরেজি ও মারাঠির পাশাপাশি তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি ভাষাও শেখানো হবে। রাজ্য সরকারের দাবি, এটি কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতির (এনইপি) অংশ।

১৯৬৮ সালে চালু হওয়া এনইপি দেশটির শিক্ষাব্যবস্থাকে উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যেই প্রণয়ন করা হয়। সময়ে সময়ে এই নীতিতে সংশোধন আনা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার পাঁচ বছর আগে এর সর্বশেষ সংস্করণ চালু করেন, যা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে এটি নিয়ে এর আগেও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।

রাজ্যটির ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন, বিরোধী দল ও নাগরিক সমাজ এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেন। তাদের অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে মারাঠি ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর হিন্দিকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।


খাবার নিতে আসা শিশুদের ওপর ইসরায়েলের ‘অমার্জনীয়’ হামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা ও রাফায় ফিলিস্তিনিদের বিতর্কিত পুনর্বাসন পরিকল্পনার মধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদিন শিশুদের খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে প্রাণ গেছে ৯টি শিশুর।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ভোর থেকে চালানো হামলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক মার্কিন সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় শিশুদের জন্য পুষ্টি সহায়তা সংগ্রহ করতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো বিমান হামলায় ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯টি শিশু ও ৪ জন নারী রয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ১৯টিই শিশু।

জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল হামলাটিকে ‘অমার্জনীয়’ বলে অভিহিত করে বলেন, ‘সাহায্যের অপেক্ষায় থাকা পরিবারগুলোর ওপর এমন হামলা অত্যন্ত নির্মম ঘটনা। এটি গাজায় চলমান ভয়াবহতার বাস্তব প্রতিচ্ছবি।’

তিনি বলেন, ‘অপর্যাপ্ত সহায়তার কারণে গাজায় শিশুদের না খেয়ে থাকার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে। জরুরি সহায়তা ও সেবা পূর্ণমাত্রায় চালু না হলে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।’


কানাডার পণ্যে ৩৫ শতাংশ শুল্ক বসাতে যাচ্ছেন ট্রাম্প, কার্যকর ১ আগস্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ আগস্ট থেকে এ শুল্ক কার্যকর হবে।

বৃহস্পতিবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিকে পাঠানো এক চিঠিতে তিনি এই কথা জানান।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, সোমবার থেকে এ পর্যন্ত ট্রাম্পের এমন ধরনের ২০টিরও বেশি চিঠি গেছে বিশ্বের নানা দেশের নেতার কাছে। চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবেই এসব পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।

কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে একটি বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ২১ জুলাইয়ের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে। তবে ট্রাম্পের সর্বশেষ এই হুমকিতে আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

একইসঙ্গে কানাডা ও মেক্সিকো উভয়ই ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট করতে চেষ্টা করছে, যাতে উত্তর আমেরিকার তিন দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (ইউএসএমসিএ) আবার সঠিক পথে ফিরে আসে।

২০২০ সালের জুলাইয়ে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে পুরোনো (নাফটা) বাতিল করে ইউএসএমসিএ চালু করা হয়। ২০২৬ সালের জুলাইয়ে এর পরবর্তী পর্যালোচনা হওয়ার কথা। তবে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় এসে ট্রাম্প নানা দেশে শুল্ক আরোপ করে পর্যালোচনার প্রক্রিয়াই অস্থির করে তুলেছেন।

শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ২৫ শতাংশ শুল্ক বসায় কানাডা ও মেক্সিকোর বহু পণ্যের ওপর। কানাডার জ্বালানির ক্ষেত্রে অবশ্য কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়।

বাণিজ্যের পাশাপাশি অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার ঠেকাতে যথেষ্ট উদ্যোগ না নেওয়ার অভিযোগে প্রতিবেশী এ দুই দেশকে একাধিকবার সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।

তবে পরবর্তীতে ইউএসএমসিএ চুক্তির আওতায় থাকা পণ্যের ক্ষেত্রে তিনি ছাড় দেন, যার ফলে বড় পরিসরের পণ্য শুল্কমুক্ত হয়।

বৃহস্পতিবারের চিঠিটি এমন এক সময় এলো, যখন ট্রাম্প ও কার্নির মধ্যে সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণ হচ্ছিল। এমনকি এর আগে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য বানানো নিয়েও মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।

গত ৬ মে কানাডার প্রধানমন্ত্রী হোয়াইট হাউসে এসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পরের মাসে কানাডায় অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনেও আবার দেখা হয় দুই নেতার। সম্মেলনে ট্রাম্পকে বাণিজ্যযুদ্ধ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান বিশ্বনেতারা।

এ ছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর ওপর কানাডা যে কর আরোপ করেছিল, তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলে ট্রাম্প আলোচনার টেবিল ত্যাগ করলেও পরে আবার আলোচনা শুরুর পথ খুলে যায়।

অন্যদিকে, এনবিসি’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, যেসব দেশকে এখনো এ ধরনের চিঠি পাঠানো হয়নি, তাদের ওপরও ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনায় আছে। সেটিও কার্যকর হবে ১ আগস্ট থেকে।

তিনি জানান, ব্রাজিলের জন্য সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে, যদি এর আগেই কোনো সমঝোতা না হয়।

এনবিসি’কে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ টি দেশের উদ্দেশে চিঠি পাঠানো হবে ‘আজ বা আগামীকাল (শুক্রবার)’।

এদিকে, ট্রাম্পের হুমকির পর বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। তবে দেশটি পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করছে।

ট্রাম্পের পাঠানো চিঠিতে ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর প্রতি আচরণ নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে।


গাজায় শর্তসাপেক্ষে সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েলের

পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরায়েলি অভিযান। ছবি : সংগৃহীত
আপডেটেড ১০ জুলাই, ২০২৫ ২১:৫৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। এদিকে গাজায় হামাস যদি অস্ত্র ত্যাগ করে তাহলে ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেবে। তবে হামাস সাড়া না দিলে সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। ইসরায়েলের এক সিনিয়র কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।

গাজায় একটি অভিযানে খান ইউনিসে এক আইডিএফ সেনা নিহত হয়েছেন। হামাস যোদ্ধারা তাকে অপহরণের চেষ্টা করেছিল। ইসরায়েলি নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এই ঘটনার জন্য হামাসের সঙ্গে চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা দায়ী করেছেন। এছাড়া পশ্চিম তীরে এক ইসরায়েলি সেনা ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন এবং গাজায় কেরেম শালোম ক্রসিং দিয়ে ১ লাখ ৫২ হাজার লিটার জ্বালানি সরবরাহ করা হয়েছে।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছেন, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সৌদি আরব এই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে।

যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার মধ্যে গাজায় নিহত ২৪

যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নতুন করে আরও ২৪ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছে। এরই মধ্যে সেখানে ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়িয়ে বলেছেন, এই সপ্তাহে বা আগামী সপ্তাহে গাজায় একটি চুক্তির ‌‌‘খুব ভালো সম্ভাবনা’ রয়েছে। তবে হামাস বলছে, ইসরায়েলের একগুঁয়েমির কারণে কাতারে আলোচনা ‘কঠিন’ হয়ে পড়েছে।

বেশ কিছু চিকিৎসা সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় বিমান হামলা আরও তীব্র করেছে। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এই উপত্যকাজুড়ে কমপক্ষে ২৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ৫৭ হাজার ৫৭৫ জন নিহত এবং ১ লাখ ৩৬ হাজার ৮৭৯ জন আহত হয়েছেন। অপরদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করা হয়েছিল।

গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে ৭৭০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা

গত মে মাসের শেষের দিক থেকে মানবিক ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় ৭৭০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্থানীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে।

প্রতিবেদন অনুসারে, মানবিক সাহায্য বিতরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর কেন্দ্রগুলোতে ২৭ মে থেকে নিহতের সংখ্যা ৭৭০ ছাড়িয়ে গেছে।

আল জাজিরা এর আগে জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, অস্থিতিশীলভাবে ত্রাণ সরবরাহের মধ্যে ২১ লাখ গাজাবাসী খাদ্যের সন্ধানে মরিয়া হয়ে আছে। দিনকে দিন অবরুদ্ধ অঞ্চলে ক্ষুধার্ত মানুষের মাঝে হতাশা বাড়ছেই।

১৮ মে ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী গাজা উপত্যকার উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে তাদের বৃহৎ স্থল আক্রমণ ‘গিডিওনস চ্যারিয়টস’-এর অংশ হিসেবে গণহত্যা শুরু করে। এর ঘোষিত লক্ষ্য হলো হামাসের সম্পূর্ণ পরাজয় এবং সেখানে আটক সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এই অভিযানের পর তাদের বাহিনী সমগ্র গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৮ শিশু নিহত

গাজার মধ্যাঞ্চলে একটি মেডিকেল পয়েন্টের কাছে ইসরায়েলি হামলায় ৮ শিশু ও দুই নারীসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে বলে সেখানকার এক হাসপাতাল জানিয়েছে। আল-আকসা মার্টায়ার্স হাসপাতাল বলছে, দেইর আল-বালাহ এলাকায় পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্টের জন্য লাইন দাঁড়ানো লোকদের ওপর ওই হামলা হয়েছে।

হাসপাতাল থেকে পাওয়া এক ভিডিওতে একাধিক শিশুর মরদেহ এবং আরও কিছু আহত শিশুকে চিকিৎসা দেওয়ার দৃশ্য দেখা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা এ খবরের সত্যতা যাচাই করে দেখছে।

পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্ট বলতে সাধারণত ভিটামিন ডি ট্যাবলেট, আয়রন ট্যাবলেট, ওমেগা সাপ্লিমেন্ট ও গুড়ো প্রোটিনের মতো নানা সহায়ক পথ্যকে বোঝায়। গাজার ওই মেডিকেল পয়েন্ট থেকে কী কী পাওয়া যাচ্ছিল তা জানা যায়নি।

নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে দোহায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলাকালেও ফিলিস্তিনি এ ভূখণ্ডটিতে তেল আবিবের হামলা থেমে নেই। প্রতিদিনই তাদের হামলায় গাজায় ডজন ডজন মানুষের মৃত্যুর খবর মিলছে।

দোহার এ আলোচনায় কাতার ও মিসরের পাশাপাশি মধ্যস্থতা করছে যুক্তরাষ্ট্রও। আলোচনায় শিগগিরই ফল আসবে বলে ওয়াশিংটন আশাবাদ ব্যক্ত করলেও হামাস ও ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক মন্তব্যে দ্রুত কোনো ‘ব্রেক থ্রুর’ আশা দেখা যাচ্ছে না। গত বুধবার (৯ জুলাই) রাতে ঊর্ধ্বতন এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে এক-দুই সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

এমন এক সময়ে তিনি এ কথা বললেন যখন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুক্তরাষ্ট্র সফর চলছে। ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, দুই পক্ষ ৬০ দিনের কোনো যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছালে, ইসরায়েল ওই সময়টাকে যুদ্ধের একটি স্থায়ী সমাপ্তির প্রস্তাব দেওয়ার জন্য কাজে লাগাতে চায়, সেখানে অবশ্যই হামাসকে নিরস্ত্র হওয়ার শর্ত দেওয়া হবে। যদি হামাস অস্ত্র সমর্পণে রাজি না হয়, তাহলে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান ‘অব্যাহত থাকবে’। এর আগে হামাস বলেছিল, আলোচনা ‘কঠিন’ হয়ে উঠেছে, এজন্য ইসরায়েলি ‘একগুঁয়েমিকেও’ দায়ী করেছে তারা।

ফিলিস্তিনি এ সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলছে, ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়ে তারা নমনীয়তার পরিচয় দিয়েছে। তারা ইসরায়েলি হামলার অবসান ঘটাবে এমন ‘বিস্তৃত’ চুক্তির দাবিও পুনর্ব্যক্ত করেছে।


ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ, কপার শুল্ক কার্যকর আগস্টে: ট্রাম্প

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন এবং জানিয়েছেন, আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কপার আমদানির ওপর "জাতীয় নিরাপত্তা" ভিত্তিক শুল্ক কার্যকর হবে।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ট্রাম্প ব্রাজিলের সাবেক ডানপন্থী নেতা জাইর বলসোনারোর বিচারকে ‘আন্তর্জাতিক অপমান’ বলে উল্লেখ করেন।

বলসোনারো ২০২২ সালের নির্বাচনে লুলার কাছে পরাজয়ের পর অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে বর্তমানে বিচারের মুখোমুখি।

ট্রাম্পের শুল্ক সংক্রান্ত চিঠির জবাবে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা একতরফা শুল্ক বৃদ্ধির বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তিনি এক্স-এ (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ব্রাজিলের অর্থনৈতিক পারস্পরিকতার আইনের আলোকে এই ধরনের পদক্ষেপের জবাব দেওয়া হবে।

এর আগে বুধবার ব্রাজিল জানিয়েছে যে তারা বোলসোনারো বিচারের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের আগের সমালোচনার জন্য মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছেন।

ট্রাম্প তার চিঠিতে বলেছেন যে ব্রাজিলের পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ মার্কিন শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। ট্রাম্প বুধবার সন্ধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করেন, একই তারিখ হতে, গ্রিন এনার্জি এবং অন্যান্য প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত একটি মূল ধাতু তামার মার্কিন আমদানির উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে।

তিনি বলেন, এই পদক্ষেপটি "শক্তিশালী জাতীয় নিরাপত্তা মূল্যায়ন" অনুসরণ করে সম্ভবত এই বছরের শুরুতে শুরু হওয়া তামার উপর বাণিজ্য বিভাগের তদন্তের প্রতিফলন। ট্রাম্প বলেছেন, প্রতিরক্ষা বিভাগে তামা দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবহৃত উপাদান।

শুল্কে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কা: লুলাকে পাঠানো চিঠিটি ছিল সোমবার থেকে শুরু হওয়া ট্রাম্পের ২০টিরও বেশি অনুরূপ চিঠির সর্বশেষ। এসব চিঠিতে তিনি পারস্পরিক বাণিজ্য না হওয়ার অভিযোগ তুলে নানা দেশের ওপর একতরফাভাবে শুল্ক নির্ধারণ করছেন।

ব্রাজিল এতদিন ১০ শতাংশের প্রাথমিক শুল্ক হারের বাইরে ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ব্রাজিলের সাথে পণ্যে বাণিজ্য উদ্বৃত্তে রয়েছে।

বুধবার ট্রাম্প ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, ব্রুনেই, আলজেরিয়া, লিবিয়া, ইরাক ও মলডোভাসহ একাধিক দেশের নেতাদের চিঠি পাঠান। যেখানে ২০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা রয়েছে, যা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।

মার্চ-এপ্রিলে এই শুল্ক পরিকল্পনার প্রথম ধাপে যে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, তার তুলনায় এবার কিছু দেশে তুলনামূলকভাবে কম শুল্ক আরোপ হয়েছে।

এপ্রিল মাসে ট্রাম্প প্রায় সব বাণিজ্য অংশীদারের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেও, তখন আরও বেশি হারের শুল্ক ঘোষণা করে তা স্থগিত রাখেন। এগুলোর কার্যকর সময়সীমা ছিল বুধবার, যা পরে তিনি ১ আগস্ট পর্যন্ত পিছিয়ে দেন।

এখন শুল্কের নির্দিষ্ট হার উল্লেখ করে চিঠি পাঠানো হচ্ছে, যেখানে ট্রাম্প এসব পদক্ষেপকে “অপারস্পরিক বাণিজ্য সম্পর্কের” জবাব বলে উল্লেখ করেছেন।

এই চিঠিগুলোতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন করলেই তারা শুল্ক এড়াতে পারবে। অন্যথায় পাল্টা ব্যবস্থা নিলে আরও শুল্ক আরোপের হুমকি রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের লক্ষ্যবস্তু মূলত এশীয় দেশগুলো হলেও, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-র সঙ্গে আলোচনার দিকে এখন সবার দৃষ্টি।

ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেন, তার সরকার ‘সম্ভবত দুই দিনের মধ্যেই’ ইইউ’র কাছে নতুন শুল্ক হারের একটি চিঠি পাঠাবে।

বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন মুখপাত্র বলেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘আসন্ন দিনগুলোতে’ একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে চায়।

এই সব দেশের পণ্যের ওপর শুল্কের পাশাপাশি ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় ফেরার পর স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম ও গাড়ি শিল্পের ওপরও খাতভিত্তিক শুল্ক আরোপ করেছেন।


কিয়েভ হামলার পর রাশিয়ার ওপর দ্রুত নিষেধাজ্ঞা চান জেলেনস্কি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

রাশিয়ার রাতভর মিসাইল ও ড্রোন হামলার পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার মিত্র দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার ওপর আরও দ্রুত এবং কার্যকর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।

কিয়েভ, ইউক্রেন থেকে এএফপি জানায়, জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেন, রাশিয়া প্রায় ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং প্রায় ৪০০টি আক্রমণাত্মক ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা দ্রুত আরোপ করতে হবে এবং রাশিয়ার উপর চাপ এত শক্তিশালী হতে হবে যেন তারা তাদের সন্ত্রাসের পরিণতি সত্যিই অনুভব করে।


চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতা ভারতের নিরাপত্তায় প্রভাব ফেলতে পারে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান তথা ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর চিফ ডিফেন্স অব স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল অনিল চৌহান বলেছেন, বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের অভিন্ন স্বার্থের কারণে ভারতের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে। গত মঙ্গলবার তিনি এই কথা বলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

অনিল চৌহান বলেছেন, চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে স্বার্থের সম্ভাব্য অভিন্নতা ভারতের ‘স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর’ গুরুতর ‘প্রভাব’ ফেলতে পারে। ভারতীয় থিংকট্যাংক অবজারভার ফাউন্ডেশনের এক আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় তিনি কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে বলেন, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে অর্থনৈতিক দুর্দশাকে বাইরে শক্তিগুলো তাদের প্রভাব বিস্তারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, এটি ভারতে দুর্বলতা সৃষ্টির কারণ হতে পারে।

জেনারেল চৌহান বলেন, ‘চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে এমন একটি সম্ভাব্য স্বার্থের মিল থাকতে পারে, যা ভারতের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।’ তবে তিনি এটাও উল্লেখ করেন, অপারেশন সিঁদুর চলাকালে চীন পাকিস্তানের পক্ষ থেকে কতটা রাষ্ট্রীয় সমর্থন দেওয়া হয়েছিল, তা নির্ধারণ করা কঠিন। তিনি বলেছেন, সংঘর্ষের সময় উত্তরের সীমান্তে (চীনের দিকে) কোনো অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড লক্ষ করা যায়নি।

অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে জেনারেল চৌহান বলেন, সম্ভবত এই প্রথমবার দুটি পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র সরাসরি সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছিল। তিনি আরও বলেন, ভারত ঘোষণা করেছে, পারমাণবিক হুমকি দিয়ে বাধা দেওয়া যাবে না।

জেনারেল চৌহান আরও করেন, অপারেশন সিঁদুর এক ধরনের ‘বিশেষ ঘটনা’ এবং এটি সারা বিশ্বের জন্য শিক্ষা হতে পারে। তিনি বলেন, যুদ্ধে আরও বিস্তৃতি সম্ভব, যা নতুন যুদ্ধক্ষেত্র যেমন সাইবার ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ক্ষেত্র পর্যন্ত সম্প্রসারিত হতে পারে।


গাজা সংকট অবসানে নেতানিয়াহুর সঙ্গে ট্রাম্পের নতুন বৈঠক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গাজা যুদ্ধের ‘ভয়াবহ সংকট’ অবসানে চুক্তিতে পৌঁছাতে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুজনের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানিয়েছে, দোহায় কাতারের মধ্যস্থতায় চলমান আলোচনা অনিশ্চিত হয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে নেতানিয়াহু মঙ্গলবার আবার হোয়াইট হাউসে যান। কাতার সতর্ক করে বলেছে, ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে সময় লাগবে।

হোয়াইট হাউসে নেতানিয়াহুর ফেরার ঘোষণার সময় ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘এটা এক দুঃখজনক পরিস্থিতি। তিনি (নেতানিয়াহু) এর সমাধান চান, আমিও চাই এবং আমার মনে হয় অন্য পক্ষও সেটা চায়।’

ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, ‘এই সপ্তাহের শেষ নাগাদ একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারব বলে আমরা আশা করছি, যা ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির পথ খুলে দেবে।’

চুক্তির আওতায় হামাসের হাতে আটকে থাকা ১০ জীবিত ও ৯ মৃত বন্দিকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানান তিনি।

সোমবার রাতে ট্রাম্পের সঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেওয়ার পর নেতানিয়াহু মঙ্গলবার আবার হোয়াইট হাউসে আলোচনায় বসেন। এই বৈঠকে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকার ছিল না।

এর আগে মার্কিন কংগ্রেসের হাউস স্পিকার মাইক জনসনের সঙ্গে এক বৈঠকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা শিগগিরই আসবে কি না জানতে চাইলে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এটা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’

ট্রাম্প ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় থেকে ইসরাইলের প্রতি জোরালো সমর্থন বজায় রেখেছেন। তবে একইসঙ্গে গাজায় চলমান সংঘর্ষকে ‘নরক’ আখ্যায়িত করে তা বন্ধে চাপও বাড়াচ্ছেন।

এদিকে কাতার জানায়, দোহায় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা তৃতীয় দিনে গড়ালেও এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।

এদিকে, কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে কোনো সময়সীমা দেওয়া সম্ভব না, তবে এটুকু বলতে পারি যে, এর জন্য আমাদের সময় লাগবে।’

যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের পাশাপাশি কাতারও এই আলোচনার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে। তারা জানিয়েছে, দোহায় চলা বৈঠকে মূলত আলোচনা চালানোর নিয়মকানুন ঠিক করা হচ্ছে।

তবে আলোচনায় থাকা এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি।

অন্যদিকে, ময়দানে সংঘাত চলছেই। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ইসরাইলি হামলায় ২৯ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে তিন শিশু রয়েছে।

উত্তর গাজায় সংঘর্ষে পাঁচ ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে। এই বছর ফিলিস্তিনি এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর জন্য এটি সবচেয়ে প্রাণঘাতী দিনের মধ্যে একটি। তাদের মৃত্যু হয় বেইত হানুন এলাকার কাছে পুঁতে রাখা বোমার বিস্ফোরণে।

নেতানিয়াহু সেনাদের মৃত্যুকে ‘কষ্টকর সকাল’ বলে মন্তব্য করেছেন।

লেবানন জানিয়েছে, মঙ্গলবার ত্রিপোলির কাছে এক হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ওই হামলার লক্ষ্য ছিলেন এক হামাস যোদ্ধা। এটি ওই এলাকায় হিজবুল্লাহর সঙ্গে গত নভেম্বরের যুদ্ধবিরতির পর প্রথম হামলা।

ইরান-ইসরাইলের সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতিকে কাজে লাগিয়ে গাজা সংকটের নিষ্পত্তি চাচ্ছেন ট্রাম্প।

এদিকে ফ্রান্সের গোয়েন্দা প্রধানও জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের যৌথ হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ‘গভীরভাবে ব্যাহত’ হয়েছে। এই মন্তব্যের মাধ্যমে হামলায় আসলে কতটা ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে

চলমান বিতর্কে তিনি সরাসরি যুক্ত হলেন।

ইসরাইল ও হামাস রোববার থেকে নতুন দফার আলোচনায় বসেছে। যদিও একই ভবনের ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে বসে অংশ নিচ্ছেন দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা।

ওয়াশিংটনে নেতানিয়াহুর সফরসঙ্গী এক ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেছেন, আলোচনায় যে প্রস্তাব উঠেছে তা ‘ইসরাইলের ৮০-৯০ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে।’

তবে ইসরাইলের কট্টর ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির হামাসের সঙ্গে আলোচনার বিরোধিতা করে বলেন, ‘আমাদের সেনাদের হত্যাকারীদের সঙ্গে আলোচনার কোন দরকার নেই, তাদের ছিন্নভিন্ন করে দিতে হবে।’

গাজায় চলমান যুদ্ধ ২০ লাখের বেশি মানুষের জন্য ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলায় ইসরাইলে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই ছিল সাধারণ জনগণ। ওই ঘটনায় হামাস ২৫১ জনকে ইসরাইলিকে বন্দি করে। এখনো তাদের হাতে ৪৯ জন বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২৭ জন মারা গেছে বলে ইসরাইল দাবি করেছে।

অন্যদিকে, ইসরাইলের পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৭ হাজার ৫৭৫ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ ফিলিস্তিনি নাগরিক বলে জানায় হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাতিসংঘ ওই সংখ্যা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে।


ইরানকে ভয়ংকর আকাশ প্রতিরক্ষা দিল চীন

চীনের অত্যাধুনিক সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র এইচকিউ-৯। ছবি : সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দৈনিক বাংলা ডেস্ক

মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম বৈরী দুটি দেশ ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘর্ষের স্বাক্ষী হয়েছে বিশ্ব। ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্ততায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দেশ দুটি। তবে এই যুদ্ধবিরতিতে ভরসা করতে পারছে না ইরান। তেহরানের আশঙ্কা, যে কোনো সময় আবারো হামলা করতে পারে ইসরায়েল। আর সেই আশঙ্কা থেকেই এবার জোরকদমে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে খামেনি প্রশাসন।

জানা গেছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরপরই চীন থেকে অত্যাধুনিক সারফেস-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের (এসএএম) বিশাল চালান হাতে পেয়েছে ইরান। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা এতটাই শক্তিশালী, ইরানের আকাশসীমার ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান প্রবেশ করাই কঠিন হয়ে পড়বে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন একাধিক আরব গোয়েন্দা কর্মকর্তা। তারা জানান, ২৪ জুন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরই চীনা এসএএম HQ-9 বা HQ-16 এর এসব ব্যাটারি ইরানে পৌঁছায়। যুদ্ধের সময় ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হওয়া প্রতিরক্ষা কাঠামো পুনর্গঠনের অংশ হিসেবেই এই সরঞ্জাম হস্তান্তর হয়েছে।

আরেক আরব কর্মকর্তা জানান, ইরান তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে তীব্র গতিতে কাজ করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকেও এ অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত রাখা হয়েছে। জানা গেছে, চীন থেকে এসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার বিনিময়ে ইরান বিপুল পরিমাণ অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করছে।

চীন বর্তমানে ইরানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তৃতীয় দেশের মাধ্যমে চীন নিয়মিতভাবে ইরানি তেল আমদানি করছে, যা দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ককে আরও মজবুত করছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই চীনা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানের আকাশে ইসরায়েলি আধিপত্যের সমাপ্তি ঘটাতে পারে। কারণ, সম্প্রতি ইসরায়েল ইরানের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ও সামরিক বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য করে ধ্বংসাত্মক হামলা চালায়।

তবে পাল্টা হামলায় ইরানও ইসরায়েলের তেলআবিব ও হাইফার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়।

বর্তমানে ইরান রাশিয়ার এস-৩০০ ছাড়াও দেশীয় প্রযুক্তির খোরদাদ ও বাভার-৩৭৩ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা পরিচালনা করছে, যদিও সেগুলো মার্কিন স্টেলথ ফাইটার F-35 প্রতিরোধে পুরোপুরি কার্যকর নয়। তাই চীনা HQ-9 বা HQ-16 এর মতো আধুনিক এসএএম সিস্টেম ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে পারে।

চীন ইতোমধ্যেই পাকিস্তান ও মিসরের মতো মিত্রদের কাছে এসব ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করেছে। এবার ইরানেও তা হস্তান্তর, মধ্যপ্রাচ্যে শক্তির ভারসাম্যে এক বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।


banner close